Class 10 Social Science Chapter 4 স্বাধীনতা আন্দোলন ও অসমে জাতীয় জাগরণ

Class 10 Social Science Chapter 4 স্বাধীনতা আন্দোলন ও অসমে জাতীয় জাগরণ Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 10 Social Science Chapter 4 স্বাধীনতা আন্দোলন ও অসমে জাতীয় জাগরণ and select needs one.

Class 10 Social Science Chapter 4 স্বাধীনতা আন্দোলন ও অসমে জাতীয় জাগরণ

Join Telegram channel

Also, you can read SCERT book online in these sections Class 10 Social Science Chapter 4 স্বাধীনতা আন্দোলন ও অসমে জাতীয় জাগরণ Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 10 Social Science Chapter 4 স্বাধীনতা আন্দোলন ও অসমে জাতীয় জাগরণ These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 10 Social Science Chapter 4 স্বাধীনতা আন্দোলন ও অসমে জাতীয় জাগরণ for All Subject, You can practice these here..

স্বাধীনতা আন্দোলন ও অসমে জাতীয় জাগরণ

               Chapter – 4

প্রথম খণ্ড – ইতিহাস

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তর-

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও

প্রশ্ন ১। ইয়াণ্ডাবু সন্ধি কখন হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৮২৬ সালের ২৬ শে ফেব্রুয়ারী । 

প্রশ্ন ২। কোম্পানির আমল বলতে কোন সময়কে বোঝায় ? 

উত্তরঃ ১৮২৬ সাল হতে ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত সময় । 

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Join Now

প্রশ্ন ৩। অসমে বাংলা ভাষার প্রচলন কবে হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৮৩৭ সালে । 

প্রশ্ন ৪। বাংলা ভাষার পরিবর্তে অসমে অসমিয়া ভাষার পুনর্বার প্রচলন কখন হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৮৭৩ সালে । 

প্রশ্ন ৫। অরুণোদয় পত্রিকার প্রথম সম্পাদক কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ চন্দ্রকুমার আগরওয়ালা । 

প্রশ্ন ৬। অসম ছাত্র সম্মিলনের মুখপত্রটির নাম কী ছিল ? 

উত্তরঃ মিলন । 

প্রশ্ন ৭। রায়ত সভাগুলির মুখ্য উদ্দেশ্য কী ছিল ? 

উত্তরঃ গ্রেজিং কর বন্ধ করা , খাজনা হ্রাস করা ও পূর্ববঙ্গ হতে প্রব্রজন রোধ । 

প্রশ্ন ৮। সারা অসম রায়ত সভার গঠন কবে হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৯৩৩ সালে । 

প্রশ্ন ৯। আহোম সভার সম্পাদক কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ পদ্মনাথ গোহাঁই বরুয়া । 

প্রশ্ন ১০। যোরহাট সর্বজনীন সভা কখন এবং কার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৮৮৪ সালে জগন্নাথ বরুয়ার নেতৃত্বে । 

প্রশ্ন ১১। অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রথম সভাপতি এবং সম্পাদক কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ কুলধর চালিহা সভাপতি এবং নবীনচন্দ্র বরদলৈ সম্পাদক ছিলেন । 

প্রশ্ন ১২। অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত প্রথম সভাপতি কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ বিষ্ণুরাম মেধি । 

প্রশ্ন ১৩। অসমের প্রথম প্রধানমন্ত্রী কে এবং তিনি কখন নির্বাচিত হয়েছিলেন ?

উত্তরঃ অসমের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হলেন গোপীনাথ বরদলৈ । তিনি ১৯৪৬ সালের ১১ ই ফেব্রুয়ারী নির্বাচিত হয়েছিলেন । 

প্রশ্ন ১৪। অসমে স্থাপিত প্রথম জাতীয় অনুষ্ঠান কী ? 

উত্তরঃ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস । 

প্রশ্ন ১৫। কুশল কোঅরকে কী অপরাধে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল ? 

উত্তরঃ বড়পাথারে রেল বেলাইন করার অপরাধে । 

প্রশ্ন ১৬। গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয় কখন স্থাপিত হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারী । 

প্রশ্ন ১৭। অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে কখন নামাঙ্কিত হয় ?

উত্তরঃ ১৯৪৭ সালের ৩ নভেম্বর । 

প্রশ্ন ১৮। গুয়াহাটি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় কখন আনুষ্ঠানিকভাবে আরম্ভ হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৯৬০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ।

সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও

প্রশ্ন ১। ‘ অসমিয়া লিটারেরি সোসাইটি ‘ সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো । 

উত্তরঃ দেবীচরণ বরুয়া ও গুণাগোবিন্দ ফুকনের নেতৃত্বে ১৮৭২ সনে কলকাতায় অসমীয়া লিটারেরী সোসাইটি নামক প্রথম সংগঠন গঠিত হয় । এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সাহিত্যচর্চা । কিন্তু রাজনৈতিক চিন্তারও প্রকাশ ঘটেছিল । এই সংগঠনটি ১৮৮৫ সন পর্যন্ত সক্রিয় হয়েছিল । 

প্রশ্ন ২। জোনাকি যুগ বলতে কোন সময়কে বোঝায় ? এই যুগের উল্লেখযোগ্য জাতীয়তাবাদী উত্তরণের একটি আভাস দাও । 

উত্তরঃ অসমের সুধী সমাজে অসমীয়া ভাষা উন্নতিসাধনী সভা প্রকাশ করা জোনাকি এক নতুন আলোড়নের সৃষ্টি করেছিল । অরুণোদয়ের মাধ্যমে আরম্ভ হওয়া সাহিত্যিক নবজাগরণে পরিপূর্ণতা লাভ করেছিল জোনাকি । জোনাকি সেই সময়ের বহু সাহিত্যিক প্রতিভাবান লোককে জনসমক্ষে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছিল । জোনাকিতে প্রকাশিত কবিতা, প্রবন্ধ – নিবন্ধগুলিতে অনেক লেখকগণের জাতীয়তাবাদী চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছিল । 

প্রশ্ন ৩। আহোম সভার রাজনৈতিক দাবি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো । 

উত্তরঃ আহোম সভার উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক দাবী হল — আহোম সম্প্রদায়কে সরকারীভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মর্যাদা প্রদান করে তাদের জন্য বিধান সভার আসন সংরক্ষণ করা এবং পৃথক সমষ্টি গঠন করা । 

প্রশ্ন ৪। কানির ( মদ্য ) প্রচলন সম্পর্কে যোরহাট সর্বজনীন সভার স্থিতি কী ছিল সংক্ষেপে লেখো ।

উত্তরঃ কানির ( মদ্য ) ব্যবসা বন্ধের জন্য যোরহাট সর্বজনীন সভা রয়েল কমিশনকে আবেদন করেছিল । 

প্রশ্ন ৫। আসাম এসোসিয়েশন ব্রিটিশ সরকারের নিকট কী কী বিষয় উত্থাপন করেছিল ? 

উত্তরঃ ব্রিটিশ সরকারের কাছে আসাম এসোসিয়েশন রাজ্য সমস্যাবলী তুলে ধরে । জনস্বার্থবিরোধী গোচারণ কর আরোপের বিরুদ্ধে এই সংস্থা প্রতিবাদে সোচ্চার হয় এবং জনগণকে এই ব্যাপারে সচেতন করে তোলে । এই সংস্থা অসমে বেআইনী আফিং ব্যবসা নিষিদ্ধকরণের দাবী জানায় । আসাম অ্যাসোসিয়েশন স্বায়ত্বশাসনের ক্ষেত্রে আসামকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছিল ।

প্রশ্ন ৬। অসমে বিদেশী দ্রব্য বর্জন আন্দোলনের কার্যাবলি সম্পর্কে সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের ফলে সমগ্র দেশে স্বদেশী আন্দোলন আরম্ভ হয় । এই আন্দোলনের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিদেশী দ্রব্য বর্জন । অসমেও একই সময়ে বিদেশী দ্রব্য বর্জন আন্দোলন শুরু হয় । অসমের তেজপুর , বরপেটা , ধুবড়ী , গৌরীপুর , গুয়াহাটী , গোয়ালপাড়া , শিলচর , করিমগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে বিদেশী দ্রব্য বর্জন আন্দোলনে ব্যাপক সাড়া জাগে । 

প্রশ্ন ৭। অসমে অসহযোগ আন্দোলনে যে সকল অসমীয়া নেতা নেতৃত্ব দান করেছিলেন তাঁদের সকলের বিষয়ে উল্লেখ করো । 

উত্তরঃ সারা দেশের সঙ্গে অসমের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ অসহযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে । তরুণরাম ফুকন , নবীনচন্দ্র বরদলৈ , রোহিনী চৌধুরী ও মোহম্মদ তায়েবুল্লা প্রমুখ নেতাগণ অসমে অসহযোগ আন্দোলন পরিচালনার ভার গ্রহণ করে । 

প্রশ্ন ৮। কানিংহাম সার্কুলার অসমে আইন অমান্য আন্দোলনের ক্ষেত্রে ধরনের প্রভাব বিস্তার করেছিল ? 

উত্তরঃ ১৯৩০ সালে অসহযোগ আন্দোলন চলাকালে মে মাসে অসমের শিক্ষা অধিকর্তা কানিংহাম এক নির্দেশনামায় ছাত্র – ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের হরতাল , পিকেটিং , রাজনৈতিক সভাযাত্রায় অংশ নেওয়া নিষেধ করা এবং সমস্ত ধরনের সরকারী অনুশাসন মেনে চলবেন বলে প্রতিশ্রুতি দানের কথা ঘোষণা করেন । ফলে অসমের ছাত্র – ছাত্রীগণ প্রতিবাদমুখর হয়ে দলে দলে স্কুল – কলেজ ত্যাগ করে । আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে সরকার বাধ্য হয়ে পরবর্তীকালে এই সার্কুলার প্রত্যাহার করে । 

প্রশ্ন ৯। গোপীনাথ বরদলৈ মন্ত্রীসভা স্বাধীনতার পর যে সকল সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন সে সম্পর্কে লেখো। 

উত্তরঃ প্রাক্ – স্বাধীনতাকালে অসমে পরিকাঠামো ছিল অত্যন্ত দুর্বল । স্বাধীনতার ঠিক পরেই অসম তথা উত্তর পূর্বাঞ্চল সীমান্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল । ভারত বিভাজনের ফলে পশ্চিমবঙ্গ ও অসমের মধ্যে রেলপথ ও নদী পরিবহন ব্যবস্থায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় । অর্থনৈতিকভাবেও অসম তীব্র সমস্যার সম্মুখীন হয় । 

প্রশ্ন ১০। অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লেখো । 

উত্তরঃ ১৯১৩ সালে করিমগঞ্জে এবং তার ঠিক পরই ১৯২৩ সালে তিতাবরে অপর একটি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সূচনা হয় । এইরূপে ১৯৪৮ সনে নগাওঁ – এ অসম পশু মহাবিদ্যালয় এবং যোরহাটে অসম কৃষি মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল । এই দুই মহাবিদ্যালয় একত্রিত হয়ে ১৯৬৯ সালে অসমে স্থাপিত হয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় । অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উত্তর পূর্বের একমাত্র এবং প্রথম বৃত্তিমুখী বিশ্ববিদ্যালয় ।

প্রশ্ন ১১। অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লেখো । 

উত্তরঃ উত্তর – পূর্ব ভারতের প্রথম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় স্থাপন করা হয় ডিব্ৰুগড়ে । ১৯০০ সালে ডিব্ৰুগড়ে ড. জন বেরী হোয়াইটের ৫০,০০০ টাকার অনুদানে “ বেরী হোয়াইট” মেডিক্যাল স্কুল স্থাপিত হয় । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই বিদ্যালয়টি একটি চিকিৎসালয়ের চৌহদ্দে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল । স্বাধীনতার পর ১৯৪৭ সালের ৩ রা নভেম্বর এই বিদ্যালয় আনুষ্ঠানিকভাবে অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় নামে নামকরণ করা হয় । 

দীর্ঘ উত্তর লেখো

প্রশ্ন ১। অসমীয়া ভাষা উন্নতিসাধিনী সভার ভূমিকা এবং কার্যাবলি আলোচনা করো । 

উত্তরঃ বাংলা ছাপাখানাতে অসমীয়া ভাষার স্বতন্ত্রতার উপর আক্রমণ প্রবণতা লক্ষ্য করে সেই সময় কলকাতাস্থ অসমের ছাত্রগণ অসমীয়া ভাষা ও সাহিত্য উন্নয়নের জন্য পুনরায় সংগঠিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা মর্মে মর্মে অনুভব করেছিল । সেই উদ্দেশ্যে গঠিত হয় ১৮৮৮ সালে অসমীয়া ভাষা উন্নতি সাধিনী ( অঃ ভাঃ উঃ সাঃ ) সভা । এর অন্তরালে ছিল সেই সময়ের বিখ্যাত ছাত্র হেমচন্দ্র গোস্বামী , লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া, চন্দ্রকুমার আগরওয়ালা, রমাকান্ত বরকতকী । এই সভা অসমীয় গণের মধ্যে একতা ও জাতীয়তাবাদের ভাব গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল । 

তার উপর এই সংস্থা অসমে এক সর্বাত্মক সামাজিক ইতিহাস সংকলন এবং সংস্কৃত বা অন্যান্য ভাষার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি অসমীয়া ভাষায় অনুবাদ করে । এই সভার প্রচেষ্টাতে সরকার হেমচন্দ্র বরুয়ার অত্যুৎকৃষ্ট কৃতি ‘ হেমকোষ ’ প্রকাশের কাজ হাতে নিয়েছিল । অঃ ভাঃ উঃ সাঃ সভা ইতিহাস সংস্কৃতি , সাহিত্য এবং ভাষা সম্পর্কে নিজের মধ্যে বৌদ্ধিক আলোচনা অব্যাহত রেখেছিল এবং ধীরে ধীরে এর শাখা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়েছিল । উল্লেখযোগ্য যে এই সভার দ্বারা প্রকাশিত আলোচনী ‘ জোনাকি ’ অসমে এক নূতন যুগের সূচনা করেছিল ।

প্রশ্ন ২। অসম ছাত্র সম্মিলনের অবদান কী ব্যাখ্যা করো। 

উত্তরঃ ১৯১৬ সালে অসম ছাত্র সম্মিলন প্রতিষ্ঠিত হয় । এর প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় গুয়াহাটীতে । অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া । স্বদেশী আন্দোলনে বাংলার ছাত্রদের যোগদান , শ্রীমতী অ্যানিবেসান্তের নেতৃত্বে হোমরুল আন্দোলন , তিলক গোখলে প্রমুখ জাতীয় নেতাদের বক্তৃতা , ভারত ও বিশ্বের সমসাময়িক ঘটনাবলী অসমের ছাত্র ও যুব সম্প্রদায়কে বিশেষভাবে প্রভাবিত করায় তাদের মধ্যে নবচেতনার উন্মেষ ঘটে । অসম ছাত্র সম্মিলন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই নবচেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে । সমগ্র ভারতে অভাব তখন যখন সংগঠিত ছাত্রসংস্থার এই আন্দোলনকারী গণকে যখন থকে উদ্দীপিত করে।এই সংস্থা যদিও প্রথমাবস্থায় রাজনৈতিক আলোচনা বা রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত হয়নি , কিন্তু পরবর্তীকালে দেশের জাতীয় আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিল । 

অসম ছাত্র সম্মিলনের বার্ষিক অধিবেশনসমূহে বিখ্যাত সাহিত্যিক , শিক্ষাবিদ , চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদরা অংশগ্রহণ করেছিলেন । তাঁদের মধ্যে লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া , পদ্মনাথ গোহাই বরুয়া , আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় , কৃষ্ণকান্ত সন্দিকৈ উল্লেখযোগ্য । ছাত্র সম্মিলনীর মুখপত্র ছিল ‘ মিলন ’ । এইভাবে ছাত্র সম্মিলন অসমের শিক্ষা , সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও জাতীয় চেতনা গড়ে তুলতে যথেষ্ট অবদান যুগিয়েছিল ।

প্রশ্ন ৩। রায়ত সভাগুলির উদ্দেশ্য এবং ভূমিকা সম্পর্কে একটি খতিয়ান দাও । 

উত্তরঃ অসমের “ রাইজমেল ” গুলি অস্থায়ী প্রতিষ্ঠান ছিল । এই সংস্থাগুলির স্থায়ী সংগঠন স্থাপনের উদ্দেশ্যে রায়ত সভা প্রতিষ্ঠিত হয় । জগন্নাথ বরুয়া , রাজকুমার নরনারায়ণ সিংহ প্রমুখ গণ্যমান্য ব্যক্তির উদ্যোগে ১৮৮৪ সালে যোরহাটে প্রথম রায়ত সভা অনুষ্ঠিত হয় । রায়ত সভায় ব্রিটিশ সরকারের খাজনা বাড়ার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় । খাজনা বৃদ্ধি রদের দাবীতে ব্রিটিশ সরকারকে দাবিপত্র দেওয়া হয় । এছাড়া রায়ত সভায় আরও কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । ১৮৮৪-৮৫ সালে “ তেজপুর – রায়ত সভা ” এবং ১৮৮৬-৮৭ সালে নগাওঁ এ “ নগাওঁ রায়ত সভা ” প্রতিষ্ঠিত হয় । রায়ত সভাসমূহ মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকদের উদ্যোগে গড়ে উঠে । শিবসাগর জেলায়ও সংগঠিত হয়েছিল বহুসংখ্যক রায়ত সভা। ১৯৩৩ সালে যোরহাটের অদূরে টিলিকিয়ামতে নবীনচন্দ্র বরদলৈ – এর সভাপতিত্বে অসম রায়ত সভার প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় । ১৯৩৪-১৯৩৯ সালের মধ্যে অসমে প্রায় ৩০০ টি রায়ত সভা ছিল । ঊনবিংশ শতাব্দীতে রায়ত সভা অসমে নবজাগরণে বিশেষভাবে ভূমিকা পালন করেন । 

প্রশ্ন ৪। যোরহাট সর্বজনীন সভার উদ্দেশ্য এবং কার্যাবলি সম্পর্কে লেখো । 

উত্তরঃ যোরহাট সর্বজনীন সভাকে বলা যায় অসমের প্রথম রাজনৈতিক সংস্থা । ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয় জগন্নাথ বরুয়ার প্রচেষ্টায় যোরহাট সর্বজনীন সভা এবং ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এই সভা কাজ চালিয়ে যায় । অসমের জনগণের আশা- আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটানো, জনগণকে সরকারী নীতি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং রাজ্যবাসীর সার্বিক উন্নয়নই যোরহাট সর্বজনীন সভার মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল । রাজনৈতিক সংগঠন হলেও যোরহাট সর্বজনীন সভা অসমের মানুষের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করত এবং প্রস্তাবাদি পাশ করে তা সরকারের কাছে দৃষ্টিগোচরের জন্য প্রেরণ করত।

১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে ‘ অসম ভূমি এবং রাজস্ব বিধি’র কঠোর সমালোচনা করেছিল যোরহাট সর্বজনীন সভা । সর্বজনীন সভা অসমে আর্ফিংয়ের ব্যবসা বন্ধ করার দাবী রয়েল কমিশনকে জানিয়েছিল । ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে সর্বজনীন সভা সরকারী পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অসমের স্থানীয় লোকদেরকে অধিকতর গুরুত্ব দেওয়ার আবেদন জানায় । সেভাবে সর্বজনীন সভা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে কিছু আপত্তি সরকারের সম্মুখে তুলে ধরে । সর্বজনীন সভা ব্রিটিশ সরকারকে অসমের স্বার্থরক্ষায় বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিল । ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে অবলুপ্তি ঘটলেও সামাজিক – রাজনৈতিক সংগঠন রূপে যোরহাট সর্বজনীন সভার গুরুত্ব মোটেই উপেক্ষণীয় নয় । যোরহাট সর্বজনীন সভা ছিল অসমের প্রথম রাজনৈতিক সংগঠন যা অসমের মানুষের মধ্যে সামাজিক এবং রাজনৈতিক চেতনা গড়ে তুলতে সাহায্য করেছিল । 

যোরহাট সর্বজনীন সভার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি ছিল :-

( ক ) জনগণের আশা , আকাঙ্ক্ষার বিষয়ে সরকারকে অবগত করানো । 

( খ ) সরকারের উদ্দেশ্য এবং নীতি জনসাধারণকে বুঝানো । 

( গ ) শ্রমিক ও কর্মচারিদের মাইনে বৃদ্ধি এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রদানের জন্য দাবি জানিয়েছিল । যোরহাট সর্বজনিন সভা ১৯০৫ সালের বঙ্গ বিভাজনের তীব্র বিরোধিতা করেছিল । জগন্নাথ বরুয়ার মৃত্যুর পর এই সংস্থা দুর্বল হয়ে পড়লেও ১৯২১ সাল পর্যন্ত এটা কোনো প্রকারে টিকেছিল । 

প্রশ্ন ৫। ব্রিটিশ শাসনাধীন অসমে সমাজ সংস্কারের ক্ষেত্রে অসম এসোসিয়েশনের যে অবদান তা সম্পর্কে লেখো । 

উত্তরঃ ১৯০৩ সালে অসমে “ অসম এসোসিয়েশন ” প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতীয় চেতনার একটি নূতন অধ্যায়ের শুরু হয় । ১৯০৩ সালে জগন্নাথ বরুয়া , মানিকচন্দ্র বরুয়া , ঘনশ্যাম বরুয়া , ফৈজনুর আলী প্রমুখ শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের উদ্যোগে ডিব্রুগড়ে অসম এসোসিয়েশনের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এর প্রথম সভাপতি ছিলেন গৌরীপুররাজ প্রভাতচন্দ্র বরুয়া । এই সংস্থা অসম এবং অসমীয়াদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবীগুলির সাংবিধানিক উপায়ে মীমাংসার জন্য ব্রিটিশ সরকারকে অনুরোধ করেছিল । প্রথমদিকে অসম এসোসিয়েশন মধ্যপন্থী ছিল , কিন্তু বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পর এটি চরম ইংরেজ বিরোধী হয়েছিল । সংস্থায় বহু যুবক যোগ দিয়েছিল । তরুণরাম ফুকন , নবীনচন্দ্র বরদলৈ , চন্দ্রনাথ শৰ্মা , গোপীনাথ বরদলৈ , বিষ্ণুরাম মেধী প্রমুখ বিশিষ্ট নেতৃবর্গ অসম এসোসিয়েশনের মাধ্যমেই রাজনৈতিক শিক্ষা অর্জন করেছিলেন । 

ব্রিটিশ সরকারের কাছে অসম এসোসিয়েশন রাজ্য সমস্যাবলী তুলে ধরে । জনস্বার্থ – বিরোধী গোচারণ কর আরোপের বিরুদ্ধে এই সংস্থা প্রতিবাদে সোচ্চার হয় এবং জনগণকে এই ব্যাপারে সচেতন করে তোলে । এই সংস্থা অসমে বেআইনী আফিং ব্যবসা বন্ধের দাবী জানায়। 

অসম এসোসিয়েশন স্বায়ত্ত শাসনের ক্ষেত্রে অসমকেও অন্তর্ভুক্ত করতে ১৯১৭ সালে দাবী জানালে অসম সরকার এর বিরোধিতা করে । পরে সদস্যদের দাবি চলতে থাকায় সরকার অসমকে ঐ নির্দেশিকার অন্তর্ভুক্ত করেন । সারাদেশে মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে ১৯১৯ সালে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয় । ১৯২০ সালের ১১ ই অক্টোবর অ্যাসোসিয়েশনের বিশেষ অধিবেশনে অসম অ্যাসোসিয়েশন অসমে অসহযোগ আন্দোলনের কর্মসূচি গ্রহণ করে । সংস্থার নেতৃত্বে সারা অসমে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয় । কালক্রমে সংস্থার নেতৃবৃন্দ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ায় অসম এসোসিয়েশন নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে এবং ১৯২১ সালের জুন মাসে এর পরিবর্তে অসম প্রদেশ কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় । কিন্তু এই স্বল্পকালীন সময়ে অসম এসোসিয়েশন অসমে জাতীয় জাগরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে । 

প্রশ্ন ৬। অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির উদ্ভব ও মুখ্য ভূমিকা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ ১৮৮৫ সালে ভারতে জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা হলেও অসমে প্রদেশ কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২১ সালে । ততদিন পর্যন্ত অসম বাংলা প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির মাধ্যমে জাতীয় কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্ব করত । ১৯২০ সালের ডিসেম্বর মাসে কংগ্রেসের নাগপুর অধিবেশনে অসমে আলাদা প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটি গঠনের অনুমতি দেওয়া হয় । সেই অনুযায়ী ১৯২১ সালে অসম এসোসিয়েশন বিলোপের মাধ্যমে প্রাদেশিক কমিটি গঠিত হয় ।

অসম অ্যাসোসিয়েশন কংগ্রেসে রূপান্তরিত করার উদ্দেশ্যে ছবিলাল উপাধ্যায়ের পৌরোহিত্যে ১৯২১ সালের ১৮ ই এপ্রিল যোরহাটে এক বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয় । সেই বছর জুন মাসে নবীনচন্দ্র বরদলৈ , ছবিলাল উপাধ্যায় , কৃষ্ণকান্ত ভট্টাচার্যের উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটি গঠিত হয় । 

অসম প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির প্রথম সভাপতি ছিলেন কুলধর চালিহা এবং সম্পাদক ছিলেন নবীনচন্দ্র বরদলৈ । প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন বিষ্ণুরাম মেধি । 

ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অসম প্রদেশ কংগ্রেস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । ১৯২১ সালে গান্ধিজিকে অসমে অসহযোগ আন্দোলন প্রচার করতে আমন্ত্রণ করে আনা হয় । সেই বছর আগস্ট মাসে মহাত্মা গান্ধির অসম ভ্রমণে নবগঠিত কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল । ফলস্বরূপ অসহযোগ আন্দোলন অসমে ভীষণ সক্রিয় হয় । ১৯৩০ সালের অসহযোগ আন্দোলন ও ১৯৪২ সালের ভারত ত্যাগ আন্দোলনে অসম প্রদেশ কংগ্রেস তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । 

প্রশ্ন ৭। স্বদেশী আন্দোলনে অসমের ভূমিকা কী ছিল সে- বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ স্বদেশী আন্দোলনের সময় বিদেশী দ্রব্য বর্জন করে দেশী সামগ্রীর প্রচলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করা হয়েছিল । ১৯০৫ সালের ৭ ই আগস্ট কলকাতার টাউন হলে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় বিদেশী দ্রব্য বর্জনের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল । বঙ্গদেশ তথা সারা দেশে এর সর্বব্যাপী প্রভাব পড়েছিল । 

অসমের তেজপুর , বরপেটা , ধুবড়ী , গৌরীপুর , গুয়াহাটী , গোয়ালপাড়া , ডিব্রুগড় , শিলচর , করিমগঞ্জ প্রভৃতি স্থানে প্রতিবাদী সভা অনুষ্ঠিত হয় । বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক এই প্রতিবাদী সভাগুলিতে অংশগ্রহণ করেছিল । বিদেশী বস্তু ও সামগ্রী বর্জন , জাতীয় শিক্ষানুষ্ঠান স্থাপন এবং স্বদেশী সামগ্রীর ব্যবহার স্বদেশী আন্দোলনের মুখ্য বিষয় হয়ে পড়েছিল । এই আন্দোলন মূলত ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় শহরাঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল । সেইসময় অসমের জনসাধারণ লবণের পরিবর্তে খার , বিদেশী চিনির পরিবর্তে স্বদেশী কাপড়ের ব্যবহার করেছিল । ছাত্র সমাজের মধ্যে এই আন্দোলন জনপ্রিয় করে তুলতে অম্বিকাগিরি রায়চৌধুরী এবং গোবিন্দ লাহিড়ী উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন । 

প্রশ্ন ৮। অসহযোগ আন্দোলনে অসমের ভূমিকা সম্পর্কে একটি খতিয়ান প্রস্তুত করো । 

উত্তরঃ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশের সংকটজনক পরিস্থিতি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । এই সময় মহাত্মা গান্ধি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসে কংগ্রেসের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন । ১৯১৯ সালের জালিয়ান ওয়ালাবাগের নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন ও বিক্ষোভ শুরু হয় । এই বিক্ষোভের জন্য বহু সত্যাগ্রহী বিভিন্ন রকম শাস্তিও পেয়েছিলেন । অবশেষে ১৯২০ সালে মহাত্মা গান্ধি অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন । 

অসমেও মহাত্মা গান্ধির অসহযোগ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে । অসম অ্যাসোসিয়েশন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের ডাকে সাড়া দিয়ে অসমবাসীকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু করতে আবেদন জানায় । এই আন্দোলন শুরু করবার জন্য ১৯২১ সালে অসম ভ্রমণ করেন । গান্ধিজির আহ্বানে সমগ্র ব্রহ্মপুত্র ও সুরমা উপত্যকার স্কুল , কলেজ প্রভৃতি বর্জন করা হয় । গুয়াহাটীতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিলাতী বস্ত্র দাহ করে বিদেশী বস্ত্র বর্জন শুরু হয় । 

তরুণরাম ফুকন , নবীনচন্দ্র বরদলৈ , রোহিনী চৌধুরী ও মোহম্মদ তায়েবউল্লা প্রভৃতি নেতাগণ অসমে এই সময়ে আন্দোলন পরিচালনার ভার গ্রহণ করে । মহিলা নেত্রীবৃন্দের মধ্যে তরুণরাম ফুকনের পত্নী এবং তাঁর বিধবা ভগ্নী গিরীজা দেবী এবং নবীনচন্দ্র বরদলৈয়ের পত্নী হেমন্তকুমারী দেবী এবং তাঁর বিধবা ভগ্নী ধর্মদাসুন্দরী দেবী অসমের অসহযোগ আন্দোলনে যোগদান করেন । নেতৃবৃন্দের প্রায় প্রত্যেকেই কারাবরণ করেন । 

১৯২১ সালের জানুয়ারী মাসে অসমের ছাত্রগণ নিখিল ভারত ছাত্রসংস্থার প্রস্তাব অনুযায়ী অসহযোগ আন্দোলনে যোগদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে । তারা শিক্ষা – প্রতিষ্ঠান বয়কট করে । অধিক সংখ্যক ছাত্র স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে । তাদের উদ্দেশ্য ছিল গ্রামাঞ্চলে অসহযোগ আন্দোলন বিস্তার করা । অসহযোগ আন্দোলনে অসমের ছাত্রসমাজের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য । বিদেশী দ্রব্য বয়কট , বিলাতী কাপড় বর্জন , খদ্দর গ্রহণ , মদ ও আফিং নিষিদ্ধকরণ প্রভৃতি হল অসহযোগ আন্দোলনের প্রধান কর্মসূচী । এই আন্দোলন অনেকাংশে সফল হলেও ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধি আন্দোলন স্থগিত রাখলে অসমেও আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে । কিন্তু এই আন্দোলন অসমবাসীর মনে স্বাধীনতার স্পৃহা জাগরিত করেছিল । 

প্রশ্ন ৯। আইন অমান্য আন্দোলনে অসমের ভূমিকা সম্পর্কে একটি খতিয়ান দাও । 

উত্তরঃ ১৯৩০ সালে মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বে সারাদেশে আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয় । এই বৎসর অসমেও আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয় । আন্দোলনকারীগণ লবণ এবং অসমের বনাঞ্চলের উপর থাকা নিষেধাজ্ঞা সহ সকল প্রকার দমন নীতির প্রতিবাদ করেছিলেন । আন্দোলনকারীগণ সরকারী অফিস – আদালত বয়কটের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন । অসমে আইন অমান্য আন্দোলনে নেতৃত্বদান করেন অমিয়কুমার দাস , সিদ্ধিনাথ শর্মা , দেবেশ্বর শর্মা , চন্দ্ৰপ্ৰভা সইকিয়া , দুর্গাপ্রভা বরা প্রমুখ । ব্রিটিশ সরকার বিষ্ণুরাম মেধিসহ বহু নেতৃবর্গকে বন্দী করেন । 

১৯৩০ সালে অসমের শিক্ষা অধিকর্তা ক্যানিংহামের নির্দেশের প্রতিবাদে দলে দলে ছাত্রছাত্রীরা স্কুল – কলেজ বর্জন করে । এই সময় স্বদেশ অনুরাগীরা গুয়াহাটীতে কামরূপ একাডেমী এবং করিমগঞ্জে পাবলিক হাইস্কুল স্থাপন করেন । তেজপুর , ডিব্রুগড় প্রভৃতি স্থানেও স্বদেশী স্কুল স্থাপিত হয় । তবুও ছাত্র আন্দোলন চলতে থাকে । কালক্রমে ছাত্র আন্দোলন এবং আইন অমান্য আন্দোলন একাকার হয়ে যায় । আইন অমান্য আন্দোলন ছিল বেশি বিপ্লবাত্মক এবং সরকারকে অচল করে দেওয়ার চেষ্টা । 

১৯৩২ সালে সারা ভারতের সঙ্গে অসমেও দ্বিতীয় পর্যায়ের আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হয় এবং ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত এই আন্দোলন চলেছিল । কংগ্রেস সেবাদল কর্মীরা ঐ আইন অমান্য আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছিল । আইন অমান্য আন্দোলন কার্যত ব্যর্থ হলেও এই আন্দোলন অসমবাসীর মনে স্বাধীনতা – স্পৃহা জাগিয়ে তুলেছিল ।

প্রশ্ন ১০। অসমে ভারত ত্যাগ আন্দোলনের কার্যাবলি ও প্রভাব সম্পর্কে একটি রচনা লেখো । 

উত্তরঃ ১৯৪২ সালে ক্রীপস্ মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর বোম্বাই কংগ্রেসে “ ভারত ত্যাগ ” প্রস্তাব গৃহীত হয় । মহাত্মা গান্ধির নেতৃত্বের সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনও একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে উপনীত হয় । ব্রিটিশ সরকার ১৯৪২ সালের ৮ ই আগস্ট মহাত্মা গান্ধিসহ জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দকে কারারুদ্ধ করলে সারা ভারতের সঙ্গে অসমেও ভারত ছাড়ো আন্দোলন শুরু হয় এবং কংগ্রেসের নেতৃবৃন্দকে কারারুদ্ধ করা হয় , এবং সকল রাজনৈতিক দলকে বেআইনি বলে ঘোষিত করা হয় । ফলে অসমেও ইংরেজকে ভারত ছাড়ার দাবি জানানো হয় । 

ভারত ত্যাগ আন্দোলন বা আগস্ট বিপ্লবে অসমে নেতৃত্ব দান করেন জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা , মহেন্দ্র হাজারিকা , পুষ্পলতা দাস , শঙ্কর বরুয়া , লক্ষ্মী গোস্বামী , গহন গোস্বামী , গুণেশ্বরী নাথ প্রমুখ । নেতাদের বেশির ভাগই কারাবরণ করেন । 

১৯৪২ সালে হামফ্রেসের আদেশে গুয়াহাটি কটন কলেজে ছাত্র – ছাত্রীদের উপর পুলিশ লাঠি চালায় । ফলে অসমের আন্দোলনকারীরা বিদেশী দ্রব্য বর্জন করে স্ব – নির্ভরতার উপর জোর দেয় এবং গ্রামগুলিতে পঞ্চায়েত গঠন করে সমান্তরাল সরকার চালাবার প্রয়াসী হয় । শ্রীহট্ট শহরে কতিপয় মহিলা আদালতে প্রবেশ করে আদালতের কাজকর্ম ব্যাহত করে । উত্তর কামরূপে “ কর বন্ধ ” অভিযান শুরু হয়েছিল । দেরগাঁওতে আন্দোলনকারীরা দপ্তরে ঢুকে ইংরেজ সাব – ডেপুটি কালেকটারকে গান্ধি – টুপী পরিয়েছিল । গহপুরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে গিয়ে কনকলতা পুলিশের গুলিতে নিহত হন । মুকুন্দ কাকতিও গুলিতে নিহত হয়েছিলেন । নগাঁওতে লক্ষ্মী হাজারিকা , ঠগীরাম সূত , ফুকননী , তিলক প্রমুখের উপর পুলিশ চালিয়েছিল । 

অসমের অনেক স্থানে আন্দোলনকারীরা লাইসেন্স প্রাপ্ত বন্দুক ছিনিয়ে এনে সশস্ত্র বিপ্লবের রূপে পরিণত করেছিল । আন্দোলনকারীরা সরকারী কার্যালয় , ডাকঘর প্রভৃতিতে অগ্নিসংযোগ করে । শিবসাগর জেলার সরুপাথারে কুশল কৌওরকে ফাঁসি দেওয়া হয় । আইন অমান্য আন্দোলনের সময় অসুস্থ কমলাগিরি কারাগারেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 

১৯৪৩ সালের ২৬ শে জানুয়ারী বড়ালীতে স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপনের সময় সভার সভানেত্রী চন্দ্রপ্রভা শইকিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয় । এছাড়াও পুলিশ শোভাযাত্রা ও জনসভায় নির্মমভাবে লাঠি চালিয়েছিল , কোনো কোনো স্থানে পুলিশ গুলিবর্ষণও করেছিল । পাইকারি জরিমানা হিসাবে অসমে মোট ৩,৮৬,৯১১ টাকা আদায় করা হয়েছিল । কিন্তু ইংরাজ যতই দমননীতি চালাতে থাকে অসমবাসী তবুও আত্মগোপন করে ৪২ সালের ভারত ত্যাগ আন্দোলন বা আগস্ট বিপ্লব পরিচালনা করেছিল । 

প্রশ্ন ১১। বরদলৈ মন্ত্রীসভার নেতৃত্বে অসমে স্থাপিত শিক্ষানুষ্ঠানগুলির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৬ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে কংগ্রেস জয়লাভ করে অসমে গোপীনাথ বরদলৈ এর নেতৃত্বে মন্ত্রীসভা গঠিত হয় । বরদলৈ মন্ত্রীসভার প্রচেষ্টায় অসমে কতিপয় শিক্ষানুষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয় । অন্যতম শিক্ষানুষ্ঠানসমূহ হল— 

১। অসম কৃষি বিদ্যালয় :- স্বাধীনতার ঠিক পরই ১৯৪৮ সালে নগাঁও অসম পশু মহাবিদ্যালয় এবং যোরহাট কৃষি মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয় । এই দুই মহাবিদ্যালয় একত্রিত হয়ে ১৯৬৯ সালে অসম কৃষি বিদ্যালয় স্থাপিত হয় এবং পশু চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় নগাঁও থেকে বর্তমান গুয়াহাটীর খানাপাড়ায় স্থানান্তরিত করা হয় । অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় উত্তর – পূর্ব ভারতের একমাত্র এবং প্রথম বৃত্তিমুখী বিশ্ববিদ্যালয় । 

২। গৌহাটী বিশ্ববিদ্যালয় :- গৌহাটী বিশ্ববিদ্যালয় হল উত্তর – পূর্ব ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন ও প্রথম সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৪৮ সালের ২৬ শে জানুয়ারী এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয় । প্রতিষ্ঠাকালে এর ১৭ টি মহাবিদ্যালয় এবং ৮ টি স্নাতকোত্তর বিভাগ ছিল । 

৩। অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় :- উত্তর – পূর্ব ভারতের প্রথম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ডিব্রুগড়ে স্থাপিত হয়েছিল । ১৯০০ সালে ড . জন বেরী হোয়াইটের ৫০,০০০ টাকা অনুদানে বেরী হোয়াইট মেডিক্যাল স্কুল স্থাপন হয়েছিল । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই বিদ্যালয় একটি চিকিৎসালয়ের চৌহদ্দে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল । স্বাধীনতার পর ১৯৪৭ সালের ৩ নভেম্বর এই বিদ্যালয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অসম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় নামে নামকরণ করা হয় । 

৪। গুয়াহাটী চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় :- চিকিৎসা ও চিকিৎসা শিক্ষার বর্দ্ধিত চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে নূতন করে চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় স্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা তীব্র হয়ে পড়েছিল । এর ফলস্বরূপ ১৯৬০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর গুয়াহাটী চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল । ১৯৬৮ সালে শিলচরে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপিত হয়েছিল । 

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর 

অতি – সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। ১৮৫৭ সালের বিপ্লবে অসমের দুইজন শহীদের নাম লেখো । 

উত্তরঃ ( ক ) মণিরাম দেওয়ান । 

( খ ) পিয়লি বরুয়া । 

প্রশ্ন ২। প্রথম অসমীয়া সংবাদপত্রটির নাম কী ? কখন এবং কোথা থেকে এই পত্রিকাটি প্রকাশ করা হয়েছিল ? 

উত্তরঃ “ অরুণোদয় ” হল প্রথম অসমীয়া সংবাদপত্র । ১৮৪৬ সালে শিবসাগর থেকে এটির প্রথম প্রকাশ করা হয়েছিল । 

প্রশ্ন ৩। মহাত্মা গান্ধি অসমে প্রথম কখন ভ্রমণ করেছিলেন ? কখন এবং কার সভাপতিত্বে পাণ্ডু কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল ? 

উত্তরঃ মহাত্মা গান্ধি ১৯২১ সালে প্রথম অসম ভ্রমণে আসেন। ১৯২৬ সালে শ্রীনিবাস আয়াঙ্গারের সভাপতিত্বে পাণ্ডু কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিল । 

প্রশ্ন ৪। ব্রিটিশ আমলে অসমে মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকের গড়ে তোলা দুইটি প্রতিষ্ঠানের নাম লেখো। 

উত্তরঃ ( ক ) অসম এসোসিয়েশন ।

( খ ) যোরহাট সর্বজনীন সভা ।

প্রশ্ন ৫। প্রথম গোলটেবিল বৈঠক কখন হয় ? এই বৈঠকে অসমের প্রতিনিধি কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ প্রথম গোলটেবিল বৈঠক ১৯৩০ সালে হয় । চন্দ্রধর বরুয়া অসমের প্রতিনিধি ছিলেন। 

প্রশ্ন ৬। দ্বিতীয় ইঙ্গ- ব্রহ্মযুদ্ধের দুইটি কারণ লেখো। 

উত্তরঃ ( ক ) বদন বরফুকনের হত্যা । ও 

( খ ) চন্দ্রকান্ত সিংহের সিংহাসনচ্যুতি । 

প্রশ্ন ৭। ১৮২৬ সালের ইঙ্গ – খামটি চুক্তির দুইটি শর্ত লেখো । 

উত্তরঃ ( ক ) খামতি রাজা সদিয়া ঘোর গোহাই ব্রিটিশকে পাইক অর্থাৎ সাধারণ সেনা যোগান দিতে হবে । 

( খ ) খামতি রাজ্য নজরদারির জন্য ব্রিটিশ এলাকা নজরদারির জন্য ব্রিটিশ সরকার একজন রাজনৈতিক আধিকারিক নিয়োগ করবে । 

প্রশ্ন ৮। “ হস্তী – বিদ্যার্ণব ” পুঁথিটির লেখক কে ? সেই পুঁথিটির চিত্র অঙ্কন করা দুইজন শিল্পীর নাম কী ? 

উত্তরঃ  “ হস্তী – বিদ্যার্ণব ” পুঁথির লেখক হলেন সুকুমার বরকাইথ । এই পুঁথির চিত্র অঙ্কন করা দুইজন শিল্পী হলেন — দিলবর ও দোসাই । 

প্রশ্ন ৯। অসমে ১৮৫৭ সালে বিদ্রোহ বিফল হওয়ার তিনটি কারণ দেখাও । 

উত্তরঃ ( ক ) অসমে বিদ্রোহের প্রধান নেতা মণিরাম দেওয়ান যাতে বিদ্রোহ পরিচালিত করতে না পারেন ব্রিটিশ সরকার সেইদিকে নজর রাখত ৷ 

( খ ) অসমের সাধারণ মানুষ বিদ্রোহের কারণ হৃদয়ঙ্গম করতে পারে নি । 

( গ ) গোর্খারা সিপাহীদের বিরোধিতা করেছিল । 

প্রশ্ন ১০। অসমের যেকোন দুইটি রায়ত সভার নাম লেখো । 

উত্তরঃ ( ক ) তেজপুর রায়ত সভা ।

( খ ) নগাঁও রায়ত সভা । 

প্রশ্ন ১১। ভারত ত্যাগ আন্দোলনে অসমের দুইজন শহীদের নাম লেখো । 

উত্তরঃ ( ক ) কনকলতা বরুয়া ।

( খ ) মুকুন্দ কাকতি ।

প্রশ্ন ১২। ভারত ত্যাগ আন্দোলনে অসমের যে – কোনো তিনজন শহীদের নাম লেখো । 

উত্তরঃ ভারত ত্যাগ আন্দোলনে অসমের তিনজন শহীদ হলেন— 

( ক ) ভোগেশ্বরী ফুকনানী ।

( খ ) কনকলতা ।

( গ ) তিলক ডেকা । 

প্রশ্ন ১৩। আহোম রাজার তিনটি করপ্রদায়ক রাজ্যের নাম লেখো ।

উত্তরঃ ( ক ) গোভা ।

( খ ) নেলী । ও 

( গ ) লুকী । 

প্রশ্ন ১৪। অসমের প্রাককালীন ব্রিটিশ বিরোধী বিদ্রোহ ( ১৯২৮-৩০ ) কিছু সংখ্যক লোক সমর্থন না করার তিনটি যুক্তি তুলে ধর । 

উত্তরঃ কতিপয় লোক সমর্থন না করার কারণগুলি নিম্নরূপঃ-

( ক ) অসমে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সাধারণ মানুষ বর্মীদের অত্যাচার হতে নিষ্কৃতি পেয়েছিল । ফলে তারা ব্রিটিশ শাসন সমর্থন করেছিল । 

( খ ) ব্রিটিশ শাসনের প্রারম্ভেই অসমে শাস্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা করা হয়েছিল । অসমের শান্তিপ্রিয় মানুষ একে স্বাগত জানায়। 

( গ ) অভিজাত সম্প্রদায় ভেবেছিল যে ব্রিটিশ শাসনে তাদের ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাবে । এইজন্য তারা ব্রিটিশ বিরোধী বিদ্রোহ সমর্থন করে নি । 

প্রশ্ন ১৫। ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দের পর অসমে ব্রিটিশের দ্বারা প্রবর্তিত তিন প্রকার কর বা শুষ্কের নাম লেখো । 

উত্তরঃ তিন প্রকার করা হল – 

( ক ) আয়কর ।

( খ ) আমদানি শুষ্ক ।

( গ ) আবগারী কর । 

বস্তুভিত্তিক প্রশ্নোত্তর

১। অসম এসোসিয়েশন কখন প্রতিষ্ঠিত হয় ? 

উত্তরঃ ১৯০৩ সালে । 

২। অসম এসোসিয়েশনের প্রথম সভাপতি কে ? 

উত্তরঃ প্রভাতচন্দ্র বরুয়া । 

৩। অসম এসোসিয়েশনের প্রথম অধিবেশন কোথায় অনুষ্ঠিত হয় ? 

উত্তরঃ ডিব্রুগড়ে ।

৪। কোন সালে মহাত্মা গান্ধি প্ৰথম অসম ভ্রমণ করেন ? 

উত্তরঃ ১৯২১ সালে । 

৫। অসম ছাত্র সম্মেলন কখন প্রতিষ্ঠিত হয় ? 

উত্তরঃ ১৯১৫ সালে । 

৬। অসম ছাত্র সম্মেলনের প্রথম সভাপতি কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ লক্ষ্মীনাথ বেজবরুয়া । 

৭। কটন কলেজ কোন সালে স্থাপিত হয় ? 

উত্তরঃ ১৯০১ সালে । 

৮। কটন কলেজ কে প্রতিষ্ঠা করেন ? 

উত্তরঃ হেনরী কটন । 

৯। পাণ্ডু কংগ্রেস কত সালে অনুষ্ঠিত হয় ? 

উত্তরঃ ১৯২৬ সালে । 

১০। অসমে প্রথম সাদুল্লা মন্ত্রীসভা কখন গঠিত হয় ?

উত্তরঃ ১৯৩৭ সালে । 

১১। অসমের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী কে ? 

উত্তরঃ গোপীনাথ বরদলৈ । 

১২। প্রথম মোয়ামরীয়া বিদ্রোহের সময় আহোমদের রাজা কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ লক্ষ্মী সিংহ । 

১৩। বর্মী তথা মানের প্রথম অসম আক্রমণ কখন হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৮১৭ সালে ।

১৪। NEFA- এর নাম বর্তমান কী ?

উত্তরঃ অরুণাচল প্রদেশ । 

১৫। ইয়াণ্ডাবুর সন্ধি কত সালে স্বাক্ষরিত হয় ? 

উত্তরঃ ১৮২৬ সালে । 

১৬। কোন সালে উজান অসম ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্তি করা হয় ? 

উত্তরঃ ১৯৩৮ সালে ।

১৭। ১৮৮৫ সালে উজান অসমে ব্রিটিশ বিচারকের নাম লেখো । 

উত্তরঃ মিঃ মোপট মিলস্ । 

১৮। প্রথম অসমীয়া ছায়াছবি “ জয়মতী ” কে প্রযোজনা করেছিলেন ? 

উত্তরঃ জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়ালা । 

১৯। অসমে গুয়াহাটী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করার জন্য কোন সংগঠন বিশেষ চেষ্টা করে ফলবতী হয়েছিল ? 

উত্তরঃ অসম অ্যাসোসিয়েশন । 

২০। অসম অ্যাসোসিয়েশনের কোন অধিবেশনে সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি উত্থাপন করা হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৯১৭ সালের শিবসাগর অধিবেশনে । 

২১। দ্বিতীয়বারের মত কোন সালে অসম অ্যাসোসিয়েশন সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৯০৩ সালে । 

২২। কোন তারিখে “ যোরহাট সার্বজনিক সভা ” র সংগঠন গড়ে তোলা হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৮৮৬ সালের ২ রা জুন । 

২৩। অসম লিটারেরী সোসাইটি কখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৮৭২ সালে । 

২৪। হেমকোষের রচয়িতা কে ? 

উত্তরঃ হেমচন্দ্র বরুয়া । 

২৫। কোন সালে কোচ – রাজবংশী ক্ষত্রীয় সম্মেলনের উৎপত্তি হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৯১২ সালে । 

২৬। কোন সালে বড়োদের মধ্যে বড়ো – কছাড়ী মহা সম্মেলনের জন্ম হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ১৯২৩ সালে ।

২৭। অসহযোগ আন্দোলনের কোন মাসে মহাত্মা গান্ধি অসম ভ্রমণ করেছিলেন ? 

উত্তরঃ ১৯২১ সালের আগস্ট মাসে । 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top