Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল and select needs one.
Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 10 Social Science Chapter 8 পৃথিবীর ভূগোল for All Subject, You can practice these here..
পৃথিবীর ভূগোল
Chapter – 8
দ্বিতীয় খণ্ড – ভূগোল
অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১। পৃথিবীর স্থলমণ্ডল আর জলমণ্ডল বিষয়ে সংক্ষেপে লেখো।
উত্তরঃ পৃথিবীর মোট আয়তন প্রায় ৫১০ নিযুত বর্গ কিলোমিটার । পৃথিবীর ভূ – পৃষ্ঠের প্রায় ১৪৯ নিযুত বর্গ কিলোমিটার স্থলভাগ এবং প্রায় ৩৬১ নিযুত বর্গ – কিলোমিটাার জলভাগ । পৃথিবীর স্থলভাগ ৭ টি মহাদেশ দ্বারা গঠিত— এশিয়া , আফ্রিকা , ইউরোপ , উত্তর আমেরিকা , দক্ষিণ আমেরিকা , ওশেনিয়া এবং এণ্টার্কটিকা এবং জলভাগ প্রশান্ত মহাসাগর , আটলান্টিক মহাসাগর , ভারত মহাসাগর , উত্তর ও দক্ষিণ মহাসাগর । মহাদেশ সমূহের মধ্যে এশিয়া মহাদেশ এবং মহাসাগর সমূহের মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগর সর্ববৃহৎ । ২০১৫ সনের আনুমানিক তথ্য অনুসারে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা ৭৩০ কোটি ।
প্রশ্ন ২। মহাদেশীয় স্থংস্থান সূত্র অনুসারে পৃথিবীর অবস্থা আদিতে কেমন ছিল ?
উত্তরঃ মহাদেশীয় বিস্থাপন বা সঞ্চারণ সূত্র ( Continental Drift Theory ) অনুযায়ী আদিতে , অর্থাৎ প্রায় ৩০০ নিযুত বৎসর পূর্বে পৃথিবীটির স্থলমণ্ডল একত্রিত হয়েছিল এবং এর চতুর্দিকে জলমণ্ডল দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল । পৃথিবীর এই অবস্থাতে থাকা স্থলমণ্ডলটিকে পেঞ্জিয়া ( Pangaea ) এবং এর চতুর্দিকে আবেষ্টনকারী জলমণ্ডলকে পান্থালাসা ( Panthalassa ) বলে ।
প্রশ্ন ৩। মহাসাগরের তলদেশের ভূ – অবয়ব সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো ।
উত্তরঃ মহাসাগরের জলপৃষ্ঠ অতি মসৃণ কিন্তু তলদেশের ভূ – প্রকৃতি অতিশয় অসমান । স্থলমণ্ডলে যেমন পাহাড় – পর্বত , মালভূমি , সমভূমি ইত্যাদি দেখা যায় , ঠিক তেমনই সাগর – মহাসাগরের তলদেশ শৈলশিরা , দ্রোণী , সামুদ্রিক টিলা , খাত ইত্যাদি অসমান করে রেখেছে । মহাসাগরের গভীরতা গড়ে প্রায় ৪০০০ কিলোমিটার । উপকূলভাগ থেকে যতই মধ্যভাগের দিকে যাওয়া যায় সাগর মহাসাগরের গভীরতা ততই বাড়তে থাকে । উপকূলভাগ থেকে সাগর মহাসাগরের মধ্যভাগ পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে মহীসোপান ( Continental Shelf ) , মহীঢাল ( Continental slope ) , ” গভীর সমুদ্রতল ( Deep Sea Plain ) , সমুদ্রতলীয় দ্রোণী ( Oceanic Floor ) , সামুদ্রিক শৈলশিরা ও দ্বীপ ( Oceanic Ridge and Island ) এবং গভীর সমুদ্রখাত ( Deep Sea Trench ) । এছাড়া বহু শৈলশিরা , দ্বীপ ইত্যাদি দেখা যায় ।
উপকূলের নিকটবর্তী স্থানে থাকা সাগর – মহাসাগরের অগভীর ( প্রায় ২০০০ মিটার পর্যন্ত ) অংশকে মহীসোপান বলে । মহীসোপানের পরের অংশ যথেষ্ট

গভীর ( প্রায় ২০০ মিটার ) অংশকে মহীঢাল বলে । মহীঢালের পর সাগর মহাসাগরের মধ্যভাগ অতি গভীর সমুদ্রতলীয় দ্রোণী ( ৪০০০ মিটার পর্যন্ত গভীর ) ; গভীরতম সামুদ্রিক খাত ( গড়ে ৮০০০ মিটার পর্যন্ত গভীর ) । প্রশাস্ত মহাসাগরের তলায় থাকা মেরিয়ানা খাত ( ১১,০২২ মিটার গভীর ) পৃথিবীর গভীরতম খাত ।
প্রশ্ন ৪। মহাসাগর এবং মহাদেশগুলোর বিতরণ সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো ।
উত্তরঃ ভূ – পৃষ্ঠের সাগর – মহাসাগরকে ধরে নদ – নদী , হ্রদ ইত্যাদির জল দ্বারা আবেষ্টিত বৃহৎ অংশকে জলমণ্ডল ( Hydrosphere ) বলা হয় । পৃথিবীর পাঁচটি মহাসাগর হল — প্রশান্ত মহাসাগর , আটলান্টিক মহাসাগর , ভারত মহাসাগর , উত্তর মহাসাগর এবং দক্ষিণ মহাসাগর । প্রশান্ত মহাসাগর এশিয়া মহাদেশ , উত্তর আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের মধ্যে অবস্থিত । আটলান্টিক মহাসাগর উত্তর আমেরিকা , দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ , ইউরোপ এবং আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে অবস্থিত । ভারত মহাসাগর এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে , আফ্রিকা মহাদেশের পূর্বে ও ওশেনিয়া মহাদেশের পশ্চিমে অবস্থিত । উত্তর মহাসাগর উত্তর আমেরিকা , ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের উত্তরে অবস্থিত । দক্ষিণ মহাসাগর দক্ষিণ আমেরিকা , আফ্রিকা ও ওশেনিয়া মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত । জলমণ্ডলের বেশির ভাগই দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত ।
পেঞ্জিয়ার প্রায় মাঝামাঝি পূর্ব – পশ্চিমে একটি সংকীর্ণ এবং লম্বা সাগরের সৃষ্টি হয়েছিল । একে টেথিস সাগর বলা হয় । এই সাগরের উত্তর – অংশটিকে লরেসিয়া এবং দক্ষিণ অংশকে গণ্ডোয়ানা ল্যাণ্ড বলা হয় । মহাদেশীর সঞ্চারণ সূত্র অনুসারে লরেসিয়া বিভাজিত হয়ে উত্তর আমেরিকা , গ্রীণল্যাণ্ড ও ভারত

উপমহাদেশের উত্তরে থাকা ইউরোপ এবং এশিয়া মহাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল । অপরদিকে গণ্ডোয়ানা ল্যাণ্ড বিভাজিত হয়ে দক্ষিণ আমেরিকা , আফ্রিকা , মাদাগাস্কার ; ভারতবর্ষ , আরব অঞ্চল , মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দ্বীপপুঞ্জ , অষ্ট্রেলিয়া , এণ্টার্কটিকা ইত্যাদির সৃষ্টি হয়েছিল ।
সাগরপৃষ্ঠের কিছুটা উপরে থাকা মাটিতে পরিপূর্ণ একটি বৃহৎ অংশকে স্থলমণ্ডল বলে । স্থলমণ্ডলটি জল দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে চারটি বৃহৎ অংশে বিভাজিত হয়েছে । স্থলমণ্ডলের বৃহৎ অংশকে এশিয়া , ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশ দ্বারা গঠিত , দ্বিতীয় অংশটি উত্তর আমেরিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ দ্বারা গঠিত , তৃতীয় অংশটি অষ্ট্রেলিয়া ও অনেক দ্বীপপুঞ্জ দ্বারা ওশেনিয়া মহাদেশ গঠিত । চতুর্থ অংশটি এন্টার্কটিকা মহাদেশ দ্বারা গঠিত । স্থলভাগের বেশিরভাগ অংশ উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত ।
প্রশ্ন ৫। পৃথিবীর স্থলভাগের উপরে বিদ্যমান ভূ – অবয়বগুলো সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো ।
উত্তরঃ পাহাড় – পর্বত , মালভূমি , সমভূমি , উপকূলীয় সমভূমি ইত্যাদির উপস্থিতি স্থলমণ্ডলের ভূ – অবয়ব অসমান করে রেখেছে । অবশ্য মহাদেশের সকল স্থানে ভূ – প্রকৃতি একই নয় । পৃথিবীর ৭ টি মহাদেশের ভূ – প্রকৃতি সম্পর্কে নীচে আলোচনা করা হল ।
( ১ ) এশিয়া মহাদেশ :- এশিয়া পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মহাদেশ । প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত জাপান , তাইওয়ান , ফিলিপাইন , জাভা , সুমাত্রা , বোর্ণিও ইত্যাদি দ্বীপসমূহ এবং ভারত মহাসাগরে অবস্থিত আন্দামান – নিকোবর , শ্রীলংকা , লাক্ষাদ্বীপ , মালদ্বীপ , বাহরিণ ইত্যাদি এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত ।
এশিয়া মহাদেশটি সুউচ্চ পর্বত শ্রেণি , মালভূমি , নদী উপত্যকা , নিম্নভূমি , উপকূলীয় সমভূমি , মহাসাগরীয় দ্বীপ , মরুভূমি ইত্যাদি দ্বারা পরিপূর্ণ । মহাদেশটির মধ্য অংশ পর্বত ও মালভূমিপূর্ণ । পর্বতশ্রেণির মধ্যে মহাদেশটির পশ্চিম সীমাতে উত্তর – দক্ষিণে থাকা ইউরাল পর্বতমালা , মধ্যাংশে পূর্ব – পশ্চিমে বিস্তৃত পৃথিবীর সর্বোচ্চ হিমালয় পর্বতমালা , কারাকোরাম পর্বতমালা , কুনলুন পর্বতমালা , অলতাইন পর্বতমালা , তিয়েনসান পর্বতমালা, অলতাই পর্বত , আরাবল্লী পর্বত প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । হিমালয় পর্বতশ্রেণির অন্তর্গত পৃথিবীর উচ্চতম শৃংগ এভারেষ্ট এবং কারাকোরাম এশিয়া মহাদেশেই অবস্থিত । অপরদিকে মালভূমির মধ্যে তিব্বত মালভূমি , পৃথিবীর উচ্চতম পামীর মালভূমি, সাইবেরিয়া মালভূমি , মংগোলিয়া মালভূমি , দাক্ষিণাত্য মালভূমি , আরব মালভূমি , ইরান মালভূমি ইত্যাদিই প্রধান ।
( ২ ) ইউরোপ মহাদেশ :- ভূ – প্রাকৃতিকভাবে ইউরোপ মহাদেশকে দুভাগে ভাগ করা যায় — উত্তর অংশটি পশ্চিমের ফ্রান্সের উপকূল থেকে পূর্বে ইউরাল পর্বতশ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সমতল ভূমি এবং দক্ষিণ অংশটি স্পেইন হতে কৃষ্ণসাগর পর্যন্ত পাহাড় – পর্বত , মালভূমি দ্বারা কোথাও বা উঁচু আবার কোথাও বা নীচু দক্ষিণ ইউরোপের পর্বতশ্রেণির মধ্যে আল্পস , পিরেনিজ , কার্থেপিয়ান ও ককেশাস বিশেষ উল্লেখযোগ্য । ককেশাস পর্বতশ্রেণির অন্তর্গত ‘ মাউণ্ট এলব্রাস ’ শৃংগ হল ইউরোপের উচ্চতম স্থান ( ৫,৬৩৩ মিটার ) অপরদিকে , আল্পস পর্বতের উচ্চতম শৃংগটি হল মাউণ্ট ব্ল্যাঙ্ক ( ৪,৮০৭ মিটার । )
ইউরোপের নদীসমূহের মধ্যে স্পেইনের এলব্রো , ফ্রান্সের রাইন ও সাইন , লোয়র ও গারণ ; জার্মানীর রাইন ও এল্ ; পোলাণ্ডের ওডার ও ভিচুলা , অষ্ট্রিয়া , হাঙ্গেরী ও রোমানিয়া , ডানিয়ুব ; বেলারুশ ও ইউক্রেনের নিপার ; ইটালীর পো ; গ্রেট ব্রিটেনের থেম্স ; রাশিয়ার ডন , ভল্গা ও ইউরাল ইত্যাদি হ্রদ বিশেষভাগে উল্লেখযোগ্য ।
( ৩ ) আফ্রিকা মহাদেশ :- আফ্রিকা পৃথিবীর দ্বিতীয় মহাদেশ । উপকূলবর্তী সংকীর্ণ সমতলভূমি ছাড়া মহাদেশটির বেশিরভাগ অংশই একটি বৃহৎ মালভূমি । আফ্রিকা মহাদেশে সুউচ্চ পর্বতশ্রেণি নাই । মহাদেশটিতে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা ছোট ছোট উচ্চভূমি এই মহাদেশের ভূপ্রকৃতিকে উঁচু – নীচু করে রেখেছে । এই মহাদেশের পূর্বপ্রান্তে থাকা কিলিমানজারো শৃংগ মহাদেশটির উচ্চতম স্থান ( ৫,৮৯৫ মিটার ) । আফ্রিকার উচ্চভূমিসমূহের মধ্যে উত্তর প্রান্তের এট্লাস , উত্তর – পূর্ব প্রান্তের ইথিওপিয়ান উচ্চভূমি ; পশ্চিম প্রান্তের এত্তা মাওয়া উচ্চভূমি , দক্ষিণ আফ্রিকার ড্রাকেন্সবার্গ উচ্চভূমি ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ।
পৃথিবীর বৃহত্তম নীল নদ ছাড়াও অন্যান্য প্রধান নদীসমূহ হল— কংগো ( জায়রে ) , নাইজার, জাম্বেসি , অরেঞ্জ , লিম্পোপো , ভোল্টা , সেনেগাল , সিবে ওগু , লুরিত , লুয়াঞ্চুয়া, কেলেডোন ইত্যাদি ।
উল্লেখযোগ্য হ্রদগুলো — ভিক্টোরিয়া , এলবার্ট , টাঙ্গানিকা , চাঁদ , ভোল্টা , নিয়াসা , কেবোরা বাচ্চা , মালাওয়ি , টুর্কানা , কিভু , কোচ্চৌ , এব্বে ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ।
পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমি সাহারা ছাড়াও কালাহারী ও নামিবিয়া মরুভূমি আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত।
( ৪ ) উত্তর আমেরিকা :- উত্তর আমেরিকা পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মহাদেশ । উত্তর আমেরিকা মহাদেশটির ভূ – প্রাকৃতিক গঠন বৈচিত্র্যময় । এর উচ্চতম স্থান ম্যাকিনলে শৃংগ (৬১৯৪ মিটার ) এবং নিম্নতম স্থান মৃত্যু উপত্যকা ( Death Valley ) । মহাদেশটির পশ্চিম ও পূর্ব অংশ দুটি উত্তর – দক্ষিণে পাহাড় পর্বতময় । বাকী অংশ উচ্চ ও নিম্ন সমতলভূমি । এই মহাদেশটিকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়—
( ১ ) রকি পার্বত্য অঞ্চল ।
( ২ ) বিশাল উচ্চ সমভূমি অঞ্চল ।
( ৩ ) আপালেশিয়ান উচ্চভূমি অঞ্চল ।
( ৪ ) উপকূলীয় নিম্ন সমতলভূমি অঞ্চল ।
উত্তর আমেরিকা মহাদেশে অনেক নদ – নদী ও হ্রদ আছে । নদী সমূহের মধ্যে মিসৌরী , মিসিসিপি , য়ুকুম , মেকেঞ্জি , রিওগ্রাণ্ডে , রেড , আরকানসাস , কলোরাডো , কলম্বিয়া , স্নেক , ওহিও , টেনেসি , হাডসন , সেণ্ট লরেন্স ইত্যাদি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ।
প্রধান প্রধান হ্রদসমূহ হল— সুপিরিয়র , হিউরন , মিচিগান , ইরি , অণ্টোরও , গ্রেট বিয়ার, গ্রেট স্লেভ , উইনিপেগ এবং গ্রেট সল্ট । মহাদেশের দক্ষিণ – পশ্চিম অংশে কলোরাডো নামে প্রায় মরুভূমি অঞ্চল আছে ।
( ৫ ) দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ :- উত্তর আমেরিকা মহাদেশের ঠিক দক্ষিণে অবস্থিত দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ। এই মহাদেশটি কিছুটা ত্রিভুজাকৃতি । এর উত্তর অংশটি যথেষ্ট প্রশস্ত এবং দক্ষিণ অংশ কিছু অপ্রশস্ত ।
দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ভূ – প্রকৃতি বৈচিত্র্যপূর্ণ । এই মহাদেশে উচ্চ পার্বত্যভূমি , নদীগঠিত সমভূমি , মালভূমি , উপকূলীয় সমভূমি , দ্বীপ , মরুভূমি ইত্যাদি প্রায় সকল ধরনের ভূ – অবয়ব দেখা যায় । দক্ষিণ আমেরিকার পশ্চিম।

অংশ উত্তর – দক্ষিণে পানামা যোজক হতে হর্ণ অন্তরীপ পর্যন্ত সুউচ্চ আন্দিজ পর্বতমালা বিস্তৃত হয়ে আছে । এই পর্বতমালা পৃথিবীর দীর্ঘতম ( প্রায় ৮০০০ কিলোমিটার ) পর্বতশ্রেণি । উচ্চতার দিক থেকে হিমালয় পর্বতের পরেই আন্দিজের স্থান । মহাদেশটির মধ্য – পূর্ব অংশে বিস্তীর্ণ ব্রাজিলিয়ান মালভূমি আছে । অপরদিকে আন্দিজ পর্বতমালার নিকটবর্তী অঞ্চলের উত্তর অংশে ইকুয়েডর মালভূমি এবং দক্ষিণ অংশে পারাণা – পাটাগণিয়া মালভূমি আছে । প্রশান্ত এবং আটলান্টিক উপকূলের সমভূমি অপ্রশস্ত। দক্ষিণ আমেরিকার উল্লেখযোগ্য নদীসমূহ হল — ওরিনকো , আমাজান , পারাণা , পারাগুয়ে ইত্যাদি । এই নদী কয়টি প্রায় সমগ্র মহাদেশে বিস্তৃত সমভূমির সৃষ্টি করেছে । পৃথিবীর উচ্চতম স্থানে অবস্থিত বৃহৎ টিটিকাকা হ্রদ এই মহাদেশে অবস্থিত । এই মহাদেশে আটাকামা এবং পাটাগোণিয়া মরুভূমি আছে ।
( ৫ ) ওশেনিয়া মহাদেশ :- অষ্ট্রেলিয়া মহাদ্বীপকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ – পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত নিউজিল্যাণ্ড, টাসমানিয়া , নিউগিনি ইত্যাদি অনেক ছোট বড় দ্বীপসমূহকে নিয়ে ওশেনিয়া মহাদেশ গঠিত । এই মহাদেশ সম্পূর্ণভাবে দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত । এই ক্ষুদ্রতম মহাদেশের বৃহত্তম দেশ হল অষ্ট্রেলিয়া । ওশেনিয়া মহাদেশের প্রধান ভূখণ্ড অষ্ট্রেলিয়া , নিউজিল্যাণ্ড ইত্যাদি দ্বীপসমূহের চতুর্দিকে ঘিরে রয়েছে প্রশান্ত , ভারত ও দক্ষিণ মহাসাগর ।
ওশেনিয়া মহাদেশের মূল ভূখণ্ড অষ্ট্রেলিয়া একটি প্রাচীন মালভূমি । এই দেশের চারদিকে সংকীর্ণ উপকূলীয় সমভূমি আছে । অষ্ট্রেলিয়ার পূর্ব অংশটি গ্রেট ডিভাইডিংরেঞ্জ ও স্নোয়ি মাউণ্টেইন উচ্চভূমি অঞ্চল । মারে ও ডার্লিং নদীর অববাহিকা অঞ্চলে বৃহৎ সমভূমি আছে ।
নদ – নদী — মারে – ডালিং , বেলিয়াণ্ডো , ফিট্ওরয় , ফ্লিণ্ডার্স, ভিক্টোরিয়া , সোয়ান ইত্যাদি । হ্রদসমূহ — আয়ার , বার্লি , কার্ণেজি , ম্যাকে , ইয়েবে ইত্যাদি ।
এই মহাদেশের মরুভূমি হল অষ্ট্রেলিয়ার গ্রেট ভিক্টোরিয়া , গ্রেট স্যাণ্ডি টানামী , সিম্পসন , গিসন , লিট্ল স্যাণ্ডি , টিরারি, পেডিকা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য ।

প্রশ্ন ৬। এশিয়া মহাদেশের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ এশিয়া মহাদেশকে ভূ – প্রকৃতি অনুযায়ী ৫ টি ভাগে ভাগ করা যায়—
( ১ ) উত্তরের বিশাল নিম্নভূমি ।
( ২ ) মধ্য এশিয়ার মালভূমি ও পার্বত্য অঞ্চল ।
( ৩ ) দক্ষিণ এশিয়ার মালভূমি অঞ্চল ।
( ৪ ) বৃহৎ নদী উপত্যকা ও সমভূমি অঞ্চল ।
( ৫ ) এশিয়ার পূর্বের আগ্নেয় দ্বীপমালা ।
( ১ ) উত্তরের বিশাল নিম্নভূমি :- এশিয়ার উত্তরভাগে পূর্বে সাইবেরিয়ার উত্তর – পূর্বের এনাডির অঞ্চল থেকে পশ্চিমে ইউরাল পর্বত এবং কাস্পিয়ান সাগর পর্যন্ত একটি বিশাল ত্রিভুজাকার নিম্ন সমতল আছে । এই সমতল ভূমি মধ্য এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চল থেকে উত্তর সাগরের দিকে ক্রমশ ঢালু হয়ে নেমে গেছে । এজন্য এই অঞ্চলের নদী ওব , লেনা এবং ইনিসি উত্তর দিকে উত্তর সাগরে পড়েছে । উত্তরের বৃহৎ সমতলকে তিনটি অংশে ভাগ করা যায় :
( ১ ) উত্তর – পূর্বের ক্ষয়জাত নিম্নভূমি । এই অঞ্চল উচ্চ – নীচ এবং শীতল তুন্দ্রা অঞ্চল ।
( ২ ) লেনা ইনিসি – ওব তিনটি নদীর সংযুক্ত সমতলভূমি । এই নিম্নভূমি অঞ্চলটি শীতল তুন্দ্রা অঞ্চলের অন্তর্গত । নিম্নাংশে জল জমা হয়ে বন্যার সৃষ্টি করে । কাজেই এই অঞ্চলে বিস্তীর্ণ জলাভূমি আছে ।
( ৩ ) কাস্পিয়ান সাগর হতে পূর্বে তুরান উপত্যকা পর্যন্ত — এই অঞ্চলটি কাজাখস্তান , তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের অর্ধশুষ্ক নিম্ন মরুভূমি অঞ্চলের অন্তর্গত ।
( ২ ) মধ্য এশিয়ার মালভূমি ও পার্বত্য অঞ্চল :- এই অঞ্চলটি এশিয়া মহাদেশের মধ্যভাগে অবস্থিত । এই অংশটি এশিয়া মহাদেশের প্রায় অংশ স্থান দখল করে রয়েছে । এই অঞ্চলটি বিভিন্ন উচ্চতার পর্বতমালা ও মালভূমি দ্বারা গঠিত ৷ পামির গ্রন্থির ত্রিভুজাকৃতি ভূ – খণ্ডটির পশ্চিম চূড়া , চীন দেশের অন্তর ভাগে দক্ষিণ – পূর্ব চূড়া এবং মহাদেশের উত্তর – পূর্ব অংশটি উত্তর – পূর্ব চূড়া রচনা করেছে । মধ্য এশিয়ার মালভূমি অঞ্চলটিকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়— পূর্বের মালভূমি অঞ্চল এবং পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চল । পামির মালভূমি এই দুটি মালভূমিকে পৃথক করেছে । পানির হল পৃথিবীর সর্বোচ্চ মালভূমি । পামিরকে বলে ‘ পৃথিবীর ছাদ ’ বলে ।
এই অঞ্চলের অন্তর্গত হিমালয় পর্বতশ্রেণি ধনুকের মত ভারতের উত্তর দিকে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে একটি শাখা চীন দেশে এবং অন্যটি ভারত ও ম্যানমারের মধ্য দিয়ে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ হয়ে সুমাত্রা ও জাভা দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত গিয়েছে । পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউণ্ট এভারেস্ট হিমালয় পর্বতে অবস্থিত । হিমালয়ের উত্তরে কারাকোরাম পর্বতে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ গড্উইন অষ্টিন বা কে₂ ( K₂ ) অবস্থিত । এর উত্তর দিকে আলটিনটাগ , নানসান , কুলুন ও খিংগাল পর্বত অবস্থিত । পামির গ্রন্থির দক্ষিণ – পশ্চিম দিকে সুলেমান ও ক্ষীরথর পর্বত ইরানের দক্ষিণে জাগ্রস নাম নিয়ে আর্মেনীয়া গ্রন্থিতে মিশেছে । পামির গ্রন্থির পশ্চিম দিক দিয়ে হিন্দুকুশ পর্বত পারস্যের উত্তরে এলবার্জ নামে আর্মেনীয় গ্রন্থিতে মিশেছে ।
( ৩ ) দক্ষিণ এশিয়ার মালভূমি অঞ্চল :- এশিয়া মহাদেশের দক্ষিণে পৌরাণিক শিলার দ্বারা গঠিত প্রধান মালভূমিগুলি হল—
( ১ ) আরব মালভূমি ।
( ২ ) ভারত মালভূমি । এবং
( ৩ ) ইউনান ও সান মালভূমি ।
( ক ) আরব মালভূমি :- ইহা একটি শুষ্ক মরুময় মালভূমি । এই মালভূমি দক্ষিণ – পশ্চিম দিক হতে উত্তর – পূর্ব দিকে ঢালু হয়ে ইউফ্রেটিশ ও টাইগ্রীস নদীর উপত্যকাতে মিশেছে ।
( খ ) ভারত মালভূমি :- এই মালভূমিটি ভারত – উপমহাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত । এই মালভূমির পশ্চিমে পশ্চিমঘাট পর্বত এবং পূর্বসীমায় পূর্বঘাট নামে একটি অনুচ্চ পর্বত রয়েছে।মালভূমির উত্তর সীমা আরাবল্লী , মহাদেব , মহাকাল , বিন্ধ্য , কাইমুর , রাজমহল , পরেশনাথ ইত্যাদি পর্বত ঘিরে রেখেছে ।
( গ ) ইউনান ও সান মালভূমি :- ম্যানমারের ইউনান এবং চীনের সান মালভূমি দুটিও দক্ষিণ এশিয়ার উল্লেখযোগ্য মালভূমি । এই মালভূমির ভূ – পৃষ্ঠ পৌরাণিক শিলার দ্বারা গঠিত এবং যথেষ্ট পরিমাণে উঁচু – নীচু । এই মালভূমির মধ্য দিয়ে সাইলুন , মেকং , ইয়াংসি ইত্যাদি নদী প্রবাহিত হয়েছে ।
( ৪ ) বৃহৎ নদী উপত্যকা ও সমভূমি অঞ্চল :- এশিয়া মহাদেশের প্রধান নদী ইউফ্রেটিস , টাইগ্রীস , সিন্ধু , গঙ্গা , ব্রহ্মপুত্র , মেকং , মেনাম , ইয়াংসি , সালুইন , ইরাবতী , লেনা, আমুর প্রভৃতি নদীগুলি প্রতি বৎসর পলিমাটি ফেলে নিজ নিজ উপত্যকায় সমভূমির সৃষ্টি করেছে । এজন্য উপত্যকাগুলি কৃষিকার্যের উপযোগী । ফলে এই অঞ্চলগুলিতে জনবসতি ঘন।এগুলির ভেতরে ইউফ্রেটিস , টাইগ্রীস , সিন্ধু , গঙ্গা , হোয়াংহো , সেংজিয়াং ইত্যাদি নদী উপত্যকাগুলিতে প্রাচীন সভ্যতাগুলি গড়ে উঠেছিল ।
( ৫ ) এশিয়ার পূর্বের আগ্নেয় দ্বীপমালা :- এশিয়া মহাদেশের পূর্বে কিউরাইল , শাখালিন , জাপান দ্বীপপুঞ্জ , তাইওয়ান , ফিলিপাইন , কালিমাষ্টান ইত্যাদি দ্বীপপুঞ্জগুলি মালার মত ঘিরে এই দ্বীপগুলির মধ্যে দিয়ে একটি পর্বতশ্রেণি রয়েছে । এই পর্বতসমূহতে অনেক আগ্নেয়গিরি আছে । এর মধ্যে জাপানের হন্দু দ্বীপের ফুজিয়ামা সবচাইতে উঁচু আগ্নেয়গিরি ।
প্রশ্ন ৭। কারণ দর্শিয়ে উত্তর লেখো :
( ক ) পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশই উত্তর গোলার্ধে অবস্থান করছে কেন ?
উত্তরঃ জলমণ্ডলের বৃহৎ অংশ ( ৫৭ শতাংশ ) দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত । অপরদিকে স্থলভাগের বৃহৎ অংশ ( ৬৭ শতাংশ ) উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত । এছাড়া এন্টার্কটিকা মহাদেশে কোন জনবসতি নেই । এই কারণে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯০ শতাংশ উত্তর গোলার্ধে বাস করে ।
( খ ) এশিয়া মহাদেশের জলবায়ু বৈচিত্র্যময় কেন ?
উত্তরঃ এশিয়া মহাদেশের জলবায়ু বৈচিত্র্যময় হবার কারণগুলো হল—
( ১ ) সমগ্র মহাদেশটি উত্তরের শীতপ্রধান অঞ্চল হতে দক্ষিণে গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত হওয়ার জন্য শীত এবং গ্রীষ্ম উভয়ই এতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ।
( ২ ) এই মহাদেশ বন্ধুর পাহাড় – পর্বতে পরিপূর্ণ । এইজন্য পাহাড়গুলির অবস্থিতিই জলবায়ুর তারতম্য ঘটিয়েছে ।
( ৩ ) বিস্তৃত উপকূলরেখা তথা সাগর – মহাসাগরের প্রভাব জলবায়ুর উপরে পড়ার জন্য জলবায়ুর পার্থক্য দেখা যায় ।
( ৪ ) বাতাসের গতি এবং দিকও মহাদেশটির জলবায়ুর তারতম্য ঘটিয়েছে ।
( ৫ ) মাটি , জল , মানুষের বসতি এবং বৎসরের ঋতুগুলিও মহাদেশের জলবায়ুর তারতম্য ঘটিয়েছে বলা যায় ।
( গ ) এন্টার্কটিকা মহাদেশে মানুষের স্থায়ী বসতি নেই কেন ?
উত্তরঃ এণ্টার্কটিকা মহাদেশ প্রায় সারা বৎসরই পুরু বরফে আচ্ছাদিত থাকে । এখানে কোন বড় গাছ জন্মায় না । কেবলমাত্র কোন কোন স্থানে শ্যাওলা ও ঢেকী জাতীয় উদ্ভিদ দেখা যায়।এই সকল উদ্ভিদ সারা বৎসর থাকে না । এ জন্যই এই মহাদেশে কোন স্থায়ী বসতি নেই।
প্রশ্ন ৮। নীচের প্রশ্নগুলোর সংক্ষিপ্ত উত্তর লেখো :
( ক ) এশিয়া এবং ইউরোপ মহাদেশের মধ্যেকার প্রাকৃতিক সীমা কীসে সৃষ্টি হয়েছে ?
উত্তরঃ ইউরাল পর্বত দ্বারা এশিয়া ও ইউরোপের প্রাকৃতিক সীমা নির্দ্ধারিত হয়েছে ।
( খ ) পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বতমালা কোন্টি এবং কোথায় অবস্থিত ?
উত্তরঃ পৃথিবীর দীর্ঘতম পর্বতমালা হল আন্দিজ পর্বতমালা । আন্দিজ পর্বতমালা দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত ।
( গ ) আয়তনের ভিত্তিতে পৃথিবীর বৃহত্তম আর ক্ষুদ্রতম মহাদেশের নাম লেখো ।
উত্তরঃ এশিয়া পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ এবং ক্ষুদ্রতম মহাদেশ ওশেনিয়া ।
( ঘ ) পৃথিবীর কোন্ দেশ কোন্ দুটি মহাদেশে বিস্তৃত ?
উত্তরঃ রাশিয়া দেশটি ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশে বিস্তৃত ।
( ঙ ) আয়তনের ভিত্তিতে পৃথিবীর বৃহত্তম এবং ক্ষুদ্রতম দেশের নাম বলো ।
উত্তরঃ আয়তনের ভিত্তিতে পৃথিবীর বৃহত্তম দেশ রাশিয়া এবং ক্ষুদ্রতম দেশ ভেটিকান সিটি ।
( চ ) উত্তর আমেরিকা মহাদেশের প্রধান পর্বত শ্রেণিটির নাম কী ? এই পর্বতমালার দৈর্ঘ্য কত এবং মহাদেশের কোন্ অংশে অবস্থিত ?
উত্তরঃ উত্তর আমেরিকার প্রধান পর্বত শ্রেণিটির নাম রকি । এর দৈর্ঘ্য ৬,৮৮৩.কি.মি . এবং এই পর্বত শ্রেণিটি উত্তর আমেরিকার পশ্চিমে অবস্থিত।
( ছ ) পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমি কোন্টি এবং তা কোথায় অবস্থিত ?
উত্তরঃ পৃথিবীর বৃহত্তম মরুভূমিটির নাম সাহারা মরুভূমি । এই মরুভূমি আফ্রিকা মহাদেশে অবস্থিত ।
( জ ) এশিয়া মহাদেশের দুটি করে উত্তর ও পূর্বদিকে প্রবাহিত নদীর নাম লেখো ।
উত্তরঃ এশিয়া মহাদেশের দুটি উত্তরদিকে প্রবাহিত নদী হল লেনা এবং ইনিসি । দুটি পূর্বদিকে প্রবাহিত নদীর নাম ইয়াংসিকিয়াং এবং হোয়াংহো।
( ঝ ) অষ্ট্রেলিয়ার একটি করে প্রধান পর্বতশ্রেণি , নদী এবং মরুভূমির নাম লেখো ।
উত্তরঃ একটি পর্বত শ্রেণির নাম গ্রেট ডিভাইডিং রেঞ্জ , একটি নদীর নাম মারে – ডার্লিং এবং একটি মরুভূমির নাম হল গ্রেট ভিক্টোরিয়া ।
( ঞ ) ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত তথা ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে অবস্থিত তিনটি দেশের নাম লেখো ।
উত্তরঃ দেশ তিনটির নাম হল ফ্রান্স , স্পেন ও ইটালী ।
প্রশ্ন ৯। সংক্ষেপে টীকা লেখো :
( ক ) পেঞ্জিয়া ।
উত্তরঃ মহাদেশীয় বিস্থাপন বা সঞ্চারণ সূত্র ( Continental Drift Theory ) অনুযায়ী আদিতে , অর্থাৎ প্রায় ৩০০ নিযুত বৎসর পূর্বে পৃথিবীটির স্থলমণ্ডল একত্রিত হয়েছিল এবং এর চতুর্দিকে জলমণ্ডল দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল । পৃথিবীর এই অবস্থাতে থাকা স্থলমণ্ডলটিকে পেঞ্জিয়া ( Pangaea ) এবং এর চতুর্দিকে আবেষ্টনকারী জলমণ্ডলকে পান্থালাসা (Panthalassa ) বলে ।
( খ ) উত্তর মহাসাগর ।
উত্তরঃ উত্তর মহাসাগর প্রায় ১৪ নিযুত বর্গ কিলোমিটার স্থান জুড়ে আছে । এই মহাসাগর পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম মহাসাগর । এর আকার ভারত মহাসাগরের এক – পঞ্চমাংশ । এই মহাসাগরটি উত্তর মেরুতে বৃত্তাকারে আছে । এশিয়া , ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার উত্তরাংশ এই মহাসাগর বেষ্টন করে আছে । উত্তর মহাসাগরের গভীরতা প্রায় ৩৫০০ মিটার।বৎসরের প্রায় সময়ই বরফে ঢাকা থাকে ।
( গ ) ওসেনিয়া মহাদেশ ।
উত্তরঃ চারদশক পূর্বে ওশেনিয়া মহাদেশ বললে অষ্ট্রেলিয়া মহাদ্বীপ ও এর নিকটবর্তী টাসমেনিয়া , নিউজিল্যাণ্ড এবং নিউগিনি দ্বীপকে নিয়ে স্থলভাগ ও জলভাগকে ধরা হত । কিন্তু বর্তমানে জলপথ , বিমানপথ ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমের দ্বারা যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় অষ্ট্রেলিয়া , নিউজিল্যাণ্ড এবং এর নিকটবর্তী অনেক দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে সামাজিক , অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মিত্রতা অধিক সুদৃঢ় হওয়ায় এই সকল দ্বীপগুলিকে নিয়ে ওশেনিয়া মহাদেশের ধারণা জন্মেছে। এর উল্লেখযোগ্য দেশের নাম হল — অষ্ট্রেলিয়া , নিউজিল্যাণ্ড , ফিজি , টাভালু , ভানু আটু , সোলোমন দ্বীপপুঞ্জ , পপুওয়া নিউগিনি , টঙ্গা ইত্যাদি ।
( ঘ ) এশিয়া মহাদেশের নদ – নদী ।
উত্তরঃ এশিয়ার বৃহৎ নদী উপত্যকা অঞ্চল — ওবি , ইনিসি , লেনা এই তিনটি নদী এশিয়া মহাদেশের মধ্যাংশ ও পূর্বাংশের উচ্চ পর্বত হতে বের হয়ে উত্তর মহাসাগরে পড়েছে । অন্যদিকে আমুর , হোয়াংহো , ইয়াংসিকিয়াং ও সিকিয়াং মহাদেশটির পূর্ব অঞ্চলের পর্বত হতে বের হয়ে পূর্বে প্রবাহিত হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পড়েছে । মেকং , মেনাম দক্ষিণাংশের উচ্চ পর্বত হতে বের হয়ে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে দক্ষিণ চীন সাগর ও থাইল্যাণ্ড উপসাগরে পড়েছে । সালুইন ও ইরাবতী নদী দুটি চীন – ব্রহ্মদেশের পর্বত হতে বের হয়ে ভারত মহাসাগরের বঙ্গোপসাগরে পড়েছে । ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গা নদী হিমালয় পর্বত হতে উৎপন্ন হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে।
সিন্ধু নদী হিমালয়ে আবির্ভাব হয়ে আরব সাগরে পড়েছে । ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদী দুটি এশিয়া মাইনর অঞ্চলের পর্বত হতে উৎপন্ন হয়ে পারস্য উপমহাসাগরে পড়েছে । উপরোক্ত নদীসমূহ বৃহৎ সমভূমির সৃষ্টি করেছে ।
( ঙ ) আফ্রিকা মহাদেশের হ্রদসমূহ ।
উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশের উল্লেখযোগ্য হ্রদসমূহ হল — ভিক্টোরিয়া , এলবার্ট , ট্যাঙ্গানিকা , চাঁদ , ভোল্টা , নিয়াসা , কেবোরা বাচ্চা , মালাওই , টুর্কানা , কিভু , কোচ্চৌ , এব্বে ইত্যাদি।
( চ ) ইউরোপ মহাদেশের নদ – নদী ।
উত্তরঃ ইউরোপ মহাদেশের মধ্য ভাগ দিয়ে অনেক নদ – নদী প্রবাহিত হয়েছে । এই নদীগুলির অধিকাংশই ছোট কিন্তু নাব্য ও শিল্পপ্রধান অঞ্চলগুলির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত । এর জন্য দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে এই নদীগুলির গুরুত্ব অসীম । দক্ষিণের পার্বত্য অঞ্চলটি ইউরোপের প্রধান জলবিভাজিকা । ইউরোপের প্রধান নদীসমূহকে তিনভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন—
( ক ) ভঙ্গিল পর্বতমালার উত্তরের উত্তর বাহিনীর নদী ।
( খ ) ভঙ্গিল পর্বতমালার দক্ষিণের দক্ষিণবাহিনী নদী । এবং
( গ ) রুশ দেশের নদীসমূহ ।
( ক ) ফ্রান্স দেশের প্রধান নদী সাইন , লোয়র এবং গারণ । ভোজ পর্বত হতে পর্বতমা উৎপন্ন হওয়া মিউজ নদী ফ্রান্স , বেলজিয়াম ও হল্যাণ্ডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উত্তর সাগরে পড়েছে । রাইন নদী আল্পস্ থেকে উৎপত্তি হয়ে সুইজারল্যাণ্ড, ফ্রান্স ও জার্মানীর মধ্য দিয়ে উত্তর সাগরে পড়েছে । এই নদীতে পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ চলাচল করে । এ নদী জার্মানীর মধ্য দিয়ে উত্তর সাগরে মিশেছে । জার্মানীর মধ্য হতে নির্গত ওয়েজার নদী উত্তর সাগরে মিশেছে । কার্পেথিয়ান পর্বত থেকে ওডার ও ভিষ্টুলা নদী উৎপন্ন হয়ে জার্মানীর মধ্য দিয়ে বাল্টিক সাগরে পড়েছে।
( খ ) দক্ষিণ বাহিনী নদীসমূহের মধ্যে রোন নদী ফ্রান্সের মধ্য মালভূমি হতে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণ সীমা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে ভূমধ্য সাগরে পড়েছে । ইটালির পো – নদী আল্পস্ পর্বত হতে উৎপন্ন হয়ে ভূমধ্য সাগরে পড়েছে । আর্নো ও টাইবার নদী ভূমধ্য সাগরে পড়েছে । ব্লেক ফরেস্ট হতে উৎপন্ন হওয়া ডানিয়ুব নদী অনেকগুলি দেশের মধ্য দিয়ে পার হয়ে কৃষ্ণসাগরে পড়েছে । ভিয়েনা , বুডাপেষ্ট , বেলগ্রেড ইত্যাদি শহরগুলি ডানিয়ুব নদীর তীরে অবস্থিত ।
( গ ) ইউরোপীয় রুশিয়ার অন্তর্গত ভল্গা নদী এই মহাদেশের দীর্ঘতম নদী । ইহা কাস্পিয়ান সাগরে পড়েছে । রুশিয়ার প্রায় অর্ধেক এই নদীর অববাহিকা অধিকার করে রয়েছে । পশ্চিম ডুইনা ও উত্তর ডুইনা ভলডাই পাহাড় হতে বের হয়ে যথাক্রমে বাল্টিক সাগর ও উত্তর সাগরে পড়েছে । নিষ্টার , নিপার ও ডন রুশিয়ান দক্ষিণ অংশের প্রধান নদী ।
( ছ ) আপেলেসিয়ান উচ্চভূমি অঞ্চল ।
উত্তরঃ উত্তর আমেরিকার পূর্ব অংশে উত্তরে নিউফাউণ্ডল্যাণ্ড থেকে দক্ষিণে ফ্লোরিডা পর্যন্ত বিস্তৃত পাহাড় – পর্বত , সংকীর্ণ উপত্যকা ও ভগ্ন মালভূমি দ্বারা গঠিত উঁচু – নীচু আপালেশিয়ান উচ্চভূমি অঞ্চল আছে । এই অঞ্চলের দক্ষিণ অংশে এলিঘেণি ও ব্লুরিজ পর্বতশ্রেণি আছে । আপালেশিয়ান উচ্চভূমি থেকে পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরের উপকূলীয় অংশে উত্তরে নোভাস্কশিয়া থেকে দক্ষিণে পানামা পর্যন্ত এক বিস্তৃত উপকূলীয় সমতলভূমি আছে ।
( জ ) উত্তর আমেরিকা মহাদেশের হ্রদসমূহ ।
উত্তরঃ উত্তর আমেরিকার প্রধান হ্রদসমূহ হল — সুপিরিয়র , হিউরণ , মচিগান , এরি , অণ্টেরিও , গ্রেট বিয়ার , গ্রেট স্লেভ , উইনিপেগ ও গ্রেট সল্ট ।
প্রশ্ন ১০। পার্থক্য লেখো :
( ক ) মহীসোপান এবং মহীঢাল মহীসোপান ।
উত্তরঃ
মহীসোপান | মহীঢাল |
১। উপকূলের চারদিকে থাকা অগভীর (প্রায় ২০০০ মিটার পর্যন্ত ) অংশকে মহীসোপান বলে । | ১। মহীসোপানের পরবর্তী যথেষ্ট গভীর (প্রায় ২০০ মিটার পর্যন্ত ) অংশটিকে মহীঢাল বলে । |
২। এই স্থান উপকূল সংলগ্ন হওয়ায় মানুষের গতিবিধি দেখা যায় । | ২। এখানে কোন গতি – বিধি দেখা যায় না । |
( খ ) এভারেস্ট শৃঙ্গ ও গডউইন অস্টিন শৃঙ্গ ।
উত্তরঃ
এভারেস্ট শৃঙ্গ | গডউইন অস্টিন শৃঙ্গ |
১। এভারেষ্ট শৃঙ্গ পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ । | ১। এই শৃঙ্গ পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ । |
২। এর উচ্চতা ৮,৮৪৮ মিটার । | ২। এর উচ্চতা ৮,৬১১ মিটার । |
৩। এভারেষ্টের অপর কোন নাম নেই । | ৩। গডউইন অস্টিনকে K₂ ও বলে । |
৪। এভারেষ্ট হিমালয় পর্বতমালায় অবস্থিত । | ৪। কারাকোরাম পর্বতমালায় অবস্থিত । |
( গ ) ওসেনিয়া মহাদেশ এবং এন্টার্কটিকা মহাদেশ ।
উত্তরঃ
ওসেনিয়া মহাদেশ | এন্টার্কটিকা মহাদেশ |
১। ওসেনিয়া দক্ষিণ – পশ্চিম মহাসাগরে অবস্থিত। | ১। এই মহাদেশ দক্ষিণ – মহাসাগরে অবস্থিত । |
২। এই মহাদেশে স্থায়ী জনবসতি আছে । | ২। এখানে কোন জনবসতি নেই । |
৩। এখানে ক্যাঙ্গারু , উটপাখি , ভেড়া , গরু ইত্যাদি জীবজন্তু দেখা যায় । | ৩। এখানে শীল , পেঙ্গুইন , বল্গা হরিণ ইত্যাদি জীবজন্তু দেখা যায় । |
৪। এখানে নানাপ্রকারের উদ্ভিদ তথা তৃণজাতীয় উদ্ভিদ দেখা যায় । | ৪। এখানে বৎসরের কোন সময়ে শ্যাওলা ও ঢেকী জাতীয় উদ্ভিদ পাওয়া যায় । |
( ঘ ) গোবি মরুভূমি এবং আটাকামা মরুভূমি ।
উত্তৰঃ
গোবি মরুভূমি | আটাকামা মরুভূমি |
১। এই মরুভূমি মঙ্গোলিয়াতে অবস্থিত । | ১। এটা দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত । |
২। উষ্ণ মরুভূমি অঞ্চল । | ২। নাতিশীতোষ্ণ মরুভূমি অঞ্চল । |
৩। এই মরুভূমি প্রশান্ত মহা সাগরের উপকূলে অবস্থিত । | ৩। এই মরুভূমি তিব্বতের মালভূমি অঞ্চলে অবস্থিত । |
প্রশ্ন ১১। শুদ্ধ উত্তরটি বেছে দাও :
( ক ) পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসাগর কোন্টি ?
( ১ ) প্রশান্ত মহাসাগর।
( ২ ) ভারত মহাসাগর।
( ৩ ) আটলান্টিক মহাসাগর।
( ৪ ) দক্ষিণ মহাসাগর।
উত্তৰঃ ( ৩ ) আটলান্টিক মহাসাগর ।
( খ ) পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম মহাদেশ কোন্টি ?
( ১ ) উত্তর আমেরিকা মহাদেশ।
( ২ ) ইউরোপ মহাদেশ।
( ৩ ) এণ্টার্কটিকা মহাদেশ।
( ৪ ) ওসেনিয়া মহাদেশ।
উত্তৰঃ ( ৪ ) ওসেনিয়া মহাদেশ ।
( গ ) ফক্ল্যাণ্ড দ্বীপটি কোন্ মহাসাগরে অবস্থিত ?
( ১ ) আটলান্টিক মহাসাগর।
( ২ ) উত্তর মহাসাগর।
( ৩ ) প্রশান্ত মহাসাগর।
( ৪ ) ভারত মহাসাগর।
উত্তৰঃ ( ১ ) আটলান্টিক মহাসাগর ।
( ঘ ) এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশকে কোন্ সাগর পৃথক করেছে ?
( ১ ) ভূমধ্যসাগর।
( ২ ) লোহিত সাগর।
( ৩ ) কাস্পিয়ান সাগর।
( ৪ ) আরব সাগর।
উত্তৰঃ ( ২ ) লোহিত সাগর ।
( ঙ ) এশিয়া এবং ইউরোপ মহাদেশকে প্রাকৃতিকভাবে কে পৃথক করেছে
( ১ ) ইউরাল পর্বতমালা।
( ২ ) ককেসাস পর্বত।
( ৩ ) কাস্পিয়ান সাগর।
( ৪ ) ভল্গা নদী।
উত্তৰঃ ( ১ ) ইউরাল পর্বতমালা ।
( চ ) ইকুয়েডর কোন্ মহাদেশে অবস্থিত ?
( ১ ) উত্তর আমেরিকা।
( ২ ) দক্ষিণ আমেরিকা।
( ৩ ) আফ্ৰিকা।
( ৪ ) এশিয়া।
উত্তৰঃ ( ২ ) দক্ষিণ আমেরিকা ।
( ছ ) ব্রাজিলের রাজধানী কী ?
( ১ ) রিও ডি জেনেইরো।
( ২ ) সাও পাওলো।
( ৩ ) ব্রাসিলিয়া।
( ৪ ) লিমা।
উত্তৰঃ ব্রাসিলিয়া ।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর
প্রশ্ন ১। ২০১৫ সনের আনুমানিক তথ্য অনুযায়ী পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ৭৩০ কোটি ।
প্রশ্ন ২। কোন্ মহাদেশটি সবচেয়ে বড় ?
উত্তৰঃ এশিয়া ।
প্রশ্ন ৩। কোন্ মহাসাগরটি সবচেয়ে বড় ?
উত্তৰঃ প্রশান্ত মহাসাগর ।
প্রশ্ন ৪। পৃথিবীর মোট আয়তন কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ৫১০ নিযুত বর্গ কিলোমিটার ।
প্রশ্ন ৫। পৃথিবীতে মহাসাগর কয়টি এবং কী কী ?
উত্তৰঃ পৃথিবীতে মহাসাগর ৫ টি । প্রশান্ত মহাসাগর , আটলান্টিক মহাসাগর ভারত মহাসাগর , উত্তর মহাসাগর ও দক্ষিণ মহাসাগর ।
প্রশ্ন ৬। পৃথিবীতে মহাদেশ কয়টি এবং কী কী ?
উত্তৰঃ পৃথিবীতে মহাদেশ ৭ টি । এশিয়া , ইউরোপ , আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা , দক্ষিণ আমেরিকা , এন্টার্কটিকা , ওশেনিয়া।
প্রশ্ন ৭। পৃথিবীতে মোট স্থলভাগ ও জলভাগের আয়তন কত ?
উত্তৰঃ পৃথিবীতে মোট স্থলভাগ প্রায় ১৪৯ নিযুত বর্গ কিলোমিটার এবং জলভাগ প্রায় ৩৭১ বর্গ নিযুত বর্গ কিলোমিটার ।
প্রশ্ন ৮। পান্থালাসা বলতে কী বোঝ ?
উত্তৰঃ স্থলমণ্ডল বা পেঞ্জিয়ার চতুর্দিকে ঘিরে থাকা জলমণ্ডলটিকে পান্থালাসা বলে ।
প্রশ্ন ৯। কোন্ সাগর পেঞ্জিয়াকে উত্তর দক্ষিণে দুভাগে ভাগ করেছে ?
উত্তৰঃ টেথিস সাগর ।
প্রশ্ন ১০। পেঞ্জিয়ার ভাগ দুটির নাম কী কী ?
উত্তৰঃ উত্তর অংশটির নাম লরেশিয়া এবং দক্ষিণ অংশের নাম গণ্ডোয়ানাল্যাণ্ড ।
প্রশ্ন ১১। লরেশিয়া বিভক্ত হয়ে কোন্ কোন্ স্থলভাগের সৃষ্টি হয়েছে ?
উত্তৰঃ লরেশিয়া বিভক্ত হয়ে উত্তর আমেরিকা , গ্রীণল্যাণ্ড ও ভারত উপমহাদেশের উত্তরে থাকা ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের সৃষ্টি হয়েছিল ।
প্রশ্ন ১২। গণ্ডোয়ানা ল্যাণ্ড বিভক্ত হয়ে কোন্ কোন্ স্থলভাগের সৃষ্টি হয়েছে ?
উত্তৰঃ গণ্ডোয়ানা ল্যাণ্ড বিভক্ত হয়ে দক্ষিণ আমেরিকা , আফ্রিকা , মাদাগাস্কার , ভারতবর্ষ , আরব অঞ্চল , মালয়েশিয়া ও অন্যান্য দ্বীপসমূহ , অষ্ট্রেলিয়া , এন্টার্কটিকা ইত্যাদির সৃষ্টি হয়েছে ।
প্রশ্ন ১৩। স্থলমণ্ডলকে কী কী চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ?
উত্তৰঃ স্থলমণ্ডলকে চারটি অংশে ভাগ করা হয়েছে —
( ১ ) এশিয়া , ইউরোপ ও আফ্রিকা ।
( ২ ) উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা ।
( ৩ ) অষ্ট্রেলিয়া ও বহুসংখ্যক দ্বীপসহ ওশেনিয়া । এবং
( ৪ ) এন্টার্কটিকা মহাদেশ ।
প্রশ্ন ১৪। পৃথিবীর মোট কত শতাংশ লোক উত্তর গোলার্ধে বাস করে ?
উত্তৰঃ প্রায় ৯০ শতাংশ ।
প্রশ্ন ১৫। পৃথিবীর গভীরতম খাত কোনটি ?
উত্তৰঃ প্রশান্ত মহাসাগরের মেরিয়ানা বা চ্যালেঞ্জার খাত ( ১১,০২২ মিটার গভীর ) ।
প্রশ্ন ১৬। পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগর কোন্টি ?
উত্তৰঃ প্রশান্ত মহাসাগর ।
প্রশ্ন ১৭। প্রশান্ত মহাসাগরে ছোট বড় কয়টি দ্বীপ আছে ?
উত্তৰঃ প্রায় ২০,০০০ টি ।
প্রশ্ন ১৮। প্রশান্ত মহাসাগরের গড় গভীরতা কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ৫০০০ মিটার ।
প্রশ্ন ১৯। আটলান্টিক মহাসাগরের গড় গভীরতা কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ৩০০০ মিটার ।
প্রশ্ন ২০। প্রশান্ত মহাসাগরের বিস্তৃতি কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ১৬৫ নিযুত বর্গ কিলোমিটার ।
প্রশ্ন ২১। আটলান্টিক মহাসাগরের বিস্তৃতি কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ৮২ নিযুত বর্গ কিলোমিটার ।
প্রশ্ন ২২। ভারত মহাসাগরের বিস্তৃতি কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ৭৩ নিযুত বর্গ কিলোমিটার ।
প্রশ্ন ২৩। ভারত মহাসাগরের গড় গভীরতা কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ৪০০০ মিটার ।
এশিয়া মহাদেশ
প্রশ্ন ১। পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ কোন্টি ?
উত্তৰঃ এশিয়া মহাদেশ ।
প্রশ্ন ২। কোন গ্রন্থিকে পৃথিবীর ছাদ বলা হয় ?
উত্তৰঃ পামীর গ্রন্থিকে ।
প্রশ্ন ৩। এশিয়ার কোন্ হ্রদটি পৃথিবীর মধ্যে বৃহত্তম ?
উত্তৰঃ কাস্পিয়ান হ্রদ ।
প্রশ্ন ৪। এশিয়ার কোন্ দেশে জনসংখ্যা সর্বাধিক ?
উত্তৰঃ চীনদেশে ।
প্রশ্ন ৫। এশিয়ার অন্তর্বাহিনী নদীগুলির নাম লেখো ।
উত্তৰঃ এশিয়া মহাদেশের অন্তর্বাহিনী নদীগুলি হল— তারিম , ইউরাল , আমুদরিয়া ও জর্ডান।
প্রশ্ন ৬। এশিয়া মহাদেশের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত ?
উত্তৰঃ এশিয়া মহাদেশের দৈর্ঘ্য ৯৬০০ কি.মি. এবং প্রস্থ ৮৪৮০ কি.মি .।
প্রশ্ন ৭। এশিয়ার মোট কালি কত ?
উত্তৰঃ ৪৪.২ নিযুত বর্গ কি.মি. ।
প্রশ্ন ৮। এশিয়া ভারতবর্ষের কতগুণ ?
উত্তৰঃ ১৪ গুণ ।
প্রশ্ন ৯। এশিয়ার চারিসীমা লেখো ।
উত্তৰঃ এশিয়ার উত্তরে উত্তর সাগর , পূর্বে বেরিং প্রণালী ও প্রশাস্ত মহাসাগর , দক্ষিণে ভারত মহাসাগর এবং পশ্চিমে লোহিত সাগর , সুয়েজ খাল , ভূমধ্যসাগর , ককেসাস পর্বত , কাস্পিয়ান সাগর , ইউরাল নদী ও ইউরাল পর্বতমালা ।
প্রশ্ন ১০। এশিয়া মহাদেশের উপকূলভাগের দৈর্ঘ্য কত ?
উত্তৰঃ প্রায় ৫৮০০০ কিলোমিটার ।
প্রশ্ন ১১। পৃথিবীর ছাদ কাকে বলা হয় ?
উত্তৰঃ পামীর মালভূমিকে ।
প্রশ্ন ১২। এশিয়ার কয়েকটি ধর্মের নাম লেখো ।
উত্তৰঃ ভারতের হিন্দু , জৈন , বৌদ্ধও শিখ । পশ্চিম এশিয়ার ইহুদী , পার্শী , খ্রিস্টান ও ইসলাম ধর্ম । চীন দেশের কনফুসিয়াস ও তাও এবং জাপানের শ্বিন্টো ।
প্রশ্ন ১৩। এশিয়ার কোন স্থানটিকে প্রাচ্যের ম্যানচেষ্টার বলা হয় এবং কেন ?
উত্তৰঃ জাপানের ওসাকাকে প্রাচ্যের ম্যানচেষ্টার বলা হয় । এই স্থানে জাপানের বৃহত্তম কার্পাস বয়ন শিল্পকেন্দ্র । এই স্থানে টেরিলিন , নাইলন , পলিয়েস্টার , রেয়ন প্রভৃতি কৃত্রিম তন্তুজাত বস্ত্রবয়ন শিল্প গড়ে উঠেছে ।
প্রশ্ন ১৪। ইয়াংসিকিয়াং নদীর অববাহিকায় জনবসতি ঘন কেন ?
উত্তৰঃ এই অববাহিকার আয়তন খাস চীনের প্রায় ১/৩ অংশ । ইহা তিব্বতের মালভূমি থেকে উৎপন্ন হয়ে চীনের সাগরে পড়েছে । এই নদীর গতিপথে কয়েকটি হ্রদ থাকায় এখানে হোয়াহোং নদীর ন্যায় বন্যা হয় না । নদীর উভয় পারে বহু উর্বর উপত্যকা আছে । একেবারে উচ্চখণ্ড ব্যতীত এই নদীর মাঝখানে এবং শেষ হওয়ার প্রায় ১,৫০০ কিলোমিটার সুনাব্য , এর নদী , শাখা নদী এবং খালসমূহ চীনাদের যাতায়াত ও দৈনন্দিন জীবনের প্রধান সম্বল । তদুপরি নদীটির পার্বত্য অববাহিকায় কয়লা , লোহা ও সোনার খনি আছে । এই সকল সুবিধা থাকার জন্য এখানে চীন দেশের প্রায় অর্দ্ধেক লোক এই নদীর পাড়ে কৃষিকার্য করে সুন্দর নগর গড়ে জীবন অতিবাহিত করছে । জলবায়ুর উপযোগিতার জন্যও এখানে জনবসতি ঘন । এই অঞ্চলে শীতকালে খুব বেশি শীত পড়ে না এবং গরমের দিনে অল্প বৃষ্টিপাত হয় ।
প্রশ্ন ১৫। দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ায় লোকবসতি ঘন কেন ?
উত্তৰঃ দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার গঙ্গা , ব্রহ্মপুত্র , ইরাবতী , মেনাম, মেকং প্রভৃতি নদী উপত্যকায় ভূমি অত্যন্ত উর্বর । গ্রীষ্মকালে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় । মালয়, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি অঞ্চলে সারা বৎসরই পরিচালন বৃষ্টিপাত হয় । এই জন্য দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার বহু লোক কৃষিকার্য করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে । জীবিকা অর্জন সহজ বলেই এই অঞ্চলে লোকবসতি ঘন ।
প্রশ্ন ১৬। এশিয়ার মৌসুমী অঞ্চলের দেশগুলি উন্নত কেন ?
উত্তৰঃ এশিয়ার মৌসুমী অঞ্চলের অন্তর্গত দেশগুলিতে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় । ভারত , মায়ানমার , থাইল্যাণ্ড , চীনের দক্ষিণ – পূর্ব অংশ ও মধ্যভাগ , জাপান , কোরিয়ার কিছু অংশে মৌসুমী জলবায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হয় । গ্রীষ্মকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অধিক । শীতকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ অতিশয় কম । শ্রীলঙ্কা , ইন্দোনেশিয়া , মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার দ্বীপপুঞ্জগুলিতে সারবৎসরই বৃষ্টিপাত হয় । এজন্য সমভূমি অঞ্চলগুলিতে চাষাবাদের সুবিধা আছে । বেশির ভাগ লোকের উপজীবিকা কৃষি ।
মৌসুমী বায়ু ও বরফগলা জল দ্বারা পরিপুষ্ট দক্ষিণ প্রবাহিনী ও পূর্ব প্রবাহিনী নদীগুলো বিস্তৃত সমভূমির সৃষ্টি করেছে । এগুলি এশিয়ার বিভিন্ন সভ্যতার মূল ভিত্তি । সিন্ধু – গঙ্গা অঞ্চলে আর্যসভ্যতা , ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদীর অববাহিকাতে মেসোপটেমিয়া সভ্যতা , ইরাবতী , সালুইন , মেকং , মেনাম ইত্যাদিতে ইন্দোচীন সভ্যতা এবং ইয়াংসিকিয়াং এবং হোয়াংহো নদীর অববাহিকাতে চীন সভ্যতার উন্মেষ ঘটেছিল । পাকিস্তানের অন্তর্গত সিন্ধুনদের অববাহিকাতেও চাষ করা হয় । এই অঞ্চলের নদীগুলি নাব্য ও জলসেচের উপযুক্ত । সেজন্য অতীতের কৃষিভিত্তিক এশিয়াতে নদীমাতৃক সমভূমি অঞ্চলে সহজেই অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নতি সম্ভব হয়েছে । মৌসুমী জলবায়ুর প্রভাবেই এই অঞ্চলগুলো বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর । এজন্য এ অঞ্চলে জলবসতির ঘনত্বও অত্যধিক । কাজেই এশিয়াতে মৌসুমী অঞ্চলের অন্তর্গত অঞ্চল অধিক উন্নতি লাভ করেছে । এই অঞ্চলগুলিতে কৃষি , শিল্প , যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদির ক্ষেত্রে যথেষ্ট উন্নত ।
প্রশ্ন ১৭। এশিয়ার সকল অঞ্চল বা দেশ সমান উন্নত নয় কেন ?
উত্তৰঃ এশিয়ার সকল অঞ্চল বা দেশ সমান উন্নত নয় । কিছু সংখ্যক দেশ উন্নতির পথে অগ্রসর হলেও কিছু কিছু দেশ বর্তমানেও অগ্রসর হয়ে আছে । এ ধরনের বিভিন্নতার কারণগুলোর মধ্যে ভূ – প্রকৃতির বৈচিত্র্য , জলবায়ুর ভিন্নতা এবং প্রাকৃতিক সম্পদ বিতরণের অসমতাই প্রধান । প্রতিকূল ভূ – প্রকৃতি ও জলবায়ু প্রধানত জনবসতি , কৃষিকার্য ও যাতায়াতের সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট অসুবিধার সৃষ্টি করে । এর ফলে এ সকল অঞ্চলে উন্নয়নের সম্ভাবনা সীমিত হয়ে পড়ে এবং জনবসতিও পাতলা হয় । প্রয়োজনীয় প্রাকৃতিক সম্পদ না থাকলে কোন দেশ বা অঞ্চলের উন্নতির পথ গতিরুদ্ধ হয়ে যায় । প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর অঞ্চলগুলো অর্থনৈতিক উন্নতি লাভ করতে পারে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের নামে যাতায়াত ব্যবস্থা ও আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধাসমূহ বৃদ্ধি পায় ।
প্রশ্ন ১৮। জাপান শিল্পে উন্নত কেন ?
উত্তৰঃ জাপানের শিল্পোন্নতির কারণ :- জাপান এশিয়ার শ্রেষ্ঠ এবং বিশ্বের তৃতীয় প্রধান শিল্পোন্নত দেশ । জাপানের শিল্পোন্নতির কারণগুলি হলঃ
( ১ ) দ্বৈপ রাষ্ট্র হিসেবে জাপানের বিশেষ সুবিধা :- জাপান দ্বীপ নিয়ে গঠিত রাষ্ট্র । দেশের উপকূলভাগ ভগ্ন হওয়ার ফলে বিভিন্ন উপকূলে প্রথম শ্রেণির বন্দর গড়ে উঠেছে । ফলে কাঁচামাল আমদানি ও শিল্পজাত দ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে এক বিশেষ সুবিধা লাভ করেছে ।
( ২ ) সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ার জন্য জলপথের সুবিধা :- চারদিক দিয়ে সমুদ্রবেষ্টিত হওয়ায় জাপানের পক্ষে কম খরচে সমুদ্রপথে জিনিসপত্র আমদানি – রপ্তানি করার সুবিধা হয়েছে।
( ৩ ) প্রতিবেশী দেশ থেকে কাঁচামাল সংগ্রহের সুবিধা :- জাপান শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামালে সমৃদ্ধ না হলেও এশিয়ার কাঁচামাল সমৃদ্ধ দেশগুলির কাছাকাছি অবস্থিত । ফলে শিল্পের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল সংগ্রহ করতে অসুবিধা হয় না ।
( ৪ ) শ্রমের উপযোগী নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু :- জাপানের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ হওয়ার দরুন কঠোর শ্রমের সহায়ক । সেইজন্য জাপানের শ্রমিক পরিশ্রমী ও দক্ষ ।
( ৫ ) খরস্রোতা নদী থেকে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন :- জাপানের বেশির ভাগ জায়গা পবর্তময় হওয়ার জন্য এদেশের নাতিদীর্ঘ নদীগুলি খরস্রোতা । ফলে এইসব নদী থেকে প্রচুর জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় । সস্তায় প্রচুর জলবিদ্যুৎ সরবরাহের সুবিধার জন্য জাপানে শিল্পের উন্নতি ঘটেছে ।
( ৬ ) বনভূমি থেকে প্রচুর কাঠের সরবরাহ :- জাপানের বনভূমি থেকে প্রচুর উন্নতমানের কাঠ পাওয়া যায় । এই কাঠ জাহাজ নির্মাণ শিল্প , কাগজ শিল্প ও অন্যান্য শিল্পের প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয় । ফলে বনভূমি থেকে প্রয়োজনীয় কাঠ পাওয়ার সুবিধা থাকার জন্য শিল্পের উন্নতি ঘটেছে।
( ৭ ) কৃষিজমির অভাব :- আয়তনের তুলনায় জাপানে জনসংখ্যা অত্যন্ত বেশি , অথচ কৃষিজমির অভাব । কৃষিজমির অভাব থাকায় জীবিকার বিকল্প হিসেবে অধিবাসীরা শিল্পকে বেছে নিতে বাধ্য হয়েছে । এই কারণে জাপানের অধিবাসীরা শিল্পমুখী ।
( ৮ ) জাতীয়তাবাদী বলিষ্ঠ চরিত্র :- জাতীয়তাবোধ জাপানি চরিত্রের এক দুর্লভ বৈশিষ্ট্য।তারা দেশকে অত্যন্ত ভালবাসে । ফলে তারা প্রত্যেকটি কাজ নিপুণভাবে মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন করে । সেইজন্য জাপানি শিল্পজাত দ্রব্যের মান উৎকৃষ্ট ।
( ৯ ) স্বল্প উৎপাদন ব্যয় ও উৎপাদিত পণ্যের অত্যুচ্চ মান :- স্বল্প উৎপাদন ব্যয়ে শিল্পদ্রব্য তৈরি এবং উৎপাদিত পণ্যের অত্যুচ্চ মানের জন্য বিশ্বের বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে জাপান শ্রেষ্ঠ আসন অধিকার করেছে । সারা পৃথিবী জুড়ে জাপানি শিল্পদ্রব্যের বিপুল চাহিদা জাপানের অসামান্য শিল্পোন্নতির কারণ ।
( ১০ ) শিল্প নির্বাচনের দক্ষতা :- জাপানের শিল্পগুলি একে অপরের প্রতিযোগী নয় , বরং একে অপরের পরিপূরক । শিল্প নির্বাচনের এই দক্ষতার জন্য জাপান শিল্পে উন্নতি করেছে ।

( ১১ ) জাপানের সঙ্গে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠতা :- জাপানের সঙ্গে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ । এই ঘনিষ্ঠতা জাপানের শিল্পোন্নতির ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়তা করেছে ।
( ১২ ) অন্যান্য কারণ :- জাপানের শিল্পের অগ্রগতির ক্ষেত্রে অন্যান্য কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলি দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেগুলি হল—
( ক ) উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা ।
( খ ) সরকারি আনুকূল্য ও পৃষ্ঠপোষকতা ।
( গ ) কারিগরি নৈপুণ্য ।
( ঘ ) সমবায় পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প গঠন প্রভৃতি ।
প্রশ্ন ১৯। এশিয়ার বেশির ভাগ লোক কৃষিজীবী হবার কারণ কি ?
উত্তৰঃ এশিয়ার অর্থনীতি মূলত কৃষিভিত্তিক । জাপান ছাড়া প্রায় দেশগুলির লোক প্রধানত কৃষিজীবী । প্রধান শস্যগুলি হল — ধান , গম , আখ , চা , রবার , পাট ও কার্পাস । পৃথিবীর মোট ধান উৎপাদনের শতকরা ৯০ ভাগ এশিয়া মহাদেশের ক্রান্তীয় মৌসুমী অঞ্চলে উৎপাদন হয় । এশিয়ার পশ্চিমের পাকিস্তান থেকে আরম্ভ করে দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ চীনকে ধরে জাপান পর্যন্ত এই সমগ্র অঞ্চলটি ধান , চা , পাট , কার্পাস , আখ , তামাক, বাজরা , সরিষা , রবার এবং মশলা জাতীয় শস্যের জন্য বিখ্যাত । ক্রান্তীয় ও উপক্রান্তীয় মরু অঞ্চলে মরুদ্যানগুলোতে উৎপাদিত শস্যসমূহের ভেতর খেজুর , বড়ই , গম , কার্পাস , আঙুর , আপেল , বাদাম ইত্যাদি । সৌদি আরব এবং ইয়েমেনের মরুদ্যানগুলোতে পৃথিবীর সর্বোৎকৃষ্ট কফি উৎপাদিত হয় ।
ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান শস্যসমূহ হল — গম , কার্পাস, তামাক । এ অঞ্চলে আপেল , আঙুর , জলপাই , কমলা ইত্যাদি ফলমূল উৎপাদিত হয় । মাঞ্চুরীয় জলবায়ু অঞ্চলে গম, বার্লি , ওট এবং সয়াবিন উৎপন্ন হয় । ষ্টেপ অঞ্চলে জল সিঞ্চনের মাধ্যমে কার্পাস , গম , ভুট্টা ইত্যাদি উৎপাদন করা হয় । তাইগা অঞ্চলের দক্ষিণাংশে কিছু পরিমাণে গম , ওট ও বার্লি উৎপাদন করা হয় । ‘ অতএব দেখা যায় যে , জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতের ওপর কৃষিকার্য নির্ভর করে । এশিয়া খনিজ সম্পদে উন্নত হওয়া সত্ত্বেও শিল্পোদ্যোগে পিছিয়ে আছে ।
একমাত্র জাপান শিল্পোদ্যোগে উন্নতিলাভ করেছে । এশিয়ার দক্ষিণ – পূর্বাঞ্চল নদীবহুল সমভূমি কৃষিকার্যতে সহায়তা করেছে । কাজেই বেশির ভাগ লোক কৃষিকার্যকে উপজীবিকা হিসেবে গ্রহণ করেছে । শিল্পোদ্যোগে প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন । বেশির ভাগ লোক দরিদ্র হওয়াতে কৃষিকেই উপজীবিকা হিসেবে নিয়েছে । এশিয়াতে সর্বাধিক জনসংখ্যা থাকার ফলে সস্তা শ্রমিকও সহজলভ্য কৃষিকার্যে প্রচুর পরিমাণে সস্তা শ্রমিকের প্রয়োজন ৷
প্রশ্ন ২০। এশিয়া মহাদেশকে ভূ – প্রাকৃতিক গঠন অনুসারে ভাগ কর এবং প্রতিটি ভাগের বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে লেখ ।
উত্তৰঃ ভূ – প্রাকৃতিক গঠন অনুসারে এশিয়া মহাদেশকে প্রধানত ৮ টি ভাগে ভাগ করা যায়—
( ১ ) উত্তরের বিশাল নিম্নভূমি অঞ্চল ।
( ২ ) মধ্য এশিয়ার পার্বত্য এবং মালভূমি অঞ্চল ।
( ৩ ) পশ্চিম এশিয়ার মালভূমি অঞ্চল ।
( ৪ ) দক্ষিণ এশিয়ার মালভূমি অঞ্চল ।
( ৫ ) পূর্ব এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চল ।
( ৬ ) বৃহৎ নদী উপত্যকা অঞ্চল ।
( ৭ ) উপকূল অঞ্চল । এবং
( ৮ ) সাগরীয় দ্বীপসমূহ ।
( ১ ) উত্তরের বিশাল নিম্নভূমি অঞ্চল :- এশিয়া মহাদেশের উত্তর ভাগের বিস্তৃত অঞ্চলটিকে নিম্ন অঞ্চল বলা হয় । অবশ্য কিছু কিছু অঞ্চলে পাহাড় পর্বত , মালভূমি ও নদী উপত্যকা থাকার ফলে এর ভূ – প্রকৃতি কোন কোন স্থানে উঁচু – নীচু । এই অঞ্চলটি পূর্বের বেরিং প্রণালী থেকে পশ্চিম কাস্পিয়ান সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত । এই অঞ্চলটিকে আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়—
( ক ) পশ্চিম সাইবেরিয়ার নিম্নভূমি ।
( খ ) মধ্য সাইবেরিয়ার নিম্নভূমি । এবং
( গ ) পূর্ব সাইবেরিয়ার নিম্নভূমি অঞ্চল ।
( ক ) পশ্চিম সাইবেরিয়ার নিম্নভূমি :- এই অঞ্চলটি পশ্চিমে কাস্পিয়ান ও উত্তরে য়ুরাল পর্বতের মধ্যে অবস্থিত । এই অঞ্চলটিতে আরব সাগর ও কাস্পিয়ান হ্রদে প্রবাহিত বহু নদী আছে ।
( খ ) মধ্য এশিয়ার সাইবেরিয়া অঞ্চল :- এই অঞ্চলটি পুরোনো শিলা দ্বারা গঠিত নিম্নমালভূমি অঞ্চলে বিস্তৃত হয়ে আছে । প্রধানত ওবে এবং ইনিসি দুটো বৃহৎ নদী এবং সেগুলির বহু সংখ্যক উপনদী দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে এই মালভূমি অঞ্চল গঠিত ।
( গ ) পূর্ব সাইবেরিয়ার নিম্নভূমি :- পূর্ব সাইবেরিয়ার নিম্নভূমি অঞ্চলটি পুরোনো উচ্চভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে গঠিত হয়েছে । ফলে এই অঞ্চলে কিছু সংখ্যক ক্ষয়প্রাপ্ত পাহাড় দেখা যায় ।

( ২ ) মধ্য এশিয়ার পার্বত্য ও মালভূমি অঞ্চল :- এই অঞ্চলটি উত্তরের বিশাল নিম্নভূমি অঞ্চলের দক্ষিণ ও দক্ষিণ – পূর্বে অবস্থিত । এখানে অনেক সংখ্যক ছোট – বড় ভঙ্গিল পর্বতশ্রেণি ও মালভূমি আছে । পামীর গ্রন্থির কয়েকটি বিখ্যাত পর্বত হল — টিয়েনসান , আলটাই , আলটিনভাগ , নানাসান , কুবেনলুন , খিনগান , স্তনোভয় ও হিমালয় । এই পর্বতগুলির মধ্যে বহু মালভূমি আছে । হিমালয় ও আলটিনতাগ পর্বতশ্রেণি দুটির মধ্যে তিব্বত মালভূমি অবস্থিত । আলটিনতাগ ও টিয়েনসান পর্বতমালার মধ্যে টারিম অববাহিকা অবস্থিত তদুপরি আলটাই , সুয়ান ইত্যাদি পর্বত এই অঞ্চলের উত্তরভাগে আছে । পামীর গ্রন্থিকে ‘ পৃথিবীর চূড়া ’ বলে । ইহা গড়ে প্রায় ৩৬০০ মিটার উচ্চ । অন্যদিকে পামীর গ্রন্থি হতে আসা পাহাড় – পর্বতগুলি সাগরের পৃষ্ঠ হতে প্রায় ১০,০০০ মিটার উচ্চতার মধ্যে । পর্বতসমূহের মধ্যে দ – অঞ্চলগুলির উচ্চতা সাগরের পৃষ্ঠ হতে ৬০০-১০০০ মিটার ।
( ৩ ) পশ্চিম এশিয়ার মালভূমি অঞ্চল :- পামীর গ্রন্থির পশ্চিমদিকে ইরানীয় ও এনাতলীয় মালভূমি অবস্থিত । ককেশাস পর্বতের দক্ষিণে থাকা আর্মেনিয় গ্রন্থি এই মালভূমি অঞ্চলেরই একটি অংশ । পামীর গ্রন্থি হতে বের হয়ে আসা পশ্চিমে হিন্দুকুশ ও সুলেমান পর্বত এই মালভূমি অঞ্চলটিকে ঘিরে আছে । এই মালভূমিসমূহ বেলুচিস্তান , আফগানিস্তান , ইরান ও এশিয়া মাইনরে বিস্তৃত হয়ে আছে । এই অঞ্চলের উচ্চতা সাগরের পৃষ্ঠ থেকে ১০,০০০ মিটার ।
( ৪ ) দক্ষিণ এশিয়ার মালভূমি অঞ্চল :- আরব ভূমি , ভারতের মালভূমি , ম্যানমার ও চীনদেশে অবস্থিত ইউনান ও সান মালভূমি উপরোক্ত ভূ – প্রাকৃতিক বিভাগটির অন্তর্গত । কিছু মালভূমি যেমন — আরব ভূমি মরুময় । এই ধরনের মালভূমিতে কিছু সংখ্যক খরস্রোতা নদীর প্রভাব খুব বেশি ।
( ৫ ) পূর্ব এশিয়ার পার্বত্য অঞ্চল :- পূর্ব এশিয়ার বড় বড় নদী উপত্যকাগুলির গায়ে বহু পর্বতমালা অবস্থিত । আমুর নদীর উপত্যকা , মধ্য মাঞ্চুরিয়ার নিম্নভূমি , উত্তর চীনের নদী উপত্যকা , মধ্য চীনের সিকিয়াং , ইন্দোচী মেকং ইত্যাদি নদীর কাছে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে থাকা এই পর্বতমালা এই অঞ্চলটি নির্ধারণ করেছে ।
( ৬ ) বৃহৎ নদী উপত্যকা অঞ্চল :- এশিয়া মহাদেশের উত্তর, পূর্ব এবং দক্ষিণ অঞ্চলে অনেকগুলি বড় নদী আছে । অতীতকাল থেকেই এই নদীগুলো এবং এদের উপনদীগুলো খনন, পরিবহণ এবং অবক্ষেপণ প্রক্রিয়ার দ্বারা বৃহৎ নদী উপত্যকাসমূহ সৃষ্টি করেছে । এই উর্বর সমভূমি অঞ্চলটি জনবসতিপূর্ণ । পৃথিবীর কয়েকটি প্রাচীন সভ্যতা এই অঞ্চলটিতে গড়ে উঠেছিল । যেমন — চীন সভ্যতা , আর্য সভ্যতা , সিন্ধু সভ্যতা গড়ে উঠেছিল । এই অঞ্চলটির উল্লেখযোগ্য নদীগুলি হল — ওবি , ইনিসি , লেনা , আমুর , হোয়াংহো , ইয়াংসিকিয়াং , মেকং , মেনাম , সালউইন , ইরাবতী , ব্রহ্মপুত্র , গঙ্গা , সিন্ধু , মহানদী , গোদাবরী , কৃষ্ণ,কাবেরী , নর্মদা , তাপ্তী উল্লেখযোগ্য । পশ্চিম এশিয়ার ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রীস উল্লেখযোগ্য ।
( ৭ ) উপকূল অঞ্চল :- মহাদেশটির উপকূল ভগ্ন প্রকৃতির এবং এর সংলগ্ন উপসাগরের সংখ্যা কম । এশিয়ার উপকূলের সর্বমোট দৈর্ঘ্য ৫৮,০০০ কি.মি। কিছু কিছু উপকূল অঞ্চল পর্বতে ভরা । উর্বর উপকূলসমূহ জনবসতিপূর্ণ । অবশ্য উত্তরের উপকূলভাগ প্রায়ই বরফাকৃত থাকে ।
( ৮ ) সাগরীয় দ্বীপসমূহ :- এশিয়া মহাদেশের পূর্বে , দক্ষিণ – পূর্বে এবং দক্ষিণে অবস্থিত সাগরীয় দ্বীপসমূহে মহাদেশটি এক বিশেষ ভূপ্রকৃতির সৃষ্টি করেছে । কিউরাইল , জাপান , রিউকিউ ( Ryukyu ) দ্বীপপুঞ্জসহ এশিয়ার পূর্বে অবস্থিত । এছাড়া উল্লেখযোগ্য দ্বীপসমূহ হল — ইন্দোনেশীয় দ্বীপপুঞ্জ , আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ , শ্রীলংকা , বাহরিন , লাক্ষাদ্বীপ এবং মালদ্বীপ উল্লেখযোগ্য ।

Hi! my Name is Parimal Roy. I have completed my Bachelor’s degree in Philosophy (B.A.) from Silapathar General College. Currently, I am working as an HR Manager at Dev Library. It is a website that provides study materials for students from Class 3 to 12, including SCERT and NCERT notes. It also offers resources for BA, B.Com, B.Sc, and Computer Science, along with postgraduate notes. Besides study materials, the website has novels, eBooks, health and finance articles, biographies, quotes, and more.