Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য

Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য and select needs one.

Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য

Join Telegram channel

Also, you can read SCERT book online in these sections Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 10 Social Science Chapter 5 ভারত এবং উত্তর – পূর্বাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য for All Subject, You can practice these here..

প্রশ্ন ৯। উত্তর – পূর্বাঞ্চলের অন্য রাজ্য কয়টির তুলনায় অসমে সাংস্কৃতিক বিভিন্নতা , সংমিশ্রণ এবং বিবর্তন কেন অধিকতর ? আলোচনা করো । 

উত্তরঃ ভারতবর্ষের মত অসমেও অনেককাল ধরে বিভিন্নকালে বিভিন্ন প্রজাতির লোকের প্রব্রজন ঘটেছে । এইসকল বিভিন্ন প্রজাতির লোকের তালিকা অতি দীর্ঘ । এই সকল প্রজাতির মধ্যে প্রধান হল– নিগ্রোটো , অস্ট্রালয়ড,মঙ্গোলীয় , ভূমধ্যসাগরীয় , আলপাইন , আর্য , স্বাইথিয়ান এবং কোকেসীয় । বর্তমানে একমাত্র নাগাদের মধ্যে নিগ্রোটো প্রজাতির বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান বলে পণ্ডিতগণের অনুমান । অসমের জনবিন্যাসে অস্ট্রালয়ড প্রজাতির প্রাধান্য দেখার মতন ৷ অসমের বহুসংখ্যক জনজাতি বিশেষত রাভা , গারো , ব্যাধি এবং বর্তমান মেঘালয়ের খাসি এবং অরুণাচলের যাংচুদের মধ্যে এই প্রজাতির প্রভাব সুস্পষ্ট । রাভা , গারো কার্বিদের বাদ দিয়ে অস্ট্রালয়ড প্রজাতির লোকেরা অষ্ট্রিক ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত । রাভা , গারো এবং কার্বিগণ তিবেতো – বর্মন ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত । মঙ্গোলীয় প্রজাতির লোকেরা বহুকাল আগে বর্তমান চীনদেশের ইয়াংসিকিয়াং ও হোয়াংহো নদী উপত্যকা থেকে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রব্রজন করে এই উপত্যকা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বসবাস শুরু করে । 

আর্যরা প্রায় ১২০০ খ্রিস্টাব্দ আগে ভারতবর্ষে প্রবেশ করে সিন্ধু ও গাঙ্গেয় উপত্যকায় বসতি বিস্তার করার কয়েক শত বৎসর পর ক্রমান্বয়ে তারা ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করেছিল । 

১২২৮ খ্রিস্টাব্দে চীনদেশের মুংমাও নামক ক্ষুদ্র রাজ্যের অধিবাসী টাই আহোমগণের একাংশ ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করে অসমে আহোম রাজার রাজত্বকালে দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়া ও গাঙ্গেয় উপত্যকা থেকে সময়ে সময়ে বিভিন্ন প্রজাতির লোক ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রব্রজন করেছিল । অষ্টাদশ শতকের প্রথম ভাগে ব্রহ্মদেশ থেকে খামটি , দোয়নীয়া , টাই – ফাকে , টুরুং , আইটনীয়া প্রভৃতি জনজাতিগণ অসমে প্রব্রজন করেছিল । আর্যদের প্রব্রজনে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় ব্রাহ্মণ লোকের প্রব্রজনের সাক্ষী দেয় ৷ 

এই আলোচনা থেকে দেখা যায় যে আহোমগণের আগমনের সময়ে এই ভূ – খণ্ডের জনবিন্যাসে মধ্যযুগের পূর্বেই বহুজাতিক চরিত্র পরিগ্রহ করেছে এবং পরবর্তীকালে সেই চরিত্রের অধিক পরিবর্তন ও সম্প্রসারণ ঘটেছে । মধ্যযুগে অসমের সমাজ এভাবে বিভিন্ন জাতি – জনজাতির দ্বারা গঠিত হয়ে এক সংমিশ্রিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সৃষ্টি করেছে । 

প্রশ্ন ১০। “ লোকসংস্কৃতি অধ্যয়নের জন্য প্রকৃতপক্ষে গোটা সমাজটাই একটা পুস্তকের মতো । ” — এই প্রসঙ্গে তোমার মন্তব্য বা মতামত দাও । 

উত্তরঃ অসমের লোকসংস্কৃতি সম্পদ ও ঐতিহ্যে ভরপুর । লোকসংস্কৃতির সাধারণ দিকগুলির উপরও অসমের ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চল , সম্প্রদায় , জাতি জনজাতির মধ্যে প্রচলিত কথিত ভাষা , লোকসাহিত্য , গান , নৃত্য , বাদ্য , পোশাক পরিচ্ছদ , অলঙ্কার , গৃহনির্মাণ , কৃষি , পশুপালন , ব্যবহার , পারিবারিক, সামাজিক সম্পর্ক , রীতিনীতি প্রভৃতি বিষয় অনেকক্ষেত্রে রেখাপাত করেছে । একটি জাতি অথবা সমাজের স্বাভাবিক রূপ – রং , সুখ – দুখ , শ্রম – বিনোদন প্রভৃতি লোক সংস্কৃতির মাধ্যমে প্রতিফলিত হয় । সমাজের সদস্যগণ সমাজের লোকসংস্কৃতিকে আহরণ করে , কিন্তু সেইগুলির সঙ্গে অপরিচিত লোক একজন লোকসংস্কৃতির বিষয়কে প্রতিটি কথাই সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিশেষ মনোযোগে পর্যবেক্ষণ করলে বুঝতে পারা যায় । সম্প্রতি সমগ্র বিশ্বে সমাজ – বিজ্ঞানীগণের মধ্যে লোকসংস্কৃতির বিষয়ে বিশেষ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে । 

সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো 

১। প্রাচীন ভারতের ভাস্কর্যশিল্প । 

২। ভারতীয় চিত্রকলা । 

৩। ভারতের সংগীত এবং নৃত্যকলার ঐতিহ্য । 

৪। অসমের ভাস্কর্য শিল্প । 

৫। অসমের স্থাপত্য শিল্প । 

৬। অসমের বৈষ্ণব সাহিত্য । 

৭। অসমের লোকসংগীত । 

৮। অসমের ধর্মীয় সংহতি । 

৯। অসমের বুরঞ্জি সাহিত্য । 

১০। বিহু উৎসব ।

উত্তরঃ ১। প্রাচীন ভারতের ভাস্কর্য – শিল্প :- প্রাচীন ভারতবর্ষ ভাস্কর্য – শিল্পে ভরপুর । সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকেই ভারতের ভাস্কর্য – শিল্পের নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায় । পরবর্তী সময়ে পাওয়া মাটি , শিলা , ব্রোঞ্জ , তামা , সোনা , রূপা প্রভৃতির মূর্তি নির্মাণ শৈলীতে ভারতীয়গণ নিজে বিকশিত করা স্থানীয় কলা কৌশলের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে বিদেশী বৈশিষ্ট্যের সংযোজন ঘটানো হয়েছিল । গৌতম বুদ্ধ , মহাবীর , হিন্দু দেব – দেবী , যক্ষ – যক্ষিণী , অপ্সরী , হিন্দু তথা বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন জীবজন্তুর মূর্তি এই ভাস্কর্য গুলির মধ্যে দেখা যায় । অশোকের স্তম্ভগুলির শীর্ষে থাকা জন্তুর মূর্তিগুলি , গৌতম বুদ্ধের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং সামগ্রিকভাবে ভারতীয় সংস্কৃতিতে এই জন্তুগুলির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে । বিভিন্ন পার্থক্য ও বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ভারতে গড়ে উঠা এই ভাস্কর্য – শিল্পকলাকে গান্ধার শিল্পকলা , মথুরা শিল্পকলা , অমরা শিল্পকলা নামে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায় । 

২। ভারতীয় চিত্রকলা :- প্রাচীন ভারতীয় চিত্রকলার ঐতিহ্যগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়— বৃহদাকার দেয়াল চিত্র ও ক্ষুদ্রাকার দেয়াল চিত্র । ক্ষুদ্রাকার চিত্রগুলি গ্রন্থগুলিকে অলঙ্কৃত করতে এবং সচিত্র বিবরণের জন্য অঙ্কন করা হয়েছিল । দুটি চিত্রশৈলী ভারতের বিভিন্ন স্থানে বৌদ্ধ , জৈন , হিন্দু ধর্মের বিষয়বস্তুকে ভিত্তি করে অজন্তা , বাঘ , চিত্তনায়াচল, আরমামলাই প্রভৃতি গুহার দেয়ালগুলিতে আঁকা হয়েছিল । এইগুলির মধ্যে অজস্তার দেয়াল চিত্রগুলি পৃথিবী বিখ্যাত । খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতকের চিত্র অঙ্কনের জন্য প্রয়োজনীয় –

( ১ ) আকৃতি ।

( ২ ) পরিমাপ ।

( ৩ ) আবেগ অনুভূতি প্রকাশের কৌশল ।

( ৪ ) কলাত্মক উপস্থাপন ।

( ৫ ) সাদৃশ্য জ্ঞান । ও 

( ৬ ) তুলি ব্যবহারের নিয়ম এই ষড়াঙ্গের চর্চা হয়েছিল । মোগল আমলে আকবর , জাহাঙ্গীর ও শাহজাহানের পৃষ্ঠপোষকতায় ক্ষুদ্রাকার চিত্রশিল্পের বহুল চর্চা হয় । চিত্রসমূহে সম্রাটদের ছবি , দরবার , যুদ্ধজয় , শিকার , বাগান, ফুল , গাছপালা , জন্তু প্রভৃতি বিষয়ে আঁকা হয়েছিল । 

৩। ভারতের সংগীত এবং নৃত্যকলার ঐতিহ্য :– সঙ্গীতের ক্ষেত্রে ভারতের এক সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য রয়েছে । সামবেদের স্তোত্রগুলি যজ্ঞে দেবতার সন্তুষ্টির অর্থে উদ্‌গাতা নামে পুরোহিতগণ গানের আকারে পাঠ করেছিলেন । খ্রিস্টপূর্ব ২০০ হতে খ্রিস্টীয় ২০০ সময়সীমার মধ্যে ভরতমুনির “ নাট্যশাস্ত্র ” রচিত হয় । এতে নাটক , সঙ্গীত ও নৃত্যের বিষয়ে ৫০০০ শ্লোকে বিভিন্ন নীতি নিয়ম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে । ভারতের ধ্রুপদী সঙ্গীতের পরম্পরা গুরু – শিষ্য অনুক্রমে বর্তমান সময়ে সবল রূপে অধিষ্ঠিত রয়েছে । মোগলদের দিনে এর বিশেষ উৎকর্ষ সাধন হয়েছিল । সঙ্গীতের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকার বাঁশি ও বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহারও প্রচলিত ছিল । 

৪। অসমের ভাস্কর্য শিল্প :- অসমের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরের দেয়ালে খোদিত করা দ্বিমাত্রিক অথবা পূর্ণাঙ্গরূপে নির্মিত ত্রি- মাত্রিক মূর্তি আবিষ্কৃত হয়েছে । শিলা ছাড়াও হাতির দাঁত , সোনা , রূপা , তামা , কাঠ প্রভৃতির মূর্তি নির্মাণ করা হয়েছিল। এই মূর্তিসমূহের মধ্যে দেবীমূর্তি , শিব , বিষ্ণু , গণেশ , সূর্য , ময়ূর , ঘোড়া , হাতি , সিংহ প্রভৃতি প্রধান । ভাস্কর্য শিল্পের নিদর্শন আবিষ্কৃত হওয়া কয়েকটি স্থান হল — তেজপুরের দ – পর্বতীয়া , বামুনী পাহাড় , মদন কামদেব , আমবাড়ি , ডবফা , গোয়াল পাড়ার পাগলাটেক , সূর্যপাহাড় অন্যতম । 

৫। অসমের স্থাপত্য শিল্প :- অসমে বর্তমান স্থাপত্য শিল্পের যেমন নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায় সেগুলির প্রায় বেশিরভাগই মধ্যযুগ এবং আহোম রাজবংশের অথবা কোচ রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় নির্মিত হয়েছিল । শিবসাগর জেলায় আহোম রাজত্বকালের রাজকীয় অট্টালিকা তিনটি যথাক্রমে রংপুরের রংঘর , কারেং ঘর এবং গড়গাঁও – এর তলাতল ঘর এবং অনেক মন্দির এখনও বিদ্যমান । এই সময়ের মন্দিরগুলি হল কামাখ্যা মন্দির , উগ্রতারা মন্দির , উমানন্দ মন্দির , শিবদৌল, জয়দৌল , হাজোর মন্দির , শুক্লেশ্বর মন্দির দেবালয় , দেরগাঁও এবং বিশ্বনাথের শিবমন্দির প্রভৃতি অন্যতম । মন্দিরগুলিতে সাধারণত দুটি অংশ দেখা যায় — গর্ভগৃহ এবং মণ্ডপ । 

৬। অসমের বৈষ্ণব সাহিত্য :- শ্রীকৃষ্ণ শঙ্করদেব ও মাধবদেবের নেতৃত্বে পঞ্চদশ শতকে শুরু হওয়া নব বৈষ্ণব আন্দোলনে অসমীয়া সমাজ জীবনের সকল ক্ষেত্রে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিল । এই ধর্মীয় আন্দোলনের প্রভাবে অসমীয়া সাহিত্যে এক জোয়ারের সৃষ্টি হয় এবং বহুসংখ্যক কাব্য , নাটক , গীত , চরিত্রগ্রন্থ , গদ্যসাহিত্য রচিত হয় । সাহিত্যের মূল বিষয়বস্তু ছিল রামায়ণ , মহাভারত , পুরাণ , হিন্দুধর্মের তত্ত্বকথা প্রভৃতি । শঙ্করদেব এবং মাধবদেব নিজেই বহু সংখ্যক সাহিত্য রচনা করেছিলেন । এগুলির মধ্যে শঙ্করদেবের “ কীর্তনঘোষা ” ও মাধবদেবের “ নামঘোষা ” এবং দুই জনের বরগীত সর্বাধিক জনপ্রিয় । শঙ্করদেব এবং মাধবদেবের পর ভট্টদেব , অনন্ত কন্দলি , রামসরস্বতী প্রমুখ সাহিত্যিক এই সাহিত্যচর্চা বহাল রাখেন । 

৭। অসমের লোকসঙ্গীত :- অসমে বিভিন্ন পরিবেশ তথা বিভিন্ন প্রয়োজনে বিভিন্ন ধরনের লোকসঙ্গীতের প্রচলন রয়েছে । বিয়া নাম , আই নাম , ধাই নাম , কামরূপী লোকগীত, গোয়ালপাড়িয়া লোকগীত প্রভৃতি কৃতিপয় প্রচলিত লোকগীতির উদাহরণ । এইগুলির মধ্যে বিয়া – নাম , কামরূপী- লোকগীত এবং গোয়ালপাড়িয়া লোকগীতির বিশেষ জনপ্রিয়তা রয়েছে । কামরূপী লোকগীত ও গোয়ালপাড়িয়া লোকগীতি জীবনের সুখ – দুখ , দেহের ভঙ্গিমা , জীবনে ঈশ্বরচিন্তার গুরুত্ব , দেবদেবীর প্রশস্তি প্রভৃতি প্রকাশমূলক গীত । এর উপরও গোয়ালপাড়িয়া লোকগীত স্থানীয় কিংবদন্তি তথা হাতি ধরা ও পোষা বিষয় নিয়ে রচিত ।

৮। অসমের ধর্মীয় সংহতি :- অসমের বেশিরভাগ লোক হিন্দুধর্মাবলম্বী । রাজ্যে ইসলাম, খ্রিস্টান , জৈন , বৌদ্ধ , শিখ এবং জনজাতীয় ধর্মাবলম্বী লোকের বসতি । খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকের প্রথমভাগে অসমে ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব ঘটে । হাজোর পোয়ামক্কা ইসলাম ধর্মাবলম্বী লোকের পবিত্র তীর্থস্থান। রাজা চন্দ্রকান্ত সিংহের রাজত্বকালে অসমে শিখসৈন্যের আগমন ঘটে । পরবর্তীকালে তারা স্থায়ী বাসিন্দায় পরিণত হয় । তাদের বংশধরগণ এখনও শিখধর্ম অক্ষুণ্ণ রেখেও অসমিয়া ভাষা , সংস্কৃতি গ্রহণ করে জাতীয় জীবনের অঙ্গীভূত হয়ে পড়েছে । অসমে কিছুসংখ্যক বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মাবলম্বীর লোকও আছে । সকল ধর্মের মধ্যে অসমে এক বিচিত্র সংহতি বিরাজ করছে । 

৯। অসমের বুরঞ্জি সাহিত্য :- বুরঞ্জি ( ইতিহাস ) আহোম সাহিত্যের এক অভিনব অবদান। আহোম রাজারা বুরঞ্জি রচনায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন । শুরুতে বুরুঞ্জি ‘ টাই ’ ভাষায় লেখা হলেও অসমীয়া ভাষা গ্রহণের পর তা অসমীয়া ভাষাতেই লেখা হয় । বুরঞ্জিগুলিকে “ জ্ঞানের ভাণ্ডার ” আখ্যা দেওয়া হয় । প্রকৃতার্থে বুরঞ্জিগুলি এই নামের যোগ্য। রাজনৈতিক বিবরণের সঙ্গে সঙ্গে সমসাময়িক সামাজিক ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের নানা তথ্য সমৃদ্ধ বুরঞ্জিগুলি অসমের এক অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ । 

১০। বিহু উৎসব :- বিহু অসমের প্রধান জাতীয় উৎসব । অসমের লোকসংস্কৃতির বলিষ্ঠ এবং সমৃদ্ধ রূপটি বিহু উৎসবের মধ্যে অন্তর্হিত হয়ে আছে । এই উৎসবের মধ্যে সাধারণ কৃষিজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের জীবনের বর্ণাঢ্য প্রতিফলন ঘটেছে । বিহু উৎসবের উৎপত্তিকাল নির্ণয় করা খুব কঠিন । বিহু উৎসব পালিত হয় বৎসরে তিনবার তিনমাসে। বৈশাখ মাসে বহাগ বিহু বা রঙ্গালী বিহু , মাঘ মাসে মাঘ বিহু বা ভোগালি বিহু এবং আশ্বিন মাসের সংক্রান্তির দিন কাতি বিহু পালিত হয় বৈশাখ মাসের বহাগ বিহু বা রঙ্গালী বিহু সবচাইতে উৎসব মুখর । বিহু উৎসব অসমের লোকসংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক । 

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। মধ্যযুগের অসমীয়া সাহিত্য সম্পর্কে লেখো । 

উত্তরঃ মধ্যযুগে অসমীয়া সাহিত্যের বিশেষ চর্চা ও বিকাশ ঘটেছিল । প্রথমে আহোমদের ভাষা ছিল ‘ টাই ‘ । কিন্তু সপ্তদশ শতাব্দী থেকে আহোম রাজারা অসমীয়া ভাষাকে “ রাজভাষা ” হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন । তাঁরা অসমীয়া ভাষার উন্নতির জন্য নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন । মধ্যযুগে মহাভারত , রামায়ণ ও পুরাণ অসমীয়া ভাষায় অনূদিত হয়েছিল । কবিরাজ রাম নারায়ণ চক্রবর্তী “ পদ্মপুরাণ ” এবং ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অসমীয়ায় অনুবাদ করে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছিলেন । কবি চন্দ্রদ্বিজ ধর্মপুরাণের অনুবাদ করেছিলেন। সুকুমার বরকাইত “ হস্তিবিদ্যার্ণব ” নামে হাতির চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি গ্রন্থ রচনা করেন । ঘোড়ার চিকিৎসা বিষয়ক শাস্ত্র “ ঘোড়ানিদান ” গ্রন্থটিও আহোম রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত হয়েছিল । 

বুরঞ্জি ( ইতিহাস ) সাহিত্য মধ্যযুগে অসমীয়া সাহিত্যে এক অভিনব অবদান । আহোম রাজারা বুরঞ্জি রচনায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে গেছেন । শুরুতে বুরঞ্জি “ টাই ” ভাষায় লেখা হলেও অসমীয়া ভাষা গ্রহণের পর তা অসমীয়া ভাষাতেই লেখা হয় । বুরঞ্জিসমূহকে “ জ্ঞানের ভাণ্ডার ” আখ্যা দেওয়া হয় । প্রকৃতার্থে বুরঞ্জিসমূহ এই নামের যোগ্য । বিবরণের সঙ্গে সঙ্গে সমসাময়িক সামাজিক , ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের নানা তথ্যসমৃদ্ধ বুরঞ্জিগুলি অসমের অতি মূল্যবান সম্পদ । 

মধ্যযুগের অন্য একজন খ্যাতনামা অসমীয়া মনীষী হলেন শ্রীমন্ত শঙ্করদেব । তিনি ৩৬ টি বরগীত , কাব্য , নাটক , “ কীর্তন- ঘোষা ” প্রভৃতি বহু সংখ্যক গ্রন্থ রচনা ও অনুবাদ করেছিলেন । তাঁর শিষ্য ও সহযোগী মাধবদেব অসমীয়া সাহিত্যের ভাণ্ডার প্রাচুর্যময় করে গিয়েছেন । তিনি ব্রজবুলী উপভাষার মোট ১৫৭ টি বরগীত রচনা করেছেন , তিনি বিখ্যাত “ নামঘোষা ” রচনা করেছিলেন । ভট্টদেব রচিত “ কথা- ভাগবত ” , “ কথা – গীতা ” , “ কথাভক্তি রত্নাবলী ” প্রভৃতি গদ্য রচনা করে মধ্যযুগে অসমীয়া সাহিত্যের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করেছেন । রামনারায়ণ চক্রবর্তী অসমীয়া ভাষায় “ গীতগোবিন্দ ” , “ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ” ও শকুন্তলা কাব্য রচনা করে অমর হয়েছেন । সুতরাং দেখা যায় যে মধ্যযুগে অসমীয়া সাহিত্য ব্যাপক শ্রীবৃদ্ধি লাভ করেছিল ।

প্রশ্ন ২। মধ্যযুগের ভারতবর্ষ এবং অসমের চিত্রকলা সম্পর্কে একটি আভাস দাও । 

উত্তরঃ প্রাচীন ও মধ্যযুগে ভারতবর্ষে ভিন্ন ভিন্ন চিত্রকলার বিকাশ হয়েছিল । সেই চিত্রকলাগুলি আধুনিক ভারতবর্ষের সভ্যতা – সংস্কৃতির মূল্যবান উত্তরাধিকার । অজন্তা – ইলোরা গুহাচিত্রের সঙ্গে মোগলযুগে বিকাশ লাভ করা চিত্রকলার নিদর্শনগুলি ভারতীয় সভ্যতা – সংস্কৃতির অপরিহার্য অঙ্গ । বিশেষ করে মোগলযুগে রচিত গ্রন্থসমূহে সন্নিবিষ্ট চিত্রকলাগুলি আজও মানুষের মনে বিস্ময়ের সৃষ্টি করে । 

মোগল চিত্রকলাগুলিতে প্রধানত রাজপরিবার , রাজসভা এবং সভাসদদের জীবন ধারণের প্রতিচ্ছবির আভাস মেলে । তার উপর সেই আমলে রচিত ও অনূদিত গ্রন্থের কাহিনী তথা ঘটনাপ্রবাহ চিত্ররূপের মাধ্যমে প্রকাশিত হত । কোনো কোনো চিত্রকলা বিশেষজ্ঞদের মতে মোগল সম্রাট আকবরের পৃষ্ঠপোষকতায় ভারতবর্ষে প্রথম চৈনিক চিত্রকলার আমদানি ঘটেছিল । চিত্রকলা দ্বারা মহিমামণ্ডিত গ্রন্থগুলির মধ্যে পার্শী ভাষায় রচিত “ দাস্তান – ই – আমির হামজাহ ” , “ তাবির – ই – খান্দান – ই – তাইমূরীয়া ” ও “ পাদছাহামা ” প্রধান । চিত্রকলা সমৃদ্ধ সেই যুগের অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল — ‘ রামায়ণ ’ , ‘ দিয়ান ’ , ‘ তারিখ – ই – কান্দাহারী ’ , ‘ আকবর নামা ’ ও ‘ বাবর নামা ’ । 

মধ্যযুগে অসমেও চিত্রকলা এবং গ্রন্থ অলংকরণ পরম্পরার উদ্ভব ও প্রচলন হয়েছিল । এই ব্যাপারে নব – বৈষ্ণব আন্দোলনের বিশেষ অবদান রয়েছে । নব বৈষ্ণব আন্দোলনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে রচিত সাহিত্যগুলিতে অলংকরণ করার পরম্পরা গড়ে উঠেছে । এই যুগে সাহিত্যগুলি রচনা করা হয় প্রধানত শাল পাতা ও ভোজ পাতায় । কোনো কোনো ক্ষেত্রে লিখনকার্য সমাপন করার পর চিত্রশিল্পী কথা – কাহিনীকে চিত্ররূপ দিয়েছিলেন । 

প্রশ্ন ৩। লোকসংস্কৃতির উৎস হিসাবে বিহুর অবদান সম্পর্কে লেখো । 

উত্তরঃ অসমের বিহু উৎসব কল্যাণ ও মিলনের বৈশিষ্ট্যে একটি জাতীয় উৎসব । অসমের লোক সংস্কৃতির বলিষ্ঠ এবং সমৃদ্ধ রূপটি বিহু ও বিহুগীতের মধ্যে সঞ্চিত রয়েছে । এতে সাধারণ কৃষিজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের জীবনের বর্ণাঢ্য প্রতিফলন ঘটেছে । বিহু উৎসবের উৎপত্তিকাল নির্ণয় করা ভীষণ কঠিন । যদিও এটা অনুমান করা যায় যে , অসমে আহোমদের আগমনের অনেক আগে থেকেই এই উৎসবের প্রচলন ছিল । তেজপুরের সন্নিকটে আবিষ্কৃত খ্রিস্টিয় নবম শতকের স্থাপত্যকলার নিদর্শনে থাকা নৃত্যচিত্রের সঙ্গে বিহু নৃত্যের সাদৃশ্য আছে বলে কোনো কোনো পণ্ডিতের অনুমান। 

বিহু উৎসব বৎসরে তিন বার তিন মাসে পালন করা হয় — বৈশাখ , কার্তিক ও মাঘ মাসে। বৈশাখ বিহু হল সর্বাপেক্ষা উৎসব মুখর । এই বিহুর সঙ্গে বিহু নৃত্য ও বিহু গানের ওতঃপ্রোত সম্পর্ক বিদ্যমান । এজন্যই এটা বেশি জনপ্রিয় । 

বিহু উৎসব আর্যভিত্তিক নয় , এটা জনজাতিভিত্তিক । অসমের বড়ো জনজাতির লোকেরা বিহুকে বলে “ বৈসাগু ” । সেইভাবে মিশিংগণ বিহুকে আলি আই – লিয়াং এবং লালুং সম্প্রদায়ের লোকেরা এটাকে বলে বহাগী উৎসব বা মেলা । 

অসমের বিহু উৎসব শুধু লীলাবিলাসের উৎসব নয় । পৃথিবীর অন্যান্য বহু উৎসবের মতোই এটাতেও জীবনের একটি কল্যাণময় অভীষ্টকেই আনন্দোচ্ছল রূপদান করা হয়েছে । বিহু অসমে লোকসংস্কৃতির অন্যতম উৎস । 

প্রশ্ন ৪। “ অসমীয়া সমাজ – সংস্কৃতি আর্যগোষ্ঠী সম্ভৃত বর্ণ হিন্দু এবং অনার্য লোকের যৌথ সৃষ্টি ও কৃতিত্ব । ” — আলোচনা করো । 

উত্তরঃ আহোমদের সুদীর্ঘকাল অসম শাসালের মূলে ছিল তাঁদের বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গী ও উদার সমাজনীতি । তাদের সামাজিক জীবন ছিল সহজ ও সরল । তারা প্রথম দিকে তাদের নিজস্ব ভাষা , ধর্ম ও সামাজিক রীতিনীতি ধরে রেখেছিলেন । কিন্তু ধীরে ধীরে আহোমরা এই দেশের সামাজিক আচার – আচরণ , ধর্ম ইত্যাদি গ্রহণ করেছিলেন । অসমে বসবাসকারী বহু জাতি – উপজাতি , বিভিন্ন ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সঙ্গে মেলামেশার মাধ্যমে আহোমরা এক অনুকূল সামাজিক পরিমণ্ডল গড়ে তুলতে পেরেছিল । 

ভারতবর্ষের মত অসমে বহুযুগ ধরে বিভিন্ন জাতির লোকের আগমন হয়েছে । তাদের মধ্যে প্রধান প্রধান জনগোষ্ঠী হল— নিগ্রোটো , অস্ট্রালয়ড , মঙ্গোলীয় , মেডিটেরেনিয়ান , আলপাইন , আর্য ও ককেসীয় । আর্যদের আগমন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় ব্রাহ্মণদের আগমনের সাক্ষ্য দেয় । ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার জনবিন্যাসে স্কাইথিয়ান প্রজাতির সংমিশ্রণ আছে বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত । এই প্রজাতির লোক আর্যদের সমসাময়িকভাবে ভারতবর্ষের পশ্চিম উপকূলে অবস্থান করে এবং ক্রমান্বয়ে বঙ্গদেশে প্রবেশ করে অবশেষে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করে । চীন দেশের মুংমাও নামক ক্ষুদ্র রাজ্যের অধিবাসী টাই – আহোমগণের একাংশ পাটকই পাহাড় অতিক্রম করে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করে । 

সুতরাং লক্ষ্য করা যায় যে আহোম আগমনের সময় থেকেই এই ভূ – খণ্ডের জনবিন্যাসে মধ্যযুগের পূর্বেই বহুজাতিক চরিত্র পরিগ্রহ করেছে এবং এর পরবর্তীকালে সেই চরিত্রের বেশি পরিবর্তন এবং সম্প্রসারণ ঘটেছে । মধ্যযুগে এইভাবে অসমের সমাজ বিভিন্ন জাতি – জনজাতি দ্বারা গঠিত হয়েছে । ড . ভেঙ্কটরাও – এর মতে অসমে মোট ৬১ টি প্রধান জনজাতি ও অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনজাতি রয়েছে । প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের যৌথ সমাজ একদিকে আর্যগোষ্ঠী সম্ভৃত বর্ণ হিন্দু লোক এবং অন্যদিকে অনার্য লোকের দ্বারা গঠিত ও লালিত পালিত । সেই সমাজে জনজাতি লোক ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং আর্যগণ ছিল জনজাতি সাকারে মাজুলী দ্বীপসদৃশ । 

প্রশ্ন ৫। মধ্যযুগে রচিত বিভিন্ন গ্রন্থসমূহের সঙ্গে রচয়িতাদের নামের একটি তালিকা প্রস্তুত করো । 

উত্তরঃ মাধবকন্দলী অসমীয়া ভাষায় রামায়ণ রচনা করেছিলেন । সুকুমার বরকাইথ ‘ হস্তিবিদ্যার্ণব ’ গ্রন্থ রচনা করেছিলেন । রামনারায়ণ চক্রবর্তী অসমীয়া ভাষায় গীতগোবিন্দ , ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ , শকুন্তলা কাব্য , শঙ্খচূড় বধ কাব্য রচনা করেছিলেন । কবি নারায়ণ দেব সূর্যহরি দৈবজ্ঞ দরং রাজবংশাবলি রচনা করেছিলেন । রামসরস্বতি মহাভারত এবং পুরুষোত্তম বিদ্যাবাগীশ সংস্কৃত ভাষায় রত্নাবলী ব্যাকরণ রচনা করেন । অনস্ত কন্দলী ভাগবত এবং আরও কয়েকটি গ্রন্থ অসমীয়া ভাষায় অনুবাদ করেন । ভট্টদেব কথাগীত রচনা করেছিলেন । 

ভট্টদেবই ছিলেন ভারতের প্রথম গদ্য সাহিত্যের রচয়িতা । শ্রীমন্ত শঙ্করদেব রচিত ‘ কীর্তন ঘোষা ’ ও মাধবদেবের ‘ নামঘোষা ’ এবং গুরু দুজনের বরগীতসমূহ সর্বাধিক জনপ্রিয়। শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের রচনা করা পত্নীপ্রসাদ , কালিয়াদমন , কেলিগোপাল , রুক্মিণী হরণ , পারিজাত হরণ , রামবিজয় , মাধবদেবের চোরধরা পিম্পরা গুচোয়া ইত্যাদি অংকীয়া নাটক বিপুল জনসমাগমের উপস্থিতিতে নামঘর , সত্র ইত্যাদি স্থানে রাস অথবা অন্য উপলক্ষে ভাওনা পেতে মঞ্চস্থ করা হয় । 

প্রশ্ন ৬। ‘ সাম্প্রতিক অসমের ভাষা , সাহিত্য – সংস্কৃতি প্রতিটি জাতি জনগোষ্ঠীর সম্মিলিত সৃষ্টি এবং সম্পত্তি — এই বাক্যটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো। 

উত্তরঃ অসমিয়া সাহিত্য – সংস্কৃতিতে মধ্যযুগের অনবদ্য অবদানের আলোচনা ছাড়া বর্তমানের সাহিত্য – সংস্কৃতির আলোচনা করার কোনো অর্থ হয় , না । কারণ মধ্যযুগের সাহিত্য – সংস্কৃতিকে ভিত্তি করেই বর্তমানের সাহিত্য সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে । মধ্যযুগের সাহিত্য – সংস্কৃতি যে রাজ – পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এতো সমৃদ্ধ হত না তা স্বীকার করতে হবে। রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় রচিত কিছু সংখ্যক গ্রন্থে রাজা , মন্ত্রী বা অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের গুণকীর্তন যদিও অনেকখানি অতিরঞ্জিত করা হয়েছিল তবুও এইগুলোর সাহিত্যমূল্য কোনো ভাবেই অস্বীকার করা যায় না। 

মধ্যযুগের অসমে সাহিত্য – সংস্কৃতির মানচিত্রটির নির্মাতা ছিলেন স্থানীয় জনজাতীয় ভাষিক গোষ্ঠী , কামতা রাজগণ এবং উজানের আহোমগণ । সাম্প্রতিক অসমের ভাষা , সাহিত্য – সংস্কৃতি প্রতিটি জাতি জনগোষ্ঠীরই সম্মিলিত সৃষ্টি এবং সম্পত্তি । কামরূপ – কামতার রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় হেম সরস্বতী , কবিরত্ন সরস্বতী এবং হরিহর বিপ্র অসমিয়া ভাষায় কাব্য রচনা করেছিলেন । কছাড়ি রাজা মহামাণিক্যের পৃষ্ঠপোষকতায় মাধব কন্দলী অসমিয়া ভাষায় রামায়ণ রচনা করেছিলেন । এই রাজার সময়ে কপিলির পারে আলি পুখুরির বরদোয়ায় মহেন্দ্র কন্দলী টোল প্রতিষ্ঠা করে জ্ঞানমার্গের সাধনার দ্বারা অন্যদেরও জ্ঞানচর্চায় উৎসাহিত করেছিলেন। 

মধ্যযুগের আহোমদের সাহিত্য – সংস্কৃতির অবদানের কথা বলতে গেলে সর্বপ্রথমে বুরঞ্জী সাহিত্যের নাম নিতে হবে । প্রথমে তাই আহোম ভাষায় এরপর অসমিয়া ভাষায় লেখার পরম্পরা সৃষ্টি হয়েছিল । সংস্কৃত ভাষায় রচিত মহাভারত , রামায়ণ এবং পুরাণ ইত্যাদি গ্রন্থসমূহ অসমিয়াতে অনুবাদ করা ছাড়াও অন্যান্য অনেকগুলো মূল্যবান গ্রন্থ সে সময়ে রচিত হয়েছিল । 

সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো

১। শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ।

২। ভট্টদেব ।

৩। পীতাম্বর কবি । 

১। শ্রীমন্ত শঙ্করদেব :- মহাপুরুষ শ্রীমন্ত শঙ্করদেব অসমের নগাঁও জেলার অন্তর্গত আলীপুখুরী গ্রামে ১৪৪৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন । তাঁর পিতার নাম কুসুম্বর ভুঁইয়া এবং মাতার নাম সত্যসন্ধ্যাদেবী । মহেন্দ্ৰ কন্দলী নামে এক পণ্ডিতের নিকট শঙ্করদেব নানা শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন । তিনি সত্যবতী নামে এক মহিলাকে বিবাহ করেন । সত্যবতী পরলোক গমন করলে শঙ্করদেব গৃহত্যাগ করে প্রায় ১২ বৎসর নানান তীর্থস্থান দর্শন করেন । শঙ্করদেব প্রবর্তিত ধর্মকে বলা হয় ভাগবতী বৈষ্ণব ধর্ম বা একশরণ নামধর্ম । অসমীয়া সমাজ , সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে শঙ্করদেবের দান অপরিসীম । তিনি গীত , কীর্তন , কাব্য , নাটক প্রভৃতি রচনা করেন । তিনি মোট ৩৬ টি বরগীত , কাব্য , নাটক , “ কীর্তন ঘোষা ” প্রভৃতি গ্রন্থ রচনা করেন । ১৫৬৯ সালে শঙ্করদেব স্বর্গারোহণ করেন। 

২। ভট্টদেব :- ভট্টদেব মধ্যযুগীয় অসমীয়া সাহিত্যের বিশিষ্ট প্রবন্ধকার ও সাহিত্যিক । তাঁর প্রকৃত নাম বৈকুণ্ঠনাথ ভাগবত ভট্টাচার্য । ভট্টদেব “ কথা ভাগবত ” , “ কথা – গীতা ” , “ কথাভক্তি রত্নাবলী ” প্রভৃতি গদ্য রচনা করে মধ্যযুগে অসমীয়া গদ্যশৈলীর অপূর্ব নিদর্শন রেখে গেছেন । 

৩। পীতাম্বর কবি :- পীতাম্বর কবি মধ্যযুগের অন্যতম অসমীয়া কবি ও সাহিত্যিক । তিনি সাহিত্যসৃষ্টির মাধ্যমে অসমীয়া সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে গেছেন । তিনি বিখ্যাত “ ঊষা পরিণয় ” কাব্য রচনা করে অসমীয়া সাহিত্যে অমর হয়ে আছেন । এই কাব্যে ঊষা ও অনিরুদ্ধের প্রণয় কাহিনীর উল্লেখ আছে । 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। প্রাচীনকাল থেকে ভারতবর্ষে আগমন করা কয়েক প্রকার মানব প্রজাতির উল্লেখ করো । 

উত্তরঃ প্রাচীনকাল থেকে ভারতবর্ষে আগমন করা বিভিন্ন প্রজাতির মানবের মধ্যে প্রধান হল– দ্রাবিড় , আর্য , নেগ্রোটো, মেডিটেরিনিয়ান , আলপাইন ও মঙ্গোলীয় । 

প্রশ্ন ২। প্রাচীনকালে অসমে আগমন করা প্রধান মানব জাতির নাম উল্লেখ করো। 

উত্তরঃ প্রাচীনকালে অসমে আগমন করা প্রধান মানব প্রজাতিগুলি হলঃ নিগ্রোটো , অষ্ট্ৰালয়ড, মঙ্গোলীয় , মেডিটেরেনিয়ান , আলপাইন , আর্য ও ককেসীয় ।

প্রশ্ন ৩। তিবেতো – বর্মন ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত অসমের তিনটি জনজাতির নাম লেখো । 

উত্তরঃ তিবেতো – বর্মন ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত অসমের তিনটি জনজাতি হল — রাভা , গারো ও কার্বি । 

প্রশ্ন ৪। টাই – আহোমদের একাংশ কখন কার নেতৃত্বে এবং কোথা ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করেছিল ? 

উত্তরঃ ১৮২৮ সালে চীনদেশের মুংমাও নামক ক্ষুদ্র রাজ্যের অধিবাসী টাই আহোমদের একাংশ চুকাফার নেতৃত্বে পাটকাই পাহাড় অতিক্রম করে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করেছিল। 

প্রশ্ন ৫। অষ্টাদশ শতকের প্রথম ভাগে ব্রহ্মদেশ থেকে কোন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী লোকেরা অসমে প্রব্রজন করেছিল ? 

উত্তরঃ অষ্টাদশ শতকের প্রথমভাগে ব্রহ্মদেশ থেকে খামটি , দোওনীয়া টাইফাকে , টুকং , আইটনীয়া প্রভৃতি জনজাতি অসমে প্রব্রজন করেছিল । 

প্রশ্ন ৬। আজান ফকির কে ছিল ? সে কোথা থেকে অসমে এসেছিল । এবং এখানে কী করেছিল ? 

উত্তরঃ আজান ফকির ওরফে সাহমিরান ছিল বাগদাদের ধর্মীয় নেতা । সে বাগদাদ থেকে অসমে এসে ধর্মপ্রচার করেছিল । 

প্রশ্ন ৭। অসমের পাহাড় ও সমতল উভয় স্থানে বসবাস করা কয়েকটি জনজাতির নাম লেখো । 

উত্তরঃ অসমের পাহাড় ও সমতল উভয় স্থানে বসবাসকারী প্রধান কয়েকটি জনজাতি হল — অঁকা , আদি , টাংদা , দফলা , মিরি , মিসিং ( মিসমি ) , খামটি , সেংফৌ , টুয়ং প্রভৃতি । 

প্রশ্ন ৮। ভট্টদেব রচিত তিনখানা সাহিত্যের নাম লেখো । 

উত্তরঃ ভট্টদেব রচিত উল্লেখযোগ্য সাহিত্য হল – 

( ক ) ভাগবত ।

( খ ) কথা গীতা । ও 

( গ ) কথাভক্তি রত্নাবলী । 

প্রশ্ন ৯। রামনারায়ণ চক্রবর্তী কর্তৃক অসমীয়ায় অনূদিত দুটি গ্রন্থের নাম লেখো । 

উত্তরঃ ( ক ) গীতগোবিন্দ ।

( খ ) ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ ।

প্রশ্ন ১০। বিহু কত প্রকার ও কী কী ? 

উত্তরঃ বিহু তিন প্রকার , যথা— 

( ক ) বহাগ বিহু বা রঙ্গালি বিহু ।

( খ ) মাঘ বিহু বা ভোগালি বিহু । ও 

( গ ) কাতি বিহু । 

প্রশ্ন ১১। মহাভারতীয় সংস্কৃতি – সভ্যতা কাকে বলে ? 

উত্তরঃ ভারতবর্ষে নানাদিক দিয়ে বৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেও দেশে বহুযুগ ধরে সংমিশ্রণ , সংশ্লেষণ ও সংবদ্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কৃষ্টি , সংস্কৃতি , ভাষা – সাহিত্য , সভ্যতার বিকাশ ও উত্তরণ সংঘটিত হয়ে আসছে এবং এর সামগ্রিক রূপটিকে মহাভারতীয় সংস্কৃতি – সভ্যতা বলে অভিহিত করা যায় । 

প্রশ্ন ১২। ভারতের মূলগত ঐক্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো । 

উত্তরঃ ভারতবর্ষের বৈচিত্র্য এবং বিভিন্নতার অন্তরালে এক বিরাট ঐক্যভাব নিহিত রয়েছে । মহাভারতের যুগ অবধি ‘ ভারতবর্ষ ’ নাম থেকে এর ভৌগোলিক একাত্মবোধ প্রমাণিত হয় । দেশের কবি ও রাজনীতিবিদগণ হিমালয় থেকে সাগর পর্যন্ত এক সার্বভৌম সাম্রাজ্যের আদর্শ প্রচার করেছেন । ভারতবর্ষে ধর্মগত ঐক্যও বিদ্যমান । দেশে বেশিরভাগ লোকই হিন্দু ধর্মাবলম্বী । ইসলাম ধর্মাবলম্বীগণও হিন্দু ধর্ম ও সভ্যতার প্রভাব থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত থাকতে পারে নি । বিভিন্ন জাতি ও উপজাতি এবং ভাষাভাষী লোকের দেশ এই ভারতবর্ষ । কিন্তু তাদের মধ্যে ঐক্যভাব নিহিত রয়েছে । বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারতবর্ষের অন্যতম সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য । 

প্রশ্ন ১৩। ভারতবর্ষের সাংস্কৃতিক ঐক্য সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো । 

উত্তরঃ সংস্কৃতি মানুষের তথা সমাজ ও জাতির একটি বড় সম্পদ । যে জাতি বা দেশ সাংস্কৃতিক দিক থেকে যত উন্নত সেই দেশ বা জাতির উন্নতি অবশ্যম্ভাবী । সংস্কৃতি হল মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ । সংস্কৃতি একমাত্র মানুষের আচার আচরণ, মূল্যবোধ , শিক্ষা , ধর্ম , সাহিত্যকে পরিমার্জিত করতে পারে । প্রাচীন ভারতের সংস্কৃতির একমাত্র লক্ষ্য হল শান্তি স্থাপন করা । ভারতীয় সংস্কৃতি পৃথিবীর সকল সংস্কৃতির ধারক ও বাহক । ভারতীয় সংস্কৃতি তার নিজস্বতা বজায় রেখে অন্যান্য দেশের সংস্কৃতিকে পুষ্ট করেছে । ভারতীয় সংস্কৃতি প্রাচীন ঐতিহ্য ও নূতনের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেছে । 

প্রশ্ন ১৪। ভারতবর্ষের জাতিগত ঐক্য সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা করো । 

উত্তরঃ বহুকাল ধরে ভারতবর্ষে শক , হুন , গ্রিক , পারসিক , পাঠান , মোগল প্রভৃতি অনেক জাতিগোষ্ঠীর মানুষ প্রবেশ করেছে । তারা ক্রমান্বয়ে ভারতীয় জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে । সেইহেতু ভারতবর্ষের জনগোষ্ঠীতে আর্য , দ্রাবিড় , মঙ্গোলীয় , নেগ্রিটো প্রভৃতি বিভিন্ন অবয়ব ও বর্ণের মানুষের অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায় । এমন বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী খুব কম দেশে দেখা যায় । তাদের ভাষা ও ধর্মের ক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য বা বিভিন্নতা দেখতে পাওয়া যায় । 

প্রশ্ন ১৫। ভারতবর্ষের ভাষাগত সম্পর্কে ঐক্য সংক্ষেপে লেখো । 

উত্তরঃ ভাষার ক্ষেত্রেও প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে সমন্বয়ী ঐক্য দেখতে পাওয়া যায় । ভারতের ভাষাগত বিভিন্নতার মধ্যে ঐক্যসূত্রের কাজ করছে সংস্কৃত ভাষা , হিন্দি, বাংলা , মারাঠি , তামিল , তেলেগু , মালয়ালাম প্রভৃতি ভায়ার উপর সংস্কৃত ভাষার প্রভাব গভীর । লিপির ক্ষেত্রেও এই মিল বর্তমান ৷ বেশির ভাগ ভারতীয় লিপির উপর ব্রাহ্মীলিপির সুস্পষ্ট প্রভাব বিদ্যমান । “ নানা ভাষা , নানা জাতি , নানা পরিধান , বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান”—কবির এই বাণী সর্বাংশে সত্য ।

অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। কার রাজত্বকালে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় সমসাময়িকভাবে আর্যদের আগমন ঘটেছিল বলে ঐতিহাসিকদের অনুমান ? 

উত্তরঃ মহাভূতি বর্মণের রাজত্বকালে । 

প্রশ্ন ২। টাই – আহোমরা কোথা থেকে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রবেশ করে ? 

উত্তরঃ চীনের মুংমাও নামক ক্ষুদ্র রাজ্য থেকে । 

প্রশ্ন ৩। আজান ফকির কোথাকার লোক ছিলেন 

উত্তরঃ বাগদাদের । 

প্রশ্ন ৪। বিহার রাজ্যের ভাষাটির নাম কী ? 

উত্তরঃ ভোজপুরী – হিন্দী ।

প্রশ্ন ৫। রাভা , গারো ও কার্বিগণ কোন ভাষাগোষ্ঠীর । 

উত্তরঃ তিবেতো – বর্মন ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্গত । 

প্রশ্ন ৬। ড . ভেঙ্কটরাও – এর মতে অসমে মোট কতটি প্রধান জনজাতি আছে ? 

উত্তরঃ ৬১ টি । 

প্রশ্ন ৭। অসমীয়া ভাষায় রচিত প্রথম বুরঞ্জী কোনটি ? 

উত্তরঃ স্বর্গনারায়ণ মহারাজার আখ্যান । 

প্রশ্ন ৮। স্বর্গনারায়ণ মহারাজার আখ্যান কোন সালে রচিত হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৫২৬ সালে । 

প্রশ্ন ৯। অসমের কোন মনীষী কোচ রাজা মহারাজা নরনারায়ণের পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করেছিল ? 

উত্তরঃ শ্রীমন্ত শঙ্করদেব । 

প্রশ্ন ১০। শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কয়টি বরগীত রচনা করেছিলেন ? 

উত্তরঃ মোট ৩৬ টি । 

প্রশ্ন ১১। “ গীতগোবিন্দ ” কে অসমীয়া ভাষায় অনুবাদ করেন ? 

উত্তরঃ কবি রামনারায়ণ চক্রবর্তী । 

প্রশ্ন ১২। “ পদ্মাপুরাণ ” অসমীয়া ভাষায় কে অনুবাদ করেন ? 

উত্তরঃ নারায়ণদেব । 

প্রশ্ন ১৩। “ ঘামছা ” কে রচনা করেন ? 

উত্তরঃ আমীর খসরু । 

প্রশ্ন ১৪। শ্রীমন্ত শঙ্করদেব ব্রজবুলী উপভাষায় মোট কতটি বরগীত রচনা করেছিলেন ? 

উত্তরঃ ১৫৭ টি । 

প্রশ্ন ১৫। “ নামঘোষা ” কে রচনা করেন ? 

উত্তরঃ শ্রীমন্ত শঙ্করদেব । 

প্রশ্ন ১৬। ভট্টদেবের প্রকৃত নাম কী ছিল ?

উত্তরঃ বৈকুণ্ঠনাথ ভট্টাচার্য ।

প্রশ্ন ১৭। ঊষা পত্রিকা কাব্যের রচয়িতা কে ? 

উত্তরঃ পীতাম্বর কবি । 

প্রশ্ন ১৮। আজান ফকির গড়গাঁও এর নিকট চুনপোরাতে থেকে কখন ধর্মপ্রচার করেছিল ? 

উত্তরঃ সপ্তদশ শতকে । 

প্রশ্ন ১৯। আজান ফকিরের প্রকৃত নাম কী ? 

উত্তরঃ শাহমিরাণ । 

প্রশ্ন ২০। “ হস্তিবিদ্যার্ণব ” গ্রন্থের চিত্রসমূহ কে অঙ্কন করেছিল ? 

উত্তরঃ দিলবর ও দোসর । 

প্রশ্ন ২১। বিহু উৎসব মোট কতটি ? 

উত্তরঃ তিনটি । 

প্রশ্ন ২২। রঙ্গালি বিহু কোন মাসে পালিত হয় ? 

উত্তরঃ বৈশাখ মাসে । 

প্রশ্ন ২৩। আহোমগণ কখন অসমে প্রব্রজন করেছিল ? 

উত্তরঃ ১২২৮ সালে । 

প্রশ্ন ২৪। নাগারা কোন প্রজাতির লোক ? 

উত্তরঃ নিগ্রোটো প্রজাতির । 

প্রশ্ন ২৫। অন্ধ্রপ্রদেশের ভাষার নাম কী ? 

উত্তরঃ তেলেগু । 

প্রশ্ন ২৬। কর্ণাটকের ভাষার নাম কী ? 

উত্তরঃ কন্নড় ।

প্রশ্ন ২৭। অস্ট্রালয়ড প্রজাতির লোক কোন ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ? 

উত্তরঃ অস্ট্রিক ভাষার । 

প্রশ্ন ২৮। অসমে সুফীবাদের প্রচারক কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ ‘ আজান পীর ’ বা ‘ আজান ফকির ’ ।

প্রশ্ন ২৯। আজান পীর রচিত ধর্মমূলক গীত অসমে কী নামে প্রসিদ্ধ ? 

উত্তরঃ জিকির । 

প্রশ্ন ৩০। “ কীর্তনঘোষা ” কে রচনা করেছিলেন ? 

উত্তরঃ শ্রীমন্ত শঙ্করদেব । 

প্রশ্ন ৩১। “ নামঘোষা ” কে রচনা করেছিলেন ? 

উত্তরঃ মাধবদেব । 

প্রশ্ন ৩২। “ হস্তিবিদ্যার্ণব ” কে রচনা করেছিলেন ? 

উত্তরঃ সুকুমার বরকাইথ । 

প্রশ্ন ৩৩। ভারতে প্রথম গদ্যসাহিত্য রচয়িতা কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ ভট্টদেব । 

প্রশ্ন ৩৪। শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের শিক্ষাগুরু কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ মহেন্দ্র কন্দলী । 

প্রশ্ন ৩৫। কোন ব্যক্তি সমগ্র ‘ মহাভারত ‘ কাব্যটিকে অসমীয়া ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন ? 

উত্তরঃ কবি রাম সরস্বতী । 

প্রশ্ন ৩৬। নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোর ছবিসংগ্রহ করে একটি অ্যালবাম তৈরি করো । 

( ক ) নাগাগণের হর্নবিল উৎসব । 

( খ ) মণিপুরী নৃত্য । 

( গ ) খাসীয়া নৃত্য । 

( ঘ ) মিজোগণের বাঁশনৃত্য । 

( ঙ ) মিজোগণের চাংঘর । 

( চ ) মদন কামদেব মন্দিরে থাকা পুরানো ভাস্কর্য । 

( ছ ) শিবসাগরের শিব দৌল । 

( জ ) শিবসাগরের তলাতল ঘর । 

( ঝ ) শিবসাগরের রংঘর ।

উত্তরঃ ছাত্র-ছাত্রীরা উপরের প্রশ্ন গুলির উত্তর নিজে করার চেষ্টা কর ।

সঠিক উত্তর বেছে নিয়ে উত্তরটির পাশে টিক্ ( √ ) চিহ্ন দাও : 

প্রশ্ন ১। নাগারা কোন প্রজাতির লোক ? 

( i ) নিগ্রোটো

( ii ) মঙ্গোলীয়

( iii ) অস্ট্রালয়ড ৷  

উত্তরঃ ( i ) নিগ্রোটো ( √ ) ।

প্রশ্ন ২। আহোমগণ কত সালে অসমে প্রব্রজন করেছিল ?

( i ) ১২২৬

( ii ) ১২২৮ 

( iii ) ১২৩০

উত্তরঃ ( ii ) ১২২৮ ( √ ) ।

প্রশ্ন ৩। আর্যরা কত খ্রিস্টাব্দ পূর্বে ভারতবর্ষে প্রবেশ করে ?

( i ) ১২০০

( ii ) ১২৩০

( iii ) ১২৮০

উত্তরঃ ( i ) ১২০০ ( √ ) ।

প্রশ্ন ৪। “ নামঘোষা ” রচনা করেন কে ?

( i ) শঙ্করদেব 

( ii ) মাধবদেব

( iii ) দামোদর দেব ।

উত্তরঃ ( ii ) মাধবদেব ( √ ) ।

প্রশ্ন ৫। অন্ধ্রপ্রদেশের ভাষা কী ? 

( i ) তামিল 

( ii ) তেলেগু 

( iii ) মালয়ালাম

উত্তরঃ ( ii ) তেলেগু ( √ ) ।

প্রশ্ন ৬। কর্ণাটকের ভাষার নাম কী ?

( i ) তামিল

( ii ) তেলেগু

( iii ) কন্নড়

উত্তরঃ ( iii ) কন্নড় ( √ ) ।

প্রশ্ন ৭। গীতগোবিন্দ অসমীয়া ভাষায় অনুবাদ করেন কে ?

( i ) রামনারায়ণ চক্রবর্তী

( ii ) সুকুমার বরকাইত

( iii ) মাধবদেব 

উত্তরঃ ( i ) রামনারায়ণ চক্রবর্তী ( √ ) ।

প্রশ্ন ৮। অসমে মোট ক’বার বিহু উৎসব পালিত হয় ?

( i ) একবার

( ii ) দুইবার

( iii ) তিনবার 

উত্তরঃ ( iii ) তিনবার ( √ ) ।

প্রশ্ন ৯। শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কয়টি বরগীত রচনা করেন ?

( i ) ৩০ টি 

( ii ) ৩৬ টি

( iii ) ৪২ টি 

উত্তরঃ ( ii ) ৩৬ টি ( √ ) ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top