Class 9 Social Science Chapter 13 প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহ Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 9 Social Science Chapter 13 প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহ and select needs one.
Class 9 Social Science Chapter 13 প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহ
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 9 Social Science Chapter 13 প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহ Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 9 Social Science Chapter 13 প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহ These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 9 Social Science Chapter 13 প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহ for All Subject, You can practice these here…
প্রধান অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহ
Chapter – 13
তৃতীয় খণ্ড : রাজনীতি বিজ্ঞান
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। সংজ্ঞা লেখ :
(ক) দরিদ্রতা।
(খ) বেকার।
(গ) জনসংখ্যার ঘনত্ব।
(ঘ) লিঙ্গ অনুপাত।
(ঙ) চরম দরিদ্রতা।
(চ) আপেক্ষিক দরিদ্রতা।
(ছ) বহনক্ষম উন্নয়ন।
(জ) সবুজ অর্থনীতি।
উত্তরঃ (ক) দরিদ্রতা : যে অবস্থায় জীবন ধারণের জন্য নিম্নতম প্রয়োজনগুলি যথেষ্ট পরিমাণে ভোগ করা সম্ভব হয় না সেই অবস্থাকে দরিদ্রতা বলা হয়। অর্থাৎ সমাজের যে সকল লোক কম আয়ের জন্য দৈনন্দিন জীবনে খাদ্য, কাপড়,বাসস্থান, শিক্ষা, ও স্বাস্থ্যের সুবিধাসমূহ নিম্নতম প্রয়োজনীয় পরিমাণ থেকে কম পরিমাণে ভোগ করে বেঁচে থাকে সেই সকল লোকের এই সমস্যা দারিদ্রতার সমস্যা বলে অভিহিত করা হয়। ভারত এবং পৃথিবীর কম উন্নত প্রায় সবগুলি দেশেই দারিদ্রতার সমস্যা আছে।
(খ) বেকার : বেকার বলতে কর্মহীনতাকে বুঝায়। যে সকল লোক কাজ করার কোনো সুযোগ পায় না তাঁদেরকে বেকার বলা হয়। কিন্তু অর্থনীতিতে যে সকল লোক কাজ করার ইচ্ছা ও ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও নিম্নতম প্রচলিত মজুরীর হারে বা এর সমান আয় উপার্জন করতে পারা কাজ পায় না তাদেরকে বেকার বলে। পৃথিবীর প্রত্যেক দেশেই বেকার সমস্যা আছে।
(গ) জনসংখ্যার ঘনত্ব : কোনো একটি স্থানের প্রতিবর্গ কিলোমিটার এলাকায় বসবাস করা মানুষের সংখ্যা বা জনসমষ্টিকে জনসংখ্যার ঘনত্ব বলা হয়।
(ঘ) লিঙ্গ অনুপাত : কোনো একটি রাজ্যে প্রতি হাজার পুরুষের বিপরীতে মহিলার সংখ্যাকে লিঙ্গ অনুপাত বলে। ভারতের রাজ্যসমূহের মধ্যে কেরালায় লিঙ্গ অনুপাত সবচেয়ে বেশি (১০৮৪) এবং সবচেয়ে কম হরিয়ানাতে (৮৭৭)
(ঙ) চরম দরিদ্রতা : ভারতের পরিকল্পনা আয়োগ গ্ৰহণ করা ক্যালরিভিত্তিতে সংজ্ঞার মতে গ্ৰাম অঞ্চলে দৈনিক মাথাপিছু ন্যূনতম ২৪০০ ক্যালরি এবং শহর অঞ্চলে দৈনিক মাথাপিছু ২১০০ ক্যালরি খাদ্য আহরণ করতে না পারলে একজন ব্যক্তিকে দরিদ্র বলা হয়। যে সকল লোক এই ন্যূনতম পরিমাণ থেকে কম খাদ্য আহরণ করতে পারে সঙ্গে দেখা সকল লোকের দরিদ্র অবস্থাটিকে চরম দরিদ্রতা বলা হয়।
(চ) আপেক্ষিক দরিদ্রতা : সম্পদ ও আয়ের অসম বিতরণে একটি দেশের অর্থনৈতিক অক্ষমতার সৃষ্টি হয়। এর ফলে সৃষ্টি হওয়া দরিদ্র অবস্থাকে আপেক্ষিক দরিদ্রতা বলে বলা হয়।
(ছ) বহনক্ষম উন্নয়ন : অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য যাতে পরিবেশের উপরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না পড়ে সেই উদ্দেশ্যে ১৯৮৭ সালে Brundland আয়োগ অবিরত বা বহনক্ষম উন্নয়ন (Sustainable Development) এর ধারণাটি গ্ৰহণ করেছিল। এই আয়োগ পরিবেশ ও উন্নয়নের বিশ্ব আয়োগ (World Commission on environment and development)বলে পরিচিত। এই আয়োগের মতে যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বারা বর্তমান প্রজন্মের অভাবসমূহ দূর হতে পারে অথচ তার সঙ্গে সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অভাবসমূহের দূরীকরণের ক্ষমতার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আপোস করা হয় না সেই অর্থনৈতিক উন্নয়নই হল বহনক্ষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
(জ) সবুজ অর্থনীতি : যে অর্থনীতির মূল লক্ষ্য হল পরিবেশের প্রতি থাকা ভয় ও পরিস্থিতি তন্ত্রের সমস্যাগুলি দূর করে বহনক্ষম উন্নয়ন লাভ করা, সেই ধরনের অর্থনীতিকে সবুজ অর্থনীতি বলা হয়।
প্রশ্ন ২। দরিদ্রতার সীমারেখা কী ? গ্ৰামাঞ্চলে এবং শহরাঞ্চলে দরিদ্রতার সীমারেখা কি ?
উত্তরঃ পরিকল্পনা আয়োগে গ্ৰহণ করা দরিদ্র সীমারেখা দৈনন্দিন খাদ্যবস্তুর থেকে পাওয়া শক্তির (ক্যালরি) পরিমাণ ভিত্তিতে নির্ধারণ করে। অনুসারে গ্ৰাম অঞ্চলে দৈনিক প্রতিজন লোকে নিম্নতম ২৪০০ ক্যালরি এবং নগর বা শহর অঞ্চলে দৈনিক প্রতিজন লোকে নিম্নতম ২১০০ ক্যালরি পেতে হলে মাসে যে পরিমাণের ভোগের ব্যয় করতে হয়, তার থেকে যে সকল লোকের ব্যয় কম, সেই সকল লোককে দরিদ্র সীমারেখার নীচে বলে গণ্য করা হয়।
ন্যূনতম ক্যালরি আহরণ করিতে হলে বর্তমান দামের হিসাবে গ্ৰাম অঞ্চলে ও শহর অঞ্চলে মাথাপিছু মাসিক ব্যয়ের পরিমাণ ছিল এই ধরনের।
বর্ষ | গ্রামাঞ্চল | শহরাঞ্চল |
২০০০-২০০১ | ৩২৮ টাকা | ৪৫৪ টাকা |
২০০৫–২০১৬ | ৩৬৮ টাকা | ৫৫৮ টাকা |
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হলে ও মাথাপিছু মাসিক ব্যয়ের পরিমাণ অপরিবর্তনীয় হয়ে থাকলে ক্যালরির পরিমাণ একই হয়ে থাকবে না।
প্রশ্ন ৩। ২০১১ সালের লোক গণনা অনুসারে ভারতবর্ষ ও অসমের জনসংখ্যা কত ?
উত্তরঃ ২০১১ সালের লোকগণনা অনুসারে ভারতবর্ষের জনসংখ্যা=১২১ কোটি।
অসমের জনসংখ্যা = প্রায় ৩ কোটি ১২ লাখ।
প্রশ্ন ৪। বিশ্বের মোট আয়তনের কত শতাংশ ভারতবর্ষ অধিকার করে আছে ?
উত্তরঃ ২.৪ শতাংশ।
প্রশ্ন ৫। ভারতের সর্বাধিক লিঙ্গ অনুপাত রয়েছে এমন রাজ্যটির নাম কী ? এবং তা কত ?
উত্তরঃ কেরালা ১০০০ পুরুষের বিপরীতে ১০৮৪ জন মহিলা।
প্রশ্ন ৬। অসমের জনসংখ্যা ঘনত্ব কত ?
উত্তরঃ অসমের জনসংখ্যা ঘনত্ব ৩৯৭ জন।
প্রশ্ন ৭। প্রচ্ছন্ন বেকার কাকে বলে ?
উত্তরঃ এই ধরনের বেকার বিশেষ করে কৃষিখণ্ডে দেখা যায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধি হলেও কৃষিজমির বা ভূমির পরিমাণ বৃদ্ধি হয়নি। গ্ৰাম অঞ্চলে নিয়োগের অন্য সুবিধা না থাকায় বদ্ধির্ত জনসংখ্যা সীমিত কৃষিভূমিতেই আত্মনিয়োগ করে। কৃষি-খণ্ডের এই অতিরিক্ত শ্রমিকসমূহের উৎপাদন ক্ষমতা কিন্তু শূন্যের সমান। এই ধরনের লোককে ছদ্মবেশী বেকার বলা হয়। অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশসমূহে কৃষিখণ্ডে এই ধরনের বেকার সর্বাধিক।
প্রশ্ন ৮। মুদ্রাস্ফীতি কী ?
উত্তরঃ মুদ্রাস্ফীতি বলতে ক্রমাগতভাবে দ্রব্যের মূল্য বা দাম বৃদ্ধি হওয়া ও মুদ্রার মূল্য হ্রাস হওয়াকে বুঝায়।
প্রশ্ন ৯। মুদ্রাস্ফীতি কারণগুলো কী কী ?
উত্তরঃ মুদ্রাস্ফীতির কারণসমূহ মূলত দুটি প্রধান কারণে মুদ্রাস্ফীতি সংঘটিত হয়। কারণ দুটি হল—
(১) চাহিদাজনিত। ও
(২) ব্যয় জনিত।
প্রশ্ন ১০। অবদমিত মুদ্রাস্ফীতি কাকে বলে ?
উত্তরঃ সরকারী নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাই মুদ্রাস্ফীতিকে মুক্ত মুদ্রাস্ফীতি হতে কম করে রাখে। একে দমিত মুদ্রাস্ফীতি বলে।
প্রশ্ন ১১। অবিধিগত ক্ষেত্রে নিয়োজিত শ্রমিকের সংখ্যা কত ?
উত্তরঃ ১০জন হতে শ্রমিক সংখ্যা।
মোট কর্মীসংখ্যা
প্রশ্ন ১২। কর্মী জনসংখ্যা =——————————– ×১০০
(শূন্যস্থান পূর্ণ কর)
মোট কর্মীসংখ্যা
উত্তরঃ কর্মী জনসংখ্যা =—————————–×১০০
মোট জনসংখ্যা
প্রশ্ন ১৩। বহনক্ষম উন্নয়নের সংজ্ঞা কোন আয়োগ কত সালে প্রবর্তন করেছিল ?
উত্তরঃ ১৯৮৭ সালে Brundtland আয়োগে বহনক্ষম উন্নয়নের সংজ্ঞাটি বাহির করেছিল বা আবিষ্কার করেছিল।
প্রশ্ন ১৪। পরিবেশ চিন্তাবিদগণের মূলমন্ত্র কী ?
উত্তরঃ পরিবেশ চিন্তাবিদগণের মূলমন্ত্র হল– চিন্তা হউক বিশ্বব্যাপী, কার্যপন্থা হউক স্থানীয় (Think Globally, Act locally)
দীর্ঘ উত্তর লেখো :
প্রশ্ন ১। ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান কারণগুলো বিশ্লেষণ করো।
উত্তরঃ ভারতবর্ষের জনসংখ্যা বৃদ্ধি সমস্যার মূল কারণসমূহ নীচে উল্লেখ করা হ’ল—
(১) উচ্চ জন্মহার : ভারতবর্ষ জন্মের হার মৃত্যুর হার হতে বেশী। যদি কোনো একটি দেশের জন্মের হার মৃত্যুর হার হতে বেশী হয় তখন সেই দেশের জনসংখ্যা স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। কারণ চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের গড় আয়ু তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই জন্য সরকারে উচ্চ জন্মহার নিয়ন্ত্রণ করবার জন্য নিজে কয়েকটি সজাগতামূলক ব্যবস্থা গ্ৰহণ করতে হবে।
(২) নিরক্ষকতা : ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য নিরক্ষরতা সমাজের এক ব্যাধি বলে অভিহিত করতে পারি। বহু লোক এখনও শিক্ষার থেকে বঞ্চিত। এই সকল লোক অদূরদর্শী ও অন্ধ বিশ্বাসের বলী হয়। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে সৃষ্টি হতে পারা সমস্যাগুলি বিষয়ে তাঁদের কোনো জ্ঞান বা ধারণা নাই। ফলে কোনো পরিকল্পনা না করে সন্তান জন্ম দিয়ে দেশের অর্থনীতি উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিরাট সমস্যার সৃষ্টি করেছে।
(৩) দ্রারিদ্রতা : ভারতের একটি বড় বা জ্বলন্ত সমস্যা হল দারিদ্রতা। বেশীর ভাগ দরিদ্র লোকই অশিক্ষিত। দারিদ্রতার বলী হওয়া এই অশিক্ষিত লোকগণ নিজের ছেলে-মেয়েকে শিক্ষার থেকে বঞ্চিত করে সংসারের ভাল মন্দ না বুঝে তাদের বিয়ে দেয়। ফলে অসংখ্য ছেলে-মেয়ে সংসার বৃদ্ধি হয় বা ভরে যায়।
কিন্তু খাদ্যাভাব বা পুষ্টি অভাবে এই লোক সকলে নিজের কর্মপটুতা হারিয়ে ফেলে ফলে দেশের অর্থনীতির বোঝাস্বরূপ হয়ে পড়ে।
(৪) সামাজিক অজ্ঞতা : অনুন্নত দেশসমূহের গ্ৰামের সমাজ অতিশয় অন্ধবিশ্বাসের দ্বারা প্রভাবিত হয়। সমাজের প্রচলিত রীতি-নীতি পরম্পরা ইত্যাদির প্রতি তাঁরা অতিশয় সচেতন। তাঁরা নিজের বংশরক্ষা করবার জন্য পুত্র সন্তান জন্ম পাওয়াটাকে প্রাধান্য দেয়। এই করতে গিয়ে পাঁচ-সাতটা ছেলে- মেয়ের জন্ম হয়। সুতরাং এই সামাজিক অজ্ঞতা ও অন্ধবিশ্বাস দূর করতে পারলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি হ্রাস পাবে।
(৫) জনসংখ্যা শিক্ষার অভাব : একটি সমাজে বসবাস করা সকল লোক শিক্ষিত হয় না। যদিও সরকার সকল লোককে শিক্ষিত করে তোলার জন্য কয়েকটি পরিকল্পনা গ্ৰহণ করেছে, যেমন—–সর্বশিক্ষা পরিকল্পনা। তথাপিও এইগুলি সম্পূর্ণরূপে কার্যকরী হয় নাই। এই সকল লোকে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতিসমূহের বিষয়ে জ্ঞাত হয় না বা জানে না। যদিও বিভিন্ন সংবাদপত্র, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে জন্ম নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে কি কি সমস্যাগুলির বিষয়ে উল্লেখ করা হয়, তথাপি জনসংখ্যা শিক্ষার অভাবে এই সমস্যাগুলি বিষয়ে তাঁরা বুঝতে অপারগ। সুতরাং ভারতবর্ষের জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য একে চিহ্নিত করা হয়।
প্রশ্ন ২। দরিদ্রতা কাকে বলে ? দরিদ্রতার সীমারেখা কীভাবে দরিদ্রতা ব্যাখ্যা করে আলোচনা করো।
উত্তরঃ যে অবস্থায় জীবন ধারণের জন্য নিম্নতম প্রয়োজনগুলি যথেষ্ট পরিমাণে ভোগ করা সম্ভব হয় না সেই অবস্থাকে দরিদ্রতা বলা হয়।অর্থাৎ দরিদ্রতাকে এমন একটি অবস্থাকে বুঝায় যেখানে একজন ব্যক্তি তাঁর জীবন ধারণের মৌলিক প্রয়োজনসমূহ যেমন খাদ্য, কাপড়, বাসস্থান,শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্ৰীর সুবিধাসমূহ আহরণে ব্যর্থ হয়।
ভারতের পরিকল্পনা আয়োগে গ্ৰহণ করা দরিদ্র সীমারেখা দৈনন্দিন খাদ্য বস্তুর থেকে পাওয়া ক্যালরি পরিমাণ ভিত্তিতে নির্ধারণ করে। এই অনুসারে গ্ৰাম অঞ্চলে দৈনিক প্রতি জন লোকে নিম্নতম ২৪০০ ক্যালরি এবং শহর অঞ্চলে দৈনিক প্রতিজন লোকে নিম্নতম ২১০০ ক্যালরি পেতে হলে মাসে যে পরিমাণে ভোগের ব্যয় করতে হয়, তার থেকে যে সকল লোকের ব্যয় কম সেই সকল লোককে দরিদ্র সীমারেখার নীচে বলে গণ্য করা হয়। গ্ৰাম অঞ্চলে অধিক ক্যালরির প্রয়োজন হয়, কারণ গ্ৰামের লোকের শহরের লোক থেকে শারীরিক পরিশ্রম বেশী। ন্যূনতম ক্যালরি আহরণ করতে চলিত দামের হিসাবে গ্ৰাম অঞ্চলে ও শহর অঞ্চলে মাথাপিছু মাসিক ব্যয়ের পরিমাণ ছিল এই ধরনের—–
বর্ষ | গ্রামাঞ্চল | শহরাঞ্চল |
২০০০-২০০১ | ৩২৮ টাকা | ৪৫৪ টাকা |
২০০৫–২০০৬ | ৩৬৮ টাকা | ৫৫৮ টাকা |
অবশ্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি হলে ও মাথাপিছু মাসিক ব্যয়ের পরিমাণ অপরিবর্তনীয় হয়ে থাকলে ক্যালরির মান একরকম হয়ে থাকবে না।
প্রশ্ন ৩। মুদ্রাস্ফীতি কাকে বলে ? মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের মূল পদ্ধতিগুলো আলোচনা কর।
উত্তরঃ মুদ্রাস্ফীতি বলতে ক্রমাগতভাবে দ্রব্যের মূল্য বা দাম বৃদ্ধি হওয়া ও মুদ্রার মুল্য হ্রাস হওয়াকে বুঝায়।
প্রধানত তিনটি উপায় অবলম্বন করে অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হয়। সেইগুলি হল—-
(ক) মুদ্রা সংক্রান্তীয় ব্যবস্থা।
(খ) রাজকোষীয় ব্যবস্থা। ও
(গ) অন্যান ব্যবস্থাবলী।
(ক) মুদ্রা সংক্রান্তীয় ব্যবস্থা মুদ্রা : মুদ্রা সংক্রান্তীয় ব্যবস্থাবলী প্রত্যেক দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক গ্ৰহণ করে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক হল কোনো একটি দেশের মুদ্রা সংক্রান্তীয় ব্যবস্থাসমূহ নিয়ন্ত্রণের প্রধান কর্তৃপক্ষ। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক মুদ্রার যোগান নিয়ন্ত্রণ করে বা বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কসমূহের ক্ষমতা হ্রাস করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
(খ) রাজকোষীয় ব্যবস্থা : সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কিছু সংখ্যক উপায় গ্ৰহণ করে। যেমন— সরকারী ব্যয় হ্রাস করা, করের পরিমাণ বৃদ্ধি করা, জনসাধারণের নিকট হতে ঋণ নেওয়া যাতে তাদের হাতে ব্যয়ক্ষমতা কমে যায়, ঋণ ব্যবস্বাপনা করে চলিত মুদ্রার যোগান হ্রাস করা, বৈদেশিক মুদ্রার তুলনায় মুদ্রার মূল্যমান বৃদ্ধি করা যাতে দেশ হতে রপ্তানির পরিমাণ কমে যায় এবং দেশীয় বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণের দ্রব্য ও সেবা উপলব্ধ হয়, দেশের বাজারে বিদেশী দ্রব্য সস্তা করে তোলা ইত্যাদি।
(গ) অন্যান্য ব্যবস্থাবলী : অন্যান্য ব্যবস্থাগুলির মধ্যে —–
(১) উৎপাদিত দ্রব্য সেবার পরিমাণ বৃদ্ধি করা যাতে এইগুলির কৃত্রিম অবাবের সৃষ্টি হয় না।
(২) মূল্য বৃদ্ধির বিপরীতে মূল্য নিয়ন্ত্রণ।
(৩) উপভোগ্য দ্রব্যের সুষ্ঠ বিতরণ ইত্যাদি।
এই ব্যবস্থাগুলিকে প্রশাসনীয় ব্যবস্থা বলা হয়। তদুপরি কালা বাজার (Black Market) রোধ করা, বা ফাঁসি রোধের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্ৰহণ করা ইত্যাদি প্রশাসনিক ব্যবস্থার অন্তর্গত।
প্রশ্ন ৪। বেকার সমস্যা কাকে বলে ? এটি কত প্রকার ও কী কী? এই সমস্যার মূল কারণগুলো উল্লেখ করো।
উত্তরঃ দেশের প্রচলিত মজুরীতে উপযুক্ত ও কর্মক্ষম লোকগণ কাজ করতে ইচ্ছুক হয়েও যদি কর্মসংস্থান না পায় তাদেরকে বেকার বলা হয়।
বেকার সাধারণত দুই প্রকারের—গ্ৰাম্য বেকার ও নগরীয় বা শহরীয়া বেকার। গ্ৰাম্য বেকার দুই শ্রেণির ঋতুগত বেকার ও ছদ্মবেশী বা প্রচ্ছন্ন বেকার। ঋতুগত বেকারগণ বৎসরের কয়েক মাস কাজ করার সুযোগ পায়, বাকী সময়ে তারা বেকার থাকে। উদাহরণস্বরূপ কৃষিকার্যে জড়িত লোক সকল ঋতুগত বেকার ও ছদ্মবেশী বা প্রচ্ছন্ন বেকার। কারণ বৎসরের ৬-৭মাস ছাড়া ভারতীয় কৃষকগণ কর্মহীন হয়ে বসে থাকে। একইভাবে চা উদ্যোগ, চেনী উদ্যোগ, বরফ উদ্যোগ প্রভৃতিতেও বৎসরের কয়েক মাস সময় কিছু সংখ্যক লোক বেকার হয়। কৃষিকার্যে একটি কাজ যদি দুইজন করতে পারে, সেখানে যদি পাচঁজন লোককে নিযুক্ত করা হয় তাহলে উপরি তিনজন লোককে ছদ্মবেশী বেকার বলে বলা হয়।
নগরীয় বা শহরীয়া বেকার দুই প্রকারের—-
(১) উদ্যোগিক বেকার। ও
(২) শিক্ষিত বেকার। শহরের উদ্যোগিক খণ্ডে যে সকল লোক কর্মসংস্থাপনের সুবিধা লাভ করে না তাঁদেরকে উদ্যোগিক বেকার বলা হয়। অপরদিকে উপযুক্ত যোগ্যতা থাকা স্বত্ত্বেও যখন কোনো লোকে কর্মসংস্থাপনের সুবিধা লাভ করে না তাঁদেরকে শিক্ষিত বেকার বলা হয়।
বেকার সমস্যার মূল কারণসমূহ নীচে উল্লেখ করা হল—-
(১) দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি : দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি বেকার সমস্যার প্রধান কারণ। বদ্ধির্ত জনসংখ্যা অনুপাতে নিয়োগের সুযোগ সুবিধা পর্যাপ্ত পরিমাণে না হওয়ায় বেকার সমস্যা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে সম্পদের পরিমাণ হ্রাস করে এবং মূলধন গঠনের প্রক্রিয়াও ক্ষতিগ্ৰস্ত করে।
(২) নিয়োগ বিহীন উন্নয়ন : দেশটিতে (ভারতে) রাষ্ট্রীয় আয় বৃদ্ধির হার ও নিয়োগ বৃদ্ধি হারের ব্যবধান বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধরনের অবস্থাকে নিয়োগ বিহীন উন্নয়ন (Jobless Growth) বলা হয়। ফলশ্রুতিতে বেকার সমস্যা জটিল রূপ ধারণ করেছে।
(৩) স্থবির কৃষি উন্নয়ন : ভারতবর্ষের মতো একটি কৃষিপ্রধান দেশে কৃষি ব্যবস্থার যে উন্নয়ন হওয়া দরকার বা প্রয়োজন ছিল তা হয়ে উঠে নাই। ফলস্বরূপ কৃষিজীবী, লোকের মধ্যে নিয়োগের সুবিধার অভাব সৃষ্টি হয়েছে।
(৪) উদ্যোগীকরণের মন্থর গতি : দেশটিতে উদ্যোগিক উন্নয়ন যে হারে হওয়া দরকার ছিল সেই হারে না হওয়ায় উদ্যোগী বেকার সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
(৫) ক্রটিপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থা : প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্বাই জনসাধারণকে উপযোগী (Employable) করে তুলতে না পারায় শিক্ষিত বেকার সমস্যাই জটিল রূপ ধারণ করেছে। বৃত্তিমুখী তথা কারিগরী শিক্ষার অভাবে জনসাধারণকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারে নাই।
উপরোক্ত কারণসমূহ ছাড়াও নিম্নমূলধন গঠন, দরিদ্রতা, উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাব ইত্যাদি বহু কারণে বেকার সমস্যা সমাধানে বাধা আরোপ করেছে। সুতরাং উপযুক্ত সরকারী নীতি প্রস্তুত করে এই সমস্যা সমাধান করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
প্রশ্ন ৫। সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো :
(ক) ঋতুজনিত বেকার।
(খ) চাহিদাজনিত এবং ব্যয়জনিত মুদ্রাস্ফীতি।
(গ) বহনক্ষম উন্নয়ন।
(ঘ) সবুজ অর্থনীতি।
(ঙ) মুক্ত ও দমিত মুদ্রাস্ফীতি।
উত্তরঃ (ক) ঋতুগত বেকার : যে সকল লোক বৎসরের কয়েক মাস বা ঋতুতে কাজ করার সুযোগ পায় না বলে বেকার হয়ে থাকে সেই ধরনের লোককে ঋতুগত বেকার বলে।
আমাদের দেশে বহু অঞ্চলে কৃষিখেতে জনসিঞ্চণের সুবিধা না থাকার জন্য খরার সময়ে শস্য উৎপাদনের জন্য মাটি চাষ ইত্যাদি কৃষির কাজ বন্ধ থাকে।সুতরাং এই অবস্থায় বৎসরের ৬/৭ মাস যাবৎ ভারতীয় কৃষক কর্মহীন হয়ে বসে থাকে। একই ভাবে চা উদ্যোগ, বরফ উদ্যোগ প্রভৃতিতেও বৎসরের কয়েক মাস সময় কিছু সংখ্যক লোক বেকার হয়।
(খ) চাহিদাজনিত ও ব্যয়জনিত মুদ্রাস্ফীতি : মুদ্রাস্ফীতি মূল দুটি কারণে হয়। একটি হল চাহিদা জনিত এবং অন্যটি হল ব্যয় জনিত।
চাহিদাজনিত মুদ্রাস্ফীতি হল যখন দ্রব্য বা সেবার প্রতি জনসাধারণের চাহিদা অনেক বৃদ্ধি পায় কিন্তু সেই অনুপাতে দ্রব্য বা সেবার যোগান বৃদ্ধি পায় না, এই অবস্থায় মানুষের হাতে অধিক মুদ্রা বা ক্রয় ক্ষমতা থাকে এবং এই জন্য বাজারে কম পরিমাণের দ্রব্য বা সেবার প্রতি চাহিদা বৃদ্ধি হয়। ফলে দ্রব্য ও সেবাগুলির মূল্য বৃদ্ধি পায়। সুতরাং দ্রব্য বা সেবার যোগানের তুলনায় এর চাহিদা বৃদ্ধি পেলেই মুদ্রাস্ফীতি হয়।
মুদ্রাস্ফীতির অন্য একটি কারণ হল দ্রব্য ও সেবার উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি। একে ব্যয় জনিত মুদ্রাস্ফীতি বলা হয় এবং ব্যয় বৃদ্ধির ফলেও মুদ্রাস্ফীতির সৃষ্টি হতে পারে। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধিজনিত মুদ্রাস্ফীতি প্রধানত তিনটি কারণের ফলে সংঘটিত হয়—-
(খ) মজুরি বৃদ্ধি।
(২) লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি। ও
(গ) দ্রব্যের উপরে আরোপ করা করের বোঝ।
(গ) বহনক্ষম উন্নয়ন : বর্তমান পৃথিবীর দেশসমূহের মধ্যে অর্থনৈতিক প্রগতি লাভের জন্য যে প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়েছে তা পরিবেশের উপরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়েছে। পরিবেশের ধ্বংসই পৃথিবীর পারিপার্শ্বিকতার প্রতি ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে। পৃথিবীর উষ্ণতা প্রতি শতকেই বৃদ্ধি হতে আরম্ভ হয়েছে। এর ফলে গোলকীয় উষ্ণতা সমস্যার উদ্ভব হয়েছে। জৈব বৈচিত্র্য হ্রাস, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি বহু সমস্যাই পরিবেশ বিনষ্ট করেছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিকাশের জন্য যাতে পরিবেশের উপরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া না পড়ে সেই উদ্দেশ্যে ১৯৮৭ সালে Brundtland আয়োগে অবিরত বা বহনক্ষম উন্নয়ন-এর ধারণাটি তুলে ধরেছিল। এই আয়োগে পরিবেশ ও উন্নয়নের বিশ্ব আয়োগ বলে পরিচিত। এই আয়োগের মতে যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের দ্বারা বর্তমান প্রজন্মের অভাবসমূহ দূর হতে পারে অথচ তার সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অভাবসমূহের দূরীকরণের ক্ষমতার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের আপোষ করা হয় না সেই অর্থনৈতিক উন্নয়ন হল অবিরত বা অক্ষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
(ঘ) সবুজ অর্থনীতি : যে অর্থনীতির মূল লক্ষ্য হল পরিবেশের প্রতি ভয় থাকা ও পরিস্থিতিতন্ত্রের (Ecological system) সমস্যাগুলি দূর করে বহনক্ষম উন্নয়ন লাভ করা। সেই ধরনের অর্থনীতিকে সেইজ বা সবুজ অর্থনীতি বলা হয়।
পরিবেশ সচেতন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য এখন মূলমন্ত্র হয়েছে : চিন্তা হউক বিশ্বব্যাপী, কার্যপন্থা হউক স্থানীয় (Think Globally act locally)।
অর্থনীতির লক্ষ্য হতে হবে একটি সবুজীয় পৃথিবীর প্রতি পালন।
(ঙ) মুক্ত ও দমিত মুদ্রাস্ফীতি : যখন দর বা দামের স্তরের উপরে কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না এবং দর বা দাম অবাধে বৃদ্ধি হয় সেই অবস্থাকে মুক্ত মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়।
অন্যদিকে সরকার বিভিন্ন প্রত্যক্ষ ব্যবস্থার মাধ্যমে যেমন সরকারী বিতরণ ব্যবস্থা, সরকারীভাবে দর নির্ধারণ ইত্যাদির মাধ্যমে দর বা দাম নিয়ন্ত্রণ করে। এই ধরনের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাই দর বা দাম স্তর মুক্ত মুদ্রাস্ফীতির দর বা দাম স্তর হতে কম রাখে এবং দর বা দাম স্তর বৃদ্ধির পরিমাণ হ্রাস হয়। এই ধরনের মুদ্রাস্ফীতিকে দমিত মুদ্রাস্ফীতি বলা হয়।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। গ্ৰামাঞ্চলে একজন লোকের দৈনিক কত ক্যালরি প্রয়োজন।
উত্তরঃ ২৪০০ ক্যালরি।
প্রশ্ন ২। শহরাঞ্চলে একজন লোকের দৈনিক কত ক্যালরি প্রয়োজন।
উত্তরঃ ২১০০ ক্যালরি।
প্রশ্ন ৩। গ্ৰাম্য বেকার কয়প্রকার ও কি কি ?
উত্তরঃ গ্ৰাম্য বেকার দুই প্রকার—-
(১) ঋতুগত বেকার।ও
(২) ছদ্মবেশী বেকার।
প্রশ্ন ৪। নগরের বেকার কয় প্রকার ও কি কি ?
উত্তরঃ নগরের বেকার দুই প্রকার—-
(১) উদ্যোগিক বেকার।ও
(২) শিক্ষিত বেকার।
প্রশ্ন ৫। ২০১১ সালের লোকপিয়ল মতে ভারতের জনসংখ্যা কত ?
উত্তরঃ ১২১ কোটি।
প্রশ্ন ৬। ২০১১ সালের লোকপিয়ল অনুযায়ী অসমের জনসংখ্যা কত ?
উত্তরঃ ৩ কোটি ১২ লাখ।
প্রশ্ন ৭। ভারতের কোন রাজ্যে দারিদ্রতার সংখ্যা সবচেয়ে কম ?
উত্তরঃ অসম রাজ্যে।
প্রশ্ন ৮। ভারতের কোন রাজ্যে সবচেয়ে জনসাধারণের জীবন ধারণের মানদণ্ড উন্নত ?
উত্তরঃ অসম রাজ্যে।
প্রশ্ন ৯। ভারতের কোন সংগঠনটি দারিদ্রতার সংখ্যা নির্ণয় বা বাহির করে ?
উত্তরঃ রাষ্ট্রীয় প্রতিদর্শ জরীপ (National Sample Survey)।
প্রশ্ন ১০। জনসংখ্যা বিস্ফোরণের সৃষ্টি করা দুইটি সমস্যার নাম লিখ।
উত্তরঃ (১) খাদ্য সমস্যা।
(২) বেকার সমস্যা।
প্রশ্ন ১১। অসমের জনসংখ্যা ঘনত্ব কত ?
উত্তরঃ অসমের জনসংখ্যা ঘনত্ব হল ৩৯৭ জন। অসমের জনসংখ্যার ঘনত্ব দেশের জনসংখ্যা ঘনত্ব হতে বেশী।
প্রশ্ন ১২। ভারতের জনসংখ্যার ঘনত্ব (প্রতিবর্গ কিলোমিটারে) কত ?
উত্তরঃ ৩৮২ জন।
প্রশ্ন ১৩। ভারতের কোন রাজ্যে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশী ?
উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গ।
প্রশ্ন ১৪। ভারতের কোন রাজ্যে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে কম ?
উত্তরঃ অরুণাচল প্রদেশ।
প্রশ্ন ১৫। অসমের কোন জিলায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশী ?
উত্তরঃ অসমের ধুবরী জেলায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশী (২৪.৪ শতাংশ।)
প্রশ্ন ১৬। অসমের কোন জেলায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবচেয়ে কম ?
উত্তরঃ কোকরাঝাড় জেলায়। (৫.১৯ শতাংশ।)
প্রশ্ন ১৭। অসমের কোন জেলায় জনসংখ্যা ঘনত্ব সবচেয়ে বেশী ?
উত্তরঃ কামরূপ মহানগর জেলা (২০১০)
প্রশ্ন ১৮। সর্বনিম্ন জনসংখ্যার ঘনত্ব থাকা জেলা কোটি ?
উত্তরঃ সর্বনিম্ন জনসংখ্যার ঘনত্ব জেলা হল ডিমা হাসাও (৪৪)
প্রশ্ন ১৯। বেকারের সৃষ্টি কিভাবে হয়?
উত্তরঃ দেশে শ্রমিকদের সংখ্যা যে হারে বৃদ্ধি পায় সেই হারে নিয়োগের সুযোগ সুবিধা না হলে বেকারের সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন ২০। ছদ্মবেশী বেকার কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে শ্রমিক দেখতে কর্মরত, কিন্তু সম্পূর্ণরূপে কাজ করে না, সেই শ্রমিককে ছদ্মবেশী বেকার বলে।
প্রশ্ন ২১। শিক্ষিত বেকার সৃষ্টি হওয়ার কারণ কি ?
উত্তরঃ শিক্ষার সম্প্রসারণের সঙ্গে নিয়োগ ব্যবস্থার সুযোগ-সুবিধা না থাকার জন্য শিক্ষিত বেকারের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রশ্ন ২২। ভারতের কোন রাজ্যে জনসংখ্যা সবচেয়ে বেশী ?
উত্তরঃ উত্তর প্রদেশ, ২০১১ সালের লোকগণনা অনুসারে উত্তর প্রদেশের জনসংখ্যা ১৯.৯ কোটি।
প্রশ্ন ২৩। ভারতের কোন রাজ্যে জন সংখ্যা সবচেয়ে কম ?
উত্তরঃ লাক্ষাদ্বীপ, ৬৪,৪২৯ জন।
প্রশ্ন ২৪। অসমের কোন জেলায় লোকসংখ্যা সবচেয়ে বেশী ?
উত্তরঃ নগাঁও।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। ছদ্মবেশী বেকার বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ কম উন্নত দেশের কৃষি, হস্ত শিল্প, খুচরা ব্যবসায় প্রভৃতিতে যত সংখ্যক লোক কাজ করার প্রয়োজন তার থেকে অধিক লোক কাজ করে বলে সেই অতিরিক্ত লোক বা শ্রমিকগণকে তার থেকে বের করে নিলেও উৎপাদন কমে না। এই অবস্থায় সেই অতিরিক্ত লোকদিগকে দেখতে নিয়োগ থাকা মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে বেকার এবং এই বেকারকে ছদ্মবেশী বেকার বলা হয়।
প্রশ্ন ২। শিক্ষিত বেকার বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ শিক্ষিত লোকগণের অধিক সংখ্যক সরকারী বেসরকারী খণ্ডের কোনো প্রতিষ্ঠান বা কার্যালয়ে নিয়মিত মজুরী থাকা কাজ করতে চায়। কিন্তু সেই ধরনের কাজের সুযোগের তুলনায় সেই ধরনের কাজ চাওয়া শিক্ষিত লোক অধিক হওয়ার জন্য তাঁদের অনেকেই বেকার হয়ে থাকে। এই ধরনের বেকার লোককে শিক্ষিত বেকার বলে। শহরে এবং গ্ৰাম্য উভয় স্থানে এই ধরনের শিক্ষিত বেকার আছে।
প্রশ্ন ৩। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের কৃষি উৎপাদনের সহিত জড়িত দুটি বেকার সমস্যা উল্লেখ কর।
উত্তরঃ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের কৃষির উৎপাদনের সহিত জড়িত দুটি বেকার সমস্যার হল—-
(১) ছদ্মবেশী বেকার। ও
(২) ঋতুগত বেকার।
প্রশ্ন ৪। দরিদ্রতা দূরীকরণের জন্য কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ?
উত্তরঃ দরিদ্রতা দূরীকরণের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাসমূহ নেওয়া হয়েছে—–
(১) অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
(২) আর্থিক অসমতা দূরীকরণ।
(৩)জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ।
(৪)অত্যাবশ্যকীয় সামগ্ৰীর অধিক উৎপাদন।
(৫) গ্ৰাম উন্নয়ন ও গ্ৰাম্য নিয়োগ পরিকল্পনা ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৫। অর্থনৈতিক উন্নয়ন কাকে বলে ?
উত্তরঃ দেশের প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের উপযুক্ত ব্যবহার, কৃষি ও উদ্যোগ খণ্ডের বিকাশ সাধন, মানুষের মৌলিক প্রয়োজনসমূহের পূরণ, জীবন ধারণের সাধারণ মানের উন্নতি, মানুষের সামাজিক ও মানসিক দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তনকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন বলে।
প্রশ্ন ৬। বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচটি পরামর্শ দাও।
উত্তরঃ বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য পাঁচটি পরামর্শ হল :
(১) দেশের আর্থিক উন্নয়নের হার বৃদ্ধি করতে হবে।
(২) কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প এবং বৃহৎ শিল্পের সম্প্রসারণের মাধ্যমে শক্তি
উৎপাদন, পরিবহণ ব্যবস্থা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।
(৩) দ্রুত গতিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণের উপর গুরুত্ব দিতে হবে।
(৪) উৎপাদন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে।
(৫) কর্মমুখী শিক্ষার প্রবর্তন করতে হবে।
প্রশ্ন ৭। গ্ৰামাঞ্চলের দরিদ্রতার মূল কারণসমূহ উল্লেখ কর ।
উত্তরঃ ভারতবর্ষে গ্ৰামাঞ্চলের দরিদ্রতার মূল কারণসমূহ হল—- ভূমির মালিকীস্বত্ত্বের অভাব, কৃষিখণ্ডের বাহিরে কর্ম সংস্থাপণের অভাব, কৃষি খণ্ডে উদ্ভব হওয়া ঋতুগত বেকার, অশিক্ষিত ও অদক্ষ শ্রমিকের প্রাদুর্ভাব, সীমিত কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ, নিম্ন মজুরির হার ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৮। শহরাঞ্চলে দরিদ্রতার মূল কারণসমূহ উল্লেখ কর।
উত্তরঃ শহরাঞ্চলে দরিদ্রতার মূল কারণসমূহ হল—- গ্ৰাম অঞ্চলের দরিদ্রতার জন্য শহর অঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া অবিরাম প্রবজন,আবাস গৃহের, খাওয়ার জলের অভাব, দূষিত পরিবেশ, বস্তি অঞ্চলের সৃষ্টি ইত্যাদি। এইগুলি কারণ ছাড়াও সামগ্ৰিকভাবে জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে পরিবারের সঞ্চয় ক্ষমতা হ্রাস করার ফলে বিনিয়োগের জন্য মূলধন সীমিত হয়ে পড়ায় উন্নয়নের হার উৎসাহ জনক হয় নাই।
প্রশ্ন ৯। ২০১১-১২ সালের প্রতিবেদন অনুসারে গ্ৰাম অঞ্চল ও শহর অঞ্চলে কত শতাংশ লোক দরিদ্র সীমারেখার নীচে আছে ?
উত্তরঃ গ্ৰাম অঞ্চলে ৩০.৯ শতাংশ। শহর অঞ্চলে=২৬.৪ শতাংশ।
প্রশ্ন ১০। অসমের জনসংখ্যার কত শতাংশ দরিদ্রসীমার নীচে আছে ?
উত্তরঃ অসমের মোট জনসংখ্যার ৪০.৯শতাংশ লোক দরিদ্রসীমার নীচে আছে।
প্রশ্ন ১১। রাষ্ট্রীয় নমুনা সমীক্ষা সংস্থা (National Sample Survey Organisation) বেকারের সংখ্যা গণনা করতে কোন তিনটি ধারণার উদ্ভাবন করেছে।
উত্তরঃ রাষ্ট্রীয় নমুনা সমীক্ষা সংস্থা বেকারের সংখ্যা গণনা করতে যে তিনটি ধারণার উদ্ভাবন করেছে সেইগুলি হল—–
(১) সচরাচর ভিত্তিতে (usual status) বা চলিত বৎসরের ভিত্তিতে।
(২)চলিত দৈনিক ভিত্তিতে (Current daily status)।
(৩) চলিত সাপ্তাহিক ভিত্তিতে (Current weekly status)।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। দরিদ্রতার কারণসমূহ সংক্ষেপে লেখ।
উত্তরঃ দরিদ্রতার কারণসমূহ নীচে উল্লেখ করা হল—-
(১) ঐতিহাসিক : ইংরেজ শাসনকালে ভারতবর্ষের সম্পদ রাজির বহির্গমন হয় এবং ভারতীয় অর্থনীতির ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ে। দাদাভাই নৌরজীর গ্ৰন্থ ‘Poverty and unbritish Rule in India-ত বিষয়টির দীর্ঘ ব্যাখ্যা প্রকাশ হয়েছে। স্বাধীনতা লাভের সময় হতেই ভারতবর্ষের দরিদ্রতার সমস্যাটি প্রকট হয়ে উঠেছিল।
(২) অর্থনৈতিক : ভারতবর্ষের গ্ৰাম্য অঞ্চলে দরিদ্রতার মূল কারণসমূহ হল—- ভূমির মালিকী স্বত্ত্বেও অভাব, কৃষি খণ্ডের বাহিরে কর্মসংস্থাপনের অভাব কৃষিখণ্ডে উদ্ভব হওয়া ঋতুগত বেকার, অশিক্ষিত ও অদক্ষ শ্রমিকের প্রাদুর্ভাব, সীমিত কৃষি উৎপাদনের পরিমাণ, নিম্ন মজুরীর হার ইত্যাদি।
শহর অঞ্চলে দরিদ্রতার মূল কারণগুলি হল— গ্ৰাম অঞ্চলের দরিদ্রতার জন্য শহর অঞ্চলে সৃষ্টি হওয়া অবিরাম প্রব্রজন, আবাস গৃহের অভাব, খাওয়ার জলের অভাব, দূষিত পরিবেশ, বস্তি অঞ্চলের সৃষ্টি ইত্যাদি।
(৩) জনসংখ্যা বৃদ্ধি : ভারতবর্ষে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার অত্যন্ত বেশী। বিশেষ করে গ্ৰাম অঞ্চলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশী। জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে পরিবারের সঞ্চয় ক্ষমতা হ্রাস করার ফলে বিনিয়োগের জন্য মূলধন সীমিত হয়ে পড়ায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের হার উৎসাহজনক হয় নাই।
(৩) সামাজিক : জাতিভেদ ও বর্ণভেদ প্রথার ফলে জনসংখ্যা বহু সংখ্যক লোক আর্থ- সামাজিক উন্নয়নের সুফলগুলি হতে বঞ্চিত হয়ে পড়ায় দরিদ্রতা সমস্যাটি এক জটিল রূপ ধারণ করেছে।
(৫) দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধির উচ্চহার : অত্যাবশ্যকীয় সামগ্ৰীর উচ্চহারে দাম বৃদ্ধিতে নিম্ন আয়ের স্তরের জনসাধারণের কষ্ট ও বঞ্চনার মাত্রা বৃদ্ধি করে। আয় ও সম্পদের বিতরণের অসমতাই দরিদ্রতার সমস্যাটি অবিরতভাবে চলে থাকতে সহায়তা করেছে।
তদুপরি নিরক্ষকতা, বেকার সমস্যা, আর্থিক উন্নয়নের মন্থর গতি, কৃষির নিম্ন উৎপাদনশীলতা, দ্রুত উদ্যোগীকরণের অভাব, আয় ও সম্পত্তির বৈষম্যমূলক বিতরণ, ক্রটিপূর্ণ ভূমি ব্যবস্থা ইত্যাদি দরিদ্রতার কারণ।
প্রশ্ন ২। দারিদ্রতা নির্মূল করার জন্য প্রধান ব্যবস্থাসমূহ সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর ।
উত্তরঃ দরিদ্রতার নির্মূল বা দূরীকরণের জন্য নিম্নলিখিত ব্যবস্থাসমূহ লওয়া হয়েছে—-
(১) অর্থনৈতিক উন্নয়ন।
(২) আর্থিক অসমতা দূরীকরণ।
(৩) জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ।
(৪) অত্যাবশ্যকীয় সামগ্ৰীর অধিক উৎপাদন।
(৫) গ্ৰাম উন্নয়ন ও গ্ৰাম্য নিয়োগ পরিকল্পনা ইত্যাদি।
কিছু সংখ্যক দরিদ্রতার নির্মূলকরণ কার্যসূচী পঞ্চম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গ্ৰহণ করা হয়েছে। এইরূপ একটি কার্যসূচী হল ন্যূনতম প্রয়োজনীয় কার্যসূচী যার দ্বারা জনসাধারণের নিম্নতম প্রয়োজনীয়তাগুলি যেমন—- প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাওয়ার জন্যই খাদ্য ইত্যাদি যোগান দেওয়া হবে। ১৯৭০- এর দশকে গ্ৰাম্য অঞ্চলের দরিদ্রতার নির্মূলকরণের জন্য কয়েকটি কার্যসূচী ছিল-ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন এজেন্সি, উপান্ত কৃষক ও কাজ করা উন্নয়ন এজেন্সি, খরা অঞ্চলের উন্নয়ন কার্যসূচী, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কার্যসূচী ইত্যাদি।
১৯৮০ সাল থেকে অন্যান্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যসূচী সমগ্ৰ দেশে প্রবর্তন করা হয়েছিল। সেইগুলি হল সংহত গ্ৰাম্য উন্নয়ন কার্যসূচী, রাষ্ট্রীয় গ্ৰাম্য রোজগার কার্যসূচী, গ্ৰাম্য ভূমিহীন লোকের নিয়োগ নিশ্চিত কার্যসূচী ইত্যাদি। এই কার্যসূচীগুলির মাধ্যমে ঐ সকল লোকগণকে নিয়োগ প্রদান করে তাদের আয় বৃদ্ধি করতে চেষ্টা করা হয়েছিল। ১৯৮৯ সালের এপ্রিল থেকে রাষ্ট্রীয় গ্ৰাম্য রোজগার ও গ্ৰাম্য ভূমিহীন লোকের নিয়োগ নিশ্চিত কার্যসূচী একত্র করে জহর রোজগার যোজনা নাম দেওয়া হয়। গ্ৰামীণ রোজগার যোজনার দ্বারা গরিব জনসাধারণকে মজুরীভিত্তিক নিয়োগ ও খাদ্যের নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সম্প্রতি সংসদে আইন প্রণয়ন করে দরিদ্র লোকদিগকে ১০০ দিনের কর্মনিশ্চয়তা কার্যসূচী মাধ্যমে দরিদ্রতার দূর করতে চেষ্টা করা হয়েছে। একে রাষ্ট্রীয় গ্ৰাম্য নিয়োগ নিশ্চিত কার্যসূচী বলা হয়।
প্রশ্ন ৩। বেকার সমস্যা সমাধানের উপায়সমূহ সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তরঃ বেকার সমস্যার সমাধানের জন্য নিম্নলিখিত উপায়সমূহ গ্ৰহণ করতে পারি—-
(ক) কর্মসংস্থানের পরিমাণ বৃদ্ধি করা : বেকার সমস্যা সমাধানের প্রধান সমাধান হল কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বৃদ্ধি করা। এই কাজ জরুরীভিত্তিতে করতে হবে। ভারতে প্রতি বৎসর বেকারের সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মজুরীভিত্তিক স্ব-নিয়োজন এই দুইটিতেই কর্ম সংস্থাপন বৃদ্ধি করার প্রয়োজন। অবশ্য স্ব-নিয়োজনের ক্ষেত্রে অধিক কর্ম সংস্থাপনের প্রয়োজন।
ভারতের ন্যায় একটি দেশে বেকার সমস্যার সমাধান করতে হলে কৃষি ও উদ্যোগখণ্ডের বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও কুটীর শিল্পের বিকাশ অতি প্রয়োজন।
(খ) মূলধন গঠন বৃদ্ধি করা : অর্থনীতিতে মূলধন গঠন বৃদ্ধি হলে বেকার সমস্যা সমাধানের পথ সহজ হয়। মূলধনের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। মূলধন বৃদ্ধি উদ্যোগীকরণে সহায়তা করে। তদুপরি মূলধন নতুন নতুন কল-কারখানা প্রতিষ্ঠান করতে সাহায্য করে। কৃষিপ্রধান দেশসমূহের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি হওয়া নির্ভর করে বিজ্ঞানসম্মত জলসেচন, যন্ত্রপাতি, সার ইত্যাদি ব্যবহারের উপর।আবার উদ্যোগিক ও সেবাখণ্ডের কাজকর্মের জন্যও কিছু সংখ্যক মূলধনজাত সম্পত্তি যেমন— ফ্যাক্টরী, ঘর-দরজা, কার্যালয় ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করার জন্য মূলধনের প্রয়োজন। সুতরাং মূলধন নিয়োগ বৃদ্ধিতে বহু পরিমাণে সাহায্য করে।
(গ) উৎপাদন কৌশলের সঠিক প্রয়োগ : বেকার সমস্যা সমাধানের জন্য অন্য একটি উপায় হল মূলধনভিত্তিক ও শ্রমভিত্তিক উৎপাদন কৌশলের এইভাবে সংমিশ্রণ ঘটানো, যাতে এর দ্বারা অধিক নিয়োগের সুবিধার সৃষ্টি করতে পারা যায়।
ভারতের বেকার সমস্যা সমাধানে কয়েকটি বিশেষ পরিকল্পনাসমূহ হল পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়ন, খরা অঞ্চলের উন্নয়ন, রাষ্ট্রীয় গ্ৰাম্য নিয়োগ কার্যসূচী,রাষ্ট্রীয় নিয়োগ নিশ্চিত কার্য, সংহত গ্ৰাম্য উন্নয়ন কার্যসূচী, কাজের বিনিময়ে খাদ্য কার্যসূচী, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন কার্যসূচী ইত্যাদি।
(ঘ) মানব সম্পদের পরিকল্পনা : সকলের জন্য নিয়োগ নিশ্চিত করবার জন্য বিজ্ঞাসম্মতভাবে মানব সম্পদের পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। যেমন—-
(১) জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির হার কমানো।
(২) নিয়োগ জড়িত অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কৌশলী শ্রমিকের যোগান বৃদ্ধি করা উচিত।
(৩) অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বৃহৎ সংখ্যক জনসংখ্যাকে উপযুক্ত করে তোলা বা গঠন করা প্রয়োজন। এর জন্য কিছু সংখ্যক ব্যবস্থা করা উচিত।সেইগুলি হল পর্যাপ্ত পরিমাণের উৎকৃষ্ট খাদ্য, স্বাস্থ্য সুবিধা, বুনিয়াদী শিক্ষা কাজের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।
(৪) বিশেষ কার্যসূচীগুলি যে সকল লোকের জন্য ও যে সকল অঞ্চলের জন্য প্রস্তুত করা হয়— সেগুলি যাতে সুফল পায় তার প্রতি সচেতন হওয়া উচিত। এই কর্মসূচীগুলিতে শ্রমিকের নিয়োগ সহায়তা করার সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে।