AHSEC 2020 Economics Question Paper Solved | দ্বাদশ শ্রেণীর অর্থবিজ্ঞান পুরনো প্রশ্নপত্র সমাধান

AHSEC 2020 Economics Question Paper Solved Bengali Medium | দ্বাদশ শ্রেণীর অর্থবিজ্ঞান পুরনো প্রশ্নপত্র সমাধান, AHSEC Class 12 Economics Question Paper Solved PDF Download, দ্বাদশ শ্রেণীর অর্থবিজ্ঞান 2020 প্রশ্নপত্র সমাধান করা হয়েছে to each Paper is Assam Board Exam in the list of AHSEC so that you can easily browse through different subjects and select needs one. AHSEC 2020 Economics Previous Years Question Paper Solved in Bengali can be of great value to excel in the examination.

AHSEC 2020 Economics Question Paper Solved in Bengali

AHSEC 2020 Economics Question Paper Solved in Bengali | দ্বাদশ শ্রেণীর অর্থবিজ্ঞান পুরনো প্রশ্নপত্র সমাধান

Join Telegram channel

AHSEC Old Question Paper provided is as per the 2020 AHSEC Board Exam and covers all the questions from the AHSEC Class 12 Economics Solved Question Paper 2020 Bengali Medium. Access the detailed Class 12 Economics 2020 Previous Years Question Paper Solved provided here and get a good grip on the subject. AHSEC 2020 Economics Question Paper Solved Bengali Medium Access the AHSEC 2020 Economics Old Question Paper Solved, AHSEC Class 12 Economics Solved Question Paper 2020 of Bengali in Page Format. Make use of them during your practice and score well in the exams.

ECONOMICS

2020

ECONOMICS OLD QUESTION PAPER SOLVED

১। (ক) ‘The General Theory of Employment, Interest and Money গ্রন্থটির লেখক কে?

উত্তরঃ জন মেইনার্ড কেইনস্ (J. M. Keynes)।

(খ) সমষ্টিবাদী অর্থিবিজ্ঞান একটি অর্থনীতির সামগ্রিক অর্থনৈতিক চলকসমূহের বিষয়ে অধ্যয়ন করে। (শুদ্ধ বা অশুদ্ধ লেখো)

উত্তরঃ শুদ্ধ।

(গ) বিহিত মুদ্রা কী?

উত্তরঃ যে মুদ্রার গ্রহযোগ্যতা বিধিসম্মত, সেই মুদ্রাকে বিহিত মুদ্রা বলে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃক প্রচলিত মুদ্রাই বিহিত মুদ্রা। এই মুদ্রা আইনের ভিত্তিতে তৈরি হয় এবং গ্রহণ করতে আমরা আইনতঃ বাধ্য।

(ঘ) ‘মুক্ত অর্থনীতি’ বলতে কী বোঝ?  

উত্তরঃ মুক্ত অর্থনীতির মূল কথা হল অর্থনৈতিক কাজকর্মে সরকারের হস্তক্ষেপ থাকবে না। মুক্ত অর্থনীতিতে দাম ব্যবস্থার মাধ্যমে সমস্ত সমস্যার সমাধান হয়। পুঁজিবাদি অর্থব্যবস্থায় মুক্ত অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করা হয়। মুক্ত অর্থনীতিতে বাজার ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হয়ে থাকে।

(ঙ) সেবার বাণিজ্যিক (দৃশ্যমান/অদৃশ্যমান) বাণিজ্যও বলা হয়। (শুদ্ধ উত্তরটি বেছে নাও)

উত্তরঃ অদৃশ্যমান বাণিজ্য।

(চ) ঋণ সৃষ্টি হলো ……………. ব্যাংকের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্য। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)।

উত্তরঃ বাণিজ্যিক।

২। স্বতন্ত্র বিনিয়োগ এবং প্ররোচিত বিনিয়োগের সংজ্ঞা লেখো।

উত্তরঃ উন্নয়নমূলক পরিকল্পনার অধীনে সমাজ কল্যাণের উদ্দেশ্যে সরকার বা সরকারি কর্তৃপক্ষ যে বিনিয়োগ করে থাকেন, তা-ই স্বনিরূপিত বিনিয়োগ। সকল আয়স্তরে স্বতন্ত্র বিনিয়োগ স্থির থাকে। অর্থাৎ আয় অস্থিতিস্থাপক।

আয়স্তর, ভোগ, মূল্যস্তর, সুদের হার প্রভৃতির পরিবর্তন লক্ষ্য করে মুনাফা অর্জনের আশায় যে বিনিয়োগ করা হয় তাকে উদ্দেশ্যমূলক বা অভিপ্রেত বিনিয়োগ বলে। ঘরোয়া খণ্ড এবং ফার্ম অভিপ্রেত বিনিয়োগ করেছিল করে। অভিপ্রেত বিনিয়োগ আয়ের স্তরের সঙ্গে ধনাত্মকভাবে সম্পর্কিত অর্থাৎ এটি আয় স্থিতিস্থাপক।

তাদের সঞ্চয় ততো কম হয় বা পূর্বের সমান থাকে।

অথবা

(ক) গড় উপভোগ প্রবণতা কাকে বলে?

উত্তরঃ ভোগ প্রবণতা হল কেইনসীয় ধারণা। আয় এবং ভোগের পারস্পরিক সম্পর্ককে ভোগ প্রবণতা বলে।

(খ) যখন আয়ের পরিমাণ শূন্য হয়, তখন গড় উপভোগ প্রবণতা (শূন্য/অসীম/ ধনাত্মক/ঋণাত্মক) হয়।

উত্তরঃ ঋণাত্মক।

৩। সামগ্রিক যোগানের দুটি উপাংশ উল্লেখ করো।

উত্তরঃ ১। ভোগ।

২। সঞ্চয়।

অথবা

বিনিয়োগ চাহিদার দুটি নির্ণায়ক উল্লেখ করো।

উত্তরঃ বিনিয়োগ চাহিদার নির্ধারকসমূহ হল –

১। মূলধনের প্রান্তিক উৎপাদন ক্ষমতাঃ এক একক মূলধন সামগ্রী প্রয়োগ করার ফলে যে অতিরিক্ত উৎপাদন আশা করতে পারি, সেটিই হবে সংশ্লিষ্ট মূলধন সামগ্রীর প্রান্তিক উৎপাদন ক্ষমতা। মূলধনের প্রান্তিক উৎপাদন ক্ষমতা বাড়লে বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং দেশ সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর হবে। কিন্তু মূলধনের প্রান্তিক উৎপাদন ক্ষমতা কমলে বিনিয়োগ হ্রাস পাবে এবং দেশের আর্থিক অবস্থা সংকোচনমুখী হবে।

২। সুদের হারঃ যদি বিনিয়োগের জন্য অন্যের নিকট থেকে ঋণ ধার করতে হয়, তাহলে বিনিয়োগকারীকে সুদ দিতে হয়। প্রত্যেক ফার্ম নতুন বিনিয়োগ করার সময় মূলধনের প্রান্তিক উৎপাদন ক্ষমতার সঙ্গে সুদের হারের তুলনা করে। মূলধনের প্রান্তিক দক্ষতা সুদের হারের সঙ্গে সমান হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের পক্ষে বিনিয়োগ করা লাভজনক হবে। সুদের হার এর চেয়ে বেশি হলে বার্ষিক শুদ্ধ লাভ হ্রাস পায় এবং ফলে বিনিয়োগ চাহিদা হ্রাস পায়।

অথবা

‘প্রত্যাশিত উপভোগ’ বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ সকল পরিবারের পরিকল্পিত মোট ভোগ ব্যয়কে প্রত্যাশিত উপভোগ বলে। ভোগ কার্যকে প্রকাশ করা যায়-

b = প্রান্তিক ভোগ প্রবণতা

y = ব্যক্তিগত ব্যয়যোগ্য আয়

৪। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ ১। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাগজী নোট প্রস্তুত করে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের নোট ছাপানোর কোন ক্ষমতা নেই।

২। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নাই, কিন্তু বাণিজ্যিক ব্যাংকের সঙ্গে জনগণের ওতঃপ্রোত সম্পর্ক থাকে।

অথবা

ক্ষমতাসম্পন্ন মুদ্রা কী? বুঝিয়ে লেখো।

উত্তরঃ মুদ্রার যোগানের যে অংশ দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রত্যক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, সেই অংশটিকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মুদ্রা বলে বিবেচনা করা হয়।

৫। GST এর সম্পূর্ণ রূপটি লেখো। ভারতবর্ষে কোন সালে GST প্রবর্তন করা হয়েছিল?

উত্তরঃ Goods and Services Tax.

২০১৭ সালের ১লা জুলাই।

অথবা

সুষম বাজেট এবং উদ্বৃত্ত বাজেটের সংজ্ঞা লেখো।

উত্তরঃ সুষম বাজেটঃ  বাজেটে যখন সম্ভাব্য আয় এবং প্রস্তাবিত ব্যয় সমান দেখানো হয়, তখন সেই বাজেটকে সুষম বাজেট (Balanced Budget) বলা হয়।

উদ্বৃত্ত বাজেটেরঃ সরকারি বাজেট প্রস্তাবে যখন প্রস্তাবিত ব্যয়ের তুলনায় সম্ভাব্য আয় বেশি দেখানো হয়, তখন সেই বাজেটকে উদ্বৃত্ত বাজেট বলে।

৬। পরিশোধের সমতা কী? পরিশোধের সমতায় কখন উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয়?

উত্তরঃ একটি রাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য রাষ্ট্রের মধ্যে এক নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সম্পাদিত হওয়া অর্থনৈতিক লেনদেনের প্রণালীবদ্ধ বিবৃতিই হল বৈদেশিক লেনদেনের সমতা বা পরিশোধের সমতা।

একটি দেশ নির্দিষ্ট বছরে যখন অন্যদেশের মোট দেনা থেকে পাওনা বেশি হয়, তখন সেই দেশের পরিশোধের সমতায় উদ্বৃত্ত সৃষ্টি হয়।

অথবা

পরিশোধের সমতায় চলিত হিসাবে কী ধরনের লেনদেন অন্তর্ভুক্ত হয়?

উত্তরঃ ১। দ্রব্যের আমদানি এবং রপ্তানি।

২। সেবার আমদানি এবং রপ্তানি।

৩। একপক্ষীয় হস্তান্তর।

৭। পরিশোধের সমতা এবং বাণিজ্যের সমতার মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ ১। পরিশোধের সমতায় দৃশ্যমান বাণিজ্য এবং অদৃশ্যমান বাণিজ্য উভয়েরই হিসাব ধরা হয়। কিন্তু বাণিজ্যের সমতায় শুধু দৃশ্যমান বাণিজ্যের হিসাব ধরা হয়।

২। পরিশোধের সমতা একটি বিস্তৃত ধারণা। শ্রম আদান প্রদান, মূলধনের আদান প্রদান, ভ্রমণকারীদের আসা যাওয়া ইত্যাদি হিসেব অন্তর্ভুক্ত হয়। বাণিজ্যের সমতা একটি সংকীর্ণ ধারণা। এটি পরিশোধের সমতার একটি অংশ বিশেষ।

অথবা

আন্তঃরাষ্ট্রীয় বাণিজ্যের প্রেক্ষাপটে ‘হস্তান্তর পরিশোধ’ বলতে কী বোঝ?

উত্তরঃ একটি দেশের বাসিন্দাগণ যে সকল আয় মুক্তভাবে লাভ করে এবং যার বিনিময়ে কোন মূল্য প্রদান করতে হয় না, এইরূপ প্রাপ্তিকে হস্তান্তর পরিশোদ বলে। যেমন- উপহার, দান।

৮। মোট/স্থূল ঘরোয়া উৎপাদন (GDP), মোট/স্থূল রাষ্ট্রীয় উৎপাদন (GNP), নিট/ শুদ্ধ ঘরোয়া উৎপাদন (NDP) এবং নিট/শুদ্ধ রাষ্ট্রীয় উৎপাদন (NNP) এর সংজ্ঞা লেখো।

উত্তরঃ একটি দেশের উৎপাদন হওয়া চূড়ান্ত দ্রব্যের বাজার মূল্যকে সেই দেশের মোট ঘরোয়া উৎপাদন (GDP) বলে। একটি বিত্তীয়  বছরে দেশের আভ্যন্তরীণ বাজারে  উৎপাদন হওয়া মোট সামগ্রী এবং সেবার মুদ্রা মূল্যকে মোট জাতীয় উৎপাদন (GNP) বলে।

মোট ঘরোয়া উৎপাদনের সঙ্গে বিদেশ থেকে অর্জিত নেট আয়ের পরিমাণ যোগ করলে মোট জাতীয় উৎপাদন পাওয়া যায়।

শুদ্ধ বা নেট ঘরোয়া উৎপাদন (NDP) = শুদ্ধ বা নেট মূল্য সংযোজন ( NVA )। নেট মূল্য সংযোজন প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও তৃতীয় খণ্ডের মূল্য সংযোজন করে বের করা হয়। এর মধ্যে মূলধনের ক্ষয়-ক্ষতি অন্তর্ভূক্ত থাকে। যদি N সংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকে, তাহলে NDP হবে 1 থেকে N পর্যন্ত সংখ্যাভুক্ত সকল প্রতিষ্ঠানের শুদ্ধ মূল্য সংযোজনের সমষ্টি।

মোট জাতীয় উৎপাদন থেকে উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত মূলধনী দ্রব্যের ক্ষয়-ক্ষতি বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে, তাকে শুদ্ধ/লব্ধ বা নেট জাতীয় উৎপাদন (NNP ) বলে।

সূত্রমতে, NNP  = GNP – মূলধনের ক্ষয়ক্ষতি মূল্য।

অথবা

মূল্য সংযোজন বলতে কী বোঝ? মোট মূল্য সংযোজনের সংজ্ঞা লেখো। 

উত্তরঃ একটি প্রতিষ্ঠানের মূল্য সংযোজন হল প্রতিষ্ঠানটির উৎপাদন মূল্য এবং মধ্যবর্তী দ্রব্যের মূল্যের পার্থক্য। অর্থাৎ একটি প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন মূল্য থেকে মধ্যবর্তী দ্রব্যের মূল্য বাদ দিলে মূল্য সংযোজন বের করা যায়। মূল্য সংযোজনের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিনিয়োগ কার্যে মূলধনের ক্ষয়ক্ষতির মূল্য অন্তর্ভুক্ত করলে মোট মূল্য সংযোজন পাওয়া যায়। আবার, মোট সংযোজিত মূল্য থেকে মূলধনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিয়োগ করলে শুদ্ধ মূল্য সংযোজন পাওয়া যায়।

অথবা

‘পুঁজিবাদী’ অর্থব্যবস্থা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

উত্তরঃ যে অর্থব্যবস্থায় প্রতিটি অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়, সেই অর্থব্যবস্থা কে  পুঁজিবাদ বা  ধনতন্ত্রবাদ ( Capitalism ) বলে। গ্রেট ব্রিটেন, আমেরিকা প্রভৃতি দেশ পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করতে সক্ষম হয়েছে।

পুঁজিবাদ অর্থব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নে বর্ণিত হল –

১। পুঁজিবাদ অর্থব্যবস্থায় উৎপাদনের উপকরণ এবং বিতরণ ব্যবস্থা ব্যক্তিগত মালিকানায় নিয়ন্ত্রণাধীন থাকে। এই অর্থব্যবস্থায় সরকারের মালিকানা থাকে না।

২। পুঁজিবাদ ব্যবস্থায় উদ্যোগ ব্যবস্থায় মালিকের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা থাকে। কোন দ্রব্য কী পরিমাণে, কোথায় এবং কীভাবে উৎপাদন করা হবে- এই বিষয় উৎপাদক নির্ণয় করে থাকে। সরকার কোন কাজকর্মে হস্তক্ষেপ করে না।

৩। এই ব্যবস্থায় ভোক্তার সার্বভৌমত্ব থাকে। ভোক্তা আপন রুচি ও পছন্দ মত দ্রব্যাদি পছন্দ করে।

৪। এই ব্যবস্থায় দাম ব্যবস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করে। দ্রব্যাদির চাহিদা এবং যোগানের মধ্যে অবাধ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নির্ধারিত হয়।

৫। পুঁজিবাদের অন্য একটি বৈশিষ্ট্য হল শ্রেণি সংগ্রাম। পুঁজিবাদে ‘সম্পদ থাকা’ এবং ‘সম্পদ না থাকা’ এই দুই শ্রেণির মধ্যে অবিরত সংঘর্ষ হয়।

৯। সামগ্রিক চাহিদার উপাদানগুলির বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তরঃ একটি দেশের একটি নির্দিষ্ট বছরে যে সকল দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদন হয়, সেই সকল দ্রব্য সামগ্রীর মোট চাহিদাকে সামগ্রিক চাহিদা বলে।

সামগ্রিক চাহিদা = C + I + G + (X – M)

এখানে C = ভোগ

I = বিনিয়োগ

G = সরকারি ব্যয়

X – M = শুদ্ধ রপ্তানির পরিমাণ

সামগ্রিক চাহিদার উপাদানগুলো হল-

১। পরিবারের ভোগ্য চাহিদাঃ পরিবার দৈনন্দিন ভোগকার্যের জন্য বিভিন্ন দ্রব্য ব্যবহার করে। পরিবার ভোগের জন্য কী পরিমাণ দ্রব্য ব্যবহার করবে, তা আয়ের স্তর এবং ভোগ প্রবণতা এ দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। আয়ের পরিমাণ অধিক‌ হলে সাধারণত মোট ভোগের পরিমাণ অধিক হয় এবং আয়ের পরিমাণ কম হলে মোট ভোগের পরিমাণ কম হয়। ভোগ ব্যয় নির্ধারণের দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে ভোগ প্রবণতা। ভোগ্যদ্রব্য ক্রয়ের ইচ্ছার তীব্রতাকে ভোগ প্রবণতা বলে। ভোগ প্রবণতার একটি অন্যতম বিশেষত্ব হল ব্যক্তির আয় বৃদ্ধি পেলে ভোগের মাত্রা বৃদ্ধি পায় কিন্তু যে পরিমাণ আয় বৃদ্ধি ঘটে, সে পরিমাণ ভোগ বৃদ্ধি পায় না।

২। ব্যক্তিগত বিনিয়োগ চাহিদাঃ অতিরিক্ত বাস্তব মূলধন সৃষ্টি হওয়াকে বিনিয়োগ বলে। যন্ত্রপাতি, কলকারখানা, উৎপাদনের সাজ সরঞ্জাম, কাঁচামাল ইত্যাদি প্রকৃত মূলধনের নেট বৃদ্ধির জন্য উৎপাদক বিনিয়োগ চাহিদা সৃষ্টি করে। উৎপাদকের বিনিয়োগ করার মূল প্রেরণা হচ্ছে মুনাফার প্রত্যাশা।

৩। সরকারি ব্যয়ঃ সরকার সমাজের চাহিদা মেটাতে ভোগ্যদ্রব্য ও মূলধনজাত দ্রব্য ক্রয় করতে পরিকল্পিত ব্যয় করে। সুতরাং, সরকারি ব্যয় হচ্ছে সামগ্রিক চাহিদার একটি অন্যতম উপাদান।

৪। শুদ্ধ রপ্তানিঃ শুদ্ধ রপ্তানি হল কোন দেশে রপ্তানিকৃত দ্রব্যের চাহিদার তুলনায় অন্যান্য দেশ সেই দেশ থেকে অধিক দ্রব্য আমদানি করে। অর্থাৎ রপ্তানি থেকে আমদানি বিয়োগ করলেই শুদ্ধ রপ্তানি বের করা যায়।

অথবা

নিম্নলিখিত যে কোনো চারটির সংজ্ঞা লেখো।

(ক) সামগ্রিক চাহিদা।

(খ) সামগ্রিক যোগান।

(গ) সক্রিয় চাহিদা।

(ঘ) পূর্ণ নিয়োগ।

(ঙ) অনৈচ্ছিত বেকারত্ব।

(চ) উপভোগ ফলন।

(ছ) এক্স-পোস্ট বিনিয়োগ।

উত্তরঃ (ক) একটি দেশের একটি নির্দিষ্ট বছরে যে সকল দ্রব্য সামগ্রী উৎপাদন হয়, সেই সকল দ্রব্যের মোট চাহিদাকে সামগ্রিক চাহিদা বলে।

(খ) একটি দেশের একটি নির্দিষ্ট বছরে যে সকল দ্রব্য সামগ্রী ও সেবাসামগ্রী উৎপাদন হয়, সেই সকল সামগ্রীর মুদ্রামূল্যকে সামগ্রিক যোগান বলে।

(গ) সক্রিয় চাহিদা হল সামগ্রিক চাহিদার নির্দিষ্ট স্তর যে স্তরে সামগ্রিক চাহিদা সামগ্রিক যোগানের সমান হয়।

(ঘ) চলিত মজুরির হারে কাজ করতে ইচ্ছুক এবং কাজ করতে সক্ষম সকল ব্যক্তি যদি নিয়োগের সুবিধা লাভ করে তাকে পূর্ণ নিয়োগ অবস্থা বলা হয়। পূর্ণ নিয়োগ এমন এক অবস্থা যেখানে অস্বেচ্ছাকৃত বেকার থাকে না।

(ঙ) যে সকল লোক প্রচলিত মজুরির হারে কাজ করতে ইচ্ছুক কিন্তু কাজ করার সামর্থ থাকা সত্বেও কাজের সুযোগ পাচ্ছে না, তাদেরকে অস্বেচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত বেকার বলে।

(চ) আয় এবং ভোগের পারস্পরিক সম্পর্ককে উপভোগ ফলন বলে।

c = f (y)

এখানে c = উপভোগ, f = ফলন, y = আয়।

(ছ) নির্দিষ্ট সময়ে অর্থনীতিতে উৎপাদক প্রকৃত বা বাস্তব বিনিয়োগকে Expost বিনিয়োগ বলে।

১০। (ক) বিনিয়োগ গুণক কী?

(খ) 200 কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ জাতীয় আয় 1000 কোটি টাকা বৃদ্ধি করে। বিনিয়োগ গুণকের মান নির্ণয় করো।

উত্তরঃ (ক) বিনিয়োগ পরিবর্তনের পরিমাণকে যে সংখ্যা দ্বারা গুণ করলে আয় পরিবর্তনের পরিমাণ পাওয়া যায়, তাই হচ্ছে বিনিয়োগ গুণক।

অথবা

(ক) প্রান্তিক উপভোগ প্রবণতা কী?

(খ) প্রান্তিক উপভোগ প্রবণতা এবং প্রান্তিক সঞ্চয় প্রবণতার মধ্যে সম্পর্কটি লেখো।

(গ) প্রান্তিক উপভোগ প্রবণতার মান ………… এবং  ………….. এর মধ্যে থাকে।

(ঘ) প্রান্তিক উপভোগ প্রবণতা (উপভোগ / সঞ্চয় / চাহিদা) রেখার ঢাল নির্দেশ করে। (শুদ্ধ বিকল্পটি বেছে নাও)

উত্তরঃ (ক) আয়ের পরিবর্তনের ফলে ভোগের যে আনুপাতিক পরিবর্তন হয় তাকে প্রান্তিক উপভোগ প্রবণতা বলে।

(খ) প্রান্তিক উপভোগ প্রবণতা (MPC) + প্রান্তিক সঞ্চয় প্রবণতা (MPS) = 1

(গ) প্রান্তিক উপভোগ প্রবণতার মান 0 এবং 1 এর মধ্যে থাকে।

(ঘ) প্রান্তিক উপভোগ প্রবণতা সঞ্চয় রেখার ঢাল নির্দেশ করে।

১১। মুদ্রার চারটি কার্যের বিষয়ে লেখো।

উত্তরঃ মুদ্রা হল সর্বজন গ্রাহ্য বিনিময়ের এক উৎকৃষ্ট মাধ্যম। মুদ্রার প্রাথমিক কার্যগুলি হল –

১। মুদ্রা বিনিময়ের মাধ্যম হিসাবে কার্য সম্পাদন করে।

২। মুদ্রা সঞ্চয়ের ভাণ্ডার হিসাবে কার্য সম্পাদন করে।

৩। মুদ্রা দেনা পাওনার মানদণ্ড রক্ষা করার কার্য সম্পাদন করে।

৪। মুদ্রা হিসাবের একটি সুবিধাজনক একক হিসাবে কাজ করে।

অথবা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চারটি গুরুত্বপূর্ণ কার্য সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ ১। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাগজী নোট প্রস্তুত করে।

২। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংককে ঋণ প্রদান করে।

৩। কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলা বাজারে লেনদেন করে মুদ্রাস্ফীতি প্রতিরোধ করে।

৪। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকের ব্যাংক হিসাবে কাজ করে।

১২। সরকারি রাজস্বের যে কোনো চারটি উৎসের বিষয়ে আলোচনা করো।

উত্তরঃ সরকারি রাজস্বের উৎসগুলো নিম্নরূপঃ

১। কর রাজস্বঃ সাম্প্রতিককালে সরকারি রাজস্বের একটি প্রধান উৎস হল কর। কোনরূপ প্রত্যক্ষ লাভের বা সুযোগ সুবিধার আশা না করে জনগণ সরকারকে বাধ্যতামূলকভাবে যে অর্থ প্রদান করতে হয়, তাকেই কর বলে। কর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হতে পারে।

২। প্রশাসনিক রাজস্বঃ প্রশাসনিক কার্যাবলির দ্বারা সরকারের যে রাজস্ব সংগৃহীত হয়, তাকে প্রশাসনিক রাজস্ব বলে। যেমন – ফিজ, লাইসেন্স ফি, জরিমানা ইত্যাদি।

৩। বাণিজ্যিক রাজস্বঃ সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান থেকে দ্রব্য ও সেবা বিক্রি করে অর্জিত রাজস্বকে বাণিজ্যিক রাজস্ব বলে। যেমন- রেল, ডাক ও তার, বেতার, দূরদর্শন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ইত্যাদি।

৪। দান-অনুদানঃ ব্যক্তি, সংগঠন ও বৈদেশিক সরকারের স্বেচ্ছায় দেওয়া দান সরকারি রাজস্বের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা হয়।

অথবা

সরকারী রাজস্বের পরিকল্পনা ব্যয় এবং পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয় কী? পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয়ের দুটি দফা/পদ উল্লেখ করো।

উত্তরঃ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দেওয়া বিষয়গুলো প্রতিবছর ব্যয় করার জন্য সরকারি বাজেটে সুবিধা রাখা হয়। বাজেটে সুবিধা রাখা সে ধরনের ব্যয়কেই পরিকল্পনা ব্যয় বলা হয়। পরিকল্পনা ব্যয় বাজেটে উল্লেখ থাকে এবং বাজেটে প্রতি বছর বিভিন্ন প্রকল্পে কত টাকা ব্যয় করা হবে তার হিসেব থাকে। রাস্তা ও সেতু নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, জলসেচ ও গ্রামোন্নয়ন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয় কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার মাধ্যমে রূপায়ণ হয়। সুতরাং, এধরনের ব্যয় পরিকল্পনা ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত।

সরকারের দৈনিক বা নিয়মিত কার্যগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকারি বাজেটে সুবিধা সৃষ্টি করে রাখা হয়। সেক্ষেত্রে যে ব্যয় হয়, তাকে পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয় বলে। দৃষ্টান্তস্বরূপঃ বিদেশি শক্তির আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার গুরুদায়িত্ব কোন সরকার অবজ্ঞা করতে পারবে না।

১। সরকারি কর্মচারীর বেতন।

২। প্রতিরক্ষা ব্যয়।

১৩। বাজেট কী? সরকারী বাজেটের উদ্দেশ্যসমূহ আলোচনা করো।

উত্তরঃ সরকারি বাজেট হল একটি বিত্তীয় বর্ষের সরকারের প্রত্যাশিত ব্যয় এবং সেই ব্যয়ের জন্য প্রয়োজনীয় বিত্তের উৎস সমূহের এক বিবৃতি।

বাজেট নীতির প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হল –

১। কার্যক্ষম প্রশাসন ব্যবস্থাঃ এই উদ্দেশ্য সফল করার জন্য সরকারি পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিধানমণ্ডল, ন্যায়ালয়, সরকারি কার্যালয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হয়।

২। আন্তঃকাঠামো উন্নত করাঃ এই উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্য সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পানীয় জল ও বিদ্যুতের যোগান, পরিবহন, ডাক ও দূরসংযোগ সেবা, রাস্তাঘাট, সেতু, পার্ক নির্মাণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয় ধার্য করতে হয়।

৩। আয়ের অসমতা হ্রাস করাঃ ধনী ব্যক্তির ওপর অধিক কর আরোপ করে এবং দরিদ্র লোকদের জন্য অধিক ব্যয় করে আয়ের অসমতা হ্রাস করা যায়।

৪। অর্থনৈতিক সুস্থিরতা নিশ্চিত করাঃ অর্থনৈতিক সুস্থিরতা বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করে। বাজেটীয় নীতির দ্বারা সরকার অত্যাবশ্যকীয় সেবা এবং সামগ্রীর দামের সুস্থিরতা নিশ্চিত করে।

৫। অর্থনৈতিক বৃদ্ধিঃ বাজেটের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হল দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ প্রশস্ত করা। উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে বাজেটই হবে উন্নয়নের পথ প্রদর্শক। দেশের অর্থনীতিতে গতিশীলতা সৃষ্টি করার দায়িত্ব নির্ভর করে বাজেটের ওপর।

অথবা

সরকারী বাজেটের উপাদানসমূহ আলোচনা করো।

উত্তরঃ সরকারের আয় ব্যয়ের বার্ষিক আগাম হিসাবকে সরকারি বাজেট বলা হয়। সরকারি বাজেট আগামী এক বৎসরের জন্য সরকারের প্রত্যাশিত আয় এবং প্রস্তাবিত ব্যয়ের বিবরণ। এই বিবরণে বিগত সময়ের আয়-ব্যয়ের হিসাবও প্রদান করা হয়ে থাকে।

সরকারি বাজেটের দুটি অংশ থাকে – রাজস্ব বাজেট (Revenue budget) এবং মূলধনী বাজেট (Capital budget)। উভয় বাজেটের আরও দুটি দিক আছে – প্রাপ্তি ও ব্যয়। রাজস্ব প্রাপ্তির মধ্যে আছে কর রাজস্ব ও অনাকর রাজস্ব। কর রাজস্বের অন্তর্গত বিষয়গুলি হচ্ছে – আয় কর, সম্পদ কর, নিগম কর, কাস্টম ডিউটি, বিক্রি কর ইত্যাদি। অনাকর রাজস্বের উৎসগুলি হচ্ছে মাশুল, লাইসেন্স, ফাইন, পেনাল্টি, দান-অনুদান, রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত আয় ইত্যাদি। রাজস্ব ব্যয়ের মধ্যে আছে রাজস্ব আদায়ের জন্য সরকারের সর্বপ্রকারের ব্যয়, কর্মচারীদের বেতন, প্রতিরক্ষা সেবা, প্রদেয় সুদ, ভর্তুকি ইত্যাদি। 

মূলধন প্রাপ্তি থেকে যদিও সরকারের আয় বৃদ্ধি হয় কিন্তু এটি সরকারের দায় বা বোঝা বহুলাংশে বৃদ্ধি করে। সরকারি ঋণ উদ্ধার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, IMF, World বা বিদেশি রাষ্ট্র থেকে সংগৃহীত ঋণ, অংশপত্র বিক্রির প্রাপ্তি – এগুলির দ্বারা মূলধন প্রাপ্তি বা মূলধন সংগ্রহ করা হয়। মূলধনী ব্যয় হল সেই ব্যয় যার দ্বারা নতুন মূলধন সম্পত্তির সৃষ্টি হয় বা সরকারের দায় হ্রাস পায়। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ঋণের যোগান রাস্তা ও সেতু নির্মাণ, রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানে প্রদেয় ঋণ ইত্যাদি হল মূলধনী ব্যয়।

অথবা

নীচের যে কোনো দুটির বিষয়ে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।

(ক) রাজস্ব হিসাব।

(খ) মূলধন হিসাব।

(গ) জনসাধারণের দ্রব্য।

(ঘ) সরকারি ব্যয়।

(ঙ) ঘাটতি বাজেট।

উত্তরঃ (ক) রাজস্ব হিসাবে বা রাজস্ব বাজেটে দুটি অংশ থাকে – রাজস্ব সংগ্রহ এবং রাজস্ব ব্যয়। রাজস্ব সংগ্রহের মধ্যে আছে কর রাজস্ব এবং অনাকর রাজস্ব। রাজস্ব ব্যয়ের মধ্যে আছে রাজস্ব আদায়ের জন্য সর্বপ্রকারের ব্যয়, কর্মচারীদের বেতন ইত্যাদি। অর্থনৈতিক সেবা প্রকল্প, রাস্তাঘাট নির্মাণের ব্যয়, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যয় ইত্যাদি রাজস্ব বাজেটের ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত।

(খ) সরকারি বাজেটের মুলধন প্রাপ্তি বা মূলধনী খাতে আয়ের উপাদানগুলো হল-

১। সরকারি ঋণ উদ্ধার অর্থাৎ পূর্বেকার ঋণের টাকা ফেরত আদায়।

২। বাজার থেকে সংগৃহীত ঋণ।

৩। অংশপত্র বিক্রির প্রাপ্তি।

৪। সরকার ভবিষ্য নিধি (PF), পোষ্ট অফিস সঞ্চয় প্রকল্প ও জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্প ইত্যাদি থেকে নেওয়া ঋণ।

(গ) যে সকল দ্রব্য এবং সেবা সরকার সার্বজনীন ভোগের জন্য উৎপাদন করে তাকে জনসাধারণের দ্রব্য বলে। জনসাধারণের দ্রব্যের কোনো মালিকানা থাকে না ফলে এসকল দ্রব্যের কোনো মাশুল আদায় করার সুযোগ থাকে না। এমনকি কাউকে বঞ্চিত করারও কোনো সুযোগ থাকে না। যেমন – সরকারি পার্ক, জাতীয় রাজপথ ইত্যাদি।

(ঘ) আধুনিককালে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল নিম্নরূপঃ –

১। আধুনিক রাষ্ট্র হল কল্যাণকামী রাষ্ট্র। সকলের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, সুশিক্ষা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। দরিদ্র, অসহায়, বৃদ্ধ, পঙ্গু লোকদের সাহায্য দান রাষ্ট্রের কর্তব্য বলে বিবেচিত হয়। এরূপ নানা ধরনের কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পায়।

২। দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করা ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ হতে দেশ রক্ষা করা প্রত্যেক রাষ্ট্রের প্রাথমিক কর্তব্য। এই কর্তব্য পালনের জন্য সরকারকে গৃহ ও প্রতিরক্ষা খাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়।

৩। আধুনিককালে সরকার আর্থিক বৈষম্য দূর করতে নানাধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করছে। এরূপ দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পগুলি খুবই ব্যয়বহুল এবং তাদের বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবছর সরকারকে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়।

৪। আর্থিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সরকারকে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেতন, ভাতা, পেনসন ইত্যাদি বাড়াতে হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণকে বণ্টন করতে হয়। সর্বোপরি দ্রুতগতিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সরকারি দ্রব্য ও সেবার যোগান বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সরকারি ব্যয় প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি হচ্ছে।

(ঙ) বাজেটে যখন সম্ভাব্য আয়ের তুলনায় প্রস্তাবিত ব্যয় বেশি দেখানো হয়, তখন একে বাজেট ঘাটতি বলে।

বাজেট ঘাটতির প্রকারভেদ হলঃ-

১। রাজস্ব ঘাটতি।

২। রাজকোষীয় ঘাটতি বা ফিসক্যাল ঘাটতি।

৩। প্রাথমিক ঘাটতি।

১৪। দ্বিখণ্ডবিশিষ্ট অর্থনীতিতে জাতীয় আয়ের চক্রবৎ প্রবাহ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ অর্থনীতিতে উৎপাদন ও ভোগ প্রক্রিয়া চলতে থাকার ফলে ফার্ম ও পরিবারের মধ্যে আয়-ব্যয় প্রবাহের সৃষ্টি হয়। এই প্রবাহ বৃত্তাকারে আবর্তিত থাকে। কারণ একটি ক্ষেত্রের ব্যয় অন্য ক্ষেত্রের আয় হিসাবে সৃষ্ট হয়। আয় এবং ব্যয়ের এই অবিরত প্রবাহকেই অর্থনীতিতে আয়ের বৃত্তাকার বা চক্রাকার প্রবাহ বলে।

নিচের চিত্রের সাহায্যে এই বৃত্তাকার প্রবাহের ধারণাটি ব্যাখ্যা করা হল—

ওপরের তালিকায় দেখা যাচ্ছে যে, উৎপাদনের উপকরণের যোগানদাতা হল পরিবারবর্গ। ওই উপকরণ বিক্রি করে পরিবারবর্গের আয় হয়, যা ফার্মের ব্যয় অর্থাৎ ফার্মের ব্যয়ই পরিবারের আয় হিসাবে সৃষ্টি হচ্ছে। আবার, পরিবারের সদস্যরা যখন দ্রব্যসামগ্রী কিনতে এই অর্থ ব্যয় করবে, তখন ওই অর্থ আবার ফার্মের কাছে গিয়ে পৌঁছবে। অর্থাৎ যেখান থেকে শুরু করা হচ্ছে, সেখানেই শেষ হচ্ছে বলে একে আয়ের চক্রীয় প্রবাহ বলা হয়।

অথবা

মোট/স্থূল ঘরোয়া উৎপাদন (GDP) কে একটি দেশের কল্যাণের সূচকরূপে ব্যবহার করা যায় না। কারণসমূহ আলোচনা করো।

উত্তরঃ সাধারণতঃ GDP কে আর্থিক কল্যাণের সূচক হিসাবে গণ্য করা হয়। অন্যান্য বিষয় স্থির থাকলে, GDP বৃদ্ধি পেলে জনগণের আর্থিক কল্যাণ সাধিত হবে। তাছাড়া GDP- র কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, যা প্রমাণ করে GDP একটি দেশের জনসাধারণের কল্যাণের মাপের সূচক বলে গণ্য করা শুদ্ধ নয়। নিচে GDP এর সীমাবদ্ধতা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হল।

১। মোট ঘরোয়া উৎপাদন বৃদ্ধি হলেও জনসাধারণের কল্যাণ বৃদ্ধি হয়েছে তা বুঝায় না, কারণ যদি বর্ধিত উৎপাদনের বৃহৎ অংশ কতিপয় পুঁজিপতির হস্তে কুক্ষিগত থাকে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ লোকের হস্তে এর কোন অংশ পৌঁছেনি।

২। অর্থের মাপকাঠিতে করা হয়ে থাকে। কিন্তু একটি অর্থনীতির উৎপাদনের একটি মোটা অংশ বাজারে ক্রয় বিক্রয় হয় না। যেমন – কৃষক উৎপন্ন দ্রব্যের একাংশ নিজে ভোগ করে। আবার অনেক সময় সরাসরি বিনিময় চলে। তাছাড়া অনেক সেবামূলক কাজ আছে যার মূল্য ধরা হয় না। এরূপ অবস্থায় অর্থমূল্যে GDP. সঠিকভাবে পরিমাপ করা কঠিন।

৩। কিছু বাহ্যিক উপাদান আছে যা মূল্যায়ন হয় না অথচ এই উপাদানগুলো জনকল্যাণের পরিমাণ অবনমিত করেছে। কিন্তু এর কোন মুদ্রাগত মূল্যায়ন হয় না। উদাহরণস্বরূপ – মটরগাড়ির সাথে দুই পক্ষ জড়িত আছে। মটরগাড়ি উৎপাদন প্রতিষ্ঠান এবং মটরগাড়ির মালিক। মটরগাড়ির সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাবে, বায়ু ও শব্দ দূষণের মাত্রা তত বৃদ্ধি পাবে। এই তৃতীয় পক্ষ যার মটরগাড়ির সঙ্গে কোন ধরনের সম্পর্ক নেই সেই পক্ষের ক্ষতিসাধন হবে। কিন্তু এই ক্ষতিসাধনের কোন মূল্যায়ন হয় না।

8। GDP যদি প্রকৃত বৃদ্ধি না হয়ে মুদ্রাগত বৃদ্ধি হয়, তাহলে মোট ঘরোয়া উৎপাদন জীবনধারণের মানদণ্ড উন্নতির সূচক হতে পারে না।

৫। মদ, গাঁজা, বিড়ি-সিগারেট, নেশাজাত ঔষধ এবং অস্ত্রশস্ত্রের উৎপাদন বৃদ্ধি হলে GDP বৃদ্ধি হবে কিন্তু কল্যাণ হ্রাস পাবে।

৬। অনেক সময় পেশাগত শ্রেণিকরণ করা দুষ্কর। কারণ একই ব্যক্তি একাধিক উৎস থেকে আয় উপার্জন করে থাকে। ফলে GDP এর পরিমাপে অসুবিধা পরিলক্ষিত হয়।

৭। GDP বৃদ্ধির হার অপেক্ষা জনসংখ্যা বৃদ্ধির পরিমাণ বেশি হলে আর্থিক কল্যাণ বৃদ্ধি পাবে না।

উপরোক্ত  কারণে  মোট ঘরোয়া উৎপাদন অর্থাৎ  GDP একটি দেশের জনসাধারণের কল্যাণের মাপের সূচক বলে গণ্য করা সঠিক  নয়।

অথবা

নীচের যে কোনো তিনটি জোড়ার মধ্যে দুটি করে পার্থক্য লেখো।

(ক) মজুত এবং প্রবাহ।

(খ) উপভোগ্য দ্রব্য এবং মূলধনী দ্রব্য।

(গ) মধ্যবর্তী দ্রব্য এবং চূড়ান্ত দ্রব্য।

(ঘ) মোট বিনিয়োগ এবং নীট বিনিয়োগ।

(ঙ) পূর্ববর্তী দ্রব্যের পরিকল্পিত এবং অপরিকল্পিত পরিবর্তন।

(চ) প্রকৃত GDP এবং নামমাত্র GDP।

উত্তরঃ (ক) ষ্টক বা মজুত হল নির্দিষ্ট সময় বিন্দুতে অর্থনৈতিক চলকের পরিমাণ নির্ধারণ করা কিন্তু প্রবাহ হল একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অর্থনৈতিক চলকের পরিমাণ নির্ধারণ করা। 

ষ্টক হল স্থির ধারণা। যেমন – যন্ত্রপাতির পরিমাণ, টাকার পরিমাণ, মোট অর্থের যোগান; সম্পদের পরিমাণ ইত্যাদি। প্রবাহ হল গতিশীল ধারণা। যেমন – আয়, উৎপাদন, লাভ, নির্দিষ্ট সময়সীমায় ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ইত্যাদি।

(খ) যে সকল চূড়ান্ত দ্রব্য উপভোক্তারা উপভোগ করে বা যেটি উপভোক্তার তাৎক্ষণিক চাহিদা পূরণ করে, তাকে উপভোক্তার দ্রব্য বা ভোগ্যবস্তু বলে। এটি পরিষেবাকেও অন্তর্ভুক্ত করে। যেমন – ভাত, রুটি ও কাপড় ইত্যাদি।

যে সকল মধ্যবর্তী দ্রব্য উৎপাদন কার্যে ব্যবহার করা হয়, তাকে মূলধনী দ্রব্য বলে। যেমন – কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি।

(গ) যে সকল দ্রব্য উৎপাদনের কাঁচামাল বা উপকরণ হিসাবে ব্যবহার করা হয়, সেগুলোকে মধ্যবর্তী বা অন্তর্বর্তী দ্রব্য বলে। অর্থাৎ উৎপাদক বস্তুই হল মধ্যবর্তী দ্রব্য।‌ যেমন টিন বা লোহার পাত যা মোটরগাড়ি তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় তা হল মধ্যবর্তী দ্রব্যের উদাহরণ।

যে সকল দ্রব্য শেষ ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়, তা  থেকে অন্য কোনো পর্যায়ে উৎপাদন সম্ভব নয়, তাকে চূড়ান্ত বা অন্তিম দ্রব্য বলে। অর্থাৎ ভোগ্য বস্তুই হল।‌ চূড়ান্ত দ্রব্য। খাদ্যদ্রব্য, ‘কাপড় হল অন্তিম দ্রব্যের উদাহরণ।

(ঘ) বিনিয়োগ হল এক প্রবাহ ধারণা। মূলধন যখন উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত হয়, সেটাকে বিনিয়োগ বলে। এক লাখ টাকা জমা থাকলে সেটাই মূলধন, কিন্তু এ টাকা দিয়ে যন্ত্রপাতি কিনে বস্তু উৎপাদনের একটি কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হলে তখনই তা বিনিয়োগ হবে। এই বিনিয়োগ থেকে নিয়মিত উৎপাদন এবং উপার্জন হবে। তাই বিনিয়োগকে প্রবাহমান বলা হয়েছে।

একটি নির্দিষ্ট বছরে স্থায়ী সম্পত্তি ক্রয় বাবদ ব্যয় এবং তৎসঙ্গে মজুত ভাণ্ডার যোগ করলেই মোট বিনিয়োগ বুঝায়। যন্ত্রপাতি, উৎপাদনের সাজ সরঞ্জাম, কলকারখানা, পরিবহন সামগ্রী, রাস্তাঘাট এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ইত্যাদি প্রকৃত মূলধন ব্যয় করার জন্য যে ব্যয় করা হয়, তাকে মোট বিনিয়োগ বলে। 

সাংকেতিকভাবে,

মোট বিনিয়োগ = স্থায়ী সম্পত্তির খাতে ব্যয় + মজুত ভাণ্ডার 

শুদ্ধ বিনিয়োগ বলতে অতিরিক্ত মূলধন সামগ্রীর পরিমাণকে বুঝায়। শুদ্ধ বিনিয়োগ মূলধনী মজুতের ক্ষয়ক্ষতির পুনঃস্থাপন অন্তর্ভুক্ত করে না। অতিরিক্ত বাস্তব মূলধন সৃষ্টির নামই হল শুদ্ধ বিনিয়োগ।

সাংকেতিকভাবে,

শুদ্ধ বিনিয়োগ = মোট বিনিয়োগ – অবচয়।

(ঙ) অর্থনীতিতে  একটি প্রতিষ্ঠান অবিক্রিত  দ্রব্য, অব্যবহৃত  কাঁচামাল অথবা অর্ধ চূড়ান্ত দ্রব্য এক বছর থেকে অন্য বছরে টেনে নিয়ে যায় , সেই দ্রব্যসমূহকে  পূর্ববর্তী  দ্রব্য  বলে।

পূর্ববর্তী  দ্রব্যের পরিবর্তন  পরিকল্পিত  অথবা  অপরিকল্পিত হতে পারে। বিক্রি অপ্রত্যাশিতভাবে হ্রাস পেলে প্রতিষ্ঠানটির  অবিক্রিত  দ্রব্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং অপরিকল্পিত মজুত বৃদ্ধি পায়। এর বিপরীতে  বিক্রির  পরিমাণ আশাতীতভাবে  বৃদ্ধি পেলে পূর্ববর্তী  দ্রব্যের মজুত  অপরিকল্পিতভাবে  হ্রাস পাযয়।

(চ) একটি দেশে এক বছরের মধ্যে আভ্যন্তরীণ উৎস থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ের উৎপন্ন দ্রব্য এবং সেবা কার্যাদির অর্থমূল্যকে স্থির মূল্যে অর্থাৎ ভিত্তিবর্ষের হিসাবে গণনা করলে প্রকৃত GDP গণনা করা যায়। কিন্তু চলতি দামে মোট ঘরোয়া উৎপাদন গণনা করাকে নামিক GDP (Nominal GDP) বলে।

দেশের উৎপন্ন স্তর বৃদ্ধি হলে প্রকৃত GDP বৃদ্ধি পাবে কিন্তু দেশের উৎপন্ন স্তর বৃদ্ধি না হয়েও নামিক GDP বাড়তে পারে। প্রকৃত GDP এর অন্য নাম হল GDP at constant prices (স্থির দামে GDP)। নামিক GDP এর অন্য নাম হল GDP a current price (প্রচলিত দামে GDP)।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top