Class 12 Bengali Chapter 1 অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি

Class 12 Bengali Chapter 1 অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি – গোবিন্দ দাস | Class 12 Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Assam Board HS 2nd Year Bengali Chapter 1 অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি Notes and select needs one.

Class 12 Bengali Chapter 1 অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Assam Board Class 12 Bengali Chapter 1 অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি Solutions for All Subject, You can practice these here.

অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি – গোবিন্দ দাস

Chapter 1

বাংলা (MIL)

গোট : ১ নির্বাচিত পদ্যাংশ

১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ

( ক ) গোবিন্দদাসের আদি পদবি কী ছিল ? 

উত্তবঃ গোবিন্দদাসের আদি পদবি সেন ছিল । 

( খ ) গোবিন্দদাসকে কী উপাধি দেওয়া হয়েছিল ? 

উত্তবঃ গোবিন্দদাসকে ‘ দ্বিতীয় বিদ্যাপতি ’ উপাধি দেওয়া হয়েছিল । 

( গ ) অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি পদটি কোন গ্রন্থের অন্তর্গত ? 

উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি ‘ বৈষ্ণব পদাবলি ’ গ্রন্থের অন্তর্গত । 

( ঘ ) গোবিন্দদাসের দীক্ষাগুরুর নাম কী ? 

উত্তরঃ গোবিন্দদাসের দীক্ষাগুরুর নাম শ্রীনিবাস আচার্য । 

২। সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ 

( ক ) গোবিন্দদাসের পিতা ও পিতামহের নাম লেখো । 

উত্তবঃ গোবিন্দদাসের পিতার নাম চিরঞ্জীব সেন এবং পিতামহের নাম দামোদর সেন । 

( খ ) “ গাগরি বারি ঢারি করু পীছল চলতহি অঙ্গুলি চাপি । ” – চরণটি সরল বাংলায় বুঝিয়ে দাও । 

উত্তরঃ প্রঙ্গনে জল ঢেলে পীছল বারে পা টিপে টিপে হেটেছেন । 

( গ ) গুরুজনের এবং পরিজনের কথা শুনে শ্রীরাধা কেমন ব্যবহার করেছিলেন লেখো । 

উত্তরঃ গুরুজনের কথায় রাধা বধির হয়ে সম ব্যবহার করেছেন অর্থাৎ কোনো কথাই তিনি ভালো করে শুনতেন না , এক কথার অন্য উত্তর দিতেন , আর পরিজনদের বচনে মুগ্ধ হয়ে হেসে উঠতেন ।

৩। দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ

( ক ) “ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি ’ পদটির সারমর্ম তৈরি করো । 

উত্তরঃ মধ্যযুগের বৈষ্ণব পদাবলি এমন একটি পর্যায় যা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ ও ঋদ্ধ করেছে । ধর্মসাধনা ও ঈশ্বর সাধনা হল বাংলা সাহিত্যের আদি ভিত্তি । চর্যাপদ থেকেই এই ধারা লক্ষ্য করা যায় । তবে ধর্মকেন্দ্রিক সাহিত্যের মধ্যে বৈষ্ণব পদাবলীর স্থান সকলের আগে । বৈষ্ণব কবিরা সকলেই প্রায় ছিলেন এক একজন মহাজন । 

বৈষ্ণব কবিরা মত ও পথের প্রচারক হলেও তাঁদের মূল ধর্মই ছিল ‘ সবার উপরে মানুষ সত্য , তাহার উপরে নাই । ’ বৈষ্ণব কাব্যে ভগবানের জন্য ভক্ত যেমন ব্যাকুল তেমনিই ভগবানও ভক্তের জন্য ব্যাকুল । মধ্যযুগের অন্যান্য সাহিত্য ধারা অপেক্ষা বৈষ্ণব পদাবলী অধিক বৈচিত্র্যময় হলে ওঠার কারণ – 

( ১ ) মানবিকতা । এবং 

( ২ ) প্রেমধর্ম । 

আলোচ্য পদটি অভিসার পর্যায়ের গোবিন্দদাস রচিত প্রথম পদ । রূপগোস্বামী ‘ উজ্জ্বলনীলমনি ‘ গ্রন্থে জানিয়েছেন , যে নায়িকা কান্তকে অভিসার করান অথবা নিজে অভিসার করেন তাকে অভিসারিকা বলে । তাঁর মতে অভিসার দুই প্রকার জ্যোৎস্না ও তামসী । অভিসারের লক্ষণ প্রসঙ্গে রূপ গোস্বামী জানিয়েছেন অভিসারিকা শুক্লপক্ষে অভিসারের উপযোগী বেশ এবং কৃষ্ণপক্ষে কৃষ্ণবর্ণের বেশ ধারণ করে থাকেন । নায়িকার কিঙ্কিনী , নুপূর প্রভৃতি থেকে কোনো শব্দ ওঠে না । অবগুণ্ঠনবর্তী হয়ে তিনি একজন মাত্র সখীর সঙ্গে অভিসার করেন – 

‘ যাভিসারয়তে কান্তং স্বয়ং যাভিসরত্যপি । 

সা জ্যোত্নী তামসী মানযোগযেষাভিসারিকা ।। 

অভিসারের এই সংজ্ঞা অনুযায়ী নায়কের সঙ্গে অভিসারে যাওয়ার যে দুরকমে নায়িকার কথা বলা হয়েছে এ পদে সেই নায়িকা তামসীর নায়িকা অর্থাৎ অন্ধকারে যে নায়িকা নায়কের সঙ্গে মিলিত হতে চান সেই নায়িকার পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়ার যে অসাধারণ বর্ণনা পদকর্তা দিয়েছেন তা নিঃসন্দেহ পাঠক মনকে স্পর্শ করে । 

বৈষ্ণব দর্শন অনুযায়ী সচ্চিদানন্দ ঘন বিগ্রহ শ্রীকৃষ্ণের হ্লাদিনী শক্তির অন্তর্গত শ্রীরাধা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে অভিসারে যাওয়ার আগে যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন এমনভাবে যাতে সমস্ত বাধা , বিপত্তি কাটিয়ে তিনি তাঁর দায়িত্বের আহ্বানে সাড়া দিতে পারেন তাই শ্রীরাধা উঠোনে কাঁটা পুঁতে পদ্মের মতো তাঁর কোমল পা দিয়ে সেই কাঁটার উপরে চলার অভ্যাস করছেন । সঙ্গে যাতে নুপুরের শব্দ না হয় সেইজন্যে তিনি ছেঁড়া কাপড় দিয়ে নুপুরকে বেঁধেছেন । যদি বৃষ্টি ভেজা পেছল রাস্তায় চলতে হয় তার জন্য তিনি কলসী দিয়ে উঠনো জল ঢেলে ঢেলে উঠোনকে পেছল করে আঙুল চেপে চেপে শ্রীহরির সঙ্গে অভিসারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন । 

যত দুর্যোগপূর্ণ রাতই হোক না কেন শ্রীরাধাকে শ্রীকৃষ্ণের কাছে পৌছাতেই হবে তাই তিনি তাঁর ঘরেই রাত্রি জেগে সবরকমের প্রস্তুতি নিচ্ছেন । যদি অন্ধকারে পথ চলতে হয় সেই প্রস্তুতির জন্যে তিনি হাত দিয়ে দুচোখ বন্ধ করে পথ চলার অভ্যাস করছেন এমনকি পথ চলতে যদি বিষাক্ত সাপের মুখোমুখি হতে হয় তাহলে কীভাবে সাপকে বশ করবেন তা তিনি সাপের ওঝার কাছে নিজের হাতের কঙ্কন বন্ধক রেখে শিখেছেন । শ্রীহরির সঙ্গে অভিসারে যাওয়ার চিন্তায় শ্রীরাধা এতই মত্ত যে তার গুরুজনদের কথা তিনি কানে শুনতে পাচ্ছেন না । এমনকি , গুরুজনেরা এক কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তরে অন্য কথা বলছেন । আর পরিজনেদের কথায় মুগ্ধের মতো মুচকি হেসে চলেছেন । এই যে রাধার শ্রীহরির সঙ্গে মিলনের মত্ততা এসমস্ত কিছুর সাক্ষী পদকর্তা গোবিন্দদাস স্বয়ং । 

বস্তুতঃ গোবিন্দদাস অভিসার পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ পদকর্তা । অধ্যাপক শংকরী প্রসাদ বসুর মতে , “ অভিসারের পদে গোবিন্দদাস রাজাধিরাজ । তাঁহার একাধিপত্যে সন্দেহ জাগাবার মতো দ্বিতীয় বৈষ্ণব কবি নেই । ” আসলে গোবিন্দদাস অভিসারের পদ পাঠক মনকে সহজেই জয় করতে পেরেছে । আলোচ্য পদে গোবিন্দ দাস রাধার যে আবেগধর্মী চিত্র হলে দেখেছেন তা নিঃসন্দেহে পাঠকের হৃদয়স্পর্শী হয়ে উঠেছেন । 

( খ ) “ কণ্টক গাড়ি ….. লাগি । ” 

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি গোবিন্দদাস কবিরাজের ‘ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি ’ পদ থেকে নেওয়া হয়েছে । 

এখানে পদকর্তা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে অভিসারে যাওয়ার জন্য মত্ত শ্রীরাধার প্রস্তুতির কথা বর্ণনা করেছেন । 

বৈষ্ণব দর্শন মতে সচ্চিদানন্দ ঘন বিগ্রহ শ্রীকৃষ্ণের আনন্দজনিত অংশের হহ্লাদিনী শক্তির অন্তর্গত শ্রীরাধা । অর্থাৎ একই আত্মার দুই রূপ । কারণ উপনিষদেও বলা হয়েছে ‘ একাকী নৈব রমতে । ’ অর্থাৎ একা লীলা করা সম্ভব নয় । তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁরই নিজস্ব হলাদিনী শক্তি থেকে শ্রীরাধার সৃষ্টি করেন । সেই শ্রীরাধা যাবেন শ্রী হরির সঙ্গে অভিসারে । তাই তিনি ঘরে বসে প্রস্তুতি নিচ্ছেন যেন সব রকমের বাধা বিপত্তি জয় করে তিনি অভিসারে যাবার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন । 

রাধার মনে প্রশ্ন উদয় হয়েছে , যদি বর্ষাকাল হয় তাহলে রাস্তাঘাট কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল হবে । তাই কর্দমাক্ত রাস্তায় হাঁটার অভ্যাস করার জন্য তিনি উঠানে জল ঢেলে পিচ্ছিল করে । পা টিপে টিপে হাটার অভ্যাস করেছেন । অভিসারে যাওয়ার সময় রাধার পায়ের নূপুরের আওয়াজ কেউ না শুনতে পায় তার জন্য তিনি পায়ে কাপড় বেঁধে নিয়েছেন । তারপর পথে চলতে গিয়ে পায়ে কাঁটা ফুটতে পারে , সেজন্য রাধা পথের উপর কাঁটা পুতে তার উপর দিয়ে হাটার অভ্যাস করেছেন । এইভাবে দুর্গম পথের বাধা – বিপত্তি উত্তরণের জন্য রাধা পূর্ব থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষ্ণ অভিসারে যাওয়ার জন্য ।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তবঃ

১। অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি পদটির পদকর্তা কে ? 

উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি পদটির পদকর্তা হলেন গোবিন্দদাস কবিরাজ । 

২। বৈষ্ণব পদাবলি কোন যুগের কাব্য ? 

উত্তরঃ বৈষ্ণব পদাবলি মধ্যযুগের কাব্য । 

৩। অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি কোন ভাষায় রচিত ? 

উত্তরঃ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি পদটি ব্রজবুলি ভাষায় রচিত । 

৪। ব্রজবুলি কি ভাষা ? 

উত্তরঃ ব্রজবুলি মৈথিল এবং বাংলা ভাষার মিশ্রণে তৈরি মিশ্র ভাষা । 

৫। গোবিন্দদাসের জন্ম কোথায় এবং কখন ? 

উত্তরঃ গোবিন্দদাসের জন্ম মুর্শিদাবাদের তেলিয়াবুধুরিতে চৈতন্যোত্তর যুগে । 

৬। গোবিন্দদাসের পিতার নাম কী ? 

উত্তরঃ গোবিন্দদাসের পিতার নাম হল শ্রী চিরঞ্জীব সেন । 

৭। গোবিন্দদাসের মাতামহের নাম কী ? 

উত্তরঃ গোবিন্দদাসের মাতামহের নাম পণ্ডিত দামোদর সেন । 

৮। গোবিন্দদাসের পিতৃদত্ত উপাধি কী ? 

উত্তরঃ গোবিন্দদাসের পিতৃদত্ত উপাধি ‘ সেন ’ । 

৯। গোবিন্দদাস প্রথম কোন ধর্মে দীক্ষিত ছিলেন ? 

উত্তরঃ গোবিন্দদাস প্রথম শাক্ত ধর্মে দীক্ষিত ছিলেন । 

১০। কাব্য দীক্ষায় কবি পরে বৈষ্ণব হন কেন ? 

উত্তরঃ শ্রী নিবাস আচার্যেরর দীক্ষায় বৈষ্ণব হন । 

১১। গোবিন্দদাস কোন কোন পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি ? 

উত্তরঃ গোবিন্দদাস গৌরচন্দ্রিকা , গৌরাঙ্গ বিষয়ক পদ ও অভিসার পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ কবি । 

১২। গোবিন্দদাসকে কী নামে অভিহিত করা হয়েছিল ? 

উত্তরঃ গোবিন্দদাসকে ‘ দ্বিতীয় বিদ্যাপতি’নামে অভিহিত করা হয়েছিল। 

১৩। “ কনক গাড়ি ঝাঁপি ” – চরণটিকে সরল বাংলায় লিখ । 

উত্তরঃ মাটিতে কাঁটা গেঁথে পদ্মের মতো কমল পা তার উপরে রেখে নূপুরকে ছেঁড়া কাপড় দিয়ে বাঁধার কথা বলা হয়েছে । 

১৪। “ গাগরি বারি লাগি ” – চরণটি সরল বাংলায় লিখ । 

উত্তরঃ কলসি দিয়ে জাল ঢেলে উঠোনকে পেছল করে আঙুল চেপে চেপে শ্রীরাধার হরির সঙ্গে অভিসারে যাওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছেন । 

১৫। মধ্যযুগে মন্দির শব্দটি কোন অর্থে ব্যবহৃত হত ? 

উত্তরঃ মধ্যযুগে মন্দির শব্দটি বাসগৃহ অর্থে ব্যবহৃত হত । 

১৬। গোবিন্দদাস পরমাণ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ? 

উত্তরঃ মধ্যযুগের পদকর্তারা নিজেদের নাম দিয়ে কবিতা শেষ করতেন যাতে কবিতার পদটিতে অন্য কেউ তার নাম ব্যবহার করতে না পারে । এটাকে বলা হয় ভনিতা । দ্বিতীয়ত , শ্রীরাধা এবং শ্রীকৃষ্ণের লীলার সাক্ষীস্বরূপ সে যুগের পদকর্তারা নিজেদেরকে রাখতে তাঁদের সৌভাগ্য মনে করতেন ।

১৭। গুরুজনের এবং পরিজনের কথা শুনে শ্রীরাধা কেমন ব্যবহার করেছিলেন লেখো । 

উত্তরঃ গুরুজন এবং পরিজনের কথা শুনে শ্রীরাধা বধিরের মতো থাকতেন । তাঁরা একটা কথা বললে রাধার উত্তর হত অন্য কিছু । আর পরিজনের বচন শুনে রাধা মুগ্ধার মত বিরল হয়ে হাসতেন । 

১৮। সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো : 

( ক ) “ দুতর পন্থ . .পয়ানক আশে । ” 

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি গোবিন্দদাস কবিরাজের ‘ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি ’ পদ থেকে নেওয়া হয়েছে । 

এখানে পদকর্তা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে অভিসারে যাওয়ার জন্য মত্ত শ্রীরাধার প্রস্তুতির কথা বর্ণনা করেছেন । 

বৈষ্ণব দর্শন মতে সচ্চিদানন্দ ঘন বিগ্রহ শ্রীকৃষ্ণের আনন্দজনিত অংশের হলাদিনী শক্তির অন্তর্গত শ্রীরাধা । অর্থাৎ একই আত্মার দুই রূপ । কারণ উপনিষদেও বলা হয়েছে ‘ একাকী নৈব রমতে । ‘ অর্থাৎ একা লীলা করা সম্ভব নয় । তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁরই নিজশ্ব হলাদিনী শক্তি থেকে শ্রীরাধার সৃষ্টি করেন । সেই শ্রীরাধা যাবেন শ্রীহরির সঙ্গে অভিসারে তাই প্রিয়জনের কাছে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । পথে যদি কোনো বিপদে পরেন তাই পথের বাধা কাটিয়ে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর পূর্ব প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । অনেক দুর্গম পথ রাধাকে অতিক্রম করতে হবে বলে তিনি রাত্রে ঘুমাতে পারেননি । অন্ধকারে পথ চলতে হতে পারে ভেবে তিনি দুচোখে ঢেকে পথ হাটার অভ্যাস করেছেন । 

( খ ) “ কর – কঙ্কন পন ……. পাশে । ” 

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি গোবিন্দদাস কবিরাজের ‘ অভিসারের পূর্ব প্রস্তুতি ’ পদ থেকে নেওয়া হয়েছে । 

এখানে পদকর্তা শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে অভিসারে যাওয়ার জন্য মত্ত শ্রীরাধার প্রস্তুতির কথা বর্ণনা করেছেন । 

বৈষ্ণব দর্শন মতে সচ্চিদানন্দ ঘন বিগ্রহ শ্রীকৃষ্ণের আনন্দজনিত অংশের হলাদিনী শক্তির অন্তর্গত শ্রীরাধা । অর্থাৎ একই আত্মার দুই রূপ । কারণ উপনিষদেও বলা হয়েছে ‘ একাকী নৈব রমতে ’ । অর্থাৎ একা লীলা করা সম্ভব নয় । তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁরই নিজস্ব হলাদিনী শক্তি থেকে শ্রীরাধার সৃষ্টি করেন । সেই শ্রীরাধা যাবেন শ্রীহরির সঙ্গে অভিসারে । তাই প্রিয়তমের কাছে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । রাধা যে পথে কৃষ্ণের কাছে যাবেন বলে স্থির করেছেন সেই পথ অতি দুর্গম । পথে সাপের ভয় আছে , সর্প দ্বারা তিনি দংশিত হতে পারেন । যাতে তিনি তার অভিলাষী প্রিয়তমার দর্শন পাবেন না । তাই সাপের দংশন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তিনি ওঝার কাছ থেকে শিখে নিয়েছিলেন , হাতের কঙ্কন দিয়ে সাপের মুখ বন্ধ করার উপায় । 

শব্দার্থ : 

কণ্টক – কাটা।

মঞ্জীর – নূপুর।

চীর – ছেঁড়া কাপড় , ন্যাকড়া।

দুতর – দুস্তর , দুর্যোগপূর্ণ।

মন্দিরে – মধ্যযুগে মন্দির শব্দটি ‘ বাসগৃহ ’ অর্থে ব্যবহৃত হত।

কর-যুগ – দুই হাত দিয়ে। 

ভামিনী – নারী।

কঙ্কণ – হাতের বালা । অলংকার বিশেষ।

ফণিমুখ – বন্ধন – সাপকে বশ করার মন্ত্র।

ভুজগ-গুরু – সাপের ওঝা , সাপুড়ে।

বধির – যে কানে শোনে না।

মুগধী – মুগ্ধ , বিহ্বল।

পরমাণ – প্রমাণ , সাক্ষী।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top