Class 12 Bengali Chapter 6 কুলিমজুর – কাজী নজরুল ইসলাম | Class 12 Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Assam Board HS 2nd Year Bengali Chapter 6 কুলিমজুর Notes and select needs one.
Class 12 Bengali Chapter 6 কুলিমজুর
Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Assam Board Class 12 Bengali Chapter 6 কুলিমজুর Solutions for All Subject, You can practice these here.
কুলিমজুর – কাজী নজরুল ইসলাম
Chapter: 6
বাংলা (MIL)
গোট : ১ নির্বাচিত পদ্যাংশ
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ
( ক ) বাবুসাব কাদের রেল থেকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিলেন ?
উত্তরঃ বাবুসাব রেল থেকে এক কুলিকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিলেন ।
( খ ) ‘ কুলি – মজুর ’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ?
উত্তরঃ কুলি – মজুর কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘ সর্বহারা ’ কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত ।
( গ ) শকট শব্দের অর্থ কী ?
উত্তরঃ শকট শব্দের অর্থ গাড়ী ।
( ঘ ) কাজী নজরুল ইসলাম কোন পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন ?
উত্তরঃ কাজী নজরুল ইসলাম ‘ ধূমকেতু ’ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন ।
( ঙ ) কবিতায় উল্লেখিত শ্রমজীবী মানুষের তিনটি জীবিকার উল্লেখ করো ।
উত্তরঃ শ্রমজীবী মানুষের তিনটি জীবিকা হল — মুটে , মজুর ও কলি ।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ
( ক ) কবির মতে কাদের হাড় দিয়ে কোন যান চলে ?
উত্তরঃ পুরাণে দধিচী মুণির নাম প্রসিদ্ধ । তিনি দেবতাদের জন্য আত্মত্যাগ করেছিলেন । বৃত্রাসুরকে বধ করার জন্য দধিচী মুনি দেহত্যাগ করেন , তাঁর হাড় বা অস্থি দিয়ে বজ্ৰ নিৰ্মাণ করে পুণরায় স্বর্গের অধিকার লাভ করেন । বর্তমান যুগে বাটির মতে কুলি – মজুররা দধিচী মুণির মত আত্মত্যাগ করে । এবং তাদের হাড় দিয়ে বাষ্প শকট অর্থাৎ রেলগাড়ি চলে ।
( খ ) পাহাড় ভাঙ্গার জন্য কোন কোন হাতিয়ার ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে ?
উত্তরঃ পাহাড় ভাঙ্গার জন্য কবি হাতুড়ি , শাবল ও গাঁইতি ব্যবহার করার কথা বলেছেন ।
( গ ) ‘ গাহি তাহাদেরি গান ’ । কবি কাদের জয়গান করেছেন এবং কেন ?
উত্তরঃ কবি কাজি নজরুল ইসলাম সমাজের নিপীড়িত , নির্যাতিত শ্রমিক সম্প্রদায় কুলি মজুর যারা আসলে মানব – সভ্যতার ধারক তাদের জয়গান করেছেন ।
কবির মতে কুলি মজুরাই হচ্ছে সমাজের ধারক ও বাহক । কারণ তারা তাদের হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে হাতুড়ি শাবল দিয়ে পাহাড় কেটে পথ তৈরি করেছে । যারা সমাজের ভার বহন করার জন্য নিজেরে গায়ে ধূলা মেখেছে তারাই মানব সভ্যতার ধারক তাদের পরিশ্রমের ফলেই সভ্যতা এগিয়ে চলেছে । তাই কবি সমাজের এই নিম্ন শ্রেণি কুলিদের জয়গান করেছেন ।
( ঘ ) কবির মতে প্রভাত সূর্য কোন রঙে রাঙা ?
উত্তরঃ কবির মতে প্রভাত সূর্য লাল রঙে রাঙা । কারণ কবি বলতে চেয়েছেন পীড়িত অত্যাচারিত শ্রমিকদের রক্তে রাঙা হয়েছে এই শোষণমুক্ত পৃথিবী । তাই কবির ভাবনায় ‘ নতুন পৃথিবীর প্রভাত সূর্য রক্তের রঙে রাঙা ।
( ঙ ) মহা – মানবের উত্থানে কে হাসছেন আর কে কাঁপছে ?
উত্তরঃ মহা মানবের উত্থানে স্বর্গে ভগবান হাসছেন আর নীচে পৃথিবীর শয়তান কাঁপছে ।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ
( ক ) ‘ কুলি – মজুর কবিতায় কবি দধিচী মুনির সঙ্গে কাদের তুলনা করেছেন এবং কেন ?
উত্তরঃ পুরাণে বর্ণিত আছে বৃত্রাসুর যখন স্বর্গ থেকে দেবতাদের বিতাড়িত করে দেয় তখন দেবতারা বিপদসদৃশ অবস্থায় পড়েন । তখন জানা যায় যে একমাত্র বৃত্রাসুরকে বধ করা সম্ভব হবে দধিচী মুনির অস্থি দিয়েই । আর একথা জানতে পেরে দধিচী স্বেচ্ছায় দেহত্যাগ করেন এবং অস্থি দিয়েই দেবতারা বজ্র তৈরি করে বৃত্রাসুরকে বধ করে স্বর্গরাজ্য পুণরায় লাভ করেন । দধিচীর এই আত্মত্যাগ যুগে যুগে স্মরণীয় ।
কবি এখানে প্রসঙ্গ ক্রমে দধিচী মুনিকে এনেছেন । বর্তমান যুগে কুলি – মজুর শ্রমিকরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে সভ্যতার ভিত নির্মাণ করে । কবি বলেছেন দধিচীর মতোই কুলি – মজুররা তাদের পরিশ্রমের আত্মত্যাগ করেছে , তাই তারা দধিচীর সঙ্গে তুলনীয় । কারণ শ্রমিকদের পরিশ্রমের ফলেই তিল তিল করে মানব সভ্যতা উঠেছে । অথচ পরিশ্রমের সঠিক পারিশ্রমিক তারা পায় না । তাই কবি বলেছেন এরা দধিচীর মতোই মহান । মানব সভ্যতার ইতিহাসে ধনী শ্রেণিরা সর্বদাই শ্রমিকদের উপর অন্যায় করে এসেছে , শ্রমিকদের শোষণ করেছে । শ্রমিকরা তাদের পারিশ্রমিকের বদলে লাঞ্ছনা , গঞ্জনা অপমানছাড়া আর কিছুই পায় না । অথচ এই শ্রমিকরাই সমাজের ধারক ও বাহক । আর এরাই সমাজে সবচেয়ে বেশি অবহেলিত ।
( খ ) নজরুলের সাম্যবাদী চেতনার আলোকে ‘ কুলি – মজুর ‘ কবিতাটি বিশ্লেষণ করো ।
উত্তরঃ মানব ধর্মে বিশ্বাসী কাজী নজরুল ইসলাম সর্বদাই সাম্যের জয়গান গেয়েছেন । কবি নজরুল কোনো ধর্মভেদ , জাতিভেদ মানতেন না । তাঁর কাছে একটাই ধর্ম মানবধর্ম । হিন্দু মুসলমান খ্রিস্টান বলে যেমন তিনি কোনো ধর্মের ভেদাভেদ মানতেন না ঠিক তেমনি ধনী ও দরিদ্র বলে সমাজের যে উচ্চ – নীচ সম্প্রদায়িক ভেদাভেদ আছে সেটাও তিনি মানতেন না । কবির মতে মানুষের আসল পরিচয় মনুষ্যত্বে , কোনো ধর্ম , বর্ণ বা শ্রেণিতে নয় ।
মানুষ ঈশ্বরের স্পষ্ট সর্বশ্রেষ্ঠ দীন । মানুষ তার বুদ্ধিবলে শ্রেষ্ঠতার অধিকারী হয়েছে । আর এই বুদ্ধির অপপ্রয়োগ করে মানুষ দরিদ্র – পীড়িত মানুষের উপর আধিপত্যও বিস্তার করে এসেছে । দরিদ্রদের বুদ্ধিবলে পদানত করেছে । কিন্তু কবি বলতে চেয়েছেন যে মানুষ সকলেই সমান । কারণ উদার মনোভক্তির সাহায্যে বিচার করলে দেখা যাবে না ধনী দরিদ্র , উচ্চ – নীচ এগুলো শুধুমাত্র একটা আচ্ছাদন । এই আচ্ছাদন সরিয়ে দিলে সবাই সমান । সকলেই এক রক্ত – মাংসের মানুষ। মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই ।
আলোচ্য ‘ কুলি – মজুর ‘ কবিতাটিতে কবির সাম্যবাদ চেতনাই ধ্বনিত হয়েছে । কবি সমাজের কুলি – মজুর শ্রমিকদের জয়গান করেছেন । কবিতাটিতে প্রথমেই দেখতে পাওয়া যায় নির্যাতনের ছবি । সমাজের বাবু শ্রেণি অর্থাৎ ধনী শ্রেণি কুলির – মজুর শ্রেণির সঙ্গে সামান্য পারিশ্রমিক নিয়ে অপমান নির্যাতন করছে । আর এই পারিশ্রমিক নিয়ে অপমান নির্যাতন করছে । আর এই ছবি কবিকে মর্মাহত করেছে । কিন্তু কবি আশাহত হননি । আশাবাদী কবি তাই কবিতাটির পরবর্তীতে কুলি- মজুরদের সুবিচার আশা করেছেন । কবি বলেছেন কুলি – মজুররা অবশ্যই সুবিচার পাবে । কারণ সমাজ কখনো এভাবে চলতে পারে না । কবির মতে যেভাবে একটি নতুন দিনের সূচনা হয় ঠিক তেমনি সূর্যের রাঙা আলোর মতোই একটি নতুন যুগের সূচনা হবে । কুলি – মজুর শ্রমিক বলে আলাদা কোনো বিভেদ থাকবে না । কবি তাই আহ্বান জানাচ্ছেন দেশের সকল মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য । কারণ কবি বিশ্বাস করেন সকল মানুষ সমস্ত বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হলে বিশ্ব জুড়ে গাড়ী উঠবে একটি জাতি যার নাম মানবজাতি ।
( গ ) সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো :
“ তুমি শুয়ে রবে তেতালার পরে আমরা রহিব নীচে
অথচ তোমারে দেবতা বলিব , সে ভরসা আজ মিছে । ”
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘ কুলি – মজুর ‘ কবিতার অন্তর্গত । উক্ত অংশে কবি নজরুল ইসলাম সামাজিক বৈষম্যের প্রতি আঙুল তুলেছেন । সমাজের উঁচু শ্রেণির মানুষ সমাজের সকল ধরণের সুযোগ সুবিধা ভোগ করবে আর নীচু তলার মানুষরা শুধু খেটে যাবে । আর উচ্চ শ্রেণির সুবিধাভোগী মানুষরা সমাজের কোনো দায়িত্ব পালন করবে না , এই অমানবিক নিয়মের বিরুদ্ধে কবি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন । শ্রমিকের পরিশ্রম তৈরি দালানে আরাম শয্যায় শয়ন করবে সমাজের এই সুবিধাভোগী দল আর শ্রমিকরা তাদের দেবতাজ্ঞানে পূজা করবে এই নিয়ম আর চলবে না । কবির মতে দেবতা হতে গেলে দেবত্ব গুণ থাকতে লাগবে , সত্ত্বগুনের অধিকারী হতে হবে , মানুষের প্রতি স্নেহ প্রীতি প্রেম থাকতে হবে । উঁচু – নীচু , ধনী – গরীব ভেদাভেদ ভুলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সহজ সাধারণ মনোভাবে সাম্যতা গড়ে তুলতে হবে । উঁচু শ্রেণির অহংকার ভুলে নীচু তলার মানুষের সঙ্গে এক হতে হবে । তবেই মানুষ তাদের দেবতাজ্ঞানে পূজা করবে ।
( ঘ ) সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করোঃ
‘ একের অসম্মান নিখিল মানব জাতির লজ্জা – সকলের অপমান ‘
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি কাজি নজরুল ইসলাম বিরচিত ‘ কুলি – মজুর ‘ কবিতা থেকে গৃহিত হয়েছে । কবি এখানে বিশ্বের মানব জাতির ঐক্যের কথা বলেছেন । মহা – মানবের মিলন তীর্থে মানুষই পারবে মানবতার ঐক্যতা বাঁধতে । সমস্ত রকমের ভেদাভেদ ভুলে মানুষই পারবে এক মানবজাতি গঠন করতে মহা মানবের সাগর তীরে । কবি চান সমস্ত রকমের ধর্ম বর্ণের উচু – নীচু ভেদাভেদ ভুলে বিশ্বের সকল মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহামিলনের সুর বাঁধুক । নতুন সমাজ গড়ে উঠুক । এক স্বচ্ছ নির্মল পবিত্র সমাজে যেখানে কোনো ধরণের বৈষম্যের জঞ্জাল থাকবে না , সেরকম সমাজে সকলের মধ্যে এক গভীর বোধ জন্ম নিবে। একজনের কষ্টে সকলে কষ্ট পাবে , একজনের অসম্মানে সকলে অসম্মানিত অপমানিত বোধ করবে । তখন বিশ্বজুড়ে গড়ে উঠবে একটি জাতি যার নাম মানব জাতি ।
কবি এই সাম – গান ই করেছেন উক্ত কবিতাটিতে । তিনি দেখেছেন সমাজে নিম্ন শ্রেণির উপর অত্যাচারের ছবি । সমাজে কুলি – মজুর শ্রমিকদের উপর অত্যাচার , নিপীড়ন ও উৎপীড়ন হতে দেখেছেন । সমাজের উচ্চশ্রেণির শোষনের শিকার এই কুলি – মজুর শ্রমিকেরা । তাই কবি বলতে চান তাদের এই অপমান – অসম্মান তাদের এই অপমান – অসম্মান আসলে সম্পূর্ণ মানব জাতির অসম্মান অপমান স্বরূপ । কবির বিশ্বাস সমাজের এই চেহারা একদিন পরিবর্তন হবে । সমাজের এই উৎপীড়িত নির্যাতিতরা সুবিচার পাবে , উঁচু – নীচু শ্রেণির ভেদাভোদ ঘুচে কুলি – মজুরেরা একদিন যোগ্য সম্মান পাবে ।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
১ । কুলি মজুর কবিতাটির কবির নাম কি ?
উত্তরঃ কুলি মজুর কবিতাটির কবির নাম কাজী নজরুল ইসলাম ।
২। কাজী নজরুল কবে কোথায় জন্মগ্রহন করেন ?
উত্তরঃ ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে ২৪ শে মে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে কাজী নজরুল ইসলাম জন্মগ্রহন করেন ।
৩। নজরুলের অগ্নিবীনা কাব্য গ্রন্থটি কবে প্রকাশ পায় ?
উত্তরঃ ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে নজরুলের অগ্নিবীনা কাব্য গ্রন্থটি প্রকাশ পায় ।
৪। কবিতাটিতে কে , কাকে কোথায় ঠেলে ফেলে দিয়েছিল ?
উত্তরঃ একটি কুলিকে এক বাবু সাহেব রেল থেকে ঠেলে ফেলে দিয়েছিল।
৫। ঘটনাটি দেখে কবির মনের প্রতিক্রিয়া কী ছিল ?
উত্তরঃ কবির মনে একটাই প্রশ্ন উঠেছিল যে “ এমনি করে জগৎ জুড়ে মার খাবে দুর্বল ” ।
৬। কুলিরা কত বেতন পায় ?
উত্তরঃ কুলিরা যৎসামান্য বেতন পায় ।
৭। ধনী শ্রেণি বা বাবুসাবদের উপার্জন কত ?
উত্তরঃ ক্রোর বা কোটি টাকা ।
৮। কুলি – শ্রমিক মজরদের শ্রমের দান আসলে কী ?
উত্তরঃ মোটর গাড়ী , জাহাজ , রেলগাড়ী , কল – কারখানা এসবই কুলি – মজুর শ্রমিকদের শ্রমের দান ।
৯ । ‘ ঠুলি খুলে দেখ ’ কথার অর্থ কি ?
উত্তরঃ শ্রমিকদের শ্রমের দান আমরা দেখতে পাই না এমনকি অনুভব করতেও পারি না । তাই কবি বলেছেন চোখের ঠুলি খুলে চেয়ে দেখতে অর্থাৎ চোখের বাঁধন খুলে চেয়ে দেখতে ।
১০। কবি কিরকম দিন আসবে বলে আশাবাদী হয়েছেন ?
উত্তরঃ শুভদিন আসছে বলে কবি আশাবাদী হয়েছেন ।
১১। ‘ তারাই মানুষ , তারাই দেবতা , বলে কবি কাদের বোঝাতে চেয়েছেন ?
উত্তরঃ সমাজে কুলি – মজুর মুটে , শ্রমিক , কৃষকদের কবি দেবতা বলে বোঝতে চেয়েছেন ।
১২। কবি কাদের জয়গান গেয়েছেন ?
উত্তরঃ কবি কুলি – মজুরদের জয়গান গেয়েছেন ।
১৩। কবি অঞ্জলি করে মাথায় তুলে নেবেন ?
উত্তরঃ কবি অঞ্জলি করে কুলি মজুরদের পায়ের ধুলা মাথায় নেবেন ।
১৪। নতুন দিনে কবি কি রকম সূর্য উদয়ের কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ নতুন দিনে কবি রক্তিম লাল সূর্য উদয়ের কথা বলেছেন ।
১৫। কবি কোন কোন মানুষকে এগিয়ে আসার কথা বলেছেন ?
উত্তরঃ কবি সকল কালের , সকল দেশের সকল মানুষকে এগিয়ে আসার কথা বলেছেন ।
১৬। ‘ দেখিনু সেদিন রেখে — । ‘ কবি কি দেখেছেন , দেখে কবির মনে কী প্রতিক্রিয়া হয়েছে ?
উত্তরঃ কবি একদিন দেখেছেন কোনো এক রেলগাড়ী থেকে একজন বাবুসাব একজন কুলিকে ঠেলে ফেলে দিয়েছেন । সামান্য কিছু পারিশ্রমিকের জন্য এই কুলিদের অত্যাচারিত হতে দেখে কবির মনে প্রশ্ন জেগেছে যে , এইভাবেই সমাজের কুলি – মজুর শ্রমিকেরা কি চিরকাল উচ্চবিত্ত শ্রেণির দ্বারা লাঞ্ছিত অত্যাচারিত হবে ।
১৭। যে দধীচিদের হাড় দিয়ে ঐ বাষ্প শকট চলে ’ – আলোচ্য অংশে দধীচি বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ?
উত্তরঃ এখানে দধীচি বলতে সমাজের শ্রমজীবি মানুষদের বোঝানো হয়েছে । কুলি – মজুররা শ্রমিকরা তাদের শ্রমের বিনিময়ে সমাজের তথাকথিত উঁচুতলার মানুষদের সুখ – সাচ্ছন্দে বেঁচে থাকার রসদ জুগিয়েছে । দধিচী যেমন নিজের অস্থি দিয়ে দেবতাদের বাঁচিয়েছেন ঠিক তেমনি শ্রমিকরা তাদের পরিশ্রম দিয়ে রেলগাড়ি তৈরি করেছেন ।
১৮। বাবুসাব কিভাবে দুর্বলদের উপর অত্যাচার করে ?
উত্তরঃ বাবুসাব সমাজের একজন ধনী ব্যক্তি । তিনি কুলি – মজুর শ্রমিকদের দিয়ে পরিশ্রম করিয়ে যৎসামান্য পারিশ্রমিক দিয়ে বিদায় করতে চান । মজুররা এর প্রতিবাদ করলে তাদেরকে সমাজের বাবুসাবরা অত্যাচার , নিপীড়ন করে ।
১৯। কবির মতে সমাজে কিভাবে ‘ নব – উত্থান ’ আসে ?
উত্তরঃ কবির মতে সমাজে নব – উত্থান আসে কুলি – মজুরদের হাত ধরে । অর্থাৎ শ্রমিকদের হাড় ভাঙা পরিশ্রমের ফলেই সমাজে নব উত্থান আসে । কবি তাই শ্রমিক শ্রেণির জয়গান করেছেন । এই শ্রমিকেরাই হচ্ছে সমাজের ধারক ও বাহক ।
২০। কবি শ্রমিক শ্রেণির কাছে কি করার জন্য আবেদন করেছেন ?
উত্তরঃ কবি শ্রমিকদের বলতে চেয়েছেন যে , নতুন যুগ আসবে , নতুন যুগের সূচনায় নতুন সূর্য উদয়ের যুগে শ্রমিক যেন তাদের পুরাতন বন্ধ দরজা ভেঙে এগিয়ে আসে । কবি তাদের কাছে আবেদন করেছেন যেন , শ্রমিকেরা আর নির্যাতন , অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য না করে । অত্যাচার সহ্য করার দিন পার হয়ে গেছে , নতুন দিনের সূর্যের মতো তারাও যেন উজ্জ্বল আলোকে এগিয়ে চলে ।
২১ । কার ‘ খুনে ’ রাঙা হয়ে অট্টালিকা নির্মান হয় বুঝিয়ে লেখো ।
উত্তরঃ সমাজের উচ্চবিত্ত বা ধনী শ্রেণির লোক কিছু ভোগ করে তার সবটাই শ্রমজীবিদের রক্তে তৈরি । সমাজের উচ্চবিত্ত মানুষেরা আরাম করে যেসব অট্টালিকায় বসবাস করে , সেগুলো সমাজের তথাকথিত নিম্ন শ্রেণির লোক শ্রমিকরাই তাদের হাঁড় ভাঙা পরিশ্রম দিয়ে তৈরি করেন । তাদের শ্রম , রক্ত দিয়ে তৈরি এই বিলাস বহুল অট্টালিকা । অথচ শ্রমজীবিদের এই পরিশ্রমের সঠিক মাসুল সমাজের উচ্চবিত্তরা কোনো দিনই দিতে চায় না । সমাজের উচ্চবিত্তরা শ্রমজীবিদের এই অবদানকে দেখতেই পায় না ।
২২। কবি , কাদের গান গাইতে চেয়েছেন এবং কেন ?
উত্তরঃ কবি নজরুল ইসলাম মানুষের জয়গান করেছেন । যেই মানুষরা মানব – সভ্যতার ধারক ও বাহক । অর্থাৎ সমাজের কুলি – মজুর শ্রমিক ও কৃষক শ্রেণির , যারা এই সমাজে নির্যাতিত ও নিপীড়িত তাদের জয়গান করতে চেয়েছেন । কবির মতে তারাই সমাজকে গড়ে তুলেছেন। শ্রমিকেরা হাতুড়ি শাবল , গাইতি নিয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে , পাহাড় কেটে পথ তৈরি করেছেন । সমাজের সমস্ত ভার বহন করে নিজের গায়ে সমাজের ধূলা মেখেছেন তারাই সভ্যতার বেদীমুলে তাদের শ্রম ঢেলে দিয়েছেন তাই কবি তাদের জয়গান গেয়েছেন ।
কবি সাম্যবাদে বিশ্বাসী । কবি কখনো কোনো ভেদাভেদ মানেন না । সমাজের উচ্চ – নীচ , ধনী দরিদ্র কোনো ধরণের ধর্ম ও বর্ণের ভেদাভেদ মানেন না । কবির চোখে সকল মানুষই সমান । বিশেষ করে যারা সমাজের উচ্চ শ্রেণির লোকদের সুবিধা ভোগের রসদ যোগাচ্ছে তাদের উপর যখন এই উচুতলার মানুষরাই অত্যাচার করে তখন কবি তা সহ্য করতে পারেন না । তাই কবি শ্রমিকদেরই দেবতা জ্ঞান করেছেন । শ্রমজীবীদেরই জয়গান করেছেন ।
২৪ । “ তোমারে সেবিতে হইল যাহার মজুর , মুটে ও কুলি , তোমারে বহিতে যারা পবিত্র অঙ্গে লাগাল ধূলি ” — তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর ?
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ‘ কুলি – মজুর ’ কবিতা থেকে গৃহিত কবি এখানে তাদের বলতে সমাজের তথাকথিত সুবিধাভোগী ধনী শ্রেণিকে বুঝিয়েছেন । যারা সমাজের উপর তলায় থেকে সামাজিক সুখ সাচ্ছন্দ্য ভোগ করেছে । তাদের সুখ সাচ্ছন্দ্যের পেছনে যারা অবদান জুগিয়েছে সেই শ্রমজীবি মানুষদের জয়গান করেছেন কবি । কবির মতে এরাই সমাজের ধারক ও বাহক । এই শ্রমজীবি মানুষদের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের ফলে আজ সভ্যতা এগিয়ে চলেছে । কিন্তু শ্রমজীবি মানুষের এই অবদান কেউ স্বীকার করে না । অথচ এই কুলি – মজুর মুটেরাই সমাজের উঁচুতলার মানুষদের সেবার জন্য তাদের পবিত্র অঙ্গে সমাজের ধূলি লাগিয়েছে । তাই কবি শ্রমজীবিদের জয়গান করেছেন ।
শব্দার্থ :
বাষ্প : বাবুসাহেব । বাবু শব্দের আভিধানিক অর্থ শৌখিন অথবা বিলাসী ব্যক্তি । সঙ্গে সাহেব যুক্ত হয়ে এখানে ধনী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে ।
দধীচি : জনৈক মুনির নাম । বৃত্রাসুর যখন দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করেন তখন দেবতারা জানতে পারেন যে দধীচি মুনির অস্থি দিয়ে নির্মিত অস্ত্রেই একমাত্র বৃত্রাসুরকে নিধন করা সম্ভব । একথা জানতে পেরে দধীচি স্বেচ্ছায় দেহত্যাগ করেন । তাঁর অস্থি দিয়ে নির্মিত বজ্রাস্ত্রে বৃত্রাসুরের বিনাশ হয় । দেবগণ পুনরায় স্বর্গে অধিষ্ঠিত হন ।
বাষ্প : শকট । শকট শব্দের অর্থ গাড়ি । বাষ্প দ্বারা চালিত গাড়ি অর্থাৎ রেলগাড়ির কথা বলা হয়েছে ।
পাই : প্রাচীন মুদ্ৰাবিশেষ । এক পয়সার তিন ভাগের এক ভাগ ।
মুটে : মোট অর্থাৎ ভার বহনকারী ।
সিক্ত : ভেজা ।
Hi, I’m Dev Kirtonia, Founder & CEO of Dev Library. A website that provides all SCERT, NCERT 3 to 12, and BA, B.com, B.Sc, and Computer Science with Post Graduate Notes & Suggestions, Novel, eBooks, Biography, Quotes, Study Materials, and more.