Class 10 Science Chapter 15 আমাদের পরিবেশ Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 10 Science Chapter 15 আমাদের পরিবেশ and select needs one.
Class 10 Science Chapter 15 আমাদের পরিবেশ
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 10 Science Chapter 15 আমাদের পরিবেশ Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 10 Science Chapter 15 আমাদের পরিবেশ These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 10 Science Chapter 15 আমাদের পরিবেশ for All Subject, You can practice these here..
আমাদের পরিবেশ
Chapter – 15
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
১। কোন কোন পদার্থ জৈব বিনাশক এবং কোনগুলি জৈব অবিনাশক ?
উত্তরঃ আমাদের দৈনন্দিন ফেলে দেওয়া সামগ্রীর কিছু সময়ের গতিতে ঘটে মাটির সঙ্গে মিশে যায় এবং কিছু সামগ্রীর বিয়ােজন ঘটে না। যেসব ফেলে দেওয়া দ্রব্য সময় সাপেক্ষে জৈবিক প্রক্রিয়া দ্বারা ক্ষয় হয়ে মাটিতে মিশে যায় সেই সব দ্রব্য জীব-ক্ষয়িষ্ণু বা জৈব বিনাশক এবং যেসব দ্রব্যের পরিবর্তন না হয়ে থেকে যায় সেইগুলােকে জীব-অক্ষয়িষ্ণু বা জৈব অবিনাশক বলে।
২। যে কোনও দুইটি প্রক্রিয়া দেখাও যে প্রক্রিয়া দ্বারা জৈব-অবিনাশক পদার্থ পরিবেশকে প্রভাবিত করে।
উত্তরঃ (i) জৈব – অবিনাশক পদার্থ জমা হয়ে পরিবেশকে দূষিত করে।
(ii) জৈব – অবিনাশক পদার্থ জমা হলে সেখানে মশার জন্ম হয় এবং এরা বিভিন্ন রােগ ছড়ায়।
৩। যে কোনও দুইটি প্রক্রিয়া দেখাও যে প্রক্রিয়া দ্বারা অজৈব-অবিনাশক পদার্থ পরিবেশকে প্রভাবিত করে।
উত্তরঃ অজৈব-অবিনাশক পদার্থ পরিবেশকে নিম্নোক্তভাবে প্রভাবিত করে-
(i) এই দ্রব্যগুলি মাটিতে জমে পরিবেশ তন্ত্র বা ইকোসিষ্টেমকে বাধাগ্রস্থ করে।
(ii) কীটনাশক দ্রব্য বা পতঙ্গনাশক দ্রব্য, ডি.ডি. টি ইত্যাদি খাদ্যশৃংখলকে প্ৰদূষিত করে পরিবেশকে প্রভাবিত করে।
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
১। পৌষ্টিক স্তর (Trophic level) কি ? খাদ্যশৃংখলের একটি উদাহরণ দাও এবং এর বিভিন্ন পৌষ্টিক স্তর ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ খাদ্যশৃংখলে থাকা স্তর হল পৌষ্টিক স্তর। যেমন- তৃণভােজী এবং বিয়ােজক। পৌষ্টিক স্তর নীচে দেখানাে হল-
২। পরিস্থিতি তন্ত্রে বিয়ােজকের ভূমিকা কি ?
উত্তরঃ পরিস্থিতি তন্ত্রে বিয়ােজকের ভূমিকা অনেক। যেমন—অজান্তে কিছু ক্ষতিকারক রাসায়নিক খাদ্যশৃংখলের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। যেহেতু এইসব রাসায়নিক বিনাশক নয় তাই পৌষ্টিক স্তরে জমা হয়। আমাদের খাদ্যশস্য, যেমন- গম ও চাল, শাক-সবজি ও ফল এবং মাংসে কীটনাশকের কমবেশী পরিমাণ থাকে। এই কীটনাশক ধুয়ে বা অন্য উপায়ে পৃথক করতে পারা যায় না।
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
১। ওজোন কি ? এটি কিভাবে পরিস্থিতি তন্ত্রকে প্রভাবিত করে ?
উত্তরঃ ওজোন অনু (O₃) তিনটি অক্সিজেন পরমাণু দ্বারা গঠিত। যখন “O₂” যাকে আমরা অক্সিজেন বলি সকল বায়ুজীবির জন্য অপরিহার্য। ওজন একটি মারাত্মক বিষ। বায়ুমণ্ডলের উচ্চস্তরে ওজোন প্রয়ােজনীয় কার্য সম্পাদন করে। এটি সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মির হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করে। এই রশ্মি জীবের অতি মাত্রায় ক্ষতি করে। উদাহরণস্বরূপ মানবজাতির চর্মে কর্কট রােগ Skin Cancer এই রশ্মির জন্যই হয়।
২। বর্জ্য নিষ্পত্তির সমস্যা সমাধানে তােমরা কিভাবে সাহায্য করতে পার ? যে কোনও দুইটি পদ্ধতি দাও।
উত্তরঃ বর্জ্য নিষ্পত্তির সমস্যা সমাধানের দুইটি পদ্ধতি হল-
(i) প্লাষ্টিক জাতীয় দ্রব্যকে পুনঃ ব্যবহার করার মতাে অবস্থায় আনতে পারাে।
(ii) উৎপাদিত বর্জ্য পদার্থকে জ্বালিয়ে দেওয়া।
অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ
১। নিম্নলিখিত কোন বিভাগটি জৈব-বিনাশক বিভাগের অন্তর্ভুক্ত ?
(a) ঘাস, ফুল এবং চামড়া।
(b) ঘাস, কাঠ এবং প্লাষ্টিক।
(c) ফলের খােসা, পিঠা এবং লেবুর রস।
(d) পিঠা, কাঠ এবং ঘাস।
উত্তরঃ (c) ফলের খােসা, পিঠা এবং লেবুর রস।
২। নিম্নের কোনটি খাদ্যশৃঙ্খল গঠন করে ?
(a) ঘাস, গম এবং আম।
(b) ঘাস, ছাগল এবং মানুষ।
(c) ছাগল, গরু এবং হাতী।
(d) ঘাস, মাছ এবং ছাগল।
উত্তরঃ (b) ঘাস, ছাগল এবং মানুষ।
৩। নিম্নলিখিত কোনটি পরিবেশ বান্ধব কার্য ?
(a) কেনা কাটার সময় ক্রয় করা বস্তু রাখতে কাপড়ের থলি বহন করা।
(b) অপ্রয়ােজনীয় বাতি এবং পাখা বন্ধ করা।
(c) স্কুলে হেঁটে যাওয়ার বদলে স্কুটারে যাওয়া।
(d) উপরােক্ত সবগুলি।
উত্তরঃ (d) উপরােক্ত সবগুলি।
৪। যদি একটি পৌষ্টিক স্তরের সব জীবকে বধ করি তবে কি হবে ?
উত্তরঃ পৌষ্টিক স্তরের সব জীবকে যদি বধ করা হয় তবে পরবর্তী পৌষ্টিক স্তরে খাদ্যের অভাবে জীবের সংখ্যা কমে যাবে। ফলে নিম্ন শ্রেণির জীবের সংখ্যা বাড়বে কারণ তাদের ভক্ষণ করা প্রাণী থাকবে না। ইহা পরিস্থিতি তন্ত্রে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করবে।
৫। একটি পৌষ্টিক স্তরের সকল জীবসত্তার মৃত্যু হলে বিভিন্ন স্তরে বিভিন্নভাবে তার প্রভাব পড়বে কি ? পরিস্থিতি তন্ত্রের কোন ক্ষতি ঘটানাে ছাড়া কোনও পৌষ্টিক স্তরের জীবকে কিভাবে সরানাে যেতে পারে ?
উত্তরঃ (i) উৎপাদককে সরানাে – তৃণভােজী প্রাণীরা বেঁচে থাকবে না। ফলে পরিস্থিতি তন্ত্র ভেঙ্গে যাবে।
(ii) তৃণভােজীদের সরানাে – সর্বভূকরা খাদ্য পাবে না ফলে পৌষ্টিক তন্ত্র ব্যাহত হবে।
(iii) সর্বভূকদের সরানাে – তৃণভােজীর সংখ্যা বাড়বে।
(iv) বিয়ােজকদের সরানাে – বর্জ্য পদার্থ, জীব-জন্তুর মৃতদেহ ইত্যাদি বিয়ােজিত হবে না বা মাটির সঙ্গে মিশবে না ফলে প্ৰদূষণ বাড়বে।
৬। জৈব বৃহত্তীকরণ কি ? এই বৃহত্তরীকরণের স্তর পরিস্থিতি তন্ত্রের বিভিন্ন স্তরে কি বিভিন্ন ?
উত্তরঃ মাটি থেকে উদ্ভিদ দ্বারা খনিজ পদার্থ ও জলের সাথে রাসায়নিক দ্রব্য শােষিত হয় এবং জলের আধার থেকে জলজ উদ্ভিদের শরীরে যায় এবং প্রাণী এই উদ্ভিদ ভক্ষণ করে, এইভাবে খাদ্যশৃঙ্খল প্রবেশ করে। যেহেতু এইসব রাসায়নিক বিনাশক হয়, অতএব প্রতিটি পৌষ্টিক স্তরে জমা হয়। যেহেত মানবজাতি যেকোনও খাদ্যশৃংখলের উচ্চস্তরে থাকে। তাই সব রাসায়নিকে সর্বাধিক ঘনত্ব আমাদের দেহে সঞ্চিত হয়। এই ঘটনাটি জৈব বৃহত্তরীকরণ হিসাবে পরিচিত। এইসব কারণে আমাদের খাদ্যশস্য, যেমন- গম ও চাল, শাক-সবজি ও ফল এবং মাংসে কীটনাশক ধুয়ে বা অন্য উপায়ে পৃথক করতে পারা যায় না।
৭। আমাদের উৎপাদিত জৈব অবিনাশক বর্জ দ্বারা কি সমস্যা হবে ?
উত্তরঃ (i) নালা নর্দমা বন্ধ হবে।
(ii) প্লাষ্টিক ভক্ষণে তৃণভােজীদের মৃত্যু হয়।
(ii) মাটি নষ্ট হয়।
(iv) রাস্তাঘাট অপরিষ্কার হয়ে যায়।
(v) জল, বায়ু এবং মাটির প্রদূষণ হয়।
(vi) পৌষ্টিক তন্ত্র ভেঙ্গে।
৮। যদি আমাদের উৎপাদিত সমস্ত বর্জ্য বিনাশক হয় তাহলে পরিবেশের উপর এদের প্রভাব কি পড়বে না ?
উত্তরঃ (i) ক্ষতিকারক গ্যাসের সৃষ্টি হবে ফলে প্রদূষণ বাড়বে।
(ii) সমস্ত উৎপাদিত বর্জের বিনাশ হবে না ফলে বিভিন্ন জায়গায় আবর্জনা জমে থাকবে।
৯। ওজন স্তরের ক্ষতি উদ্বেগের কারণ কেন ? এই ক্ষতি সীমিত করতে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
উত্তরঃ ওজন স্তরের ক্ষতি যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ। ওজন একটি মারাত্মক বিষ। ওজন স্তরের জন্য তাপমাত্রার পরিবর্তন হয় এবং পৃথিবীতে বৃষ্টিপাত কমে যায়। মানুষের কেন্সার রােগ হতে পারে। 1980 সালে বায়ুমণ্ডলের নির্দিষ্ট পরিমাণ ওজন হঠাৎ কমতে শুরু করে দিল। এই হ্রাসের কারণ হচ্ছে ক্লোরফ্লুরাে কার্বন CFC জাতীয় কিছু গ্যাস যেগুলি রেফ্রিজারেটর এবং অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রে বা শীততাপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রে ব্যবহৃত হয়। 1987 সালে ইউনাইটেড নেশনস এনভার্নমেন্ট প্রােগ্রাম (UNEP) অনেক চেষ্টার ফলে 1986 সালের মাত্রায় CFC উৎপাদন হিমায়িত করতে একটি চুক্তি প্রণয়ন করতে সফল হয়েছে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
১। বিয়ােজকের থেকে কি উপকার হয় ?
উত্তরঃ এটি পরিবেশ বিশুদ্ধ কারক হিসাবে কাজ করে। কারণ মৃত পদার্থগুলি এদের গলা-পচা পরিবেশ হতে দূর করে মাটিতে মিশিয়ে দেয়। ফলে মাটির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পায়।
২। সূক্ষ্ম আবাস কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ আবাসস্থলের ক্ষুদ্র অঞ্চল এককটিকে সূক্ষ্ম আবাস বলা হয়। যেমন- পুকুরে জলের উপরের অংশ বা তলার কাদা অংশকে সূক্ষ্ম আবাস বলা হয়।
৩। আবাদী কাকে বলে ? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ কোনাে একটি পরিস্থিতিতন্ত্রকে একসঙ্গে দলবদ্ধভাবে এবং নিজের মধ্যে বংশবৃদ্ধি করা এবং একই প্রজাতির মােট জীবসংখ্যাকে আবাদী বলা হয়। যেমন- পুকুরে থাকা রুইমাছের মােট সংখ্যাই পুকুরটির বা রুইমাছের আবাদী।
৪। এক প্রকার পরজীবী উদ্ভিদের নাম লিখ।
উত্তরঃ রঘুমালা।
৫। অপমার্জক প্রাণী আমাদের কিভাবে উপকার করে ?
উত্তরঃ অপমাজক প্রাণীর গলা পচা জীবদেহ ভক্ষণ করে পরিবেশ স্বচ্ছ করতে সাহায্য করে।
৬। রাইজোবিয়াম কি এবং এর কাজ কি ?
উত্তরঃ রাইজোবিয়াম হল মটর বা ডাইল জাতীয় উদ্ভিদের শিকড়ে থাকা একপ্রকার ব্যাক্টেরিয়া। এটি মাটিতে নাইট্রোজেন সারের পরিমাণ বৃদ্ধি করে।
৭। লাইকেন কি ?
উত্তরঃ লাইকেন হল শেওলা এবং ছত্রাক শ্রেণির উদ্ভিদের সংমিশ্রণে হওয়া একপ্রকার ক্ষুদ্র সহজীবী উদ্ভিদ। লাইকেন জন্মালে শিলা ক্ষয় হয় এবং খসখসে হয়ে পড়ে।
৮। বনাঞ্চল ধ্বংসের প্রধান কারণসমূহ কি কি ?
উত্তরঃ বনাঞ্চল ধবংসের প্রধান কারণসমূহ হল জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কাঠ এবং খড়ি হিসাবে ইন্ধনের আবশ্যকতার বৃদ্ধি এবং কৃষিভূমির বৃদ্ধি।
৯। বর্তমান সময়ে পরিবেশ রক্ষা করতে প্রধান দুইটি কাজ কি কি ?
উত্তরঃ জন্ম নিয়ন্ত্রণ এবং বৃক্ষরােপণ।
১০। প্রকৃতির বিপর্যয়ের জন্য বিলুপ্ত হওয়া দুইপ্রকার প্রাণীর নাম লিখ।
উত্তরঃ মরিসাসের ডড নামের পাখি এবং ভারতবর্ষের চিতা বাঘ।
১১। দুই প্রকার বিলুপ্তি হওয়া উদ্ভিদের নাম লিখ।
উত্তরঃ (a) কলসী উদ্ভিদ, (b) সর্পগন্ধা।
১২। দুটি বিলুপ্তি হওয়া প্রায় প্রাণীর নাম-
উত্তরঃ (a) রাজহাঁস,
(b) একশিং বিশিষ্ট গণ্ডার।
১৩। জীব সম্প্রদায় কাকে বলে ? উদাহরণসহ বুঝে লিখ।
উত্তরঃ কোনাে একটি পরিস্থিতিতন্ত্রে বসবাস করা সকল প্রজাতির জীবকে জীবসম্প্রদায় বলা হয়। একটি জীবসম্প্রদায়ের অনেকগুলি আবাদী থাকে। উদাহরণস্বরূপ, পুকুরে থাকা সমস্ত জীব প্রজাতি এক সঙ্গে একটি জীব সম্প্রদায়। একটি পুকুরে থাকা রুইমাছের আবাদী, মৃগেল মাছের আবাদী, কাতলা মাছের আবাদী এবং উদ্ভিদ, লতাগুলি একসঙ্গে মিলিত হয়ে পুকুরটির মধ্যে একটি জীবসম্প্রদায়ের সৃষ্টি করে। সেইরূপ কাজিরাঙা অভয়ারণ্যে থাকা সমস্ত জীব সমষ্টি জীব সম্প্রদায়ের উদাহরণ।
১৪। জীবমণ্ডল, আবাসস্থল, পরিস্থিতিতন্ত্র এবং আবাদী কাকে বলে বুঝে লিখ।
উত্তরঃ জীবমণ্ডল – পৃথিবীর যে অংশে জীবিত জীব থাকে সেই অংশকে জীবমণ্ডল বলা হয়। পৃথিবীতে থাকা সমস্ত জীব এবং তার চারদিকে থাকা পরিবেশ মিলিত হয়ে জীবমণ্ডল গঠন হয়েছে। পৃথিবী পৃষ্ঠের বায়ু, জল এবং মাটি এই সকল স্থানেই জীব বসবাস করে।
আবাসস্থল – আবাসস্থল জীবমণ্ডলের একটি ক্ষুদ্র অংশ। আবাসস্থলে একপ্রকার বা বহুপ্রকারের জীব প্রজাতি এক সঙ্গে বসবাস করে। জীবমণ্ডলের তুলনায় আবাসস্থল এক ক্ষুদ্র অঞ্চল হলেও আপেক্ষিকভাবে এরা এক একটি বৃহৎ পরিস্থিতিতন্ত্র। উদাহরণস্বরূপ জীবমণ্ডলের একটি ভাগ হল জলমণ্ডল। অপরদিকে জলমণ্ডলের অন্তর্গত সাগর, হ্রদ, নদী, পুকুর প্রভৃতি এক একটিকে আবাসস্থল বলা হয়।
পরিস্থিতিতন্ত্র – পৃথিবীর কোনাে অঞ্চলে বসবাস করা জীব এবং তাদের পরিবেশকে একত্রে পরিস্থিতিতন্ত্র বলা হয়। এই পরিস্থিতিতন্ত্রে অজৈবিক এবং জৈবিক দুই ধরনের উপাদান থাকে। বায়ু, জল, মাটি এবং সৌরশক্তি দ্বারাই পরিস্থিতিতন্ত্রের অজৈবিক পরিবেশ গঠন হয়। সকল প্রাণী, পশুপক্ষী এবং গাছ বন পরিস্থিতিতন্ত্রের জৈবিক পরিবেশ গড়ে তােলে।
আবাদী – কোনাে একটি পরিস্থিতিতন্ত্র একসঙ্গে দলবদ্ধভাবে এবং নিজের মধ্যে বংশবৃদ্ধি করে থাকা, একই প্রজাতির মােট জীবসংখ্যাকে আবাদী বলা হয়। অরণ্যে থাকা জীবগুলির যেকোনাে একটি প্রজাতির মােট জীবসংখ্যাকে সেই প্রকার জীবের আবাদী বলা হয়। একটি পুকুরে থাকা রুই মাছের সংখ্যাই রুইমাছে আবাদী সংখ্যা বুঝায়। রুইমাছের সংখ্যা দশ হাজার হলে রুইমাছের আবাদী হবে দশ হাজার।
১৫। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
(ক) পরিবেশ কাকে বলে ?
উত্তরঃ বায়ু, মাটি, জল এবং জীবের প্রত্যেকের বিভিন্ন নিজস্ব ক্রিয়াকলাপ এবং পরস্পরের মধ্যে থাকা সম্পর্কের সংহতিকে পরিবেশ বলে।
(খ) জীব ভূরাসায়নিক চক্র বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ জীবের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্যের প্রয়ােজন। সমস্ত সবুজ উদ্ভিদ খাদ্যের মূল উৎস। অপর জীবেরা খাদ্যের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরােক্ষভাবে উদ্ভিদের উপর নির্ভর করে। তৃণভােজী প্রাণী ঘাস খায়। আমরা গরু, মহিষের দুগ্ধ পান করি। বাঘ পশুর মাংস খায় এবং জীবন ধারণ করে। এইভাবে একটি জীবের সঙ্গে অপর জীবের খাদ্যের সঙ্গে থাকা সম্বন্ধটিকে খাদ্যশৃংখল বলা হয়। এইভাবে জীবের মধ্যে যে চক্রের সৃষ্টি হয় তাকে ভূরাসায়নিক চক্র বলে।
(গ) অম্লবৃষ্টি কি ?
উত্তরঃ বৃষ্টির জলের pᴴ এর মাত্রা যখন 5.6 -এর নীচে নামে তখন সেই বৃষ্টিকে অম্লবৃষ্টি বলে।
১৬। আবাস বলতে কি বােঝায় ? সূক্ষ্ম আবাস কি ?
উত্তরঃ জীবমণ্ডলের এক ক্ষুদ্র অংশকে জীব সাপেক্ষে তার আবাসস্থল বলা হয়। আবাসস্থলে একপ্রকার অথবা অনেক প্রকার জীব প্রজাতি একসাথে বাস করতে পারে। যেমন- জলমণ্ডল, স্থলমণ্ডল ইত্যাদি।
আবাসস্থলের কিছু ক্ষুদ্র অঞ্চলকে সূক্ষ্ম আবাস বলে। উদাহরণস্বরূপ পুকুরের জলের উপরের অংশ এবং নীচের কাদা অংশকে সূক্ষ্ম আবাস বলা হয়।
১৭। জীব সংগঠনে কোটি বড়, আবাদী না সম্প্রদায়ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ কোনাে এক প্রকার জীবের সমষ্টিকে বলা হয় আবাদী। উদাহরণ হিসাবে একজন মানুষ, একটি আম গাছ ইত্যাদি। এই আম গাছ বা মানুষের সমষ্টি হল আবাদী। একসাথে সৃষ্টি করে জীব সম্প্রদায়। অর্থাৎ জীব সম্প্রদায় আবাদী হতে বড়।
১৮। অনুক্রমণ মানে কি ? অনুক্রমণের সাহায্যে একটি রিক্ত অঞ্চলে কিরূপে অরণ্যভূমির সৃষ্টি হয় বুঝিয়ে লিখ।
উত্তরঃ অজৈবিক কারক, যেমন- বাতাস, বর্ষা, নদীস্রোত, বন্যা, খরা, ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি, হিমপ্রবাহ ইত্যাদির ফলে পরিবেশের পরিবর্তন ঘটে। এইরূপ কার্যের ফলে জীবসমূহ সমূলে নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে এবং একটি রিক্ত অঞ্চলের সৃষ্টি করতে পারে। এই রিক্ত অঞ্চলে ক্রমে ক্রমে ভিন্ন ভিন্ন উদ্ভিদ সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হয় এবং সর্বশেষে চরম সম্প্রদায়ের সৃষ্টি হয়। এই বিকাশক্রম প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় অনুক্রমণ।
আমরা জানি যে, শিলাতে সহজে উদ্ভিদ জন্মাতে পারে না। এইরূপ অবস্থাতে শিলাতে শুধুমাত্র লাইকেন নামের উদ্ভিদই জন্মাতে পারে। লাইকেন হল শৈবাল এবং ছত্রাকের সংমিশ্রণে সৃষ্টি হওয়া একপ্রকার ক্ষুদ্র সহজীবী উদ্ভিদ। লাইকেনের বিপাকীয় কার্যের ফলে অ্যাসিড জাতীয় পদার্থ নিঃসরণ হয়। এই অ্যাসিড শিলা ক্ষয় করে। মৃত লাইকেনের উপরে বাতাসের দ্বারা বয়ে আনা ধুলাবালি জমা হয় এবং শিলাটিতে উদ্ভিদ জন্মাতে পারা এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এর পর শিলার পৃষ্ঠভাগে মাটি এবং হিউমাস জমা হতে শুরু করে এবং কিছু সময় পর তাতে মস জাতীয় উদ্ভিদের আবির্ভাব হয়। মস-লাইকেনের মৃতদেহ এবং বাতাস বর্ষাতে সৃষ্টি হওয়া ধূলা-বালির প্রলেপের ফলে অবশেষে শিলার উপরে প্রথমে একবর্ষী এবং পরে বহুবর্ষী উদ্ভিদ জন্মায়। এই অনুক্রমণের ফলস্বরূপ অঞ্চলটি ঘাস, ছােট ছােট গাছ এবং শেষে বড় গাছ দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে অরণ্যে পরিবর্তিত হয়।
১৯। পরিবেশ আবাদীর উপর কিভাবে প্রভাব বিস্তার করে ?
উত্তরঃ পরিবেশ আবাদীকে প্রভাবিত করে। কোনাে বাসভূমির পরিবেশ পরিবর্তন হলে তাতে বসবাস করা কিছু সংখ্যক জীবের সংখ্যা হ্রাস বা বৃদ্ধি হয়। উদাহরণস্বরূপ একটি পুকুরে মাছ, জলজ উদ্ভিদ, ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদি একই পরিবেশে বাস করে। এখন যদি কোনাে কারণে পুকুরটিতে থাকা জলজ উদ্ভিদের পরিমাণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, তাহলে তাতে থাকা ব্যাক্টেরিয়াগুলি মৃত উদ্ভিদের পচনকার্যে বেশি পরিমাণে অক্সিজেন ব্যবহার করবে এবং জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাবে। এর ফলে জলে বাস করা মাছের অক্সিজেনের অভাবে বেঁচে থাকা কষ্ট হবে। একইভাবে একটি অরণ্যে একসঙ্গে বসবাস করা মাংসভােজী প্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি হলে তৃণভােজী প্রাণীর সংখ্যা কমে যাবে। সেইজন্য একটি অরণ্যে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলে, সেই অরণ্যে হরিণের সংখ্যা হ্রাস পায়। অবশ্য পরে বাঘের আবাদী আবার কমার ফলে এক ভারসাম্য অবস্থার সৃষ্টি হয়, ফলে এইভাবে একটি পরিস্থিতিতন্ত্র রক্ষা পায়। কোনাে একটি আবাদী অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলে একসঙ্গে থাকা অন্য আর একটি আবাদীর উপর এর প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। আবাদীর সংখ্যা বৃদ্ধি হয়ে বহনক্ষমতা অতিক্রম করলে পরিস্থিতিতন্ত্রে থাকা অন্য একটি আবাদীর উপর এর প্রভাব পড়ে। ফলে, এইভাবে পরিবেশের পরিবর্তন আবাদীর উপর প্রভাব বিস্তার করে।
২০। যদি একটি অরণ্যে খাদ্য পেয়ে বাঘের সংখ্যা বর্ধিত হয়, তবে তৃণভােজী জন্তুর আবাদী কমবে না বাড়বে ?
উত্তরঃ তৃণভােজী জন্তুর আবাদী কমবে। ফলস্বরূপ বাঘের আবাদী কমতে আরম্ভ করবে।
২১। জীব সম্প্রদায়ের স্তরীভবনের অর্থ কি ?
উত্তরঃ জীব সম্প্রদায়ের প্রতিটি আবাদীরই আহার এবং বাসস্থান পৃথক। সুতরাং আহার এবং বাসস্থানের পার্থক্যের জন্য প্রথম আবাদীর দ্বিতীয় আবাদীর দুরত্ব থাকে। অপরদিকে আবাদীর মধ্যে পরস্পর সম্বন্ধ থাকলে এই দূরত্ব কমে আসে। একে স্তরীভবন বলে।
২২। পরিস্থিতি বিজ্ঞান কাকে বলে ?
উত্তরঃ জীব বিজ্ঞানের যে শাখায় বাসস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে জীব সম্বন্ধে আলােচনা করা হয় তাকে পরিস্থিতি বিজ্ঞান বলা হয়।
২৩। তৃণভােজী প্রাণীকে কেন উৎপাদক বলা হয় ?
উত্তরঃ মাংসাহারী প্রাণীরা তৃণভােজী প্রাণীর উপর নির্ভরশীল। সুতরাং তৃণভােজী প্রাণী মাংসাহারী প্রাণীর উৎপাদক। কিন্তু তৃণভােজী প্রাণী একদিকে যেমন উৎপাদক অপরদিকে তেমনি উপভােক্তা।
২৪। অরণ্য জীব সম্প্রদায়ের একপ্রকার গৌণ উৎপাদকের উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ অরণ্য জীব সম্প্রদায়ের তৃণভােজী প্রাণী গৌণ উৎপাদক। কারণ প্রাথমিক উৎপাদকসমূহ সবুজ উদ্ভিদ খেয়ে বেঁচে থাকে। এইসব প্রাণী পুনরায় প্রজননের দ্বারা নিজ নিজ আবাদী বৃদ্ধি করে। কিন্তু অন্যদিকে মাংসাহারী প্রাণী, তৃণভােজী প্রাণীকে আকার হিসাবে গ্রহণ করে খায়। অতএব এখানে তৃণভােজী প্রাণী গৌণ উৎপাদক।