Class 11 Bengali Chapter 14 সৃষ্টির আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি

Class 11 Bengali Chapter 14 সৃষ্টির আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি Question Answer | SEBA Class 11 Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Class 11 Bengali Chapter 14 সৃষ্টির আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি Notes and select needs one.

Class 11 Bengali Chapter 14 সৃষ্টির আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 11 Bengali Chapter 14 সৃষ্টির আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 11 Bengali Chapter 14 সৃষ্টির আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি Solutions for All Subjects, You can practice these here.

সৃষ্টির আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি

Chapter: 14

বাংলা (MIL)

প্রশ্নোত্তরঃ

১। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

(ক) ‘সৃষ্টির আদিকতা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি’ গল্পটি কোন উপজাতি সম্পৰ্কীয়?

উত্তরঃ ‘সৃষ্টির’ আদিকথা ও জুমচাষ প্রচলনের কাহিনি’ গল্পটি চাকমা উপজাতি সম্পৰ্কীয় ।

(খ) পাঠ্য গল্পটির লেখক কে?

উত্তরঃ পাঠ্য গল্পটির লেখক নিরঞ্জন চাকমা।

(গ) চাকমা ভাষায় ঈশ্বরকে কী বলে?

উত্তরঃ চাকমা ভাষায় ঈশ্বরকে গোজেন বলে।

(ঘ) গোজেনের সন্তানের নাম কী?

উত্তরঃ কাঁকড়া দৈত্য।

(ঙ) হিমপাত বন্ধ করার জন্য গোজেন কাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন?

উত্তরঃ হিমপাত বন্ধ করার জন্য গোজেন কালেইয়্যাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন।

(চ) কালেইয়্যার ব্যর্থতার পর গোজেন কাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন?

উত্তরঃ কালেইয়্যার ব্যর্থতার পর গোজেন গঙ্গাপুত্র বিয়াত্রাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন।

(ছ) ছদ্মবেসী মাহ লখী মা কাকে বিয়ে করেছিলেন?

উত্তরঃ ছদ্মবেশী মাহ্লখী মা মচ্ছিঙ্যা কে বিয়ে করেছিলেন।

২। সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্ন : 

(ক) গল্পটিতে উল্লেখ আছে এমন কিছু দেব-দেবীর নাম লেখো।

উত্তরঃ ‘গল্পটিতে উল্লেখ আছে এমন দেব-দেবী হলেন – গোজেন, কালেইয়্যা, বিয়াত্রা, মা লক্ষ্মী মা, কাঁকড়া, শূকর, মাকড়সা মা লক্ষ্মীর বাহন মে-মে ছাগলী।

(খ) গোজেনের আদলে সৃষ্ট পৃথিবীর প্রথম মানব মানবীর নাম কী?

উত্তরঃ গোজেনের আদলে সৃষ্ট পৃথিবীর প্রথম মানব মানবীয় নাম কেদুগা ও কেদুগী।

(গ) জঘনা ফল মানুষের অভক্ষ্য হয়ে গেল কেন?

উত্তরঃ প্রকৃতির নিয়মে সংখ্যাতীত বৎসর কেটে যাবার পর এক সময় যখন পৃথিবীতে প্রচণ্ড হিমপাত হল এবং বৃক্ষরা মরে যেতে থাকল তখন ফলের অভাবে পৃথিবীতে মন্তন্তর দেখা দিল। এখন গোজেন স্বর্গ থেকে কালেইয়্যা নামক দেবতাকে এই পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া করার জন্য পাঠালেন। কালেইয়্যা এসে হিমপাত বন্ধ করলেন কিন্তু মন্বন্তর ঠিক হল না। তখন তিনি বৃক্ষদের জিজ্ঞেস করলেন তারা তাদের ফল দিয়ে মনুষ্য জাতিকে কতদিন পালন করতে পারবে, তখন উত্তরে অন্যান্য ফল বৃক্ষরা যদিও এক দুমাস থেকে একবছর পর্যন্ত চালাতে পারবে বলে জানালেও জঘনা বৃক্ষ বলল চিরকাল বাঁচিয়ে রাখতে পারবে মানুষকে তার ফল দিয়ে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল এক দুমাস যেতে না যেতেই মানুষ ও অন্যান্য প্রাণী জঘনার সব ফল খেয়ে শেষ করে দিল। তখন কালেইয়্যা দেবতা প্রচণ্ড রেগে গিয়ে জঘনা বৃক্ষদের অভিশাপ দিলেন। আর এই অভিশাপের কারণে জঘনা ফল হয়ে গেল মানুষের অভক্ষ্য।

(ঘ) প্রচণ্ড হিমপাতের ফলে পৃথিবীতে কি হয়েছিল?

উত্তরঃ প্রচণ্ড হিমপাতের পলে পৃথিবীতে গাছপালা মরে যেতে লাগল। কমে যেতে থাকল ফলবান বৃক্ষের সংখ্যা। আর ফলে পৃথিবীতে মন্বন্তর দেখা দিল। পৃথিবী জুড়ে হাহাকার পড়ে গেল।

(ঙ) সোনার টোপর কার, কেন প্রাপ্য ছিল? কে পেয়েছিল এবং কেন?

উত্তরঃ সোনার টোপর মা লখী মায়ের বাহন পেঁচার প্রাপ্য ছিল।

কারণ মা লকখীর নির্দেশে পেঁচা সারারাত্রি জেগে উড়ে উড়ে মর্ত্যধামে মহা লখী মা-র মর্তে আগমনের খবরটি জানিয়েছিল।

কিন্তু সোনার টোপরটি পেয়েছিল কাঠ ঠোকরা পাখি। কারণ পেঁচা যখন খবরটি সারারাত জুড়ে বিস্তার করে ভোরের দিকে একটু বিশ্রামের জন্য একটি ঝোপের আড়ালে গিয়ে বসল। তখন গ্রামবাসীরা মা লকখীর আগমনের বার্তায় আনন্দে আত্মহারা হয়ে একটি সোনার টোপর সঙ্গে নিয়ে শুভ সংবাদ জ্ঞাপনাকারী পাখিটির খোঁজে বেরিয়েছিল। কিছু দূর গিয়ে তারা দেখতে পেয়েছিল একটা মরা গাছের ডালে একটি কাঠঠোকরা পাখি ঠোকর মারছিল পোকার সন্ধানে। গ্রামবাসীরা ভাবল এই পাখিই বুঝি সেই শুভসংবাদ জ্ঞাপনকারী তাই তারা কাঠঠোকরা পাখিকে সোনার টোপরটি পরিয়ে দিয়েছিল।

(চ) কোন মাসের, কোন বার কোন সময় মাহ লখী মা কেন ছদ্মবেশে লোকালয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন?

উত্তরঃ মাহ লকখী মা ভাদ্র মাসের মঙ্গলবারে অপরাহ্ন বেলার সময়, সাধারণ সাদা পোশাক পরিহিতা মধ্য বয়েসি এক বিধবা নারীর বেশে লোকালয়ে আবির্ভূতা হয়েছিলেন।

মা লককী ছদ্মবেশে লোকালয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন কারণ তিনি তার আসল পরিচয় গোপন করার জন্য। এবং ছদ্মবেশে মিচ্ছিঙ্যা নামক গৃহস্থের বাড়িতে এসে তিনি তাদের দারিদ্রতা দূর করতে চেয়েছিলেন এবং লোকালয়ে জুমের চাষের প্রচলন করা ও তার প্রক্রিয়া শেখানোর উদ্দেশ্যে তিনি এই ছদ্মবেশ ধারণ করেছিলেন।

৩। দীর্ঘ উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ

(ক) কালেইয়্যার ব্যর্থতার পর গোজেন কাকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন? তিনি কী করেছিলেন?

উত্তরঃ কালেইয়্যার ব্যর্থতার পর গোজেন স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে গঙ্গাপুত্র বিয়াত্রাকে পাঠালেন।

বিয়াত্রা দেবতা পৃথিবীতে এসে প্রাণীকূলের জীবন রক্ষার্থে সুস্বাদু ফল ছাড়াও ভুট্টা, যব, জোয়ার ইত্যাদি চালু করলেন। কেবল তাই নয়, তিনি মনুষ্য সমাজকে শেখালেন আগুনের ব্যবহার ও গৃহ নির্মাণের কৌশল। তিনি মনস্থ করলেন পৃথিবীতে মনুষ্য জাতির খাদ্যাভাব চিরতরে মেটাবার জন্য স্বর্গ থেকে মাহ লক্‌খী মা কে পৃথিবীতে নিয়ে আসবেন। তাই তিনি কালেইয়্যা দেবতাকে স্বর্গে পাঠালেন মাহ লখী মা কে আমন্ত্রণ জানিয়ে পৃথিবীতে নিয়ে আসার জন্য। পরিকল্পনা মতো কালেইয়্যা স্বর্গে গেলেন ঠিকই, কিন্তু মা্ লকখী মাকে সন্তুষ্ট করতে পারলেন না। কারণ কালেইয়্যা স্বর্গে পৌঁছে যথারীতি ভক্তি সহকারে মাহ্ লখী মা কে পৃথিবীতে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানালেন। তবে মা লকখী মা কোনো প্রতিশ্রুতি না দিয়ে কালেইয়্যাকে মদ্য, ভাং ইত্যাদির দ্বারা আপ্যায়ন করলেন। কালেইয়্যা সাগ্রহে তা গ্রহণ করে শেষ পর্যন্ত মাতাল হয়ে মা লক্খী মাকে কখনো ‘মা’ আবার কখনো ‘দিদি’ সম্বোধন করলেন। কালেইয়্যা দেবতার এই অবস্থা দেখে মা লক্‌খী মা তার সঙ্গে পৃথিবীতে যেতে রাজি হলেন না।

(খ) কার আমন্ত্রণে মাহ লখী মা পৃথিবীতে এসেছিলেন? তিনি এসে প্রথমে কী করেছিলেন?

উত্তরঃ কালেইয়্যা মা লকখী মাকে পৃথিবীতে নিয়ে আসতে ব্যর্থ হলে স্বয়ং বিয়াত্রা দেবতা স্বর্গে গেলেন। এবং বিয়াত্রা দেবতার আমন্ত্রণে মা লখী মা পৃথিবীতে এসেছিলেন।

মা লকখী মা বিয়াত্রা দেবতার আমন্ত্রণে প্রসন্ন হয়ে বিয়াত্রার সঙ্গে পৃথিবীতে আসতে সন্মতি জানালেন। তিনি পৃথিবীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করার সময় ধান্যসহ যাবতীয় খাদ্যশস্যের এবং সবজির বীজ একটি করে নিয়ে তা একটি কাপড়ের পুঁটুলিতে বেঁধে সঙ্গে নিলেন। এবং তার প্রিয় বাহন মে-মে ছাগলী মানে পেঁচার পিঠে চেঁপে বিয়াত্রার সঙ্গে পৃথিবীতে আসেন।

মাহ লকখী মা পৃথিবীতে এসে প্রথমে সন্তুষ্ট হয়ে বিয়াত্রা ও তার সঙ্গের আরো তিনজন দেবতা, শূকর, মাকড়সা ও কাঁকড়াকে বর প্রদান করলেন। কারণ মা লকখী মাকে দুধ সাগর পার করিয়েছে এই তিনজন দেবতা বিয়াত্রার নির্দেশে। তাই তিনি তাদের বর প্রদান করলেন। এরপর মা লখী তার বাহন পেঁচাকে বললেন যে পেঁচা যেন মা লখীর মর্তে আগমনের বার্তাটি সর্বত্র জানিয়ে দেয়। পেঁচা মা লক্খীর নির্দেশমতো সারারাত উড়ে উড়ে মা লক্‌খী মর্তে আগমনের সুসংবাদটি গ্রামবাসীদের জানিয়ে দেয়।

(গ) দুধ সাগর পার করার সময় মাহ লকখী মাকে কারা সাহায্য করেছিল? তিনি তাদের কী কী বর দিয়েছিলেন?

উত্তরঃ স্বর্গ থেকে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে আসার পথে এক বিশাল দুধ সাগরের মুখোমুখি হলেন মা লক্‌খী মা। তখন মাহ লকখী মা বিয়াত্রা বললেন এই দুধ সাগর পার হওয়ার উপায় করতে। বিয়াত্রা আগে থেকেই জানতেন এই অবস্থার কথা অই তিনি স্বর্গে যাবার পথে আগে থেকেই একটি কাকড়া, শূকর ও একটি মাকড়সাকে দুধ সাগরের পারে বসিয়ে রেখে গিয়েছিলেন। তাই মা লখীর নির্দেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই তিন প্রাণীকে বিয়াত্রা ডেকে আনলেন। এরপর বিয়াত্রার কথা মতো প্রথমে কাকড়াটি ভাসল জলে এরপর কাঁকড়াটির পিঠের উপর শূকরটি গিয়ে দাড়াল। এদিকে মাকড়সাটি তার পেটেও আঁশ দিয়ে দুধ সাগরের এপার ওপার দিল বেঁধে যাতে মা লক্‌খী মা ধরে ধরে দুধ সাগর পেরোতে পারে। এদিকে পেঁচা মা লক্‌খী মাকে পিঠে চাপিয়ে উড়ে গিয়ে বসল শূকরটির পিঠের ওপর। আর কাকড়াটি ভেসে চলল দুধ সাগরের উপর দিয়ে। আর এভাবেই এই তিন প্রাণী মা-লক্খীকে স্বচ্ছন্দে দুধ সাগরটি পার করালো।

দুধ-সাগর পরা হয়ে মা লকখী পরম সন্তুষ্ট হলেন। তিনি কাকড়া, শূকর, মাকড়সা এবং বিয়াত্রা দেবতাকে একটি করে বর দিলেন। তিনি কাঁকড়াকে বর দিলেন যে কাঁকড়া এবার থেকে স্থল ও জলে সমানভাবে বিচরণ করতে পারবে। শূকরকে বর দিলেন যে, শূকর পশুকুলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চর্বির অধিকারী হবে। আবার মাকড়সাকে বর দিলেন যে, মাকড়সার পেটের আঁশ কখনো ফুরোবে না এবং মনুষ্যকুলে দেবতা পূজার সময় বিয়াত্রা সবার আগে পূজা পাবেন।

(ঘ) মাহ্ লকখী মা লোকালয়ে এসে কী করেছিলেন বিস্তারিত লেখো।

উত্তরঃ মাহ্‌কখী মা লোকালয়ে এসে উপস্থিত হলেন ছদ্মবেশে। তিনি ভাদ্র মাসের মঙ্গলবারে অপরাহ্ন বেলায় এক বিধবা নারীর বেশে লোকালয়ে আবির্ভূতা হয়ে প্রথমেই এক মিচ্ছিঙ্যা নামক এক বিপত্নীক গৃহস্থের বাড়িতে উঠলেন। মাহ্ লকখী যখন মিচ্ছিঙ্যার গৃহে এলেন তখন মিচ্ছিঙ্যা খাদ্যের সন্ধানে বাড়ির বাইরে গেলেন, ছোট গৃহে তখন নিরন্ন অবস্থায় ক্ষুধায় কাতর হয়ে তার ছোট তিন মেয়ে অঘোরে ঘুমোচ্ছিল। মা লখী প্রথমে ছোট ছোট মেয়েদেরকে জাগিয়ে তুললেন তারপর তাদের পরিচয় জেনে, নিজের আসল পরিচয় গোপন করে, মিচ্ছিঙ্যার বড়ো মেয়েটিকে একটি বেতের ঝুড়ি আনতে বললেন এবং ঝুড়ি আনলে মা লখী তাঁর কাপড়ের পুটুলির থেকে একটি মাত্র চাল রাখলেন এবং একটি কুলো দিয়ে তা ঢেকে রাখলেন। তারপর তিনি মেয়েটিকে উনুনে আগুন জ্বেলে এই ঝুড়ি থেকে পরিমাণ মত চাল নিয়ে রান্না করতে বললেন। মেয়েটি যদিও অবাক হয়েছিল কিন্তু মা লক্খীর নির্দেশ পালন করেছিল। এবং শেষ পর্যন্ত রান্না করে পেট ভরে সবাই খেল। মিচ্ছিঙ্যা সন্ধ্যে বেলা ফিরে এসে সমস্ত বৃত্তান্ত শুনে যখন জানতে পারল বৃদ্ধা মহিলাটি কেউ এবং তিনি এখানেই চিরদিনের জন্য থাকবেন তখন মিচ্ছিঙ্যা তা খুশি মনেই গ্রহণ করলেন।

এরপর মিচ্ছিঙ্যা ও বুড়ী ঘর সংসার পেতে তিন মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে থাকতে লাগলেন। মিচ্ছিঙ্যা একটা অলস প্রকৃতির লোক। তবু তাকে দিয়ে বুড়ি মা লক্‌খী জঙ্গলের উর্বর জায়গা চিহ্নিত করতে পাঠান এবং সেই জায়গার জঙ্গল পরিস্কার করতে পাঠান। মিচ্ছিঙ্যা বুড়ির নির্দেশ মতে সেই জঙ্গল পরিস্কার করতে গিয়ে দেখল জঙ্গল কাটা হয়ে গেছে। তারপর চৈত্রের শেষের দিকে বুড়ির নির্দেশমতো মিচ্ছিঙ্যা জঙ্গলের শুকনো গাছপাতা আগুনে পোড়াল। এর দু-একদিন পর বুড়ি নিজেই জুমে গেলেন। তিনি সেদিন জুমের আধপোড়া ডালপালা সব পরিস্কার করে জুম খেতে ধান ও অন্যান্য ফসলের বীজ রোপণ করে এলেন। এরপর আবার আরেকদিন বুড়ি জুমে গিয়ে জুমের যাবতীয় বুনো ঘাস ও আগাছাগুলো সাফ করে জুমের উত্তর প্রান্তে একটি বিরাট গর্তের মধ্যে ঢুকিয়ে গর্তের মুখটি চাপা দিয়ে এলেন। এর বেশ কয়েকদিন পর বুড়ি বুড়োকে জঙ্গল দেখার জন্য পাঠালেন আর সাবধান করে দিলেন উত্তরের দিকে যেতে না। কিন্তু বুড়ো যথারীতি জঙ্গলে গিয়ে দেখল সুন্দর জুমখতে, ধানের কচি সবুজ চারাগুলো ছলছে, বুড়ো উৎফুল্ল হল আবার উৎসুক্য হয়ে বুড়ির নিষেধ আজ্ঞা অমান্য করে উত্তরের সেই গর্তের দিকে গেল এবং গর্তের সামনে গিয়ে দেখতে পেল কান্নার আওয়াজ তারপর গর্তের মুখ খুলে গিয়ে দেখতে পেল গর্তের ভেতরে অজস্র বুনোঘাস ও আগাছা। গর্তের মুখ খুলতেই তারা হুড় মুড়িয়ে বেড়িয়ে এসে সারা জুম খেত জুড়ে যার যার জায়গায় ঝটপট বাস পড়ল। এরপর বুড়া বুড়িকে গিয়ে সব বলল। তারপর বুড়ি পরের দিন নিজেই জুমে গেলেন। বুড়িকে দেখে জুমের বুনোঘাস ও আগাছা সব পালিয়ে গেল তবুও তিনি তাদের ধরে আবার গর্তে পুরে পাথর চাপা দিলেন।

আষাঢ় শ্রাবণ মাসে বৃষ্টির জল পেয়ে জুমের ধান ও সবজির চারা বেড়ে উঠল, এবং ক্রমশঃ ধান পুষ্ট হয়ে পেকে উঠল। তারপর বুড়ি ‘বুড়োকে বললেন গ্রামে গেরস্থদের জানাতে যে তারা সবাই নিজেদের প্রয়োজন মতে জুম থেকে পাকা ধান কেটে নিয়ে যায়। এরপর বুড়ো প্রতিটি গ্রামে খবরটি বিস্তার করে দিল। তারপর নির্দিষ্ট শনিবার দিনে গ্রামবাসীরা কাস্তে ও বেতের ঝুড়ি নিয়ে ধান কাটতে এল।

অন্যদিকে মা লক্‌খী মা জুম খেতে আগে থেকে তৈরী করা একটি বেদীর উপর উঠে নিজের আত্মপরিচয় দিয়ে সমবেত গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্য জুম চাষের মাহাত্ম্য, জুম কৃষির প্রতিটি পর্বের কাজ সবিস্তারে বর্ণনা করলেন।

অবশেষে তিনি এটাও জানালেন যে “আমি যে গৃহস্থের বাড়িতে অবস্থান করি সেই গৃহস্থের পরিবার সর্বদা ধনে সম্পদে বিত্ত বৈভবে পরিপূর্ণ থাকে, অভাব বলতে কিছুই থাকে না। কিন্তু আমি কেবল সুগৃহিণী ও সৎচরিত্র ব্যক্তিদের ঘরেই অবস্থান করি। যে ঘরে সকাল সন্ধে অকথ্য ভাষা উচ্চারিত হয়, সে ঘরে আমি থাকি না।” এই কথাগুলো বলে মাহ লখী মা পুনরায় স্বর্গে চলে গেলেন।

শব্দৰ্থ :

রৌদ্রকরোজ্জ্বল – ভরা রোদ।

নিরুত্তর – উত্তরহীন।

ন্যস্ত – অর্পিত।

সংখ্যাতীত – যা সংখ্যায় গণনা করা যায় না বা সংখ্যায় অনেক।

প্রসন্ন – খুশি।

করিতকর্মা – যে কাজে দক্ষ।

জ্ঞাপনকারী – যে খবর জানায়।

ব্যভিচারী – যে অনৈতিক আচরণ করে, অমিতাচারী।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top