Class 11 Advanced Bengali Chapter 5 রানার

Class 11 Advanced Bengali Chapter 5 রানার Question Answer | AHSEC Class 11 Advanced Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Class 11 Advanced Bengali Chapter 5 রানার Notes and select needs one.

Class 11 Advanced Bengali Chapter 5 রানার

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 11 Advanced Bengali Chapter 5 রানার Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 11 Advanced Bengali Chapter 5 রানার Solutions for All Subjects, You can practice these here.

রানার

Chapter: 5

ADVANCED BENGALI

পদ্যাংশ

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

১। ‘রানার’ কবিতা অবলম্বনে রানারের জীবনের একটি লিপিচিত্র অংকন করো।

অথবা, 

‘রানার কবিতার ভাববস্তু বিশ্লেষণ করো।

অথবা, 

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Join Now

‘রানার’ কবিতায় সুকান্ত ভট্টাচার্য রানারের জীবনের যে করুণকাহিনি ব্যক্ত করেছেন তা তোমার নিজের ভাষায় ব্যক্ত করো।

উত্তরঃ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ‘রানার’ কবিতায় গ্রামের রানার বা ডাক হরকরার দুঃখ দারিদ্র্যেঘেরা সংঘর্ষময় জীবনের কাহিনিকে চিত্রিত করেছেন। রানার রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের নানা বাধা- বিপত্তিকে অগ্রাহ্য করে জীবনের বৎসরের পথ বৎসর চিঠিপত্র ও টাকার বোঝা বহন করে রাত্রিতে হাতের লন্ঠন নিয়ে কত গ্ৰাম, বন, পথ অতিক্রম করে সে চলে শহরের উদ্দেশ্যে। তার এই সবেগে হরিণের মতো যাওয়া দেখে অবাক হয়ে পড়ে রাতের তারারা। রাণারের ভোর হবার আগেই শহরে পৌঁছে চিঠি ও টাকাকে ‘মেলে’ পৌঁছে দিতে হবে। এই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে মাটি ভিজে যায়, রাণারকে স্বল্প পরিমাণ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তার জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, বিশ্রাম বিসর্জন দিতে হয়। এই অল্প আয়েই সে তার সংসার চালায়। ডাক মারফতের আদান-প্রদান হওয়া টাকাগুলি পিঠে বহন করে নিয়ে গেলেও সে টাকা তার অভাবী সংসারের উদ্দেশ্যে খরচ করার অধিকার নেই। কারণ এই টাকাগুলি অন্যের মানুষের দুঃখ-বেদনা, আশা-আনন্দের বার্তা রানারই বহন করে নিয়ে যায় অথচ তার দুঃখ দারিদ্র্যেঘরা সংঘর্ষময় জীবনের কথা সকলের অজানা থেকে যায়। ভোরে পূর্বদিক লাল হয়ে উঠে, এর ফলে অন্ধকারের অবসান হয়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ভোরের রূপকার্থে বলতে চেয়েছেন যে  ‘দুঃখের রাত্রির’ অবসান হওয়ার পথে। মানুষে-মানুষে, ধনী দরিদ্রে যে ভেদাভেদ করা হয় তার অবসান আসন্ন। এই নতুন যুগের স্বাধীনতা ও সাম্যের বাণীকে বহন সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তাদেরই, যারা এযুগের বার্তাবহ, এঁরাই তো প্রকৃত রানার বা ডাক-হরকরা। রানারকে সকল ভীরুতা পিছনে ফেলে সময় নষ্ট না করে এই নতুন খবর প্রচার করার অনুরোধ জানাচ্ছেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য।

২। ‘রানার’ কবিতার সারসংক্ষেপ তোমার নিজের ভাষায় লেখো ?

অথবা, 

‘এব দুঃখের কথা জানবে না কেউ ‘ – এখানে কার দুঃখের কথা বলা হয়েছে ? তার জীবনের দুঃখের কারণ কি ? কবি তার সম্পর্কে কোন্ নতুন আশার সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছেন ?

উত্তরঃ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ‘রানার’ কবিতায় গ্রামের রানার বা ডাক হরকরার দুঃখ দারিদ্র্যেঘেরা সংঘর্ষময় জীবনের কাহিনিকে চিত্রিত করেছেন। রানার রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের নানা বাধা- বিপত্তিকে অগ্রাহ্য করে জীবনের বৎসরের পথ বৎসর চিঠিপত্র ও টাকার বোঝা বহন করে রাত্রিতে হাতের লন্ঠন নিয়ে কত গ্ৰাম, বন, পথ অতিক্রম করে সে চলে শহরের উদ্দেশ্যে। তার এই সবেগে হরিণের মতো যাওয়া দেখে অবাক হয়ে পড়ে রাতের তারারা। রাণারের ভোর হবার আগেই শহরে পৌঁছে চিঠি ও টাকাকে ‘মেলে’ পৌঁছে দিতে হবে। এই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে মাটি ভিজে যায়, রাণারকে স্বল্প পরিমাণ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তার জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, বিশ্রাম বিসর্জন দিতে হয়। 

এই অল্প আয়েই সে তার সংসার চালায়। ডাক মারফতের আদান- প্রদান হওয়া টাকাগুলি পিঠে বহন করে নিয়ে গেলেও সে টাকা তার অভাবী সংসারের উদ্দেশ্যে খরচ করার অধিকার নেই। কারণ এই টাকাগুলি অন্যের মানুষের দুঃখ-বেদনা, আশা-আনন্দের বার্তা রানারই বহন করে নিয়ে যায় অথচ তার দুঃখ দারিদ্র্যেঘরা সংঘর্ষময় জীবনের কথা সকলের অজানা থেকে যায়। ভোরে পূর্বদিক লাল হয়ে উঠে, এর ফলে অন্ধকারের অবসান হয়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ভোরের রূপকার্থে বলতে চেয়েছেন যে ‘দুঃখের রাত্রির’ অবসান হওয়ার পথে। মানুষে-মানুষে, ধনী দরিদ্রে যে ভেদাভেদ করা হয় তার অবসান আসন্ন। এই নতুন যুগের স্বাধীনতা ও সাম্যের বাণীকে বহন সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তাদেরই, যারা এযুগের বার্তাবহ, এঁরাই তো প্রকৃত রানার বা ডাক-হরকরা। রানারকে সকল ভীরুতা পিছনে ফেলে সময় নষ্ট না করে এই নতুন খবর প্রচার করার অনুরোধ জানাচ্ছেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য।

৩। ‘রানার’ কবিতার নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো।

অথবা, 

‘রানার’ কবিতার নামকরণ সার্থক হয়েছে কিনা, তা যুক্তি সহ বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতাটির প্রধান বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হল রানার। রানার শব্দের অর্থ ডাক-হরকরা। যে মানুষের চিঠিপত্র ডাকবাক্স থেকে সংগ্রহ করে প্রত্যেকের নির্ধারিত গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেয়। এই নামকরণের মধ্যদিয়েই অনুমান করা কবিতাটির বিষয়বস্তু। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ‘রানার’ কবিতায় দুঃখ-দারিদ্র্যেঘেরা সংঘর্ষময় রানারের জীবনকাহিনি বিবৃত করেছেন। যে রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে পথের নানা বাধা-বিপত্তিকে এড়িয়ে চিঠি ও টাকা কাঁধে নিয়ে সবেগে হরিণের মতো ছুটে চলে, তার এই দ্রুতবেগে যাওয়া দেখে রাতের তারারা অবাক হয়ে পড়ে।কত গ্রাম, বন, পথ পেরিয়ে সে যায়। তাঁকে ভোর হবার আগে শহরে পৌঁছে চিঠি ‘মেলে’ তুলে দিতে হবে,‌ অথচ এই কাজের বিনিময়ে সে যে পারিশ্রমিক পায় তা স্বল্প পরিমাণ। স্বল্প আয়েই অত্যন্ত কষ্টে সে তার সংসার চালায়। 

বৎসরের পর বৎসর সে এভাবে জীবনের সব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, বিশ্রাম বিসর্জন দেয় অল্প দামে। রানার দুঃখ-বেদনা, আশা-আনন্দের বার্তা বহন করে যথাযথ সময়ে সকলের কাছে পৌঁছে দেয় কিন্তু রানারের দুঃখ-যন্ত্রণার কথা কেউ খেয়াল রাখেনা। ডাকবিভাগের মারফত আদান-প্রদান হওয়া টাকা সে বহন করে নিয়ে যায় অথচ এই টাকার অধিকার তার নেই কারণ সে টাকা অন্যের। পথের দস্যুরা এই টাকার জন্য তাকে মেরে ফেলতেও পারে। এসব কিছুকে ভয় না করে সে আপন দায়িত্ব পালন করে চলে।

সুতরাং কবিতাটির বিষয়বস্তু পর্যালোচনায় দেখা গেছে ‘রানার’ কবিতাটির নামকরণ সবদিক দিয়ে সার্থক।

সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা

১। “ক্লান্ত শ্বাস ছুঁয়েছে আকাশ, মাটি ভিজে গেছে ঘামে

জীবনের সবরাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতা থেকে গৃহীত। কবি এখানে অভাবগ্রস্থ রানারের জীবনের কথা ব্যক্ত করেছেন। রানার হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরেও জীবনের সব সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য থেকে বঞ্চিত।

রানার রাত্রির অন্ধকারকে ভেদ করে, পথের সকল বাধা বিপত্তিকে এড়িয়ে পিঠে চিঠি ও টাকার বোঝা নিয়ে ছুটে চলে। ভোর হবার আগেই সমস্ত চিঠি ও টাকার বোঝা তাকে ‘মেল’ এ পৌঁছে দিতে হবে, তাই নিরন্তর হেঁটে চলে। রাত্রির হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে শরীর থেকে ঘাম ঝরে পড়ে মাটি ভিজে যায়। বৎসরের পর বৎসর এভাবেই জীবন কাটতে থাকে। এত পরিশ্রম করা সত্ত্বেও তার পারিশ্রমিক যৎসামান্য। যৎসামান্য আয়েই সে তাঁর জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছে। তার চারিদিকে নৈরাশ্যের অন্ধকার ছড়িয়ে পড়েছে।

২। “ঘরেতে অভাব, পৃথিবীটা তাই মনে হয় কালো ধোঁয়া,

পিঠেতে টাকার বোঝা, তবু এ টাকাকে যাবেনা ছোঁয়া।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’কবিতা থেকে গৃহীত। কবি রানারের অভাবগ্ৰস্থ জীবনের কথা ব্যক্ত করেছেন। কবিতাটির নাম ‘রানার’।

রানার বা ডাক-হরকরার আয় স্বল্প পরিমাণ। এই স্বল্প পরিমাণ আয়ে সংসার চালান অত্যন্ত কষ্ট। অথচ দেখা যায় ডাকবিভাগের মারফত অনেক আদান-প্রদান হওয়া টাকা রানার বাডাক- হরকরা বহন করে নিয়ে যান। রানারের ঘরে অভাব থাকা সত্ত্বেও এই টাকা খরচ করার তার অধিকার নেই কারণ এই টাকাগুলো অন্যের।

৩। “শপথের চিঠি নিয়ে চলো আজ

ভীরুতা পিছনে ফেলে –

পৌঁছে দাও এ নতুন খবর

অগ্ৰগতির ‘মেলে,”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’কবিতা থেকে গৃহীত। কবি এখানে রানারের প্রকৃত দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। সুকান্ত ভট্টাচার্য জনসাধারণের মধ্যে নবজাগরণের আভাস পেয়েছেন। তাঁর মতে, বিশ্বের প্রত্যেক স্থানেই গণতন্ত্র স্থাপনের আয়োজন চলছে। জনসাধারণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। রানারকে রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে এড়িয়ে শোষিত, নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের কাছে এই নতুন খবর পৌঁছে দিতে হবে।

৪। “মাভৈঃ রানার! এখানে রাতের কালো।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’কবিতা থেকে গৃহীত। রানার রাত্রির অন্ধকারকে ভেদ করে, পথের সকল বাধা বিপত্তিকে এড়িয়ে পিঠে চিঠি ও টাকার বোঝা নিয়ে ছুটে চলে। ভোর হবার আগেই সমস্ত চিঠি ও টাকার বোঝা তাকে ‘মেল’ এ পৌঁছে দিতে হবে, তাই নিরন্তর হেঁটে চলে। রাত্রির হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে শরীর থেকে ঘাম ঝরে পড়ে মাটি ভিজে যায়। বৎসরের পর বৎসর এভাবেই জীবন কাটতে থাকে। এত পরিশ্রম করা সত্ত্বেও তার পারিশ্রমিক যৎসামান্য। যৎসামান্য আয়েই সে তাঁর জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছে। তার চারিদিকে নৈরাশ্যের অন্ধকার ছড়িয়ে পড়েছে।

৫। “ভোর তো হয়েছে। আকাশ হয়েছে লাল

আলোর স্পর্শে কবে কেটে যাবে এই দুঃখের কাল ?”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতা থেকে গৃহীত। কবি এখানে রানারের দুঃখ-দারিদ্র্যে ঘেরা জীবনের কখন পরিবর্তন আসবে তা ব্যক্ত করেছেন।

‘ভোর’ বলতে সকালবেলাকে বোঝায়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য আলোচ্য কবিতায় ‘ভোর’ শব্দটি সাধারণ অর্থে ব্যবহার করেননি। তাঁর মতে ‘ভোর’ বলতে জনগণের মধ্যে যে জাগরণ দেখা দিয়েছে, তাঁকে রূপকের আড়ালে ‘ভোর’ বলছেন। রানারের কাজ হল গ্রামের ডাকঘর হতে চিঠি ও টাকা বহন করে নিয়ে ভোর হবার আগেই শহরের ‘মেলে’ পৌঁছে দেওয়া। বৎসরের পর বৎসর রানার এভাবেই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছে। কবি জিজ্ঞেস করছেন কবে রানারের বোঝা টানার দিন শেষ হবে ? কবি রানারকে শ্রমিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কবি বলতে চেয়েছেন চারিদিকে দিন বদলের হাওয়া বয়ে চলছে অর্থাৎ জনগণ আজ জেগে উঠেছেন। এই জাগরণ ভোরের আলোর মতো আকাশকে লাল করে তুলেছে। এই নবজাগ্রত চেতনাকে কবি আলোর ‘র্শস্প বলেছেন।

৬। “রানার চলেছে বুঝি ভোর হয় হয়,

আরো জোরে, আরো জোরে, এ রানার দুর্বার দুর্জয়।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতা থেকে গৃহীত। কবি এখানে  রানারের দৈনন্দিন জীবনের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের উল্লেখ করেছেন।

রানার বা ডাক-হরকরা বৎসরের পর বৎসর রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের সকল বাধা-বিপত্তিকে অগ্রাহ্য করে চিঠি ও টাকার বোঝাকে বহন করে ছুটে চলে হরিণের মতো দ্রুতগতিতে। ভোর হবার আগেই তাঁকে পৌঁছে দিতে হবে কিন্তু ভোর হবার আর বেশি দেরী নয়। তাই রানার দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।

৭। “রানার ! রানার! ভোর তো হয়েছে – আকাশ হয়েছে লাল

আলোর স্পর্শে কবে কেটে যাবে এই দুঃখের কাল ?’’ 

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘রানার’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গ – কবি এখানে রানারের দুঃখ-দারিদ্র্য ভরা জীবনের কখন অবসান হবে সে কথা ব্যক্ত করেছেন।

‘ভোর’ বলতে সকালবেলাকে বোঝায়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য আলোচ্য কবিতায় ‘ভোর’ শব্দটি সাধারণ অর্থে ব্যবহার করেননি। তাঁর মতে ‘ভোর’ বলতে জনগণের মধ্যে যে জাগরণ দেখা দিয়েছে, তাঁকে রূপকের আড়ালে ‘ভোর’ বলছেন।

রানারের কাজ হল গ্রামের ডাকঘর হতে চিঠি ও টাকা বহন করে নিয়ে ভোর হবার আগেই শহরের ‘মেলে’ পৌঁছে দেওয়া। বৎসরের পর বৎসর রানার এভাবেই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছে। কবি জিজ্ঞেস করছেন কবে রানারের বোঝা টানার দিন শেষ হবে ? কবি রানারকে শ্রমিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কবি বলতে চেয়েছেন চারিদিকে দিন বদলের হাওয়া বয়ে চলছে অর্থাৎ জনগণ আজ জেগে উঠেছেন। এই জাগরণ ভোরের আলোর মতো আকাশকে লাল করে তুলেছে। এই নবজাগ্রত চেতনাকে কবি আলোর ‘র্শস্প বলেছেন।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। ‘রানার’ কাকে বলা হয় ? রানারের কাজ কী ?

অথবা, ‘রানার’ বলতে কাকে বোঝায় ?

উত্তরঃ ‘রানার’ শব্দের অর্থ ডাক-হরকরা।

‘রানার’ এর কাজ হল চিঠি-পত্র ডাকঘর থেকে নিয়ে যার নামে আসে তার ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া।

২। ‘‘পিঠেতে টাকার বোঝা, তবু এ টাকাকে যাবেনা ছোঁয়া।” – অর্থ পরিস্ফুট করো। 

অথবা, 

কবিতাটির নাম উল্লেখ করো। ‘টাকাকে যাবে না ছোঁয়া’ – কেন ?

উত্তরঃ কবিতাটির নাম ‘রানার’।

রানার বা ডাক-হরকরার আয় স্বল্প পরিমাণ। এই স্বল্প পরিমাণ আয়ে সংসার চালান অত্যন্ত কষ্ট। অথচ দেখা যায় ডাকবিভাগের মারফত অনেক আদান-প্রদান হওয়া টাকা রানার বাডাক- হরকরা বহন করে নিয়ে যান। রানারের ঘরে অভাব থাকা সত্ত্বেও এই টাকা খরচ করার তার অধিকার নেই কারণ এই টাকাগুলো অন্যের।

৩। “ক্লান্ত শ্বাস ছুঁয়েছে আকাশ, মাটি ভিজে গেছে ঘামে।

জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্পদামে।

– উদ্ধৃতাংশের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

অথবা, 

কবি এখানে কাদের কথা বলেছেন ? তাদের জীবনের সামান্য পরিচয় দাও।

উত্তরঃ রানার রাত্রির অন্ধকারকে ভেদ করে, পথের সকল বাধা বিপত্তিকে এড়িয়ে পিঠে চিঠি ও টাকার বোঝা নিয়ে ছুটে চলে। ভোর হবার আগেই সমস্ত চিঠি ও টাকার বোঝা তাকে ‘মেল’ এ পৌঁছে দিতে হবে, তাই নিরন্তর হেঁটে চলে। রাত্রির হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে শরীর থেকে ঘাম ঝরে পড়ে মাটি ভিজে যায়। বৎসরের পর বৎসর এভাবেই জীবন কাটতে থাকে। এত পরিশ্রম করা সত্ত্বেও তার পারিশ্রমিক যৎসামান্য। যৎসামান্য আয়েই সে তাঁর জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছে। তার চারিদিকে নৈরাশ্যের অন্ধকার ছড়িয়ে পড়েছে।

৪। “এ বোঝা টানার দিন কবে শেষ হবে ?

রাত শেষ হয়ে সূর্য উঠবে কবে ?”

– নিহিতাৰ্থ বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ সহানুভূতিশীল কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য রানারের এই কষ্টময় জীবনকে দেখে জানতে চান যে রানারের এই বোঝা টানার দিন কবে শেষ হবে। রানার বৎসরের পর বৎসর রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের সকল বাধা-বিপত্তিকে এড়িয়ে চিঠি পত্রের বোঝা বহন করে চলে শহরের উদ্দেশ্যে। এই কাজের বিনিময়ে রানার পায় অল্প পারিশ্রমিক। এই অল্প পারিশ্রমিকেই জীবনের সব সুখ-শান্তি বিসর্জন দেয়। সহানুভূতিশীল কবি সুকান্ত রানারের এই দুঃখ- দারিদ্র্যেঘেরা, সংঘর্ষময় জীবনের দিকে তাকিয়ে ভাবছেন তার এই বোঝাটানার দিন কবে শেষ হবে।

৫। “দস্যুর ভয়, তারো চেয়ে ভয় কখন সূর্য ওঠে।”

– অর্থ পরিম্যফুট করো।

উত্তরঃ ‘রানার’ রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের সকল বাধা বিপত্তিকে এড়িয়ে পিঠে চিঠি ও ডাকবিভাগের মারফতে আদান- প্রদান হওয়া টাকার বোঝা নিয়ে ছুটে শহরের ‘মেলে’ পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে। রাত্রিতে দস্যুর দলেরা তার বহন করা টাকার লোভে তাকে মেরে ফেলতেও পারে, রানার তার চেয়েও বেশি ভয় করে না জানি সূর্যদেব কখন উদিত হয়। কারণ ভোর হবার আগেই শহরের ‘মেলে’ চিঠিগুলি পৌঁছে দিতে হবে।

৬। “পৌঁছে দাও এ নতুন খবর

অগ্রগতির মেলে।”

-কোন খবরের কথা বলা হয়েছে ? অগ্রগতির মেল কী ? ‘নতুন খবর’ শব্দটির অর্থ কী ?

উত্তরঃ সুকান্ত ভট্টাচার্য জনসাধারণের মধ্যে নবজাগরণের আভাস পেয়েছেন। তাঁর মতে, বিশ্বের প্রত্যেক স্থানেই গণতন্ত্র স্থাপনের আয়োজন চলছে। জনসাধারণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। রানারকে রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের সমস্ত বাধা- বিপত্তিকে এড়িয়ে শোষিত, নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের কাছে এই নতুন খবর পৌঁছে দিতে হবে।

৭। “রানার! রানার ভোর তো হয়েছে – আকাশ হয়েছে লাল

আলোর স্পর্শে কবে কেটে যাবে এই দুঃখের কাল ?”

– এখানে ‘ভোর’ বলতে কি বোঝানো হয়েছে ? আলোর ‘স্পর্শ’ কি ? উক্তিটির তাৎপর্য বোঝাও।

উত্তরঃ ‘ভোর’ বলতে সকালবেলাকে বোঝায়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য আলোচ্য কবিতায় ‘ভোর’ শব্দটি সাধারণ অর্থে ব্যবহার করেননি। তাঁর মতে ‘ভোর’ বলতে জনগণের মধ্যে যে জাগরণ দেখা দিয়েছে, তাঁকে রূপকের আড়ালে ‘ভোর’ বলছেন।

রানারের কাজ হল গ্রামের ডাকঘর হতে চিঠি ও টাকা বহন করে নিয়ে ভোর হবার আগেই শহরের ‘মেলে’ পৌঁছে দেওয়া। বৎসরের পর বৎসর রানার এভাবেই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে চলেছে। কবি জিজ্ঞেস করছেন কবে রানারের বোঝা টানার দিন শেষ হবে ? কবি রানারকে শ্রমিক শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত করেছেন। কবি বলতে চেয়েছেন চারিদিকে দিন বদলের হাওয়া বয়ে চলছে অর্থাৎ জনগণ আজ জেগে উঠেছেন। এই জাগরণ ভোরের আলোর মতো আকাশকে লাল করে তুলেছে। এই নবজাগ্রত চেতনাকে কবি আলোর ‘র্শস্প বলেছেন।

৮।‌ “এর দুঃখের কথা জানবে না কেউ শহরে ও গ্রামে,

এর কথা ঢাকা পড়ে থাকবেই কালো রাত্রির খামে।”

– এখানে কার দুঃখের কথা বলা হয়েছে ? তার জীবনের দুঃখের কারণ কী ? কবি তার সম্পর্কে কোন্ নতুন আশার সম্ভাবনা ব্যক্ত করেছেন ?

উত্তরঃ এখানে রানারের দুঃখের কথা বলা হয়েছে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ‘রানার’ কবিতায় গ্রামের রানার বা ডাক হরকরার দুঃখ 

দারিদ্র্যেঘেরা সংঘর্ষময় জীবনের কাহিনিকে চিত্রিত করেছেন। রানার রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের নানা বাধা- বিপত্তিকে অগ্রাহ্য করে জীবনের বৎসরের পথ বৎসর চিঠিপত্র ও টাকার বোঝা বহন করে রাত্রিতে হাতের লন্ঠন নিয়ে কত গ্ৰাম, বন, পথ অতিক্রম করে সে চলে শহরের উদ্দেশ্যে। তার এই সবেগে হরিণের মতো যাওয়া দেখে অবাক হয়ে পড়ে রাতের তারারা। রাণারের ভোর হবার আগেই শহরে পৌঁছে চিঠি ও টাকাকে ‘মেলে’ পৌঁছে দিতে হবে। এই হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমে শরীর থেকে ঘাম বের হয়ে মাটি ভিজে যায়, রাণারকে স্বল্প পরিমাণ পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তার জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, বিশ্রাম বিসর্জন দিতে হয়। এই অল্প আয়েই সে তার সংসার চালায়। 

ডাক মারফতের আদান-প্রদান হওয়া টাকাগুলি পিঠে বহন করে নিয়ে গেলেও সে টাকা তার অভাবী সংসারের উদ্দেশ্যে খরচ করার অধিকার নেই। কারণ এই টাকাগুলি অন্যের মানুষের দুঃখ-বেদনা, আশা-আনন্দের বার্তা রানারই বহন করে নিয়ে যায় অথচ তার দুঃখ দারিদ্র্যেঘরা সংঘর্ষময় জীবনের কথা সকলের অজানা থেকে যায়। ভোরে পূর্বদিক লাল হয়ে উঠে, এর ফলে অন্ধকারের অবসান হয়। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য ভোরের রূপকার্থে বলতে চেয়েছেন যে  ‘দুঃখের রাত্রির’ অবসান হওয়ার পথে। মানুষে-মানুষে, ধনী দরিদ্রে যে ভেদাভেদ করা হয় তার অবসান আসন্ন। এই নতুন যুগের স্বাধীনতা ও সাম্যের বাণীকে বহন সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তাদেরই, যারা এযুগের বার্তাবহ, এঁরাই তো প্রকৃত রানার বা ডাক-হরকরা। রানারকে সকল ভীরুতা পিছনে ফেলে সময় নষ্ট না করে এই নতুন খবর প্রচার করার অনুরোধ জানাচ্ছেন কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য।

৯। রানার কিসের বোঝা হাতে নিয়ে, কখন চলে ?

উত্তরঃ রানার চিঠি ও টাকার বোঝা হাতে নিয়ে রাত্রির অন্ধকারে চলে।

১০। ‘মাভৈঃ, রানার ! এখনো রাতের কালো।’

-‘মাভৈঃ’ ও ‘রানার’ শব্দের অর্থ লেখো।

উত্তরঃ ‘মাভৈঃ’ শব্দের অর্থ অভয়বাণী।

‘রানার’ শব্দের অর্থ ডাকহরকরা।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। ‘রানার’ কবিতাটির রচয়িতা কে ?

উত্তরঃ সুকান্ত ভট্টাচার্য।

২। ‘রানার’ কবিতাটি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে গৃহীত ?

উত্তরঃ ‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থ।

৩। ‘রানার’ শব্দের অর্থ কী ?

উত্তরঃ ডাক-হরকরা, অর্থাৎ যে চিঠিপত্র ডাকঘর থেকে সংগ্রহ করে প্রত্যেক মানুষের নির্ধারিত ঠিকানায় পৌঁছে দেয়।

৪। “জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্পদামে” – ওরা বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে ?

উত্তরঃ রানারদের।

৫। সুকান্ত ভট্টাচার্য কত বছর বয়সে মারা যান ?

উত্তরঃ একুশ বছর বয়সে।

৬। সুকান্ত ভট্টাচার্যের প্রথম কাব্যগ্রন্থ কোনটি ?

উত্তরঃ ‘ছাড়পত্র’ কাব্যগ্রন্থ।

৭। “ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে।”

-এখানে কার প্রিয়ার কথা বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ রানারের প্রিয়ার কথা বলা হয়েছে।

৮। “এর দুঃখের কথা জানবেনা কেউ শহরে ও গ্রামে।”

-কার দুঃখের কথা এখানে বলা হয়েছে ?

উত্তরঃ রানারের।

৯। রানারের ভোর হবার আগে চিঠি-পত্র গুলি কোথায় পৌঁছে দিতে হবে ?

উত্তরঃ শহরের ‘মেল’ গাড়িতে।

১০। মাভৈঃ রানার ! এখনো রাতের কালো।

মাভৈঃ শব্দের অর্থ কী ?

উত্তরঃ ভয় নেই।

সংক্ষিপ্ত টীকা লেখোঃ 

১। নতুন খবর।

উত্তরঃ সুকান্ত ভট্টাচার্য জনসাধারণের মধ্যে নবজাগরণের আভাস পেয়েছেন। তাঁর মতে, বিশ্বের প্রত্যেক স্থানেই গণতন্ত্র স্থাপনের আয়োজন চলছে। জনসাধারণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। রানারকে রাত্রির অন্ধকার ও নির্জনতাকে ভেদ করে, পথের সমস্ত বাধা- বিপত্তিকে এড়িয়ে শোষিত, নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের কাছে এই নতুন খবর পৌঁছে দিতে হবে।

১১। “ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে কারণ কী ?

-পঙক্তিটিতে কার প্রিয়ার কথা বলা হয়েছে ? তার বিনিদ্র রাত জাগার কারণ কী?

উত্তরঃ রানার বা ডাক-হরকরার স্ত্রীর কথা বলা হয়েছে।

স্বামীর অমঙ্গলের আশঙ্কায় সে বিনিদ্র রাত জাগে।

১২। ‘ছাড়পত্র’, ‘ঘুমনেই’, ‘মিঠেকড়া’ -কাব্যগ্রন্থগুলির কবি কে ?

উত্তরঃ কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top