Class 9 Bengali Chapter 10 অ্যান্টিবায়ােটিক ও পেনিসিলিনের কথা

Class 9 Bengali Chapter 10 অ্যান্টিবায়ােটিক ও পেনিসিলিনের কথা Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 9 Bengali Chapter 10 অ্যান্টিবায়ােটিক ও পেনিসিলিনের কথা and select needs one.

Class 9 Bengali Chapter 10 অ্যান্টিবায়ােটিক ও পেনিসিলিনের কথা

Join Telegram channel

Also, you can read SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 9 Bengali Chapter 10 অ্যান্টিবায়ােটিক ও পেনিসিলিনের কথা for All Subject, You can practice these here…

অ্যান্টিবায়ােটিক ও পেনিসিলিনের কথা

               Chapter – 10

ক-বিভাগ পদ্যাংশ

ক্রিয়াকলাপ –

১। সঠিক উত্তর নির্বাচন করাে।

(ক) চিকিৎসা বিজ্ঞানে বর্তমান যুগকে বলা হয়-

১। অ্যান্টিবায়ােটিকের যুগ।

২। পেনিসিলিনের যুগ।

৩। ভিটামিনের যুগ।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Join Now

৪।থেরাপির যুগ।

উত্তরঃ ১। অ্যান্টিবায়ােটিকের যুগ।

(খ) অ্যান্টি’ কথার অর্থ কী ?

১। বিপক্ষে।

২। সপক্ষে।

৩। সগােত্রে।

৪। অগােত্রে।

উত্তরঃ ১। ‘অ্যান্টি’ কথার অর্থ বিপক্ষে।

(গ) বায়ােটিক’ মানে-

১। বায়ু।

২। জীবন।

৩। মরণ।

৪। জীবাণু।

উত্তরঃ ২। বায়ােটিক মানে জীবন।

(ঘ) অ্যান্টিবায়ােটিক সৃষ্টি হয়-

১। অনুজীবের দ্বারা।

২। বায়ুর দ্বারা।

৩। জলের দ্বারা।

৪। প্রাণীর দ্বারা।

উত্তরঃ ১। অ্যান্টিবায়ােটিক সৃষ্টি হয় অণুজীবের দ্বারা।

২। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।

১। কাকে বলে অ্যান্টিবায়ােটিক ?

উত্তরঃ বিভিন্ন রকম অণুজীব পাওয়া যায় যারা নিজেদের শরীর থেকে এমন সব রাসায়নিক জিনিস তৈরি করে যা অপর ক্ষতিকর অণুজীবদের ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। এই রাসায়নিক পদার্থগুলিকে অ্যান্টিবায়ােটিক।

২। অণুজীব কাকে বলে ?

উত্তরঃ অ্যান্টি কথার অর্থ বিরুদ্ধে এবং বায়ােটিক’ মানে জীবন। অ্যান্টিবায়ােটিক অণুজীবন দ্বারা সৃষ্ট।

৩। অণুজীবনের বৈশিষ্ট্য কি ?

উত্তরঃ অণুজীবন আকারে ছােট, দলবদ্ধ হয়ে বেড়ে ওঠার চেষ্টা করে।

৪। অ্যান্টিবায়ােটিকের কাজ কী ?

উত্তরঃ অ্যান্টিবায়ােটিকের কাজ হলাে- মানুষের দেহে যে সকল ক্ষতি করে, তাদেরকে ধবংস করা।

৫। অণুজীবের কাজ কী ?

উত্তরঃ অণুজীবেরা নিজেদের শরীর থেকে এমন সব রাসায়নিক জিনিস তৈরি করে যা অপর ক্ষতিকর অণুজীবদের ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে।

৬। পাঁচটি অ্যান্টিবায়ােটিকের নাম লেখাে।

উত্তরঃ পাঁচটি অ্যান্টিবায়ােটিক হলাে—পেনিসিলিন, স্ট্রেপটোমাইসিন, নিওমাইসিন, অরিওমাইসিন, গ্যারামাইসিন।

৭। পেনিসিলিন থেকে প্রস্তুত অ্যান্টিবায়ােটিকের নাম লেখাে।

উত্তরঃ পেনিসিলিন থেকে প্রস্তুত অ্যান্টিবায়ােটিক হল – অ্যাম্পিসিলিন।

৮। মানব শরীরে অ্যান্টিবায়ােটিক কীভাবে কাজ করে ?

উত্তরঃ মানব শরীরে অ্যান্টিবায়ােটিক ঢুকে ক্ষতিকর জীবাণুদের বৃদ্ধি বন্ধ করে।

৩। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।

১। অ্যান্টিবায়ােটিক কীভাবে সৃষ্ট হয় ? 

উত্তরঃ অ্যান্টিবায়ােটিক অণুজীবন দ্বারা সৃষ্ট হয়।

২। বায়ােটিক কথার অর্থ কী ?

উত্তরঃ বায়ােটিক কথার অর্থ হলাে জীবন।

৩। আমাদের রােগের প্রধান কারণ কী ?

উত্তরঃ আমাদের রােগের প্রধান কারণ হলাে জীবাণু ।

৪। পাউরুটিতে যে ছাতা পড়ে তা কী ?

উত্তরঃ পাউরুটিতে যে ছাতা পড়ে তা একধরনের অণুজীবের কলােনি।

৫। একটি ছত্রাকের নাম লেখাে।

উত্তরঃ একটি ছত্রাকের নাম পেনিসিলিয়াম নােটেটাম।

৬। পেনিসিলিনের ব্যবহার শুরু হয়েছিল কবে ?

উত্তরঃ পেনিসিলিনের ব্যবহার শুরু হয়েছিল ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে।

৪। শূন্যস্থান পূরণ করাে।

১। পাউরুটিতে যে ছাতা পড়ে তা একরকম ……………………. কলােনি।

উত্তরঃ পাউরুটিতে যে ছাতা পড়ে তা একরকম অণুজীবের কলােনি।

২। এই পৃথিবী ………………………….. পূর্ণ।

উত্তরঃ এই পৃথিবী অণুজীবে পূর্ণ।

৩। অ্যান্টিবায়ােটিক ……………………….. দ্বারা সৃষ্ট।

উত্তরঃ অ্যান্টিবায়ােটিক অণুজীব দ্বারা সৃষ্ট।

৪। অ্যাম্পিসিলিন তৈরি ……………………….. থেকে।

উত্তরঃ অ্যাম্পিসিলিন তৈরি পেনিসিলিন থেকে।

৫। লাইসােজাইম রয়েছে আমাদের ………………………..।

উত্তরঃ লাইসােজাইম রয়েছে আমাদের চোখের জলে।

৬। ডঃ ফ্লোরি পেশায় ছিলেন একজন ………………….।

উত্তরঃ ডঃ ফ্লোরি পেশায় ছিলেন একজন অধ্যাপক।

৫। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।

১। অণুজীব আমাদের কীভাবে উপকৃত করে ?

উত্তরঃ নানারকম অণুজীব পাওয়া যায় যারা নিজেদের শরীর থেকে এমন সব রাসায়নিক জিনিস তৈরি করে যা অপর ক্ষতিকর অণুজীবদের ধবংস করার ক্ষমতা রাখে।

২। অ্যান্টিবায়ােটিক কী ?

উত্তরঃ অ্যান্টি কথার অর্থ বিরুদ্ধ এবং বায়ােটিক মানে জীবন। অ্যান্টিবায়ােটিক অণুজীবন দ্বারা সৃষ্ট।

৩। অণুজীবের উপকারিতা কী ?

উত্তরঃ অণুজীব নিজেদের শরীর থেকে এমন সব রাসায়নিক জিনিস তৈরি করে যা অপর ক্ষতিকর অনুজীবদের ধবংস করার ক্ষমতা রাখে।

৪। অ্যামপিসিলিন কী ? এটি কী বস্তু থেকে তৈরি হয় ?

উত্তরঃ অমপিসিলিন হলাে একটি অ্যান্টিবায়ােটিক। এটি পেনিসিলিন থেকে তৈরি হয়।

৫। আলেকজাণ্ডার ফ্লেমিং কীসের ওপর গবেষণা করেন ?

উত্তরঃ আলেকজাণ্ডার ফ্লেমিং ১৯২৮ সালে স্ট্যাফাইলােকক্কাস নামে একধরনের জীবাণুর ওপর গবেষণা করেন।

৬। পেট্রিডিস কী ?

উত্তরঃ পেট্রিডিস হলাে এক ধরনের বিশেষ কাঁচের প্লেট।

৭। পেনিসিলিয়াম নােটেটামের কাজ কী ?

উত্তরঃ পেনিসিলিয়াম নােটেটামের কাজ হলাে জীবাণু ধ্বংস করা।

৮। কক্কাস জীবাণু ধ্বংসকারী পদার্থটির নাম কী লেখাে।

উত্তরঃ কক্কাস জীবাণু ধ্বংসকারী পদার্থটির নাম হলাে পেনিসিলিয়াম নােটেটাম।

৯। লাইসােজাইম কে আবিষ্কার করেন ?

উত্তরঃ লাইসােজাইম আবিষ্কার করেন ডঃ ফ্লেমিং।

১০। লাইসােজাইম কী ?

উত্তরঃ লাইসােজাইম হলাে এক ধরনের বস্তু যা রােগজীবাণুকে দ্রবীভূত করে শেষ করে দিতে পারে।

১১। আমাদের চোখ সবসময় ভেজা থাকে কেন ?

উত্তরঃ বাতাস বা ধূলিকণা ইত্যাদির মাধ্যমে রােগজীবাণু যাতে দেহে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য চোখ সর্বদা ভেজা থাকে।

১২। মানব শরীরের কোথায় কোথায় জীবাণু ধ্বংসকারী পদার্থ রয়েছে ?

উত্তরঃ মানব শরীরের মুখের লালা, নাক ও গলার শ্লেষ্ময়, ঘামে জীবাণু ধবংসকারী পদার্থ রয়েছে।

৬। রচনাধর্মী উত্তর লেখাে।

(ক) অ্যান্টিবায়ােটিক আবিষ্কারের কাহিনি লেখাে।

উত্তরঃ অ্যান্টি কথার অর্থ হলাে বিরুদ্ধে এবং বায়ােটিক কথার অর্থ হলাে জীবন। অ্যান্টিবায়ােটিক অণুজীবন দ্বারা সৃষ্ট। এরা আকারে এত ক্ষুদ্র যে অণুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এদেরকে খালি চোখে দেখা যায় না। এরা নিঃসঙ্গতা এড়িয়ে দলবদ্ধ হয়ে বেড়ে উঠতে সচেষ্ট থাকে। পাউরুটিতে যে ছাতা পড়ে, তা একরকম অণুজীবের কলােনি।

১৯২৮ সালে স্যার আলেকজাণ্ডার ফ্লেমিং স্ট্যাফাইলােকক্কাস নামক একধরনের জীবাণু নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছিলেন। এই স্ট্যাফাইলােকক্কাস হলাে একধরনের দুরন্ত জীবাণু এবং অনেক রােগের কারণও। গবেষণাগারে এক বিশেষ ধরনের কাচের প্লেট পেট্রিডিসে ফ্লেমিং এই জীবাণু নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছিলেন। তিনি ভাবছিলেন কি করে ঐ রােগজীবাণুকে নিস্তেজ ও দুর্বল করে দেওয়া সম্ভব।

হঠাৎ একদিন ফ্লেমিং-এর গবেষণা পাত্রের উপর বাতাস থেকে কী একটা উড়ে এসে পড়লে, ফ্লেমিং লক্ষ্য করলেন কক্কাস জীবাণুর উপর সবুজ রংয়ের ছাতা গজিয়েছে। বর্ষাকালে জুতােয় যে ধরনের ছাতলা পড়ে, অনেকটা সেইরকমই।

গবেষণা পাত্রটি না ফেলে তিনি সেটি টেবিলের এক পাশে সরিয়ে রাখলেন। কয়েকদিন বাদে ফ্লেমিং লক্ষ্য করলেন আশ্চর্য ব্যাপার, ঐ ছাতলার। নীচে দুরন্ত কক্কাস জীবাণুগুলি একেবারে গলে গিয়েছে। যে জীবাণুর দৌরাত্ম ধবংস করার জন্য ফ্লেমিং দীর্ঘদিন ধরে নিরলস চেষ্টা চালাচ্ছিলেন, আজ কোন অদৃশ্য বস্তু এসে অবলীলাক্রমে তার মৃত্যু ঘটাল। এই ছত্রাকটিই হলাে পেনিসিলিয়াম নােটেটাম। এর জীবাণু ধবংসকারী ক্ষমতা দেখে সমগ্র বিশ্ব হতচকিত হয়ে গেল। ১৯২৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফ্লেমিং এই ছত্রাক পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। কিন্তু প্রকৃত পেনিসিলিনের ব্যবহার শুরু হয় এর ১৪ বছর পরে অর্থাৎ ১৯৪২ খ্রিঃ।

কোনাে কোনাে জীবাণুর যেমন—ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এবং শৈবাল-এর দেহ থেকে এমন পদাথ উৎপন্ন হয় যা অল্প পরিমাণে অপুর জীবাণুকে ধবংস করে কিংবা অন্য জীবাণুর বংশবৃদ্ধি ব্যাহত করে। এই সমস্ত পদার্থকেই বলা হয় অ্যান্টিবায়ােটিক। প্রকৃতপক্ষে অ্যান্টিবায়ােটিকের ইতিহাস খুবই অল্পদিনের ইতিহাস, মাত্র ৮০ বছর এর সময়কাল। কিন্তু এই অল্প সময়ের মধ্যেই আবিষ্কৃত হয়েছে ১টি করে অ্যান্টিবায়ােটিক।

ভিন্ন ভিন্ন জীবাণু ভিন্ন ভিন্ন অ্যান্টিবায়ােটিক উৎপন্ন করে থাকে এবং এগুলাে ক্রিয়াও করে ভিন্ন ভিন্ন জীবাণুর উপর। তবে অ্যান্টিবায়ােটিক গুলাের শতকরা ৫০ ভাগই উৎপন্ন হয় অ্যাকটিনােমাইসিটিস নামক গােষ্ঠির ব্যাকটেরিয়া থেকে এবং এই ব্যাকটেরিয়াগুলাে আবার প্রধানত স্ট্রেপটোমাইসিস গণভুক্ত। ব্যাসিলাস গণভুক্ত ব্যাকটেরিয়াটিও বেশ কিছু অ্যান্টিবায়ােটিক উৎপন্ন করে থাকে। কতকগুলাে অ্যান্টিবায়ােটিক আবার ছত্রাক থেকে উৎপন্ন হয়, যেমন- পেনিসিলিন, সেফালােস্পােরিন, গ্রিসিওকালভিন ইত্যাদি।

৩০০০ অ্যান্টিবায়ােটিকের সবকটিই যে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে তা নয়। তবে এদের মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যকই ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই সংখ্যাটা ক্রমাগত বাড়ছে। অতি পরিচিত কয়েকটি অ্যান্টিবায়ােটিক হলাে পেনিসিলিন, স্ট্রেপটোমাইসিন, ক্লোরামফেনিকল ইত্যাদি যক্ষ্মা, নিউমােনিয়া, সেপসিস ইত্যাদি বিভিন্ন অসুখে অ্যান্টিবায়ােটিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। অপারেশনের ক্ষেত্রে তাে অ্যান্টিবায়ােটিক ব্যবহার করতেই হয়।

(খ) পেনিসিলিন কী ? মানব জীবনে পেনিসিলিনের ভূমিকা বর্ণনা করাে।

উত্তরঃ সর্বপ্রথম আবিষ্কৃত অ্যান্টিবায়ােটিক হলাে পেনিসিলিন। এই জীবনদায়ী ওষুধে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আহত হাজার হাজার সৈনিকের প্রাণ সেপ্টিসেমিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

বৈজ্ঞানিক আলেকজাণ্ডার ফ্লেমিং এর পরীক্ষাগারে সম্পূর্ণ অভাবনীয়ভাবে সর্বপ্রথম এই পেনিসিলিন আবিষ্কৃত হয়। বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার যে আকস্মিকতা, ভাগ্য ও দূরদর্শিতার সম্মিলিত ফলশ্রুতি, তার আরও একটি নিদর্শন, পেনিসিলিনের এই আবিষ্কারের ঘটনাটি। ব্রিটিশ জীবাণুবিদ (Bacteriologist) ফ্লেমিং তার পরীক্ষাগারে কিছু পেট্রি ডিশ (petri dish) পরিষ্কার করার সময় লক্ষ্য করেন যে স্ট্যাফাইলােকক্কাস’ (Staphylococcus) রােগবাহী জীবাণুর বেশ কিছু উপনিবেশের (Colony) সম্পূর্ণ বিলুপ্তি ঘটেছে, কোনাে বিজাতীয় পদার্থের সংক্রমণে। তিনি অনুমান করলেন, নিশ্চিত Penicillium notatum নামক ছত্রাকটি (mold) এমন কিছু জীবাণু প্রতিরােধী পদার্থ তৈরি করেছে, যার ফলে ঐ উপনিবেশগুলি নিশ্চিহ্ন হয়েছে। মূলত, ঐ জীবাণু কোষগুলির কোষপ্রাচীর ধবংসপ্রাপ্ত (lysis) হয়। 

তিনি আরও অন্যান্য রােগবাহী জীবাণু নিয়ে গবেষণা চালিয়ে একই ফল পান। তার অনুমান সঠিক প্রমাণিত হলাে। তিনি ঐ অজ্ঞাত পদার্থটির নাম দেন পেনিসিলিন (penicillin) (1828-29)। এই ঘটনার পর প্রায় দশ বৎসর পর্যন্ত বিজ্ঞানী মহলে এটি সেরকম গুরুত্ব লাভ করেনি, যদিও তারা বিষয়টি সম্বন্ধে সম্যক অবগত ছিলেন। ১৯৩২ সালে ক্লাটার ব্যাঙ্ক ও সহকর্মীরা (Clutterbank et.al) ঐ অজানা পদার্থটির পৃথকীকরণের প্রচেষ্টায় সফলতা পাননি। কেননা হিসাবে বলা যায়, নিষ্কাশন প্রক্রিয়ায় অম্লযুক্ত জলীয় নির্যাস (acidified broth) হতে দ্রাবক ইথারে (diethyl ether) আনার সময়ে পেনিসিলিনের সম্পূর্ণ বিয়ােজন ঘটে । এছাড়া পেনিসিলিনেজ (penicillinase) নামক উৎসেচক (enzyme), অধিকন্তু পেনিসিলিনের কার্যকরী ক্ষমতা দ্রুত নষ্ট করে।

১৯৪০ সালে দুই ইংরেজ বিজ্ঞানী- চেইন ও ফ্লোরি (Chain and Florey) -প্রথমজন জীবরসায়নবিদ ও দ্বিতীয়জন প্যাথােলজিস্ট- দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথম বছর, পেনিসিলিন নিষ্কাশন ও শুদ্ধিকরণের (extraction and purification) পর, জীবিত পশুর শরীরে প্রয়ােগ করেন, ফলাফলের পরীক্ষার উদ্দেশ্যে।

এর পরের বছর, আব্রাহাম ও সহকর্মীরা (Abraham et.al, 1941) সর্বপ্রথম এই চিকিৎসার পরীক্ষা, রুগ্ন মানুষের দেহের উপর করেন। শল্যচিকিৎসকেরা এদের চিকিৎসার পর নিরাশ হয়ে কম জবাব দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি সবাই সুস্থ হয়ে ওঠেন। মৃত্যুর কারণ ছিল, পর্যাপ্ত পরিমাণ পেনিসিলিনের অভাব এবং সহজলভ্যতা।

(গ) অ্যান্টিবায়ােটিক কীভাবে মানুষের উপকার সাধন করে বিশদ বর্ণনা করাে।

উত্তরঃ চিকিৎসাক্ষেত্রে বর্তমানে অ্যান্টিবায়ােটিকগুলাে যথেচ্ছভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। একথা অনেকেরই জানা নেই যে, কোনাে শক্তিশালী ওষুধ শরীরে ক্রিয়া করলে তার কিছু প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে। এরূপ প্রতিক্রিয়া অনেক সময় জীবন সংশয় করে তুলতে পরে। এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটতে দেখা যাচ্ছে যে রােগী সামান্য জ্বরে বা সর্দিকাশিতে প্রয়ােজনের চাইতে বেশিমাত্রায় অর্থাৎ বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যান্টিবায়ােটিক ব্যবহার করছেন এবং তা ব্যবহার করছেন কোনাে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই আবার কখনও বা ওষুধের দোকানের কর্মচারীর পরামর্শে রােগী এই সকল ওষুধ ব্যবহার করছেন। কখনও আবার দেখা যাচ্ছে ডাক্তারবাবু কোনাে একটি অ্যান্টিবায়ােটিক ওষুধের একটি সম্পূর্ণ ডােজ খেতে বললেন রােগীকে। রােগী ওষুধটা খেতে শুরু করলেন এবং ডােজটা শেষ হওয়ার আগেই অসুখটা সেরে গেল। ব্যাস! রােগী ডাক্তারবাবুর পরামর্শের আর প্রয়ােজন বােধ করলেন না এবং যেহেতু অসুখ সেরে গেছে অতএব ওষুধ খাওয়াও বন্ধ করে দিলেন, ডােজটা সম্পূর্ণ করলেন না। কিন্তু এদের অনেকেরই হয়তাে জানা নেই যে এইভাবে অর্ধসমাপ্ত অ্যান্টিবায়ােটিক ব্যবহারের ফলে জীবাণু নির্মূল হয় না, উল্টে জীবাণুরা তখন এই ওষুধগুলােকে প্রতিহত করে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবার ক্ষমতা অর্জন করে অর্থাৎ এরা অ্যান্টিবায়ােটিক সহনশীল হয়ে ওঠে। ফলে একই রােগ সারাতে তখন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন অ্যান্টিবায়ােটিক প্রয়ােগ করতে হয়। এই ভাবে চললে এমন একটা দিন আসবে যখন এই অ্যান্টিবায়ােটিক গুলাে আর কোনাে কাজেই লাগবে না। আর তার শুরু যে ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে তার প্রমাণ হিসেবে আমরা দেখতে পাচ্ছি ফ্লেমিং যে পেনিসিলিন আবিষ্কার করেছিলেন সেই পেনিসিলিন, ছাড়াও আবিষ্কার হয়েছে বেশ কিছু বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন সেমিসিন্থেটিক পেনিসিলিন, যেমন- অ্যাম্পিসিলিন, অ্যামােক্সিসিলিন ইত্যাদি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top