ভাবসম্প্রসারণ | Vab Somprosaron in Bengali Grammar

ভাবসম্প্রসারণ | Vab Somprosaron in Bengali Grammar Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter ভাবসম্প্রসারণ | Vab Somprosaron in Bengali Grammar and select needs one.

ভাবসম্প্রসারণ | Vab Somprosaron in Bengali Grammar

Join Telegram channel

These Grammar are part of SCERT Syllabus. Here we have given ভাবসম্প্রসারণ | Vab Somprosaron in Bengali Grammar, You can practice these here.

SEBA Class 9 Bengali Medium Solutions

SEBA Class 10 Bengali Medium Solutions

ভাবসম্প্রসারণ 

“যার ভয়ে তুমি ভীত, সে অন্যায় ভীরু তোমা চেয়ে,

যখনি জাগিবে তুমি তখনই সে পলাইবে ধেয়ে।”

উত্তরঃ শক্তির দত্তে কখনও কখনও মানুষ অন্ধ হয়ে যায়। অপেক্ষাকৃত দুর্বল মানুষকে পীড়ন করে, অত্যাচার করে শক্তিমান এক ধরনের তৃপ্তি লাভ করে। যদিও সে মনে মনে জানে, অসহায় দুর্বল মানুষের প্রতি এক নিষ্ঠুর আচরণ অন্যায় ও অসঙ্গত। তথাপি সে পেশী প্রদর্শনে অধিক আগ্রহী হয়ে ওঠে। কিন্তু দুর্বল হলেও সব মানুষের সহ্যের সীমা আছে। অত্যাচার সহ্য করতে করতে একদিন সে মরীয়া হয়ে ওঠে। বাঁচার জন্য সে প্রত্যাঘাত করে। সর্বশক্তি দিয়ে সে মরণপণ সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়। আর তখনই অত্যাচারী ভীত হয়, পালানোর পথ খোঁজে।

ইতিহাস বার বার পুনরাবৃত্ত করেছে এ ঘটনার। একদা দুর্বল, অত্যাচারিত ভীষণ আক্রমণাত্মক হয়ে সবলকে পর্যুদস্ত করেছে– এ নজির আমরা সর্বত্র দেখেছি। আমরা জানি–

“পায়ের তলার ধূলা, সেও যদি কেউ পদাঘাত করে।

তখনই সে লয় প্রতিশোধ, চড়ি তার শিরোপরে।”

পথের নগণ্য ধূলাও পদাঘাতের সমুচিত জবাব দিয়ে থাকে। আর মানুষ দরিদ্র বলে, অসহায় বলে চিরকাল অবজ্ঞা বা ঘৃণার পাত্র হবে, লাঞ্ছনার শিকার হবে— এ ধারণা যারা করে থাকে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করে। দুর্বল অক্ষমও প্রত্যাঘাত করতে জানে, এবং সে প্রত্যাঘাত অতি ভয়ঙ্কর, অতি ভীষণ। তাই সুস্থ বুদ্ধি যাদের আছে তারা নিজেরা সুন্দরভাবে বাঁচে এবং অপরকে বাঁচতে সাহায্য করে। অসহায়ের প্রতি নির্মম হয় না, দুর্বলকে আঘাত করে না, পরিবর্তে তাদের প্রতি সহমর্মিতা অনুভব করে।

“জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে।

সে জাতির নাম মানব জাতি

এক পৃথিবীর স্তন্যে লালিত,

একই রবি শশী মোদের সাথী।”

উত্তরঃ দেশ, জাতি, বর্ণ, ধর্ম-সংস্কার প্রভৃতি ভিন্ন ভিন্ন হওয়ার কারণে মানুষ একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকে। আমরা ভুলে যাই পৃথিবী আমাদের জননী—‘বসুধৈব কুটুম্বকম্। বিশ্বভ্রাতৃত্বের পরিবর্তে খণ্ড খণ্ড প্রাদেশিকতা, সাম্প্রদায়িকতার বিষে আমরা জর্জরিত হই। ভ্রাতৃঘাতী হানাহানিতে লিপ্ত হই। কিন্তু ঈশ্বরের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। তাঁর উদার আকাশের নীচে চন্দ্রালোকিত, সূর্যকিরণদীপ্ত ধরণীর বুকে লালিত-পালিত সকল মানুষের প্রতি তাঁর সমান দৃষ্টি। পৃথিবীর উৎপন্ন শস্যে মানুষের ক্ষুধার নিবৃত্তি। ‘বিশ্বমায়ের বিশ্বময়ীর’ অঞ্চলে বেড়ে-ওঠা সন্তানরা কিন্তু একটু বড় হবার পরই স্বার্থান্ধ হয়ে ওঠে। সংকীর্ণ আত্মপরতার মোহে বিচ্ছিন্নতার প্রাচীর তোলে। হৃদয়ের ঐশ্বর্য, প্রেম, ভালোবাসা, উদারতা বিস্মৃত হয়ে একে অন্যকে হেয় করতে থাকে। ক্রমশ তার পাশব প্রবৃত্তিগুলি জেগে উঠে ভেদবুদ্ধির শিকার হয়ে অপমান করে নিজেকে।

কিন্তু মানুষ হল ‘অমৃতস্য পুত্রাঃ’। ক্ষণিকের ভ্রান্তি অপগত হলেই সে আত্মস্বরূপকে উপলব্ধি করে। ‘এক জাতি এক রাষ্ট্র’ গড়ার শুভ সংকল্প নিয়ে সে সমগ্র মানব জাতির উন্নয়ন-সাধনে ব্রতী হয়। সমগ্র মানবের কল্যাণ ব্যক্তির মঙ্গলকে ঘিরেই সূচিত হয়। বৈদিক যুগে ব্রাহ্মণরা যজ্ঞ করতেন সারা পৃথিবীর হিত-কামনায়। পৃথিবীর আবহাওয়া দূষণমুক্ত হবে। যেখানে মানব গোষ্ঠীর বাস, তারা পবিত্র নিঃশ্বাসগ্রহণে সুস্থ থাকবে এই ছিল তাঁদের ঐকান্তিক কামনা। আজ বিজ্ঞান সমস্ত দূরত্বকে সরিয়ে এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের সংযোগ রক্ষা করেছে। এখন প্রয়োজন সর্বপ্রকারের উগ্র স্বাদেশিকতাকে বর্জন করে, ভেদবুদ্ধিকে দূরে ঠেলে সেই বোধে উন্নীত হওয়া যা মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের শিখরদেশে নিয়ে যাবে। প্রমাণ করবে—‘সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।’

“যে নদী হারায়ে স্রোত চলিতে না পারে

সহস্ৰ শৈবালদাম বাঁধে আসি তারে ;

যে জাতি জীবনহারা অচল অসাড়

পদে পদে বাঁধে তারে জীর্ণ লোকাচার।”

উত্তরঃ নদী স্রোতস্বিনী, গতিময়ী, দুর্বার গতিতে সে এগিয়ে চলেছে বৃহতের লক্ষ্যে, সমুদ্রের অভিমুখে। জীবনের সাথে নদীর রয়েছে নিবিড় সাদৃশ্য। জীবনও চিরচলিষ্ণু। এই চলমানতা বা গতিশীলতা আছে বলেই জীবন নানা রূপের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে পূর্ণতার লক্ষ্যে। জীবনের গতি যখনই স্তব্ধ হয়ে যায়, তখনই ঘনিয়ে আসে তার অন্তিম লগ্ন। মৃত্যুর করাল গ্রাস জীবনকে লেহন করে নেয়। একথা শুধু ব্যক্তি সম্পর্কেই প্রযোজ্য নয়, সমানভাবে একথা সমষ্টি জীবনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সমাজের গতিশীলতা স্তব্ধ হয়ে গেলে জীবনের স্বচ্ছন্দ প্রবাহও ব্যাহত হয়। স্রোত না বইলে নদী যেমন শৈবাল দ্বারা সমাকীর্ণ হয়ে স্তব্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়, তেমনই জাতির জীবনে নতুনকে গ্রহণ করার মানসিকতা হারিয়ে গেলে জাতির জীবন পঙ্গু হয়ে যায়। রক্ষণশীলতার বদ্ধ মনোভূমিতে পাপ প্রবেশ করে, কুসংস্কার গলা টিপে ধরে, অনাচার পঙ্কিলতা স্থবির করে দেয়। বিনষ্টির সংকেত বহন করে নিয়ে আসে।

8

প্রাচীরের ছিদ্রে এক নামগোত্রহীন

ফুটিয়াছে ছোটো ফুল অতিশয় দীন।

ধিক্ ধিক্ করে তারে কাননে, সবাই,

সূর্য উঠি বলে তারে, ভালো আছ, ভাই?

উত্তরঃ ক্ষুদ্রের গৌরব স্বীকার করার মতো মানসিকতা খুব অল্প লোকেরই থাকে। উদার হৃদয় মহৎ ব্যক্তি না হলে ক্ষুদ্র মানুষের গৌরব স্বীকার করতে পারে না। একটি কাননের রূপকের মাধ্যমে এই মহৎ সত্যটিকে কবি এই কবিতার ভেতর দিয়ে প্রকাশ করতে চেয়েছেন। এখানে বর্ণিত দৃশ্যপটে রয়েছে প্রাচীর ঘেরা একটি কানন। কানন যখন, তখন এখানে রয়েছে প্রচুর গাছপালা। রয়েছে নানান ধরনের ফুল। প্রাচীরের গায়েও রয়েছে নানা আগাছা এবং তাদের ছোটো ছোটো ফুল। এইরকম একটি পরিবেশে হঠাৎ ছোট্ট একটি ফুল ফুটল প্রাচীরের ছিদ্রে। ফুলটি ছোটো, কিন্তু সুন্দর। তবে সুন্দর হলে কী হবে, এর তেমন রাজসিক নামডাক নেই। বরং তাকে নামগোত্রহীন বলাই চলে। এই দীনহীন ছোট্ট ফুলটিকে, নামগোত্রহীন এবং ক্ষুদ্রতার জন্য কাননের সকলেই ধিকৃত করছে। সকলেই করছে ছি-ছি। সে যে একটি ফুল, সেটুকু স্বীকৃতিও সে পাচ্ছে না। প্রাচীরের ছিদ্রে ফুটেছে বলে সে পাচ্ছে শুধু সকলের অবজ্ঞা। এইরকম যখন অবস্থা, ঠিক সেই সময় সূর্য উঠল। সূর্যের আলো এই ফুলটির ওপরও পড়ল এবং তাঁকে ভ্রাতৃ সম্বোধনে সূর্য কুশল জিজ্ঞাসা করল, ভালো আছ ভাই? মহৎ ব্যক্তিরা এইভাবেই সকলকে গ্রহণ করেন—ক্ষুদ্রের গৌরবকেও তাঁরা সাদরে স্বীকৃতি দেন। অবজ্ঞা করেন না। মহৎ ব্যক্তি কেন যে ‘মহৎ, এই ধরনের আচরণেই ধরা পড়ে।

অন্যায় যে করে, আর অন্যায় যে সহে

তব ঘৃণা যেন তারে তৃণসম দহে।

উত্তরঃ অন্যায়ের মতো কুৎসিত ব্যাপার আর কিছুই নেই। কুৎসিত জিনিসকে আমরা যেমন ঘৃণা করি, অন্যায়কেও তেমনি আমাদের ঘৃণা করা উচিত। অন্যায়কে কেন ঘৃণ্য বলে কবি ঘোষণা করেছেন, তার তাৎপর্যটাও আমাদের বোঝা দরকার। যেকাজে ন্যায় ধর্মের অনুমাত্র অনুসরণ নেই, তাকেই বলে ‘অন্যায়’। ‘ন্যায়’কে লঙ্ঘন করেই ‘অন্যায়ের’ রবরবা। কোনোরকম নীতির ধার ধারে না এই অন্যায়। এবং একটু খতিয়ে দেখলে যা জানা যায়, তা হল প্রবলরা তাদের ঔদ্ধত্য প্রকাশের জন্যই এই হাতিয়ারটি বেছে নেয়। ওই প্রবলরা হল স্বৈরতন্ত্রী। কোনো নীতি ধর্ম বা কোনো যুক্তির ধার এরা ধারে না। দুর্বলদের ওপর এই হাতিয়ারটি প্রয়োগ করে তারা তাদের খেয়াল ও স্বার্থ চরিতার্থ করে থাকে। এই হঠকারীরা সমাজের ঘোরতর শত্রু। এরা নিজেদের প্রভাব অটুট রাখার জন্য সমাজের সর্বস্তরে সুন্দরভাবে জাল বিছিয়ে রাখে। তাই অন্যায়ের প্রতিকার হয় না। দরজার দরজা ন্যায়সংগত দাবি ও বিচার চেয়ে যুগযুগ ধরে এরা ফিরে আসে। পরিবর্তে শোনা যায় অন্যায়ের অট্টহাসি। মোটকথা, এটি একটি কুৎসিত ষড়যন্ত্র, সুতরাং সর্ব্বৈ ঘৃণ্য। অন্যায় যে করে, সেই অন্যায়কারীকে প্রতিরোধ করা দরকার। কিছু না পারলে অন্তত ঘৃণা করা দরকার। এই অন্যায়কারীর সঙ্গে আর একজনকে সমানভাবে ঘৃণা করা দরকার, যিনি অন্যায় সহ্য করছেন। অন্যায়ে নির্যাতিত হলেও, সর্বশক্তি দিয়ে সংগ্রাম করাই হল অন্যায়কে হঠানোর সেরা পথ। আর দূরে দাঁড়িয়ে অন্যায়কারী ও অন্যায়পিষ্ট পীড়িতকে চোখের সামনে দেখেও যিনি নিজেকে নিরপেক্ষ করে রাখেন, তিনিও সমান ঘৃণ্য। কবির ভাষায়, আমাদের ঘৃণা এই ধরনের মানুষদের যেন তৃণের মতো পুড়িয়ে ছাই করে দেয়।

কহিল ভিক্ষার ঝুলি টাকার থলিরে,

‘আমরা কুটুম্ব দোঁহে ভুলে গেলি কিরে?’

থলি বলে, ‘কুটুম্বিতা তুমিও ভুলিতে

আমার যা আছে গেলে তোমার ঝুলিতে।’

উত্তরঃ আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের একটি অসংগতির কথা এই কবিতার ভেতর দিয়ে আশ্চর্যভাবে প্রকাশিত হয়েছে। আমরা অর্থ বা টাকাকড়িকেই সাধারণত চরম মূল্য দিয়ে থাকি। এমনকি আমাদের আত্মীয় কুটুম্বিতার যে উষ্ণতা, তাও নির্ভর করে এই অর্থ কৌলীন্যের ওপর। যে আত্মীয় ধনী, সে তার দরিদ্র আত্মীয়কে সমাদর করে না। কাছে টানে না। এমনকি আত্মীয় বলে অনেক সময় পরিচয় দিতেও কুণ্ঠিত হয়। এদিকে দরিদ্র আত্মীয়টি কিছুতেই কিন্তু ভুলতে পারে না তার ধনী আত্মীয়ের কথা। সে ওই আত্মীয়ের কাছে নানা ছলছুতায় পৌঁছুতে চায়। বলা বাহুল্য, এই বৈপরীত্য তৈরির জন্য দায়ী হল অর্থ।—এই কবিতাটিতে রূপকের মাধ্যমে কবি এই কথাই বলেছেন। ‘ঝুলি’ এবং ‘থলি’ দুজনেই একই আত্মীয়তার সূত্রে আবদ্ধ। তবে ঝুলিটি হল ভিক্ষার এবং থলিটি হল টাকার। টাকার থলিকে আত্মীয় সম্বোধন করে একটি কথা জানতে চেয়েছিল ভিক্ষার ঝুলি, সে কথাটি হল, ‘থলি’ কি ভুলে গেল ‘ঝুলি’র সঙ্গে আত্মীয়তার কথা!—বড়োলোক আত্মীয়কে দরিদ্র আত্মীয় যেম. বলে থাকেন, এই সম্বোধন অবিকল ঠিক তেমনি। বলাবাহুল্য, থলি তার উত্তরটা বড়োলোক আত্মীয়ের মতনই দিয়েছিল। বলেছিল যে ঝুলি বেচারিও তার আত্মীয়তার কথা ভুলে যেত যদি টাকা-রূপ বিত্তটি তার কাছে না থেকে, থাকত ওই ঝুলির ভেতর। বলার অপেক্ষা রাখে না, এর মধ্যে দিয়ে সেই অমোঘ সত্যটিই প্রকাশিত হল যে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধের মাপকাঠি হল ‘অর্থ’। এই অর্থের জন্যই গড়ে ওঠে বা ভেঙে যায় আত্মীয়তা ও কুটুম্বিতা। তফাত হয়, ‘ঝুলি’র সঙ্গে ‘থলি’র সম্পর্ক।

স্বার্থমগ্ন যে জন বিমুখ

বৃহৎ জগৎ হতে সে কখনো শেখে নি বাঁচিতে।

উত্তরঃ সবাই ঠিকমতো বাঁচতে জানে না। বাঁচা মানে, কেবল টিকে থাকা নয়। পশুদের বেঁচে থাকার সঙ্গে মানুষের বেঁচে থাকার সংজ্ঞা মেলে না, ঠিক অনুরূপভাবেই টিকে থাকার ব্যাপারটির সঙ্গে বেঁচে থাকার বিষয়টিও মেলে না। বেশিরভাগ মানুষ স্বার্থপর। নিজের স্বার্থ চরিতার্থ হলেই তারা খুশি।—নিজের খাওয়া নিজের পরা এবং নিজের সুখের সীমিত গণ্ডির ভেতরেই তাঁরা বেঁচে থাকতে অভ্যস্ত। বলা বাহুল্য, এটি বাঁচা নয়। আমাদের পরিবার-পরিজনের বাইরে যে বৃহৎ জগৎ রয়েছে, তাদের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে হবে। তাদের সুখ-দুঃখ, ভালো-মন্দের সঙ্গে নিজেকে শামিল করা দরকার। নতুবা বাঁচার সুখ পাওয়া যায় না। ব্যক্তি-স্বার্থের সঙ্গে বিশ্ব-স্বার্থের গরমিল প্রচুর। ব্যক্তি-স্বার্থের গণ্ডি কেটে বেরিয়ে না আসতে পারলে বিশ্ব-স্বার্থের সঙ্গে যোগ সম্ভব হয় না। ব্যক্তি সুখ এবং ব্যক্তিগত আশা আকাঙ্ক্ষা কখনওই পূর্ণ হয় না, যদি না আমরা নিজেদের বৃহৎ জগতের বৃহত্তর স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত করি। পক্ষান্তরে বৃহত্তর জগতের সঙ্গে যুক্ত হতে পারলে আমাদের বেঁচে থাকার নতুনতর একটি তাৎপর্য পাওয়া যায়। প্রেম ও ভালোবাসার মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠে নতুনতর সম্পর্ক। অপরের অভাবের দিকে তাকিয়ে ভুলে যেতে হয় নিজেদের ক্ষুদ্র অভাবের কথা। অপরের দুঃখ, বেদনা এবং বিপন্নতা এমনি করেই কেড়ে নিতে পারে আমাদের ব্যক্তিগত দুঃখ, বেদনা এবং বিপন্নতা। ঠিক এইভাবেই বৃহত্তর জগতের সুখে আমরা সুখীও হতে পারি।—বলা বাহুল্য, বেঁচে থাকার এই আনন্দময় রহস্যটি কবি আবিষ্কারে সমর্থ হয়েছেন বলেই তিনি জোরের সঙ্গে বলতে পেরেছেন, স্বার্থপর ব্যক্তিরা, যাঁরা বৃহৎ জগতের দিকে পিছন ফিরে বসে আছেন, তাঁরা বাঁচতে শেখেননি।

শৈবাল দিঘিরে বলে উচ্চ করি শির—

লিখে রেখো, এক ফোঁটা দিলেম শিশির।

উত্তরঃ জলভরা বিশাল দিঘি। এ দিঘির আর এক নাম জলাশয়। এই জলাশয় বৃষ্টিতে ভরে, শিশিরে নয়। এই দিঘির কোলেই জমে রয়েছে শ্যাওলা।—এই জলের কোলেই জন্মেছে বলে শ্যাওলার অস্তিত্ব, নতুবা তার জন্ম বা টিকে থাকা আদৌ সম্ভব হত না। –এই শ্যাওলা একটি কাণ্ড করে বসেছে। তার গায়ে যে শিশির পড়েছে সেই শিশিরের একফোঁটা দিঘিকে দান করেছে। এই দান করে সে খুবই গর্ব অনুভব করেছে এবং ঘাড় উঁচু করে দিঘিকে ডেকে বলেছে যে তার এই দানটুকু লিখে রাখতে। কবিতার মধ্য দিয়ে লেখক যদিচ এই কথাটিকে বলেছেন, কিন্তু অনুধাবন করলে বোঝা যায় কবির বক্তব্য এখানেই শেষ হয়নি। তিনি শৈবাল ও দিঘির রূপকের মধ্য দিয়ে আমাদের মানবচরিত্রের বিশেষ একটি দিকের ওপর আলোকপাত করেছেন। দিঘির মতো মহাশয় চরিত্রের মানুষ আমাদের চোখে সচরাচর পড়ে না। কিন্তু শ্যাওলার মতো গর্বোদ্ধত নীচু মাপের মানুষদের আমরা হামেশাই দেখতে পাই। দিঘির মতো মহাশয় মানুষদের কল্যাণে, তাঁদের আশ্রয়ে অনেক শ্যাওলা-সদৃশ ব্যক্তি টিকে রয়েছেন। এই ব্যক্তিদের প্রত্যুপকার করবার কোনো ক্ষমতাই ‘শ্যাওলা মানুষ’দের নেই। তবু কখনো কখনো যদি এক ফোঁটা উপকার করে বসেন, তখন দেমাকে তাঁদের পা আর মাটিতে পড়ে না। দিঘির মত মহাশয় মানুষরা নীরবে বহু লোকের বহু উপকার করে চলেছেন। এর জন্য কোনো ঢক্কা-নিনাদ বা প্রচার নেই। পক্ষান্তরে সংকীর্ণমনা শৈবাল-সদৃশ ব্যক্তিরা একফোঁটা উপকার করেই চান নাম কিনতে। চান প্রচার।—বলার অপেক্ষা রাখে না, নীচ ব্যক্তির দান এরকমই হয়ে থাকে। দিঘির জলেও একফোঁটা শিশির দিয়ে শ্যাওলা চায় দাতার স্বীকৃতি।—এটাই হল সবথেকে কৌতুকের।

যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দনরোল আকাশে

বাতাসে ধ্বনিবে না,

অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণভূমে

রণিবে না,

বিদ্রোহী রণক্লান্ত, আমি সেইদিন হব

শান্ত।

উত্তরঃ প্রাচীন যুগ থেকে দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার দেখতে পাওয়া যায়। লক্ষ কোটি জনগণের উপর নানারকম শাসন ও শোষণের রথচক্র কবিকে বিদ্রোহী করে তুলেছে। জীবনের প্রতিপদে তিনি দেখছেন নিপীড়নের শৃঙ্খল। লৌহকপাটের আড়ালে তাদের মর্মবাণী নিষ্ফল আক্রোশে মরছে। সারা দেশ একটা বিশাল কারাগারে পরিণত হয়েছে। নিরীহ দুর্বল মানুষের রক্তে সবলেরা উন্নতির উচ্চশিখরে আরোহণ করেছে, এইসব অত্যাচারের মুখে বিদ্রোহী কবি নীরব থাকতে পারেননি। তিনি সকলকে সর্বশক্তি দিয়ে এই অনাচারের উৎসকে দমন করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তাই কবি অঙ্গীকার করছেন, যতদিন পৃথিবীতে উৎপীড়িতের ক্রন্দনরোল আকাশ বাতাস ধ্বনিত করবে, যতদিন অত্যাচারীর বজ্রকৃপাণে রণঝংকার শোনা যাবে, ততদিন তিনি বিশ্রাম নেবেন না। অত্যাচারের অবসান ঘটাতে কবি নিজের জীবন বিসর্জন দিতেও কুণ্ঠিত নন। যেদিন পৃথিবী থেকে অত্যাচারের শেষ চিহ্নটি বিলুপ্ত হবে, সেইদিন কবি স্বস্তি লাভ করবেন ও বিশ্রাম নেবেন। তার আগে নয়।

১০

যারা শুধু মরে কিন্তু নাহি দেয় প্রাণ

কেহ কভু তাহাদের করেনি সম্মান।

উত্তরঃ সমস্ত জীবেরই জন্মমৃত্যু রয়েছে। এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করলে একদিন তার মৃত্যু হবেই। এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। মৃত্যুই হল জীবনের শেষ পরিণাম। সেই জন্য এই মৃত্যুর মধ্যে কোনো গৌরব বা মাহাত্ম্য নেই। কিন্তু কোনো ব্যক্তি যখন কোনো মহৎ উদ্দেশ্য সফল করার জন্য তার প্রাণ বিসর্জন দেয়, তখন সেই মৃত্যু হয়ে ওঠে আদর্শের গৌরবে মহিমান্বিত। আর যে ব্যক্তি সাধারণভাবে তার আয়ুষ্কাল শেষ করে মারা যায়, তার কথা কখনও কেউ মনে রাখে না। কিন্তু ওই মানুষটি যদি কোনো মহৎ কর্ম বা পরোপকারের মাধ্যমে তার জীবন বিসর্জন দিত, তাহলে তাকে সবাই মানবপ্রেমিক বলে সম্মান জানাত। উদাহরণস্বরূপ আমাদের দেশের পরাধীনতার সময়ের কথা বলা যেতে পারে। তখন অনেকে প্রাকৃতিক নিয়মে মারা গিয়েছেন তাঁদের কথা কারও মনে নেই। কিন্তু যাঁরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের কথা বর্তমানে সবাই স্মরণ করে থাকে। তাদের নাম চিরকাল ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লিখিত থাকবে। সুতরাং কোনো মহৎ কার্য সাধন করতে গিয়ে জীবন বিসর্জন দিয়ে সকলের স্মরণীয় হয়ে থাকা উচিত।

১১

যারা এ জীবনে হয়েছে সর্বহারা

পরের জন্য তারা তবু রয় খাড়া।

উত্তরঃ পৃথিবীতে এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা সবরকম স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে পরের মঙ্গল সাধনে যত্নবান থাকেন। দেখা যায় হয়তো তাঁরা এতে কোনো সার্থকতা লাভ করতে পারেন না অথবা অর্থ যশ প্রতিপত্তি এবং সামাজিক মর্যাদার অধিকারী হতে পারেন না। অনেক সময় দেখা যায় তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন হয়তো রোগে-শোকে পরিপূর্ণ, তথাপি তাঁরা কখনও পরোপকার থেকে বিরত থাকে না। যাদের পেটে অন্ন থাকে না, মাথা গুঁজবার ঠাঁই থাকে না, স্ত্রী-পুত্র পরিজনাদি থাকে না, তাদের সর্বহারা বলা হয়। এই সর্বহারা মানবিক অধিকার থেকে কখনও কিন্তু বঞ্চিত নয়। তাই অনেক সময় দেখা যায় সর্বহারার দলই সর্বহারার বেদনা বুঝতে পারে। তাই তারা পরের দুঃখ দূর করার জন্য সর্বদাই সচেষ্ট থাকে। দারিদ্র্যের নিপীড়ন জ্বালা তাদের মনোবল নষ্ট করতে পারে না। তারা সর্বহারার দুঃখ যেমন মর্ম দিয়ে অনুভব করতে পারে এমন আর কেউই পারে না। তাই অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে, যারা জীবনে সর্বহারা তারাই অপরের বিপদের সময় এসে উপস্থিত হয়।

১২

“মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়,

আড়ালে তার সূর্য হাসে;

হারা শশীর হারা হাসি

অন্ধকারেই ফিরে আসে।”

উত্তরঃ জীবনের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়, বরং কণ্টকাকীর্ণ। এগিয়ে যাবার পথে অনেক বাধা, অনেক বিঘ্ন। কিন্তু তাই বলে তো থেমে থাকা যায় না, এগিয়ে যেতে হবে সব বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে। ভাল কাজ করতে গেলে, অসংখ্য বাধা-বিঘ্ন এসে পথরোধ করে দাঁড়ায়, কিন্তু দুর্জয় সাহসে ভর করে যে যোদ্ধার মতো যুদ্ধ করতে করতে এগিয়ে যেতে পারে, জয় হয় তারই, সাফল্য আসে তারই। সুখ-দুঃখের সমন্বয়েই মানবজীবন। সুখের পর দুঃখ, আবার দুঃখের পর সুখ চক্রের মতো ঘুরছে। প্রাকৃতিক নিয়মেই সুখ-দুঃখ পর্যায়ক্রমে মানবজীবনে উপস্থিত হয়। মেঘ করলে সূর্য ঢাকা পড়ে, অন্ধকার হয়ে আসে। পরক্ষণে বৃষ্টিপাত হয়ে আকাশ পরিষ্কার হয়ে যায়। আবার সূর্য হাসতে থাকে বা কিরণ দিতে থাকে। কখনো বা জোরালো বাতাসের তাড়নায় মেঘ সরে গিয়ে আকাশ পরিষ্কার হয়। আবার দেখা যায় সূর্যকে, আবার আলোয় ভরে ওঠে পৃথিবী। তেমনই দুঃসময় এসে জীবনকে করে তোলে অন্ধকারময়। আবার তা দূরে সরে যায়, আসে সুসময়, কান্না পরিণত হয় হাসিতে। নিশি অবসানে আমরা হারাই চাঁদকে, তার হাসিকে। কিন্তু রাত্রি সমাগমে চতুর্দিক যখন ভরে ব্লায় অন্ধকারে, তখন আকাশে দেখা যায় চাঁদ আর তার হাসি। পৃথিবী ভরে ওঠে স্নিগ্ধ আলোয়। মানুষের জীবনও প্রাকৃতিক এই নিয়মে বাঁধা। সুখ বা দুঃখ কোনোটাই স্থায়ী নয়। এই জগতের সব কিছুই পরিবর্তনশীল। কবিগণ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কবিতার মাধ্যমে মানুষকে এই কথাই শুনিয়েছেন। সুতরাং সুখ বা দুঃখ কারো কাছেই আত্মসমর্পণ না করে নিজ কর্তব্যে অচল অটল থেকে এগিয়ে যেতে হবে আপন লক্ষ্যাভিমুখে।

১৩

“বন্ধু, তোমার বুকভরা লোভ,

দু চোখে স্বার্থঠুলি,

নতুবা দেখিতে তোমারে সেবিতে

দেবতা হয়েছে কুলী।”

উত্তরঃ অধিকাংশ মানুষের জীবনই নানা বাসনা-কামনা-স্বার্থসিদ্ধির চিন্তায় বিভোর। তাই জগতের প্রকৃত রহস্য তার কাছে উন্মোচিত হয় না। মিথ্যাকে আশ্রয় করে সত্য থেকে বহুদূরে সে নির্বাসিত। ঈশ্বর স্বয়ং এই জীবজগতের আবরণে নিজেকে প্রচ্ছন্ন রেখে সব কিছুই করছেন—এই সত্য সাধারণ মানুষের অজ্ঞাত। সে লোভ-লালসার আবর্তে পড়ে ঘুরপাক খায়, বাসনা-কামনার পশ্চাতে ছুটে বেড়ায় আলেয়ার পেছনে ছোটার মতো। কবির ভাষায়—’যাহা চাই তাহা পাই না।’ সুতরাং দুঃখ-আঘাত অবশ্যম্ভাবী। মানুষের সমূহ দুঃখ-দুর্গতির মূল কারণ বাসনা-কামনা, যা পূরণ হবার নয়। তবুও তার পিছনে ছোটারও বিরাম নেই। এইভাবেই কাটে মানুষের জীবন। সহসা একদিন যমদূত এসে বলে ‘সময় হয়েছে, চলো।’ দারুণ মায়া-মমতা, পার্থিব বস্তুতে প্রবল আসক্তি থাকা সত্ত্বেও সে যেতে বাধ্য হয়। ব্যতিক্রমও আছে, কিন্তু তাঁদের সংখ্যা অল্প। কঠোর সাধনায় জগত্রহস্য ভেদ করে সত্যকে যাঁরা উপলব্ধি করেছেন, তাঁদের আমরা মহাপুরুষ, অবতার পুরুষ, পরম পুরুষ ইত্যাদি উপাধিতে ভূষিত করি। যীশু, বুদ্ধ, শ্রীচৈতন্য, শ্রীরামকৃষ্ণ—এঁরা সত্যদ্রষ্টা, তাই এঁরা মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখতেন না, ঈশ্বর মানুষের বেশ ধরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা তাঁরা স্পষ্টতই উপলব্ধি করেছিলেন। ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করেছেন অথবা মানবরূপ ধারণ করে আছেন। আবার চাকর, কুলী, মেথর প্রভৃতি বৃত্তি অবলম্বন করে মানুষের সেবা করছেন। কিন্তু এই সত্য জানবার জন্য স্বার্থপরতাকে বিসর্জন দিতে হবে, লোভ-লালসাকে জয় করতে হবে। লোভ-লালসা, স্বার্থপরতাই জ্ঞানলাভের অন্তরায়। এইসব প্রতিবন্ধকতা জয় করতে পারলে মানুষ সত্যের সন্ধান পায়, তখন আর তার কোনো দুঃখই থাকে না।

১৪

“কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক

কে বলে তা বহুদূর ?

মানুষেরই মাঝে স্বর্গ নরক

মানুষেতে সুরাসুর।”

উত্তরঃ আমাদের ধারণা পৃথিবী থেকে বহু ঊর্ধ্বে আছে দেবতাদের বাসভূমি —স্বর্গলোক, আবার অনেক নিম্নে আছে অশরীরী মৃত মানুষের অপরাধের শাস্তিভূমি নরক। কিন্তু এ আমাদের কল্পনামাত্র। মানুষের মধ্যেই স্বর্গ আছে, আবার নরকও আছে। শান্তিপ্রিয় পরোপকারী হিংসাদ্বেষমুক্ত সংস্কারমুক্ত উদার বিশালহৃদয় মানুষের মধ্যেই আছে স্বর্গ, আবার লোভী স্বার্থপর হিংসাদ্বেষপ্রবণ সমাজবিরোধী মানুষের মধ্যেই আছে নরক। সদ্গুণাবলীর অধিকারী নিঃস্বার্থ নির্লোভ পরহিতৈষী মানুষের মধ্যে বসে করেন দেবতা। আবার লোভী স্বার্থপর ভোগবাদী অত্যাচারী মানুষের মধ্যে বাস করে অসুর বা দানব। এই পৃথিবীতে উক্ত দু’রকম মানুষই দেখতে পাওয়া যায়। যদিও দেবভাবসম্পন্ন মানুষের সংখ্যা বিরল। স্বীয় কৃতকর্মের ফলে মানুষ এখানেই সুখ-শান্তি আবার দুঃখ-যন্ত্রণা ভোগ করে। সুতরাং মানুষ তার আপন প্রকৃতি ও প্রবৃত্তির অনুসরণে এখানেই স্বর্গ বা নরক সৃষ্টি করে। আবার এখানেই আমরা মানুষের মধ্যে দেখতে পাহ দেবভাবাপন্ন মানুষ ও আসুরিক মানুষ। অবহ্য মনুষ্যনামধারী প্রাণীর উচিত সৎ চিন্তা ও সৎ কর্মের দ্বারা দুঃখময় পৃথিবীকে স্বর্গে পরিণত করা।

1 thought on “ভাবসম্প্রসারণ | Vab Somprosaron in Bengali Grammar”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top