Class 9 Social Science Chapter 9 অসমের ভূগোল Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 9 Social Science Chapter 9 অসমের ভূগোল and select needs one.
Class 9 Social Science Chapter 9 অসমের ভূগোল
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 9 Social Science Chapter 9 অসমের ভূগোল Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 9 Social Science Chapter 9 অসমের ভূগোল These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 9 Social Science Chapter 9 অসমের ভূগোল for All Subject, You can practice these here…
অসমের ভূগোল
Chapter – 9
দ্বিতীয় খণ্ড : ভূগোল
● পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। অসমের ভূ-প্রাকৃতিক ভাগগুলি কী কী ?
উত্তরঃ অসমের ভূ-প্রাকৃতিক ভাগ প্রধানত চারটি।
ভূ-প্রাকৃতিক ভাগগুলো হল–
(ক) ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা।
(খ) বরাক উপত্যকা।
(গ) কার্বি মালভূমি। এবং
(ঘ) বরাইল ও দক্ষিণের পর্বতরাশি।
প্রশ্ন ২। ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চলগুলি কী কী ?
উত্তরঃ ব্রক্ষপুত্র উপত্যকাকে উত্তর থেকে দক্ষিণ পযর্ন্ত চারটি ভূ-প্রাকৃতিক ভাগে ভাগ করা যায়—
(ক) উত্তরের পাদদেশ অঞ্চল।
(খ) ব্রক্ষপুত্রের উত্তর ও দক্ষিণ পারের সমভুমি অঞ্চল।
(গ) ব্রক্ষপুত্রের প্লাবনভূমি ও চর অঞ্চল। এবং
(ঘ) দক্ষিণের পাদদেশ অঞ্চল।
প্রশ্ন ৩। ব্রক্ষপুত্রের উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ের প্রত্যেকের চারিটি করে প্রধান উপনদীর নাম লিখ।
উত্তরঃ উত্তর পারের চারটি উপনদীর নামগুলো হল—-
১) সুবনশিরি।
(২) ডিক্রং।
(৩) জীয়া ভরলী।
(৪) পুঠিমারী।
দক্ষিণ পারের চারটি উপনদী হল—
(১) বুঢ়ীদিহিং।
(২) কপিলী।
(৩) ধনশ্রী।
(৪) কৃষ্ণাই।
প্রশ্ন ৪। ব্রক্ষপুত্রের সমভুমি অঞ্চলটি বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ অসমের একটি প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ভূ-প্রাকৃতিক অঞ্চল হল ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা। এই উপত্যকাটি দীর্ঘ কিন্তু অপ্রশস্ত। এটি লম্বায় ৭২০ কি.মি. এবং প্রস্থে গড়ে ৮০ কি.মি.। এই নদী উপত্যকাটির উত্তর ও।পূর্বদিকে রয়েছে পূর্ব হিমালয়ের পর্বতশ্রেণি এবং দক্ষিণদিকে আছে নাগাপাহাড় কার্বি এবং মেঘালয় মালভূমি। পশ্চিমদিকে এই উপত্যকা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের সমভূমির সাথে মিলিত হয়েছে। ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা অসমের মাটি কালির প্রায় ৭২ শতাংশ জুড়ে আছে।
ব্রক্ষপুত্র উপত্যকাকে চারটি প্রাকৃতিক অঞ্চলে ভাগ করা যায়, যেমন— উত্তরের পাদদেশ অঞ্চল, ব্রক্ষপুত্রের উত্তর ও দক্ষিণ পারের সমভুমি অঞ্চল, ব্রক্ষপুত্রের প্লাবনভূমি ও চর অঞ্চল এবং দক্ষিণের পাদদেশ অঞ্চল। উত্তরের পাদদেশ অঞ্চলটি নিম্ন হিমালয়ের নীচু পাহাড়-পর্বতের সমষ্টি এবং এগুলো মূলত টার্সিয়েরি বেলেপাথর দ্বারা গঠিত। এই অপ্রশস্ত পাদদেশ অঞ্চলটি ১৫০ মিটার থেকে ৬০০ মিটার পযর্ন্ত উঁচু। এই অঞ্চলের নদীগুলো সাধারণত অন্তঃস্রবণ হয়, যার ফলে এই নদীগুলোর জলপ্রবাহ দেখা যায় না। পাদদেশ অঞ্চলটির দক্ষিণাংশের অঞ্চলটিতে সংরক্ষিত বনাঞ্চল ও অভয়াণ্যের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে।
ব্রক্ষপুত্রের সমভুমি বলতে এর উত্তর ও দক্ষিণ পারের সমভূমিকে বোঝায়। ব্রক্ষপুত্রের উত্তর পারের প্রধান উপনদীগুলো হল— সুবনশিরি, ডিক্রং, রঙানদী, বুরৈ, বরগাং, জীয়াভরালী, গাভরু,বেলশিরি, ধনশিরি, নোয়ানদী, ন-নৈ, বরনদী, পুঠিমারী, পাগলাদিয়া, মানস-আই-বেকী, চম্পাবতী, গৌরাংগ, টিপকাই ও গদাধর। ব্রক্ষপুত্রের দক্ষিণ পারের প্রধান উপনদীগুলো হল—- বুঢ়ীদিহিং, দিসিং, জাঁজী, ভোগদৈ,ধনশ্রী, কপিলী, কুলশী, কৃষ্ণাই ও জিনারী।
ব্রক্ষপুত্রের উত্তর ও দক্ষিণ সমভুমি অঞ্চল পলিমাটি দ্বারা গঠিত হওয়ায় কৃষিকার্যের জন্য বিশেষ উপযোগী। নদী উপত্যকা অঞ্চলটিতে জন বসতি ঘন ও যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত।
ব্রক্ষপুত্রের উত্তর ও দক্ষিণপারের সমভুমি অঞ্চল দুটোর মধ্যে বন্যার প্রকোপে প্লাবনভূমির সৃষ্টি হয়েছে। ব্রক্ষপুত্রের স্থানে স্থানে টিলা ও নদীর পারে পলি জমা হয়ে তটবন্ধের সৃষ্টি হওয়ায় প্লাবনভূমির প্রস্থ হ্রাস পেয়েছে। ধেমাজি ও বরপেটা জেলার প্লাবনভূমি অঞ্চলে অসংখ্য বিল ও জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলে মাঝে মাঝে প্লাবনের সৃষ্টি হয়।
ব্রক্ষপুত্র ও এর শাখানদীগুলোকে নিয়ে কিছু কিছু চর অঞ্চল গড়ে উঠেছে, এই অঞ্চলটিকে সক্রিয় প্লাবনভূমি বলা হয়। ব্রক্ষপুত্র নদী অসমে প্রায় ৬ থেকে ৮ কি.মি. প্রশস্ত। ব্রক্ষপুত্রের বুকে ৬০০-এর অধিক ছোট বড় আকারের বালিচর আছে। ব্রক্ষপুত্রের বুকে মাজুলি নদী-দ্বীপ পৃথিবীর ভেতরে অন্যতম বৃহৎ নদী-দ্বীপ।
ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার অন্তর্গত দক্ষিণের পাদদেশের অঞ্চলটি মেঘালয় মালভূমি ও বরাইল পর্বতের পাদদেশের সাথে পাটকাই- নাগা পর্বতের পাদদেশকে নিয়ে গঠিত। দক্ষিণের মেঘালয় মালভূমি ও অসমের সীমান্ত অঞ্চলের পাদদেশে গারো
এবং খাসিয়া-জয়ন্তীয়া পাহাড়ের নিম্নাংশ সমগ্ৰ অঞ্চলটি জুড়ে আছে। কার্বি মালভূমির উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তের নিম্ন পাহাড়িয়া অঞ্চলকে কার্বি মালভূমি বলা হয়। ডিমাহাসাও জেলার উত্তর সীমায় বরাইল পর্বতের পাদদেশ অঞ্চল অবস্থিত।
প্রশ্ন ৫। ব্রক্ষপুত্রের প্লাবনভূমি অঞ্চলটির বিবরণ দাও।
উত্তরঃ ব্রক্ষপুত্রের উত্তর ও দক্ষিণপারের সমভুমি অঞ্চল দুটোর মধ্যে বন্যার প্রকোপে প্লাবনভূমির সৃষ্টি হয়েছে। ব্রক্ষপুত্রের পারে স্থানে স্থানে টিলা ও নদীর পারে পলি জমা হয়ে তটবন্ধের সৃষ্টি হওয়ায় প্লাবনভূমির প্রস্থ হ্রাস পেয়েছে।ধেমাজি ও বরপেটা জেলার প্লাবনভূমি অঞ্চলে অসংখ্য বিল ও জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলে মাঝে মাঝেই প্লাবনের সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ৬। মাজুলীর ভৌগোলিক অবস্থান ও সৃষ্টি সম্পর্কে লিখ।
উত্তরঃ মাজুলী দ্বীপ ব্রক্ষপুত্রের বুকে একটি স্থায়ী বালিচর। এই দ্বীপটি পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ নদীদ্বীপ হিসেবে বিখ্যাত। যোরহাট জেলার অন্তর্গত ব্রক্ষপুত্রের বুকে এই মাজুলী দ্বীপের সৃষ্টি হয়েছে। এই দ্বীপটি যোরহাট জেলার একটি মহকুমা। ২০১১ সালে জনগণনা অনুযায়ী মাজুলীর জনসংখ্যা ছিল ১.৬৮ লক্ষ। এই দ্বীপটির কালি ৪২২ বর্গ কিলোমিটার। প্রতি বৎসর বন্যা ও ভাঙ্গনের ফলে মাজুলীর আয়তন ক্রমাগত কমে যাচ্ছে।
প্রশ্ন ৭। বরাক উপত্যকার চার সীমা এবং বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করো।
উত্তরঃ অসমের দক্ষিণ অংশে বরাক সমতল অবস্থিত। এটি পূর্ব-পশ্চিমে প্রায় ৮৫ কি.মি. দীর্ঘ এবং উত্তর-দক্ষিণে গড়ে প্রায় ৭৫ কি.মি. প্রস্থ। এইভাবে মোট ৬৯৬২ বর্গ কি.মি. আয়তনের এটি একটি মধ্যম রকমের সমতল। এখানে কাছার, হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ এই তিনটি প্রশাসনিক জেলা আছে।এই অঞ্চলটির উত্তরে কাছাড় পাহাড়, পূর্বে মণিপুরের পাহাড়গুলি ও দক্ষিণে মিজোরামের পাহাড়গুলি অবস্থিত। পশ্চিমে বাংলাদেশের সুরমা উপত্যকার সঙ্গে সংলগ্ন।
তিনদিকে পাহাড়ে ঘেরা বরাক সমতলটি একটি নিম্নসমভূমি। পূর্বের জিরিরামের নিকটে সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে সমতলটির উচ্চতা ৭৫ মিটার এবং করিমগঞ্জের নিকটে এর উচ্চতা ৫১ মিটার। এই নিম্নভূমির মধ্য দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে আঁকা-বাঁকা অতি মন্থরগতিতে প্রবাহিত হয়ে গিয়েছে বরাক নদী। উত্তরের মণিপুর ও উত্তর কাছাড় পার্বত্য অঞ্চল হতে প্রবাহিত হয়ে আসা জিরি, লাবাক, মাধুরা, দালু, জাটিঙ্গা, লারাং প্রভৃতি উপনদীগুলি এখানে এসে পড়েছে। বরাকের দক্ষিণে মিজোরাম থেকে আসা উপনদীগুলি হল সোনাই, কাটাখাল, ধলেশ্বরী, শিংলা ও লংগাই। বরাক এবং এই উপনদীগুলিতে বহু অশ্বখুরা হ্রদ সমতলটিতে দেখা যায়; এইগুলি বিল, ঝিল ইত্যাদির সৃষ্টি করেছে।
সমতলটির উত্তর-দক্ষিণে বহু টিলা ছড়িয়ে আছে। সমতলের অঞ্চলগুলি বনজঙ্গলে ভরা।
প্রশ্ন ৮। কার্বি মালভূমির চারসীমা এবং বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করো।
উত্তরঃ কার্বি মালভূমি মেঘালয় মালভূমির অংশবিশেষ বলা যেতে পারে। কার্বি মালভূমিকে কপিলী উপত্যকা পূর্ব এবং পশ্চিমদুটি অংশে বিভক্ত করেছে। পূর্ব অংশটি রেংমা পাহাড়সহ কার্বি আংলং জেলার ডিফু ও বোকাজান মহকুমা পযর্ন্ত বিস্তৃত হয়ে আছে। এই অংশটি পশ্চিমের অংশ অপেক্ষা আকারে দ্বিগুণ।অপরদিকে পশ্চিমের অংশটি কার্বি আংলং জেলার হামরেণ মহকুমার অন্তর্ভুক্ত। দক্ষিণ পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্বদিকে ঢাল খাওয়া এই অংশটির উচ্চতা ৯০০ মিটার। এই অংশটি কপিলী ও বরাপানী এবং এদের উপনদীগুলোর দ্বারা গঠিত।
এই ভূ-প্রকৃতি দুটোর উৎপত্তি সম্পূর্ণ ভিন্ন হলেও দুটি অংশ একটি অপরটির সাথে যুক্তভাবে অবস্থিত এবং দুটিকে একসাথে এক অভিন্ন মালভূমি বলেই মনে হয়।কপিলা এবং এর শীর্ষ জুরিগুলি। এই অংশটি ক্ষয় হয়ে স্থানে স্থানে এর একটি পাহাড় অপর একটি পাহাড় থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। মালভূমিটির মধ্যভাগের উচ্চখণ্ডে যে পাহাড় শ্রেণি আছে তার নাম রেংমা পাহাড়শ্রেণি। কার্বি মালভূমির উচ্চতম শৃঙ্গদ্বয় সিংহাসন (১৩৫৯ মি.) ও দাম্বকসো (১৩৬৩) অবস্থিত।
প্রশ্ন ৯। বড়াইল এবং দক্ষিণের পর্বত শ্রেণির বৈশিষ্ট্য সংক্ষেপে বর্ণনা করো।
উত্তরঃ নাগাল্যাণ্ডের তুয়েনসাঙ থেকে পশ্চিমের দিকে বিস্তৃত হওয়া বরাইল পর্বতের একাংশ অসমের ডিমা হাসাও জেলাতে প্রসারিত হয়ে আছে। বরাইল পর্বত পূর্বদিকে নাগা পর্বত এবং পশ্চিমের মেঘালয় মালভূমিকে সংযোগ করেছে এবং উত্তর কাছাড় পার্বত্য অঞ্চলকে দুটি অংশে ভাগ করেছে। উত্তরদিকের অংশটি ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার অন্তর্গত এবং দক্ষিণদিকের অংশটি বরাক উপত্যকার অন্তর্গত। উত্তর অংশটি দক্ষিণ অংশে অপেক্ষা ছোট।
প্রশ্ন ১০। অসমের জলবায়ু কোন প্রকারের জলবায়ুর অন্তর্গত ?
উত্তরঃ অসমের জলবায়ু উপক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ুর অন্তর্গত।
অসমের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য হল গ্ৰীষ্মকালে অতিপাত বৃষ্টি, শীতকালে শুষ্ক অবস্থা। বৎসরের প্রায় সকল সময়েই অত্যধিক আর্দ্রতা এবং তুলনামূলকভাবে কিছুটা নিম্ন উষ্ণতা বিরাজ করে। অসমের জলবায়ু মূলত মৌসুমী বায়ু দ্বারা প্রভাবান্বিত যদিও ভৌগোলিক বৈচিত্র্যের জন্য জলবায়ুও যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়। ভৌগোলিক অবস্থান, ভূ-প্রকৃতি, আরবসাগর, বঙ্গোপসাগর, ভারত মহাসাগরের জলভাগ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম আর্দ্র মৌসুমী বায়ুপ্রবাহ ইত্যাদির তারতম্যের ফলে অসমের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সকল স্থানেই এক নয়। স্থানীয়ভাবে প্রবাহিত পার্বত্য বায়ু, উপত্যকা বায়ু এবং নদ-নদী তথা অন্যান্য জলাভূমির উপস্থিতি স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ুর যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। গ্ৰীষ্মকালে ব্রক্ষপুত্র ও বরাক উপত্যকার সমভুমি অঞ্চলের বায়ু নিকটবর্তী পাহাড় অঞ্চলের তুলনায় কিছু উষ্ণ হয়ে থাকে।এর জন্য গ্ৰীষ্মকালে সমভুমি অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে একপ্রকার নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়।
হিমালয় পর্বতশ্রেণি এবং পার্শ্ববর্তী পার্বত্য অঞ্চলগুলো গ্ৰীষ্মকালে দক্ষিণ পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত উষ্ণ তথা আর্দ্র মৌসুমী বায়ুকে বাধা প্রদান করে। এই পর্বতশ্রেণি শীতকালে তিব্বত মালভূমির দিক থেকে ভারতবর্ষের দিকে প্রবাহিত অতিশীতল বায়ুর প্রকোপ থেকে রাজ্যটিকে রক্ষা করে। অপরদিকে গ্ৰীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু নিয়ে আসা মেঘ মেঘালয় মালভূমিসহ দক্ষিণের পার্বত্য অঞ্চল অতিক্রম করে ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব অংশে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বরাক সমভুমি অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের তারতম্যের জন্য বিশেষভাবে কার্বি পাহাড়ের পূর্বদিকে তথা ডিমা-হাসাও পাহাড়ের উত্তর ও পূর্বদিকে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ যথেষ্ট হ্রাস পায়। ঠিক একই কারণে নগাঁও জেলার দক্ষিণ অংশে বৃষ্টিপাত যথেষ্ট পরিমাণে কম হয়। হিমালয় অঞ্চলের পাদদেশে বৃষ্টিপাত সর্বদাই বেশি থাকে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর একটি অংশ নিম্ন ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
শীতকালে উষ্ণতা হ্রাস পেয়ে ঠাণ্ডার প্রকোপ বৃদ্ধি পায় এবং ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা অঞ্চলে উচ্চচাপের সৃষ্টি হয়। গ্ৰীষ্ম ও শীতকালের বায়ুর চাপের পার্থক্যের ফলে শীতকালে বায়ুর দিকের পরিবর্তন ঘটে। শীতকালে গ্ৰীষ্মকালের দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর সম্পূর্ণ বিপরীতদিকে প্রবাহ ঘটে। শীতকালে উচ্চ ব্রক্ষপুত্র উপত্যকায় যে বায়ুপ্রবাহের সৃষ্টি হয়ে বঙ্গোপসাগরের দিকে প্রবাহিত হয় তাকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু বলে বা প্রত্যাবর্তিত মৌসুমী বায়ু বলা হয়। এই সময়ে বায়ুমণ্ডলে আর্দ্রতার পরিমাণ যথেষ্ট হ্রাস পায়।
প্রশ্ন ১১। গ্ৰীষ্মকালে অসমে বৃষ্টি হওয়ার মূল কারণ কী ?
উত্তরঃ গ্ৰীষ্মকালে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু দ্বারা সংগৃহীত মেঘ মেঘালয় মালভূমিসহ দক্ষিণের পার্বত্যভূমি অঞ্চল অতিক্রম করে ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা বিশেষ করে উত্তর-পূর্ব অংশে যথেষ্ট বৃষ্টিপাতের সৃষ্টি করে।বরাক অঞ্চলের পার্বত্য অঞ্চলে বাধাগ্রস্ত হ’য়ে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বরাক সমভুমি অঞ্চলে যথেষ্ট পরিমাণে বৃষ্টিপাত ঘটায়।দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর একটি অংশ মেঘালয় মালভূমি অতিক্রম করে নিম্ন ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ঘটায়। অসমের গ্ৰীষ্মকালের বৃষ্টিপাত বিশেষত আর্দ্র দক্ষিণ- পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর শৈলোৎক্ষেপণ (Orographic) এবং চক্রবাত (Cyclonic) প্রক্রিয়ায় সংঘটিত হয়।
শুষ্ক উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু ব্রক্ষপুত্র নদী ও উপনদীসমূহ থেকে কিছু পরিমাণে জলীয় বাষ্প সংগ্ৰহ ক’রে শীতকালে কখনো কখনো অসমের দক্ষিণ পশ্চিম অংশে কিছু পরিমাণে বৃষ্টিপাত ঘটায়।
প্রশ্ন ১২। অসমের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে লেখো।
উত্তরঃ অসমের জলবায়ুর প্রভাব বিস্তার করা কারকগুলো হল—
(ক) উপক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ুর প্রভাব।
(খ) উত্তর ও পূর্বে হিমালয় পর্বতের অবস্থান।
(গ) শীত ও গ্ৰীষ্মের উত্তাপের তারতম্য।
(ঘ) বায়ুর উচ্চচাপ ও নিম্নচাপের প্রভাব।
প্রশ্ন ১৩। অসমের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত হওয়া এমন স্থান দুইটির নাম ও বৃষ্টির পরিমাণ লিখ।
উত্তরঃ অসমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হওয়া স্থানটির নাম উত্তর লখিমপুর এবং বৃষ্টির পরিমাণ ৩৩৫ সে.মি.। সর্বনিম্ন বৃষ্টিপাত হওয়া স্থানটির নাম লামডিং এবং বৃষ্টির পরিমাণ ১২৯ সে.মি.।
প্রশ্ন ১৪। অসমের চারটে জলবায়ু ঋতু কী কী ? তাদের বৈশিষ্ট্যসমূহ লেখো।
উত্তরঃ অসমের প্রধান ঋতুগুলো হ’ল—–
(ক) প্রাক্ মৌসুমী।
(খ) মৌসুমী।
(গ) প্রত্যাবর্তিত মৌসুমী। এবং
(ঘ) শুষ্ক শীতকাল।
(ক) প্রাক্ মৌসুমী কাল : অসমে প্রাক্ মৌসুমীকাল মার্চ মাস থেকে মে মাসের শেষ পযর্ন্ত বিরাজ করে। শীতকালের পরই এই সময়টি আসে বলে ধীরে ধীরে বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পেতে আরম্ভ করে। প্রাক্ মৌসুমীকালে সকালের দিকে আরামদায়ক, দুপুরে গরম, বিকেলের দিকে গরম কিছুটা কমে এবং সন্ধ্যা বা রাত্রিতে অল্প সময়ের জন্য বজ্রপাতসহ বৃষ্টিপাত হয়।এই সময়ে মাঝে মাঝে ধূলার ঝড় ওঠে এবং বিদ্যুৎ গর্জনসহ বৃষ্টিপাত হয়।
(খ) মৌসুমী কাল : অসমে সাধারণত জুন মাসের প্রথম ভাগ থেকে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ পযর্ন্ত বিরাজ করে। অসমে এই সময়সীমাই বর্ষাকাল। এই সময়সীমাতে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুপ্রবাহের প্রভাবে রাজ্যটির বিভিন্ন স্থানে অবিরতভাবে মধ্যম থেকে অতি বেশি পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়। জুন, জুলাই ও আগষ্ট মাসে অধিক পরিমাণে বৃষ্টি হয়। প্রায় ৭০% বৃষ্টি এই তিন মাসে হয়। অতিমাত্রায় বৃষ্টির ফলে ব্রক্ষপুত্র ও বরাক নদীসহ প্রায় সবগুলো নদীতেই জলপৃষ্ঠ বৃদ্ধি পেয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়। এই সময়ে গ্ৰীষ্মের প্রকোপও বেশি।
(গ) প্রত্যাবর্তিত মৌসুমী কাল : সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ- পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রত্যাবর্তন ঘটে।এই সময়ে উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যায়। এই সময়ে উষ্ণতা কমে এবং বায়ুর চাপ বৃদ্ধি পায় এবং বায়ু প্রবাহের দিক পরিবর্তন হয়ে উল্টোদিকে প্রবাহিত হয় অর্থাৎ বায়ুপ্রবাহ উত্তর-পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হতে আরম্ভ করে। এই বায়ুপ্রবাহকেই উত্তর-পূর্ব প্রত্যাবর্তিত মৌসুমী বায়ু বলে। অক্টোবর ও নভেম্বর দুই মাস অসমে প্রত্যাবর্তিত বায়ু বিরাজ করে। এই সময়টিতে উষ্ণতা কমে যাওয়ায় রাত্রি ও ভোরের দিকে কুয়াশা পড়ে।
(ঘ) শুষ্ক শীতকাল : অসমে নভেম্বর মাসের শেষ ভাগ অথবা ডিসেম্বর মাসের প্রথম থেকে শীতকাল আরম্ভ হয় এবং ফেব্রুয়ারী মাসের শেষ পযর্ন্ত শীতকাল। শীতকালের বৈশিষ্ট্য হ’ল নিম্ন উষ্ণতা, ভোরের দিকে ঘন কুয়াশা এবং বৃষ্টিপাতের অভাবে শুষ্ক আবহাওয়া। এই সময়ের বৈশিষ্ট্য হ’ল ডিসেম্বর ও জানুয়ারী অতি শুষ্ক এবং জানুয়ারী মাসে অতিমাত্রায় শীত।
প্রশ্ন ১৫। অসমের সকল স্থানে সমান পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয় না কেন ?
উত্তরঃ অসমের জলবায়ু মূলত মৌসুমী বায়ুর দ্বারা প্রভাবান্বিত যদিও রাজ্যটির জলবায়ু যথেষ্ট বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে। ভৌগোলিক অবস্থান ভূ-প্রকৃতি, আরবসাগর, ভারত মহাসাগরের জলভাগ এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ইত্যাদির তারতম্যের জন্য অসমের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য সকল স্থানে একই হয় না। ঋতুভেদে উত্তর-পশ্চিম ভারত ভূখণ্ডের পরিবর্তিত বায়ুর চাপের প্রভাবও অসমের জলবায়ুতে পড়ে। স্থানীয়ভাবে প্রবাহিত পার্বত্য বায়ু, উপত্যকা বায়ু, নদ-নদী এবং অন্যান্য জলাভূমির উপস্থিতি স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ুর বৈশিষ্ট্যে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। সাধারণত গ্ৰীষ্মকালে ব্রক্ষপুত্র এবং বরাক উপত্যকার সমভুমি অঞ্চলের নিকটস্থ পার্বত্য অঞ্চলের তুলনায় কিছু উষ্ণ হয়। এর ফলে গ্ৰীষ্মকালে সমভুমি অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে একপ্রকার নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়। এই সকল তারতম্যের ফলে রাজ্যটিতে এক ভিন্ন ধরনের ভূ-প্রকৃতি ও অবস্থিতি এবং নিকটবর্তী পার্বত্যভূমির প্রভাবে বৃষ্টিপাতের বিতরণের তারতম্য ঘটে।
প্রশ্ন ১৬। অসমের বৃষ্টিপাতের স্থানিক বিতরণ সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
উত্তরঃ অসমের বিভিন্ন স্থানের বৃষ্টিপাতের স্থানিক তারতম্য উল্লেখনীয়। রাজ্যটির এক পৃথক ধরনের ভূপ্রকৃতি তথা অবস্থিতি ও সংলগ্ন পার্বত্যভূমির প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণের বিতরণের ক্ষেত্রে তারতম্য ঘটায়। উচ্চ অসমের তিনসুকীয়া, ডিব্রুগড়, ধেমাজি, লখিমপুর ও শিবসাগর জেলা ; নিম্ন অসমের কোকরাঝাড় ও ধুবরী জেলা এবং দক্ষিণ অসমের কাছাড়; করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলায় বার্ষিক ২৫০ সে.মি- এর অধিক বৃষ্টিপাত হয়। অপরদিকে মধ্য অসমের নগাঁও ও কার্বি আংলং জেলাতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ যথেষ্ট কম।নগাঁও জেলার লংকা-লামডিং অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত কেবলমাত্র ১২৯ সে.মি. পযর্ন্ত হয়। নীচে কয়েকটি স্থানের বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দেওয়া হ’ল—
প্রশ্ন ১৭। অসমের মৃত্তিকার প্রকারসমূহের সংক্ষেপে বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ অসমে প্রাপ্ত মৃত্তিকাকে চারভাগে ভাগ করা যায়—
(১) পলিযুক্ত মৃত্তিকা।
(২) গিরিপদ মৃত্তিকা।
(৩) পাহাড়ীয়া মৃত্তিকা। এবং
(৪) কংকর মৃত্তিকা।
(১) পলিযুক্ত মৃত্তিকা : অসমের ব্রক্ষপুত্র ও বরাক উপত্যকার সমভুমি অঞ্চলে বিস্তৃতভাবে পলিযুক্ত মাটি পাওয়া যায়। পলিযুক্ত মাটি সাধারণত উর্বর হয়। এই মাটি দুই প্রকারের—
(ক) নতুন পলিযুক্ত মাটি।
(খ) পুরানো পলিযুক্ত মাটি। নতুন পলিযুক্ত মাটি ব্রক্ষপুত্র ও বরাক নদীর উপকণ্ঠ অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই মৃত্তিকা কিছুটা নরম ও ধোঁয়া বর্ণের। এই মৃত্তিকা সামান্যভাবে অম্লীয়। এই মৃত্তিকাতে সাধারণত ফস্ফরিক অ্যাসিড, নাইট্রোজেন এবং হিউমাস থাকে না বললেই চলে।
(২) গিরিপদ মৃত্তিকা : গিরিপদ মৃত্তিকা ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার উত্তরের হিমালয় পাদদেশের অপ্রশস্ত গিরিপদ অঞ্চলে পাওয়া যায়। পুরানো পলিযুক্ত মাটি বিশেষত কোকরাঝাড়, বরপেটা, নলবারী, কামরূপ, দরং, শোণিতপুর, লখিমপুর ও ধেমাজি জেলার উত্তর অংশের গিরিপদ অঞ্চল এবং দক্ষিণের ব্রক্ষপুত্র পারের নতুন পলিযুক্ত মাটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে পাওয়া যায়। ব্রক্ষপুত্রের দক্ষিণ পারের জেলা কয়টির দক্ষিণের পাহাড়ীয়া মাটি ও ব্রক্ষপুত্রের পারে নতুন পলিমাটির সংকীর্ণ অঞ্চলে এই মাটি পাওয়া যায়। গিরিপদ অঞ্চলটি ঘন কুয়াশা ও ঘন জঙ্গলের তরাই অঞ্চলে দ্বারা গঠিত। অসম অরুণাচলের সীমায় পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত সংকীর্ণ ভাবর অঞ্চলে অনেক পলস্ শংকুর দ্বারা (Alluvial cone)দ্বারা গঠিত হয়েছে এবং মৃত্তিকা অমিশ্রিত পাথর, বালি ও কর্দম দ্বারা গঠিত হয়েছে। এই মৃত্তিকার স্তর পুরু। নগাঁও জেলার কপিলী নদীর সমভুমি অঞ্চলে কিছু বিস্তৃতভাবে এই পুরানো পলিমাটি দেখা যায়। সাধারণত পুরানো পলিমাটির স্তর পুরু ও মুগা বর্ণের হয়।
(৩) পাহাড়ীয়া মৃত্তিকা : পাহাড়ীয়া মৃত্তিকা সাধারণত অসমের দক্ষিণাংশের পাহাড়ীয়া অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই মৃত্তিকার উর্বরতা স্থান ভেদে পৃথক পৃথক।নাইট্রোজেন ও জৈবিক পদার্থ এই মৃত্তিকাতে যথেষ্ট পরিমাণে থাকে। প্রাকৃতিক গঠন ও রাসায়নিক গুণাগুণের ভিত্তিতে এই মৃত্তিকাকে দুইভাগে ভাগ করা যায়, যেমন— লাল বেলে মাটি এবং লাল পলিমাটি। লাল বেলেমাটি বিশেষত অসম- মেঘালয় সীমান্তবর্তী অঞ্চলে, কার্বি মালভূমি, ডিমা হাসাও জেলার বরাইল পর্বতের দক্ষিণাংশে এবং কাছাড় জেলার পূর্ব সীমার কিছু কিছু অঞ্চলে পাওয়া যায়। এই মৃত্তিকা ক্ষয়প্রাপ্ত শিলা দ্বারা গঠিত এবং এর স্তরটিও পুরু। জৈবিক পদার্থ মিশ্রিত এই মৃত্তিকা মধ্যম থেকে অধিক পরিমাণে অম্লীয়। অপরদিকে লাল পলিমাটি অসম অরুণাচল প্রদেশের সীমায় দক্ষিণের সংকীর্ণ অঞ্চলে ও কার্বি মালভূমি ও ডিমা হাসাও জেলার বরাইল পর্বতের দক্ষিণাংশে পাওয়া যায়। এই মৃত্তিকা অসম মিজোরামের সীমান্তবর্তী অঞ্চলেও সামান্য পরিমাণে পাওয়া যায়। এই মাটিতে নাইট্রোজেন, হিউমাস, ফসফরিক অ্যাসিড ও চূণ কম পরিমাণে থাকে।
(৪) ল্যাটেরাইট বা কংকর মৃত্তিকা : ল্যাটেরাইট (ল্যাটিন ভাষায় Latter শব্দের অর্থ ইট) পোড়া ইটের মতো লাল ও কাঁকরময়। এই মাটিতে লোহা ও অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের পরিমাণ বেশি। এছাড়াও নাইট্রোজেন, পটাস ফসফরিক অ্যাসিড ও চূণ কম পরিমাণে থাকে। গৃহ ও রাস্তা নির্মাণে এই মাটি ব্যবহার করা হয়। এই মাটি অনুর্বর ও জলধারণ ক্ষমতা কম। প্রায় সমগ্ৰ ডিমা হাসাও জেলা ও কার্বি মালভূমির দক্ষিণের কোনো কোনো জায়গায় পাওয়া যায়। এছাড়াও কার্বি আংলং জেলার হামরেণ মহাকুমার পূর্ব সীমান্তে, গোলাঘাট জেলার দক্ষিণ সীমান্তে এবং বরাক সমভূমির উত্তরাংশের বরাইল পর্বতের পাদদেশে এই মৃত্তিকা পাওয়া যায়। এই মৃত্তিকার রঙ সাধারণত কালো।
প্রশ্ন ১৮। অসমে মৃত্তিকার অবক্ষয়ের কারণসমূহ কী কী বর্ণনা করো।
উত্তরঃ অসমের মৃত্তিকা কিছু সংখ্যক প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট কারক দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে। প্রাকৃতিক কারকগুলোর মধ্যে পাহাড়ের ঢালে প্রাকৃতিক কারণে হওয়া ভূমিক্ষয়, সমভূমি ও নিম্নভূমি অঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া জলবন্ধন (Water logging) সমস্যাই প্রধান।
বর্তমানে মানব সৃষ্ট অবক্ষয়ই বেশি সক্রিয়। মানব সৃষ্ট কারকগুলোর মধ্যে
(ক) গাছ-পালা কাটার ফলে বৃদ্ধি হওয়া পৃষ্ঠ জলপ্রবাহ দ্বারা হওয়া পৃষ্ঠ মৃত্তিকা ক্ষয়।
(খ) সমভূমি অঞ্চলে অবৈজ্ঞানিকভাবে মাটি চাষ করে কৃষিকাজ করা।
(গ)পাহাড়িয়া অঞ্চলে ঝুম চাষ করা।
(ঘ) মানুষের বসতি স্থাপন তথা অন্যান্য কার্যের দ্বারা উদ্ভব হওয়া জলবন্ধন সমস্যা। এবং
(ঙ) অধিক শস্য উৎপাদনের জন্য চাষের জমিতে অধিক মাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ ইত্যাদি প্রধান।
প্রশ্ন ১৯। বর্তমানে অসমের জনসংখ্যা কত ?
উত্তরঃ বর্তমানে অসমের জনসংখ্যা ৩১.১৬ নিযুক্ত (২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী।
প্রশ্ন ২০। অসমের অরণ্যসমূহকে কী কী ভাগে ভাগ করতে পারি ?
উত্তরঃ অসমের অরণ্যসমূহকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়।
(ক) ক্রান্তীয় চিরসবুজ অরণ্য।
(খ) ক্রান্তীয় অর্দ্ধ চিরসবুজ অরণ্য।
(গ) ক্রান্তীয় আর্দ্র পর্ণপাতী অরণ্য।
(ঘ) উপকূলীয় অরণ্য। এবং
(ঙ) ক্রান্তীয় শুষ্ক পর্ণমোচী অরণ্।
প্রশ্ন ২১। বর্ষারণ্য কাকে বলে ? অসমের বর্ষারণ্যের বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ অসমে অতি বেশি বৃষ্টি হওয়া অঞ্চলে এই অরণ্য দেখা যায়। বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩০০ সে.মি. বা ততোধিক হওয়া স্থানে এই অরণ্য থাকায় এই অরণ্যকে বর্ষারণ্য (Rain forest) বলা হয়। অরুণাচলের নিম্ন অঞ্চলের পাহাড়ের পাদদেশীয় এলাকা, তিনসুকীয়া ও ডিব্রুগড় জেলার দক্ষিণ অংশ ও বরাক উপত্যকার পাহাড়িয়া অঞ্চলে এই প্রকার অরণ্য দেখা যায়। এই অরণ্যে তিনটি স্তর দেখতে পাওয়া যায়। প্রথম স্তরটি অতি উঁচু গাছ দ্বারা গঠিত। এই স্তরে হোলোং, মেকাই প্রভৃতি অতি উচ্চ গাছ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় স্তরটি কিছুটা কম উঁচু গাছ দ্বারা গঠিত। যেমন—নাহর, সিয়ানাহর, আমারি ইত্যাদি গাছ পাওয়া যায়। পরের স্তরটিতে ছোট ছোট গাছ-বন থাকে। এছাড়া লতা-পাতা, বাঁশ, বেত, কপৌফুল ইত্যাদি দেখা যায়।
প্রশ্ন ২২। নদী-সংসর্গিত অরণ্যের গুরুত্ব এবং বর্তমান সংকট সম্পর্কে লিখ।
উত্তরঃ নদী বা বিলের নিকটবর্তী অঞ্চলে জলাভূমিতে এক প্রকারের অরণ্য পাওয়া যায়। এই অরণ্যকে উপকূলীয় অরণ্য বলা হয়। এই অরণ্যে কিছু উঁচু গাছের সাথে ঘাঁস জাতীয় উদ্ভিদের প্রাধান্য বেশি। গাছের মধ্যে সোম, সোঁয়ালু, উরিয়াম, মজ, ঔ, আজার ইত্যাদি প্রধান। নল, খাগরা,তরা, কৌপাত, বেত, ঝাঁও, কঁহুয়া ইত্যাদি ছোট ছোট বা ঘাঁস জাতীয় উদ্ভিদের জন্য নদীর তীরের স্থান বিশেষ উপযোগী। কাজিরাঙা, ডিব্রুসৈখোয়া, পবিতরা, ওরাং প্রভৃতি রাষ্ট্রীয় উদ্যান বা অভয়ারণ্য প্রধানত নদীতীরের অঞ্চলে অবস্থিত।
প্রশ্ন ২৩। কাজিরাঙা রাষ্ট্রীয় উদ্যানের অবস্থান এবং আয়তন কত লেখো।
উত্তরঃ কাজিরাঙা রাষ্ট্রীয় উদ্যান গোলাঘাট, নগাঁও ও শোণিতপুর জেলার সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত। এর মাটি কালি ৮৫৮.৯৮ বর্গ কি.মি.।
প্রশ্ন ২৪। অসমের রাষ্ট্রীয় উদ্যানগুলোর নাম ও অবস্থান লেখ।
উত্তরঃ
প্রশ্ন ২৫। অভয়ারণ্যগুলো কীভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে লেখ।
উত্তরঃ প্রকৃতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অভয়ারণ্য এবং রাষ্ট্রীয় উদ্যানসমূহের ভূমিকা সুদূরপ্রসারী। এগুলো মানুষের ধ্বংসাত্মক প্রভাব থেকে সুরক্ষিত এই সুরক্ষিত বনাঞ্চলগুলোতে হাতী, বাঘ, গণ্ডার, বন্যমহিষ, বিভিন্ন প্রজাতির হরিণ, বিভিন্ন প্রজাতির বানরসহ অন্যান্য অনেক বন্যপ্রাণী আছে। তৃণভূমি, বিভিন্ন প্রকারের গাছ এবং আর্দ্রভূমিতে ভরা এই সুরক্ষিত বনাঞ্চলগুলো দেশ-বিদেশের বহু পর্যটকের আকর্ষণ কেন্দ্র। এগুলোকে সঠিকভাবে সুরক্ষা প্রদান করার উপর আমাদের এই রাজ্য তথা পৃথিবীর জৈব- বৈচিত্র্যের ভবিষ্যৎ অনেক পরিমাণে নির্ভর করবে। গাছ বায়ুমণ্ডলের কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস শোষণ করে নেয় ও অক্সিজেন গ্যাস সরবরাহ করে। অতএব এই অভয়ারণ্যের সৃষ্টি করে বায়ুদূষণ কিছুটা নিবারণ করা যায়। এছাড়া উষ্ণায়ণের (Global warming) হাত থেকেও অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়। অভয়ারণ্য রক্ষা করার জন্য জন সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। গ্ৰীণ হাউস এফেক্ট থেকেও আমরা কিছুটা পরিমাণে রক্ষা পেতে পারি।
প্রশ্ন ২৬। স্বাধীনতার পরবর্তী কালপর্বে অসমের প্রশাসনিক বিভাগের পরিবর্তন সম্পর্কে লিখ।
উত্তরঃ স্বাধীনতার পরবর্তী কালপর্বে ভৌগোলিকভাবে অসমের বিস্তৃতির অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। ব্রিটিশ শাসনকালে অসম অনেক বড় ছিল। সে সময়ে মেঘালয় নাগাল্যাণ্ড ছাড়াও সিলেট (বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত) অসমের সাথে যুক্ত ছিল। ১৮৯৫ সাল লুসাই পাহাড় (বর্তমানের মিজোরাম) অসমের অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের সময় সিলেট পূর্ব পাকিস্তানের(বর্তমান বাংলাদেশ) সাথে সংযুক্ত হয়েছিল। সেই সময়ে অসমে ১১টি জেলা ছিল এবং শিলং অসমের রাজধানী ছিল।
পরবর্তীকালে ১৯৬৩ সালে নাগাল্যাণ্ড, ১৯৭০ সালে মেঘালয় এবং ১৯৭১ সাল মিজোরাম অসম রাজ্য থেকে পৃথক হয়ে যায়। ১৯৭৩ সালে গুয়াহাটীর দিসপুর অসমের রাজধানী হয়। অসমের বর্তমান মাটির কালি ৭৮,৪৩৮ বর্গ কি.মি. এবং বর্তমানে জনসংখ্যা ৩১.১৬ নিযুক্ত(২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী)। বর্তমানে অসমে ২৭টি জেলা আছে। কিন্তু কোকরাঝার, চিরাং, বাক্সা এবং ওদালগুড়ি বর্তমানে বি.টি. এ.ডি (Bodoland Territorial Area District)-র অন্তর্গত। বি.টি.এ.ডি ২০০৩ সালে গঠিত হয়েছে।
প্রশ্ন ২৭। অসমের বর্তমানে জেলাগুলোর নাম এবং সদর স্থানগুলোর নাম লিখ।
প্রশ্ন ২৮। অসমের আয়তন কত ? রাজ্যটির রাজধানী কোথায় অবস্থিত ? এর আয়তন হিসাবে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ছোট জেলার নাম লিখ।
উত্তরঃ অসমের মাটির কালি ৭৮,৪৩৮ বর্গ কি.মি.। রাজ্যটির রাজধানী দিসপুর। সবচেয়ে বড় জেলার নাম কার্বি আংলং এবং সবচেয়ে ছোট জেলার নাম কামরূপ।
প্রশ্ন ২৯। ২০১১ সালের লোকগণনা অনুসারে অসমের জনসংখ্যা কত ? জনসংখ্যা অনুসারে রাজ্যটির সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে ছোট জেলাটির নাম লিখ।
উত্তরঃ ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী অসমের জনসংখ্যা ৩১.১৬ নিযুক্ত। জনসংখ্যা সর্বাধিক নগাঁওত জেলার ২,৮২৬,০০৬ জন এবং সর্বনিম্ন ডিমা হাসাও জেলায় ২১৩,৫২৯ জন।
প্রশ্ন ৩০। টীকা লিখ :
(ক) অসম এবং মৌসুমী জলবায়ু।
(খ) দক্ষিণ -পশ্চিম মৌসুমী বায়ু।
(গ) উত্তর পূর্ব মৌসুমী বায়ু।
(ঘ) অসমের বর্ষাকাল।
(ঙ) অসমের প্রাক্-মৌসুমী কাল।
(চ) অসমের বৃষ্টির স্থানিক বিতরণ।
(ছ) অসমের প্রশাসনিক বিভাগ।
(জ) জেলা পর্যায়ে অসমের জনসংখ্যা।
উত্তরঃ (ক) অসম এবং মৌসুমী বায়ু : প্রশ্নোওরের ১৩ (খ) নং লেখ।
(খ) দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমী বায়ু : প্রশ্নোওরের ১৩ (খ) নং লেখ।
(গ) উত্তর-পূর্ব মৌসুমী বায়ু : প্রশ্নোওরের ১৩ (গ) নং লেখ।
(ঘ) অসমের বর্ষাকাল : প্রশ্নোত্তরের ১৩ (খ) নং লিখ।
(ঙ) অসমের প্রাক্ মৌসুমী কাল : প্রশ্নোওরের ১৩ (ক) নং লেখ।
(চ) অসমের বৃষ্টিপাতের স্থানিক বিতরণ : ১৩ নং প্রশ্নোত্তরটি লেখ।
(ছ) অসমের প্রশাসনিক বিভাগ : ২৬ নং প্রশ্নোত্তরটি লেখ।
(জ) জেলা পর্যায়ে অসমের জনসংখ্যা : ২৭ নং প্রশ্নোত্তরটি লেখ।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। অসম ভারতের কোন দিকে অবস্থিত ?
উত্তরঃ উত্তর-পূর্ব দিকে।
প্রশ্ন ২। অসম রাজ্যের সীমায় দুইটি বিদেশী রাষ্ট্রের নাম লিখ ?
উত্তরঃ ভূটান, বাংলাদেশ।
প্রশ্ন ৩। অসমের সীমা নির্দেশ কর ।
উত্তরঃ অসমের উত্তরে আছে ভূটান ও অরুণাচল প্রদেশ, পূর্বে অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যাণ্ড ও মণিপুর, দক্ষিণে মিজোরাম ও মেঘালয়, পশ্চিমে ত্রিপুরা, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ।
প্রশ্ন ৪। ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত ?
উত্তরঃ ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার দৈর্ঘ্য ৭২০ কি.মি. এবং প্রস্থ ৮০ কি.মি.।
প্রশ্ন ৫। মাজুলী দ্বীপ কোথায় অবস্থিত ?
উত্তরঃ যোরহাট জেলার অন্তর্গত ব্রক্ষপুত্রের বুকে।
প্রশ্ন ৬। মাজুলী দ্বীপের লোকসংখ্যা কত ?
উত্তরঃ ১.৬৮ লক্ষ।
প্রশ্ন ৭। চা চাষের জন্য কি ধরনের মাটির প্রয়োজন ?
উত্তরঃ ফসফরাসযুক্ত ও অম্লীয় মাটির প্রয়োজন।
প্রশ্ন ৮। প্রস্তাবিত দুইটি অভয়ারণ্যের নাম লিখ এবং এই দুইটির অবস্থান কোথায় ?
উত্তরঃ প্রস্তাবিত অভয়ারণ্য দুটি হল—- উত্তর কার্বি আংলং অভয়ারণ্য, কার্বি আংলং- এ অবস্থিত।বরদৈরাম বিলমুখ অভয়ারণ্য, লখিমপুরে অবস্থিত।
প্রশ্ন ৯। ব্রক্ষপুত্র নদীর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত ?
উত্তরঃ দৈর্ঘ্য ৬৪০ কি.মি. (অসমে) এবং প্রস্থ গড়ে প্রায় ৬ থেকে ৮ কি.মি.।
প্রশ্ন ১০। অসমের কোন স্থানকে উত্তর- পূর্বাঞ্চলের প্রবেশদ্বার বলা হয় ?
উত্তরঃ গুয়াহাটী মহানগরীকে।
প্রশ্ন ১১। অসমে কি প্রকারের জলবায়ু দেখা যায় ?
উত্তরঃ উপক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ু।
প্রশ্ন ১২। অসমে গড়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কত ?
উত্তরঃ গড়ে প্রায় ২০০ সে.মি.।
প্রশ্ন ১৩। অসমে কয়টি রাষ্ট্রীয় উদ্যান এবং কয়টি অভয়ারণ্য আছে ?
উত্তরঃ অসমে ৫টি রাষ্ট্রীয় উদ্যান এবং ১৮টি অভয়ারণ্য আছে।
প্রশ্ন ১৪। অসমে রেলসেবা কবে আরম্ভ হয় ?
উত্তরঃ ১৮৮৪ সালে।
প্রশ্ন ১৫। ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার নগদী ফসল বা অর্থ শস্য কী ?
উত্তরঃ চা।
প্রশ্ন ১৬। অসমের ডিমা হাসাও জেলায় থাকা পাহাড়-পর্বতসমূহ কোন পর্বতশ্রেণির অন্তর্গত ?
উত্তরঃ বরাইল পর্বতশ্রেণির অন্তর্গত।
প্রশ্ন ১৭। পাটকাই পর্বতশ্রেণির অবস্থান অসমের কোন দিকে ?
উত্তরঃ অসমের পূর্বদিকে।
প্রশ্ন ১৮। বর্তমানে অসমে মোট কয়টি জেলা আছে ?
উত্তরঃ ২৭ টি।
প্রশ্ন ১৯। এশিয়ার প্রথম তেল শোধনাগার কোথায় অবস্থিত ?
উত্তরঃ অসমের ডিগবয়ে।
প্রশ্ন ২০। অসমের সর্বোচ্চ শৃঙ্গটির নাম কী ?
উত্তরঃ বরাইল পর্বতশ্রেণির লাইকেই (১৯৫৯ মি.)।
প্রশ্ন ২১। কার্বি-পাহাড়ের সর্বোচ্চ শৃঙ্গটির নাম কি ?
উত্তরঃ দাম্বুকচো (১,৩৬৩ মি.)।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ২২। (ঝ) বি.টি.এ.ডি।
(ঝ) বি.টি.এ.ড : বি.টি.এ.ডি বা Bodoland Territorial Area Districts ২০০৩ সালে গঠিত হয়েছিল। এর অন্তর্গত ৪ টি জেলা হ’ল—
কোকরাঝার, চিরাং বাক্সা এবং ওদালগুড়ি। এই জেলা কয়টির রাজধানী, মাটির কালি ও জনসংখ্যা নীচে দেওয়া হ’ল–
প্রশ্ন ২৩। অসমের অভয়ারণ্যের নাম, অবস্থান ও আয়তনসহ একটি তালিকা প্রস্তুত কর।
উত্তরঃ
প্রশ্ন ২৪। ব্রক্ষপুত্র সমতলের কোন কোন স্থানে কাঠ ফালা কল ও প্লাইউড প্রস্তুত করা কারখানা আছে।
উত্তরঃ ব্রক্ষপুত্র সমতলের তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, জোড়হাট ও কামরূপ জেলায় বহু কাঠ ফালা কল ও কয়েকটি প্লাইউড প্রস্তুত করার কারখানা আছে।
প্রশ্ন ২৫। ব্রক্ষপুত্র সমতলের বন জঙ্গলে কী কী বনৌষধি গাছ পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ সমতলের বনাঞ্চলে অরকিড, নিম, দ্রোণ,তুলসী, গন্ধাসরৈ, অপরাজিতা, নয়নতারা, অশোক, অর্জুন প্রভৃতি বহু বনৌষধি গাছ পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ২৬। ব্রক্ষপুত্র সমতলের বনাঞ্চল কী কী বন্যপ্রাণীর বাসস্থান ?
উত্তরঃ ব্রক্ষপুত্র সমতলের বনাঞ্চল বহু বন্যপ্রাণীর বাসস্থান। এগুলোর মধ্যে কাজিরাঙা এক শিং-এর গণ্ডার, বানর, বন্য মহিষ, হাতী, বাঘ, ভালুক, নল, গাহারি প্রভৃতি প্রধান। এ ছাড়া হরিণ, জহামল, বিভিন্ন প্রকারের সাপ, ঘরিয়াল, এই বনাঞ্চলে পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ২৭। ব্রক্ষপুত্র সমতলের নদী ও বিলগুলিতে কী কী মাছ পাওয়া যায় ?
উত্তরঃ ব্রক্ষপুত্র সমতলের নদী ও বিলগুলিতে রুই, কাতল, চিতল, বোয়াল, শিঙ্গি, মাগুর, কই ইত্যাদি বহু প্রকারের ছোট-বড় মাছ, কাছিম, ঘরিয়াল পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ২৮। প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভর করে অসমে কী কী শিল্প গড়ে উঠেছে ?
উত্তরঃ প্রাকৃতিক গ্যাসের উপর নির্ভর করে অসমের কামরূপে সার কারখানা, তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও অসম পেট্রো-রাসায়নিক (নামরূপ) শিল্প গড়ে উঠেছে।
প্রশ্ন ২৯। পেট্রো-রাসায়নিক শিল্পে খনিজ তেল হতে কী কী সামগ্ৰীর উৎপাদন হয় ?
উত্তরঃ পলিয়েষ্টার সূতা, কৃত্রিম রাবার, প্লাষ্টিক, কার্বন ও অন্যান্য অনেক প্রকার সামগ্ৰী উৎপাদনের কাঁচামাল উৎপাদন করা হয়।
প্রশ্ন ৩০। বনজ সম্পদের উপর ভিত্তি করে কী কী শিল্প গড়ে উঠেছে ?
উত্তরঃ বনজ সম্পদের উপর ভিত্তি করে প্লাইউড, পেনসিল, দিয়াশলাই, কাগজ, কাঠ কাটা, কাঠ চেরা ইত্যাদি শিল্প গড়ে উঠেছে।
প্রশ্ন ৩১। ভারতের তেল উদ্ঘাটন এবং উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত সরকারী খণ্ডের প্রতিষ্ঠান দুটির নাম লিখ।
উত্তরঃ (১) তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস আয়োগ।
(২) অয়েল ইণ্ডিয়া লিমিটেড।
প্রশ্ন ৩২। পেট্রো-রাসায়নিক উদ্যোগে খনিজ তেল হতে কী কী সামগ্ৰী উৎপাদন করা হয় ?
উত্তরঃ পেট্রো-রাসায়নিক উদ্যোগে খনিজ তেল হতে পলিয়েষ্টার সূতা, কৃত্রিম রাবার, প্লাষ্টিক কার্বন ইত্যাদি সামগ্ৰী উৎপাদন করা হয়।
প্রশ্ন ৩৩। বরাক সমতলে কয়টি জেলা আছে ও কী কী ?
উত্তরঃ বরাক সমতলে তিনটি জেলা আছে। এই জেলা তিনটি হল—- কাছাড়, হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলা।
প্রশ্ন ৩৪। বরাক সমতলের পূর্বদিকে কয়টি সংরক্ষিত বন আছে ও কী কী ?
উত্তরঃ বরাক সমতলের পূর্বদিকে মণিপুরের পাহাড়গুলির পাদদেশে তিনটি সংরক্ষিত বন আছে। এই সংরক্ষিত বন তিনটি হল—- উজনিজিরি, নামনিজিরি ও বরাক।
প্রশ্ন ৩৫। বরাক সমতলের দক্ষিণে কী কী সংরক্ষিত বন আছে ?
উত্তরঃ বরাক সমতলের দক্ষিণে মিজোরামের পাহাড়গুলির পাদদেশে ইনার লাইন, সোনাই, কাটাখাল, ছিংলা ও লংগাই সংরক্ষিত বন আছে।
প্রশ্ন ৩৬। বরাক সমতলের পশ্চিমে কী কী সংরক্ষিত বন আছে ?
উত্তরঃ বরাক সমতলের পশ্চিমে বাদশাহ টিলা, দোহালীয়া ও তিলরাম পাড়াহ নামক তিনটি সংরক্ষিত বন আছে।
প্রশ্ন ৩৭। উত্তর কাছার জেলার কোন স্থানে সুড়ঙ্গ রেলপথ আছে ?
উত্তরঃ মাহুর।
প্রশ্ন ৩৮। উত্তর কাছাড় জেলায় কোন স্থানে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র আছে ?
উত্তরঃ উমরাংচুতে কপিলী জলবিদ্যুৎ প্রকল্প আছে।
প্রশ্ন ৩৯। কার্বি আংলং জেলার কোন স্থানে সিমেন্টের কারখানা আছে ?
উত্তরঃ বোকাজান।
প্রশ্ন ৪০। হাইলাকান্দি জেলার কোন স্থানে কাগজের কল আছে ?
উত্তরঃ পাঁচ গ্ৰামে।
প্রশ্ন ৪১। বরাক সমতলের সর্ববৃহৎ নগর কোনটি ?
উত্তরঃ শিলচর।
প্রশ্ন ৪২। কার্বি আংলং জেলার সদর স্থান কোথায় ?
উত্তরঃ ডিফু।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। কি কি প্রাকৃতিক কারক অসমের যাতায়াত-পরিবহন উন্নয়নে বাধা দিয়েছে ? বিস্তারিতভাবে আলোচনা কর।
উত্তরঃঅসমের আশানুরূপ হিসাবে যাতায়াত পরিবহন উন্নত না হওয়ার মূল কারণগুলি নীচে আলোচনা করা হল—-
(১) ব্রক্ষপুত্র উপত্যকার চারদিকে পাহাড়ীয়া হওয়ার জন্য এবং বর্ষাকালে এই অঞ্চলে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে এর নদীগুলিতে বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যার জলে রাস্তা-ঘাট ডুবে যায় এবং যাতায়াতের প্রতিবন্ধকের সৃষ্টি করে।
(২) অসম নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত বন-জঙ্গলে পরিপূর্ণ। বর্ষা, বন্যা অসমের জন জীবনের চিরসঙ্গী। রেল পরিবহন ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়। বন্যা, অত্যধিক বৃষ্টির ফলে কালর্ভাট ব্রীজ (পুল) ইত্যাদি মেরামত করতে প্রচুর টাকা খরচ হয়।
(৩) বর্ষাকালে অনবরত বৃষ্টির ফলে কখনও কখনও রাস্তা-ঘাট, রেলপথ এবং এইগুলির উপরের ব্রীজ (পুল), খসে পড়ে বা ভেঙ্গে যায়।এর ফলে যাতায়াতে প্রতিবন্ধকের সৃষ্টি করে।
(৪) বন্যা, অধিক বৃষ্টিপাত ইত্যাদির ফলে রেল লাইন হঠাৎ উড়িয়ে নিয়ে যায়। প্রায়ই দুর্ঘটনা ইত্যাদি ঘটে।
(৫) নদীর জলে রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ(পুল), কালভার্ট ইত্যাদি উড়িয়ে নিয়ে রাস্তা-ঘাটের বিস্তর ক্ষতিসাধন করে। অপরদিকে বৎসরের প্রায় ছয়মাস, অসমের বেশির ভাগ অঞ্চলই জলে ডুবে থাকে। ফলে এই সময়ে রাস্তা-ঘাট মেরামত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।
(৬) অসমের পথ পরিবহনে আজ পযর্ন্ত অসমের সমগ্ৰ অঞ্চলে বিস্তৃত হয় নি। যার মূল কারণ হল আর্থিক সমস্যা। সমগ্ৰ অঞ্চলে রাস্তা-ঘাট প্রসারিত করতে হলে ব্রীজ (পুল) দেওয়া, কালভার্ট নির্মাণ করা ইত্যাদি কাজের অতি প্রয়োজন । এই সমস্ত কাজের জন্য অর্থের প্রয়োজন। অসম সরকারের পক্ষে এত টাকা খরচ করাও অসম্ভব। সেইজন্য অসমের পথ পরিবহন এখনও অনুন্নত।
(৭) অসমের পথ পরিবহনের ক্ষেত্রে যদিও প্রতি বৎসর কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে তথাপি দুর্নীতিগ্ৰস্ত কর্মচারীগণের জন্য পথ ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি।
প্রশ্ন ২। অসমের শিল্প কারখানায় খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভূমিকা বর্ণনা করো।
উত্তরঃ অসমের অর্থনৈতিক উন্নয়নে খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। মহারাষ্ট্রের মুম্বাই উপকূলীয় সাগরের তল থেকে তেল উদ্ঘাটন করার পূর্বে পযর্ন্ত অসম ছিল ভারতের একমাত্র খনিজ তেলের ভাণ্ডার। অসমের ডিব্রুগড়, নাহারকাটিয়া, মরান, লাকুয়া ও রুদ্রসাগর খনিজ তেলের জন্য বিখ্যাত। অসমের এই অঞ্চলগুলি যোগান ধরতে পারা তেলের পরিমাণ লক্ষ্য রেখে অসমের ডিব্রুগড়, গুয়াহাটী (নুনমাটি) ও বঙ্গাইগাঁও-তে একটি করে এবং বিহারের বারাউনিতে একটি তেল শোধনাগার স্থাপন করা হয়েছে। অসমে চতুর্থ তেল শোধনাগারটি গোলাঘাট জেলার নুমলীগড়ে স্থাপন করা হয়েছে। তেল উৎপাদন হতে অসম রাজ্য সরকার কেন্দ্রীয় সরকার হতে প্রচুর টাকা রয়েলটি পায়। সুতরাং অসমের অর্থনীতিতে এই প্রাকৃতিক তেল কারখানা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তেল কারখানা হতে নানা ধরনের সামগ্ৰী উৎপাদন করা হয়। পথ-পরিবহন, রেল পরিবহন ও বিমান পরিবহনের জন্য জ্বালানি, মোটর স্পিরিট, সাদা ও রঙ্গিন কেরোসিন তেল, নেপথা, পলিয়েষ্টার সূতা, নাইট্রোজেন যুক্ত সার, মোমবাতি, সুগন্ধি আতর প্রভৃতি নানাধরনের সামগ্ৰী খনিজ তেল হতে উৎপাদন করা হয়। ফলে বৈদেশিক বিনিময় মুদ্রার সৃষ্টি হয়।
খনিজ তেলের সঙ্গে আলাদাভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়া যায়। সংরক্ষণ এবং বয়ে নেওয়ার সুবিধা না থাকার জন্য বহু গ্যাস উৎপাদনকেন্দ্র জ্বালিয়ে ফেলা হয়। রাসায়নিক সার উৎপাদন, পেট্রো-রাসায়নিক শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন ইত্যাদিতে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহৃদ হয়। রান্নার গ্যাস হিসাবে বাড়ীর ব্যবহারের জন্য এবং জ্বালানি হিসাবে শিল্প কারখানায় একে ব্যবহার করা হয়। অসমের নামরূপের সার কারখানা, তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এবং অসম পেট্রো-রাসায়নিক শিল্প (নামরূপ) প্রাকৃতিক গ্যাসের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। চা বাগান ও বাড়ীর ব্যবহারের জন্য এবং তেলক্ষেত্রের নিকটবর্তী অঞ্চলে গ্যাসের যোগান দেওয়া হয়।
এগুলো হল অসমের অর্থনৈতিক উন্নয়নে খনিজ তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভূমিকা।
প্রশ্ন ৩। পর্ণপাতী উদ্ভিদ কাকে বলে ? কিরূপ প্রাকৃতিক অবস্থায় একে পাওয়া যায়। চারপ্রকার পর্ণপাতী বৃক্ষের নাম লেখ।
উত্তরঃ যে সকল অঞ্চলে এপ্রিল, মে মাসে ২/১ বার বৃষ্টি হয় এবং জুন জুলাই, আগষ্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে এর পরিমাণ অনেক হয়। আবার অক্টোবর মাস থেকে নভেম্বর মাস পযর্ন্ত বৃষ্টিপাত কম হয়, সেই সকল উদ্ভিদকে পর্ণপাতী উদ্ভিদ বলে। এদের বৈশিষ্ট্য হল শীতকালে এদের পাতা ঝরে পড়ে। এ সকল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০০ সে.মি. থেকে ২০০ সে.মি. পযর্ন্ত। দক্ষিণ ভারতের পার্বত্য অঞ্চলে, মধ্য ভারতের মালভূমিতে ও হিমালয়ের পাদদেশে পর্ণপাতী বৃক্ষের অরণ্য দেখা যায়। চিরহরিৎ বনাঞ্চলেও পর্ণপাতী বৃক্ষলতাদি দেখতে পাওয়া যায়।
চার প্রকার পর্ণপাতী বৃক্ষের নাম হল— শাল, সেগুন, বনসোম, শিমূল ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৪। নিম্নলিখিত বৃক্ষগুলোকে পর্ণপাতী এবং চিরসবুজ দুটি ভাগে ভাগ কর।
শিমূল, আম, হরিতকী, হলং,নাহার, গামারি, তিতাচাঁপা, অগুরু, উরিয়াম, মাক্রিশাল।
উত্তরঃ পর্ণপাতী : শিমূল, হরিতকী, গামারি, উড়িয়াম।
চিরসবুজ : আম, হলং,নাহার, তিতাচাঁপা, অগুরু, মাক্রিশাল।
প্রশ্ন ৫। বরাক সমতলের কৃষির বিষয়ে একটি ভৌগোলিক বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ বরাক সমতলের কৃষিই মানুষের প্রধান বৃত্তি। এই অঞ্চলটির ৩৫ শতাংশ স্থান জুড়ে আছে বন-জঙ্গল, টিলা ইত্যাদি। ৩০শতাংশ মাটি কৃষির উপযোগী। এই অঞ্চলের প্রধান শস্য কয়টি হল— ধান, মরা পাট, ডাল, মাকৈ, ইক্ষু, সরিষা ও চা। ফলমূলের মধ্যে কমলা, আনারস, পেঁপে ও আলু। নগদী ফসল ও অর্থকরী শস্যের ভিতরে চা প্রধান।
ধান বরাক উপত্যকার প্রধান শস্য। এখানে প্রায় ২,৪০,০০০ হেক্টর মাটিতে ধান চাষ করা হয়। বর্ষাকালে রোয়া শালি ধান, বসন্তকালে আহু ধান করা হয়। আবার ডিসেম্বর- জানুয়ারীতে রোপণ করে মে-জুন মাসে বোরো ধান তোলা হয়। বরাক সমতলটিতে চাষ করা মোট মাটির প্রায় ৪০ শতাংশ বা ১,০৮,০০০ হেক্টর মাটি।
ধানের পরে ডাল ও সরিষা এই সমতলের উৎপাদন হওয়া প্রধান খাদ্যশস্য। ডাল ঘরে খাওয়ার জন্য চাষ করা হয়। এখানে প্রায় ১৭০০ হেক্টর মাটিতে ডাল এবং ২০০ হেক্টর মাটিতে সরিষা উৎপাদন করা হয়।এখানে বিভিন্ন প্রকারের শাক-সব্জিও উৎপাদন করা হয়।
সমতলটির অর্থকরী শস্যের ভিতরে মরাপাট, ইক্ষু ও চা প্রধান। মরাপাট বরাক নদীর পারের স্থানগুলিতে করা হয়। এই অঞ্চলটিকে প্রায় ১০০০ হেক্টর মাটিতে মরাপাট উৎপাদন করা হয়। ইক্ষু প্রধানত কাছার জেলার পশ্চিমাংশে হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলার উত্তরাংশে করা হয়। বরাক সমতলটির ইক্ষু চাষ করা মোট মাটির পরিমাণ প্রায় ৪৫০০ হেক্টর। চা এই অঞ্চলের একটি প্রধান অর্থকরী শস্য। সমতলটির টিলাগুলিতে, উত্তর ও দক্ষিণের পাহাড়ের নিকটবর্তী অঞ্চলে ভাল চা উৎপন্ন হয়। এখানে মোট প্রায় ১১৫ টি বড় চা বাগান আছে। এই চা বাগানগুলির মাটির পরিমাণ প্রায় ৩০,০০০ হেক্টর। এই চা বাগানগুলি হতে মোট প্রায় ৪০,০০০,০০০ কিলোগ্ৰাম চা পাতা উৎপাদন হয়। এই অঞ্চলে কমলা ও আনারস উৎপাদন হয়।
প্রশ্ন ৬। অসমের মানচিত্র এঁকে রাজ্য, রাজধানী ও প্রধান নদীসমূহ দেখাও।
উত্তরঃ নিজে কর।[ পাঠ্যপুস্তকের ৪.১২, ৪.১৩, ৪.১৪, ৪.১৫, এবং ৪.০৯ ছবি দিতে হবে।]