Class 9 Social Science Chapter 12 অর্থনীতির মৌলিক Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 9 Social Science Chapter 12 অর্থনীতির মৌলিক and select needs one.
Class 9 Social Science Chapter 12 অর্থনীতির মৌলিক
Also, you can read SCERT book online in these sections Class 9 Social Science Chapter 12 অর্থনীতির মৌলিক Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. Class 9 Social Science Chapter 12 অর্থনীতির মৌলিক These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 9 Social Science Chapter 12 অর্থনীতির মৌলিক for All Subject, You can practice these here…
অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলো
Chapter – 12
তৃতীয় খণ্ড : রাজনীতি বিজ্ঞান
অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। অর্থনীতি শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে বা আগত ?
উত্তরঃ অর্থনীতি শব্দটি গ্ৰিক ভাষা থেকে আনা হয়েছে।
প্রশ্ন ২। অর্থনীতি শব্দটি কোন শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
উত্তরঃ অর্থনীতি শব্দটি গ্ৰিক শব্দ ‘Oikonomia’ র থেকে বা হতে লওয়া হয়েছে। ‘Oikos’ শব্দটির অর্থ হল পরিবার এবং ‘norms’ শব্দের অর্থ হল নিয়ম। সুতরাং অর্থবিজ্ঞানকে পরিবার বা সমাজ পরিচালনার নিয়ম বলে গণ্য করা হয়।
প্রশ্ন ৩। অর্থবিজ্ঞানের পিতৃস্বরূপ কে ?
উত্তরঃ অর্থবিজ্ঞানে পিতৃস্বরূপ হল এডাম স্মিথ।
প্রশ্ন ৪। অর্থবিজ্ঞানের সম্পদ ভিত্তিক সংজ্ঞাটি কার ?
উত্তরঃ অর্থবিজ্ঞানের সম্পদভিত্তিক সংজ্ঞাটি এডাম স্মিথ আবিষ্কার করেছিলেন।
প্রশ্ন ৫। অর্থবিজ্ঞানের কল্যাণ ভিত্তিক সংজ্ঞাটি কার ?
উত্তরঃ অর্থবিজ্ঞানের কল্যাণ ভিত্তিক সংজ্ঞাটি কেম্ব্রিজ অর্থনীতিবিদ মার্সেল আবিষ্কার করেছিলেন।
প্রশ্ন ৬। অর্থবিজ্ঞানের দুষ্প্রাপ্যতার সংজ্ঞাটি কার ?
উত্তরঃ লায়’নেল রবিন্স।
প্রশ্ন ৭। আদাম স্মিথ কোন গ্ৰন্থে এবং কখন অর্থনীতির সংজ্ঞাটি উল্লেখ করেছেন।
উত্তরঃ অর্থনীতি বিজ্ঞানের পিতৃস্বরূপ এডাম স্মিথ তাঁর ১৭৭৬ সনে প্রকাশিত গ্ৰন্থ ‘ An Enquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations’ তে তাঁর সম্পদ ভিত্তিক সংজ্ঞাটি আবিষ্কার করেছেন।
প্রশ্ন ৮। আলফ্রেড মার্সেল কোন গ্ৰন্থ এবং কখন অর্থনীতির সংজ্ঞাটি দিয়েছেন ?
উত্তরঃ কেমব্রিজ অর্থনীতিবিদ মার্সেলে তাঁর ১৮৯০ সনে প্রকাশিত গ্ৰন্থ ‘Principles of Economics’ তে অর্থনীতির কল্যাণ ভিত্তিক সংজ্ঞাটি আবিষ্কার করেছিলেন।
প্রশ্ন ৯। লায়’নেল রবিন্স কোন গ্ৰন্থ এবং কখন অর্থনীতির সংজ্ঞাটি উল্লেখ করেছেন ?
উত্তরঃ অর্থনীতিবিদ লিয়’নেল রবিন্স ১৯৩২ সনে তাঁর প্রকাশিত গ্ৰন্থ “An Essay on the nature and significance of Economic Science” এ তাঁর অর্থনীতির সংজ্ঞাটি আবিষ্কার করেছিলেন।
প্রশ্ন ১০। কে এডাম স্মিথের সংজ্ঞাটি যক্ষের বাণী বলেছিলেন ?
উত্তরঃ সমাজবিজ্ঞানী কালাইল ও রাস্কিন।
প্রশ্ন ১১। দক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিয়ে কে অর্থনীতির সংজ্ঞা দিয়েছেন ?
উত্তরঃ সেমুয়েলসন্স ও নর্দহাসে অর্থনীতির দক্ষতা ভিত্তিক সংজ্ঞাটি আবিষ্কার করেছেন।
প্রশ্ন ১২। কোনো বস্তুর মানুষের অভাব পূরণ করতে পারার ক্ষমতাকে কী বলা হয় ?
উত্তরঃ উপযোগিতা বলা হয়। যেমন— খাদ্যদ্রব্য, কাপড়, ঘর, ভূমি ইত্যাদি উপযোগিতা। কারণ এইগুলি দ্রব্য মানুষের অভাব পূরণ করতে পারে।
প্রশ্ন ১৩। উৎপাদনের উৎপাদিত উপায়কে কী বলা হয় ?
উত্তরঃ উৎপাদনের উৎপাদিত দ্রব্য বা বস্তুকে উপযোগী সামগ্ৰী বলা হয়।
প্রশ্ন ১৪। ‘Micro’ এবং ‘ Macro’ শব্দ দুইটি কোন শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে ?
উত্তরঃ ‘Micro’ এবং ‘Macro’ শব্দ দুটি গ্রিক শব্দ ‘Mikros’ ও ‘Makros’ হতে নেওয়া হয়েছে। শব্দ দুটির অর্থ ক্রমে ব্যক্তিবাদী ও সমষ্টিবাদী।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। আদাম স্মিথের সংজ্ঞাটি লেখো।
উত্তরঃ অর্থনীতি বিজ্ঞানের পিতৃস্বরূপ এডাম স্মিথ তাঁর ১৭৭৬ সনে প্রকাশিত গ্ৰন্থ ‘An Enquiry of Nations’ এ ‘অর্থবিজ্ঞান সম্পদের বিজ্ঞান’ (Economics is the Science of Wealth) বলে অভিহিত করেছেন। স্মিথের এই সংজ্ঞাটিকে সম্পদ ভিত্তিক সংজ্ঞা বলা হয়।
প্রশ্ন ২। মার্সেলের অর্থবিজ্ঞানের সংজ্ঞাটি লেখো।
উত্তরঃ কেমব্রিজ অর্থনীতিবিদ মার্সেলে তাঁর ১৮৯০ সনে প্রকাশিত গ্ৰন্থ ‘principles of Economics’ তে অর্থনীতির কল্যাণ ভিত্তিক সংজ্ঞাটি লিখেছেন। তাঁর মতে’ মানবজাতির দৈনন্দিন জীবনের কার্যবলীয় অধ্যয়নই হল অর্থনীতি’। ইহা ব্যক্তিগত ও সামাজিক কার্যাবলীর সেই অংশটি অধ্যয়ন করে, যে অংশটি পার্থিব কল্যাণ সাধন ও এর ব্যবহারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তাই একদিকে অর্থনীতি হল সম্পদের অধ্যয়ন, অন্যদিকে অধিক গুরুত্বপূর্ণভাবে ইহা মানব অধ্যয়নের একটি অংশ। (Economics is the study of mankind in the ordinary business of life. It examines that part of individual and social action which is most closely connected with the attainment and with the use of the material requisites of well- being. Thus, it is on the one side, a study of wealth and on the other, and more important side, a part of the study of man).
প্রশ্ন ৩। রবিন্সের অর্থবিজ্ঞানের সংজ্ঞাটি লেখো।
উত্তরঃ অর্থনীতিবিদ লায়’নেল রবিন্স ১৯৩২ সনে তাঁর প্রকাশিত গ্ৰন্থ ‘An Eassy on the nature and significance of Economic Science’— এ অর্থনীতির সবচেয়ে গ্ৰহণযোগ্য সংজ্ঞাটি আবিষ্কার করেছেন। তাঁর মতে ‘যে বিজ্ঞানে মানুষের আচরণকে মানুষের অপরিসীম আশা (লক্ষ্য) ও এর বিপরীতে বিকল্পভাবে ব্যবহার করতে লাগা সীমিত সম্পদের (উপায়) মধ্যের সম্পর্ক হিসেবে অধ্যয়ন করে তাই অর্থনীতি।’ ( Economics is the science which studies human behavior as a relationship between ends and scarce means which have alternative uses).
প্রশ্ন ৪। সেমুয়েলসন ও নর্ডহাসের অর্থবিজ্ঞানের সংজ্ঞাটি লেখো।
উত্তরঃ সেমুয়েলসন ও নর্দহাস ‘দুষ্প্রাপ্যতা ‘ ধারণাটির সঙ্গে ‘দক্ষতা’ ধারণাটিকে একত্রিত করে অর্থনীতির একটি সংজ্ঞা আবিষ্কার করেছেন। তাঁদের মতে, ‘দুষ্প্রাপ্যতার বাস্তবিকতা স্বীকার করে নিয়ে সম্পদরাজির সর্বোত্তম দক্ষতাপূর্ণ ব্যবহারের জন্য সমাজ গঠন করাই হল অর্থনীতির মূল বিষয়।’ সীমিত সম্পদরাজি গঠনমূলকভাবে ব্যবহার করাই হল অর্থনীতির মূল বিষয়বস্তু।
প্রশ্ন ৫। রবিন্সের অর্থবিজ্ঞানের সংজ্ঞাটির মৌলিক ধারণাগুলো কী কী ?
উত্তরঃ রবিন্সের অর্থবিজ্ঞানের সংজ্ঞাটিতে তিনটি মৌলিক ধারণা গুরুত্ব লাভ করেছে, সেগুলি হল—-
(১) মানুষের অভাব অসীম (Human wants are unlimited)।
(২) অভাব পূরণের উপায় বা বস্তুসমূহ সীমিত (Resources to satisfy human wants are limited)।
(৩) সীমিত সম্পদসমূহ বিকল্প ব্যবহারযোগ্য (Scarce resources have alternative uses)।
প্রশ্ন ৬। ব্যষ্টিবাদী অর্থবিজ্ঞান কাকে বলে ?
উত্তরঃ ব্যষ্টিবাদী অর্থনীতি শব্দটি গ্ৰিক শব্দ ‘Mikros’ হতে লওয়া হয়েছে। যার অর্থ হল ‘সরু বা ছোট’। ব্যষ্টিবাদী অর্থনীতিতে ব্যক্তি বা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক আচরণসমূহ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করে। একজন ভোক্তা, একজন উদ্যোক্তা বা একটি উদ্যোগিক প্রতিষ্ঠান, একটি বাজার, একজন ঝণদাতা, একজন সঞ্চয়কারীর অর্থনৈতিক আচরণ ব্যষ্টিবাদী অর্থবিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন ৭। সমষ্টিবাদী অর্থবিজ্ঞান কাকে বলে ?
উত্তরঃ সমষ্টিবাদী অর্থনীতি শব্দটিগ্ৰিক শব্দ ‘Makros’ হতে লওয়া হয়েছে। এর অর্থ হল ‘বড়’। একটি দেশের অর্থনীতির সামগ্ৰিক আচরণ অর্থাৎ সকল ভোক্তা ও উপভোক্তা ইত্যাদির আচরণ সমষ্টিবাদী অর্থনীতির অন্তর্ভুক্ত। একটি দেশের জনসংখ্যা নিয়োগ, ঔদ্যোগীকরণ, কৃষি ইত্যাদির অধ্যয়ন সমষ্টিবাদী অর্থনীতির অন্তর্গত । সূক্ষ্ম ব্যষ্টিবাদী অর্থনীতির অধ্যয়ন হল ব্যক্তিগত (Individual) এবং স্থুল বা সমষ্টিবাদী অর্থনীতির অধ্যয়ন হল সামুহিক (Aggregate)।
প্রশ্ন ৮। আর্থিক বস্তু ও অন-আর্থিক বস্তুর পার্থক্য কী ?
উত্তরঃ যে সকল দ্রব্যের যোগান চাহিদার তুলনায় কম এবং যা অর্থের বিনিময়ে কেনার প্রয়োজন হয়, তাকে আর্থিক বা অর্থনৈতিক বস্তু বা দ্রব্য বলে।
যেমন—–খাদ্য, কাপড়, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি।
অন্যদিকে যে সকল বস্তু বা দ্রব্য প্রচুর পরিমাণ পাওয়া যায়, উহা অর্থের বিনিময়ে কিনবার প্রয়োজন হয় না তাকে অনাআর্থিক বস্তু বা দ্রব্য বলা হয়।
যেমন—-সূর্যের আলো, বাতাস, নদীর জল।
প্রশ্ন ৯। রাষ্ট্রীয় আয় কাকে বলে ?
উত্তরঃ একটি দেশের একটি নির্দিষ্ট বিত্তীয় বর্ষ (Financial year)- এ যে প্রস্তুত দ্রব্য বা সেবা সামগ্ৰিক উৎপাদন করা হয় তার মুদ্রামূল্যই হল রাষ্ট্রীয় আয়।
প্রশ্ন ১০। মাথাপিছু আয়ের সূত্রটি কী ?
উত্তরঃ মাথাপিছু আয় (Per-capita Income) : একটি দেশের মোট রাষ্ট্রিয় আয়কে দেশটির জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করলে যে মান পাওয়া যায় তাকে দেশটির মাথাপিছু আয় বলা হয়।
অর্থাৎ,
রাষ্ট্রীয় আয়
মাথাপিছু আয়=——————————-
দেশের মোট জনসংখ্যা
দীর্ঘ উত্তর লেখো :
প্রশ্ন ১। অর্থবিজ্ঞান অধ্যয়নের প্রয়োজনীয়তা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর।
উত্তরঃ আধুনিক রাষ্ট্রে নাগরিকদের নিকট অর্থবিজ্ঞান অধ্যয়নের সবিশেষ গুরুত্ব আছে। অর্থবিজ্ঞান মানুষের দৈনন্দিন জীবনের কর্মপ্রণালী পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত করে থাকে। অর্থনীতি অধ্যয়ন করলে মূল্য, বৈদেশিক বাণিজ্য, একচেটিয়া কারবার, ব্যাঙ্ক- ব্যবস্থা, সরকারী আয়-ব্যয় প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলি সম্বন্ধে অবহিত হওয়া যায়। প্রাত্যহিক জীবনে আমরা যে সব জিনিস দেখতে পাই তাদের পিছনে অর্থবিজ্ঞানের প্রভাব লক্ষণীয়। দেশের উন্নয়নে অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কার্যাবলী এবং উৎপাদনের বিভিন্ন উপাদানের কি রূপ অবদান আছে তা অর্থনীতি বিজ্ঞান অধ্যয়ন করলে অনুধাবন করা যায়। অর্থবিজ্ঞানের মূল সূত্রগুলিকে অবলম্বন করে বাজেট-প্রণেতা, আইনবিদ ও প্রশাসকগণ নিজের নিজের কার্যধারা সম্পন্ন করে থাকে।
অর্থবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু অধ্যয়ন বস্তু বা সামগ্ৰী, উপযোগিতা, সম্পদ, অভাব, কল্যাণ, দর বা দাম, চাহিদা, যোগান, বাজার, মূলধন, সঞ্চয়, বিনিয়োগ, রাষ্ট্রীয় আয়,মাথাপিছু আয় প্রভৃতি ও কয়েকটি মৌলিক সংজ্ঞা সম্পর্কে জ্ঞান আহরণ করা যায়। শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের নিকট অর্থবিজ্ঞানের গুরুত্ব অসাধারণ। তাদের মুনাফা অর্জন করতে হলে ব্যাঙ্ক ও বিনিময় ব্যবস্থা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করতে হবে। প্রত্যেক রাষ্ট্রেই সরকার দেশের আর্থিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কর ধার্য ও ঋণ সংগ্ৰহ করে। সুতরাং অর্থনীতি বিজ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের প্রত্যেক সচেতন ও সুনাগরিকের অধ্যয়ন করা আবশ্যক।
প্রশ্ন ২। অর্থবিজ্ঞানের কোন সংজ্ঞা সবচেয়ে বেশি গ্ৰহণযোগ্য এবং কেন ? ব্যাখ্যা কর ?
উত্তরঃ অর্থবিজ্ঞানের সবচেয়ে বেশি গ্ৰহণযোগ্য সংজ্ঞাটি হল লায়’নেল রবিন্সের সংজ্ঞা।
অর্থনীতিবিদ লায়’নেল রবিন্স ১৯৩২সনে তাঁর প্রকাশিত গ্ৰন্থ ‘ An Essay on the nature and significance of Economic Science’- এ অর্থনীতির সবচেয়ে গ্ৰহণযোগ্য সংজ্ঞাটি আবিষ্কার করেছেন। তাঁর মতে ‘যে বিজ্ঞান মানুষের আচরণকে মানুষের অপরিসীম আশা (লক্ষ্য) ও এর বিপরীতে বিকল্পভাবে ব্যবহার করতে লাগা সীমিত সম্পদের (উপায়) মধ্যের সম্পর্ক হিসাবে অধ্যয়ন করে তাই অর্থনীতি ‘ (Economics is the science which studies human behaviour as a relationship between ends and scarce means which have alternative uses).
রবিন্সের সংজ্ঞাটিতে তিনটি মৌলিক ধারণাই গুরুত্ব লাভ করেছে। এই ধারণাগুলি হল—-
(১) মানুষের অভাব অসীম (Human wants are unlimited)
(২) আভব পূরণের উপায় বা বস্তুসমূহ সীমিত (Resources to satisfy human wants are limited)
(৩) সীমিত সম্পদসমূহ বিকল্প ব্যবহারযোগ্য (Scarce resources have alternative uses)
এই তিনটি মৌলিক ধারণা হতে অর্থনৈতিক সমস্যা তথা পছন্দের সমস্যা(Problem of choice)- এর সৃষ্টি হয়। বিকল্পভাবে ব্যবহার উপযোগী সীমিত সম্পদের সহায়তায় অসীম অভাব (unlimited wants) এর কোনটি অভাব পূরণে অধিক গুরুত্ব দিবে এই নিয়ে যে সমূহ সমস্যার সৃষ্টি হয় তাকে অর্থনৈতিক সমস্যা বা পছন্দের সমস্যা বলা হয়। রবিন্সের অর্থবিজ্ঞান সংজ্ঞাটিকে দুষ্প্রাপ্যতার সংজ্ঞাও বলা হয়।
রবিন্সের সংজ্ঞাটিও সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। কারণ সমালোচকগণের মতে পছন্দের সমস্যা হতে বর্তমান কালের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সমস্যাই অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং রবিন্সের সংজ্ঞা এইক্ষেত্রে অর্থহীন।
প্রশ্ন ৩। অর্থবিজ্ঞানের পরিসর সম্পর্কে লেখ।
উত্তরঃ অর্থবিজ্ঞানের পরিসরে সমাজ বিজ্ঞানের আর্থিক কার্যকলাপকেও যুক্ত করে। অনাআর্থিক কার্যকলাপ (যেগুলি কার্যকলাপ অর্থ উপার্জন, ব্যয় তথা বিতরণের সঙ্গে জড়িত হয় না) অর্থবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু ভিতরে ধরা হয় না। অর্থবিজ্ঞানের পরিসরে নিম্নোক্ত বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
(১) ভোগকার্য (Consumption) : আমাদের অভাব দূর করার কার্যকলাপই হল ভোগ। ভোগকার্যের সঙ্গে জড়িত বিধিসমূহ, ভোক্তার ভারসাম্য ইত্যাদি অধ্যয়ন অর্থনীতির পরিসরের অন্তর্ভুক্ত।
(২) উৎপাদন (Production) : উপযোগী সামগ্ৰী অথবা সেবার সৃষ্টি হল উৎপাদন। উৎপাদনের চারটি উপাদান—ভূমি, শ্রম,মূলধন ও সংগঠনের উপরি উৎপাদনের বিধি, উৎপাদকের ভারসাম্য, আর্থিক ব্যবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে অর্থবিজ্ঞানে আলোচনা করা হয়।
(৩) বিতরণ(Distribution) : সামগ্ৰীর উৎপাদন কার্য সম্পাদন করার পরে একে উপভোক্তার মধ্য ভিতরণ করলে ভোগকার্য সম্ভব হয়ে উঠবে। বিতরণ প্রক্রিয়া যাতে সঠিক হয় তার জন্য যে নীতি বা তত্ত্ব অনুসরণ করার প্রয়োজন সেইগুলি তত্ত্ব ‘বিতরণ’ বিষয়ের মধ্যে আলোচনা করা হয়।
(৪) বিনিময় (Exchange) : কোনো ব্যক্তি বা অঞ্চল বা দেশ প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি সামগ্ৰী নিজে উৎপাদন করে নিতে পারে না। এইক্ষেত্রে ব্যক্তি, অঞ্চল ও দেশের মধ্যে বিনিময়ের আবশ্যক হয়। সেইজন্য দেশীয় বাণিজ্য (Internal Trade) ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের (International Trade) মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিময় হয়। অর্থনীতিতে, এই দুই প্রকারের বিনিময় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
(৫) মুদ্রা (Money) : দ্রব্যের প্রত্যক্ষ বিনিময় (Barter) প্রথার অসুবিধাসমূহ দূর করে বিনিময় ব্যবস্থাকে সরলতা প্রদান করার জন্যই মুদ্রার সৃষ্টি হয়েছিল। মুদ্রার ভূমিকা, মুদ্রার কার্যাবলী ও প্রকার ইত্যাদির বিষয়ে আলোচনা করা অর্থনৈতিক পরিসরের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ।
(৬) আয় (Income) : মাথাপিছু আয়, রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় আয়, এর বৃদ্ধি তথা বিতরণ, অর্থনৈতিক কল্যাণের সঙ্গে এর সম্পর্ক আলোচনা করা অর্থনৈতিক পরিসরের অন্তর্গত।
(৭) রাজস্ব বা সরকারী বিত্ত বিজ্ঞান (public Finance) : সরকারী আয় সযকারী ব্যয় ও সরকারী ঋণের আলোচনাই হল সরকারী বিত্ত বিজ্ঞান।
(৮) কল্যাণকামী অর্থনীতি (Welfare Economics) : কেবল ভোগকার্য, উৎপাদন তথা বিতরণ অর্থনীতির মূল বিষয়বস্তু হতে পারে না। এই সমূহ কার্যের সঙ্গে ব্যক্তি তথা সমাজের বিষয়টি মনে রাখতে হবে। অর্থনীতিবিদ এ.সি.পিগু, ভিলফ্রেড পেরেট, হিক্স, অমর্ত সেন ইত্যাদি কল্যাণকামী অর্থনীতি জনপ্রিয় করে তুলেছেন।
(৯) পরিবেশীয় অর্থনীতি (Economics of Environment) : একদিকে অর্থনৈতিক উন্নতি ক্ষিপ্রতর করার অর্থে ঔদ্যোগিকরণের উপরে অধিক মনোনিবেশ ও অন্যদিকে পারিপার্শ্বিকতার ভারসাম্য বিনষ্টই পৃথিবীর সমাজবিজ্ঞানীগণকে অধিক চিন্তান্বিত করে তুলেছে। এই ধরনের ক্ষেত্রে পারিপার্শ্বিকতার ভারসাম্য কিভাবে রক্ষা করা যায় সেই উদ্দেশ্যে পারিপার্শ্বিকতার অধ্যয়ন অর্থনীতি বিষয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সংযোজনে অর্থনীতি বিষয়ে এক নতুন মাত্রা প্রদান করেছে।
(১০) দক্ষতা (Efficiency) : সীমিত সম্পদরাজিকে দক্ষতাপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে সমাজ গঠন করাটি অর্থনীতির মূল বিষয়। এই সীমিত সম্পদরাজি দক্ষতাপূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদন প্রক্রিয়ার ধারা ত্বরান্বিত করতে পারলেই মানব সমাজের কল্যাণ হবে।
উপরোক্ত বিষয়সমূহ অর্থনীতির পরিসরের ভিতরে পড়ে। কিন্তু একটি কথা মনে রাখতে হবে যে বর্তমান গতিশীল পৃথিবীতে কোনো একটি বিষয়ের পরিসর সীমাবদ্ধ হয়ে থাকে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিষয়বস্তুও গতিশীলতা লাভ করে। তাই অর্থবিজ্ঞানের ভিতরে গোলকীয় অর্থনীতির নতুন ধারণা বহনক্ষম উন্নয়ন ইত্যাদি নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়ে এর পরিসরও বৃদ্ধি হয়েছে।
অতিরিক্ত প্রশ্নোত্তরঃ
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। অর্থবিজ্ঞানের জনক হিসেবে কে পরিচিত ?
উত্তরঃ এডাম স্মিথ।
প্রশ্ন ২। কোন অর্থনীতিবিদ তাঁর কল্যাণ সংজ্ঞার জন্য বিখ্যাত ?
উত্তরঃ আলফ্রেড মার্শাল।
প্রশ্ন ৩। ‘অর্থনীতি সম্পদের বিজ্ঞান’—- এই উক্তিটির জন্য কোন অর্থনীতিবিদ বিখ্যাত ?
উত্তরঃ এডাম স্মিথ।
প্রশ্ন ৪। অর্থবিজ্ঞানে ‘দুষ্প্রাপ্যতা’ বলতে কি বুঝায় ?
উত্তরঃ চাহিদার তুলনায় কোনো বস্তুর যোগান কম হলে অর্থবিজ্ঞানে বস্তুটিকে দুষ্প্রাপ্য বলা হয়।
প্রশ্ন ৫। অর্থনীতি কি ?
উত্তরঃ অর্থনীতি হল সমাজবিজ্ঞান।
প্রশ্ন ৬। উৎপাদনের উপাদান চারটি কি কি ?
উত্তরঃ উৎপাদনের চারটি উপাদান হল— ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন।
প্রশ্ন ৭। সরকারী বিত্ত বিজ্ঞান কি ?
উত্তরঃ সরকারী আয়, সরকারী ব্যয় ও সরকারী ঋণের আলোচনাই হল সরকারী বিত্ত বিজ্ঞান।
প্রশ্ন ৮। বস্তু বা সামগ্ৰী বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ মানুষের অভাব পূরণ করে সন্তুষ্টি প্রদান করতে পারা সকল সামগ্ৰী ও সেবাকার্যকে অর্থবিজ্ঞানে বস্তু বলা হয়। বস্তু দুই প্রকারের—ভৌতিক ও অভৌতিক। ভৌতিক বস্তুগুলি হল—ঘর-দুয়ার, যন্ত্রপাতি, খাদ্য, বস্ত্র ইত্যাদি। অভৌতিক বস্তু যেমন— শিক্ষক, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, আরক্ষী ইত্যাদির সেবা। বস্তুকে আরও দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এই ভাগ দুটি হল মুক্ত বস্তু ও আর্থিক বস্তু।
প্রশ্ন ৯। মুক্ত বস্তু বা দ্রব্য বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ যে সকল দ্রব্যের যোগান চাহিদার তুলনায় অধিক অর্থাৎ যা প্রকৃতিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, উহা অর্থের বিনিময়ে কিনবার প্রয়োজন হয় না তাকে মুক্ত বস্তু বা দ্রব্য বলা হয়। যেমন—আলো, বাতাস, নদীর জল।
প্রশ্ন ১০। আর্থিক বা অর্থনৈতিক বস্তু বা দ্রব্য কাকে বলে ?
উত্তরঃ যে সকল দ্রব্যের বা বস্তুর যোগান চাহিদার তুলনায় কম এবং যা অর্থের বিনিময়ে কিনবার প্রয়োজন হয় তাকে আর্থিক বা অর্থনৈতিক বস্তু বা দ্রব্য বলে। যেমন—- খাদ্য, কাপড়, চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি।
প্রশ্ন ১১। অর্থবিজ্ঞান কাকে বলে ?
উত্তরঃ মানুষের অভাব অসীম, কিন্তু অভাব মোচনের উপকরণগুলি সীমিত। এই সীমিত উপকরণের সাহায্যে মানুষ কিভাবে তার অনন্ত অভাব মিটাতে পারে—- এই তত্ত্ব যে বিজ্ঞানে আলোচিত হয়, তাকে অর্থবিজ্ঞান বলে।
প্রশ্ন ১২। অর্থবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু কি ?
উত্তরঃ মানুষের অর্থনৈতিক ক্রিয়া-কলাপের মূলে আছে তার অভাববোধ মানুষ কঠোর পরিশ্রম করে অর্থ উপার্জন করে এবং উপার্জিত অর্থ অভাব মোচনের জন্য ব্যয়-করে। এই অর্থ-উপার্জন ও অর্থ-ব্যয় সংক্রান্ত কাজকর্মগুলি হচ্ছে অর্থবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়বস্তু।
প্রশ্ন ১৩। উপযোগিতা বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ দ্রব্যের অভাব পূরণ করার গুণটিকে উপযোগিতা বলে। অর্থাৎ দ্রব্যের উপযোগিতা হল মানুষের অভাব পূরণ করতে পারার ক্ষমতা। যদি কোনো ব্যক্তি একটি দ্রব্য বা বস্তু পাওয়ার জন্য মূল্য দিতে হয় অথবা পরিশোধ করতে চায় , তাহলে বলা যায় যে দ্রব্যটির অভাব পূরণ করা ক্ষমতা আছে। যেমন—- খাদ্যদ্রব্য, কাপড়, ঘর ইত্যাদি উপযোগিতা। কারণ এই দ্রব্য বা বস্তুগুলি মানুষের অভাব পূরণ করতে পারে।
প্রশ্ন ৪। চাহিদা কাকে বলে ?
উত্তরঃ সাধারণ অর্থে চাহিদা বলতে কোনো একটি দ্রব্য অথবা সেবা পাওয়ার ইচ্ছাকে বুঝায়। কিন্তু অর্থবিজ্ঞানে চাহিদার অর্থ থেকে পৃথক। কোনো একজন ব্যক্তির কোনো একটি দ্রব্য বা সেবা পাওয়ার ইচ্ছা বা আগ্ৰহ থাকার সঙ্গে সেই দ্রব্য বা সেবাটির জন্য মূল্য পরিশোধ করার ইচ্ছা এবং ক্ষমতা থাকাকেই বস্তুগুলির চাহিদা বলা হয়।
প্রশ্ন ১৫। যোগান বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ কোনো স্থানে কোনো সময়ে বিক্রেতা বা উৎপাদন যখন কোনো নিদিষ্ট দামে বিভিন্ন পরিমাণের সামগ্ৰী এবং সেবা সরবরাহ করে তখন তাকে দ্রব্য বা সেবার যোগান বলা হয়। আমাদের দেশে সামগ্ৰীর যোগানের জন্য যোগান বিভাগ আছে। এর বিভাগীয় মন্ত্রীও থাকে। ভারতীয় খাদ্য নিগম (Food Corporation of India) সংক্ষেপে (F. C. I.) এইটি দেশে খাদ্য মজুত ও যোগানের একটি সংস্থা।
প্রশ্ন ১৬। অভাব বলতে কি বোঝ ?
উত্তরঃ অভাব বলতে কোনও বাহ্যিক ভোগ্যদ্রব্য পাওয়ার ইচ্ছাকে বুঝায়। কিন্তু শুধু ইচ্ছা থাকলেই চলতে পারে না, দ্রব্যটি পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় খরচ করবার ইচ্ছা ও সামর্থ্য থাকা চাই।
প্রশ্ন ১৭। সম্পদ এবং কল্যাণের মধ্যে পার্থক্য কি ?
উত্তরঃ সম্পদ বলতে উপযোগিতা, দুষ্প্রাপ্যতা, হস্তান্তর যোগ্যতা, বাহ্যিকতা ইত্যাদি গুণ থাকা দ্রব্যকে বুঝায়। সম্পদ মানুষের অভাব দূর করে ও মানুষের কল্যাণ সাধন করে। সম্পদ হল অর্থনৈতিক দ্রব্যসমূহ।
অপরদিকে কল্যাণ বলতে মানুষের দৈহিক, মানসিক ও নৈতিক অবস্থার উন্নতি বুঝায়। কল্যাণ বহু উপাদানের উপর নির্ভরশীল। তার মধ্যে সম্পদও একটি। কিন্তু সম্পদ বাড়লেই মানুষের কল্যাণ বৃদ্ধি হয় না। অর্থবিজ্ঞানে মদ সম্পদ। কিন্তু মদের উৎপাদন বৃদ্ধি পেলে মানুষের কল্যাণ সাধিত হয় না।
প্রশ্ন ১৮। বিনিয়োগ বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ মূলধন যখন উৎপাদন কার্যে ব্যবহার করা হয় তাকে বিনিয়োগ বলে। মূলধন হল এক মজুত (Stock) ধারণা এবং বিনিয়োগ (Investment) হল এক প্রবাহ (Flow) ধারণা। ব্যাঙ্কে একলাখ টাকা মজুত বা জমা থাকলে ইহা মূলধন হবে। যখন এই টাকা দিয়ে যন্ত্রপাতি কিনে বস্তু উৎপাদনের একটি কারখানা প্রতিষ্ঠা করা হবে তখন ইহা বিনিয়োগ করা হবে। এই বিনিয়োগ হতে নিয়মিত উৎপাদন ও উপার্জন হবে। সেইজন্য একে প্রবাহ বলা হয়েছে।
প্রশ্ন ১৯। বাজার বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ সাধারণত বাজার বলতে এমন একটি স্থান বুঝায় যেখানে বস্তুর ক্রয়- বিক্রয় করা হয়। কিন্তু অর্থবিজ্ঞানে বাজারকে কেবল কোনো একটি নির্দিষ্ট স্থানকে বুঝায় না। অর্থবিজ্ঞানে বাজারকে এমন একটি ব্যবস্থা বুঝায় যেখানে একটি নির্দিষ্ট সময়ে একটি নির্দিষ্ট দামে কোনো একটি বস্তুর গ্ৰাহক (ক্রেতা) ও বিক্রেতার মধ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্রয়-বিক্রয় হয়। উদাহরণ স্বরূপ গুয়াহাটির ফেন্সী বাজার, পানবাজার, শপিং মল ইত্যাদি বাজার।
কিন্তু বাজার অনলাইন বাজার ইত্যাদিও বাজারের উদাহরণ।
প্রশ্ন ২০। মূলধন বলতে কি বুঝ ?
উত্তরঃ উৎপাদিত সম্পদের যে অংশ পুনরায় উৎপাদনের কার্যে ব্যবহার করা হয়, তাকে মূলধন বলে। সুতরাং মূলধন হচ্ছে সম্পদের অংশ এবং মানুষের সৃষ্ট। কল-কারখানা, যন্ত্র- পাতি, কাঁচামাল, শ্রমিকের জন্য মজুত খাদ্য ইত্যাদি মূলধনের অন্তর্গত।
প্রশ্ন ২১। সঞ্চয় কাকে বলে ?
উত্তরঃ আয়ের যে অংশ ভোগকার্যে ব্যয় করা হয় না তাকে সঞ্চয় বলা হয়।তাই আয়=ভোগ ব্যয়+সঞ্চয় বলে বলা হয়। সঞ্চয় হদ মূলধন সৃষ্টির একটি ভাল উপায়।
প্রশ্ন ২২। অর্থবিজ্ঞান পাঠের সার্থকতা কি ?
উত্তরঃ মানুষের বেঁচে থাকবার জন্য একমাত্র খাদ্যগ্ৰহণই যথেষ্ট নয়। তার জীবনে আরও অনেক মহৎ উদ্দেশ্য এবং উন্নততর জীবন যাপনের ইচ্ছা থাকতে পারে। কিন্তু এইসব কিছুর জন্যই তার অর্থের প্রয়োজন। কিভাবে এই ধন-সম্পদ উৎপাদন এবং তার সদব্যবহার করা যায়—অর্থবিজ্ঞান পাঠে আমরা তা জানতে পারি। এইজন্য অর্থবিজ্ঞান পাঠের ও আলোচনার যথেষ্ট সার্থকতা আছে। এছাড়া অর্থবিজ্ঞানে নানা জটিল তথ্য ও সমস্যাবলী আলোচিত হয়। সুতরাং অর্থবিজ্ঞান পাঠ বা অধ্যয়ন আমাদের মানসিক বিকাশের জন্য একান্ত প্রয়োজন।
প্রশ্ন ২৩। স্মিথের সংজ্ঞাটি হতে মার্শেলের সংজ্ঞাটিকে উন্নত বলে বলা হয় কেন ?
উত্তরঃ স্মিথের সংজ্ঞাটি হতে মার্শেলের সংজ্ঞাটি বহু ক্ষেত্রে উন্নত। অথচ মার্শেলের সংজ্ঞাটি গ্ৰহণযোগ্য আখ্যা পায় নাই। কারণ মার্শালে কেবল পার্থিব কল্যাণের কথাই উল্লেখ করেছেন। অপার্থিব কল্যাণ যেমন শিক্ষক, চিকিৎসকের সেবা ইত্যাদির কথা উল্লেখ করেন নাই। তদুপরি বস্তু সকল ধরনের কল্যাণ সাধন করতে নাও পারে। উদাহরণ স্বরূপ, মদ, ভাং, গাঁজা, সিগারেট সেবনে মানবজাতির কল্যাণ সাধন করে না। অথচ এইগুলি সামগ্ৰীর উৎপাদন, উপভোগ, ভিতরণ সম্পর্ক অর্থবিজ্ঞান আলোচনা করা হয়।
রচনাধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ
প্রশ্ন ১। সম্পদের বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলোচনা কর ?
উত্তরঃ সম্পদের চারটি বৈশিষ্ট্য ; যেমন—–
(১) উপযোগিতা।
(২) দুষ্প্রাপ্যতা।
(৩) হস্তান্তরযোগ্যতা।এবং
(৪) বাহ্যিকতা।
(১) উপযোগিতা : সম্পদের প্রথম বৈশিষ্ট্য হল উপযোগিতা বা অভাব মিটাবার ক্ষমতা। যে দ্রব্য অভাব মিটাতে পারে না, তার চাহিদা থাকে না। সুতরাং তাকে সম্পদ বলা যায় না। একজন শিক্ষিত ব্যক্তির নিকট বই বা কলম সম্পদ, কিন্তু একজন অশিক্ষিত ব্যক্তির নিকট উহা সম্পদ নহে।
(২) দুষ্প্রাপ্যতা : সম্পদের দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য দুষ্প্রাপ্যতা। চাহিদা অনুপাতে এর যোগান সীমিত হতে হবে এবং যা পেতে হলে মূল্য দিতে হয়। নদীর জল, সূর্যের আলো ইত্যাদি সম্পদ নয়, কারণ এর যোগান চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি এবং এদের জন্য কোনো মূল্য দিতে হয় না।
(৩) হস্তান্তরযোগ্যতা : সম্পদের তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হস্তান্তর যোগ্যতা। যে সকল দ্রব্যের মালিকানা হস্তান্তর করা যায়, একমাত্র সেই সকল দ্রব্যই অর্থবিজ্ঞানে সম্পদরূপে বিবেচিত হয়। কবির প্রতিভা, শিল্পীর নৈপুণ্য ইত্যাদির মালিকানা বা স্বত্ব হস্তান্তর করা যায় না। সুতরাং এরা সম্পদ নহে।
(৪) বাহ্যিকতা : সম্পদের চতুর্থ বৈশিষ্ট্য বাহ্যিকতা। যার বাহ্যিকতা নেই অর্থাৎ যা মানুষের আভ্যন্তরীণ গুণ অথবা ব্যক্তিগত ক্ষমতা, তা সম্পদ নয়। কবির প্রতিভা, গায়কের কণ্ঠমাধুর্য ইত্যাদি মানুষের আভ্যন্তরীণ গুণ, এদের হস্তান্তর করা যায় না। সুতরাং এগুলি সম্পদ নহে।