Class 11 Bengali Chapter 4 বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি

Class 11 Bengali Chapter 4 বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি Question Answer | SEBA Class 11 Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Class 11 Bengali Chapter 4 বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি Notes and select needs one.

Class 11 Bengali Chapter 4 বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 11 Bengali Chapter 4 বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 11 Bengali Chapter 4 বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি Solutions for All Subject, You can practice these here.

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি

Chapter: 4

বাংলা (MIL)

প্রশ্নোত্তরঃ

১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্ন :

(ক) ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?

উত্তরঃ ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ কবিতাটি জীবনানন্দের ‘রূপসী বাংলা’ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত।

(খ) ডুমুর গাছের পাতার নীচে কবি কোন পাখিকে বসে থাকতে দেখেছিলেন?

উত্তরঃ ডুমুর গাছের পাতার নীচে কবি দোয়েল পাখিকে বসে থাকতে দেখেছিলেন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Join Now

(গ) শ্যামা কী?

উত্তরঃ শ্যামা একজাতী পাখি।

২। সংক্ষিপ্ত উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ

(ক) ফণী মনসার ঝোপে শটিবনে’ কীসের ছায়া পড়েছিল?

উত্তরঃ কবি অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে নীচে ভোরের দোয়েল পাখিকে বসে থাকতে দেখেছেন। কবি চারদিকে চেয়ে দেখেছেন পল্লবের স্তূপ জাম বট কাঠালের হিজলের অশম্বের গাছ। আর এই গাছগুলোর ছায়া ফণী মনসার ঝোপে শটিবনে পড়তে দেখেছেন।

(খ) “বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি” কবিতায় উল্লেখ আছে এমন অন্তত তিনটি গাছের নাম লেখো।

উত্তরঃ তিনটি গাছের নাম জামগাছ, বটগাছ, কাঠাল গাছ।

(গ) “বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি” কবিতায় উল্লেখ আছে এখন অন্তত তিনটি পাখির নাম লেখো?

উত্তরঃ বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি কবিতায় উল্লেখ আছে এমন তিনটি পাখির নাম – দোয়েল পাখি, শ্যামা পাখি আর খঞ্জনা পাখি।

৩। দীর্ঘ উত্তরের জন্য প্রশ্নঃ

(ক) “বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি” কবিতা অবলম্বনে কবির অনুভূতি তোমার নিজের ভাষায় ব্যক্ত করো।

উত্তরঃ প্রকৃতিপ্রেমী কবি জীবনানন্দ দাশ তাঁর কবিতারাজির মধ্যে বাংলার পল্লী প্রকৃতির অপরূপ সব ছবি সাজিয়ে তুলেছেন। তাঁর কবিতার মধ্যে গ্রাম বাংলা এক অনন্য মহিমায় উন্নীত হয়েছে। পৃথিবীর সব সৌন্দর্য তিনি বাংলাদেশের মধ্যেই খুঁজে পেয়েছেন। বাংলার প্রকৃতি তাঁকে এতটাই মুগ্ধ করেছে যে তিনি আর পৃথিবীর অন্যত্র বিচরণ করতে রাজি নন। তিনি বাংলাদেশের বাইরের পৃথিবী সম্বন্ধে অজ্ঞাত ছিলেন না বরং বাংলাদেশের মধ্যেই পৃথিবীর সমস্ত সৌন্দর্যের কারুকার্য লক্ষ্য করে নিয়ে আর বাইরের জগতের প্রতি আকৃষ্ট হওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেননি। তাঁর কবিতায় বর্ণিত বাংলার প্রকৃতি, বৃক্ষ-লতা, নদী, পশু-পাখি লৌকিক কাহিনি, পরিবেশ প্রভৃতি সবকিছুর মধ্য দিয়ে বাংলার শাশ্বত রূপটিই ফুটে উঠেছে। এরূপ শুধু মাত্র নৈসর্গিক নয় কবি কল্পনায় দৃষ্ট নতুনভাবে সৃষ্ট এক এক অপরূপ রূপচ্ছবি। কবি বাংলার রূপকে কেবল মাত্র ক্ষণিকের মুগ্ধতায় প্রত্যক্ষ করেননি বরং চাঁদ সদাগর ও বেহুলার প্রসঙ্গ টেনে এনে তাতে আহবমান কালের বিশেষত্ব স্থাপন করে দিয়েছেন। কবির ধারণায় মধুকর ডিঙায় চড়ে সমুদ্র যাত্রার সময় চাঁদ সদাগর এবং কলা গাছের ভেলায় চড়ে গাঙুর নদীর জলে ভেসে চলার সময় বেহুলাও বাংলার পল্লী প্রকৃতির এই অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন করেছিলেন। যুগ যুগ ধরে বাংলার প্রাকৃতিক অবয়ব মনলোভা হয়ে রয়েছে, রূপ পিপাসুর তৃষ্ণা নিবারণ করে চলেছে, জীবনানন্দের বর্ণনায় এমনি ভাবে বাংলার রূপ হয়ে উঠেছে বিশ্বের রূপ ভাণ্ডার। জীবনানন্দের মতো এমনি করে আর কোনো কবি বাংলার রূপের ছটায় বিমুগ্ধ হয়ে যাননি, ফলে বাংলার রূপ বর্ণনায় আর কেউ তাঁর সমকক্ষহয়ে উঠতে পারেননি। সত্যিই এক্ষেত্রে কবি জীবনানন্দ দাশ তুলনারহিত।

(খ) ব্যাখ্যা করো :

একদিন অমরায় গিয়ে

ছিন্ন খঞ্জনার মতো যখন সে নেচেছিল ইন্দ্রের সভায়

বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তাঁর কেঁদেছিল পায়।

উত্তরঃ আলোচ্য কবিতাংশটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা’ কাব্য গ্রন্থের অন্তর্গত ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। কবি এখানে মনসা মঙ্গল কাব্যের বেহুলা প্রসঙ্গের মধ্য দিয়ে বাংলার প্রকৃতির শাশ্বত সৌন্দর্যের জয়গান করেছেন।

প্রকৃতিপ্রেমী কবি জীবনানন্দ দাশ বাংলার রূপ বর্ণনা করতে গিয়ে তাতে শাশ্বত সৌন্দর্যের মহিমা ফুটিয়ে তুলেছেন । বাসর ঘরে সর্প দংশনে লক্ষীন্দরের মৃত্যু হলে, মৃত স্বামীকে নিয়ে কলা গাছের ভেলায় চড়ে গাঙুড়ের জলে ভেসে ভেসে বেহুলা স্বর্গে গিয়ে পৌঁছেছিলেন। সেখানে দেবরাজ ইন্দ্রের সভায় নৃত্যগীতের মাধ্যমে দেবতাদের সন্তুষ্ট করে বেহুলা মৃত স্বামীর পুনর্জীবন লাভ করেছিলেন। কবি বেহুলার এই নৃত্যগীতের মধ্যে বাংলার প্রকৃতির নিবিড় সংযোগ আবিস্কার করেছেন। দুঃখ কাতর বেহুলা দেবতাদের সন্তুষ্ট করতে গিয়ে যখন খঞ্জনা পাখির নৃত্যচ্ছন্দে নৃত্যকলা প্রদর্শন করেছিলেন তখন সমগ্র বাংলার প্রকৃতি বাংলার নদী, মাঠ, ভাঁটফুল ঘুঙুরের মতো তাঁর পায়ে বেজেছিল। সেই বাজনা ছিল কান্নারই মতো। দেবতারা সন্তুষ্ট না হওয়া পর্যন্ত বেহুলা এক নাগাড়ে নেচে চলেছিলেন। তাঁর সে করুণ নৃত্যের মধ্যে সমগ্র বাংলার নিগর্স প্রকৃতি ঘুঙুরের মতো কেঁদেছিল বলে কবি কল্পনায় ধরা পড়েছে।

অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ 

(ক) ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ কবিতাটি কার রচিত?

উত্তরঃ কবি জীবনানন্দ দাশের।

(খ) কবিতাটির তাঁর কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?

উত্তরঃ ‘রূপসী বাংলা’ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।

(গ) কত খ্রিস্টাব্দে কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল?

উত্তরঃ ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে।

(ঘ) ফণীমনসা কী?

উত্তরঃ এক ধরনের কাঁটাযুক্ত গাছ।

(ঙ) খঞ্জনা কী?

উত্তরঃ এক ধরনের স্ত্রী জাতীয় পাখি।

(চ) অমরা কোথায় অবস্থিত?

উত্তরঃ অমরা স্বর্গে অবস্থিত।

(ছ) কার পায়ে বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল কেঁদেছিল?

উত্তরঃ বেহুলার পায়ে বাংলার নদী মাঠ ভাঁটফুল কেঁদেছিল।

(জ) কোন তিথিতে বেহুলা অমরার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিল?

উত্তরঃ কৃষ্ণা দ্বাদশী তিথিতে।

২। সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ  

(ক) কবি পৃথিবীর রূপ দেখতে আগ্রহী নন কেন?

উত্তরঃ কবি বাংলার অপরূপ, মর্মস্পর্শী এবং তৃপ্তিদায়ক নিগর্স জগৎ থেকে তাঁর রূপতৃষ্ণা মিটিয়ে নিয়েছেন তাই তিনি পৃথিবীর রূপ দেখতে আগ্রহী নন।

(খ) দোয়েল পাখিকে কবি কোথায় বসে থাকতে দেখেছিলেন তখন সময় কী ছিল?

উত্তরঃ ডুমুর গাছের বড়ো পাতাটির নীচে কবি দোয়েল পাখিকে বসে থাকতে দেখেছিলেন। তখন সময় ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন অর্থাৎ রাত্রি।

(গ) চম্পা কী?

উত্তরঃ চম্পা হল চম্পক নগর। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার একটি প্রাচীন রাজ্য। প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলার বণিক সম্প্রদায় বাণিজ্য করতে সেখানে যেতেন।

(ঘ) বেহুলা কোন নদী বেয়ে যাচ্ছিলেন? তাঁর গন্তব্য কোথায় ছিল?

উত্তরঃ বেহুলা গাঙুড় নদী বেয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর গন্তব্যস্থল ছিল অনির্দিষ্ট, তিনি গাঙুরের পথ বেয়ে অজানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছিলেন।

(ঙ) বেহুলা ইন্দ্রের সভায় যাত্রাকালে কার গান শুনেছিলেন? তাঁর নাচকে কার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তরঃ বেহুলা ইন্দ্রের সভায় যাত্রাকালে শ্যামা পাখির গান শুনেছিলেন। বেহুলার নাচকে ছিন্ন খঞ্জনার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

(চ) বেহুলার যাত্রাপথে প্রাকৃতিক দৃশ্যের পরিচয় কবির অনুসরণে লেখো।

উত্তরঃ বেহুলা তাঁর মৃত স্বামীকে নিয়ে কলা গাছের ভেলায় করে গাঙুড়ের জলে ভেসে চলার সময় কৃষ্ণা দ্বাদশীর মরা জ্যোৎস্নায় নদীর চড়ায় সোণালী ধান সহ অসংখ্য অশ্বত্থ বট প্রভৃতি বৃক্ষ দেখেছিলেন। এমনকি ইন্দ্রের সভায় নৃত্য প্রদর্শন করার সময় শ্যামার নরম গান শুনেছিলেন। সেসময় বাংলার নদী মাঠ ভাটফুল তার পায়ে ঘুঙুরের আওয়াজ তুলেছিল। গাঙুরের জলে ভেসে চলার সময় অন্ধকার ভেদ করে বাংলার অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্যরাজি বেহুলায় চোখে ধরা পড়েছিল বলে কবি কল্পনা করেছেন।

৩। টীকা লেখো :

(ক) চাঁদ। 

(খ) বেহুলা।

উত্তৰঃ (ক) চাঁদ – চাঁদ হলেন মনসা মঙ্গল কাব্যের বিখ্যাত বণিক চাঁদ সদাগর বা চন্দ্রধর সদাগর। তিনি ছিলেন শিবের উপাসক। তাই লৌকিক দেবী মনসার পূজা দিতে তিনি অসন্মতি প্রকাশ করেন। এতে দেবী মনসা কূপিত হয়ে চাঁদ সদাগরের সাতখানা বাণিজ্য তরী সমুদ্রে ডুবিয়ে দেন এবং একে একে ছয়জন পুত্রকে হত্যা করেন। কনিষ্ঠ পুত্র লখীন্দরের মৃত্যুর পর পুত্রবধু বেহুলার কাতর অনুরোধে তিনি মনসার পূজা দিতে রাজি হন। তাঁর বাম হাতের পূজা পেয়ে এতেই সন্তুষ্ট হয়ে গিয়ে দেবী মনসা চাঁদ সদাসগেরর বাণিজ্য তরিগুলো জলের উপরে ভাসিয়ে তোলা ও ছেলেদেরকে পুনরুজ্জীবিত করে দেন।

(খ) বেহুলা – বেহুলা হলেন মনসা মঙ্গল কাব্যের নায়িকা। তিনি ছিলেন উজানী নগরের সদাগর সায়াবেনের কন্যা। চাঁদ সদাগরের কনিষ্ঠ পুত্র লখীন্দরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। বেহুলার শ্বশুর ছিলেন শিবের উপাসক, তাই তিনি দেবী মনসার পূজা দিতে রাজি ছিলেন না। এতে মনসা চাঁদ সদাগরের উপর কুপিত ছিলেন। মনসার কোপে লোহার বাসর ঘরে কালনাগিনীর দংশনে লখীন্দর প্রাণ হারালে বেহুলা তাকে নিয়ে কলাগাছের ভেলায় চড়ে গাড় নদীর জলে ভেসে ভেসে স্বর্গে গিয়ে পৌঁছেন। দেবতাদেরকে নৃত্যগীতে সন্তুষ্ট করে স্বামীর পুনজ্জীবন লাভ করেন। শ্বশুরকে দিয়েও জোর করে মনসার পূজা করান।

৪। ব্যাখ্যা করো।

(ক) ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।’

উত্তরঃ আলোচ্য কবিতাংশটি কবি জীবনানন্দ দাশের ‘রূপসী বাংলা’ নামক কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ শীর্ষক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। কবি এখানে বাংলার রূপ সাগরে ডুব দিয়ে নিজের রূপ তৃষ্ণা নিবারণের প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেছেন।

কবি জীবনানন্দ দাশ ছিলেন প্রকৃতিপ্রেমী ও সৌন্দর্য পিপাসু। নিজের রূপ তৃষ্ণা নিবারণার্থে তিনি বাংলার প্রাকৃতিক উপাদানসমূহ মননশীল হৃদয়ে অবলোকন করেছেন। বাংলার প্রাকৃতিক রূপ সৌন্দর্য তাঁর হৃদয় হরণ করে নিয়েছে। আবহমান কালের বাংলার প্রকৃতি গাছপালা, কাহিনি উপখ্যান লতা-পাতা ফল-মূল সবকিছুই তাঁর চোখে অনন্য ও তুলনাতীত প্রতিপন্ন হয়েছে। বাংলার রূপ সাগরে ডুব দিয়ে তিনি এতটাই তৃপ্ত হয়েছেন যে রূপের সন্ধানে বাংলা ছেড়ে পৃথিবীর অন্যত্র বিচরণ করতে তাঁর আর প্রয়োজন নেই। পৃথিবীর রূপ বৈচিত্র সম্বন্ধে তিনি যথার্থ ভাবেই সচেতন। তবুও বাংলার রূপ মহিমা তাঁর কাছে এতটাই প্রকট যে পৃথিবীর রূপ খুঁজতে তিনি আর অন্য কোথাও যাননি। বাংলাই তাঁর কাছে পৃথিবীর সমুদয় রূপের আধার হিসাবে প্রতিপন্ন হয়েছে।

৫। দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নঃ

(ক) অন্ধকারে জেগে উঠে কবি কী দেখেছিলেন?

উত্তবঃ কবি অন্ধকারে জেগে উঠে দেখেছিলেন ডুমুরের গাছে ছাতার মতো বড়ো পাতার নীচে ভোরের দোয়েল পাখি বসে আছে। চারদিকে জাম, বঠ, কাঁঠাল হিজল, অশ্বত্থ গাছের পাতার স্তূপ। এদের ছায়া পড়েছে ফনীমনসা ও শটিবনের মতো গুল্মের ওপর।

(খ) কবির অনুসরণে বাংলার গাছ-গাছালির বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ কবি এখানে বাংলার মুখ ফুটিয়ে তুলেছেন কখনো ভোরের দোয়েল পাখি ডুমুর গাছের বড় বড় পাতার তলে বসে আছে। আরেক দিকে জাম, বট, কাঁঠাল, হিজল, অশ্বত্থ গাছের নিবিড় অবস্থান। এই গাছগুলো নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে যেন বাংলার স্নিগ্ধ প্রকৃতিকে শান্ত করে তুলেছে।

(গ) বেহুলার যাত্রাপথে প্রাকৃতিক দৃশ্যের পরিচয় কবির অনুসরণে লেখো।

উত্তবঃ চাঁদ সদাগরের কনিষ্ঠ পুত্রবধূ বেহুলা যখন মৃত স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে গাঙুরে ভেলা ভাসিয়ে স্বর্গলোকের উদ্দেশ্য যাত্রা করেছিল, তার সেই যাত্রায় যে বিষাদ ছিল, সেহ বিষাদ কবি ফুটিয়ে তুলেছেন ‘কৃষ্ণা দ্বাদশীর জ্যোৎস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চড়ায়’ – এহ একটি পংক্তির মাধ্যমে। তার সেই যাত্রায় বাংলার অপরূপ রূপের অন্তরালে এক বিষাদের বা হৃদয় ভাঙা কান্নার ফল্গুধারা মিলে মিশে একাকার হয়ে উঠেছে কবির কল্পনায়। এমনকি স্বামীর জীবন ফিরিয়ে আনতে বেহুলাকে নৃত্য করে ইন্দ্রকে যে খুশি করতে হয়েছিল – সেই হৃদয় নিংড়ানো কান্নার পেছনে নৃত্যের ভঙ্গী লয় তালে যেন বাংলারই অপরূপ সৌন্দর্য নদী মাঠ ভাঁটফুল তার পায়ের ঘুঙুরে কান্নার রোল হয়ে বেজে উঠেছিল।

(ঘ) বেহুলা কোথায় এবং কেন যাচ্ছিলেন? সেখানে গিয়ে তিনি কী করেছিলেন?

উত্তবঃ বেহুলা স্বৰ্গলোকে তাঁর স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছিলেন।

সেখানে গিয়ে বেহুলা স্বামীর প্রাণ ভিক্ষা চাওয়াতে স্বর্গলোকের দেবরাজ ইন্দ্র তাকে নৃত্য করার আদেশ দেন। তার নৃত্যে ইন্দ্রসহ সকল দেবতা খুশি হলে তার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে। এইজন্য বেহুলাকে তাদের আদেশ অনুসারে সেখানে নৃত্য করতে হয়েছিল।

(ঙ) কবিতাটির অনুসরণে বেহুলার নৃত্যের একটি বর্ণনা দাও।

উত্তরঃ বাংলার প্রকৃতি এতোই সংবেদনশীল যে প্রত্যেকের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হতে পারে। মঙ্গল কাব্যের বেহুলা যখন বাসর ঘরে স্বামী হারিয়ে একবুক কান্না নিয়ে গাঙুরের জলে স্বামীর মৃতদেহের সঙ্গে স্বর্গলোকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে, তখন তাঁর সেই অবস্থার একমাত্র অমর সাক্ষী বাংলার প্রকৃতি। কবির ভাষায় কঠোর সংকল্পে ব্রতী বেহুলা স্বামীর প্রাণভিক্ষা চাইতে স্বৰ্গলোকে গেলে দেবরাজ ইন্দ্র তাকে নৃত্য করার আদেশ দেন। তার নৃত্যে ইন্দ্রসহ সকল দেবতা খুশি হলে তবেই তার মনোবাঞ্ছা পূর্তি হবে। ইন্দ্রের এই কঠোর আদেশে বেহুলা বিমূঢ় হলেও তাকে আদেশ অনুসারে নৃত্য করতে হয়েছিল। কিন্তু সেই নৃত্যে ছিল তার হৃদয় নিংড়ানো প্রেম ও স্বামী হারাবার তীব্র যন্ত্রণা। সেই যন্ত্রণার সাক্ষী কবির ভাষায় বাংলার নদীমাঠ-ভাঁটফুল। অর্থাৎ, বাংলার সমস্ত প্রকৃতিও বেহুলার পায়ের ঘুঙুর হয়ে তার দুঃখে কেঁদেছিল কবির কল্পনায়।

(চ) বাংলার রূপ বর্ণনায় কবি জীবনানন্দ তুলনারহিত। একথা তোমার কতদূর যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়, আলোচনা করো।

উত্তবঃ ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ কবিতায় বাংলার রূপ ধ্যান করতে গিয়ে কবি বাংলার বিশেষতঃ গ্রাম বাংলার প্রকৃতি ও প্রাণীর মধ্যে দেখেছেন। এক বিশিষ্ট রূপ বা সৌন্দর্য, যা তাঁকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করেছে। মাত্র কয়েকটি গ্রাম্য দৃশ্যের বর্ণনার মাধ্যমে তিনি বাংলার এক নিবিড় পরিচয়কে তুলে ধরেছেন। ‘বাংলার মুখ’ প্রয়োগটি লক্ষণীয়। যে কোন ব্যক্তি বা প্রাণীর অবয়বের মুখটিই প্রধান। মুখের দর্শনের মাধ্যমে দর্শনীয় ব্যক্তি বা বস্তুর পরিচয় ঘটে। এখানে বাংলার মুখ ফুটে উঠেছে কখনো ভোরের দোয়েল পাখির, পল্লবেরর স্তূপে ভোরের স্নিগ্ধ প্রকৃতিতে অবস্থানের মাধ্যমে কখনো জাম, বট, কাঁঠাল, হিজল, অশ্বত্থ গাছের নিবিড় অবস্থানে। কবি বাংলার এই রূপ চেতনার মধ্যে বাংলার লোককথা মনসা মঙ্গল কাব্যের ধনপতি সদাগর আর বেহুলার উল্লেখের মাধ্যমে তাকে আরো সজীব করে তুলেছেন। এইভাবে কবির বাংলার সৌন্দর্য দেখার বিশেষ মাত্রাটি ফুটে উঠেছে।

(ছ) ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ কবিতাটি অবলম্বনে কবি জীবনানন্দের প্রকৃতি প্রীতির বর্ণনা দাও।

উত্তবঃ ‘রূপসী বাংলা’ কাব্যের একটি উল্লেখযোগ্য কবিতা ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি।’ কবি বাংলা, বিশেষতঃ গ্রাম বাংলার প্রকৃতি ও প্রাণীর মধ্যে দেখেছেন এক বিশিষ্ট রূপ বা সৌন্দর্য, যা তাঁকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করেছে। যেরূপ তাঁর মনোলোকের গভীরে প্রবেশ করে তার মনকে শান্ত স্নিগ্ধ করেছে। মাত্র কয়েকটি গ্রাম্য দৃশ্যের বর্ণনার মাধ্যমে তিনি বাংলার এক নিবিড় পরিচয়কে তুলে ধরেছেন। ‘বাংলার মুখ’ প্রয়োগটি লক্ষ্যণীয়। যে কোন ব্যক্তি বা প্রাণীর অবয়বের মধ্যে মুখটিই প্রধান। মুখের দর্শনের মাধ্যমে দর্শনীয় ব্যক্তি বা বস্তুর পরিচয় ঘটে। এখানে বাংলার মুখ (অর্থাৎ অবয়ব) ফুটে উঠেছে কখনো ভোরের দোয়েল পাখির, পল্লবের স্তূপে ভোরের স্নিগ্ধ প্রকৃতিতে অবস্থানের মাধ্যমে, কখনো জাম, বট, কাঁঠাল, হিজল, অশ্বত্থ গাছের নিবিড় অবস্থানে। কবি বাংলার এই রূপ চেতনার মধ্যে বাংলার লোককথা মনসা মঙ্গল কাব্যের ধনপতি সদাগর আর বেহুলার উল্লেখের মাধ্যমে, তাকে আরো সজীব করে তুলেছেন। এইভাবে কবির বাংলার সৌন্দর্য দেখার বিশেষ মাত্রাটি ফুটে উঠেছে।

তিনি বাংলার রূপে এতোই মুগ্ধ যে পৃথিবীর রূপে তাঁর আর কোনো লোভ নেই। ভোরবেলা আধো আলো, আধো অন্ধকারে দোয়েল পাখির ডুমুরের পাতার তলে বসে থাকা, চারদিকে জাম-বট-কাঁঠাল-হিজল-অশ্বত্থের নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে থাকা – বাংলার স্নিগ্ধ প্রকৃতিকে যেন আরও শান্ত করে তুলেছে। কবি তাঁর নিজের দেখা এই প্রকৃতির সঙ্গে চাঁদ সদাগরের বাণিজ্য যাত্রায় যাওয়ার সময় যে স্কৃতি, সেই প্রকৃতি কবির কল্পনায় একাকার হয়ে গেছে। এমনকি চাঁদ সদাগরের কনিষ্ঠ পুত্রবধূ বেহুলা যখন মৃত স্বামীর প্রাণ ফিরিয়ে আনতে গাঙুরে ভেলা ভাসিয়ে স্বর্গলোকের উদ্দেশ্য যাত্রা করেছিল, তার সেই যাত্রায় যে বিষাদ ছিল, সেই বিষাদ কবি ফুটিয়ে তুলেছেন ‘কৃষ্ণা দ্বাদশীর জ্যোৎস্না যখন মরিয়া গেছে নদীর চড়ায়’ – এই একটি পংক্তির মাধ্যমে। তার সেই যাত্রায় বাংলার অপরূপ রূপের অন্তরালে এক বিষাদের বা হৃদয় ভাঙা কান্নার ফল্গুধারা মিলে মিশে একাকার হয়ে উঠেছে কবির কল্পনায়। এমনকি স্বামীর জীবন ফিরিয়ে আনতে বেহুলাকে নৃত্য করে ইন্দ্রকে যে খুশি করতে হয়েছিল – সেই হৃদয় নিংড়ানো কান্নার পেছনে নৃত্যের ভঙ্গী লয় তালে যেন বাংলারই অপরূপ সৌন্দর্য নদী মাঠ ভাঁটফুল তার পায়ের ঘুঙুরে কান্নার রোল হয়ে বেজে উঠেছিল।

(জ) ব্যাখ্যা করো :

বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যাই না আর।

উত্তবঃ আলোচ্য অংশটি কবি জীবনানন্দের লেখা ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ কবিতাটি থেকে নেওয়া হয়েছে। কবি বাংলার রূপের প্রতি এতোই আকৃষ্ট যে তিনি আর পৃথিবীর রূপ দেখতে চান না।

কবি বাংলার বিশেষতঃ গ্রাম বাংলার প্রকৃতি ও প্রাণীর মধ্যে দেখেছেন এক বিশিষ্ট রূপ বা সৌন্দর্য, যা তাঁকে গভীরভাবে আকৃষ্ট করেছে। যে রূপ তাঁর মনোলোকের অন্তরে প্রবেশ করে তার মনকে শান্ত স্নিগ্ধ করেছে। কবি বাংলার রূপ চেতনার মধ্যে বাংলার লোককথা মনসা মঙ্গল কাব্যের ধনপতি সদাগর আর বেহুলার উল্লেখের মাধ্যমে, তাকে আরো সজীব করে তুলেছেন, এইভাবে কবির বাংলার সৌন্দর্য দেখার বিশেষ মাত্রাটি ফুটে উঠেছে তাই কবি আর পৃথিবীর রূপ খুঁজতে যেতে চান না।

শব্দার্থঃ

পল্লবের স্তূপ – যেখানে অনেক পাতা একসঙ্গে জমা হয়ে থাকে।

হিজল – এক রকমের গাছ।

ফণী মনসা – এক ধরণের কাঁটাযুক্ত গাছ।

শটিবন – হলুদ জাতীয় এক ধরণের গাছের বন। শটি গাছের শিকড় থেকে শিশু খাদ্য তৈরি হয়।

ডিঙা – নৌকা।

তমাল – এক প্রকার গাছ।

জ্যোৎস্না – চাঁদের কিরণ।

ছিন্ন – ছেড়া।

শ্যামা – এক রকমের পাখি।

খঞ্জনা – এক রকমের পাখি।

গাঙুর – ছোট নদী।

অমরা – অমরাবতী।

1 thought on “Class 11 Bengali Chapter 4 বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top