Class 10 Science Chapter 7 নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 10 Science Chapter 7 নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় and select needs one.
Class 10 Science Chapter 7 নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 10 Science Chapter 7 নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 10 Science Chapter 7 নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 10 Science Chapter 7 নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয় for All Subject, You can practice these here..
নিয়ন্ত্রণ ও সমন্বয়
Chapter – 7
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
১। প্রতীপ ক্রিয়া এবং হাঁটার মধ্যে কি পার্থক্য ?
উত্তরঃ
প্রতিবর্ত ক্রিয়া বা প্রতীপ ক্রিয়া | হাঁটা ক্রিয়া |
(i) ইহা অনৈচ্ছিক প্রতিক্রিয়া। | (i) ইহা ঐচ্ছিক প্রতিক্রিয়া। |
(ii) প্রাণীদেহে নির্দিষ্ট উত্তেজনার প্রভাবে যে তাৎক্ষণিক স্বতঃস্ফূর্ত বা অনৈচ্ছিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তাকে প্রতিবর্ত ক্রিয়া বলে। | (ii) হাঁটার সময় পায়ের নিম্নতলের চামড়ায় অবস্থিত গ্রাহক বা রিসেপ্টর বেদনা অনুভুতি গ্রহণ করে যা স্নায়ুর মাধ্যমে পায়ের পেশীতে যায়। |
(iii) প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত হয় সুষুম্নাকাণ্ড দ্বারা। | (iii) হাঁটা নিয়দ্ভুিত হয় পশ্চাদ মস্তিষ্ক দ্বারা। |
২। দুইটি স্নায়ুকোষের মধ্যবর্তী সিনাঙ্গে কি ঘটে ?
উত্তরঃ দুইটি স্নায়ুকোষ বা নিউরণের মিলনস্থল বা সংযােগস্থলকে স্নায়ুসন্ধি বা সাইন্যাপস্ বলে। স্নায়ুসন্ধি প্রধানত একটি নিউরণের এক্সনের শেষ প্রান্তের সঙ্গে অপর একটি নিউরণের ডেনড্রন বা কোষদেহের মিলনে সৃষ্টি হয়। স্নায়ু-সন্ধি স্থানে এসিটাইল কোলিন নামে এবং প্রেরক পদার্থ থাকে। এর সম্পর্কে পূর্ববর্তী নিউরণ থেকে পরবর্তী নিউরণে স্নায়ু সংবেদ প্রেরিত হয়।
৩। মস্তিষ্কের কোন অংশ অঙ্গভঙ্গি এবং দেহের সমতার জন্য দায়ী।
উত্তরঃ পশ্চাদ মস্তিষ্ক হল লঘু মস্তিষ্ক এবং সুষুম্নশীর্ষক দ্বারা গঠিত। ইহা দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে তাছাড়া হৃদস্পন্দন, শ্বাসক্রিয়া, ঘর্মনিঃসরণ ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে। একে সেরিবিলামও বলে।
৪। আমরা ধূপকাঠির সুন্দর গন্ধ কিভাবে পাই ?
উত্তরঃ আগরবাতীর গন্ধ অগ্ৰমস্তিষ্কের দ্বারা পাওয়া যায়। ইহা গুরুমস্তিষ্ক, থ্যালামাস এবং হাইপােথ্যালামাস নিয়ে গঠিত। অমস্তিষ্ক প্রাণীর বুদ্ধি, চিন্তা, স্মৃতি, শ্রবণ, দর্শন, ঘ্রাণ, চাপ, তাপ, বেদনা, ক্ষুধা, তৃষ্ণা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে।
৫। প্রতীপ ক্রিয়াতে মস্তিষ্কের কি কাজ ?
উত্তরঃ পরিবর্ত ক্রিয়াতে মস্তিষ্কের ভূমিকা নিম্নরূপ-
(i) গুরু মস্তিষ্ক চাপ, চাপ, ব্যথা ইত্যাদি স্পর্শবােধ, ভয়, আনন্দ প্রভৃতি চেলাবােধ, স্মৃতি, চেলা, বুদ্ধি প্রভৃতি উন্নত মানসিক বােধ নিয়ন্ত্রণ করে, মানবদেহের বিভিন্ন অংশের নানা শরীর বৃত্তীয় কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে এবং মানুষের বিভিন্ন সহজাত প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করে।
(ii) থ্যালামাস মানুষের ক্রোধ, লজ্জা, বেদনা ইত্যাদি মানসিক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে।
(iii) হাইপােথেলামাস মানসিক আবেগ, ক্ষুধা, তৃষ্ণা, নিদ্রা প্রভৃতি নিয়ন্ত্রণ করে।
(iv) লঘু মস্তিষ্ক মানবদেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে।
(v) সুষুম্নশীর্ষক হৃৎস্পন্দন, শ্বাসক্রিয়া, খাদ্যগ্রহণ, লালা ও ঘর্ম নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে।
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
১। উদ্ভিদ সঞ্জীবনী পদার্থ কি ?
উত্তরঃ উদ্ভিদের ক্ষেত্রে হরমােন ব্যাপন প্রক্রিয়ায় জল ও কলারসের মাধ্যমে ক্রিয়াস্থলে ছড়িয়ে পড়ে। এরা উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, ট্রপিক চলন নিয়ন্ত্রণ করে, অঙ্গবিভেদ নিয়ন্ত্রণ করে, খর্বকায় উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। উদ্ভিদের ফুল ফোটাতে সাহায্য করে, মুকুল ও বীজের সুপ্ত অবস্থা দূর করে।
পুষ্পমুকুল ও কাক্ষিক মুকুলের পরিস্ফুটন ঘটায়, কোষ বিভাজনে সহায়তা করে ইত্যাদি।
২। লজ্জাবতী লতার পাতার নড়াচড়ার মধ্যে পার্থক্য কি ?
উত্তরঃ আলােকের দিকে স্পর্শকাতর উদ্ভিদের লজ্জাবতী গাঙ্কে পাতার চলন এবং কাণ্ডের চলনের মধ্যে পার্থক্য হল-
(i) পাতার চলনে কোনাে স্পর্শের, কোনাে দিক থাকে না কিন্তু কাণ্ডের চলন আলােকের দিকে হয়।
(ii) পাতার চলন নির্ভর করে উপস্থিত জলের পরিমাণের উপর কিন্তু কাণ্ডের চলন হরমােনের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য আলােকের দিকে হয়।
৩। বৃদ্ধি পেতে সাহায্য করা উদ্ভিদ সজ্জীবনী পদার্থের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ অক্সিজেন- উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।জিবারেলিন- উদ্ভিদের ফল, ফুল ফোটাতে এবং বীজের অঙ্কুরােদগমে সাহায্য করে।
কাইনিন- উদ্ভিদের কোষ বিভাজনে সহায়তা করে।
৪। অক্সিন কিভাবে লতানাে উদ্ভিদের শুড়ের বৃদ্ধিতে সহায় করে।
উত্তরঃ টেনড্রিলগুলি খুব স্বৰ্শকাতর হয়। যখন টেনড্রিল কোনাে সহায়কের সম্মুখীন হয় তখন অক্সিন এর বৃদ্ধিতে সহায় করে ফলে এটি বর্ধিত হয়ে সহায়ক হতে দূরে সরে যায়। এর ফলে অবলম্বনকে জড়িয়ে সম্মুখে এগিয়ে যায়।
৫। জলাবর্তন বােঝাতে কোনও পরীক্ষা দেখাও ?
উত্তরঃ হাইড্রোপিজমের পরীক্ষা (জলাবর্তন পরীক্ষা)- একটি কাঠের সিক্ত গুড়া বিশিষ্ট পাত্রে কয়েকটি অঙ্কুরিত মটরবীজ নিলাম যার নীচের দিকে তারের জালী থাকে। 2-3 দিন এইভাবে রেখে দিই। কিছুদিন পর দেখতে পাব যে অঙ্কুরিত অংশ বের হয়ে পুনরায় উপরের দিকে উঠবে ফলে উহা আবার কাঠের গুড়াের মধ্যে প্রবেশ করবে। সুতরাং মূল হাইড্রোট্রপিক হওয়ার জন্য এইরূপ হবে।
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
১। প্রাণীর শরীরে রাসায়নিক সমন্বয় কিভাবে ঘটে ?
উত্তরঃ হরমােন জীবদেহের নির্দিষ্ট স্থান থেকে উৎপন্ন হয়ে ধীরে ধীরে সারাদেহে ছড়িয়ে পড়ে এবং কলা-কোষের বিপাকীয় কাজগুলিকে নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। এইভাবে হরমােন সারাদেহে রাসায়নিক সমন্বয় গড়ে তােলায় হরমােনকে রাসায়নিক সমন্বয়ক বলা হয়।
দূত যেমন কোনাে বার্তা একস্থান থেকে অন্য স্থানে বহন করে নিয়ে যায়, ঠিক একইভাবে হরমােন শরীরের একস্থানে উৎপন্ন হওয়ার পর কলা-রস, রক্ত লসিকা ইত্যাদির মাধ্যমে সাধারণত উৎপত্তি স্থল থেকে দূরে শরীরের কোনও জায়গায় পরিবাহিত হয়ে সেখানকার কলা-কোষে প্রােটিন, স্টেরয়েড ইত্যাদি প্রেরণ করে এবং বিভিন্ন বিপাকীয় কার্যের সমাধান ঘটায়।
২। আয়ােডিন যুক্ত লবণ খাওয়ার প্রয়ােজন হয় কেন ?
উত্তরঃ আয়ােডিন হল থাইরক্সিন হরমােনের উপাদান। থাইরক্সিন হরমােনের অধিক ক্ষরণের ফলে গলগণ্ড হয়। মানবদেহে থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে থাইরক্সিন নিঃসৃত হয়। অর্থাৎ শরীরে আয়ােডিনের অভাব হলে গলগণ্ড হতে পারে।সেইজন্য আয়ােডিন যুক্ত লবণ সেবন করা ভাল।
৩। রক্তে এড্রিনালিন নিঃসৃত হলে আমাদের দেহ কিভাবে সাড়া দেয়?
উত্তরঃ এড্রিনালিন হল সংকটকালীন হরমােন। এর উৎস হল এড্রিনাল গ্রন্থি বা মেডাল অঞ্চল। ইহা সরাসরি রক্তের সঙ্গে মিশে।
এড্রিনালিনের কাজ হল-
(i) হৃদগতি বৃদ্ধি করা।
(ii) ব্রঙ্কিওল প্রসারিত করে শ্বাসকষ্ট লাঘব করা।
(iii) তারারন্ধ্রকে বিস্ফারিত করে এবং অগ্রন্থির ক্ষরণ বৃদ্ধি করা।
(iv) রক্ত বাহকে সংকুচিত করে রক্তচাপ বাড়ায়।
(v) ত্বকের রােম খাড়া হতে সহায়তা করে।
৪। ডায়াবেটিস রােগীকে ইনসুলিন ইনজেকশান দেওয়া হয় কেন ?
উত্তরঃ ইনসুলিন অগ্নাশয়ের আইলেটস্ অফ ল্যাঙ্গাৱগেন গ্রন্থির বিটা (B) কোষ থেকে নিঃসৃত হয়। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখাই হল ইনসুলিনের প্রধান কাজ।
হরমােন কম ক্ষরণে মধুমেহ রােগ হয়। সেইজন্য মধুমেহ রােগাক্রান্ত রােগীদের শরীরে ইনজেক্সনের মাধ্যমে ইনসুলিন দেওয়া হয়।
অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ
১। কোনটি উদ্ভিদ মােন ?
(a) ইনসুলিন।
(b) থাইরক্সিন।
(c) ইট্রোজেন।
(d) সাইটোকাইনিন।
উত্তরঃ (d) সাইটোকাইনিন।
২। দুইটি স্নায়ুকোষ (Synapse) এর মধ্যবর্তী ফাঁককে কি বলে ?
(a) ডেনড্রাইট।
(b) সাইন্যান্স।
(c) এক্সন।
(d) ইমপালস বা প্রেরণা।
উত্তরঃ (b) সাইন্যান্স।
৩। মস্তিষ্ক কোন কাজের জন্য দায়ী ?
(a) চিন্তা করা।
(b) হৃদপিণ্ডের স্পন্দন।
(c) শরীরের সমতা রক্ষা।
(d) উপরােক্ত সব কয়টি।
উত্তরঃ (d) উপরােক্ত সব কয়টি।
৪। আমাদের শরীরে গ্রাহকের (Reception) কাজ কি ? যখন গ্রাহক ঠিকমত কাজ করে না তখন কি হতে পারে ভাব? কি কি সমস্যা হতে পারে ?
উত্তরঃ যে সব গ্রাহক অঙ্গ পরিবেশ থেকে বিশেষ ধরনের উদ্দীপনা গ্রহণ করে নির্দিষ্ট স্নায়ুর মাধ্যমে স্নায়বিক কেন্দ্রে প্রেরণ করে তাদের জ্ঞানেন্দ্রিয় বলে। মানুষের জ্ঞানেন্দ্রিয়গুলি হল, চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা এবং ত্বক। পরিবেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের উদ্দীপনা গ্রহণ করা হল এদের কাজ।
যেমন- চোখ হল দর্শনেন্দ্রিয়।
কর্ণ হল শ্রবণেন্দ্রিয়।
জিহা হল স্বাদেন্দ্রিয়।
নাসিকা হ’ল ঘ্রাণেন্দ্রিয়।
ত্বক বা চর্ম হল স্পর্শেন্দ্রিয় ইত্যাদি।
যদি কোনাে কারণে এদের কোনােটি কাজ না করে তবে পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা গ্রহণ করতে দেরী হয় ফলে সমস্ত প্রক্রিয়াটির বিলম্ব ঘটে। এটা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক।
৫। স্নায়ুকোষ বা নিউরণের ছবি এঁকে তার কাজ বােঝাও।
চিত্র- 7.1 (a) স্নায়ুকোষের গঠন।
(b) নিউরামাস কুলার জংশন নিউরণ হল স্নায়ুতন্ত্রের গঠনমূলক ও কার্যমূলক একক।
দুইটি নিউরণের সংযােগস্থল যার মধ্য দিয়ে একটি নিউরণ থেকে অন্য নিউরণে স্নায়ু উদ্দীপনা পরিবাহিত হয় তাকে সাইন্যাপস ঘলে। সাইন্যাপস-এর প্রধান উপাদানগুলি হল-
(i) প্রাক সন্নিধি ঝিল্লি।
(ii) পশ্চাৎ সন্নিধি ঝিল্লি।
(iii) সন্নিধি প্রণালী।
প্রাণীদেহে এদের প্রধান কাজ হল-
(i) বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা।
(ii) উদ্দীপনা গ্রহণ এবং পরিবহণ করা।
(iii) প্রাণীদের পেশী এবং অঙ্গসঞ্চালনে এবং গ্রন্থির ক্ষরণে অংশগ্রহণ করা।
৬। উদ্ভিদে আলােকাবর্তন কিভাবে সংঘটিত হয় ?
উত্তরঃ উদ্ভিদের আলােকাবর্তনের ফলে উদ্ভিদ একটি নির্দিষ্ট দিকে ধীরে ধীরে উদ্দীপনায় সাড়া দিয়ে বৃদ্ধি পায়।একটি পরীক্ষার সাহায্যে ইহা বুঝতে পারা যায়।
একটি জলপূর্ণ কনিকেল ফ্লাক্স নিলাম।ফ্লাক্সটির উপর একটি জাল দিয়ে ঢেকে দেই। জালের উপর 2 বা 3 টি তাজা অঙ্কুরিত ধানের বীজ নিলাম। ফ্লাক্সটি একটি কার্ডবাের্ডের বাক্সে এমনভাবে রাখা হয়েছে যেন বাক্সের খােলা দিক জানালার যে দিক থেকে আলাে আসে সেইদিকে থাকে। 2-3 দিন পর দেখব যে গাছের কাণ্ড আলাের দিকে এবং শিকড় আলাের বিপরীত দিকে বাড়ছে। এরপর ফ্লাক্সটি এমনভাবে ঘুরিয়ে রাখি যেন কাণ্ড আলাের বিপরীতদিকে থাকে এবং শিকড় আলাের দিকে থাকে। কিছুদিন এভাবে রাখি এবং কাণ্ড ও শিকড়ের দিক পরিবর্তন লক্ষ করি। দেখব যে, কিছু বাহ্যিক উদ্দীপক যেমন আলােক, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ইত্যাদি উদ্ভিদের বৃদ্ধির দিক পরিবর্তন করে। এইদিকের চলন বা আবর্তী চলম উদ্দীপনার দিকে হয়। সুতরাং দুই ধরনের আলােকানুবর্তী চলনের ফলে কাণ্ড আলাের দিকে বেঁকে যায় এবং শিকড় আলাের বিপরীত দিকে যায়।
৭। স্নায়ুরজ্জুতে আঘাত লাগলে কি কি ইঙ্গিত ব্যাহত হবে ?
উত্তরঃ প্রাণী দেহে নির্দিষ্ট উত্তেজনার প্রভাবে যে তাৎক্ষণিক স্বতঃস্ফূর্ত বা অনৈচ্ছিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তাই পরিবর্ত ক্রিয়া। রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় হঠাৎ পায়ে কাটা বিঁধলে পা-টি তৎক্ষণাৎ মাটি থেকে সরে যায়। এটি একটি পরিবর্ত ক্রিয়া।
পায়ের পাতার নিম্নতলের চামড়ায় অবস্থিত গ্রাহক বা রিসেপ্টর বেদনা অনুভূতি গ্রহণ করে।
বেদনা অনুভূতি রিসেপ্টর থেকে অন্তর্বাহী নিউরণ থেকে সুষুম্নাকাণ্ডে পৌছায়। সুষুম্নাকাণ্ড থেকে সারা বহির্বাহী নিউরণ দিয়ে কারক বা ইফেক্টরে পৌঁছায়।
পেশীগুলি সংকুচিত হয়, ফলে পাটি ভাজ হয়ে কাটা থেকে সরে যায়। সুতরা সুষুম্নাকাণ্ডে কোনাে আঘাত লাগলে দেহের বিভিন্ন অংশ হতে মস্তিষ্কে বা মস্তিষ্ক হতে দেহের বিভিন্ন অংশে পরিবর্ত ক্রিয়া ঠিকমত হয় না।
৮ । উদ্ভিদে রাসায়নিক সমন্বয় কিভাবে হয় ?
উত্তরঃ উদ্ভিদে রাসায়নিক সমন্বয়ের প্রভাবে অক্সিন হরমােনের প্রভাবে গােল আলুকে অনেকদিন পর্যন্ত টাটকা রাখা যায়। আবার কাইনিন ব্যবহার করে অগ্ৰমুকুলের অবাঞ্ছিত বৃদ্ধি বন্ধ করা যায়।
জিবারেলিন হরমােন প্রয়ােগ করে বীজের সুপ্ত অবস্থা ভঙ্গ করে দ্রুত অঙ্কুরােদগম ঘটানাে হয়।
৯। কোনও জীবে নিয়ন্ত্রণ এবং সমন্বয়-এর জন্য প্রয়ােজনীয় তন্ত্রের কি প্রয়ােজন ?
উত্তরঃ হরমােন জীবদেহের নির্দিষ্ট স্থান থেকে উৎপন্ন হয়ে ধীরে ধীরে সারাদেহে ছড়িয়ে পড়ে এবং কলা-কোষের বিপাকীয় কাজগুলিকে নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। এর প্রয়ােজনীয়তা হল-
(i) ইহা একরকম প্রােটিন এমাইনাে বা স্টেরয়েড ধর্মী জৈব রাসায়নিক পদার্থ যা সাধারণত নিঃসৃত স্থান থেকে দূরবর্তী স্থানে কাজ করে।
(ii) ইহা জৈব অনুঘটকের মতাে কাজ করে।
(ii) নিঃসৃত স্থান ছাড়া দেহের অন্য কোথাও হরমােন সঞ্চিত হয় না।
(iv) ইহা জীবদেহে রাসায়নিক সমন্বয়কারী অর্থাৎ কেমিকেল কো-অর্ডিনেটর হিসাবে কাজ করে।
(v) ইহা কোষে কোষে রাসায়নিক বার্তা প্রেরণ করে।
১০। অনৈচ্ছিক কাজ এবং প্রতীপ ক্রিয়ার মধ্যে পার্থক্য কি ?
উত্তরঃ
অনৈচ্ছিক কাজ | প্রতীপ ক্রিয়া |
(i) নিজের অজান্তে যে সমস্ত কাজ হয় তা অনৈচ্ছিক কাজ। যেমন- ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড ইত্যাদি। | (i) প্রাণীদেহে নির্দিষ্ট উত্তেজনার প্রভাবে যে তাৎক্ষণিক স্বতঃস্ফূর্ত বা অনৈচ্ছিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তা প্রতীপ ক্রিয়া। |
(ii) স্নায়ু স্পন্দনকে রিসেপ্টর থেকে। | (ii) স্নায়ু স্পন্দনকে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে ইফেকটরে প্রেরণ করে। |
(iii) সেনসরি নিউরণ দিয়ে গঠিত। | (iii) মােটর নিউরণ দিয়ে গঠিত। |
১১। প্রাণীর দেহে নিয়ন্ত্রণ এবং সমন্বয়ের জন্য স্নায়ুতন্ত্র এবং হরমােন-এর কাজের তুলনা কর।
উত্তরঃ
স্নায়ুতন্ত্র | হরমােন |
(i) ইহ নিউরণের বিভিন্ন কাজকে নিয়ন্ত্রণ করে। | (i) ইহা এন্ডােক্রাইন গ্রন্থি দ্বারা রাসায়নিক দ্রব্য নিঃসরণ করে। |
(ii) নিউরণ দুই ধরনের স্নায়ু দ্বারা গঠিত, যেমন- অন্তর্বাহী স্নায়ু যা উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে এবং বহির্বাহী স্নায়ু যা উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে ইফেকটরে পৌছায়। | (ii) হরমােন সরাসরি রক্তে পৌছে। পরে ইহা বিভিন্ন কোষে বাহিত হয়। |
(iii) স্নায়ুতন্ত্র সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে থাকে। | (iii) ইহা সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে থাকে না। |
(iv) ড্রেনড্রাইট পেশী বা অন্য কোনও নিউরণ থেকে স্নায়ু উদ্দীপনা গ্রহণ করে তা দেহকোষে প্রেরণ করে। অ্যাক্সন উদ্দীপনাকে পেশী বা অন্য কোন নিউরণে প্রেরণ করে। | (iv) হরমােনের সেই ধরনের কোনাে বৈদ্যুতিক উদ্দীপনা নাই। |
১২। একটি ‘লজ্জাবতী লতা’ নামক উদ্ভিদের নড়াচড়া এবং আমাদের পায়ের নড়াচড়ার মধ্যে কি পার্থক্য ?
উত্তরঃ লজ্জাবতী গাছের নড়াচড়া বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত নয় তাই গাছের পাতা স্পর্শ করলেই সাড়া দিতে নড়াচড়া করে বন্ধ হয়ে যায়। স্পর্শ লেগেছিল বলে তথ্য নিশ্চয়ই একস্থান থেকে অন্যস্থানে পৌছেছিল। উদ্ভিদে কোষ থেকে কোষে কিছু বৈদ্যুতিক ও রাসায়নিক উপায়ে তথ্য যাতায়াত করে। প্রাণীর মতাে কিছু কোষ চলন বা নড়াচড়া করার জন্য তাদের আকার পরিবর্তন করে। কিন্তু আমাদের পায়ে স্নায়ু থাকার জন্য হাঁটার সময় মস্তিষ্ক থেকে তাৎক্ষণিক সংকেত আসে এবং আমরা পা উঠাই এবং নামাই। মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকাণ্ড, স্নায়ু এবং স্নায়ুসন্ধির দ্বারা আমরা হাঁটার কাজ সম্পন্ন করি।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
১। সমন্বয় সাধন বা কো-অর্ডিনেশন কাকে বলে ?
উত্তরঃ জীবদেহের বিশেষত প্রাণীদেহের বিভিন্ন অঙ্গ ও তন্ত্রের মধ্যে যােগাযােগ ব্যবস্থাকে কো-অর্ডিনেশন বা সমন্বয় সাধন বলে।
২। স্নায়ুম্পন্দন কাকে বলে ?
উত্তরঃ সূক্ষ্ম রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে আয়নের পরিবর্তন ঘটিয়ে যে বিশেষ তরঙ্গ স্নায়ুকোষে একস্থান থেকে অন্যস্থানে এবং এক স্নায়ুকোষ থেকে অপর স্নায়ুকোষে প্রবাহিত হয় তাকে স্নায়ুস্পন্দন বলে।
৩। কয়েক প্রকার গ্রাহকের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ চাপগ্রাহক, তাপগ্রাহক, টানগ্রাহক, বর্ণগ্রাহক, স্বাদগ্রাহক, স্পর্শগ্রাহক, বেদনাগ্রাহক ইত্যাদি।
৪। অ্যাক্সন এবং ডেনড্রাইটের পার্থক্য কি ?
উত্তরঃ অ্যাক্সন স্নায়ু-সংবেদ বহন করে এবং ডেনড্রাইট স্নায়ু সংবেদ গ্রহণ করে।
৫। শুদ্ধ উত্তরটি বেছে বের কর-
(a) নিম্নলিখিত কোন তন্ত্র প্রাণীদেরে বিভিন্ন তন্ত্রসমূহের মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে ?
(i) স্নায়ুতন্ত্র।
(ii) শ্বাসতন্ত্র।
(iii) রক্ত সঞ্চালনতন্ত্র।
(iv) প্রজননতন্ত্র।
উত্তরঃ (i) স্নায়ুতন্ত্র।
(b) হরমােন একটি-
(i) রাসায়নিক বাহক।
(ii) উৎসেচক।
(iii) উপজাত দ্রব্য।
(iv) নাইট্রোজেন জাতীয় পদার্থ
উত্তরঃ (i) রাসায়নিক বাহক।
(c) দেহে থাকা অন্তঃস্রাবী গ্রন্থিগুলির নিম্নলিখিত কোনটি রাসায়নিক দ্রব্য ক্ষরণ করে ?
(i) হরমােন।
(ii) উৎসেচক।
(iii) প্লাজমা।
(iv) ভিটামিন।
উত্তরঃ (i) হরমােন।
(d) নীচে দেওয়া কোন গ্রন্থিটি অন্তঃস্রাবী নয়।
(i) এড্রিনেল গ্রন্থি।
(ii) থাইরয়েড গ্রন্থি।
(iii) প্রষ্টেট গ্রন্থি।
(iv) অগ্নাশয় গ্রন্থি।
উত্তরঃ (iii) প্রষ্টেট গ্রন্থি।
(e) নীচে দেওয়া অন্তঃস্রাবী গ্রন্থিগুলির কোনটি শরীরে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা কার্যে জড়িত ?
(i) পিটুইটারী।
(ii) থাইরয়েড।
(iii) অগ্নাশয়।
(iv) শুক্রাশয়।
উত্তরঃ (iii) অগ্নাশয়।
(f) গলগণ্ড রােগ কোনপ্রকার হরমােনের অভাবে হয় ?
(i) বৃদ্ধি হরমন।
(ii) থাইরয়েড উদ্দীপক হরমন।
(iii) থাইরক্সিন।
(iv) ইনসুলিন।
উত্তরঃ (iii) থাইরক্সিন।
(g) নীচে দেওয়াগুলির কোনটিকে মিশ্রগ্রন্থি বলে ?
(i) পিটুইটারী।
(ii) থাইরয়েড।
(iii) অগ্নাশয়।
(iv) এড্রিনেল।
উত্তরঃ (iii) অগ্নাশয়।
৬। শূন্যস্থান পূরণ কর-
(a) স্নায়ুতন্ত্রের সূক্ষ্মতম কার্যকরী একককে ________বলে।
উত্তরঃ স্নায়ুকোষ বা নিউরণ।
(b) অ্যাক্সন এবং _______ কে স্নায়ুপ্রবর্ধ বলা হয়।
উত্তরঃ ডেনড্রাইট।
(c) স্নায়ুকোষের সুদীর্ঘ স্নায়ুপ্রবধর্টিকে ________ বলে।
উত্তরঃ অ্যাক্সন।
(d) অ্যাক্সন ও ডেনড্রাইটের মধ্যে সংযােগী পথকে ________ বলে।
উত্তরঃ সাইন্যাপস।
(e) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র থেকে কারক অঙ্গে স্নায়ুপ্রেরণা পরিবহণ করা স্নায়ুকোষকে ________ স্নায়ুকোষ বলে।
উত্তরঃ আজ্ঞাবাহী।
(f) স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ________ জোড়া করােটি স্নায়ু এবং _________জোড়া রঞ্জু স্নায়ু থাকে।
উত্তরঃ 12 ; 31
৭। মস্তিষ্ক হতে বের হওয়া স্নায়ুকে __________স্নায়ু বলা হয়।
উত্তরঃ আজ্ঞাবাহী।
সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(a) একটি স্নায়ুকোষের প্রধান অংশগুলির নাম লিখ।
উত্তরঃ স্নায়ুকোষের প্রধান অংশগুলির নাম হল-
(i) দৈহকোষ। এবং
(ii) স্নায়ুপ্রবর্ধ।
(b) অ্যাক্সন ও ডেনড্রাইটের কার্যপ্রণালী বর্ণনা কর।
উত্তরঃ কোষমধ্যস্থ প্রােটোপ্লাজম একদিকে সুতার মতাে বর্ধিত হয়। এই সূত্রবৎ বর্ধিত অংশের নাম অ্যাক্সন (Axon)! অ্যাক্সনের অন্তিম প্রান্তটি কিছু ছােট ছােট মিহি প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে থাকে। এই প্রশাখাগুলিকে ডেনড্রাইট (Dendrite) বলে। ডেনড্রাইটগুলির দ্বারাই বাহ্যিক উত্তেজনা কোষটির ভিতর প্রবেশ করে এবং অ্যাক্সনগুলি দ্বারা কোষটি হতে উত্তেজনা বের হয়ে যায়।
(c) বিভিন্ন প্রকারের স্নায়ুকোষ এবং তাদের কার্য উল্লেখ কর।
উত্তরঃ স্নায়ুকোষগুলিকে নি ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন-
(i) সংজ্ঞাবাহী স্নায়ুকোষ (Sensory Neuron)
(ii) আজ্ঞাবাহী স্নায়ুকোষ (Motor Neuron)
(iii) পর্যায়ক, বা অন্তঃবর্তী স্নায়ুকোষ (Relay Neuron)
স্নায়ুকোষগুলির বিভিন্ন কার্য নীচে উল্লেখ করা হল-
(i) সংজ্ঞাবাহী স্নায়ুকোষ- জীবদেহে থাকা বিভিন্ন সংগ্রাহক অঙ্গ হতে সংজ্ঞাবাহী স্নায়ুকোষে স্নায়ু উদ্দীপনা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রেরণ করে।
(ii) আজ্ঞাবাহী স্নায়ুকোষ- আজ্ঞাবাহী স্নায়ুকোষে স্নায়ু প্রেরণা বা নির্দেশ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র হতে কার্যকরী অঙ্গে প্রেরণ করে।
(iii) পর্যায়ক বা অন্তবর্তী স্নায়ুকোষ- কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে থাকা ধরনের স্নায়ুকোষে অথবা স্নায়ুকোষ বা সংজ্ঞাবাহী ও আজ্ঞাবাহী স্নায়ুকোষের মধ্যে পর্যায়ক্রমে স্নায়ু প্রেরণা করে।
(d) মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান ভাগ কয়টির নাম লিখ।
উত্তরঃ মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের প্রধান ভাগ কয়টি হল-
(i) কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (Central Nervous System.
(ii) প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্র (Peripheral Nervous System). এবং
(iii) স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র (Autonomic Nervous System).
(e) চারটি অন্তঃস্রাবী গ্রন্থির নাম লিখ।
উত্তরঃ চারটি অন্তঃস্রাবী গ্রন্থি হল-
(i) পিটুইটারী গ্রন্থি (Pituitary Gland).
(ii) থাইরয়েড গ্রন্থি (Thyroid Gland).
(iii) প্যারাথাইরয়েড গ্রন্থি (Parathyroid Gland). এবং
(iv) অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি বা অধিবৃক্কীয় গ্রন্থির (Adrenal Gland).
৯। দুইটি রাসায়নিক স্নায়ুপ্রেরকের নাম লিখ।
উত্তরঃ দুইটি রাসায়নিক স্নায়ুপ্রেরকের নাম হল-
(i) অ্যাসিটাইলকোলিন (Acetylcholine). এবং
(ii) অ্যাড্রিনালিন (Adrenalin).
১০। স্নায়ুসমূহের ক্রিয়ার উপরে ভিত্তি করে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে ?
উত্তরঃ স্নায়ুসমূহের ক্রিয়ার উপরে ভিত্তি করে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
(i) সংবেদী বা সংজ্ঞাবাহী স্নায়ু (Sensory Nerve).
(ii) আজ্ঞাবাহী বা চালক স্নায়ু (Motor Nerve). এবং
(iii) মিশ্র স্নায়ু (Mixed Nerve).
১১। মানুষের শরীরে থাকা স্নায়ুতন্ত্র এবং অন্তঃস্রাবী তন্ত্রের কাজ কি ?
উত্তরঃ মানুষের শরীরে থাকা স্নায়ুতন্ত্র এবং অন্তঃস্রাবী তন্ত্রের কাজ হল মানুষের শরীরে থাকা বিভিন্ন অঙ্গসমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা এবং অঙ্গসমূহকে নিয়ন্ত্রণ করা।
১২। স্নায়বিক সমন্বয় কাকে বলে ?
উত্তরঃ স্নায়ুতন্ত্র অন্তঃস্রাবী তন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের কয়েকটি কার্য সম্পন্ন করে। অর্থাৎ স্নায়ুতন্ত্রের দ্বারা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মধ্যে সমন্বয় সাধিত হয়। স্নায়ুতন্ত্রের দ্বারা সমন্বয় সাধিত হওয়া প্রক্রিয়াকে স্নায়বিক সমন্বয় বলা হয়।
১৩। অক্সিন কোথায় উৎপন্ন হয় ?
উত্তরঃ উদ্ভিদের কাণ্ড এবং মূলের বাড়ন্ত শীর্ষভাগে অক্সিন উৎপন্ন হয়।
১৪। উদ্ভিদ হরমােন কয়প্রকার ও কি কি ?
উত্তরঃ উদ্ভিদ হরমােন পাঁচ প্রকার। সেইগুলি হল-
(i) অক্সিন (Auxin).
(ii) জিববারেলিন (Gibberellin).
(iii) সাইটোকাইনিন (Cytokinin).
(iv) ইথিলিন (Ethylene). এবং
(v) এবেসিসিক এসিড (Abscisic Acid).
১৫। সাইটোকাইনিনকে কয় ভাগে ভাগ করতে পারি ?
উত্তরঃ সাইটোকাইনিনকে দুইভাগে ভাগ করতে পারি-
(i) প্রাকৃতিক। এবং
(ii) সংশ্লেষিত।
১৬। দুই প্রকার প্রাকৃতিক সাইটোকাইনিনের নাম লেখ।
উত্তরঃ দুই প্রকার প্রাকৃতিক সাইটোকাইনিনের নাম হল-
(i) কাইনেটিন (Kinetin). এবং
(ii) জিয়াটিন (Zeatin)
১৭। একপ্রকার সংশ্লেষিত সাইটোকাইনিনের নাম লেখ।
উত্তরঃ বেনজাইল অ্যাডিনাইন (Benzyl Adenine).
১৮। সব চাইতে বেশী পরিমাণে পাওয়া জিব্বারেলিনের নাম কি ?
উত্তরঃ জিব্বারেলিন A₃ (GA₃).
১৯। উদ্ভিদ সংশ্লেষিত বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ উদ্ভিদ হরমােন উদ্ভিদ দেহের বৃদ্ধি এবং বিকাশে সহায়তা করে। উদ্ভিদজগতে পাঁচ প্রকারের হরমােন পাওয়া যায়। এই হরমােনগুলি ছাড়াও আরও কয়েকটি সংশ্লেষিত রাসায়নিক পদার্থ উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে। এই পদার্থসমূহ উদ্ভিদদেহে হরমােনের মতােই কাজ করে। সেইজন্য এইগুলিকে উদ্ভিদের সংশ্লেষিত বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক (Synthetic Plant Growth Regulation) বলা হয়।
২০। মানুষের হৃদপিণ্ডের গঠন বর্ণনা করাে।
উত্তরঃ মানুষের হৃৎপিণ্ডের গঠন ও মানুষের হৃৎপিণ্ডের গঠন নীচে বর্ণনা করা হল-
১। মানুষের হৃৎপিণ্ড বক্ষগহূরে একটি সূক্ষ্ম আবরণী দিয়ে আবৃত থাকে। একে পেরিকার্ডিয়াম বলে।
২। হৃৎপিণ্ডের লম্বচ্ছে করলে তাতে চারটি প্রকোষ্ঠ পরিলক্ষিত হয়। উপরের দিকে অবস্থিত প্রকোষ্ঠ দুটিকে অলিন্দ ও নীচের দিকের দুটি প্রকোষ্ঠকে নিলয় বলে।
৩। অলিন্দদ্বয় আন্তর অলিন্দ প্রাচীর বা পর্দা দিয়ে পরস্পর থেকে পৃথক থাকে। আবার, নিলয়দ্বয় অন্তর নিলয় প্রাচীর বা পর্দা দ্বারা পৃথক থাকে।
৪। ডান অলিন্দের নীচে ডান নিলয় ও বাম অলিন্দের নীচে বাম নিলয় থাকে।
৫। বাম অলিন্দ ও বাম নিলয়ের মাঝে বাইকাসপিড বা দ্বিপত্র বা মিট্রাল কপাটিকা থাকে এবং ডান অলিন্দ ও ডান নিলয়ের মাঝে ত্রিপত্র কপাটিকা থাকে।
৬। হৃৎপিত্রে বাম অলিন্দে চারটি ফুসফুসীয় শিরা উন্মুক্ত হয় এবং এদের মাধ্যমেই বেশি অক্সিজেনযুক্ত রক্ত বাম অলিন্দে প্রবেশ করে।
৭। ঊধর্ব ও নিম্ন মহাশিরার মাধ্যমে শরীরের কার্বন ডাইঅক্সাইডযুক্ত রক্ত ডান অলিন্দে প্রবেশ করে।
৮। বাম নিলয় থেকে রক্ত মহাধমনির মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়ে। আবার ডান নিলয় থেকে রক্ত ফুসফুসীয় ধমনির মাধ্যমে ফুসফুসে যায়।
২১। মানবদেহে হৃৎপিণ্ডের মধ্যে দিয়ে রক্তসংবহনের বিষয় উল্লেখ করাে।
উত্তরঃ মানবদেহে হৃৎপিণ্ডের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া- মানবদেহে হৃৎপিণ্ড নির্দিষ্ট ছন্দে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে সংবহনতন্ত্রে রক্তকে সচল রাখে। হৃৎপিণ্ডের সংকোচনকে সিস্টোল ও প্রসারণ (স্বাভাবিক অবস্থা) -কে ডায়াস্টোল বলে। হৃৎপিণ্ডের একটি সিস্টোল ও একটি ডায়াস্টোলকে একসঙ্গে একটি হৃৎস্পন্দনবলে। হৃৎপিণ্ডের রক্তসঞ্চালন প্রক্রিয়াটি নিম্নলিখিত কতকগুলি পর্যায়ে বিভক্ত-
১। অলিন্দ পর্যায়- অলিন্দদ্বয় প্রসারিত হলে সারা শরীরের দূষিত রক্ত ঊধর্ব ও নিম্ন মহাশিরা দিয়ে ডান অলিন্দে আসে। একই সময় ফুসফুস থেকে বিশুদ্ধ রক্ত ফুসফুসীয় শিরা দিয়ে বাম অলিন্দে আসে।
২। নিলয় পর্যায়- অলিন্দদ্বয় রক্তপূর্ণ হলে সংকুচিত হয় এবং নিলয়দ্বর প্রসারিত হয়। তখন ডান অলিন্দের রক্ত ত্ৰিপত্ৰ কপাটিকার ভেতর দিয়ে ডান নিলয়ে এবং বাম অলিন্দের রক্ত দ্বিপত্র কপাটিকার ভেতর দিয়ে বাম নিলয়ে প্রবেশ করে।
৩। ফুসফুস পর্যায়- নিলয়দ্বয় সম্পূর্ণ রক্তপূর্ণ হলে সংকুচিত হয় এবং রক্ত ডান নিলয় থেকে ফুসফুসীয় ধমনির মাধ্যমে ফুসফুসে প্রবেশ করে এবং বাম নিলয় থেকে মহাধমনির মাধ্যমে সারা দেহে ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় অর্ধচন্দ্রাকৃতি কপাটিকা খুলে যায় এবং দ্বিপত্র ও ত্রিপত্র কপাটিকা বন্ধ থাকে।
৪। পুনরাবৃত্তি- এরপর আবার অলিন্দদ্বয় প্রসারিত হলে রক্ত অলিন্দে প্রবেশ করে। এইভাবে সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে রক্তসঞ্চালন পদ্ধতিটি অব্যাহত থাকে।
২২। একটি লােহিত রক্তকণিকা পরিবাহিত অক্সিজেন অণুর সংখ্যা হল-
(a) 560 মিলিয়ন অণু।
(b) 1120 মিলিয়ন অণু।
(c) 1560 মিলিয়ন অণু।
(d) 2240 মিলিয়ন অণু।
উত্তরঃ (b) 1120 মিলিয়ন অণু।
২৩। মানবদেহের রক্তে লােহার (Fe⁺⁺) সর্বাধিক পরিমাণ হল-
(a) 1-2 গ্রাম।
(b) 3-4 গ্রাম।
(c) 5-4 গ্রাম।
(d) 7-8 গ্রাম।
উত্তরঃ (b) 3-4 গ্রাম।
২৪। একটি লােহিত রক্তকণিকার কোষে হিমােগ্লোবিন থাকে-
(a) 140 মিলিয়ন অণু।
(b) 220 মিলিয়ন অণু।
(c) 280 মিলিয়ন অণু।
(d) 340 মিলিয়ন অণু।
উত্তরঃ (c) 280 মিলিয়ন অপু।
২৫। এক গ্রাম হিমােগ্লাবিন যে পরিমাণ অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়। তা হল-
(a) 0.34 মিলিলিটার।
(b) 1.34 মিলিলিটার।
(c) 2.34 মিলিলিটার।
(d) 3.34 মিলিলিটার।
উত্তরঃ (b) 3.34 মিলিলিটার।
২৬। যে শ্বেত রক্তকণিকা যকৃৎ এবং প্লিহাতে উৎপন্ন হতম্ভ তা হল-
(a) নিউট্রোফিল।
(b) বেসােফিল।
(c) লিম্ফোসাইট।
(d) মনােসাইট।
উত্তরঃ (d) মনােসাইট।
২৭। শ্বেত রক্তকণিকার মধ্যে দানাদার শ্বেতকণিকার পরিমাণ
(a) 25%
(b) 50%
(c) 75%
(d) 90%
উত্তরঃ (c) 75%.
২৮। শ্বেত রক্তকণিকার মধ্যে দানাবিহীন শ্বেতকণিকা থাকে
(a) 25%
(b) 50%
(c) 75%
(d) 90%
উত্তরঃ (a) 25%
২৯। যে শ্বেত রক্তকণিকাটির নিউক্লিয়াস বৃক্কাকৃতির তা হল-
(a) নিউট্রোফিল।
(b) বেসােফিল।
(c) লিম্ফোসাইট।
(d) মনােসাইট।
উত্তরঃ মনােসাইট।
৩০। যে শ্বেত রক্তকণিকার নিউক্লিয়াস আকৃতিতে গােল তা হল-
(a) নিউট্রোফিল।
(b) বেসােফিল।
(c) লিম্ফোসাইট।
(d) মনােসাইট।
উত্তরঃ (c) লিম্ফোসাইট।
৩১। একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির স্বাভাবিক সিস্টোলিক প্রেশার হল-
(a) 50-60 mm Hg
(b) 70-90 mm Hg
(c) 110-130 mm Hg
(d) 150-170 mm Hg
উত্তরঃ (c) 110 -130 mm Hg
৩২। একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির স্বাভাবিক ডায়াস্টোলিক প্রেশার হল-
(a) 50-60 mm Hg
(b) 70-90 mm Hg
(c) 10-130 mm Hg
(d) 150-170 mm Hg
উত্তরঃ (b) 70-90 mm Hg.
৩৩। জলসংবহনতন্ত্র পরিলক্ষিত হয় যে পর্বের প্রাণীর দেহে সেটি হল
(a) প্রােটোজোয়া।
(b) একাইনােডার্মাটা।
(c) মােলাস্কা।
(d) অ্যাম্ফিবিয়া।
উত্তরঃ (b) একাইনােডার্মাটা।
৩৪। হিমােগ্লোবিন পরিমাপক যন্ত্র হল-
(a) হেনােমিটার।
(b) হিমােগ্লোবিনােমিটার।
(c) স্ফিগমােম্যানােমিটার।
(d) স্ফিগমােগ্রাফ।
উত্তরঃ (b) হিমােগ্লোবিনােমিটার।
৩৫। প্রতিটি হৃদচক্রের স্থিতিকাল
(a) 0.7 সেকেন্ড।
(b) 0.8 সেকেন্ড।
(c) 0.9 সেকেন্ড।
(d) 0.6 সেকেন্ড।
উত্তরঃ (b) 0.8 সেকেন্ড।
৩৬। মানুষের রক্ত জলের তুলনায় যত গুণ ঘন তা হল-
(a) 5
(b) 6
(c) 8
(d) 6
উত্তরঃ (a) 5.
৩৭। পালস্ কাকে বলে ?
উত্তরঃ হাতের কবজির র্যাডিয়াল ধমনিতে অনুভূত হৃদস্পন্দনকে পাল্স বলে।
৩৮। ফোটোঅ্যাকটিভ বাপমােচন কাকে বলে ?
উত্তরঃ দিনের বেলায় যেসব গাছের পত্ররন্ধ্র খুলে গিয়ে বাষ্পমােচন হয়, অর্থাৎ আলাের উপস্থিতিতে আলাের প্রভাবজনিত বাষ্পমােচনকে ফোটোঅ্যাকটিভ বাম্পমােচন (Photoactive transpiration) বলে । যেমন- আম, জাম, কাঁঠাল প্রভৃতি বেশিরভাগ গাছের বাষ্পমােচন এই প্রকারের।
৩৯। থেবেসিয়ান কপাটিকা কী ?
উত্তরঃ করােনারি সাইনাস যেখানে ডান অলিন্দে প্রবেশ করেছে তার মুখে (প্রবেশ পথে) থেবেসিয়ান কপাটিকার অবস্থান। এটি করােনারি সাইনাস থেকে অধিক CO₂ যুক্ত রক্ত ডান অলিন্দে প্রবেশে সাহায্য করে।
৪০। রক্তের প্রধান পাঁচ প্রকার শ্বেত কণিকার কাজ লেখাে।
উত্তরঃ রক্তের প্রধান পাঁচ প্রকার শ্বেতকণিকার কাজ হল-
(i) শ্বেতকণিকার অন্তর্গত নিউট্রোফিল দেহে প্রবিষ্ট রােগজীবাণুকে ধবংস করে।
(ii) শ্বেতকণিকার অন্তর্গত বেসােফিল হেপারিন ক্ষরণের দ্বারা রক্তবাহের মধ্যে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না।
(iii) শ্বেতকণিকার অন্তর্গত। ইওসিনােফিল অ্যালার্জি প্রতিরােধে অংশ নেয়।
(iv) শ্বেতকণিকার অন্তর্গত মনােসাইট দেহে প্রবিষ্ট জীবাণুকে ধবংস করে।
(v) শ্বেতকণিকার অন্তর্গত লিম্ফোসাইট অ্যান্টিবডি সৃষ্টির দ্বারা রােগ সংক্রমণ প্রতিরােধ করে।
শূন্যস্থান পূরণ কর-
১। স্নায়ুতন্ত্রের সূক্ষ্মতম কার্যকরী একককে _________বলে।
উত্তরঃ নিউরণ।
২। অ্যাক্সন এবং ________ কে স্নায়ু প্রবর্ধ বলে জানা যায়।
উত্তরঃ ডেনড্রাইট।
৩। অ্যাক্সন এবং ডেনড্রাইটের মধ্যে সংযােগী স্থানকে ________বলে।
উত্তরঃ সাইলেপস্।
৪। স্তন্যপায়ী প্রাণীতে _________ জোড়া কয়েকটি স্নায়ু এবং __________ জোড়া সুষুম্না থাকে।
উত্তরঃ 12, 31
৫। স্নায়ুতন্ত্র তড়িৎ সংকেতের সাহায্যে সম্পন্ন করা কার্যকে __________বলে।
উত্তরঃ স্নায়ু প্রেরণা।
৬। দুইটি মধ্যবর্তী ________দিয়ে স্নায়ু প্রেরণা এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থের সাহায্যে প্রবাহিত হয়।
উত্তরঃ সাইলেপস্।
৭। __________উদ্ভিদের অগ্র অধিপত্যতা বা শীর্ষ প্রভাবিতা নিয়ন্ত্রণ করে।
উত্তরঃ অক্সিন।
৮। উদ্ভিদের পাতা, ফুল, ফল বাড়তে __________সাহায্য করে।
উত্তরঃ এ্যাবসিসিক অ্যাসিড।
৯। কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের থেকে কারক অংগে স্নায়ুপ্রেরণা পরিবহণ করা স্নায়ুকোষকে _________স্নায়ুকোষ বলে।
উত্তরঃ আজ্ঞাবাহী।