Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল

Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল and select needs one.

Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল

Join Telegram channel

Also, you can read SCERT book online in these sections Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল for All Subject, You can practice these here..

প্রশ্ন ২১। এশিয়া মহাদেশে কি কি প্রকারের জলবায়ু দেখা যায় ? এই জলবায়ুগুলো বিরাজ করা অঞ্চলসমূহ মানচিত্রে চিহ্নিত করে সেগুলোর বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে বর্ণনা কর । 

উত্তৰঃ এশিয়ার বিভিন্ন জলবায়ু অঞ্চল :- উষ্ণতা , বৃষ্টিপাত ও জলবায়ুর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের তারতম্য অনুসারে এশিয়া মহাদেশে নিম্নলিখিত বিভিন্ন প্রকারের জলবায়ু অঞ্চল (Climatic Regions ) দেখা যায় ; যথা ―

( ১ ) নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চল ।

( ২ ) ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চল ।

( ৩ ) মরু জলবায়ু অঞ্চল ।

( ৪ ) নাতিশীতোষ্ণ মরু জলবায়ু অঞ্চল ।

( ৫ ) উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ পূর্ব উপকূলীয় চিনদেশীয় ( মাঞ্চুরীয়) জলবায়ু অঞ্চল ।

( ৬ ) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Join Now

( ৭ ) ষ্টেপস ( নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি ) জলবায়ু অঞ্চল ।

( ৮ ) শীতল নাতিশীতোষ্ণ ( সাইবেরীয় ) জলবায়ু অঞ্চল ।

( ৯ ) তুন্দ্রা ( সুমেরুদেশীয় জলবায়ু অঞ্চল । 

( ১০ ) আলপাইন জলবায়ু অঞ্চল । 

( ১ ) নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চল ( The Equatorial climate) :- এশিয়ার দক্ষিণে নিরক্ষ রেখার কাছাকাছি ( ০° থেকে ১০° উত্তর ও দক্ষিণ ) অঞ্চলে পূর্বভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ , ফিলিপাইনস ও মালয় উপদ্বীপে নিরক্ষীয় জলবায়ু দেখা যায় । এই 

জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য :- 

( i ) সারাবছর একই রকমের উঁচু তাপমাত্রা ( ২৬.৬° সে . ) ।

( ii ) শীত – গ্রীষ্ম উষ্ণতার পার্থক্য কম ।

( iii ) সারা বছর প্রায় অপরাহ্নে পরিচলন ক্রিয়ায় প্রচুর বৃষ্টিপাত ( ২০০ থেকে ২৫০ সে.মি)।

( iv ) বৃষ্টিপাত একসঙ্গে প্রচুর ঘটে । 

( v ) সারা বছর একই রকম ঋতু বিরাজ করে অর্থাৎ ঋতু পরিবর্তন নেই । প্রচণ্ড উষ্ণতা ও আর্দ্রতা এই জলবায়ুর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য । 

( ২ ) ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চল ( Tropical Monsoon Climate ) :- এই ধরনের জলবায়ু দক্ষিণ – পূর্ব ও পূর্ব এশিয়ার ভারত , বাংলাদেশ , মায়ানমার , থাইল্যাণ্ড , ইন্দোচিন , চিন ও জাপানের স্থানবিশেষে দেখা যায় । 

এই জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য হল : 

( i ) শীতকালীন শুষ্কতা ও গ্রীষ্মকালীন বৃষ্টিপাত । 

( ii ) শীত ( ৮° থেকে ১৫° সে ) ও গ্রীষ্মে ( ২৮° থেকে ৩৫° সে. ) উষ্ণতার পার্থক্য যথেষ্ট থাকে । 

( iii ) প্রধানত গ্রীষ্মকালের দ্বিতীয় পর্বে বা শেষভাগে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় । 

( iv ) ভূমিরূপের পার্থক্য অনুসারে বৃষ্টিপাতের বণ্টন বিভিন্ন রকমের ( ৭৫ সে.মি. থেকে ৩০০ সে.মি. বা তার বেশি ) । 

( v ) একটানা দিনের পর দিন বৃষ্টিপাত হয় না , দুই – চারদিন বৃষ্টিপাতের পরে দুই – চারদিন শুষ্ক থাকে । এই জলবায়ু প্রধানত গ্রীষ্মপ্রধান । 

( ৩ ) ক্রান্তীয় উষ্ণ মরু জলবায়ু ( Hot Desert Climate ) :- দক্ষিণ পশ্চিম ও মধ্য এশিয়ার জলবায়ু উষ্ণ মরু প্রকৃতির । 

( i ) চরম উষ্ণতা ও প্রচণ্ড শুষ্কতা এখানকার জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য । 

( ii ) দিনে ও রাতে এবং শীত ও গ্রীষ্মে উষ্ণতার পার্থক্য অত্যন্ত বেশি ( ৩০° -৪০° সে . ) । 

( iii ) বৃষ্টিপাতের বৃষ্টিপাত হয় না । পরিমাণ ২০ সেমি – র কম। 

( iv ) কোনো কোনো সময়ে বছরের পর বছর 

( ৪ ) নাতিশীতোষ্ণ মরু জলবায়ু অঞ্চল :- মধ্য এশিয়ার তিব্বতে ও তার চারিদিকের জলবায়ু এই প্রকৃতির । 

এখানকার জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য হল –

( i ) গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরম ।

( ii ) শীতকালে তীব্র ঠাণ্ডা ।

( iii ) বৃষ্টিপাত অতি অল্প ; অনেকক্ষেত্রে প্রায় হয় না বললেই চলে । 

( ৫ ) উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ পূর্ব উপকূলীয় চিনদেশীয় ( মাঞ্চুরীয় ) জলবায়ু অঞ্চল :- উত্তর চিনের উত্তরভাগে এবং কোরিয়া ও জাপানের স্থানবিশেষে এই প্রকার জলবায়ু দেখা যায় । এই জলবায়ু উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ মৌসুমি প্রকৃতির । 

( i ) এই জলবায়ু অনেকটা ক্রান্তীয় মৌসুমী প্রকৃতির , তবে বেশি শীতল । 

( ii ) ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ুর সঙ্গে এই জলবায়ুর মূল পার্থক্য হল— এখানকার শীতকাল তীব্র শীতল । 

( iii ) শীতকালীন উষ্ণতা হিমাঙ্কের নীচে নেমে যায়। 

( iv ) শীতকালে তুষারপাত স্বাভাবিক ঘটনা । 

( v ) গ্রীষ্মকালে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হয় ।

( ৬ ) ভূমধ্য সাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল :- ভূমধ্য সাগরের তীরবর্তী সিরিয়া , লেবানন , জর্ডন , ইস্রাইল , তুরস্ক প্রভৃতি দেশের অংশবিশেষে এই জলবায়ু দেখা যায় । 

এই জলবায়ুর প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল ―

( i ) গ্রীষ্মকাল শুষ্ক থাকে । 

( ii ) শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় । 

( iii ) বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম বা মাঝারি রকমের ৪০ সে.মি. থেকে ৮০ সেমি .। 

( iv ) গ্রীষ্মকালীন উষ্ণতা ২০° থেকে ২৮° সে র মধ্যে থাকে এবং শীতকালীন গড় উষ্ণতা ৫° সে . থেকে ১০° সে .। 

( v ) পার্বত্য অঞ্চল ছাড়া অন্য কোথাও বিশেষ তুষারপাত হয় না । 

( vi ) বছরের বেশির ভাগ সময়ে আকাশ পরিষ্কার থাকে এবং রোদ ঝলমলে আবহাওয়া বিরাজ করে । সুমিষ্ট ফলের জন্য এই জলবায়ু অঞ্চল বিখ্যাত । 

( ৭ ) ষ্টেপস ( নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি ) জলবায়ু অঞ্চল :- দক্ষিণ – পশ্চিম সাইবেরিয়া ও মঙ্গোলিয়ার স্থানবিশেষে এই জলবায়ু দেখা যায় । 

( i ) শীতকাল দীর্ঘ ও অত্যন্ত তীব্র ।

( ii ) গ্রীষ্মকালে ক্ষণস্থায়ী , কিন্তু উষ্ণ ।

( iii ) বৃষ্টিপাত অতি সামান্য ( ২৫ সেমি . – ৩৫ সেমি . ) হয় । শীতকালে যে তুষারপাত হয় তা গ্রীষ্মের আগমনে গলে যায় এবং সবুজ তৃণভূমির সৃষ্টি করে । 

( ৮ ) শীতল নাতিশীতোষ্ণ ( সাইবেরীয় ) জলবায়ু অঞ্চল :- এশিয়ার উত্তরভাগে গোটা সাইবেরিয়া অঞ্চলের জলবায়ু এই প্রকৃতির । এখানে ―

( i ) শীতকাল সুদীর্ঘ ও অত্যন্ত শীতল ।

( ii ) গ্রীষ্মকাল স্বল্পস্থায়ী ও ঠাণ্ডা ।

( iii ) গ্রীষ্মকালে হালকা বৃষ্টিপাত হয় ।

( iv ) শীতকালে প্রচুর তুষারপাত ঘটে । এই অঞ্চল চিরহরিৎ সরলবর্গীয় অরণ্যে ( তৈগা ) আবৃত ) ।

( ৯ ) তুন্দ্রা ( মেরুদেশীয় জলবায়ু ) অঞ্চল :- এশিয়ার উত্তরে সুমেরু মহাসাগরের উপকূলে এই অঞ্চল অবস্থিত । 

( i ) এখানকার গ্রীষ্মকাল অতি স্বল্পস্থায়ী ও শীতল ।

( ii ) শীতকাল দীর্ঘ ও ঠাণ্ডা ।

( iii ) বছরের বেশির ভাগ সময় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নীচে থাকে ।

( iv ) এখানকার বেশির ভাগ অঞ্চল তুষারে আবৃত থাকে । গ্রীষ্মে কিছু বরফ গললে গাছপালাহীন প্রান্তরে মস্ , লাইকেন ও শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদ জন্মে ।

( ১০ ) আলপাইন জলবায়ু অঞ্চল :- এশিয়ার উচ্চ পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে এই জলবায়ু দেখা যায় । বরফে আবৃত পর্বতের উচ্চ অংশে অতি শীতল আলপাইন প্রকারের জলবায়ু বিরাজ করে । হিমালয় সহ মহাদেশটির অতি উচ্চ অঞ্চলে এই জলবায়ু অনুভূত হয় । 

প্রশ্ন ২২। এশিয়া মহাদেশকে কেন বৈচিত্র্যপূর্ণ মহাদেশ বলা হয় । 

উত্তৰঃ এশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ । এশিয়ার হিমালয় পৃথিবীর উচ্চতম পর্বত ও এর শৃঙ্গ এভারেষ্ট পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ । এশিয়ায় অবস্থিত পামীর পৃথিবীর উচ্চতম মালভূমি । আবার জর্ডন নদীর উপত্যকা এলখোর ও মরুসাগর স্থলভাগের মধ্যে নিম্নতম স্থান । 

এশিয়ার কাস্পিয়ান পৃথিবীর বৃহত্তম ও বৈকাল পৃথিবীর গভীরতম হ্রদ । পৃথিবীর বিশালতম সমভূমি সাইবেরিয়া । পাকিস্তানের অন্তর্গত জাকোবাবাদ পৃথিবীর উচ্চতম স্থান এবং সাইবেরিয়ার ভার্খয়ানস্ক লোকবসতিযুক্ত শীতলতম স্থান । ভারতবর্ষের চেরাপুঞ্জি ও মৌসিনরাম নামক স্থানে পৃথিবীর মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি বৃষ্টিপাত হয় । আবার দক্ষিণ ইরানে একেবারেই বৃষ্টিপাত হয় না । এশিয়ার একদিকে যেমন উদ্ভিদবিহীন মরুভূমি ও তুষার অঞ্চল অন্যদিকে তেমনি চিরহরিৎ বৃক্ষযুক্ত বনভূমি । 

এই মহাদেশেই হিন্দু , মুসলমান , খ্রিস্টান , বৌদ্ধ , জৈন , শিখ, ইহুদী , পার্শী প্রভৃতি সকল ধর্মের প্রবর্তকগণের জন্ম হয়েছিল । এখানে আবার অতি অনুন্নত জনজাতিও আছে । 

পৃথিবীর অতি প্রাচীন সভ্যতার বিকাশ এশিয়া মহাদেশেই হয়েছিল অথচ এখানে অনেক বনবাসী এবং যাযাবর জাতিও বাস করে । 

এশিয়ার বিভিন্ন স্থানে পৃথিবীর প্রায় সকল রকম জলবায়ু দেখতে পাওয়া যায় । এই মহাদেশেই পৃথিবীর প্রধান প্রধান ধর্ম ও সভ্যতার উৎপত্তি ও বিকাশ হয়েছিল । 

উপরোক্ত কারণসমূহের জন্য এশিয়া মহাদেশকে বৈচিত্র্যময় মহাদেশ বলে ।

ইউরোপ

প্রশ্ন ১। ইউরোপ মহাদেশ কিসের দ্বারা আফ্রিকা মহাদেশ হতে বিভক্ত হয়েছে ? 

উত্তৰঃ জিব্রাল্টার প্রণালী দ্বারা । 

প্রশ্ন ২। ইউরোপের দক্ষিণ – পূর্বে থাকা দুইটি সাগরের নাম লিখ । 

উত্তৰঃ কাস্পিয়ান সাগর ও কৃষ্ণসাগর । 

প্রশ্ন ৩। ইউরোপ মহাদেশের বিস্তৃতি কত ? 

উত্তৰঃ উত্তর – দক্ষিণে প্রায় ৩৮৪০ কি.মি বিস্তৃত এবং পূর্ব – পশ্চিমে প্রায় ৫৭৬০ কি.মি .। 

প্রশ্ন ৪। ইউরোপ মহাদেশ ভারতবর্ষ হতে কতগুণ বড় ? 

উত্তৰঃ প্রায় ৩ গুণ বড় । 

প্রশ্ন ৫। ইউরোপের উপকূলভাগের দৈর্ঘ্য কত ? 

উত্তৰঃ প্রায় ৩৮,৪০০ কি.মি .। 

প্রশ্ন ৬। ইউরোপের উত্তর – পশ্চিম উপকূল সর্বদাই বরফমুক্ত থাকে কেন ? 

উত্তৰঃ ইউরোপের , উত্তর – পশ্চিমে উষ্ণ উপসাগরীয় স্রোত প্রবাহিত হবার ফলে সর্বদাই বরফমুক্ত থাকে । 

প্রশ্ন ৭। নবীন ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণি কাকে বলে ? 

উত্তৰঃ ইউরোপের দক্ষিণাংশের আল্পস্ পর্বতমালাকে । 

প্রশ্ন ৮। ইউরোপের কয়েকটি জ্বালামুখীর নাম লিখ । 

উত্তৰঃ ইটালীর ভিসুভিয়াস , সিসিলির এটনা এবং লিপারি দ্বীপের এটা । 

প্রশ্ন ৯। ইউরোপের উত্তর বাহিনী নদীগুলির নাম লিখ । 

উত্তৰঃ লয়েব , সিয়েন , রাইন , ওয়েজার , এল্ব , ওভার , বিষ্টুলা, মিউজ ইত্যাদি প্রধান । 

প্রশ্ন ১০। ইউরোপের প্রধান প্রধান দক্ষিণ বাহিনী নদীগুলির নাম লিখ । 

উত্তৰঃ ইউরোপের দক্ষিণ বাহিনী নদীগুলির মধ্যে এব্রো , রোন, পো , দানিয়ুব , নিস্তর , নিপর , ডন , ভল্গা ইত্যাদি প্রধান।

প্রশ্ন ১১। ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর দুইটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ কর । 

উত্তৰঃ ( ১ ) গ্রীষ্মকাল শুষ্ক এবং শীতকালে সামান্য বৃষ্টিপাত হয় । 

( ২ ) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে ঝোপ জাতীয় উদ্ভিদ ও তৃণাঞ্চল দেখা যায় । 

প্রশ্ন ১২। ইউরোপে কি কি কৃষিজদ্রব্য পাওয়া যায় ? 

উত্তৰঃ গম , বার্লি , আলু , বীট , ভুট্টা ইত্যাদি পাওয়া যায় । 

প্রশ্ন ১৩। ইউরোপের কয়েকটি খনিজ পদার্থের নাম লিখ। 

উত্তৰঃ কয়লা , লৌহ আকরিক , পেট্রোলিয়াম , বক্সাইট , সোনা ও রূপা । 

প্রশ্ন ১৪। ইউরোপে কি কি শিল্পোদ্যোগ গড়ে উঠেছে ? 

উত্তৰঃ লৌহ ও ইস্পাত শিল্প , পশম ও বস্ত্র উদ্যোগ , কাগজের কল এবং দুগ্ধজাত সামগ্রীর উৎপাদনের উদ্যোগ , জাহাজ নির্মাণ কারখানা ইত্যাদি । 

প্রশ্ন ১৫। ইউরোপ শব্দটির উৎপত্তি কিভাবে হয়েছে ? 

উত্তৰঃ ইউরোপ শব্দটি সেমেটিক ‘ ইরিব ’ শব্দ হতে এসেছে বলে অনুমান করা হয় । 

প্রশ্ন ১৬। ইউরোপ মহাদেশটি শিল্পে উন্নত কেন ? 

উত্তৰঃ ইউরোপ মহাদেশ শিল্প উদ্যোগে উন্নত হওয়ার মূল কারণগুলি হলঃ 

( ১ ) এই মহাদেশের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ হওয়ার জন্য মানুষগুলি যথেষ্ট কর্মঠ । 

( ২ ) উপকূল ভগ্ন হওয়ার জন্য নৌ – বিদ্যায় ইউরোপীয়গণ অতিশয় পারদর্শী । এর ফলে তাঁরা মধ্যযুগে জলযানে সমস্ত পৃথিবী ভ্রমণ করে ধন সম্পদ ও জ্ঞান আহরণ করেছিল । 

( ৩ ) ইউরোপে সহজেই প্রচুর পরিমাণে কয়লা ও লৌহ আকর পাওয়া যায় । এর ফলে পৃথিবীর অন্যান্য মহাদেশ অপেক্ষা ইউরোপে পূর্ব হতেই শিল্প উদ্যোগ স্থাপিত হয়েছিল । 

প্রশ্ন ১৭। ইউরোপের কোথায় কোথায় বিমান নির্মাণ করা হয় ? 

উত্তৰঃ ইউরোপের গ্রেট ব্রিটেন , ফ্রান্স ও জার্মানীতে বিমান নির্মাণ করা হয় ।

প্রশ্ন ১৮। ইউরোপের কোথায় কোথায় রেল ইঞ্জিন এবং মোটর গাড়ি নির্মাণ কেন্দ্র আছে ? 

উত্তৰঃ ইউরোপের ইটালী , ফ্রান্স , জার্মানী , গ্রেট ব্রিটেন ও রাশিয়াতে রেল ইঞ্জিন ও মোটর গাড়ি নির্মাণ কেন্দ্র আছে । 

প্রশ্ন ১৯। ইউরোপের কোন কোন অঞ্চলে কয়লা , লৌহ , তামা ও অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদিকে ভিত্তি করে ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্যোগ গড়ে উঠেছে । 

উত্তৰঃ ইউরোপ মহাদেশের ব্রিটেনের মধ্যাংশে উত্তর ফ্রান্স , বেলজিয়াম , হল্যাণ্ড , উত্তর জার্মানী , পূর্ব জার্মানী , সেম্মণি – বহেমিয়া সাইলেশিয়া , জার্মানীর রাইন উপত্যকার উপরিভাগ, ইটালীর পো উপত্যকা , স্পেনের ক্যাটালনিয়া , মধ্য সুইডেন , ইউক্রেন এবং ডন – ভলগা – মস্কো অঞ্চলে কয়লা , লৌহ , তামা , অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদির ভিত্তিতে ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্যোগ গড়ে উঠেছে । 

প্রশ্ন ২০। ইউরোপের কোথায় কোথায় ঘন জনবসতি দেখা যায় ? 

উত্তৰঃ ইউরোপের উত্তর ফ্রান্স , নেদারল্যাণ্ডস , বেলজিয়াম , লাক্সে মবার্গ , উত্তর জার্মানীতে ঘন জনবসতি দেখা যায় । 

প্রশ্ন ২১। ইউরোপ মহাদেশের ভূ – প্রাকৃতিক ভাগগুলি কী কী ? সেগুলির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উত্তৰঃ ভূ – প্রাকৃতিক গঠন অনুসারে ইউরোপ মহাদেশকে প্রধানত চারটি ভাগে বিভক্ত করা যায়— 

( ১ ) উত্তর – পশ্চিম পার্বত্য অঞ্চল । 

( ২ ) মধ্য ইউরোপের সমভূমি অঞ্চল । 

( ৩ ) দক্ষিণের নব – গঠিত ভঙ্গিল পর্বত ও মালভূমি । 

( ৪ ) নদী গঠিত অববাহিকা ও উপকূলীয় সমভূমি । 

( ১ ) উত্তর – পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চল :- ইউরোপের উত্তর – পশ্চিমের এই অংশটি কঠিন পৌরাণিক শিলার দ্বারা গঠিত চারটি ভূ – খণ্ডের সমষ্টি । সিলুরিয়ান যুগে ভূ – আন্দোলনের ফলে উত্তর – পূর্ব দিক হতে দক্ষিণ – পশ্চিম দিক পর্যন্ত এক প্রকারের পর্বতের সৃষ্টি হয় । টার্সিয়ারী যুগে দক্ষিণের আল্পস্ , এপোনিস্ , পেরিনিজ , কার্থেপিয়ান ইত্যাদি পর্বত উৎপত্তি হবার সময় এই ভূ- খণ্ডে কিছু সংখ্যক ফাটল দেখা যায় । এগুলি হতে লাভা উদ্‌গীরণ হয় । এর ফলে কোন স্থান লাভা দ্বারা বন্ধ হয়ে যায় আবার কিছু কিছু স্থান হয় উপরে উঠেছে না হয় বসে গেছে । 

উত্তরের প্রায় ভাগ অঞ্চল বরফে ঢাকা থাকে এবং অনেক সংখ্যক হিমবাহ আছে । ইউরোপের উত্তর অংশ তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত হয়েছে । 

( ক ) নরওয়ে , ফিনল্যাণ্ড ও সুইডেনের উত্তরের২/৩ ঔ অংশ ভূমি ।

( খ ) স্কটল্যাণ্ডের উচ্চভূমি অঞ্চল । এবং 

( গ ) আয়ারল্যাণ্ডের উত্তর – পশ্চিমের উচ্চভূমি অঞ্চল । 

এ ছাড়াও আইসল্যাণ্ডকে নিয়ে অপর একটি চতুর্থ অঞ্চল গঠিত হয়েছে । আইসল্যাণ্ড লাভা আবৃত দ্বীপ । ফিনল্যাণ্ডের মধ্যভাগকে ‘ দশ সহস্র হ্রদের দেশ ’ বলে । উত্তর পার্বত্য অঞ্চলে খনিজ তেল ও কয়লা পাওয়া যায় না , কেবলমাত্র লোহা জাতীয় কিছু ধাতু পাওয়া যায় । 

( ২ ) মধ্য ইউরোপের সমভূমি অঞ্চল :- ইউরোপের প্রায় অর্ধভাগই সমভূমি অঞ্চলের অন্তর্গত । এই অঞ্চলটি উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের দক্ষিণে ও আল্পস্ পর্বতমালার উত্তরে অবস্থিত । পূর্ব – পশ্চিমে এই সমভূমি ইউরোল পর্বত হতে বিস্কে উপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত । এই সমভূমি পশ্চিম হতে পূর্বদিকে অধিক বিস্তৃত । ইংল্যাণ্ডের সমভূমি অঞ্চল এই সমভূমির অন্তর্গত । একে সমভূমি বলা হলেও অনেক অনুচ্চ পর্বত , পাহাড় , মালভূমি ইত্যাদি আছে । 

ইউরোপের মধ্য সমভূমি অঞ্চলকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়— 

( ক ) সমভূমির অন্তর্গত কঠিন পৌরাণিক পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত অঞ্চল । এই অঞ্চলের পাহাড় – পর্বত , মালভূমি ক্ষয়রোধক পৌরাণিক পাললিক শিলার দ্বারা গঠিত । ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণের উচ্চভূমি , লেক ডিস্ট্রিক্টস্ , পেনিনি পর্বত , ওয়েলস্ , ব্রিটেনের দক্ষিণ – পশ্চিম উপদ্বীপ অঞ্চল , ফ্রান্সের ব্রিটানি , বেলজিয়ামের আর্ডেনিজ , জার্মানির বাইন উপত্যকা ও জার্জ পর্বত ইত্যাদি এই শিলা দ্বারা গঠিত । এই অঞ্চল কৃষির জন্য অনুপযোগী , কেবলমাত্র টিন , তামা ইত্যাদি পাওয়া যায় । 

( খ ) সমভূমির দ্বিতীয় অঞ্চলটি পৌরাণিক শিলার মাঝে মাঝে থাকা নবগঠিত পাললিক শিলার দ্বারা গঠিত অনুচ্চ ভঙ্গিল পর্বতসমূহ দ্বারা সৃষ্ট । এই

অঞ্চলটি কৃষিকার্যের জন্য উপযোগী । এই অঞ্চলের অনেক স্থানে কয়লার ভাণ্ডার ও লৌহ আকর আছে । 

( গ ) সমভূমির উত্তরে অনেক স্থান হিমবাহী গোলাশ্ম মৃত্তিকা ইত্যাদিতে আবৃত । অনেক স্থানে লোয়েস মৃত্তিকা দেখা যায় , এই স্থানগুলো উর্বর । হিমবাহ অধ্যুষিত অঞ্চল স্কটল্যাণ্ডের দক্ষিণ – পূর্বের উচ্চভূমি , উত্তর – পশ্চিম আয়ারল্যাণ্ড উত্তর পশ্চিম ফ্রান্স , বেলজিয়াম , হল্যাণ্ড , উত্তর জার্মানী , ডেনমার্ক , দক্ষি সুইডেন ও পোল্যাণ্ড ইত্যাদি । ইউরোপের মধ্য সমভূমি অঞ্চল পূর্বদিকের রুশদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত । ইউরোপীয়ান রুশ পাললিক শিলা দ্বারা গঠিত । দক্ষিণের ইউক্রেন অঞ্চলে সুবিস্তৃত লোয়েস ভূমি দেখা যায় । ইউরোপের সমভূমি অঞ্চলটিতে কৃষিকার্য ও যাতায়াতের সুবিধা থাকায় জনবসতি ঘন ।

( ৩ ) দক্ষিণের নবগঠিত পর্বত ও মালভূমি অঞ্চল :- মধ্য ইউরোপের সমভূমি অঞ্চলের দক্ষিণে আল্পস্ পর্বতশ্রেণি আটলান্টিক মহাসাগর হতে কাস্পিয়ান ও কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত সমগ্র ইউরোপের দক্ষিণ ভাগ জুড়ে আছে । আল্পস্ গ্রন্থি হতে নির্গত হওয়া একটি পর্বতশ্রেণি আপেনাইন নাম নিয়ে ইটালীতে প্রবেশ করেছে । এবং সিসিলি দ্বীপ পর্যন্ত বিস্তৃত । এই পর্বত শ্রেণি আফ্রিকা মহাদেশে এটলাস পর্বতের সৃষ্টি করেছে । এটলাস পর্বতের অপর একটি শাখা স্পেন দেশে সিয়োরানেভেড়া পর্বত গঠন করেছে । আল্পস পর্বতের পশ্চিমে অপর একটি শাখা বের হয়ে দক্ষিণ – পশ্চিমে পিরিনিজ ও কেণ্টাবিয়ান পর্বত গঠন করেছে । 

আল্পস্ পর্বতের পূর্বদিকে তিনসারি পর্বত নির্গত হয়েছে । একটি শ্রেণির নাম ডিপারিক । ইহা বলকান উপদ্বীপের মধ্য দিয়ে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়েছে । প্রথম শাখাটি পিণ্ডাস নামে গ্রীস দেশ পর্যন্ত এবং দ্বিতীয় শাখাটি রোড় পচ্ নামে কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত । দ্বিতীয় সারির পর্বত কার্পেথিয়ান , ট্রানসিলভেনিয়ান আল্পস্ ও বলকান পর্বত নামে ডানিয়ুব মালভূমির মধ্য দিয়া অতিক্রম করেছে । তৃতীয় সারির পর্বত কেহেমিয়া মালভূমিকে বেষ্টন করে আছে । আল্পস্ পর্বতের উত্তর – পশ্চিমে এর সমান্তরালভাবে জুরা , ভোজ ও জার্মানীর ব্ল্যাক ফরেস্ট পর্বত পবত অবস্থিত ।

আল্পস্ পার্বত্য অঞ্চলের উচ্চতম শৃঙ্গের নাম মাউণ্ড ব্লেংক ( ৪৮১৫ মিটার ) । দক্ষিণের পার্বত্য অঞ্চলে অনেক গিরিপথ আছে । এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য সিম্পলন , সেন্ট গোথার্ড , চালবুর্জ , ব্রীনার বার্কাসনি , মোরিভিয়াদ্বার ও বার্গাণ্ডিয়াদ্বার । 

আল্পস্ ও এর শাখা – প্রশাখার মধ্যে অনেক সমভূমি ও মালভূমি আছে । এই সমস্ত মালভূমির মধ্যে স্পেনের সেসেটা মালভূমি , মধ্য ফ্রান্স মালভূমি , ভোজ পর্বত ও ব্ল্যাক ফরেস্ট মালভূমি , বোহেমিয়ান মালভূমি উল্লেখযোগ্য । ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সমভূমিগুলির মধ্যে ইউরোপের উত্তর অংশের পো – নদীর অববাহিকা বা লোম্বার্ডি সমভূমি এবং কার্পেথিয়ান পর্বতশ্রেণি দ্বারা পরিবেষ্টিত বিখ্যাত হাংগেরিয়ান সমভূমি উল্লেখযোগ্য । আল্পস্ পার্বত্য অঞ্চলে খনিজ সম্পদ অতি কম । 

( ৪ ) নদী অববাহিকা ও উপকূলীয় সমভূমি অঞ্চল :- ইউরোপের দক্ষিণের ভঙ্গিল পার্বত্য অঞ্চল হতে নির্গত নদী অববাহিকায় অনেক সমভূমির সৃষ্টি হয়েছে । ইটালীর পো – নদীর অববাহিকায় বিখ্যাত লোম্বার্ডি সমভূমি আছে । ইহা অতি উর্বর ও ঘন জনবসতিপূর্ণ । ডানিয়ুব নদীর অববাহিকায় ডানিয়ুব বা হাংগেরিয়ান সমভূমি আছে । ডানিয়ুব নদীর নিম্নাংশে ওয়ালেসীয় সমভূমি রুমানিয়ার অধিকাংশ এবং বুলগেরিয়ার উত্তর অংশ জুড়ে আছে । ইউরোপের উপকূলীয় অঞ্চলে অনেক সমভূমি আছে । এই সমভূমিসমূহ অর্থনৈতিকভাবে অতি উন্নত ও অতি ঘন জনবসতিপূর্ণ । 

প্রশ্ন ২২। ইউরোপের জলবায়ুর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ ইউরোপের জলবায়ুকে প্রধানত ছয়টি ভাগে ভাগ করা যায়— 

( ১ ) নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল ।

( ২ ) তৃণভূমি অঞ্চল ।

( ৩ ) শীতল মহাদেশীয় অঞ্চল ।

( ৪ ) তুন্দ্রা অঞ্চল ।

( ৫ ) ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল । এবং 

( ৬ ) পার্বত্য অঞ্চলের জলবায়ু । 

ইউরোপ প্রধানত নাতিশীতোষ্ণ মণ্ডলে অবস্থিত । এর উত্তরে আইস্ল্যাণ্ড ও স্কাণ্ডিনেভিয়ার উত্তর অংশ মেরুদেশীয় জলবায়ুর অন্তর্গত । বৎসরের প্রায় নয় মাসই বরফে আবৃত থাকে । এই অংশের জলবায়ুকে তুন্দ্রা জলবায়ু বলা হয় । ইউরোপের উত্তর – পশ্চিম অংশের ব্রিটিশ দ্বীপপুঞ্জ , ফ্রান্স , নরওয়ে এবং সুইডেনের দক্ষিণ অঞ্চলে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু বিরাজ করে । গরম উপসাগরীয় স্রোতের প্রভাবে শীতকালে এই অংশে তাপমাত্রা অধিক কমে না এবং সারা বৎসরই অল্প – স্বল্প বৃষ্টি হয়ে থাকে । ফলে এই অঞ্চলে পর্ণমোচী বৃক্ষের আধিক্য দেখা যায় । মহাদেশটির মধ্য ও পূর্বাঞ্চলের বুলগেরিয়া ও রুমানিয়াকে ধরে বলকান উপদ্বীপ ও রাশিয়ার মধ্য অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা মধ্যম অর্থাৎ ২০° সেন্টিগ্রেড এবং শীতকালে ০° সেন্টিগ্রেডেরও নীচে নেমে যায়। 

এই অঞ্চলের জলবায়ুকে ‘ মহাদেশীয় তৃণভূমি জলবায়ু বলা হয় । এই অঞ্চলে বিস্তীর্ণ তৃণভূমি আছে । নরওয়ে , সুইডেন ও ফিনল্যাণ্ডের মধ্যভাগে এবং রাশিয়ার উত্তরাংশে শীতল মহাদেশীয় জলবায়ু বিরাজ করে । এই অঞ্চলে সরলবর্গীয় বৃক্ষের প্রাচুর্য দেখা যায় । দক্ষিণ ইউরোপের ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা ২৬° -২৭° সেন্টিগ্রেড এবং শীতকালে ১ ° সেণ্টিগ্রেড হতে ৫ ° সেণ্টিগ্রেড হয় । এই অঞ্চলে পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় এবং গ্রীষ্মকাল বৃষ্টিহীন থাকে । ছোট ছোট গাছ ও তৃণভূমি দেখা যায়।এই অঞ্চলে আঙুর , আপেল , কমলালেবু , লেবু , মোসাম্বি , জলপাই , নাসপাতি ও ডুমুর প্রভৃতি ফলের গাছ প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় । এই অঞ্চলের জলবায়ুকে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু বলা হয় । 

উত্তর আমেরিকা 

প্রশ্ন ১। উত্তর আমেরিকার আয়তন কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ২৪.৩ নিযুত বর্গ কিলোমিটার । 

প্রশ্ন ২। উত্তর আমেরিকা চারদিকের সীমা লেখ । 

উত্তরঃ উত্তর আমেরিকার উত্তরে উত্তর মহাসাগর ; দক্ষিণে দক্ষিণ আমেরিকা , মেক্সিকো উপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর ; পশ্চিমে বেরিংসাগর , বেরিং প্রণালী ও প্রশান্ত মহাসাগর ; পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর । 

প্রশ্ন ৩। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের বৃহত্তম মহাদেশ কোন্‌টি ? 

উত্তরঃ কানাডা ।

প্রশ্ন ৪। ২০১৪ সনের তথ্য অনুযায়ী উত্তর আমেরিকার জনসংখ্যা কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ৫৬৫ নিযুত । 

প্রশ্ন ৫। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের উচ্চতম স্থান এবং নিম্নতম স্থান দুটির নাম লেখ । 

উত্তরঃ উচ্চতম স্থানের নাম মেকিলে শৃংগ ( ৬১৯৪ মিটার ) এবং নিম্নতম স্থান ডেভ্যালী ( সাগরপৃষ্ঠ থেকে ৮৬ মিটার নীচে ) । 

প্রশ্ন ৬। প্রাকৃতিকভাবে উত্তর আমেরিকা মহাদেশকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় এবং কি কি ? আলোচনা কর । 

উত্তরঃ উত্তর আমেরিকা মহাদেশকে প্রাকৃতিকভাবে চারভাগে ভাগ করা যায় । 

( ১ ) রকি পার্বত্য অঞ্চল ।

( ২ ) বিশাল উচ্চ সমভূমি অঞ্চল ।

( ৩ ) আপালেশিয়ান উচ্চভূমি অঞ্চল । এবং 

( ৪ ) উপকূলীয় নিম্ন সমতলভূমি অঞ্চল । 

( ১ ) রকি পার্বত্য অঞ্চল :- উত্তর আমেরিকার পশ্চিম অংশটি উচ্চ পর্বত , পার্বত্য মালভূমি এবং পার্বত্য সংকীর্ণ উপত্যকা দ্বারা গঠিত । এই পার্বত্য অঞ্চল মহাদেশের সমগ্র পশ্চিম অঞ্চল জুড়ে আছে । এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৬,৮৮৩ কিলোমিটার । এর গড় উচ্চতা প্রায় ৯০০ মিটার । এই পার্বত্য অঞ্চলে তিনসারি প্রধান পর্বত আছে । এগুলি প্রায় সমান্তরালভাবে আছে । পূর্বদিকের পর্বত শ্রেণির নাম রকি পর্বত । এটি দক্ষিণ মেক্সিকোতে সিয়েরা মাদ্রে , মধ্যভাগে রকি এবং উত্তরে এণ্ডিকট পর্বত নামে পরিচিত । 

মধ্যভাগের শ্রেণিটিকে উত্তরে আলাস্কারেঞ্জ , মধ্যভাগে কাসকেড্ ও সেলকার্ক , দক্ষিণে সিয়েরা নেভেড়া এবং পশ্চিমে সিয়েরা মাদ্রে নামে পরিচিত । আলাস্কায় এর নাম সেন্ট্ ইলিয়াশ । আলাস্কারেঞ্জের মেক্‌কিনলে শৃঙ্গ আমেরিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ । এই সমগ্র পর্বতমালাকে একত্রিতভাবে কার্ডিলেরা বলে । এই পার্বত্য অঞ্চলে কলম্বিয়া মালভূমি , স্নেক – মালভূমি , কলোরাডো মালভূমি এবং মেক্সিকো মালভূমি উল্লেখযোগ্য । 

( ক ) বিশাল উচ্চ সমভূমি অঞ্চল :- এই উচ্চভূমিতে মালভূমি এবং কয়েকটি আগ্নেয়গিরি আছে । ইহা লাভা দ্বারা গঠিত , কারণ এই অঞ্চলে মাঝে মাঝেই ভূমিকম্প ও অগ্ন্যুৎপাত হয় । এই স্থানে নিকারাগুয়া হ্রদ অবস্থিত । পশ্চিমের রকি পর্বতমালা ও পূর্বের আপালেশিয়ান পর্বতমালার মধ্যভাগে এই সমভূমি অঞ্চল অবস্থিত । এই সমভূমির উত্তরাংশকে কানাডীয়ান ঢাল বলে । হাজার হাজার বৎসর ধরে ক্ষয়চক্রের ফলে এটি একটি সমভূমিতে পরিণত হয়েছে। 

রকি পর্বতের পূর্ব পাদদেশীয় অঞ্চলটি অপেক্ষাকৃত উচ্চ হওয়ার জন্য একে উচ্চ সমভূমি বলে। কানাডীয়ান অঞ্চল ছাড়া সমভূমির প্রায় অংশই মিসিসিপি মিসৌরী নদীর উপত্যকা এবং এই অঞ্চলটি উর্বর । 

( ৩ ) আপালেশিয়ান উচ্চভূমি অঞ্চল :- পশ্চিমের পার্বত্য অঞ্চল অপেক্ষা এর উচ্চতা কম।সমগ্র অঞ্চলটি তিনটি খণ্ডে বিভক্ত— 

( ১ ) গ্রীণল্যাণ্ড সমভূমি ।

( ২ ) লাব্রাডার সমভূমি । এবং 

( ৩ ) আপালেশিয়ান পর্বতমালা । 

গ্রীণল্যাণ্ড দ্বীপটি প্রকৃতপক্ষে একটি মালভূমি । বারমাসই ইহা বরফাবৃত হয়ে থাকে । প্রাচীন শিলাদ্বারা গঠিত লাব্রাডার উচ্চভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে মালভূমিতে পরিণত হয়েছে । এই মালভূমিতে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হ্রদ এবং খরস্রোতা নদী আছে । আপালেশিয়ান পর্বতমালার পশ্চিমদিকের পর্বতশ্রেণিকে এলঘেনি পর্বতশ্রেণি নামে অভিহিত করা হয়েছে । পূর্বের দিকে ব্লু- রীজ পর্বত এবং পিয়েডমট্ মালভূমি অরস্থিত । এই মালভূমি হতে অনেক ছোট ছোট নদী পূর্বের নিম্ন উপকূলভাগে প্রবাহিত হওয়ার সময়ে অনেক জলপ্রপাতের সৃষ্টি হয়েছে । 

( ৪ ) উপকূলীয় নিম্ন সমতলভূমি অঞ্চল :- আপালেশিয়ান পর্বতের পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলে এক বিস্তীর্ণ সমভূমি আছে । কিন্তু পশ্চিম উপকূলীয় সমভূমি অতি সংকীর্ণ । হাডসন উপসাগরের চারিদিকে সমভূমি আছে । এই অঞ্চলটি বরফে আবৃত থাকে । মেক্সিকো উপসাগরের তীরবর্তী সমভূমিকে উপসাগরীয় সমভূমি বলা হয় । এই সমভূমি প্রশস্ত ও উর্বর । 

প্রশ্ন ৭। উত্তর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলে ঘন জনবসতি গড়ে ওঠার কারণ কি ? 

উত্তরঃ ক্যালিফোর্নিয়াতে ঘন জনবসতি গড়ে উঠার কারণ হল এখানে ফলমূল উৎপাদন , পেট্রোলিয়াম , সোনা ইত্যাদি খনিজ পদার্থ পাওয়া যায় । এ ছাড়া সুষম ও স্বাস্থ্যকর আবহাওয়া , আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সুবিধা আছে । 

দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ

প্রশ্ন ১। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের আয়তন কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ১৮ নিযুত বর্গ কিলোমিটার । 

প্রশ্ন ২। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের বৃহত্তম দেশ কোন্‌টি ? 

উত্তরঃ ব্রাজিল । 

প্রশ্ন ৩। ২০১৪ সনে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের আনুমানিক জনসংখ্যা কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ৪০৭ নিযুত । 

প্রশ্ন ৪। পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বত শ্রেণিটির নাম কি ? 

উত্তরঃ আন্দিজ ( প্রায় ৮০০০ কিলোমিটার ) ।

প্রশ্ন ৫। আন্দিজ পর্বতমালার উচ্চতম শৃঙ্গ কোন্‌টি ? 

উত্তরঃ একানকাগুয়া ( ৭০২০ মিটার । ) 

প্রশ্ন ৬। দক্ষিণ আমেরিকায় কি কি ভাষা ব্যবহৃত হয় ? 

উত্তরঃ ব্রাজিলে পর্তুগীজ ভাষা এবং বাকী অংশে স্পেনীয় ভাষা ব্যবহৃত হয় । 

প্রশ্ন ৭। দক্ষিণ আমেরিকার বিস্তৃতি কত ?

উত্তরঃ উত্তরে ১২.৫° উত্তর অক্ষাংশ হতে দক্ষিণে ৫৫° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং ৩৫° পশ্চিম দ্রাঘিমাংশ হতে ৮২° দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত । 

প্রশ্ন ৮। আটলান্টিক মহাসাগরে পড়েছে এইরূপ তিনটি নদীর নাম কর । 

উত্তরঃ ওরিনকো , আমাজন ও রায়ো – ডি – লাপ্লাটা ৷ 

প্রশ্ন ৯। দক্ষিণ আমেরিকায় কি কি কৃষিজাত সামগ্রী পাওয়া যায় ? 

উত্তরঃ রবার , কফি , কোকো , কার্পাস , আখ , তামাক , ধান , ভূট্টা এবং গম । 

প্রশ্ন ১০। দক্ষিণ আমেরিকায় কি কি খনিজ পদার্থ পাওয়া যায় ? 

উত্তরঃ সোনা , রূপা , টিন , ক্রোমাইট , গ্রাফাইট , কয়লা এবং পেট্রোলিয়াম ।

প্রশ্ন ১১। দক্ষিণ আমেরিকার কয়টি স্বাধীন দেশ আছে ? 

উত্তরঃ ১২ টি । 

প্রশ্ন ১২। দক্ষিণ আমেরিকা কি কি তাপমণ্ডলে পড়েছে লিখ । 

উত্তরঃ উত্তরভাগ নিরক্ষীয় অঞ্চলে এবং দক্ষিণভাগ উপক্রান্তীয় অঞ্চলে পড়েছে । 

প্রশ্ন ১৩। আফ্রিকার মহাদেশের ভূ – প্রকৃতির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ উপকূলের সংকীর্ণ সমভূমি , নদীর মোহনা , ব – দ্বীপ এবং উত্তর পশ্চিমের আটলাস পার্বত্য অঞ্চল ছাড়া কয়েকটি মালভূমির সমষ্টি মাত্র । মহাদেশটি ৭১ শতাংশ স্থান মালভূমি , ২৫ শতাংশ সমভূমি এবং প্রায় ৪ শতাংশ স্থান পাহাড় – পর্বত জুড়ে আছে । আফ্রিকার উত্তর অঞ্চলে বিস্তীর্ণ সাহারা মরুভূমি অবস্থিত । উত্তরের ভূমধ্য সাগরের উপকূলভূমি এবং আটলাস পর্বতমালা ছাড়া কর্কট ক্রান্তি রেখার দুই দিকে স্থানে স্থানে বালিয়াড়ি বা বালুর স্তূপ এবং শিলাময় ভূমি দ্বারা আবৃত। প্লায়া সমূহকে ( মরুভূমিতে অবস্থিত হ্রদ ) কেন্দ্র করে মাঝে মাঝে মরুদ্যান বা ওয়েসিস গড়ে উঠেছে । সাহারা পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমি । আফ্রিকার দক্ষিণভাগে কালাহারি মরুভূমি অবস্থিত । এই মরুভূমিটির নিকটবর্তী উল্লেখযোগ্য স্থানগুলির মধ্যে নামিবিয়া , বৎসোয়ানা , দক্ষিণ আফ্রিকা দেশসমূহের গণতন্ত্র উল্লেখযোগ্য । সাহারা ও কালাহারির মধ্যের অংশটি নিম্ন হওয়ায় এই অঞ্চলটি কঙ্গো এবং এর উপনদী সমূহ বিধৌত করেছে । 

সুদান বন্দর হতে কঙ্গো নদীর মোহনায় অবস্থিত বোমা বন্দর পর্যন্ত একটি কাল্পনিক সরলরেখা দ্বারা ভাগ করলে সমগ্র আফ্রিকাকে উচ্চতার ভিত্তিতে দুইভাগে ভাগ করা যায় । সাহারা মরুভূমির উচ্চতা কম কিন্তু টিবোষ্টি উচ্চভূমি এবং আহাগার মালভূমির উচ্চতা একটু বেশি । দক্ষিণ – পূর্বের মালভূমি এবং তৃণভূমি অঞ্চলকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়— 

( ক ) প্রাথমিক শিলার দ্বারা গঠিত ইথিওপিয়া উচ্চভূমি ।

( খ ) মধ্যভাগের মালভূমি অঞ্চল । এবং 

( গ ) দক্ষিণ আফ্রিকার মালভূমি অঞ্চল । 

আফ্রিকার পূর্বভাগে ইথিওপিয়া হতে রুফ হ্রদ ,ন্যাসা , টাংগানিকা , এডওয়ার্ড ইত্যাদি হয়ে এলবার্ট হ্রদ পর্যন্ত একটি গ্রস্ত উপত্যকা শ্রেণি আছে । গ্রস্ত উপত্যকার পূর্বদিকে সুপ্ত আগ্নেয়গিরি মাউণ্ট কেনিয়া এবং কিলিমাঞ্জোরো অবস্থিত । এডওয়ার্ড হ্রদের দক্ষিণে জাগ্রত আগ্নেয়গিরি কিটাংগা অবস্থিত । এলবার্ট এবং এডওয়ার্ড হ্রদের মধ্যে রুয়েনজারি পর্বতমালা আছে । 

প্রশ্ন ১৪। দক্ষিণ আমেরিকার জলবায়ুর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ বিষুবরেখা দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর অংশের মধ্য দিয়ে গেছে । ফলে উত্তর অংশের সম্পূর্ণ অংশ এবং দক্ষিণে ২৫° দক্ষিণ অক্ষাংশ পর্যন্ত ক্রান্তীয় উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু বিরাজ করে । আন্দিজ পর্বতমালা এবং ব্রাজিলের উচ্চ মালভূমিতে উষ্ণতা কিছুটা কম । চিলির উপকূলে পশ্চিমাবায়ুর প্রভাবে শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় । এই অঞ্চলে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু দেখা যায় । আটাকামা এবং পাটাগোনিয়া মরুভূমিতে শুষ্ক মরু জলবায়ু বিদ্যমান । দক্ষিণের সংকীর্ণ অংশে শীতপ্রধান জলবায়ু । 

প্রশ্ন ১৫। আন্দিজ পর্বতশ্রেণির বিস্তৃতি উল্লেখ কর। 

উত্তরঃ পশ্চিম মহাসাগরের উপকূলের প্রায় সমান্তরালভাবে উত্তরে ক্যারিবিয়ান সাগর হতে দক্ষিণে হর্ণ অন্তরীপ পর্যন্ত এই উচ্চ ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণি বিস্তারিত হয়ে আছে । এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৮০০০ কিলোমিটার । একানগুয়া এর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ ( ৭০০০ মিটার ) । এই পর্বতশ্রেণির মাঝে মাঝে অনেক মালভূমি ও নদী উপত্যকা আছে । আন্দিজ পর্বতমালা উপকূল হতে খাড়াভাবে উপরে উঠেছে । 

প্রশ্ন ১৬। দক্ষিণ আমেরিকার মধ্য সমভূমিতে কি কি প্রধান নদী অববাহিকা আছে ? 

উত্তরঃ ( ১ ) ওরিনকো নদী অববাহিকা ।

( ২ ) আমাজন নদী অববাহিকা । এবং 

( ৩ ) প্লাট নদী অববাহিকা । 

প্রশ্ন ১৭। প্রধান অববাহিকাতে কি কি প্রধান তৃণভূমি আছে ? 

উত্তরঃ ওরিনকো অববাহিকায় লানোজ তৃণভূমি , আমাজন অববাহিকায় সেল্ভা তৃণভূমি এবং প্লাট অববাহিকায় পাম্পাস তৃণভূমি আছে ।

প্রশ্ন ১৮। সেল্ভা কি ? 

উত্তরঃ আমাজন অববাহিকায় নিরক্ষীয় জলবায়ু বিরাজ করায় এই অঞ্চলে বড় বড় বৃক্ষের অরণ্য আছে । এই অরণ্যময় অঞ্চলকে সেল্ভা বলে । 

প্রশ্ন ১৯। দক্ষিণ আমেরিকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত ? 

উত্তরঃ উত্তর হতে দক্ষিণ পর্যন্ত ৭৫২০ কি.মি. দৈর্ঘ্য এবং পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত ৫,১২০ কি.মি. প্রস্থ ।

প্রশ্ন ২০। পৃথিবীর বৃহত্তম নদীর নাম কি এবং কোথায় অবস্থিত ? 

উত্তরঃ পৃথিবীর বৃহত্তম নদীর নাম আমাজন । ইহা দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলে অবস্থিত । 

প্রশ্ন ২১। দক্ষিণ আমেরিকার একটি হ্রদের নাম লিখ এবং এটি কোন্ দেশে অবস্থিত ? 

উত্তরঃ হ্রদটির নাম টিটিকাকা । এটি দক্ষিণ আমেরিকার পেরু দেশে অবস্থিত । 

আফ্রিকা মহাদেশ 

প্রশ্ন ১। দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশের নাম কি ? 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশ । 

প্রশ্ন ২। আফ্রিকা মহাদেশের আয়তন কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ৩০ নিযুত বর্গ কিলোমিটার । 

প্রশ্ন ৩। আফ্রিকা মহাদেশকে কোন্ রেখাটি দুভাগে বিভক্ত করেছে ? 

উত্তরঃ বিষুবরেখা । 

প্রশ্ন ৪। আফ্রিকা মহাদেশের বৃহত্তম দেশ কোন্‌টি ? 

উত্তরঃ সুদান । 

প্রশ্ন ৫। আফ্রিকা মহাদেশের জনসংখ্যা কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ১১ কোটি । 

প্রশ্ন ৬। আফ্রিকা মহাদেশের উচ্চতম স্থানের নাম কি ? 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশের পূর্ব প্রান্তে থাকা কিলিমান্জারো শৃংগ ( ৫,৮৯৫ মিটার ) ।

প্রশ্ন ৭। পৃথিবীর বৃহত্তম নদীর নাম কি ? 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশের নীল নদ ( ৬৬৫৬ কি.মি. ) 

প্রশ্ন ৮। পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমির নাম কি ? 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশের সাহারা মরুভূমি । 

প্রশ্ন ৯। আফ্রিকা মহাদেশের অবস্থান নির্ণয় কর :

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশ এশিয়ার এবং ইউরোপ তথা ভূমধ্য সাগরের দক্ষিণে অবস্থিত । 

প্রশ্ন ১০। আফ্রিকা মহাদেশের সীমা নির্দেশ কর । 

উত্তরঃ আফ্রিকা উত্তর – পূর্ব লোহিত সাগর ও সুয়েজ খাল , উত্তরে ভূমধ্য সাগর ও জিব্রাল্টার প্রণালী , পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর , দক্ষিণে দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর ও দক্ষিণ মহাসাগর এবং পূর্বে ভারত মহাসাগর । 

প্রশ্ন ১১। আফ্রিকা মহাদেশের উপসাগরগুলির নাম লিখ। 

উত্তরঃ ভূমধ্যসাগরের উপকূলে ছিদ্রা ও গাবেজ , পশ্চিম উপকূলে গিনি উপসাগর এবং পূর্বে এডেন উপসাগর । 

প্রশ্ন ১২। ইথিওপিয়া মালভূমি হতে ন্যাসা হ্রদ পর্যন্ত হ্রদগুলির নাম লিখ । 

উত্তরঃ রুডলফ , ভিক্টোরিয়া , এলবার্ট , এডওয়ার্ড , কিভু , টাঙ্গানিকা এবং ন্যাসা । 

প্রশ্ন ১৩। আফ্রিকার একটি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির নাম লিখ । 

উত্তরঃ রুবেনজারি পর্বতশ্রেণিতে কিটাঙ্গা নামের আগ্নেয়গিরি। 

প্রশ্ন ১৪। আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমিটির নাম কি ? 

উত্তরঃ সাহারা মরুভূমি । 

প্রশ্ন ১৫। নীলনদের উপরে থাকা বাঁধটির নাম কি ? 

উত্তরঃ আসোয়ান । 

প্রশ্ন ১৬। আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে পড়েছে এইরূপ তিনটি নদীর নাম কর । 

উত্তরঃ নাইজার , ভ’ল্টা এবং সেনিগাল ।

প্রশ্ন ১৭। আফ্রিকা মহাদেশের জীবজন্তু ও পক্ষীর নাম লিখ । 

উত্তরঃ হাতী , দুইটি খড়্গাযুক্ত গণ্ডার , সিংহ বাঘ , হরিণ , স্প্রিংবক , জিরাফ , জেব্রা , গরিলা , শিম্পাঞ্জী জলহস্তী এবং উটপাখী । 

প্রশ্ন ১৮। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাদেশ কোন্‌টি ? 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশ । 

প্রশ্ন ১৯। আফ্রিকার মধ্য দিয়ে কোন রেখাটি গেছে ? 

উত্তরঃ বিষুবরেখা । 

প্রশ্ন ২০। আফ্রিকা মহাদেশের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত ? 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশের দৈর্ঘ্য প্রায় ৮০০০ কি . মি . এবং প্রস্থ প্রায় ৭,৩৬০ কি.মি .। 

প্রশ্ন ২১। আফ্রিকা মহাদেশের আয়তন কত ? 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশের আয়তন ৩০,৪২০,০০০ বর্গ কি.মি .। ইহা আমাদের ভারতবর্ষের নয় গুণেরও বড় । 

প্রশ্ন ২২। পৃথিবীর দীর্ঘতম নদীর নাম কি ? 

উত্তরঃ আফ্রিকার নীলনদ ( ৬৬৫৬ কি.মি. ) । 

প্রশ্ন ২৩। নীলনদ কোন স্থান হতে উৎপত্তি হয়ে কোথায় শেষ হয়েছে ? 

উত্তরঃ নীলনদের উপনদী ব্লু – নীল ভিক্টোরিয়া হ্রদ হতে উৎপন্ন হয়ে সুদানের রাজধানী খাতুলি গরের নিকটে হোয়াইট নীলের সাথে মিশে সুদান এবং ইজিপ্টের মরুভূমির মধ্য দিয়ে ভূমধ্য সাগরে পড়েছে । 

প্রশ্ন ২৪। আফ্রিকার কয়েকটি নদ – নদীর নাম লেখ । 

উত্তরঃ আফ্রিকার নদ – নদীগুলি হল— নীলনদ , জাম্বোসি , অরেঞ্জ , কঙ্গো , নাইজার , ভোল্টা ও সোনিগাল । 

প্রশ্ন ২৫। আফ্রিকার কয়েকটি বনজ সম্পদের নাম লেখ। 

উত্তরঃ মেহগনি , আবলুশ , ওক , রবার , কর্পূর ইত্যাদি মূল্যবান বনজসম্পদ । 

প্রশ্ন ২৬। দক্ষিণ আফ্রিকায় কি কি প্রাকৃতিক সম্পদ পাওয়া যায় ? 

উত্তরঃ দক্ষিণ আফ্রিকায় ইউরেনিয়াম , সোনা , রূপা , হীরা , কয়লা এবং লৌহ পাওয়া যায়।

প্রশ্ন ২৭। আফ্রিকার কোন কোন স্থানে পেট্রোলিয়াম পাওয়া যায় ? 

উত্তরঃ আফ্রিকার নাইজিরিয়া , লিবিয়া ও আলজিরিয়াতে পেট্রোলিয়াম পাওয়া যায় । 

প্রশ্ন ২৮। আফ্রিকা মহাদেশে কি কি ধরনের ফলমূল ও কৃষিজাত দ্রব্য পাওয়া যায় ? 

উত্তরঃ আখ , তামাক , কার্পাস , গম , ভূট্টা , কলা , চা , কফি , কোকো , আঙুর , জলপাই ইত্যাদি । 

প্রশ্ন ২৯। আফ্রিকা মহাদেশের কি কি খনিজ সম্পদ পাওয়া যায় ? 

উত্তরঃ ইউরেনিয়াম , সোনা , রূপা , হীরা , কয়লা , লৌহ আকর , তামা , সীসা , টিন , রেজিয়াম , পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি। 

প্রশ্ন ৩০। আফ্রিকার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শহরের নাম লিখ । 

উত্তরঃ কাইরো , মোম্বাসা , দার – এস – সালাম , জারবান , কেপটাউন , লাগোস ইত্যাদি । 

প্রশ্ন ৩১। আফ্রিকার স্থানীয় অধিবাসীদের কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় এবং কি কি ? 

উত্তরঃ দুইভাগে । 

( ক ) ককেসীয় ( শ্বেতাঙ্গ ) । এবং

( খ ) নিগ্রো ( কৃষ্ণাঙ্গ ) । 

প্রশ্ন ৩২। কালাহারি মরুভূমিতে বসবাস করা দুইটি আদিম অধিবাসীদের নাম লিখ । 

উত্তরঃ বুশম্যান ও হটেনটট্ । 

প্রশ্ন ৩৩। মিশরকে নীলনদের দান বলা হয় কেন ? 

উত্তরঃ মিশর মরুভূমি অঞ্চলে অবস্থিত । শুধু নীলনদের অববাহিকা ও এর ব – দ্বীপ অঞ্চলে কৃষিকাজ হয় । উপত্যকা অঞ্চল নদীর পলিমাটি দ্বারা গঠিত । এখানে বৃষ্টিপাত হয় না বললেই চলে । কৃষিকাজের জন্য নীলনদের জলের উপরই নির্ভর করতে হয় । নদীতে বাঁধ দিয়ে ও নদী হতে খাল কেটে কৃষিক্ষেত্রে জলসেচের ব্যবস্থা করা হয়েছে । বিখ্যাত আসোয়ান বাঁধ নীলনদের উপর তৈরি করা হয়েছে । নীলনদ হতে জলসেচ করে , মিশরে সারা বৎসরই কৃষিকাজ হয়ে থাকে । এসব কারণে মিশরকে নীলনদের দান বলা হয় ।

প্রশ্ন ৩৪। আফ্রিকার প্রাকৃতিক গঠন সংক্ষেপে বর্ণনা কর। 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশ উপকূলীয় সংকীর্ণ সমভূমি , নদীর মোহনা , ব – দ্বীপ এবং উত্তর – পশ্চিমের আটলাস পার্বত্য অঞ্চল ছাড়া কয়েকটি মালভূমির সমষ্টি মাত্র । মহাদেশটির ৭১ শতাংশ স্থান মালভূমি , ২৫ শতাংশ সমভূমি এবং প্রায় ৪ শতাংশ স্থান পাহাড় – পর্বত জুড়ে আছে । আফ্রিকার উত্তর অঞ্চলে বিস্তীর্ণ সাহারা মরুভূমি অবস্থিত । উত্তরের ভূমধ্য সাগরের উপকূলভূমি এবং আটলাস পর্বতমালা ছাড়া কর্কটক্রান্তি রেখার দুদিকে স্থানে স্থানে বালিয়াড়ি বা বালুর স্তূপ এবং শিলাময় ভূমি দ্বারা আবৃত । প্লায়া ( মরুভূমিতে অবস্থিত হ্রদ ) সমূহকে কেন্দ্র করে মাঝে মাঝে মরুদ্যান বা ওয়েসিস গড়ে উঠেছে । পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমি সাহারা ও আফ্রিকার দক্ষিণ ভাগে কালাহারি মরুভূমি অবস্থিত । 

এই মরুভূমিটির নিকটবর্তী উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোর মধ্যে নামিবিয়া , বৎসোয়ানা , দক্ষিণ আফ্রিকার দেশসমূহের গণতন্ত্র উল্লেখযোগ্য । সাহারা ও কালাহারির মধ্যের অংশটি নিচু হওয়ায় এই অঞ্চলটি কঙ্গো এবং এর উপনদীসমূহ বিধৌত করেছে । সুদান বন্দর থেকে কঙ্গো নদীর মোহনায় অবস্থিত বোমা বন্দর পর্যন্ত একটি কাল্পনিক সরলরেখা দ্বারা ভাগ করলে সমগ্র আফ্রিকাকে উচ্চতার ভিত্তিতে দুভাগে ভাগ করা যায় । সাহারা মরুভূমির উচ্চতা কম কিন্তু টিবেষ্টি উচ্চভূমি এবং আহাগার মালভূমির উচ্চতা একটু বেশি । দক্ষিণ – পূর্বের মালভূমি এবং তৃণভূমি অঞ্চলকে তিনভাগে ভাগ করা যায়— 

( ক ) প্রাথমিক শিলার দ্বারা গঠিত ইথিওপিয়া উচ্চভূমি ।

( খ ) মধ্যভাগের মালভূমি অঞ্চল । এবং 

( গ ) দক্ষিণ আফ্রিকার মালভূমি অঞ্চল । 

আফ্রিকার পূর্বভাগে ইথিওপিয়া থেকে রুড্‌লফ , ন্যাসা , টাংগানিকা , এডওয়ার্ড ইত্যাদি হ্রদ হয়ে এলবার্ট হ্রদ পর্যন্ত একটি গ্রস্ত উপত্যকাশ্রেণি আছে । গ্রস্ত উপত্যকার পূর্বদিকে সুপ্ত আগ্নেয়গিরি মাউণ্ট কেনিয়া এবং কিলিমাঞ্জোরো অবস্থিত। এডওয়ার্ড হ্রদের দক্ষিণে জাগ্রত আগ্নেয়গিরি কিটাংগা অবস্থিত । এলবার্ট ও এডওয়ার্ড হ্রদের মধ্যে রুয়েনজারি পর্বতমালা আছে । 

প্রশ্ন ৩৫। আফ্রিকার জলবায়ু এবং তার বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা কর । 

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশের মধ্য দিয়া বিষুবরেখা অতিক্রম করেছে । কাজেই এই মহাদেশের উত্তরাংশে যখন গ্রীষ্মকাল তখন দক্ষিণাংশে শীতকাল । আবার উত্তরাংশে যখন শীতকাল তখন দক্ষিণাংশে গ্রীষ্মকাল । নিরক্ষীয় অঞ্চল হওয়ায় এই অঞ্চলের আবহাওয়া উষ্ণ ও আর্দ্র হয় । প্রায় অংশ ক্রান্তীয় অঞ্চলে পড়ায় এই স্থানের উষ্ণতা খুব বেশি । কিন্তু উচ্চ মালভূমি অঞ্চলের জলবায়ু মৃদু ভাবাপন্ন । দক্ষিণ – পূর্বাঞ্চলের আবহাওয়া মহাসাগরীয় বায়ুর প্রভাবে মৃদু ভাবাপন্ন । আফ্রিকা মহাদেশকে জলবায়ু অঞ্চল হিসাবে ছয় ভাগে ভাগ করা যায় । 

( ক ) নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চল :- নিরক্ষ রেখার দুই পার্শ্বে সর্বদাই উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু । ইহা সাধারণত নিরক্ষীয় অঞ্চল, কঙ্গো অববাহিকা এবং গিনি উপসাগরে দেখা যায় । এই অঞ্চলে উচ্চ তাপমাত্রার সাথে সাথে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় । 

( খ ) সুদানীয় জলবায়ু :- নিরক্ষীয় অঞ্চলের উত্তরে ও দক্ষিণে সুদানীয় জলবায়ু দেখা যায়।গ্রীষ্মকালে কিছু পরিমাণে বৃষ্টিপাত হলেও শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে । বৃষ্টির ফলে গ্রীষ্মের তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকে । সুদানের পূর্ব ভাগে ভারতের মৌসুমী বায়ুর মত আবহাওয়া দেখা যায় । 

( গ ) মরু অঞ্চলীয় জলবায়ু :- এই প্রকারের জলবায়ু উত্তরে সাহারা এবং দক্ষিণে কালাহারি মরুভূমিতে দেখা যায় । এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আবহাওয়া উষ্ণ ও শুষ্ক হয় । শুষ্ক আবহাওয়ার জন্য গ্রীষ্ম ও শীতের পার্থক্য অত্যন্ত বেশি । 

( ঘ ) উষ্ণ নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু :- দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে এই প্রকারের জলবায়ু দেখা যায় । ভারত মহাসাগর হতে আসা বাণিজ্য বায়ুর প্রভাবে সামান্য বৃষ্টিপাত হয় । 

( ঙ ) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু :- আফ্রিকার উত্তর এবং উত্তর – পশ্চিম উপকূলে এই জলবায়ু দেখা যায় । এই আবহাওয়ার প্রভাবে এই অঞ্চলের তাপমাত্রা মৃদুভাবাপন্ন । শীতকালে বৃষ্টিপাত হয় । এই ধরনের জলবায়ু দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষিণ পশ্চিম অংশে দেখা যায় ৷

( চ ) মধ্য অক্ষাংশীয় তৃণাঞ্চলীয় জলবায়ু :- দক্ষিণ আফ্রিকার মালভূমি অঞ্চলে এই প্রকারের জলবায়ু দেখা যায় । এই অঞ্চলের তাপমাত্রা নাতিশীতোষ্ণ । এই অঞ্চলটি তৃণাচ্ছাদিত । এই অঞ্চলটির স্থানীয় নাম ভেল্ড । 

ওশেনিয়া মহাদেশ

প্রশ্ন ১। ওশেনিয়া মহাদেশ কিভাবে গঠিত হয়েছে ? 

উত্তরঃ ওশেনিয়া মহাদেশ অষ্ট্রেলিয়া মহাদ্বীপকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ – পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত নিউজিল্যাণ্ড , তাসমানিয়া , নিউগিনি ইত্যাদি অনেক ছোট – বড় দ্বীপসমূহকে নিয়ে গঠিত । 

প্রশ্ন ২। ওশেনিয়া মহাদেশটির অবস্থান লেখ । 

উত্তরঃ ওশেনিয়া মহাদেশটি এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে সম্পূর্ণভাবে পৃথিবীর দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত । 

প্রশ্ন ৩। ওশেনিয়া আয়তন কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ৮ নিযুত বর্গকিলোমিটার । 

প্রশ্ন ৪। ওশেনিয়া মহাদেশের বৃহত্তম দেশ কোন্‌টি ? 

উত্তরঃ অষ্ট্রেলিয়া । 

প্রশ্ন ৫। ওশেনিয়া মহাদেশে কতটি দেশ আছে ? 

উত্তরঃ ১৪ টি । 

প্রশ্ন ৬। ওশেনিয়া মহাদেশের মোট জনসংখ্যা কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ৩৮ নিযুত । 

প্রশ্ন ৭। ওশেনিয়া আবিষ্কারকারী সমুদ্রচারী প্রধানত কে কে ? 

উত্তরঃ ক্যাপ্টেন জেমস্ কুক্ , বিসমার্ক , সলোমন , স্টুয়ার্ট , আমুণ্ড সেন , চার্লস উইলকিস , রবার্ট ফ্যালকন স্কট ইত্যাদি । 

প্রশ্ন ৮। গ্রেট বেরিয়ার রিফ কী ? 

উত্তরঃ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর – পূর্ব উপকূলের সমান্তরালভাবে অগভীর সাগরে সারিবদ্ধ প্রবাল প্রাচীন আছে । একে ‘ গ্রেট বেরিয়ার রীফ ’ বা বৃহৎ প্রবাল প্রাচীর বলে । ইহা পৃথিবীর বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীর । এই দ্বীপটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯০০ কিলোমিটার । 

প্রশ্ন ৯। অষ্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত মেক্‌ডোনাল্ড কী ? 

উত্তরঃ মেক্‌ডোনাল্ড একটি পর্বতশ্রেণি । ইহা পূর্বদিকে অবস্থিত । 

প্রশ্ন ১০। অষ্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলে পতিত হওয়া দুইটি নদীর নাম কর । 

উত্তরঃ বেলিয়াণ্ডো ও ফিটজরয় । 

প্রশ্ন ১১। অষ্ট্রেলিয়ার সর্ববৃহৎ নদীর নাম লিখ ।  

উত্তরঃ ডার্লিং ও মারে । 

প্রশ্ন ১২। অষ্ট্রেলিয়ার একটি মরুহ্রদের নাম লিখ । 

উত্তরঃ আয়ার হ্রদ । 

প্রশ্ন ১৩। আয়ার হ্রদের বৈশিষ্ট্য কি ? 

উত্তরঃ এই হ্রদটি সাধারণত শুষ্ক থাকে । বৃষ্টি হলে বারবার্টন ও কুপার্স ক্রিক নামের দুইটি নদী এখানে পড়ে জলপুষ্ট করে । 

প্রশ্ন ১৪। অষ্ট্রেলিয়ার কৃষিজ সম্পদ কি কি ? 

উত্তরঃ গম , আখ , ভূট্টা , ধান , আলু এবং ফলমূল ও শাক – সব্‌জি । 

প্রশ্ন ১৫। অষ্ট্রেলিয়ার খনিজ সম্পদের বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ অষ্ট্রেলিয়াতে কয়লা , লৌহ আকর , বক্সাইট , সোনা , রূপা , সীসা , নিকেল , পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায় । 

প্রশ্ন ১৬। অষ্ট্রেলিয়ার কয়েকটি শিল্পোদ্যোগের নাম লিখ। 

উত্তরঃ ইস্পাত শিল্প , তৈল শোধনাগার , পশম বয়ন , ইঞ্জিনিয়ারিং , জাহাজ নির্মাণ , কার্পাস বস্ত্রশিল্প ইত্যাদি । 

প্রশ্ন ১৭। ২০০৫ সালের জনগণনা মতে অষ্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যা কত ? 

উত্তরঃ প্রায় ২০,০৯০,৪৩৭ জন । 

প্রশ্ন ১৮। অষ্ট্রেলিয়ার রাজধানীর নাম কি ? 

উত্তরঃ ক্যানবেরা ।

প্রশ্ন ১৯। অষ্ট্রেলিয়ার কয়েকটি নগর শহরের নাম লিখ । 

উত্তরঃ অষ্ট্রেলিয়ার কয়েকটি নগর শহরের নাম হল রকহাম্পটন , ব্রিসবেন , সিডনি , বার্থাষ্ট, ক্যানবেরা , মেলবোর্ন , এডিলেইড , হোবার্ট , ডারউইন ইত্যাদি । 

প্রশ্ন ২০। পপুয়া নিউগিনির অধিবাসীদের কি বলা হয় ? 

উত্তরঃ মেলানেশীয় । 

প্রশ্ন ২১। অষ্ট্রেলিয়ার একটি পাখির নাম লেখ যা উড়তে পারে না ।

উত্তরঃ এমু । 

প্রশ্ন ২২। অষ্ট্রেলিয়ার কোন্ স্থানে সোনার খনি আছে ? 

উত্তরঃ বার্থহার্ষ্টে । 

প্রশ্ন ২৩। কোন স্থানের অধিবাসীদের মাওরি বলা হয় ? 

উত্তরঃ নর্থ আইল্যাণ্ড এবং সাউথল্যাণ্ডের অধিবাসীদের । 

প্রশ্ন ২৪। নিউজিল্যাণ্ডের কয়েকটি নগর শহরের নাম লিখ । 

উত্তরঃ অকল্যাণ্ড , হেমিল্টন , গিসবর্ন , নেপিয়ার , নিউ প্লাইমাউথ , ওয়েলিংটন , ক্রাইষ্টচার্চ, ডানেডিন ইত্যাদি । 

প্রশ্ন ২৫। অষ্ট্রেলিয়াকে মহাদ্বীপ বলা হয় কেন ? 

উত্তরঃ অষ্ট্রেলিয়াকে মহাদ্বীপ বলার কারণ হল এই দ্বীপটি পৃথিবীর বৃহত্তম দ্বীপ । 

প্রশ্ন ২৬। অষ্ট্রেলিয়ান আল্পস কাকে বলে ? 

উত্তরঃ গ্রেট ডিভাইডিংরেঞ্জ ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণির দক্ষিণভাগকে অষ্ট্রেলিয়ান আল্পস বলে । 

প্রশ্ন ২৭। অষ্ট্রেলিয়ায় কখন শীতকাল হয় ? 

উত্তরঃ অষ্ট্রেলিয়াতে মে মাস হতে আগস্ট মাস পর্যন্ত শীতকাল হয় । 

প্রশ্ন ২৮। অষ্ট্রেলিয়ার দুইটি বিশিষ্ট গাছের নাম লেখ । 

উত্তরঃ ইউকেলিপটাশ ও ব্লুগাম । 

প্রশ্ন ২৯। অষ্ট্রেলিয়ার কোন কোন স্থানে সোনা ও রূপা পাওয়া যায় ? 

উত্তরঃ অ্যালিসাস্প্রিং , কুলগার্ডি , কালগুলি ইত্যাদি স্থানে সোনা ও রূপা পাওয়া যায় ।

প্রশ্ন ৩০। ওশেনিয়া মহাদেশের অষ্ট্রেলিয়া ব্যতীত অপর দুইটি উল্লেখযোগ্য দ্বীপের নাম উল্লেখ কর । 

উত্তরঃ পপুয়া নিউগিনি ও নিউজিল্যাণ্ড । 

প্রশ্ন ৩১। পপুয়া নিউগিনির অধিবাসীদের কি বলা হয় ? 

উত্তরঃ মেলানেশীয় অর্থাৎ কৃষ্ণবর্ণের । 

প্রশ্ন ৩২। নিউজিল্যাণ্ড কি জন্য বিখ্যাত ? 

উত্তরঃ নউজিল্যা ভেড়া ও গো – পালনের জন্য বিখ্যাত । 

প্রশ্ন ৩৩। অষ্ট্রেলিয়ায় x – mas উৎসব কোন সময়ে প্রতিপালিত হয় । 

উত্তরঃ অষ্ট্রেলিয়ায় x – mas উৎসব ডিসেম্বর মাসে প্রতিপালিত হয় । তখন উত্তর গোলার্ধে শীতকাল । কিন্তু নিরক্ষ রেখার দক্ষিণে অবস্থিত হওয়ায় উত্তর গোলার্ধে যখন শীতকাল তখন অষ্ট্রেলিয়ায় গ্রীষ্মকাল । তাই অষ্ট্রেলিয়ানগণ— x mas উৎসব গ্রীষ্মকালেই প্রতিপালন করে থাকেন । 

প্রশ্ন ৩৪। অষ্ট্রেলিয়ার নদ – নদীর একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ অষ্ট্রেলিয়ায় নদ – নদীর সংখ্যা খুব কম । এর পূর্ব – উপকূলের প্রধান নদী হল — বেলিয়াণ্ডো ও ফিউজরয় ও সোয়ান । অষ্ট্রেলিয়ার সর্ববৃহৎ নদী হল ডার্লিং ও মারে । 

প্রশ্ন ৩৫। অষ্ট্রেলিয়া প্রচুর উল রপ্তানি করতে পারার কারণ কি ? 

উত্তরঃ অষ্ট্রেলিয়া ভেড়া ও গবাদি পশু পালনের জন্য বিখ্যাত। অষ্ট্রেলিয়ার মূল্য কৃষিজ দ্রব্য হল ভেড়া ও গবাদি পশুর খাওয়ার জন্য উৎকৃষ্ট মানের বিশেষ ধরনের ঘাসের চাষ করা হয়।অষ্ট্রেলিয়ার পূর্বাংশে বিশেষত যে সকল অঞ্চলে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ গড়ে ৪০°-৬০° সে.মি. এবং উষ্ণতা গ্রীষ্মকালে ২৫°-২৬° সেলসিয়াস , সেই সকল স্থানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পুষ্টিকর ঘাসের চাষ করা হয় । অষ্ট্রেলিয়াতে বর্তমানে প্রায় ২০০ নিযুত ভেড়া পালন করা হয়। সাধারণত গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জের পশ্চিম ঢালে এবং আল্পস পার্বত্য অঞ্চলের কুইন্সল্যান্ড ও নিউ সাউথ ওয়েলসে ভেড়া পালন করা হয় । ভেড়ার লোম হতে প্রচুর পরিমাণে উল তৈয়ার হয় এবং বিদেশে রপ্তানি করিয়া অর্থ উপার্জন হয় । উল রপ্তানির ক্ষেত্রে অষ্ট্রেলিয়ার স্থান পৃথিবীতে প্রথম ।

প্রশ্ন ৩৬। অষ্ট্রেলিয়ার জনবসতি দক্ষিণ – পূর্ব উপকূলে অধিক কেন ? 

উত্তরঃ ১৭৮৮ সাল হতে ব্রিটিশগণ এবং ইউরোপের অন্যান্য স্থানের লোকেরা স্থায়ীভাবে অষ্ট্রেলিয়াতে বসবাস আরম্ভ করেছিল । এরা প্রথমে কৃষিকাজ এবং পশুপালন করে জীবিকা নির্বাহ আরম্ভ করেছিল । এরা প্রথমে দক্ষিণ – পূর্ব এবং পূর্বের বৃষ্টিসিক্ত তৃণ অঞ্চলে বসবাস আরম্ভ করেছিল । পূর্ব উপকূলে বন্দর ও পোতাশ্রয় স্থাপিত হয়েছিল । ভেড়া পালন করার সুবিধা থাকায় অনেক লোক কুইন্সল্যাণ্ড ও নিউ সাউথ ওয়েলসের মারে ডার্লিং অববাহিকাতে বসতি স্থাপন করেছিল । কৃষিজাত , খনিজাত এবং নির্মাণ কার্যের ভিত্তিতে গড়ে উঠা শিল্পোদ্যোগ , প্রশাসনিক কাজকর্ম , যাতায়াত – পরিবহণের সুবিধা থাকায় অনেক নগর – শহর গড়ে উঠেছে । 

প্রশ্ন ৩৭। অষ্ট্রেলিয়ার কোন্ কোন্ অংশে ভূমধ্য সাগরীয় জলবায়ু বিরাজ করে ? সেই অঞ্চলের তিনটি নগরের নাম উল্লেখ কর । 

উত্তরঃ দক্ষিণ অষ্ট্রেলিয়ার উপকূলে এবং পশ্চিম অষ্ট্রেলিয়ার ভূমধ্য সাগরীয় জলবায়ু বিরাজ করে । ভূমধ্য সাগরীয় অঞ্চলের তিনটি নগর হল — মেলবোর্ণ , এডিলেইড , পার্থ ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top