Class 12 Bengali Chapter 12 মন্ত্রের সাধন – জগদীশচন্দ্র বসু | Class 12 Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Assam Board HS 2nd Year Bengali Chapter 12 মন্ত্রের সাধন Notes and select needs one.
Class 12 Bengali Chapter 12 মন্ত্রের সাধন
Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Assam Board Class 12 Bengali Chapter 12 মন্ত্রের সাধন Solutions for All Subject, You can practice these here.
মন্ত্রের সাধন – জগদীশচন্দ্র বসু
Chapter: 12
বাংলা (MIL)
গোট – ২ নির্বাচিত গদ্যাংশ
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ
( ক ) কোনো চেষ্টাই একেবারে ___ হয় না । ( শূণ্যস্থান পূর্ণ কর)
উত্তরঃ কোনো চেষ্টাই একেবারে বিফল হয় না ।
( খ ) প্রবাল দ্বীপ যেমন একটু একটু করিয়া আয়তনে বর্ধিত হয় ___ ও সেইরূপ তিল তিল করিয়া বাড়িতেছে । ( শূণ্যস্থান পূর্ণ কর )
উত্তরঃ প্রবাল দ্বীপ যেমন একটু একটু করিয়া আয়তনে বর্ধিত হয় জ্ঞানরাজ্যও ও সেইরূপ তিল তিল করিয়া বাড়িতেছে ।
( গ ) গ্যালভানি কোন দেশের নাগরিক ছিলেন ?
উত্তরঃ গ্যালভানি ইটালি দেশের নাগরিক ছিলেন ।
( ঘ ) বিজ্ঞানী সোয়ার্জের অকস্মাৎ মৃত্যুর পর তাঁর গবেষণার ফলাফল পরীক্ষার দায়িত্ব কে গ্রহণ করেছিলেন ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী সোয়ার্জের অকস্মাৎ মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীর অনুরোধে জার্মান গভর্নমেন্ট সোয়ার্জের গবেষণার ফলাফল পরীক্ষার দায়িত্ব গ্রহণ করে ।
( ঙ ) বিজ্ঞানী সোয়ার্জের অবর্তমানে তাঁর বেলুন কল পরিচালনার দায়িত্ব কে গ্রহণ করেছিলেন ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী সোয়ার্জের অবর্তমানে তাঁর বেলুন কল পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন , দর্শকদের মধ্যে থাকা একজন ইঞ্জিনিয়ার ।
( চ ) বিজ্ঞানী সোয়ার্জের পর কে ব্যোমযান নির্মাণে সাফল্য অর্জন করেছিলেন ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী সোয়ার্জের পর জেপেলিন ব্যোমমান নির্মাণে সাফল্য অর্জন করেছিলেন ।
( ছ ) পাখাসংযুক্ত ওড়ার কল কে প্রস্তুত করেছিলেন ?
উত্তরঃ মার্কিন দেশের অধ্যাপক ল্যাঙলি পাখাসংযুক্ত ওড়ার কল প্রস্তুত করেছিলেন ।
( জ ) কার আবিস্কৃত তত্ত্বের সাহায্যে পরবর্তীকালে ওড়ার কল নির্মাণ করা সম্ভবপর হয়েছিল ?
উত্তরঃ জামার্ন দেশের বিজ্ঞানী লিলিয়েনথাল এর আবিস্কৃত তত্ত্বের সাহায্যে পরবর্তীকালে ওড়ার কল নির্মাণ করা সম্ভবপর হয়েছিল ।
( ঝ ) বিজ্ঞানী সোয়ার্জের ধাতুর বেলুন আবিষ্কারের পূর্বে কোন পদার্থ দিয়ে সে ধরনের বেলুন তৈরি করা হত ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী সোয়ার্জের ধাতুর বেলুন আবিষ্কারের পূর্বে রেশমের আবরণ দিয়ে সে ধরনের বেলুন তৈরি করা হত ।
( ঞ ) জগদীশ চন্দ্র বসু রচিত যে কোনো একটি গ্রন্থের নাম লেখো ।
উত্তরঃ জগদীশ চন্দ্র বসু রচিত একটি উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল ‘ অব্যক্ত ।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ
( ক ) মানুষ কিসের বলে বর্তমান কালে পৃথিবীর রাজা হয়েছে ?
উত্তরঃ মানুষ পূর্বে একান্ত অসহায় ছিল । বহু লোকের ক্ষুদ্র চেষ্টার ফলে অনেক অসাধ্য সাধন হয়েছে । বর্তমানকালে মানুষ আজ তার বুদ্ধি , চেষ্টা ও সহিষ্ণুতার ফলে পৃথিবীর রাজা হয়েছে ।
( খ ) অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর বেলুন কে প্রস্তুত করেছিলেন ? তিনি কোন দেশের নাগরিক ছিলেন ?
উত্তরঃ অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর বেলুন সোয়ার্জ নামের বিজ্ঞানী প্রস্তুত করেছিলেন । তিনি জার্মান দেশের নাগরিক ছিলেন ।
( গ ) জাহাজ কিভাবে জল কেটে অগ্রসর হয় ?
উত্তরঃ জলের নীচে জাহাজের স্ক্রু থাকে , জাহাজের ইঞ্জিনে সেই স্ক্রু ঘোরানোর ফলে জাহাজ জল কেটে অগ্রসর হয় ।
( ঘ ) বিজ্ঞানী লিলিয়েনথাল কোন দেশের নাগরিক ছিলেন ? তিনি কোন বিদ্যা আয়ত্ত করতে উৎসাহী ছিলেন ? তাঁর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষার ফলাফল কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী লিলিয়েনথাল জার্মান দেশের নাগরিক ছিলেন । পাখি যেমন আকাশে উড়তে পারে , ঠিক পাখির মতোই মানুষ যদি ডানায় ভর করে আকাশে উড়তে পারে সেই বিদ্যা আয়ত্ত করতে বিজ্ঞানী উৎসাহী ছিলেন । তিনি যেই ফল বা যন্ত্র আবিষ্কার করেছিলেন তা যখন আকাশপথে বিচরণ করে তখন বাতাসের ঝাপটা লেগে একটি পাখা ভেঙে যায় এবং এই দূর্ঘটনায় লিলিয়েনথালের মৃত্যু হয় । তবে তিনি পরীক্ষা – নিরীক্ষার দ্বারা যেসব নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিলেন তা পরবর্তী কালে সফলতা পায় , অর্থাৎ পরবর্তীকালে তাঁর তত্ত্বের দ্বারাই আকাশে উড়বার কল নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছিল ।
( ঙ ) বিজ্ঞানী অধ্যাপক ল্যাঙলি কি প্রস্তুত করেছিলেন ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ল্যাঙলি পাখাযুক্ত ওড়ার কল প্রস্তুত করেছিলেন । ল্যাঙলির পাখাসংযুক্ত ওড়ার কলে অতি হালকা একটি এঞ্জিন সংযুক্ত ছিল । পরীক্ষার দিন কর্মকারের কৈথিল্যবশত একটি স্ক্রু ঢিলা হয়েছিল । এঞ্জিন চালানের পর কল আকাশে উঠেই চক্রাকারে ঘুরতে লাগল এবং ঢিলা স্ক্রুটি খুলে গেল এবং কলটি নদীগর্ভে পড়ে যায় । আর এই পরীক্ষায় বিফল হওয়ার দুঃখে ভগ্নহৃদয়ে ল্যাঙলি মৃত্যুবরণ করেন ।
( চ ) ‘ মন্ত্রের সাধন ’ পাঠটির রচয়িতা কে ? কোন প্রবন্ধ গ্রন্থ থেকে এই পাঠটি সংগৃহীত হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘ মন্ত্রের সাধন ’ পাঠটির রচয়িতা হলেন আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু। আচার্য জগদীশচন্দ্ৰ বসুর ‘ অব্যক্ত ’ নামক প্রবন্ধ গ্রন্থ থেকে এই পাঠটি সংগৃহীত হয়েছে ।
৩। দীর্ঘ প্রশ্নোত্তর :
( ক ) কার নাম ‘ ব্যাং নাচানো ’ অধ্যাপক হয়েছিল ? কেন ?
উত্তরঃ ইটালি দেশের বিজ্ঞানী অধ্যাপক গ্যালভানিকে ‘ ব্যাং নাচানো ’ অধ্যাপক বলা হত । প্রায় একশো বছর পূর্বে বিজ্ঞানী গ্যালভানি দেখতে পেলেন যে লোহা ও তামার তার দিয়ে একটা মরা ব্যাংকে স্পর্শ করলে ব্যাংটা নড়ে উঠে । তিনি অনেক বৎসর ধরে এই ঘটনাটির অনুসন্ধান করতে থাকেন । এত সামান্য বিষয় নিয়ে এত সময় অপব্যয় করতে দেখে লোক তাঁকে উপহাস করত । ফলে তাঁর নাম হয়ে উঠে ‘ ব্যাং নাচানো ’ অধ্যাপক । তাঁর বন্ধুরা তাঁকে বলতে লাগলেন – ‘ মরা ব্যাং ’ যেন নড়িল , কিন্তু ইহাতে লাভ কি ? কিন্তু পরবর্তী কালে গ্যালভানির গবেষণার ফলশ্রুতিতেই বিদ্যুতের বিভিন্ন গুন সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কার হতে থাকল ।
( খ ) বিজ্ঞানী সোয়ার্জের ধাতুর বেলুনের পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রসঙ্গে সংক্ষেপে ব্যক্ত করো ।
উত্তরঃ বৈজ্ঞানিক সোয়ার্জ অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর বেলুন প্রস্তুত করেছিলেন । তিনি বিজ্ঞান চিন্তার একটা নতুন দিক উন্মোচন করেছিলেন কারণ , এর আগে মানুষ পৃথিবী ও সমুদ্রের উপর আধিপত্য স্থাপন করলেও আকাশ পথে সফলতা আনতে পারেনি । ব্যোমমানে শূন্যে উঠলেও বাতাসের প্রতিকূলে বেলুন চলতে পারে না কারণ অল্প সময়ের মধ্যেই গ্যাস বেরিয়ে যায় ফলে বেশিক্ষন শূন্যে থাকতে পারে না । এমনকী রেশমের আবরণ থেকেও গ্যাস বেরিয়ে যায় ।
তাই জার্মান বিজ্ঞানী সোয়ার্জ এই অসুবিধার এক সঠিক পথ পাওয়ার জন্য অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর বেলুন প্রস্তুত করলেন । আর এই পরীক্ষা – নিরীক্ষার করার জন্য সোয়ার্জ তাঁর সমস্ত সম্পত্তি ব্যয় করেছিলেন । বহু বৎসর নিষ্ফল চেষ্টার পর অবশেষে বেলুন নির্মিত হল । বেলুন যাতে নিজের ইচ্ছানুসারে বাতাসের প্রতিকূলে যেতে পারে তার জন্য একটি ক্ষুদ্র এঞ্জিন প্রস্তুত করলেন । কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বেলুন নির্মিত হওয়ার কিছুদিন পর সোয়ার্জের হঠাৎ মৃত্যু ঘটে । সোয়ার্জের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী জার্মান সরকারের কাছে পুনরায় বেলুন পরীক্ষা করার জন্য আবেদন করলেন । জার্মান সরকার তখন যুদ্ধ বিভাগের কয়েকজন অধ্যক্ষকে নিযুক্ত করলেন বেলুনটি পরীক্ষা করার জন্য । নির্দিষ্ট দিনে বেলুন দেখার জন্য অনেক লোক উপস্থিত হল । পরীক্ষকেরা দেখলেন বেলুনটি ধাতু দিয়ে তৈরি এবং খুব বড় আকৃতির । রেশমের বেলুনের তুলনায় বহু গুণ ভারী । পরীক্ষকেরা বেলুনের ওজন কমানোর জন্য ভাবলো বেলুনে যে বল বা যন্ত্রগুলি আছে সেগুলো মুখে দিলে হয়তো মাটি থেকে ২/৪ হাত উঠতে পারবে । এই ভেবে যন্ত্রগুলোকে তারা বাদ দিয়ে দিলেন।
এরপর আর একটি বাধা এসে পড়ল । সোয়ার্জের অবর্তমানে বেলুনটি চালনা করবে কে ? দর্শকদের মধ্য থেকে একজন ইঞ্জিনিয়ার এগিয়ে এলেন যন্ত্র চালনা করতে । যন্ত্র চালাবার সঙ্গে সঙ্গে বেলুন মাটি থেকে উপরে উঠতে শুরু করল এবং প্রতিকূলে বাতাসকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলল । ফলে এতদিন পর সোয়ার্জের চেষ্টা সফল হল । তবে যে যন্ত্রগুলি পরীক্ষকেরা বাদ দিয়েছিলেন সেগুলি দিক পরিবর্তনের জন্য আবশ্যক হয়ে পড়ল । তাই বাদ দেওয়া যন্ত্রগুলির অভাবে বেলুনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে চূর্ণ হয়ে গেল ।
( গ ) বিজ্ঞানী লিলিয়েনথাল কি আবিষ্কার করতে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন ? তাঁর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা – নিরীক্ষার বর্ণনা দাও ।
উত্তৰঃ পাখির মত মানুষও যাতে আকাশপথে উড়তে পারে এরকম এক ধরনের আকাশে উড়বার যন্ত্র আবিষ্কার করতে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন বিজ্ঞানী লিলিয়েনথাল ।
বিজ্ঞানী তার পরীক্ষাটিকে শিশুর হাঁটতে শেখার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন এবং বলেছিলেন শিশু যেমন একটু একটু করে অনেক চেষ্টা করে হাঁটতে শিখে , তাঁকে ও সেরূপ উড়তে শিখতে হবে । এই সংকল্প নিয়ে তিনি অনেক পরীক্ষার পর নানা প্রকারের পাখা তৈরি করলেন এবং সেগুলো বাহুতে বেঁধে পাহাড় থেকে ঝাঁপ দিয়ে পাখায় ভর করে নীচে নামার পরীক্ষা করলেন । এক সময় তাঁর মনে হল যে দুটো পাখার পরিবর্তে যদি অনেক সংখ্যক পাখা ব্যবহার করা হয় তাহলে হয়তো বেশি উড়ার সুবিধা হতে পারে ।
এরপর এই চেষ্টাতেও তিনি সফল হলেন । ত্রিশ বৎসর পর্যন্ত খুব সাবধানে তিনি পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে থাকেন । অবশেষে যখন তিনি সেই কল বা যন্ত্রগুলি আবিষ্কার করলেন সেটা আগের মত দৃঢ় হল না । তিনি সেই কল নিয়েই উড়তে চেষ্টা করেন ফলে বাতাসের ঝাপটায় তাঁর কলের একটি পাখা ভেঙে যায় এবং এই দুর্ঘটনায় তাঁর কলের একটি পাখা ভেঙে যায় এবং এই দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয় । অবশ্য তাঁর এই সৃষ্টি তত্ত্বসমূহ পরবর্তীকালে গবেষণার কাছে বিশেষ সাহায্য করে ।
( ঘ ) মার্কিন বিজ্ঞানী অধ্যাপক ল্যাঙলি কি আবিষ্কারের আত্মনিয়োগ করেছিলেন ? তাঁর গবেষণার ফলাফল কী হয়েছিল ?
উত্তরঃ মার্কিন বিজ্ঞানী অধ্যাপক ল্যাঙলি , জার্মান বিজ্ঞানী লিলিয়েনথাল আবিষ্কৃত তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে পাখাসংযুক্ত উড়ার কল বা যন্ত্র আবিষ্কারে আত্মনিয়োগ করেছিলেন । তবে সেই যন্ত্রের সঙ্গে তিনি একটি ইঞ্জিন ও যুক্ত করেছিলেন ।
ল্যাঙলি যে যন্ত্রটি আবিষ্কার করলেন সেটি পরীক্ষার দিন রহুলোকে দেখতে আসে । তবে কারিগরের ত্রুটিবশত যন্ত্রটির একটি স্ক্রু ঢিলা ছিল।তাই ইঞ্জিন চালানোর সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রটি আকাশে চক্রাকারে ঘুরতে থাকে এবং ঢিলা স্ক্রুটি খুলে গিয়ে যন্ত্রটি নদীর জলে পড়ে যায় । তাই এই ব্যর্থতায় ল্যাঙলি ভগ্নহৃদয়ে মৃত্যুবরণ করেন ।
( ঙ ) উইলবার রাইটের বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করো ।
উত্তরঃ মার্কিন দেশের অধ্যাপক ল্যাঙলির মৃত্যুর পর তাঁর স্বদেশীয় উইলবার রাইট ল্যাঙলির অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য পুনরায় পরীক্ষা – নিরীক্ষা আরম্ভ করেন । যন্ত্রটি উড়ার সময় একবার কল থেমে যায় এবং আকাশ থেকে পড়ে গিয়ে রাইটের একটি পা ভেঙে যায় । কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে রাইট পুনর্বার পরীক্ষা শুরু করেন । ফলে তিনি আধুনিক বিমানের প্রাথমিক রূপ আবিস্কার করতে সমর্থ হন । রাইটের চেষ্টার ফলেই মানুষ আজ গগনবিহারী হয়ে নীলাকাশে তার সাম্রাজ্য বিস্তার করতে সমর্থ হয়েছে ।
( চ ) ব্যাখ্যা করো :
“ যাঁহারা ভীরু তাঁহারাই বহু ব্যর্থ সাধনা ও মৃত্যুভয়ে পরাঙ্মুখ হইয়া থাকেন । বীর পুরুষেরাই নির্ভীক চিত্তে মৃত্যুভয়ের অতীত হইতে সমর্থ হন । ”
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রচিত ‘ মন্ত্রের সাধন ’ প্রবন্ধ থেকে গৃহিত হয়েছে ।
যাঁরা ভীরু তারা ব্যর্থ সাধনা ও মৃত্যুভয়ে ভীত হয়ে বহু সাধনাকে অসম্পূর্ণ অবস্থাতেই ত্যাগ করে বিদায় নেয় । কিন্তু যাঁরা বীরপুরুষ তাঁরা মৃত্যুকে অতিক্রম করেন নির্ভীক চিত্তে । আসলে যাঁরা জীবনের পথে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ , আদর্শনিষ্ঠ তাঁরা তাদের লক্ষ্যে অগ্রসর হতে মৃত্যুকেও উপেক্ষা করেন । তাই তাঁরা আজও অমর হয়ে আছেন । আর তাঁদের ঐকান্তিক নিষ্ঠা ও তপস্যার আবিষ্কারের ঐশ্বর্য পৃথিবীর সম্পদ হিসাবে রয়ে গেছে । জীবনের সাফাল্যের পথ সবসময় সহজ ও সুচারু হয় না । তাই অকুতোভয় হয়ে জীবন পথে এগিয়ে গেলে সিদ্ধি লাভ হয় । আর দৃঢ় ও নিষ্ঠাবানের পক্ষেই সেই সিদ্ধি লাভ করা সম্ভব ।
( ছ ) ‘ মন্ত্রের সাধন ‘ প্রবন্ধের মূল বক্তব্য বিশ্লেষণ কর ।
উত্তরঃ বিফল হয়ে পিছিয়ে পড়া নয় , বিফলতার মধ্যেই সাফল্যের বীজ নিহিত থাকে । আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর ‘ মন্ত্রের সাধন ’ পাঠাংশ্যে বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের অসাধ্য সাধনের বর্ণনা করা হয়েছে । বিশিষ্ট কয়েকজন বিজ্ঞানীর স্বপ্ন সফলতার কর্মকাণ্ড থেকে তা নেওয়া হয়েছে । যেমন ইতালির বিজ্ঞানী গ্যালভানি লোহা ও তামার তারের স্পর্শে মরা ব্যাংকে নড়ে উঠতে দেখে তাঁর গবেষণা শুরু করেন । বিজ্ঞানীর এই কর্মকাণ্ডকে দেখে লোকে উপহাস করে তাকে ‘ ব্যাং নাচানো ’ অধ্যাপক নামাকরণ করেন । কিন্তু এই সামান্য ঘটনার ফলশ্রুতি একশ বছর পর বিদ্যুতের আবিষ্কারে ও মানুষ নানা সুবিধা উপভোগ করতে পারছে ।
এরপর জার্মান দেশের বিজ্ঞানী সোয়ার্জ অ্যালুমিনিয়াম বেলুন তৈরি করেন । রেশমের বেলুন থেকে গ্যাস বের হয়ে যায় বলে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন । তাই তাঁর সমস্ত সম্পত্তি ব্যয় করে আজীবন পরীক্ষা করে অ্যালুমিনিয়াম ধাতু দ্বারা বেলুন নির্মান করেন । তাঁর মৃত্যুর পর জেপেলিন নামে একজন ইঞ্জিনিয়ার পুণরায় চেষ্টা করে দশ বছরের মধ্যে ব্যোমযান নির্মাণ করেন ।
জার্মানির লিলিয়েনথালও পাখির মতো আকাশে উড়ার জন্য বিভিন্ন বিপদের ঝুঁকি নিয়েও চেষ্টা করেন । আকাশে উড়ার জন্য বাহুতে পাখা সংযুক্ত করে উড়ার চেষ্টা করেন । এরপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে যখন উড়ার যন্ত্র তৈরি করেন এবং সেই যন্ত্র নিয়ে আকাশে উড়ার চেষ্টা করেন তখন দুর্ভাগ্যক্রমে বাতাসের ঝাপটায় পাখা ভেঙে যায় । এবং তিনি সেই দুর্ঘটনায় মারা যান । তাঁর এই তত্ত্বের সাহায্যে ল্যাঙলি পাখা সংযুক্ত উড়ার কল প্রস্তুত করেন । তাঁর মৃত্যুর পর উইলবার রাইট উড়োজাহাজের প্রাথমিক রূপ নির্মাণে সফল হন ।
( জ ) ‘ মন্ত্রের সাধন ‘ প্রবন্ধের নামকরণের সার্থকতা বিচার করো ।
উত্তরঃ সাধারণতঃ নামাকরণের মধ্যেই রচনার সার্থকতা নির্ভর করে । তাই নামকরণের সার্থকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ।
জগদীশ চন্দ্র বসু একজন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক । তাঁর ‘ অব্যক্ত ’ গ্রন্থটি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে । ‘ মন্ত্রের সাধন ’ প্রবন্ধটি ‘ অব্যক্ত ’ গ্রন্থের অন্তর্গত । জগদীশচন্দ্র বসু তার এই প্রবন্ধে বিশ্বের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিকের অধ্যবসায় ও সাধনার কথা বর্ণনা করেছেন। লেখকের মর্মবাণী স্বরূপ প্রবন্ধটির এই নামকরণ ।
গবেষণার পথ অনেক কঠিন । এই পথে অনেক দৃঢ়তা ও সাধনার প্রয়োজন । কারণ গবেষণার পথে অনেক বাধা আসে । আর্থিক অনটন , আরো অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বাধা গবেষণাকে ব্যর্থতায় নিক্ষিপ্ত করে । কিন্তু পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক গণ মন্ত্রের সাধনকে মৃত্যুর চেয়েও বড় লক্ষ্যে উন্নীত করে কঠোর অধ্যাবসায় ও সাধনা দৃঢ় থেকেছেন । ফলে তাঁদের পরীক্ষার বিষয়বস্তু ও ফলাফল তারা পরবর্তী প্রজন্মের হাতে তুলে দেন । এবং পরবর্তী উত্তরসূরীদের সাধনার ফলে এই চেষ্টা সার্থক হয়ে উঠে । বিজ্ঞানের এই অসাধ্য সাধনকারীর পেছনে আসলে বহু মানুষের প্রয়াস বুদ্ধি ও বিশ্বাসের দৃঢ়তা রয়েছে । বহু নির্যাতন ও কষ্ট সহ্য করে ‘ মন্ত্রের সাধনের ’ মতো দৃঢ় সংকল্প নিয়ে তাঁরা সফল হতে পেরেছেন ।
ইটালির গ্যালভানির বৈজ্ঞানিক ও অধ্যাপক লোহা ও তামার তারের স্পর্শে মরা ব্যাংকে নড়ে চড়ে উঠতে দেখে বহু বছর ধরে গবেষণা করে বিদ্যুতের কার্যকারিতা সম্বন্ধে নতুন সিদ্ধান্ত লাভ করেন । গ্যালভানি ‘ ব্যাং নাচিয়ে ‘ এই গবেষণা শুরু করেছিলেন তাই লোকে তাঁকে উপহাস করে ‘ ব্যাং নাচানো ’ অধ্যাপক বলেও ডাকত , কিন্তু তবুও তিনি থেমে থাকেননি , নিজের গবেষণা কার্য চালিয়ে গেছেন এবং সফল হয়েছেন । তারপর যেমন সোয়ার্জ অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর বেলুন তৈরি করেন । নিজের সমস্ত অর্থ সম্পত্তি ব্যয় করে তিনি পরীক্ষায় আত্মনিয়োগ করেন। অনেক চেষ্টার পরে বেলুন যাতে বাতাসে উড়তে পারে তার জন্য ছোট একটি ইঞ্জিন নির্মাণ করতে উদ্যগী হন । কিন্তু তিনি সাফল্য দেখার আগেই হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেন ।
তখন তাঁর স্ত্রীর অনুরোধে জার্মান সরকার বেলুন পরীক্ষার জন্য আকাশে উড়ানোর জন্য যুদ্ধ বিভাগে অধ্যক্ষকে নিযুক্ত করেন । বেলুন উড়াবে কে ? এই নিয়ে সমস্যা দেখা দিলে , দর্শকদের মধ্য থেকে একজন ইঞ্জিনিয়ার এসে বেলুনটি চালনা করে । যদিও বেলুনটি পূর্ণ সফলতা পায়নি । কিন্তু সোয়ার্জের আবিস্কৃত তথ্য নিয়েই পর ব্যোমযান নির্মাণ করেছিলেন । আসলে লক্ষ্যে স্থির থাকলে কোনো বাধাই মানুষকে আটকাতে পারে না । তার সবথেকে বড় প্রমাণ বিজ্ঞানী লিলিয়েনথালের গবেষণার তীব্র আন্তরিকতা । লিলিয়েনথাল মৃত্যু নিশ্চিন্ত জেনেও এমন যন্ত্র আবিষ্কার করলেন যার দ্বারা মানুষ আকাশচারী হতে পারে । তবে পরীক্ষা – নিরীক্ষা পর্বেই তিনি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান । তবে তাঁর গবেষণা থেমে থাকেনি তাঁর গবেষণার কাজকে অধ্যাপক ল্যাঙলি হাতে নিয়ে পাখাসংযুক্ত উড়ার যন্ত্র নির্মাণ করলেন । কিন্তু পরীক্ষাপর্বে ল্যাঙলিও প্রাণ হারালেন । তারপর উইলবার রাইট এই ভার গ্রহণ করেন ও তাঁর প্রচেষ্টা চালিয়ে যান ।
লেখক উক্ত বিজ্ঞানীদের মন্ত্রের সাধনাকে উপস্থাপিত করেছেন বলে প্রবন্ধটির নামকরণ সার্থক হয়েছে ।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
( ক ) অতি সংক্ষিপ্ত প্রশোত্তরঃ
১। মন্ত্রের সাধন প্রবন্ধটি কার রচনা ?
উত্তরঃ মন্ত্রের সাধন প্রবন্ধটি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর রচনা ।
২। আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু কি প্রতিষ্ঠা করেন ?
উত্তরঃ আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ‘ বসু বিজ্ঞান মন্দির ’ প্রতিষ্ঠা করেন ।
৩। প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপগুলি কিভাবে নির্মিত হয়েছে ?
উত্তরঃ হাজার হাজার প্রবাল কীট তাদের দেহ দিয়ে এই দ্বীপগুলি নির্মাণ করেছে ।
৪। বহু মানুষের চেষ্টার ফলে কি সম্ভবপর হয়েছে ?
উত্তরঃ বহু মানুষের চেষ্টার ফলে বিজ্ঞানের অসাধ্য সাধন হয়েছে ।
৫। কাকে ব্যাংগ নাচানো অধ্যাপক বলা হত ?
উত্তরঃ গ্যালভানি কে ব্যাংগ নাচানো অধ্যাপক বলা হত ।
৬। ‘ পৃথিবীর এক প্রান্তের সংবাদ অন্য প্রান্তে পৌঁছিতেছে ’ – কিসের মাধ্যমে ?
উত্তরঃ বিদ্যুৎ তরঙ্গের মাধ্যমে পৃথিবীর এক প্রান্তের সংবাদ অন্য প্রান্তে পৌছাচ্ছে ।
৭। বেলুন বেশিসময় আকাশে উড়তে পারে না কেন ?
উত্তরঃ রেশম দ্বারা নির্মিত বেলুনের গ্যাস বেরিয়ে যায় বলে অধিক্ষন আকাশে উড়তে পারে না ।
৮। ‘ ইহা কেন বিশ্বাস করিল না ’ – কোন কথা ?
উত্তরঃ বেলুন যে ধাতু দ্বারা নির্মিত হতে পারে এই কথাটি কেউ বিশ্বাস করতে পারল না ।
৯। ‘ সেজন্য একটি ক্ষুদ্র ইঞ্জিন প্রস্তুত করিলেন ‘ – কে এবং কেন ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী সোয়ার্জ একটি ক্ষুদ্র ইঞ্জিন প্রস্তুত করলেন ।
বেলুন যাতে বাতাসের গতির বিপরীতে যেতে পারে সেজন্য বিজ্ঞানী সোয়ার্জ ক্ষুদ্র ইঞ্জিন প্রস্তুত করলেন ।
১০। কে ব্যোমযান নির্মাণ করেন ?
উত্তরঃ জেপেলিন ব্যোমযান নির্মাণ করেন ।
১১। লিলিয়েনথাল কোন দেশের বিজ্ঞানী ছিলেন ?
উত্তরঃ লিলিয়েনথাল জার্মান দেশের বিজ্ঞানী ছিলেন ।
( খ ) সংক্ষিপ্ত প্রশোত্তরঃ
১। “ লোকটি মরিয়া গিয়াছে , তাহার বিধবা স্ত্রী অনেক আশা করিয়া দেখাইতে আসিয়াছে । ― লোকটি কে ? তাঁর বিধবা স্ত্রী কী আশা করে দেখতে এসেছে ?
উত্তরঃ উদ্ধৃত অংশে লোকটি হলেন জার্মান বিজ্ঞানী সোয়ার্জ ।
তাঁর বিধবা স্ত্রী সোয়ার্জের দ্বারানির্মাণ করা অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর বেলুন আকাশে উড়বার পরীক্ষা করার জন্য পরীক্ষকের নিকট গভীর আশা নিয়ে দেখতে এসেছেন ।
২। কার নির্মিত ব্যোমযান যুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয় এবং যুদ্ধ পরবর্তীতে এর দ্বারা মানুষ কিভাবে উপকৃত হয় ?
উত্তরঃ জেপেলিনের নির্মিত ব্যোমযান যুদ্ধে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হয় ।
পরবর্তীতে এই অস্ত্র দ্বারা মানুষ খুব সহজে আটলান্টিক মহাসাগর অতিক্রম করতে পেরেছে । যার জন্য ইউরোপ ও আমেরিকার মধ্যেকারে দূরত্বের অবসান ঘটেছে ।
৩। ‘ তাহার পর পরীক্ষা করিতে আরম্ভ করিলেন ।’— কে , কী পরীক্ষা করতে আরম্ভ করলেন ?
উত্তরঃ জার্মান বিজ্ঞানী লিলিয়েনথালের মনে প্রশ্ন জেগেছিল মানুষ কেন পাখির মতো আকাশে উড়তে পারবে না তার পরই তিনি আকাশে উড়বার পরীক্ষা – নিরীক্ষা করতে শুরু করলেন ।
৪। “ কিন্তু তিনি পরীক্ষা দ্বারা যেসব নূতন তত্ত্ব আবিষ্কার করিলেন … সম্পত্তি হইয়া রহিল ” — এখানে কার কথা বলা হয়েছে এবং কেন ?
উত্তরঃ এখানে বিজ্ঞানী লিলিয়েনথালের কথা বলা হয়েছে । গবেষণা করে তিনি যে কল নির্মাণ করেছিলেন সেই কল পরীক্ষার জন্য অসম্পূর্ণ অবস্থাতেই নিয়ে আকাশে উড়ার চেষ্টা করেন । ফলে আকস্মিক দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয় । কিন্তু বিজ্ঞানীর গবেষণা আসলে বিশ্বের সম্পদ । কেননা পরবর্তীকালে সেই সম্পদ ব্যবহার করে নতুন তত্ত্ব আবিষ্কার করা সম্ভব হয় । আর লিলিয়েনথালের তত্ত্ব নিয়েও পরবর্তীকালে বিজ্ঞানীরা সাফল্য লাভ করেছিলেন ।
৫। ব্যাখ্যা করোঃ
“ মানুষ পূর্বে একান্ত অসহায় ছিল । বুদ্ধি , চেষ্টা ও সহিষ্ণুতার বলে আজ সে পৃথিবীর রাজা হইয়াছে । ”
উত্তরঃ মানুষ পৃথিবী শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমান জীব । মানুষ এই বুদ্ধির বলে জীবনে জয়লাভ করে । মানুষ সহিষ্ণু ও প্রয়াসী । আর এই গুন মানুষের এক অসামান্য গুন । মানুষের গুনেই সভ্যতাও এত উন্নত হয়েছে । মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করে প্রকৃতিকে জয় করেছে , নিজের বুদ্ধি ও সহিষ্ণুতার গুনে তাই মানুষ আজ পৃথিবীর সম্রাট হয়েছে । আর এই সাম্রাজ্য পেতে মানুষকে অনেক কাঠঘর পোড়াতে হয়েছে । অর্থাৎ মানুষ এই সফলতাকে একদিনে লাভ করেনি , যুগ যুগ ধরে মানুষ নির্ভীক পদক্ষেপে , ধৈর্য্য ও বুদ্ধি ও চেষ্টার বলে এগিয়ে গেছে বলেই আজ সভ্যতার উন্নত শিখরে পৌঁছাতে পেরেছে ।
( খ ) “ আজ যাহা নিতান্ত ক্ষুদ্র মনে হয় , দুইদিন পরে তাহা হইতেই মহৎ ফল উৎপন্ন হইয়া থাকে । ”
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রচিত ‘ মন্ত্রের সাধন ‘ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া হয়েছে ।
আজকে যা ক্ষুদ্র কালকে তা মহীরূপ । তাই বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারও থেমে থাকে না । আজ যা ক্ষুদ্র বলে মনে হলেও ভবিষ্যতে তা মহৎ কার্যে সাফল্য লাভ করতে পারে । কারণ কালে কালে জ্ঞানরাজ্যের বিবর্ধনের ফলে একসময় সেই নিতান্ত ক্ষুদ্রই মহীরূহ হয়ে উঠে ।
৬। সোয়ার্জ কী আবিষ্কার করেছিলেন ? সেটির ব্যবহার সার্থক হয়েছিল কী ?
উত্তরঃ বিজ্ঞানী সোয়ার্জ অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর বেলুন আবিষ্কার করেছিলেন । সোয়ার্জের আবিস্কার সার্থক হয়েছিল । তিনি নিজের সমস্ত অর্থ ব্যয় করে পরীক্ষা – নিরীক্ষা করেছিলেন । অনেক প্রচেষ্টার পর বেলুন যাতে বাতাসের প্রতিকূলে যেতে পারে সে কারণে একটি ছোট ইঞ্জিন আবিস্কার করলেন । এর কিছুদিন পরে সোয়ার্জের হঠাৎ মৃত্যু হয়। সোয়ার্জের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী জার্মান সরকারের কাছে পুনরায় বেলুন পরীক্ষার জন্য আবেদন করলেন । নির্দিষ্ট দিনে পরীক্ষাকেরা এসে পরীক্ষা করতে গিয়ে বেলুনটির কিছু যন্ত্র খুলে ফেলেন । অবশেষে দর্শকদের মধ্যে থেকে একজন ইঞ্জিনিয়ার এসে তাঁর সাধ্যমত যন্ত্রটি চালান । ফলে সঙ্গে সঙ্গে বেলুনটি মাটি থেকে উপরে উঠতে শুরু করল এবং প্রতিকূল বাতাসকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলল । সোয়ার্জের পরীক্ষা সফল হল । কিন্তু পরীক্ষকরেরা যেই যন্ত্রগুলি খুলে ফেলেছিল সেগুলিই আবশ্যক হল । বাদ দেওয়া যন্ত্রগুলির অভাবে বেলুনটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে পড়ে চূর্ণ হয়ে গেল ।
শব্দার্থ ও টীকা :
অধ্যক্ষ :- প্রধান আধিকারিক ।
অদ্ভুত কল :- আশ্চর্য যন্ত্র ।
দ্বীপ :- চারদিকে জলবেষ্টিত স্থলভাগ ।
পঞ্জর :- খাঁচা , পাঁজরা বা বুকের হাড়ের খাঁচা ।
অগণ্য :- অসংখ্য ।
কীট :- পোকা ।
প্রবাল :- সমুদ্রের কীট বিশেষ ।
সহিষ্ণুতা :- সহনশীলতা ।
মহাবেগে :- অতিরিক্ত গতিতে ।
অনুসন্ধান :- খোঁজ ।
অপব্যয় :- বাজে খরচ ।
সহস্র :- হাজার ।
ক্রোশ :- পথের দূরত্বসূচক পরিমাণ ।
আধিপত্য :- প্রভূত্ত্ব ।
এঞ্জিন :- ইঞ্জিন শব্দের রূপভেদ ।
এঞ্জিনিয়ার :- ইঞ্জিনিয়ার শব্দের রূপভেদ , যন্ত্রবিজ্ঞানী ।
পরাসুখ :- মুখ ফিরিয়ে নেয় যে ।
চক্রাকারে :- চাকার আকারে , গোলাকারে ।
নদীগর্ভে :- নদীর ভিতরে ।
প্রশান্ত মহাসাগর :- পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মহাসাগর । এর আয়তন ১৬৯.২ বর্গকিলোমিটার । পৃথিবীপৃষ্ঠের প্রায় ৩২ শতাংশ । পৃথিবীর ভূমি পৃষ্ঠের চেয়েও আয়তনে বেশি । দ্বীপসংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার ।
গ্যালভানি :- ইটালি দেশের একজন বিখ্যাত বিজ্ঞানী । জন্ম ১৭৩৭ খ্রিষ্টাব্দে । তিনি জীবদেহে বৈদ্যুতিক লোহা ও তামার তার দিয়ে একটা মরা ব্যাঙকে স্পর্শ করলে ব্যাঙটা নড়ে উঠে । তিনি অনেক বৎসর ধরে এই ঘটনাটির অনুসন্ধান করতে লাগলেন । এরূপ সামান্য বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান করতে লাগলেন । এরূপ সামান্য বিষয় নিয়ে এত সময় অপব্যয় করতে দেখে লোকে তাঁকে ‘ ব্যাঙ নাচানো ‘ অধ্যাপক বলে ।
সোয়ার্জ :- জার্মানের একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী সোয়ার্জ । তিনি অ্যালুমিনিয়াম ধাতুর এক বেলুন প্রস্তুত করেন । সোয়ার্জ এই গবেষণার জন্য সমস্ত সম্পত্তি ব্যায় করেছিলেন ।
লিলিয়েনথাল :- লিলিয়েনথাল ছিলেন একজন বিখ্যাত জার্মানি বিমান প্রযুক্তিবিদ ।
Hi, I’m Dev Kirtonia, Founder & CEO of Dev Library. A website that provides all SCERT, NCERT 3 to 12, and BA, B.com, B.Sc, and Computer Science with Post Graduate Notes & Suggestions, Novel, eBooks, Biography, Quotes, Study Materials, and more.