Class 9 Social Science Chapter 8 ভারতবর্ষের ভূগোল Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 9 Social Science Chapter 8 ভারতবর্ষের ভূগোল and select needs one.
Class 9 Social Science Chapter 8 ভারতবর্ষের ভূগোল
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 9 Social Science Chapter 8 ভারতবর্ষের ভূগোল Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 9 Social Science Chapter 8 ভারতবর্ষের ভূগোল These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 9 Social Science Chapter 8 ভারতবর্ষের ভূগোল for All Subject, You can practice these here…
ভারতবর্ষের ভূগোল
Chapter – 8
দ্বিতীয় খণ্ড : ভূগোল
পাঠ্যপুস্তকের প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ভারতবর্ষের ভৌগোলিক অবস্থানের বিবরণ দাও।
উত্তরঃ ভারত পৃথিবীর বৃহত্তম মহাদেশ এশিয়ার দক্ষিণের প্রায় মধ্যভাগে, একটি ত্রিভুজাকৃতির উপদ্বীপে অবস্থান করছে। এই দেশটি নিরক্ষরেখার উত্তরে
অর্থাৎ উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত। উত্তরে ৩৭°৬ উত্তর অক্ষাংশ (জম্মু ও কাশ্মীরের উত্তর সীমা) থেকে দক্ষিণে ৮°৪ উত্তর অক্ষাংশ (কুমারিকা অন্তরীপ) এবং পশ্চিমে ৬৮°৭ পূর্ব দ্রাঘিমা (গুজরাটের পশ্চিমসীমা) থেকে পূর্বে ৯৭°২৫ পূর্ব দ্রাঘিমা (অরুণাচলের পূর্বসীমা) পযর্ন্ত এই দেশটি বিস্তৃত। কর্কটক্রান্তি রেখা (২৩°৩০ উত্তর অক্ষাংশ) এদেশের প্রায় মাঝখান দিয়ে চলে গেছে।
ভারতের আয়তন ৩২ লক্ষ ৮৭ হাজার ২৬৩ বর্গ কিলোমিটার। এই দেশটি পূর্বে অরুণাচলের পূর্ব সীমা থেকে পশ্চিমে গুজরাটের পশ্চিম সীমা পযর্ন্ত প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটারে (২,৯৩৩ কিমি) এবং উত্তরে জম্মু ও কাশ্মীরের উত্তর সীমা থেকে দক্ষিণে কুমারিকা অন্তরীপ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ২শত কিলোমিটার (৩,২১৪ কিমি) বিস্তৃত। সুবিশাল এই দেশটি আয়তনে পৃথিবীতে সপ্তম স্থানের অধিকারী। আয়তনের দিক থেকে রাশিয়া (প্রথম বা বৃহত্তম), কানাডা (দ্বিতীয়), চিন (তৃতীয়), আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র (চতুর্থ), ব্রাজিল (পঞ্চম) ও অস্ট্রেলিয়ার (ষষ্ঠ) পরেই ভারতের স্থান।
প্রশ্ন ২। ভারতের উপকূল রেখার দৈর্ঘ্য কত ?
উত্তরঃ ভারতের উপকূল রেখার দৈর্ঘ্য ৬,১০০ কি.মি.।
প্রশ্ন ৩। ভারতের মোট স্থলসীমার দৈর্ঘ্য কত ?
উত্তরঃ ভারতের স্থলসীমার মোট দৈর্ঘ্য ১৫,২০০ কি.মি.।
প্রশ্ন ৪। ভারতের ভূখণ্ড সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লিখ।
উত্তরঃ দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার মাঝখানে ভারত কেন্দ্রমণির মতো অবস্থান করছে। ভারতের উত্তর দিকে রয়েছে তুষারাবৃত হিমালয় পর্বতশ্রেণি, দক্ষিণদিকে ভারত মহাসাগর, পূর্বদিকে বঙ্গোপসাগর, ম্যায়ানমার ও বাংলাদেশ এবং পশ্চিমদিকে পাকিস্তান ও আরবসাগর। উত্তরদিকে হিমালয়ের কোলে নেপাল ও ভূটান দেশ অবস্থিত। তার উত্তরে রয়েছে চীনদেশ। ভারতের দক্ষিণের উপদ্বীপ অঞ্চলকে তিন দিক থেকে ঘিরে আছে বঙ্গোপসাগর, আরবসাগর ও ভারত মহাসাগর।
পরিসীমার তুলনায় ভারতের উপকূলরেখা মাত্র ৬ হাজার ১০০ কি.মি.। ভারতের দ্বীপসমূহের মধ্যে পূর্বদিকে বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং পশ্চিমদিকে আরবসাগরে লাক্ষাদ্বীপ উল্লেখযোগ্য।
প্রশ্ন ৫। উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের নদীগুলোর চারটি মূল পার্থক্য লিখ।
উত্তরঃ উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলির তুলনা :
উত্তর ভারতের নদনদী | দক্ষিণ ভারতের নদনদী |
১। উত্তর ভারতের নদনদীগুলি হিমালয়ের তুষারক্ষেত্র থেকে উৎপন্ন তাই নদীতে সারা বছর জল থাকে। | ১। দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলি অনুচ্চ পাহাড় -পর্বত থেকে উৎপন্ন বৃষ্টির জলে পুষ্ট। তাই সারা বছর জল থাকে না। |
২। উত্তর ভারতের নদনদীগুলিতে পার্বত্য গতিপথ, মধ্য গতিপথ ও নিম্ন গতিপথের সকল বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায়। ফলে একটি আদর্শ নদীর গতিপথের সকল বৈশিষ্ট্যগুলি এখানকার নদনদীতে সুস্পষ্ট। | ২। দক্ষিণ ভারতের নদীগুলি অনুচ্চ পাহাড়- পর্বত থেকে উৎপন্ন হয়ে মালভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত বলে আদর্শ নদী- গতিপথের তিনটি অবস্থা নদী-গতিপথের তিনটি অবস্থা (উচ্চ, মধ্য ও নিম্নগতি) স্পষ্ট নয়। |
৩। উত্তর ভারতের নদনদীগুলি পর্বত থেকে সমভূমিতে নেমে গতিবেগ হারিয়ে ফেলে। এই কারণে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উপযোগী নয়। | ৩। দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলি মালভূমির অসম ভূ-পৃষ্ঠের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় ; ফলে নদীগুলি খরস্রোতা ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উপযোগী। |
৪। উত্তর ভারতে নদনদীগুলি সমভূমিতে নৌবহনের যোগ্য। | ৪। দক্ষিণ ভারতের নদনদীগুলি খরস্রোতা বলে নৌবহনের যোগ্য নয়। |
প্রশ্ন ৬। ভারতের ভূ-প্রাকৃতিক ভাগগুলি কি কি ?
উত্তরঃ ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভারতকে নিম্নলিখিত ৮ ভাগে ভাগ করা যায়। ভাগগুলো নিম্নরূপ—-
(১) হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল।
(২) উত্তর- পূর্বের পার্বত্য অঞ্চল ও মেঘালয় মালভূমি।
(৩) সিন্ধু-গঙ্গা সমভুমি ও ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা।
(৪) ভারতের মরুভূমি অঞ্চল।
(৫) মধ্য ও পূর্বভারতের উচ্চভূমি।
(৬) দাক্ষিণাত্যের মালভূমি।
(৭) উপকূল সমভুমি।এবং
(৮) ভারতের দ্বীপপুঞ্জ।
প্রশ্ন ৭। উত্তর ভারতের হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য লিখ।
হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল :
উত্তরঃ হিমালয়ের অবস্থান ও বিস্তৃতি : ভারতের উত্তরে গিরিরাজ হিমালয় বিরাজমান। এই তুষারমণ্ডিত পর্বতমালা পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে বিস্তৃত। দৈর্ঘ্যে এই পর্বতমালা প্রায় ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ২৪০ থেকে ৫২০ কিলোমিটার।
হিমালয় পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশ্রেণি। এর গড় উচ্চতা ৪,৮৭৭ মি.। পশ্চিমে কাশ্মীরের নাঙ্গা পর্বত থেকে পূর্বে অরুণাচলের নাম্চাবারওয়া পর্যন্ত হিমালয় প্রসারিত।
হিমালয়ের গঠন ও ভূ-প্রকৃতি : হিমালয় পর্বতমালা তিনটি সমান্তরাল পর্বতশ্রেণি নিয়ে গঠিত। যথা—
(ক) শিবালিক বা অবহিমালয়।
(খ) মধ্য হিমালয়। ও
(গ) উচ্চ হিমালয়।
(ক) শিবালিক শ্রেণি : হিমালয়ের তিনটি পর্বতশ্রেণির মধ্য সবচেয়ে দক্ষিণে অবস্থিত। এই পর্বতমালা বেশি উঁচু নয় এবং বিস্তারও বেশি নয়।
(খ) মধ্য হিমালয় পর্বতশ্রেণি : শিবালিকের উত্তরে অবস্থিত। পীরপাঞ্জালশ্রেণি এই পর্বতশ্রেণির এক অংশ। মধ্য হিমালয়ের পার্বত্য উপত্যকায় শ্রীনগর, মুসৌরী, ডালহৌসী, লান্ডস্ডাইন প্রভৃতি শৈলনিবাসগুলি অবস্থিত।
(গ) উচ্চ হিমালয় পর্বতশ্রেণির : অবস্থান মধ্য হিমালয়ের উত্তরদিকে। এই পর্বতশ্রেণির উচ্চতা ও বিস্তৃতি সবচেয়ে বেশি। হিমালয়ের বিখ্যাত তুষারমণ্ডিত শৃঙ্গগুলি এই অঞ্চলে অবস্থিত। পশ্চিম থেকে পূর্বে অবস্থিত এখানকার শৃঙ্গগুলি নাম নাঙ্গা পর্বত (৮,১২৬ মি.), কেদারনাথ(৬,৯৪০ মি.), সতোপান্থ (৭,০১৫ মি.), বদ্রীনাথ(৭,১৩৮ মি.), নীলকান্ত (৬,৫৯৬ মি.), কামেত (৭,৭৫৬ মি.), ত্রিশূল (৭,১৬০ মি.), নন্দাদেবী(৭,৮১৭মি.), ধবলগিরি (৮,১৭২ মি.), অন্নপূর্ণা(৮,০৭৮ মি.), গোসাইথান(৪,০১৭ মি.), গৌরীশঙ্কর (৭,১৪৫ মি.), এভারেস্ট (৮,৮৪৮ মি.), কাঞ্চনজঙ্ঘা (৮,৫৯৮ মি.), নামচাবারওয়া (৭,৫৫৬ মি.), । এইসব শৃঙ্গগুলির মধ্যে এভারেস্ট সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ; এভারেস্টের উচ্চতা ৮,৮৪৮ মিটার। পৃথিবীর উচ্চতম শৃঙ্গ এভারেস্ট নেপালের উত্তর-পূর্বে চিনের সীমানার কাছে অবস্থিত। হিমালয়ের উত্তর-পশ্চিমভাগে রয়েছে কৈলাস ও কারাকোরাম পর্বতশ্রেণি। কারাকোরামের গড্উইন অস্টিন বা K₂ [King of Karakoram] পৃথিবীর দ্বিতীয় উচ্চতম পর্বতশ্রেণি। গড্উইন অস্টিনের উচ্চতা ৮,৬১১ মিটার।
প্রশ্ন ৮। উত্তর ভারতের সমভুমি অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ উত্তর ভারতের সমভুমি অঞ্চল : হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলের দক্ষিণে রয়েছে উত্তর ভারতের সুবিশাল সমভুমি। এই সমভূমির ওপর দিয়ে সিন্ধু, গঙ্গা ব্রক্ষপুত্র ও তাদের অসংখ্য উপনদী ও শাখানদী প্রবাহিত। পূর্ব থেকে পশ্চিমে এই সমভুমি প্রায় ২,৪০০ কিমি দীর্ঘ এবং উত্তর-দক্ষিণে ২৪০ থেকে ৪০০ কিমি প্রশস্ত।
নদীর অববাহিকা হিসাবে উত্তর ভারতের সমভূমিকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা–
(ক) সিন্ধু-গঠিত পাঞ্জাব সমভুমি।
(খ) গঙ্গা-গঠিত গাঙ্গেয় সমভুমি। এবং
(গ) ব্রক্ষপুত্র-গঠিত ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা।
(ক) সিন্ধু-গঠিত পাঞ্জাব সমভুমি : সিন্ধু ও তার উপনদী শতদ্রু, বিপাশা ও ইরাবতী ভারতের পশ্চিমাংশের সমভূমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত। এই অঞ্চল পাঞ্জাবের সমভুমি নামে পরিচিত।
(খ) গঙ্গা-গঠিত গাঙ্গেয় সমভুমি : এই সমভুমি পশ্চিমে পাঞ্জাব সমভূমির পূর্বসীমা থেকে পূর্বে বাংলাদেশের পশ্চিমসীমা পযর্ন্ত বিস্তৃত। গাঙ্গেয় সমভুমি নরম পলিমাটি দিয়ে গঠিত হয়েছে। এখানকার ভূমির প্রকৃতি সর্বত্র একটানা সমতল। সমভূমির দক্ষিণ-পূর্ব ভাগে গঙ্গা নদীর মোহনায় আছে বিশাল গাঙ্গেয় বদ্বীপ-ভূমি।
ভারতের মধ্যে গাঙ্গেয় সমভুমি সবচেয়ে সমৃদ্ধ অঞ্চল। এখানকার লোকেরা প্রধানত কৃষিজীবী। এই অঞ্চলের লোকবসতি অত্যন্ত ঘন। গঙ্গানদীর উৎপত্তিস্থল গঙ্গোত্রী হিমবাহ।
(গ) ব্রক্ষপুত্র-গঠিত ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা : ভারতের উত্তর-পূর্বাংশের সমভুমি ব্রক্ষপুত্র বিধৌত। এই সমভূমির উত্তরে অরুণাচলের হিমালয় ও দক্ষিণে মেঘালয়ের মালভূমি। এই অঞ্চল অসম রাজ্যের অন্তর্গত। ব্রক্ষপুত্র উপত্যকা চাবাগিচার জন্য বিখ্যাত।
প্রশ্ন ৯। দাক্ষিণাত্য মালভূমি অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ উত্তর ও মধ্যভারতের সমভুমি অঞ্চলের দক্ষিণে ত্রিভূজাকৃতি যে মালভূমি রয়েছে তাকে দক্ষিণাত্যর মালভূমি বলা হয়।সমগ্ৰ মালভূমি পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঢাল খেয়েছে। এই মালভূমি প্রাচীন রূপান্তরিত ও আগ্নেয়শিলা দ্বারা গঠিত হয়েছে।
দাক্ষিণাত্য মালভূমির পশ্চিমদিকে পশ্চিমঘাট বা সহ্যাদ্রি পর্বত এবং পূর্বদিকে পূর্বঘাট পর্বতমালা বা মলয়াদ্রি পর্বত। পশ্চিমঘাট পর্বতমালা উত্তর থেকে দক্ষিণ উপকূল বরাবর একটানা চলে গেছে। এই পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কালসুবাই মহারাষ্ট্রে অবস্থিত। এর উচ্চতা ১,৬৪৬ মিটার। পশ্চিমঘাট পর্বতে নাসিকের কাছে থলঘাট ও পুনের কাছে ভোরঘটা নামে দুটি গিরিপথ আছে। পূর্বঘাট পর্বতমালা একটি ক্ষয়জাত পর্বত। পূর্বঘাট পর্বতমালা উত্তর থেকে দক্ষিণে ছোট ছোট পাহাড় বিচ্ছিন্নভাবে পরপর রয়েছে। মহেন্দ্রগিরি (১,৫০০ মি.) পূর্বঘাট পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। উড়িষ্যা ও অন্দ্রপ্রদেশের সীমান্তদেশে এই শৃঙ্গটি অবস্থিত দাক্ষিণাত্যের সর্ব দক্ষিণের অংশে নীলগিরি, আন্নামালাই ও কার্ডামাম পর্বত রয়েছে। নীলগিরি পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম দোদাবেতা (২,৬৩৭ মি.)। এখানে
পালঘাট গিরিপথ আছে। দাক্ষিণাত্যের মালভূমির উত্তরে সাতপুরা, মহাদেব এবং মহাকাল পর্বত পশ্চিম থেকে পূর্বে বিস্তৃত রয়েছে। সাতপুরা পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ধূপগড় (১,৩৫০ মি.), মহাকাল পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ অমরকণ্টক (১,০৫৭ মি.) এবং মহাদেব পর্বতের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম পাঁচমারি (১,০৫০ মি.)। দাক্ষিণাত্যের উল্লেখযোগ্য নদীগুলো হল– মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা, পেনার এবং কাবেরী বিন্ধ্য ও সাতপুরা পর্বতের মধ্যবর্তী অঞ্চলে উৎপত্তি হওয়া দুটি নদী পশ্চিমদিকে কাম্বে উপসাগরে পতিত হয়েছে।
প্রশ্ন ১০। উপকূল অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ ভারতের দাক্ষিণাত্য মালভূমির দুই প্রান্তে রয়েছে উপকূল সমভুমি। এই উপকূলভাগকে দুইভাগে ভাগ করা যায়, যথা–
(ক) আরব সাগরের তীরে অবস্থিত পশ্চিম উপকূল।এবং
(খ) বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত পূর্ব উপকূল।
পশ্চিম উপকূল সমভুমি : আরবসাগর ও পশ্চিমঘাট পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত পশ্চিম উপকূল সমভুমি উত্তরে ভারচু থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারিকা
অন্তরীপ পর্যন্ত বিস্তৃত। পশ্চিম উপকূল সমভূমিকে আবার দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে ; যথা—
(ক) উত্তরভাগের নাম কঙ্কন উপকূল।ও
(খ) দক্ষিণভাগের নাম মালাবার উপকূল।
পূর্ব উপকূল সমভুমি : বঙ্গোপসাগর ও পূর্বঘাট পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত পূর্ব উপকূল সমভুমি উত্তরে সুবর্ণরেখা নদীর মোহনা থেকে দক্ষিণে কন্যাকুমারিকা পযর্ন্ত বিস্তৃত। পশ্চিম উপকূলের তুলনায় পূর্ব উপকূল চওড়া। নদীর মোহনা ও বদ্বীপ অঞ্চলে উপকূলভাগ বেশি প্রশস্ত। পূর্ব- উপকূল সমভূমিকে আবার দুভাগে ভাগ করা হয়েছে ; যথা–
(ক) উত্তরাংশের নাম উত্তর সরকার উপকূল। ও
(খ) দক্ষিণাংশের নাম করমণ্ডল উপকূল।
পূর্ব উপকূলের দৈর্ঘ্য ১১০০ কি.মি. এবং পশ্চিমে উপকূলের দৈর্ঘ্য ১৫০০ কি.মি.।
প্রশ্ন ১১। ভারতের জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য : ভারতের জলবায়ু মৌসুমিবায়ুর প্রভাবে প্রভাবিত। এই জলবায়ুর নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি লক্ষ্য করা যায় :
(১) গ্ৰীষ্মকালে আর্দ্র ও শীতকাল শুকনো।
(২) আর্দ্র গ্ৰীষ্মকালে মৌসুমিবায়ু যে দিক থেকে প্রবাহিত হয়, শুকনো শীতকালে মৌসুমিবায়ু ঠিক তার বিপরীত দিক থেকে আসে।
(৩) বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত একটানা হয় না। মাঝে মাঝে বৃষ্টিপাতের সাময়িক বিরতি ঘটে।
(৪) দেশের মধ্যে কোথায় কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত হবে তা বহুল পরিমাণে নির্ভর করে সেই অঞ্চলের ভূ-প্রকৃতির ওপর।
(৫) এদেশে মৌসুমিবায়ুর প্রভাবে যে বৃষ্টিপাত ঘটে তা অত্যন্ত অনিশ্চিত। মৌসুমিবায়ুর আগমন কোনো বার আগে হয়, কোনো বার পরে। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও প্রতি বছর এক হয় না। কোনো বছর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিক, কোনো বছর অতিবৃষ্টি হয়, আবার কোনো বছর অনাবৃষ্টি ঘটে। তাই খরা ও বন্যার প্রকোপ এর আর এক বৈশিষ্ট্য।
প্রশ্ন ১২। মৌসুমী বায়ুর প্রভাব সম্পর্কে একটি টীকা লিখ।
উত্তরঃ সমুদ্র বায়ু ও স্থল বায়ুর বৃহত্তর এবং ঋতুগত সংস্করণ হল মৌসুমী বায়ু। আরবী শব্দ “মৌসুমী” এর অর্থ—ঋতু, বিশেষ বিশেষ ঋতুতে প্রবাহিত হয় বলে একে মৌসুমী বায়ু বলে।
গ্ৰীষ্মকালে সূর্য উত্তর গোলার্ধে কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর লম্বভাবে কিরণ দেয় ফলে সেখানে স্থলভাগ অধিক উত্তপ্ত হওয়ার কারণে সেখানে নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়,
ফলে সমুদ্র থেকে ঠাণ্ডা ও ভারী বায়ু স্থলভাগের দিকে প্রবাহিত হয়, একে গ্ৰীষ্মকালীন মৌসুমি বায়ু বলে। এই বায়ু দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে প্রবাহিত হয় বলে একে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুও বলা হয়। ভারত, চিন, জাপান, কোরিয়া প্রভৃতি দেশে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালে সূর্য মকরক্রান্তি রেখার কাছাকাছি অঞ্চলে লম্বভাবে কিরণ দেয়, ফলে জলভাগের
চেয়ে স্থলভাগ বেশি উত্তপ্ত হয়। ফলে এই বায়ু উত্তর গোলার্ধে ঠাণ্ডা স্থান থেকে দক্ষিণ গোলার্ধে নিম্নচাপ কেন্দ্রের দিকে প্রবাহিত হয়। এই বায়ুকে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু বলে। শীতকালে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুপ্রবাহে তামিলনাডু শ্রীলঙ্কা প্রভৃতি স্থানে বৃষ্টিপাত হয়।
প্রশ্ন ১৩। ভারতের বৃষ্টির বিন্যাস সম্পর্কে একটি আভাস দাও।
উত্তরঃ বৃষ্টির বিন্যাস অনুসারে ভারতকে নিম্নলিখিত পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায় :
(১) বেশি বৃষ্টিপাতের অঞ্চল : মেঘালয়সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের পাহাড়িয়া রাজ্যসমূহ, অসম, পূর্ব হিমালয়, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরভাগ
এবং আরব সাগরের তীরে অবস্থিত ভারতের পশ্চিম উপকূল এই অঞ্চলের অন্তর্গত। এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৫০ সেণ্টিমিটারের বেশি।
(২) মাঝারি বৃষ্টিপাতের অঞ্চল : পশ্চিমবঙ্গের মধ্য ও দক্ষিণভাগ, বিহার ও ওড়িশার পূর্বাংশ, উত্তরপ্রদেশের উত্তরাংশ, অন্দ্র ও তামিলনাড়ুর উপকূল এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত। এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১২৫ থেকে ২৫০ সেণ্টিমিটার।
(৩) অল্প বৃষ্টিপাতের অঞ্চল : উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, দাক্ষিণাত্য মালভূমির মধ্যভাগ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও রাজস্থানের পূর্বাংশ প্রভৃতি এই অঞ্চলের অন্তর্গত। এখানে ৭৫ থেকে ১২৫ সেণ্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।
(৪) শুকনো অঞ্চল : রাজস্থানের বেশির ভাগ এলাকা,পাঞ্জাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশ,হরিয়ানার পশ্চিমাংশ, জম্মু ও কাশ্মীরের দক্ষিণ ও পশ্চিমাংশ, উত্তর-পশ্চিমাংশ প্রভৃতি এই অঞ্চলের অন্তভুক্ত। এই অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৫ থেকে ৭৫সেন্টিমিটার।
(৫) অত্যধিক শুকনো অঞ্চল : রাজস্থানের পশ্চিমাংশের মরু অঞ্চল, জম্মু ও কাশ্মীরের উত্তর-পূর্বাংশ প্রভৃতি অঞ্চল অত্যন্ত শুষ্ক। এই অঞ্চলে ২৫ সে.মি-র কম বৃষ্টিপাত হয়।
প্রশ্ন ১৪। ভারতের উদ্ভিদমণ্ডলোকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় লেখো ?
উত্তরঃ ভারতীয় উদ্ভিদগুলোকে ছয়ভাগে ভাগ হয়েছে—-
(ক) চিরসবুজ উদ্ভিদ।
(খ) মৌসুমীয় উদ্ভিদ।
(গ) কাঁটাযুক্ত মরু উদ্ভিদ।
(ঘ) তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ।
(ঙ) ব-দ্বীপীয় উদ্ভিদ।এবং
(চ) পার্বত্য উদ্ভিদ।
প্রশ্ন ১৫। ভারতের চিরসবুজ উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ ভারতের যে-সব অঞ্চলে ১০০ সেমি. বেশি বৃষ্টিপাত হয়, সেখানে
চিরসবুজ উদ্ভিদের বনভূমি দেখা যায়। হিমালয়ের পাদদেশের তরাই অঞ্চল, ভাবর অঞ্চল, পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বতমালা, পূর্বাচল, অসম, অরুণাচল, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ প্রভৃতি স্থানে এই বনভূমি দেখা যায়। বৃষ্টিপাতের জন্য গাছের পাতা সারাবছর সবুজ থাকে। এখানে গর্জন, তৃঁণ, বাঁশ, ধূপ, চাপলাস , রোজউড, হলুদ, কুসুম, চাপ, আবলুস, শিশু, মেহগনি, রবার প্রভৃতি গাছ জন্মায়।
প্রশ্ন ১৬। ভারতের পার্বত্য উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য লিখ।
উত্তরঃ হিমালয় পর্বতের বিভিন্ন উচ্চতায় তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের তারতম্যের জন্যে বিভিন্ন ধরনের বনভূমি দেখা যায়। পূর্ব হিমালয়ে ১০০০ মিটারের মধ্য মেহগনি, চাপলাস, শিশু, গর্জন, রোজউড প্রভৃতি চিরহরিৎ বা চিরসবুজ গাছের বনভূমি দেখা যায়। পশ্চিম হিমালয়ে ৫০০—১০০০ মিটার উচ্চতায় এবং পূর্ব হিমালয়ের ১০০০—২৫০০ মিটার উচ্চতায় ওক, পপলার,ওয়াল নাট, ম্যাপল, বার্চ প্রভৃতি পর্ণমোচী বা পাতাঝরা বনভূমি দেখা যায়। পূর্ব হিমালয়ের ২৫০০— ৪০০০ মিটার উচ্চতায় এবং পশ্চিম হিমালয়ের ২০০০—৩২০০ মিটার উচ্চতায় পাইন, ফার, দেবদারু, এলম, স্প্রুস প্রভৃতি সরলবর্গীয় গাছের বনভূমি দেখা যায়। আরও ওপরে রডোডেনড্রন, জুনিপার, নাক্সভমিকা প্রভৃতি গাছের আল্পীয় তৃণভূমি দেখা যায়। পার্বত্য অঞ্চলের গাছগুলো খুব উঁচু হয় এবং পাতাগুলোর অগ্ৰভাগ খুব সরু হয়।
প্রশ্ন ১৭। ভারতের বর্তমান জনসংখ্যা কত ? এর ঘনত্ব কত ?
উত্তরঃ ২০১২ সনের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যা হল ১,২১,০১,৯৩,৪২২ জন।
২০১১সনের জনগণনা অনুযায়ী ভারতের জনসংখ্যার ঘনত্ব ৩৮২ জন।
প্রশ্ন ১৮। জনপ্রব্রজন কয় প্রকার এবং কী কী ?
উত্তরঃ মানুষ স্থায়ী বা অস্থায়ীভাবে বাসস্থান পরিবর্তন করে একস্থান হতে অপর একটি স্থানে গমন করাকে জনপ্রব্রজন বলে। সাধারণ সম্পদ-অভাবী (resource poor)অঞ্চল থেকে সম্পদশালী (resource rich) অঞ্চলে প্রব্রজন ঘটে।
সাধারণত প্রব্রজন দুই শ্রেণিতে ভাগ করা যায়—
(১) আভ্যন্তরীণ প্রব্রজন। ও
(২) বাহ্যিক প্রব্রজন।
আবার, ভারতে সংঘটিত হওয়া প্রব্রজনকেও দুইভাগে ভাগ করা যায়–
(১) আন্তঃরাজ্যিক প্রব্রজন। ও
(২) আভ্যন্তরীণ প্রব্রজন।
এই দুইপ্রকার প্রব্রজনের ক্ষেত্রে চার ধরনের জনপ্রব্রজন ঘটতে পারে। যেমন গ্ৰাম থেকে গ্ৰামে, গ্ৰাম থেকে শহরে, শহর থেকে গ্ৰামে এবং শহর থেকে শহরে।
প্রশ্ন ১৯। ভারতের অর্থনীতির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো লিখ।
উত্তরঃ বর্তমান সময়ে ভারতীয় অর্থনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ হল—
(ক) নিম্ন মাথাপিছু আয়।
(খ) মাথাপিছু আয়ের মন্থর বৃদ্ধি।
(গ) অত্যাধিক জনসংখ্যার চাপ।
(ঘ) দারিদ্রতা।
(ঙ) কৃষি-নির্ভরশীলতা।
(চ) বর্ধিত বেকার সমস্যা। এবং
(ছ) পরিকল্পনা ভিত্তিক উন্নয়ন।
নিচে সমস্যাগুলোর সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হল—-
কোনো ব্যক্তির জীবন নির্বাহের মানদণ্ডের সূচক হল তার আয়। মাথাপিছু আয় হল কোনো এক ব্যক্তির গড় হিসেবে বৎসরে লাভ করা আয়ের পরিমাণ। কিন্তু বর্তমানে একজন ব্যক্তির অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের জন্য ব্যয়ের তুলনায় মাথাপিছু আয় খুবই কম। জনগণের অতিকষ্টে জীবন নির্বাহ করতে হচ্ছে। প্রতি বৎসর মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে তথাপি এই বৃদ্ধির হার অতি সামান্য।
ভারতীয় অর্থনীতিতে অত্যাধিক জনসংখ্যার চাপ। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির অনুপাতে জাতীয় আয় বৃদ্ধি অতি কম। ভারতবর্ষের এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের সমস্যার সাথে বেকার সমস্যা অতি প্রকট। ভারতে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি এদেশের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
ভারতীয় অর্থনীতির অপর একটি বৈশিষ্ট্য হল দারিদ্রতা। পৃথিবীর মোট দারিদ্রলোকের এক-তৃতীয়াংশই ভারতে বাস করে। অন্ন অস্ত্র বাসস্থানের অভাবে গ্ৰাম ও শহরের বহুসংখ্যক লোক অনেক কষ্টে জীবন কাটাচ্ছে।
কৃষি নির্ভরশীলতা ভারতীয় অর্থনীতির অপর এক বৈশিষ্ট্য। পরম্পরাগতভাবে দেশের বেশি সংখ্যক লোকই কৃষিকার্যের সাথে জড়িত এবং সেজন্যই ভারতীয় অর্থনীতি প্রধানত কৃষি নির্ভরশীল। ২০০১ সনের হিসেব অনুযায়ী দেশের প্রায় ৬০% লোক কৃষির ওপর নির্ভরশীল।
বেকার সমস্যা ভারতীয় অর্থনীতির অপর এক বৈশিষ্ট্য। দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্বাভাবিকভাবে কর্মক্ষম লোকের (working population) সংখ্যাও ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের শিল্প, বাণিজ্য, ব্যবসায়, যাতায়াত ইত্যাদি ক্ষেত্রের বিকাশ আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি না পাওয়ায় বেকার সমস্যা এক গুরুতর রূপ ধারণ করেছে এবং দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে।
প্রশ্ন ২০। ভারতের কেন্দ্রীয়শাসিত অঞ্চলগুলো কী কী ?
উত্তরঃ উত্তরঃ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলো হল–
(১) আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ।
(২) চণ্ডীগড়।
(৩) দিল্লী।
(৪) দাদ্রা ও নগর হাভেলী।
(৫) দমন ও দিউ।
(৬) লাক্ষাদ্বীপ। ও
(৭) পণ্ডিচেরী।
বর্তমান দিল্লীকে রাষ্ট্রীয় রাজধানী ক্ষেত্র হিসেবে পৃথক মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্ন ২১। ভারতের বর্তমান রাজ্য কয়টি ?
উত্তরঃ ভারতের বর্তমান রাজ্য ২৯ টি। রাজ্যগুলো হল—-
১। অন্দ্রপ্রদেশ,২। অরুণাচল প্রদেশ, ৩। অসম,৪। বিহার, ৫। ছত্তিশগড়, ৬। গোয়া, ৭। গুজরাট, ৮। হরিয়ানা, ৯। হিমাচল প্রদেশ, ১০।জম্মু ও কাশ্মীর, ১১। ঝাড়খণ্ড, ১২। কর্ণাটক, ১৩।কেরেলা, ১৪। মধ্যপ্রদেশ, ১৫। মহারাষ্ট্র, ১৬।মণিপুর, ১৭। মেঘালয়, ১৮। মিজোরাম, ১৯। নাগাল্যাণ্ড, ২০। উড়িষ্যা, ২১। পাঞ্জাব, ২২। রাজস্থান, ২৩। সিকিম, ২৪। তামিলনাড়ু, ২৫। তেলেংগানা, ২৬। ত্রিপুরা, ২৭। উত্তরাখণ্ড, ২৮ উত্তর প্রদেশ, ২৯। পশ্চিমবঙ্গ।
প্রশ্ন ২২। ভারতে সম্প্রতি গঠিত রাজ্য কোনটি ?
উত্তরঃ ভারতের সর্বশেষে গঠন হওয়া রাজ্যটির নাম তেলেংগানা। এর মাটির কালি ১,১৪,৮৪০ বর্গ কি.মি. এবং জনসংখ্যা ৩,৫১,৯৩,৯৭৮ জন।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ভারতবর্ষ কোন্ গোলার্ধে অবস্থিত এবং ইহা কোন্ মহাদেশের অন্তর্গত ?
উত্তরঃ ভারতবর্ষ উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত এবং এশিয়া মহাদেশের অন্তর্গত।
প্রশ্ন ২। উত্তর-দক্ষিণ ও পূর্ব-পশ্চিমে ভারতবর্ষের বিস্তৃতি কত ?
উত্তরঃ উত্তর-দক্ষিণে ৩,২১৪ কি.মি. এবং পূর্ব-পশ্চিমে ২,৯৩৩ কি.মি.।
প্রশ্ন ৩। ভারতের মোট উপকূলভাগের দৈর্ঘ্য কত ?
উত্তরঃ ৬,১০০ কি.মি.।
প্রশ্ন ৪। ভারতের মোট স্থলসীমার দৈর্ঘ্য কত ?
উত্তরঃ ১৫,২০০ কি.মি.।
প্রশ্ন ৫। আকারগত দিক দিয়া ভারতের স্থান কত ?
উত্তরঃ সপ্তম।
প্রশ্ন ৬। ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্র অপেক্ষা ভারতবর্ষ করগুণ বড় ?
উত্তরঃ ১৩ গুণ বড়।
প্রশ্ন ৭। ভারতবর্ষের মোট কালির পরিমাণ কত ?
উত্তরঃ ৩,২৮৭,৬২৩ বর্গ কি.মি.।
প্রশ্ন ৮। ভারতবর্ষে মোট কয়টি রাজ্য এবং কয়টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আছে ?
উত্তরঃ ২৯ টি রাজ্য এবং ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আছে।
প্রশ্ন ৯। উত্তর ভারতের দুইটি প্রধান নদীর নাম লিখ ?
উত্তরঃ গঙ্গা ও ব্রক্ষপুত্র।
প্রশ্ন ১০। দক্ষিণ ভারতের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নদীর নাম লিখ।
উত্তরঃ নর্মদা, তাপ্তী, মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা ও কাবেরী উল্লেখযোগ্য।
প্রশ্ন ১১। হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত ?
উত্তরঃ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল দৈর্ঘ্যে ২,৫০০ কি.মি. এবং প্রস্থে ২৪০ কি.মি. থেকে ৫০০ কি.মি. পযর্ন্ত।
প্রশ্ন ১২। সাগরপৃষ্ঠ হতে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের গড় উচ্চতা কত ?
উত্তরঃ৮০০০ কিলোমিটারেরও অধিক।
প্রশ্ন ১৩। রাজস্থানে অবস্থিত মরুভূমিটির নাম কি ?
উত্তরঃ থর।
প্রশ্ন ১৪। ব্রক্ষপুত্রের উত্তর পারের উপনদীগুলোর নাম লিখ।
উত্তরঃ সুবর্ণশিরি, জীয়াভরালী, ধনশ্রী, পুঠিমারী, পাগ্লাদিয়া, মানস, চম্পাবতী ইত্যাদি।
প্রশ্ন ১৫। ব্রক্ষপুত্র নদীর দক্ষিণ পারের উপনদীগুলির নাম লিখ।
উত্তরঃ বুঢ়ীদিহিং, দিচাং, দিখৌ, ধনশ্রী (দক্ষিণ), কপিলী, কৃষ্ণাই ইত্যাদি।
প্রশ্ন ১৬। দাক্ষিণাত্য মালভূমি অঞ্চলের কয়েকটি পর্বতের নাম লিখ।
উত্তরঃ পর্বতগুলোর নাম হল— বিন্ধ্য, সাতপুরা, মহাদেব ও মহাকাল।
প্রশ্ন ১৭। ভারতবর্ষের দুইটি পশ্চিম বাহিনী নদীর নাম লিখ।
উত্তরঃ নর্মদা ও তাপ্তী।
প্রশ্ন ১৮। আন্দামান ও নিকোবর কত সংখ্যক দ্বীপ দ্বারা গঠিত ?
উত্তরঃ আন্দামান অঞ্চলে ২০৪টি ও নিকোবর অঞ্চলে ১১টি। মোট সংখ্যা ২১৫ টি।
প্রশ্ন ১৯। চেরাপুঞ্জিতে বৎসরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কত ?
উত্তরঃ ১,২৫০ সে.মি.।
প্রশ্ন ২০। ভারতে কি কি ঋতু দেখা যায়।
উত্তরঃ ভারতে প্রধানত চারটি ঋতু পরিলক্ষিত হয়। ঋতুগুলো হল—-
(ক) শীতকাল।
(খ) প্রাক্ বর্ষাকাল।
(গ) বর্ষাকাল।
(ঘ) প্রাক্ শীতকাল।
প্রশ্ন ২১। ভারতের উদ্ভিদসমূহকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় এবং কি কি ?
উত্তরঃ ভারতের উদ্ভিদসমূহকে প্রধানত ছয় ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন—- চিরহরিৎ বৃক্ষ বা চিরসবুজ বৃক্ষ, মৌসুমীয় উদ্ভিদ, কাঁটা যুক্ত মরু উদ্ভিদ, তৃণ জাতীয় উদ্ভিদ, ব-দ্বীপীয় উদ্ভিদ এবং পার্বত্য উদ্ভিদ।
প্রশ্ন ২২। মৌসুমী অঞ্চলের কয়েকটি গাছের নাম লিখ।
উত্তরঃ শাল,সেগুন, শিরিষ, শিশু, অর্জুন, শিমূল এবং বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ।
প্রশ্ন ২৩। ব-দ্বীপ অঞ্চলের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গাছের নাম লিখ।
উত্তরঃ সুন্দরী বৃক্ষ,তাল এবং নারকেল গাছই প্রধান।
প্রশ্ন ২৪। ভারতবর্ষে মূলত কোন্ কোন্ জনগোষ্ঠীয় লোকের সংমিশ্রণ ঘটেছে ?
উত্তরঃ অষ্ট্র-এশীয়, মংগোলীয়, আর্য এবং দ্রাবিড় জনগোষ্ঠীর লোকের সংমিশ্রণ ঘটেছে।
প্রশ্ন ২৫। ভারতের কোন্ রাজ্যে জনসংখ্যা সর্বাধিক এবং কত ?
উত্তরঃ উত্তর প্রদেশে। এখানকার জনসংখ্যা ১৯,৯৫,৮১,৪৭৭ জন।
প্রশ্ন ২৬। অসম রাজ্যের জনসংখ্যা কত ?
উত্তরঃ৩,১১,৬৯,২৭২ জন।
প্রশ্ন ২৭। ভারতবর্ষের আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমা অতিক্রম করে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ হতে আসা প্রব্রজনকারীদের একটি তালিকা প্রস্তুত কর।
উত্তরঃ ভারতবর্ষের পার্শ্ববর্তী দেশসমূহ হতে আসা প্রব্রজনকারীদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এসেছে ৩নিযুক্ত, পাকিস্তান থেকে প্রায় ০.৯ নিযুক্ত, নেপাল থেকে প্রায় ০.৫ নিযুক্ত এবং শ্রীলঙ্কা থেকে প্রায় ০.১ নিযুক্ত।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ভারতীয় অর্থনীতিতে কৃষিখণ্ডের উপর গুরুত্বের কারণ কি ?
উত্তরঃ ভারতীয় অর্থনীতিতে কৃষিখণ্ডের উপর গুরুত্ব দেওয়ার কারণগুলো হল—–
(ক) দেশটির জনসাধারণের খাদ্য আহরণের জন্য কৃষিখণ্ডের উপর নির্ভরশীলতা।
(খ) দেশের কর্মক্ষম লোকের ৬০% এর অধিক লোক কৃষিখণ্ডে নিয়োজিত হয়ে আছে।
(গ) দেশের আয়ের সর্বাধিক অংশ কৃষিখণ্ড থেকে আসে।
(ঘ) কৃষি থেকে লাভ করা কাঁচামালের ভিত্তিতে দেশের বহুসংখ্যক উদ্যোগ গড়ে উঠেছে এবং এর সাথে কৃষিকার্যে ব্যবহৃত যন্ত্র- পাতি ও সাজ-সরঞ্জাম তৈরি করার জন্যও অনেক উদ্যোগ গড়ে উঠেছে।
প্রশ্ন ২। ভারতীয় অর্থনীতিতে উদ্যোগ খণ্ডের সম্পর্কে সংক্ষেপে লিখ।
উত্তরঃ ভারতীয় অর্থনীতিতে উদ্যোগ খণ্ডের গুরুত্ব অপরিসীম। এর কারণগুলো হল—-
(ক) স্বাধীনতার পরবর্তীকাল থেকে ভারতীয় অর্থনীতিতে উদ্যোগ খণ্ডের অবদান ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২০০৯-১০ বর্ষে ভারতবর্ষের নিজস্ব উৎপাদনের ২৮% উদ্যোগ খণ্ডের অবদান। স্বাধীনতার সময় উদ্যোগ খণ্ডের অবদান ছিল মাত্র ১৪%। বর্তমানে বিকাশের হারের বৃদ্ধির মূল কারণ হল উদ্যোগের সংখ্যা ও উৎপাদন বৃদ্ধি।
(খ) ভারতবর্ষের মতো বেকার সমস্যা জর্জরিত একটি দেশের জন্য উদ্যোগ খণ্ডের গুরুত্ব অপরিসীম। উদ্যোগখণ্ড এই দেশের বহুসংখ্যক লোককে কর্মসংস্থাপন দিতে সক্ষম হয়েছে।
(গ) আন্তঃগাথনি উন্নয়ন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। এক্ষেত্রে দেশের উদ্যোগ খণ্ড দেশের আন্তঃগাথনি উন্নয়নে বিশেষ সহায়তা করেছে। অবশ্য উদ্যোগ সমূহের মধ্যে গুরু উদ্যোগ সমূহ বিশেষ ভূমিকা গ্ৰহণ করেছে।
(ঘ) দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে নিত্য নৈমিত্তিক ব্যবহার্য প্রয়োজনীয় ভোগ্য সামগ্ৰীর চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঔদ্যোগিক বিকাশ এই সামগ্ৰী তৈরির ক্ষেত্রে সাহায্য প্রদান করেছে। ঔদ্যোগিকরণের মাধ্যমে আমরা খাদ্য, বস্ত্র, অন্যান্য সাজ-সরঞ্জাম ও নানা ধরনের ভোগ্য সামগ্ৰী লাভ করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রশ্ন ৩। যাতায়াত খণ্ড ভারতীয় অর্থনীতিতে কিরূপ ভূমিকা পালন করেছে ?
উত্তরঃ স্থলপথ, জলপথ ও আকাশপথের ভাল যাতায়াত ব্যবস্থা ভারতীয় অর্থনীতিতে এক বিশেষ ভূমিকা গ্ৰহণ করেছে। কৃষি, উদ্যোগ, বাণিজ্য, যোগাযোগ ইত্যাদির বিকাশের জন্য দক্ষ যাতায়াত ব্যবস্থার বিশেষ প্রয়োজন। মোটর পরিবহণ ও রেলপথ ভারতের বিভিন্ন স্থানের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
প্রশ্ন ৪। হিমালয়ের উৎপত্তির একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।
উত্তরঃ শিলাস্তরে প্রধানত ভাঁজ পড়ে হিমালয় পর্বতের উৎপত্তি হয়েছে। সেইজন্য হিমালয়কে ভঙ্গিল জাতীয় পর্বতশ্রেণি বলা হয়। আজ যেখানে হিমালয় পর্বত দাঁড়িয়ে আছে, প্রায় দশ কোটি বছর আগে সেখানে টেথিস নামে এক অগভীর সাগর ছিল। এই সাগরের উত্তরে ও দক্ষিণে যথাক্রমে আঙ্গারাল্যাণ্ড ও গণ্ডোয়ানাল্যাণ্ড নামে দুটি প্রাচীন স্থলভাগ ছিল। এই স্থলভাগ থেকে উৎপন্ন নদনদীগুলি প্রচুর পলিমাটি নিয়ে এসে ওই সাগরের তলায় জমা করতে থাকে। কালক্রমে টেথিস সাগরের তলায় সঞ্চিত সেই পলিমাটি শিলায় পরিণত হয়।
ক্রমাগত পলল ও পাললিক শিলা সঞ্চিত হওয়ায় তাদের ভারে সাগরের তলায় এক নিম্নমুখী চাপের সৃষ্টি হয়। সেই নিম্নমুখী চাপে ও অন্যান্য প্রাকৃতিক কারণে উত্তরদিকের আঙ্গারাল্যাণ্ড ও দক্ষিণদিকের গণ্ডোয়ানাল্যাণ্ড উভয়ে উভয়ের দিকে সরতে থাকে। ফলে এই দুই স্থলভূমির মাঝখানে অবস্থিত টেথিস সাগরের তলায় দুইদিক থেকে চাপ পড়তে থাকে এবং সেখানকার শিলায় ভাঁজ পড়তে শুরু করে। ক্রমে ক্রমে ভাঁজে ভাঁজে সেই শিলাস্তর উঁচু হয়ে হিমালয় পর্বতের রূপ ধারণ করেছে। ভূবিদ্গণের মতে, হিমালয় পর্বত এখনও উঠছে।
প্রশ্ন ৫। হিমালয়ের কয়েকটি গিরিপথের নাম লিখ।
উত্তরঃ হিমালয়ের গিরিপথ : দুর্ভেদ্য হিমালয়ের মধ্যে আছে সংকীর্ণ গিরিপথ। যথা—বানিহাল, বুর্জিল, জোজিলা, রোটাং, বড়লাচা, সিপকি, নিতি, নাথুলা,বুমলা, সে-লা প্রভৃতি।
প্রশ্ন ৬। হিমালয় পর্বতমালা ভারতীয় ভূখণ্ডকে কিভাবে সহায়তা করেছে বর্ণনা কর।
উত্তরঃ ভারতের উত্তরে হিমালয় পর্বতের অবস্থান বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। হিমালয় পর্বতমালা নানাভাবে ভারতকে সহায়তা করেছে :
(১) হিমালয় পর্বতমালা ভারতের উত্তর সীমান্ত বরাবর দুর্ভেদ্য প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে বহিঃশক্রর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করেছে।
(২) সুবিশাল এই পর্বতমালার অবস্থানের জন্য মধ্য এশিয়ার শীতল ও শুষ্ক বাতাসের প্রকোপ ভারতে ঢুকতে পারে না। ফলে প্রচণ্ড ঠাণ্ডার হাত থেকে ভারত রক্ষা পায়।
(৩) সাগর থেকে আগত জলীয় বাষ্পপূর্ণ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমিবায়ু হিমালয় পর্বতমালা প্রতিহত হয়ে ভারতে বৃষ্টিপাত ঘটায়। ফলে ভারত সুজলা-সুফলা হয়ে উঠেছে।
(৪) তুষার-হিমাদ্রি থেকে শত শত নদনদীর জন্ম। এইসব নদী ভারতের মাটিতে প্রাণসঞ্চার করেছে। উত্তর ভারতের সমভুমি এইসব নদনদীর পলিমাটি দিয়ে গঠিত।
(৫) হিমালয়ের অরণ্য ভারতের এক অতুলনীয় সম্পদ। এই অরণ্য থেকে প্রচুর কাঠ,ভেষজ গুণসম্পন্ন গাছ-গাছড়া, বনৌষধি, মধু, মোম, নানারকম ফল প্রভৃতি পাওয়া যায়।
(৬) হিমালয়ের পার্বত্য উপত্যকায় ও পর্বতের গায়ে যে বিস্তীর্ণ তৃণভূমি জন্মায় সেখানে প্রচুর মেষ, ছাগল প্রভৃতি পালন করা হয়।
(৭) হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চল কৃষির অনুকূল না হলেও সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশে উৎকৃষ্ট শ্রেণির চা ও সুমিষ্ট ফলের চাষ হয়।
(৮) হিমালয়ের নিসর্গ প্রকৃতির শোভা ও মনোরম জলবায়ুর জন্য বহু শৈলনিবাস ও পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে।
(৯) ভারতীয়দের জীবনের ওপর হিমালয়ের দান অনন্য। ভারতের ধর্ম, পুরাণ, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে হিমালয় পর্বতমালা এক অসামান্য স্থান অধিকার করে আছে। এদেশের ভৌগোলিকী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐক্য বিধানে হিমালয়ের প্রভাব অপরিসীম।
প্রশ্ন ৭। ভারতের রাজ্য, রাজধানী, লোকসংখ্যা ও মাটির কালির পরিমাণ ইত্যাদির একটি তালিকা প্রস্তুত কর।
উত্তরঃ
প্রশ্ন ৮। কেন্দ্রশাসিত রাজ্য, রাজধানী, জনসংখ্যা ও মাটির কালির পরিমাণ ইত্যাদির একটি তালিকা প্রস্তুত কর।
উত্তরঃ
প্রশ্ন ৯। ভারতবর্ষের একটি মানচিত্র অঙ্কন করে রাজ্য ও রাজধানী দেখাও।
উত্তরঃ নিজে চেষ্টা কর।
প্রশ্ন ১০। মহানদী, গোদাবরী, কৃষ্ণা ও কাবেরী নদীর অববাহিকার একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দাও।
উত্তরঃ (১) মহানদী (৮৯০ কি.মি.) : মহাকাল পর্বতের অমরকণ্টক শৃঙ্গের কাছ থেকে উৎপন্ন হয়ে ছত্তিশগড় ও ওড়িশার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পূর্ববাহিনী নদীরূপে মহানদী বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এই নদীর মোহনায় বদ্বীপ আছে। সম্বলপুরের কাছে এই নদীর ওপর হীরাকুঁদ বাঁদ নির্মাণ করা হয়েছে।
(২) গোদাবরী(১,৪৫০ কি.মি.) : পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ত্রিম্বকের কাছে উৎপন্ন হয়ে গোদাবরী নদী মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও অন্দ্রপ্রদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রাজমুন্দ্রীর কাছে কয়েকটি শাখায় বিভক্ত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে ; এর মোহনায় বদ্বীপ আছে। ইন্দ্রাবতী, প্রাণহিতা, পেণগঙ্গা, বেনগঙ্গা, মঞ্জীরা প্রভৃতি এর প্রধান উপনদী।
গোদাবরী দক্ষিণ ভারতের বৃহত্তম নদী। এই নদীর অববাহিকা দক্ষিণ ভারতের মধ্যে বৃহত্তম গঙ্গার পরেই এর স্থান। আয়তনের বিশালতায়,নদীর দৈর্ঘ্যে এবং অর্থনৈতিক ও ধর্মীয় গুরুত্বের দিক থেকে বিচার করে গোদাবরী নদীকে দক্ষিণ ভারতের গঙ্গা বলা হয়। রাজমুন্দ্রী, ভদ্রচলম্ প্রভৃতি গোদাবরীর তীরে অবস্থিত উল্লেখযোগ্য শহর।
(৩) কৃষ্ণা(১,২৯০ কি.মি.) : পশ্চিমঘাট পর্বতের মহাবালেশ্বর শৃঙ্গের কাছ থেকে উৎপন্ন হয়ে মহারাষ্ট্র কর্ণাটক ও অন্দ্রপ্রদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কৃষ্ণা বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এই নদীর বদ্বীপ গোদাবরী-নদীর বদ্বীপের ঠিক দক্ষিণেই অবস্থিত। ভীমা ও তুঙ্গভদ্রা কৃষ্ণার প্রধান দুটি উপনদী। সাতার, বিজয়ওয়াদা প্রভৃতি শহর কৃষ্ণার তীরে অবস্থিত।
(৪) কাবেরী(৭৬০ কি.মি.) : কাবেরী নদী কর্ণাটকের কুর্গ জেলার ব্রক্ষগিরি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুর ওপর দিয়ে পূর্বদিকে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এই নদীর উচ্চ গতিপথে অনেকগুলি জলপ্রপাত আছে। এদের মধ্যে শিবসমুদ্রম্ জলপ্রপাত বিখ্যাত। হিমবতী, ভবানী, বেদবতী, সিমসা প্রভৃতি কাবেরীর প্রধান উপনদী। এই নদীর মোহনায় অবস্থিত বদ্বীপভূমি খুব উর্বর। এই অঞ্চলে প্রচুর ধান, তৈলবীজ, ইক্ষু, কাপার্স ও নারিকেল উৎপন্ন হয়। এইজন্য কাবেরী নদীর বদ্বীপকে দক্ষিণ ভারতের শস্যভাণ্ডার বলা হয়।
প্রশ্ন ১১। জনপ্রব্রজনের ফলে ভারতে কি প্রকারের প্রভাব পড়েছে ?
উত্তরঃ জনপ্রব্রজনের প্রভাব সুদূরপ্রসারী। প্রব্রজনের ফলে দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক, পারিবেশিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রসমূহে কিছু সংখ্যক তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। কয়েকটি বিশেষ প্রভাব নিচে উল্লেখ করা হল—-
(ক) প্রব্রজনের ফলে দেশের জাতি, ধর্ম ও ভাষার ভিন্নতা বেড়েছে ফলে বিভিন্ন প্রকারের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে।
(খ) প্রব্রজনের ফলে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের পরিবর্তন হয়েছে এবং ব্যবসা- বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে।
(গ) প্রব্রজন দেশের তথা এখানকার বিভিন্ন অঞ্চলের জনগাঁথনির পরিবর্তন হয়েছে। প্রব্রজনের ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ঘনত্ব, শিক্ষিতের হারের পরিবর্তন হয়েছে। কোনো কোনো অঞ্চলে প্রব্রজনকারীর সংখ্যা স্থানীয় জনসংখ্যা অপেক্ষা অধিক হবার ফলে ভাষা, ধর্ম, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে সমস্যার উদ্ভব হয়েছে।
(ঘ) প্রব্রজন প্রত্যক্ষভাবে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করেছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দেশে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। দেশের ভূমি-সম্পদের ওপর অত্যাধিক চাপের সৃষ্টি হয়েছে। অরণ্য ও আর্দ্রভূমির পরিবেশতন্ত্র বিঘ্নিত হয়েছে এবং নিয়োগের সমস্যার সাথে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখণ্ডতে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
(ঙ) প্রব্রজনের ফলে কখনো কখনো উদ্ভব হওয়া ধর্মীয় ও সামাজিক সংঘাত সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
(চ) প্রব্রজনকারী সকলে নতুন স্থান ও সমাজে কখনো হয়তো মিশতে না পেরে মানসিক চাপে ভোগে।
(ছ) প্রব্রজনের ফলে বিশেষভাবে নগর অঞ্চলের কিছু সংখ্যক বস্তি (slum) অঞ্চল গড়ে উঠেছে। এ ধরনের বস্তিসমূহে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করার ফলে শহরাঞ্চলের পরিবেশ প্রদূষিত হচ্ছে।
(জ) প্রব্রজনের ফলে দেশটির বা রাজ্যসমূহের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পট পরিবর্তন হবার উপক্রম হয়েছে।