Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য and select needs one.
Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য for All Subject, You can practice these here..
ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য
Chapter – 5
প্রথম খণ্ড – ইতিহাস
অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর
● অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
প্রশ্ন ১। সিন্ধু সভ্যতার পূর্ব সীমা গাঙ্গেয় উপত্যকার কোন স্থান অবধি বিস্তৃত ছিল ?
উত্তরঃ মিরাট পর্যন্ত ।
প্রশ্ন ২। সিন্ধু সভ্যতায় নাগরিক সংস্কৃতির বিকাশ কখন হয়েছিল ?
উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ সহস্রাব্দে ।
প্রশ্ন ৩। ঋবেদের আনুমানিক রচনাকাল কত ?
উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ হতে খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ পর্যন্ত।
প্রশ্ন ৪। ভারতের রাষ্ট্রীয় প্রতীকের ‘ সত্যমেব জয়তে ‘ এই বাক্যটি মূলত কোন গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
উত্তরঃ মুণ্ডক উপনিষদ হতে ।
প্রশ্ন ৫। প্রাচীন ভারতে রচিত রাজনীতি বিজ্ঞান বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থটির নাম কী ?
উত্তরঃ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র ।
প্রশ্ন ৬। ‘ বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ‘ ( Unity in Diversity ) এই বাক্যাংশ কোন গ্রন্থের মাধ্যমে স্থায়িত্ব লাভ করেছে ?
উত্তরঃ পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর “ ভারতসম্ভেদ ” গ্রন্থের মাধ্যমে ।
প্রশ্ন ৭। ভারতের ভাস্কর্য শিল্পকলার কোন শৈলীতে গ্রিক – রোমান কলা কৌশলের প্রয়োগ হয়েছিল ?
উত্তরঃ গান্ধার শিল্প ।
প্রশ্ন ৮। ভরত মুনির নাট্যশাস্ত্র কখন রচিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ খ্রিস্টপূর্ব ২০০ হতে খ্রিস্টাব্দ ২০০ পর্যন্ত সময়ে ।
প্রশ্ন ৯। ভরতের নাট্যশাস্ত্রে কতটি শ্লোক আছে ?
উত্তরঃ মোট ৬০০০ টি শ্লোক ।
প্রশ্ন ১০। হেরাকা আন্দোলন কী ?
উত্তরঃ স্বাধীনতা সংগ্রামী রানী গৈদালু কর্তৃক নাগাল্যাণ্ডের পরম্পরাগত ধর্মবিশ্বাস তথা সংস্কৃতি সংরক্ষণ তথা পুনঃপ্রবর্তন করার উদ্দেশে হেরকা আন্দোলন গড়ে তোলেন ।
প্রশ্ন ১১। নাগাল্যাণ্ডের ‘ হর্নবিল ’ উৎসব কোন প্রাণীর নামে উৎসর্গিত ?
উত্তরঃ ধনেশ পাখির নামে ।
প্রশ্ন ১২। চপচর কূট ’ কোন রাজ্যের পরম্পরাগত উৎসব ?
উত্তরঃ মিজোরামের ।
প্রশ্ন ১৩। মিজো শব্দের অর্থ কী ?
উত্তরঃ পাহাড়ের বাসিন্দা ।
প্রশ্ন ১৪। উত্তর – পূর্বাঞ্চলের কোন রাজ্যে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রচলিত ?
উত্তরঃ মেঘালয়ে ।
প্রশ্ন ১৫। মণিপুরী নৃত্যের মূল বিষয়বস্তু কী ?
উত্তরঃ ধ্রুপদী নৃত্য ।
প্রশ্ন ১৬। অসমের প্রাচীন নাম কী ছিল ?
উত্তরঃ প্রাগ্জ্যোতিষপুর ।
প্রশ্ন ১৭। কোন বড়োমূলীয় শব্দ থেকে অসম নামটির উৎপত্তি হয়েছিল বলে অনুমান করা হয় ?
উত্তরঃ আ – চাম ( হা – চাম ) ।
প্রশ্ন ১৮। চর্যাপদ মানে কী ?
উত্তরঃ প্রাচীন লিখিত সাহিত্য ।
প্রশ্ন ১৯। চর্যাপদ কখন রচিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ খ্রিস্টীয় দশম শতক হতে চতুর্দশ শতক পর্যন্ত সময়সীমায় ।
প্রশ্ন ২০। মাধব কন্দলি কার পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে সপ্তকাণ্ড রামায়ণ অনুবাদ করেছিলেন ?
উত্তরঃ রাজা মহামাণিক্য ও অন্যান্য কয়েকজন কামতা রাজা।
প্রশ্ন ২১। অসমের গদ্য সাহিত্যের সূচনা কে করেছিল ?
উত্তরঃ শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ।
প্রশ্ন ২২। জিকির ও জারি ‘ কে রচনা করেছিল ?
উত্তরঃ আজান পীর ( শাহমিলন ) ।
প্রশ্ন ২৩। আজান পীর কে ?
উত্তরঃ সুফী সাধক ।
প্রশ্ন ২৪। আজান পীর কখন অসম এসেছিল ?
উত্তরঃ গদাধর সিংহের রাজত্বকালে ।
প্রশ্ন ২৫। দ – পর্বতীয়ার শিলার তোরণটি কখন নির্মিত হয়েছিল ?
উত্তরঃ খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে ।
প্রশ্ন ২৬। চাংরুং ফুকন কোন দায়িত্বে ন্যস্ত ছিলেন ?
উত্তরঃ আহোম শাসন ব্যবস্থায় মঠ – মন্দির , রাস্তাঘাট , প্রাসাদ , ঘরবাড়ির নির্মাণকার্যে মাপজোখের দায়িত্বে ন্যস্ত ছিল।
প্রশ্ন ২৭। লোকসংগীতে অবদানের জন্য অসমের কোন শিল্পীকে পদ্মশ্রী সম্মান প্রদান করা হয়েছিল ?
উত্তরঃ প্রতিমা পাণ্ডে বরুয়া ।
প্রশ্ন ২৮। অসমের প্রথম সংবাদপত্রটির নাম কী ?
উত্তরঃ অরুণোদয় ।
প্রশ্ন ২৯। অস্ট্রিক নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত উত্তর – পূর্বাঞ্চলের জনজাতিটির নাম কী ?
উত্তরঃ খাসিয়া ।
প্রশ্ন ৩০। রচয়িতাগণের নাম লেখো :
গ্রন্থ |
( ক ) অর্থশাস্ত্র |
( খ ) হস্তিবিদ্যার্ণব |
( গ ) কীর্তন |
( ঘ ) নামঘোষা |
( ঙ ) চোরধরা পিম্পরা গুচোয়া |
( চ ) কালীয়দমন |
( ছ ) রামবিজয় |
( জ ) কথাগীতা |
( ঝ ) রাজতরঙ্গিণী |
( ঞ ) ভারত সম্ভেদ |
উত্তরঃ
গ্রন্থ | রচয়িতা |
( ক ) অর্থশাস্ত্র | ( ক ) কৌটিল্য ( চাণক্য ) |
( খ ) হস্তিবিদ্যার্ণব | ( খ ) সুকুমার বরকাইত |
( গ ) কীর্তন | ( গ ) শ্রীমন্ত শঙ্করদেব |
( ঘ ) নামঘোষা | ( ঘ ) মাধবদেব |
( ঙ ) চোরধরা পিম্পরা গুচোয়া | ( ঙ ) মাধবদেব |
( চ ) কালীয়দমন | ( চ ) শ্রীমন্ত শঙ্করদেব |
( ছ ) রামবিজয় | ( ছ ) শ্রীমন্ত শঙ্করদেব |
( জ ) কথাগীতা | ( জ ) ভট্টদেব |
( ঝ ) রাজতরঙ্গিণী | ( ঝ ) কালহান |
( ঞ ) ভারত সম্ভেদ | ( ঞ ) পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু |
সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
প্রশ্ন ১। খ্রিস্টিয় ষষ্ঠ শতকের পর ভারতে এসেছে এমন দুটি বিদেশী জাতির নাম লেখো ।
উত্তরঃ আর্যজাতি ও দ্রাবিড় জাতি ।
প্রশ্ন ২। সিন্ধু উপত্যকায় আবিষ্কৃত এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত দুটি মূর্তির নাম লেখো ।
উত্তরঃ পশুপতি মূর্তি ও শিবলিঙ্গ ৷
প্রশ্ন ৩। অস্ট্রিকরা ভারতীয় সংস্কৃতি জগতে যে অবদান রেখেছে তার মধ্যে থেকে যে – কোনো দুটি অবদানের উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ অবদান দুটি হল—
( ক ) ধর্মীয় পরম্পরায় হলদি ও সিন্দুরের ব্যবহার।
( খ ) হাতি পোষ মানানো ।
প্রশ্ন ৪। ভারতীয় সংস্কৃতি জগতের বর্ণাঢ্যতায় ভৌগোলিক পরিবেশের ভূমিকা বর্ণনা করো ।
উত্তরঃ ভারতীয় সংস্কৃতির বর্ণাঢ্যতার উৎপত্তি তথা সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে দেশের বিশালতা এবং ভৌগোলিক পরিস্থিতি বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছে । কৃষি উপযোগী উর্বর ভূমি , যাতায়াত ও যোগাযোগের সুবিধা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের গুণে কোন অঞ্চল হয়তো আর্থিকভাবে অধিকমাত্রায় স্বচ্ছল এবং অপর সংস্কৃতির সঙ্গে সংস্পর্শে এর উৎকর্ষতা বাড়ায়। আবার এই সকল সুবিধার অভাবে অপর অঞ্চলে বিচ্ছিন্ন , কষ্টসাধ্য জীবন – যাপন করছে এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধিও হচ্ছে না ।
প্রশ্ন ৫। বেদের চারটি সংহিতার নাম লেখো ।
উত্তরঃ ( ক ) ঋকবেদ সংহিতা ।
( খ ) যজুঃবেদ সংহিতা ।
( গ ) সামবেদ সংহিতা । ও
( ঘ ) অথর্ববেদ সংহিতা ।
প্রশ্ন ৬। সম্রাট অশোকের দ্বাদশ মুখ্য শিলালিপিতে ধর্মীয় উদারতা বিষয়ে কী কথা লেখা আছে ?
উত্তরঃ অহিংসা পরম ধর্ম ।
প্রশ্ন ৭। সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ মানে কী ?
উত্তরঃ সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ বলতে কোন একটি সমাজের সাংস্কৃতিক বিবিধতা এবং বিবিধতার প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাবকে বোঝায় ।
প্রশ্ন ৮। ভারতের প্রাচীন যুগের দুজন বিজ্ঞানীর নাম লেখো ।
উত্তরঃ ( ক ) আর্যভট্ট ।
( খ ) বরাহমিহির ।
প্রশ্ন ৯। প্রাচীন ভারতের দুটি চিকিৎসাশাস্ত্রের নাম লেখো।
উত্তরঃ ( ক ) চরক সংহিতা ।
( খ ) সুশ্ৰুত সংহিতা ।
প্রশ্ন ১০। ভারতীয় চিত্রকলাকে কী কী ভাগে ভাগ করা যায় ?
উত্তরঃ ভারতীয় চিত্রকলাকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায় । যথা—
( ক ) বৃহদাকার দেয়ালচিত্র ।
( খ ) ক্ষুদ্রাকার চিত্র ।
প্রশ্ন ১১। চিত্রকলার পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন এমন দুজন মোগল বাদশাহের নাম লেখো ।
উত্তরঃ ( ক ) শাহজাহান ।
( খ ) জাহাঙ্গীর ।
প্রশ্ন ১২। ক্ষুদ্রাকার চিত্রযুক্ত অসমের দুখানি সাঁচিপতীয়া পুথির নাম লেখো ।
উত্তরঃ ( ক ) আনন্দলহরী ।
( খ ) হস্তীবিদ্যার্ণব ।
প্রশ্ন ১৩। হস্তিবিদ্যার্ণব গ্রন্থটির দুজন চিত্রকরের নাম লেখো ।
উত্তরঃ ( ক ) দিলবর ।
( খ ) দোসর ।
প্রশ্ন ১৪। জুম চাষ বলতে কী বোঝ ?
উত্তরঃ পাহাড়ী জনজাতী পাহাড়ের ঢালু অঞ্চলে বনজঙ্গল পরিস্কার করে শাকসব্জী , ধান , মকাই প্রভৃতি চাষ করে । একেই বলা হয় জুমখেত ।
প্রশ্ন ১৫। জেং বিহু মানে কী ?
উত্তরঃ উজান অসমের মহিলাগণ নির্জন স্থানে পুরুষ মানুষকে না দেখিয়ে প্রেম ও যৌবনের অনুভূতি প্রকাশক গান ও নৃত্যের মাধ্যমে বিহু পালন করে । এটাই হল জেং বিহু ।
প্রশ্ন ১৬। ওজাপালির দুটি ভাগের নাম লেখো ।
উত্তরঃ ( ক ) ব্যাস ওজা ।
( খ ) সুকনান্নী ওজা ।
প্রশ্ন ১৭। প্রাচীন ভারতবর্ষের দুজন দার্শনিকের নাম লেখো ।
উত্তরঃ ( ক ) কপিল ।
( খ ) পতঞ্জলি ।
প্রশ্ন ১৮। আহোম রাজত্বকালে রচিত দুখানি বুরঞ্জীর নাম লেখো ।
উত্তরঃ ( ক ) দেওধাই বুরঞ্জী ।
( খ ) কাছাড়ী বুরঞ্জী ।
প্রশ্ন ১৯। বিহুর সমধর্মী নিম্ন অসমে উদ্যাপিত দুটি স্থানীয় উৎসবের উল্লেখ করো।
উত্তরঃ বিহুর সমধর্মী হিসাবে নিম্ন অসমে উদ্যাপিত হওয়া দুটি স্থানীয় উৎসব হল — দরং জেলার দেউল ও পুরানো কামরূপের উঠেলি ।
প্রশ্ন ২০। দরঙের দুরকম লোকনৃত্যের নাম লেখো।
উত্তরঃ ( ক ) ঢেপাঢুলীয়া ।
( খ ) বরঢুলীয়া ।
প্রশ্ন ২১। ভারতের প্রধান নৃগোষ্ঠীগুলি কী কী ?
উত্তরঃ ভারতের প্রধান নৃগোষ্ঠীগুলি হল — অষ্ট্ৰলয়ভ অথবা অষ্ট্রিক , মংগোলীয় গোষ্ঠী এবং পশ্চিম এশিয়া হতে আগত প্রশস্ত সম্ভিকী গোষ্ঠীর লোক ।
প্রশ্ন ২২। ভারতীয় সংস্কৃতিতে অনৈক্যের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টিকারী তিনটি কারকের কথা উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ভারতীয় সংস্কৃতিতে অনেকের মধ্যে একতা সৃষ্টিকারী তিনটি কারক হল—
( ক ) হিন্দুধর্মের স্বকীয় বহুত্ববাদীতা তথা উদারতা।
( খ ) রাজনৈতিক একতার ইতিহাস । ও
( গ ) শাসকগণের ধর্মীয় তথা সাংস্কৃতিক উদারতা।
প্রশ্ন ২৩। প্রাচীন ভারতের স্থাপত্য নিদর্শনগুলিকে প্রধানত কী কী ভাগে ভাগ করা হয়েছে ?
উত্তরঃ প্রাচীন ভারতের স্থাপত্য নিদর্শনকে মন্দির – মঠ , স্তূপ প্রভৃতি ধর্মীয় উপাসনা গৃহসমূহকে ভাগ করা যায় । সুলতানী ও বাদশাহী যুগের মুখ্যত চার প্রকার স্থাপত্য দেখা যায়— মসজিদ , মঞ্জিল , মাবোয়ারা ও মিনার ।
প্রশ্ন ২৪। ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ক্ষেত্রে , ‘ সাংস্কৃতিক একতার জালিকা ’ বলতে কী বোঝ লেখো ।
উত্তরঃ উত্তর – পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি রাজ্যে অনেক গোষ্ঠীগত লোক বসবাস করে থাকে । পরম্পরাগত পোশাক , নৃত্যগীত , বাদ্য , উৎসব , লোকবিশ্বাস , রীতিনীতি প্রভৃতি বর্ণময় সংস্কৃতি প্রতিটি রাজ্যে দেখতে পাওয়া যায় । ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন জাতি উপজাতি।তাদের পৃথক পৃথক স্বকীয় কৃষ্টি সংস্কৃতির সংরক্ষণ তথা সংবর্জন করে দেখার সময়ে অপরের কৃষ্টি সংস্কৃতির সঙ্গে সহবর্তিতা ও সম্মানের ভাব পোষণ করা দেখা যায়। বিবিধতার সেই অনুভব করা মানসিক প্রশিক্ষা যুগ যুগ ধরে লাভ করে ভারতীয়রা একধরনের পরিপক্কতা লাভ করেছে ।
প্রশ্ন ২৫। UNESCO- র দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্য ক্ষেত্র হিসাবে তালিকাভুক্ত ভারতের তিনটি স্থাপত্যের উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ UNESCO- র দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্যক্ষেত্র হিসাবে তালিকাভুক্ত হওয়া ভারতের তিনটি স্থাপত্য –
( ক ) সাঁচীর স্তূপ ।
( খ ) অজস্তার গুহাসমূহ । এবং
( গ ) তাজমহল ।
প্রশ্ন ২৬। ভারতের ভাস্কর্য শিল্পের ক্ষেত্রে কী কী মূর্তি নির্মাণ করতে দেখা যায় ?
উত্তরঃ ভারতীয় ভাস্কর্য শিল্পে একেবারে সহজ , সরল , সমানুপাতিক মূর্তি থেকে শুরু করে দ্বিভঙ্গ , ত্রিভঙ্গ , চতুর্ভঙ্গ, সমানুপাতিক , পোশাক অলংকার , নিখুত অলংকারে সুসজ্জিত মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছিল ।
প্রশ্ন ২৭। ভারতের ভাস্কর্য শিল্প কলার তিনটি প্রধান শৈলী কী কী ?
উত্তরঃ ভারতীয় ভাস্কর্য শিল্পকলার তিনটি প্রধান শৈলী হল—
( ক ) গান্ধার শিল্পকলা ।
( খ ) মথুরা শিল্পকলা । ও
( গ ) অমরাবতী শিল্পকলা ।
প্রশ্ন ২৮। দেয়াল চিত্রের নিদর্শন মেলে ভারতের এমন তিনটি স্থানের নাম উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ দেয়াল চিত্রের নিদর্শন থাকা তিনটি স্থান হল—
( ক ) মহারাষ্ট্রের অজস্তা ।
( খ ) মধ্যপ্রদেশের বাঘ । ও
( গ ) তামিলনাড়ুর চিওনায়াচল ।
প্রশ্ন ২৯। মোগল যুগের ক্ষুদ্রাকার চিত্র সম্বলিত তিনটি গ্রন্থের নাম লেখো ।
উত্তরঃ মোগল যুগের ক্ষুদ্রাকার চিত্র সম্বলিত তিনখানি গ্রন্থ হল—
( ক ) পাদসাহনামা ।
( খ ) তুতিনামা । ও
( গ ) জাহাঙ্গীর নামা ।
প্রশ্ন ৩০। চিত্রকলার ষড়ঙ্গ মানে কী বোঝ ?
উত্তরঃ চিত্রকলার ষড়ঙ্গ হল–
( ক ) আকৃতি ।
( ২ ) জোখ – মাখ ।
( ৩ ) আবেগ অনুভূতি প্রকাশক কৌশল ।
( ৪ ) কলাত্মক উপস্থাপন ।
( ৫ ) সাদৃশ্য জ্ঞান । ও
( ৬ ) তুলি ব্যবহারের নিয়ম ।
প্রশ্ন ৩১। ভারতের যোগবিদ্যা বিষয়ে সংক্ষেপে বর্ণনা করো ।
উত্তরঃ যোগবিদ্যা ভারতের এক গৌরবময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সমগ্র মানব সমাজে এটি এক অনবদ্য অবদান । সিন্ধু সভ্যতার সময়ে ভারতীয়গণ যৌগিক জ্ঞানের অধিকারী ছিল বলে অনুমান করা যায় । বৈদিকযুগে এই বিদ্যার বহুল চর্চা হয়েছিল । আনুমানিক দ্বিতীয় শতকে মহর্ষি পতঞ্জলি যোগসূত্র নামের গ্রন্থ সংকলন করে এই বিদ্যাকে এক সু – সংহত রূপ দিয়েছিলেন । পতঞ্জলির যোগ পদ্ধতিতে নিয়ম , আসন , প্রাণায়াম , প্রত্যাহার , ধ্যান ধারণা, সমাধি ও ক্ষম নামে “ অষ্টাঙ্গ ” কর্তব্যের বিধান দেওয়া হয়েছে । যোগবিদ্যার কার্যকারিতার প্রতি লক্ষ্য রেখে ২০১৪ সালে রাষ্ট্রসংঘ ২১ শে জুন তারিখটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় যোগদিবস হিসাবে ঘোষণা করেছে।
প্রশ্ন ৩২। ভারতের স্থাপত্যকলার তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ ভারতীয় স্থাপত্য কলার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি হল—
( ক ) ভারতীয় স্থাপত্যশিল্প রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সম্ভব হয়েছিল ।
( খ ) শিল্প নির্মিত মঠ – মন্দিরগুলির নির্মাণ শৈলীকে প্রধানত ভারতীয় নীগড় , দক্ষিণ ভারতীয় দ্রাবিড় ও বিন্ধ্য ও কৃষ্ণা নদীর মধ্যভাগে দেখতে পাওয়া শৈলী এই তিনটি ভাগে বিভক্ত করা যায় ।
( গ ) উত্তর ভারতের মন্দিরগুলির শিখর অর্দ্ধ বৃত্তাকার এবং দক্ষিণ ভারতীয় মন্দিরগুলির শিখর আয়তাকার ক্রমে উপর হতে সরু ।
প্রশ্ন ৩৩। রঙালি বিহুর সাতদিনকে কী কী নামে জানা যায় ?
উত্তরঃ রঙ্গালি বিহুর সাতদিনকে গরু বিহু , মানুষ বিহু , গোসাই বিহু , কুটুম বিহু , সেনেহী বিহু , মেলা বিহু এবং চেরা বিহু নামে জানা যায় ।
প্রশ্ন ৩৪৷ কামরূপী লোকগীত এবং গোয়ালপাড়িয়া লোকগীতের মূল বিষয়বস্তু কী ?
উত্তরঃ কামরূপী লোকগীতি এবং গোয়ালপাড়িয়া লোকগীতিগুলি প্রধানত জীবনের সুখ – দুখ, দেহের ভঙ্গিমা , জীবনে ঈশ্বরের চিন্তার গুরুত্ব , দেবদেবীর প্রশস্তি প্রভৃতি প্রকাশমূলক গান । এর ওপর গোয়ালপাড়িয়া লোকগীত স্থানীয় কিংবদন্তী তথা হাতি ধরা ও পোষ মানানো বিষয় নিয়ে রচিত।
প্রশ্ন ৩৫। অসমের প্রাচীন নাম কামরূপ ও প্রাগ্জ্যোতিষের উল্লেখ আছে এমন তিনটি গ্রন্থের নাম লেখো ।
উত্তরঃ রামায়ণ , মহাভারত , বিষ্ণুপুরাণ ও অন্যান্য কয়েকটি গ্রন্থে অসমের প্রাচীন নাম কামরূপ ও প্রাগজ্যোতিষপুরের উল্লেখ রয়েছে ।
দীর্ঘ উত্তর লেখো
প্রশ্ন ১। ভারতের সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদের উৎপত্তি এবং বিকাশের কথা সংক্ষেপে লেখো ।
উত্তরঃ ভারতবর্ষ এক বিশাল দেশ । এই বিশাল দেশের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এর সার্বিক বৈচিত্র্য । ভারতবর্ষের ভৌগোলিক অবস্থান , জাতি , ধর্ম , ভাষা , আচার – অনুষ্ঠান ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রেই অনন্য বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ । ভারত জীবনের অনন্যতা হল এর মূলগত ঐক্য ও মিশ্র সংস্কৃতি । ভারতবাসীর কতকগুলি সুনির্দিষ্ট মানসিক ও নৈতিক চেতনা এবং মূল্যবোধ এত বৈচিত্র্য ও বিভেদের মধ্যেও গভীর ঐক্যবোধ দ্বারা একে একসূত্রে গেঁথে রেখেছে ।
অনেককাল ধরে শক , হন , গ্রিক , পারসিক , পাঠান , মোগল প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ ভারত ভূমিতে প্রবেশ করেছে । তারা ক্রমান্বয়ে ভারতীয় জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে । সেইহেতু ভারতের জনগোষ্ঠীতে আর্য , দ্রাবিড় , মঙ্গোলীয় , নেগ্রিটো প্রভৃতি বিভিন্ন অবয়ব ও বর্ণের মানুষের অস্তিত্ব দেখা যায় । এমন বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী খুব কম দেশে দেখা যায় । তাদের ভাষা ও ধর্মের ক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য বা বিভিন্নতা লক্ষ্য দেখা যায় । ভারতবাসীর মধ্যে প্রচলিত মূল ভাষার সংখ্যা প্রায় ৫ টি এবং উপভাষার সংখ্যা একশতেরও বেশি । ভারতের ভাষাগত বিভিন্নতার মধ্যে ঐক্যসূত্রের কাজ করেছে সংস্কৃত ভাষা । হিন্দি , বাংলা , মারাঠি , ভোজপুরী , তামিল , তেলেগু , মালয়ালাম প্রভৃতি ভাষার উপর সংস্কৃত ভাষার প্রভাব গভীর।
ভারতবাসীর ধর্মবিশ্বাসও এই চিরন্তন ঐক্যের রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করে আসছে । হিন্দু , বৌদ্ধ , জৈন প্রভৃতি ধর্মপ্রচারকগণ আসমুদ্র হিমাচল পরিভ্রমণ করে মানব ধর্মের বাণী প্রচার করেছেন । ভারতীয় সংস্কৃতি পৃথিবীর সকল সংস্কৃতির ধারক ও বাহক । বর্তমানে প্রাচীন গ্রিস , মিশর , রোমান সংস্কৃতির কোনো চিহ্ন দেখা যায় না । কিন্তু ভারতীয় সংস্কৃতি তার নিজস্বতা বজায় রেখে অন্যান্য দেশের সংস্কৃতিকে পুষ্ট করেছে ।
প্রশ্ন ২। “ ভারতের প্রাচীন যুগে রচিত সংস্কৃত সাহিত্যসম্ভারে ভারতীয় সভ্যতা – সংস্কৃতির আত্মা নিহিত হয়ে আছে বললে সম্ভবত অত্যুক্তি করা হবে না । ” — বাক্যটির ভাবার্থ আলোচনা করো ।
উত্তরঃ ভারতের প্রাচীন যুগে রচিত সংস্কৃত সাহিত্যরাজিতে ভারতীয় সভ্যতা – সংস্কৃতির আত্মা নিহিত আছে । বেদের সংহিতা , ব্রাহ্মণ , আরণ্যক প্রভৃতি উপনিষদগুলি , রামায়ণ ও মহাভারত , গীতা , পুরাণগুলি , বেদাঙ্গগুলি , রাজনীতি বিষয়ক গ্রন্থ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র , চিকিৎসা বিষয়ক চরক সংহিতা , কালিদাস , শূদ্রক , ভাস , বাণভট্ট প্রমুখ লেখকের বিশুদ্ধ সাহিত্যরাজি ভারতীয় সাহিত্যের উজ্জ্বল নিদর্শন । এই গ্রন্থগুলির সৃষ্টিকর্তা মনীষীগণের কঠোর সাধনার দ্বারা আহরণ করা গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও অক্লান্ত বৌদ্ধিক সাধনার ফসল ।
এই গ্রন্থগুলিতে ভারতবাসীর সমাজ ব্যবস্থা , মনস্তত্ত্ব , সাহিত্য চেতনা , সর্বভারতীয় সাংস্কৃতিক ঐক্যবোধ প্রভৃতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল । হিন্দু ধর্মের চতুর্বর্ণাশ্রম ব্যবস্থা , পিতা – মাতা , গুরু , অতিথি , বিদ্যা ও বিদ্যানের প্রতি ভারতীয় সংস্কৃতিতে শ্রদ্ধার শিক্ষা এই গ্রন্থগুলিতে প্রসার করেছিল । সেইভাবে জন্ম জন্মান্তরবাদ , অবতার বাদ , মোক্ষ , স্বর্গ , নরক , পাপ পুণ্য প্রভৃতির ধারণাও এই গ্রন্থগুলিতে জনপ্রিয় করে তুলেছে । এই গ্রন্থরাজিতে যারা “ সত্যমেব জয়তে ” ( মুণ্ডক উপনিষদ ) , “ অহিংসা পরমধর্ম ” ( মহাভারত ) , জননী “ জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি ” গরিয়সী ( রামায়ণ ) , “ বসুধৈব কুটুম্বকম ” প্রভৃতি বাণীসমূহ ভারতে মূল্যবোধের ভীত গড়ে দিয়েছে ।
প্রশ্ন ৩। ভারতের ধর্মীয় ঐতিহ্য বিষয়ে যা জান লেখো ।
উত্তরঃ আর্য সংস্কৃতির বিস্তারকালে এর সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানীয় ধর্মীয় ও সামাজিক রীতিনীতিগুলোর সংমিশ্রণ ঘটেছিল । এর ফলে আর্য কৃষ্টি – সংস্কৃতির মূল রূপটির পরিবর্তন ঘটে । অপরদিকে পূর্বের জনগোষ্ঠীসমূহও আর্য সংস্কৃতি থেকে উপাদান গ্রহণ করেছিল । সংহিতা , ব্রাহ্মণ , আরণ্যক , উপনিষদসমূহ , মহাকাব্যদ্বয় , পরবর্তীকালে রচিত পুরাণ , স্মৃতি , বেদাঙ্গসমূহের এই রূপান্তরণের আভাস পরিলক্ষিত হয় ।
সিন্ধু সভ্যতার যুগে ধর্ম ব্যবস্থায় উপাস্য দেবতার বিভিন্নতা দেখা যায় । বৈদিক ধর্ম ব্যবস্থাতে বহু দেব – দেবীর সঙ্গে একেশ্বরবাদের ধারণাও বিদ্যমান ছিল । এইভাবে ভারতের প্রাচীনতম ধর্মীয় পরম্পরা তাদের বিশ্বাস , রীতি – নীতির ক্ষেত্রে সহবর্তিতা , সংযোজন ও সংমিশ্রণের ক্ষেত্রে এক দ্বিধাহীন নীতি গ্রহণ করেছিল । এর সঙ্গে বর্তমান নীতির সংস্কার , সংশোধন , নতুন ব্যাখ্যা এবং বিরোধের প্রতিও তারা শ্রদ্ধার ভাব বজায় রেখেছিল । এই দৃষ্টিভঙ্গীর জন্যই ভারতে কয়েকটি তত্ত্বগতভাবে পরস্পর বিরোধী দর্শন সবলরূপে বিকশিত হয়েছিল ও বেদের কয়েকটি মূলতত্ত্বের বিরোধীতা সত্ত্বেও খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীতে প্রকাশিত বৌদ্ধধর্ম ও জৈনধর্মের সঙ্গে বৈদিক হিন্দুধর্মের সংঘর্ষ ঘটেনি । বিভিন্ন কারণে হিন্দুধর্মের মধ্যে বিভিন্ন পন্থার উদ্ভব হয়েছিল । পরবর্তীকালের বিভিন্ন রাজবংশ ধর্মীয় উদারতার নীতিটি অনুসরণ করেন এবং ধর্মীয় ব্যাপারে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে দেখা যায় । এইক্ষেত্রে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতেই সম্রাট অশোকের গির্ণারতে থাকা ১২ নং মুখ্য শিলালেখটিতে থাকা কিছু কথা বিশেষ স্মরণযোগ্য ।
এই লিপিতে বলা হয়েছে কোনো ব্যক্তিরই একমাত্র নিজের ধর্মটির প্রশংসা করা এবং অপর ধর্ম সম্বন্ধে হীনমন্যতা উচিত নয় । বরং সকল ধর্মের সারসত্য গ্রহণ করে সমন্বয়ের পথ অনুসরণ করতে হয় । সম্রাট অশোকের এই ঘোষণাটি ভারতীয় শাসকগণের ধর্মীয় উদারতার প্রাচীনতম সাক্ষ্য বহন করে । পরবর্তীকালে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে উদ্ভব হওয়া খ্রিস্টিয়ান , ইসলাম , জরাথ্রুস্ট , ইহুদী ইত্যাদি ধর্মেরও ভারতে আগমন ঘটেছিল । শাস্ত্রনির্ভর ধর্মগুলো ছাড়াও ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বিশ্বাস এবং রীতি – নীতির অনেক লৌকিক ধর্মপন্থা দেখা যায় ।
ধর্মীয় বিভিন্নতা এবং সহবর্তিতার সঙ্গে ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতাই ভারতীয়দের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন ও সভ্যতা সংস্কৃতির সকল ক্ষেত্রকে গভীরভাবে প্রভাবিত করা বৈশিষ্ট্যটিও স্মরণীয়। জীবন ও জগৎ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গী , সামাজিক রীতি – নীতি , উৎসব , পার্বণ সাহিত্য , স্থাপত্য , ভাস্কর্য , সঙ্গীত , নিত্য , চিত্রকলা , নৈতিকতা ইত্যাদিতে এর প্রভাব গভীরভাবে দেখা যায় ।
প্রশ্ন ৪। উত্তর – পূর্বাঞ্চলের এক স্বতন্ত্র পারস্পরিক পরিচয় কীভাবে সৃষ্টি হয়েছে বর্ণনা করো ।
উত্তরঃ উত্তর – পূর্বাঞ্চল শব্দটি — ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসকগণ উদ্ভাবন করেছিল । উত্তর – পূর্বাঞ্চল অর্থাৎ অরুণাচল প্রদেশ , নাগাল্যাণ্ড , মণিপুর , মিজোরাম , ত্রিপুরা , মেঘালয় ও অসম প্রতিটি অঞ্চলের নিজ নিজ কৃষ্টি – সংস্কৃতি , রাজনৈতিক ইতিহাস রয়েছে । তাছাড়া এই সমগ্র অঞ্চলটির একই রকম কতগুলো বৈশিষ্ট্যের জন্যই অঞ্চলটি নিজ নিজ পরিচয় লাভ করেছে । বর্তমান সময়েও ভারত সরকার ‘ নর্থ ইষ্ট কাউন্সিল ’ নামক একটি পরিষদ গঠন করে অঞ্চলটির উন্নয়নের জন্য পৃথক নীতি গ্রহণ করেছে । সিকিম রাজ্যটিকে এই পরিষদটির অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ।
উত্তর – পূর্বাঞ্চলের এক একটা বৈশিষ্ট্যের জন্য পৃথক পরিচয় সৃষ্টি হওয়ার ক্ষেত্রে অঞ্চলটির ভৌগোলিক পরিস্থিতি বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছে । অসমের ব্রহ্মপুত্র ও বরাক উপত্যকার উর্বর সমতল ভূমিখণ্ডকে মাঝখানে নিয়ে উত্তর , পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে অন্য রাজ্য কয়টি অবস্থিত আছে । এই রাজ্য কয়টির চারিদিকে ভূটান , চীন , মায়ানমার , বাংলাদেশ এই বিদেশী রাষ্ট্রগুলি অবস্থিত । অসমের নিকটবর্তী সবকয়টি রাজ্যই পাহাড়িয়া । এই পরিস্থিতিতে যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে অসম সবগুলো রাজ্যের জন্য সুবিধাজনক , সুচল কেন্দ্রীয় স্থল হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে । প্রাচীন যুগে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় এক উন্নত সভ্যতা গড়ে উঠেছিল বলে অনুমান করা হয় । অবশ্য খ্রিস্টিয় চতুর্থ শতাব্দীতে বর্মন বংশের প্রতিষ্ঠার পরে প্রাচীন অসমের রাজনৈতিক ইতিহাস উদ্ধার হয়েছে । বিভিন্ন যুগে অসমের শক্তিশালী রাজবংশসমূহের শাসনকালে নিকটবর্তী অঞ্চলসমূহের স্থানীয় শাসকগণ অসমের প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছিল এবং কখনও কখনও আধিপত্য মেনেও নিয়েছিল ।
আহোম রাজবংশের শাসনকালে ( ১২২৮-১৮২৬ খ্রিস্টাব্দ ) অসম ও নিকটবর্তী রাজ্যগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়ে এই যুগে রচিত হওয়া ইতিহাসসমূহে বহু তথ্য পাওয়া যায় । বিভিন্ন রাজপরিবারের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছিল , আপৎকালীন সময়ে সামরিক সাহায্য আদান – প্রদান ও দূত প্রেরণ করা হয়েছিল । পাহাড় ও ভৈয়ামে উত্পন্ন হওয়া সামগ্রীর আদান – প্রদান হয়েছিল । এইভাবে অঞ্চলটির বাসিন্দাদের মধ্যে ঐক্যবোধের সৃষ্টি হয়েছিল । অসমসহ সমগ্র উত্তর – পূর্ব অঞ্চলটির অধিকাংশ লোকই বৃহত্তর মংগোলীয় গোষ্ঠীর বিভিন্ন শাখা প্রশাখাভুক্ত জনজাতীয় লোক। প্রাচীন ইতিহাসের তথ্য অনুসারে নাগাগণের একাংশের মধ্যে নিগ্রো নৃ – গোষ্ঠীর উপাদান পাওয়া গিয়েছে এবং মেঘালয়ের খাসীয়া গোষ্ঠীর লোকগণ অষ্ট্রিক গোষ্ঠীর লোক ছিলেন বলে জানা যায় ।
প্রশ্ন ৫। উত্তর – পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর ধর্মীয় বাতাবরণ নিয়ে একটি টীকা লেখো।
উত্তরঃ ঔপনিবেশিক শাসনকালে মিশনারীগণ উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সবকয়টি রাজ্যতে পাহাড়ীয়া লোকগণের মধ্যে খ্রিস্টিয়ান ধর্মের প্রসার ঘটায় । উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে অসমে আর্যভাষা ও হিন্দুধর্মের প্রসার অতি প্রাচীনকাল থেকেই ঘটছিল । মণিপুর ও ত্রিপুরাতেও অতি প্রাচীনকাল থেকেই হিন্দুধর্ম প্রসার লাভ করছিল । অবশ্য পাহাড়ীয়া জনজাতিগণের মধ্যে বর্তমানেও প্রাকৃতিক ( Animist ) বিশ্বাস তথা রীতি – নীতি সমান্তরালভাবে চলতে থাকা দেখা যায় । উদাহরণস্বরূপে অরুণাচলের বহুসংখ্যক লোক হিন্দু, খ্রিস্টিয়ান ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী , একইভাবে বিভিন্ন স্থানীয় দেব – দেবীর সঙ্গে ডনিপ’ল অর্থাৎ চন্দ্র – সূর্যও তাঁদের জনপ্রিয় দেবতা ।
নাগাল্যাণ্ডের বিভিন্ন জনজাতীয় নৃত্য – গীত , বাদ্য শিল্পকলা ইত্যাদি প্রদর্শন করতে পারায় সম্প্রতি নাগাল্যাণ্ড সরকারে ডিসেম্বর মাসের প্রথম দশদিনে উৎযাপিত ‘ হনবিল ’ উৎসবে প্রায় সকল নাগাগোষ্ঠীর লোক অংশগ্রহণ করে । ধনেশ পাখিকে নাগাগণ এক ত্রাণকর্তা পবিত্র জীব হিসাবে বিবেচনা করে বলে এই পাখির নামে এই উৎসবটি উদযাপিত হয় । উল্লেখযোগ্য যে স্বাধীনতা সংগ্রামী রানী গাইডুলে নাগাল্যাণ্ডের পরম্পরাগত ধর্মবিশ্বাস তথা সংস্কৃতি সংরক্ষণকল্পে পুনরায় প্রবর্তন করার উদ্দেশ্যে ‘ হেরাকা ’ নামক একটি আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন ।
মণিপুরের মেইটেই সম্প্রদায়টির অধিকাংশ লোক চৈতন্যপন্থী বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী । বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবিত গীতবাদ্য , নৃত্য প্রভৃতির রেওয়াজ তাঁদের মধ্যে দেখা যায় । চৈতন্য মহাপ্রভুর শৈশব , কৃষ্ণলীলা প্রভৃতি অবলম্বনে মণিপুরী নৃত্য ভারতের সঙ্গীত ও নাটক একাডেমির দ্বারা স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একটি ধ্রুপদী নৃত্য । মণিপুরীগণের একাংশের মধ্যে এখনও প্রকৃতি প্রাণবাদী ( Animist ) ধর্মপন্থার প্রচলন আছে ।
ত্রিপুরার অধিকাংশ লোক হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও বঙ্গীয় সংস্কৃতির দ্বারা প্রভাবিত । বিভিন্ন জনগোষ্ঠীয় উপাদানের মিশ্রণে ত্রিপুরাতে একটি সংমিশ্রিত সংস্কৃতি দেখা যায় ৷
মেঘালয়ের পূর্বের প্রকৃতি উপাসক খাসিয়া , গারো , জয়ন্তীয়া ইত্যাদি লোকগণ ১৮৩০ সন হতে ক্রমে খ্রিস্টিয়ান ধর্মে দীক্ষিত হতে শুরু করে এবং বর্তমানে এখানকার সত্তর ( ৭০ ) শতাংশ হতে অধিক লোক খ্রিস্টিয়ান ধর্মাবলম্বী ।
মিজোদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ স্টিয়ান ধর্মাবলম্বীর সঙ্গে কিছু সংখ্যক বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকও আছে । ১৯৭৩ সন হতে মিজোগণ তাঁদের পরম্পরাগত ‘ চপচরকূট ’ পুনরায় উদযাপন করছে । এটার সঙ্গে অন্যান্য বহু পরম্পরাগত নৃত্য, সঙ্গীত ইত্যাদিরও পুনরুদ্ধার করতে মিজোগণ যত্নপর হয়েছে।
প্রশ্ন ৬। ‘ অসমে আর্য – অনার্য সকলের সমবায়িত অবদানে এক সংমিশ্রিত সংস্কৃতির উৎপত্তি হয়েছে ‘ — এই প্রসঙ্গটি সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ উত্তর – পূর্বাঞ্চলের অন্য রাজ্য কয়টির তুলনায় অসমে সাংস্কৃতিক বিভিন্নতা , সংমিশ্রণ ও বিবর্তন অধিকতর হয়েছে । ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় উৎকৃষ্ট বা ভাল কৃষিভূমি ও প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ একটি উন্নত প্রাচীন সভ্যতার অধিকারী দেশ চীনে যেতে পারা একটি পথ থাকা ছাড়াও চীন দেশ হতে রোমান সাম্রাজ্যে যাওয়া মহারেশমী পথের একটি শাখা অসম হয়ে অগ্রসর হয়েছিল । এছাড়াও অসমের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তথা নির্জনতা ইত্যাদির জন্য সুদূর অতীতকাল থেকে নানাগোষ্ঠীর লোক স্বাভাবিক প্রব্রজনকারী হিসাবে , আক্রমণকারী হিসাবে , ব্যবসা – বাণিজ্য করতে ও তীর্থ ভ্রমণ , আধ্যাত্মিক সাধনা ইত্যাদি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে অসমে এসেছিল এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেছিল । এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ভারতবর্ষে বসবাস করা প্রধান নৃ – গোষ্ঠী কয়টির সবকয়টি নৃ – গোষ্ঠী অসমে দেখা যায় এবং সামগ্রিকভাবে ভারতবর্ষে ঘটিত হওয়া নৃতাত্ত্বিক তথা সাংস্কৃতিক সংমিশ্রণের প্রক্রিয়াটি অসমেও ঘটেছিল । এর ফলে অসমে আর্য – অনার্য সকল জাতি সমন্বিত অবদানের একটি সংমিশ্রিত সংস্কৃতির উদ্ভব হয়েছিল ।
প্রশ্ন ৭। অসমের চিত্রকলার ঐতিহ্য বিষয়ে যা জান সংক্ষেপে লেখো ।
উত্তরঃ সপ্তদশ শতাব্দী হতে অসমে উত্তর ভারতীয় ক্ষুদ্রাকৃতির পুথিচিত্রসমূহের অনুরূপ রাজঘরীয়া পৃষ্ঠপোষকতায় অথবা সত্ৰীয়া সৃষ্টিতে চিত্রকলার একটি পরম্পরা আরম্ভ হয় । এই ধরনের উল্লেখযোগ্য সচিত্র পুথিগুলি হল — আনন্দ – লহরী , হস্তীবিদ্যার্ণব , চিত্রভাগবত গীতগোবিন্দ , কুমারহরণ , শংখচূড় বধ , লব – কুশের যুদ্ধ ইত্যাদি সাঁচিপাতীয়া পুথি । স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত সামগ্রী থেকে প্রাকৃতিক রঙের বহুরঙীয়া এই চিত্রসমূহ অঙ্কন করা হয়েছিল। প্রথমে চিত্রের পটভূমিতে একটি নির্দিষ্ট রং বুলিয়ে নেওয়া হয় । তার উপরে চিত্রসমূহ অঙ্কন হয়েছিল ।
চিত্রসমূহে রাজা , রাজদরবার , দেবীমূর্তি , যুদ্ধের চিত্র , হাতি , জীবজন্তু ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট পুথির বা বইয়ের বিষয়বস্তুর সঙ্গে সংগতি রেখে অঙ্কন হয়েছিল । খালি বা শূন্য স্থানগুলোতে ফুল , লতা ইত্যাদি এঁকে দেওয়া হয়েছিল । সাধারণত লাল , সবুজ , হলুদ ও কালো রঙের প্রচলন দেখা যায় । সমুখাংশ অর্থাৎ সামনের ও পার্শ্বের অংশে দুই ধরনের চিত্র অঙ্কন করা দেখা যায় । মানুষ ও জীব – জন্তুর ছবিগুলোতে মুখমণ্ডলের নিখুত প্রকাশ , শরীরের অনুপাত , মনের অনুভূতি প্রকাশে সূক্ষ্ম কৌশলের প্রয়োগ করার দক্ষতা দেখা না গেলেও চিত্রগুলো সহজ – সরল এবং দৃষ্টিনন্দন । সুকুমার বরকাইথের রচনা করা হস্তীবিদ্যার্ণব বইটিতে বিভিন্ন আকার ও ধরনের হাতির ছবি আছে । দিলবর ও দোচাই নামে দুইজন চিত্রকর এই চিত্রসমূহ অঙ্কন করেছিল । এই গ্রন্থসমূহের কয়েকটি গ্রন্থ ছাপা আকারে ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে ।
প্রশ্ন ৮। অসমের ধর্মীয় বিভিন্নতা এবং সংহতির বিষয়ে লেখো ।
উত্তরঃ অসমের অধিকাংশ লোক হিন্দুধর্মাবলম্বী । তারপরে আছে ইসলাম , খ্রিস্টিয়ান , জৈন, বৌদ্ধ , শিখ ও জনজাতীয় ধর্মপন্থাবলম্বী লোক । হিন্দুধর্মের ভিতরে প্রধানত শাক্ত , শৈব , বৈষ্ণব ও সৌরপন্থী লোক দেখা যায় । অসমের বিভিন্ন স্থানে প্রাপ্ত প্রবল প্রভাবী শক্তিপীঠ গুলির মধ্যে কামাখ্যা মন্দির পৃথিবী বিখ্যাত । নববৈষ্ণব আন্দোলন অসমের বৃহৎ সংখ্যক লোককে বৈষ্ণবী ভক্তিমার্গের অনুগামী করেছিল । খ্রিস্টিয় ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথমভাগে অসমে ইসলাম ধর্মের আগমন ঘটার তথ্য পাওয়া যায় । অসমের ইসলাম ধর্মাবলম্বী লোকগণের একটি পবিত্র তীর্থস্থান হাজোর পোয়ামক্কা । স্বর্গদেউ গদাধর সিংহের আমলে অসমে আসা সুফী সাধক আজানপীর নামে খ্যাত চাহ মিলনে রচনা করা জিকির ও জারিসমূহ অসমে প্রচলিত একধরনের জনপ্রিয় ধর্মীয় সঙ্গীত।
মানের আক্রমণের সময়ে রাজা চন্দ্রকান্ত সিংহকে সাহায্য করতে পাঞ্জাবের রঞ্জিত সিংহের নির্দেশে অসমে আসা শিখ সৈন্যদলের কিছুসংখ্যক লোক অসমে স্বইচ্ছায় থেকে গিয়েছিল । তাঁদের বংশধরগণ এখনও শিখধর্ম বজায় রেখেও অসমীয়া ভাষা , সংস্কৃতি গ্রহণ করে অসমের জাতীয় জীবনের অঙ্গীভূত হয়ে পড়েছে । অসমের পূর্ব অংশে বাস করা টাইফাকে , তুরুং , আইতন , খামটি , খাময়াং , নরা ( শ্যাম ) জনগণ বৌদ্ধধর্মাবলম্বী । মধ্যযুগে আহোম স্বর্গদেউগণ ধর্মীয় উদারতা গ্রহণ করেছিলেন এবং বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী লোককে তাদের উপাসনাস্থলী নিজ নিজ নির্মাণ করে দান – দক্ষিণার মাধ্যমে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন ।

Hi! my Name is Parimal Roy. I have completed my Bachelor’s degree in Philosophy (B.A.) from Silapathar General College. Currently, I am working as an HR Manager at Dev Library. It is a website that provides study materials for students from Class 3 to 12, including SCERT and NCERT notes. It also offers resources for BA, B.Com, B.Sc, and Computer Science, along with postgraduate notes. Besides study materials, the website has novels, eBooks, health and finance articles, biographies, quotes, and more.