Class 11 Logic and Philosophy Chapter 4 প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Assam Board Bengali Medium Class 11 Logic and Philosophy Chapter 4 প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান and select needs one.
Class 11 Logic and Philosophy Chapter 4 প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান
Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Assam Board Class 11 Logic and Philosophy Chapter 4 প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান Bengali Medium Solutions for All Subject, You can practice these here.
প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান
পাঠ: ৪
প্রথম খণ্ড
অতি- সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। নিষেধ বা অস্বীকারের প্রতীক চিহ্ন কী?
উত্তরঃ ‘~’
প্রশ্ন ২। ‘প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান সম্পূর্ণভাবে নিগমনাত্মক’—উক্তিটি কি সত্য?
উত্তরঃ হ্যাঁ, উক্তিটি সত্য।
প্রশ্ন ৩। ‘নিষেধক বচন হল যৌগিক বচন’—উক্তিটি কি সত্য?
উত্তরঃ হ্যাঁ।
প্রশ্ন ৪। সংযৌগিক বচনের উপাদান বচনগুলিকে কী বলা হয়?
উত্তরঃ সংযোগী।
প্রশ্ন ৫। বৈকল্পিক বচনের উপাদান বচনগুলিকে কী বলা হয়?
উত্তরঃ বিকল্প।
প্রশ্ন ৬। একটি সংযৌগিক বচন কখন সত্য হয়?
উত্তরঃ একটি সংযৌগিক বচন সত্য হবে যদি এর প্রত্যেকটি সংযোগী সত্য হয়।
প্রশ্ন ৭। সত্যমূল্য কী?
উত্তরঃ বচনের সত্যতা বা মিথ্যাত্বকে সত্যমূল্য বলে।
প্রশ্ন ৮। বচন কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বাক্য সত্য বা মিথ্যা হতে পারে, তাকেই বচন বলে।
প্রশ্ন ৯। যুক্তির বৈধতা বা অবৈধতা যুক্তির বচনের সত্যতা বা মিথ্যাত্বের উপর কি নির্ভর করে?
উত্তরঃ না।
প্রশ্ন ১০। একটি বৈকল্পিক বচন কখন মিথ্যা হয়?
উত্তরঃ যখন দুটি বিকল্প মিথ্যা হয়, তখন একটি বৈকল্পিক বচন মিথ্যা হয়।
প্রশ্ন ১১। একটি প্রাকল্পিক বচন কখন মিথ্যা হয়?
উত্তরঃ যখন পূর্ববর্তী অংশ সত্য হয় এবং পরবর্তী অংশ মিথ্যা হয়, তখন প্রাকল্পিক বচন মিথ্যা হয়।
প্রশ্ন ১২। একটি রচনাকারের মুখ্য সংযোজক কীভাবে নির্ধারণ করা যায়?
উত্তরঃ বন্ধনীর বাইরের সংযোগটিই মুখ্য সংযোজক।
প্রশ্ন ১৩। p v (q . r) এই বচনাকারের মুখ্য সংযোজক কোনটি?
উত্তরঃ এই বচনাকারে ‘v’ মুখ্য সংযোজক। বচনটি বৈকল্পিক।
প্রশ্ন ১৪। ‘তর্কীয় সংযোজক’ কী?
উত্তরঃ নিষেধ চিহ্ন ‘না’, ‘নয়’ ছাড়া প্রতিটি তর্কীয় অবিকারী বা যৌক্তিক ধ্রুবকে ‘তর্কীয় সংযোজক’ বলে।
প্রশ্ন ১৫। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানে মৌলিক সত্যফলন কয়টি?
উত্তরঃ পাঁচটি।
প্রশ্ন ১৬। সত্যাপেক্ষ যোজক কাকে বলে?
উত্তরঃ সত্যাপেক্ষ বচনে ব্যবহৃত ‘এবং’, ‘অথবা’, ‘যদি … তবে ‘ প্রভৃতি সংযোজক বা যোজকগুলিকে সত্যাপেক্ষ যোজক বলা হয়।
প্রশ্ন ১৭। ‘বিশুদ্ধ গণিতশাস্ত্র এবং প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানের মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই।’ —উক্তিটি কি সত্য?
উত্তরঃ হ্যাঁ।
প্রশ্ন ১৮। আধুনিক তর্কবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা কে?
উত্তরঃ জর্জ বুল এবং অগাস্টাস ডি মর্গান (Augustus de Morgan and George Boole)।
প্রশ্ন ১৯। ‘প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান’ শব্দটি কে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তরঃ জন ভেন্।
প্রশ্ন ২০। কোন বৎসরটিকে প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের শুরু হবার বছর বলে গণ্য করা হয়?
উত্তরঃ ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে।
প্রশ্ন ২১। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানকে আধুনিক তর্কবিজ্ঞান, গাণিতিক তর্কবিজ্ঞান বা নতুন তর্কবিজ্ঞান বলা যায় কি?
উত্তরঃ হ্যাঁ, বলা যায়৷
প্রশ্ন ২২। কে প্রথমে তর্কবিজ্ঞানকে বিকাশ করার কথা বলেছিলেন?
উত্তরঃ লাইবনিজ।
প্রশ্ন ২৩। অ্যারিস্টটল কি চল ব্যবহার করেছিলেন?
উত্তরঃ হ্যাঁ, কিন্তু সীমিত পরিসরে।
প্রশ্ন ২৪। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান প্রকৃতিগতভাবে আগমনাত্মক না নিগমনাত্মক?
উত্তরঃ নিগমনাত্মক।
প্রশ্ন ২৫। চল বা পরিবর্ত্য বা বচনগ্রাহক কি একপ্রকার প্রতীক?
উত্তরঃ হ্যাঁ।
প্রশ্ন ২৬। ‘পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞান এবং প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য কেবল ক্রমোন্নতির বিভিন্ন পর্যায়ের পার্থক্য।’—একথা কি সত্য?
উত্তরঃ হ্যাঁ।
প্রশ্ন ২৭। ‘গণিতের বিকাশের সঙ্গে প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের বিকাশ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।’ একথা কি সত্য?
উত্তরঃ হ্যাঁ, একথা সত্য।
প্রশ্ন ২৮। ধারণাজ্ঞাপক চিহ্ন বা ভাবলেখ প্রত্যক্ষভাবে কী নির্দেশ করে?
উত্তরঃ ধারণা নির্দেশ করে।
প্রশ্ন ২৯। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান কি প্রকৃতিগতভাবে আকরিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ, আকরিক।
প্রশ্ন ৩০। কয়েকজন প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানীর নাম লেখো।
উত্তরঃ জর্জ বুল, অগাস্টাস ডি মর্গান, লাইবনিজ, জন ভেন।
প্রশ্ন ৩১। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানে কী পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ নির্গমনাত্মক পদ্ধতি।
প্রশ্ন ৩২। ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন প্রত্যক্ষভাবে কী নির্দেশ করে?
উত্তরঃ ধ্বনি বা শব্দ।
প্রশ্ন ৩৩। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানে কেন প্রতীক ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ সাধারণ ভাষার অস্পষ্টতা, দ্ব্যর্থবোধতা, ব্যাকরণগত দোষত্রুটি এবং অন্যান্য দোষ থেকে তর্কবিজ্ঞানকে মুক্ত করবার জন্য প্রতীক ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন ৩৪। চল বা পরিবর্ত্যের কয়েকটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ p,q, r, s t, u … ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৩৫। তৰ্কীয় অবিকারী বা তৰ্কীয় ধ্রুবক-এর উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ‘.’, ‘∴’, ‘ᑐ’, ‘v’, ‘≡’, ‘~’ ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৩৬। ধারণাজ্ঞাপক চিহ্নের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ‘+’, ‘−’, ‘×’, ‘÷’, ‘=’ ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৩৭। ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্নের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৩৮। ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন কী?
উত্তরঃ যে চিহ্ন দ্বারা কোনো ধ্বনি বা শব্দ নির্দেশিত হয়, তাকে ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন বলে।
প্রশ্ন ৩৯। নির্গমনাত্মক পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ যে পদ্ধতি দ্বারা এক বা একাধিক উক্তি থেকে অন্য কোনো উক্তি নিঃসরণ করা হয়, তাকে নির্গমনাত্মক পদ্ধতি বলে।
প্রশ্ন ৪০। সত্য তালিকা গঠন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় কেন?
উত্তরঃ একটি জটিল বচনের সত্য-মূল্য নির্ণয় করার জন্য।
শূন্যস্থান পূর্ণ করো:
১। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান গণিতের ন্যায় ______ এবং ______।
উত্তরঃ বিশুদ্ধ, নিগমনাত্মক।
২। ভাবলেখ চিহ্ন সরাসরি ______ নির্দেশ করে।
উত্তরঃ ধারণা।
৩। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান প্রকৃতিগতভাবে সম্পূর্ণ ______।
উত্তরঃ নিগমনাত্মক।
৪। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান পরম্পরাগত নিগমনাত্মক তর্কবিজ্ঞানের ______ রূপ।
উত্তরঃ বিকশিত।
৫। একটি সমার্থক ফলন p ≡ q সত্য হবে তখনই যখন তার অন্তর্গত উপাদান বচনগুলির সত্যমূল্য ______ হয়।
উত্তরঃ এক।
৬। প্রত্যেক তর্কীয় সংযোজক শুধুমাত্র ______ বচনকে সংযুক্ত করে।
উত্তরঃ দুইটি।
৭। একটি বৈধ বচনের সত্যমূল্য ______ হবে তখন যখন প্রধান তৰ্কীয় অবিকারীর নীচে সত্যমূল্য সত্য হবে।
উত্তরঃ সত্য।
৮। একটি অবৈধ বচনের সত্যমূল্য ______ হবে তখন যখন প্রধান তৰ্কীয় অবিকারীর নীচে সত্যমূল্য মিথ্যা হয়।
উত্তরঃ মিথ্যা।
৯। প্রতিটি ______ সংযোজক মাত্র দুটি বচনকে যুক্ত করে।
উত্তরঃ তর্কীয়।
১০। ______ তাঁর যুক্তিবিজ্ঞানে শ্রেণিবাচক নামের পরিবর্তে বর্ণ প্রতীক ব্যবহার করেছেন।
উত্তরঃ অ্যারিস্টটল।
মিশ্র প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে তর্কবিজ্ঞান প্রতীকের মাধ্যমে যুক্তির প্রকাশ এবং এর মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়াকে সহজতর করার উদ্দেশ্যে আধুনিক যুগে বিশেষ প্রকারের প্রতীকের ব্যাপক প্রচলন করে, তাকে সাধারণত প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান বলে।
একে প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞান বলা হয় এই কারণে যে, এই যুক্তিবিজ্ঞানে প্রতীকের ব্যাপক এবং বহুল ব্যবহার হয়।
প্রশ্ন ২। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানকে আর কী কী নামে অভিহিত করা হয়?
উত্তরঃ প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানকে ‘Algebra of Logic’, ‘Mathematical Logic’, ‘Modern Logic’ বা ‘Logistic’ ইত্যাদি নামে অভিহিত করা হয়।
প্রশ্ন ৩। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান বা প্রতীকী তর্কবিদ্যার বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করো।
উত্তরঃ বিখ্যাত তর্কবিজ্ঞানী সি. আই. ল্যুইস (C. I. Lewis) প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের চারটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন। সেগুলো হল:
(ক) বিশ্লেষণ এবং অবরোহন—দুই পদ্ধতিরই সার্থক ব্যবহার।
(খ) ভাবলেখ বা ধারণাজ্ঞাপক চিহ্নের ব্যবহার।
(গ) অবরোহী বা নিগমনাত্মক আমি পদ্ধতির ব্যবহার।
(ঘ) পরিবর্ত্য বা চলের ব্যবহার।
প্রশ্ন ৪। জনসনের মতে প্রতীক কয় প্রকারের হয়?
উত্তরঃ বিখ্যাত তর্কবিজ্ঞানী জনসনের মতে প্রতীক দুই প্রকারের হয়। যেমন—
(ক) সংক্ষেপক প্রতীক → ‘.’, ‘v’, ‘ᑐ’, ‘~’, ‘≡’ ইত্যাদি।
(খ) দৃষ্টান্তমূলক প্রতীক →
M P
S M
∴ S P
প্রশ্ন ৫। ভাবলেখ বা ধারণাজ্ঞাপক চিহ্ন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে সমস্ত চিহ্ন কোনো শব্দ বা ধ্বনিকে প্রত্যক্ষভাবে নির্দেশ না করে ধারণা বা ভাবকে নির্দেশ করে, তাকে ভাবলেখ বা ধারণাজ্ঞাপক চিহ্ন বলে। ‘+’, ‘–’, ‘×’ ‘÷’ ‘=’ ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৬। ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন কাহাকে বলে?
উত্তরঃ যে সমস্ত চিহ্ন কোনো শব্দ বা ধ্বনিকে প্রত্যক্ষভাবে নির্দেশ করে এবং পরোক্ষভাবে ধারণা বা ভাবকে নির্দেশ করে, সে ধরনের চিহ্নকে ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন বলে। যেমন—গুণচিহ্ন, ভাগচিহ্ন, সমানচিহ্ন, প্রশ্নবোধক চিহ্ন ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৭। চল বা পরিবর্ত্য কাকে বলে?
উত্তরঃ পরিবর্ত্য বা চল এক ধরনের প্রতীক যা একটি সরল বাক্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ইংরেজি ছোট বর্ণ p,q, r, s, t ইত্যাদি পরিবর্ত বা চল বা বচনগ্রাহক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
প্রশ্ন ৮। তর্কীয় অবিকারী বা তর্কীয় ধ্রুবক বা যৌগিক ধ্রুবক বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে কথা বা উক্তির দ্বারা একটি যৌগিক বচনের উপাদান বাক্যগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করা হয়, তাকে তর্কীয় অবিকারী বলে।
প্রশ্ন ৯। তর্কীয় অবিকারী বা তর্কীয় ধ্রুবকের উদাহরণ দাও।
উত্তর। ‘~’ (ঢেউ)—নিষেধাত্মক চিহ্ন, ‘v’ (ফলা) —বৈকল্পিক চিহ্ন ‘.’ (বিন্দু) —সংযৌগিক চিহ্ন, ᑐ (নাল) — প্রাকল্পিক চিহ্ন,≡ (ত্রিরেখ)—দ্বিপ্রাকল্পিক চিহ্ন।
প্রশ্ন ১০। সত্য-তালিকা কী?
উত্তরঃ আধুনিক তর্কবিজ্ঞানীরা একটি যৌগিক বচন এবং তার অন্তর্গত বচনগুলির সত্যমূল্যের পারস্পরিকতা প্রকাশ করার জন্য একটি সুবিধাজনক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। সে পদ্ধতিকে সত্যতালিকা বলে।
প্রশ্ন ১১। ধারণাজ্ঞাপক চিহ্ন এবং ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্নের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।
উত্তরঃ প্রতীক দুই রকমের হয়— (অ) ধারণাজ্ঞাপক চিহ্ন বা ভাবলেখ, (আ) ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন বা ধ্বনিলেখ।
(i) যে সমস্ত চিহ্ন কোনো শব্দ বা ধ্বনিকে প্রত্যক্ষভাবে নির্দেশ না করে ধারণা বা ভাবকেই নির্দেশ করে, তাকে ধারণাজ্ঞাপক চিহ্ন বলে।
অন্যদিকে, যে সমস্ত চিহ্ন কোনো শব্দ বা ধ্বনিকে প্রত্যক্ষভাবে নির্দেশ করে এবং পরোক্ষভাবে ধারণা বা ভাবকে নির্দেশ করে, সে ধরনের চিহ্নকে ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন বলে।
(ii) গুণ চিহ্ন, ভাগ চিহ্ন, সমান চিহ্ন, প্রশ্নবাধক চিহ্ন ইত্যাদি ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন ‘×’, ‘÷’, ‘=’ ইত্যাদি ধারণাজ্ঞাপক চিহ্ন।
প্রশ্ন ১২। নিগমনাত্মক পদ্ধতি বা অবরোহী পদ্ধতি কী?
উত্তরঃ যে পদ্ধতির দ্বারা অতি কমসংখ্যক নির্দিষ্ট কিছু উক্তি বা বচন থেকে অতি কমসংখ্যক নিয়ম প্রয়োগ করে বহুসংখ্যক অনির্দিষ্ট উক্তি বা বচন উদ্ভাবন করা হয়, তাকে নিগমনাত্মক পদ্ধতি বা অবরোহী পদ্ধতি বলে।
প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞান সম্পূর্ণভাবে নিগমনাত্মক।
প্রশ্ন ১৩। চল বা পরিবর্ত্য বা বচনগ্রাহক কাকে বলে? (Variable)
উত্তরঃ পরিবর্ত্য বা চল এক ধরনের প্রতীক যা এক একটি সরল বাক্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পরিবর্ত্য বা চল কোনো নির্দিষ্ট অর্থ বহন করে না। পরিবর্ত্য বা চল ব্যবহৃত হয় বাক্য বা যুক্তির আকার দেখাবার জন্য। ইংরেজি ছোট বর্ণ p,q, r, s, t, u, v ইত্যাদি পরিবর্ত্য বা চল বা বচনগ্রাহক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের প্রতীককে পরিবর্ত্য বলা হয় কারণ বিভিন্ন প্রেক্ষিতে তার অর্থ পরিবর্তিত হয়ে থাকে। যেমন—
‘কাক কালো কিন্তু বক সাদা’— প্রদত্ত বাক্যের প্রতীকাত্মক রূপ ‘p, q’; এখানে p হচ্ছে ‘কাক কালো’-এর পরিবর্ত্য, q হচ্ছে ‘বক সাদা’-এর পরিবর্ত্য বা চল, ‘কিন্তু’ হল তর্কীয়, অবিকারী।
প্রশ্ন ১৪। তর্কীয় অবিকারী বা তর্কীয় ধ্রুবক বা যৌগিক ধ্রুবক (Logical Constant) বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে কথা বা উক্তির দ্বারা একটি যৌগিক বচনের উপাদান বাক্যগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করা হয়, তাকে তর্কীয় অধিকারী বলে। যেমন ‘যদি … তাহলে’, ‘ও’, ‘এবং’, ‘হয় … নয়’, ‘না’ ‘নয়’, ‘যদি কেবল যদি’ ইত্যাদি। অতএব, তর্কীয় অবিকারী হচ্ছে সেই প্রতীক, যা যৌগিক বচনের আকারগত রূপ প্রকাশ করে এবং কোনো একটি প্রসঙ্গে একই বচনে একই অর্থে ব্যবহৃত হয়, অর্থাৎ তর্কীয় অধিকারী সর্বদা একটি নির্দিষ্ট অর্থবহন করে থাকে। আধুনিক তর্কবিজ্ঞানে নিম্নলিখিত চিহ্নগুলিকে তর্কীয় অবিকারী হিসেবে ব্যবহৃত হয় :
(ক) ‘~’ (ঢেউ/Curl) নিষেধাত্মক চিহ্ন—‘না’, ‘নয়’, একথা সত্য নয়… ইত্যাদি।
(খ) ‘.’ (বিন্দু/Dot) সংযৌগিক চিহ্ন—‘এবং’, ‘ও’, ‘কিন্তু’ ইত্যাদি।
(গ) ‘v’ (ফলা/Vel) বৈকল্পিক চিহ্ন—‘বা’, ‘অথবা’, ‘হয় … নয়’ ইত্যাদি।
(ঘ) ‘ᑐ’ (নাল / Horse shoe) প্রাকল্পিক বা সংশ্লেষক বা নিহিতার্থক চিহ্ন ‘যদি … তাহলে’।
(ঙ) ‘≡’ (‘ত্রিবলী বা ত্রিরেখ/Triple bar) দ্বিপ্রাকল্পিক বা সমার্থক চিহ্ন—‘যদি এবং কেবল যদি’।
প্রশ্ন ১৫। তর্কীয় অধিকারীর বা যৌক্তিক ধ্রুবক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তরঃ তর্কীয় অবিকারী বা তর্কীয় ধ্রুবকের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:
(ক) তর্কীয় অবিকারীর প্রধান কাজ হল, যৌগিক বচনের উপাদান সরল বাক্যগুলির মধ্যে সংযোগ সাধন করে।
(খ) নিষেধ চিহ্ন ‘না’, ‘নয়’ইত্যাদি ছাড়া প্রতিটি তর্কীয় অবিকারীকে ‘তর্কীয় সংযোগক’ বলা হয়।
(গ) প্রতিটি তর্কীয় সংযোজক দুটি এবং শুধুমাত্র দুটি বচনকে যুক্ত করে।
(ঘ) অন্যান্য তর্কীয় অবিকারী থেকে ‘না’, ‘নয়’, ‘এটা সত্য নয় যে ..।’ অর্থাৎ, নিষেধাত্মক শব্দ আলাদা, যদিও এগুলিও তর্কীয় অবিকারী এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি সংযোজক নয়। এদের কাজ হল সরল বচনকে নিষেধাত্মক রূপে যৌগিক বচনে রূপান্তরিত করা। একটি সরল বচনের নিষেধাত্মক রূপ একটি যৌগিক বচন।
সারণির সাহায্যে বিষয়টিকে আমরা সহজভাবে বোঝাতে পারি—
প্রশ্ন ১৬। প্রতীক বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ কোনো একটা বস্তু বা বিষয়কে বোঝানোর জন্য সেই বস্তুটির বা বিষয়টির পরিবর্তে সজ্ঞানে এবং সচেতনভাবে যে চিহ্ন বা সংকেত ব্যবহার করা হয়, তাকে প্রতীক বলে। সাধারণত, কোনো সংকেত বা চিহ্ন প্রতীক। যেমন— কোনো একটি দেশের পতাকা সেই দেশের প্রতীক।
প্রশ্ন ১৭। প্রতীক কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ প্রতীক দুই প্রকারের হয়। যেমন-
(i) শাব্দিক প্রতীক। এবং
(ii) অ-শাব্দিক প্রতীক।
ভাষায় ব্যবহৃত বিভিন্ন শব্দ দ্রব্য, গুণ, ক্রিয়া ইত্যাদির প্রতীক। যেমন ‘সাধুতা’, গুণের প্রতীক ‘পুস্তক’, বস্তুর প্রতীক ইত্যাদি। এই প্রকারের প্রতীককে শাব্দিক প্রতীক বলে।
প্রশ্ন ১৮। চল বা পরিবর্ত্যের ব্যবহারের বিষয়ে লেখো।
উত্তরঃ চল বা পরিবর্ত্য ব্যবহারের বিষয়গুলি নিম্নরূপ:
(ক) চল বা পরিবর্ত্য এক ধরনের প্রতীক যা একটি সরল বাক্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
(খ) চল বা পরিবর্ত্য কোনো নির্দিষ্ট অর্থ বহন করে না। এগুলি বাক্য বা যুক্তির আকার দেখাবার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
(গ) ইংরেজি ছোট বর্ণ p,q, r, s, t, u, v ইত্যাদি পরিবর্ত্য বা চল বা বচনগ্ৰাহক হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷
(ঘ) বিভিন্ন প্রেক্ষিতে চল বা পরিবর্ত্যের অর্থ পরিবর্তিত হয়ে থাকে। ইংরেজি বর্ণমালার P, q, r, s, t ইত্যাদি বর্ণ, গণিতশাস্ত্রের ‘+’, ‘—’, ‘×’, ‘÷’ ইত্যাদি চিহ্ন অ-শাব্দিক প্রতীক। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানে প্রধানত অ-শাব্দিক প্রতীক ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন ১৯। সংকেত এবং প্রতীকের মধ্যে কি কোনো পার্থক্য আছে?
উত্তরঃ যদিও সংকেত বা চিহ্নকে প্রতীক বলা হয়, তথাপি তাদের মধ্যে পার্থক্যও আছে। যেমন—‘ধোঁয়া’ আগুনের অস্তিত্বের সংকেত। এটাকে স্বাভাবিক সংকেত বলে। অন্যদিকে, কোনো বস্তু বা বিষয়কে বোঝানোর জন্য যখন কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো সংকেত ব্যবহার করে, তখন সেই সংকেতকে প্রতীক বলে। যেমন—একটি দেশের পতাকা সেই দেশের প্রতীক, কারণ দেশের জনসাধারণ সচেষ্টভাবে স্থির করে তাদের দেশের পতাকা কী প্রকারের হবে।
প্রশ্ন ২০। প্রতীকের উপযোগিতা বা প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তরঃ প্রতীক ব্যবহারের নিম্নলিখিত উপযোগিতা আছে:
(ক) যুক্তির ক্ষেত্রে সাধারণ ভাষা ব্যবহারের ফলে যে সমস্ত দোষত্রুটির উদ্ভব হয়, প্রতীকের সহায়তায় সেই দোষত্রুটিগুলো বহুলাংশে দূর করা যায়। ভাষার জটিলতা থেকে যুক্তিকে মুক্ত করার উপায় হল যুক্তির বিমূর্তকরণ (abstraction) এবং কেবলমাত্র প্রতীকের মাধ্যমে সেটা সম্ভব।
(খ) প্রতীক ব্যবহারে যুক্তির আকার স্পষ্ট হয়। ফলে যুক্তিগুলোর আকার অনুযায়ী শ্রেণিবিভাগ করতে সুবিধে হয় এবং নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী যুক্তির বৈধতা-অবৈধতা নির্ণয় করা যায়।
(গ) প্রতীক ব্যবহারের ফলে ভাষার অস্পষ্টতা দূর হয়; সময় এবং শ্রমের লাঘব হয় এবং অতি অনায়াসে যুক্তির বৈধতা নির্ণয় করা যায়।
(ঘ) প্রতীক ব্যবহার আমাদের চিন্তন প্রক্রিয়াকে সংহত এবং নিয়মিত করে। আবশ্যকীয় বিষয়ের উপর অতি সহজে মনোনিবেশ করা যায়।
(ঙ) প্রতীকের ব্যবহারে যুক্তি সংক্ষিপ্ত হয় এবং সময়ের অপচয় কমে।
প্রশ্ন ২১। পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞান বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ অ্যারিস্টটল এবং তাঁর অনুগামী সকলের তর্কবিজ্ঞানমূলক চিন্তা, পদ্ধতি এবং নীতিসমূহের উপর প্রতিষ্ঠিত তর্কবিজ্ঞানকে প্রাচীন বা পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞান (classical or traditional logic) বলা হয়। পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞান এমন একটি তর্কবিদ্যা, যেখানে বৈধ চিন্তার সাধারণ নিয়মগুলো আলোচনা করা হয়েছে। এইসব নিয়মাবলি অনুসরণ করে বৈধ এবং অবৈধ যুক্তি নির্ধারণ করা যায়।
প্রশ্ন ২২। পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞান এবং আধুনিক (প্রতীকাত্মক) তর্কবিজ্ঞান-এর মধ্যে সাদৃশ্য উল্লেখ করো।
উত্তরঃ প্রাচীন (পরম্পরাগত) এবং আধুনিক (প্রতীকাত্মক) তর্কবিজ্ঞান পরস্পর সম্বন্ধহীন দুটি পৃথক তর্কবিজ্ঞান নয়। কারণ, দুয়ের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য বর্তমান।
(ক) উভয়প্রকার তর্কবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়বস্তু যুক্তির আকার এবং মূল্য নির্ধারণ অর্থাৎ বৈধতা-অবৈধতার নির্ণয়।
(খ) দ্বিতীয়ত, প্রতীকাত্মক বা আধুনিক তর্কবিজ্ঞান অ্যারিস্টটলের প্রবর্তন করা প্রাচীন তর্কবিজ্ঞানেরই পরিবর্তিত এবং পরিবর্ধিত রূপ।
(গ) বেসন এবং অ’কোন্নর (Bosson and O’connor)—এই দুই তর্কবিজ্ঞানী পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞান এবং আধুনিক তর্কবিজ্ঞানের মধ্যে সম্বন্ধটা অতিসুন্দর এবং সঠিকভাবে ব্যক্ত করেছেন। তাঁদের মতে, ‘ভ্রূণের সঙ্গে মানবদেহের যে সম্পর্ক, প্রাচীন তর্কবিজ্ঞানের সঙ্গে আধুনিক তর্কবিজ্ঞানেরও সেই একই সম্পর্ক।’
প্রশ্ন ২৩। পরাম্পরাগত তর্কবিজ্ঞান এবং আধুনিক বা প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের পার্থক্য দেখাও।
উত্তরঃ পরম্পরাগত এবং প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের পার্থক্য নিম্নরূপ:
(ক) পরাম্পরাগত যুক্তিবিজ্ঞানের ইতিহাস সুদীর্ঘ, কিন্তু প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের ইতিহাস তুলনামূলকভাবে হ্রস্ব। দু’হাজার বৎসর আগে অ্যারিস্টটল পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান আধুনিক ও সম্প্রতিকালেই রচিত হয়েছে।
(খ) পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞানের পরিসর প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের তুলনায় সংকীর্ণ।
(গ) পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞানে প্রতীকের ব্যবহার অতি সীমিত, কিন্তু প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানে প্রতীকের ব্যবহার অতি ব্যাপক।
(ঘ) পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞানে বচনের বিভাজন অতি সংকীর্ণ। অপরপক্ষে, প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানে বচনের বিভাজন অতি বিস্তর।
প্রশ্ন ২৪। একাত্মক তর্কবিজ্ঞানকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় এবং কী কী?
উত্তরঃ প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-
(১) বচনাত্মক তর্কবিজ্ঞান। ও
(২) বিধেয়াত্মক তর্কবিজ্ঞান।
প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের যে বিভাগ যৌগিক বচনসমূহের মধ্যে থাকা তর্কীয় সম্বন্ধের আলোচনা করে, সেই বিভাগকে বচনাত্মক তর্কবিজ্ঞান বলে।
অন্যদিকে, প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের বচনের অন্তর্গঠন সম্পর্কে আলোচনা করে, সেই বিভাগকে বিধেয়াত্মক তর্কবিজ্ঞান বলা হয়।
প্রশ্ন ২৫। সত্য ফলন বা সত্য-ক্রিয়াকারিত্ব বলতে কী বোঝো? (Truth – Function)
উত্তরঃ গণিতে ‘ফলন’ (Function) কথাটি ব্যবহার হয়ে থাকে। আধুনিক তর্কবিজ্ঞানেও ‘ফলন’ কথাটির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সত্য ফলন একটি যৌগিক উক্তি (Compound expression) যার মধ্যে পরিবর্ত্য বা চল থাকে এবং এই পরিবর্ত্য বা চলের সত্যমূল্যের উপরে বচনটির সত্যমূল্য নির্ভর করে। যেমন—‘রাম এবং শ্যাম মেধাবী ছাত্র’—এটি একটি সংযৌগিক বচন। এই বচনটির সত্যমূল্য অর্থাৎ সত্যতা বা অসত্যতা নির্ধারিত হবে বচনটির অন্তর্গত ‘রাম মেধাবী ছাত্র’ এবং ‘শ্যাম মেধাবী ছাত্র’—এই দুটি উপাদান বচনের সত্যমূল্যের উপর। এই বচনটির প্রতীকী রূপ হল ‘p . q’। ‘p . q’ একটি সত্য ফলন। কারণ এটির সত্যমূল্য নির্ধারিত হয় এর পরিবর্ত্য বা চল ‘p’ এবং ‘q’-এর সত্যমূল্যের উপর। সমগ্র যৌগিক বাক্যটির সত্যমূল্য উপাদান বাক্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
প্রশ্ন ২৬। মৌলিক সত্যফলন কয়প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ আধুনিক তর্কবিজ্ঞানে নিম্নোক্ত পাঁচ রকমের মৌলিক সত্যফলন স্বীকার করা হয়:
(ক) নঞর্থক বা নিষেধমূলক ফলন (বা বিরুদ্ধ ফলন)— ~ p
(খ) সংযোজক বা সংযৌগিক ফলন— p . q
(গ) বৈকল্পিক ফলন— P v Q
(ঘ) প্রাকল্পিক বা নিহিতার্থক ফলন— p ᑐ q
(ঙ) দ্বিপ্রাকল্পিক বা সমার্থক ফলন— p ≡ q।
প্রশ্ন ২৭। সত্যতালিকা বা সত্যসারণি (Truth Table) বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ একটি যৌগিক বচনের সত্যমূল্য তার উপাদান বাক্যগুলির সত্যমূল্যের উপরে নির্ভর করে। আধুনিক তর্কবিজ্ঞানীরা একটি যৌগিক বচন এবং তার অন্তর্গত বচনগুলির সত্যমূল্যের পারস্পরিকতা প্রকাশ করার জন্য একটি সুবিধাজনক পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। এটি তালিকার বা সারণির (Table) মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এই তালিকাটিকেই সত্যতালিকা বা সত্যসারণি বলা হয়।
এককথায়, যে তালিকার দ্বারা একটা যৌগিক বচনের সত্যমূল্য এবং বচনটির অন্তর্গত উপাদান বচনগুলোর অর্থাৎ সরল বচনগুলোর সত্যমূল্যের সহ-সম্বন্ধকে অর্থাৎ পারস্পরিক নির্ভরতাকে প্রকাশ করা হয়, সেই তালিকাকেই সত্যতালিকা বা সত্যসারণি বলে।
প্রশ্ন ২৮। সত্যতালিকা গঠন করার পদ্ধতি কীরূপ?
উত্তরঃ সত্যতালিকা গঠন করার পদ্ধতি নিম্নরূপ:
(১) ইংরেজি বর্ণমালার p, q, r, s, t ইত্যাদি ছোট অক্ষরগুলো সরল বচনের প্রতীক। প্রত্যেকটি বচনই হয় সত্য হবে, নয় মিথ্যা হবে। সত্যতার মূল্য বোঝানোর জন্য ইংরেজি বর্ণমালার ‘T’ (True) অক্ষর অথবা গণিতের 1 সংখ্যাটি ব্যবহার করা হয়। আবার অসত্যতা বোঝানোর জন্য ইংরেজি বর্ণমালার ‘F’ (False) বা গণিতে ‘0’ সংখ্যাটি ব্যবহার করা হয়। মূল্যসূচক এই চিহ্নগুলি ফলনটির অন্তর্গত পরিবর্ত্য এবং অবিকারীসমূহের নীচে স্তম্ভ আকারে (column vertically) লেখা হয়। ফলনটিকে এই তালিকার উপরের রেখায় পাশাপাশি (Horizontally) বিন্যস্ত করা হয়।
(২) এই পর্যায়ে তালিকার সারির (Row) সংখ্যা নির্ধারণ করতে হয়। জটিল বচনের অন্তর্গত পরিবর্ত্য বা চলের সংখ্যার উপরে সারির সংখ্যা নির্ভর করে। এর জন্য একটা সূত্র আছে : 2ⁿ অর্থাৎ, 2(পরিবর্তের সংখ্যা)। ‘n’ হল সরল বচনের পরিবর্ত্যের (variable) সংখ্যা। পরিবর্ত্যের সংখ্যা 1 হলে সারির সংখ্যা হবে 2¹ = 2
পরিবর্ত্যের সংখ্যা 2 হলে, সারির সংখ্যা হবে = 2² = 2 × 2 = 4
পরিবর্ত্যের সংখ্যা 3 হলে, সারির সংখ্যা হবে = 2³ = 2 × 2 × 2 = 8
পরিবর্ত্যের সংখ্যা 4 হলে, সারির সংখ্যা = 2⁴ = 2 × 2 × 2 × 2 = 16 সাধারণভাবে, ‘n’ হচ্ছে পরিবর্তের সংখ্যা এবং 2ⁿ হল সত্যমূল্যের সম্ভাব্য সংযোগের সংখ্যা।
(৩) সারির সংখ্যা নির্ধারিত হয়ে যাওয়ার পর সারিগুলির উপরে প্রদত্ত ফলনটি লেখা হবে। তারপর উদাহরণে ব্যবহৃত ফলনটির প্রতিটি অংশকে লম্বালম্বি (Vertical) রেখা টেনে পৃথক পৃথক স্তম্ভে (Column) ভাগ করতে হয়।
প্রথম পরিবর্ত্য p-এর নীচে প্রথম স্তম্ভে নির্ধারিত সারির অর্ধেক সত্য (T) এবং অর্ধেক মিথ্যা (F) লিখতে হবে। দ্বিতীয় পরিবর্ত্য অর্থাৎ q-এর নীচে দ্বিতীয় স্তম্ভে নির্ধারিত সারির চারভাগের একভাগ (¼) সত্য (T) এবং চারভাগের একভাগ মিথ্যা (F) হবে। পরবর্তী ¼ ভাগ সত্য, ¼ ভাগ মিথ্যা হবে। তৃতীয় পরিবর্ত্য অর্থাৎ r-এর নীচে ততীয় স্তম্ভে নির্ধারিত সারির আটভাগের একভাগ সত্য (⅛), আটভাগের 1 ভাগ মিথ্যা এভাবে চলবে। এভাবে পরবর্তীস্তম্ভগুলিতে সত্যমুল্যের জোট (combination) পূর্ববর্তী স্তত্ত্বের তুলনায় আনুপাতিক হারে কমতে থাকে।
নির্দেশক স্তম্ভ গঠন করার সময় p, q, r, s … এই ক্রমে স্তম্ভগুলি সাজাতে হবে।
প্রশ্ন ২৯। মৌলিক সত্যফলনের সত্যাপেক্ষকের নামগুলি লেখো এবং প্রতিটির সত্যতালিকা প্রস্তুত করে দেখাও।
উত্তরঃ আধুনিক তর্কবিজ্ঞানে নিম্নোক্ত মোট পাঁচ প্রকারের মৌলিক সত্যফলন স্বীকার করা হয়:
(ক) নঞর্থক বা নিষেধমূলক ফলন (বা বিরুদ্ধ ফলন) — ~ p
(খ) সংযৌগিক (সংযোজক) ফলন — p . q
(গ) বৈকল্পিক ফলন — p v q
(ঘ) প্রাকল্পিক ফলন — p ᑐ q
(ঙ) দ্বিপ্রাকল্পিক ফলন — p ≡ q
(ক) নঞর্থক বা নিষেধমূলক ফলন: (Negative Function (~ p): একটি বচনের নিষেধ অথবা বিরুদ্ধ বা অস্বীকৃতি বোঝাতে ‘নয়’ কথাটি ব্যবহার করা হয়। নিষেধ বচনকে প্রতীকায়িত করার জন্য মূল বচনের পূর্বে ‘~’ (ঢেউ বা curl) প্রতীক ব্যবহার করা হয়। এর ফলে নিষেধক বাক্যটির প্রতীকায়িত রূপ হবে ~ p অর্থাৎ, ~ p হল নিষেধাত্মক ফলন।
সত্যসারণি বা সত্যতালিকার সাহায্যে নিম্নলিখিতভাবে নঞর্থক ফলন ~ p-এর সত্যমূল্য প্রকাশ করা যায়:
নিষেধক বচন সত্য হয়, যদি মূল বচনটি মিথ্যা হয়। নিষেধক বচন মিথ্যা হয়, যদি মূল বচনটি সত্য হয়। যেমন— ‘p’ মিথ্যা হলে ‘~p’ সত্য হবে; এবং ‘p’ সত্য হলে ‘~p মিথ্যা হবে। সত্যতালিকাটিতে সত্যের স্থানে T (True) এবং মিথ্যার স্থানে F (False) বসানো হয়।
(খ) সংযৌগিক (সংযোজক) ফলন: (Conjunctive Function) (p . q): যদি দুইটি বচনকে ‘এবং’ (বা এবং অর্থবোধক) শব্দ দ্বারা সংযুক্ত করে একটি যৌগিক বচন গঠন করা হয়, তখন সেই বচনকে সংযৌগিক বচন বলে। সংযৌগিক বচনের প্রতীকায়িত রূপ ‘p . q’ অর্থাৎ ‘p . q’ হল সংযৌগিক ফলন।
সত্যতালিকার সাহায্যে সংযৌগিক ফলনের (p . q) সত্যমূল্য প্রকাশ করা যায়:
একটি সংযৌগিক ফলন (p . q) সত্য হয়, যদি তার দুটি সংযোগী (p, q) সত্য হয়। অর্থাৎ যদি ‘p’ এবং ‘q’ দুইই সত্য হয়, তাহলে ‘p . q’ সত্য হবে, অন্যথায় মিথ্যা হবে।
(গ) বৈকল্পিক ফলন: (Disjunctive Function) (p v q): যে যৌগিক বচনে দুটি সরল বচন ‘অথবা’ শব্দ দ্বারা যুক্ত হয়, তাকে বৈকল্পিক বচন বলে। বৈকল্পিক বচনের প্রতীকী রূপ ‘p v q’, অর্থাৎ ‘p v q’ হল বৈকল্পিক ফলন।
সত্যতালিকার সাহায্যে বৈকল্পিক ফলনের (p v q) সত্যমূল্য নিম্নলিখিতভাবে প্রকাশ করা যায়:
এই তালিকা অনুযায়ী, যদি দুটি বিকল্পের একটি সত্য হয় কিংবা দুটিই সত্য হয়, তাহলে ‘p v q’ বৈকল্পিক ফলনটি সত্য হবে। আবার যদি দুটি বিকল্পই (অর্থাৎ, ‘p’, ‘Q’) মিথ্যা হয়, তাহলে ‘p v q’ বৈকল্পিক ফলনটি মিথ্যা হবে।
(ঘ) প্রাকল্পিক ফলন: ( Implicative or Conditional Function) (p ᑐ q): যদি p এবং q দুটি উক্তি হয় আর দুটিই সরল বচন হয় এবং উপাদান বচন হিসেবে ‘যদি….তাহলে…’ বা এই জাতীয় কোনো শর্ত দ্বারা যুক্ত হয়ে একটি যৌগিক বচন গঠন করে, সেই যৌগিক বচনকে প্রাকল্পিক বা নিহিতার্থক বা তাৎপৰ্যমূলক বচন বলে। নিহিতার্থক বচনের প্রতীকী রূপ হল ‘p ᑐ q’।
নিম্নলিখিত সত্যতালিকার মাধ্যমে প্রাকল্পিক ফলনের (p ᑐ q) সত্যমূল্য প্রকাশ করা যায়:
প্রাকল্পিক ফলন বা নিহিতার্থক ফলন বা সংশ্লেষক বা তাৎপৰ্যমূলক ফলন (p ᑐ q) তখনই মিথ্যা হয়, যখন পূর্ববর্তী অংশ (p) সত্য হয় কিন্তু পরবর্তী অংশ (q) মিথ্যা হয়; অন্যথায় সত্য হয়।
(ঙ) দ্বিপ্রাকল্পিক বা সমার্থক ফলন: ( Biconditional or Equivalent Function) (p ≡ q): ‘যদি p, তাহলে q আর যদি q, তাহলে p’ জাতীয় যৌগিক ফলনকে ‘দ্বিপ্রাকল্পিক বা সমার্থক ফলন’ বলে। এর প্রতীক রূপ ‘p ≡ q’ অথবা p ↔ q।
সমার্থক ফলন ‘p ≡ q’ সত্য হবে, যখন এর অন্তর্গত উপাদান বচনগুলোর সত্যমূল্য এক হয় এবং সমার্থক ফলন মিথ্যা হবে, যখন এর উপাদান বচনগুলোর সত্যমূল্য ভিন্ন হয়।
সমার্থক ফলনের সত্যতালিকা প্রকাশ করা যায়:
প্রশ্ন ৩০। যদি p সত্য হয়, q মিথ্যা হয়, তাহলে নিম্নলিখিত বচন আকারগুলোর সত্যমূল্য নির্ণয় করো:
(i) (p ⊃ q) . (q ⊃ p)
= (T ⊃ F) . (F ⊃ T)
= F . T
= F
∴ এটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(ii) ~p . ~ q
= ~ T . ~ F
= F . T
= F
∴ এটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(iii) {(p ⊃ q) ≡ (q ⊃ p)} v {(p . q) ≡ (q . p)}
= {(T ⊃ F) ≡ (F ⊃ T)} v {(T . F) ≡ (F . T)}
= {F ≡ T} v {F ≡ F}
= F v T
= T
∴ এটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(iv) ~(p . q) ≡ (~p v ~q)
= ~ (T . F) ≡ (~T v ~F)
= ~F ≡ (F v T)
=T ≡ T
= T
∴ এটির সত্যমূল্য হল সত্য।
(v) [(p ⊃ q) ⊃ p] ⊃ p
= [(T ⊃ F) ⊃ T] ⊃ T
= (F ⊃ T) ⊃ T
=T ⊃ T
= T
∴ এটির সত্যমূল্য হল সত্য।
(vi) [(p ⊃ q) ⊃ p] ⊃ q
= [(T ⊃ F) ⊃ T] ⊃ F
= (F ⊃ T) ⊃ F
=T ⊃ F
= F
∴ এটির সত্যমূল্য হল সত্য।
(vii) (~p . q) . (q ⊃ p)
=(~T . F) . (F ⊃ T)
= (F . F) . T
= F . T
= F
∴ এটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(viii) (~p . q) . (q ⊃ p)
=(~T . F) . (F ⊃ T)
= (F . F) ⊃ (F ⊃ T)
= F ⊃ T
= T
∴ এটির সত্যমূল্য হল সত্য।
(ix) (p . q) ⊃ [~(q . p) ⊃ ~(p . p)]
= (T . F) ⊃ [~(F . T) ⊃ ~(T . T)]
=F ⊃ [~F ⊃ ~T]
= F ⊃ (T ⊃ F)
= F ⊃ F
= T
∴ এটির সত্যমূল্য হল সত্য।
(x) [(p ⊃ q) . p] v ~ [(p v q) vq]
= [(T ⊃ F) . T] v ~ [(T v F) vF]
= ~[~F . T] v ~ (T v F)
= ~[T . T] v ~ (T v F)
=~T v ~ T
= F v F
= F
∴ এটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(xi) (p ⊃ q) ⊃ [(p v q) . ~ p
= (T ⊃ F) ⊃ [(T v F) . ~T]
= ~F ⊃ [~T . ~T]
= T ⊃ [F . F]
= T ⊃ F
= F
∴ এটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(xii) [{~(~p ≡ ~q) . (~q ⊃ ~p)} v ~ (p . q)]
= [{~(~T ≡ ~F) . (~F ⊃ ~T)} v ~ (T . F)]
= [{~(F ≡ T) . (T ⊃ F)} v ~ F]
= [ {~(F . F)} v T]
= [{T . F) v T]
= ~[~F v T]
= ~[T v T]
= ~T
= F
∴ এটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
প্রশ্ন ৩১। যদি X, Y, Z সত্য হয়, এবং P, Q, R মিথ্যা হয়, তাহলে নিম্নলিখিত বচনাকারটির সত্যমূল্য নির্ণয় করো:
(i) { (X . P) v (Y . Q} . (Z v Q)
= {(T . F) v (T . F )} . (T v F)
= {F v F} . T
= F . T
= F
∴ বচনাকারটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(ii) P ⊃ X
= F ⊃ T
= T
∴ বচনাকারটির সত্যমূল্য সত্য।
(iii) [(X ⊃ Q) ⊃ Q] ⊃ Q
= [(T ⊃ F) ⊃ F] ⊃ F
= [F ⊃ F] ⊃ F
=T ⊃ F
= F
∴ বচনাকারটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(iv) [P v (Q . X)] . ~ [(P v Q) . (P v R)]
= [F v (F . T)] . ~ [(F v F) . (F v F)]
= [F v F] . ~ [F . F]
= F . ~ F
= F . T
= F
∴ বচনাকারটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(v) ~[(Y . Q) v ~ (Z . R)]
= ~ [(T . F) v ~ (T . F)]
= ~ [F v ~ F]
= ~ [F v T]
= ~T
= F
∴ বচনাকারটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
নিজে চেষ্টা করো:
(ক) যদি A, B, C সত্য বচন হয় এবং X, Y, Z মিথ্যা বচন হয়, তাহলে নিম্নলিখিত বচনাকারগুলির কোনটি সত্য?
(a) ~ A v B
(b) ~Y v C
(c) (A . X) v (B .Y)
(d) ~(C . Y) v (A . Z)
(e) ~ (X . Z) v (B . C)
(f) (A v X) . (Y v B)
(g) ~(X v Z) . (~X v Z)
(h) ~[(B . C) . ~ (C . B)]
(i) ~[(A . B) v ~ (B . A)]
(j) [A v (B v C)] . ~[(A v B) v C]
(k) {[(B . ~C) v (Y . ~Z)] ≡ [(~B v X) v (B v ~Y)]}
(l) [(A v B) ≡ (~A . ~B)] ⊃ [(X v Y) ≡ (~X . ~Y)]
(খ) যদি এমন হয় যে, A, B, C সত্য আর X, Y, Z মিথ্যা, তাহলে নিম্নলিখিত ফলনগুলির কোনগুলি সত্য, কোন্গুলি মিথ্যা তা নির্ণয় করো:
(a) (A . X) v Y
(b) A. (X v Y)
(c) ~(A v C) v Z
(d) (~Y . ~Z) . (~B . ~C)
(e) ~ (~A . ~X) v C
(f) [(A . ~ B) ⊃ (X v Z)]
(g) [(B . ~Z) v Y] v ~ A
(h) [A v (B . C)] ≡ [X v (Y . Z)]
(i) [A . (B v C)] ≡ [(X . Y) v (X . Z)]
(j) [~(Y . Z)] ⊃ (~Y v ~ Z)
(k) [A v (B . C)] v ~ [(A v B) . (A v C)]
(l) {(A . B) v [(X . Y) . ~(A v X)]}
(m) ~(A v C) ⊃ [(A ⊃ X) ⊃ Y]
(n) [(A ⊃ X) ⊃ Y] ⊃ Z
প্রশ্ন ৩২। যদি A এবং B সত্য বলে জানা থাকে এবং X এবং Y মিথ্যা বলে জানা থাকে, কিন্তু P এবং Q-এর সত্যমূল্য জানা না থাকে, তাহলে নীচের কোন বিবৃতিগুলির সত্যমূল্য নির্ণয় করা যায়?
(i) A v P
মনে করি P-এর সত্যমূল্য সত্য (True)
A v P
= T v T
= T
আবার, মনে করি P-এর সত্যমূল্য মিথ্যা (False)
= A v P
= T v F
= T
∴ P-কে সত্য ধরে এবং P-কে মিথ্যা ধরে বচনটির সত্যমূল্য T অর্থাৎ, সত্য হয়েছে। তাই সম্পূর্ণ বিবৃতিটির সত্যমূল্য হল সত্য।
(ii) Q . X
মনে করি Q-এর সত্যমূল্য সত্য (True)
Q . X
= T . F
= F
আবার, মনে করি Q-এর সত্যমূল্য মিথ্যা (False)
Q . X
= F . F
= F
∴ Q-কে সত্য ধরে এবং Q-কে মিথ্যা ধরে বচনটির সত্যমূল্য F অর্থাৎ, মিথ্যা হয়েছে। তাই সম্পূর্ণ বিবৃতিটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(iii) (P v Q) . ~ (Q v P)
মনে করি P এবং Q-এর সত্যমূল্য সত্য (True )
(P v Q) . ~ (Q v P)
= (T v T . ~ (T v T)
= T . ~ T
= T . F
= F
আবার, P এবং Q-এর সত্যমূল্য মিথ্যা (False)
(P v Q) . ~ (Q v P)
= (F v F) . ~ (F v F)
= F . ~ F
= F . T
=F
∴ বিবৃতিটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(iv) ~ ( P . X) ≡ ~ (P v ~ X)
মনে করি, P-এর সত্যমূল্য সত্য (True)
~ (P . X) ≡ ~ ( P v ~ X)
= ~(T . F) ≡ ~ (T v ~ F)
= ~F ≡ ~ (T v T)
= T ≡ ~ T
= T ≡ F
= F
আবার, P-এর সত্যমূল্য মিথ্যা (False)
~ (P . X) ≡ ~ ( P v ~ X)
= ~ (F . F) ≡ ~ (F v ~ F)
= ~F ≡ ~ (F v T)
= T ≡ ~ F
= T ≡ T
= F
∴ বিবৃতিটির সত্যমূল্য হল মিথ্যা।
(v) [B ⊃ Q) ⊃ Q] ⊃ Q
মনে করি Q-এর সত্যমূল্য সত্য (True)
[(B ⊃ Q) ⊃ Q] ⊃ Q
= [(T ⊃ T) ⊃ T] ⊃ T
= [T ⊃ T] ⊃ T
= T ⊃ T
= T
আবার, Q-এর সত্যমূল্য মিথ্যা (False)
[(B ⊃ Q) ⊃ Q] ⊃ Q
= [(T ⊃ F) ⊃ F] ⊃ F
= [F ⊃ F] ⊃ F
=T ⊃ F
= F
∴ Q-কে সত্য ধরে বিবৃতিটির সত্যমূল্য সত্য হয়েছে। আবার Q-কে মিথ্যা ধরে বিবৃতিটির সত্যমূল্য মিথ্যা হয়েছে। সুতরাং বিবৃতিটির সত্যমূল্য নির্ণয় করা সম্ভব নয়।
নিজে চেষ্টা করো:
(a) (P ⊃ ~~ P ) ⊃ ( A ⊃ ~ B )
(b) [Q v (B . Y)] ⊃ [(Q v P) . (Q v Y)]
(c) [Q v (B . Y)] ⊃ [(Q v B) . (Q v Y)]
(d) [P ⊃ (A v X)] ≡ [( P ⊃ A) ⊃ X)
(e) Q v ~ X
(f) ~ Q v (P v Q)
(g) P . (~ Q v X)
(h) (Q v P) . ~ (P v Q)
(i) Q . [ ~ (Q v P) v Q] v Q
(j) ~ [ ~ (~ Q v P) v Q)] . (~ A . ~X)
(k) P . [ ~ (P v Q) v ~ P]
(l) ~ { ~ [ ~(P v Q) v P]} v P
(m) (~ A v P) . (~P v Y)
(n) ~[P v (B . Y)] v [(P v B) . (P v Y)]
প্রশ্ন ৩৩। বচন এবং রচনাকার কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ বচন ও বচনাকার তিন প্রকারের হয়—
(i) স্বতঃসত্য (Tautologous )
(ii) স্বতঃমিথ্যা (Self-contradictory)
(iii) অনির্দিষ্টমান ( Contingent )
প্রশ্ন ৩৪। স্বতঃসত্য বচন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে বচন স্বতঃ অর্থাৎ নিজে নিজেই সত্য, তাকে স্বতঃসত্য বচন বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যে বচন অনিবার্যভাবে বা আবশ্যিকভাবে সত্য, বা অবশ্যই সত্য, যে বচন মিথ্যা হতে পারে না, তাকেই বলে স্বতঃসত্য বচন। যেমন— ‘রাম সৎ অথবা অসৎ’ বচনটি স্বতঃসত্য।
প্রশ্ন ৩৫। স্বতঃসত্য বচনাকার বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে বচনাকারের সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য, তাকে স্বতঃসত্য বচনাকার বলে। যেমন—‘P v ~ P’—এই আকারের সকল বচন অর্থাৎ প্রতিস্থাপক দৃষ্টান্ত সত্য।
নিম্নলিখিত সত্য তালিকার সাহায্যে ‘P v ~ P’ এই বচনাকারের স্বতঃসত্যতা প্রমাণ করা যায়:
প্রশ্ন ৩৬। স্বতঃমিথ্যা বচন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে বচন স্বতঃ অর্থাৎ নিজে নিজেই মিথ্যা। অন্যভাবে বলা যায়, যে বচন অনিবার্যভাবে মিথ্যা, অবশ্যই মিথ্যা—যে বাক্য সত্য হতে পারে না, সেই বচনকে স্বতঃমিথ্যা বচন বলে। যেমন—’রাম সৎ এবং অসৎ’—এই বচনটি স্বতঃমিথ্যা বচন।
প্রশ্ন ৩৭। স্বতঃমিথ্যা বচনাকার কী?
উত্তরঃ যে বচনাকারের সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত মিথ্যা, সেই বচনাকারকে স্বতঃমিথ্যা বচনাকার বলে। এইরূপ বচনাকার যৌক্তিকভাবে মিথ্যা (logically false)। যেমন- ‘P . ~P’ এই আকারের সকল বচন স্বতঃমিথ্যা।
উপরোক্ত বচনাকারটি স্বতঃমিথ্যা বা স্ববিরোধী তা সত্যসারণির সাহায্যে প্রমাণিত হয়:
প্রশ্ন ৩৮। অনির্দিষ্টমান বচন বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যে বচন আবশ্যিকভাবে সত্যও নয়, আবশ্যিকভাবে মিথ্যাও নয়, অর্থাৎ স্বতঃসত্য নয়, স্বতঃমিথ্যাও নয়, তাকে অনির্দিষ্টমান বা আপতিক বা পরতসাধ্য বচন বলা হয়। যেমন—’রাম সৎ অথবা পরিশ্রমী’—এই বচনটি অনির্দিষ্টমান বচন।
প্রশ্ন ৩৯। অনির্দিষ্টমান বচনাকার কাকে বলে?
উত্তরঃ যে বচনাকারের সত্য ও মিথ্যা উভয়প্রকার প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত থাকে, তাকে অনির্দিষ্টমান বচনাকার বলা হয়। যেমন— ‘p v q’ এই আকারের সকল বচন অনির্দিষ্টমান বা পরতসাধ্য।
‘p v q’ বচনাকারটি অনির্দিষ্টমান নিম্নলিখিত সত্যতালিকার সহায়তায় সেটা প্রমাণিত হয়:
প্রশ্ন ৪০। যুক্তি (Argument) এবং যুক্তির আকার (Argument form) বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ যুক্তির আকার হল কয়েকটি প্রতীকের ক্রমবিন্যাস সেগুলিতে কেবল বচনগ্রাহক থাকে, কিন্তু বচন থাকে না। বচন গ্রাহকের পরিবর্তে যদি বচন বসানো হয় এবং একই বচন গ্রাহকের স্থানে একই বচন বসানো হয়, তাহলে ফলস্বরূপ একটি যুক্তি পাওয়া যায়।
যুক্তি আকার:
p ⊃ q
p
∴ q
যুক্তি: যদি সূর্য ওঠে, তাহলে পৃথিবী আলোকিত হয়।
সূর্য ওঠে।
∴ পৃথিবী আলোকিত হয়।
প্রশ্ন ৪১। একটি যুক্তির আকার (Argument form) কখন অবৈধ হয়?
উত্তরঃ একটি যুক্তির আকার অবৈধ (invalid) হয়, যদি এবং কেবল যদি ওই আকারের অন্তত একটি প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত থাকে যার আশ্রয়বাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্ত মিথ্যা।
প্রশ্ন ৪২। একটি যুক্তির আকার কখন বৈধ হয়?
উত্তরঃ কোনো যুক্তির আকারে যদি ‘আশ্রয়বাক্য’ সত্য হয় ও সিদ্ধান্ত সত্য হয় তবে তা বৈধ হয়। অন্যভাবে বলা যায়, একটি যুক্তির আকার বৈধ হয় যদি এবং কেবল যদি সেই আকারের এমন কোনো প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত না থাকে যার আশ্রয়বাক্য সত্য অথচ সিদ্ধান্ত মিথ্যা।
প্রশ্ন ৪৩। গণিতে ফলন বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ ‘ফলন’ শব্দটির তর্কবিজ্ঞানসম্মত অর্থ গাণিতিক অর্থ থেকে একটু আলাদা। ‘ফলন’ বলতে বোঝায় এক বা একাধিক পরিবর্ত্য বা চল-এর নির্দিষ্ট মূল্যের উপরে সমগ্র উক্তিটির মূল্য নির্ভর করে। যেমন—y = 3x + 2
এখানে x-এর ফলন y, কারণ যখন x-এর একটি মূল্য নির্দিষ্ট করা হবে, তখন সমগ্র উক্তিটির মূল্য পাওয়া যাবে। যেমন এক্ষেত্রে—
(ক) x যদি 2 হয়, তাহলে y = 3x + 2 ⇒ y = (3 × 2) + 2 = 8 হবে।
প্রশ্ন ৪৪। বচনের বৈধতা-অবৈধতা কীভাবে নির্ধারণ করা যায়?
উত্তরঃ যখন কোনো সত্যতালিকার প্রধান অবিকারীর নীচে সবকয়টির সত্যমূল্য T অর্থাৎ সত্য হয়, তখন বচনটি যৌক্তিকভাবে সত্য বা বৈধ হয়৷
অন্যদিকে, যখন কোনো সত্যতালিকার প্রধান তর্কীয় অবিকারীর নীচে সবকয়টি সত্যমূল্য মিথ্যা, অর্থাৎ F তখন বচনটি যৌক্তিকভাবে মিথ্যা বা অবৈধ হয়।
প্রশ্ন ৪৫। বচন ও রচনাকার বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ বচনাকার (Statement form) হল বচনগ্রাহক (Statement variable) ও যোজক প্রতীকের দ্বারা গঠিত প্রতীকের এমন ক্রমবিন্যাস যে একই বচনগ্রাহকের পরিবর্তে বচন প্রতিস্থাপিত (Substituted) করলে একটি বচন পাওয়া যায়। যেমন— ‘p.q’ হল বচনাকার। ‘p’ ও ‘q’ হল বচনগ্রাহক। ‘.’ (বিন্দু) হল যোজক প্রতীক। ‘p’-এর স্থানে ‘রাম হয় সৎ’ এবং ‘q’-এর স্থানে ‘রাম হয় পরিশ্রমী’ বচন বসালে ‘.’-এর স্থানে ‘এবং’ বসালে একটি বচন পাওয়া যায়। বচনটি হল ‘রাম হয় সৎ এবং রাম হয় পরিশ্রমী’। একটি বচনাকারের পরিবর্তে যে বচন পাওয়া যায়, সেই বচনটি হল ওই বচনাকারের প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত। একটি বচনের বিশেষ আকার (Specific form) হল সেই রচনাকার যেখানে প্রত্যেকটি বচনগ্রাহকের পরিবর্তে আলাদা আলাদা সরল বচন বসিয়ে একটি সম্পূর্ণ বচন পাওয়া যায়। যেমন—’যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে ভালো ফসল হয়’—এই বচনটির বিশেষ আকার হল ‘p ⊃ q’।
৪৬। নিম্নলিখিত বাক্যগুলি প্রতীকায়িত করো:
(ক) বিজিৎ বুদ্ধিমান এবং পরিশ্রমী।
উত্তরঃ বাক্যটির প্রতীকায়িত রূপ হল p . q
(খ) কাক কালো কিন্তু বক সাদা।
উত্তরঃ p . q
(গ) মিতা আসবে কিন্তা সীতা আসবে না।
উত্তরঃ p . ~q
(ঘ) আজ বৃষ্টি হবে এবং স্কুল ছুটি হয়ে যাবে।
উত্তরঃ p . q
(ঙ) আজ বৃষ্টি হচ্ছে না, কিন্তু সে স্কুলে যাবে না।
উত্তরঃ ~p . ~q
(চ) যদি তুমি আসো, তাহলে আমি যাব।
উত্তরঃ p ⊃ q
(ছ) যদি তুমি আসো, তাহলে আমি যাব না।
উত্তরঃ p ⊃ ~q
(জ) যদি তুমি না আসো, তাহলে কোনো কাজ হবে না।
উত্তরঃ ~p ⊃ ~q
(ঝ) তুমি এলে তবে আমি যাব।
উত্তরঃ p ⊃ q
(ঞ) একথা সত্য নয় যে ঘাসের রঙ সাদা।
উত্তরঃ ~p
(ট) একথা সত্য নয় যে ঘাসের রঙ সবুজ নয়।
উত্তরঃ ~ ~p, ie., p
(ঠ) যদি তুমি নিজের উন্নতি করো, তাহলে দেশেরও উন্নতি হবে।
উত্তরঃ p ⊃ q
(ড) একথা মিথ্যা যে সে পরীক্ষায় পাস করবে না।
উত্তরঃ ~p
(ঢ) একথা সত্য নয় সে অলস।
উত্তরঃ ~p
(ণ) হয় সে ব্যস্ত, নয় সে বাইরে গেছে।
উত্তরঃ p v q
(ত) হয় সে বোকা, নয় সে অতি চালাক।
উত্তরঃ p v q
(থ) হয় সে সেখানে যাবে, নয় সে শুয়ে থাকবে।
উত্তরঃ p v q
(দ) হয় সে যাবে না, নয় সে শুয়ে থাকবে।
উত্তরঃ ~p v q
(ধ) হয় ভারত জিতবে না, নয় পাকিস্থান হারবে।
উত্তরঃ ~p v q
(ন) একথা মিথ্যা যে মাঠ কর্দমাক্ত ও ভেজা।
উত্তরঃ ~ (p . q)
(প) যদি গাড়ি না আসে, তাহলে আমি যাব না।
উত্তরঃ ~p ⊃ ~q
(ফ) এবার বৃষ্টি হয়নি, কিন্তু ফসল ভালো হয়েছে।
উত্তরঃ ~ p . q
(ব) রাম যদি না আসে, তাহলে শ্যাম যাবে।
উত্তরঃ ~p ⊃ q
(ভ) রাম আসবে যদি এবং কেবলমাত্র যদি শ্যাম যায়।
উত্তরঃ p ≡ q
(ম) যদি তার অনেক টাকা থাকত, তাহলে সে একজোড়া জুতা এবং একটি বই কিনত।
উত্তরঃ p ⊃ (q . r )
(য) বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু সীতা ও গীতা খেলতে যাবেই।
উত্তরঃ p . (q . r)
(র) যদু ও মধু উভয়ের কেউই নির্বাচিত হবে না।
উত্তরঃ ~ p . ~q
(ল) যদু ও মধু উভয়ে নির্বাচিত হবে না।
উত্তরঃ ~(p . q)
প্রশ্ন ৪৭। নিম্নলিখিত বাক্যগুলি প্রতীকায়িত করো:
[ সরল বচনের সংক্ষিপ্ত রূপ হল: মিতা আসবে = M, রীতা আসবে = R, সীতা আসবে = S, গীতা আসবে = G]
(ক) মিতা আসবে কিন্তু সীতা আসবে না।
উত্তরঃ M . ~S
(খ) এমন নয় যে রীতা ও গীতা দুজনেই আসবে।
উত্তরঃ ~ (R . G)
(গ) এমন নয় যে মিতা আসবে অথবা রীতা আসবে।
উত্তরঃ ~(M v R )
(ঘ) যদি না মিতা আসে, রীতা আসবে।
উত্তরঃ ~M ⊃ R
(ঙ) হয় মিতা আসবে এবং সীতা আসবে, অথবা রীতা আসবে এবং গীতা আসবে।
উত্তরঃ (M . S) v (R . G)
(চ) হয় মিতা আসবে অথবা গীতা আসবে কিন্তু সীতা আসবে অথবা রীতা আসবে না।
উত্তরঃ (M v G) . (S v ~ R)
(ছ) হয় সীতা আসবে অথবা মিতা আসবে এবং রীতা আসবে না।
উত্তরঃ S v (M . ~ R)
(জ) একথা মিথ্যা যে সীতা অথবা গীতা আসবে।
উত্তরঃ ~ (S v G)
(ঝ) রীতা এবং গীতা আসবে না।
উত্তরঃ ~ R . ~ G
প্রশ্ন ৪৮। নীচের বচনসমূহের প্রতীকাত্মক রূপ কী?
(ক) জনক এক রাজা এবং ঋষি ছিলেন।
উত্তরঃ p . q
(খ) রাধাকৃষ্ণণ একজন দার্শনিক এবং প্রশাসক ছিলেন।
উত্তরঃ p . q
(গ) আকবর শিক্ষিত ছিলেন না কিন্তু মহান রাজা ছিলেন।
উত্তরঃ ~ p . q
(ঘ) তিনি বুদ্ধিমান কিন্তু নিষ্ঠাবান নন।
উত্তরঃ p . ~q
তিনি বুদ্ধিমান = p
তিনি নিষ্ঠাবান নন = ~q
কিন্তু = .
(ঙ) সে গরিব কিন্তু সৎ।
উত্তরঃ p . q
(চ) ছাত্রছাত্রী সকল সৎ ও কর্মশক্তিসম্পন্ন।
উত্তরঃ p . q
(ছ) শিশুটি হয় নির্বোধ না হলে সবল।
উত্তরঃ p v q
শিশুটি নির্বোধ = p
শিশুটি সবল = q
হয় …… নাহলে = v
(জ) লোকটি হয় বুদ্ধিমান নয় পরিশ্রমী।
উত্তরঃ p v q
(ঝ) একথা মিথ্যা যে ঘাসগুলো সবুজ নয়।
উত্তরঃ ~ ~ p
(ঞ) অলকেশ ভালো এবং সৌরভী বুদ্ধিমতী।
উত্তরঃ p . q
(ট) যদি বৃষ্টি হয়, তবে শস্য ভালো হবে।
উত্তরঃ p ⊃ q
(ঠ) যদি তোমার উদ্দেশ্য ভালো হয়, তাহলে ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করবেন।
উত্তরঃ p ⊃ q
(ড) মানুষ পূর্ণ নয়।
উত্তরঃ ~ p
(ঢ) একথা সত্য নয় যে ভীষ্ম জ্ঞানী ছিলেন না এবং শকুনি সৎ ছিলেন।
উত্তরঃ ~ (~p . q)
(ণ) হয় তার বিষয়টির প্রতি আগ্রহ নেই নয় বিষয়টি কঠিন।
উত্তরঃ ~ p v q
(ত) রমেশ-এর খেলার ইচ্ছা নেই কিংবা রমেশ সুস্থ নয়।
উত্তরঃ ~ p v ~q
(থ) রাম আর শ্যাম স্কুলে যায়।
উত্তরঃ p . q
(দ) রাম এবং শ্যাম স্কুলে যায় না।
উত্তরঃ ~p . ~q
রাম স্কুলে যায় না = ‘~p’
শ্যাম স্কুলে যায় না = ‘~q’
এবং = ‘.’
(ধ) লোকটি সৎ অথবা সৎ নয়।
উত্তরঃ p v ~p
লোকটি সৎ = p
লোকটি সৎ নয় = ~p
(ন) যদি সূর্য ওঠে, তাহলে পৃথিবী আলোকিত হয়।
উত্তরঃ p ⊃ q
(প) মাটি ভেজে, যদি বৃষ্টি হয়।
উত্তরঃ q ⊃ p
মাটি ভেজে = ‘p’
বৃষ্টি হয় = ‘q’
যদি = ‘⊃’
(ফ) তুমি পরীক্ষায় পাস করবে যদি এবং কেবল যদি তুমি মন দিয়ে পড়াশুনা করো।
উত্তরঃ p ≡ q
প্রশ্ন ৪৯। নিম্নলিখিত যুক্তিগুলোকে প্রতীকাত্মক রূপে প্রকাশ করো:
(ক) যদি বৃষ্টি হয়, তবে মাটি ভেজে
বৃষ্টি হচ্ছে
∴ মাটি ভিজছে।
উত্তরঃ p ⊃ q
p
∴ q
(খ) যদি সূর্য উঠে, তাহলে পৃথিবী আলোকিত হয়।
পৃথিবী আলোকিত হয়নি।
∴ সূর্য ওঠেনি।
উত্তরঃ p ⊃ q
~ q
~ p
(গ) সত্যজিৎ রায় চিত্রপরিচালক অথবা সত্যজিৎ রায় লেখক৷
সত্যজিৎ রায় চিত্রপরিচালক।
∴ এমন নয় যে সত্যজিৎ রায় লেখক।
উত্তরঃ p v q
p
∴ ~ q
(ঘ) রাম স্কুলে আসবে এবং শ্যাম স্কুলে আসবে।
সুতরাং রাম স্কুলে আসবে।
উত্তরঃ p . q
∴ p
(ঙ) যদি শরৎচন্দ্র গল্প লেখক না হন, তবে তিনি সাহিত্যিক নন।
শরৎচন্দ্র সাহিত্যিক নন।
∴ শরৎচন্দ্র গল্প লেখক নন।
উত্তরঃ ~ p ⊃ ~ q
~ q
∴ ~ p
(চ) বঙ্কিমচন্দ্ৰ হন ঔপন্যাসিক অথবা প্রবন্ধকার।
বঙ্কিমচন্দ্ৰ হন ঔপন্যাসিক।
∴ ৰঙ্কিমচন্দ্ৰ প্ৰবন্ধকার নন।
উত্তরঃ p v q
p
∴ ~ q
(ছ) রাম হয় মানুষ।
রাম হয় মরণশীল।
∴ রাম হয় মানুষ এবং মরণশীল।
উত্তরঃ p
q
∴ p. q
প্রশ্ন ৫০। নিম্নলিখিত রচনাকারগুলির সত্যতালিকা গঠন করো:
(ক) p ⊃ ~ p
উত্তরঃ
উপরোক্ত বচনাকারটি আবশ্যিকভাবে সত্যও নয়, আবশ্যিকভাবে মিথ্যাও নয়। অতএব, এটি অনির্দিষ্টমান বচনাকার।
(খ) p ⊃ (p . p)
উত্তরঃ
উপরোক্ত বচনাকারের সকল প্রতিস্থাপক দৃষ্টান্ত সত্য। অতএব, এটি স্বতঃসত্য বচনাকার।
(গ) (~ p ⊃ p) . ~ p
উত্তরঃ
এই বচনাকারের সকল প্রতিস্থাপক দৃষ্টান্ত মিথ্যা। অতএব, এটি স্বতঃমিথ্যা বচনাকার।
(ঘ) p ⊃ (p .q)
উত্তরঃ
উপরোক্ত রচনাকারের কিছু প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য এবং কিছু প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত মিথ্যা। অতএব এটি অনির্দিষ্টমান রচনাকার।
(ঙ) p v (p . q)
উত্তরঃ
উপরোক্ত বচনাকারের কিছু প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য এবং কিছু প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত মিথ্যা। অতএব এটি অনির্দিষ্টমান বচনাকার।
(চ) p ⊃ ~ (p . q)
উত্তরঃ
এটি অনির্দিষ্টমান বিশিষ্ট বচনাকার।
(ছ) ~ p v ~ q
উত্তরঃ
এটি অনির্দিষ্টমান বিশিষ্ট বচনাকার।
(জ) ~ (p . q) ≡ (~pv ~q)
উত্তরঃ
এই বচনাকারের সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য। অতএব, এটি স্বতঃসত্য বচনাকার।
(ঝ) [(p ⊃ q) ⊃ q] ⊃ p
উত্তরঃ
এটি অনির্দিষ্টমান বচনাকার।
(ঞ) (~p . q) . (q ⊃ p)
উত্তরঃ
এই বচনাকারের সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত মিথ্যা। অতএব, এটি স্বতঃমিথ্যা বচনাকার।
(ট) [~( p v q)] ⊃ (~p. ~q)
উত্তরঃ
এটি স্বতঃসত্য বচনাকার।
(ঠ) (p ⊃ q) . (q ⊃ p)
উত্তরঃ
এটি অনির্দিষ্টমান বিশিষ্ট বচনাকার।
(ড) ~[(p . q) ⊃ p]
উত্তরঃ
এটি স্বতঃ মিথ্যা বচনাকার।
(ঢ) (p ⊃ q) ⊃ (~q v q)
উত্তরঃ
এই বচনাকারটি স্বতঃসত্য।
(ণ) (p ⊃ q) ⊃ [(pvq). ~p)]
উত্তরঃ
এই বচনাকারটি অনির্দিষ্টমান বিশিষ্ট।
(ত) ~[p ⊃ (pvq)]
উত্তরঃ
এই বচনাকারটি সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত মিথ্যা। অতএব, এটি স্বতঃমিথ্যা বচনাকার।
(থ) (p≡q)⊃[~(pvq) . (~qvp)]
উত্তরঃ
এই বচনাকারটি সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য। অতএব, এটি স্বতঃসত্য বচনাকার।
(দ) p ⊃ (pvq)
উত্তরঃ
এই বচনাকারটি স্বতঃসত্য।
(ধ) p v (q v ~q)
উত্তরঃ
উপরোক্ত বিবৃতিটির সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য। অতএব, রচনাকারটি স্বতঃসত্য।
(ন) (p . q) ⊃ (q . p)
উত্তরঃ
এটি স্বতঃসত্য বচনাকার।
(প) (p ⊃ q) . (p . ~q)
উত্তরঃ
উপরোক্ত বিবৃতিটির সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত মিথ্যা। অতএব এটি স্বতঃমিথ্যা বচনাকার।
(ফ) ~ p ⊃ q
উত্তরঃ
এই বচনাকারটির কিছু প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য এবং কিছু প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত মিথ্যা। অতএব, বচনাকারটি অনির্দিষ্টমান বিশিষ্ট।
(ব) (p . q) ⊃ (p v q)
উত্তরঃ
এই বচনাকারটির সকল প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য। অতএব, এটি স্বতঃসত্য বচনাকার।
(ভ) (~p . q) . (p v ~q)
উত্তরঃ
এই বচনাকারটি স্বতঃমিথ্যা।
(ম) [(p ⊃ q) . (q ⊃ r)] ⊃ (p ⊃ r)
উত্তরঃ
এই বচনাকারটির সব প্রতিস্থাপন দৃষ্টান্ত সত্য। অতএব, এটি স্বতঃসত্য বচনাকার।
(য) [(pvq).r] ≡ [(~p.~q) v ~r]
উত্তরঃ
এই বচনাকারটি স্বতঃমিথ্যা।
নিজে অভ্যাস করো:
নিম্নলিখিত রচনাকারগুলোর সত্য-তালিকা প্রস্তুত করো এবং এগুলো স্বতঃসত্য, স্বতঃমিথ্যা না অনির্দিষ্টমান বিশিষ্ট উল্লেখ করো:
(a) p ⊃ p
(b) p ⊃ (p ⊃ p)
(c) (p ⊃ p) ⊃ p
(d) p ⊃ (p v p)
(e) (p ⊃ ~p) . (~p ⊃ p)
(f) (p ⊃ p) v (~p ⊃ ~p)
(g) (p ⊃ ~p) . (p v p)
(h) (p . q) ⊃ p
(i) p v ~(p . q)
(j) (~p. q) . (q ⊃ p)
(k) (p ⊃ q) . (~q ⊃ ~p)
(l) [p v q) . ~p] ⊃ q
(m) [(p ⊃ q) . p] ⊃ q
(n) [~(p . q)] ⊃ (~p v ~q)
(o) (p ⊃ q) v (q ⊃ p)
(p) ~ [p ⊃ (p v q)]
(q) p . (~p. ~q)
(r) ~ [(p. q) ⊃ p]
(s) (p ⊃ q) v (~q ⊃ ~p)
(t) [~(p ⊃ q)] ⊃ (p. ~q)
(u) (p ≡ q) ⊃ [(p . q) v (~p . ~q)]
(v) (p ≡ q) ⊃ [(~p v q) . (~q v p)]
(w) ~p v ~(p ⊃ ~q)
(x) [(p ⊃ q)] . [(~q ⊃ ~p)]
(y) (p ⊃ q) ⊃ (~q ⊃ ~p)
(z) [p ⊃ (q ⊃ r)] . [(p . q) ⊃ r]
(za) [p. (q v r)] ⊃ [(p. q) v (p. r)]
(zb) [p v (q. r)] ⊃ [(p v q) . (p v r)]
(zc) [p ⊃ (q ⊃ r)] ⊃ [(p ⊃ q) ⊃ r]
(zd) [p ⊃(q ⊃ r)] ⊃ [q ⊃ (p ⊃ r)]
(ze) [p ⊃ (q ⊃ r)] ⊃ [(p ⊃ q) ⊃ (p ⊃ r)]
(zf) (p. q) ≡ (p v q)
(zg) (p. q) ⊃ (p v q)
নীচের বচনাকারের সত্যতালিকা প্রস্তুত করো:
(a) p v ~p
(b) ~ p ⊃ q
(c) ~ (p . q)
(d) ~ (p v q)
(e) ~p . q
(f) p ⊃ ~q
(g) ~p ⊃ ~q
(h) ~(p ⊃ q)
(i) ~p v ~q
(j) (p . q) . (p v q)
(k) (p. q) v (p. q)
(l) ~ (p . q) v ~ (q . p)
(m) [p ⊃ (p ⊃ q) ⊃ q]
(n) [ p ⊃ (p v q)]
(o) [(p ⊃ q) . (q ⊃ p)]
প্রশ্ন ৫১। নিম্নলিখিত রচনাকারগুলির সত্যতালিকা গঠন করো:
(ক) p ⊃ q
~ q
∴ ~p
উত্তরঃ
বৈধ।
উপরোক্ত সত্যতালিকা থেকে আমরা জানতে পারি, এই যুক্তি আকারটি বৈধ। কারণ চতুর্থ সারিতে দুটি আশ্রয়বাক্যই সত্য এবং সিদ্ধান্তও সত্য। এখানে এমন কোনো সারি নেই, যেখানে দুটি আশ্রয়বাক্য সত্য, কিন্তু সিদ্ধান্ত মিথ্যা।
(খ) p v q
~ q
∴ p
উত্তরঃ
বৈধ।
উপরোক্ত সত্যতালিকা থেকে আমরা জানতে পারি, এই যুক্তি আকারটি বৈধ। কারণ, দ্বিতীয় সারিতে দুটি আশ্রয়বাক্যই সত্য এবং সিদ্ধান্তও সত্য। এখানে এমন কোনো সারি নেই, যেখানে দুটি আশ্রয়বাক্য সত্য, কিন্তু সিদ্ধান্ত মিথ্যা।
(গ) p . q
~ p
∴ ~ q
উত্তরঃ
বৈধ।
এই যুক্তি আকারটি বৈধ । কারণ, এখানে এমন কোনো সারি নেই, যেখানে আশ্রয়বাক্যগুলি সত্য, কিন্তু সিদ্ধান্ত মিথ্যা।
(ঘ) p ⊃ q
p v q
∴ ~ q
উত্তরঃ
অবৈধ।
উপরোক্ত সত্যতালিকা থেকে জানতে পারি, এই যুক্তি আকারটি অবৈধ। কারণ, প্রথম এবং তৃতীয় সারিতে দুটি আশ্রয়বাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্ত মিথ্যা।
(ঙ) (p v q) . r
~p v ~q
∴ ~ r
উত্তরঃ
অবৈধ।
এই সত্যতালিকা থেকে জানতে পারি, যুক্তি আকারটি অবৈধ। কারণ, তৃতীয় সারি এবং পঞ্চম সারিতে দুটি আশ্রয়বাক্য সত্য, কিন্তু সিদ্ধান্ত মিথ্যা। সুতরাং এটি অবৈধ।
(চ) p . q
∴ p
উত্তরঃ
উপরোক্ত যুক্তি আকারটি বৈধ। কারণ, সত্যতালিকার প্রথম সারিতে আশ্রয়বাক্যটি সত্য এবং সিদ্ধান্তও সত্য। এখানে এমন কোনো সারি নেই, যেখানে আশ্রয়বাক্য সত্য এবং সিদ্ধান্ত মিথ্যা
নিজে করো:
নিম্নলিখিত যুক্তি আকারটি বৈধ না অবৈধ নির্ণয় করো:
(a) p ⊃ q
p
∴ q
(b) p
∴ p v q
(c) p
∴ p ⊃ q
(d) p ⊃ q
∴ ~q ⊃ ~p
(e) p ⊃ q
∴ ~p v q
(f) ~p v ~q
∴ ~(p . q)
(g) ~p .~q
∴ ~(p v q)
(h) p v q
~ p
∴ q
(i) p . q
∴ ~p v q
(j) p ⊃ q
p v q
∴ ~q
(k) p v q
p
∴ p . q
(l) p . q
~ p v q
∴ ~p ⊃ ~q
(m) p ⊃ q
q ⊃ p
∴ ~p v ~q
(n) p ⊃ q
~ p . q
∴ (p v q) ⊃ p
(o) p ⊃ q
q ⊃ r
∴ p ⊃ r
(p) p ⊃ (q ⊃ r)
p . q
∴ r
(q) (p ⊃ q) . (r ⊃ q)
~ q
∴ ~p v ~r
(r) (p . q) ⊃ r
~ p v q
∴ q v r
অতিরিক্ত রচনাভিত্তিক প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের প্রকৃতি সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তরঃ প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের প্রতীকের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তর্কবিজ্ঞানের মূল আলোচ্য বিষয় হল যুক্তি এবং প্রতিটি যুক্তি তৈরি হয় একাধিক বচন দ্বারা। বচনগুলির অর্থ যদি সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট না হয়, তাহলে যুক্তিটিও অস্পষ্ট থেকে যায় এবং ফলস্বরূপ যুক্তিটির বৈধতা নির্ণয়ে সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে যুক্তির সঠিক আকার নির্ণয় করা যায় না। অবরোহ যুক্তির বৈধতা নির্ণয় করতে গেলে তার আকারের বৈধতা নির্ণয় করতে হয়।
সেজন্য তর্কবিজ্ঞানীরা যুক্তির আকার সঠিকভাবে নির্ণয় করার জন্য প্রতীকের ব্যবহার শুরু করেন। প্রতীক হল প্রথাগতভাবে স্থির করা কৃত্রিম সংকেত। প্রতীক শাব্দিক এবং অশাব্দিক হয়। কিন্তু তর্কবিজ্ঞানে এবং গণিতে প্রতীক বলতে অশাব্দিক প্রতীককে বোঝায়। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান বা আধুনিক তর্কবিজ্ঞানে প্রতীকের ব্যবহার অত্যন্ত বেশি।
প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানে ধারণাজ্ঞাপক চিহ্নের ব্যবহার হয়। আধুনিক তর্কবিজ্ঞানীরা যুক্তিতে পরিবর্ত্য বা চল, যথা— p, q, r, s t, u … ইত্যাদি। এবং তর্কীয় অবিকারী, যথা— ‘.’, ‘v’, ‘⊃’, ‘~’ ‘≡’ ইত্যাদি ব্যবহার করে স্বল্প কথায় যুক্তি গঠন করেন। ফলস্বরূপ ভাষায় আসে স্বচ্ছতা, ভাষা হয় জটিল মুক্ত, সরল ও যুক্তিগ্রাহ্য। সর্বোপরি প্রতীক ব্যবহারের ফলে যুক্তির বৈধতা ও অবৈধতা নির্ণয় করতে সুবিধা হয়। বিমূর্ত ধারণা প্রকাশের ব্যাপারে প্রতীকের ব্যবহার বিশেষ উপযোগী। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানে ও অ্যারিস্টটলের (Aristotle) গতানুগতিক তর্কবিজ্ঞানে মাত্রাগত ভেদ থাকলেও বলা যায় প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞান অ্যারিস্টটলের পরম্পরাগত তর্কবিজ্ঞানের সম্প্রসারিত পরিশোধিত পরিমার্জিত এবং বিকশিত রূপ।
প্রশ্ন ২। প্রতীকাত্মক তর্কবিজ্ঞানের বৈশিষ্ঠ্য সংক্ষেপে আলোচনা করো।
উত্তরঃ প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্যগুলো নীচে উল্লেখ করা হল:
(ক) ভাবলেখ বা ধারণাজ্ঞাপক চিহ্নের ব্যবহার: প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানে প্রতীকের ব্যাপক ব্যবহার আছে। প্রতীক হচ্ছে নির্দেশক চিহ্ন—কোনো কিছুকে বোঝানোর জন্য মানুষের দ্বারা উদ্ভাবিত চিহ্নই প্রতীক। প্রতীক দুই রকমের হয়— (অ) ভাবলেখ বা ধারণাজ্ঞাপক চিহ্ন এবং (আ) ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন। ভাব বা ধারণার পরিবর্তে ভাবলেখ চিহ্নের ব্যবহার হয়; যেমন—যোগ চিহ্নের বদলে ‘+’, বিয়োগ চিহ্নের বদলে ‘–’, গুণ চিহ্নের বদলে ‘×’ এবং ভাগ চিহ্নের বদলে ‘÷’ ইত্যাদি। ভাবলেখ বা ধারণাজ্ঞাপক চিহ্নের সঙ্গে ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্নের পার্থক্য আছে। ধ্বনিজ্ঞাপক চিহ্ন ব্যবহৃত হয় শব্দ বা ধ্বনির পরিবর্তে যেমন—আমরা যখন বানান করে লিখি ‘গুণ’ চিহ্ন’ বা মুখে উচ্চারণ করি ‘গুণ চিহ্ন’।
(খ) অবরোহী পদ্ধতির ব্যবহার: প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানে অবরোহী পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। সাধারণত গণিতশাস্ত্রে এই পদ্ধতির ব্যবহার হয়ে থাকে যেমন—জ্যামিতিতে ‘ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি দুই সমকোণের সমান’। এই সিদ্ধান্তটি অবরোহী পদ্ধতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ত্রিভুজের সংজ্ঞা ‘তিনটি সরলরেখা বেষ্টিত সমতল ক্ষেত্রকে ত্রিভুজ বলে’। এর থেকে প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানে অবরোহী পদ্ধতির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে।
(গ) পরিবর্তন বা চলের ব্যবহার: পরিবর্ত বা চল যুক্তিবিজ্ঞানে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। পরিবর্ত বা চল একধরনের প্রতীক। প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানের বাক্যকলন অংশে ‘p’, ‘q’, ‘r’, ‘s’, ‘t’ ইত্যাদি পরিবর্ত বা চল ব্যবহৃত হয়। এই বর্ণগুলোর প্রত্যেকটি এক-একটি সরল বাক্যের পরিবর্তে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গণিতের মতো শাস্ত্রে, যেখানে যুক্তিনির্ভর প্রমাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়ে থাকে, সেখানেও পরিবর্ত বা চলের ব্যবহার হয়; যেমন— (a + b)² = a² + 2ab + b²
উপরে প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানের যে বৈশিষ্ট্যগুলোর কথা বলা হল, তার সব কয়টিই গণিতশাস্ত্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। সেজন্যেই অনেকেই বলেন যে, বিশুদ্ধ গণিতশাস্ত্র (Pure Mathematics) এবং প্রতীকাত্মক যুক্তিবিজ্ঞানের মধ্যে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই।