Class 12 Advance Bengali Chapter 5 মেরুর ডাক Question Answer | AHSEC Class 12 Advanced Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Assam Board Class 12 Advance Bengali Chapter 5 মেরুর ডাক Notes and select needs one.
Class 12 Advance Bengali Chapter 5 মেরুর ডাক
Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 12 Advance Bengali Chapter 5 মেরুর ডাক Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 12 Advance Bengali Chapter 5 মেরুর ডাক Solutions for All Subjects, You can practice these here.
মেরুর ডাক
Chapter: 5
ADVANCE BENGALI
পদ্যাংশ
অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ‘মেরুর ডাক’ কবিতাটির রচয়িতা কে?
উত্তরঃ প্রমথনাথ বিশী।
পশ্ন ২। “দিগন্তেরি ধারটুকুতে নিতেজ রবি যায় দেখা,”- অংশটি কোন্ কবিতার অংশ?
উত্তরঃ ‘মেরুর ডাক’ কবিতার।
প্রশ্ন ৩। শূন্যস্থান পূর্ণ করো:
“______ বিশাল দাঁতে তুষার মাটি খায় খুঁড়ে
______পঙ্গুদলে বিজ্ঞভাবে রয় চেয়ে।”
উত্তরঃ সিন্ধুঘোটক, পেঙ্গুইনের।
প্রশ্ন ৪। ‘মেরুর ডাক’ কবিতায় কবির জীবিকা কী?
উত্তরঃ অধ্যাপনা।
প্রশ্ন ৫। প্রমথনাথ বিশীর রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তরঃ Wit বা মার্জিত বাক্ চাতুর্য।
প্রশ্ন ৬। বাংলা সমালোচনা সাহিত্যে প্রমথনাথ কী নামে পরিচিত?
উত্তরঃ জাহাজগুলি কবিকে শূন্য মাস্তুলে আশ্রয় নিতে ডাকছে।
প্রশ্ন ১০। কবির শরীরে কোথায় জলের ঝাপট লাগছে?
উত্তরঃ প্র. না. বি.
প্রশ্ন ৭। ‘মেরুর ডাক’ কবিতায় কবি প্রমথনাথ কোন মেরুর ডাক শুনেছেন?
উত্তরঃ উত্তরের তুষার ঢাকা মেরুর ডাক শুনেছেন।
প্রশ্ন ৮! ‘মেরুর ডাক’ কবিতায় কবি কীভাবে নৌকার পাল তুলতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ মরণ শাদা পাল তুলতে চেয়েছেন।
প্রশ্ন ৯। জাহাজগুলি কবিকে কোথায় ডাকছে?
উত্তরঃ কবির বুকের পাঁজড়ে জলের ঝাপট লাগছে।
প্রশ্ন ১১। পবন কবিকে কীভাবে হাঁক দেয়?
উত্তরঃ ঘোড়ার ডাকে মৃত্যুর নেশায় মত্ত হয়ে পবন কবিকে ভীষণ জোরে হাঁক দেয়।
প্রশ্ন ১২। মাণ্ডুল কী?
উত্তরঃ নৌকার পাইল দণ্ড।
প্রশ্ন ১৩। কবির প্রাণ কেন কাঁদছে?
উত্তরঃ চোখে যে দেশ দেখা হয়নি তা দেখার জন্যই কবির প্রাণ কাঁদছে।
প্রশ্ন ১৪। ‘‘আবার মোরে ডাক দিয়েছে তুষার-মেরু উত্তরে;”- এখানে ‘তুষার মেরু’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তরঃ ‘তুষার মেরু’ বলতে বরফে আবৃত উত্তর মেরুকে বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন ১৫। “সিন্ধুঘোটক বিশাল দাঁতে তুষার মাটি খায় খুঁড়ে” – সিন্ধুঘোটক কী?
উত্তরঃ সিন্ধুঘোটক হল মেরু অঞ্চলের প্রাণী বিশেষ।
প্রশ্ন ১৬। “ছাদের বাধা আল্গা হ’ল ডাকছে তাঁবু _____। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)
উত্তরঃ ইঙ্গিতে।
প্রশ্ন ১৭। “পেঙ্গুইনের পঙ্গুদলে বিজ্ঞ ভাবে রয় চেয়ে,” – পেঙ্গুইন কী?
উত্তরঃ পেঙ্গুইন হল মেরু অঞ্চলের পাখি।
প্রশ্ন ১৮। “তরীর কাছি তীরের কাছে চাচ্ছে এবার মুক্তি গো।” – কাছি শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ কাছি শব্দের অর্থ বড় রশি বা দড়ি।
প্রশ্ন ১৯। “স্থির চপলা মেরুপ্রভা জ্বালায় রঙের ফুলঝুরি”- ‘চপলা’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তরঃ চঞ্চল।
প্রশ্ন ২০। কবির কী ভালো লাগছে না?
উত্তরঃ শ্যামল ধরার কোমল বাহু।
প্রশ্ন ২১। মেরুতে সূর্য কেমন দেখায়?
উত্তরঃ মেরুর দিগন্তে সূর্যকে নিস্তেজ দেখায়।
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। “ফুরিয়ে এলো খাবার পুঁজি ছিন্ন আমার বস্ত্র গো,
মৃত্যু বুঝি মুচকে হাসে- না হয় মরণ তাই হবে।”
– উদ্ধৃতিটি কোন্ কবিতার অংশ? কী দেখে কবির মনে হয়েছে মৃত্যু আসন্ন?
অথবা,
কবিতাংশটির লেখক কে? মৃত্যু ‘মুচকে’ হাসে কেন?
উত্তরঃ উদ্ধৃতিটি ‘মেরুর ডাক’ কবিতার অংশ। কবিতাংশটির কবি প্রমথনাথ বিশী।
কবি কল্পনা করছেন তিনি তুষারাবৃত মেরুর অভিযাত্রী। মেরু অঞ্চলে অবস্থানকালে ভয়ঙ্কর বেগে হঠাৎ হাওয়া প্রবাহিত হতে লাগল। তাঁর সঙ্গে করে নিয়ে আসা খাবারের পুঁজি নিঃশেষ হয়ে আসছে। কিছুকাল বিশ্রাম নেওয়ার জন্য তিনি যে তাবু টানিয়ে ছিলেন তা যেন বাতাস উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এমনকী তাঁর পরিধান বস্তুও টুটে ফেটে যাচ্ছে। এইরূপ ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে কবির মনে হয় মৃত্যু আসন্ন। তাই যেন মৃত্যু মুচকে হাসে।
প্রশ্ন ২। ‘‘তরীর কাছি তীরের কাছে চাচ্ছে এবার মুক্তি গো।’’ – ‘কাছি’ শব্দের অর্থ কী? ‘কাছি’ কেন তরীর কাছে মুক্তি কামনা করছে?
উত্তরঃ ‘কাছি’ শব্দের অর্থ রশি। ‘কাছি’ উত্তর মেরুতে যাওয়ার জন্য তীরের কাছে মুক্তি কামনা করছে।
প্রশ্ন ৩। ‘‘আবার মোরে ডাক দিয়েছে তুষার-মেরু উত্তরে
সে রব শুনে বিপদ গুণে কেমন ক’রে রই ঘরে !”
– কবিতাটির নাম উল্লেখ করো। তুষার মেরু বলতে কবি কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তরঃ কবিতাটির নাম ‘মেরুর ডাক’।
তুষার মেরু বলতে পৃথিবীর উত্তর দিকে থাকা বরফে আবৃত মেরু অঞ্চলের কথা বলা হয়েছে। ভ্রমণ পিয়াসি তাই তিনি উত্তরের মেরু অঞ্চল দেখতে আগ্রহী।
প্রশ্ন ৪। মেরু অঞ্চলে পাওয়া যায় এমন দুটি প্রাণীর নাম লেখো।
উত্তরঃ সিন্ধুঘোটক ও পেঙ্গুইন।
প্রশ্ন ৫। ‘আবার মোরে ডাক দিয়েছে তুষার-মেরু উত্তরে।’ – কে, কাকে ডাক দিয়েছে?
উত্তরঃ বরফে আবৃত উত্তর মেরু কবি প্রমথনাথ বিশীকে ডাক দিয়েছে।
প্রশ্ন ৬। ‘মেরুর ডাক’ কবিতায় ‘বরফ’ শব্দটির কয়টি এবং কী কী সমার্থক শব্দ উল্লিখিত হয়েছে?
উত্তরঃ ‘বরফ’ শব্দটির তিনটি সমার্থক শব্দ। যথা – হিম, তুষার, জমাট জল উল্লিখিত হয়েছে।
প্রশ্ন ৭। ‘মেরুর ডাক’ কবিতায় বর্ণিত মেরুর জয় গাথা ব্যর্থ হবার কারণ কী?
উত্তরঃ মেরুর বুকে জমে রয়েছে বরফের পাহাড়, সেখানে প্রাণ বেঁচে থাকতে পারে না। এরকম বৈশিষ্ট্যের কারণেই মেরুর জয় গাথা সফল হয়নি।
প্রশ্ন ৮। ‘মেরুর ডাক’ কবিতায় মেরু প্রভা সম্পর্কে কবি কী বলেছেন?
উত্তরঃ মেরু প্রভা স্থির তা চঞ্চল তা যেন নানা রঙের ফুলঝুরি জ্বালিয়ে থাকে। তা দেখে মনে হয় এখানে দিন রাতে কেউ শব সাধনা করছে।
প্রশ্ন ৯। “রুদ্র নিদাঘ জ্বালায় যেথা তপের আগুন মন্তরে।”
– উক্তিটির অর্থ পরিস্ফুট করো।
উত্তরঃ এই পংক্তির দ্বারা কবি বোঝাতে চান যে, বিষুবরেখার মধ্যে অবস্থিত বাংলাদেশে সূর্য প্রচণ্ড তাপ নিয়ে অবস্থান করে। এখানে গ্রীষ্মকাল মানে আগুনের খেলা।
দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ‘‘তাই বলে কি রইব পড়ে বিষুবরেখার অন্তরে,
রুদ্র নিদাঘ জ্বালায় যেথা তপের আগুন মন্তরে?
ব্যর্থ হবে মেরুর সে গান ব্যর্থ হবে জয়গাথা
মৃত্যু যেথা হাজার রূপে জমাট জলে সন্তরে !”
– অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ মেরু অভিযাত্রী কবির কল্পনা তুষারাবৃত উত্তর মেরু তাঁকে ডাক দিয়েছে। কবি সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরের ছাদের নিচ থেকে বেরিয়ে পড়েছেন মেরুর দেশে যাত্রার উদ্দেশ্যে। তুষারাবৃত উত্তর মেরুতে কবি বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন তা জেনেও তিনি পরোয়া করেন না। যত ধরনের বাধা বিঘ্ন আসুক না কেন, তাই বলে কবি কিছুতেই বিষুব রেখার সীমানায় থেমে থাকতে চান না। তুষার প্রান্তরে গ্রীষ্মের প্রখরতা তপোদ্যত উদযাপনের আগুন জ্বালিয়েছে কোন্ মহামন্ত্রে! নানারকম ভীতি প্রদর্শন করে তুষারাবৃত মেরু যতই অভিযাত্রীদের দূরে রাখার প্রয়াস করে না কেন কবি মেরুর সেই গান জানেন। এসব দেখেও অভিযাত্রী কবি মেরু জয়ের অভিযানে এগিয়ে যেতে চান। অন্যান্যদের মেরুর জয়ের গাথাকে ব্যর্থ করে কবি তাঁর জয় পতাকা উড়িয়ে দিতে চান।
প্রশ্ন ২। ‘‘ছাদের বাঁধা আল্গা হ’ল ডাকছে তাঁবু ইঙ্গিতে”
– ‘ছাদের বাঁধা আলগা’ হবার মানে কী? তাঁবু বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ তুষার মেরুর অভিযাত্রী কবি উত্তর মেরু থেকে আহ্বান পেয়েছেন। তাই কবি নিজেকে ঘরের চার দেওয়ালে আবদ্ধ না রেখে অর্থাৎ ঘরের ছাদের নিচ থেকে বেরিয়ে এসে সুদূরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে চান। অভিযাত্রীরা বিভিন্ন অভিযানে যাওয়ার পর বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এক ধরনের কাপড়ের নির্মিত আবরণের মধ্যে বাস করেন তাকে তাঁবু বলা হয়।
প্রশ্ন ৩। ‘তরীর কাছি তীরের কাছে চাচ্ছে এবার মুক্তিগো,
প্রলয় শ্বাসে পাল ফেলেরে উঠছে তরীর হাল মেতে।’
– ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ ভ্রমণ পিপাসু, দুঃসাহসিক অভিযান প্রিয় কবি বাংলাদেশ থেকে পৃথিবীর উত্তর মেরুর তুষারময় পরিবেশে যেতে চেয়েছেন। মেরু অভিযান এবং মেরুতে অবস্থান মানেই বিপদ। এমনকী মৃত্যুর সম্ভাবনা। এসব জেনেও কবি বিষুবরেখা অর্থাৎ গ্রীষ্মপ্রধান বাংলায় থাকতে চান না। তুষারময় পরিবেশে কবি বাস করতে চান। কবি কল্পনায় দেখছেন সেখানকার এক নিস্তব্ধ পরিবেশে মনে হয় কেউ যেন শব সাধনা করছে দিন রাত ধরে। কবির সেই পরিবেশই একান্ত কাম্য। তাঁর মনরূপ নৌকার কাছি এবার তীরে বাঁধা থাকতে চাইছে না, সে তীরের কাছ থেকে মুক্তি চাইছে।
প্রশ্ন ৪। ‘‘দিগন্তেরি ধারটুকুতে নিতেজ রবি যায় দেখা,
হাজার তারার দ্বিগুণ আলো তুষার মেঝেয় হয় লেখা।”
– উদ্ধৃতিটি কোন কবিতার অন্তর্গত ? উদ্ধৃতাংশটির সরলার্থ বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ উদ্ধৃতিটি ‘মেরুর ডাক’ নামক কবিতার অন্তর্গত।
কবি অনেকবার মেরুর ডাক উপেক্ষা করেছেন। এইবার সেই ডাকে কল্পনায় কবি আবার মেরু অভিযান চালিয়েছেন। নানারকম সংকটের মধ্য দিয়ে কবি সেখানে মানসিকভাবে পৌঁছেছেন। শীতলতম মেরুতে মানুষ থাকতে পারেনা। কেবলমাত্র সিন্ধুঘোটক এবং পেঙ্গুইন পাখি কবি মানসচক্ষে লক্ষ্য করেছেন। তিনি আরও লক্ষ্য করেছেন যে দিগন্ত সূর্য নিস্তেজ। সেই সূর্যের হাজার হাজার সংখ্যক তারার আলো থেকে দ্বিগুণ পরিমাণ আলো মেরুর তুষার মেঝেতে প্রতিফলিত হয়। শীতলতম মেরুর পরিবেশে সূর্যও ম্লান ও নিস্তেজ রূপ ধারণ করে।
প্রশ্ন ৫। ‘‘আবার আমায় ডাক দিয়েছে তুষার-মেরু উত্তরে
চক্ষে যে দেশ হয়নি দেখা কাঁদছে পরাণ তার তরে” –
– অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ কবির মেরু অভিযানে যাওয়ার ইচ্ছা বহুদিনের। কবি কল্পনায় উত্তর মেরু তাকে আবার ডাক দিয়েছে। তাই নিসর্গ প্রেমী কবি তুষারময় প্রকৃতিকে স্বচক্ষে দেখতে সেখানে পাড়ি দিতে চান। মেরু যাত্রা এবং সেখানে অবস্থান বিপজ্জনক, এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। কবি গ্রীষ্মপ্রধান বাংলাদেশের দাব দাহে পীড়িত বলেই, মেরুর শীতলতম পরিবেশ কামনা করছেন। জমে থাকা বরফের পাহাড়ে সূর্য কেমন নিস্তেজ কিরণ দেয়, সিন্ধুঘোটক পেঙ্গুইন প্রভৃতি প্রাণী কীভাবে সেখানে জীবনধারণ করে এসব দেখার জন্য কবি চরম আকাঙ্ক্ষিত। উত্তর মেরু নিজ চোখে তিনি দেখেন নি, মানসচক্ষে দেখেছেন। নিজ চোখে দেখার জন্য কবির প্রাণ কাঁদছে।
প্রশ্ন ৬। কবি কল্পনায় তুষারাবৃত উত্তর মেরুর চিত্রটি কীরূপ ছিল?
উত্তরঃ নিসর্গ কবি প্রমথনাথ বিশী কল্পনায় তুষারাবৃত উত্তর মেরু দর্শন করেছেন। মেরু অঞ্চলের চারিদিকে ছড়িয়ে থাকা সবুজ আভা তুষারাবৃত। সেখানে থাকা সিন্ধুঘোটক প্রাণীটি দাঁত দিয়ে মাটি খুঁড়ে খায়। পেঙ্গুইনের ডানা থাকা সত্ত্বেও উড়তে পারে না। পেঙ্গুইন ডানা ঝাপটে দুই পায়ে ভর দিয়ে বিজ্ঞের মতো তাকায়। অন্যান্য পাখি থাকলেও তারা সংখ্যায় খুবই কম।
প্রশ্ন ৭। ‘‘জাহাজগুলো ডাকছে আমায় রিক্ত শাখার মাস্তুলে,
জলের ঝাপট লাগছে আমার নিদাঘ-দাগা পঞ্জরে
তাইতে কাঁদে পরাণ আমার, ঘাটের বাঁধন দেয় খুলে”
– কোন কবিতার অংশ? জাহাজগুলি কেন কবিকে আহ্বান জানায়? জলের ঝাপটা কোথায় লেগেছে?
উত্তরঃ ‘মেরুর ডাক’ কবিতার অংশ।
কবি কল্পনায় মৃত্যুর প্রতীক সাদা পাল তুলে যাত্রা শুরু করেন। অভিযানের জাহাজগুলো রিক্ত। সেখানে কোনো যাত্রী নেই। তাই তো জাহাজগুলো কবিকে আহ্বান জানায়।
বাংলাদেশে গ্রীষ্মের রৌদ্র-লাঞ্ছিত বুকের পাঁজরে জলের ঝাপটা লেগেছে।
প্রশ্ন ৮। “শ্যামল ধরার কোমল বাহু লাগছে না আর মোর ভালো,
মেরুর পানে ভাসবো এবার মরণ-সাদা পাল ভরে।”
– কবি মেরুর পানে ভাসতে চেয়েছেন কেন, বুঝিয়ে দাও।
অথবা,
সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো।
“শ্যামল ধরার কোমল বাহু লাগছে না আর মোর ভালো,
মেরুর পানে ভাসবো এবার মরণ-সাদা পাল ভরে।”
উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু প্রমথনাথ বিশী রচিত ‘মেরুর ডাক’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।
কবি বাংলাদেশের শ্যামল স্নিগ্ধ পরিবেশ থাকতে উত্তরমেরুর তুষারময় পরিবেশের প্রতি একান্ত আকাঙ্ক্ষী হয়ে ওঠেন। উত্তরের তুষার মেরু বার বার ডাক দিতে থাকে। সেই ডাকে অভিযাত্রী ভ্রমণ পিপাসু কবি অভিযানে অংশগ্রহণ করতে চান। তাঁর কাছে আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে নিস্তব্ধ, শীতলতম তুষারময় উত্তরমেরু। সেই পরিবেশে মৃত্যু অনিবার্য সে বিষয়ে সন্দেহ নেই, তা জেনেও কবি সেখানে যেতে বিশেষভাবে আগ্রহী। বাংলাদেশের সুস্নিগ্ধ, সুশ্যামল, সুকোমলতা কবির আর প্রার্থিত্ব নয়। বাংলাদেশের সবুজ গাছপালা মাঠ প্রান্তর তাঁর কাছে একঘেঁয়েমি মনে হয়। তাই তিনি আবহাওয়া বদলি করে শুভ্র তুষারময় উত্তর মেরুতে যেতে চান। এতে সাদা পতাকা তোলা হবে, যা মৃত্যুর প্রতীক। শত বাধা বিঘ্নেও কবি মেরু অভিযানে বদ্ধ পরিকর।
প্রশ্ন ৯। ‘তাই বলে কি রইব পড়ে বিষুবরেখার অন্তরে,
রুদ্র নিদাঘ জ্বালায় যেথা তপের আগুন মন্তরে?”
‘নিদাঘ’ শব্দের অর্থ কী? পংক্তি দুটির সারার্থ লেখো।
উত্তরঃ ‘নিদাঘ’ শব্দের অর্থ গ্রীষ্মকাল।
পংক্তি দুটির মাধ্যমে কবি বোঝাতে চেয়েছেন যে বিষুবরেখার মধ্যে অবস্থিত বাংলাদেশে সূর্য প্রচণ্ড তাপ নিয়ে অবস্থান করে। এখানে গ্রীষ্মকাল মানে আগুনের খেলা। যত ধরনের বাধা-বিপত্তিই আসুক না কেন, তাই বলে কবি কিছুতেই বিষুবরেখার সীমানায় থেমে থাকতে চান না। তুষার প্রান্তরে গ্রীষ্মের প্রখরতা তপোদ্যোত উদযাপনের আগুন জ্বালিয়েছে কোন্ মহামন্ত্রে। এসব দেখেও অভিযাত্রী কবি মেরু জয়ের অভিযানে এগিয়ে যেতে চান।
অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ‘মেরুর ডাক’ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।
উত্তরঃ সাহিত্যে নামকরণ এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই নামকরণ কোন বস্তুর বা. ব্যক্তির পরিচয়ের মাধ্যম হয়। সাহিত্যে শিল্পীরা গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা ইত্যাদির নামকরণ করে থাকেন। এই নামকরণ হয়ে থাকে প্রধান চরিত্রের নামানুসারে, কাহিনী বৃত্তের উপর নির্ভর করে। কবি প্রমথনাথ বিশী কবিতাটির নামকরণ বিষয়ের ওপর, ভিত্তি করে করেছেন। কবি বাস্তব জগতে উত্তর মেরু ভ্রমণ করেননি। তিনি কল্পনার মধ্যে সে কাজ করেন। কবি কল্পনা তুষারাবৃত উত্তরমেরু তাঁকে মেরু অভিযানে ডাকছে। কবি জানেন সেখানে নানা ধরনের বিপদ রয়েছে, প্রাণ নাশের আশঙ্কা আছে, তা সত্ত্বেও তার ডাক শুনে কীভাবে ঘরের চার দেওয়ালে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। কবি কল্পনায় দেখছেন হিমের বাতাসে অভিযান তরী মরণ সাদা পাল তুলেছে। রিক্ত শাখার মাস্ত্তলে জাহাজগুলি ডাকছে। বাতাসের গতি এত প্রবল তা যেন দ্রুতগতি সম্পন্ন ঘোড়ার তীক্ষ্ণ হ্রেষার সমতুল্য। প্রবল বাতাসের বেগে অভিযাত্রীর টানানো তাঁবুর কানাৎ উড়ছে। খাদ্যের পুঁজি শেষ হয়ে যাচ্ছে। এরূপ পরিস্থিতে কবির মনে হচ্ছে মৃত্যু বুঝি মুচকি হাসে।
কবি শেষপর্যন্ত কল্পনার জগত ছেড়ে বাস্তবের জগতে এসে বলছেন, তুষার মেরু দেখার জন্য তার মন ছটফট করছে। আর পৃথিবীর কোমল বাহু ভালো লাগছে না কবির। তিনি বাস্তবে মেরু অভিযানে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। সুতরাং কবিতাটির বিষয়বস্তুর ওপর ভিত্তি করে বলা যায় কবিতাটির নামকরণ সার্থক ও যথাযথ।
প্রশ্ন ২। ‘মেরুর ডাক’ কবিতাটিতে মেরুর হাতছানিতে কবি যেভাবে উতলা হয়েছেন তার পরিচয় দাও।
উত্তরঃ পৃথিবীর একেবারে উত্তর প্রান্তে উত্তর মেরু অবস্থিত। শীতলতম পৃথিবীর এই অংশে জীবনধারণ করা অসম্ভব। ভ্রমণ পিপাসু, দুঃসাহসিক অভিযান প্রিয় কবি গ্রীষ্মপ্রধান বাংলাদেশ থেকে এই উত্তর মেরুর ডাক শুনতে পান। এই ডাক তাঁর কাছে বারবার আসে কেননা তিনি এই মেরুকে ভালোবাসেন। মেরুর এইবারের ডাক কবি আর উপেক্ষা করতে পারেন না।
নিসর্গ প্রেমী কবি পৃথিবীর উত্তর মেরুর তুষারময় প্রকৃতিকে স্বচক্ষে দেখতে চান। কল্পনার চোখে কবি সেখানকার পরিবেশটি লক্ষ্য করেছেন। অভিযানে বেরিয়ে কবির অবস্থা বড়ই শোচনীয়। ঝড়ে তাঁর তাবু উড়ে ভেঙ্গে যাচ্ছে, তার খাবার ফুরিয়ে এসেছে, তার পোষাক জীর্ণ হয়ে গেছে মৃত্যু তার সামনে এসে হাজির তবু তিনি বিন্দুমাত্র ভীত নন। তিনি মেরুর জয়গানও গেয়েছেন। কল্পনার মধ্যে দেখেছেন সেখানে সিন্ধুঘোটক বিশাল দাঁত দিয়ে তুষার মাটি খুড়ে খায়, পেঙ্গুইন পাখির জল ডানার বরফ ঝাপটে উড়ে যায়। সেখানে এক নিস্তব্ধ পরিবেশে মনে হয় কেউ যেন বসে শব সাধনা করছে দিন রাত ধরে। কবি এই পরিবেশ পছন্দ করছেন। তাঁর নৌকার কাছি এবার তীরে বাঁধা থাকতে চাইছে না। তীরের কাছ থেকে মুক্তি চাইছে। মেরুর ডাকে তাঁর যদি মৃত্যুও হয় তথাপি তিনি পিছপা হবেন না। কোনো ভয়কেই তিনি আর ভয় মনে করেন না।
প্রশ্ন ৩। ‘মেরুর ডাক’ কবিতাটির বিষয়বস্তু আলোচনা করো।
উত্তরঃ অভিযাত্রী মানস কবিকে উত্তরের তুষার মেরু বার বার ডাকছে। কবি সেই ডাকে বিপদ যেনেও ঘরের চার দেওয়ালে থাকতে রাজি নন। কবি কল্পনায় দেখছেন হিমের বাতাসে মরণ অভিযানতরী মরণ সাদা পাল তুলছে। রিক্ত শাখার মাস্তুলে জাহাজগুলি ডাকছে। বাতাসের গতি এত প্রবল তা যেন দ্রুত গতি সম্পন্ন ঘোড়ার তীক্ষ্ণ হ্রেষার সমতুল্য। প্রবল বাতাসের বেগে অভিযাত্রীর টাঙানো তাঁবুর কানাৎ উড়ছে। খাদ্যের পুঁজি শেষ হয়ে আসছে কাপড়গুলি টুটে ফেটে গেছে। মৃত্যু মুচকি হাসছে। সেজন্য কি বিষুবরেখায় পড়ে থাকবেন। কবির যদি এখন কিছু হয় তবে মেরুর জয় করার যে তার প্রবল ইচ্ছা, তা ব্যর্থ হয়ে যাবে।
মেরু অঞ্চলে চারিদিকে থাকা সবুজের আভাকে আবৃত করে আছে তুষাররাশি। মেরু অঞ্চলের প্রাণী সিন্ধুঘোটক তার বিশাল দাঁত দিয়ে তুষারমৃত্তিকা কুড়ে খায়। পেঙ্গুইনের ডানা থাকা সত্ত্বেও উড়তে পারে না। পেঙ্গুইন ডানা ঝাপটে দুই পায়ে ভর দিয়ে বিজ্ঞের মতো তাকায়। দিনের শেষে চারিদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। হাজার তারায় মেরুর আকাশ ভরে ওঠে। হঠাৎ-হঠাৎ বিদ্যুৎ চমকে ওঠছে। মনে হচ্ছে এখানে শব সাধনা চলছে। কান পেতে শুনলেই আবার মেরুর ডাক শোনা যায়। কবি বলছেন, তাকে যেন কেউ না আটকায়। তিনি মৃত্যুর প্রতীক মরণ শাদা পাল তুলে নৌকা যাত্রা শুরু করবেন। তাঁর আর পৃথিবীর কোমল বাহু ভালো লাগছে না। তিনি মেরু অভিযানে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন।