Class 10 Bengali Chapter 11 অরুণিমা সিনহা : আত্মবিশ্বাস ও সাহসের এক নাম Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 10 Bengali Chapter 11 অরুণিমা সিনহা : আত্মবিশ্বাস ও সাহসের এক নাম and select needs one.
Class 10 Bengali Chapter 11 অরুণিমা সিনহা : আত্মবিশ্বাস ও সাহসের এক নাম
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 10 Bengali Chapter 11 অরুণিমা সিনহা : আত্মবিশ্বাস ও সাহসের এক নাম Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 10 Bengali Chapter 11 অরুণিমা সিনহা : আত্মবিশ্বাস ও সাহসের এক নাম These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 10 Bengali Chapter 11 অরুণিমা সিনহা : আত্মবিশ্বাস ও সাহসের এক নাম for All Subject, You can practice these here…
অরুণিমা সিনহা : আত্মবিশ্বাস ও সাহসের এক নাম
Chapter – 11
অনুশীলনীর প্ৰশ্নোত্তরঃ
১। অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
(ক) অরুণিমা রেলগাড়িতে চড়ে কোথায় যাচ্ছিল?
উত্তরঃ অরুণিমা রেলগাড়িতে লখনউ থেকে দিল্লী যাচ্ছিল।
(খ) অরুণিমার বয়স কত ছিল?
উত্তরঃ অরুণিমার বয়স ছিল ২৬।
(গ) অরুণিমা কোন খেলায় পারদর্শী ছিল?
উত্তরঃ অরুণিমা ভলিবল খেলায় পারদর্শী ছিল।
(ঘ) কখন অরুণিমার হিমালয়ের শিখরে ওঠার স্বপ্ন তীব্র হয়ে উঠেছিল?
উত্তরঃ দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় অরুণিমার হিমালয়ের শিখরে ওঠার স্বপ্ন তীব্র হয়ে উঠেছিল।
(ঙ) অরুণিমা কী কী সম্মান লাভ করেছিল?
উত্তরঃ ভারত সরকার অরুণিমাকে ২০১৫ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে বিভূষিত করেছিল। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে অরুণিমা ২০১৫ সালের ‘তেনজিং নোরগে সম্মান’ লাভ করে। ২০১৪ সালে ড. এ.পি.জে. আব্দুল কালামের কাছ থেকে ‘অ্যামেজিং ইন্ডিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদি অরুণিমার লেখা বই উন্মোচন করে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
(ক) অরুণিমা কেন ডাকাতদের হাতে তার সোনার চেন দিতে চায় নি?
উত্তরঃ সোনার চেনটি মায়ের দেওয়া আশীর্বাদ ছিল তাই অরুণিমা ডাকাতদের হাতে দিতে চায় নি।
(খ) কারা অরুণিমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল?
উত্তরঃ অরুণিমার বোন, পর্বতারোহী বাচেন্দ্রী পাল, ক্রিকেট খেলোয়াড় যুবরাজ সিং, অরুণিমাকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল।
(গ) কোন ক্রিকেটার অরুণিমাকে বিশেষ অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন? তিনি নিজে কোন অসুখে ভুগছিলেন?
উত্তরঃ ক্রিকেটার যুবরাজ সিং অরুণিমাকে বিশেষ অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন, তিনি নিজে ক্যান্সারে ভুগছিলেন।
(ঘ) অরুণিমা প্রথমে কোন পর্বতে আরোহণ করেছিলেন? তার উচ্চতা কত?
উত্তরঃ লাদাখে অবস্থিত শামসের কাংরির পর্বতে আরোহণ করেছিলেন। তার উচ্চতা ২১,৭১৮ ফুট।
(ঙ) স্টিফেন হকিং কে? তাঁর কী অসুবিধা ছিল?
উত্তরঃ স্টিফেন হকিং একজন বিজ্ঞানী। তিনি শারীরিকভাবে অক্ষম ছিলেন।
৩। দীর্ঘ উত্তর লেখো-
(ক) অরুণিমা কোন ঘটনায় পা হারিয়ে ছিল? এই ঘটনা কি তাকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পেরেছিল?
উত্তরঃ অরুণিমা সিনহা ২৬ বছরের একজন যুবতী। বাড়ি উত্তরপ্রদেশে। অরুণিমা একজন ভালো ভলিবল খেলোয়াড়। জাতীয় পর্যায়ে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে।
২০১১ সালের কোনো একদিন রেলগাড়িতে লখনউ থেকে দিল্লীর দিকে যাচ্ছিল। চলন্ত রেলগাড়িতে একদল দুষ্কৃতি লুঠপাট শুরু করে। চলন্ত রেলগাড়ির কামরায় তখন অনেক যাত্রী। সবাই আতঙ্কিত। কেউ কাউকে সাহস জোগানোর মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না। বরং ডাকাতদলের দাবী মতো হাতের, কানের এবং গলার অলংকাব সহ যার যেটুকু টাকাপয়সা ছিল সবই বিনা প্রতিবাদে প্রাণের ভয়ে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে।
একমাত্র ব্যতিক্রম ছিল অরুণিমা সিনহা। রেলের ডাকাতির খবর পুলিশ বা গার্ড কারো কাছেই ছিল না। ডাকাতদলের একজন অরুণিমাকে বারবার ধমক দিতে লাগল। অরুণিমার গলায় একটি সোনার চেন ছিল ডাকাতরা সেটি নিতে চাইল। চেন না দিলে পরিণাম ভালো হবে না বলে হুমকি দিতে লাগল। কিন্তু অরুণিমা নিরুদ্বেগ, অসংকুচিত এবং তার দুচোখে সাহস। অরুণিমা বলল— গলার সোনার চেনটি তার মায়ের দেওয়া আশীর্বাদ। এতে মায়ের হাতের স্পর্শ লেগে রয়েছে। কিছুতেই দেবে না। রেলগাড়ির একই কামরায় থাকা অন্যান্য যাত্রীরা চোখের ইশারা করে অরুণিমাকে চেন দিয়ে দিতে বলছিল। কিন্তু সাহসিনী অরুণিমা কোনো অন্যায়ের কাছেই মাথা নত করার মেয়ে নয়। তারপরেই ডাকাতদল অরুণিমার সাথে নৃশংস আচরণ করল। দুজন ডাকাত এগিয়ে এসে কেউ আটকানোর আগেই অরুণিমাকে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে চলন্ত রেলগাড়ির থেকে দরজা খুলে বাইরের অন্ধকারে ছুঁড়ে দিল। সে সময় অন্য একটি রেলগাড়ি আসছিল। অরুণিমা চলন্ত রেলগাড়িতে ধাক্কা খেয়ে বস্তার মতো নিচে পড়ে গেল। অরুণিমা প্রাণপনে চিৎকার করলেও রেলইঞ্জিন ও চাকার শব্দে তার গলার আওয়াজ শোনা গেল না। প্রায় সাত সে রেললাইনের উপর পড়ে থাকল এবং এই সময়ের মধ্যে তিনটি রেলগাড়ি চলে গেল। রাতের অন্ধকারে অরুণিমাকে কেউ দেখতে পায়নি অথবা ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। ভোর হওয়ার পর দেখা গেল লখনউ দিল্লিগামী রেললাইনের কাছে গুরুতরভাবে আহত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক যুবতী। প্রথমে বেরিলি হাসপাতালে তারপর দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা হল। কেউ কেউ মন্তব্য করল টিকিট কাটা ছিল না তাই টিটিকে দেখে অরুণিমা রেল কামরা থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল। আবার কেউ মন্তব্য করল কোনো কারণবশতঃ অরুণিমা হয়তো আত্মহত্যা করার জন্য রেললাইনে গিয়েছিল। সব কথাই অরুণিমা শুনেছিল। এগুলি তার মনকে দুঃখ দেওয়া ছাড়াও চ্যালেঞ্জ হিসেবে নতুন করে জীবনকে গড়ে তুলতে সংকল্পবদ্ধ করেছিল। রেলদুর্ঘটনায় অরুণিমা একটি পা চিরদিনের জন্য হারাল এবং অন্য একটি পায়ে লোহার রড ঢুকিয়ে তার সাহায্যে চলাফেরা করতে সক্ষম হল। হারানো পায়ে কৃত্রিম-পা সংযোজন করা হল।
না, রেলের ঘটনা অরুণিমাকে নিজের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার সময় অরুণিমার মনে হিমালয়ের শিখরে ওঠার স্বপ্ন তীব্র হয়ে উঠল। এভারেস্ট বিজয়ের আকাঙ্ক্ষায় সে পায়ের ব্যথা ও বিকলাঙ্গতার কথা ভুলে গেল।
(খ) পর্বত অভিযানে অরুণিমা কী ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছিল? কীভাবে তা অতিক্রম করেছিল?
উত্তরঃ হাসপাতালের বিছানাতে শুয়েই অরুণিমা পর্বত অভিযানের পরিকল্পনা শুরু করে দিল। তার মনে এল বাচেন্দ্রী পালের কথা। চারমাস পরে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়ে বাড়িতে না গিয়ে সরাসরি বাচেন্দ্রী পালের সাথে দেখা করল। বাচেন্দ্রী পাল তাকে সাহস জোগালেন। অরুণিমার দুচোখের স্বপ্ন, চ্যালেঞ্জ আত্মপ্রত্যয় দেখে বাচেন্দ্রী পালের মনে বিশ্বাস জাগল যে সঠিক প্রশিক্ষণ ও সাহস পেলে মেয়েটি নিশ্চয়ই নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। অরুণিমার আকাঙ্ক্ষা দেখে অনেকেই পরামর্শ দিয়েছিল যে একটি কৃত্রিম পা, অন্যটি থেকেও না থাকার মতো, হিমালয় পর্বতারোহণ অত্যন্ত কঠিন কাজ পরিশ্রম সাপেক্ষ। এরকম পরিস্থিতিতে সাফল্যলাভ করা সম্ভব নয়। তার থেকে সাধারণ জীবনযাপন করাই উচিত। বিপদ ডেকে না আনাই ভালো।
কিন্তু প্রচণ্ড সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী অরুণিমা লক্ষ্য স্থির রেখে দিনে দিনে এগিয়ে যাচ্ছিল। আগে লাগানো কৃত্রিম পা-টি পর্বত অভিযানের উপযুক্ত ছিল না। নতুন পা লাগাতে ৬০-৭০ হাজার টাকার প্রয়োজন। অনেক চেষ্টার পরে সে টাকাও জোগাড় হল। বেশ কিছু সহৃদয় ব্যক্তি সাহায্য করলেন। একটি কৃত্রিম পা অপরটি লোহার রডের সাহায্যে চলাফেরা করা, এই পায়ের সাহায্যে অরুণিমা অদম্য উৎসাহ এবং দুচোখে হাজার স্বপ্ন নিয়ে উত্তরকাশীতে থাকা ইকো এভারেস্ট এক্সপিডিশন গ্রুপে যোগ দিল। টাটা স্টিল অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন পরিচালিত অনুশীলন ক্যাম্পে এভারেস্ট বিজয়িনী বাচেন্দ্রী পালের তত্ত্বাবধানে তার অনুশীলন চলল।
শারীরিক ও মানসিকভাবে দৃঢ় অরুণিমার অধ্যাবসায়ের কোনো অভাব ছিল না। পা হারানোর দুর্ভাগ্যকে সৌভাগ্যে পরিণত করার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। প্রায় এক বছর এক নাগাড়ে উৎসাহ উদ্যম নিয়ে চেষ্টা অব্যাহত রেখে অরুণিমা অনুশীলনে আত্মমগ্ন ছিল। কখনো এমন অবস্থা হয়েছিল অন্যান্য স্বাভাবিক মানুষের যা শিখতে দু মিনিট লাগে অরুণিমার ক্ষেত্রে লাগত তিন। তা সত্ত্বেও সে নিজের সংকল্প থেকে সরে আসেনি।
অরুণিমার পর্বতারোহণ অভিযানে সাহায্যকারী নেপালী লোকটিও তাঁর রক্তভেজা পায়ের অবস্থা দেখে প্রাণ বাঁচানোর জন্য ফিরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। কিন্তু অরুণিমা কোনো প্রকার বাধা বিপত্তির কাছে হার মানতে শেখেনি।
অবশেষে লাদাখে অবস্থিত শামসের কাংরির ২১৭১৮ ফুট উচ্চতায় আরোহণ করতে সে সক্ষম হয়। কাংরির উচ্চতম শিখরের মাত্র ৬৯০ ফুট অতিক্রম করা বাকি থাকতেই তারা অভিযান বন্ধ রেখেই নীচে নেমে আসতে বাধ্য হয়। পরে এই অসম্পূর্ণতাই তার মনে পূর্বের সংকল্প আরো দৃঢ় করেছিল।
(গ) অরুণিমা সিনহার এভারেস্ট বিজয়ের কাহিনি বর্ণনা করো।
উত্তরঃ লাদাখে অবস্থিত শামসের কাংরির উচ্চতম শিখরের মাত্র ৬৯০ ফুট অতিক্রম করতে বাকি থাকতেই অরুণিমা সিনহা অভিযান বন্ধ রেখে নীচে নেমে আসতে বাধ্য হয়। এই অসম্পূর্ণতাই অরুণিমার সংকল্পকে আরো দৃঢ় করেছিল। এই সময় অরুণিমাকে আরো মনোবল জুগিয়েছিলেন প্রখ্যাত ক্রিকেটার যুবরাজ সিং। যুবরাজ দেখিয়েছিলেন মনের বল এবং আত্মবিশ্বাস থাকলে শারীরিক বাধা কোনো প্রতিরোধ সৃষ্টি করতে পারে না এবং জীবনের উত্তরণের পথে কোনো বাধা হতে পারে না।
মাউন্ট শামসের কাংরির শিখরে না ওঠার বেদনা অরুণিমার মনোবল কমাতে পারেনি। বরং সেই অবস্থায় ২১,১০৮ ফুট ওপরে যাবার মনোবল তার মনে মাউন্ট এভারেস্ট যাওয়া যে সম্ভব সেটি আরো দৃঢ় করে তুলল। এবার মাউন্ট এভারেস্ট জয় করতে প্রস্তুত হল অরুণিমা, মাউন্ট এভারেস্টের শিখরে উঠে ফটো তোলার, ভিডিওর মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে নিজের বিরল অভিজ্ঞতার বিষয়ে জানানোর জন্য দুটি ক্যামেরা সঙ্গে নিয়েছিল। জল ও অক্সিজেন নিয়েছিল। চার নম্বর ক্যাম্পে পৌঁছাতেই অরুণিমার দুটি পা থেকে রক্ত ঝরে ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। সঙ্গে থাকা শেরপা বারংবার সতর্ক করে দিচ্ছিল যে যেকোনো মুহূর্তে অক্সিজেন শেষ হতে পারে, তখন মৃত্যুর কোলে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। জেদী অরুণিমা জানিয়েছিল—এত দূর এগিয়ে ফিরে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই—যা হয় দেখা যাবে। অদম্য সাহস এবং উৎসাহ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল। রক্ত ঝরতে থাকা দুটি হাঁটু থেকে রুমাল দিয়ে রক্ত মুছতে মুছতে এগিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় বহু অভিযাত্রীর মৃতদেহ দেখতে পায়। কিন্তু কিছুই অরুণিমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। প্রচণ্ড পরিশ্রম, অদম্য মনোবল এবং কষ্টসহিষ্ণুতার ফল অবশেষে মিলল। কাঠমাণ্ডু থেকে যাত্রা শুরু করার ৫২ দিন পর অবশেষে রাত ৮টায় সে ৮৮৪৮ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত মাউন্ট এভারেস্টের শিখরে পদার্পণ করতে সক্ষম হল। অনেক অভিযাত্রীরাই সেই স্থানে পৌঁছানোর পর সঙ্গে নেওয়া অক্সিজেন প্রায় ফুরিয়ে আসে। তাই এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেই দ্রুত নেমে আসতে বাধ্য হয়। কারণ অক্সিজেন শেষ হবার আগেই উপর থেকে নেমে আসা পথের প্রথম ক্যাম্পে পৌঁছাতেই হবে। অরুণিমার অক্সিজেনও প্রায় ফুরিয়ে আসছিল। সঙ্গে থাকা শেরপাকে মাউন্ট এভারেস্টের শিখরে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ছবি ও ভিডিও তুলতে অনুরোধ করেছিল। শেরপা বলেছিল এখানে বেশি সময় অপেক্ষা করলে প্রাণ সংশয় হতে পারে, একথা বুঝিয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা হাতে দণ্ডায়মান অরুণিমার ছবি তুলে দিয়েছিল। তারপরেও অরুণিমা দেড়ঘন্টা মতো এভারেস্টে ছিল। সেই তারিখটি ছিল ২০১৩ সালের ২১শে মে।
১। নিচের বিশিষ্টার্থক বাক্যাংশগুলোর সাহায্যে সার্থক বাক্য রচনা করো।
রাহুর দশা; আক্কেল সেলামী; বালির বাঁধ; গোড়ায় গলদ; চাঁদের হাট।
উত্তরঃ রাহুর দশা– তোমার অবস্থা তো এখন রাহুর দশা।
আক্কেল সেলামী— শ্রীপদ বন্ধুর কথায় চায়ের ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক টাকার আক্কেল সেলামী দিল।
বালির বাঁধ— রাজনৈতিক আঁতাত বালির বাঁধের মতোই দেখা যায়।
গোড়ায় গলদ— আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় গোড়ায় গলদ রয়েছে বলে এই অবস্থা।
চাঁদের হাট— সাহিত্য সভায় একেবারে চাঁদের হাট বসেছে।
২। প্রবচনগুলির অর্থ উল্লেখ করে বাক্যে প্রয়োগ করো।
ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে; বানরের গলায় মুক্তোর মালা; দশচক্রে ভগবান ভূত; পেটে খেলে পিটে সয়; ভাগের মা গঙ্গা পায় না।
উত্তরঃ ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে (নিজের সম্ভাব্য দুঃসময়ের কথা না ভেবে অন্যের দুঃসময়ে মজা পাওয়া) — রামবাবুর দুঃসময়ের কথা জেনে পাড়ার অনেকেই হাসছে, এ যেন ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে।
বানরের গলায় মুক্তোর মালা (অনুপযুক্ত লোককে দায়িত্ব প্রদান) – হরিপদ বাবুকে পুজোর সেক্রেটারী করে বানরের গলায় মুক্তোর মালা দেওয়া হল।
দশচক্রে ভগবান ভূত (অনেকে মিলে ভালকে খারাপ করা)—ডিপার্টমেন্টের সবাই যেখানে ঘুষ খায়, সেখানে ঘুষ না নেওয়া, দশচক্রে ভগবানও ভূত হয়ে যায়।
পেটে খেলে পিটে সয়— লাভের আশা থাকলে দংখকষ্ট বরণ করা যায়।
ভাগের মা গঙ্গা পায় না (অনেকে থাকতেও কেউ দেখার নেই)– রমাদেবীর চারটি ছেলে থাকতেও কেউ দেখার নেই এ যেন ভাগের মা গঙ্গা পায় না।
৩। উপযুক্ত বিরামচিহ্নের ব্যবহার।
হে ভারত ভুলিও না নীচ জাতি মূর্খ দরিদ্র অজ্ঞ মুচি মেথর তোমার রক্ত তোমার ভাই হে বীর সাহস অবলম্বন কর সদর্পে বল আমি ভারতবাসী ভারতবাসী আমার ভাই বল মূর্খভারতবাসী দরিদ্র ভারতবাসী ব্রাহ্মণ ভারতবাসী চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই ভারতবাসী আমার প্রাণ ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা যৌবনের উপবন বার্ধক্যের বারাণসী বল ভাই ভারতবাসী মৃত্তিকা আমার স্বর্গ ভারতের কল্যাণ আমার কল্যাণ আর বল দিনরাত মা আমার দুর্বলতা কাপুরুষতা দূর কর আমায় মানুষ কর।
উত্তরঃ হে ভারত ভুলিও না। নীচ জাতি মূর্খ দরিদ্র অজ্ঞ মুচি মেথর তোমার রক্ত তোমার ভাই, হে বীর সাহস অবলম্বন কর। সদর্পে বল— আমি ভারতবাসী। ভারতবাসী আমার ভাই, বল মূর্খ ভারতবাসী দরিদ্র ভারতবাসী ব্রাহ্মণ ভারতবাসী চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই, ভারতবাসী আমার প্রাণ। ভারতের সমাজ আমার শিশুশয্যা— যৌবনের উপবন বার্ধক্যের বারাণসী। বল ভাই ভারতবাসী মৃত্তিকা আমার স্বর্গ, ভারতের কল্যাণ আমার কল্যাণ। আর বল দিনরাত মা আমার দুর্বলতা কাপুরুষতা দূর কর আমায় মানুষ কর।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।
১। অরুণিমার বাড়ি কোথায়?
উত্তরঃ অরুণিমার বাড়ি উত্তরপ্রদেশে।
২। অরুণিমার বয়স কত?
উত্তরঃ অরুণিমার বসয় ২৬
৩। অরুণিমার মা অরুণিমাকে কী দিয়েছিল?
উত্তরঃ অরুণিমার মা অরুণিমাকে সোনার চেন দিয়েছিল।
৪। অরুণিমা কী খেলত?
উত্তরঃ অরুণিমা ভলিবল খেলত।
৫। অরুণিমা রেলে কোথায় যাচ্ছিল?
উত্তরঃ অরুণিমা রেলে লখনউ থেকে দিল্লি যাচ্ছিল।
৬। অরুণিমাকে রেলগাড়ি থেকে কারা ফেলে দিয়েছিল?
উত্তরঃ অরুণিমাকে রেলগাড়ি থেকে ডাকাতরা ফেলে দিয়েছিল।
৭। অরুণিমা রেললাইনের ধারে কতক্ষণ পড়েছিল?
উত্তরঃ অরুণিমা রেললাইনের ধারে প্রায় সাত ঘণ্টা পড়েছিল।
৮। অরুণিমার চিকিৎসা কোথায় হয়েছিল?
উত্তরঃ অরুণিমার চিকিৎসা প্রথমে ‘বেরিলি’ হাসপাতালে তারপর দিল্লির ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে’ হয়েছিল।
৯। অরুণিমা কত দিন হাসপাতালে ছিল?
উত্তরঃ অরুণিমা চারমাস হাসপাতালে ছিল।
১০। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার সময় অরুণিমা কী স্বপ্ন দেখেছিল?
উত্তরঃ হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকার সময় অরুণিমা হিমালয়ের শিখরে ওঠার স্বপ্ন দেখেছিল।
১১। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে অরুণিমা কার সাথে দেখা করল?
উত্তরঃ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে অরুণিমা বাচেন্দ্রী পালের সাথে দেখা করল।
১২। কোন পা-টি পর্বতারোহণের উপযুক্ত ছিল না?
উত্তরঃ অরুণিমার কৃত্রিম পা-টি পর্বতারোহণের উপযুক্ত ছিল না।
১৩। কৃত্রিম পা ছাড়া আরেকটি পায়ে কি লাগানো ছিল?
উত্তরঃ কৃত্রিম পা ছাড়া আরেকটি পায়ে লোহার রড় লাগানো ছিল।
১৪। নতুন পা লাগাতে কত টাকার প্রয়োজন ছিল?
উত্তরঃ নতুন পা লাগাতে ৬০-৭০ হাজার টাকার প্রয়োজন ছিল।
১৫। উত্তরকাশীতে অরুণিমা কিসে যোগ দিল?
উত্তরঃ উত্তরকাশীতে অরুণিমা ইকো এভারেস্ট এক্সপিডিশন’ গ্রুপে যোগ দিল।
১৬। কোন অনুশীলন ক্যাম্পে অরুণিমা যোগ দিয়েছিল?
উত্তরঃ টাটা স্টিল অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন পরিচালিত অনুশীলন ক্যাম্পে অরুণিমা যোগ দিয়েছিল।
১৭। কার তত্ত্বাবধানে অরুণিমা অনুশীলন করেছিল?
উত্তরঃ বাচেন্দ্রী পালের তত্ত্বাবধানে অরুণিমা অনুশীলন করেছিল।
১৮। নেপালি লোকটি অরুণিমাকে কেন ফিরে যেতে বলেছিল?
উত্তরঃ রক্তভেজা পায়ের অবস্থা দেখে প্রাণ বাঁচাতে নেপালি লোকটি অরুণিমাকে ফিরে যেতে বলেছিল।
১৯। শামসের কাংরি কোথায় অবস্থিত?
উত্তরঃ শামসের কাংরি লাদাখে অবস্থিত।
২০। শামসের কাংরির কত ফুট উচ্চতায় উঠতে অরুণিমা সক্ষম হয়েছিল?
উত্তরঃ শামসের কাংরির ২১,৭১৮ ফুট উচ্চতায় উঠতে অরুণিমা সক্ষম হয়েছিল।
২১। উচ্চতম শিখরের কত ফুট অতিক্রম করতে বাকি ছিল?
উত্তরঃ উচ্চতম শিখরের ৬৯০ ফুট অতিক্রম করতে বাকি ছিল।
২২। যুবরাজ সিং কোন রোগে আক্রান্ত?
উত্তরঃ যুবরাজ সিং ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত।
২৩। মাউন্ট এভারেস্টে ওঠার সময় অরুণিমা কী সাথে নিয়েছিল?
উত্তরঃ মাউন্ট এভারেস্টে ওঠার সময় অরুণিমা দুটি ক্যামেরা, জল ও অক্সিজেন নিয়েছিল।
২৪। অরুণিমা এভারেস্টের শিখরে কবে পৌঁছেছিল।
উত্তরঃ ২০১৩ সালের ২১শে মে অরুণিমা এভারেস্টের শিখরে পৌঁছে ছিল।
২৫। এভারেস্টে কতক্ষণ ছিল?
উত্তরঃ এভারেস্টে অরুণিমা দেড় ঘণ্টা ছিল।
২৬। এভারেস্টে অরুণিমা কী হাতে নিয়ে ছবি তুলেছিল?
উত্তরঃ এভারেস্টে অরুণিমা জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে ছবি তুলেছিল।
২৭। মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা কত?
উত্তরঃ মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা ৮,৮৪৮ মিটার।
২৮। কাঠমাণ্ডু থেকে যাত্রা শুরু করার কতদিন পরে এভারেস্টে পৌঁছেছিল?
উত্তরঃ কাঠমাণ্ডু থেকে যাত্রা শুরু করার ৫২ দিন পরে এভারেস্টে পৌঁছেছিল।
২৯। ভারত সরকার তাকে কোন সম্মানে বিভূষিত করেছিল?
উত্তরঃ ভারত সরকার তাকে ২০১৫ সালে পদ্মশ্রী সম্মানে বিভূষিত করেছিল।
৩০। অরুণিমা ড. এ.পি.জে. আব্দুল কালামের কাছ থেকে কি পুরস্কার লাভ করে।
উত্তরঃ অরুণিমা ড. এ.পি.জে. আব্দুল কালামের কাছ থেকে ‘অ্যামেজিং ইন্ডিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করে।
ব্যাকরণ
সন্ধিবিচ্ছেদ কর।
সহানুভূতি — সহ + অনুভূতি।
প্রত্যাদেশ — প্রতি + আদেশ।
প্রশ্নাহত — প্রশ্ন + আহত।
পূজার্চনা — পূজা + অৰ্চনা।
সর্বাঙ্গ — সর্ব + অঙ্গ।
ত্রিলোকেশ্বর — ত্রিলোক + ঈশ্বর।
রুদ্রাক্ষ — রুদ্র + অক্ষ!
পর্যবেক্ষণ — পরি + বীক্ষণ।
সঞ্চার — সম্ + চার।
সর্বান্তঃকরণে — সব + অন্তঃকরণে।
কিঞ্চিৎ — কিম + চিৎ।
ইত্যাকার — ইতি + আকার।
দুশ্চিন্তা — দুঃ + চিন্তা।
আবির্ভাব — আবিঃ + ভাব।
আরেক — আর + এক।
প্রকৃতি প্রত্যয় :-
অস্তিত্ব — অস্ + তি + ত্ব।
হুঁশিয়ার — হুঁশ + ইয়ার।
ক্ষলন — ক্ষল্ + অন্।
জিজ্ঞাসা — জ্ঞা + সম্ + আ।
চাঞ্চল্য — চঞ্চল + অ।
সঞ্চয় — সম্ + চয়।
প্রবল — প্র + বল।
কল্পনা — কলপ্ + অন + আ।
দৃষ্টি — দৃশ্ + তি।
উৎসুক্য — উৎসুক + য।
স্থাপন — স্থা + নিচ্ + অন।
মুক্তি — মুচ + তি।
মুহ্যমান — মোহ + নিচ + মান।
প্রফুল্ল — প্র + ফুল্ + অ।
সন্ন্যাসী — সম্ + নি + অস + ঈ।
দুষ্কর — দুঃ + কৃ + অ।
স্থায়ী — স্থা + ইন্ ।
স্বয়ম্ভূ — স্বয়ম্ + ভূ + উ।
রুচি — রুচ্ + ই।
ভক্ত — ভজ + ত।
উপাসক — উপ + আস্ + ক।
প্রতিষেধক — প্রতি + সিপ্ + অ + ক।
ফেলনা — ফেল্ + না।
পরিবর্তন — পরি + বৃৎ + অন।
স্বর্গ — সু + ঋজ + অ।
জ্ঞান — জ্ঞা + অন।
শব্দ ভাণ্ডার –
তৎসম শব্দ — পদক্ষেপ, অস্তিত্ব, স্মরণ, অকস্মাৎ, অভিপ্রায়, সংঘর্ষ, সহসা, জীবন মরণ, মার্জনা।
তদ্ভব শব্দ — হোঁচট, ভাগ্যি, বক্ষে, নুড়ি, দামি, কড়া, মোড়, গলি, কারু ইত্যাদি।
আঞ্চলিক ও চলিত ভাষা — চন্নামেত্ত, হতুকি, সামনে, তোয়াক্কা, কোদাল ইত্যাদি।
বিপরীতার্থক শব্দ :-
দেবতা — দানব।
নীরব — সরব।
অপদস্থ — পদস্থ।
সযত্নে — অযত্নে।
স্থুল — সূক্ষ্ম।
চিরস্থায়ী — অস্থায়ী।
আবির্ভাব — তিরোভাব।
অক্ষম — সক্ষম।
সার্থক — অনর্থক।
প্রত্যাদেশ — আদেশ।
অনুপস্থিতি — ডপস্থিতি।
আশীর্বাদ — অভিশাপ।
উপযুক্ত — অনুপযুক্ত।
কারক বিভক্তি :–
ক) সচকিতে বীরবব দেখিলা সম্মুখে — কর্তকারকে শূন্য বিভক্তি।
খ) দুটি পাকা ফল লভিল ভূতল — কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।
গ) তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে — করণ কারকে এ বিভক্তি।
ঘ) ভোর না হতে বাড়ি পৌঁছে যাবে — অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তি।
ঙ) বক্ষে জুড়িয়া পাণি — অধিকরণ কারকে এ বিভক্তি।
চ) আমিনা চল আমরা যাই — সম্বোধন পদে শূন্য বিভক্তি।
ছ) গল্পটি সবাই জানে — কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।
জ) ভাঙতে এবার আসছে কি জাঠ কালাপাহাড় — কর্তকারকে শূন্য বিভক্তি।
ঝ) আমাকে যেতে হবে — কর্তায় দ্বিতীয়া বিভক্তি।
ঞ) বৃথা গঞ্জ দশাননে — কর্মে সপ্তমী বিভক্তি।
ট) প্রভু চাকরটিকে চাবুক মারছেন — করণে শূন্য বিভক্তি।
ঠ) অন্ধজনে দেহ আলো — নিমিত্ত কারকে সপ্তমী বিভক্তি।
ড) এই তরবাবি নাও — কর্মকারকে শূন্য বিভক্তি।
ঢ) একটা রাত্রিও ঘরে বসিয়া থাকিলে কুবেরের চলিবে না— অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তি।
ণ) তোমাকে শতকোটি নমস্কার — ক্রিয়া বিশেষণে শূন্য বিভক্তি।
ত) দয়া কর দীনজনে — কর্মকারকে এ বিভক্তি।
থ) কঠিন মাটিরে চিরে — কর্মকারকে রে বিভক্তি।
দ) ঢেলারে ভাঙিবে শিরে — করণ কারকে এ বিভক্তি।
ধ) আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বাবে — অধিকরণ কারকে এ বিভক্তি।
ন) বেলা পড়ে এল জলকে চল — নিমিত্ত কর্মকারকে কে বিভক্তি।
বাগধারা :–
১। কানাকড়ি (একটুও) — বাংলাদেশে আমার বাবার কানাকড়ি সম্পত্তিও নেই।
২। দা-কুমড়ো (শত্রুভাব) — দুভাইয়ের মধ্যে দা-কুমড়ো সম্পর্ক।
৩। পোয়াবারো (ভালো সুযোগ) — ভালো চাকরি পেয়ে তোমার এখন পোয়াবারো।
৪। সুখের পায়রা (সুখী ব্যক্তি) — অমলবাবু সবসময় সুখের পায়রা।
৫। হাতধরা (বশীভূত) — বংশবাবু পুরোপুরি মালিকের হাতধরা।
৬। উঁকি দেওয়া (একটুখানি) — পরের ঘরে উঁকি দেওয়া ভালো কাজ নয়।
৭। ঘনিয়ে আসা (আসন্ন) — কার কখন বিপদ ঘনিয়ে আসে কেউ জানে না।
৮। মাথা খাওয়া (খারাপ শিক্ষা) — একমাত্র ছেলেকে আদর দিয়ে বাবা মা মাথা খেয়েছে।
৯। অগ্নিশর্মা (অত্যন্ত ক্রুদ্ধ) — রামবাবু ভৃত্যের উপর অগ্নিশর্মা হয়ে আছেন।
১০। উড়ো কথা (ভিত্তিহীন কথা) — উড়ো কথায় কান দিয়ে লাভ নেই।
১১। আক্কেল গুড়ম (বিস্মিত) — ছেলের কথা শুনে বাবার আক্কেল গুড়ম।
১২। ভূতের বেগার (পণ্ডশ্রম) — ভূতের বেগার খেটে লাভ নেই।
১৩। দক্ষযজ্ঞ (বিশৃঙ্খলা) — ঘরের মধ্যে দক্ষযজ্ঞ বেধে গেল।
১৪। টইটুম্বুর (কানায় কানায়) — বর্ষায় নদী পুকুর সব টইটুম্বুর।
১৫। মগের মুলুক (অরাজক দেশ) — রাজ্যের বর্তমান অবস্থা মগের মুল্লুক।
১৬। ভরাডুবি (সমূহ সর্বনাশ) — বিলাসবাবুর ব্যবসায় ভরাডুবি হল।
১৭। ছিনে জোঁক (নাছোড়বান্দা লোক) — পুলিশের লোকেরা দুর্বৃত্তের পেছনে ছিনে জোঁকের মতো লেগে থাকে।
১৮। ঘোড়ার ডিম (অলীক কিছু) — মধুবাবুর কোনো ক্ষমতা নেই ঘোড়ার ডিম করবে।
১৯। নয়-ছয় (ছড়াছড়ি) — কারোর নয়-ছয় কথা ভালো লাগে না।
২০। দু-নৌকায় পা (সব পক্ষকেই খুশি করার চেষ্টা করে যে) — যে ব্যক্তি দু-নৌকায় পা দিয়ে চলে তাকে কেউ বিশ্বাস করে না।
টীকা :-
যুবরাজ সিং — ভারতের চণ্ডীগড়ে ১৯৮১ সালের ১২ই ডিসেম্বর যুবরাজ সিংয়ের জন্ম হয়। তিনি ভারতীয় ক্রিকেট দলের বাঁ-হাতি ব্যাটম্যান। তিনি সাবেক ভারতীয় ফাস্টবোলার। পিতার নাম যুগরাজ সিং, মাতার নাম শবনম সিং। ২০০৩ সালের ১৬ অক্টোবর নিউজিল্যান্ডের সাথে খেলায় টেস্ট অভিষেক হয়। যুবরাজ সিং অর্জুন পুরস্কার এবং পদ্মশ্রী পেয়েছেন। তার সর্বোচ্চ রান সংখ্যা টেস্টে ১৬৯ এবং ওয়ানডে-তে ১৫০। অলরাউন্ডার যুবরাজ সিং বাঁ-হাতি অর্থডক্স ক্রিকেটার।
বাচেন্দ্রী পাল — বাচেন্দ্রী পাল একজন ভারতীয় পর্বতারোহী। উত্তরকাশীর নাকুরী গ্রামে ১৯৫৪ সালের ২৪ মে জন্মগ্রহণ করেন। বাচেন্দ্রী পাল এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গ বিজয়ী প্রথম ভারতীয় মহিলা ও পঞ্চম মহিলা। ১৯৮৪ সালে এক অভিযানে তিনি এভারেস্ট আরোহণ করেন।
বাচেন্দ্রী পাল পৃথিবীর উচ্চতম শিখর আরোহণ করার পরেও অন্যান্য অভিযানে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৯৩ সালে কেবল মহিলাদের নিয়ে ‘ইন্দো নেপালিস উইমেন’স্ মাউন্ট এভারেস্ট এক্সপিডিশন’ ১৯৯৩ সাফল্যের সাথে নেতৃত্ব দেন যা কিনা ভারতীয় পর্বতারোহণে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। দলের ৭ জন মহিলা সমেত মোট ১৮ জন সদস্য এভারেস্টের শিখরে পৌঁছান।
মহিলা রাফটার দলকে নিয়ে “দা ইন্ডিয়ান উওমেন’স রাফটিং ভয়েস—১৯৯৪” যাতে তিনটি রাফটে ১৮ জন মহিলা অভিযাত্রী ছিলেন। এটি গঙ্গা নদীর উপর হরিদ্বার থেকে কোলকাতা কোনো মহিলা দলের দ্বারা ৩৯ দিনে ২১৫৫ কিমি রাফটে করে প্রথম সফল যাত্রার ঘটনা।
“দা ইন্ডিয়ান উওমেন ট্রান্স হিমালয়ান এক্সপিডিশন ১৯৯৭”—প্রথম ভারতীয় মহিলা ট্রান্স হিমালয় অভিয়ান। ৮ জন ভারতীয় মহিলা অভিযাত্রীর অভিযান, যারা পূর্ব হিমালয়ের অরুণাচলপ্রদেশ থেকে পশ্চিমের সিয়াচেন হিমবাহের ইন্দিরা কল পর্যন্ত ৪০টি উচ্চ গিরিবর্ত্ত পার করে ৪৫০০ কিমি ২২৫ দিনে অতিক্রম করেন। এই অভিযানটি ভারতের পক্ষে বিশ্বের প্রথম দেশ দ্বারা সাফল্য লাভ।
স্টিফেন হকিং — স্টিফেন উইলিয়াম, হকিং সিএইচ, সিবিই, এফআরএস, পিএইচডি (৮ জানুয়ারী ১৯৪২–১৪ মার্চ ২০১৮) বিশিষ্ট ইংরেজ তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতজ্ঞ হিসেবে বিশ্বের সর্বত্র পরিচিত ব্যক্তিত্ব। হকিং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর থিওরেটিক্যাল কসমোলজির গবেষণা প্রধান ছিলেন। তিনি ১৯৭৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লুকাসীয় অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়াও কেমব্রিজের গনভিল ও কেইয়ুস কলেজের ফেলো হিসেবে কাজ করেছেন।
পদার্থবিজ্ঞানে হকিংয়ের অবদান সর্বদা স্বীকৃত। প্রথম জীবনে রজার পেনরোজের সঙ্গে মিলে সাধারণ আপেক্ষিকতায় সিংগুলারিটি সংক্রান্ত তত্ত্ব। হকিং প্রথম অনিশ্চয়তার তত্ত্ব কৃষ্ণবিবর-এর ঘটনা দিগন্তে প্রয়োগ করে দেখান যে কৃষ্ণবিবর থেকে কণাপ্রবাহ বিকিরিত হচ্ছে। এই বিকিরণ এখন হকিং বিকিরণ নামে পরিচিত। তিনি রয়াল সোসাইটি অফ আর্টসের সম্মানীয় ফেলো এবং পন্টিফিক্যাল একাডেমী অফ সায়েন্সের আজীবন সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ অসামরিক পুরস্কার, প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম খেতাবে ভূষিত হন। ২০০২ সালে বিবিসির দ্বারা “সেরা ১০০ ব্রিটনস” জরিপে তিনি ২৫তম স্থান অধিকার করেন। তার নিজের তত্ত্ব ও বিশ্বতত্ত্ব নিয়ে রচিত বই “আ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ টাইম” বাণিজ্যিক সফলতা লাভ করে।
শারীরিকভাবে ভীষণ অচল এবং এমায়োট্রফিক ল্যাটারাল ক্লেরোসিস বা লাউ গেহরিগ নামক একপ্রকার মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত হয়ে ক্রমাগতভাবে সম্পূর্ণ অথর্ব হয়ে যান। তবু বহু বছর সাফল্যের সাথে গবেষণার কাজ করেন। বাকশক্তি হারিয়ে ফেলার পরও তিনি একধরনের শব্দ উৎপাদনকারী যন্ত্রের সাহায্যে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখতেন। হকিং ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ ৭৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
অর্জুন — অর্জুন মহাভারত মহাকাব্যের একটি চরিত্র। পঞ্চপাণ্ডবের অন্যতম। অর্জুন শব্দের অর্থ উজ্জ্বল, জাজ্বল্যমান, সাদা অথবা রূপালী। তিনি একজন অব্যর্থ ধনুর্বিদ। তাকে পার্থ এবং ধনঞ্জয় নামেও ডাকা হয়। অর্জুনের আরো কয়েকটি নাম হল—অরিমর্দন, কপিকেতন, কপিধ্বজ, কিরীটি, কৃষ্ণসারথি, গুঁড়াকেশ, চিত্রমোধী, জিষ্ণু, বিজয়, বীভৎসু, সব্যসাচী ইত্যাদি। মাতা কুন্তী মন্ত্রবলে দেবরাজ ইন্দ্রের কাছ থেকে তাকে লাভ করেছিলেন। অর্জুন দ্রোণাচার্যের কাছ থেকে ধনুর্বিদ্যা লাভ করেন। পাণ্ডবগণের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের সূচনাপর্বে কৃষ্ণ তাকে যে উপদেশাবলী প্রদান করেন তাই শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা।
অর্জুনের পিতার নাম পাণ্ডু এবং মাতা কুন্তী। মহাভারতে অর্জুনকে চতুর্থ কৃষ্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন তার রথের সারথি নিয়োগ করেন শ্রীকৃষ্ণকে। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন কৌরবদের অনেক সেনাকে হত্যা করেন। তার হাতে কৌরবদের সেনাপতি ভীষ্মকে শরশয্যায় শায়িত হতে হয়। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পাণ্ডবদের জয়ের অন্যতম কারণ অর্জুনের রণনৈপুণ্য। তাছাড়া অর্জুন জয়দ্ৰথ, কর্ণকে বধ করেছেন। ভীষ্মকে শরশয্যায় নিপতিত করতে অর্জুনকে শিখণ্ডিকে সামনে রাখতে হয়েছে। এই অন্যায় যুদ্ধের জন্য বসু দেবতাগণ অর্জুনকে নরকবাসের অভিশাপ দিয়েছিলেন।
অর্জুন ছিলেন কৌরব পাণ্ডবদের অস্ত্রগুরু দ্রোণাচার্যের প্রিয়তম শিষ্য। গুরুদক্ষিণা স্বরূপ দ্রোণাচার্য যখন পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের বন্দিত্ব চান তখন মূলত অর্জুনের বীরত্বেই তা সম্ভব হয়। কৃষ্ণের মৃত্যুর পর অর্জুন নিজের শক্তি হারাতে শুরু করেন। পরে মহাপ্রস্থানের পথে কৃষ্ণা, সহদেব ও নকুলের পরে অর্জুনের মৃত্যু হয়।
মাউন্ট এভারেস্ট — মাউন্ট এভারেস্ট নেপালে সগরমাথা এবং তিব্বতে চোমোলাংমা নামে পরিচিত, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। এই শৃঙ্গটি হিমালয়ের হিমাল পর্বতমালায় অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ৮,৮৪৮ মি. (২৯,০২৯ ফুট)। চীন ও নেপালের আন্তর্জাতিক সীমান্ত মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষবিন্দু দিয়ে গেছে।
১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দের ভারতের মহান ত্রিকোণমিতিক সর্বেদণের ফলে মাউন্ট এভারেস্টের উচ্চতা নির্ণয় করা হয় ৮,৮৪০ মি। ১৮৬৫ খ্রি. ভারতের সার্ভেয়র জেনারেল অ্যান্ড্রিউ স্কট ওয়াহর সুপারিশে রয়েল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি তাঁর পূর্বসূরী জর্জ এভারেস্টের ১৫নং পর্বতশৃঙ্গের নাম পরিবর্তন করে মাউন্ট এভারেস্ট রাখে। ১৯৫৫ খ্রি. একটি ভারতীয় জরিপে এই শৃঙ্গের উচ্চতা নির্ণয় করা হয় ৮,৮৪৮ মিটার যা ১৯৭৫ খ্রি. চীনা জরিপ দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
১৯৫৩ খ্রি. এডমন্ড হিলারী ও তেনজিং নোরগে নেপালের দিক থেকে দক্ষিণপূর্ব শৈলশিরা ধরে প্রথম এই শৃঙ্গ জয় করেন। ১৯৬০ খ্রি. ২৫ মে চীনা পর্বতারোহী ওয়াংফুঝোউ গোনপো ও চু ইয়িনহুয়া উত্তর শৈলশিরা ধরে প্রথম শৃঙ্গ জয় করেন।
১৮৫২ খ্রি. দেরাদুন শহরে অবস্থিত সদর দপ্তরে বাঙালি গণিতবিদ ও পর্যবেক্ষক রাধানাথ শিকদার নিকলসনের মাপজোখ থেকে ত্রিকোণমিতিক গণনা করে সর্বপ্রথম নির্ণয় করেন যে এই শৃঙ্গ বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।
১৯৭৫ সালের ১৬ই মে প্রথম নারী হিসেবে এভারেস্টের চূড়ায় উঠতে সক্ষম হন জাপানের জুনকো তাবেই। প্রথম দুবার এভারেস্টে উঠতে সক্ষম হন শেরপা নাওয়াং গোম্ব। ১৯২২ সালের ২০ মে তিনি এই রেকর্ড অর্জন করেন। প্রথম প্রতিবন্ধি হিসাবে ১৯৯৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টম হুইটেকার এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন। একটি কৃত্রিম পা নিয়েও তিনি এভারেস্ট জয় করে বিশ্ববাসীকে চমকে দেন।
নেপালের আপা শেরপা সবথেকে বেশিবার এভারেস্ট জয় করেছেন। ১৯৯০ সালের ১০ মে থেকে ২০১১ সালের ১১ মে পর্যন্ত তিনি মোট ১১ বার এভারেস্টের চূড়ায় পা রেখেছেন। নন-শেরপা হিসাবে এই রেকর্ড আমেরিকান পর্বতারোহী ও অভিযানের গাইড ডেভ হানের দখলে। ১৯৯৪ সালের ১৯ মে থেকে ২০১২ সালের ২৬ মে পর্যন্ত মোট ১৪ বার এভারেস্ট জয় করেছেন তিনি।
শামসের কাংরি — সাসের কাংরি ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে অবস্থিত কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির সাসের মুজতাঘ উপপর্বতশ্রেণির সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। সাসের কাংরি জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের লাদাখ অঞ্চলে কারাকোরাম পর্বতশ্রেণির পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত। এই পর্বতস্তূপের দক্ষিণে, পূর্বে ও উত্তরপূর্বে শ্যোন নদী, পশ্চিমদিকে নুব্রা উপত্যকা, উত্তরদিকে শামসের গিরিবর্ত্র অবস্থিত।
শামসের কাংরি পর্বতস্তূপে পাঁচটি পর্বতশৃঙ্গ বর্তমান—
শামসের কাংরি ১ উচ্চতা ৭,৬৭২ মি. (১৫,১৭১ ফুট)।
শামসের কাংরি ২ পূর্ব উচ্চতা ৭,৫১৩ মি. (২৪,৬৪৯ ফুট)।
শামসের কাংরি ২ পশ্চিম উচ্চতা ৭,৫০০ মি. (২৪,৬০০ ফুট)।
শামসের কাংরি ৩ পশ্চিম উচ্চতা ৭,৪৯৫ মি. (২৪,৫৯০ ফুট)।
শামসের কাংরি ৪ পশ্চিম উচ্চতা ৭,৪১৬মি. (২৪,৩৩১ ফুট)।