Class 12 Bengali Chapter 9 ফুলের বিবাহ – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের

Class 12 Bengali Chapter 9 ফুলের বিবাহ – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের | Class 12 Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Assam Board HS 2nd Year Bengali Chapter 9 ফুলের বিবাহ Notes and select needs one.

Class 12 Bengali Chapter 9 ফুলের বিবাহ

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Assam Board Class 12 Bengali Chapter 9 ফুলের বিবাহ Solutions for All Subject, You can practice these here.

ফুলের বিবাহ – বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের

Chapter: 9

বাংলা (MIL)

গোট – ২ নির্বাচিত গদ্যাংশ

১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ 

( ক ) ফুলের বিবাহ শীর্ষক পাঠটি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত ? 

উত্তরঃ ফুলের বিবাহ শীর্ষক পাঠটি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘ কমলাকান্তের দপ্তর ’ গ্রন্থের অন্তর্গত । 

( খ ) কোন ফুলের সঙ্গে কোন ফুলের বিবাহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ? 

উত্তরঃ মল্লিকা ফুলের সঙ্গে গোলাপ ফুলের বিবাহের কথা উল্লেখ করা হয়েছে । 

( গ ) ফুলের বিবাহে ঘটকালি কে করেছিল ? 

উত্তরঃ ফুলের বিবাহে ভ্রমর ঘটকালি করেছিল । 

( ঘ ) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও পাত্র গোলাবলালের পদবি কী ছিল ? 

উত্তরঃ পাত্র গোলাবলালের পদবি ছিল গন্ধ্যোপাধ্যায় । 

( ঙ ) ফুলের বিবাহ কে নিতবর হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ফুলেৰ বিবাহে সেঁউতি ফুল নিতবর হয়েছিল । 

( চ ) মল্লিকা কন্যার পিতা কে ? 

উত্তরঃ মল্লিকা কন্যার পিতা ক্ষুদ্র মল্লিকা বৃক্ষ । 

( ছ ) মল্লিকা গোলাবের বিবাহে পুরোহিত কে ? 

উত্তরঃ মল্লিকা গোলাবের বিবাহে পুরোহিত নসীবাবুর নয় বছরের মেয়ে কুসুমলতা । 

( জ ) বাসর ঘরে রসিকতা করতে গিয়ে কে শুকিয়ে উঠেছে ? 

উত্তরঃ বাসর ঘরে রসিকতা করতে গিয়ে টগর শুকিয়ে উঠেছে । 

( ঝ ) বাসরঘরে কে নীল শাড়ী ছড়িয়ে জমকিয়ে বসেছে ? 

উত্তরঃ ঝুমকা ফুল নীলশাড়ী ছড়িয়ে জমকিয়ে বসেছে । 

২। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ 

( ক ) ফুলের বিবাহ কোন মাসের কত তারিখে সম্পন্ন হয়েছিল ? 

উত্তরঃ ফুলের বিবাহ বৈশাখ মাসের এক তারিখ অর্থাৎ ১ লা বৈশাখে সম্পন্ন হয়েছিল । 

( খ ) ঘটক যখন গোলাপের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় তখন গোলাপ কী করছিল ? 

উত্তরঃ ঘটক যখন গোলাপের বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায় তখন গোলাপ তাসের সঙ্গে নেচে হেসে হেসে লাফিয়ে লাফিয়ে খেলা করছিল । 

( গ ) বিয়েতে মৌমাছিরা কীসের বায়না নিয়েছিল এবং কেন সে কাজ করতে পারেনি ? 

উত্তরঃ বিয়েতে মৌমাছিরা সানাইয়ের বায়না নিয়েছিল । গোলাবের বিয়েতে মৌমাছিরা সানাইয়ের বায়না নিয়েও সঙ্গে যেতে পারেনি কারণ, গোলাব রাতকানা ছিল । 

( ঘ ) বরযাত্রায় কার বাহক হওয়ার কথা ছিল এবং শেষ পর্যন্ত কে বাহকের ভূমিকা পালন করেন ? 

উত্তরঃ গোলাপের বিবাহ যাত্রায় বাতাস বাহক হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু কাজের মধ্যে কোথায় লুকিয়েছিল দেখা যায়নি । 

শেষ পর্যন্ত কন্যা পক্ষের কূল রক্ষা করার জন্য স্বয়ং কমলাকান্ত সেই ভার নিয়েছেন এবং বাহক হয়ে সবাইকে মল্লিকাপুরে গিয়েছেন । 

( ঙ ) নসীবাবুর কন্যার নাম কী ? তার বয়স কত বলে উল্লেখিত হয়েছে ? 

উত্তরঃ নসীবাবুর কন্যার নাম কুসুমলতা । কুসুমতলার বয়স ন বছর । 

( চ ) বরযাত্রায় পিঁপড়েদের ভূমিকা কেমন ছিল ? 

উত্তরঃ বরযাত্রায় পিঁপড়েরা মোসায়েব হয়ে এসেছিল তাদের গুণের সঙ্গে সম্বন্ধ নাই কিন্তু তাদের দাঁতের বড় জ্বালা । কমলাকান্ত উল্লেখ করেছেন যেকোনো বিবাহে এরূপ জ্বালাময় মোসায়েব থাকে , যারা হুল ফুটিয়ে ঝগড়ার সৃষ্টি করে ।

৩। রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তরঃ 

( ক ) গোলাপের সঙ্গে বিয়ে স্থির হওয়ার আগে মল্লিকার পিতা কোন কোন পাত্রের কথা বিবেচনা করেছিলেন এবং কেন সেগুলি কার্যকর হয়নি আলোচনা করো । 

উত্তরঃ গোলাপের সঙ্গে বিয়ে স্থির হওয়ার আগে মল্লিকার পিতা প্রথমে উদ্যানের রাজ স্থলপদ্মের সঙ্গে বিয়ের সম্বন্ধের কথা চিন্তা করেছিল । কিন্তু পাত্র পক্ষের ঘর উঁচু বলে তারা অগ্রসর হয়নি । জবা ও গন্ধরাজ বিবাহে সম্মত ছিল কিন্তু পাত্রীপক্ষের দিক থেকে বিবাহ স্থির করা হয়নি।কারণ জবার মাথা গরম আর গন্ধরাজের দেমাক বেশি তাই । 

( খ ) ঘটক হিসাবে ভ্রমরের ভূমিকা বিস্তারিত ভাবে লেখো । 

উত্তরঃ গোলাপের বিয়ের ঘটকের ভূমিকা নিয়েছে ভ্রমর । মল্লিকা কানে এবং বর গোলাবলালের বিয়ে স্থির হয়েছে । আফিমের নেশার গুনে কমলাকান্ত দিব্যকর্ণ ও দিব্যদৃষ্টি লাভ করে উদ্যানের ফুলও বৃক্ষের কথাবার্তা শুনতে পাচ্ছেন ও দৃশ্যগুলো দেখতে পেয়েছেন । মল্লিকা বৃক্ষ তার কন্যা মল্লিকাফুলের জন্য পাত্র সন্ধান করছিলেন তখন ভ্রমরের আবির্ভাব হয় ঘটকরাজ হিসাবে । ভ্রমর উদ্যানের সব ফুলকেই ভালো করে চেনে ও জানে । 

মনুষ্য সমাজে যেমন ঘটক কন্যাপক্ষ ও বরপক্ষ উভয়কেই সম্পর্কে ভালো করে চেনেন ঠিক ফুলেদের বিয়ের ঘটক হিসাবেও ভ্রমরের মধ্যে কমলাকান্ত সেই সব গুনই আরোপ করেছেন । মনুষ্য সমাজে ঘটক যেই রীতি পালন করে যেমন কন্যা দেখতে কেমন , রূপে গুনে , কন্যার পিতা বিবাহে কত খরচ করতে পারবে তা জানতে চাওয়া , ঘটকালি হিসাবে অগ্রিম কিছু দাবী করা । আবার পাত্র পক্ষের সঙ্গে ঠাট্টা বা রসিকতা এ সমস্ত কিছুই ঘটকরাজ ভ্রমরের উপর পরিলক্ষিত হতে দেখা গেছে । সেদিক থেকে ঘটক হিসাবে ভ্রমরের উপস্থিত প্রবন্ধটিতে সার্থক হয়েছে । 

( গ ) ফুলের বিবাহ বরযাত্রার বিবরণ দাও । 

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্র ফুলের বিবাহের বরযাত্রার বিবরণ খুব সুন্দর ভাবে দিয়েছেন । মানুষের সমাজে যেমন বরযাত্রার আয়োজন করা হয় ঠিক তেমনি ফুলের বিবাহের বরযাত্রার আয়োজনও করেছেন । দেখা যায় ফুলের বিবাহ বরযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে । গোধূলি লগ্নে বিয়ে । বর হচ্ছে গোলাব , যে যাত্রার জন্য প্রস্তুত হয়েছে । উচ্চিঙ্গড়া নহবৎ বাজাচ্ছিল , মৌমাছি সানাই বাজাবার বায়না নিয়েছিল । কিন্তু মৌমাছি রাতে দেখতে পায় না বলে আর বরযাত্রায় যেতে পারল না । জোনাকির হাতে আলোর ঝাড় । সন্মুখে কোকিল গান গেয়ে গেয়ে চলেছে । রাজকুমার স্থলপদ্ম অসুস্থতার জন্য বরযাত্রায় অংশ নিতে পারল না । জবাগোষ্ঠীর সকলেই বরযাত্রী । করবীর দলও উঁচু ডালে চড়ে এসেচে আর সেঁউতি সেজেছে নিতবর । গরদের জোড় পরে চাঁপাও হাজির , চাঁপার গায়ের থেকে উগ্র ব্র্যাণ্ডির গন্ধ ছুটছিল । আর গন্ধরাজের তো কথাই নেই সকলদিক সুগন্ধে মাতিয়ে দল নিয়ে হাজির । অশোক তো নেশায় লাল , সঙ্গে আবার মোসায়েব পিঁপড়ে । এছাড়াও কুরুবক , কুটজ এরাও বরযাত্রায় যাবার জন্য প্রস্তুত হয়েছে । 

( ঘ ) ফুলের বিবাহে বাসরঘরের যে ছবি চিত্রিত হয়েছে তা বিস্তৃত করো। 

উত্তরঃ বঙ্কিমচন্দ্রের নিখুঁত বর্ণনার ভঙ্গিতে ফুলের বিবাহ প্রবেন্ধর বিবাহ – পর্বের প্রস্তুতি থেকে শুরু করে বাসর ঘরের বর্ণনা পর্যন্ত সমস্ত কিছু মনুষ্য সমাজের উপযোগী করে তুলেছেন ফুলের বিবাহের বাসর ঘরের বর্ণনাটি অনবদ্য । 

ফুলের বিবাহ কন্যা মল্লিকার সঙ্গে বর গোলাবের বিবাহ সম্পন্ন হয় । বিবাহের পর বরকে বাসর ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় । অনকে রসময়ী মধুময়ী সুন্দরীরা বরকে ঘিরে বসেছে । প্রাচীন ঠাকুরানী দিদি টগর সাদা প্রাণে বাঁধে রসিকতা করে করে শুকিয়ে গেছে । হাসি আর ধরে না রঙ্গনো রাঙ্গামুখে । আর বান্ধবী যুই কানের কাছে গিয়ে শুয়ে পড়েছে । আর বর রঙ্গ করে তামশা করে রজনীগন্ধকে বলেছে তারকারাক্ষসী । বকুল এমনিতে বালিকা , তার যত গুন আছে তত রূপ নেই তাই একে কোনে চুপচাপ বসে আছে আর বড়লোকের বৌয়ের মতো ঝুমকা নীল শাড়িতে জমক ছড়িয়েছে । 

( ঙ ) ফুলের বিবাহ বর্ণিত আখ্যানের আড়ালে বাঙালির বিয়ের যে বাস্তবতা লুকিয়ে আছে তা পরিস্ফুট করো । 

উত্তরঃ ফুলের বিবাহ প্রবন্ধটিকে রূপক কল্পনা জাতীয় রচনা বলা যেতে পারে । রচনাটিতে বঙ্গিমচন্দ্র যদিও খেয়ালী মনের পরিচয় দিয়েছেন কিন্তু এর মধ্য দিয়ে আসলে বাঙালি বিবাহের একটি বাস্তব চিত্রই ফুটে উঠেছে । 

রচনাটির শুরুতেই দেখা যায় , বাঙালির বশ্যাভারগ্রস্ত পিতা যেমন কন্যার বিয়ের জন্য পাত্র সন্ধানে তৎপর থাকেন ঠিক তেমনি মল্লিকাবৃদ্ধ মল্লিকা ফুলের জন্য পাত্র সন্ধান করেছে । বাঙালি সমাজে যেমন পাত্র এবং কন্যা দুই পক্ষই সামাজিক ও আর্থিক সামঞ্জস্য বজায় রেখে সম্বন্ধ ঠিক করে এখানেও তেমনি দেখা যায় । স্থলপদ্মের ঘর উঁচু বলে সে মল্লিকা কন্যাকে বিয়ে করতে অগ্রসর হয় না । জবা খুব রাগী আর গন্ধরাজ ডেমাক তাই ওদের সঙ্গেও সম্বন্ধ স্থির হয় না । এ সমস্ত কিছুই বাঙালি সমাজের বিবাহের ক্ষেত্রেও বিচার্য । এরপর ঘটকরাজ ভ্রমরের কথা বলা যেতে পারে । বাঙালি বিবাহের ক্ষেত্রে যেমন ঘটক ঘটকালি করে পাত্র পাত্রীর সম্বন্ধ ঠিক করেন , কন্যার রূপ – গুনের খবর রাখেন, কন্যার পিতা বিবাহে কত খরচ করতে পারবে জানতে চান , এমনকি ঘটকালির অগ্রিম কিছু দাবী করেন । 

ফুলের বিবাহে ও ভ্রমররাজ ঘটককে দেখা যায় এরকমই চিত্র বহন করতে । গোধুলি লগ্নে বিয়ে , এমনকী বরযাত্রীর আয়োজনের ছবিও বাঙালি বিবাহের অনুরূপ । বরযাত্রীর বিভিন্ন বিবরণের মধ্যে সেঁউতি ফুলকে নিতবর হতে দেখা যায় । এমনকী মোসাহেবী পিপড়ের বর্ণনাও রয়েছে । এবং সবশেষে বাসর ঘরের বর্ণনাটি নিখুত । বাঙালি বিবাহের বাসরঘরে যেমন বরকে নিয়ে কন্যাপক্ষের সুন্দরীদের হাসি – তামাশা চলে এখানেও গোলাব বরকে নিয়ে বিভিন্ন সুন্দরী ফুলদের হাসি তামাশা রয়েছে । তাই বলা যায় ফুলের বিবাহ রচনাটির আড়ালে বাঙালি বিবাহের এক চিত্র ফুটে উঠেছে । 

( চ ) ফুলের বিবাহ অবলম্বনে বঙ্কিমচন্দ্রের সমাজ মনস্কতার পরিচয় দাও । 

উত্তরঃ ‘ ফুলের বিবাহ ’ প্রবন্ধটি কল্পনাবিলাস বা fantasy ধর্মের পরিচায়ক হলেও খাঁটি দপ্তরী রচনা । রচনাটির বিষয়মূল্য রূপকের আড়ালে রচনাটি যদিও নসীরবাবুর ফুলবাগানের , কিন্তু আসলে আমাদের সমাজের । ভবিষ্যৎ বরকন্যাদিগের শিক্ষার্থে লিখিতা রাখিতেছি ’ ফুলের বাগানে বসে যিনি স্বপ্নাবিষ্ট হয়ে মল্লিকা ও গোলাপের বিবাহ দেখছেন , তাঁর মুখে এই কথা হালকা হাসির খোরাক ছাড়া আর কিছু হতে পারে না । কিন্তু আসলে ভবিষ্যৎ বরকন্যাদের এখানে বেশ কিছু শিক্ষনীয় আছে বলে কমলাকান্ত বলতে চেয়েছেন । 

একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যায় বাংলাদেশ কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার বিড়ম্বনা, বরপক্ষের কুলের ডেমাক বা মেজাজ । যোগাযোগের অন্য উপায় না থাকায় সমাজে ঘটকের আধিপত্য । দেনাপাওনা ও ঘটকালির চটক ইত্যাদি নিয়ে গোটা সমাজের চিত্রটিও এখানে সংকেতের মধ্যে ব্যক্ত হয়েছে । কুলাচার্যের ভূমিকা বিশেষ লক্ষনীয় । তিনি কুলীনের মর্যদা রক্ষায় বিশেষ তৎপর । যেখানে যত কুলীন আছে , তা তাঁর ‘ কুলজী ’ দপ্তরে সংগৃহিত হয় । বংশ পরিচয়ে কোন মেল করে সন্তান ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞাতব্য । কুলীনের ঘরে কলঙ্ক যেন লেগেই থাকে , কিন্তু কুলীনের সাত খুন মাপ । 

তাই তো এখানে কুলাচার্য মহাশয় নির্বাচিত পাত্র গোলাবের মহিমা কীর্তনে ঝুলন , গোলাববংশ বড় কুলীন , এরা ‘ ফুলে ’ মেল সাক্ষাৎ বাঞ্জামালীর সন্তান , যদি বল এ ফুলে কাঁচা আছে , তবে বলা যায় কোন কুলে বা কোন ফুলে নেই । আমাদের সমাজে বিবাহ মানেই আড়ম্বর বাজি বাজনার ধুম বরযাত্রী সমারোহ , তাদের মধ্যে উগ্রবিলাসী কেউ ব্রাণ্ডি টেনেও আসতে পারে । নেশার লাল হওয়া যুবকের দল , মোসায়েবের দল , আর বিশেষ করে এমন একটি দল যাদের কাজই হ’ল বরযাত্রী রূপে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তোয়াজ তদ্বির পাওয়া সত্ত্বেও কথায় কথায় ঝগড়া বাধিয়ে অশান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করা । ফুলের বিবাহেও বরযাত্রীরূপী এক পাল পিপড়া ঐ শ্রেণির প্রতিনিধি । 

সমাজ মনস্কতার আরেকটি দিক হল সর্বস্বান্ত হয়ে কন্যার পিতা বরপক্ষের সমস্ত দাবী দাওয়া মেটাতে রাজী হলেও প্রায়ই কোনো গূঢ় কারণে কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাকে প্রমাদ গুনতে হয় যথাকালে বর এসে হাজির না হওয়ায় । কেননা নির্দিষ্ট লগ্নে কন্যার বিবাহ না হলে আমাদের সমাজে কন্যার কুল নষ্ট হয় , আর এ দিকটিকেও রচনাটিতে কমলাকান্ত সংকেত করেছেন । মল্লিকাদের কূল যাওয়ার উপক্রমসূচক চিত্র । কমলাকান্ত বর বরযাত্রী সকলকে তুলে নিয়ে মল্লিকাপুরে গেলেন । 

রচনাটির মধ্য দিয়ে লেখক শুধু বরপক্ষ কন্যাপক্ষ ঘটক বরযাত্রীই নয় , আরও অনেক খুঁটিনাটি জীবন কথা , আচার আচরণের কথা ব্যক্ত করেছেন । 

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ

( ক ) অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। নসীবাবুর বাগানে কমলাকান্ত কবে কার বিবাহ দেখেছিলেন ? 

উত্তরঃ কমলাকান্ত নসীবাবুর ফুলবাগানে ১ লা বৈশাখ মল্লিকা ফুলের বিবাহ দেখেছিলেন ।

২। মল্লিকা কলিকা – কন্যা কখন বিবাহযোগ্যা হয়ে উঠেছে ? 

উত্তরঃ মল্লিকার বৈকাল শৈশব প্রায় শেষ হয়ে এসেচে কলিকা কন্যা বিবাহযোগ্যা হয়ে উঠেছে ।

৩। মল্লিকা কন্যার পিতা কে ? তার অবস্থা কেমন ? 

উত্তরঃ মল্লিকা কন্যার পিতা ক্ষুদ্র মল্লিকা বৃক্ষ । মল্লিকা বৃক্ষের অবস্থা বড়লোক নয় । তার ওপর আবার অনেকগুলি কন্যাদায়গ্রস্ত । 

৪। ‘ মেয়ে আছে ’ – কে কাকে এই প্রশ্ন করেছে এবং উত্তরে কি বলা হয়েছে ? 

উত্তরঃ ঘটকরাজ ভ্রমর মল্লিকাবৃক্ষকে এই প্রশ্ন করেছে । উত্তরে মল্লিকাবৃক্ষ পত্র সঞ্চালন করে জানিয়েছে মেয়ে আছে বলে । 

৫। ঘটকরাজ ভ্রমর মল্লিকা কনের বিবাহের সম্বন্ধ এনেছে কোন পাত্রের সঙ্গে ? 

উত্তরঃ ঘটকরাজ ভ্রমর মল্লিকা কনের বিবাহের জন্য গোলাবলাল গঙ্গোপাধ্যায় এর সম্বন্ধ এনেছে । 

৬। কুলাচার্য কে ? গোলাবের বংশ কেমন ? তাদের ‘ মেল ’ কি ? 

উত্তরঃ কুলাচার্য ঘটকরাজ ভ্রমর । গোলাবের বংশ বড়ো কুলীন । তারা‘ ফুলে মেলে ‘ । 

৭। গোলাবের বিবাহযাত্রায় কারা গন্ধ বিলিয়ে দেশ মাত করেছে ? কারা এসেছে নেশায় লাল হয়ে ? 

উত্তরঃ গোলাবের বিবাহ যাত্রায় গন্ধরাজের দল গন্ধ বিলিয়ে দেশ মাত করেছে । আর অশোক এসেছে নেশায় লাল হয়ে ।  

৮। মল্লিকা – কন্যা এবং গোলাবলালের বিবাহে স্ত্রী – আচার পালন করেছে কারা ? 

উত্তরঃ মল্লিকা কন্যা এবং গোলাবলাল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিবাহে কন্যা গৃহে স্ত্রী আচার পালন করেছে যুথি , মালতী , বকুল , রজনীগন্ধা প্রভৃতি । 

৯। মল্লিকা – গোলাবের বিবাহে পুরোহিত কে ? 

উত্তরঃ মল্লিকা – গোলাবের বিবাহে পুরোহিত নসীবাবুর ‘ ন ’ বছরের মেয়ে কুসুমলতা । 

১০। বাসরঘরে কে রসিকতা করতে গিয়ে শুকিয়ে গেছে ? 

উত্তরঃ বাসরঘরে সাদা বনে বাঁধা রসিকতা করতে গিয়ে টগর শুকিয়ে গেছে । 

১১। বকুল বাসরঘরে এক কোনে চুপ করে বসে থেকেছে কেন ? 

উত্তরঃ বকুল বাসরঘরে এক কোনে চুপ করে বসে থেকেছে কারণ বকুলের যত গুন , তত রূপ নেই ।

১২। বাসরঘরে কে নীল শাড়ি ছড়িয়ে জমকিয়ে বসেছে ? 

উত্তরঃ ঝুমকা ফুল নীলশাড়ি ছড়িয়ে বসেছে । 

১৩। অন্যান্য ফুলের সঙ্গে তুলনায় গোলাপের গৌরব সমধিক কেন ? 

উত্তরঃ কারণ গোলাব সাক্ষাৎ বাঞ্ছামালীর সন্তান । তার স্বহস্তরোপিত । যদি বলা হয় গোলাবে কাঁটা আছে তাহলে বলতে হয় কোন ফুলে কাঁটা নেই । 

১৪। কমলাকান্ত যখন দেখলেন যে ফুলের বিবাহের কিছু নেই ? 

উত্তরঃ কমলাকান্ত যখন নেশায় আচ্ছন্ন তখন নসীবাবুর ‘ ন ’ বছরের মেয়ে কুসমলতা কমলাকান্তকে বলেছে – ‘ ও কি ঢুলে পড়লে যে , রাত হয়েছে , বাড়ি চলুন । ‘ তার ডাকেই কমলাকান্তের চমক ভাঙে আর নেশা ভাঙলে দেখেছেন ফুলের বিবাহের কিছুই নেই । 

১৫। ফুলের বিবাহযাত্রায় বরপক্ষের বিপদ ঘটেছে কেন ? কনে পক্ষের ও কুল যায় কেন ? কে তাদের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন ? 

উত্তরঃ গোলাবলালের বিবাহযাত্রায় বাহকের বায়না নিয়েছিল বাতাস । কিন্তু ঠিক কাজের সময়ে বাতাসকে আর খুঁজে পায়নি কেউ । সহযাত্রী কমলাকান্ত দেখছেন সবাই থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছে বিপদের সম্মুখীন হয়ে এদিকে লগ্ন পার হয়ে গেলে মল্লিকাদেরও কুলভঙ্গ হবে । মল্লিকাকন্যা হবে লগ্নভ্রষ্টা । তাই তখন কমলাকান্ত স্বয়ং বাহকের দায়িত্ব বহন করে সকলকে মল্লিকাপুরে নিয়ে গেছেন । 

১৬। ‘ ফুলের বিবাহ ’ বঙ্কিমচন্দ্রের কোন গ্রন্থের অন্তর্গত ? কোন মাসের, কত তারিখ এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছিল ? এই বিয়ের ঘটক কে ছিলেন ? 

উত্তরঃ ‘ ফুলের বিবাহ ’ বঙ্কিমচন্দ্রের ‘ কমলাকান্তের দপ্তর ’ নামক গ্রন্থের অন্তর্গত । ফুলের বিবাহ বৈশাখ মাসের এক তারিখে ১ লা বৈশাখ সম্পন্ন হয়েছিল । এই বিয়ের ঘটক ছিলেন ভ্রমররাজ । 

শব্দার্থ ও টীকা : 

কলিকাকন্যা :- কুঁড়ি অবস্থার কন্যা ।

উদ্যান :- বাগান ।

অবগুণ্ঠনমতী :- ঘোমটা দেওয়া নারী ।

ঘটকালী :- যে ব্যক্তি মধ্যবর্তী হয়ে বিয়ের যোগ্য পাত্র – পাত্রীর মধ্যে সম্বন্ধ স্থাপন করেন তাঁকে ঘটক বলে । আর এই সম্বন্ধ স্থাপন প্রক্রিয়ার নাম ঘটকালী ।

কুলীন :- সদবংশীয় । বল্লাল সেন প্রবর্তিত নবগুনবিশিষ্ট কুলমর্যাদা সম্পন্ন ব্রাহ্মণ।

উচ্চিঙ্গড়া :- উইচিংড়ে এক ধরনের পোকা ।

রাতকানা :- যিনি রাতে দেখতে পান না ।

খদ্যোত :- জোনাকি ।

নিতবর :- বিয়ের সময় যে বালক সহচর হিসাবে বরের পাশে থাকে । ওই বালককে কোলবরও বলা হয়ে থাকে ।

মোসায়ের :- চাটুকার ।

কুরুবক :- মিন্টি ফুল বা ঝাঁটি ফুলের গাছ ।

কুটজ :- গিরিমল্লিকা ফুলের গাছ ।

পরিমল :- সুগন্ধ ।

অনিত্য :- চিরস্থায়ী নয় এমন ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top