Class 12 Economics Chapter 5 সরকারি বাজেট এবং অর্থনীতি

Class 12 Economics Chapter 5 সরকারি বাজেট এবং অর্থনীতি | Class 12 Economics Question Answer in Bengali to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter AHSEC Board HS 2nd Year Economics Chapter 5 সরকারি বাজেট এবং অর্থনীতি Notes and select needs one.

Class 12 Economics Chapter 5 সরকারি বাজেট এবং অর্থনীতি

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given AHSEC Board Bengali Medium Class 12 Economics Chapter 5 সরকারি বাজেট এবং অর্থনীতি Solutions for All Subject, You can practice these here.

সরকারি বাজেট এবং অর্থনীতি

Chapter: 5

ক – অংশ (সমষ্টিগত অর্থবিজ্ঞান)

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। অনাকর রাজস্বের একটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ মাশুল ও জরিমানা।  

প্রশ্ন ২। মূলধনী ব্যয়ের একটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ রাস্তা, সেতু, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি নির্মাণ করতে যে ব্যয় হয় – তা মূলধনী ব্যয়।

প্রশ্ন ৩। সরকার কখন ঘাটতি বাজেট সৃষ্টি করে ?

উত্তরঃ সরকারি বাজেট প্রস্তাবে যখন সম্ভাব্য আয়ের তুলনায় প্রস্তাবিত ব্যয় বেশি দেখানো হয়, তখন সেই বাজেটকে ঘাটতি বাজেট বলে। আয়ের চেয়ে সম্ভাব্য ব্যয় অধিক হলেই ঘাটতি বাজেটের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ৪। রাজস্ব ঘাটতি কী ?

উত্তরঃ সরকারি বাজেটে যদি রাজস্ব খাতে আয়ের তুলনায় ব্যয় অধিক হয়, তখন তাকে রাজস্ব ঘাটতি বলে। রাজস্ব ঘাটতি = রাজস্ব ব্যয় – রাজস্ব আয়।

প্রশ্ন ৫। আর্থিক ঘাটতি কী ?

উত্তরঃ যদি সরকারের রাজস্ব প্রাপ্তি, পুরাতন ঋণ আদায় এবং অন্যান্য মূলধন প্রাপ্তির তুলনায় মোট ব্যয়ের পরিমাণ অধিক হয়, তখন তাকে আর্থিক ঘাটতি বা রাজকোষীয় ঘাটতি বলে।

আর্থিক ঘাটতি = মোট ব্যয় – রাজস্ব প্রাপ্তি – মূলধন প্রাপ্তি – সরকারি ঋণের পরিমাণ।

প্রশ্ন ৬। প্রাথমিক ঘাটতি কী ?

উত্তরঃ ফিসক্যাল বা আর্থিক ঘাটতি থেকে অতীতের ঋণের জন্য সুদ দেওয়ার অংশ বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তাকে প্রাথমিক ঘাটতি বলে।

প্রাথমিক ঘাটতি = আর্থিক ঘাটতি – সুদের পরিমাণ প্রদান।

প্রশ্ন ৭। সরকারি বাজেট কী ?  

উত্তরঃ সরকারের আয়-ব্যয়ের বার্ষিক খতিয়ানকে সরকারি বাজেট বলে।

প্রশ্ন ৮। রাজস্ব নীতি কী ?

উত্তরঃ অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক স্থিরতা আনার লক্ষ্যে সরকারের আয় ব্যয় এবং ঋণ নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাবলিকে রাজস্ব নীতি বলে।

প্রশ্ন ৯। শুদ্ধ না অশুদ্ধ লেখো।

আয়কর একটি পরোক্ষ কর।

উত্তরঃ অশুদ্ধ।

প্রশ্ন ১০। শূন্যস্থান পূর্ণ করো।

রাজস্ব প্রাপ্তির তুলনায় অধিক রাজস্ব ব্যয়কে রাজস্ব …….. বলা হয়।

উত্তরঃ ঘাটতি।

প্রশ্ন ১১। সত্য না মিথ্যা লেখো।

(ক) বিক্রয় কর এক ধরনের প্রত্যক্ষ কর।

উত্তরঃ মিথ্যা।

(খ) প্রবেশ কর এক ধরনের পরোক্ষ কর।

উত্তরঃ সত্য।

প্রশ্ন ১২। কর রাজস্বের একটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ আয় কর।

প্রশ্ন ১৩। সরকারি দ্রব্যের একটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ রাস্তাঘাট, প্রতিরক্ষা, পার্ক।

প্রশ্ন ১৪। পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয়ের একটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ প্রতিরক্ষা ব্যয়।

প্রশ্ন ১৫। শূন্যস্থান পূর্ণ করো।

ডাকঘর সঞ্চয় হিসাব হল ……… র একটি উদাহরণ। (মূলধন প্রাপ্তি/মূলধন ব্যয়)

উত্তরঃ মূলধন প্রাপ্তি।

প্রশ্ন ১৬। Public goods অর্থাৎ (জনসাধারণ) য়ের দ্রব্য কী ?

উত্তরঃ যে সকল দ্রব্য ও সেবা সরকার সার্বজনীন ভোগের জন্য উৎপাদন করে, তাকে Public goods বা জনসাধারণের দ্রব্য বলে। যেমন – পার্ক, রাস্তাঘাট। এসকল দ্রব্যের কোনো মালিকানা থাকে না। এমনকী কাউকে বঞ্চিত করারও সুযোগ থাকে না।

প্রশ্ন ১৭। সুষম বাজেট কী ?

উত্তরঃ বাজেটে যখন সম্ভাব্য আয় এবং প্রস্তাবিত ব্যয় সমান দেখানো হয়, তখন সেই বাজেটকে সুষম বাজেট (Balanced Budget) বলা হয়।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

1. Octroi বা দ্বারদেয়  বলতে কী বোঝ ?

উত্তরঃ নগর-মহানগরীতে সামগ্রী প্রবেশ করার সময় সরকারের আরোপ করা করকে Octroi বা দ্বারদেয় বলে।

2. কোন্ কর ব্যবস্থায় ব্যক্তির আয় বৃদ্ধির সঙ্গে করের হারও বৃদ্ধি পায় ?

উত্তরঃ প্রগতিশীল কর ব্যবস্থায় (progressive  taxation) আয় বৃদ্ধির সঙ্গে করের হারও বৃদ্ধি পায়।

3. মুদ্রাস্ফীতির সময় সরকারকে কী প্রকার বাজেট প্রস্তুত করা উচিত ?

উত্তরঃ উদ্বৃত্ত বাজেট।

4. এমন একটি করের নাম উল্লেখ করো যার সংঘাতে ও আপাতন একই ব্যক্তির ওপর পড়ে না।

উত্তরঃ বিক্রি কর।

5. একটি করের নাম উল্লেখ করো যার আর্থিক বোঝ। করদাতা আরেকজনের ওপর চাপাতে পারে না ?

উত্তরঃ আয় কর।

6. সাম্যনীতির ওপর কোন্ কর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত ?

উত্তরঃ প্রত্যক্ষ কর।

7. করের আপাতন বলতে কী বোঝ ?

উত্তরঃ করের শেষ বোঝাকেই আপাতন বলা হয়।

8. প্রত্যক্ষ কর বলতে কী বোঝায় ?

উত্তরঃ যে করের সংঘাত এবং বোঝা একই ব্যক্তির ওপর পড়ে অর্থাৎ করদাতা করের আর্থিক বোঝা আরেকজনের ওপর চাপাতে পারে না, সেই করকে প্রত্যক্ষ কর বলে। যেমন আয় কর, কর্পোরেট কর, দান কর ইত্যাদি।

9. শুদ্ধ উত্তর বের করো।

(১) নিচের কোনটি সরকারের মূলধনী ব্যয় ?

(ক) পেনসন প্রদান। 

(খ) শেয়ার ক্রয়। 

(গ) উৎপাদনে ভর্তুকি প্রদান। 

(ঘ) অনুদান।

উত্তরঃ (খ) শেয়ার ক্রয়।

(২) নিচের কোনটি রাজস্ব ব্যয় ?

(ক) সুদ প্রদান। 

(খ) বিল্ডিং ক্রয়। 

(গ) মেশিন ক্রয়। 

(ঘ) রাজ্য সরকারকে ঋণ দান।

উত্তরঃ (ক) সুদ প্রদান।

(৩) নিচের কোন্‌টি প্রত্যক্ষ কর ?

(ক) সম্পদ কর। 

(খ) আবগারি শুল্ক। 

(গ) প্রমোদ কর। 

(ঘ) বিক্রি কর।

উত্তরঃ (ক) সম্পদ কর।

(৪) নিচের কোন্‌টি কর রাজস্ব ?

(ক) রপ্তানি শুল্ক। 

(খ) লাভ্যাংশ। 

(গ) সুদ। 

(ঘ) ফিজ।

উত্তরঃ (ক) রপ্তানি শুল্ক।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর 

প্রশ্ন ১। ধরা হল, সর্বমোট সরকারি ব্যয় G = 150 এবং কর রাজস্ব T = 0.2071 যদি জাতীয় আয়ের পরিমাণ (Y) 2000 হয়, সরকারি বাজেটের অবস্থা কী হবে?

উত্তরঃ দেওয়া আছে,

সরকারি ব্যয় (G) = 150

সরকারি আয় = 0.20Y

= 0.20 x 2000

= 400

সুতরাং, সরকারি বাজেট উদ্বৃত্ত হবে (400 – 150) = 250 টাকা

প্রশ্ন ২। সরকারি দ্রব্য এবং ব্যক্তিগত দ্রব্যের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করো।

উত্তরঃ (১) সরকারি দ্রব্যের ব্যবহার ও উপযোগ কোনো বিশেষ উপভোক্তার কাছে সীমাবদ্ধ নয়। কিন্তু ব্যক্তিগত দ্রব্যের ব্যবহার ও উপযোগ বিশেষ উপভোক্তার কাছে সীমাবদ্ধ।

(২) সরকারি দ্রব্যের ক্ষেত্রে কাউকে বঞ্চিত করার কোনো সুযোগ থাকে না। কারণ, সরকারি দ্রব্য ব্যবহারে কোন মাশুল আদায় করা হয় না। কিন্তু ব্যক্তিগত দ্রব্যের ক্ষেত্রে কোনো ব্যক্তি যদি তার মূল্য না দেন তাহলে তা তার উপভোগের আয়ত্বে আসবে না।

(৩) সরকারি দ্রব্যের উদাহরণ হল – সরকারি পার্ক, জাতীয় রাজপথ, প্রতিরক্ষা। ব্যক্তিগত দ্রব্যের উদাহরণ হল – খাদ্যসামগ্রী, কাপড়, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, শাকসব্জী, ফলমূল ইত্যাদি।

প্রশ্ন ৩। সরকারের আবণ্টন কার্য কী ?

উত্তরঃ একটি অর্থনীতির বিভিন্ন খণ্ডে সরকারকে সরকারি দ্রব্য ও পরিষেবার যোগান দিতে হয়, যাতে কল্যাণ ও বৃদ্ধি অর্জন করা যায়। একে বলা হয় সম্পদ প্রতিস্থাপন/ সরকারের আবণ্টন কার্য।

প্রশ্ন ৪। সরকারি বাজেটের উপাদানগুলো কী কী ?

উত্তরঃ সরকারি বাজেটের দুটি অংশ থাকে – রাজস্ব বাজেট এবং মূলধনী বাজেট। 

সরকারি বাজেটের দুটি উপাদান হল – 

(ক) বাজেট রাজস্ব। 

(খ) বাজেট ব্যয়।

প্রশ্ন ৫। সরকারের বিতরণ কার্য ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ জাতীয় আয়ের সুষম বণ্টনের জন্য সরকার সমাজের উচ্চ বিত্তদের কাছ থেকে কর সংগ্রহ করে এবং সেই অর্জিত কর রাজস্ব থেকে দরিদ্র শ্রেণির সুবিধার্থে বিভিন্ন জনকল্যাণ মূলক কার্য সম্পাদন করে। এটিই হল সরকারের বিতরণ কার্য।

প্রশ্ন ৬। 2005-06 বাজেট বর্ষে দুরকম নতুন করের সূচনা করা হয়। দুরকম কর কী কী?

উত্তরঃ বাজেট বর্ষে প্রবর্তিত নতুন কর হল –

(1) Value Added Tax/ভ্যাট

(2) Fringe Benefit Tax

প্রশ্ন ৭। সরকারি বাজেটের মূলধন প্রাপ্তির উপাদানগুলো কী কী ?

উত্তরঃ সরকারি বাজেটের মুলধন প্রাপ্তি বা মূলধনী খাতে আয়ের উপাদানগুলো হল-

(১) সরকারি ঋণ উদ্ধার অর্থাৎ পূর্বেকার ঋণের টাকা ফেরত আদায়।

(২) বাজার থেকে সংগৃহীত ঋণ।

(৩) অংশপত্র বিক্রির প্রাপ্তি।

(৪) সরকার ভবিষ্য নিধি (PF), পোষ্ট অফিস সঞ্চয় প্রকল্প ও জাতীয় সঞ্চয় প্রকল্প ইত্যাদি থেকে নেওয়া ঋণ।

প্রশ্ন ৮। সরকারি বাজেটের পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয়ের তিনটি প্রধান বিষয় উল্লেখ করো।

উত্তরঃ সরকারি বাজেটের পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয়ের তিনটি প্রধান বিষয় হল –

(১) সরকারি কর্মচারীদের বেতন ও পেনসন।

(২) প্রতিরক্ষা ব্যয়।

(৩) সরকারি ঋণের প্রদেয় সুদ।

প্রশ্ন ৯। সরকারি বাজেটে রাজস্ব হিসাবে কী থাকে ?

উত্তরঃ রাজস্ব হিসাবে বা রাজস্ব বাজেটে দুটি অংশ থাকে – রাজস্ব সংগ্রহ এবং রাজস্ব ব্যয়। রাজস্ব সংগ্রহের মধ্যে আছে কর রাজস্ব এবং অনাকর রাজস্ব। রাজস্ব ব্যয়ের মধ্যে আছে রাজস্ব আদায়ের জন্য সর্বপ্রকারের ব্যয়, কর্মচারীদের বেতন ইত্যাদি। অর্থনৈতিক সেবা প্রকল্প, রাস্তাঘাট নির্মাণের ব্যয়, আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ব্যয় ইত্যাদি রাজস্ব বাজেটের ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত।

প্রশ্ন ১০। সরকারি কর আরোপের মাধ্যমে পুনর্বণ্টনের উদ্দেশ্যটি স্পষ্ট করো।

উত্তরঃ কর ব্যবস্থার মাধ্যমে আধুনিককালে প্রায় সকল দেশেই আয় ও সম্পদ বণ্টনের অসমতা দূর করার প্রচেষ্টা চলছে। ধনী ও বিত্তশালী লোকদের আয় ও সম্পদের উপর চড়া হারে কর ধার্য করে সংগৃহীত রাজস্ব স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের কল্যাণ বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য, শ্রমকল্যাণ, দারিদ্র দূরীকরণ কর্মসূচি, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়ের সংস্থান রাখলে দেশের আয় ও সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য বিধান করা সম্ভব। এধরনের প্রগতিশীল কর ব্যবস্থাই পুনর্বণ্টনের উদ্দেশ্য সাধিত করে।

প্রশ্ন ১১। কাগজী কর বলতে কী বোঝ ? উদাহরণসহ উল্লেখ করো।

উত্তরঃ যে সকল প্রত্যক্ষ কর থেকে সরকার অল্প পরিমাণে রাজস্ব সংগ্রহ করে, সেগুলোকে কাগজী কর বলে। যেমন – সম্পত্তি কর, দান কর।

প্রশ্ন ১২। মূলধনী ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত তিনটি বিষয় উল্লেখ করো।

উত্তরঃ মূলধনী ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত তিনটি বিষয় হল –

(১) মেশিন ও যন্ত্রাংশ ক্রয়।

(২) সরকারি খণ্ডে বিনিয়োগ।

(৩) রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র শাসিত রাজ্যকে প্রদেয় ঋণ ও অগ্রিম প্রদান।

(৪) ভূমি ও বাড়ি অধিগ্রহণ।

প্রশ্ন ১৩। ব্যক্তিগত দ্রব্য ও সরকারি দ্রব্যের সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ যে সকল দ্রব্য ও সেবা টাকার মাধ্যমে বাজার থেকে ভোক্তা ক্রয় করে তাকে ব্যক্তিগত দ্রব্য বলে। পক্ষান্তরে, যে সকল দ্রব্য ও সেবা সরকার সার্বজনীন ভোগের জন্য উৎপাদন করে, তাকে সরকারি দ্রব্য বলে।

প্রশ্ন ১৪। সরকারি দ্রব্যের ক্ষেত্রে কীভাবে মুক্ত বিচরণ সমস্যা সৃষ্টি হয় – ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সরকারি দ্রব্যের কোন মালিকানা থাকে না, ফলে এসকল দ্রব্যের কোনো মাশুল আদায় করার সুযোগ থাকে না। এমনকী কাউকে বঞ্চিত করারও কোনো সুযোগ থাকেনা। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, Everybody’s property is nobody’s property অর্থাৎ সকলের সম্পত্তি কারও সম্পত্তি নয়। ফলে অবাধ ও মুক্ত ভোগের পরিণামে সরকারি দ্রব্য দ্রুত নষ্ট হয়। এভাবে সরকারি দ্রব্যের ক্ষেত্রে মুক্ত বিচরণ সমস্যা সৃষ্টি হয়।

প্রশ্ন ১৫। রাজস্ব ঘাটতির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।

অথবা, 

রাজস্ব ঘাটতির ফলে উদ্ভব হওয়া চারটি পরিস্থিতি লেখো। 

উত্তরঃ সরকারি বাজেটে যদি রাজস্ব খাতে আয়ের তুলনায় ব্যয় অধিক হয়, তখন তাকে রাজস্ব ঘাটতি বলে। রাজস্ব ঘাটতির ফলে নিম্নলিখিত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।

(১) প্রশাসন পরিচালনায় সরকারি ব্যয়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।

(২) সরকারের দায় বৃদ্ধি।

(৩) মুদ্রাস্ফীতি।

(৪) সরকারের ঋণের ভবিষ্যৎ বোঝা ও প্রদেয় সুদ অধিক হবে।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

1. পরোক্ষ করের দুটি অসুবিধা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ পরোক্ষ করের দুটি অসুবিধা হল –

(১) আয়ের সঙ্গে পরোক্ষ করের সম্বন্ধ নেই। কারণ, ধনী দরিদ্র সকলেই দ্রব্যাদি কেনার সময় এই কর দিতে হয়। ফলে বিত্তশালী অপেক্ষা দরিদ্র শ্রেণির ওপরই পরোক্ষ করের বোঝা বেশি করে পড়ে।

(২) পরোক্ষ কর নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সহায়ক নয়। কারণ, সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না যে সে সরকারকে কর প্রদান করছে।

2. দুটি অনাকর রাজস্বের উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ (১) মাসুল। এবং 

(২) জরিমানা।

3. দুবিধ বাণিজ্যিক রাজস্বের উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ (১) রেলসেবা থেকে অর্জিত রাজস্ব।

(২) ডাকসেবার মাধ্যমে অর্জিত রাজস্ব।

4. পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয়ের দুটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ (১) সরকারি কর্মচারীর বেতন।

(২) প্রতিরক্ষা ব্যয়।

5. সরকারি বাজেটের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উত্তরঃ সরকারি বাজেটের দুটি বৈশিষ্ট্য হল – 

(১) সরকারি বাজেট আগন্তুক বিত্তীয় বছরের সরকারের আয় এবং ব্যয় নির্দেশ করে।

(২) সরকারি বাজেটে রাজস্ব সংগ্রহ করার উপায় এবং সরকারি ব্যয়সমূহের বিন্যাস থাকে।

6. ‘বাজেট আয় অসমতা দূর করে।’ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ বাজেটের মাধ্যমে সরকার অর্থনীতির কর এবং ব্যয় ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে আয় অসমতা হ্রাস করতে হয়। সরকার ক্রমবর্ধমান হারে কর আরোপ করলে ধনী শ্রেণির লোকেদের কর প্রদানের মাত্রা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায়। আবার, বিলাসী দ্রব্যের ক্ষেত্রে অধিক কর আরোপ করলে ধনী শ্রেণির কাছ থেকে অধিক রাজস্ব সংগ্রহ করা যায়। সংগৃহীত এই রাজস্ব দরিদ্র শ্রেণির লোকের কল্যাণে খরচ করলে ধনী এবং দরি শ্রেণির মধ্যে আয় বৈষম্য হ্রাস পায়।

7. একটি অর্থব্যবস্থায় অতিরিক্ত চাহিদার সমস্যা দূর করতে গৃহীত রাজকোষীয় নীতির যে কোনো দুটি ব্যবস্থা উল্লেখ করো।

উত্তরঃ (১) কর বৃদ্ধি করা।

(২) সরকারি ব্যয় হ্রাস করা।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। পরিকল্পনা এবং পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য লেখো।

অথবা, 

পরিকল্পিত এবং অপরিকল্পিত ব্যয়ের পার্থক্য লেখো।

উত্তরঃ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দেওয়া বিষয়গুলো প্রতিবছর ব্যয় করার জন্য সরকারি বাজেটে সুবিধা রাখা হয়। বাজেটে সুবিধা রাখা সে ধরনের ব্যয়কেই পরিকল্পনা ব্যয় বলা হয়। পরিকল্পনা ব্যয় বাজেটে উল্লেখ থাকে এবং বাজেটে প্রতি বছর বিভিন্ন প্রকল্পে কত টাকা ব্যয় করা হবে তার হিসেব থাকে। রাস্তা ও সেতু নির্মাণ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, জলসেচ ও গ্রামোন্নয়ন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয় কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার মাধ্যমে রূপায়ণ হয়। সুতরাং, এধরনের ব্যয় পরিকল্পনা ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত।

সরকারের দৈনিক বা নিয়মিত কার্যগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকারি বাজেটে সুবিধা সৃষ্টি করে রাখা হয়। সেক্ষেত্রে যে ব্যয় হয়, তাকে পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয় বলে। 

দৃষ্টান্তস্বরূপ: বিদেশি শক্তির আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার গুরুদায়িত্ব কোন সরকার অবজ্ঞা করতে পারবে না।

প্রশ্ন ২। সরকারি রাজস্বের উৎসগুলি কী কী ?

উত্তরঃ সরকারি রাজস্বের উৎসগুলো নিম্নরূপ –

(১) কর রাজস্ব: সাম্প্রতিককালে সরকারি রাজস্বের একটি প্রধান উৎস হল কর। কোনরূপ প্রত্যক্ষ লাভের বা সুযোগ সুবিধার আশা না করে জনগণ সরকারকে বাধ্যতামূলকভাবে যে অর্থ প্রদান করতে হয়, তাকেই কর বলে। কর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ হতে পারে।

(২) প্রশাসনিক রাজস্ব: প্রশাসনিক কার্যাবলির দ্বারা সরকারের যে রাজস্ব সংগৃহীত হয়, তাকে প্রশাসনিক রাজস্ব বলে। যেমন – ফিজ, লাইসেন্স ফি, জরিমানা ইত্যাদি।

(৩) বাণিজ্যিক রাজস্ব: সরকার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান থেকে দ্রব্য ও সেবা বিক্রি করে অর্জিত রাজস্বকে বাণিজ্যিক রাজস্ব বলে। যেমন- রেল, ডাক ও তার, বেতার, দূরদর্শন, বিদ্যুৎ সরবরাহ ইত্যাদি।

(৪) দান-অনুদান: ব্যক্তি, সংগঠন ও বৈদেশিক সরকারের স্বেচ্ছায় দেওয়া দান সরকারি রাজস্বের অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য করা হয়।

প্রশ্ন ৩। কর রাজস্ব এবং অনাকর রাজস্বের মধ্যে পার্থক্য দর্শাও।

উত্তরঃ সরকার বিভিন্ন ধরনের কর আরোপ করে যে পরিমাণ রাজস্ব সংগ্রহ করে তাকে কর রাজস্ব বলে। কর হল বাধ্যতামূলক চাঁদা যার বিনিময়ে করদাতা সরকারের কাছে কোনো বিশেষ ব্যক্তিগত সুবিধা দাবি করতে পারে না। কর রাজস্বের প্রধান উৎস হল – আয় কর, কর্পোরেট কর, বিক্রয় কর, সেবা কর, ভ্যাট ইত্যাদি। 

পক্ষান্তরে, কর ছাড়া সরকার অন্যান্য উৎস থেকে যতটুকু পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করে তাকে অনাকর রাজস্ব বা কর নিরপেক্ষ রাজস্ব বলে।

অনাকর রাজস্বের উৎস হল – সরকারি প্রতিষ্ঠানের লাভ ও লাভ্যাংশ, মাশুল, জরিমানা, বৈদেশিক সাহায্য, সুদ প্রাপ্তি ইত্যাদি।

প্রশ্ন ৪। সরকারি ঘাটতি ও সরকারি ঋণের মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সরকারি ঘাটতি ও সরকারি ঋণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। সরকারি ঘাটতি হল একটি প্রবাহ কিন্তু তা ঋণের ওপর নতুন মাত্রা সংযোজন করে। সরকারি ঘাটতি বৃদ্ধি পেলে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কারণ, সরকার ঘাটতি ব্যয় মোকাবিলা করতে ঋণ গ্রহণ করে। সরকার যদি বছর বছর ঋণ নিতে থাকে তাহলে ঋণের মাত্রা তৎসঙ্গে প্রদেয় সুদ অবিরতভাবে বৃদ্ধি পাবে। প্রদেয় সুদ রাজস্ব ব্যয় বৃদ্ধি করে, যা অধিক পরিমাণে সরকারি ঘাটতি সমস্যার সৃষ্টি করে।

অধিক সরকারি ঘাটতি পূরণ করবার জন্য আরও ঋণ নেওয়া প্রয়োজন পড়বে। ঋণের সাথে সাথে সুদের বোঝাও বাড়বে। এভাবে সরকার ঋণের ফাঁদে আবর্তিত থাকবে। সুতরাং সরকারি ঘাটতি হল ঋণের কারণ ও ফলশ্রুতি।

প্রশ্ন ৫। সরকারি বাজেটের উদ্দেশ্যগুলো কী সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।

অথবা, 

সরকারি রাজস্ব ও ব্যয় ব্যবস্থা দ্বারা সাধিত দুটি কার্যের ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সরকারি বাজেট হল একটি বিত্তীয় বর্ষের সরকারের প্রত্যাশিত ব্যয় এবং সেই ব্যয়ের জন্য প্রয়োজনীয় বিত্তের উৎস সমূহের এক বিবৃতি।

বাজেট নীতির প্রধান উদ্দেশ্যসমূহ হল –

(১) কার্যক্ষম প্রশাসন ব্যবস্থা: এই উদ্দেশ্য সফল করার জন্য সরকারি পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিধানমণ্ডল, ন্যায়ালয়, সরকারি কার্যালয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয় করতে হয়।

(২) আন্তঃকাঠামো উন্নত করা: এই উদ্দেশ্য পূরণ করার জন্য সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, পানীয় জল ও বিদ্যুতের যোগান, পরিবহন, ডাক ও দূরসংযোগ সেবা, রাস্তাঘাট, সেতু, পার্ক নির্মাণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয় ধার্য করতে হয়।

(৩) আয়ের অসমতা হ্রাস করা: ধনী ব্যক্তির ওপর অধিক কর আরোপ করে এবং দরিদ্র লোকদের জন্য অধিক ব্যয় করে আয়ের অসমতা হ্রাস করা যায়।

(৪) অর্থনৈতিক সুস্থিরতা নিশ্চিত করা: অর্থনৈতিক সুস্থিরতা বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করে। বাজেটীয় নীতির দ্বারা সরকার অত্যাবশ্যকীয় সেবা এবং সামগ্রীর দামের সুস্থিরতা নিশ্চিত করে।

(৫) অর্থনৈতিক বৃদ্ধি: বাজেটের একটি বিশেষ উদ্দেশ্য হল দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির পথ প্রশস্ত করা। উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে বাজেটই হবে উন্নয়নের পথ প্রদর্শক। দেশের অর্থনীতিতে গতিশীলতা সৃষ্টি করার দায়িত্ব নির্ভর করে বাজেটের ওপর।

প্রশ্ন ৬। আধুনিককালে সরকারি ব্যয়বৃদ্ধি হওয়ার চারটি কারণ লেখো। 

উত্তরঃ আধুনিককালে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির প্রধান কারণ হল নিম্নরূপ:

(১) আধুনিক রাষ্ট্র হল কল্যাণকামী রাষ্ট্র। সকলের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের ব্যবস্থা করা, সুশিক্ষা ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। দরিদ্র, অসহায়, বৃদ্ধ, পঙ্গু লোকদের সাহায্য দান রাষ্ট্রের কর্তব্য বলে বিবেচিত হয়। এরূপ নানা ধরনের কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি পায়।

(২) দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করা ও বহিঃশত্রুর আক্রমণ হতে দেশ রক্ষা করা প্রত্যেক রাষ্ট্রের প্রাথমিক কর্তব্য। এই কর্তব্য পালনের জন্য সরকারকে গৃহ ও প্রতিরক্ষা খাতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়।

(৩) আধুনিককালে সরকার আর্থিক বৈষম্য দূর করতে নানাধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করছে। এরূপ দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পগুলি খুবই ব্যয়বহুল এবং তাদের বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবছর সরকারকে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়।

(৪) আর্থিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সরকারকে মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বেতন, ভাতা, পেনসন ইত্যাদি বাড়াতে হয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণকে বণ্টন করতে হয়। সর্বোপরি দ্রুতগতিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সরকারি দ্রব্য ও সেবার যোগান বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সরকারি ব্যয় প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি হচ্ছে।

প্রশ্ন ৭। ঋণের ক্ষেত্রে রিকার্ডোর সমতা/সমমানতা ধারণাটি ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ জনসাধারণের ভোগকার্যের পরিমাণ চলিত আয়ের সাথে প্রত্যাশিত আয়ের ওপর নির্ভর করে। সরকার ঋণ পরিশোধ করবার জন্য ভবিষ্যতে যে কর আরোপ করবে সেই করের প্রতি লক্ষ্য রেখে জনসাধারণ অধিক সঞ্চয় করবে। ফলস্বরূপ জাতীয় সঞ্চয়ের পরিবর্তন হবে না। একে রিকার্ডোর সমতূল্যতা বলা হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর ‘বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ডেভিড রিকার্ডোই প্রথম যুক্তিগ্রাহ্য মতামত প্রকাশ করেন যে, ঘাটতি অধিক হলে জনসাধারণ সঞ্চয়ও অধিক করে থাকে। বর্তমানে সরকার ঋণগ্রহণ করে যে ব্যয়সঙ্কোলন করছে, ভবিষ্যতে অধিক কর আদায় করে তা প্রত্যার্পন করবে। অর্থব্যবস্থায় কর আরোপ ও ঋণ গ্রহণের সমান প্রভাব থাকবে। এইজন্যই এটাকে সমমানতা বলা হয়।

প্রশ্ন ৮। আনুপাতিক আয় কর কীভাবে স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রকের কাজ করে ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সমানুপাতিক আয় কর স্বয়ংক্রিয় নিয়ন্ত্রক হিসাবে কাজ করে। এর কারণ হল আয় কর প্রবর্তন করার ফলে কর প্রদানোত্তর আয় এবং ভোগ্যব্যয়ের পরিমাণ GDP- ব পরিবর্তন দ্বারা কম প্রভাবান্বিত হয়। যখন মোট ঘরোয়া উৎপাদন অর্থাৎ GDP বৃদ্ধি পায়, তখন কর প্রদানোত্তর আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু এই বৃদ্ধির হার GDP বৃদ্ধির হার থেকে কম হবে। কারণ, GDP-র একটি অংশ কর হিসাবে সরকারি কোষাগারে যাবে। ফলস্বরূপ ভোগকার্যের ঊর্ধ্বগামিতা কিছু পরিমাণে নিয়ন্ত্রিত হবে। সেইভাবে যখন আর্থিক মন্দাবস্থা দেখা দেয়, তখন GDP হ্রাস পায় এবং কর প্রদানোত্তর আয়ের পরিমাণ কমে যায় কিন্তু ভোগকার্য সেই অনুপাতে হ্রাস পাবে না। করের অপরিবর্তনীয় অবস্থায় ভোগকার্যের পরিমাণ অধিক হ্রাস পাবে। কিন্তু সমানুপাতিক আয়কর ব্যবস্থায় এই হ্রাসের পরিমাণ কম হবে। সুতরাং সমানুপাতিক আয় কর স্বয়ংক্রিয় স্থিতিস্থাপক হিসাবে কাজ করে।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তর

1. উন্নয়নমূলক এবং অনাউন্নয়নমূলক ব্যয় কী ?

উত্তরঃ অর্থনৈতিক এবং সামাজিক সেবা প্রদান করার উদ্দেশ্যে সরকার যে পরিমাণ রাজস্ব ব্যয় বহন করতে হয় তাকে উন্নয়নমুখী ব্যয় বা বিকাশমুখী ব্যয় বলে। যেমন – কৃষি, উদ্যোগ, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয় উন্নয়নমুখী ব্যয়ের উদাহরণ। 

সাধারণ সেবাকার্যের ক্ষেত্রে সরকারের যে ব্যয় করতে হয় তাকে অনা- উন্নয়নমূলক ব্যয় বলে। যেমন – আরক্ষী, প্রশাসন, ন্যায়িক সেবা, প্রতিরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যয় অনাউন্নয়নমূলক ব্যয়ের উদাহরণ।

2. সরকারি বাজেটের অর্থ কী ? রাজস্ব প্রাপ্তি ও মূলধন প্রাপ্তির মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

উত্তরঃ সরকারি বাজেট হল একটি বিত্তীয় বর্ষের সরকারের প্রত্যাশিত ব্যয় এবং সেই ব্যয়ের জন্য প্রয়োজনীয় বিত্তের উৎস সমূহের এক বিবৃতি। 

কর রাজস্ব এবং অনাকর রাজস্ব থেকে সংগৃহীত অর্থই রাজস্ব প্রাপ্তি।

রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে সরকারকে কোন পরিশোধ করতে হয় না।

সরকার নাগরিকদের কাছ থেকে ঋণ সংগ্রহ করা রাজস্ব, সরকারি খণ্ডের বিলগ্নীকরণ, সরকারি ঋণপত্র বিক্রি করে ঋণ হিসাবে সংগ্রহ করা রাজস্ব ইত্যাদি মুলধন প্রাপ্তির উপাদান। এগুলো পরিশোধ করতে হয়।

3. একটি অর্থনীতির অত্যধিক চাহিদার সমস্যা সমাধান করার জন্য যে কোনো দুটি রাজকোষীয় ব্যবস্থা ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ (১) সরকারি খরচ কমানো: একটি অর্থনীতির অত্যধিক চাহিদার সমস্যা সমাধান করা জন্য সরকারি ক্ষেত্রে ব্যয় সংক্ষেপের নীতি অনুসরণ করতে হবে। ঘাটতি বাজেটের পরিবর্তে উদ্বৃত্ত বাজেট প্রস্তুত করতে হবে। ভরতুকি বা প্রতিরক্ষা ব্যয় কমাতে হবে।

(২) কর বৃদ্ধি: একটি দেশের অতিরিক্ত চাহিদা সমস্যা সমাধান করার জন্য কর ব্যবস্থার ভিত্তিকে আরও ব্যাপক করতে হবে। আয় বৃদ্ধির সাথে সাথে যাতে অধিক সংখ্যক লোক করের আওতায় আনা যায় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

4. প্রত্যক্ষ কর এবং পরোক্ষ করের চারটি পার্থক্য লেখো। 

উত্তরঃ প্রত্যক্ষ কর এবং পরোক্ষ করের মধ্যে চারটি পার্থক্য হল –

(১) যে করের আর্থিক বোঝা করদাতা আরেকজনের ওপর চাপাতে পারে না সেই করকে প্রত্যক্ষ কর বলে। অন্যদিকে, যে কর একজনের উপর ধার্য করা হয়, কিন্তু এর বোঝা বা ভার অপর একজন ব্যক্তির উপর পড়ে তাকে বলা হয় পরোক্ষ কর।

(২) প্রত্যক্ষ কর করদাতার ক্ষমতার ভিত্তিতে ধার্য করা হয় কিন্তু পরোক্ষ কর সকলকে প্রদান করতে হয়। দ্রব্য ক্রয়ের সময় পরোক্ষ কর দিতে হয়।

(৩) প্রত্যক্ষ কর প্রগতিশীল (Progressive)। প্রত্যক্ষ কর সমতা নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। দেশের আয় বৃদ্ধি পেলে প্রত্যক্ষ করের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু আয়ের সঙ্গে পরোক্ষ করের সম্বন্ধ নেই। ধনী দরিদ্র সকলেই দ্রব্যাদি কেনার সময় এই কর দিতে হয়। ফলে বিত্তশালী অপেক্ষা দরিদ্র শ্রেণির ওপরই পরোক্ষ করের বোঝা বেশি পড়ে। সুতরাং এই ধরনের কর হল অধোগতিশীল (Regressive)।

(৪) প্রত্যক্ষ করের উদাহরণ হল: আয় কর, সম্পদ কর, নিগম কর, দান কর।

পরোক্ষ করের উদাহরণ হল: পণ্য ও সেবা কর (GST), বিক্রয় কর, প্রমোদ কর, আবগারি শুল্ক ইত্যাদি।

5. বাজেট ঘাটতি কী ? বাজেট ঘাটতির তিনটি প্রকার কী কী ?

উত্তরঃ বাজেটে যখন সম্ভাব্য আয়ের তুলনায় প্রস্তাবিত ব্যয় বেশি দেখানো হয়, তখন একে বাজেট ঘাটতি বলে।

বাজেট ঘাটতির প্রকারভেদ হল –

(১) রাজস্ব ঘাটতি।

(২) রাজকোষীয় ঘাটতি বা ফিসক্যাল ঘাটতি।

(৩) প্রাথমিক ঘাটতি।

6. ঘাটতি বাজেট কী ? উন্নয়নশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাড়তি বাজেটের থেকে ঘাটতি বাজেটকে কেন উপযোগী হিসাবে বিবেচনা করা হয় ? 

উত্তরঃ বাজেটে যখন সম্ভাব্য আয়ের তুলনায় প্রস্তাবিত ব্যয় বেশি দেখানো হয়, তখন একে বাজেট ঘাটতি বলে।

উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষমতা সীমিত থাকার জন্য ঘাটতি বাজেটের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারা যায়। উন্নয়নশীল দেশ কারিগরি প্রযুক্তি, শ্রমদক্ষতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পিছপড়া সেজন্য ঘাটতির মাধ্যমে এই উপাদানসমূহ সংগ্রহ করে অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করা যায়। ঘাটতির মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থের বিনিয়োগের ফলে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি হয়। এটি অর্থনীতিতে প্রগতির সহায়ক হয়। এই সকল কারণে উন্নয়নশীল অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাড়তি বাজেটের থেকে ঘাটতি বাজেটকে উপযোগী হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

 দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। প্রত্যক্ষ কর কাকে বলে ? প্রত্যক্ষ করের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো বর্ণনা করো।

উত্তরঃ যে করের সংঘাত এবং বোঝা একই ব্যক্তির ওপর পড়ে, তাকে প্রত্যক্ষ কর বলে। অর্থাৎ যে করের আর্থিক বোঝা করদাতা আরেকজনের ওপর চাপাতে পারে না, সেই করকে প্রত্যক্ষ কর বলে। 

উদাহরণস্বরূপ: আয় কর, নিগম কর, সম্পদ কর, দান কর ইত্যাদি হল প্রত্যক্ষ কর।

প্রত্যক্ষ করের গুণগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হল –

(১) প্রত্যক্ষ কর সমতা নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। অর্থাৎ প্রত্যক্ষ কর করদাতার ক্ষমতার ভিত্তিতে ধার্য করা হয়। এটা খুবই যুক্তিসঙ্গত।

(২) প্রত্যক্ষ কর নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। করদাতা প্রত্যক্ষভাবে এই করের বোঝা অনুভব করে। ফলস্বরূপ তারা সরকারি কাজকর্মের প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন।

(৩) প্রত্যক্ষ কর আদায়ের ক্ষেত্রে ব্যয় কম হয়। এরূপ কর মিতব্যয়িতার নীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।

প্রত্যক্ষ করের দোষ বা ত্রুটিসমূহ হল –

(১) প্রত্যক্ষ কর জনপ্রিয় নয়। কারণ, একসঙ্গে বিশাল পরিমাণ অর্থ করদাতাকে দিতে হয় যা করদাতার পক্ষে কষ্টসাধ্য।

(২) প্রত্যক্ষ করের ক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।

(৩) প্রত্যক্ষ করের ফলে অনেক ক্ষেত্রে মানুষের কর্মস্পৃহা হ্রাস পায়। কারণ কঠোর পরিশ্রমের ফলে একজন ব্যক্তি যা আয় করে, তার এক অংশ যদি সরকার আয় করের মাধ্যমে কেড়ে নেয়, সেই ব্যক্তির কাজের উৎসাহ কমে যায়।

(৪) প্রত্যক্ষ করের ফলে ব্যক্তিগত ব্যয়যোগ্য আয় হ্রাস পায়। ফলস্বরূপ সঞ্চয় হ্রাস পায়। মূলধন গঠনের হারও কম হয়।

প্রশ্ন ২। সরকারি বাজেটের উপাদানসমূহ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সরকারের আয় ব্যয়ের বার্ষিক আগাম হিসাবকে সরকারি বাজেট বলা হয়। সরকারি বাজেট আগামী এক বৎসরের জন্য সরকারের প্রত্যাশিত আয় এবং প্রস্তাবিত ব্যয়ের বিবরণ। এই বিবরণে বিগত সময়ের আয়-ব্যয়ের হিসাবও প্রদান করা হয়ে থাকে।

সরকারি বাজেটের দুটি অংশ থাকে – রাজস্ব বাজেট (Revenue budget) এবং মূলধনী বাজেট (Capital budget)। উভয় বাজেটের আরও দুটি দিক আছে – প্রাপ্তি ও ব্যয়। রাজস্ব প্রাপ্তির মধ্যে আছে কর রাজস্ব ও অনাকর রাজস্ব। কর রাজস্বের অন্তর্গত বিষয়গুলি হচ্ছে – আয় কর, সম্পদ কর, নিগম কর, কাস্টম ডিউটি, বিক্রি কর ইত্যাদি। অনাকর রাজস্বের উৎসগুলি হচ্ছে মাশুল, লাইসেন্স, ফাইন, পেনাল্টি, দান-অনুদান, রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত আয় ইত্যাদি। রাজস্ব ব্যয়ের মধ্যে আছে রাজস্ব আদায়ের জন্য সরকারের সর্বপ্রকারের ব্যয়, কর্মচারীদের বেতন, প্রতিরক্ষা সেবা, প্রদেয় সুদ, ভর্তুকি ইত্যাদি। 

মূলধন প্রাপ্তি থেকে যদিও সরকারের আয় বৃদ্ধি হয় কিন্তু এটি সরকারের দায় বা বোঝা বহুলাংশে বৃদ্ধি করে। সরকারি ঋণ উদ্ধার, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, IMF, World বা বিদেশি রাষ্ট্র থেকে সংগৃহীত ঋণ, অংশপত্র বিক্রির প্রাপ্তি – এগুলির দ্বারা মূলধন প্রাপ্তি বা মূলধন সংগ্রহ করা হয়। মূলধনী ব্যয় হল সেই ব্যয় যার দ্বারা নতুন মূলধন সম্পত্তির সৃষ্টি হয় বা সরকারের দায় হ্রাস পায়। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ঋণের যোগান রাস্তা ও সেতু নির্মাণ, রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানে প্রদেয় ঋণ ইত্যাদি হল মূলধনী ব্যয়।

প্রশ্ন ৩। সরকারি ঋণ কী বোঝ ? ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সরকারি ঋণের বোঝা প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গেলে আভ্যন্তরীণ ঋণের বোঝা এবং বাহ্যিক ঋণের বোঝার ওপর আলোকপাত করে অগ্রসর হতে হবে। 

একটি প্রচলিত কথা আছে, আভ্যন্তরীণ ঋণের কোনো বোঝা নেই। এই কথাটি সম্পুর্ণ সত্য নয়। যদি উৎপাদনশীল কাজের জন্য সরকার ঋণ গ্রহণ করে, তাহলে কোনো বোঝা সৃষ্টি হবে না। কারণ, উৎপাদন হতে অর্জিত আয়ের মাধ্যমেই ঋণ পরিশোধ করা যাবে। কিন্তু যদি অনুৎপাদনশীল কাজে ঋণের অর্থ ব্যবহার করা হয়, তাহলে ঋণ পরিশোধের কোনো উপায় থাকবে না। এই অবস্থায় আভ্যন্তরীণ ঋণের সার্বিক বোঝা থেকেই যাবে। যদিও অনেক সময় বলা হয়ে থাকে যে আভ্যন্তরীণ ঋণ পরিশোধের জন্য সংগৃহীত অর্থ দেশের জনগণের নিকট থেকে আদায় করা হয়, আবার এই অর্থ জনগণের কাছে ফেরত যায়। কিন্তু সমীকরণটি এত সহজ নয়। বিত্তহীনদের কাছ থেকে পরোক্ষ করের মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থ যদি বিত্তবানের কাছে ফিরে যায়, তাহলে সমাজে আর্থিক বৈষম্য সৃষ্টি হবে। কাজেই আভ্যন্তরীণ ঋণের বোঝা বা দায়ভার কিছুটা পরিমাণ হলেও সমাজের ওপর পড়বে। বাহ্যিক ঋণের আর্থিক বোঝা এবং প্রকৃত বোঝা দুটিই সৃষ্টি হবে। যদি রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা অর্জন করে বিদেশি ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে দেশের বহু প্রয়োজনীয় সম্পদ বিদেশে চলে যাবে। এর ফলে দেশের কল্যাণ বিঘ্নিত হবে।

অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ বাহ্যিক ঋণের পাপচক্রের মধ্যে প্রবিষ্ট হয়েছে। ঋণের মাত্রা বেশি হওয়ার ফলে কিছু দেশ ঋণ ফাঁদের দোর-গোড়ায় পৌঁছেছে। কাজেই বাহ্যিক ঋণের ক্ষেত্রে আর্থিক বোঝার চেয়ে ঝুঁকি বোঝা নিঃসন্দেহে বেশি।

প্রশ্ন ৪। সরকারি ব্যয়ের যে কোন চারটি শ্রেণিবিভাগ করো।

উত্তরঃ সরকারি ব্যয়ের শ্রেণিবিভাগ –

(১) পরিকল্পনা ব্যয় ও পরিকল্পনা বহির্ভূত ব্যয়।

(২) রাজস্ব ব্যয় ও মূলধনী ব্যয়।

(৩) উন্নয়নমূলক ব্যয় ও অনা-উন্নয়নমূলক ব্যয়।

(৪) ভোগ ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যয়।

প্রশ্ন ৫। একটি অর্থনীতির উপভোগ ফলন C = 300+ 0.75Y বিনিয়োগের পরিমাণ (I) = 250 এবং সরকারি ব্যয় (G) হল 200

(ক) ভারসাম্য আয় স্তর নির্ণয় করো।

(খ) যদি সরকারি ব্যয় 100 বৃদ্ধি পায়, ভারসাম্য আয়ের আয়ের ওপর এর প্রভাব কীরূপ ?

উত্তরঃ 

(খ) যদি সরকারি ব্যয় 100 বৃদ্ধি পায়, তাহলে আয়ের ভারসাম্য স্তরে পরিবর্তন হবে-

প্রশ্ন ৬। ধরা হল, একটি অর্থনীতির উপভোগ ফলন C = 150 + 0.6Y, বিনিয়োগের পরিমাণ হল 150 এবং সরকারি ব্যয় 120, শুদ্ধ কর হল 100।

(ক) ভারসাম্য আয়ের স্তর নির্ণয় করো।

(খ) সরকারি ব্যয় গুণক এবং কর গুণকের মান নির্ণয় করো।

(গ) যদি সরকারি ব্যয় 100 বৃদ্ধি হয়, ভারসাম্য আয়ের পরিবর্তন নির্ণয় করো।

উত্তরঃ (ক) দেওয়া আছে,

ভোগ ফলন C = 150 + 0.6Y

বিনিয়োগ I = 150

সরকারি ব্যয় G = 120

ভারসাম্য আয়,

(গ) যদি সরকারি ব্যয় 100 বৃদ্ধি হয় , তাহলে ভারসাম্য আয়ের ওপর পরিবর্তন হবে

নতুন ভারসাম্য আয়ের স্তর Y = 1150 + 250 = 1400

প্রশ্ন ৭। ধরা হল, উপভোগ ফলন C = 80 + 0.9Y  সরকারি ব্যয় (G) = 120 এবং মোট ব্যয় রাজস্ব ফলন T = 0.10Y

(ক) ভারসাম্য আয় নির্ণয় করো।

(খ) ভারসাম্য আয়ে কর রাজস্বের পরিমাণ কত ? 

(গ) সরকার কি সুষম বাজেট প্রস্তুত করেছে ?

উত্তরঃ 

(খ) ভারসাম্য আয় কর রাজস্ব = 200

(গ) যেহেতু সরকারি ব্যয় 120, কর রাজস্ব 200

সুতরাং, সরকারি বাজেটটি উদ্বৃত্ত বাজেট।

প্রশ্ন ৮। ধরা হল, কোন অর্থনীতিতে উপভোগ ফলন C = 100+ 0.80Y, বিনিয়োগ I = 50, সরকারি ব্যয় G = 100 এবং মোট কর রাজস্ব (TR) = 150

(ক) ভারসাম্য আয় স্তর এবং আয় গুণক নির্ণয় করো।

(খ) যদি সরকারি ব্যয় 50 বৃদ্ধি হয়, তাহলে ভারসাম্য আয়ের ওপর এর প্রভাব কী?

(গ) যদি সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির জন্য সর্বসাকুল্যে অতিরিক্ত কর 50 দিতে হয়, তাহলে ভারসাম্য আয় কীভাবে পরিবর্তন হবে?

উত্তরঃ দেওয়া আছে,

ভোগফলন C = 100 + 0.80 Y

বিনিয়োগ I = 50

সরকারি ব্যয় G = 100

মোট কর T = 150

(ক) ভারসাম্য আয়ের স্তর,

(খ) যদি সরকারি ব্যয় 50 বৃদ্ধি হয়, তাহলে ভারসাম্য আয়ের পরিবর্তন হবে 

(গ) যদি Lumpsum tax অর্থাৎ সর্বসাকুল্যে কর 50 অতিরিক্ত দিতে হয় সরকারি ব্যয় বৃদ্ধির জন্য, তাহলে আয়ের স্তর হবে –

= 50 + 250

= 300

প্রশ্ন ৯। রাজস্ব ঘাটতি, রাজকোষীয় ঘাটতি/ফিসক্যাল ঘাটতি এবং প্রাথমিক ঘাটতির ধারণাসমূহ সরকারি বাজেট প্রসঙ্গে বর্ণনা করো।

উত্তরঃ রাজস্ব ঘাটতি: যখন একটি অর্থনীতিতে রাজস্ব প্রাপ্তির তুলনায় রাজস্ব ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে যায়, তখন তাকে রাজস্ব ঘাটতি বলা হয়।

রাজস্ব ঘাটতির ফলে মূলধনী ঋণগ্রস্ততা বৃদ্ধি পায়।

রাজস্ব ঘাটতি = রাজস্ব ব্যয় – রাজস্ব প্রাপ্তি

রাজকোষীয় ঘাটতি বা বিত্তীয় ঘাটতি: যদি সর্বমোট সরকারি ব্যয় অর্থাৎ রাজস্ব ব্যয় ও মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ সর্বমোট সরকারি আয় থেকে অধিক হয়, তখন বিত্তীয় ঘাটতি বা রাজকোষীয় ঘাটতি দেখা দেয়। এই ঘাটতির পরিমাণ নির্ধারণ করবার সময় সরকারি ঋণের পরিশোধ সরকারি আয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

Fiscal deficit (বিত্তীয় ঘাটতি)

= মোট বাজেট ব্যয় – রাজস্ব প্রাপ্তি – মূলধন প্রাপ্তি (ঋণ বাদ দিয়ে)

প্রাথমিক ঘাটতি: ফিসক্যাল ঘাটতি হতে সুদ দেওয়ার অংশ বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে, তাকেই বলা হয় প্রাথমিক ঘাটতি (Primary deficit)

প্রাথমিক ঘাটতি = রাজকোষীয় ঘাটতি – প্রদেয় সুদের পরিমাণ।

প্রশ্ন ১০। অর্থনীতির ওপর সরকারি ঋণের প্রভাব কী ? আধুনিক সরকারি বিত্ত ব্যবস্থায় সরকারি ঋণকে করের পরিপূরকরূপে গণ্য করা হয় – ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সরকারি ঋণ অর্থনীতিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।

(১) ‘সরকারি ঋণ বিনিয়োগের ফলে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান ও আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি হয়। এটি অর্থনীতিতে প্রগতির সহায়ক হয়।

(২) সরকারি ঋণের অর্থ ব্যয় করার ফলে দেশে আয় বণ্টনের পরিবর্তন আসে। ফলে দেশের মোট ভোগ ব্যয় ও বিনিয়োগ ব্যয় প্রভাবিত হয়।

(৩) সরকারি ঋণ মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক অতিরিক্ত নোট ছাপিয়ে সেই অর্থ যোগান দেয়।

(৪) বৈদেশিক ঋণ অধিক হলে সরকার বিদেশের কাছে দেউলিয়া হয়ে পড়বে।

সরকারি ঋণকে করের পরিপূরকরূপে গণ্য করা হয়। কারণ, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনুন্নত দেশে রাজস্ব সংগ্রহের ক্ষমতা সীমিত থাকার জন্য ঋণ ধন বিনিয়োগে উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারা যায়। অনুন্নত দেশ কারিগরি প্রযুক্তি, শ্রম দক্ষতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পিছপড়া সেজন্য ঋণের মাধ্যমে এই উপাদানসমূহ সংগ্রহ করে অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করা যায়। অবস্ফীতির সময় ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পেয়ে উৎপাদন হ্রাস পায় এবং শ্রমিক বেকার হয়ে যায়। সেই সময় সরকারি ঋণের দ্বারা বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে পারা যায়। মুদ্রাস্ফীতির সময় সরকারি ঋণের সাহায্যে অতিরিক্ত ক্রয় ক্ষমতা সরকারি কোষাগারে হস্তান্তর করে। মুদ্রাস্ফীতির গতি রোধ করা যায়।

পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নাবলির উত্তর

প্রশ্ন ১। সার্বজনীন পণ্যের যোগানের ব্যবস্থা সরকারকেই কেন করতে হবে ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ যে সকল দ্রব্য সামগ্রী বাজারের মাধ্যমে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়, যেমন প্রতিরক্ষা, রাস্তাঘাট, জলসেচ ব্যবস্থা, নদীডাম, সৌরশক্তি আহরণ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এই সকল সামগ্রী সরকারকে যোগানের ব্যবস্থা করতে হয়। সাধারণত যে সকল দ্রব্য ও সেবার বিনিয়োগকাল দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল, ব্যক্তিগত ফার্ম ঝুঁকি নিতে পারে না, কল্যাণকামী

রাষ্ট্র জনগণের কল্যাণে সেই সকল দ্রব্য উৎপাদন করে সর্বস্তরের জনগণকে ভোগ করার ব্যবস্থা করে। দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং নাগরিকের জীবনের জন্য অপরিহার্য বস্তুগুলি লাভ নির্বিচারে সরকারকেই যোগানের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রশ্ন ২। রাজস্ব ব্যয় ও মূলধনী ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য দর্শাও।

উত্তরঃ রাজস্ব ব্যয় ও মুলধনী ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপ –

রাজস্ব ব্যয়মূলধনী ব্যয়
(১) এটি সম্পদও সৃষ্টি করে না, দায়ও হ্রাস করে না।(১) এটি হয়ত সম্পদ সৃষ্টি করবে নতুবা দায় হ্রাস করবে।
(২)সরকারি দৈনন্দিন কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এই ব্যয়ের সৃষ্টি হয়।(২) সম্পদ সৃষ্টি ও ঋণ দানের মাধ্যমে এটি সৃষ্টি হয়।
(৩) এটি চলিত ব্যয়।(৩) এটি চলিত নয়।
(৪) বেতন, পেনসন, সুদ ইত্যাদি এর উদাহরণ।(৪) সম্পদ আহরণ, সুদ পরিশোধ ইত্যাদি হল এর উদাহরণ।

প্রশ্ন ৩। রাজকোষ ঘাটতি সরকারের ঋণ গ্রহণ করার সুযোগ করে দেয় ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ রাজকোষ ঘাটতি হল একটি নির্দেশক, যারা দ্বারা সুদ এবং ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে সরকারের ভবিষ্যত দায়বদ্ধতার মোট পরিমাণ কতটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে তা বোধগম্য হয়। যখন সরকার ঋণ গ্রহণ করে, তখন সেই ঋণ সুদ সহকারে পরিশোধ করতে থাকে। সুদ এবং ঋণ পরিশোধের জন্য আবার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে নতুবা ভবিষ্যত দিনগুলোতে জনগণের ওপর অধিক কর ধার্য হতে পারে। ফিসক্যাল ঘাটতির গুরুত্ব হল এটা সরকারের মোট ঋণের প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করে। এটি আর প্রতিপন্ন করে যে বাজেট ঘাটতি পূরণ করতে ঋণ গ্রহণের ওপর সরকার নির্ভরশীল। সুতরাং ফিসক্যাল ঘাটতি একটি অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকারক এবং এটি অর্থনৈতিক‌ অস্থিরতা সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ৪। রাজস্ব ঘাটতি ও রাজকোষ ঘাটতির সম্পর্ক বিচার করো।

উত্তরঃ রাজকোষ ঘাটতি সরকারের ঋণ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ দেয়। ফিসক্যাল অর্থাৎ রাজকোষ ঘাটতি বৃদ্ধি হলে GDP র বৃহৎ অংশ বর্তমান ঋণ মেটানোর জন্য নির্গত করা হয়। ফলে রাজস্ব ব্যয়ের জন্য সম্পদ হ্রাস পায় এবং উন্নয়ন স্তব্ধ হয়। সরকার অবিরাম ঋণ নিতে বাধ্য হবে যা ফিসক্যাল ঘাটতি আরও বৃদ্ধি করবে। ফিসক্যাল ঘাটতি থেকে রাজস্ব ঘাটতির আনুপাতিক পরিমাণ অধিক হলে সরকারের ব্যয়ের গুণগত অধঃপতন বোঝায়। যার ফলে মূলধন সংগ্রহ নিম্নমুখী হয়। সুতরাং রাজস্ব ঘাটতি ও ফিসক্যাল ঘাটতি একটি অন্যটির দিকে ধাবিত করে।

প্রশ্ন ৫। সরকারি ঘাটতি ও সরকারি ঋণের সম্পর্ক ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ সরকারি ঘাটতি ও সরকারি ঋণ ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। সরকারি ঘাটতি হল প্রবাহ যা সরকারি ঋণের স্টকে যোগ হয়। যদি সরকার অবিরত ঋণ নিতে থাকে, তাহলে ঋণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং সরকারকে অধিক সুদ প্রদান করতে হবে। এই সুদ প্রদান ঋণ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

প্রশ্ন ৬। সরকারি ঋণ কি বোঝার সৃষ্টি করে ? ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ হ্যাঁ, নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে সরকারি ঋণ বোঝার সৃষ্টি করে।

(১) ঋণ পরিশোধের জন্য সরকার যদি নতুন কর আরোপ করে বা প্রচলিত করের হার বর্ধিত করে।

(২) যদি যুদ্ধ বা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সরকার ঋণ নেয়।

(৩) যদি সরকার ঋণ পরিশোধের উদ্দেশ্যে নতুন মুদ্রা সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ৭। রাজকোষ ঘাটতি কি মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে ?

উত্তরঃ হ্যাঁ, রাজকোষে ঘাটতি মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে। সরকারি ব্যয় আয়ের তুলনায় অধিক হলে অর্থের যোগান বৃদ্ধি পায়। যে হারে অর্থের যোগান বৃদ্ধি পায়, সেই হারে দ্রব্যাদির যোগান বৃদ্ধি না হওয়ায় ফিসক্যাল ঘাটতি মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করে।

প্রশ্ন ৮। ঘাটতি কমানোর বিষয়ে আলোচনা করো।

উত্তরঃ ঘাটতি কমানোর ব্যবস্থাসমূহ নিচে উল্লেখ করা হল –

(১) কর বৃদ্ধি করতে হবে।

(২) সরকারি ব্যয় হ্রাস করতে হবে।

(৩) সরকারি খণ্ডের উদ্যোগের অংশপত্র বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।

(৪) বাহ্যিক এবং আভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করতে হবে।

(৫) নতুন কাগজী মুদ্রা ছাপিয়ে আংশিক ফিসক্যাল ঘাটতি পূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

(৬) রাজস্ব ব্যয় কর্তন এবং কর ব্যবস্থা কঠোরভাবে প্রয়োগ করে ব্যাপক কর রাজস্ব সংগ্রহ করতে হবে।

প্রশ্ন ৯। যদি কোনো অর্থব্যবস্থায় বিনিয়োগ 200, সরকারের ক্রয় 150, নেট কর (থোক কর – হস্তান্তর) 100 এবং উপভোগ দেখানো হচ্ছে C = 100 + 0.75Y দ্বারা।

(ক) সমস্থিতি আয়ের পরিমাণ কী?

(খ) সরকারের ব্যয়গুণক ও করগুণকের মান নির্ণয় করো।

(গ) যদি সরকারের 200 ব্যয় বৃদ্ধি পায়, সমস্থিতি আয়ের পরিবর্তন নির্ণয় করো।

উত্তরঃ দেওয়া আছে,

ভোগ ফলন C = 100+ 0.75Y

বিনিয়োগ I = 200

সরকারের ক্রয় G = 150

মোট কর T= 100

C = 100

c = 0.75°

(ক) ভারসাম্য আয়ের স্তর,

∴ নতুন আয়ের ভারসাম্য স্তর = 1900 + 800 = 2700

প্রশ্ন ১০। ধরে নেওয়া যাক, C = 70 + 0.70YD, I = 90, G = 100, T= 0.10Y

(ক) সমস্থিতি আয় নির্ণয় করো।

(খ) সমস্থিতি আয়ে কর আয় কতো ?

(গ) এ অবস্থায় কি সরকার সুষম বাজেট প্রস্তুত করবে ?

উত্তরঃ (ক) দেওয়া আছে,

(গ) না, সরকার সুষম বাজেট প্রস্তুত করবে না, ঘাটতি বাজেট প্রস্তুত করবে (G >T)।

প্রশ্ন ১১। সরকারি ব্যয় গুণকের থেকে কর গুণক অপেক্ষক নিরঙ্কুশ মূল্যে কেন কম হয় ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ কর গুণক ঋণাত্মক – এটি বুঝায় কর বৃদ্ধি পেলে উৎপাদন হ্রাস পায়। সরকারি ব্যয় গুণকের থেকে করগুণক নিরঙ্কুশ মূল্যে কম হয়। কারণ, উচ্চ কর জনগণের ব্যক্তিগত ব্যয়যোগ্য আয় হ্রাস করে।

একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হল।

মনে করি, প্রান্তিক ভোগ প্রবণতা MPC = 0.90

ওপরের উদাহরণ থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, সরকারি ব্যয় গুণক কর গুণক থেকে বেশি।

প্রশ্ন ১২। ধরো, প্রান্তিক ভোগ প্রবণতা 0.75 এবং সেখানে আনুপাতিক করের হার শতকরা 20। নিচের অবস্থানগুলিতে সমস্থিতি আয়ের পরিবর্তন নির্ণয় করো।

(ক) সরকারি ব্যয় 20 বৃদ্ধি পেয়েছে।

(খ) হস্তান্তর 20 কমে গিয়েছে।

উত্তরঃ দেওয়া আছে,

C = 0.75

∆T = 20

∆G = 20

প্রশ্ন ১৩। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরোক্ষ করের চারটি সুবিধা বর্ণনা করো।

উত্তরঃ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরোক্ষ করের চারটি সুবিধা নিম্নে বর্ণিত হল –

(১) উন্নয়নশীল দেশগুলোর মোট জাতীয় আয় খুব কম। কম সংখ্যক বিত্তবানদের ওপর প্রত্যক্ষ কর আরোপ করে উন্নয়নের জন্য পর্যাপ্ত সম্পদ সংগ্রহ করা যায় না। তাই পরোক্ষ করের মাধ্যমে সম্পদ সংগ্রহ করার সুবিধা থাকায় পরোক্ষ করের ওপরই গুরুত্ব আরোপ করা হয়ে থাকে।

(২) উন্নয়নশীল দেশগুলোতে আয় কম বলে সঞ্চয়ও কম। তাছাড়া এই সমস্ত দেশে আয়ের তুলনায় ভোগ ব্যয়ের হার বেশি। সঞ্চয় কম হওয়ার জন্য মূলধন গঠনের হারও খুবই কম। পরোক্ষ কর আরোপ করে জনগণের ভোগ ব্যয় হ্রাস না করলে মূলধন গঠনের হার বৃদ্ধি করা যায় না। তাই এক্ষেত্রে পরোক্ষ করের সুবিধা দেখা যায়।

(৩) উন্নয়নশীল দেশে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার জন্য আয় বাড়লে বিলাসদ্রব্য ভোগের আকাঙ্খা বাড়ে। ফলে বাড়তি আয় সঞ্চিত না হয়ে উন্নত দেশগুলির অনুকরণে বিলাস দ্রব্যে ব্যয় হয়। এক্ষেত্রে পরোক্ষ করের সুবিধা আছে। কেননা, বিলাসদ্রব্যের ওপর পরোক্ষ কর ধার্য করে নব্য বিত্তবানদের ভোগ ব্যয় হ্রাস করা যায়।

(৪) ধনী ব্যক্তিদের ওপর বেশিমাত্রায় প্রত্যক্ষ কর আরোপিত হলে দেশে মূলধন ঘটনের হার কমবে। পরোক্ষ কর আপাময় জনসাধারণের কাছ থেকে সংগ্রহ করা যায়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top