Class 12 Advance Bengali Chapter 11 দিবা দ্বিপ্রহরে

Class 12 Advance Bengali Chapter 11 দিবা দ্বিপ্রহরে Question Answer | AHSEC Class 12 Advanced Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Assam Board Class 12 Advance Bengali Chapter 11 দিবা দ্বিপ্রহরে Notes and select needs one.

Class 12 Advance Bengali Chapter 11 দিবা দ্বিপ্রহরে

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 12 Advance Bengali Chapter 11 দিবা দ্বিপ্রহরে Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 12 Advance Bengali Chapter 11 দিবা দ্বিপ্রহরে Solutions for All Subjects, You can practice these here.

দিবা দ্বিপ্রহরে

Chapter: 11

ADVANCE BENGALI

গদ্যাংশ

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটির লেখক কে?

উত্তরঃ বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়।

প্রশ্ন ২। ‘বনফুল’ কোন্ লেখকের ছদ্মনাম?

উত্তরঃ বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়।

প্রশ্ন ৩। বনফুল কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

উত্তরঃ ১৮৯৯ সালে।

প্রশ্ন ৪। ‘দিবা দ্বিপ্রহর’ গল্পের সাপটি কোথায় আত্মগোপন করেছিল?

উত্তরঃ সাপটি ইঁটের গাদায় আত্মগোপন করেছিল।

প্রশ্ন ৫। “অন্ধকার ঘনীভূত হইতে জনতা ক্রমশ ছত্রভঙ্গ হইয়া পড়িল’ গল্পাংশটির লেখক কে?

উত্তরঃ বলাইচাদঁ মুখোপাধ্যায়।

প্রশ্ন ৬। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় পেশায় কী ছিলেন?

উত্তরঃ চিকিৎসক।

প্রশ্ন ৭। ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পে কয়টি পরিচ্ছেদ আছে?

উত্তরঃ চারটি।

প্রশ্ন ৮। হারুঘোষের মেজ ছেলের নাম কী?

উত্তরঃ ন্যাপলা।

প্রশ্ন ১১। হারুঘোষের ছেলেকে কখন সাপে কেটেছিল?

উত্তরঃ সকালবেলায়।

প্রশ্ন ৯। ন্যাপলা কে?

উত্তরঃ হারুঘোষের মেজছেলে।

প্রশ্ন ১০। “লোকটির চেহারা অদ্ভুত।” – কোন্ লোকটির চেহারা অদ্ভুত?

উত্তরঃ আগন্তুকের।

প্রশ্ন ১২। ন্যাপলাকে কামড় দেওয়া সাপটি কী বিষাক্ত ছিল?

উত্তরঃ হ্যাঁ, সাপটি বিষাক্ত ছিল।

প্রশ্ন ১৩। “ডাক্তারিতে কিচ্ছু হবে না, কিৎসু হবে না।”- এটি কার উক্তি?

উত্তরঃ আগন্তুকের।

প্রশ্ন ১৪। ‘‘রাগ করছ কেন চাঁদ, দাও, চুমু দাও একটা আমাকে।”- এটি কার উক্তি?

উত্তরঃ এটি আগন্তুকের উক্তি।

প্রশ্ন ১৫। ‘‘দেখিতে দেখিতে জনতা সাপ ছাড়িয়া আগন্তুককে লইয়া পড়িল।” – ‘আগন্তুক’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ নবাগত লোক।

প্রশ্ন ১৬। “এ একটা পাগল।” – পাগলটি কে?

উত্তরঃ আগন্তুক।

প্রশ্ন ১৭। কে সাপটিকে বল্লমবিদ্ধ করে ইঁটের গাদা থেকে বের করে এনেছিল?

উত্তরঃ বিশু বাগদী।

প্রশ্ন ১৮। আগন্তুককে জনতা কী ভেবেছিল?

উত্তরঃ মস্ত গুণী ওঝা ভেবেছিল।

প্রশ্ন ১৯। সাপটি আগন্তুককে কয়বার দংশন করেছিল?

উত্তরঃ তিনবার।

প্রশ্ন ২০। আগন্তুক কোথা হতে পালিয়ে এসেছিল?

উত্তরঃ পাগলাগারদ থেকে।

প্রশ্ন ২১। ‘দিরা দ্বিপ্রহর’ গল্পে গোখরো সাপ কাকে কামড়েছিল?

উত্তরঃ গোখরো সাপ হারু ঘোষের ছেলে ন্যাপলাকে কামড়ে ছিল।

প্রশ্ন ২২। ‘এ একটা পাগল’ – উক্তিটি কার?

উত্তরঃ দারোগাবাবুর।

প্রশ্ন ২৩। ‘অন্ধকার ঘনীভূত হইতে জনতা ক্রমশ _____ হইয়া পড়িল।’ (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তরঃ ছত্রভঙ্গ।

প্রশ্ন ২৪। ‘হুলিয়া’ কী?

উত্তরঃ হুলিয়া হচ্ছে পলাতক আসামিকে ধরতে তার চেহারার বর্ণনাসহ বিজ্ঞাপন।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১।“আলবৎ উপায় আছে, মন্তর ঝাড়ব আর উঠে বসবে।” – বক্তা কে? কে উঠে বসবে?

উত্তরঃ বক্তা হলেন আগন্তুক। ন্যাপলা উঠে বসবে।

প্রশ্ন ২। “একে ধরবার জন্য চারিদিকে ফোটো পাঠিয়ে হুলিয়া বার করা হয়েছে।” – বক্তা কে? ‘হুলিয়া’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ বক্তা হলেন হারু ঘোষ। ‘হুলিয়া’ শব্দের অর্থ মুখমণ্ডলের গঠন ও আকৃতি।

প্রশ্ন ৩। ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটিতে গোখরো সাপ কাকে কামড়ে ছিল? সে কার ছেলে ছিল?

উত্তরঃ গোখরো সাপ ন্যাপলাকে কামড়েছিল। সে হারু ঘোষের ছেলে।

প্রশ্ন ৪। “একেই তো আমরা খুঁজছি।” – বক্তা কে? কাকে খুঁজছিলেন?

উত্তরঃ বক্তা হলেন দারোগা সাহেব। আগন্তুককে খুঁজছিলেন।

প্রশ্ন ৫। ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটি কে লিখেছেন? বাংলা সাহিত্যে তাঁর আরেকটি নাম আছে – সেটি কী?

উত্তরঃ ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটি বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় লিখেছেন। বাংলা সাহিত্যে তাঁর আরেকটি নাম আছে – সেটি হল বনফুল।

প্রশ্ন ৬। ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটিতে গোখরো সাপ কাকে কাকে কামড়েছিল?

উত্তরঃ ন্যাপলা ও আগন্তুককে।

প্রশ্ন ৭। ‘ডাক্তারিতে কিছু হবে না, কিৎসু হবে না – বলিয়া আগন্তুক সহাস্যে দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলটি উন্নত করিয়া আন্দোলিত করিতে লাগিল।’ – উদ্ধৃতিটির উৎস উল্লেখ করে আগন্তুকের পরিচয় দাও, একটি বাক্যে।

উত্তরঃ উদ্ধৃতিটি ‘দিবা-দ্বিপ্রহরে’ গল্পের। আগন্তুকটি হল জেল পলাতক একটি পাগল।

প্রশ্ন ৮। হারু ঘোষের মেজছেলে এবং আগন্তুক উভয়েরই মৃতদেহ পাশাপাশি পড়ে থাকার কারণ কী?

উত্তরঃ হারু ঘোষের মেজছেলে ন্যাপলা এবং আগন্তুককে বিষধর গোখরা সাপ কামড় মেরেছিল। ফলে তারা মারা যায় এবং তাদের মৃতদেহ পাশাপাশি পড়ে থাকে।

প্রশ্ন ৯। ডাক্তারবাবু সাপে কামড়ানো ন্যাপলাকে কীভাবে চিকিৎসা করেছিলেন?

উত্তরঃ হারু ঘোষের মেজ ছেলে ন্যাপলাকে সাপে কামড় দিলে ডাক্তারবাবু সাপে দংশনের স্থানের উপরে তিন-চারটে বাঁধন দিয়ে কাটা-চিরা করে ওষুধ পত্তর লাগিয়ে দিয়েছিলেন।

প্রশ্ন ১০। ‘তিক্ত কণ্ঠে সে বলিয়া উঠিল, পাগল নয় কে? সব্বাই কে ধ’রে পাগলা গারদে পুরুন আপনি।’ – উক্তিটি কার এবং কোন পাঠের অন্তর্গত?

অথবা, 

কে কাকে একথা বলেছে?

উত্তরঃ উক্তিটি পাড়ার সাহসী ছেলে বিশু বাগদী থানার দারোগাকে বলেছে। উক্তিটি ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ পাঠের।

প্রশ্ন ১১। ‘গোখরা সাপটা আজ সকালে ন্যাপলাকে কামড়েছিল।’ – ন্যাপলা কে? সাপটা কি বিষাক্ত ছিল?

উত্তরঃ ন্যাপলা জনৈক হারু ঘোষের মেজ ছেলে। হ্যাঁ, সাপটা বিষাক্ত ছিল।

প্রশ্ন ১২। “বল্লমবিদ্ধ প্রকাণ্ড বিষধর ভয়াবহ ফণা তুলিয়া তর্জন-গর্জন করিতেছে।” – বিষধর সাপটিকে কে বল্লমবিদ্ধ করেছিল? এর আগে সকালের দিকে সাপটি কাকে দংশন করেছিল?

উত্তরঃ পাড়ার সাহসি বালক বিশু বাগচি। সকালে হারু ঘোষের মেজ ছেলে ন্যাপলাকে সাপে দংশন করেছিল।

প্রশ্ন ১৩। “বল্লমবিদ্ধ প্রকাণ্ড বিষধর ভয়াবহ ফণা তুলিয়া তর্জন-গর্জন করিতেছে।” – বল্লমবিদ্ধ প্রকাও বিষধরটি কী? তাকে কে বল্লমবিদ্ধ করেছে?

উত্তরঃ প্রকাণ্ড বিষধরটি হলো একটি গোখরো সাপ। বিশু বাগদী নামে পাড়ার এক সাহসী যুবক তাকে বল্লমবিদ্ধ করেছে।

প্রশ্ন ১৪। “একেই তো আমরা খুঁজছি” – খুঁজ পেয়েও তাকে কেন ধরতে পারেন নি?

উত্তরঃ যখন আগন্তুকের খোঁজ পেলেন তখন সে গোখরো সাপের কামড়ে প্রাণ হারিয়ে ফেলেছে। তাই খোঁজ পেয়েও তাকে ধরা হল না।

প্রশ্ন ১৫। ‘রাগ করছ কেন’ – কার প্রতি কার উক্তি?

উত্তরঃ গোখরা সাপের প্রতি আগন্তুকের উক্তি।

প্রশ্ন ১৬। ‘বিষধর তাহার অনুরোধ রক্ষা করিল’ – কে কার অনুরোধ কীভাবে রক্ষা করে?

উত্তরঃ বিষধর গোখরোর প্রতি আগন্তুক একটি চুমু দেবার অনুরোধ করলে গোখরা সাপটি তার গলায় একটি মরণ চুমু দিয়ে সে অনুরোধ রক্ষা করে।

প্রশ্ন ১৭। ‘এখানে এত ভিড় কিসের?’ প্রশ্নটি কে কাকে করেছিল?

উত্তরঃ আগন্তুক পাগল ভিড়ের মধ্যে থাকা জনৈক ব্যক্তিকে প্রশ্নটা করেছিল।

প্রশ্ন ১৮। ‘মন্তর ঝাড়ব আর উঠে বসবে’ – বক্তা কে? মন্তর কী?

উত্তরঃ বক্তা হলেন আগন্তুক। মন্তর শব্দের অর্থ মন্ত্র।

প্রশ্ন ১৯। “একেই তো আমরা খুঁজছি” – বক্তা কে? কাকে খুঁজছিলেন এবং কেন?

উত্তরঃ বক্তা হলেন দারোগা সাহেব। তিনি আগন্তুককে খুঁজছিলেন। কারণ আগন্তুকটি পাগল ছিল। সে পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে এসেছিল।

প্রশ্ন ২০। বনফুলের প্রকৃত নাম কী? তাঁর যে কোনো একটি উপন্যাসের নামোল্লেখ করো।

উত্তরঃ বনফুলের প্রকৃত বা আসল নাম বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়। তাঁর একটি উপন্যাসের নাম হলো ‘তৃণখণ্ড’।

টীকা লেখো:

১। বিশু বাগদি: বিশু বাগদী হলেন বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটির একটি চরিত্র। সে গ্রামের এক সাহসী যুবক। ইঁটের গাদায় লুকিয়ে থাকা সাপটির লেজ দেখতে পেয়ে বল্লমবিদ্ধ করে সেখান থেকে বের করে আনে সে।

২। আগন্তুক: আগন্তুক শব্দের অর্থ নবাগত লোক অর্থাৎ অপরিচিত হঠাৎ আগত কোনো লোক। বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পের প্রধান চরিত্র আগন্তুক। সে পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে আসা আগন্তুক। তাঁর চেহারা অদ্ভুত। খোঁচা খোঁচা গোঁফদাড়ি, তৈলবিহীন রুক্ষচুল, আরক্ত নয়ন। পরিধানে একটা ময়লা হাফ-প্যান্ট এবং একটা ময়লাগোছের ফতুয়া।

৩। ন্যাপলা: ন্যাপলা বনফুলের ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ ছোটগল্পে একটি চরিত্র। যাকে গোখরা সাপ কামড় দিয়ে ইঁটের গাদায় আত্মগোপন করেছিল। তাঁর পিতার নাম হারু ঘোষ। সে পিতার মেজছেলে।

৪। হারু ঘোষ: হারু ঘোষ বনফুলের ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ ছোটগল্পে একটি সাধারণ চরিত্র। তাঁর মেজছেলেকে গোখরা সাপ কামড় মেরে ইঁটের গাঁদায় আত্মগোপণ করেছিল। কুসংস্কারের বশীভূত হয়ে একজন পাগলকে ওঝা বলে বিশ্বাস করায় তাঁর ছেলেটির মৃত্যু হয়।

৫। পাগলা গারদ: পাগলা গারদ হল ভয়ানক পাগলামি করা লোকদের আটকে রাখার জেল। যে সকল মানসিক রোগীকে বাড়ি বা প্রকাশ্যস্থানে রাখলে অন্য লোকের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাদেরই সাধারণত এই পাগলা গারদে পাঠানো হয়।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘‘লোকটির চেহারা অদ্ভুত। খোঁচা-খোঁচা গোঁফদাড়ি, তৈল বিহীন রুক্ষ চুল।” – লোকটি কে? প্রসঙ্গটি বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ লোকটি হল পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে আসা একটা পাগল। হারু ঘোষের মেজছেলেকে গোখরা সাপটি কামড় মেরে ইঁটের গাদার ভেতরে প্রবেশ করে তখন পাড়ার সাহসী যুবক বিশু বাগদী বল্লমবিদ্ধ করে ইঁটের গাদা থেকে সাপটিকে বের করে আনে। পাড়ার লোকেরা সাপটিকে দেখার জন্য ভিড় করে আছে। বিশু বাগদী সাপটি প্রসঙ্গে বলে এমন মোটা, লম্বা, সাপ সে পূর্বে আর কখনও দেখেনি। একটু দূরে গাছের নিচে বসে একজন লোক ছাতু খাচ্ছে। সে ভিড়ে যোগদান করেনি। লোকটির চেহারা অদ্ভুত। খোঁচা খোঁচা গোঁফদাড়ি। তৈলবিহীন চুল, আর আরক্ত নয়ন। সে পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসে।

প্রশ্ন ২। “পাগলা নয় কে? সব্বাইকে ধরে পাগলা-গারদে পুরুন আপনি হুজুর” – বক্তা কে? তাঁর এই বক্তব্যের কারণ কী? সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তরঃ বক্তা বিশু বাগদী।

হারু ঘোষের মেজছেলে ন্যাপলাকে গোখরা সাপ দংশন করলে ডাক্তার এসে সেই ক্ষতস্থান কেটে কুটে ঔষধ দিয়ে বাঁধন দিয়ে যায়। কিন্তু পাড়ার লোকেরা পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসা পাগলকে মস্ত গুণী ওঝা মনে করে তার কথামতো বাঁধন খুলে দেয়। পরে দেখা যায় পাগলটি বল্লমবিদ্ধ সাপটিকে ছেড়ে দিতেও বলে। ভীড়ের তৈলবিহীন রুক্ষ চুল, আরক্ত নয়ন। পরিধানে একটা ময়লা হাফ-পেন্ট এবং একটা ময়লা গোছের ফতুয়া। সে পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে আসা একটি পাগল। ভিড়ের জনতা তার কথার ধরনে ভেবেছিল সে কোন মস্ত গুণী ওঝা।

প্রশ্ন ৬। ‘বিশাল জনতা রুদ্ধশ্বাসে আগন্তুকের কার্যকলাপ দেখিতে লাগিল’ – আগন্তুক কে? জনতা তার কোন্ কার্যকলাপ রুদ্ধশ্বাসে দেখছিলো?

উত্তরঃ আগন্তুকটি হল একটি পাগল লোক। সে পাগলা গারদ হতে পালিয়ে এসেছে। বিশু বাগদী যখন বল্লমে সাপের লেজটি টেনে বের করেছে তখন সাপটিকে দেখতে লোকের ভিড় জমে গিয়েছে। আগন্তুকটি ভিড়ের কলরবে আকৃষ্ট হয়ে জনতার দিকে সে কিছুক্ষণ চেয়ে রইল। তারপর কী মনে করে একটু হাসল। অবশেষে উঠে ভিড়ের দিকে অগ্রসর হয়ে জানাল যে ন্যাপলাকে সাপে কামড় দিয়েছে। সে বলল যে সে মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করবে। তার কথামতো ডাক্তারের দেওয়া ন্যাপলার পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়া হলো। নির্ভয়ে এগিয়ে গিয়ে আগন্তুক সাপটিকে ধরল। ধরবা মাত্র সাপটি তার ডান হাতে ছোবল বসাল। এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে আগন্তুক বাম হাতে সাপটিকে ধরল। সাপটি আগন্তুকের বাম হাতে দংশন করল এবং বহু পাকে সমস্ত হাতটি বেষ্টন করল। আগন্তুক অদ্ভুতভাবে হাসল এবং পরে তার মৃত্যু হল।

জনতা আগন্তুকের এসব কার্যকলাপ অবাক হয়ে দেখছিল।

প্রশ্ন ৭। “দ্রুতবেগে রটিয়া গেল, একজন মস্ত গুণী ওঝা আসিয়াছেন।” – ওঝাটি কে? তিনি কী করেছিলেন লেখো।

উত্তরঃ ওঝাটি হল পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসা একটি পাগল লোক।

পাড়ার সাহসী বালক বিশু বাগদী যখন বল্লমে গেঁথে সাপটিকে টেনে বের করেছে তখন সেখানে লোকের ভিড় জমে গিয়েছে। পাগল আগন্তুকটি ভিড়ের কলরবে আকৃষ্ট হয়ে সে দিকে এসে হাজির হয়ে জানল যে হারু ঘোষের ছেলে ন্যাপলাকে সাপটি কামড় দিয়েছে। সে বলল যে সে মন্ত্র পড়ে বিষ ঝাড়িয়ে নামিয়ে দেবে। এ কথা শুনে ন্যাপলাকে এখানে আনানো হল। তার কথা মতো ডাক্তারের দেওয়া ন্যাপলার পায়ের বাধন খুলে দেওয়া হলো। নির্ভয়ে এগিয়ে গিয়ে লোকটি সাপটিকে ধরল। ধরা মাত্র সাপটি তার ডান হাতে ছোবল মারল। এতে একটুও বিচলিত না হয়ে সে বাম হাতে সাপটিকে ধরল। সাপটি লোকটির বামহাতে দংশন করল এবং বহু পাকে সমস্ত হাতটি বেষ্টন করল। পাগল লোকটি অদ্ভুত ভাবে হাসল এবং মৃত্যু বরণ করল।

প্রশ্ন ৮। “দারোগা আসিয়া প্রবেশ করিলেন।” – এরপর কী হল?

উত্তরঃ সারাদিনের এইসব রোমহর্ষক ঘটনার পর যখন সন্ধ্যার আর বেশি দেরি নেই, উত্তেজিত জনতা কলরব করছে। হারু ঘোষের ছেলেও আগন্তুকের মৃতদেহ পাশাপাশি পড়ে আছে, সাপটিও চলে গেছে। ঠিক সে সময়ে পুলিশের দারোগা এসে আগন্তুকের মুখটা ভালো করে নিরীক্ষণ করে বললেন যে তারা এই লোকটাকে খুঁজছিলেন। লোকটি একটি পাগল। পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে এসেছে। সাহসী বালক বিশু বাগদী বলল যে তারা সবাই পাগল। সবাইকে ধরে যেন পাগলা গারদে ঢুকানো হয়। অতঃপর অন্ধকার ঘনীভূত হলে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেল।

প্রশ্ন ৯। “সন্ধ্যার আর বেশি বিলম্ব নাই। উত্তেজিত জনতা কলবর করিতেছে। হারু ঘোষের মেজছেলে এবং আগন্তুকের মৃতদেহ পাশাপাশি পড়িয়া রহিয়াছে। সাপটা নাই।” – উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ হারু ঘোষের মেজছেলে ন্যাপলাকে গোখরা সাপ কামড় মেরেছিল। তখন ডাক্তার এসে তিন-চারটে বাঁধন দিয়ে ঔষুধ-পত্তর লাগিয়ে দেয়। বিশু বাগদী নামে পাড়ার সাহসী বালক সাপটিকে বল্লমবিদ্ধ করে টেনে ইঁটের গাদা থেকে বের করে আনে। তখন গাছের নিচে বসা আগন্তুকের কথা শুনে গ্রামের মানুষেরা মনে করে সে মস্ত গুণী ওঝা। তার কথা মতো ন্যাপলার ডাক্তারের দেওয়া বাঁধন খোলা হয় এবং বল্লমবিদ্ধ সাপকে ছাড়া হয়। সাপটিকে আগন্তুক হাতে নিলে তাকে ডান, বাম এবং কপালে কামড় মারে। এর ফলে আগন্তুকের মৃত্যু হয়। তখন সন্ধ্যার আর বেশি বিলম্ব নেই। আগন্তুক ও ন্যাপলার মৃতদেহ পাশাপাশি পড়ে আছে। কিন্তু সাপটি নেই।

প্রশ্ন ১০। “সিদ্ধ মনস্কাম বিশু বাগদী সগর্বে জাহির করিতেছে যে, এমন মোটা, এমন লম্বা, এমন ফণা ও গর্জন বিশিষ্ট গোক্ষুর সাপ সে আর কখনও দেখে নাই।” – বিশুবাগদী কে? উদ্ধৃতিটি বিস্তৃত করো।

উত্তরঃ বিশু বাগদী হল পাড়ার সাহসী বালক। হারু ঘোষের মেজছেলেকে সাপ কামড় দিয়ে ইঁটের গাদার মধ্যে আত্মগোপন করে। তখন গ্রামের সাহসী যুবক বিশু বাগদী সাপের লেজের দিক দেখতে পেয়ে বল্লম বিদ্ধ করে সাপটিকে সেখান থেকে টেনে বের করে আনে। তখন বল্লমবিদ্ধ প্রকাণ্ড বিষধর সাপটি ফণা তুলে তর্জন-গর্জন করতে থাকে। সে দৃশ্যটি দেখবার মতো। গ্রামের লোকেরা সভয়ে বিস্ময়ে সাপটির দিকে তাকিয়ে আছে। বিশু বাগদী নিজেকে জাহির করে বলছে, এমন লম্বা, মোটা, ফণা তোলা ও গর্জন বিশিষ্ট গোখরো সাপ সে কখনও আগে দেখেনি।

প্রশ্ন ১১। “দেখিবার মতো দৃশ্য বটে।” – দৃশ্যটি কী? সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ বিশু বাগদী হল পাড়ার সাহসী বালক। হারু ঘোষের মেজছেলেকে সাপ কামড় দিয়ে ইঁটের গাদার মধ্যে আত্মগোপন করে। তখন গ্রামের সাহসী যুবক বিশু বাগদী সাপের লেজের দিক দেখতে পেয়ে বল্লম বিদ্ধ করে সাপটিকে সেখান থেকে টেনে বের করে আনে। তখন বল্লমবিদ্ধ প্রকাণ্ড বিষধর সাপটি ফণা তুলে তর্জন-গর্জন করতে থাকে। সে দৃশ্যটি দেখবার মতো। গ্রামের লোকেরা সভয়ে বিস্ময়ে সাপটির দিকে তাকিয়ে আছে। বিশু বাগদী নিজেকে জাহির করে বলছে, এমন লম্বা, মোটা, ফণা তোলা ও গর্জন বিশিষ্ট গোখরো সাপ সে কখনও আগে দেখেনি।

প্রশ্ন ১২। “ক্রুদ্ধ বিষধর তার এ অনুরোধ রক্ষা করিল।” – ক্রুদ্ধ বিষধরটি কে? সে কার অনুরোধ কীভাবে রক্ষা করল?

উত্তরঃ ক্রুদ্ধ বিষধর হল বল্লমবিদ্ধ প্রকাণ্ড গোখরো সাপ।

হারু ঘোষের মেজছেলে ন্যাপলাকে বিষধর গোখরো সাপ কামড় দিয়েছিল। এই সাপটিকে গ্রামের সাহসী যুবক বিশু বাগদী বল্লমবিদ্ধ করে ইঁটের গাদার ভেতর থেকে বের করে আনে। আগন্তুক বিষধর গোখরো সাপটিকে ধরবামাত্র সগর্জনে তার ডান হাতে ছোবল মারল। এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে আগন্তুক বাম হাতে সাপটিকে ধরলে সে তার বাম হাতে কামড় দিয়ে হাতখানি বেষ্টন করল। তখন আগন্তুক সাপটিকে বলেছিল: “রাগ করছ কেন চাঁদ, দাও, চুমু দাও একটা আমাকে।” এ কথা বলার পর ক্রুদ্ধ বিষধর সাপটি তার এই অনুরোধ রক্ষা করল। তার গণ্ডদেশে একটা চুম্বন দেয় অর্থাৎ গণ্ডদেশে কামড় দিল।

প্রশ্ন ১৩। “সন্ধ্যার আর বেশি বিলম্ব নাই। উত্তেজিত জনতা কলরব করিতেছে। হারু ঘোষের মেজছেলে এবং আগন্তুকের মৃতদেহ পাশাপাশি পড়িয়া রহিয়াছে। সাপটা নাই।” – উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ হারুঘোষের মেজছেলে ন্যাপলাকে বিষধর গোখরা সাপ কামড় মেরেছিল। তখন ডাক্তার এসে তিন-চারটে বাঁধন দিয়ে ঔষধ পত্তর লাগিয়ে দেয়। বিশু বাগদী নামে গ্রামের সাহসী যুবক সাপটিকে বল্লমবিদ্ধ করে ইঁটের গাদা থেকে বের করে আনে। তখন গাছের নীচে বসা আগন্তুকের কথা শুনে গ্রামের মানুষেরা মনে করে সে মস্ত গুণী ওঝা। তার কথা মতো ন্যাপলার ডাক্তারের দেওয়া বাঁধন খোলা হয় এবং বল্লমবিদ্ধ সাপকে ছাড়া হ। সাপটিতে আগন্তুক হাত দিয়ে ধরলে তাকে ডান-বাম হাত এবং কপালে কামড় মারে। এর ফলে আগন্তুকের মৃত্যু হয়। তখন সন্ধ্যার আর বেশি বিলম্ব নেই আগন্তুক ও ন্যাপলার মৃতদেহ পাশাপাশি পড়ে আছে। কিন্তু সাটি নেই।

প্রশ্ন ১৪। “ভিড়ে যোগদান করে নাই” – কে? তার চেহারা ও প্রকৃতির বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ যে সাপটা হারু ঘোষের মেজ ছেলেকে কামড়েছিল তা ধরা পড়ায় গ্রামের লোক তাকে দেখতে ভিড় জমায়। একটু দূরে একটা গাছের ছায়ায় বসে জনৈক ব্যক্তি খানিকটা ছাতু খাচ্ছিল, সেই-ই ভিড়ে যোগদান করেনি।

লোকটির চেহারা অদ্ভুত, খোঁচা খোঁচা গোঁফদাড়ি, তেলহীন রুক্ষ চুল, আরক্ত নয়ন, গায়ে একটা ময়লা হাফপ্যান্ট এবং একটা ময়লা মতো ফতুয়া। খোঁচা খোঁচা গোঁফ দাড়িতে ছাতু লেগে তার চেহারা আরও দৃষ্টিকটু হয়েছে। সে নিতান্ত নিরুৎসাহভাবে আপন মনে খাচ্ছিল। মানুষের জটলা সম্পর্কে তার এই উদাসীনতা তাকে এক অস্বাভাবিক ব্যক্তিরূপেই প্রতিপন্ন করে।

প্রশ্ন ১৫। “তৎক্ষণাৎ সাপটি গণ্ডদেশে একটা করাল চুম্বন অঙ্কিত করেছিল।” – কোন্ সাপটি কার গণ্ডদেশে কীভাবে করাল চুম্বন অঙ্কিত করে দিয়েছিল?

উত্তরঃ হারু ঘোষের মেজছেলে ন্যাপলাকে বিষধর গোখরো সাপ কামড় দিয়েছিল। এই সাপটিকে গ্রামের সাহসী যুবক বিশু বাগদী বল্লমবিদ্ধ করে ইঁটের গাদার ভেতর থেকে বের করে আনে। আগন্তুক বিষধর গোখরো সাপটিকে ধরবামাত্র সগর্জনে তার ডান হাতে ছোবল মারল। এতে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে আগন্তুক বাম হাতে সাপটিকে ধরলে সে তার বাম হাতে কামড় দিয়ে হাতখানি বেষ্টন করল। তখন আগন্তুক সাপটিকে বলেছিল : “রাগ করছ কেন চাঁদ, দাও, চুমু দাও একটা আমাকে।” এ কথা বলার পর ক্রুদ্ধ বিষধর সাপটি তার এই অনুরোধ রক্ষা করল। তার গণ্ডদেশে একটা চুম্বন দেয় অর্থাৎ গণ্ডদেশে কামড় দিল।

প্রশ্ন ১৬। “একটু দূরে একটি বৃক্ষতলে বসিয়া জনৈক ব্যক্তি খানিকটা হাতু খাইতেছিল।” – লেখকের নাম উল্লেখ করে লোকটির চেহারার বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ লেখকের নাম বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় (বনফুল)। পাঠের নাম ‘দিবা দ্বিপ্রহর’। লোকটি পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসা একটা পাগল। সে একটু দূরে একটা গাছের নিচে বসে ছাতু খাচ্ছিল। লোকটির চেহারা অদ্ভূত। খোঁচা খোঁচা গোফদাড়ি। তৈলবিহীন চুল আর আরক্ত নয়ন। সে জনতার ভিড়ে যোগদান করেনি।

প্রশ্ন ১৭। “ডাক্তারিতে কিচ্ছু হবে না, কিৎসু হবে না – বলিয়া আগন্তুক সহাস্যে দক্ষিণ হম্ভের বৃদ্ধাঙ্গুলিটি উন্নত করিয়া আন্দোলিত করিতে লাগিল।” – আগন্তুক কে? তিনি কেন এবং কী প্রসঙ্গে একথা বলেছেন?

উত্তরঃ আগন্তুক হলো পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে আসা এক পাগল।

গ্রামবাসী যখন সাপটাকে ভিড় করে আছে তখন পাশে একটি বৃক্ষের নিচে বসে এই আগন্তুকটি ছাতু খাচ্ছিল। কলরবে আকৃষ্ট হয়ে ভিড়ের দিকে এগিয় একজন লোককে ভিড়ের কারণ জিজ্ঞাসা করে। কারণ জেনে সে সহাস্যে দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলিটি উন্নত করে বলে ডাক্তারিতে কিছু হবে না, তার কথাবার্তাতে কুসংস্কারে বিশ্বাসী গ্রামবাসীরা মনে করে যে এক মস্ত বড় ওঝার আগমন হয়েছে এবং সে ন্যাপলাকে মন্ত্র পড়ে ঝাড়িয়ে সুস্থ করে তুলবে। কারণ তারা জানে যে সাপে কাটলে ওঝাই লাগে এবং একথাটাই আগন্তুক পাগল লোকটি গ্রামবাসীদের বুঝিয়েছিল।

প্রশ্ন ১৮। “ডাক্তারিতে কিচ্ছু হবে না, কিৎসু হবে না” কথাটি কে বলেছে? তোমার নিজের ভাষায় প্রসঙ্গটি বিবৃত করো।

উত্তরঃ আগন্তুক হলো পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে আসা এক পাগল।

গ্রামবাসী যখন সাপটাকে ভিড় করে আছে তখন পাশে একটি বৃক্ষের নিচে বসে এই আগন্তুকটি ছাতু খাচ্ছিল। কলরবে আকৃষ্ট হয়ে ভিড়ের দিকে এগিয় একজন লোককে ভিড়ের কারণ জিজ্ঞাসা করে। কারণ জেনে সে সহাস্যে দক্ষিণ হস্তের বৃদ্ধাঙ্গুলিটি উন্নত করে বলে ডাক্তারিতে কিছু হবে না, তার কথাবার্তাতে কুসংস্কারে বিশ্বাসী গ্রামবাসীরা মনে করে যে এক মস্ত বড় ওঝার আগমন হয়েছে এবং সে ন্যাপলাকে মন্ত্র পড়ে ঝাড়িয়ে সুস্থ করে তুলবে। কারণ তারা জানে যে সাপে কাটলে ওঝাই লাগে এবং একথাটাই আগন্তুক পাগল লোকটি গ্রামবাসীদের বুঝিয়েছিল।

প্রশ্ন ১৯। “একেই তো আমরা খুঁজছি।” – বক্তা কে? কাকে খুঁজছিলেন এবং খোঁজ পেয়েও তাকে কেন ধরতে পারেন নি?

উত্তরঃ এখানে বক্তা থানার পুলিশের দারোগা। তিনি পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসা এক পাগলকে খুঁজছিলেন। তিনি যখন পাগলটির খোঁজ পেয়েছিলেন তখন সব খলা শেষ হয়ে গেছে। অর্থাৎ এই পাগলটি সাপের ওঝা সেজে যখন সর্পাঘাতে আহত হারুঘোষের মেজ ছেলে নেপলাকে ভালো করতে লেগেছিল তখন পরপর সর্বের ছোবলে সেও পটল তুলে ছিল, তাই দারোগাবাবুর পালানো পাগলটাকে ধরা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটি তোমার নিজের ভাষার লেখো।

উত্তরঃ আজ সকালে হারু ঘোষের মেজ ছেলে ন্যাপলাকে একটি বিষধর সর্প কামড় মেরে ইঁটের গাদার ভেতরে লুকিয়ে পড়ে। সাপটিকে খুঁজে বের করতে গিয়ে দুপুর হয়ে পড়ে। সে সময় সাধারণত লোকজন বিশেষ কোনো কাজ না থাকলে বাইরে বেরোয় না, কিন্তু সেদিন ন্যাপলাকে কামড় দেওয়া বিষধর সাপটিকে দেখার জন্য দুপুরের প্রখর রৌদ্রের তাপ সহ্য করেও মানুষ ভিড় বেঁধে আছে। বিশু বাগদী নামক পাড়ার সাহসী এক যুবক ইঁটের গাদার ভিতরে সাপটির লেজ দেখতে পেয়ে লেজে বল্লমবিদ্ধ করে সাপটাকে বাহিরে টেনে আনে। বল্লমবিদ্ধ সাপটি ফণা তুলে তর্জন-গর্জন করছে। তা দেখবার মতো দৃশ্য। জনতা সভয়ে সাপটির দিকে তাকিয়ে আছে। বিশু বাগদি বলেন এমন মোটা, লম্বা, ফণা ও গর্জন বিশিষ্ট সাপ সে আগে আর দেখেনি। গ্রামবাসী যখন সাপটিকে দেখার জন্য ভিড় করে আছে তখন একটি গাছের নিচে বসে জনৈক আগন্তুক ছাতু খাচ্ছিল। সে আসলে পাগলা গারদ থেকে বেরিয়ে আসা পাগল। পরে একটি চিৎকারে সেদিকে আকৃষ্ট হয়ে এগিয়ে গিয়ে একজন লোককে জিজ্ঞেস করে সে জানতে পারে যে হারু ঘোষের মেজ ছেলে ন্যাপলাকে সাপে কেটেছে। 

ডাক্তার এসে ক্ষত স্থানে কেটে কুটে ওষুধ পত্তর দিয়ে বেঁধে যায়। তখন আগন্তুক বলে, ডাক্তারিতে কিচ্ছু হবে না। সমস্ত গ্রামে রটে যায় মস্ত বড় গুণী ওঝা এসে হাজির হয়েছে। তখন হারু ঘোষকে খবর দেওয়া হল। আগন্তুকের কথা মতো ন্যাপলার বাঁধন খোলা হয় এবং বল্লমবিদ্ধ সাপটিকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। সাপটি আগন্তুকের দুহাত ও গলায় দংশন করে। এতে আগন্তুক মারা যায়। উত্তেজিত জনতার কলরব; ন্যাপলা ও আগন্তুকের মৃতদেহ পাশাপাশি পড়ে আছে।

দারোগা এসে আগন্তুকের মুখটি নিরীক্ষণ করে বললেন, একেই তো তারা খুঁজছিলেন। তারপর তিনি বলেন যে, সে পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসা পাগল। তখন বিশু বাগদী একথা শুনে বলেন যে, এখানে সবাই পাগল। সবাইকে পাগলা গারদে নিয়ে যাওয়া হোক। তখন সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে এলে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।

প্রশ্ন ২। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার মানুষকে যে কত দুর্ভোগ ও বিপদে ফেলতে পারে ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটির মধ্য দিয়ে বনফুল সেটিই বোঝাতে চেয়েছেন। – আলোচনা করো।

অথবা, 

‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পে বনফুল অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের ফলে মানুষের দুর্ভোগের যে ছবি এঁকেছেন তা সংক্ষেপে বর্ণনা করো।

উত্তরঃ পেশায় চিকিৎসক বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় একজন বিজ্ঞানের উপাসক, তাই তিনি তাঁর বিভিন্ন ছোট গল্পে অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, যাদুটনা, মন্ত্র ইত্যাদি মানুষকে যে কত বিপদে ফেলতে পারে তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। আমাদের আলোচ্য ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটিও তার ব্যতিক্রমী নয়।

গল্পটিতে দেখা যায় জনৈক ব্যক্তি হারু ঘোষের মেজ ছেলে ন্যাপলাকে সাপে কামড় দিয়েছে। ডাক্তার এসে কামড়ানো জায়গার উপরে তিন-চারটি জায়গায় বাঁধন দিয়েছে যাতে বিষ মাথায় উঠতে না পারে, তাছাড়া ঔষধ পত্রও দিয়েছে। এতে হয়তো ন্যাপলা সুস্থ হয়ে উঠত। কিন্তু হঠাৎ কোথা থেকে এক পাগল এসে বলে সে মন্ত্রের দ্বারা বিষ ঝাড়িয়ে রোগীকে সুস্থ করে তুলবে। সাধারণ মানুষ এই সাপের বিষ ঝাড়িয়ে নামানো কু-সংস্কারে খুব বেশি বিশ্বাসী। তাই তারা আনন্দে রাজী হয়ে গেল। আনা হল হারু ঘোষের ছেলে ন্যাপলাকে, খোলা হল পায়ের উপরের সব বাধন। এতে বিষ তাঁর সমস্ত শরীর ও মাথায় ছড়িয়ে পড়ে ন্যাপলার মৃত্যু হলো।

সুতরাং, অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারে বশীভূত হয়ে মানুষ যে কীরূপ বিপদে পড়তে পারে আলোচ্য গল্পটি তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ।

প্রশ্ন ৩। ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রভৃতির নামকরণ করা হয় চরিত্র, বিষয়বস্তু বা সময়ের উপর ভিত্তি করে। এখানে বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় গল্পটির নামকরণ করেছেন সময়ের উপর ভিত্তি করে। আলোচ্য গল্পটির ঘটনাকাল হল দিনদুপুর হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত। গল্পের আরম্ভতে দেখা যায় দুপুরের প্রখর রৌদ্রে বিশেষ কোনো কাজ না থাকলে যেখানে মানুষ ঘর থেকে বেরোয় না, সে জায়গায় গ্রামের মানুষ যে সাপটি আজ সকালে হারু ঘোষের ছেলেকে কামড় মেরে ইঁটের গাদার ভেতর লুকিয়ে পড়েছিল সেই সাপটি ধরা পড়লে তাকে দেখার জন্য ভিড় করে আছে। বিশু বাগদী নামে গ্রামের সাহসী যুবক বল্লমবিদ্ধ করে সাপটিকে বাইরে বের করে আনে। বল্লমবিদ্ধ সাপটি ফণা তুলে তর্জন-গর্জন করছে, তা দেখবার মতো দৃশ্য।

গ্রামবাসী যখন সাপটিকে নিয়ে ভিড় করে আছে তখন পাশে একটি বৃক্ষের নিচে এক পাগল আগন্তুক ছাতু খাচ্ছিল। কলরবে আকৃষ্ট হয়ে ভিড়ের দিকে এগিয়ে একজন লোককে ভিড়ের কারণ জিজ্ঞাসা করে। কারণ জেনে বলে ডাক্তারিতে কিছু হবে না তার কথাবার্তাতে গ্রামবাসী মনে করে এক মস্তবড় ওঝার আগমন হয়েছে। তখন হারু ঘোষকে খবর দিয়ে আনানো হয়। বল্লম বিদ্ধ সাপটিকেও ছেড়ে দেওয়া হয়। সাপটি আগন্তুকের দুহাত এবং কপালে দংশন করে। ফলে দেখা যায় একদিকে ন্যাপলা ও অন্যদিকে আগন্তুক দুজনেরই মৃত্যু ঘটে। থানার দারোগা এসে দেখে বলেন যে, একেই তো তারা খুঁজছে। সে পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে আসা একটি পাগল। তারপর সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে এলে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। ঘটনাটির সময় দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত। লেখক গল্পটির নামকরণ সময়ের উপর ভিত্তি করে করেছেন। সুতরাং বলা যায় দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটির নামকরণ সার্থক ও যুক্তিসঙ্গত।

প্রশ্ন ৪। ছোটগল্প কাকে বলে? ছোটগল্প হিসাবে ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটির সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার তরী’ কাব্যগ্রন্থের ‘বর্ষাযাপন’ কবিতায় ছোটগল্প সম্পর্কে বলেছিলেন-

“ছোট প্রাণ, ছোট ব্যথা          ছোট ছোট দুঃখ কথা

                      নিতান্তই সহজ সরল

সহস্র বিস্মৃতি রাশি                প্রত্যহ যেতেছে ভাসি

                     তারি দু-চারিটি অশ্রু জলে।

নাই বৰ্ণছটা                          ঘটনার ঘনঘটা

                     নাহি তত্ত্ব, নাহি উপদেশ

অন্তরে অতৃপ্তি                     সাঙ্গ করি মনে হবে

                     শেষ হয়ে হল না শেষ।”

রবীন্দ্রনাথের মতে, ছোটগল্পের প্রধান বৈশিষ্ট্য শেষ হয়েও যেন শেষ হয় না। ছোটগল্প পড়ে মনের মধ্যে একটি অতৃপ্তি থেকে যায়। গল্পের বিষয়বস্তুকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলবার জন্য যতটুকু ঘটনা ও চরিত্রের প্রয়োজন হয় ততটুকুই গল্পের মধ্যে থাকে। এছাড়াও ছোটগল্পের ভাষা হয় অত্যন্ত সহজ-সরল। ছোটগল্পের এ সব বৈশিষ্ট্যের নিরিখে বলাইচাঁদের ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটির সার্থকতা বিচার করা প্রয়োজন।

‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটির বিষয়বস্তু একমুখী। গল্পে দেখা যায় হারু ঘোষের মেজ ছেলে ন্যাপলাকে বিষধর গোখরা কামড় মেরে ইঁটের গাদার ভেতরে লুকিয়ে পড়ে। দুপুরের প্রখর রৌদ্রে বিশেষ কোনো কাজ না থাকলে যেখানে মানুষ বেরোতে চায় না সে জায়গায় গ্রামের মানুষ সাপটিকে দেখার জন্য ভিড় করে আছে। বিশু বাগদী নামে গ্রামের এক সাহসী যুবক সাপটির লেজে বল্লমবিদ্ধ করে ইঁটের গাদার ভেতর থেকে বের করে আনে। বল্লমবিদ্ধ সাপটি ফণা তুলে তর্জন-গর্জন করছে, তা দেখবার মতো দৃশ্য। সে সময় আগন্তুকের আগমন ঘটে। তাকে গ্রামবাসী মস্ত গুণী ওঝা মনে করে। তাঁর কথামতো গ্রামবাসী দ্বারা ন্যাপলার ডাক্তারের দেওয়া বাঁধন খোলা হয় ও বল্লম মুক্ত করে দেওয়া হয় সাপটিকে। তারপর সাপটিকে আগন্তুক ডান-বাম হাতে নিলে সাপের দংশনে তার মৃত্যু হয়। পরে দেখা যায় হারু ঘোষের পুত্র ন্যাপলা ও আগন্তুকের মৃতদেহ একসঙ্গে পড়ে আছে।

দারোগা’ এসে আগন্তুকের মুখ নিরীক্ষণ করে বলে যে, একেই তো তারা খুঁজছে। সে পাগলা গারদ থেকে পালিয়ে এসেছে। তখন এ কথা শুনে বিশু বাগদী বলল, এখানে সবাই পাগল। সবাইকে পাগলা গারদে পুরে দেওয়া উচিত। তারপর দেখা যায় সন্ধ্যার অন্ধকার ঘনিয়ে এলে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এখানেই গল্পের সমাপ্তি ঘটে। গল্পটি পাঠের পর পাঠকের মনে অতৃপ্ত ভাব থেকে যায়। মনে হয় গল্পটির পরিধি আরেকটু প্রসারিত হলে ভালো হত।

সুতরাং বলা যায় গল্পে সহজ-সরল ভাষার ব্যবহার, বিষয়বস্তুর একমুখীনতা, চরিত্র ও বিষয়ের মেলবন্ধন, পরিশেষে ‘শেষ হয়েও হল না শেষ’ অর্থাৎ পাঠক মনের অতৃপ্ত ভাব এ সব কিছুর দিকে লক্ষ্য রেখে বলা যায় বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের ‘দিবা দ্বিপ্রহরে’ গল্পটি নিঃসন্দেহে একটি সার্থক ছোটগল্প।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top