Class 11 Advanced Bengali Chapter 11 রূপকথা

Class 11 Advanced Bengali Chapter 11 রূপকথা Question Answer | AHSEC Class 11 Advanced Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Class 11 Advanced Bengali Chapter 11 রূপকথা Notes and select needs one.

Class 11 Advanced Bengali Chapter 11 রূপকথা

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 11 Advanced Bengali Chapter 11 রূপকথা Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 11 Advanced Bengali Chapter 11 রূপকথা Solutions for All Subjects, You can practice these here.

রূপকথা

Chapter: 11

ADVANCED BENGALI

গদ্যাংশ

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

১। রূপকথা ও উপকথার মধ্যে পার্থক্য কী?

উত্তরঃ শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে রূপকথা বলতে এক রহস্যঘন মাধুর্য, একটি ঐন্দ্রজালিক মায়াঘোর বেষ্টন করে থাকে মানুষের মনে। যা মানুষের মনে লুক্কায়িত সুপ্ত বাসনাগুলিকে জাগিয়ে দেয়। অন্যদিকে উপকথা সম্পর্কে বলেছেন, উপকথা নামটির পেছনে একটি প্রচ্ছন্ন অবজ্ঞার ভাব আত্মগোপন করে আছে বলে অনুভব করা যায়, যেভাবে নকলের প্রতি আসলের, মেকির প্রতি খাঁটির, নীচের প্রতি উচ্চের যে অবজ্ঞাভাব দেখা যায় তেমনি। কোন গুরুগম্ভীর বয়স্কলোক শিশুদের খেলা দেখে যে সহানুভূতিমিশ্র নাসিকাকুঞ্চণ করে থাকেন, তেমনি সাংসারিক লোকের উপকথার উপর সে ধরনেরই নাসিকাকুঞ্চন।

২। রূপকথা সম্বন্ধে লেখকের বক্তব্য তোমার নিজের ভাষায় গুছিয়ে লেখো।

অথবা, 

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Join Now

রূপকথার বিরুদ্ধে প্রাপ্ত বয়স্কদের প্রধান অভিযোগ কী ? লেখক কিভাবে এই অভিযোগ খণ্ডন করেছেন ? আলোচনা করো।

উত্তরঃ রূপকথা বা উপকথা শব্দের অর্থ হল কল্পিত গল্প-কাহিনি। রূপকথা বা উপকথা এই দুটি নামকে কেন্দ্র করে দুটি ভিন্ন চিন্তাধারার পরিচয় পাওয়া যায়। লেখকের মতে উপকথার প্রতি মানুষের অবজ্ঞার ভাব রয়েছে। অন্যদিকে, রূপকথার মধ্যে বিরাজমান রহস্যঘন মাধুর্য, ঐন্দ্রজালিক মায়াঘোর রূপকথাকে ঘিরে রয়েছে। পাঠকদের কাছে ‘রূপকথা’ নামটি বেশি পছন্দের। আজকাল আধুনিক সাহিত্য সমালোচকরা রূপকথাকে আধুনিক সাহিত্যের আদর্শে বিচার করেছেন। এরফলে রূপকথার প্রতি অবিচার হচ্ছে। রূপকথাকে আধুনিক সাহিত্যের আদর্শে বিচার করলে চলবেনা কারণ রূপকথা প্রাচীন সাহিত্য, তাই তার সমস্ত মাধুর্যকে উপলব্ধি করতে হলে রূপকথার সৃষ্টির সময় হতে দেখতে হবে। আধুনিক সাহিত্যের 

উদ্দেশ্য ও গঠন প্রণালী রূপকথার ক্ষেত্রে খাটেনা। রূপকথা শিশুমনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। 

প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মন বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে তাই তাদের কাছে কল্পনার কোনো স্থান নেই।অন্যদিকে শিশুমন বাস্তব জগতের নানা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জীবনকে বিচার করতে শিখেনি। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত তাদের কাছে অপরিচিত । তাই তাদেরকে যা শোনানো হয় বা যা কিছু বলা হয় সবকিছুই তারা সত্য বলে মনে করে । প্রাপ্তবয়স্করা রূপকথাকে অবাস্তব ও অলীক বলে অভিযোগ করে থাকেন। কিন্তু সংসারে অবাস্তবেরও প্রয়োজন আছে। যেমন – নীল আকাশ অবাস্তব হলেও তা শতগভীর বন্ধনে মানবের বাস্তব জীবনের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে। অশান্ত, উদ্ধত মানব মন নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে অল্পসময়েই শান্ত হয়ে পড়ে। সুতরাং এটিকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিলে মানব মনের সৌন্দর্য ও উদারতা হারায়। সে হিসেবে রূপকথার প্রয়োজন আছে। দৈনন্দিন জীবন বা মাটির সঙ্গে যোগনা থাকলেও কল্পনায় মানব মনের অসম্ভব আশা- আকাঙ্খাকে অল্প সময়ের জন্য হলেও পূর্ণতা দানের মধ্যদিয়ে আনন্দ প্রদান করে । তাই বলা যায় স্ফুটতাই বাস্তবতার একমাত্র লক্ষণ নয়।

রূপকথার মধ্যে বঙ্গদেশের পরিবার ও সমাজজীবনের নিখুঁত ছবি পাওয়া যায়।তৎকালীন সমাজে প্রচলিত বহুবিবাহ, গৃহে সপত্নীবিরোধ, সপত্নী-পুত্রে প্রতি বিমাতার অত্যাচার, রূপসী প্রণয়নীর প্রতি মোহ ও পরিশেষে মোহভঙ্গ ইত্যাদি পারিবারিক জীবনের ঘটনাগুলি রূপকথায় চিত্রিত হয়ে আমাদের সামনে দেখা দেয়। যা বঙ্গদেশের সমাজের বাস্তব ছবি। রূপকথার রচয়িতাদের নাম নেই। রূপকথার রচয়িতারা সমগ্ৰজাতির মধ্যে আত্মগোপন করে থাকেন। যেভাবে মহাকাব্যের বিশালকায়ায় নামহীন লেখক নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব মিলিয়ে দিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। যারা আপনাতে আপনি বিকশিত হয়ে ওঠেন, তাদের স্বতন্ত্র ব্যক্তি-বিশেষের প্রয়োজন নেই। তেমনি রূপকথার রচয়িতাদের স্বতন্ত্র পরিচয়ের দরকার নেই। রূপকথাতে সাধারণ মানুষের প্রতি কোন রূপ অবজ্ঞা বা অবহেলা দেখতে পাওয়া যায়না। রূপকথায় রাজা-প্রজা, ধনী-দরিদ্র সম আসনে অধিষ্টিত। তারা একে অন্যের সুখে-দুঃখে পাশে থাকে। এককথায় রূপকথা মানব মনে লুকিয়ে থাকা অসম্ভব আশা-আকাঙ্খাকে কল্পনার রূপ দিয়ে অল্প সময়ের জন্য হলেও আমাদের চারপাশে আনন্দ লোকের নির্মাণ করে।

৩। রূপকথা কিভাবে আমাদের জীবনে স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে বুঝিয়ে দাও।

অথবা, 

আমাদের জীবনের উপর রূপকথার স্থায়ী প্রভাব বিচার করো। 

উত্তরঃ রূপকথা মানব জীবনে স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করে। 

প্রথমতঃ কোনো কবি বা লেখক তার লেখনীর ক্ষেত্রে কল্পনা রাজ্যের সাহায্য নেয়। কল্পনা রাজ্যে নানা মণি-মাণিক্যের ছড়াছড়ি কবির সুপ্ত সৌন্দর্যবোধ ও কবিত্বশক্তিকে জাগিয়ে তোলে। যে দেশে জীবনে বৈচিত্র্য ও বর্ণসুষমার একান্ত অভাব, সেখানে রূপকথা আমাদের বিচিত্র কল্প লোকের পরিচয় দেয়। অনেক ইংরেজ কবি রূপকথার ঋণ স্বীকার করেছেন। ওয়ার্ডস্ওয়ার্থ তাঁর আত্মজীবন কাহিনিতে লৌকিক গল্প কিভাবে তাঁর কল্পনাশক্তিকে উন্মেষিত করেছিল, কিভাবে কল্পনার সাহায্যে প্রাত্যহিক জীবনের তুচ্ছতা ও সংকীর্ণতাকে অতিক্রম করে এক বিশালতর রাজ্যে স্বচ্ছন্দ্যভ্রমণের সুখ অনুভব করেছিলেন তার বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন। রবীন্দ্রনাথও ‘শিশু’ কাব্যের শিশুচিত্তের উপর রূপকথার মায়াময় স্পর্শটি সজীব করে তুলেছেন। বিজ্ঞান- প্রযুক্তির দ্রুত উন্নয়নের যুগেও মানব মনে কল্পনার প্রদেশ আছে। মনের কল্পনার মাধ্যমে তার জীবনের যা কিছু অপ্রাপ্য আছে তা অল্প সময়ের জন্য হলেও পূর্ণতা দানের মধ্য দিয়ে আনন্দ প্রদান করে। কখনও এই আনন্দই তার অপূর্ণ আশা-আকাঙ্খাকে পূর্ণতা দানে প্রেরণা জোগায়।

সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা

১। “প্রকৃতপক্ষে দেখিতে গেলে রূপকথা অবাস্তব নহে, উহা একটা বাস্তবতার দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত ‘রূপকথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রূপকথা যে বাস্তবতার দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্টিত হয়েছে লেখক এখানে তা-ই বর্ণনা করেছেন। 

প্রাপ্তবয়স্কদের প্রধান অভিযোগ রূপকথা অবাস্তব ও অলীক। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখতে গেলে রূপকথা অবাস্তব নয়। ইহা বাস্তবতার দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্টিত। মানব মনের সূক্ষ্ম অতীন্দ্রিয় অনুভূতিগুলি যা মুহূর্তমাত্র হৃদয়ে উঠে পরমুহূর্তেই বিলীন হয়, তা মানবজীবনে স্থায়ী প্রভাব বিস্তার করেনা। হয়তো তার অস্তিত্ব সম্বন্ধে সকলেই প্রায় অচেতন। কিন্তু তারাও বাস্তবতার দাবী করতে পারে। রূপকথা মানব মনে যে অস্পষ্ট আবেগ, যে ক্ষীণ প্রতিধ্বনি, যে আপাত অসম্ভব আশা-আকাঙ্খা, কল্পনা জাগিয়ে তুলতে পারে তা যে অবাস্তব বা সম্পূর্ণ অনাত্মীয় একথা বলা যায়না। সুতরাং স্ফুটতাই বাস্তবতারৎ একমাত্র লক্ষণ নয়।

২। “রূপকথা কতকগুলি অসম্ভব বাহ্য ঘটনার ছদ্মবেশ পরিয়া আমাদের মনের সহিত ঐক্যের কথা গোপন রাখিতে চেষ্টা করে।”

অথবা, 

“পৃথিবীর সমস্ত পুরাতন জিনিসই এই নূতন রাজ্যের অধিবাসী।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত ‘রূপকথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রূপকথা অসম্ভব ঘটনার ছদ্মবেশ ধারণ করলেও তার সঙ্গে মানব মনের মিল খুঁজে পাওয়া যায় লেখক এখানে তা-ই বর্ণনা করেছেন।

রূপকথা ভিন্ন-ভিন্ন অসম্ভব ঘটনার ছদ্মবেশ ধারণ করলেও মানব মনের সংগে প্রকৃত ঐক্য গোপন রাখতে চায়। রূপকথার এই ছদ্মবেশ খুললেই মানব মনের সংগে তার যোগসূত্র সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। যে শক্তি বাস্তবে মানব মনকে অনুপ্রাণিত করে, যে আদর্শের মানব সন্ধান করেন, রূপকথার রাজ্যে সেই প্রেরণা ও আদর্শের সন্ধান পাওয়া যায়। দুঃখ হতে অব্যাহতি লাভ, সুখের খোঁজ, সৌন্দর্য পিপাসার পূর্ণ পরিতৃপ্তি, পাপ-পূণ্যের জয়-পরাজয়, এসব কিছু এই রূপরাজ্যেরই অধিবাসী। পৃথিবীর চিরপরিচিত ছবিগুলি কল্পনার দ্বারা সামান্য পরিবর্তিত হয়ে দেখা দেয় রূপকথায়। যেমন – বাস্তবজীবনে মানব আপন লক্ষ্যে অগ্রসর হওয়ার পথে প্রতিনিয়তই বাধা-বিঘ্নের সম্মুখীন হয়, রূপকথা রাজ্যে সেই বাধা বিঘ্নের রূপ নেয় রাক্ষস-খোক্ষস।

৩। “রূপকথার সৌন্দর্য সম্ভার তাহার জন্য, যে পৃথিবীর সংকীর্ণ আয়তনের মাঝে নিজ আশা ও কল্পনাকে সীমাবদ্ধ করে নাই।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত ‘রূপকথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। কবি এখানে শিশুদের মনের উপর রূপকথার যে প্রভাব পড়ে এখানে তা-ই বর্ণনা করেছেন।

রূপকথা শিশুমনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মন বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে তাই তাদের কাছে কল্পনার কোনো স্থান নেই, অন্যদিকে শিশুমন বাস্তব সংসারের নানা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জগৎ ও জীবনকে বিচার করতে শিখেনা। ফলে জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত তাদের কাছে অপরিচিত। তাই তাদেরকে যা শোনানো হয় বা যাকিছুই বলা হয় তারা তা-ই বিশ্বাস করে, তাদের কাছে তার-ই চিরসত্য হয়ে ওঠে। রূপকথা রাজ্যের রহস্যময়তা বা কাল্পনিকতার সৌন্দর্য্যে শিশুমন আকৃষ্ট হয়। তারা রূপকথার রাজ্যকে সত্য বলে মনে করে।

৪। “কিন্তু ইহার প্রথম ভিত্তি স্থাপনের প্রশংসা রূপকথারই প্রাপ্য।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রূপকথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত । রূপকথার উপর ভিত্তি করেই মানুষের মন কল্পনার সাম্রাজ্য বিস্তার করে লেখক এখানে তা-ই বর্ণনা করেছেন।

রূপকথা রাজ্যের নানা গল্প-কাহিনি শিশু মনের গোপন স্তরে প্রথম সঞ্চারিত হয়, তা-ই পরবর্তী জীবনের রহস্যবোধকে তার সমস্ত আলো-ছায়ায় ঘেরা বিচিত্রতাকে মানব মন বরণ করে আনে। মানব মনে সঞ্চিত সেই রূপকথা রাজ্যের গল্প-কাহিনি চারিদিকে কল্পনার মায়াজাল সৃষ্টি করে। শৈশবের প্রতি মানবের নিগূঢ় আকর্ষণই তার মনকে শৈশবে নিয়ে আসে, তখন রূপকথার গল্প-কাহিনি তার স্মরণে আসে ফলে সহজেই বৈচিত্র্যহীন প্রৌঢ়জীবনে রূপকথার মায়াজাল সংক্রামিত করে।

৫। ‘‘রাজা-রাজড়ার কথা ইহার বিষয়বস্তু হইলেও সাধারণ লোকের যে ক্ষীণ, সাময়িক সংকেত ইহাতে পাওয়া যায়, তাহার মধ্যে বিদ্বেষ বা অবজ্ঞার লেশমাত্র চিহ্ন নাই।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রূপকথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। সাধারণ মানুষরা রূপকথার রাজ্যে মান-মর্যাদা পেয়েছে লেখক এখানে তা-ই ব্যক্ত করেছেন।

রূপকথার মুখ্য বিষয়বস্তু রাজা-রাণী তথা রাজপুত্র-রাজকন্যার কাহিনি। তবে সাধারণ মানুষদের প্রতি রূপকথার রচয়িতাদের কোনরূপ অবজ্ঞা বা অবহেলা দেখতে পাওয়া যায়না। রূপকথায় রাজা-প্রজা, ধনী-দরিদ্র সম আসনে অধিষ্ঠিত। তারা একে অন্যের সুখ-দুঃখে পাশে থাকে। বিপদে পড়ে রাজপুত্র দরিদ্রের কুটীতে আশ্রয় নেয়, তাদের দ্বারা পুত্রসম প্রতিপালিত হয়, নিজ রাজ্যে প্রত্যাগমনের সময় তাদের উপকারের কথা মাথায় রেখে তাদের সাহায্য করে। এমন কত উদাহরণ রূপকথার রাজ্যে পাওয়া যায়। রূপকথা রাজ্যে ধনী দরিদ্রের কোনোরূপ ভেদাভেদ করা হয়নি। সেখানে সাধারণ মানুষ যথেষ্ট মান-মর্যাদা পেয়েছে।

৬। “রূপকথার বিরুদ্ধে যে অবাস্তবতার অভিযোগ আনা হয় তাহার বিশেষ কোন ভিত্তি নাই।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটি শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘রূপকথা’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত।

এখানে লেখক বলেছেন রূপকথা অবাস্তব নয়, বাস্তবতার দৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্টিত হয়েছে।

প্রাপ্তবয়স্করা রূপকথাকে অবাস্তব ও অলীক বলে অভিযোগ করে থাকেন। কিন্তু সংসারে অবাস্তবেরও প্রয়োজন আছে। যেমন – নীল আকাশ অবাস্তব হলেও তা শত গভীর বন্ধনে মানবের বাস্তব জীবনের সংগে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে। অশান্ত উদ্ধত মানব মন নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে অল্প সময়েই শান্ত হয়ে পড়ে। সুতরাং ইহাকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিলে মানব-মনের সৌন্দর্য্যতা ও উদারতা হারায়। সে হিসাবে রূপকথার প্রয়োজন আছে।

দৈনন্দিন জীবন বা মাটির সংগে যোগ না থাকলেও কল্পনায় মানব মনের অসম্ভব আশা-আকাঙ্খাকে অল্প সময়ের জন্য হলেও পূর্ণতা দানের মধ্যে দিয়ে আনন্দ প্রদান করে। তাই বলা যায় স্ফুটতাই বাস্তবতার একমাত্র লক্ষণ নয়।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। রূপকথা বলতে কী বোঝায় ?

উত্তরঃ রূপকথা বলতে অবাস্তব গল্প-কাহিনিকে বোঝায়। রূপকথার মুখ্য বিষয়বস্তু হলো রাজা- রাণী, রাজপুত্র-রাজকন্যা, রাক্ষস-রাক্ষসী বা ডাইনীকে কেন্দ্র করে নির্মিত অবাস্তব গল্প-কাহিনি।

২। “রূপকথার রচয়িতার কোন নামকরণ হয় নাই।” উক্তিটি সংক্ষেপে আলোচনা কর।

অথবা, 

রূপকথার রচয়িতার কোনো নামকরণ হয়নি কেন ?

উত্তরঃ রূপকথার রচয়িতার কোন নামকরণ হয়নি। লেখক একটি সমগ্র জাতির পশ্চাতে আত্মগোপন করে থাকেন। এখানে কোন ব্যক্তি বিশেষের কথা নেই, সমস্ত জাতির প্রাণের কথা, অন্তর্লোকে লুক্কায়িত আশা-আকাঙ্খা ইহাতে ধ্বনিত হয়ে ওঠে। যা পুরাতন সাহিত্যে একটি অদ্ভুত গুণ। যেভাবে মহাকাব্যের বিশালকায়ায় নামহীন লেখক নিজেদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব মিলিয়ে দিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। যারা আপনাতে আপনি বিকশিত হয়ে ওঠেন, তাদের স্বতন্ত্র ব্যক্তি বিশেষের প্রয়োজন নেই। তেমনি রূপকথার রচয়িতাদের স্বতন্ত্র পরিচয়ের দরকার নেই।

৩। “রূপকথার সৌন্দর্যসম্ভার তাহারই জন্য।”- অর্থ পরিস্ফুট করো। 

অথবা, 

“রূপকথার সৌন্দর্য্যসম্ভার তাহারই জন্য, যে পৃথিবীর সংকীর্ণ আয়োজনের মাঝে নিজ আশা ও কল্পনাকে সীমাবদ্ধ করে নাই।” – এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে ? তাদের মনের উপর রূপকথার প্রভাব আলোচনা করো।

উত্তরঃ এখানে শিশুদের কথা বলা হয়েছে।

প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কাছে রূপকথা অবাস্তব ও অলীক। কারণ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মন বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে তাই তাদের কাছে কল্পনার কোন স্থান নেই। অন্যদিকে দেখা যায় শিশুদেরকে যা শোনানো হয় তাই তারা বিশ্বাস করে, তাদের কাছে তাই-ই চিরসত্য। কারণ শিশুমন বাস্তব জীবনের সংগে পরিচিত নয়, রূপকথা রাজ্যের রহস্যময়তা বা কাল্পনিকতার সৌন্দর্য্যে শিশুমন আকৃষ্ট হয়। তারা রূপকথার রাজ্যকে সত্য বলে মনে করে।

৪। “রূপকথার বিরুদ্ধে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রধান অভিযোগ – ইহার অলীকতা ও অবাস্তবতা।” – প্রাপ্তবয়স্কদের এ অভিযোগ কতটা গ্রহণযোগ্য সংক্ষেপে লেখো। 

অথবা,

“সংসারে অবাস্তবেরও একটা প্রয়োজন আছে।” -অর্থ পরিস্ফুট করো।

অথবা, 

“ম্ফ টতাই বাস্তবতার একমাত্র লক্ষণ নহে।” -অর্থ পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ প্রাপ্তবয়স্করা রূপকথাকে অবাস্তব ও অলীক বলে অভিযোগ করে থাকেন। কিন্তু সংসারে অবাস্তবেরও প্রয়োজন আছে। যেমন – নীল আকাশ অবাস্তব হলেও তা শত গভীর বন্ধনে মানবের বাস্তব জীবনের সংগে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে। অশান্ত উদ্ধত মানব মন নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে অল্প সময়েই শান্ত হয়ে পড়ে। সুতরাং ইহাকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিলে মানব-মনের সৌন্দর্য্যতা ও উদারতা হারায়। সে হিসাবে রূপকথার প্রয়োজন আছে।

দৈনন্দিন জীবন বা মাটির সংগে যোগ না থাকলেও কল্পনায় মানব মনের অসম্ভব আশা-আকাঙ্খাকে অল্প সময়ের জন্য হলেও পূর্ণতা দানের মধ্যে দিয়ে আনন্দ প্রদান করে। তাই বলা যায় স্ফুটতাই বাস্তবতার একমাত্র লক্ষণ নয়।

৫। রূপকথার মধ্যে বাংলার সমাজ ও পরিবারের যে নিখুঁত চিত্র খুঁজে পাওয়া যায় তা সংক্ষেপে লেখো।

অথবা, 

আমাদের বঙ্গদেশের সামাজিক অবস্থা ও বিচারের কি এক সম্পূর্ণ ছবি এইরূপ কথার মধ্যে প্রতিফলিত হইয়াছে আলোচনা করো।

উত্তরঃ রূপকথার মধ্যে বঙ্গদেশের পরিবার ও সমাজ জীবনের নিখুঁত ছবি পাওয়া যায়। সমাজে প্রচলিত বহুবিবাহ, গৃহে সপত্নী বিরোধ, সপত্নী-পুত্রের প্রতি বিমাতার অত্যাচার, রূপসী প্রণয়িনীর প্রতি মোহ ও পরিশেষে মোহ ভঙ্গ। এসব শঠতা ও বিশ্বাসঘাতকতা ইত্যাদি পারিবারিক জীবনের ঘটনাগুলি রূপকথায় উজ্জলবর্ণে চিত্রিত হয়ে আমাদের সামনে দেখা দেয়। যা বঙ্গদেশের সমাজেরই বাস্তবচিত্র ।

৬। রূপকথার বিরুদ্ধে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রধান অভিযোগ দটি কি কি ?

উত্তরঃ রূপকথার বিরুদ্ধে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রধান অভিযোগ দুটি হল – রূপকথা অবাস্তব ও অলীক।

৭। “রূপকথাকে প্রকৃত সাহিত্যের নিয়মে বিচার করিলে ইহার প্রতি অবিচারই করা হইবে।” – উক্তিটির যথার্থতা প্রতিপন্ন করো।

উত্তরঃ আধুনিক সাহিত্য সমালোচকরা রূপকথাকে আধুনিক সাহিত্যের আদর্শে বিচার করতে শুরু করেন। কিন্তু রূপকথাকে এমনভাবে বিচার করলে রূপকথার প্রতি অবিচার করা হবে। কারণ আধুনিক সাহিত্যের আদর্শে রূপকথা নির্মিত হয়নি। আধুনিক সাহিত্যের উদ্দেশ্য ও গঠন প্রণালী রূপকথার ক্ষেত্রে খাটেনা। রূপকথা প্রাচীন সাহিত্য, তাই তার সমস্ত মাধুর্যকে উপলব্ধি করতে হলে রূপকথাকে সৃষ্টির সময় হতে দেখতে হবে।

প্রশ্ন ৮। ‘রূপকথা তাহার সম্মুখে একটি দিগন্ত বিস্তৃত, বাধা বন্ধনহীন কল্পনা রাজ্যের দ্বারা খুলিয়া দিয়া তাহার সংসারানাভিজ্ঞ মনের স্বচ্ছন্দ ভ্রমণের উপযুক্ত ক্ষেত্র রচনা করে।’ আলোচনা করো।

উত্তরঃ এখানে শিশুমনের উপরে কিভাবে রূপকথার প্রভাব পড়ে তাই আলোচিত হয়েছে।

রূপকথা শিশু মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মন বাস্তব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে তাই তাদের কাছে কল্পনার কোন স্থান নেই, অন্যদিকে শিশুমন বাস্তব সংসারে নানা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জগৎ ও জীবনকে বিচার করতে শিখে না। ফলে জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত তাদের কাছে অপরিচিত। তাই তাদিগকে যা শিখানো হয় বা যা কিছু বলা হয় তাই তারা বিশ্বাস করে তাদের কাছে তাই চিরসত্য হয়ে উঠে। রূপকথা রাজ্যের রহস্যময়তা বা কাল্পনিকতার সৌন্দর্যে সহজেই শিশু মন আকৃষ্ট হয়। এজন্যই তারা অতি সহজেই রূপকথার রস গ্রহণ করতে পারে। রূপকথার অপার্থিব সৌন্দর্য সম্ভার শিশুর কল্পনা প্রবণ মনের নিকট উন্মুক্ত হয়।

প্রশ্ন ৯। সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা লেখো:

“রূপকথার বিরুদ্ধে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রধান অভিযোগ – ইহার অলীকতা ও অবাস্তবতা।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘রূপকথা’ নামক রচনা থেকে নেওয়া হয়েছে।

এখানে রূপকথার বিরুদ্ধে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রধান ভযোগের কথা বলা হয়েছে।

রূপকথা হল কল্পিত গল্প কাহিনী। এই কল্পিত কাহিনী শিশুমনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। শিশুমন বাস্তব জগতের নানা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জীবনকে বিচার করতে শিখেনি। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত তাদের কাছে অপরিচিত। তাই তাদেরকে যা শোনানো হয় বা যা কিছু বলা হয় সবকিছুই তারা সত্য বলে মনে করে। অপরদিকে প্রাপ্তবয়স্করা রূপকথাকে অবাস্তব ও অলীক বলে অভিযোগ করে থাকেন। কিন্তু সংসারে অবাস্তবেরও প্রয়োজন আছে। যেমন –  নীল আকাশ অবাস্তব হলেও তা শত গভীর বন্ধনে মানবের বাস্তব জীবনের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছে। অশান্ত উদ্ধত মানব মন নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে অল্প সময়েই শান্ত হয়ে পড়ে। সুতরাং ইহাকে অবাস্তব বলে উড়িয়ে দিলে মানব মনের সৌন্দর্যতাও উদাহরণ হারায়। সে হিসেবে রূপকথার প্রয়োজন আছে।

দৈনন্দিন জীবন বা মাটির সঙ্গে যোগ না থাকলেও কল্পনায় মানব মনের অসম্ভব আশা-আকাঙ্ক্ষাকে অল্প সময়ের জন্য হলেও পূর্ণতা দানের মধ্য দিয়ে আনন্দ প্রদান করে। তাই বলা যায় স্ফুটতাই বাস্তবতার একমাত্র লক্ষণ নয়।

টীকা লিখ

রূপকথা – রূপকথা বলতে অবাস্তব গল্প-কাহিনিকে বোঝায়। রূপকথার মুখ্য বিষয়বস্তু হলো রাজা- রাণী, রাজপুত্র-রাজকন্যা, রাক্ষস-রাক্ষসী বা ডাইনীকে কেন্দ্র করে নির্মিত অবাস্তব গল্প-কাহিনি।

উপকথা – ‘উপকথা’ শব্দের অর্থ কল্পিত কাহিনি। রূপকথা ও উপকথার মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য দেখা যায়না। লেখক শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়-র মতে উপকথা নামটির পেছনে একটি প্রচ্ছন্ন অবজ্ঞার ভাব আত্মগোপন করে রয়েছে। যেমন নকলের প্রতি আসলের, মেকির প্রতি খাঁটির, নীচের প্রতি উচ্চের যে অবজ্ঞা ভাব সেই ভাবই।

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। ‘রূপকথা’ প্রবন্ধটি কার লেখা ?

উত্তরঃ শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।

২। এই রূপকথার রচয়িতার কোন………হয় নাই। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো) 

উত্তরঃ নামকরণ।

৩। রবীন্দ্রনাথের কোন্ কাব্যে শিশুচিত্তের উপর রূপকথার প্রভাব লক্ষ্য করা যায় ?

উত্তরঃ “শিশু কাব্যে।

৪। ‘অলীকতা’ শব্দের অর্থ কি ?

উত্তরঃ অসত্য বা মিথ্যা।

৫। ওয়ার্ডস্ ওয়ার্থ কে ছিলেন ?

উত্তরঃ ওয়ার্ডস ওয়ার্থ ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত ইংরেজ রোমান্টিক কবি।

৬। “সর্বত্রই একটা সাম্য শান্তির ভাব।” – কোথায় সাম্য শান্তির ভাব বিরাজিত ?

উত্তরঃ রূপকথার রাজ্যে।

৭। “এই রূপকথার রচয়িতার কোন নামকরণ হয়না।” কথাটি শুদ্ধ না ভুল ?

উত্তরঃ শুদ্ধ।

৮। রূপকথা শব্দের অর্থ কী ?

উত্তরঃ অবাস্তব গল্প।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top