Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি

Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Assam Board Bengali Medium Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি and select needs one.

Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Assam Board Class 12 Logic and Philosophy Chapter 4 মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি Bengali Medium Solutions for All Subject, You can practice these here.

মিলের পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি

পাঠ:

অতি সংক্ষিপ্ত  উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। মিল কয়টি পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি স্বীকার করেন ?

উত্তরঃ মিল পাঁচটি পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি স্বীকার করেন।

প্রশ্ন ২। মিলের মতে আগমনের মৌলিক পদ্ধতিগুলো কী কী ?

উত্তরঃ মিলের মতে আগমনের মৌলিক পদ্ধতিগুলো হলো অন্বয়ী পদ্ধতি ও ব্যতিবেকী পদ্ধতি।

প্রশ্ন ৩। মিলের আগমন পদ্ধতির উদ্দেশ্য কী কী ?

উত্তরঃ মিলের আগমন পদ্ধতির উদ্দেশ্য হলো একটি যথার্থ সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করা। এতে সম্ভব হয় পরীক্ষণ ও নিরীক্ষণের দ্বারা জটিল ঘটনার কার্য- কারণ সম্বন্ধ আবিষ্কার ও প্রমাণ করা।

প্রশ্ন ৪। অপসারণের সূত্র বলতে কী বোঝ ?

উত্তরঃ দুটি ঘটনার মধ্য কার্যকারণ আবিষ্কার ও প্রমাণ করতে গেলে তাদের সঙ্গে যুক্ত অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রসাঙ্গিক বিষয় বর্জন করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক বিষয় বিচার করতে হয়, এই নিয়মগুলিকে অপসারণের সূত্রাবলি বলে।

প্রশ্ন ৫। অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগের জন্য কয়টি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন ?

উত্তরঃ দুই বা ততোধিক।

প্রশ্ন ৬। ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগের জন্য কয়টি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয় ?

উত্তরঃ দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন।

প্রশ্ন ৭। কাকতালীয় দোষের অর্থ কী ?

উত্তরঃ কাকতালীয় দোষের অর্থ হল যে – কোন অব্যবহৃত পূর্ববর্তী ঘটনাকে কারণ বলে ভুল করা হলে কাকতালীয় ন্যায় দোষটি ঘটে।

প্রশ্ন ৮।‌ অন্বয়ী  পদ্ধতির সিদ্ধান্তটি নিশ্চিত — এটা শুদ্ধ কি ?

অথবা,

অন্বয়ী প্রণালীর সিদ্ধান্ত নিশ্চিত কি ?

উত্তরঃ না,শুদ্ধ নয়।

প্রশ্ন ৯। ব্যতিরেকী পদ্ধতির সিদ্ধান্ত নিশ্চিত — তুমি একথাটি মেনে নিবে কি ?

উত্তরঃ হ্যাঁ, মেনে নিব।

প্রশ্ন ১০। সহ- পরিবর্তন পদ্ধতিটি স্থায়ী না অস্থায়ী কারণের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রযোজ্য ?

উত্তরঃ স্থায়ী কারণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

প্রশ্ন ১১। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতির ক্ষেত্রে —– দৃষ্টান্তের প্রয়োজন। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তরঃ দুই গুচ্ছ।

প্রশ্ন ১২।—— পদ্ধতিতে অসাধারণভাবে কাকতালীয় দোষের সৃষ্টি হয়। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)

উত্তরঃ ব্যতিরেকী।

প্রশ্ন ১৩। অন্বয়ী পদ্ধতিটি ——— সম্ভাবনা নিষ্ফল করে তুলে ।

উত্তরঃ নানা কারণবাদের সম্ভাবনীয়তা।

প্রশ্ন ১৪। নিরীক্ষণ পদ্ধতি হিসাবে ব্যতিরেকী পদ্ধতির মধ্যে উদ্ভব হওয়া দোষটির নাম কী ?

উত্তরঃ কাকতালীয় দোষ।

প্রশ্ন ১৫।  ‘ অন্বয়ী পদ্ধতিটি হলো নিরীক্ষণ পদ্ধতি’  ———– শুদ্ধ না অশুদ্ধ লেখো।

উত্তরঃ শুদ্ধ।

প্রশ্ন ১৬। ব্যতিরেকী পদ্ধতি বিশেষভাবে —— এর পদ্ধতি।

উত্তরঃ পরীক্ষণের পদ্ধতি।

প্রশ্ন ১৭। অন্বয়ী পদ্ধতিটি সহাবস্থানের মধ্যে কার্যকারণ সম্বন্ধ পৃথক করে দেখাতে সক্ষম/সক্ষম নয়।

উত্তরঃ সক্ষম নয়।

প্রশ্ন ১৮। উষ্ণতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে থার্মোমিটারের পারার পরিমাণ বেড়ে যায়। সেইভাবে পারার বিস্তৃতির কারণ হলো উষ্ণতা। ওপরের সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া পরীক্ষণ পদ্ধতির নাম কী ?

উত্তরঃ সহ- পরিবর্তন প্রণালী।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। বেকন এর পরীক্ষণমূলক প্রণালী কত প্রকার ?

উত্তরঃ বেকন এর পরীক্ষণমূলক প্রণালী তিন প্রকার।

প্রশ্ন ২। মিল আগমনের প্রণালীসমূহের মধ্যে কোন প্রণালীকে উৎকৃষ্ট প্রণালী হিসাবে উল্লেখ করেছেন ?

উত্তরঃ ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে।

প্রশ্ন ৩। অন্বয়ী প্রণালী কার্যকারণ সম্বন্ধের ইঙ্গিত দেয়, কিন্তু ——– না করতে পারে।

উত্তরঃ প্রমাণ।

প্রশ্ন ৪। অন্বয়ী প্রণালীর সকল দৃষ্টান্ত সদর্থক/ নঞর্থক।

উত্তরঃ সদর্থক।

প্রশ্ন ৫। সহ- পরিবর্তন প্রণালী নিরীক্ষণ/ পরীক্ষণ উভয় প্রণালী।

উত্তরঃ নিরীক্ষণ।

প্রশ্ন ৬। পরীক্ষণমূলক পদ্ধতিসমূহের প্রকৃত কার্য কী ?

উত্তরঃ পরীক্ষণমূরক পদ্ধতিসমূহের প্রকৃত কার্য হল দুটি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার এবং প্রতিষ্ঠা করা।

প্রশ্ন ৭। কোন তর্কবিদ পরিশেষ প্রণালীকে ‘ আবিষ্কারের সংকেতক ‘ বলে অভিহিত করেছেন ?

উত্তরঃ কারভেথ রীড।

প্রশ্ন ৮। পরিমাণগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা একমাত্র প্রণালীটি হ’লো —- 

(ক) অন্বয়ী প্রণালী। 

(খ) ব্যতিরেকী প্রণালী।

(গ) সহ- পরিবর্তন প্রণালী। 

(ঘ) পরিশেষ প্রণালী।

উত্তরঃ (গ) সহ- পরিবর্তন প্রণালী।

প্রশ্ন ৯। অপসারণ শব্দটির অর্থ কী ?

উত্তরঃ অপসারণ শব্দটির অর্থ হল বর্জন করা বা ত্যাগ করা।

প্রশ্ন ১০। কে অন্বয়ী প্রণালীকে একান্বয়ী প্রণালী বলেছেন ?

উত্তরঃ মেলোন, কফি।

প্রশ্ন ১১। ” একটি পূর্ববর্তী ঘটনার হ্রাস – বৃদ্ধির সঙ্গে যদি অনুবর্তী ঘটনার হ্রাস – বৃদ্ধি হয় তাহলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধের দ্বারা আবদ্ধ হয়।” অপসারণের কোনটি সূত্রের ওপর এই প্রণালী প্রতিষ্ঠিত ?

উত্তরঃ সহ- পরিবর্তন পদ্ধতি।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। মিলের মতে বিভিন্ন প্রকার আগমনাত্মক পদ্ধতিগুলি কী কী ? এইগুলির নাম লেখো।

উত্তরঃ মিলের মতে পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি পাঁচটি। এইগুলি হল —– অন্বয়ী পদ্ধতি, ব্যতিরেকী পদ্ধতি, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি, সহ- পরিবর্তন পদ্ধতি,ও পরিশেষ প্রণালী।

প্রশ্ন ২। অন্বয়ী পদ্ধতির অপসারণের সূত্রটি লেখো।

অথবা, 

অপসারণের কোন সূত্রের ওপরে অন্বয়ী প্রণালী প্রতিষ্ঠিত ?

অথবা, 

অন্বয়ী প্রণালী প্রতিষ্ঠিত হওয়া অপসারণের সূত্রটি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ অন্বয়ী পদ্ধতি বা প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্রে অপসারণের সূত্রটি হল —- কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলে যদি অনুবর্তী কোন ঘটনা বা কার্য অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণের অংশ হতে পারে না।

প্রশ্ন ৩। অপসারণের কোন মৌলিক সূত্র ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ?

অথবা, 

ব্যতিরেকী প্রণালী প্রতিষ্ঠিত হওয়া অপসারণের সূত্রটি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ ‘ কার্যের কোন ক্ষতি না করে যদি পূর্ববর্তী ঘটনার কোন অংশ বাদ দেওয়া না হয়,তা হলে সেই অংশ কার্যটির কারণ বা কারণের অংশ হবে।’

প্রশ্ন ৪। ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য কতটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন ?

উত্তরঃ ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়ের প্রয়োজন। এইগুলি হল —

(ক) দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন।

(খ) দুটি দৃষ্টান্তের মধ্যে একটি ভাববাচক ও অন্যটি অভাববাচক হবে।

(গ) ভাববাচক দৃষ্টান্তে ঘটনাটি উপস্থিত থাকে কিন্তু অভাববাচক দৃষ্টান্তে ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে।

(ঘ) আমরা দেখতে পাই দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে একটি বিষয় ছাড়া বাকি সব বিষয়ে মিল থাকবে।

প্রশ্ন ৫। সহ- পরিবর্তন প্রণালীর বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলি কী কী ?

উত্তরঃ সহ- পরিবর্তন প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল—–

(ক) এই প্রণালী স্থায়ী কারণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

(খ) মিলের অন্যান্য পদ্ধতিগুলো হলো গুণগত। কিন্তু সহপরিবর্তন প্রণালী হলো পরিমাণগত পদ্ধতি।

এই পদ্ধতির দ্বারা কারণ ও কার্য্যের মধ্যে পরিমাণগত পরিবর্তন বিচার করা সম্ভব হয়।

প্রশ্ন ৬। অন্বয়ী পদ্ধতির সিদ্ধান্ত কেন নিশ্চিত হয় না ?

উত্তরঃ অন্বয়ী পদ্ধতি দ্বারা লব্ধ সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয় না। কারণ, এই প্রণালী মূলতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি। একমাত্র পরীক্ষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত সিদ্ধান্ত পেতে পারি । কেবল নিরীক্ষণের ভিত্তিতে দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করবার অসুবিধা আছে। আমরা কখনই নিশ্চিত হতে পারব না যে সবকয়টি প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো আমরা বিবেচনা করতে পারি।

প্রশ্ন ৭। পরিশেষ প্রণালী অপসারণের কোন সূত্রের ওপর নির্ভরশীল ?

উত্তরঃ পরিশেষ প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত সূত্রের ওপর নির্ভরশীল —–” যদি কোন একটি ঘটনা অপর একটি ঘটনার কারণ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে সেই প্রতিষ্ঠিত কারণটি অপর কোন ঘটনার কারণ হতে পারে না।

প্রশ্ন ৮। সহ- পরিবর্তন পদ্ধতির একটি বাস্তব উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ উত্তাপ যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে,আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপের বাড়া বা কমার সাথে থার্মোমিটারের পারা উঠা বা নামার কার্য কারণ সম্পর্ক আছে।

প্রশ্ন ৯। মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতির সিদ্ধান্ত কেন অধিক সম্ভাবনাময় ?

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি অন্বয়ী পদ্ধতির মতোই নিরীক্ষণের ওপর নির্ভরশীল। এই পদ্ধতি নিরীক্ষণ নির্ভর হওয়ার সিদ্ধান্তটি সম্ভাবনামূলক হয়। কিন্তু এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্রে দুটি দৃষ্টান্ত গুচ্ছের প্রয়োজন হয়। একটি ভাববাচক ও অপরটি অভাববাচক । কিন্তু আমরা দেখি, এক্ষেত্রে অভাববাচক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। সুতরাং সম্ভাব্য হলেও এক্ষেত্রে সম্ভাবনার মাত্রা বেশি হয়।

প্রশ্ন ১০। অপসারণের কোনটি নীতির ওপর অন্বয়ী পদ্ধতি প্রতিষ্ঠিত ?

উত্তরঃ  মিলের মতে পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি পাঁচটি। এইগুলি হল —– অন্বয়ী পদ্ধতি, ব্যতিরেকী পদ্ধতি, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি, সহ- পরিবর্তন পদ্ধতি,ও পরিশেষ প্রণালী।

প্রশ্ন ১১। ‘ অন্বয়ী পদ্ধতি মূলতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি “— কেন ?

উত্তরঃ সরল পর্যবেক্ষণ বা নিরীক্ষণ হল প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘটা ঘটনাগুলির সুনিয়ন্ত্রিত উদ্দেশ্যমূলক প্রত্যক্ষ। অন্বয়ী পদ্ধতি মূলতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি। তার অর্থ এই নয় যে, পরিক্ষণের ক্ষেত্রে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যাবে না। পরীক্ষণ হল কৃত্রিম পরিবেশে নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরীক্ষণ সম্ভব নয়। যেমন —– বন্যা, ভূমিকম্প,চন্দ্রগ্ৰহণ, সূর্যগ্ৰহণ ইত্যাদি কৃত্রিম পরিবেশে পরীক্ষণ চলে না। এসব ক্ষেত্রে নিরীক্ষণই অনুসন্ধান চালিয়ে যাবার একমাত্র উপায়। অন্বয়ী পদ্ধতি মূলতঃ নিরীক্ষণের প্রণালী। এই কারণে , যে সবক্ষেত্রে পরীক্ষণ সম্ভব নয়,সে সব ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। এই প্রণালীতে নিরীক্ষণের সাহায্যেই দৃষ্টান্তগুলি সংগ্ৰহ করা যায়। সুতরাং অন্বয়ী পদ্ধতিকে নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ১২। অপসারণ পদ্ধতির সংজ্ঞা লেখো।

উত্তরঃ কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করতে গিয়ে তাদের সঙ্গে সংযোগ আছে এমন অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রসাঙ্গিক বিষয়গুলিকে বর্জন বা অপসারণ করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক বিষয় বিচার করতে হয়। যে পদ্ধতি দ্বারা অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রসাঙ্গিক বিষয় বর্জন করতে হয়, তাকে অপসারণের পদ্ধতি বলে।

প্রশ্ন ১৩। আগমনাত্মক পদ্ধতিকে কেন অপসারণ পদ্ধতি বলা হয় ?

উত্তরঃ মিলের অনুসন্ধান পদ্ধতি আগমনাত্মক পদ্ধতির অন্তর্গত। একটি যথার্থ সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করতে গেলে আমাদের কিছু পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হয়।

মিলের পরীক্ষণমূলক পদ্ধতিগুলিকে আগমনাত্মক বলে। কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয়ের জন্য মিল এই পদ্ধতিগুলি উদ্ভাবন করেছিলেন। কার্যকারণ বিধি একটি সার্বিক নিয়ম। এই সমস্যার সমাধান কল্পে মিল পাঁচটি পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। এই পদ্ধতিগুলি হল—- অন্বয়ী পদ্ধতি, ব্যতিরেকী পদ্ধতি, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি, সহ-পরিবর্তন পদ্ধতি,ও পরিশেষ পদ্ধতি।

মিলের পরীক্ষণমূলক প্রণালীগুলিকে অপসারণ পদ্ধতি নামে অভিহিত করা হয়। অপসারণ হল বর্জন করা বা পরিত্যাগ করা। অতএব, অপসারণের অর্থ আকস্মিক এবং অপ্রাসঙ্গিক বিষয়গুলি বর্জন, যেগুলি কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই। মিলের অনুসন্ধানের পদ্ধতির লক্ষ্য হল অপসারণের সার্থক দিকটি যেটি কার্যকারণ সম্বন্ধ আবিষ্কার এবং প্রমাণ করা।

প্রশ্ন ১৪। অন্বয়ী পদ্ধতির দুটি সুবিধা লেখো।

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অতি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এই প্রণালী সহজ ও সরল পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রধানতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলে পরীক্ষণের পদ্ধতির তুলনায় এর প্রয়োগক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত। তাই অন্বয়ী পদ্ধতির পরিসর অতি ব্যাপক।

(খ) এই প্রণালী দ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্যে এবং কার্য থেকে কারণে যেতে পারি। নিরীক্ষণের পদ্ধতি হওয়ার অন্বয়ী পদ্ধতির সুবিধা আছে।

প্রশ্ন ১৫। ব্যতিরেকী পদ্ধতির দুটি সুবিধা বা গুণ লেখো।

উত্তরঃ ব্যতিরেকী পদ্ধতির দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) ব্যতিরেকী প্রণালী খুব সহজ ও সরল । কারণ এখানে কার্যকারণ নির্ণয়ের জন্য দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়।

(খ) ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পরীক্ষণ নির্ভর হওয়ায় সিদ্ধান্ত প্রায় নিশ্চিত হয়। 

প্রশ্ন ১৬। সহ পরিবর্তন প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ লেখো।

উত্তরঃ সহ- পরিবর্তন প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) স্থায়ী কারণ সমূহের ক্ষেত্রে সহ- পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

(খ) সহ- পরিবর্তন প্রণালীর সাহায্যেই কার্য এবং কারণের পরিমাণগত স্বভাব বিচার করা হয়। পরিমাণগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কেবল সহ- পরিবর্তন প্রণালী প্রযোজ্য ।

প্রশ্ন ১৭। মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা লেখো।

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—–

(ক) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়াতে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। যদি সম্ভাব্যতার মাত্রা খুব বেশি থাকে।

(খ) অপর্যাপ্ত বিশ্লেষণ এবং নানা কারণবাদের সমস্যা থেকে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

প্রশ্ন ১৮। পরিশেষ পদ্ধতির দুটি দোষ বা অসুবিধা লেখো।

উত্তরঃ পরিশেষ পদ্ধতির দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—-

(ক) পরিশেষ পদ্ধতির ব্যবহার অতি সীমিত। এই পদ্ধতি কেবল সমগুণ সম্পন্ন কার্য সংমিশ্রণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

(খ) এই পদ্ধতি থেকে কোন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের কাজ আরম্ভ করা যায় না।

প্রশ্ন ১৯।‌ ‘ ব্যতিরেকী পদ্ধতি কারণ এবং উপকারণের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না।’ উদাহরণ সহ লেখো।

উত্তরঃ ব্যতিরেকী পদ্ধতি কারণ এবং উপকারণের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না, যেমন—- একটি খাবার প্রথমে স্বাদু মনে হলো না তখন একটু লবণ মিলিয়ে খেয়ে দেখা গেল খাবারটি সুস্বাদু লাগছে। এর অর্থ এই নয় যে ওই একটু লবণ স্বাদের কারণ। সঠিক পরিমাণ লবণ হলো খাবারের স্বাদের নানা উপকারণের মধ্যে একটি। যেমন —‌ মশলাপাতি ও অন্যান্য উপকারণ। ব্যতিরেকী পদ্ধতি দ্বারা কারণ এবং উপকারণের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় সম্ভব নয়।

প্রশ্ন ২০। সহ- পরিবর্তন প্রণালীর মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ সহ- পরিবর্তন প্রণালী আবিষ্কার বা প্রমাণের প্রণালী নয় সত্য, কিন্তু বৈজ্ঞানিক গবেষণা কিংবা অনুন্ধানের  ক্ষেত্রে এই পদ্ধতির মূল্য আছে। অন্যান্য প্রণালী প্রয়োগের জন্য অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রাসঙ্গিক বিষয় বর্জন করতে হয়। এখানেও তা করা হয়। কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয়ের ব্যাপারে অ- কারণকে বর্জন করতে হয়। এই বর্জনের সূত্রটি হলো, ‘ আলোচ্য ঘটনার হ্রাস- বৃদ্ধির সঙ্গে যদি অন্য কোন ঘটনার হ্রাস- বৃদ্ধি না হয়, তাহলে ওইটিকে আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বলা যাবে না।

এই প্রণালী প্রয়োগ করে এভাবে আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ নয়, তাকে নিশ্চিতভাবে চিহ্নিত করে বাতিল করা যায়।

প্রশ্ন ২১। পরিশেষ প্রণালীর মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা যায় সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ পরিশেষ প্রণালীর সাহায্যে সুনিশ্চিত ভাবে কার্য বা কারণ আবিষ্কার করা যায় না কিংবা প্রমাণও করা যায় না, তথাপি জটিল কোন ঘটনার অংশবিশেষের কার্য বা কারণ অনুসন্ধানে এই প্রণালী প্রয়োগ করতে হয়। একথা বলা যায় যে জটিল কোন ঘটনার কারণ বা কার্য অনুসন্ধানের কাজে এই প্রণালী আমাদের মনে আগ্ৰহ বা কৌতুহল সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ২২। মিলের পরীক্ষণমূলক নীতির দুটি সমালোচনা লেখো।

উত্তরঃ মিলের পরীক্ষণমূলক নীতির দুটি সমালোচনা হল নিম্নরূপ —–

(ক) প্রতিটি প্রণালী প্রয়োগের পেছনে যে বিশ্বাস কাজ করে, তাহলে প্রকৃতির জটিল ঘটনা গুলিকে সরল নিয়মে ব্যাখ্যা করা সম্ভব। এটা ঠিক নয়।

(খ) নানা কারণ ঘটিত এবং কার্য সংমিশ্রণ জনিত দোষ এই সব প্রণালীকে দুষ্ট করতে পারে।

প্রশ্ন ২৩। আগমন পদ্ধতি বলতে কী বোঝ ?

উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক আগমনের উদ্দেশ্য হলো, দুটি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যাতে একটি যথার্থ সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। তর্কবিজ্ঞানী মিল এই সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন। মিলের মতে এসব পদ্ধতি অবলম্বন করে নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের ভিত্তিতে জটিল ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যায়। এই পদ্ধতিগুলিকেই ‘ পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি ‘ বা আরোহী পদ্ধতি বা কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয়ের পদ্ধতি বলে। 

এই পদ্ধতিগুলো হল নিম্নরূপ ——

(ক) অন্বয়ী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(খ) ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(গ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(ঘ) সহ- পরিবর্তন পদ্ধতি বা প্রণালী।

(ঙ) পরিশেষ পদ্ধতি বা প্রণালী।

প্রশ্ন ২৪। পরিশেষ প্রণালী এবং ব্যতিরেকী প্রণালীর সাদৃশ লেখো।

উত্তরঃ পরিশেষ প্রণালী এবং ব্যতিরেকী প্রণালীর সাদৃশগুলি হল নিম্নরূপ —-

(ক) পরিশেষ প্রণালী ও ব্যতিরেকী , দুই প্রণালীতে দুটি করে দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়।

(খ) দুটি প্রণালীতে একটি দৃষ্টান্ত ভাববাচক, অপরটি অভাববাচক।

(গ) দুটি প্রণালীতেই ভাববাচক এবং অভাববাচক দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ে পার্থক্য আছে।

প্রশ্ন ২৫। পরিশেষ প্রণালীর দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তরঃ পরিশেষ প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ —-

(ক) পরিশেষ প্রণালীকে বিশুদ্ধ আগমনাত্মক প্রণালী বলা যায় না। এটি একটি আগমন নিগমন প্রণালী। আবার, পরিশেষ প্রণালীতে ব্যাপক আশ্রয় বাক্য থেকে কম ব্যাপক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়। তার অর্থ এই যে,এই প্রণালীতে সিদ্ধান্ত কখনও আশ্রয় বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয় না।

(খ) পরিশেষ প্রণালীর সিদ্ধান্ত আশ্রয়বাক্য থেকে বৈধভাবে নিঃসৃত হয় না। এমনও হতে পারে যে, আশ্রয়বাক্য সত্য কিন্তু সিদ্ধান্ত মিথ্যা, যা বৈধ অনুমানের নিয়ম নয়।

প্রশ্ন ২৬। ব্যতিরেকী প্রণালীকে প্রমাণের প্রণালী বলার কারণ কী ?

উত্তরঃ মিল ব্যতিরেকী প্রণালীকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলেছেন। কারণ ,এই প্রণালী মূলতঃ পরীক্ষণের ওপর নির্ভরশীল। এই প্রণালী প্রয়োগের জন্য দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়। একটি সদর্থক অপরটি নঞর্থক। একটিতে অনুসন্ধানের বিষয়টি উপস্থিত থাকে, অন্যটিতে থাকে না। দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে কেবল একটি বিষয় ছাড়া অন্য সকল বিষয়ে মিল থাকতে হবে। অমিল থাকা সদর্থক দৃষ্টান্তে থাকতে হবে এবং নঞর্থক দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত থাকতে হবে। সরল পর্যবেক্ষণের দ্বারা এই জাতীয় দৃষ্টান্ত পাওয়া সম্ভব নয়। একমাত্র পরীক্ষণের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব। কারণ পরীক্ষণে আমরা কৃত্রিম পরিবেশে ভাববাচক এবং অভাববাচক দৃষ্টান্তগুলি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারি। কাজেই ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ২৭। ব্যতিরেকী প্রণালীকে ‘ একক ব্যতিরেকী’ বলার কারণ কী ?

উত্তরঃ ব্যতিরেকী প্রণালীকে একক ব্যতিরেকী বলা হয়। কারণ, এখানে দুটি দৃষ্টান্তকে তুলনা করা হয় এবং দেখা যায় যে একটি বিষয়ে পার্থক্য আছে। আমরা আরও দেখতে পাই যে, দৃষ্টান্ত দুটিতেই মাত্র একটি বিষয়ে পার্থক্য থাকা উচিত। সুতরাং তর্কবিদ মেলোন, কফি প্রমুখ এই পদ্ধতিকে ‘ একক ব্যতিরেকী ‘ বলেছেন।

প্রশ্ন ২৮। সহ- পরিবর্তন প্রণালীর একটি উদাহরণ দাও যেটিকে একমুখী সহ পরিবর্তন বলা হয়।

উত্তরঃ উত্তাপ যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব উত্তাপের বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারার উঠানামার কারণ।

প্রশ্ন ২৯। অন্বয়ী প্রণালীর দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল—

 (ক) দুই বা ততোধিক দৃষ্টান্তের মধ্যে একটি বিষয়ে সাদৃশ বা অন্বয় থাকা প্রয়োজন। এই কারণে মিল একে অন্বয়ী পদ্ধতি বলেছেন।

(খ) বিভিন্ন দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ে মিল থাকে, আর সব বিষয়ে আমি থাকে। এই কারণে মেলন, কফি প্রমুখ তর্ক বিজ্ঞানীরা এই প্রণালীকে  একান্বয়ী প্রণালী নামে অভিহিত করেছেন।

(গ) এই পদ্ধতি মূলতঃ পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভর করে। এর অর্থ এই নয় যে, পরীক্ষণের ক্ষেত্রে এই প্রণালীকে প্রবেশ করা যাবে না।

(ঘ) অন্বয়ী প্রণালীর দ্বারা কারণ থেকে কার্য এবং কার্য থেকে কারণ‌‌‌ অনুসন্ধান করতে হয়।

প্রশ্ন ৩০। ব্যতিরেকী প্রণালীর তিনটি সুবিধা বা গুণ লেখো।

উত্তরঃ ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধাগুলি হল—–

(ক) ব্যতিরেকী প্রণালী খুব সহজ ও সরল। কারণ এখানে কার্যকারণ নির্ণয়ের জন্য দুটি মাত্র দৃষ্টান্তের প্রয়োজন।

(খ) ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পরীক্ষণ নির্ভর হওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় নিশ্চিত হয়।

(গ) পরীক্ষণের মাধ্যমে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করলে,এর কতকগুলি যাচাই করার প্রক্রিয়া পাওয়া যায়, যা দিয়ে অন্বয়ী প্রণালী দ্বারা লব্ধ সিদ্ধান্তকে নির্ভুল বলে প্রমাণ করা সম্ভব হয়।

প্রশ্ন ৩১। অন্বয়ী প্রণালীর একটি সুবিধা উল্লেখ করো। এই প্রণালীকে কেন আবিষ্কারের পদ্ধতি বলা হয় ?

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর একটি সুবিধা হল—– অন্বয়ী পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ ও সরল পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রধানতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলে, পরীক্ষণের পদ্ধতির তুলনায় এর প্রয়োগক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত।

অন্বয়ী প্রণালী নিরীক্ষণের পদ্ধতি হওয়ারতে, এতে আমরা কারণ থেকে কার্যে এবং কার্য থেকে কারণে একই সঙ্গে যেতে পারি। এভাবে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কারের কাজে সাহায্য করে বলেই প্রণালীকে আবিষ্কারের পদ্ধতি বলা হয়।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। কাকতালীয় ন্যায় দোষ সম্বন্ধে সংক্ষেপে টীকা লেখো।

অথবা, 

ব্যতিরেকী প্রণালী কখন কাকতালীয় ‘দোষযুক্ত’ হয় ?

উত্তরঃ ব্যতিরেকী প্রণালীকে অসতর্কভাবে প্রয়োগ করলে কাকতালীয় ন্যায় দোষ (Fallacy of post hoc ergo propter hoc) ঘটে। ‘ একটি ঘটনার পরে অপর একটি ঘটনা ঘটেছে, অতএব,প্রথম ঘটনাটি দ্বিতীয় ঘটনার কারণ ‘ এমন সিদ্ধান্ত করলে এই দোষ ঘটে। যেমন—- 

আকাশে ধূমকেতু ছিল না এবং রাজাও মারা যাননি।

আকাশে ধূমকেতু দেখা দিল এবং রাজাও মারা গেলেন।

আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর কারণ এই যুক্তিতে কাকতালীয় দোষ ঘটে।

তবে এই প্রণালী যখন পরীক্ষণ ভিত্তিক হয়, তখন সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়। অন্যান্য প্রণালীর তুলনায় এই প্রণালীর গুরুত্ব হলো এখানে যে, সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে, আমরা কার্যকারণ সম্বন্ধে সঠিক সিদ্ধান্ত করতে পারি। অন্বয়ী প্রণালী যে কার্যকারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়, ব্যতিরেকী প্রণালী তাকে প্রমাণ করে। সুতরাং মিলের মতে,সব প্রণালীর মধ্যে ব্যতিরেকী প্রণালী শ্রেষ্ঠতম ।

প্রশ্ন ২। পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি বলতে কী বোঝ ? মিল কয়টি পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি স্বীকার করেছেন ? এই পদ্ধতি গুলির নাম লেখো।

উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক আগমনের উদ্দেশ্য হলো, দুটি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যাতে একটি যথার্থ সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। তর্কবিজ্ঞানী মিল এই সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন। মিলের মতে এসব পদ্ধতি অবলম্বন করে নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের ভিত্তিতে জটিল ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যায়। এই পদ্ধতিগুলিকেই ‘ পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি ‘ বা আরোহী পদ্ধতি বা কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয়ের পদ্ধতি বলে। 

এই পদ্ধতিগুলো হল নিম্নরূপ ——

(ক) অন্বয়ী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(খ) ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(গ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(ঘ) সহ- পরিবর্তন পদ্ধতি বা প্রণালী।

(ঙ) পরিশেষ পদ্ধতি বা প্রণালী।

প্রশ্ন ৩। ‘ অন্বয়ী পদ্ধতি হল একটি নিরীক্ষণ পদ্ধতি ‘– ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ  সরল পর্যবেক্ষণ বা নিরীক্ষণ হল প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘটা ঘটনাগুলির সুনিয়ন্ত্রিত উদ্দেশ্যমূলক প্রত্যক্ষ। অন্বয়ী পদ্ধতি মূলতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি। তার অর্থ এই নয় যে, পরিক্ষণের ক্ষেত্রে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যাবে না। পরীক্ষণ হল কৃত্রিম পরিবেশে নিয়ন্ত্রিত পর্যবেক্ষণ। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরীক্ষণ সম্ভব নয়। যেমন —– বন্যা, ভূমিকম্প,চন্দ্রগ্ৰহণ, সূর্যগ্ৰহণ ইত্যাদি কৃত্রিম পরিবেশে পরীক্ষণ চলে না। এসব ক্ষেত্রে নিরীক্ষণই অনুসন্ধান চালিয়ে যাবার একমাত্র উপায়। অন্বয়ী পদ্ধতি মূলতঃ নিরীক্ষণের প্রণালী। এই কারণে , যে সবক্ষেত্রে পরীক্ষণ সম্ভব নয়,সে সব ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়। এই প্রণালীতে নিরীক্ষণের সাহায্যেই দৃষ্টান্তগুলি সংগ্ৰহ করা যায়। সুতরাং অন্বয়ী পদ্ধতিকে নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ৪। ‘ অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি নিশ্চিতভাবে অন্বয়ী পদ্ধতির উন্নতি ‘—- ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগের জন্য প্রচুর পরিশ্রম ও সময়ের প্রয়োজন। সদার্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ সহজে সংগ্ৰহ করা যায়, কিন্তু নঞর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ সংগ্ৰহ করা অত্যন্ত কঠিন। অন্বয়ী পদ্ধতি যে কার্যকারণ সম্বন্ধের বিষয়ে যে সম্ভাবনার আভাস দেয়, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি দ্বারা তাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা হয়। তবুও এই পদ্ধতি দ্বারা লব্ধ সিদ্ধান্তে অনিশ্চয়তা থাকে, কারণ, এটি নিরীক্ষণের পদ্ধতি। অতএব, আমরা বলতে পারি, অন্বয়ী পদ্ধতির চেয়ে এটি বেশি বিশ্বাসযোগ্য পদ্ধতি এবং নিশ্চিতই অন্বয়ী পদ্ধতির উন্নততর রূপ।

প্রশ্ন ৫। ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে কেন পরীক্ষণমূলক পদ্ধতি বলা হয় ?

উত্তরঃ মিল ব্যতিরেকী প্রণালীকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলেছেন। কারণ ,এই প্রণালী মূলতঃ পরীক্ষণের ওপর নির্ভরশীল। এই প্রণালী প্রয়োগের জন্য দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়। একটি সদর্থক অপরটি নঞর্থক। একটিতে অনুসন্ধানের বিষয়টি উপস্থিত থাকে, অন্যটিতে থাকে না। দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে কেবল একটি বিষয় ছাড়া অন্য সকল বিষয়ে মিল থাকতে হবে। অমিল থাকা সদর্থক দৃষ্টান্তে থাকতে হবে এবং নঞর্থক দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত থাকতে হবে। সরল পর্যবেক্ষণের দ্বারা এই জাতীয় দৃষ্টান্ত পাওয়া সম্ভব নয়। একমাত্র পরীক্ষণের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব। কারণ পরীক্ষণে আমরা কৃত্রিম পরিবেশে ভাববাচক এবং অভাববাচক দৃষ্টান্তগুলি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারি। কাজেই ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ৬।’ ব্যতিরেকী প্রণালী বা পদ্ধতি কারণ প্রমাণ করতে পারে, একমাত্র কারণকে নয়।’ ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ ব্যতিরেকী পদ্ধতি নানা কারণবাদ ক্রটি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়। এই প্রণালী এটাই শুধু প্রমাণ করে যে, কোন বিশেষ একটি ক্ষেত্রে কোন একটি ঘটনা হচ্ছে ‘কারণ’ । যেমন — জ্ঞাত অবস্থার সঙ্গে কোন একটি বিষয় যোগ করলে যদি একটি অনুবর্তী ঘটনা ঘটে, তাহলে অবশ্যই সেক্ষেত্রে পূর্ববর্তী অবস্থাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমরা বলতে পারি, অনুবর্তী অবস্থাটির অন্যান্য ক্ষেত্রে অন্য কোন কারণ থাকতে পারে না। সুতরাং ব্যতিরেকী প্রণালী দ্বারা প্রমাণ করা যায় কোন একটি বিশেষ, ক্ষেত্রে কোন একটি অনুবর্তী ঘটনাই বিশেষ কারণ, অন্যান্য কোন ক্ষেত্রে অন্য কোন কারণ থাকতে পারে না।

অতএব, ব্যতিরেকী পদ্ধতি কারণ প্রমাণ করতে পারে, একমাত্র কারণকে নয়।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। অন্বয়ী প্রণালীর মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর দ্বারা কার্যকারণ আবিষ্কার বা প্রমাণ করা যায় না। তাই এই প্রণালীর মূল্য অত্যন্ত সীমিত। যদিও এই প্রণালী আমাদের কার্য অথবা কারণ সম্পর্কে একটি আনুমানিক ধারণা বা প্রকল্প গঠন করতে সাহায্য করে, কিন্তু তা প্রকল্পটিকে প্রমাণ করতে পারে না। এই জন্য এই পদ্ধতিকে আবিষ্কারের পদ্ধতি বলা গেলেও ‘ প্রমাণের পদ্ধতি ‘ বলা যায় না। এই প্রণালীর একটাই সুবিধা যে, এর প্রয়োগ সহজসাধ্য, অর্থাৎ এটি একটি সহজ ও সরল প্রণালী। সাধারণ মানুষ তাদের নিত্যদিনের জীবনে এই পদ্ধতিকে ব্যবহার করে।

তবে প্রকৃত পক্ষে এটি বর্জন বা অপসারণের পদ্ধতি। এখানে অপসারণের সূত্রটি হচ্ছে, ” যদি কিছু ঘটলেও অন্য একটি ঘটনা না ঘটে, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বীতিয় ঘটনার কারণ বলা যাবে না।”

এই সূত্রটি প্রয়োগ করে অন্বয়ী পদ্ধতি অপ্রয়োজনীয় বিষয় বর্জন করতে পারলেও সঠিকভাবে কারণ ‘ আবিষ্কার বা প্রমাণ ‘ করা যায় না।

প্রশ্ন ২। অন্বয়ী প্রণালী এবং অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমন অনুমানের মধ্যে তিনটি সাদৃশ লেখো।

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালী এবং অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমন অনুমানের মধ্যে তিনটি সাদৃশ হল নিম্নরূপ –

(ক) অন্বয়ী প্রণালী এবং অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমন অনুমান , উভয়েই পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভরশীল। দুটি ক্ষেত্রেই পর্যবেক্ষণের দ্বারা কয়েকটি সদর্থক দৃষ্টান্তের সংগ্ৰহ করা হয়।

(খ) দুটিতেই সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়, নিশ্চিত হয় না। দুটি ক্ষেত্রেই ভাববাচক দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি দেখা যাবে, সিদ্ধান্তও তত বেশি সম্ভাব্য হবে।

(গ) দুটি ক্ষেত্রেই সিদ্ধান্ত কার্যকারণ সম্পর্ক সম্বন্ধে একটি আভাস দেয়, যদিও তা প্রমাণ করা যায় না।

প্রশ্ন ৩। অন্বয়ী প্রণালী ও অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমন অনুমানের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ যুক্তিবাদ মিল অন্বয়ী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে বলেছেন, ” যদি আলোচ্য ঘটনার দই বা তার চেয়ে বেশি দৃষ্টান্তে অন্য একটি ঘটনা সাধারণভাবে উপস্থিত থাকে, তাহলে সেই সাধারণ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কার্য হবে।” যেমন — ম্যালেরিয়া জ্বরের কয়েকটি দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেল যে, প্রতিটি দৃষ্টান্তে অন্যানোফিলিস মশার কামড় সাধারণ পূর্ববর্তী ঘটনা। তার থেকে সিদ্ধান্ত করা গেল যে, অন্যানোফিলিস মশার কামড় ম্যালেরিয়া জ্বরের কারণ।

অবৈজ্ঞানিক বা অপূর্ন গণনাভিত্তিক অনুমানে আমরা বিশেষ বিশেষ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে অবাধিত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করি। যেমন— আমাদের অভিজ্ঞতায় আমরা যত কাক দেখেছি, সবই কালো। সেই অবাধিত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাই যে, সব কাক হয় কালো।

অন্বয়ী প্রণালী ও অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমনের মধ্যে পার্থক্য হল —

(ক) অন্বয়ী প্রণালী হল এক পরীক্ষণের প্রণালী। কিন্তু অপূর্ন গণনাভিত্তিক অনুমান এক প্রকারের যথার্থ আগমন অনুমান।

(খ) অন্বয়ী প্রণালীর লক্ষ্য কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় করা। কিন্তু অপূর্ন গণনাভিত্তিক আগমনের উদ্দেশ্য,এক সার্বিক নিয়ম প্রতিষ্ঠা করা।

(গ) অন্বয়ী প্রণালীতে দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে সাদৃশ এবং বৈসাদৃশ্য দুই ই মূল্যবান। কিন্তু, অবৈজ্ঞানিক অনুমানে কেবল সাদৃশ্যকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়।

(ঘ) অন্বয়ী প্রণালীর ক্ষেত্রে ঘটনার পরম্পরাকে বিচার করা হয়। অন্যতায় , অপূর্ন গণনাভিত্তিক অনুমানে ঘটনার সহাবস্থানকে বিচার করা হয়।

প্রশ্ন ৪। মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর মূল্য কীভাবে নির্ধারণ করা হয় সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ অন্যান্য প্রণালীর মত এই প্রণালীরও সীমিত মূল্য আছে, অন্যান্য প্রণালীগুলির মত এটিও অপসারণের প্রণালী। এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে নিশ্চিতভাবে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় বর্জন করা সম্ভব হয়। এই প্রণালী দ্বারা লব্ধ সিদ্ধান্ত সুনিশ্চিত ভাবে কারণ বা কার্য আবিষ্কার করতে বা তার যথার্থতা প্রমাণ করতে পারে না।

এই প্রণালী কোন স্বতন্ত্র বা মৌলিক প্রণালী নয়। এটি হল, অন্বয়ী প্রণালীর দ্বিবিধরূপ বা প্রয়োগ। তাই অনেকে একে অন্বয়ী এবং ব্যতিরেকী প্রণালীর যুগ্ম প্রয়োগ বলেন। অন্বয়ী প্রণালীর ক্ষেত্রে নানা কারণ জনিত ক্রটি থাকার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীতে সেই সম্ভাবনা অনেকটাই দূর হয়। যে সব ক্ষেত্রে ব্যতিরেকী প্রণালী সঠিকভাবে সংগ্ৰহ করা সম্ভব হয় না,সে সব ক্ষেত্রে মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করা যায়। যেমন—– বিবাহ বিচ্ছেদের কারণ জানতে ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে আমাদের এমন দুই জোড়া দম্পতি সংগ্ৰহ করতে হবে,যাদের ক্ষেত্রে কেবল একটি বিষয়ে অমিল বাকি সব বিষয়ে মিল। এরকম দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করা সম্ভব নয়।

প্রশ্ন ৫। সহ পরিবর্তন প্রণালীকে অন্বয়ী প্রণালীর বিশেষ রূপ বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ সহ পরিবর্তন প্রণালীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে,যেখানে অন্বয়ী প্রণালীর বিশেষ প্রয়োগ হয় সেখানে পূর্ববর্তী ঘটনার এবং অনুবর্তী ঘটনার মধ্যে একটি ব্যাপারের সহ পরিবর্তনের সঙ্গে তাদের ঘটনাগুলির পরিমাণের ভিন্নতা না থাকলেও তারা বিভিন্ন দৃষ্টান্তে এক থাকে না , ভিন্ন ভিন্ন হয়। যদি সমগামী ঘটনাগুলি প্রতিটি দৃষ্টান্তে ভিন্ন ভিন্ন হয়, তাহলে সহ পরিবর্তনের প্রণালীকে অন্বয়ী প্রণালীর বিশেষ প্রকার রূপে গণ্য করা হয়। এক্ষেত্রে প্রণালীটির প্রয়োগ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে করা হয় বলে সিদ্ধান্ত কমবেশি সম্ভাব্য হয়। কখনই সুনিশ্চিত হয় না।

প্রশ্ন ৬। সহ পরিবর্তন প্রণালীকে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ প্রয়োগ বা রূপ বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ সহ পরিবর্তন প্রণালীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে যেখানে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ প্রয়োগ হয় সেখানে পূর্ববর্তী ও অনুবর্তী ঘটনার মধ্যে একটি বিষয়ে সহ পরিবর্তন হলেও সঙ্গের অন্যান্য বিষয়গুলো প্রতিটি দৃষ্টান্তে এক অপরিবর্তিত থাকে। এক্ষেত্রে পরীক্ষণের সাহায্যে পূর্ববর্তী এবং অনুবর্তী ঘটনার একটি মাত্র পরিবর্তন সাধন করা হয় এবং সহগামী অন্যান্য বিষয়গুলি প্রতিটি দৃষ্টান্তে অভিন্ন  এবং অপরিবর্তিত থাকে। এই জাতীয় প্রয়োগ হলে সহ পরিবর্তন প্রণালীকে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ প্রয়োগ বলা হয়।

প্রশ্ন ৭। ‘ অন্বয়ী পদ্ধতি দ্বারা কারণ এবং সহ কার্যের অথবা সহ- অবস্থানের পার্থক্য করা যায় না।’ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ অন্বয়ী পদ্ধতি দ্বারা কার্যকারণ  সম্পর্ক এবং সহ- কার্যের পার্থক্য বোঝা যায় না। কতকগুলি দৃষ্টান্তে দুটি ঘটনা সর্বদাই অনুবর্তী এবং পূর্ববর্তী ঘটনা হিসাবে উপস্থিত থাকতে পারে। কিন্তু তাতে একথা প্রমাণিত হয় না যে, ঐ দুটি ঘটনার একটি পূর্ববর্তী ঘটনাটির কারণ এবং অনুবর্তী ঘটনাটি কার্য। যেমন দিন হল রাত্রির নিয়ম পূর্ববর্তী ঘটনা কিন্তু দিন রাত্রির কারণ নয়। একই কারণের দুটি কার্য,যে কারণটি হল , পৃথিবীর আহ্নিক গতি। পৃথিবীর নিজ নিজ কক্ষপথে পরিক্রমা হল দিন ও রাত্রের কারণ, দিন ও রাত হল সেই পরিক্রমার সহকার্য। সুতরাং অন্বয়ী পদ্ধতি দ্বারা কারণ এবং সহ কার্য্যের পার্থক্য নির্ণয় করা যায় না।

প্রশ্ন ৮। অন্বয়ী পদ্ধতির অসুবিধাগুলি কীভাবে দূর করা যায় ?

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর ক্রটিগুলি দূর করা সম্ভব —–

(ক) বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে অন্বয়ী পদ্ধতির অসুবিধা দূর করা যায়। অন্বয়ী পদ্ধতি নানা কারণবাদজনিত দোষে দুষ্ট। দৃষ্টান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি করে যদি দেখা যায় যে অন্বেষণীয় ঘটনা উপস্থিত আছে এবং বহু সংখ্যক দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ে মিল থাকে , তাহলে সেই মিল থাকা বিষয়টি অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

(খ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী অন্বয়ী প্রণালীর উন্নতর রূপ। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য একটি ভাববাচক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ এবং অভাববাচক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়, যে সব দৃষ্টান্তে আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিত থাকে। সদর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি উপস্থিত থাকে এবং দৃষ্টান্ত গুলির মধ্যে একটি বিষয়ে মিল থাকে। নঞর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে এবং সদর্থক দৃষ্টান্তের মিল থাকা বিষয়টি অনুপস্থিত থাকে। কিন্তু, মিল থাকা ঘটনা অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ বা কার্য হবে। অতএব মিশ্র অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগ করে নানা কারণ বাদের সম্ভাবনা বা অপর্যবেক্ষণজনিত দোষের সম্ভাবনা দূর করা যাবে।

প্রশ্ন ৯। মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ উল্লেখ করো।

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পরীক্ষণের সুবিধা থাকে না, সেখানে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যেতে পারে।

(খ) এই প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়ার পর্যবেক্ষণের সমস্ত সুবিধাই এতে পাওয়া যায়।

(গ) এই প্রণালীদ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্য অনুমান করতে পারি, তেমনি কার্য থেকে কারণও অনুমান করতে পারি।

(ঘ) পরীক্ষণমূলক প্রণালী, যেমন —– ব্যতিরেকী প্রণালী যেখানে প্রয়োগ করা যায় না, সেখানে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করা যায়।

প্রশ্ন ১০। মিশ্র অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা ও দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পরীক্ষণের সুবিধা থাকে না, সেখানে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যেতে পারে।

(খ) এই প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়ার পর্যবেক্ষণের সমস্ত সুবিধাই এতে পাওয়া যায়।

(গ) এই প্রণালীদ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্য অনুমান করতে পারি, তেমনি কার্য থেকে কারণও অনুমান করতে পারি।

(ঘ) পরীক্ষণমূলক প্রণালী, যেমন —– ব্যতিরেকী প্রণালী যেখানে প্রয়োগ করা যায় না, সেখানে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করা যায়।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—–

(ক) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়াতে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। যদি সম্ভাব্যতার মাত্রা খুব বেশি থাকে।

(খ) অপর্যাপ্ত বিশ্লেষণ এবং নানা কারণবাদের সমস্যা থেকে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

প্রশ্ন ১১। চরম দৃষ্টান্ত বা নির্ণায়ক দৃষ্টান্ত মানে কী ? উদাহরণের সাহায্যে নিরীক্ষণলব্ধ চরম দৃষ্টান্তের বিষয়ে সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ যে নিরীক্ষণের মাধ্যমে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রকল্পের মধ্যে একটিকে গ্ৰহণ করা হয় তাকে  crucial instance বা চরম দৃষ্টান্ত বলে। যেমন, কোন হত্যাকাণ্ডের জন্য সন্দেহবশত তিনজন ব্যক্তিকে আটক করা হল। তিনজনাই দোষী। এই তিনজনের মধ্যে প্রকৃত আসামী কেউ ধরা পড়েনি। কিন্তু ভালোকের অনুসন্ধান করে ঘটনাস্থলের উপর আঙ্গুলের চাপ পাওয়া গেল। এই আঙ্গুলের চাপের দ্বারা প্রকৃত আসামী নির্ণয় করা গেল। এখানে আঙ্গুলের চাপ ‘ চরম দৃষ্টান্ত ‘ এবং নিরীক্ষণের দ্বারা পাওয়া গেল বলে এটি নিরীক্ষণ লব্ধ চরম দৃষ্টান্ত।

প্রশ্ন ১২। পার্থক্য পদ্ধতির বিধানটি লেখো। এই পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা বস্তুগুলো কী কী ?

উত্তরঃ পার্থক্য পদ্ধতির একটি নাম হল ব্যতিরেকী প্রণালী। নিম্নে তর্কবিধ মিলের ব্যতিরেকী প্রণালীর সংজ্ঞা দেওয়া হল—–

তর্কবিদ মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সংজ্ঞাটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —–” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

মিলের এই সূত্রটি ব্যাখ্যা করে পাওয়া যায় যে ব্যতিরেকী প্রণালীর ক্ষেত্রে —–

(ক) প্রথমত দুটি এবং কেবল দুটি দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করতে হয়। দৃষ্টান্ত দুটির একটিতে অন্বেষণীয় ঘটনাটি উপস্থিত থাকে এবং অন্যটিতে অন্বেষণীয় ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে। অর্থাৎ দৃষ্টান্ত দুটির একটি সদর্থক ও অন্যটি নঞর্থক।

(খ) একটি বিষয়ের বাইরে দৃষ্টান্ত দুটির সম্পূর্ণ ভাবে মিল থাকে।

(গ) দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে অমিল বা ব্যতিরেক থাকা সেই বিষয়টি অন্বেষণীয় ঘটনার কার্য বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।

প্রশ্ন ১৩। সহ পরিবর্তন প্রণালীর দুটি সুবিধা এবং দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ সহ- পরিবর্তন প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) স্থায়ী কারণ সমূহের ক্ষেত্রে সহ- পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা সম্ভব হয়।

(খ) সহ- পরিবর্তন প্রণালীর সাহায্যেই কার্য এবং কারণের পরিমাণগত স্বভাব বিচার করা হয়। পরিমাণগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কেবল সহ- পরিবর্তন প্রণালী প্রযোজ্য ।

প্রশ্ন ১৪।‌ পরিশেষ প্রণালীর দুটি সুবিধা এবং দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ পরিশেষ প্রণালীর সুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ —-

ক) কোন ঘটনার যে অংশের ব্যাখ্যা জানা নেই, সেই অংশের ব্যাখ্যার কিংবা অজ্ঞাত কারণ বা কার্য অনুসন্ধানে এই প্রণালী কার্যকর।

(খ) বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ক্ষেত্রে এই প্রণালীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

(গ) মিশ্রকারণ এবং মিশ্র কার্যের অনুমানের ক্ষেত্রে পরিশেষ প্রণালীই একমাত্র পদ্ধতি।

(ঘ) এই প্রণালী দ্বারা কারণ থেকে কার্য এবং কার্য থেকে কারণ‌‌‌ অনুমান করা যায়।

পরিশেষ পদ্ধতির দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—-

(ক) পরিশেষ পদ্ধতির ব্যবহার অতি সীমিত। এই পদ্ধতি কেবল সমগুণ সম্পন্ন কার্য সংমিশ্রণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

(খ) এই পদ্ধতি থেকে কোন বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের কাজ আরম্ভ করা যায় না।

প্রশ্ন ১৫। ” কাকতালীয় দোষ ” বলতে কী বোঝ ? উদাহরণ সহ লেখো।

উত্তরঃ ব্যতিরেকী প্রণালীকে অসতর্কভাবে প্রয়োগ করলে কাকতালীয় ন্যায় দোষ (Fallacy of posthoc ergo propter hoc) ঘটে। ‘ একটি ঘটনার পরে অপর একটি ঘটনা ঘটেছে, অতএব,প্রথম ঘটনাটি দ্বিতীয় ঘটনার কারণ ‘ এমন সিদ্ধান্ত করলে এই দোষ ঘটে। যেমন—- 

আকাশে ধূমকেতু ছিল না এবং রাজাও মারা যাননি।

আকাশে ধূমকেতু দেখা দিল এবং রাজাও মারা গেলেন।

আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর কারণ এই যুক্তিতে কাকতালীয় দোষ ঘটে।

তবে এই প্রণালী যখন পরীক্ষণ ভিত্তিক হয়, তখন সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়। অন্যান্য প্রণালীর তুলনায় এই প্রণালীর গুরুত্ব হলো এখানে যে, সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে, আমরা কার্যকারণ সম্বন্ধে সঠিক সিদ্ধান্ত করতে পারি। অন্বয়ী প্রণালী যে কার্যকারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়, ব্যতিরেকী প্রণালী তাকে প্রমাণ করে। সুতরাং মিলের মতে,সব প্রণালীর মধ্যে ব্যতিরেকী প্রণালী শ্রেষ্ঠতম।

প্রশ্ন ১৬। অপসারণ বলতে কী বোঝ ? অপসারণের তিনটি মূল সূত্র লেখো।

উত্তরঃ কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করতে গিয়ে তাদের সঙ্গে সংযোগ আছে এমন অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রসাঙ্গিক বিষয়গুলিকে বর্জন বা অপসারণ করতে হয় এবং প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক বিষয় বিচার করতে হয়। যে পদ্ধতি দ্বারা অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রসাঙ্গিক বিষয় বর্জন করতে হয়, তাকে অপসারণের পদ্ধতি বলে।

পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতির সঙ্গে জড়িত অপসারণের তিনটি সূত্র হল—-

(ক) কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলে যদি অনুবর্তী কোন ঘটনা বা কার্য অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণের অংশ হতে পারে না।

(খ) কার্যের কোন ক্ষতি না করে যদি পূর্ববর্তী ঘটনার কোন অংশ বাদ না দেওয়া যায়, তাহলে সেই অংশ কার্যটির কারণ বা কারণের অংশ হবে।

(গ) পূর্ববর্তী কোন ঘটনার হ্রাস বৃদ্ধির সঙ্গে যদি অনুবর্তী কোন ঘটনার হ্রাস বৃদ্ধি হয়, তাহলে ঘটনা কার্যকারণ সম্পর্কে সম্পর্কিত হবে।

প্রশ্ন ১৭। অন্বয়ী প্রণালীর ‘ ব্যবহারিক দোষ ‘ বলতে কী বোঝ ? এই প্রণালী ব্যবহারের ক্ষেত্রে কী কী অসুবিধা সৃষ্টি হয় ?

উত্তরঃ আমাদের জীবনে অন্বয়ী পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে কতকগুলি বাস্তব অসুবিধা দেখা দেয়। দৈনন্দিন জীবন – যাপন করতে গিয়ে এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু বাধার সৃষ্টি হয়। এই কারণে এটাকে ব্যবহারিক দোষ বলে থাকি। 

এই সব ব্যবহারিক সমস্যা হল নিম্নরূপ ——-

(ক) প্রয়োজনীয় দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহের অসুবিধা: অন্বয়ী পদ্ধতিতে দুই বা ততোধিক দৃষ্টান্ত নিরীক্ষণের সাহায্যে সংগ্ৰহ করতে হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করতে গিয়ে প্রকৃতির দয়ার ওপর নির্ভর করতে হয়, কারণ সকল প্রাকৃতিক ঘটনা, যেমন সূর্য উদয় হওয়া এবং অস্ত যাওয়ার মত নিশ্চিতভাবে ঘটে না। উদাহরণস্বরূপ —- ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি ইত্যাদি।

(খ) দৃষ্টান্তের সঠিক বিশ্লেষণের অসুবিধা: অন্বয়ী পদ্ধতি সরল পর্যবেক্ষণের পদ্ধতি হওয়ার সংগৃহীত সঠিক বিশ্লেষণের সমস্যা হয়। সকল পর্যবেক্ষণ‌‌‌ থেকে নিশ্চিত জানা যায় না যে সংগৃহীত তথ্যর বিশ্লেষণ সঠিক কি না। এই পদ্ধতি দ্বারা কার্যকারণ সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক বাদ দিয়ে সামান্য বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

তাই আমরা অন্বয়ী পদ্ধতির ব্যবহারিক দোষে দুষ্ট হওয়ার সমস্যটি দেখাত পাই। তবে বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ দ্বারা এই সমস্যার কিছুটা সমাধান হয়। যদি দৃষ্টান্তের  সংখ্যা বাড়ানো যায় এবং পূর্ববর্তী ঘটনা পাওয়া যায়, সেই সাধারণ পূর্ববর্তী ঘটনাটি কারণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহের জন্য প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীলতা দূর করা সম্ভব হয়। সুতরাং উপরে উল্লেখিত দোষমুক্ত করবার উপায়গুলি অনুসরণ করেও আমরা ব্যবহারিক দোষদুষ্টতা থেকে এই পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ মুক্ত করা সম্ভব নয়।

প্রশ্ন ১৮। সহ পরিবর্তন প্রণালীর চারটি অসুবিধা লেখো।

উত্তরঃ সহ পরিবর্তন প্রণালীর অসুবিধাগুলি হল—–

(ক) সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রয়োগ একটি নির্দিষ্ট সীমিত ক্ষেত্রে আবদ্ধ থাকে। সেই সীমার বাইরে একে প্রয়োগ করা যায় না।

(খ) এই পদ্ধতি পরিবর্তনের পরিমাণগত দিকটিতেই প্রযোজ্য , কোনভাবেই গুণগত দিকটিতে নয়।

(গ) এই প্রণালীর দ্বারা সহ অবস্থান এবং কার্যকারণ সম্পর্কের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা যায় না।

(ঘ) এই প্রণালীর পরিধি সংকীর্ণ। এর কারণ হল অভিজ্ঞতার বাইরে এই প্রণালী প্রয়োগ সম্ভব নয়।

প্রশ্ন ১৯। অন্বয়ী প্রণালীর ‘ প্রকৃতিগত অপূর্ণতা কী ? এই অসুবিধা কীভাবে দূর করা যেতে পারে ?

উত্তরঃ অন্বয়ী পদ্ধতির এই ক্রটি বা অপূর্ণতা প্রকৃতিগত। নানা কারণবাদের সম্ভাবনা এই অপূর্ণতার কারণ। নানাকারণবাদ  মতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন কারণে একই কার্য সৃষ্টি হয়। কিন্তু বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এই তত্ত্বটি গ্ৰহণযোগ্য নয়। এই তত্ত্বের সম্ভাবনা অন্বয়ী প্রণালীর প্রয়োগের বাধাদান করে। অন্বয়ী পদ্ধতির প্রকৃতিগত ক্রটি এই বিশেষ পদ্ধতিটির প্রকৃতি বা স্বরূপের মধ্যে নিহিত, যা পদ্ধতিটির মধ্যে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে।

অন্বয়ী পদ্ধতির এই অসুবিধা দূর করার জন্য নিম্নলিখিত উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে —–

১। দৃষ্টান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।

২। যেখানে সম্ভব মিশ্র অন্বয়ী – ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগ।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। অন্বয়ী প্রণালী বা পদ্ধতি কাকে বলে ? উদাহরণ সহ লেখো। এই এই প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল অন্বয়ী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার দুই বা তার চেয়ে বেশি দৃষ্টান্তে অন্য একটি ঘটনা সাধারণভাবে উপস্থিত থাকে, তাহলে সেই সাধারণ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কার্য হবে। মিল এর এই প্রণালীটি একটি অপসারণের সূত্রের উপর নির্ভরশীল। তা হল — ” কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলে যদি অনুবর্তী ঘটনা বা কার্য অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণের অংশ হতে পারে না।” মিল মনে করেন যে, এই প্রণালী প্রয়োগ করে যে- কোন কার্যের কারণ অনুসন্ধান করা যায়। এই পদ্ধতি হচ্ছে কার্যকারণ আবিষ্কার ও প্রমাণের পদ্ধতি। এই প্রণালীর দ্বারা যে রূপ কোন ঘটনার কারণ বা কার্য আবিষ্কার করা হয়,তেমনি তাকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

মিল এর প্রতীকাত্মক বা প্রতীকী উদাহরণ —–

∴ A হল a এর কারণ

অথবা a হল A এর কার্য

অন্বয়ী প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি নিচে দেওয়া হল।

(ক) দুই বা ততোধিক দৃষ্টান্তের মধ্যে একটি বিষয়ে সাদৃশ বা অন্বয় থাকা প্রয়োজন। এই কারণে মিল একে অন্বয়ী পদ্ধতি বলেছেন।

(খ) বিভিন্ন দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ে মিল থাকে, আর সব বিষয়ে আমি থাকে। এই কারণে মেলন, কফি প্রমুখ তর্ক বিজ্ঞানীরা এই প্রণালীকে  একান্বয়ী প্রণালী নামে অভিহিত করেছেন।

(গ) এই পদ্ধতি মূলতঃ পর্যবেক্ষণের উপর নির্ভর করে। এর অর্থ এই নয় যে, পরীক্ষণের ক্ষেত্রে এই প্রণালীকে প্রবেশ করা যাবে না।

(ঘ) অন্বয়ী প্রণালীর দ্বারা কারণ থেকে কার্য এবং কার্য থেকে কারণ‌‌‌ অনুসন্ধান করতে হয়।

প্রশ্ন ২। অন্বয়ী প্রণালী কাকে বলে উদাহরণ সহ লেখো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল অন্বয়ী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার দুই বা তার চেয়ে বেশি দৃষ্টান্তে অন্য একটি ঘটনা সাধারণভাবে উপস্থিত থাকে, তাহলে সেই সাধারণ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কার্য হবে। মিল এর এই প্রণালীটি একটি অপসারণের সূত্রের উপর নির্ভরশীল। তা হল — ” কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলে যদি অনুবর্তী ঘটনা বা কার্য অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণের অংশ হতে পারে না।” মিল মনে করেন যে, এই প্রণালী প্রয়োগ করে যে- কোন কার্যের কারণ অনুসন্ধান করা যায়। এই পদ্ধতি হচ্ছে কার্যকারণ আবিষ্কার ও প্রমাণের পদ্ধতি। এই প্রণালীর দ্বারা যে রূপ কোন ঘটনার কারণ বা কার্য আবিষ্কার করা হয়,তেমনি তাকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রশ্ন ৩। অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা উল্লেখ করো। এর অসুবিধাগুলি দূর করার উপায় কী ?

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অতি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এই প্রণালী সহজ ও সরল পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রধানতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলে পরীক্ষণের পদ্ধতির তুলনায় এর প্রয়োগক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত। তাই অন্বয়ী পদ্ধতির পরিসর অতি ব্যাপক।

(খ) এই প্রণালী দ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্যে এবং কার্য থেকে কারণে যেতে পারি। নিরীক্ষণের পদ্ধতি হওয়ার অন্বয়ী পদ্ধতির সুবিধা আছে।

অন্বয়ী প্রণালীর ক্রটিগুলি দূর করা সম্ভব —–

(ক) বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে অন্বয়ী পদ্ধতির অসুবিধা দূর করা যায়। অন্বয়ী পদ্ধতি নানা কারণবাদজনিত দোষে দুষ্ট। দৃষ্টান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি করে যদি দেখা যায় যে অন্বেষণীয় ঘটনা উপস্থিত আছে এবং বহু সংখ্যক দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ে মিল থাকে , তাহলে সেই মিল থাকা বিষয়টি অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

(খ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী অন্বয়ী প্রণালীর উন্নতর রূপ। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য একটি ভাববাচক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ এবং অভাববাচক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়, যে সব দৃষ্টান্তে আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিত থাকে। সদর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি উপস্থিত থাকে এবং দৃষ্টান্ত গুলির মধ্যে একটি বিষয়ে মিল থাকে। নঞর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে এবং সদর্থক দৃষ্টান্তের মিল থাকা বিষয়টি অনুপস্থিত থাকে। কিন্তু, মিল থাকা ঘটনা অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ বা কার্য হবে। অতএব মিশ্র অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগ করে নানা কারণ বাদের সম্ভাবনা বা অপর্যবেক্ষণজনিত দোষের সম্ভাবনা দূর করা যাবে।

প্রশ্ন ৪। অন্বয়ী প্রণালী কাকে বলে ? অন্বয়ী প্রণালীর চারটি গুণ বা সুবিধা লেখো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল অন্বয়ী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার দুই বা তার চেয়ে বেশি দৃষ্টান্তে অন্য একটি ঘটনা সাধারণভাবে উপস্থিত থাকে, তাহলে সেই সাধারণ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কার্য হবে। মিল এর এই প্রণালীটি একটি অপসারণের সূত্রের উপর নির্ভরশীল। তা হল — ” কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলে যদি অনুবর্তী ঘটনা বা কার্য অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণের অংশ হতে পারে না।” মিল মনে করেন যে, এই প্রণালী প্রয়োগ করে যে- কোন কার্যের কারণ অনুসন্ধান করা যায়। এই পদ্ধতি হচ্ছে কার্যকারণ আবিষ্কার ও প্রমাণের পদ্ধতি। এই প্রণালীর দ্বারা যে রূপ কোন ঘটনার কারণ বা কার্য আবিষ্কার করা হয়,তেমনি তাকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

অন্বয়ী প্রণালীর চারটি গুণ বা সুবিধা হল——

(ক) অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্রে অতি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এই প্রণালী সহজ ও সরল প্রণালী বা পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রধানতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলে পরীক্ষণের পদ্ধতির তুলনায় এর প্রয়োগক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত। তাই অন্বয়ী পদ্ধতির পরিসর অতি ব্যাপক।

(খ) এই প্রণালী দ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্যে এবং কার্য থেকে কারণে যেতে পারি। নিরীক্ষণের পদ্ধতি হওয়ার অন্বয়ী পদ্ধতির সুবিধা আছে।

(গ) এই প্রণালীর সাহায্যে কার্যকারণ সম্পর্কে এক প্রকল্প গঠন করা সম্ভব হয়। এই প্রকল্প গঠনের কাজটিও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

(ঘ) এই প্রণালী প্রয়োগ করে কার্য অথবা কারণকে সঠিকভাবে নির্ণয় করা সম্ভব না হলেও তাদের সঙ্গে যুক্ত অপ্রাসঙ্গিক এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলিকে সঠিকভাবে বর্জন করা যায়।

প্রশ্ন ৫। অন্বয়ী প্রণালী কাকে বলে ? এই প্রণালীর দুটি সুবিধা লেখো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল অন্বয়ী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার দুই বা তার চেয়ে বেশি দৃষ্টান্তে অন্য একটি ঘটনা সাধারণভাবে উপস্থিত থাকে, তাহলে সেই সাধারণ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কার্য হবে। মিল এর এই প্রণালীটি একটি অপসারণের সূত্রের উপর নির্ভরশীল। তা হল — ” কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলে যদি অনুবর্তী ঘটনা বা কার্য অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণের অংশ হতে পারে না।” মিল মনে করেন যে, এই প্রণালী প্রয়োগ করে যে- কোন কার্যের কারণ অনুসন্ধান করা যায়। এই পদ্ধতি হচ্ছে কার্যকারণ আবিষ্কার ও প্রমাণের পদ্ধতি। এই প্রণালীর দ্বারা যে রূপ কোন ঘটনার কারণ বা কার্য আবিষ্কার করা হয়,তেমনি তাকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অতি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এই প্রণালী সহজ ও সরল পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রধানতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলে পরীক্ষণের পদ্ধতির তুলনায় এর প্রয়োগক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত। তাই অন্বয়ী পদ্ধতির পরিসর অতি ব্যাপক।

(খ) এই প্রণালী দ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্যে এবং কার্য থেকে কারণে যেতে পারি। নিরীক্ষণের পদ্ধতি হওয়ার অন্বয়ী পদ্ধতির সুবিধা আছে।

প্রশ্ন ৬। উপযুক্ত উদাহরণ সহ অন্বয়ী প্রণালীর ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল অন্বয়ী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার দুই বা তার চেয়ে বেশি দৃষ্টান্তে অন্য একটি ঘটনা সাধারণভাবে উপস্থিত থাকে, তাহলে সেই সাধারণ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কার্য হবে। মিল এর এই প্রণালীটি একটি অপসারণের সূত্রের উপর নির্ভরশীল। তা হল — ” কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলে যদি অনুবর্তী ঘটনা বা কার্য অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণের অংশ হতে পারে না।” মিল মনে করেন যে, এই প্রণালী প্রয়োগ করে যে- কোন কার্যের কারণ অনুসন্ধান করা যায়। এই পদ্ধতি হচ্ছে কার্যকারণ আবিষ্কার ও প্রমাণের পদ্ধতি। এই প্রণালীর দ্বারা যে রূপ কোন ঘটনার কারণ বা কার্য আবিষ্কার করা হয়,তেমনি তাকে সত্য বলে প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রশ্ন ৭। ব্যতিরেকী প্রণালী কাকে বলে ? এই প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো।

উত্তরঃ যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

ব্যতিরেকী প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ —–

বাস্তব উদাহরণ —

একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে একটি ঘন্টা বাজানো হলো। ঘন্টার শব্দ শোনা গেল। ব্যতিরেকী প্রণালী দুই রকমভাবে প্রয়োগ করা যায়। কখনও কখনও দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে পার্থক্য থাকা বিষয়টি অপসারণ করে। আবার, কখনও কখনও সেই বিষয়টি মুক্ত করে।

বাস্তব উদাহরণ: একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে ঘন্টা বাজানো হল। ঘন্টার শব্দ শোনা গেল। অন্যদিকে একটি বায়ুশূন্য পাত্রে যদি ঘন্টাটি বাজানো হয়, তাহলে কোন শব্দ শোনা যাবে না। এর অর্থ এই যে, বায়ুর উপস্থিতি শব্দ শোনার কারণ।

ব্যতিরেকী প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ —-

(ক) এই প্রণালীতে দুটি মাত্র দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়,যাদের মধ্যে একটি মাত্র ঘটনা ছাড়া আর সব বিষয়েই মিল থাকে। এরকম দুটি দৃষ্টান্ত — একটি সদর্থক, অপরটি নঞর্থক, কেবল পরীক্ষণের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব। কারণ পরীক্ষণ প্রক্রিয়ার ঘটনাগুলির উপরে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। কারণ, দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহের জন্য পরীক্ষণই একমাত্র মাধ্যম। অতএব ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রধানতঃ পরীক্ষণের পদ্ধতি। এই প্রণালীকে অসতর্কভাবে প্রয়োগ করলে ‘ কাকতালীয় দোষ ঘটে ‘।  উদাহরণ—

আকাশে ধূমকেতু ছিল না এবং রাজাও মারা যাননি।

আকাশে ধূমকেতু দেখা দিল এবং রাজাও মারা গেলেন।

আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর কারণ।

(খ) এই প্রণালী যখন পরীক্ষণ ভিত্তিক হয়, তখন সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়। অন্বয়ী প্রণালী যে কার্যকারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়, ব্যতিরেকী প্রণালী তাকে প্রমাণ করে। অতএব মিলের মতে সব প্রণালীর মধ্যে ব্যতিরেকী প্রণালী শ্রেষ্ঠতম।

প্রশ্ন ৮। পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি বলতে কী বোঝ ? উপযুক্ত উদাহরণ সহ ব্যতিরেকী প্রণালী ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক আগমনের উদ্দেশ্য হলো, দুটি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যাতে একটি যথার্থ সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। তর্কবিজ্ঞানী মিল এই সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন। মিলের মতে এসব পদ্ধতি অবলম্বন করে নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের ভিত্তিতে জটিল ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যায়। এই পদ্ধতিগুলিকেই ‘ পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি ‘ বা আরোহী পদ্ধতি বা কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয়ের পদ্ধতি বলে।

যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

ব্যতিরেকী প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ —–

বাস্তব উদাহরণ —

একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে একটি ঘন্টা বাজানো হলো। ঘন্টার শব্দ শোনা গেল। ব্যতিরেকী প্রণালী দুই রকমভাবে প্রয়োগ করা যায়। কখনও কখনও দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে পার্থক্য থাকা বিষয়টি অপসারণ করে। আবার, কখনও কখনও সেই বিষয়টি মুক্ত করে।

বাস্তব উদাহরণ: একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে ঘন্টা বাজানো হল। ঘন্টার শব্দ শোনা গেল। অন্যদিকে একটি বায়ুশূন্য পাত্রে যদি ঘন্টাটি বাজানো হয়, তাহলে কোন শব্দ শোনা যাবে না। এর অর্থ এই যে, বায়ুর উপস্থিতি শব্দ শোনার কারণ।

প্রশ্ন ৯। ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী কাকে বলে ? এই প্রণালীর দুটি সুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

ব্যতিরেকী পদ্ধতির দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) ব্যতিরেকী প্রণালী খুব সহজ ও সরল । কারণ এখানে কার্যকারণ নির্ণয়ের জন্য দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়।

(খ) ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পরীক্ষণ নির্ভর হওয়ায় সিদ্ধান্ত প্রায় নিশ্চিত হয়। 

প্রশ্ন ১০। ব্যতিরেকী প্রণালী কাকে বলে ? এই প্রণালীর চারটি অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

ব্যতিরেকী প্রণালীর দোষ বা অসুবিধাগুলি হল—–

(ক) যে সব ক্ষেত্রে পরীক্ষণ  অচল সে সব ক্ষেত্রে ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করা যায় না। অতএব, ব্যতিরেকী পদ্ধতির প্রয়োগ ক্ষেত্র খুবই সংকীর্ণ।

(খ) ব্যতিরেকী প্রণালীর সাহায্যে কারণ থেকে কার্য নির্ণয় করতে পারি। কিন্তু কার্য থেকে কারণ‌‌‌ নির্ণয় করা যায় না।

(গ) ব্যতিরেকী প্রণালী নানা কারণবাদ দোষ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

(ঘ) এই প্রণালীকে অসর্তভাবে প্রয়োগ করলে ‘ কাকতালীয় ন্যায় ‘ দোষ ঘটে।

প্রশ্ন ১১। ব্যতিরেকী প্রণালী কাকে বলে ?  উদাহরণ সহ লেখো। কোন ব্যতিরেকী প্রণালীকে প্রমাণের প্রণালী বা পরীক্ষণের প্রণালী বলা হয় ?

উত্তরঃ যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

মিল ব্যতিরেকী প্রণালীকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলেছেন। কারণ ,এই প্রণালী মূলতঃ পরীক্ষণের ওপর নির্ভরশীল। এই প্রণালী প্রয়োগের জন্য দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়। একটি সদর্থক অপরটি নঞর্থক। একটিতে অনুসন্ধানের বিষয়টি উপস্থিত থাকে, অন্যটিতে থাকে না। দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে কেবল একটি বিষয় ছাড়া অন্য সকল বিষয়ে মিল থাকতে হবে। অমিল থাকা সদর্থক দৃষ্টান্তে থাকতে হবে এবং নঞর্থক দৃষ্টান্তে অনুপস্থিত থাকতে হবে। সরল পর্যবেক্ষণের দ্বারা এই জাতীয় দৃষ্টান্ত পাওয়া সম্ভব নয়। একমাত্র পরীক্ষণের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব। কারণ পরীক্ষণে আমরা কৃত্রিম পরিবেশে ভাববাচক এবং অভাববাচক দৃষ্টান্তগুলি সঠিকভাবে বিশ্লেষণ করতে পারি। কাজেই ব্যতিরেকী পদ্ধতিকে পরীক্ষণের পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ১২। ব্যতিরেকী প্রণালী কাকে বলে ? উদাহরণ সহ লেখো। ব্যতিরেকী প্রণালীকে আবিষ্কারের প্রণালী বলা হয় কেন ?

উত্তরঃ যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগের জন্য মাত্র দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়। তাদের মধ্যে সব বিষয়ে মিল থাকবে, কিন্তু একটি বিষয়ে অমিল থাকবে। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ব্যতিরেকী প্রণালীর ব্যবহার হয়। এই প্রণালী প্রধানতঃ পরীক্ষণের প্রণালী। মিল দাবি করেন যে, এই পদ্ধতি পরীক্ষণ নির্ভর হওয়ায় দৃষ্টান্তগুলি সাবধানভাবে প্রয়োগ করতে হয়। দৃষ্টান্তগুলি যদি সতর্কতার সঙ্গে ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগের নির্দেশ দেয় এবং পরীক্ষিত হয়,তা হল সিদ্ধান্তটি নিশ্চিত হবে। এই কারণে পদ্ধতিকে কারণ আবিষ্কারের পদ্ধতি বলা হয়।

প্রশ্ন ১৩। সহ পরিবর্তন প্রণালী কাকে বলে ? উদাহরণ সহ লেখো। এই পদ্ধতির দুটি সুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল সহ পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —” কোন ঘটনার পরিবর্তনের সঙ্গে যদি অপর কোন ঘটনার পরিবর্তন হয়, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বিতীয় ঘটনার কারণ বা কার্য, অথবা,ঐ দুটি ঘটনার মধ্যে কোন না কোন প্রকার কার্যকারণ সম্পর্ক থাকবে।”

মিল এর সংজ্ঞাটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে —- 

১। দুটি ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

২। একটি ঘটনার পরিমাণের পরিবর্তনের সঙ্গে অপরটিরও পরিমাণের পরিবর্তন হলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধে সম্পর্কিত।

৩। যদি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনা পরবর্তী ঘটনার কারণ হবে।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ ——

সহ পরিবর্তন  প্রণালীর বাস্তব উদাহরণ —-

উত্তাপ   যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপ বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারা উঠা নামার কারণ।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর সুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—–

(ক) স্থায়ী উপাদান সমূহের ক্ষেত্রে কেবল সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা হয়।

(খ) সহ পরিবর্তন প্রণালী অন্যান্য পদ্ধতির সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর অসুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—-

(ক) সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রয়োগ একটি নির্দিষ্ট সীমিত ক্ষেত্রে আবদ্ধ থাকে। সেই সীমার বাইরে একে প্রয়োগ করা যায় না।

(খ) সহ পরিবর্তন পদ্ধতি পরিবর্তনের পরিমাণগত দিকটিতেই প্রযোজ্য, কোনভাবেই গুণগত দিকটিতে নয়।

প্রশ্ন ১৪। সহ পরিবর্তন পদ্ধতি কাকে বলে ? উদাহরণ সহ লেখো। এই পদ্ধতির চারটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল সহ পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —” কোন ঘটনার পরিবর্তনের সঙ্গে যদি অপর কোন ঘটনার পরিবর্তন হয়, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বিতীয় ঘটনার কারণ বা কার্য, অথবা,ঐ দুটি ঘটনার মধ্যে কোন না কোন প্রকার কার্যকারণ সম্পর্ক থাকবে।”

মিল এর সংজ্ঞাটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে —- 

১। দুটি ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

২। একটি ঘটনার পরিমাণের পরিবর্তনের সঙ্গে অপরটিরও পরিমাণের পরিবর্তন হলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধে সম্পর্কিত।

৩। যদি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনা পরবর্তী ঘটনার কারণ হবে।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ ——

সহ পরিবর্তন  প্রণালীর বাস্তব উদাহরণ —-

উত্তাপ  যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপ বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারা উঠা নামার কারণ।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ—–

(ক) অন্বয়ী এবং ব্যতিরেকী দুটি প্রণালী মূলতঃ অপসারণের প্রণালী। অন্বয়ী প্রণালীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন দৃষ্টান্তে একটি ঘটনাকে অপরিবর্তিতভাবে রাখা হয় এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রাসঙ্গিক ঘটনাগুলিকে বাতিল করতে হয়। ব্যতিরেকী প্রণালীতে ভাববাচক দৃষ্টান্তে উপস্থিত এমন একটি প্রাসঙ্গিক ঘটনাকে অভাববাচক দৃষ্টান্তে সম্পূর্ণ বাদ দিতে হয়। অতএব, যেখানে প্রাসঙ্গিক বা অপ্রাসঙ্গিক দুই ধরণের ঘটনাকে বর্জন করতে হয়, সেখানে অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। যে সব ক্ষেত্রে সহ পরিবর্তন পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়, সে সব ক্ষেত্রে কতকগুলি কারণ আছে, সে গুলিকে অপসারণ করা সম্ভব নয়। মিল এই গুলিকে বলেছেন ‘স্থায়ীকরণ’। যেমন — উত্তাপ , মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, বায়ুর চাপ ইত্যাদি।

(খ) সহ পরিবর্তন প্রণালীর অপর বৈশিষ্ট্য হল, একমাত্র এই প্রণালীকে পরিমাণগত পদ্ধতি বলা হয়। এই প্রণালীর ক্ষেত্রে পরিমাণ বা পরিসংখ্যানের সাহায্য নিতে হয়। এই প্রণালী কারণের গুণগত লক্ষণের পরিবর্তে পরিমাণগত লক্ষণের উপর নির্ভর করে। পরিমাণগত লক্ষণই হল ‘কারণ কার্যের সমান।’

প্রশ্ন ১৫। ” উত্তাপ যতই বৃদ্ধি পায় থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপের বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারা উঠা নামার কারণ।” উপরে উল্লেখিত সিদ্ধান্তটিতে উপনীত হতে প্রয়োগ করা প্রণালীটি কী ? প্রণালীটি ব্যাখ্যা করো ও এই প্রণালীর সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি উল্লেখ করো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল সহ পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —” কোন ঘটনার পরিবর্তনের সঙ্গে যদি অপর কোন ঘটনার পরিবর্তন হয়, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বিতীয় ঘটনার কারণ বা কার্য, অথবা,ঐ দুটি ঘটনার মধ্যে কোন না কোন প্রকার কার্যকারণ সম্পর্ক থাকবে।”

মিল এর সংজ্ঞাটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে —- 

১। দুটি ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

২। একটি ঘটনার পরিমাণের পরিবর্তনের সঙ্গে অপরটিরও পরিমাণের পরিবর্তন হলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধে সম্পর্কিত।

৩। যদি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনা পরবর্তী ঘটনার কারণ হবে।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ ——

সহ পরিবর্তন  প্রণালীর বাস্তব উদাহরণ —-

উত্তাপ   যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপ বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারা উঠা নামার কারণ।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর সুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—–

(ক) স্থায়ী উপাদান সমূহের ক্ষেত্রে কেবল সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা হয়।

(খ) সহ পরিবর্তন প্রণালী অন্যান্য পদ্ধতির সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর অসুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—-

(ক) সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রয়োগ একটি নির্দিষ্ট সীমিত ক্ষেত্রে আবদ্ধ থাকে। সেই সীমার বাইরে একে প্রয়োগ করা যায় না।

(খ) সহ পরিবর্তন পদ্ধতি পরিবর্তনের পরিমাণগত দিকটিতেই প্রযোজ্য, কোনভাবেই গুণগত দিকটিতে নয়।

প্রশ্ন ১৬। “যখন কোন একটি জিনিসের সরবরাহ বৃদ্ধি পায় তখন সেই জিনিসের চাহিদা হ্রাস পায়। যখন কোন একটি জিনিসের সরবরাহ হ্রাস পায় তখন সেই জিনিসের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। সেই জন্য কোন একটি জিনিসের সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে একটি কার্যকারণ সম্পর্ক আছে।” উপরে উল্লেখিত সিদ্ধান্তটিতে উপনীত হওয়া প্রণালীর নাম কী ? প্রণালীর ব্যাখ্যা করো এবং এর সুবিধা ও অসুবিধাগুলো উল্লেখ করো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল সহ পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —” কোন ঘটনার পরিবর্তনের সঙ্গে যদি অপর কোন ঘটনার পরিবর্তন হয়, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বিতীয় ঘটনার কারণ বা কার্য, অথবা,ঐ দুটি ঘটনার মধ্যে কোন না কোন প্রকার কার্যকারণ সম্পর্ক থাকবে।”

মিল এর সংজ্ঞাটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে —- 

১। দুটি ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

২। একটি ঘটনার পরিমাণের পরিবর্তনের সঙ্গে অপরটিরও পরিমাণের পরিবর্তন হলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধে সম্পর্কিত।

৩। যদি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনা পরবর্তী ঘটনার কারণ হবে।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ ——

সহ পরিবর্তন প্রণালীর বাস্তব উদাহরণ —-

উত্তাপ   যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপ বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারা উঠা নামার কারণ।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর সুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—–

(ক) স্থায়ী উপাদান সমূহের ক্ষেত্রে কেবল সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা হয়।

(খ) সহ পরিবর্তন প্রণালী অন্যান্য পদ্ধতির সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর অসুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—-

(ক) সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রয়োগ একটি নির্দিষ্ট সীমিত ক্ষেত্রে আবদ্ধ থাকে। সেই সীমার বাইরে একে প্রয়োগ করা যায় না।

(খ) সহ পরিবর্তন পদ্ধতি পরিবর্তনের পরিমাণগত দিকটিতেই প্রযোজ্য, কোনভাবেই গুণগত দিকটিতে নয়।

প্রশ্ন ১৭। বাস্তব উদাহরণ সহ সহ পরিবর্তন প্রণালীর ব্যাখ্যা করো। এই প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি বা উপযোগিতা আলোচনা করো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল সহ পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —” কোন ঘটনার পরিবর্তনের সঙ্গে যদি অপর কোন ঘটনার পরিবর্তন হয়, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বিতীয় ঘটনার কারণ বা কার্য, অথবা,ঐ দুটি ঘটনার মধ্যে কোন না কোন প্রকার কার্যকারণ সম্পর্ক থাকবে।”

মিল এর সংজ্ঞাটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে —- 

১। দুটি ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

২। একটি ঘটনার পরিমাণের পরিবর্তনের সঙ্গে অপরটিরও পরিমাণের পরিবর্তন হলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধে সম্পর্কিত।

৩। যদি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনা পরবর্তী ঘটনার কারণ হবে।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ ——

সহ পরিবর্তন  প্রণালীর বাস্তব উদাহরণ —-

উত্তাপ   যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপ বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারা উঠা নামার কারণ।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর সুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—–

(ক) স্থায়ী উপাদান সমূহের ক্ষেত্রে কেবল সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা হয়।

(খ) সহ পরিবর্তন প্রণালী অন্যান্য পদ্ধতির সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর অসুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—-

(ক) সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রয়োগ একটি নির্দিষ্ট সীমিত ক্ষেত্রে আবদ্ধ থাকে। সেই সীমার বাইরে একে প্রয়োগ করা যায় না।

(খ) সহ পরিবর্তন পদ্ধতি পরিবর্তনের পরিমাণগত দিকটিতেই প্রযোজ্য, কোনভাবেই গুণগত দিকটিতে নয়।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ—–

(ক) অন্বয়ী এবং ব্যতিরেকী দুটি প্রণালী মূলতঃ অপসারণের প্রণালী। অন্বয়ী প্রণালীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন দৃষ্টান্তে একটি ঘটনাকে অপরিবর্তিতভাবে রাখা হয় এবং অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রাসঙ্গিক ঘটনাগুলিকে বাতিল করতে হয়। ব্যতিরেকী প্রণালীতে ভাববাচক দৃষ্টান্তে উপস্থিত এমন একটি প্রাসঙ্গিক ঘটনাকে অভাববাচক দৃষ্টান্তে সম্পূর্ণ বাদ দিতে হয়। অতএব, যেখানে প্রাসঙ্গিক বা অপ্রাসঙ্গিক দুই ধরণের ঘটনাকে বর্জন করতে হয়, সেখানে অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। যে সব ক্ষেত্রে সহ পরিবর্তন পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়, সে সব ক্ষেত্রে কতকগুলি কারণ আছে, সে গুলিকে অপসারণ করা সম্ভব নয়। মিল এই গুলিকে বলেছেন ‘স্থায়ীকরণ’। যেমন — উত্তাপ , মাধ্যাকর্ষণ শক্তি, বায়ুর চাপ ইত্যাদি।

(খ) সহ পরিবর্তন প্রণালীর অপর বৈশিষ্ট্য হল, একমাত্র এই প্রণালীকে পরিমাণগত পদ্ধতি বলা হয়। এই প্রণালীর ক্ষেত্রে পরিমাণ বা পরিসংখ্যানের সাহায্য নিতে হয়। এই প্রণালী কারণের গুণগত লক্ষণের পরিবর্তে পরিমাণগত লক্ষণের উপর নির্ভর করে। পরিমাণগত লক্ষণই হল ‘কারণ কার্যের সমান।’

প্রশ্ন ১৮। একটি পূর্ববর্তী ঘটনার হ্রাস – বৃদ্ধির সঙ্গে যদি অনুবর্তী ঘটনার হ্রাস- বৃদ্ধি হয় তাহলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধের দ্বারা আবদ্ধ হয়।” অপসারণের কোন সূত্রের ওপর এই প্রণালী প্রতিষ্ঠিত ? এই প্রণালীর দুটি সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল সহ পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —” কোন ঘটনার পরিবর্তনের সঙ্গে যদি অপর কোন ঘটনার পরিবর্তন হয়, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বিতীয় ঘটনার কারণ বা কার্য, অথবা,ঐ দুটি ঘটনার মধ্যে কোন না কোন প্রকার কার্যকারণ সম্পর্ক থাকবে।”

মিল এর সংজ্ঞাটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে —- 

১। দুটি ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

২। একটি ঘটনার পরিমাণের পরিবর্তনের সঙ্গে অপরটিরও পরিমাণের পরিবর্তন হলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধে সম্পর্কিত।

৩। যদি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনা পরবর্তী ঘটনার কারণ হবে।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ ——

সহ পরিবর্তন  প্রণালীর বাস্তব উদাহরণ —-

উত্তাপ যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপ বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারা উঠা নামার কারণ।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর সুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—–

(ক) স্থায়ী উপাদান সমূহের ক্ষেত্রে কেবল সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা হয়।

(খ) সহ পরিবর্তন প্রণালী অন্যান্য পদ্ধতির সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর অসুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—-

(ক) সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রয়োগ একটি নির্দিষ্ট সীমিত ক্ষেত্রে আবদ্ধ থাকে। সেই সীমার বাইরে একে প্রয়োগ করা যায় না।

(খ) সহ পরিবর্তন পদ্ধতি পরিবর্তনের পরিমাণগত দিকটিতেই প্রযোজ্য, কোনভাবেই গুণগত দিকটিতে নয়।

প্রশ্ন ১৯। পরিশেষ প্রণালী কাকে বলে ? এই প্রণালীকে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ রূপ বা সংস্করণ বলা হয় কি ? ব্যাখ্যা করো।

অথবা, 

পরিশেষ প্রণালী সম্বন্ধে মিলের সংজ্ঞাটি লেখো।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল পরিশেষ প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে করেছেন —- ” আগমনের মাধ্যমে আগেই যদি জানা থাকে, কোন ঘটনার কোন অংশ পূর্ববর্তী ঘটনার অংশের কার্য, তাহলে সেই ঘটনার অংশটিকে বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকবে,তা হল অবশিষ্ট পূর্ববর্তী ঘটনার কার্য।”

মিল এর এই প্রণালীটি যে অপসারণের সূত্রের উপর নির্ভর করে, সেটা হল —–

“কোন কিছুকে যদি একটি ঘটনার কারণ বলে জানা যায়, তাহলে তা অন্য ঘটনার কারণ হবে না।” এই প্রণালী প্রয়োগের দুটি শর্ত আছে। 

এগুলি হল —-

১। মিশ্রকারণ বা সমগুণ সম্পন্ন কারণ।

২। কার্য বা কারণের অংশ সম্পর্কে জ্ঞান আগমনাত্মক পদ্ধতি দ্বারা পেতে হবে অবশিষ্ট কার্যের কারণ নির্ণয়ে এই প্রণালী প্রয়োগ করা হয় বলে একে পরিশিষ্ট প্রণালী বলে।

পরিশেষ প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ —–

পূর্ববর্তী ঘটনাঅনুবর্তী ঘটনা
ABCabc
BCac

∴ A হল ‘a’ এর কারণ 

অবশিষ্ট ‘a’ হল ‘A’ এর কার্য।

বাস্তব উদাহরণ —-

একটি চুন ভর্তি টিনের ( মিশ্র বিষয় , টিন+চুন) ওজন 40কিঃ গ্ৰাঃ। আমরা পূর্বেই জেনেছি যে ঐ টিনে 35 কিঃ গ্ৰাঃ চুন আছে। পরিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করে আমরা পারি যে, টিনের ওজন 40 কিঃ গ্ৰাঃ _ 35 কিঃ গ্ৰাঃ= 5 কিঃ গ্ৰাঃ।

পরিশেষ প্রণালীকে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ সংস্করণ বা সংশোধিত রূপ বলা হয়। কারণ, দুটি প্রণালীর অন্তর্নিহিত নিয়ম একটি এবং দুটির মধ্যে সাদৃশ আছে,তা স্বীকার করতেই হবে। এই দুটি প্রণালীর প্রতীকী রূপ পাশাপাশি রাখলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে।

এর থেকে দেখা গেল, উভয় প্রণালীতে দুটি করে দৃষ্টান্ত থাকে। দুটি প্রণালীতে একটি ভাববাচক অপরটি অভাববাচক। দুটি প্রণালীর মধ্যে একটি বিষয়ে পার্থক্য আছে। কিন্তু এসব মিল থাকা সত্ত্বেও পরিশেষ প্রণালীকে ব্যতিরেকী প্রণালীর সংস্করণ বলা যায় না। 

কারণ, এদের মধ্যে পার্থক্য আছে ——

(ক) ব্যতিরেকী প্রণালীতে অভাববাচক দৃষ্টান্তটিকে পরীক্ষা – নিরীক্ষর মাধ্যমে সংগ্ৰহ করা হয়। কিন্তু পরিশেষ প্রণালীতে অভাববাচক দৃষ্টান্তটি আগমন অনুমান থেকেই আগেই সংগ্ৰহ করা হয়।

(খ) এই দুটি প্রণালীর ক্ষেত্রে অপসারণের সূত্র ভিন্ন। অতএব, এই পার্থক্য থাকার জন্য পরিশেষ প্রণালীকে ব্যতিরেকী প্রণালীর বিশেষ সংস্করণ বা সংশোধিত রূপ বলা যায় না।

প্রশ্ন ২০। অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা ও দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো। এই অসুবিধাগুলি কীভাবে দূর করা যায় ?

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অতি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এই প্রণালী সহজ ও সরল পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রধানতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলে পরীক্ষণের পদ্ধতির তুলনায় এর প্রয়োগক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত। তাই অন্বয়ী পদ্ধতির পরিসর অতি ব্যাপক।

(খ) এই প্রণালী দ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্যে এবং কার্য থেকে কারণে যেতে পারি। নিরীক্ষণের পদ্ধতি হওয়ার অন্বয়ী পদ্ধতির সুবিধা আছে।

অন্বয়ী প্রণালীর ক্রটিগুলি দূর করা সম্ভব —–

(ক) বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে অন্বয়ী পদ্ধতির অসুবিধা দূর করা যায়। অন্বয়ী পদ্ধতি নানা কারণবাদজনিত দোষে দুষ্ট। দৃষ্টান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি করে যদি দেখা যায় যে অন্বেষণীয় ঘটনা উপস্থিত আছে এবং বহু সংখ্যক দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ে মিল থাকে , তাহলে সেই মিল থাকা বিষয়টি অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

(খ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী অন্বয়ী প্রণালীর উন্নতর রূপ। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য একটি ভাববাচক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ এবং অভাববাচক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়, যে সব দৃষ্টান্তে আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিত থাকে। সদর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি উপস্থিত থাকে এবং দৃষ্টান্ত গুলির মধ্যে একটি বিষয়ে মিল থাকে। নঞর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে এবং সদর্থক দৃষ্টান্তের মিল থাকা বিষয়টি অনুপস্থিত থাকে। কিন্তু, মিল থাকা ঘটনা অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ বা কার্য হবে। অতএব মিশ্র অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগ করে নানা কারণ বাদের সম্ভাবনা বা অপর্যবেক্ষণজনিত দোষের সম্ভাবনা দূর করা যাবে।

প্রশ্ন ২১। পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি বলতে কী বোঝ ? এই পদ্ধতির সঙ্গে জড়িত অপসারণের তিনটি সূত্র উল্লেখ করো।

উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক আগমনের উদ্দেশ্য হলো, দুটি ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যাতে একটি যথার্থ সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। তর্কবিজ্ঞানী মিল এই সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচটি পদ্ধতি উল্লেখ করেছেন। মিলের মতে এসব পদ্ধতি অবলম্বন করে নিরীক্ষণ ও পরীক্ষণের ভিত্তিতে জটিল ঘটনার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কার ও প্রমাণ করা যায়। এই পদ্ধতিগুলিকেই ‘ পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতি ‘ বা আরোহী পদ্ধতি বা কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয়ের পদ্ধতি বলে। এই পদ্ধতিগুলো হল নিম্নরূপ ——

(ক) অন্বয়ী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(খ) ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(গ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি বা প্রণালী।

(ঘ) সহ- পরিবর্তন পদ্ধতি বা প্রণালী।

(ঙ) পরিশেষ পদ্ধতি বা প্রণালী।

পরীক্ষণমূলক অনুসন্ধান পদ্ধতির সঙ্গে জড়িত অপসারণের তিনটি সূত্র হল—-

(ক) কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলে যদি অনুবর্তী কোন ঘটনা বা কার্য অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণের অংশ হতে পারে না।

(খ) কার্যের কোন ক্ষতি না করে যদি পূর্ববর্তী ঘটনার কোন অংশ বাদ না দেওয়া যায়, তাহলে সেই অংশ কার্যটির কারণ বা কারণের অংশ হবে।

(গ) পূর্ববর্তী কোন ঘটনার হ্রাস বৃদ্ধির সঙ্গে যদি অনুবর্তী কোন ঘটনার হ্রাস বৃদ্ধি হয়, তাহলে ঘটনা কার্যকারণ সম্পর্কে সম্পর্কিত হবে।

প্রশ্ন ২২। পরিশেষ পদ্ধতি বলতে কী বোঝ ? পরিশেষ পদ্ধতিটি গ্ৰহণযোগ্য বা বৈধ কী ?

উত্তরঃ তর্কবিদ মিল পরিশেষ প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —– ” আগমনের মাধ্যমে আগেই যদি জানা থাকে, কোন ঘটনার কোন অংশ পূর্ববর্তী ঘটনার অংশের কার্য, তাহলে সেই ঘটনার অংশটিকে বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকবে, তা হল অবশিষ্ট পূর্ববর্তী ঘটনার কার্য।”

তর্কবিদ মেলোন পরিশেষ পদ্ধতির সংজ্ঞা এভাবে দিয়েছেন —– মিশ্র স্বভাব বা জটিল কার্যের যে অংশ পূর্ব জ্ঞাত কোন কারণের দ্বারা ব্যাখ্যা করতে না পারে, তার কারণ নির্ণয়ের জন্য এখন পর্যন্ত না জানা কোন কারণের অনুসন্ধান করতে হবে।

পরিশেষ প্রণালীটি অপসারণের চতুর্থ সূত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত। সূত্রটি হল— একটি ঘটনার কারণ বলে জানা কোন কারণই অন্য একটি ঘটনার কারণ নয়।

মিলের পরিশেষ প্রণালীর বৈশিষ্ট্য বা লক্ষণগুলি হল নিম্নরূপ —–

(ক) পরিশেষ প্রণালীকে বিশুদ্ধ আগমনাত্মক প্রণালী বলা যায় না। এটি একটি আগমন – নিগমন প্রণালী। আবার পরিশেষ প্রণালীতে আগমন ব্যাপক আশ্রয় বাক্য থেকে কম ব্যাপক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হয়।

(খ) পরিশেষ প্রণালীর সিদ্ধান্ত আশ্রয়বাক্য থেকে বৈধভাবে নিঃসৃত হয় না। এমনও হতে পারে যে, আশ্রয়বাক্য সত্য কিন্তু সিদ্ধান্ত মিথ্যা, যা বৈধ অনুমানের নিয়ম নয়।

পরিশেষ প্রণালীকে এইভাবে ব্যাখ্যা করতে পারি— যে বস্তু বা ঘটনা কোন একটি কার্যের কারণ,সে অন্য কার্যের কারণ নয়। অর্থাৎ জটিল কোন ঘটনার কার্যকারণ আলোচনা করতে কার্যের যে অংশ কারণ হিসাবে জানা যায়, কার্যের অবশিষ্ট অংশ অগ্ৰবর্তী ঘটনার বাকি থাকা অংশের ফল হিসাবে ধরা হয়।

উদাহরণ হিসাবে বলা যায় —— একটি টিন ভর্তি চুনের ওজন 40 গ্ৰাম। ঐ টিনে 35 কিঃ গ্ৰাঃ চুন আছে। পরিশেষ পদ্ধতি প্রয়োগ করে আমরা বলতে পারি যে, টিনের ওজন 40 কিঃ গ্ৰাঃ _35 কিঃ গ্ৰাঃ=5 কিঃ গ্ৰাঃ।

মেলোন এই প্রণালী ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এই প্রণালীকে অজ্ঞাত কারণ আবিষ্কারের প্রণালী বা সংকেত বলেছেন। এই প্রণালী দ্বারা মিশ্র কার্যের কোন অংশ জ্ঞাত কোন কারণের দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না, তার ব্যাখ্যার জন্য কোন অজ্ঞাত প্রকল্প তৈরি করতে হয়।

উপরোক্ত মন্তব্য থেকে আমরা বলতে পারি, মিশ্র স্বভাবের কার্য একটির কোন কোন অংশের কারণ পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে যদি জানা থাকে তাহলে তার অবশিষ্ট্য কারণ কী হয় তা অন্য প্রণালী দ্বারা নির্ণয় করতে পারি না। এই ক্ষেত্রে পরিশেষ প্রণালী একমাত্র গ্ৰহণযোগ্য বা অবলম্বন।

প্রশ্ন ২৩। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি কাকে বলে ? 

অথবা, 

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী কাকে বলে ? উদাহরণ সহ লেখো। এই প্রণালীর দুটি সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ করো।

অথবা, 

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর একটি বাস্তব উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন, ” আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত এমন দুই বা বেশি ভাববাচক দৃষ্টান্তে যদি একটি মাত্র ব্যাপার সমভাবে উপস্থিত থাকে, এবং আলোচ্য ঘটনাটি অনুপস্থিত, এমন দুই বা তার চেয়ে বেশি অভাববাচক দৃষ্টান্তে ঐ ব্যাপারটি সমভাবে অনুপস্থিত থাকে, তাহলে ঐ বিশেষ ব্যাপারটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

মিলের এই প্রণালীটি অপসারণের দুটি সূত্রের উপর নির্ভরশীল ——

(ক) কোন পূর্ববর্তী ঘটনা ঘটলেও যদি অনুবর্তী কোন ঘটনা না ঘটে তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

(খ) কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলেও যদি কোন অনুবর্তী না ঘটনা অপসারিত না হয় তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতির সাংকেতিক উদাহরণ ——

বাস্তব উদাহরণ —- যে সমস্ত অঞ্চলে ম্যালেরিয়া জ্বর হয়, সে সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশার উপদ্রব বেশি, আর যে সব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া নেই, সেই সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশা নেই। পর্যবেক্ষণ থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করে, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রয়োগ করা গেল যে,অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের সঙ্গে ম্যালেরিয়া জ্বরের কার্যকারণ সম্পর্ক আছে।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পরীক্ষণের সুবিধা থাকে না, সেখানে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যেতে পারে।

(খ) এই প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়ার পর্যবেক্ষণের সমস্ত সুবিধাই এতে পাওয়া যায়।

(গ) এই প্রণালীদ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্য অনুমান করতে পারি, তেমনি কার্য থেকে কারণও অনুমান করতে পারি।

(ঘ) পরীক্ষণমূলক প্রণালী, যেমন —– ব্যতিরেকী প্রণালী যেখানে প্রয়োগ করা যায় না, সেখানে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করা যায়।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—–

(ক) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়াতে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। যদি সম্ভাব্যতার মাত্রা খুব বেশি থাকে।

(খ) অপর্যাপ্ত বিশ্লেষণ এবং নানা কারণবাদের সমস্যা থেকে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

(গ) এই প্রণালীর দ্বারা কার্যকারণ সম্পর্কের সঙ্গে সহাবস্থানের পার্থক্য নির্ণয় করতে পারা যায় না।

(ঘ) এই প্রণালী পর্যবেক্ষণভিত্তিক হওয়াতে বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করে অপ্রয়োজনীয় বর্জনের কাজটি শক্ত হয়।

প্রশ্ন ২৪। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতির উদাহরণ সহ সংজ্ঞা লেখো। এই প্রণালীকে কেন দ্বৈত অন্বয়ী পদ্ধতি বলা হয় ?

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন, ” আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত এমন দুই বা বেশি ভাববাচক দৃষ্টান্তে যদি একটি মাত্র ব্যাপার সমভাবে উপস্থিত থাকে, এবং আলোচ্য ঘটনাটি অনুপস্থিত, এমন দুই বা তার চেয়ে বেশি অভাববাচক দৃষ্টান্তে ঐ ব্যাপারটি সমভাবে অনুপস্থিত থাকে, তাহলে ঐ বিশেষ ব্যাপারটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

মিলের এই প্রণালীটি অপসারণের দুটি সূত্রের উপর নির্ভরশীল ——

(ক) কোন পূর্ববর্তী ঘটনা ঘটলেও যদি অনুবর্তী কোন ঘটনা না ঘটে তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

(খ) কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলেও যদি কোন অনুবর্তী না ঘটনা অপসারিত না হয় তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতির সাংকেতিক উদাহরণ ——

বাস্তব উদাহরণ —- যে সমস্ত অঞ্চলে ম্যালেরিয়া জ্বর হয়, সে সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশার উপদ্রব বেশি, আর যে সব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া নেই, সেই সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশা নেই। পর্যবেক্ষণ থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করে, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রয়োগ করা গেল যে,অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের সঙ্গে ম্যালেরিয়া জ্বরের কার্যকারণ সম্পর্ক আছে।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পরীক্ষণের সুবিধা থাকে না, সেখানে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যেতে পারে।

(খ) এই প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়ার পর্যবেক্ষণের সমস্ত সুবিধাই এতে পাওয়া যায়।

(গ) এই প্রণালীদ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্য অনুমান করতে পারি, তেমনি কার্য থেকে কারণও অনুমান করতে পারি।

(ঘ) পরীক্ষণমূলক প্রণালী, যেমন —– ব্যতিরেকী প্রণালী যেখানে প্রয়োগ করা যায় না, সেখানে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করা যায়।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—–

(ক) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়াতে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। যদি সম্ভাব্যতার মাত্রা খুব বেশি থাকে।

(খ) অপর্যাপ্ত বিশ্লেষণ এবং নানা কারণবাদের সমস্যা থেকে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

(গ) এই প্রণালীর দ্বারা কার্যকারণ সম্পর্কের সঙ্গে সহাবস্থানের পার্থক্য নির্ণয় করতে পারা যায় না।

(ঘ) এই প্রণালী পর্যবেক্ষণভিত্তিক হওয়াতে বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করে অপ্রয়োজনীয় বর্জনের কাজটি শক্ত হয়।

 ” যে সব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া জ্বর হয়, সে সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশার উপদ্রব বেশি, আর যে সব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া নেই, সেই সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশা নেই। পর্যবেক্ষণ থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করে, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত করা গেল যে,অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের সঙ্গে ম্যালেরিয়া জ্বরের কার্যকারণ সম্পর্ক আছে।”

এই প্রণালীকে ‘ দ্বৈত অন্বয়ী প্রণালী’ বলা হয়। কারণ, অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রকৃত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে,এই প্রণালী আসলে অন্বয়ী প্রণালীর প্রকারভেদ। এই প্রণালীতে সদর্থক দৃষ্টান্তের উপস্থিতির অন্বয় দ্বারা কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা হয়। সুতরাং একে দ্বৈত অন্বয়ী প্রণালী বলা হয়। এখানে প্রয়োগ হওয়া পরীক্ষণের সম্ভাব্য পরিমাণের প্রতি লক্ষ্য রেখে একে পরোক্ষ ব্যতিরেকী প্রণালী বলা হয়।

প্রশ্ন ২৪। মিশ্র অন্বয়ী প্রণালীর বাস্তব উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ যুক্তিবিদ মিল মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন, ” আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত এমন দুই বা বেশি ভাববাচক দৃষ্টান্তে যদি একটি মাত্র ব্যাপার সমভাবে উপস্থিত থাকে, এবং আলোচ্য ঘটনাটি অনুপস্থিত, এমন দুই বা তার চেয়ে বেশি অভাববাচক দৃষ্টান্তে ঐ ব্যাপারটি সমভাবে অনুপস্থিত থাকে, তাহলে ঐ বিশেষ ব্যাপারটি আলোচ্য ঘটনার কারণ অথবা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

মিলের এই প্রণালীটি অপসারণের দুটি সূত্রের উপর নির্ভরশীল ——

(ক) কোন পূর্ববর্তী ঘটনা ঘটলেও যদি অনুবর্তী কোন ঘটনা না ঘটে তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

(খ) কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলেও যদি কোন অনুবর্তী না ঘটনা অপসারিত না হয় তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতির সাংকেতিক উদাহরণ ——

বাস্তব উদাহরণ —- যে সমস্ত অঞ্চলে ম্যালেরিয়া জ্বর হয়, সে সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশার উপদ্রব বেশি, আর যে সব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া নেই, সেই সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশা নেই। পর্যবেক্ষণ থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করে, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রয়োগ করা গেল যে,অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের সঙ্গে ম্যালেরিয়া জ্বরের কার্যকারণ সম্পর্ক আছে।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পরীক্ষণের সুবিধা থাকে না, সেখানে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যেতে পারে।

(খ) এই প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়ার পর্যবেক্ষণের সমস্ত সুবিধাই এতে পাওয়া যায়।

(গ) এই প্রণালীদ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্য অনুমান করতে পারি, তেমনি কার্য থেকে কারণও অনুমান করতে পারি।

(ঘ) পরীক্ষণমূলক প্রণালী, যেমন —– ব্যতিরেকী প্রণালী যেখানে প্রয়োগ করা যায় না, সেখানে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করা যায়।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—–

(ক) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়াতে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। যদি সম্ভাব্যতার মাত্রা খুব বেশি থাকে।

(খ) অপর্যাপ্ত বিশ্লেষণ এবং নানা কারণবাদের সমস্যা থেকে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

(গ) এই প্রণালীর দ্বারা কার্যকারণ সম্পর্কের সঙ্গে সহাবস্থানের পার্থক্য নির্ণয় করতে পারা যায় না।

(ঘ) এই প্রণালী পর্যবেক্ষণভিত্তিক হওয়াতে বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহ করে অপ্রয়োজনীয় বর্জনের কাজটি শক্ত হয়।

প্রশ্ন ২৬। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতির একটি বাস্তব উদাহরণ দাও। এই পদ্ধতিকে কেন দ্বৈত অন্বয়ী পদ্ধতি বলা হয় ?

উত্তরঃ ” যে সব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া জ্বর হয়, সে সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশার উপদ্রব বেশি, আর যে সব অঞ্চলে ম্যালেরিয়া নেই, সেই সব অঞ্চলে অ্যানোফিলিস মশা নেই। পর্যবেক্ষণ থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করে, মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত করা গেল যে,অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের সঙ্গে ম্যালেরিয়া জ্বরের কার্যকারণ সম্পর্ক আছে।”

এই প্রণালীকে ‘ দ্বৈত অন্বয়ী প্রণালী’ বলা হয়। কারণ, অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী প্রকৃত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে,এই প্রণালী আসলে অন্বয়ী প্রণালীর প্রকারভেদ। এই প্রণালীতে সদর্থক দৃষ্টান্তের উপস্থিতির অন্বয় দ্বারা কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা হয়। সুতরাং একে দ্বৈত অন্বয়ী প্রণালী বলা হয়। এখানে প্রয়োগ হওয়া পরীক্ষণের সম্ভাব্য পরিমাণের প্রতি লক্ষ্য রেখে একে পরোক্ষ ব্যতিরেকী প্রণালী বলা হয়।

প্রশ্ন ২৭। তোমার নিজের ভাষায় ব্যতিরেকী প্রণালীর সংজ্ঞা দাও। এর একটি বাস্তব উদাহরণ দাও। অসাবধানভাবে এই প্রণালী প্রয়োগ করলে কীভাবে একটি কাকতালীয় দোষে দূষিত হয়, একটি উদাহরণ সহযোগে দেখাও।

উত্তরঃ যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

ব্যতিরেকী প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ —–

বাস্তব উদাহরণ —

একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে একটি ঘন্টা বাজানো হলো। ঘন্টার শব্দ শোনা গেল। ব্যতিরেকী প্রণালী দুই রকমভাবে প্রয়োগ করা যায়। কখনও কখনও দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে পার্থক্য থাকা বিষয়টি অপসারণ করে। আবার, কখনও কখনও সেই বিষয়টি মুক্ত করে।

বাস্তব উদাহরণ: একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে ঘন্টা বাজানো হল। ঘন্টার শব্দ শোনা গেল। অন্যদিকে একটি বায়ুশূন্য পাত্রে যদি ঘন্টাটি বাজানো হয়, তাহলে কোন শব্দ শোনা যাবে না। এর অর্থ এই যে, বায়ুর উপস্থিতি শব্দ শোনার কারণ।

ব্যতিরেকী প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ —-

(ক) এই প্রণালীতে দুটি মাত্র দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়,যাদের মধ্যে একটি মাত্র ঘটনা ছাড়া আর সব বিষয়েই মিল থাকে। এরকম দুটি দৃষ্টান্ত — একটি সদর্থক, অপরটি নঞর্থক, কেবল পরীক্ষণের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব। কারণ পরীক্ষণ প্রক্রিয়ার ঘটনাগুলির উপরে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। কারণ, দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহের জন্য পরীক্ষণই একমাত্র মাধ্যম। অতএব ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রধানতঃ পরীক্ষণের পদ্ধতি। এই প্রণালীকে অসতর্কভাবে প্রয়োগ করলে ‘ কাকতালীয় দোষ ঘটে ‘।  উদাহরণ—

আকাশে ধূমকেতু ছিল না এবং রাজাও মারা যাননি।

আকাশে ধূমকেতু দেখা দিল এবং রাজাও মারা গেলেন।

আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর কারণ।

(খ) এই প্রণালী যখন পরীক্ষণ ভিত্তিক হয়, তখন সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়। অন্বয়ী প্রণালী যে কার্যকারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়, ব্যতিরেকী প্রণালী তাকে প্রমাণ করে। অতএব মিলের মতে সব প্রণালীর মধ্যে ব্যতিরেকী প্রণালী শ্রেষ্ঠতম।

ব্যতিরেকী প্রণালীকে অসতর্কভাবে প্রয়োগ করলে কাকতালীয় ন্যায় দোষ (Fallacy of posthoc ergo propter hoc) ঘটে। ‘ একটি ঘটনার পরে অপর একটি ঘটনা ঘটেছে, অতএব,প্রথম ঘটনাটি দ্বিতীয় ঘটনার কারণ ‘ এমন সিদ্ধান্ত করলে এই দোষ ঘটে। যেমন—- 

আকাশে ধূমকেতু ছিল না এবং রাজাও মারা যাননি।

আকাশে ধূমকেতু দেখা দিল এবং রাজাও মারা গেলেন।

আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর কারণ এই যুক্তিতে কাকতালীয় দোষ ঘটে।

তবে এই প্রণালী যখন পরীক্ষণ ভিত্তিক হয়, তখন সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়। অন্যান্য প্রণালীর তুলনায় এই প্রণালীর গুরুত্ব হলো এখানে যে, সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে, আমরা কার্যকারণ সম্বন্ধে সঠিক সিদ্ধান্ত করতে পারি। অন্বয়ী প্রণালী যে কার্যকারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়, ব্যতিরেকী প্রণালী তাকে প্রমাণ করে। সুতরাং মিলের মতে,সব প্রণালীর মধ্যে ব্যতিরেকী প্রণালী শ্রেষ্ঠতম ।

প্রশ্ন ২৮। মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি সুবিধা ও দুটি অসুবিধা লেখো। এই প্রণালীটি অপসারণের কোন দুটি সূত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত ?

উত্তরঃ যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

ব্যতিরেকী পদ্ধতির দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) ব্যতিরেকী প্রণালী খুব সহজ ও সরল । কারণ এখানে কার্যকারণ নির্ণয়ের জন্য দুটি দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়।

(খ) ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পরীক্ষণ নির্ভর হওয়ায় সিদ্ধান্ত প্রায় নিশ্চিত হয়। 

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—–

(ক) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়াতে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। যদি সম্ভাব্যতার মাত্রা খুব বেশি থাকে।

(খ) অপর্যাপ্ত বিশ্লেষণ এবং নানা কারণবাদের সমস্যা থেকে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী দুটি অপসারণের সূত্রের উপর নির্ভরশীল। এইগুলি হলো—–

(ক) কোন পূর্ববর্তী ঘটনা ঘটলেও যদি কোন অনুবর্তী ঘটনা না ঘটে তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

(খ) কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলেও যদি কোন অনুবর্তী ঘটনা অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

প্রশ্ন ২৯। অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা লেখো। এই প্রণালীতে থাকা অসুবিধাগুলি কীভাবে দূর করা যায় লেখো।

উত্তরঃ অন্বয়ী প্রণালীর দুটি সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অতি ব্যাপক ও বিস্তৃত। এই প্রণালী সহজ ও সরল পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রধানতঃ নিরীক্ষণের পদ্ধতি বলে পরীক্ষণের পদ্ধতির তুলনায় এর প্রয়োগক্ষেত্র অধিক বিস্তৃত। তাই অন্বয়ী পদ্ধতির পরিসর অতি ব্যাপক।

(খ) এই প্রণালী দ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্যে এবং কার্য থেকে কারণে যেতে পারি। নিরীক্ষণের পদ্ধতি হওয়ার অন্বয়ী পদ্ধতির সুবিধা আছে।

অন্বয়ী প্রণালীর ক্রটিগুলি দূর করা সম্ভব —–

(ক) বেশি সংখ্যক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে অন্বয়ী পদ্ধতির অসুবিধা দূর করা যায়। অন্বয়ী পদ্ধতি নানা কারণবাদজনিত দোষে দুষ্ট। দৃষ্টান্তের সংখ্যাবৃদ্ধি করে যদি দেখা যায় যে অন্বেষণীয় ঘটনা উপস্থিত আছে এবং বহু সংখ্যক দৃষ্টান্তের মধ্যে মাত্র একটি বিষয়ে মিল থাকে , তাহলে সেই মিল থাকা বিষয়টি অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

(খ) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী অন্বয়ী প্রণালীর উন্নতর রূপ। অন্বয়ী ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য একটি ভাববাচক দৃষ্টান্ত গুচ্ছ এবং অভাববাচক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়, যে সব দৃষ্টান্তে আলোচ্য ঘটনাটি উপস্থিত কিংবা অনুপস্থিত থাকে। সদর্থক দৃষ্টান্ত গুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি উপস্থিত থাকে এবং দৃষ্টান্ত গুলির মধ্যে একটি বিষয়ে মিল থাকে। নঞর্থক দৃষ্টান্তগুচ্ছে অন্বেষণীয় ঘটনাটি অনুপস্থিত থাকে এবং সদর্থক দৃষ্টান্তের মিল থাকা বিষয়টি অনুপস্থিত থাকে। কিন্তু, মিল থাকা ঘটনা অন্বেষণীয় ঘটনার কারণ বা কার্য হবে। অতএব মিশ্র অন্বয়ী প্রণালী প্রয়োগ করে নানা কারণ বাদের সম্ভাবনা বা অপর্যবেক্ষণজনিত দোষের সম্ভাবনা দূর করা যাবে।

প্রশ্ন ৩০। মিলের দেওয়া ব্যতিরেকী পদ্ধতির সূত্রটি ব্যাখ্যা করো। এই পদ্ধতিকে ব্যতিরেকী বলার কারণ কী ?

উত্তরঃ যুক্তি বিজ্ঞানী মিল ব্যতিরেকী প্রণালীর সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —- ” যদি আলোচ্য ঘটনার একটি ভাববাচক দৃষ্টান্তে এবং একটি অভাববাচক দৃষ্টান্তে কেবল মাত্র এমন পার্থক্য থাকে যে, একটি ঘটনা, যা প্রথম ক্ষেত্রে আছে, তা দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নেই, তাহলে ঐ বিশেষ ঘটনাটি আলোচ্য ঘটনার কার্য বা কারণ বা কারণের অপরিহার্য অংশ হবে।”

ব্যতিরেকী প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ —–

বাস্তব উদাহরণ —

একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে একটি ঘন্টা বাজানো হলো। ঘন্টার শব্দ শোনা গেল। ব্যতিরেকী প্রণালী দুই রকমভাবে প্রয়োগ করা যায়। কখনও কখনও দৃষ্টান্ত দুটির মধ্যে পার্থক্য থাকা বিষয়টি অপসারণ করে। আবার, কখনও কখনও সেই বিষয়টি মুক্ত করে।

বাস্তব উদাহরণ: একটি বায়ুপূর্ণ পাত্রে ঘন্টা বাজানো হল। ঘন্টার শব্দ শোনা গেল। অন্যদিকে একটি বায়ুশূন্য পাত্রে যদি ঘন্টাটি বাজানো হয়, তাহলে কোন শব্দ শোনা যাবে না। এর অর্থ এই যে, বায়ুর উপস্থিতি শব্দ শোনার কারণ।

ব্যতিরেকী প্রণালীর বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ —-

(ক) এই প্রণালীতে দুটি মাত্র দৃষ্টান্তের প্রয়োজন হয়,যাদের মধ্যে একটি মাত্র ঘটনা ছাড়া আর সব বিষয়েই মিল থাকে। এরকম দুটি দৃষ্টান্ত — একটি সদর্থক, অপরটি নঞর্থক, কেবল পরীক্ষণের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব। কারণ পরীক্ষণ প্রক্রিয়ার ঘটনাগুলির উপরে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। কারণ, দৃষ্টান্ত সংগ্ৰহের জন্য পরীক্ষণই একমাত্র মাধ্যম। অতএব ব্যতিরেকী পদ্ধতি প্রধানতঃ পরীক্ষণের পদ্ধতি। এই প্রণালীকে অসতর্কভাবে প্রয়োগ করলে ‘ কাকতালীয় দোষ ঘটে ‘।  উদাহরণ—

 আকাশে ধূমকেতু ছিল না এবং রাজাও মারা যাননি।

আকাশে ধূমকেতু দেখা দিল এবং রাজাও মারা গেলেন।

আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর কারণ।

(খ) এই প্রণালী যখন পরীক্ষণ ভিত্তিক হয়, তখন সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হয়। অন্বয়ী প্রণালী যে কার্যকারণ সম্পর্কের ইঙ্গিত দেয়, ব্যতিরেকী প্রণালী তাকে প্রমাণ করে। অতএব মিলের মতে সব প্রণালীর মধ্যে ব্যতিরেকী প্রণালী শ্রেষ্ঠতম।

এই পদ্ধতিকে ব্যতিরেকী পদ্ধতি হিসাবে অভিহিত করা হয়। কারণ, এখানে দুটি দৃষ্টান্তকে তুলনা করা হয় এবং দেখা যায় যে, এদের মধ্যে একটি বিষয়ে পার্থক্য আছে। সুতরাং মেলোন, কফি এরা এই পদ্ধতিকে “একক  ব্যতিরেকী” পদ্ধতিও বলেছেন।

প্রশ্ন ৩১। মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি সুবিধা এবং দুটি অসুবিধা লেখো। এই প্রণালীটি কোন দুটি অপসারণের সূত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত ?

উত্তরঃ মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর সুবিধা বা গুণ হল—–

(ক) এই প্রণালী প্রয়োগের ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক। যে সমস্ত ক্ষেত্রে পরীক্ষণের সুবিধা থাকে না, সেখানে পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এই প্রণালী প্রয়োগ করা যেতে পারে।

(খ) এই প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়ার পর্যবেক্ষণের সমস্ত সুবিধাই এতে পাওয়া যায়।

(গ) এই প্রণালীদ্বারা আমরা কারণ থেকে কার্য অনুমান করতে পারি, তেমনি কার্য থেকে কারণও অনুমান করতে পারি।

(ঘ) পরীক্ষণমূলক প্রণালী, যেমন —– ব্যতিরেকী প্রণালী যেখানে প্রয়োগ করা যায় না, সেখানে এই প্রণালীকে প্রয়োগ করা যায়।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালীর দুটি দোষ বা অসুবিধা হল—–

(ক) মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী প্রণালী মূলতঃ পর্যবেক্ষণ নির্ভর হওয়াতে এর সিদ্ধান্ত সম্ভাব্য হয়। যদি সম্ভাব্যতার মাত্রা খুব বেশি থাকে।

(খ) অপর্যাপ্ত বিশ্লেষণ এবং নানা কারণবাদের সমস্যা থেকে এই পদ্ধতি সম্পূর্ণ মুক্ত নয়।

মিশ্র অন্বয়ী ব্যতিরেকী দুটি অপসারণের সূত্রের উপর নির্ভরশীল। এইগুলি হলো—–

(ক) কোন পূর্ববর্তী ঘটনা ঘটলেও যদি কোন অনুবর্তী ঘটনা না ঘটে তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

(খ) কোন পূর্ববর্তী ঘটনাকে অপসারিত করলেও যদি কোন অনুবর্তী ঘটনা অপসারিত না হয়, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনাটি অনুবর্তী ঘটনার কারণ বা কারণের অংশ হতে পারে না।

প্রশ্ন ৩২। ” যে সময় কোন একটি বস্তুর যোগান বৃদ্ধি পায়, সেই বস্তুটির চাহিদা হ্রাস পায়। যে সময় কোন একটি বস্তুর যোগান হ্রাস পায়, সেই বস্তুটির চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তাহলে কোন একটি বস্তুর যোগান এবং চাহিদার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক আছে।” 

ওপরে উল্লেখিত সিদ্ধান্তটিতে উপনীত হওয়ার প্রয়োগ করা প্রণালীটি কী ? ব্যাখ্যা করো ? এই প্রণালীর বিশেষ উপযোগিতা কী ?

উত্তরঃ সহ পরিবর্তন প্রণালী। 

যুক্তিবিদ মিল সহ পরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটিকে এভাবে উল্লেখ করেছেন —” কোন ঘটনার পরিবর্তনের সঙ্গে যদি অপর কোন ঘটনার পরিবর্তন হয়, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বিতীয় ঘটনার কারণ বা কার্য, অথবা,ঐ দুটি ঘটনার মধ্যে কোন না কোন প্রকার কার্যকারণ সম্পর্ক থাকবে।”

মিল এর সংজ্ঞাটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করতে হলে —- 

১। দুটি ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

২। একটি ঘটনার পরিমাণের পরিবর্তনের সঙ্গে অপরটিরও পরিমাণের পরিবর্তন হলে ঘটনা দুটি কার্যকারণ সম্বন্ধে সম্পর্কিত।

৩। যদি পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয়েরই পরিবর্তন ঘটে, তাহলে পূর্ববর্তী ঘটনা পরবর্তী ঘটনার কারণ হবে।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রতীকী উদাহরণ ——

সহ পরিবর্তন  প্রণালীর বাস্তব উদাহরণ —-

 উত্তাপ   যতই বৃদ্ধি পায়, থার্মোমিটারের পারা ততই উপরের দিকে উঠে আর উত্তাপ কমলে থার্মোমিটারের পারা নিচের দিকে নেমে যায়। অতএব, উত্তাপ বাড়া বা কমা থার্মোমিটারের পারা উঠা নামার কারণ।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর সুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—–

(ক) স্থায়ী উপাদান সমূহের ক্ষেত্রে কেবল সহ পরিবর্তন প্রণালী প্রয়োগ করে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করা হয়।

(খ) সহ পরিবর্তন প্রণালী অন্যান্য পদ্ধতির সহায়ক হিসাবে ব্যবহার করা হয়।

সহ পরিবর্তন প্রণালীর অসুবিধাগুলি হল নিম্নরূপ—-

(ক) সহ পরিবর্তন প্রণালীর প্রয়োগ একটি নির্দিষ্ট সীমিত ক্ষেত্রে আবদ্ধ থাকে। সেই সীমার বাইরে একে প্রয়োগ করা যায় না।

(খ) সহ পরিবর্তন পদ্ধতি পরিবর্তনের পরিমাণগত দিকটিতেই প্রযোজ্য, কোনভাবেই গুণগত দিকটিতে নয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top