Class 11 History Chapter 1 মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন

Class 11 History Chapter 1 মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Assam Board Bengali Medium Class 11 History Chapter 1 মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন and select needs one.

Class 11 History Chapter 1 মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Assam Board Class 11 History Chapter 1 মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন Bengali Medium Solutions for All Subject, You can practice these here.

মানব সভ্যতার ঊষালগ্ন

পাঠ:

ক-বিভাগ–(আদিম সমাজ)

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

1. ‘MYA’-এর সম্পূর্ণ রূপ কি?

উত্তর‍ঃ Million Years Ago অর্থাৎ নিযুত বছর পূর্বে।

2. পৃথিবীতে কখন প্রথম মানব-সদৃশ প্রাণীর আবির্ভাব হয়?

উত্তরঃ প্রায় ৫.৬ (5.6) MYA বা নিযুত বছর পূর্বে। 

3. আধুনিক মানুষের উদ্ভব কখন হয় বলে অনুমান? 

উত্তরঃ ১,৬০,০০০ বছর পূর্বে।

4. এশিয়া ও আফ্রিকায় মানব প্রজাতির উৎপত্তি কখন হয়েছিল?

উত্তরঃ প্রায় ৩৬ মিলিয়ন বছর পূর্বে। 

5. মানবজাতির উৎপত্তি সংক্রান্ত একটি তত্ত্বের নাম লেখ।

উত্তরঃ আঞ্চলিক প্রবাহমান তত্ত্ব।

6. মানবজাতির ইতিহাস জানতে সহায়তাকারী আবিষ্কারগুলি কি কি?

উত্তরঃ পাথরের হাতিয়ার আবিষ্কার, মানুষের জীবাশ্ম, গুহাচিত্র প্রভৃতি। 

7. বরফ যুগের পরিসমাপ্তি কখন ঘটে?

উত্তরঃ ১৩,০০০ বছর পূর্বে।

8. ‘জীবাশ্ম’ (Fossil) কি?

উত্তরঃ ‘জীবাশ্ম’ (Fossil) হচ্ছে বহু প্রাচীন উদ্ভিদ, প্রাণী বা মানুষের কোন অবশেষ বা ছাপ যা বিবর্তনের ফলে পাথরে রূপান্তরিত হয়েছে।

9. ইউরোপের দুটি প্রাচীন জীবাশ্মের নাম কি কি?

উত্তরঃ হেইডেলবার্গেনসিস্ এবং নিয়েনদার থালেনসিস।

10. দুটি স্থানের নাম কর, সেখানে যন্ত্র তৈরিকারক মানুষ-এর বা আবিষ্কৃত হয়েছিল ?

উত্তরঃ তানজানিয়ার অন্তুভাই জর্জ এবং ইথিওপিয়ার ওমো। 

11. প্রাচীনতম আধুনিক মানব জীবাশ্ম কোথায় আবিষ্কৃত হয়েছে?

উত্তরঃ ওমো কিবিশ, ইথিওপিয়ায় (আনুমানিক বয়স ১,০৫,০০০-১,৬০,০০০ বছর। 

12. ‘সোজা হয়ে চলা মানুষ’ এর জীবাশ্ম কোথায় পাওয়া গিয়েছে?

উত্তরঃ আফ্রিকায় ও এশিয়ায়। 

13. আদিম মানব কখন থেকে গুহা বা নিজের তৈরি আবাসে বসবাস করতে শুরু করে বলে অনুমান?

উত্তরঃ আনুমানিক ৪,০০,০০০-১,২৫,০০০ বছর পূর্বে।

14. আদিম মানুষের তৈরি প্রাচীনতম পাথরের সরঞ্জাম (tools) কোথায় আবিষ্কৃত হয়েছে?

উত্তরঃ কেনিয়া ও ইথিওপিয়াতে।

15. মানুষ কখন থেকে সেলাই করা কাপড় ব্যবহার/সুঁচের ব্যবহার করতে শুরু করে বলে প্রমাণ পাওয়া যায়?

উত্তরঃ ২১,০০০ বছর পূর্বে।

16. আদিম মানবের মধ্যে কখন ভাষার ব্যবহার শুরু হয়? 

উত্তরঃ ২ নিযুত বর্ষ পূর্বে (MYA) বলে অনুমান।

17. আদিম মানব কখন কৃষিকাজ ও পশুপালন শুরু করে?

উত্তরঃ ১০,০০০–৪,৫০০ বছর পূর্বে।

18. আদিম মানবেরা কখন শিকার করতে শুরু করে ?

উত্তরঃ প্রায় ৫,০০,০০০ বছর পূর্বে।

19. শিকার ও কৃষির মধ্যে কোনটি আগে আরম্ভ হয়েছিল?

উত্তরঃ শিকার।

20. কোন্ দুইটি আবিষ্কার মানব সভ্যতা বিকাশের গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ?

উত্তরঃ আগুন ও চাকার আবিষ্কার।

21. আদিম মানব গোষ্ঠীর বিভিন্ন প্রজাতি আফ্রিকার কোন্ কোন্ জায়গায় পাওয়া গিয়েছে?

উত্তরঃ ইথিওপিয়া, তানজানিয়া, ও কেনিয়ায়।

22. প্রথম পাথরের তৈরি হাতিয়ার কবে তৈরি হয় ?

উত্তরঃ প্রায় ২.৬ মিলিয়ন বছর পূর্বে।

23. প্রারম্ভিক সুচিন্তিত ও পরিকল্পিত শিকারের প্রমাণ কোথায় আবিষ্কৃত হয়েছে?

উত্তরঃ (ক) বক্সগ্রোভ, ইংল্যান্ড (৫,০০,০০০ বছর পূর্বে)। এবং 

(খ) স্কোনিংজেন, জার্মানী (৪,০০,০০০ বছর পূর্বে)। 

24. কেনিয়ার ‘Kilombe’ (কিলোম্বে) এবং ‘Olorgesailie’ (ওলরগেসাইলি) কেন বিখ্যাত? 

উত্তরঃ এই স্থান দুটিতে ৭,০০,০০০ – ৫,০০,০০০ বছর পূর্বের হাজারো কুড়াল ও যন্ত্রাদি আবিষ্কৃত হয়েছে।

25. নৃতত্ত্ব কি?

উত্তরঃ মানবজাতির বিবর্তন অধ্যয়নকারী বিজ্ঞান।

26. প্রাচীন সমাজকে কি বলা হত?

উত্তরঃ শিকার ও সংগ্রহকারী সমাজ।

27. ‘হোমো (Homo) শব্দের অর্থ কি?

উত্তরঃ ‘হোমো’ (Homo) একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ “মানুষ”।

28. হোমিনিডস কি?

উত্তরঃ হোমিনিডস হল ভিন্ন ধরনের বানর, যাদের শরীর ছিল অধিকতর লম্বা এবং লেজ ছিল না। 

29. মানুষের প্রারম্ভিক বা প্রথম প্রজাতি ‘হোমিনিড’ (Hominids) এর উৎপত্তি কখন এবং কোথায় হয় বলে অনুমান?

উত্তরঃ ৫.৬ নিযুত বছর পূর্বে (5.6 MYA) এবং আফ্রিকাতে। 

30. ‘Hominids’-এর প্রধান ভাগ দুইটি কি কি?

উত্তরঃ ‘Hominids’-এর প্রধান ভাগ দুইটি হল- 

(ক) অস্ট্রালোপিথেকাস, এবং (খ)হোমো (Homo) 

31. হোমিনিডস-এর উৎপত্তি প্রথম কোথায় হয়েছিল?

উত্তরঃ আফ্রিকায়।

32. প্রিমেইটস্ বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ প্রিমেইটস্ হল বিশাল স্তন্যপায়ী গোষ্ঠীর একটি উপগোষ্ঠী।

33. ‘Primates’-এর সাথে ‘Hominoids’ বা ‘Hominids’-এর পার্থক্য কি?

উত্তরঃ ‘Primates’ হচ্ছে বৃহত্তর স্তন্যপায়ী প্রাণীবর্গের উপশাখা। আবার ‘Hominoids’ বা ‘Hominids’ হচ্ছে ‘Primates’-এর উপশাখা।

34. কখন পৃথিবীতে হোমো সেপিয়েনস সৃষ্টি হয়েছিল?

উত্তরঃ প্রায় ১.৬ মিলিয়ন বছর পূর্বে।

35. অস্ট্রালোপিথেকাস (Australopithecus) নামের উৎস কি?

উত্তরঃ অস্ট্রালোপিথেকাস (Australopithecus) শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ‘অস্ট্রাল’ (Aus tral) অর্থাৎ দক্ষিণ এবং গ্রীক শব্দ ‘পিথেকাস’ (Pithikos) অর্থাৎ বানর হতে এসেছে।

36. অস্ট্রালোপিথেকাস’ শ্রেণীর দণ্ডায়মান চলাচলে সীমাবদ্ধতার কারণ কি? 

উত্তরঃ যেহেতু বেশিরভাগ সময়ই তারা গাছে কাটাতো, তাই তাদের দৈহিক গঠনও অনুরূপ হয়, যা দণ্ডায়মান চলাচলে বাধার সৃষ্টি করেছিল।

37. চার্লস ডারউইন কে ছিলেন?

উত্তরঃ চার্লস ডারউইন একজন ইংরেজ বিজ্ঞানী (ইং ১৮০১-১৮৮২) তার মতে প্রাচীনকালে পশু থেকেই মানুষের সৃষ্টি হয়। 

38. চার্লস ডারউইনের লেখা On the Origin of Species বইটি কখন প্রকাশিত হয়? 

উত্তরঃ বইটি প্রকাশিত হয় ১৮৫৯ সালের ২৪শে নভেম্বর।

39. ‘প্রজাতির উৎপত্তি’ গ্রন্থটি কার লেখা?

উত্তরঃ চার্লস ডারউইন।

40. On the Origin of Species বইটির লেখক কে?

অথবা,

‘বিবর্তনের সূত্র’-এর প্রবক্তা কে?

উত্তরঃ চার্লস ডারউইন। 

41. তানজানিয়ার যন্ত্র তৈরিকারক মানুষের আবিষ্কার প্রথম কে করেছিলেন?

উত্তরঃ এল. এস. বি. লিকি-র অধীনে কর্মরত মেরী লিকি। 

42. সেলাই-এর সূচ কখন আবিষ্কৃত হয়েছিল?

উত্তরঃ প্রায় ২১,০০০ বছর পূর্বে।

43. জেমস উডবার্ন কে ছিলেন?

উত্তরঃ নৃতত্ত্ববিদ।

44. Finding the World’s Earliest Man বইটির লেখক কে?

উত্তরঃ এল. এস. বি. লিকি।

45. হাজা কি?

উত্তরঃ হাডজা একটি ছোট শিকার-সংগ্রহকারী দল তারা রিফট উপত্যকার ইয়াসির নামক লবণাক্ত হ্রদের কাছে বাস করত। 

46. জীবাশ্মকে লক্ষ লক্ষ বছর কিভাবে সংরক্ষিত করে রাখা যায়?

উত্তরঃ জীবাশ্মগুলিকে সাধারণত শিলা দ্বারা আবৃত করে রাখা হয়; ফলে তারা লক্ষ লক্ষ বছর সুরক্ষিত থাকে।

47. প্রজাতি কি?

উত্তরঃ একই বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রাণীগোষ্ঠীকে প্রজাতি বলে। 

48. বিভিন্ন প্রজাতির নামকরণে বিজ্ঞানীরা কোন্ কোন্ ভাষা ব্যবহার করতেন?

উত্তরঃ ল্যাটিন ও গ্রিক ভাষা।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

1. প্রাচীন মানব ইতিহাস চর্চার প্রধান উপাদান বা সূত্র কি কি?

উত্তরঃ প্রাচীন মানব ইতিহাস চর্চার প্রধান উপাদান বা সূত্রগুলি হচ্ছে—

(ক) মানুষের জীবাশ্ম (Fossil) 

(খ) পাথরের তৈরি হাতিয়ার। এবং 

(গ) গুহাচিত্র।

2. অবলুপ্ত হয়ে যাওয়া মানব প্রজাতির জীবাশ্ম কিভাবে মানুষের ক্রমবিবর্তনের সাক্ষ্য দেয় ?

উত্তরঃ জীবাশ্মের সময়কাল নির্ণয় করার মাধ্যমে মানবজাতির ক্রমবিকাশের ধারা বা ইতিহাস জানা সম্ভব। এইক্ষেত্রে দুইটি উপায় হচ্ছে- 

(ক) রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্বারা জীবাশ্মের সময় নির্ণয় করা। এবং 

(খ) যে সমস্ত পাথরে জীবাশ্ম প্রোথিত এদের সময় নির্ণয় করা।

3. ১৯ শতকের প্রারম্ভিক পর্যায়ে ইউরোপীয় পণ্ডিতরা কেন আবিষ্কৃত জীবাশ্মের প্রাচীনত্ব অস্বীকার করেছিলেন?

উত্তরঃ এর কারণ হচ্ছে ইউরোপীয় পণ্ডিতরা ছিলেন খ্রিস্টীয় মতবাদে বিশ্বাসী। তাই বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্ট অনুসারে তারা বিশ্বাস করতেন যে মানুষের সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বর । ফলে মানুষের ক্রমবিকাশের ধারণা তাদের নিকট গ্রহণযোগ্য ছিল না।

4. প্রারম্ভিক সুদীর্ঘকাল আদিম মানবপ্রজাতির জীবনশৈলী কেমন ছিল? 

উত্তরঃ প্রারম্ভিক পর্যায় থেকেই জীবনধারণের জন্য মানুষ গাছ থেকে ফল সংগ্রহ করত। তাছাড়া আরও একটি উপায় ছিল শিকার। সংগ্রহ ও শিকার এবং আত্মরক্ষার প্রয়োজনে মানুষ শিখেছিল পাথরের হাতিয়ার তৈরি করতে এবং একে অন্যের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে। 

5. প্রারম্ভিক মানুষকে কিসের ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রজাতিতে ভাগ করা হয়?

উত্তরঃ প্রাচীন মানুষের অবশেষের মধ্যে বিদ্যমান হাড়ের গঠন, যেমন মানুষের খুলির আকার, চোয়াল ইত্যাদির ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রজাতিতে ভাগ করা হয়।

6. প্রারম্ভিক মানুষের দ্বিপদ চলাচলের প্রথম প্রমাণ কোথায় আবিষ্কৃত হয়েছে? এর আনুমানিক বয়স কত?

উত্তরঃ প্রারম্ভিক মানুষের দ্বিপদ চলাচলের প্রথম প্রমাণ আবিষ্কৃত হয়েছে তানজানিয়ার লেটলিতে (Laetoli)। এর আনুমানিক বয়স প্রায় ৩.৬ নিযুত বছর।

7. মানুষের কোন্ আবিষ্কারগুলি সভ্যতার অগ্রগতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল?

উত্তরঃ আগুনের আবিষ্কার এবং চাকার আবিষ্কার সভ্যতার অগ্রগতিতে নতুন অধ্যায়েরসূচনা করেছিল।

8. আদিম মানবের গুহাচিত্র থাকা কয়েকটি কেন্দ্রের নাম লেখ।

উত্তরঃ আদিম মানবের গুহাচিত্র থাকা কয়েকটি কেন্দ্র হল- 

(ক) ফ্রান্সের শোভেত (Chauvet) ও লাসকো (Lascaux) এবং 

(খ) স্পেনের আলটামিরা’ (Altamira)

9. গুহাতে বাস করার ফলে আদিম মানবের দুটি সুবিধা উল্লেখ কর।

উত্তরঃ গুহাতে বাসের ফলে আদিম মানবের দুটি সুবিধা নিম্নরূপঃ

(ক) ঝড়, বৃষ্টি বা তুফান থেকে রক্ষা পাওয়া।

(খ) হিংস্র জন্তু থেকে রক্ষা পাওয়া। 

10. হোমিনিড এবং হোমিনয়ডদের মধ্যে দুটি পার্থক্য উল্লেখ কর।

উত্তরঃ হোমিনিড এবং হোমিনয়ডদের মধ্যে দুটি পার্থক্য নিম্নরূপঃ

(ক) হোমিনয়ডদের মগজ হোমিনিডদের থেকে ছোট।

(খ) হোমিনয়ডরা চতুষ্পদ, কিন্তু হোমিনিডরা দণ্ডায়মান।

11. চাকার আবিষ্কার কিভাবে মানব সমাজের অগ্রগতিতে সহায়ক? 

উত্তরঃ চাকার আবিষ্কারের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসে এবং খাদ্য তৈরি। ও সংরক্ষণের পাত্র তৈরি সম্ভব হয়।

12. হোমিনিডস (Hominids) বলতে কি বোঝ? 

উত্তরঃ এক আদিম মানব প্রজাতি। হোমিনিডস-এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল যে, তাদের মস্তিষ্কের আয়তন বড়, তারা সোজাভাবে দাঁড়াতে পারে, এরা দ্বিপদবিশিষ্ঠ এবং তাদের হাতেরও বিশেষত্ব আছে।

13. হোমিনিডদের তিনটি শারীরিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর। 

উত্তরঃ হোমিনিডদের তিনটি শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ

(ক) হোমিনিডদের মস্তিষ্ক আয়তনে বড় ছিল।

(খ) তারা সোজাভাবে দাঁড়াতে পারত। 

(গ) হোমিনিডগণ বিপদবিশিষ্ট।

14.আফ্রিকাতে ‘Hominids’ -এর উৎপত্তির কি প্রমাণ আছে?

উত্তরঃ আফ্রিকাতে ‘Hominids’-এর উৎপত্তির দুইটি প্রমাণ আছে- 

(ক) আফ্রিকার বনমানুষের প্রজাতিই ‘Horinds’-এর সঙ্গে বিশেষভাবে সম্পর্কিত। এবং 

(খ) মানুষের প্রাচীনতম জীবাশ্মটি আফ্রিকাতে আবিষ্কৃত হয়েছে, যার বয়স আনুমানিক ৫.৬ নিযুত বছর।

15. ‘হোমো’ প্রজাতির বিভিন্ন পর্যায় বা শ্রেণীবিভাগ কি কি?

উত্তরঃ বিজ্ঞানীরা ‘হোমো’ জীবাশ্মগুলির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী এইগুলিকে নিম্নোক্ত পর্যায়ে বা শ্রেণীতে ভাগ করেনঃ

(ক) ‘Homo habilis” বা ‘হোমো হ্যাবিলিস’ (যন্ত্র তৈরিকারক মানব)।

(খ) ‘Homo erectus’ বা ‘হোমো ইরেক্টাস’ (সোজা-চলা মানুষ)। 

(গ) ‘Homo sapiens’ বা ‘হোমো সেপিয়েনস’ (চিন্তাশীল মানুষ)।

16. ‘Homo’ (হোমো) প্রজাতির বৈশিষ্ট্যগুলি কি কি?

উত্তরঃ‘Australopithecus’ (অস্ট্রালোপিথেকাস)-এর সাথে তুলনা করলে দেখা যায়, ‘Homo’ (হোমো) প্রজাতির বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ

(ক) মগজের আকার বড়।

(খ) চোয়ালের বাইরের দিক ছোট।

(গ) দাঁতগুলি আগের চেয়ে ছোট।

17. ‘Homo habilis’ (হোমো হ্যাবিলিস) এবং ‘Homo erectus’ (হোমো ইরেক্টাস) প্রজাতির প্রাচীন মানবের জীবাশ্ম কোথায় পাওয়া গিয়েছে? 

উত্তরঃ ‘Homo habilis’ (হোমো হ্যাবিলিস) প্রজাতির প্রাচীন মানবের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে—

(ক) ওন্ড্রুভাই গর্জ, তানজানিয়া।এবং 

(খ) ওমো, ইথিওপিয়ায়।

 “Homo erectus’ (হোমো ইরেক্টাস) প্রজাতির প্রাচীন মানবের জীবাশ্ম পাওয়া গিয়েছে—

(ক) কোবি ফোরা, কেনিয়া। এবং 

(খ) সাংগিরান, জাভায়।

18. অস্ট্রালোপিথেকাস কি?

উত্তরঃ সোজা হয়ে চলা প্রথম প্রাচীন মানুষ, যাদের সন্ধান মধ্য আফ্রিকার সাহারার কিছু অঞ্চলে পাওয়া গিয়েছে।

19. অস্ট্রালোপিথেকাস্’ (Australopithecus) শ্রেণীর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ। 

উত্তরঃ ‘অস্ট্রালোপিথেকাস শ্রেণীর বৈশিষ্ট্যগুলি হচ্ছে- 

(ক) ‘হোমো’ থেকে ছোট আকারের মগজ। 

(খ) দীর্ঘ গোড়ার দাঁত। 

(গ) সীমিত হাতের দক্ষতা। এবং 

(ঘ) সীমাবদ্ধ দণ্ডায়মান চলাচল। 

20. অস্ট্রালোপিথেকাস’ (Australopithecus) এবং ‘হোমো (Homo)-এর মধ্যে প্রধান পার্থক্য কি?

উত্তরঃ অস্ট্রালোপিথেকাস’ ও ‘হোমো-এর মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে—

(ক) ‘হোমো’-এর মগজের আকার বড় এবং দাঁত ছোট। এবং 

(খ) অস্ট্রালোপিথেকাসের চোয়াল ভারী ও প্রসারিত। 

21. কে এবং কখন প্রথম অস্ট্রালোপিথেকাস’ জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন?

উত্তরঃ ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ প্রত্ননৃতত্ত্ববিদ মেরী লিকি এবং লুই লিকি তানজানিয়ার ওন্ড্রুভাই গর্জে প্রথম ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন।

22. অস্ট্রালোপিথেকাস মানে কী? এর একটি চরিত্র উল্লেখ কর।

উত্তরঃ অস্ট্রালোপিথেকাস একটি বিলুপ্ত হোমিনিড প্রজাতি, যারা ১-৪ মিলিয়ন বর্ষ পূর্বে আফ্রিকায় বাস করত। 

এর একটি চরিত্র হল যে এর মস্তিষ্ক ক্ষুদ্র এবং দাঁত বড় ছিল।

23. আর্টিফ্যাক্ট বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ মানুষের দ্বারা তৈরি জিনিসকে ‘আর্টিফ্যাক্ট’ বলে। এই শব্দটির বিশালতা অনেক। চিত্রাঙ্কন, যন্ত্রাংশ, খোদাই ইত্যাদি মানুষের দ্বারা তৈরি প্রায় সব জিনিস আর্টিফ্যাক্ট-এর অন্তর্ভুক্ত।

24. জাতিবিজ্ঞান বা গোষ্ঠিবিজ্ঞান বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ জাতিবিজ্ঞান বা গোষ্ঠীবিজ্ঞানে সমসাময়িককালের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বিস্তারিত অধ্যয়ন করা হয়। এই বিদ্যায় জাতিগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা প্রণালী খাদ্যাভ্যাস, জীবিকার্জন, লিঙ্গ ভূমিকা, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, সামাজিক পরিকাঠামো, ধর্মীয় রীতিনীতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

25. নৃতত্ব বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ নৃতত্ত্ব হল মানব বিজ্ঞানের এমন একটি শাখা যা মানবজাতির বিবর্তনের ইতিহাসকে বিজ্ঞানসম্মত অধ্যায়ন করে থাকে। 

26. জিনজানথ্রোপাস কি?

উত্তরঃ মানব সভ্যতার প্রথম প্রজাতি, যারা হাতিয়ার তৈরি করতে পেরেছিল। প্রায় ৫ লক্ষ বছর পূর্বে তাদের আবির্ভাব হয়েছিল।

27.প্রজাতি বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ প্রজাতি হল একদল জীব যারা সস্তান প্রসব করে বংশবৃদ্ধি করে। তবে বংশবৃদ্ধির জন্য এক প্রজাতির সদস্য অন্য প্রজাতির সদস্যের সঙ্গে মিলিত হতে পারে না।

28. কয়েকটি বিশেষ ধরনের জীবাশ্মের নাম লেখ। 

উত্তরঃ হোমো হেইডেলবার্ন জেনসিস, হোমো নিয়েনদার থালেনসিস, পিকিং মানব, জাভা মানব। 

29. ‘Primates’ বলতে কি বোঝ? এর বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ। 

উত্তরঃ বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীবর্গের একটি উপশাখা হচ্ছে Primates। বানর, বনমানুষ ও মানুষ এই উপশাখার অন্তর্ভুক্ত। 

Primates- দের বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ

(ক) লোমাবৃত শরীর।

(খ) বিভিন্ন ধরনের দাঁত।

(গ) দীর্ঘ গর্ভধারণকাল।

(ঘ) অপরিবর্তনীয় শারীরিক তাপমাত্রা বজায় রাখার ক্ষমতা। 

30. ‘ওডুভাই গর্জ’ (Olduvai Gorge) কোথায় অবস্থিত? এটি কেন বিখ্যাত?

উত্তরঃ আফ্রিকা মহাদেশের তানজানিয়াতে ওন্ডুভাই গর্জ নামের রিফ্‌ট উপত্যকা অঞ্চলেই আদিম মানবের প্রাচীনতম জীবাশ্ম (অস্ট্রালোপিথেকাস) আবিষ্কৃত হয়েছে। 

31. ‘Dolni Vestonice’ (দল্লি ডেস্টোনিস) কোথায় অবস্থিত? এর গুরুত্ব কি?

উত্তরঃ ‘Dolni Vestonice’ (দল্লি ভেস্টোনিস) হচ্ছে চেক প্রজাতন্ত্রের একটি নদী তীরবর্তী স্থান। এখানে ৩৫,০০০ বছর পূর্বে পরিকল্পিত শিকারের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। শরৎ ও বসন্তকালে যখন অধিক সংখ্যক হরিণ ও ঘোড়া নদী পার হওয়ার জন্য এখানে সমবেত হত, তখন মানুষ তাদের শিকার করত।

32. ‘লাজারে গুহা’ (Lazaret Cave) কোথায় অবস্থিত? এটা কেন বিখ্যাত?

উত্তরঃ ‘লাজারে গুহা’ ফ্রান্সের দক্ষিণ অঞ্চলে অবস্থিত। এখানে মানুষের প্রারম্ভিক বসবাসের প্রমাণ পাওয়া যায়। এই গুহার দেওয়ালের বিপরীতে তৈরি করা হয়েছিল একটি ১২×৪ মিটার আয়তনের আশ্রয়স্থল। এর ভিতর ২টি অগ্নিকুণ্ড ও অনেক ধরনের খাদ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়।

33. ‘আলটামিরা’ (Altamira) কোথায় অবস্থিত? এটি কেন বিখ্যাত?

উত্তরঃ ‘আলটামিরা’ স্পেনের একটি গুহাস্থল (আবিষ্কৃত হয় ১৮৭৯ সালে)।

এই গুহাস্থলটি তার গুহাচিত্রের জন্য বিখ্যাত। এই গুহার চিত্র এবং শিলাচিত্রগুলি উজ্জ্বল ও বহুবর্ণের। এখানে মানুষের হাত ও বন্য স্তন্যপায়ী জন্তুদের চিত্র ছিল। এই গুহাচিত্রের আনুমানিক বয়স ১৮,৫০০ থেকে ১৪,০০০ বছর।

34. দুইটি বর্তমান শিকারী-সংগ্রহকারী গোষ্ঠীর নাম লেখ। 

উত্তরঃ দুইটি বর্তমান শিকার-সংগ্রহকারী গোষ্ঠীর নাম হল- 

(ক) কুং সান (Kung San), কালাহারী মরুভূমি, আফ্রিকা। এবং 

(খ) হাজ্জা (Hadza), তানজানিয়া, আফ্রিকা।

35. ‘টেরা আমাটা’ (Terra Amata) কি?

উত্তরঃ দক্ষিণ ফ্রান্সের সাগর তীরবর্তী একটি প্রত্নতাত্ত্বিক কেন্দ্র হচ্ছে ‘টেরা আমাটা’। এখানে কাঠ ও ঘাস দিয়ে তৈরি আদিম মানবের স্বল্পকালীন থাকার আশ্রয়স্থল আবিষ্কৃত হয়েছে। 

36. মৌখিক ভাষার আবির্ভাব কখন হয়েছিল?

উত্তরঃ মানুষের মস্তিষ্কে কতকগুলি বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদের কথা বলা সম্ভব করেছিল। এটা সম্ভবত ২০ লক্ষ বছর পূর্বে ঘটেছিল।

37. আগুনের আবিষ্কার আদিম মানবকে কিভাবে সাহায্য করেছিল?

উত্তরঃ আগুনের আবিষ্কার আদিম মানবকে – 

(ক) গুহা আলোকিত করতে ও গরম রাখতে এবং রান্নার কাজে। 

(খ) যন্ত্রাদি ও অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করতে। এবং

(গ) ভয়ানক পশুদের বিতাড়ন করতে সাহায্য করেছিল।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

1. দ্বিপদ চলাচল শুরু হলে প্রারম্ভিক মানুষেরা কিভাবে লাভবান হয়েছিল?

উত্তরঃ দ্বিপদ চলাচল শুরু হলে প্রারম্ভিক মানুষেরা নিম্নোক্তভাবে লাভবান হয়ঃ

(ক) মুক্ত হাতে শিশু বা যে-কোন জিনিস বহন করা সম্ভব হয়।

(খ) হাত বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হওয়ায় হাঁটতে কম শক্তি ব্যয় হয়।

(গ) অনেক দূর পর্যন্ত দেখতে সক্ষম হয়।

(ঘ) ধীরে ধীরে দণ্ডায়মান চলাচলে পারদর্শী হয়ে ওঠে।

2. কখন এবং কিভাবে ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ (Australopithecu) প্রজাতির প্রাচীন মানবের অস্তিত্ব লোপ পায়?

উত্তরঃ ২.৫ নিযুত বছর পূর্বে তুষার যুগের সূত্রপাত হলে পৃথিবীর বিশাল অংশ বরফে আচ্ছাদিত হয়ে যায়। ফলে জলবায়ু ও উদ্ভিদের মধ্যে পরিবর্তন আসে। তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত কমার ফলে তৃণভূমির আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং ঘন জঙ্গলের আয়তন কমে আসে। এর ফলে ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ প্রজাতির প্রাচীন মানব, যারা ঘন জঙ্গল ও উষ্ণ আবহাওয়ায় অভ্যস্ত ছিল, বিলুপ্ত হয়ে যায়।

3. আদিম মানবরা কিভাবে তাদের আহার জোগাড় করত?

উত্তরঃ আদিম মানবেরা নিম্নলিখিত বিভিন্ন উপায়ে আহার জোগাড় করতঃ

(ক) আদিম মানবেরা গাছ থেকে ফল, বীজ, সুপারি বা বাদাম, রসযুক্ত ফল ইত্যাদি সংগ্রহ করত।

(খ) প্রাকৃতিক উপায়ে মৃত বা শিকারীর হাতে মৃত পশুপক্ষীর মাংস সংগ্রহ করত।

(গ) বিভিন্ন ছোট ছোট প্রাণী, যেমন—স্তন্যপায়ী জীব, ইঁদুর, পাখি ও তার ডিম, পোকা-মাকড় ইত্যাদি খেত।

(ঘ) মাছ ও জলজ জীব তাদের খাদ্যের অংশ ছিল, যা তারা কৌশলগতভাবে সংগ্রহ করত।

কিন্তু নির্ভরযোগ্য প্রমাণের অভাবে খাদ্য সংগ্রহের ব্যাপারে পরিষ্কার কিছু জানা যায় না, অনুমান করা যায় মাত্র।

4. তুষার যুগের প্রারম্ভ মানব ইতিহাসে কি পরিবর্তন সূচনা করেছিল?

উত্তরঃ ২.৫ নিযুত বছর পূর্বে তুষার যুগের সূত্রপাত হলে পৃথিবীর বিশাল অংশ বরফে আচ্ছাদিত হয়ে যায়। ফলে জলবায়ু ও উদ্ভিদের মধ্যে পরিবর্তন আসে। তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত কমার ফলে তৃণভূমির আয়তন বৃদ্ধি পায় এবং ঘন জঙ্গলের আয়তন কমে আসে। এর ফলে ‘অস্ট্রালোপিথেকাস’ প্রজাতির প্রাচীন মানব, যারা ঘন জঙ্গল ও উষ্ণ আবহাওয়ায় অভ্যস্ত ছিল, বিলুপ্ত হয়ে যায়। -এর পর যোগ হবে– ধীরে ধীরে অন্যান্য নতুন প্রজাতির আবির্ভাব ঘটে, যারা শুষ্ক পরিবেশেও মানিয়ে নিতে পারে। তাদের মধ্য থেকেই হোমো প্রজাতির উন্মেষ ঘটে, যা আধুনিক মানবের একটি পর্যায় 

5. প্রিমেইটস্-এর প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর। 

উত্তরঃ প্রিমেইটসদের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ

(ক) তাদের দেহে লম্বা লোম ছিল।

(খ) তাদের গর্ভকালীন সময় দীর্ঘ ছিল।

(গ) এই গোষ্ঠীর স্ত্রীজাতির স্তন্যগ্রন্থি ছিল।

(ঘ) তাদের বিভিন্ন রকমের দাঁত ছিল।

(ঙ) দেহে একই তাপমাত্রা বজায় রাখার ক্ষমতা ছিল।

6. হিমায়ন পর্যায় বা হিমযুগ কখন আবির্ভূত হয়েছিল? মানব বিবর্তনে তা কিভাবে এবং কি কি পরিবর্তন সাধন করেছে?

উত্তরঃ হিমযুগ বা হিমায়নের আবির্ভাব ঘটেছিল প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে। ভূ-পৃষ্ঠের বিশাল এলাকা বরফাবৃত ছিল। ইহা পৃথিবীর আবহাওয়া ও জলবায়ুতে সবুজায়নে প্রভূত পরিবর্তন সাধন করেছিল। ভূ-পৃষ্ঠের তাপপ্রবাহ ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হ্রাস পায়। তার ফলে বনরাজি হ্রাস পায়। বনরাজির তুলনায় তৃণভূমি এলাকা বিস্তৃত হয়। যার ফলে প্রাচীন বনমানুষ বা অস্ট্রালোপিথেকাস ধীর লয়ে বিলুপ্ত হতে থাকে, কারণ তারা জঙ্গলে বাস করতে অভ্যস্ত ছিল। এদের স্থানে অন্য প্রজাতির আবির্ভাব ঘটে, যারা শুষ্ক আবহাওয়ায় বসবাসে অভ্যস্ত ছিল। এই প্রজাতির মধ্যে মানবজাতি অন্তর্ভুক্ত ছিল।

7. মানব উৎপত্তি সংক্রান্ত আঞ্চলিক প্রবাহমান তত্ত্বটির সপক্ষে যুক্তি দাও। তুমি কি মনে কর যে এটা প্রত্নতাত্ত্বিক ব্যাখ্যার কোন সাক্ষ্য দেয়? তোমার উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তরঃ মানব উৎপত্তি-সংক্রান্ত আঞ্চলিক প্রবাহমান তত্ত্বের সপক্ষে এই যুক্তি প্রদর্শন করা যায় যে, আর্কারিক হোমো সেপিয়েন্স (Archaic Homo sapiens) বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অঞ্চলে বিবর্তনের মাধ্যমে আধুনিক মানবে পরিণত হয়েছে। এই কারণেই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে প্রথম আবির্ভূত মানুষের চেহারা বিভিন্ন প্রকার হয়ে থাকে। বর্তমানকালের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের বৈশিষ্ট্যের উপর এই যুক্তি প্রতিষ্ঠিত।

এই যুক্তি প্রত্নতাত্ত্বিক সাক্ষ্য প্রমাণের কোন নির্ভরযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে পারেনি। অন্যান্য তত্ত্ব সর্বত্রই আধুনিক মানুষ দ্বারা প্রাচীন মানুষের প্রতিস্থাপন প্রতিফলিত করে।

8. মানব বিবর্তনের প্রতিস্থাপন তত্ত্বটির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তরঃ প্রতিস্থাপন তত্ত্ব অনুযায়ী যে স্থানেই মানুষ বসবাস করে না কেন তার পুরানো সকল প্রকার ধরন নুতন মানব দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে যায়। বর্তমান যুগের মানুষের মধ্যে বংশগত ও দৈহিক গঠন- সংক্রান্ত সমরূপতার প্রমাণ পাওয়া যায়। এই সাদৃশ্যতার সপক্ষে এই যুক্তি প্রদর্শন করা যায় যে মানুষের পূর্বপুরুষগণ একটি মাত্র অঞ্চল হতে উৎপত্তি লাভ করেছে। এই অঞ্চলটি হল আফ্রিকা। এই এলাকা হতে পরে তারা অন্যত্র চলে যায়। এর প্রমাণ পাওয়া যায় ইথিওপিয়ার ‘আমা’-তে প্রাপ্ত মানুষের প্রাচীন জীবাশ্ম হতে।

9. আদিম মানুষ দ্বারা তৈরি পাথরের অস্ত্র ও তার ব্যবহার সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ  দাও। 

উত্তরঃ আদিম মানুষের পাথরের অস্ত্র তৈরি ও ব্যবহারের নিদর্শন পাওয়া যায় কেনিয়া ও ইথিওপিয়া প্রভৃতি রাষ্ট্রে। অস্ট্রালোপিথেকাসই সম্ভবত প্রথম পাথরের অস্ত্র তৈরিকারক মানুষ।

পুরাকালের মানুষ পাথরে পাথর ঠুকে প্রথমে একটি ছোট আকারের পাথর ভেঙে নিত, তারপর সেই পাথরের মাথাটি তারা ধারালো করত। এই ধরনের ধারালো পাথরের খণ্ডক বলে হাতে তৈরি পাথুরে অস্ত্র। এর সাহায্যে হাড় কাটা যেত, কাঠের লাঠি কাটা যেত। তারপর লাঠির মাথাটিকে শান দিয়ে ধারালো করে মাটি খোঁড়ার শাবল তৈরি করা হয়। পাথুরে অস্ত্র, পাথুরে শাবল ও কাঠের লাঠি ছিল পৃথিবীতে মানুষের প্রথম নাম হাতিয়ার।

একমাত্র মানুষ ছাড়া পৃথিবীর কোন প্রাণীই সহজতম কোন শ্রম-হাতিয়ার তৈরি করতে পারেনি। 

10. মানুষের জীবনে ৩৫,০০০ বছর পূর্বে এবং তার পরে জীবনযাত্রা প্রণালীর কি কি পরিবর্তন হয়েছিল তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ মানব জীবনে ৩৫,০০০ বছর পূর্বে নিম্নোক্ত পরিবর্তনসমূহ দেখা দিয়েছিলঃ

(ক) নুতন প্রকার হাতিয়ার; যেমন- বল্লম, তির, ধনুক প্রভৃতি তৈরি হয়েছিল। এগুলো পশুশিকারের কৌশল উন্নত করেছিল।

(খ) হাড় হতে মাংস বের করে এর প্রক্রিয়াকরণ আরম্ভ হয়। মাংসকে শুকানো এবং মজুত করার কৌশল আয়ত্ত করে। 

(গ) এরপর মানুষ লোমযুক্ত পশু ধরা ও পালন করতে শিখল এবং পশুর লোম দিয়ে কাপড় তৈরি করতে শিখল।

(ঘ) এরপর মানুষ সেলাই করার সূঁচ আবিষ্কার করে। সেলাই করা কাপড়ের প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় ২১,০০০ বছর পূর্বে।

(ঙ) এরপর মানুষ ব্লেড আবিষ্কার করে। ফলে নানাপ্রকার দ্রব্য কাটতে সমর্থ হয়।

11. জাতিবিজ্ঞান বলতে কি বোঝ?

উত্তরঃ জাতিবিজ্ঞান বা জাতিবিদ্যায় সমসাময়িককালের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর বিস্তারিত অধ্যয়ন করা হয়। তা জাতিগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা প্রণালী, খাদ্যাভ্যাস, জীবিকার্জনের উপায় প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত করে। তাছাড়া লিঙ্গ ভূমিকা, রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক পরিকাঠামো প্রভৃতিও অধ্যয়ন করা হয়। জাতিবিদ্যায় সমকালীন জাতিগোষ্ঠীর ধর্মীয় প্রথা ও অনুষ্ঠানাদি এবং সামাজিক রীতিনীতি প্রভৃতিও অধ্যয়ন করা হয়।

12. আগুনের আবিষ্কার আদিম মানবকে কিভাবে সাহায্য করেছিল?

উত্তরঃ আগুনের আবিষ্কার আদিম মানবকে – 

(ক) গুহা আলোকিত করতে ও গরম রাখতে এবং রান্নার কাজে।

(খ) যন্ত্রাদি ও অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করতে। এবং 

(গ) ভয়ানক পশুদের বিতাড়ন করতে সাহায্য করেছিল। 

আগুনের আবিষ্কার আদিম মানব সমাজে এক যুগান্তকারী ঘটনা। প্রথমাবস্থায় মানুষ আগুনকে ভয় করত। 

কিন্তু যখন মানুষ নিজে অগ্নিসংযোগ করতে শিখল তখন তাদের জীবনে নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধিত হয়ঃ

(ক) আগুন গুহাবাসী মানুষের গুহার মধ্যে আলো দিত, গুহা গরম রাখত এবং রান্নার কাজেও ব্যবহার করা হত।

(খ) বল্লমের অগ্রভাগে কাঠ লাগানোর সময়ও আগুনের ব্যবহার করা হত।

(গ) যন্ত্রাদি, অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করতেও আগুনের প্রয়োজন হত। 

(ঘ) ভয়ানক পশুদের ভয় দেখিয়ে বিতাড়নের সময়ও আগুনের ব্যবহার করা হত।

13. ‘Artefacts’ বলতে কি বোঝ? আদিম মানবের উপস্থিতি বোঝাতে ‘Artefacts’-এর ভূমিকা কি?

উত্তরঃ ‘Artefacts’ হচ্ছে মানুষের হাতে তৈরি জিনিস, যার মধ্যে আছে— যন্ত্রপাতি, চিত্র, ভাস্কর্য, খোদাই করা কাজ ইত্যাদি।

যে সকল স্থানে খাদ্যবস্ত্র যথেষ্ট পরিমাণে ছিল সেখানে আদিম মানবরা বারবার যেত। এই সকল স্থানে তাদের ফেলে আসা জিনিসপত্রগুলিই (Artefacts) তাদের কাজকর্ম ও উপস্থিতির প্রমাণ দেয়। Artefacts গুলো মাটির বিভিন্ন স্তরে বা মাটির উপর পাওয়া যায়। তবে যে সকল স্থানে মানুষের যাওয়া-আসা কম ছিল সেই সকল স্থানে Artefacts-এর উপস্থিতিও কম পাওয়া যায়।

14. আদিম মানবের আশ্রয়স্থলে ‘অগ্নিকুণ্ড’ কিসের আভাস দেয়? এতে কি সুবিধা হয়েছিল?

উত্তরঃ গুহা বা আশ্রয়স্থলে অগ্নিকুণ্ডের অবস্থান আদিম মানবের আগুনকে করার ক্ষমতার সাক্ষ্য দেয়। এতে নিম্নোক্ত সুবিধা হয়েছিলঃ 

(ক) আগুন গুহার মধ্যে আলো দিত।

(খ) গুহা গরম রাখত।

(গ) খাদ্য প্রস্তুতকরণে ব্যবহার করা যেত।

(ঘ) যন্ত্রাদি ও অস্ত্র তৈরি করতে আগুনের ব্যবহার হত।

(ঙ) ভয়ানক পণ্ড বিতারণেও আগুনের ব্যবহার হত।

15. আদিম মানবেরা কি কি কারণে বিভিন্ন যন্ত্র (tool) বা সরঞ্জাম তৈরি করতে সক্ষম হয়?

উত্তরঃ আদিম মানবেরা নিম্নোক্ত কারণে বিভিন্ন যন্ত্র বা সরঞ্জাম তৈরি করতে সক্ষম হয়ঃ

(ক) কিছু শারীরিক এবং স্নায়ুতাত্ত্বিক অভিযোজনের ফলে হাতের দক্ষ ব্যবহার করতে মানুষরা সক্ষম হয়। 

(খ) যন্ত্র বা সরঞ্জাম তৈরি করার ক্ষেত্রে যে প্রয়োজনীয় মেধা এবং জটিল সাংগঠনিক

দক্ষতার দরকার ছিল তা কেবল মানুষদের মধ্যেই বর্তমান ছিল।

(গ) মানুষের জীবনে যন্ত্রের অধিক ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা। 

16. খাদ্য আহরণের ক্ষেত্রে আদিম মানবদের সম্মুখীন হওয়া সমস্যাগুলো আলোচনা কর।

উত্তরঃ আদিম মানবেরা বিভিন্ন উপায়ে খাদ্য আহরণ করত; যথা- 

(ক) সংগ্রহ। 

(খ) শিকার। 

(গ) খাদ্যান্বেষণ। এবং 

(ঘ) মাছ ধরা। 

তবে এই নানা উপায়ে খাদ্য আহরণ করতে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হত। 

এইগুলির মধ্যে মুখ্য হচ্ছে—

(ক) বিভিন্ন দলের মধ্যে বিবাদ বা লড়াই, তা জমির বা এলাকার উপর এবং ফসলের উপর হতে পারত। 

(খ) ফলনের অভাব ও আহারযোগ্য পশুর অভাব।

(গ) শিকার বা সংগ্রহ করতে গিয়ে নিজেই হিংস্র পশুর শিকার হওয়া। 

(ঘ) জলের অভাব ইত্যাদি। এইসকল প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করেই আদিম মানবেরা তাদের খাদ্য সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করত। 

17. প্রাচীন মানব কেন ইচ্ছাকৃতভাবে শিকারের জন্য কিছু নির্দিষ্ট স্থান বাছাই করেছিল? উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ প্রাচীন মানব ইচ্ছাকৃতভাবে শিকারের জন্য কিছু নির্দিষ্ট স্থান বাছাই করেছিল। চেক গণরাজ্যের দলনী ভেস্টোনিক এইরূপ একটি অঞ্চল। তা নদীর সন্নিকটে অবস্থিত ছিল। আদিম মানব এই সকল স্থান নির্ধারিত করেছিল, কারণ তারা এই সকল অঞ্চলে। জীবজন্তুর চলাচল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিল। তারা বিশাল সংখ্যক জন্তু- জানোয়ারকে কিভাবে শিকার করা যায় তা জানত। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় চেক গণরাজ্যের বাছাই করা অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে পরিযায়ী জীবজন্তুর সমাগম ঘটত। আদিম মানুষ সহজেই তাদের প্রয়োজনমতো জীবজন্তু শিকার করত।

18. আদি মানবের জীবনযাত্রা প্রণালী ও মুক্ত আস্তানা সম্পর্কে তুমি কিভাবে তথ্য পেতে পারো?

উত্তরঃ আদি মানবের জীবনযাত্রা প্রণালী ও মুক্ত আস্তানা সম্পর্কে তথ্যাদি সংগ্রহের একমাত্র উপায় হল আর্টিফ্যাক্টস বিতরণের খণ্ডকরণ।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে কেনিয়ার অলয়গেসাইল এবং কিলোম্বিতে হাজার হাজার হস্ত-কুঠার ও ক্ষুদ্র হাতিয়ার পাওয়া গিয়েছে। এই হস্তনির্মিত হাতিয়ার প্রায় ৭,০০,০০০ হতে ৫,০০,০০০ বছর প্রাচীন। এই সকল সামগ্রীর একই স্থানে মজুত হওয়ার অর্থই হল আদি মানব এই সকল স্থানে বার বার সফর করেছে, কারণ এই সকল স্থানে পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী পাওয়া যেত। এইসব স্থানে খাওয়ার সামগ্রী ফেলে রাখার মাধ্যমে তাদের উপস্থিতি ও কার্যকলাপের সাক্ষ্য রেখে গিয়েছে। যেসব স্থানে আদি মানব অপেক্ষাকৃত কম চলাচল করেছে, সেই সকল এলাকায় হস্তনির্মিত হাতিয়ার কম লক্ষ্য করা গিয়েছে। 

19. কোন ভিত্তিতে বলা হয়ে থাকে যে মনুষ্য জাতির বিকাশ বিবর্তনের মাধ্যমে হয়েছে? 

উত্তরঃ যে কাহিনি ধূসর ইতিহাসের অন্ধকার স্থাবর হয়ে আছে তা আদিম যুগের মানুষের ইতিহাস। বহুদিন যাবৎ ধর্ম মানুষের মনে এই ধারণা সৃষ্টি করেছিল যে, মানুষ বিধাতার এক অমোঘ সৃষ্টি। তিনি তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি—মানব জাতিকে হঠাৎ সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু বিজ্ঞান এই কথা নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করেছে যে মানুষের আবির্ভাব কোন অলৌকিক ব্যাপার নয়। স্বাভাবিক বিবর্তনের ফলে মানুষ ক্রমশ প্রাণীজগৎ হতে পৃথক হয়ে পড়েছে। ডারউইন প্রমাণ করেছিলেন, মানুষ ও শিম্পাঞ্জী প্রভৃতি শাখামৃগের আদিপুরুষ ছিল এক জাতীয় জীব। লক্ষ লক্ষ বছর ব্যাপী প্রাকৃতিক বিবর্তনের ফলেই মানুষের সৃষ্টি হয়েছে। এইভাবে বিবর্তনের মাধ্যমে প্রায় ২০ লক্ষ বছরেরও পূর্বে পৃথিবীতে মানুষের প্রথম আবির্ভাব ঘটেছিল। দীর্ঘ বিবর্তনের ফলে মানুষের দৈহিক প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটে মানুষ আজ বর্তমান পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে।

20. শিকারী-সংগ্রহকারী জীবন থেকে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী জীবনে আদিম মানবের পরিবর্তনে কি কি কারক/উপাদান সহায়ক ছিল, সংক্ষেপে লেখ।

উত্তরঃ আদিম মানবের শিকারী-সংগ্রহকারী জীবন থেকে চাষাবাদ ও পশুপালনে অভ্যস্ত স্থায়ী জীবনে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কারক বা উপাদানের ভূমিকা ছিলঃ

(ক) আবহাওয়ার পরিবর্তন—হিম যুগের সমাপ্তি।

(খ) একই স্থানে স্থায়ীভাবে বসবাসের ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ অনুযায়ী খাদ্যের যোগানের অভাব।

(গ) কিছু শস্য ও জন্তুর বিষয়ে থাকা জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা। 

(ঘ) বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে থাকা প্রতিযোগিতা।

21. ভাষার বিকাশ কিভাবে হয়েছিল?

উত্তরঃ জীবনপ্রাণীর মধ্যে মানুষই হল একমাত্র ভাষিক জীব। 

ভাষা বিকাশের নানা অভিমত বিদ্যমানঃ

(ক) অঙ্গভঙ্গি অথবা হস্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে ভাষার বিকাশ ঘটে।

(খ) গান, কণ্ঠস্বর প্রভৃতি অব্যক্ত সম্পর্ক ও সংযোগ ভাষা ব্যবহারের পূর্বে ব্যবহৃত হয়েছিল।

(গ) মানুষের মুখের কথা সম্ভবত নানা প্রকার শব্দ হতে ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করেছিল।

22. মানুষের মধ্যে ভাষার বিকাশ নিয়ে কি কি মতবাদ বা ধারণা আছে? সংক্ষেপে লেখ। 

উত্তরঃ মানুষই কেবল ভাষাকে যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে। মানুষের ভাষার বিকাশ নিয়ে নিম্নোক্ত মতবাদ বা ধারণা আছেঃ

(ক) হোমিনিডদের ভাষা সীমাবদ্ধ ছিল হস্তচালনা ও অঙ্গভঙ্গিতেই। 

(খ) কথা বলার পদ্ধতি প্রচলন হওয়ার পূর্বে গুনগুনানিতে এবং গানের মধ্যেই ভাষা সীমিত ছিল।

(গ) সম্ভবত মানুষের কথা বলা শুরু হয়েছিল ডাক থেকে, যা বানরদের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। প্রারম্ভিক পর্যায়ে মানুষ খুব কম শব্দই ব্যবহার করত। ক্রমশ এগুলিই ভাষায় রূপান্তরিত হয়।

(ঘ) ‘হোমো হ্যাবিলিস’-দের মগজের কিছু বৈশিষ্ট্য এবং কণ্ঠনালীর ক্রমবিকাশ ভাষার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল।

23. বনমানুষদের অস্ট্রালোপিথেকাস নাম দেওয়া হয়েছিল কেন?

উত্তরঃ অস্ট্রালোপিথেকাস শব্দটি দুইটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে। শব্দ দুইটি হল ল্যাটিন Austral, যার অর্থ হল Southern এবং একটি গ্রিক শব্দ ‘Pithekos’, যার অর্থ হল এপ (ape)। তাদের এই নাম দেওয়া হয়েছিল। কারণ মানুষের এখন যে আকৃতি, তা হতে তখনকার মানুষের আকৃতিগত পার্থক্য ছিল বিস্তর। তারা দেখতে অতিকায় বানর জাতীয় জীবের মতো ছিল। তাদের মধ্যে ‘এপ’-এর লক্ষণই ছিল বেশি। 

উদাহরণস্বরূপ-

(ক) হোমো বা মানুষের তুলনায় তাদের মস্তিষ্কের আকার ছিল ছোট। 

(খ) তাদের পিছনের দাঁত ছিল বড়।

(গ) তাদের হাত নাড়ানোর ক্ষমতা ছিল সীমিত।

(ঘ) তারা অধিকাংশ সময় বৃক্ষেই থাকত।

24. বনমানুষ বা অস্ট্রালোপিথেকাস এবং মানুষ-এর মধ্যে দৈহিক পার্থক্য কি কি? এই পার্থক্যসমূহ কি নির্দেশ করে?

উত্তরঃ অস্ট্রালোপিথেকাস বা বনমানুষ এবং হোমো বা মানুষের মধ্যে পার্থক্যসমূহ-

নিম্নরূপঃ

(ক) বনমানুষ বা অস্ট্রালোপিথেকাস অপেক্ষা মানুষ বা হোমোর মস্তিষ্ক বড় ছিল। 

(খ) হোমো বা মানুষের স্বল্প বহিপ্রসারণযুক্ত দাঁত ছিল।

(গ) মানুষ বা হোমোর দাঁত ছোট ছোট ছিল। 

এই পাথক্যসমূহ নিম্নোক্ত বিষয় নির্দেশ করেঃ

(ক) হোমোর বা মানুষের বৃহৎ মস্তিষ্ক অধিক বুদ্ধি বা অপেক্ষাকৃত উন্নত স্মরণশক্তি নির্দেশ করে।

(খ) দাঁত ও দন্তবিন্যাসের বিভিন্নতা সম্ভবত খাদ্যাভ্যাসের বিভিন্নতা নির্দেশ করে।

25. বনমানুষ ও বানরের মধ্যে পার্থক্যগুলি উল্লেখ কর। 

উত্তরঃ বনমানুষ ও বানরের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ

(ক) বানরের তুলনায় বনমানুষের দেহ বিশাল।

(খ) বনমানুষের লেজ নেই, কিন্তু বানরের লেজ আছে। 

(গ) বানরের তুলনায় বনমানুষের সন্তানের বৃদ্ধি ধীরে ধীরে হয়।

(ঘ) বনমানুষের মধ্যে তাদের সন্তানদের দীর্ঘকালীন নির্ভরতা লক্ষ্য করা যায়।

26. হাডজা গোষ্ঠী সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উত্তরঃ হাড়জা একটি ছোট শিকারী ও সংগ্রহকারী জনজাতি। তারা রিফুট উপত্যকার ইয়াসির নামক লবণাক্ত হ্রদের তীরে বাস করত। এদের প্রধান খাদ্য ছিল নিরামিষ, শাকসবজি, গাছের মূল এবং ফল। তারা পরিমিত মাংস খেত, যাতে ভবিষ্যতে মাংস খাওয়া থেকে তারা বঞ্চিত না হয়। যেখানে খোলা ঘাসযুক্ত সমতল অঞ্চল ছিল, সেখানে তারা বসবাস করত না; তারা গাছ বা শিলার পাশে বসবাস করত। যে-কোন লোক যে-কোন স্থানে বাস করতে পারত, পশু শিকার করতে পারত। তাদের তাঁবুগুলি যদিও ছোট ছিল তবুও গরমের দিনে সেগুলি থাকত চারিদিকে ছড়ানো। শুকনো দিনে জলের ব্যবস্থা থাকা বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তারা বাস করত। শুকনো দিনেও তাদের খাদ্যের অভাব থাকত না।

দীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

1. মানুষের উৎপত্তিস্থল কোথায়? এই সম্পর্কিত বিভিন্ন তত্ত্ব বা মতবাদের বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ মানুষের উৎপত্তিস্থল কোথায় তা সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল বিভিন্ন জীবাশ্মকেন্দ্রীক প্রমাণের উপর। তাই আবিষ্কৃত জীবাশ্মের বৈশিষ্ট্য ও গঠনের উপর ভিত্তি করে দুইটি ভিন্ন মতবাদ গড়ে উঠেছে। এইগুলি হচ্ছে—

(ক) Replacement Model বা পুনঃস্থাপন তত্ত্ব। এবং 

(খ) Regional Continuity Model বা আঞ্চলিক অবিচ্ছিন্নতার তত্ত্ব।

(ক) Replacement Model বা পুনঃস্থাপন তত্ত্ব অনুসারে মানুষের উৎপত্তিস্থল ভিন্ন ভিন্ন এবং সময়কালও ভিন্ন। এই কারণেই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে চেহারার পার্থক্য দেখা যায়। তাদের মতে প্রাচীন হোমো সেপিয়েন-রাই বর্তমান যুগের মানুষ এবং তাদের মধ্যে পার্থক্য আঞ্চলিক বৈষম্যের জন্যই।

(খ) Regional Continuity Model বা আঞ্চলিক অবিচ্ছিন্নতার তত্ত্ব অনুসারে মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করলেও তাদের গঠন ও চেহারার মিল থাকার কারণ হচ্ছে মানুষের উৎপত্তিস্থল এক এবং তা হচ্ছে আফ্রিকা। পরবর্তীতে স্থান পরিবর্তন হলে অন্যত্র স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করায় তাদের শারীরিক গঠনে ও চেহারায় পার্থক্য গড়ে ওঠে।

2. আগুনের আবিষ্কার আদিম মানবের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে কেন।গণ্য করা হয়?

উত্তরঃ আগুনের আবিষ্কার আদিম মানবকে – 

(ক) গুহা আলোকিত করতে ওর রাখতে এবং রান্নার কাজে। 

(খ) যন্ত্রাদি ও অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করতে। এবং 

(গ) নক পাতাদের বিতাড়ন করতে সাহায্য করেছিল। 

আগুনের আবিষ্কার আদিম মানব সমাজে এক যুগান্তকারী ঘটনা। প্রথমাবস্থার মানুষ আগুনকে ভয় করত। 

কিন্তু যখন মানুষ নিজে অগ্নিসংযোগ করতে শিখল তখন তাদের জীবনে নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন সাধিত হয়ঃ

(ক) আগুন গুহাবাসী মানুষের গুহার মধ্যে আলো দিত, তা গরম রাখত এবং রান্নার কাজেও ব্যবহার করা হত।

(খ) বল্লমের অগ্রভাগে কাঠ লাগানোর সময়ও আগুনের ব্যবহার করা হত। 

(গ) যন্ত্রাদি, অস্ত্রশস্ত্র তৈরি করতেও আগুনের প্রয়োজন হত। 

(ঘ) ভয়ানক পশুদের ভয় দেখিয়ে বিতাড়নের সময়ও আগুনের ব্যবহার করা হত। 

এইভাবে আগুনের আবিষ্কার আদিম মানবের জীবনে নানা প্রয়োজনীয়তা যোগায়। তাছাড়াও আরও নানা কাজে সহায়তা প্রদান করে, যার মাধ্যমে আদিম মানব সমাজের অগ্রগতি সূচিত হয়। সেই কারণে আগুনের আবিষ্কার আদিম মানবের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসাবে গণ্য করা হয়। 

3. প্রাচীন গুহাচিত্রগুলি অঙ্কনের কারণ কি? এইগুলি আদিম মানব সমাজের ইতিহাসচর্চায় কতটুকু সহায়ক, সংক্ষেপে লেখ।

উত্তরঃ পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে আদিম মানবের তৈরি অসংখ্য গুহাচিত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।

এই গুহাচিত্রগুলি অঙ্কনের কারণ হিসাবে নিম্নোক্ত মত/বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়ঃ

(ক) একটি কারণ হচ্ছে শিকারের উপর গুরুত্ব। পশু চিত্র অঙ্কন ধর্মীয় আচার ও সংস্কার এবং যাদুবিদ্যার সাথে জড়িত ছিল। শিকার কৃতকার্য হওয়ার জন্য সম্ভবত এই আচার পালন করা হত।

(খ) অপর ব্যাখ্যা হচ্ছে, এই গুহাগুলি সম্ভবত বিভিন্ন দলের মানুষের মিলন ক্ষেত্র ছিল। এখানেই তারা তাদের শিকারের কৌশল ও জ্ঞান পরস্পরের মধ্যে আদান-প্রদান করত। এই চিত্রগুলি ও নক্সা খোলাইয়ের দ্বারা তারা পরবর্তী প্রজন্মকে শিকার-বিষয়ক কলা ও কৌশলের জ্ঞান নিত ও সংরক্ষিত রাখত।

আবিষ্কৃত গুহাচিত্রগুলি নিশ্চিতভাবে নিম্নোক্ত কারণে আদিম মানব সমাজের ইতিহাসচর্চায় যথেষ্ট সহায়ক হয়েছেঃ

(ক) এই গুহাচিত্রগুলির মাধ্যমে আদিম মানবদের বিভিন্ন অভ্যাস, রুচি, পরিচিতি সম্বন্ধে জানা যায়।

(খ) আদিম মানবের রপ্ত কৌশল ও যন্ত্রাদির ব্যবহার সম্বন্ধে জানা যায়।

(গ) তাদের জীবনশৈলী ওখাদ্যাভাস-এর আভাস পাওয়া যায়।

(ঘ) সবথেকে গুরুত্বপূর্ণভাবে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্বন্ধে জানা যায়। 

তাই সম্পূর্ণভাবে না হলেও ওহাচিত্র আদিম মানবের ইতিহাসচর্চায় যথেষ্ট উপাদান। 

4. গোষ্ঠীবিজ্ঞানের বিবরণী থেকে আদিম মানবের জীবনপদ্ধতি পুনরুদ্ধার করতে কি কি সুবিধা এবং অসুবিধা হতে পারে বলে তুমি মনে কর?

অথবা,

আদিম মানব সমাজকে বোঝাতে বর্তমান শিকারী-সংগ্রহকারী গোষ্ঠীর বিভিন্ন তথ্য কতটুকু ব্যবহার করা যায়? সংক্ষেপে বর্ণনা কর।

উত্তরঃ আদিম মানব সমাজ ছিল শিকারী-সংগ্রহকারী। তবে তাদের জীবনশৈলী সম্বন্ধে আমাদের ধারণা সীমিত। আবার নৃতত্ব বা গোষ্ঠীবিজ্ঞানের দ্বারা বর্তমান শিকারী সংগ্রহকারীদের বিষয় আমাদের যথেষ্ট জ্ঞান আছে। তাই প্রশ্ন আসে এদের বিবরণ থেকে আদিম মানবের জীবনশৈলী জানা বা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে কতটুকু সুবিধা-অসুবিধা আছে। 

যারা এই মতের পক্ষে তাদের যুক্তি অনুসারে সুবিধাগুলি নিম্নরূপঃ

(ক) এর মাধ্যমে খুব সহজেই আদিম মানবের বিভিন্ন তথ্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। 

(খ) এর মাধ্যমে আদিম মানব জীবনের বিভিন্ন পর্যায় ও পদক্ষেপ বিশ্লেষণ করা সম্ভব। 

(গ) গুরুত্বপূর্ণভাবে এই প্রক্রিয়ার দ্বারা আদিম মানবের সামাজিক বিবর্তনের বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা গড়ে তোলা সম্ভব। 

যারা এই মতের বিপক্ষে তাদের যুক্তি অনুসারে অসুবিধাগুলি নিম্নরূপঃ

(ক) আদিম শিকারী-সংগ্রহকারী ও বর্তমান শিকারী-সংগ্রহকারীদের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান; যেমন—বর্তমান শিকারী-সংগ্রহকারীরা শিকার ও সংগ্রহ ছাড়াও অন্যান্য অর্থনৈতিক কাজে যুক্ত।

(খ) উপরন্তু, বর্তমান শিকারী-সংগ্রহকারী গোষ্ঠীগুলি সামাজিক, রাজনৈতিক ও ভৌগোলিক সব দৃষ্টিতেই কোণঠাসা। তাই তাদের অস্তিত্বের প্রেক্ষাপট আদিম মানবদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

 (গ) আরেকটি সমস্যা হল বর্তমান শিকারী-সংগ্রহকারী গোষ্ঠীর মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য দেখা যায়। এর ফলে বিভিন্ন বিষয়ে সংঘাতপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়।

তাই, এই পর্যালোচনা থেকে বোঝা যায় যে বর্তমান শিকারী- সংগ্রহকারীদের তথ্য ব্যবহারে যথেষ্ট সীমাবদ্ধতা আছে। তবুও কিছু ক্ষেত্রে বা বিষয়ে এর ব্যবহারের মাধ্যমে আদিম মানবের জীবনশৈলী সম্বন্ধে যথেষ্ট জ্ঞান পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।

 5. আদিম মানবের জীবনযাত্রা প্রণালীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।

উত্তরঃ অতি প্রাচীনকাল হতে আরম্ভ করে ক্রমবিবর্তনের ফলে মানুষ আজ সভ্যতা সংস্কৃতির যে উচ্চস্তরে পৌঁছেছে তার বিবরণই হল ইতিহাসের বিষয়বস্তু। পরিবর্তনই হল মানব সমাজের ইতিহাসের মূলকথা। 

প্রাচীন প্রস্তর যুগে মানুষ যখন কৃষিকার্য জানত না সেই সময় তারা শিকার এবং মান্য আহরণ করে জীবনযাপন করত। বনজঙ্গল হতে ফলমূল আহরণ, বন্য জন্তু শিকার, হ্রদ, নদী, জলাশয় হতে মৎস্য শিকার প্রভৃতি উপায়ে মানুষ সেই সময়ে জীবনধারণ করত। 

মানুষ বুদ্ধির দিক দিয়ে সকল প্রাণীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ, কিন্তু শারীরিক শক্তিতে বহু জীবজন্তু অপেক্ষা দুর্বল। এই কারণে মানুষকে দলবদ্ধভাবে বাস করতে হত।

তারা যাযাবর ছিল, কারণ একস্থানের ঘাস, পাতা প্রভৃতি পশুখাদ্য নিঃশেষ হয়ে গেলে পশুচারণের জন্য নুতন স্থানে তাদের যেতে হত।

ফলমূল আহরণ এবং পশুপক্ষী শিকার যখন মানুষের উপজীবিকা ছিল তখন তারা শিকারের জন্য নানাপ্রকার অস্ত্রশস্ত্র প্রস্তুত করত। প্রথমে তারা পাথরে ঘষে নানা প্রকার অস্ত্র প্রস্তুত করত, ক্রমে পাথরের আরও উন্নত ধরনের অস্ত্রশস্ত্র প্রস্তুত করতে শুরু করল। ক্রমে তারা তির-ধনুকও আবিষ্কার করল।

আদিম মানুষ প্রথমে উলঙ্গ থাকত। ক্রমে তাদের মানসিক বৃত্তির উন্নতি ঘটলে প্রথমে লতাপাতা, গাছের ছাল প্রভৃতি দিয়ে নিজেদের লজ্জা নিবারণ করত। ক্রমে তারা পশুর চামড়ার ব্যবহার শুরু করল। 

আদিম মানুষ যখন আগুনের ব্যবহার জানত না তখন তারা দাঁত ও নখের সাহায্যে মাছ বা মাংস ছিঁড়ে খেত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের বুদ্ধিও বাড়ল। তারা পাথরে পাথরে ঠুকে আগুন জ্বালাতে শিখল।

মানুষের চিন্তাশক্তি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাষা, ধর্ম প্রভৃতির যেমন উদ্ভব ঘটল, তেমনি তাদের মনের ভাব প্রকাশের উপায় হিসাবে তারা নানা প্রকার দেয়ালচিত্র আঁচড় কেটে বা রং লাগিয়ে আঁকতে শুরু করল।

6. “খাদ্য অন্বেষণ থেকে চাষের কাজে নিয়োজিত হওয়াই মানব ইতিহাসের একটি যুগান্তকারী ঘটনা।” বিশদ আলোচনা কর।

অথবা,

কৃষিকাজের সূত্রপাত কিভাবে আদিম মানবের জীবনকে প্রভাবিত করেছিল? বর্ণনা কর।

উত্তরঃ লক্ষ লক্ষ বছর যাবৎ মানুষ শিকার ও সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করত। তবে ১৩,০০০ বছর পূর্বে হিম যুগের সমাপ্তি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। হিম যুগের সমাপ্তিতে আবহাওয়া গরম ও আর্দ্র হয়ে ওঠে। যার ফলে বিভিন্ন অঞ্চল ঘাস, বন্য বার্লি, গম উৎপন্ন হওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। একই সময় ঘাস ও জঙ্গলের আয়তন বৃদ্ধির ফলে বন্য ভেড়া, ছাগল, গোরু, শুকর ও বানরের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।

ধীরে ধীরে মানুষ, যেখানে ঘাসের প্রাচুর্য ও জন্তু-জানোয়ারের সংখ্যা বেশি সেখানে বসবাস করতে পছন্দ করত এবং এই অঞ্চলে নিজেদের দখল রাখার চেষ্টা করত। এর ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপে খাদ্যের চাহিদাও বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে খাদ্যের চাহিদা পূরণ করতেই সম্ভবত পশুপালন ও কৃষিকাজ আরম্ভ করে, যা মানব জাতিকে এক নতুন পর্যায়ে নিয়ে যায়। 

কৃষিকাজ বা চাষাবাদ ও পশুপালন আদিম মানব সমাজে নিম্নোক্ত পরিবর্তন আনেঃ

(ক) মানুষ স্বামীভাবে একই স্থানে বসবাস করতে শুরু করে। 

(খ) মানুষ জাতায় স্থল হিসাবে মাটি ও পাথর দিয়ে ঘর তৈরি করে। এইগুলি নিয়েই প্রারম্ভিক গ্রামের পতন হয়।

(গ) শসা ও অন্যান্য উৎপাদিত দ্রব্য রাখার জন্য ও খাদ্য প্রস্তুত করার জন্য মানুষ নানা পাত্র তৈরি করে।

(ঘ) নতুন ধরনের পাথরের তৈরি হাতিয়ার, যেমন কৃষিকাজে লাঙলের ব্যবহার শুরু।

(ঙ) যোগাযোগ ব্যবস্থায় ও পাত্র তৈরির কাজে ঢাকার ব্যবহার শুরু হয়।

7. প্রাচীন শিকারি সমাজ সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা কর। 

উত্তরঃ আদিম যুগে প্রথম যে সমাজের সৃষ্টি হয়, তাকে শিকারি সমাজ বলে। হিংস্র জন্তু-জানোয়ারের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা করতে এবং তাদের হত্যা করে মাংস খাওয়ার জন্য মানুষকে বহু বিচিত্র ধরনের হাতিয়ার তৈরি করতে হয়। এই সব হাতিয়ারের বেশিরভাগই ছিল পানুরে। এদের সাহায্যে একদিকে তারা যেমন বন্য জীবজন্তুর আক্রমণ ঠেকাত, আবার অন্যদিকে খাদ্যের জন্য শিকার করত নানা পশুপাখি।

আদিম মানুষের সমাজ ছিল প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর নির্ভরশীল। এই অবস্থায় জীবন-সংগ্রাম ছিল অতি কষ্টকর। শিকারিদের জীবনযাত্রার মান অতি নিচু স্তরের ছিল। তারা ছাল-বাকল অথবা পশুর চামড়া পরত। জীবজন্য শিকার করে কিংবা ফলমূল সংগ্রহ করে তখনকার মানুষ খাদ্যের ব্যবস্থা করত। শিকারি সমাজের সবচেয়ে বড় অসুবিধা ছিল শিকার পাওয়ার অনিশ্চয়তা। শিকার পাওয়া গেলে আহার জুটত, না হলে উপবাস। শিকারি সমাজে মানুষের স্থায়ী কোন বাসস্থান ছিল না; শিকার ফুরিয়ে গেলে তারা একস্থান থেকে শিকারের সন্ধানে অন্যত্র চলে যেত। তখন মানুষ সঞ্চয় করতে জানত না; আর সঞ্চয় করার কোন সুযোগও ছিল না। যা পাওয়া যেত, সকলে মিলে সমানভাবে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিত। আধুনিক সভ্যতার অস্তিত্ব নেই পৃথিবীর এমন বহু অঞ্চলে আজও আদিম প্রকৃতির শিকারি সমাজ দেখতে পাওয়া যায়। আন্দামানের জারওয়া, সেন্টিনেলিজ, নাগাভূমির নাগা, মধ্যপ্রদেশের মুত্তা, আফ্রিকার কালাহারি অঞ্চলের বুশম্যান প্রভৃতি উপজাতি আজও জীবিকার জন্য শিকারের উপর নির্ভরশীল।

8. কখন এবং কিভাবে যাযাবর জীবন থেকে স্থায়ী কৃষিভিত্তিক জীবনযাত্রায় প্রবেশ করে সে সম্পর্কে আলোকপাত কর। 

উত্তরঃ আদিম যুগে মানুষ একই অঞ্চলে বসবাস করত না। খাদ্যের খোঁজে তাদের ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে হত। বনে বনে ঘুরে ফলমূলের সন্ধান করা ও পাথরের হাতিয়ার নিয়ে জীবজন্তু শিকার করাই খাদ্য সংগ্রহের একমাত্র উপায় ছিল। প্রায় ১০,০০০ বছর পূর্বে মানুষ এই যাযাবর জীবন ত্যাগ করে কৃষিভিত্তিক জীবনযাত্রার অভ্যস্থ হওয়া শুরু করে। মানুষের ক্রমবিবর্তনের ইতিহাসে এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ক্রমশ মানুষ গাছপালা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করুন। যেমন- 

(ক) গাছপালার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। 

(খ) ফলবতী হবার সময় এবং গাছের পরিচর্যা ইত্যাদি। 

এইভাবেই তারা চাষ করার পদ্ধি জেনে গেল এবং উর্বর জমিতে চাষবাস শুরু করল। তারা পশুপালন ও শিক্ষা এবং নিজেদের কাধিক পরিশ্রম কমাবার জন্য পশুদের (বিশেষত গোরু, ছাগল ইত্যাদি) থেকে দুধ সংগ্রহ করতেও শিখল এবং তাদের বর্জ্য পদার্থ (যেমন- গোবর) থেকে জ্বালানি তৈরি করাও শিখল। এই পালিত পশুরা মারা গেলে তাদের শরীরের নানা অংশ কাজে লাগিয়ে সংসারের নানা প্রয়োজনীয় না বানাতেও শিখে গেল। ফলত তাঁরা বিশেষ বিশেষ জায়গায় থিতু হয়ে গেল। কৃষিকাজই মানুষকে যাযাবর জীবন থেকে স্থায়ীভাবে কোন স্থানে বসবাস করা শেখাল। ক্রমে তারা নিজেরা বাসস্থান তৈরির কলাকৌশল রপ্ত করে স্থায়ীভাবে তাদের পছন্দমতো জায়গায় বসবাস শুরু করল। জল যেহেতু জীবনধারণের একটি প্রধান উপাদান সেহেতু আদিম মানুষ নদীর কাছাকাছি তাদের বাসস্থান গড়ে তোলে। এইভাবেই মানুষ ক্রমে ক্রমে কৃষিভিত্তিক স্থায়ী জীবনযাত্রায় প্রবেশ করে ও অভ্যস্থ হয়।

9. আদিম সমাজে ভাষার ব্যবহার (অ) শিকার, এবং (আ) বাসস্থান নির্মাণ কতটুকু সহায়তা করেছিল আলোচনা কর। এই ক্রিয়াকলাপ গুলিতে অন্যান্য আর কি প্রকার সংযোগ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়েছিল?

উত্তরঃ ভাষার ব্যবহার দ্বারা শিকার ও বাসস্থান নির্মাণ অনেকাংশে সহায়তা করেছিল। ভাষা মানুষকে শিকার ও বাসস্থান নির্মাণে জ্ঞান ও কৌশল যোগানে সহায়তা করেছিল। সহায়তাগুলি নিচে আলোচনা করা হলঃ

(অ) শিকারঃ

(ক) মানুষ শিকার কার্যের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে পেরেছিল।

(খ) মানুষ তাদের মধ্যে শিকারের উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করতে পারত। 

(গ) ভাষার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন অঞ্চলের জন্তু-জানোয়ার সম্পর্কে তথ্যাদি জানতে পারত। 

(ঘ) তারা জীবজন্তুর প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করতে পারত।

(ঙ) তারা শিকারের জন্য অস্ত্র ও হাতিয়ার উন্নত করতে পারত।

(আ) বাসস্থান নির্মাণঃ

(ক) মানুষ ভাষার সাহায্যে বাসস্থান নির্মাণ সামগ্রীর প্রাচুর্যতা সম্পর্কে তথ্যাদি জানতে পারত। 

(খ) তারা বাসস্থান নির্মাণের নিরাপদ স্থান সম্পর্কে আলোচনা করতে পারত।

(গ) বাসস্থানের এলাকায় সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে তারা আলোচনা করতে পারত।

(ঘ) তারা বাসস্থান নির্মাণের কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করতে পারত।

অন্যান্য উপায়ঃ শিকার ও বাসস্থান নির্মাণের অন্যান্য সংযোগরক্ষাকারী উপায়সমূহ হল ছবি ও প্রতীক চিত্রাঙ্কন ও খোদাই কাজ।

পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলীর উত্তরঃ

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

1. আদিম মানুষের তৈরি হাতিয়ারের একটি তালিকা তৈরি কর। হাতিয়ার তৈরির কলে মানুষের কি কি বিষয়ে সুবিধা হয়েছিল?

উত্তরঃ আদিম মানুষের ক্রমবিকাশের ধারার সময় সময় তাদের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে পাথর, কাঠ ও পশুর হাড়ে ব্যবহার করে নানা হাতিয়ার তৈরি করে। এর মধ্যে মুখ্য হচ্ছে- শিকারের জন্য ব্যবহৃত পাথরের আছ, মাংস কাটা বা হাড় থেকে ছাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হাতিয়ার, ফল বা বীজ আহরণের হাতিয়ার ইত্যাদি। হাতিয়ার তৈরির ফলে আদিম মানব নিম্নোক্তভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত হয়ঃ

(ক) বন্য পশুদের থেকে আত্মরক্ষা করতে সক্ষম হয়। 

(খ) পশু-পক্ষী শিকার করতে সুবিধা হয়।

(গ) মান তৈরি ও সংরক্ষণ করতে সুবিধা হয়। 

(ঘ) নিজেদের মধ্যে আদান-প্রদানের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে ওঠে, আবার সংঘর্ষেরও সূত্রপাত হয়।

2. মানুষ ও স্তন্যপায়ী জীব (যেমন বানর এবং গরিলা)-এর মধ্যে ব্যবহার ও দৈহিক গঠনে কিছুটা মিল আছে। সম্ভবত বানর থেকেই মানুষের সৃষ্টি। তুমি ওদের ব্যবহার ও দৈহিক গঠনের সাদৃশ্যের উপর নির্ভর করে দুটি তালিকা তৈরি কর। তুমি কি মনে কর তাদের মধ্যে কিছু সবিশেষ পার্থক্য আছে?

উত্তরঃ বানর থেকেই মানুষের সৃষ্টি বলে ধারণা। বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনা এরই বিষয় আলোকপাত করে। তাই স্বাভাবিকভাবে মানুষ ও বানরশ্রেণীর মধ্যে ব্যবহারিক ও দৈহিক গঠন নিয়ে নিম্নলিখিত সদৃশ্যতা আছেঃ

ব্যবহারিকঃ

(ক) উভয়েই গাছপালা চড়তে সক্ষম।

(খ) উভয়েই স্তন্যপায়ী।

(গ) উভয়েরই রূপাটিতে দাঁত আছে বলে খাদ্যাভ্যাসে সমতা।

(ঘ) উভয়েই সংঘবদ্ধভাবে জীবনযাপন করে।

দৈহিকঃ

(ক) উভয়েই মেরুদণ্ড।

(খ) উভয়েরই গর্ভধারণকাল দীর্ঘ।

(গ) উভয়েরই বিভিন্ন ধরনের দাঁত আছে।

(ঘ) উভয়েরই শরীর লোমাবৃত। আবার তাদের মধ্যে ব্যবহারিক ও দৈহিক গঠন নিয়ে নিম্নলিখিত পার্থক্য আছেঃ

 ব্যবহারিকঃ

(ক) মানুষ দু-পায়ে চলে, কিন্তু বানরশ্রেণী দু-পা ও দু-হাত নির্ভর। 

(খ) মানুষ কৃষিকাজে সক্ষম, কিন্তু বানরেরা এক্ষেত্রে অক্ষন।

(গ) মানুষ খাদ্য তৈরি করে জীবনযাপন করে, কিন্তু বানর শুধু সংগ্রহের উপরই নির্ভরশীল।

দৈহিকঃ

(ক) মানুষের লেজ নেই, কিন্তু বানরের লেজ আছে।

(খ) মানুষের মগজের আকার বড়, কিন্তু বানরের মগজের আকার ছোট।

(গ) মানুষের শরীর দণ্ডায়মান চলাচলের উপযোগী, কিন্তু বানরের শরীর গাছে চড়া ও হাতে-পায়ে নির্ভর করে চলার উপযোগী। 

3. মানুষের উৎপত্তিতে আঞ্চলিক অবিচ্ছিন্নতার আদর্শের সপক্ষে যে যুক্তি দেখানো হয়েছে তা আলোচনা কর। তুমি কি মনে কর এটা পুরাতত্ত্বগত প্রমাণকে সন্দেহাতীতভাবে ব্যাখ্যা কর।

উত্তরঃ আঞ্চলিক অবিচ্ছিন্নতার আদর্শ অনুসারে মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করলেও তাদের গঠন ও চেহারার মিল থাকার কারণ হচ্ছে মানুষের উৎপত্তিস্থল এক এবং তা হচ্ছে আফ্রিকা। পরবর্তীতে স্থান পরিবর্তন হলে অন্যত্র স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করায় তাদের শারীরিক গঠনে ও চেহারায় পার্থক্য গড়ে ওঠে। তবে, এই মতবাদ সাপেক্ষে পুরাতত্ত্বগত প্রমাণ দুর্বল, যেখানে পুনঃস্থাপন তত্ত্ব সম্পূর্ণভাবে পুরাতত্ত্বগত প্রমাণ নির্ভর করে প্রতিষ্ঠিত এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য।

4. (ক) সংগ্রহ। 

(খ) হাতিয়ার তৈরি। এবং

(গ) আগুনের ব্যবহার — এই তিনটির মধ্যে কোনটি প্রত্নতাত্ত্বিকদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল?

উত্তরঃ হাতিয়ার তৈরি।

নাতিদীর্ঘ প্রশ্নোত্তরঃ

5. ভাষার ব্যবহার (ক) শিকার, ও (খ) আশ্রয়স্থল নির্মাণ কার্যে কিভাবে সাহায্য করেছিল, আলোচনা কর। ভাষা ছাড়া ভাব আদানপ্রদানের জন্য অন্য কি মাধ্যম ব্যবহার করা যেত?

উত্তরঃ ভাষার ব্যবহার দ্বারা শিকার ও বাসস্থান নির্মাণ অনেকাংশে সহায়তা করেছিল। ভাষা মানুষকে শিকার ও বাসস্থান নির্মাণে জ্ঞান ও কৌশল যোগানে সহায়তা করেছিল। সহায়তাগুলি নিচে আলোচনা করা হলঃ

(অ) শিকারঃ

(ক) মানুষ শিকার কার্যের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করতে পেরেছিল।

(খ) মানুষ তাদের মধ্যে শিকারের উপায় ও পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করতে পারত। 

(গ) ভাষার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন অঞ্চলের জন্তু-জানোয়ার সম্পর্কে তথ্যাদি জানতে পারত। 

(ঘ) তারা জীবজন্তুর প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করতে পারত।

(ঙ) তারা শিকারের জন্য অস্ত্র ও হাতিয়ার উন্নত করতে পারত।

(আ) বাসস্থান নির্মাণঃ

(ক) মানুষ ভাষার সাহায্যে বাসস্থান নির্মাণ সামগ্রীর প্রাচুর্যতা সম্পর্কে তথ্যাদি জানতে পারত। 

(খ) তারা বাসস্থান নির্মাণের নিরাপদ স্থান সম্পর্কে আলোচনা করতে পারত।

(গ) বাসস্থানের এলাকায় সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে তারা আলোচনা করতে পারত।

(ঘ) তারা বাসস্থান নির্মাণের কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করতে পারত।

অন্যান্য উপায়ঃ শিকার ও বাসস্থান নির্মাণের অন্যান্য সংযোগরক্ষাকারী উপায়সমূহ হল ছবি ও প্রতীক চিত্রাঙ্কন ও খোদাই কাজ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top