Class 11 Bengali Grammar | ব্যাকরণ Question Answer | SEBA Class 11 Bengali Grammar Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Class 11 Bengali Grammar | ব্যাকরণ Notes and select needs one.
Class 11 Bengali Grammar | ব্যাকরণ
Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 11 Bengali Grammar | ব্যাকরণ Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 11 Bengali Grammar | ব্যাকরণ Solutions for All Subjects, You can practice these here.
ব্যাকরণ
বাংলা (MIL)
পদ পরিবর্তন
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) বিশেষ্য থেকে বিশেষণে পদ পরিবর্তনের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বিশেষ্য থেকে বিশেষণে পদ পরিবর্তনের উদাহরণ হ’ল–
বিশেষ্য – বিশেষণ।
অন্তর – আন্তরিক।
(খ) বিশেষণ থেকে বিশেষ্যে পদপরিবর্তনের একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ বিশেষণ থেকে বিশেষ্যে পদ পরিবর্তনের একটি উদাহরণ হ’ল –
বিশেষণ – বিশেষ্য।
অধিক – আধিক্য।
(গ) বৎসর / বাৎসরিক – পদ পরিবর্তনের প্রকৃতি নির্ণয় করো।
উত্তরঃ বৎসর হচ্ছে বিশেষ্য পদ আর বাৎসরিক বিশেষণ, তাই এটি বিশেষ্য থেকে বিশেষণে পদ পরিবর্তন হয়েছে।
(ঘ) সূর্য / সৌর – পদ পরিবর্তনের প্রকৃতি নির্ণয় করো।
উত্তরঃ সূর্য হচ্ছে বিশেষ্য পদ আর সৌর হচ্ছে বিশেষণ পদ সুতরাং এটি বিশেষ্য থেকে বিশেষণে পদ পরিবর্তন হয়েছে।
(ঙ) অনুগত / আনুগত্য – পদ পরিবর্তনের প্রকৃতি নির্ণয় করো।
ঊত্তরঃ অনুগত হচ্ছে বিশেষণ পদ আর আনুগত্য হচ্ছে বিশেষ্য পদ। সুতরাং এটি বিশেষণ থেকে বিশেষ্য পদ পরিবর্তন হয়েছে।
(চ) পদ পরিবর্তন করো – পরাক্রম, দাস, নিরাশ, বীর, নীল।
উত্তরঃ পরাক্রম – পরাক্রান্ত।
দাস – দাসী।
নিরাশ – নৈরাশ্য / নিরাশা।
বীর – বীরত্ব / বীর্য।
নীল – নীলিমা।
(ছ) সঠিক পদ পরিবর্তনটি নির্ণয় করো ।
বিনয় / বিনয়পূর্বক, সবিনয়, বিনীত
অধিক / অধিকতর, অধিকতম, অধিকারী, আধিক্য
চালাক / চালু, চালাক-চতুর, চালিকা, চালাকি
উত্তরঃ বিনয় – বিনীত।
অধিক – আধিক্য।
চালাক – চালাকি।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) পদ কাকে বলে? বাংলায় কয় প্রকার পদ পাওয়া যায়?
উত্তরঃ বাক্যে ব্যবহৃত শব্দ ও ধাতুকে পদ বলা হয়।
বাংলায় পাঁচ প্রকার পদ পাওয়া যায়। যেমন– বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।
(খ) বিশেষ্য পদ কাকে বলে? বিশেষ্য পদের দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ যে পদে কোনো কিছুর নাম বোঝানো হয়, তাকে বিশেষ্য পদ বলা হয়।
বিশেষ্য পদের দুটি উদাহরণ হল – সূর্য, নগর।
(গ) বিশেষণ পদ কাকে বলে? বিশেষণ পদের দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বিশেষ্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি যে পদের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়, তাকে বিশেষণ পদ বলা হয়।
বিশেষণ পদের দুটি উদাহরণ হলো- বাৎসরিক, লৌকিক।
(ঘ) সর্বনাম পদ কাকে বলে? সর্বনাম পদের যে কোনো দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বিশেষ্যর পরিবর্তে বাক্যে যে পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলা হয় ।
সর্বনাম পদের দুটি উদাহরণ– আমি, তুমি, সে ।
(ঙ) ক্রিয়াপদ কাকে বলে? ক্রিয়াপদের যে কোনো দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বাক্যের অন্তর্গত যে পদে কোনও কালের, কোনও ভাবের ও প্রকারের ক্রিয়া ব্যাপারের সংঘটন বোঝায় এবং বাক্যের উদ্দেশ্য পদের সঙ্গে যার রূপের সংগতি রক্ষিত হয়, সেই পদকে বলে ক্রিয়াপদ।
(চ) অব্যয় পদ কাকে বলে? অব্যয় পদের যে কোনো দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ যে পদগুলির লিঙ্গ, বচন, পুরুষ ও কারক ভেদে কোনো পরিবর্তন ঘটে না, সেই পদগুলিকে অব্যয় বলে।
অব্যয় পদের দুটি উদাহরণ হলো– এবং, তবে।
(ছ) পদ-পরিবর্তন কাকে বলে?
উত্তরঃ কখনো কখনো বিশেষ্য পদ বিশেষণে এবং বিশেষণ পদ বিশেষ্যে পরিবর্তন হয়ে যায়। এ ধরণের এক শ্রেণির পদ থেকে অন্য এক শ্রেণিতে পদের পরিবর্তনকে ‘পদ পরিবর্তন’ বলা হয়।
(জ) বাংলায় পদ পরিবর্তনের দুটি প্রকারভেদের নাম উল্লেখ করো।
উত্তরঃ বাংলায় পদ পরিবর্তনের দুটি প্রকারভেদ হল – বিশেষ্য।
থেকে বিশেষণ, যেমন – ধাতু-ধাতব।
আরেকটি হল – বিশেষণ।
থেকে বিশেষ্য, যেমন – -উচিত-ঔচিত্য।
(ঝ) বিশেষ্য থেকে বিশেষণে পদ পরিবর্তনের দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বিশেষ্য থেকে বিশেষণ
পরিধান – পরিধেয়।
মোহ – মুগ্ধ।
(ঞ) বিশেষণ থেকে বিশেষ্যে পদ পরিবর্তনের দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বিশেষণ থেকে বিশেষ্য
গম্ভীর – গম্ভীরতা।
কৃপণ – কৃপণতা / কার্পণ্য।
(ট) পদ পরিবর্তনের প্রকৃতি নির্ণয় করোঃ (যে কোনো দুটি)
অন্তর > আন্তরিক
লোক > লৌকিক
করুণ > করুণা
গিন্নি > গিন্নিপনা
উত্তরঃ অন্তর > আন্তরিক – বিশেষ্য থেকে বিশেষণ।
লোক > লৌকিক – বিশেষ্য থেকে বিশেষণ।
করুণ > করুণা – বিশেষণ থেকে বিশেষ্য।
গিন্নি > গিন্নিপনা – বিশেষণ থেকে বিশেষ্য।
৩। উত্তর দাও
(ক) পদ-পরিবর্তন কাকে বলে? উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাক্যে ব্যবহৃত শব্দ ও ধাতুকে পদ বলা হয়। বাংলা ব্যাকরণে বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া নামে পাঁচ প্রকার পদের সন্ধান পাওয়া যায়।
বিশেষ্য – যে পদে কোনো কিছুর নাম বোঝানো হয় তাকে বিশেষ্য বলা হয়।
বিশেষণ – বিশেষ্য পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা পরিমাণ ইত্যাদি যে পদের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় তাকে বিশেষণ পদ বলা হয় ।
সর্বনাম – বিশেষ্যের পরিবর্তে বাক্যে যে পদ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলা হয়।
ক্রিয়া – যে পদে কোনো ধরনের কাজ করা বোঝায়, তাকে ক্রিয়া বলা হয় ।
অব্যয় – বাক্য মধ্যে এমন কতগুলো পদ পাওয়া যায়, যেগুলো লিঙ্গ, বচন বা বিভক্তিযুক্ত হলেও, কোনো ধরনে পরিবর্তিত হয় না, এই পদগুলোকে অব্যয় পদ বলা হয় ।
কখনো কখনো এই বিশেষ্য পদ বিশেষণে এবং বিশেষণ পদ বিশেষ্যে পরিবর্তন হয়ে যায়। এ ধরনের এক শ্রেণির পদ থেকে অন্য এক শ্রেণিতে পদের পরিবর্তনকে পদ পরিবর্তন বলা হয়। যেমন –
বিশেষ্য থেকে বিশেষণ
অংশ – আংশিক।
ভাত – ভেতো।
বিশেষণ থেকে বিশেষ্য
কিশোর > কৈশোর।
উজ্জ্বল > উজ্জ্বলতা / ঔজ্জ্বল্য।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
১। পদ পরিবর্তন বা পদান্তর সাধন কাহাকে বলে?
উত্তরঃ একই শ্রেণীর পদকে অন্য শ্রেণীর পদে পরিবর্তন করার নামই হইয়াছে পদ পরিবর্তন বা পদান্তর সাধন। পদ পরিবর্তনের অর্থ হইল বিশেষ্য পদকে বিশেষণ পদে এবং বিশেষণ পদকে বিশেষ্যে পদে পরিবর্তিত করা।
বিশেষ্যকে বিশেষণ পদে পরিবর্তন –
বিশেষ্য – বিশেষণ।
অগ্নি – আগ্নেয়।
উত্থান – উত্থিত।
কায় – কায়িক।
অরুণ – অরুনিমা।
আয়ু – আয়ুষ্মান।
নাশ – নষ্ট।
খণ্ড – খণ্ডিত।
তালু – তালব্য।
ত্রাস – এস্ত।
জন্তু – জান্তব।
পুরস্কার – পুরস্কৃত।
পিশাচ – পৈশাচিক।
বিশেষ্য – বিশেষণ।
মধু – মধুর।
মন – মানসিক।
ভয় – ভয়ানক।
ভূত – ভৌতিক।
পশু – পাশবিক।
দেহ – দৈহিক।
জন্ম – জাত।
লজ্জা – লজ্জিত।
স্ত্রী – স্ত্ৰৈণ।
সন্ধ্যা – সান্ধ্য।
অনুবাদ – অনূদিত।
উন্মাদ – উন্মত্ত।
অবধান – অবহিত।
আসন – আসীন।
ইচ্ছ – ঐচ্ছিক।
আদি – আদিম।
অন্তুর – আন্তরিক।
তাপ – তপু।
নগর – নাগরিক।
তেজ – তেজী।
ঘর – ঘরোয়া।
বিশেষ্য – বিশেষণ।
নিশা – নৈশ।
বিষাদ – বিষণ্ণ।
ধন – ধনী।
ফল – ফলন্ত।
বস্তু – বাস্তব।
দর্শন – দার্শনিক।
সূর্য – সৌর।
লয় – লীন।
লোক – লৌকিক।
ক্ষয় – ক্ষীন।
স্নায়ু – স্নায়বিক।
মোহ – মুগ্ধ।
পাথর – পাথুরে।
চন্দ্ৰ – চন্দ্ৰিমা।
উপনিবেশ – উপনিবেশিক।
জয় – জয়ী।
দহন – দগ্ধ।
দোষ – দূষিত।
যোগ – যৌগিক।
শাস্ত্র – শাস্ত্রীয়।
শরৎ – শারদ।
মাটি – মেটে।
বিশেষণ – বিশেষ্য।
উজ্জ্বল – উজ্জ্বল্য।
সম – সাম্য।
লঘু – লঘিমা।
বীর – বীরত্ব।
ভ্রম – ভ্রান্ত।
চতুর – চাতুৰ্থ।
শূর – শৌর্য।
হিংস্র – হিংস্রতা।
উচিত – উচিত্য।
শীত – শৈত্য।
মধুর – মাধুর্য।
মূর্খ – মূর্খতা।
বিষম – বৈষম্য।
গম্ভীর – গাম্ভীর্য।
প্রিয় – প্রীতি।
প্রবল – প্রাবল্য।
বচন – উক্ত।
বৈধ – বিধি।
আসক্ত – আসক্তি।
নিষিদ্ধ – নিষেধ।
আর্ত – আর্তি।
বিশেষণ – বিশেষ্য।
বিহিত – বিধান।
দরিদ্র – দারিদ্র্য।
রুগন – রোগ।
ক্ষীণ – ক্ষয়।
অতিশয় – আতিশয্য।
বীর – বীরত্ব।
মহৎ – মহত্ব।
নিষিদ্ধ – নিষেধ।
পরাক্রান্ত – পরাক্রম।
মত্ত – মদ।
বিস্মিত – বিস্ময়।
প্রত্যয়
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) প্রত্যয় কয় প্রকার?
উত্তরঃ প্রত্যয় দুই প্রকার— (ক) কৃৎ প্রত্যয়।
(খ) তদ্ধিত প্রত্যয়।
(খ) মৌলিক শব্দের একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ হাত।
(গ) সাধিত শব্দের একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ সাধিত শব্দের একটি উদাহরণ হল- শোনা।
(ঘ) কৃদন্ত শব্দের একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ শোনা।
(ঙ) তদ্ধিতান্ত শব্দের একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ নীলিমা।
(চ) বাংলা কৃত প্রত্যয় কয়টি?
উত্তরঃ বাংলা কৃত প্রত্যয় দুই প্রকারের— সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় এবং বাংলা কৃত প্রত্যয়।
(ছ) বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় কয়টি?
উত্তরঃ বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় তিনটি বিভাগে বিভক্ত।
(জ) √পত + ক্ত = পতিত, কোন ধরনের প্রত্যয়ের উদাহরণ।
উত্তরঃ √পত + ক্ত = পতিত, হচ্ছে সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়।
(ঝ) লাল + ইমা = ………….… প্রত্যয়ান্ত শব্দটি লেখো।
উত্তরঃ লাল + ইমা = লালিমা।
(ঞ) ধর্ম + …………… = ধার্মিক, শূন্যস্থানে সঠিক প্রত্যয়টি করো।
উত্তরঃ ধর্ম + ইক = ধার্মিক।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) কৃৎপ্রত্যয়ের দুটি উদাহরণ দাও
উত্তরঃ বস্ + অতি = বসতি।
√মিশ + উক = মিশুক।
(খ) তদ্ধিত প্রত্যয়ের দুটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ পেট +উক = পেটুক।
ন্যাকা +মি = ন্যাকামি।
(গ) বাংলা কৃৎ প্রত্যয় কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ বাংলা কৃত প্রত্যয় দুই প্রকার। সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় ও বাংলা কৃৎ প্রত্যয়।
(ঘ) বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় তিনি প্রকার, তৎসম, তদ্ভব ও বিদেশী।
(ঙ) প্রত্যয় নির্ণয় করো –
উত্তরঃ ভদ্র + গোছ = ভদ্রগোছ, তদ্ধিত প্রত্যয়।
√সহ + য = সহ্য, সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়।
৩। উত্তর দাও
(ক) বাংলায় প্রচলিত কৃৎ প্রত্যয়ের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্বন্ধে উদাহরণ সহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলা ভাষায় কৃৎ প্রত্যয় দুই প্রকারের— সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় এবং বাংলা কৃৎ প্রত্যয়। এর মধ্যে সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় কেবল সংস্কৃত ধাতুর সঙ্গেই যুক্ত হয়। তবে বাংলা কৃৎ প্রত্যয় বাংলা ধাতুর সঙ্গে যুক্ত হয়।
সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় – বাংলা প্রচলিত অনেক তৎসম শব্দ সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়ান্ত কৃদনচ শব্দ ৷ সংস্কৃত ধাতুর সঙ্গে সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় যোগে এগুলোর উৎপত্তি হয়েছে বাংলায় প্রচলিত এধরনের সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়ের উদাহরণ—
অক ধাতুর সঙ্গে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে কর্তৃবাচক নাম শব্দ উৎপন্ন করে। যেমন—
√ নী + অক = নায়ক।
তম ধাতুর সঙ্গে এই প্রত্যয় যোগে ক্রিয়াবাচক, ভাববাচক বস্তু বাচক ইত্যাদি বিশেষ্য পদ গঠন করা হয়।
√গিম + অন = গমন।
√স্মৃ + অন = স্মরণ।
তারপর অনীয় ধাতুর পর এই প্রত্যয় যোগে ‘যোগ্য’ বা ‘কর্তব্য’ অর্থে বিশেষণ শব্দ গঠিত হয়।
পা + অনীয় = পানীয়।
দৃশ + অনীয় = দর্শনীয়।
ত (ক্ত) – সংস্কৃত ধাতুর পর এই প্রত্যয় যুক্ত করে অতীত কালের ক্রিয়াবাচক বিশেষণ শব্দ গঠন করা হয়।
রক্ষ + ত = রক্ষিত।
√পত + ক্ত = পতিত।
তি (ক্তিন) – ধাতুর পরে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে ভাববাচক স্ত্রীলিঙ্গ বিশেষ্য শব্দ গঠন করে। যেমন–
√ভজ্ + তি (ক্তিন) = ভক্তি।
√গম + তি (ক্তি) = গতি।
আবার বাংলায় প্রচলিত বাংলা কৃত প্রত্যয় হল অ (ও),ভ- বাংলা ধাতুর সঙ্গে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে সম্ভাব্যতা, আসন্নতা এরধনের অর্থ প্রকাশ করে বিশেষণ শব্দ গঠিত হয়। যেমন—
কাঁদ + অ = কাঁদো।
ভুব + উ = ভুবু।
আবার অত / অতা (তা) অতি (তি) – ধাতুর পর এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে বিশেষ্য বা বিশেষণ শব্দ গঠন করে। যেমন–
√মান + অত = মানত।
√বস + অতি = বসতি।
যেমন— অন ধাতুর সঙ্গে এই প্রত্যেয়ের যোগে ক্রিয়াবাচক ও বস্তুবাচক বিশেষ্য শব্দ গঠন করা হয়। যেমন—
√চল + অন = চলন।
√বাঁচ + অন = বাঁচন।
অন্ত – ধাতুর সঙ্গে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে ক্রিয়াবাচক বিশেষণ শব্দ গঠিত হয়। যেমন—
চল + অন্ত = চলন্ত।
বাড্ + অন্ত = বাড়ন্ত।
উক – ধাতুর সঙ্গে এই প্রত্যয়টি যুক্ত হয়ে স্বভাব নির্দেশক শব্দ গঠন করে। যেমন—
√মিশ্ +উক = মিশুক।
আনি/ উনি – ধাতুর সঙ্গে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে বিশেষ্য শব্দ গঠন করে। যেমন—
√লনা + আনি = লুনানি।
√ধম্ম্কা + আনি = ধমকানি।
√বিনা + আনি = বিনানি।
(খ) বাংলায় প্রচলিত তদ্ধিত প্রত্যয়ের বিভিন্ন প্রকারভেদ সম্বন্ধে উদাহরণ সহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলাভাষায় প্রচলিত তদ্ধিত প্রত্যয় দুই শ্রেণিতে বিভক্ত।
(ক) সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়।
(খ) বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয়।
(ক) সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয় – বাংলায় প্রচলিত প্রচুর তৎসম শব্দ সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়ান্ত তদ্ধিতান্ত শব্দ । সংস্কৃত শব্দের সঙ্গে সংস্কৃত প্রত্যয়ের যোগে এই শব্দগুলো গঠিত হয়েছে। যেমন—
অ (-অন, = অ ঞ, ণ) – বিশেষ্য ও বিশেষণ শব্দের পর এই প্রত্যয়ের প্রয়োগ হয়।
কশ্যপ + অ = কাশ্যপ।
পৃথিবী + অ = পার্থিব।
আয়ন (ষ্ণায়ন) – বিশেষ্য শব্দের পর ‘অপত্য’ অর্থে এই প্রত্যয়ের প্রয়োগ হয়। যেমন—
নর + আয়ন= নারায়ন।
শকট +আয়ন = শকটায়ন।
ঈয় (ষ্ণীয়) – বিশেষ্য শব্দের পর ‘তত্র জাত’ তদ্ বিষয়ক ইত্যাদি অর্থে এই প্রত্যয় প্রযুক্ত হয়।
দেশ + ঈয় = দেশীয়।
ভারত + ঈয় = ভারতীয়।
বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় – বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় আবার তৎসম, তদ্ভৱ, বিদেশী নামে তিনটি বিভাগে বিভক্ত।
বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় (তৎসম) – তৎসম বিভাগের কয়কটি প্রত্যয়ের উদাহরণ–
ইমা– চাঁদ + ইমা = চাঁদিমা।
লাল + ইমা = লালিমা।
উক – পেট + উক = পেটুক।
হিংসা + উক = হিংসুক।
ত্ব – নতুন + ত্ব = নতুনত্ব।
হিন্দু + ত্ব = হিন্দুত্ব।
ময় – জল + ময় = জলময়।
কাদা + ময় = কাদাময়।
ইউরোপ + ময় = ইউরোপময়।
বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় (তদ্ভব) – এই বিভাগের কয়েকটি প্রত্যয়ের পরিচয়—
আ – গোদ + আ = গোদা।
হাত + আ = হাতা।
আই– চোর + আই = চোরাই।
সাক + আই = সাকাই।
আইত, আত– সেবা + আইত = সেবাইত।
পোয়া + আত = পোয়াতি।
আনি– নাক + আনি = নাকানি।
চোখ + আনি = চোখানি।
তারপর পনা, পানা – গৃহিনী + পনা = গৃহিনীপনা।
দুরন্ত + পনা = দুরন্তপনা।
বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় (বিদেশী)– এই বিভাগের কয়েকটি প্রত্যয়ের পরিচয়—
আন/ ওয়ান– গানি +ওয়ান = গাড়োয়ান।
দার + ওয়ান = দারোয়ান।
আনা (আনি)– বাবু + আনা = বাবুয়ানা।
হিন্দু + আনি হিন্দুয়ানি।
মুন্সি + আনা = মুন্সিয়ানা।
গিরি– বাবু + গিরি = বাবুগিরি।
কোরানি + গিরি = কোরানিগিরি।
গুণ্ডা + গিরি = গুণ্ডাগিরি।
ৰাজ, বাজি – ধোঁকা + বাজ = ধোঁকাবাজ।
দাঙ্গা + বাজ = দাঙ্গাবাজ।
(গ) টীকা লেখো –
সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় – বাংলায় প্রচলিত অনেক তৎসম শব্দ সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়ান্ত কৃদন্ত শব্দ । সংস্কৃত ধাতুর সঙ্গে সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয় যোগে এগুলোর উৎপত্তি হয়েছে। বাংলার প্রচলিত এধরনের সংস্কৃত কৃৎ প্রত্যয়ের উদাহরণ–
√নী + অক = নায়ক।
√গম + অন = গমন।
√ভু + অন = ভোজন।
√পা + অনীয় = পানীয়।
বাংলা কৃৎ প্রত্যয় – বাংলা ধাতুর সঙ্গে এই প্রত্যয় যুক্ত হয়ে সম্ভাব্যতা, আসন্নতা ঈষদভাব বা ‘প্রায় এরূপ’ ধরনের অর্থ প্রকাশক বিশেষণ শব্দ গঠিত হয়। যেমন—
√কাঁদ + অ = কাঁদো।
√বস + অতি = বসতি।
√কাট + তি = কাটতি।
√য়াচ্ + আই = যাচাই।
সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয় – বাংলার প্রচলিত প্রচুর তৎসম শব্দ সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়ান্ত তদ্ধিতান্ত শব্দ। সংস্কৃত শব্দের সঙ্গে সংস্কৃত প্রত্যয়ের যোগে এই শব্দগুলো গঠিত হয়েছে। বাংলার প্রচলিত এধরনের সংস্কৃত তদ্ধিত প্রত্যয়ের উদাহরণ–
তিল + অ = তৈল।
নর + আয়ন = নারায়ণ।
তর্ক + ইক = তার্কিক।
পিচ্ছা+ ইল = পিচ্ছিল।
বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় – বাংলা তদ্ধিত প্রত্যয় আকার তৎসম, তদ্ভৱ, বিদেশী নামে তিনটি বিভাগে বিভক্ত। তৎসম বিভাগের উদাহরণ—
কাল + ইমা= কালিমা।
মিলর + ঈয়া = মিলরীয়।
লাজ + উক = লাজুক।
গুরু + ত্ব = গুরুত্ব।
তদ্ধিত প্রত্যয় উদহারণ–
গোদ + আ = গোদা।
রোগ + আ = রোগা।
বিদেশী প্রত্যয়ের উদাহরণ–
বাবু + আনা = বাবুআনা।
ছাপা + খানা = ছাপাখানা।
আফিম + খোর = আফিমখোর।
ধোঁকা + বাজ = ধোকাবাজ।
বিদেশী তদ্ধিত প্রত্যয় – এই বিভাগের কয়েকটি প্রত্যয়ের পরিচয়—
আন/ ওয়ান = গাড়ি + ওয়ান = গারোয়ান।
হিন্দু + আনি = হিন্দুয়ানি।
কলম + দান = কমদান।
বাতি + দান = বাতিদান।
পত্র + নবিন = পত্ৰনবিন।
শব্দভাণ্ডার
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) ভাষার মূল সম্পদ কী?
উত্তরঃ ভাষার মূল সম্পদ শব্দভাণ্ডার।
(খ) মৌলিক শব্দকে কয়টি বিভাগে বিভক্ত করা হয়?
উত্তরঃ মৌলিক শব্দকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়।
(গ) আগন্তুক শব্দকে কয়টি বিভাগে বিভক্ত করা হয়?
উত্তরঃ আগন্তক শব্দকে দুটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়।
(ঘ) তৎসম শব্দের একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ তৎসম শব্দের একটি উদাহরণ হ’ল—কৃষ্ণ।
(ঙ) কোনটি অর্ধ তৎসম শব্দ, তা নির্ণয় করোঃ কর্ণ, রাত্তির ঢেঁকি।
উত্তরঃ এখানে ‘রাত্তির’ শব্দটি অর্ধ তৎসম।
(চ) ‘কেরানি’ শব্দটি কোন শ্রেণির শব্দ? ‘কেরানি’ শব্দটি কোন বিদেশি ভাষা থেকে আগত?
উত্তরঃ কেরানি শব্দটি বিদেশী শ্রেণির শব্দ।
‘কেরানি’ শব্দটি পোর্তুগিজ বিদেশি ভাষা থেকে আগত।
(ছ) গ্লাস > গেলাস – কোন শ্রেণির শব্দের উদাহরণ?
উত্তরঃ গ্লাস > গেলাস ইংরেজি শ্রেণির শব্দের উদাহরণ।
(জ) জাপানি ভাষা থেকে আগত যে কোনো একটি শব্দের উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ জাপানি ভাষা থেকে আগত যে কোনো একটি শব্দ হল— রিকশা।
(ঝ) Golden age > স্বর্ণযুগ— কোন শ্রেণির শব্দের উদাহরণ?
উত্তরঃ golden age > স্বর্ণযুগ শব্দটি ‘অনুবাদ ঋণ’ শ্রেণির শব্দের উদাহরণ।
(ঞ) ঢোল, ঢেউ, কুলা –এধরনের শব্দ বাংলা শব্দভাণ্ডারের কোন শ্রেণির অন্তর্গত?
উত্তরঃ ঢোল, ঢেউ, কুলা এধরনের শব্দ বাংলা শব্দভাণ্ডেরর দেশি শ্রেণির অন্তর্গত।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) শব্দভাণ্ডার কাকে বলা হয়?
উত্তরঃ কোনো একটি ভাষার ব্যবহৃত শব্দবলিকে শব্দভাণ্ডার বলা হয়। শব্দ ভাণ্ডারই হল ভাষার মূল সম্পদ ও সমৃদ্ধির পরিচায়ক। ব্যাকরণের আলোচনায় তাই শব্দভাণ্ডারের অধ্যয়ন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, শব্দভাণ্ডারের অধ্যয়নে সাধারণত সেই ভাষার ব্যবহৃত শব্দের উৎসগত শ্রেণি বিভাগ নির্দেশ করা হয় এবং শব্দ সম্পদের গতি-প্রকৃতি নির্ণয় করা হয়।
(খ) সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বাংলা শব্দভাণ্ডারকে কয়টি বিভাগে বিভক্ত করেছেন?
উত্তরঃ উৎস বিচারে বাংলা ভাষার শব্দ ভাণ্ডারকে সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় সাতটি বিভাগে বিভক্ত করেছেন।
তৎসম শব্দ, অর্ধ-তৎসম শব্দ, তদ্ভব শব্দ, দেশি শব্দ, বিদেশি শব্দ, প্রতিবেশি শব্দ বা বাংলা ভিন্ন ভারতীয় শব্দ, সংকর শব্দ।
(গ) মৌলিক শব্দের শ্রেণি বিভাগ কয়টি ও কী কী?
উত্তরঃ মৌলিক শব্দের শ্রেণি বিভাগ তিনটি। যেমন— তৎসম, তদ্ভব এবং অর্ধ তৎসম।
(ঘ) আগন্তুক শব্দের শ্রেণি বিভাগ কয়টি ও কী কী?
উত্তরঃ আগন্তুক শব্দের শ্রেণি বিভাগ দুটি। যেমন— দেশি এবং বিদেশি।
(ঙ) ইংরেজি ভাষা থেকে বাংলায় আগত শব্দবলিকে কয়টি পর্যায়ে বিভক্ত করা যায়?
উত্তরঃ ইংরেজি ভাষা থেকে বাংলার আগত শব্দবলিকে প্রধানত দুটি পর্যায়ে বিভক্ত করা যায়। প্রথম বিভাগে ইংরেজি ভাষা থেকে, বাংলায় গৃহীত সামান্য পরিবর্তিত শব্দাবলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেমন—
বক্স > বাক্স।
ল্যাম্প > লম্প।
গ্লাস > গেলাস।
আরে যেসব ইংরেজি শব্দ বাংলায় গৃহীত হয়েছে, সেগুলোর উচ্চারণ মোটামুটি অবিকৃত রয়েছে। এই শব্দগুলোকে ইংরেজি থেকে আগত শব্দের দ্বিতীয় বিভাগের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেমন— শার্ট, কোর্ট, ট্রেন, কোট, সিনেমা।
এছাড়াও ইংরেজি শব্দের প্রভাবে অনেক শব্দ বাংলায় অনুবাদ করে গ্রহণ করা হয়েছে। এধরণের শব্দকে বলা হয়- ‘অনুবাদক ঋণ’। যেমন—
University > বিশ্ববিদ্যালয়।
Golden opportunity > সুবর্ণ সুযোগ।
(চ) বাংলা শব্দ ভাণ্ডারের অন্তর্গত প্রতিটি বিভাগ ও উপবিভাগের শব্দাবলির দুটি করে উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বাংলা শব্দভাণ্ডারের অন্তর্গত প্রতিটি বিভাগ ও উপবিভাগের শব্দাগুলির দুটি করে উদাহরণ নিম্নে উল্লেখ করা হল—
মৌলিক শব্দের অন্তর্গত –
তৎসম শব্দের উদাহরণ- আকাশ, মানুষ।
অর্ধ-তৎসম শব্দ – বৈদ্য > বদ্দি, নিমন্ত্রণ > নেমন্তন্ন।
তদ্ভব শব্দ – মৎস্য > মাছ, চন্দ্ৰ > চাঁদ
আগন্তুক শব্দের অন্তর্গত –
(ক) দেশি শব্দের উদাহরণ- ঢোল, ঢিল।
বিদেশি শব্দ :
ফারসি শব্দ – কামান, জাহাজ।
আরবি শব্দ – আইন, আক্কেল।
তুর্কি শব্দ – আলখেল্লা, গালিচা।
পোর্তুগিজ শব্দ – আনারস, আলপিন।
ওলন্দাজ শব্দ – হরতন, আলপিন।
ফরাসি শব্দ – কার্তুজ, কুপন।
ইতালি শব্দ – কোম্পানি, গেজেট।
রাশিয়ান শব্দ – বলশেভিক, সোভিয়েট।
চীনা শব্দ – চা, চিনি।
জাপানিশব্দ – হারাকিরি, রিক্শা।
বর্মি শব্দ – ঘুগনি, লুঙ্গি।
ইংরেজি শব্দ – এই শব্দের প্রধানত দুটি পর্যায়।
প্রথমত ইংরেজি ভাষা থেকে বাংলায় সামান্য পরিবর্তিত হয়ে শব্দগুলি ব্যবহৃত। যেমন—
গার্ড > গোরদ।
সেন্ট্রি > সান্ত্ৰী।
দ্বিতীয়ত ইংরেজি ভাষা থেকে বাংলায় গৃহীত হয়েছে উচ্চারণ অবিকৃত রয়েছে।
থিয়েটার, কলেজ।
এছাড়াও ‘অনুবাদক ঋণ’ বলেও বাংলায় ব্যবহৃত শব্দ রয়েছে যা ইংরেজি শব্দের প্রভাবে প্রভাবিত। যেমন—
Lighthouse > বাতিঘর।
Motherland > মাতৃভূমি।
৩। উত্তর দাও
(ক) শব্দভাণ্ডারের অধ্যয়নের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ কোনো একটি ভাষার ব্যবহৃত শব্দাবলিকে শব্দভাণ্ডার বলা হয়। শব্দ ভাণ্ডারই হ’ল ভাষার মূল সম্পদ ও সমৃদ্ধির পরিচায়ক। ব্যাকরণের আলোচনায় তাই শব্দভাণ্ডারের অধ্যয়ন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, শব্দবাণ্ডারের অধ্যয়নে সাধারণত সেই ভাষার ব্যবহৃত শব্দের উৎসগত শ্রেণি বিভাগ নির্দেশ করা হয় এবং শব্দ সম্পদের গতি প্রকৃতি নির্ণয় করা হয়।
বাংলা ভাষার আমরা যে সব শব্দ ব্যবহার করি, সেগুলো বিভিন্ন উৎস যেকে বাংলায় গৃহীত হয়েছে। এই উৎসগুলোকে নির্দেশ করে ভাষাতাত্ত্বিকেরা বাংলা ভাষার শব্দগুলোকে কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন। সুবিখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এধরনের সাতটি বিভাগের উল্লেখ করেছেন, এই বিভাগগুলো হ’ল—
(ক) তৎসম।
(খ) তদ্ভব।
(গ) অর্ধ-তৎসম।
(ঘ) দেশি।
(ঙ) বিদেশি।
(চ) বাংলা ভিন্ন ভারতীয় শব্দ।
(ছ) সংকর শব্দ।
তবে এক্ষেত্রে আরেক ভাষাতাত্ত্বিক সুকুমার সেন বাংলা শব্দ ভাণ্ডারকে প্রধানত –
(ক) মৌলিক।
(খ) আগন্তুক নামে মাত্র দুটি বিভাগে বিভক্ত করেছেন। তিনি মৌলিক বিভাগে বিভক্ত করেছেন—
(ক) তদ্ভব।
(খ) তৎসম।
(গ) অর্ধ-তৎসম উপবিভাগে।
আর তিনি আগন্তুক শব্দকে দেশি ও বিদেশি নামে দুটি উপবিভাগে বিভক্ত করেছেন। এর মধ্যে দেশি শব্দগুলো এসেছে ভারতবর্ষের ই প্রাচীন অধিবাসী অস্ট্রিক, দ্রাবিড় ইত্যাদি ভাষা থেকে এবং বিদেশি শব্দগুলো এসেছে আরবি-ফারসি, পোর্তুগিজ ফারসি ইংরেজি প্রভৃতি ভাষা থেকে।
(খ) বাংলা ভাষার শব্দভাণ্ডারের বিভিন্ন শ্রেণি বিভাগ সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলা ভাষায় যে সব শব্দ ব্যবহার করি, সেগুলো বিভিন্ন উৎস থেকে বাংলায় গৃহীত হয়েছে। এই উৎসগুলোকে নির্দেশ করে ভাষাতাত্ত্বিকেরা বাংলা ভাষার শব্দগুলোকে কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত করেছেন। সুবিখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এধরনের সাতটি বিভাগে বিভক্ত করেছেন, এবং বিভাগগুলো হল— তৎসম, তদ্ভব, অর্ধ-তৎসম, দেশি, বিদেশি, বাংলা বিভিন্ন ভারতীয় শব্দ, সংকর শব্দ। তবে এক্ষেত্রে বিখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক সুকুমার সেন বাংলা শব্দভাণ্ডরকে প্রধানত মৌলিক, আগন্তুক নামে মাত্র দুটি বিভাগে বিভক্ত করেছেন। তাঁর মৌলিক বিভাগের অন্তর্ভুক্ত শব্দগুলো ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে আগত শব্দাবলি। এই শব্দগুলো তদ্ভব, তৎসম, অর্ধ-তৎসম উপবিভাগে বিভক্ত। তিনি আগন্তুক শব্দগুলোকেও আবার ‘দেশি’ ও ‘বিদেশী’ নামে দুটা উপবিভাগে বিভক্ত করেছেন। এর মধ্যে ‘দেশি’ শব্দগুলো এসেছে ভারতবর্ষের প্রাচীন অধিবাসী অস্ট্রিক, দ্রাবিড় ইত্যাদি ভাষা থেকে এবং বিদেশি শব্দগুলো এসেছে আরবি ফারসি পোর্তুগিজ ফরাসি ইংরেজি প্রসূত ভাষা থেকে। বাংলা শব্দের প্রধান প্রধান শ্রেণিবিভাগ— একটি রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখানো হ’ল—
(গ) মৌলিক শব্দ’ কাকে বলে? এই বিভাগের বিভিন্ন উপবিভাগ সম্বন্ধে সংক্ষেপে আলোচনা কর?
উত্তরঃ মৌলিক শব্দঃ মৌলিক শব্দগুলোই হল প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বাংলাভাষার নিজস্ব শব্দ। এই বিভাগের তিনটি উপবিভাগ-
(ক) তৎসম শব্দ।
(খ) অর্ধ তৎসম।
(গ) তদ্ভব শব্দ।
তৎসম শব্দ – যেসব শব্দ মূল আর্য ভাষা বা সংস্কৃত থেকে বাংলা ভাষার অপরিবর্তিত বা অবিকৃতভাবে গৃহিত হয়েছে, সেই শব্দগুলোকে তৎসম শব্দ বলা হয়। যেমন— আকাশ, বায়ু, জল।
অর্ধ তৎসম – যে শব্দগুলো একসময়ে অবিকৃত ভাবে বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছিল, কিন্তু পরবর্তীকালে বিভিন্ন কারণে পরিপর্বিত হয়ে গিয়েছিল, সেই শব্দগুলোকে অর্ধ-তৎসম শব্দ বলা হয়। যেমন—
কৃষ্ণ > কেষ্ট।
নিমন্ত্রণ > নেমন্তন্ন।
তদ্ভব শব্দ – যে শব্দগুলো প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা থেকে ভাষাতাত্ত্বিক নানা পরিবর্তনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় গৃহিত হয়েছে, সেই শব্দগুলোকে তদ্ভব শব্দ বলা হয়। যেমন—
মিথ্যা > মিছা।
স্বর্ণ > সোনা।
(ঘ) ‘আগন্তুক শব্দ’ কাকে বলে? এই বিভাগের বিভিন্ন উপবিভাগ সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উত্তর মৌলিক শব্দাবলি ছাড়াও বাংলা ভাষায় যুগ যুগ ধরে অন্যান্য ভাষা থেকেও শব্দাবলি গৃহীত হয়েছিল। এভাবে অন্যান্য ভাষা থেকে আগত শব্দাবলিকে ‘আগন্তুক’ শব্দ নামে অভিহিত করা হয়।
এই বিভাগের উপবিভাগ হচ্ছে ‘দেশি’ শব্দ ও ‘বিদেশি শব্দ’।
(ক) দেশি শব্দ – আগন্তুক শব্দের ‘দেশি’ শব্দ উপবিভাগে সাধারণত আর্যমূলীয় অন্যান্য ভারতীয় ভাষা ছাড়া দ্রাবিড় অস্ট্রিক ইত্যাদি ভাষাবংশ থেকে আগত শব্দাবলিকেই নির্দেশ করা হয়। বঙ্গদেশে আর্যভাষার আগমনের পর যেসব স্থানীয় অনার্য শব্দ বাংলাভাষায় গৃহীত হয়েছে, সেই শব্দগুলোকেই দেখি শব্দ বলা হয় ।
যেমন— ঢোল, ডাব, ঝিঙ্গা, কুলা।
(খ) বিদেশি শব্দ – বিদেশি ভাষা থেকে যে সব শব্দ বাংলাভাষায় গৃহীত হয়েছে, সেই শব্দগুলোকে বিদেশি শব্দ বলা হয়। যেমন—
ফারসি শব্দ – কামান, জাহাজ, নগদ।
আরবি শব্দ – আইন, আক্কেল, কেতাব।
তুর্কি শব্দ – আলখাল্লা, গালিচা।
পোর্তুগিজ শব্দ – আনারস, আলকাতরা, বালতি।
ওলন্দাজ শব্দ – হরতন, রুইতন।
ফরাসি শব্দ – কার্তুজ কুপন।
রাশিয়ান শব্দ – বলশেভিক সোভিয়েত।
জাপানি শব্দ – হরাকিরি, বিকাশ।
চীনা শব্দ – চা, চিনি।
বর্মি শব্দ – ঘুগনি, লুঙ্গি।
ইংরেজি শব্দ – বাংলাভাষার এই ইংরেজি শব্দাবলিকে প্রধানত দুটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়। প্রথম বিভাগে ইংরেজি ভাষা থেকে বাংলায় গৃহীত সামান্য পরিবর্তিত শব্দাবলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেমন—
ল্যানটান > লুণ্ঠন।
সেন্ট্রি > সান্ত্ৰী।
দ্বিতীয় বিভাগে যে সব ইংরেজি শব্দ বাংলায় গৃহীত হয়েছে সেগুলো উচ্চারণের দিক থেকে অনেকটা অবিকৃত রয়েছে। যেমন – ট্রেন, কোট, সিনেমা।
এছাড়াও আর কিছু ইংরেজি শব্দের প্রভাবে প্রভাবিত শব্দ বাংলায় ব্যবহৃত হয়েছে। এওলোকে অনুবাদ ঋণ শব্দ বলা হয়। যেমন–
Textbook > পাঠ্য পুস্তক।
Lighthouse > বাতিঘর।
(ঙ) টীকা লিখ।
উত্তরঃ তৎসম শব্দ – তৎসম শব্দটির অর্থ হ’ল ‘তৎ’ অর্থাৎ তার ‘সম’ অর্থাৎ সমান।
‘তৎ’ বলতে এখানে সংস্কৃত শব্দকে বোঝানো হয়েছে। অতত্রব যে শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে অবিকৃতভাবে সরাসরি বাংলা ভাষায় এসেছে, সেই শব্দকে তৎসম শব্দ বলা হয়। যেমন- নিমন্ত্রন, প্রসন্ন, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদি।
অর্ধ-তৎসম শব্দ – অর্ধ-তৎসম অর্থাৎ অর্ধেকটা সংস্কৃত আর অর্ধেকটা সংস্কৃত নয়। যেসব সংস্কৃত শব্দ লোকমুখে উচ্চারিত হতে হতে বিকৃতি লাভ করে বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে সেই শব্দগুলিকে অর্ধ-তৎসম শব্দ বলা হয়। যেমন–
মহোৎসব > মোচ্চব।
উৎসন্ন > উচ্চন্ন।
কীর্তন > কেত্তন।
তদ্ভব শব্দ – ‘তৎ ভব’ অর্থাৎ তা থেকে উৎপন্ন অর্থাৎ সংস্কৃত থেকে উৎপন্ন শব্দই তদ্ভব শব্দ। যেসব সংস্কৃত শব্দ প্রাকৃত অপভ্রংশ ভাষার মধ্য দিয়ে ধারাবাহিক পরিবর্তন লাভ করে বাংলা ভাষায় আসে সেই শব্দগুলিকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ।
যেমন-
হস্ত > হখ > হাত।
কৃষ্ণ > কন্হ > কানু।
দেশি শব্দ – আর্যদের ভারতে আসার আগে এদেশে বসবাসকারী অনার্যদের মুখের যেসব ভাষা রূপান্তরিত হয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে তাদার বলা হয় দেশি ভাষা। যেমন—ঝিঙে, ডিভি, মুড়ি, চিল।
বিদেশি শব্দ – বিভিন্ন সময়ে এদেশে নানা বিদেশি নানা কারণে এসেছে। দীর্ঘদিন তারা এদেশে থাকার ফালে তাদের মুখের বহু শব্দ বাংলা ভাষার সঙ্গে মিলে গেছে, সেই শব্দগুলিকে বিদেশি শব্দ বলা হয়। যেমন—
ইংরেজি শব্দ – চেয়ার, টেবিল।
ফারাসি শব্দ – বাহাদুর, আদালত।
আরবি শব্দ – আস্তাবল।
পর্তুগিজ শব্দ – আনারস, আলপিন, আলকাতরা।
ইতালি – কোম্পানি, গেজেট।
অনুবাদ ঋণ – ইংরেজি শব্দের প্রভাবে অনেক শব্দ বাংলায় অনুবাদ করে গ্রহণ করা হয়েছে। এধরনের শব্দকে বলা হয় – অনুবাদ ঋণ। যেমন–
University > বিশ্ববিদ্যালয়।
Wrist Watch > হাতঘড়ি।
ইংরেজি ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় গৃহীত শব্দাবলি– বর্তমানকালে প্রচুর পরিমাণে ইংরেজি শব্দ বংলা শব্দভাণ্ডারে গৃহীত হয়েছে। বাংলাভাষার এই ইংরেজি শব্দাবলিকে প্রধানত দুটি বিভাগে বিভক্ত করা হয়। প্রথম বিভাগে ইংরেজি ভাষা থেকে বাংলায় গৃহীত সামান্য পরিবর্তিত শব্দাবলিকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। যেমন—
গ্লাস > গেলাস।
গার্ড > গারদ।
দ্বিতীয় বিভাগের ইংরেজি শব্দগুলো বাংলায় গৃহীত হয়েছে, তবে উচ্চারণের দিক থেকে অবিকৃত থেকেছি। যেমন— শার্ট, কোর্ট, ট্রেন।
অশুদ্ধ সংশোধন
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) বাংলা ভাষার অশুদ্ধি সংশোধন ও অশুদ্ধি বিচার কয়টি বিভাগে বিভক্ত।
উত্তরঃ বাংলা ভাষার অশুদ্ধি সংশোধন ও অশুদ্ধি বিচারকে চৌদ্দটি বিভাগে বিভক্ত।
(খ) বর্ণাত্তদ্ধি’ বিভাগের যে কোনো একটি উপবিভাগের নাম বলো।
উত্তরঃ ‘বর্ণাত্তদ্ধি’ বিভাগের একটি উপবিভাগের নাম হ’ল—ই-ঈ-ঘটিত অশুদ্ধি।
(গ) শুদ্ধ বানানটি নির্দেশ করো : ব্যকরণ, ব্যাকরণ শিরচ্ছেদ, শিরশ্ছেদ।
উত্তরঃ শুদ্ধ বানান হচ্ছে- ব্যাকরণ, শিরশ্ছেদ।
(ঘ) মুহূর্ত-মুহুর্তঃ কোন ধরনের বর্ণাশুদ্ধির উদাহরণ?
উত্তরঃ ঊ-ঊ ঘটি বর্ণাশুদ্ধির উদাহরণ।
(ঙ) যুক্তাক্ষর ঘটিত অশুদ্ধির যে কোনো একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
দ্বন্দ – দ্বন্দ্ব।
(চ) ‘উজ্জ্বল’ এর শব্দ রূপটি নির্ণয় করো।
উত্তরঃ উজ্জ্বল।
(ছ) কৃৎ তদ্বিতাদি ঘটিত অশুদ্ধির যে কোনো একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
উদ্বেলিত – উদ্বেল।
(জ) ‘শরৎ চন্দ্র’ শব্দটি বাংলার বহুল প্রচলিত হলেও শব্দটি ব্যাকরণদুষ্ট। এর শুদ্ধ রূপটি কী?
উত্তরঃ শরচ্চন্দ্র রূপটি শুদ্ধ।
(ঝ) ‘চাকচিক্য’ বাংলায় প্রচলিত হলেও, এর শুদ্ধ রূপটি কী?
উত্তরঃ চাকচক্য।
(ঞ) ইতোমধ্যে’ শব্দটি শুদ্ধ, কিন্তু তার পরিবর্তে বাংলায় কী ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ ইতিমধ্যে।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) একই ‘অহ্ন’ শব্দযোগে গঠিত ‘মধ্য + অহ্ন’ এবং ‘পূর্ব + অহ্ন শব্দ দুটির শুদ্ধ রূপ নির্ণয় করো।
উত্তরঃ ‘মধ্য + অহ্ন’ এর শুদ্ধ রূপ — মধ্যাহ্ন
‘পূর্ব + অহ্ন’ এর শুদ্ধ রূপ — পূর্বাহ
(খ) সন্ধি-বিষয়ক অশুদ্ধির যে কোনো দুটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ সন্ধি-বিষয়ক অশুদ্ধির উদাহরণ—
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
দুরাবস্থা – দুরবস্থা।
দিগেন্দ্ৰ – দিগিন্দ্র।
(গ) ‘সমাস-বিষয়ক অশুদ্ধি বিচার’ বিভাগের উপবিভাগ দুটির নাম উল্লেখ করো।
উত্তরঃ ‘সমাস-বিষয়ক অশুদ্ধি বিচার’ বিভাগের উপবিভাগ দুটির নাম হ’ল—
সমাসে পূর্বপদের পরিবর্তন।
সমাসে পরপদের পরিবর্তন।
(ঘ) অশুদ্ধি সংশোধন করো–
উত্তরঃ কনিষ্ঠতম – ভৌগলিক, শারিরিক, উর্দু, রসায়ন।
কণিষ্ঠতম – কণিষ্ঠ।
ভৌগলিক – ভৌগোলিক।
শারিরিক – শারীরিক।
উর্দ্ধ – ঊর্দ্ধ।
রসায়ন – রসায়ন।
৩। উত্তর দাওঃ
(ক) দারণ ও বর্ণাযুদ্ধির বিভিন্ন উপবিভাগের বৈশিষ্ট্যসহ পরিচয় দাও।
উত্তরঃ বাংলাভাষার স্বরবর্ণ বা ব্যঞ্জনবর্ণের অশুদ্ধ প্রয়োগের ফালে যে ধরনের অশুদ্ধি সংঘটিত হয়, তাকে বর্ণাশুদ্ধি বলা হয়। সাধারণত বাংলা ভাষায় স্বরবর্ণের ই, ঈ, উ, ঊ এবং ব্যঞ্জনবর্ণের শ, ষ, স, জ, য, র, ড়, ঢ় সহ ব-ফলা, ও য-ফলা ইত্যাদির উচ্চারণে কোনো পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। তাই এসব ক্ষেত্রে বর্ণাশুদ্ধির প্রচুর সম্ভাবনা থেকে যায়।
এই বিভাগকে আবার কয়েকটি উপবিভাগে বিভক্ত করা হয়। এই উপবিভাগ গুলো হল–
১.১ ই-ঈ-ঘটিত অশুদ্ধি – বাংলার ই, এর ঈ র উচ্চারণে সাধারণত কোনো বিশেষ পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। এই বর্ণাশুদ্ধির সম্ভাবনা এক্ষেত্রে বহুপরিমানে বেড়ে যায়। এই উপবিভাগের কায়েকটি বর্ণাশুদ্ধির উদাহরণ–
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
বাল্মিকী – বাল্মিকি।
উ-উ-ঘটিত অশুদ্ধি –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
শুশ্রুষা – শুশ্রূষা।
পূণ্য – পুন্য।
ণ, ন ঘটিত অশুদ্ধি –
কনিকা – কণিকা।
ধারন – ধারণ।
শ-ষ-স ঘটিত অশুদ্ধি –
পুরষ্কার – পুরস্কার।
শষ্য – শস্য।
২। যুক্তাক্ষর ঘটিত অশুদ্ধি – স্ব ফলা ঘটিত অশুদ্ধি
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
সাহার্য – সাহায্য।
৩। উচ্চারণ দোষ ঘটিত –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
পিচাশ – পিশাচ।
৩.১ বাংলা উচ্চারণের ক্ষেত্রে য-ফলার উচ্চারণজনিত অশুদ্ধি একটি উল্লেখযোগ্য উপবিভাগ। যেমন–
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
ব্যখ্যা – ব্যাখ্যা।
ব্যপ্ত – ব্যাপ্ত।
৪। একাই শব্দের বিভিন্ন বর্ণবিন্যাসঃ সংস্কৃত ভাষার কয়েকটি শব্দে দ্বিবিধ বানানে প্রচলিত। এই দ্বিবিধ বর্ণবিন্যাস থেকেও অশুদ্ধি সংঘটিত হয়। যেমন—
যদ্যাপি – যদ্যপি।
তরুছায়া – তরুচ্ছায়া।
৫। শব্দ প্রয়োগের অসাবধানতা – অনেক ক্ষেত্রে শব্দ প্রয়োগের অসাবধানতার জন্যও ভাষা প্রয়োগে অশুদ্ধতা সংঘটিত হয়।
আর্ত – পীড়িত।
আত্ত – গৃহীত।
পারক – সমর্থ।
পারগ – পারদর্শী।
৬। সন্ধি-বিষয়ক অশুদ্ধি বিচার : সন্ধি সম্বন্ধে সঠিক ধারণা না থাকার ফলে এধরনের অশুদ্ধি সংঘটিত হয়। এই বিভাগটিও কয়েকটি উপবিভাগে বিভক্ত—
৬.১. অ-কাড়ের পরবর্তী বিসর্গের বিভক্ত –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
মনযোগ – মনোযোগ।
সদ্যজাত – সদ্যোজাত।
৬.২. বর্গের প্রথম বর্ণের স্থানে তৃতীয় বর্ণ–
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
বাকদান – বাগদান।
ভবিষ্যৎবাণী – ভবিষ্যদবাণী।
৬.৩. বর্গের তৃতীয়-চতুর্থ স্থানে প্রথম বর্ণ –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
হৃদপিণ্ড – হৃৎপিণ্ড।
৬.৪. বিসর্গ স্থানে শ, ষ, স
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
পুরষ্কার – পুরস্কার।
৬.৫. ম স্থানে অনুস্বার বা পঞ্চম বর্ণঃ
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
বারম্বার – বারংবার।
৬.৬. সন্ধি বিষয়ক অন্যান্য অশুদ্ধি
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
যদ্যাপি – যদ্যপি।
৭. সমাস-বিষয়ক অশুদ্ধি বিচার
৭.১. সমাসে পূর্বপদের পরিবর্তন
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
গুণীগন – গুণিগন।
৭.২. পরপদের পরিবর্তনঃ
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
মহারাজা – মহারাজ।
অহর্নিশি – অহর্নিশ।
৭.৩ সমাস-ঘটিত অন্যান্য অশুদ্ধি
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
জ্ঞাতার্থে – জ্ঞানার্থে।
৭.৪. কৃৎ-তদ্ধিতাদি ঘটিত অশুদ্ধি – এই বিভাগটিতে প্রত্যয়জনিত অশুদ্ধির আলোচনা করা হয়।
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
উচিৎ – উচিত।
সাধ্যাতীত – অসাধ্য।
৭.৫. বিশেষ্য-বিশেষণাদির অপপ্রয়োগ
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
সকলেই মৌন হয়ে থাকলেন – সকলেই মৌনী হয়ে থাকলেন
দেবী অন্তর্ধান হলেন – দেবী অন্তর্হিত হলেন
৭.৬. বিশেষ্যের বিশেষণবৎ প্রয়োগ –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
একথা আমার মনে উদয় হল – উদিত হল
৭.৭. ব্যাকরণ দুষ্ট, কিন্তু বাংলার বহুপ্রচলিত –
শুদ্ধ – বংলায় প্রচলিত।
অর্ধাঙ্গ – অর্ধাঙ্গিনী।
নৈরাশ্য – নিরাশা।
(খ) সন্ধি বিষয়ক অশুদ্ধি বিচার?’ বিভাগের উপবিভাগগুলোর বৈশিষ্ট্য নিরূপণ করো?
উত্তরঃ সন্ধি সম্বন্ধে সঠিক ধারণা না থাকার ফলে এধরনের অশুদ্ধি সংঘটিত হয়। এই বিভাগটিও কয়েকটি উপবিভাগে বিভক্ত। যেমন—
১.১. অ কারের পরবর্তী বিসর্গের পরিবর্তন – এই উপবিভাগের উদাহরণ—
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
যশলাভ – যশোলাভ।
মনচোর – মনশ্চোর।
১.২ বর্গের প্রথম বর্ণের স্থানে তৃতীয় বর্ণ
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
বাক্দান – বাগদান।
বণিকগণ – বণিগগণ।
১.৩ বর্গের তৃতীয় চতুর্থ স্থানে প্রথম বর্ণ
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
হৃদপিণ্ড – হৃৎপিণ্ড।
ক্ষুধপিপাসা – ক্ষুৎপিপাসা।
১.৪. বিসর্গ স্থানে শ, ষ, স –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
তিরষ্কার – তিরস্কার।
নমস্কার – নমস্কার।
১.৫ ম-স্থানে অনুস্বার বা পঞ্চম বর্ণ–
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
কিম্বা – কিংবা।
সম্বরণ – সংবরণ।
১.৬ সন্ধি বিষয়ক অন্যান্য অশুদ্ধি –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
সন্মত – সম্মত।
অধ্যাবসায় – অধ্যবসায়।
(গ) টীকা লেখো
সমাস-বিষয়ক অশুদ্ধি বিচার – এই বিভাগের কয়েকটি উপবিভাগে বিভক্ত যেমন—
সমাসে পূর্বপদে পরিবর্তন –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
সলম্বিত – সলম্ব।
সমাসে পরপদের পরিবর্তন –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
মহারাজা – মহারাজ।
দিবারাত্র – দিবারাত্রি।
সমাস-ঘটিত অন্যান্য অশুদ্ধি –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
পিতৃসখা – পিতৃসখ।
কৃৎ তদ্ধিতাদি ঘটিত অশুদ্ধি –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
তথাপিও – তথাপি।
সত্ত্বা – সত্তা।
বিশেষ্য-বিশেষণাদির অপপ্রয়োগ –
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
অপমান হওয়ার আরভয় নেই – অপমানিত হওয়ার।
বিশেষ্যের বিশেষণবৎ প্রয়োগঃ
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
গোপন কথাটো বলো – গোপনীয়।
ব্যাকরণপদুষ্ট কিন্তু বাংলার বহুপ্রচলিত –
শুদ্ধ – বাংলায় প্রচলিত।
বহুরূপ – বহুরূপী।
ব্যাকরণদুষ্ট, কিন্তু বাংলায় বহু প্রচলিত অশুদ্ধি প্রয়োগ –
শুদ্ধ – বাংলায় প্রচলিত।
ইতঃপূর্বে – ইতিপূর্বে।
নৈরাশ্য – নিরাশা।
শ্রেষ্ঠ – শ্রেষ্ঠতর – তম।
কনিষ্ঠ – কণিষ্ঠতর – তম।
উচ্চারণ দোষ ঘটিত অশুদ্ধি –
বাংলা উচ্চারণের ক্ষেত্রে য ফলার উচ্চারণজনিত অশুদ্ধি একটি উল্লেখযোগ্য উপবিভাগ। বাংলায় য-ফলা উচ্চারণ খুব স্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট না হওয়ার জন্য, এ ধরনের অশুদ্ধি সংঘটিত হয়। এর কয়েকটি উদাহরণ—
অশুদ্ধ – শুদ্ধ।
ব্যখ্যা – ব্যাখ্যা।
ব্যকরণ – ব্যাকরণ।
ব্যয়াম – ব্যায়াম।
কারক বিভক্তি
১। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) বাংলায় কারক কয়টি।
উত্তরঃ বাংলায় কারক ছয়টি।
(খ) কর্তৃকারকের ‘তে’ বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ বুলবুলিতে ধান খেয়েছে।
(গ) কর্মকারকের সপ্তমী বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ পুলিসে খবর দাও।
(ঘ) করণ কারকের শূন্য বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ ছেলেরা বল খেলছে।
(ঙ) সম্প্রদান কারকের ‘তে’বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ সমিতিতে চাঁদা দিতে হবে।
(চ) অপাদান কারকের ষষ্ঠী বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধ্যা হয়।
(ছ) সম্বন্ধ পদের একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ অমিতের দাদা বড়ো গায়ক— এখানে অমিতের দাদা (সম্বন্ধ পদ)।
(জ) অধিকারণ কারকের ‘কে’ বিভক্তির একটি উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ ঘরকে চল।
(ঝ) বাংলার বিভক্তি কয়টি?
উত্তরঃ বিভক্তি দুই প্রকারের শব্দ বিভক্তি ও ধাতু বিভক্তি।
(ঞ) “শিকারি বেড়াল গোফে চেনা যায়’— নিম্নরেখ পদটি কোন কারকে সূচিত করে।
উত্তরঃ করণ কারক।
২। সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও
(ক) বাক্যের উপাদান কয়টি ও কী কী?
উত্তরঃ বাক্যের উপাদান পাঁচটি। বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয়ও ক্রিয়া।
(খ) কারক বলতে কী বোঝ?
উত্তরঃ বাক্যে ক্রিয়াপদের সঙ্গে বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের সম্বন্ধকে কারক বলে। ক্রিয়ার সঙ্গে এই সম্পর্ক ছয় প্রকারে নির্ধারিত হয়। তাই কারক ছয় প্রকার, যেমন— কর্তৃকারক, কর্মকারক, করণ কারক, নিমিত্তকারক, অপাদানকারক ও অধিকরণকারক।
বাক্যে মূল ক্রিয়াকে প্রশ্ন করে এই ছয়রকম সম্পর্ক নির্ণয় করা হয়। যেমন—
রাজা প্রাসাদে বসে স্বহস্তে রাজকোষ হতে
প্রজাদের ধন বিতরণ করছেন।
এই বাক্যে মূল ক্রিয়া ‘বিতরণ করছেন’। মূল ক্রিয়ারে কে, কী, কীসের দ্বারা, কাদেরকে, কোথা থেকেও কোথায় দিয়ে প্রশ্ন করে যে উত্তর পাওয়া যায় তা যথাক্রমে কর্তৃ, কর্ম, করণ, নিমিত্ত, অপাদান ও অধিকারণ কারক।
(গ) ‘কারক’ কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ কারক ছয় প্রকার।
যেমন— কতৃকারক, কর্মকারক, কারণ কারক, সম্প্রদান কারক, অপাদান কারক, অধিকরণ কারক।
(ঘ) কর্তৃকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি প্রযুক্ত হতে পারে কি? যদি পারে, তবে একটি উদাহরণ উল্লেখ করো যদি না পারে, তবে কেন, তা উল্লেখ করো।
উত্তরঃ কর্তৃকারকে সাধারণত প্রথমা বিভক্তি যুক্ত হলেও, ক্ষেত্রবিশেষে কর্মবাচ্যে ও ভাববাচ্য কখনো দ্বিতীয়া বিভক্তিও যুক্ত হয় যেমন—
কর্মবাচ্যে— তোমাকে এ কাজে করতেই হবে।
ভাববাচ্যে – আমাকে এবার উঠতে হবে।
অকর্মক ক্রিয়ার কর্তার লোকটিকে একদম মনে পড়ছে না।
(ঙ) করণ কারকে প্রথমা ও ষষ্ঠী বিভক্তির প্রয়োগ দেখিয়ে একটি করে উদাহরণ দাও?
উত্তরঃ করণ কারকে প্রথমা বিভক্তি- খেলাধুলা বা মারামারি অর্থসূচক ক্রিয়ার করণে তৃতীয়া বিভক্তির লোপ হয় এবং সেক্ষেত্রে শূন্য বিভক্তি হয়। যেমন— তিনজন মিলে তাস খেলছে (অর্থাৎ তাস দিয়ে খেলছে)
কারণ কারকে ষষ্ঠী বিভক্তি— করণ কারকে সাধারণত দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক ইত্যাদি কারক বাচক অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিভক্তি চিহ্নত্ত যুক্ত হয়। করণ কারকে তাই ষষ্ঠী বিভক্তির প্রয়োগও দেখা যায়। যেমন—
চোরকে লাঠির বাড়ি মারা হল (এখানে লাঠির বাড়ি)
(চ) কর্ম কারকের দুটি প্রকারভেদের নাম কী?
উত্তরঃ কর্ম কারকের দুটি প্রকার ভেদের নাম হ’ল— মুখ্যকর্ম ও গৌণকর্ম।
(ছ) অনুসর্গ ব্যবহার করা হয়?
উত্তরঃ বাংলায় অপাদান কারকে কোনো বিভক্তি চিহ্নযুক্ত হয়নি। এই কারকে বিভক্তির পরিবর্তে কয়েকটি অব্যয় ইত্যাদি শব্দ বা অনুসর্গ ব্যবহার করা হয়। অপাদান কারক ছাড়াও অন্যান্য কারকেইও এই ধরনের অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। এধরনের অনুসর্গগুলোকে কারক বাচক অনুসর্গ বলা হয়।
বাংলার কারক বাচক অনুসর্গগুলো–
করণ কারকে – দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক করে।
সম্প্রদানে – জন্য, তবে, লাগিয়া, নিমিত্ত, কারণ হেতু।
অপাদানে – হতে, থেকে, কাছ থেকে, নিকট হতে।
অধিকরণে – কাছে, মধ্যে, ভিতর, নিকটে।
এই কারকবাচক অনুসর্গগুলোর স্বতন্ত্র প্রয়োগ লক্ষ করা যায়, এবং এগুলোর নিজস্ব অর্থও আছে। এগুলো অবিকৃতভাবে অথবা বিভক্তিযুক্তভাবে বিশেষ্যর পরে প্রযুক্ত হয়।
(জ) করণ কারকে সাধারণত কোন কোন কারক বাচক অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ করণ কারকে দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক, করে ইত্যাদি কারক বাচক অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়।
(ঝ) অপাদান কারকে সাধরণত কোন কোন কারক বাচক অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ অপাদান কারকে হতে, থেকে, কাছ থেকে, নিকট হতে ইত্যাদি কারক বাচক অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়।
(ঞ) বাংলায় অধিকরণে কারকে কোন কোন কারক বাচক অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়?
উত্তরঃ অধিকরণ কারকে কাছে, মধ্যে, ভিতর, নিকটে ইত্যাদি কারক বাচক অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়।
(ট) নিম্নলেখ পদের কারক বিভক্তি কোন কারকে কোন বিভক্তি নির্ণয় করো।
১। ‘পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল’
উত্তরঃ কর্তৃকারকের শূন্য বিভক্তি।
২। ‘তোমার সব খুলে বলব।
উত্তরঃ কর্মকারকে সপ্তমী বিভক্তি (‘য়’ বিভক্তি)
৩। আমি কলমে লিখি, তুমি পেনসিলে লেখো।
উত্তরঃ কারণ করকে তৃতীয়া বিভক্তি (‘এ’বিভক্তি)
৪। ‘অন্ধজনে দেহ আলো, মৃতজনে প্রাণ।
উত্তরঃ সম্প্রদান কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
৫। ‘যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়’
উত্তরঃ অপাদান কারকে ষষ্ঠী ‘র’ বিভক্তি।
৬। তিলে তেল হয়।
উত্তরঃ অপাদান কারকে ‘এ’ বিভক্তি।
৭। তিলে তেল আছে।
উত্তরঃ অধিকরণ কারকে ‘এ’ সপ্তমী বিভক্তি।
৩। উত্তর দাওঃ
(ক) বাংলায় সাধারণত কোন কারকে কোন বিভক্তি প্রযুক্ত হয়, তা উদাহরণসহ আলোচনা করো?
উত্তরঃ বাংলায় সাধারণত কারকে যে শব্দবিভক্তিগুলো যুক্ত হয়, সেগুলো হল— কর্তৃকারক -অ (অথবা শূন্য বিভক্তি) এ, (য়ে, য়) তে (এতে)। যেমন –
(ক) কর্তৃকারকে শূন্য বিভক্তি – বনলতা বই পড়ে।
(খ) কর্তৃকারকে ‘এ’ বিভক্তি – রতনে রতন চেনে।
(গ) কর্তৃকারকে ‘তে’ বিভক্তি – বুলবুলিতে ধান খেয়েছে।
(ঘ) কর্তৃকারকে ‘য়’ বিভক্তি – ঘোড়ায় গাড়ি টানে।
কর্তৃকারকে সাধারনত প্রথমা বিভক্তি যুক্ত হলেও ক্ষেত্র বিশেষে দ্বিতীয়া, তৃতীয়া, ষষ্ঠী এবং সপ্তমী বিভক্তির ব্যবহার হতে দেখা যায়। যেমন—
কর্তৃকারকে দ্বিতীয়া বিভক্তি – তোমাকে এ কাজ করতেই হবে।
কর্তৃকারকে তৃতীয়া বিভক্তি – তোমার দ্বরা এ কাজ হবে না।
কর্তৃকারকে ষষ্ঠী বিভক্তি – গৃহদাহ শরৎচন্দ্রের রচিত।
কর্তৃকারকে সপ্তমী বিভক্তি – জ্ঞানে মৌনী ত্যাগে তিনি শ্লাঘারহিত।
কর্মকারকে সাধারণত দ্বিতীয়া বিভক্তি হয়। যেমন—
‘কে’ বিভক্তি — ডাক্তরকে ডাকো।
‘রে’ বিভক্তি – তারে একবার খাওয়াও না।
কখনো কর্মকারকে শূন্যবিভক্তির প্রয়োগও দেখা যায়। যেমন— বুদ্ধি খাটিয়ে কাজ করো। কর্মকারকে সপ্তমী বিভক্তি –
‘এ’ বিভক্তি – পুলিসে খবর দাও।
‘য়’ বিভক্তি – তোমায় সব খুলে বলব।
করণ কারকে সাধারণত দ্বারা, দিয়ে, কর্তৃক ইত্যাদি কারক বাচক অনুসর্গ ব্যবহৃত হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিভক্তি চিহ্নও যুক্ত হয়।
করণ করকে প্রথম বিভক্তি – লোকটাকে বেত মেরেছে
করণ কারকে তৃতীয়া বিভক্তি – ‘এ’ বিভক্তি ছলে-বলে কাজটা করতেই হবে।
‘য়’ বিভক্তি — টাকায় কী না হয়।
‘তে’ বিভক্তি – কড়িতে বাঘের দুধ মেলে।
করণ কারকে ষষ্ঠী বিভক্তি — এ কলমের লেখা সুন্দর ।
এরপর সম্প্রদান কারকে সাধারণত চতুর্থী বিভক্তি যুক্ত হয় তার চিহ্ন কে, রে।
কে বিভক্তি – ভিখারিকে ভিক্ষা দাও।
রে বিভক্তি – যে আমারে গৃহ করে দান।
এছাড়াও সম্প্রদান কারকে অন্যান্য বিভক্তিও যুক্ত হয়। যেমন—
শূন্য বিভক্তি – দিব তোমা ভক্তি শ্রদ্ধাঞ্জলি।
‘এ’ বিভক্তি – অন্ধজনে দেহ আলো, মৃতজনে দেহ প্রাণ।
‘তে’ বিভক্তি – সমিতিতে চাঁদা দিতে হবে।
‘য়’ বিভক্তি – আমায় দে মা তবিলদারি।
‘র’ বিভক্তি – দেবতার ধন কে যায় কি যায় ফিরায়ে।
অপাদান কারকে হতে, থেকে অনুসর্গ ব্যবহার হয়, তবে কয়েকটি ক্ষেত্রে বিভক্তির প্রয়োগও লক্ষ করা যায়।
অপাদান কারকে শূন্য বিভক্তি – বাড়ি পালিয়ে কোথায় যাবে
অপাদান কারকে কে রে বিভক্তি — জলকে অনিলের বড়ো ভয় অপাদান কারকে ষষ্ঠী ‘র’ বিভক্তি –যেখানে বাখের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়।
অপাদান কারক ‘এ’ ‘তে’ বিভক্তি – মেঘে বৃষ্টি হয় এতে আলকাতরা জন্মায়।
অধিকরণে কারকে সপ্তমী বিভক্তি হয় ‘এ’ বিভক্তি— তিলে তেল আছে।
অধিকরণ কারকে ‘তে’ বিভক্তি – বুড়িতে আনারস রেখেছি।
অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তি – তোমার বাড়ি সিয়ে আমি দুদিন কিরে এসেছি।
অধিকরণ কারকে ‘কে’ বিভক্তি – ঘরকে চল।
(খ) বাংলায় সকাল কারকেই যে ‘এ’ বিভক্তি ব্যবহৃত হতে পারে, তা উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাংলায় সকল কারকেই ‘এ’ বিভক্তি ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন—
কর্তৃকারকে ‘এ’ বিভক্তি – দলে মিলি কারি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ ।
কর্মকারকে ‘এ’ বিভক্তি – বৃথা গঞ্জ দশাননে।
করণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি – ভাতে পেট ভরে।
সম্প্রদায় কারকে ‘এ’ বিভক্তি – সর্ব কর্মফল শ্রীকৃষ্ণে অর্পণ করবে।
অপাদান কারকে ‘এ’ বিভক্তি – তিলে তেল হয়।
অধিকরণ কারকে ‘এ’ বিভক্তি – সমুদ্রজলে লবণ আছে।
(গ) বিভিন্ন কারকে ‘র’ বিভক্তির ব্যবহার উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ কর্তৃকারকে ‘র’ বিভক্তি – আমার বই পড়া শেষ হয়েছে
সম্প্রদান কারকে ‘র’ বিভক্তি – দেবতার ধন, কে যায় ফিরায়ে লয়ে, এই বেলা শোন।
অপাদান কারকে ‘র’ বিভক্তি – অনিরুদ্ধ আমার বয়সে বড়ো।
(ঘ) কর্ম, অপাদান এর অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তির প্রয়োগ উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তরঃ কর্ম কারকে শূন্য বিভক্তি – রাখাল গোরু চরায়।
অপাদান কারকে শূন্য বিভক্তি – বাড়ি পালিয়ে কোথায় যাবে?
অধিকরণ কারকে শূন্য বিভক্তি – আমি আগামী সোমবার দিল্লি যাব পারের দিন উৎসব।
(ঙ) কোন কোন কারকে প্রথমা বিভক্তি প্রযুক্ত হতে পরে?
উত্তরঃ কর্তৃকারকে সাধারণত শূন্য বিভক্তি হয়। কিন্তু ক্ষেত্র বিশেষে প্রথমা বিভক্তির এ, য় (যে) তে, এতে (এরে) বিভক্তিগুলোও ব্যবহৃত হয়। যেমন—
কর্তৃকারকে ‘এ’ বিভক্তি – নবকুমারকে ব্যাঘ্রে হত্যা করিয়াছে।
কর্তৃকারকে ‘ত’ বিভক্তি – গোরুতে লাঙ্গল টানে।
কর্তৃকারকে ‘য়’ বিভক্তি — ধোপায় কাপড় কাচে।
আবার করণ কারকে প্রথমা বিভক্তির প্রয়োগ ছেলেরা বল খেলছে।
সম্প্রদান কারকে প্রথমা বা (শূন্য বিভক্তি) – দিব তোমা ভক্তি শ্রদ্ধাঞ্জলি
অপাদান কারকে প্রথমা বিভক্তি – সেই সুমধুর স্তব্ধ দুপুর পাঠশালা পলায়ন।
অধিকরণ কারকে প্রথমা বিভক্তি — তোমার বাড়ি গিয়ে আমি দুদিন কিরে এসেছি।
(চ) শব্দ বিভক্তি কাকে বলা হয়? এই বিভক্তিগুলো কোন অর্থ প্রকাশ করে? বাংলায় শব্দবিভক্তিগুলো উল্লেখ করো।
উত্তরঃ শব্দবিভক্তি বিভক্তিরেরই রূপ। শব্দের সঙ্গে এ, র, কে ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়। এই বিভক্তিচিহ্নগুলোর কোনো আলাদা প্রয়োগ হয় না, এগুলোর আলাদাভাবে নিজস্ব কোনো অর্থও নেই। বাক্যমধ্যে শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এগুলো পদের অর্থকে বা কারককে সুনিশ্চিত করে।
বাংলাভাষায় কারকে যে শব্দবিভক্তিগুলো যুক্ত হয়, সেগুলো হল –
কর্তৃকারক – অ (শূন্য বিভক্তি) এ, (য়ে, য়) তে (এতে)
কর্মকারক ও সম্প্রদান কারক – এ (য়ে, য়) কে, রে (এরে)
করণ কারক ও অধিকরণ কারক – এ (য়ে, য়) তে (এতে)
(ছ) উদাহরণসহ বিভক্তি ও অনুসর্গের পার্থক্য আলোচনা করো।
উত্তরঃ বাক্যে কারকের অর্থ অর্থাৎ ক্রিয়াপদের মধ্যে অন্যান্য নামপদে- সম্বন্ধকে সুনির্দিষ্টভাবে প্রকাশ করতে কতগুলো বিভক্তি চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। এগুলোকে কারক বিভক্তি বলা হয় । এই বিভক্তি দুই প্রকারের শব্দবিভক্তি ও ধাতু বিভক্তি। শব্দের সঙ্গে এ, র, কে, এবং, ধাতুর সঙ্গে, এ, ই, ছে, ছেন, বে, বেন, ছিল, তাম, লাম ইত্যাদি বিভক্তি যুক্ত হয়। এই বিভক্তিচিহ্নগুলোর কোনো আলাদা প্রয়োগ হয় না, এগুলোর আলাদাভাবে নিজস্ব কোনো অর্থ ও নেই। বাক্যমধ্য শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এগুলো পদের অর্থকে বা কারকে সুনিশ্চিত করে। যেমন— পাগলে কিনা বলে, ছাগলে কি না খায়, এখানে কর্তৃকারকে ‘এ’ বিভক্তি যুক্ত হয়েছে। কিন্তু কারকে বিভক্তির পরিবর্তে কয়েকটি অব্যয় শব্দ বা অনুসর্গ ব্যবহার করা হয়। এধরনের অনুসর্গগুলোকে কারক বাচক অনুসর্গ বলা হয়। বাংলার কারক বাচক অনুসর্গগুলো যেমন—
কারণ কারকে, দ্বারা দিয়ে, কর্তৃক।
সম্প্রদানে – জন্য, তরে, নিমিত্ত।
আপাদানে — হতে, থেকে, কাছ থেকে।
অধিকারণ — কাছে, মধ্যে ভিতর।
এই কারকবাচক অনুসর্গগুলোর স্বতন্ত্র প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায় এবং এগুলোর নিজস্ব অর্থও আছে। এগুলো অবিকৃতভাবে অথবা বিভক্তিযুক্তভাবে বিশেষ্যের পরে প্রযুক্ত হয়। যেমন— তোমার দ্বারা এ কাজে হবে না।
Hi, I’m Dev Kirtonia, Founder & CEO of Dev Library. A website that provides all SCERT, NCERT 3 to 12, and BA, B.com, B.Sc, and Computer Science with Post Graduate Notes & Suggestions, Novel, eBooks, Biography, Quotes, Study Materials, and more.