Class 12 Economics Chapter 13 পরিকাঠামো

Class 12 Economics Chapter 13 পরিকাঠামো | Class 12 Economics Question Answer in Bengali to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter AHSEC Board HS 2nd Year Economics Chapter 13 পরিকাঠামো Notes and select needs one.

Class 12 Economics Chapter 13 পরিকাঠামো

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given AHSEC Board Bengali Medium Class 12 Economics Chapter 13 পরিকাঠামো Solutions for All Subject, You can practice these here.

পরিকাঠামো

Chapter: 13

খ – অংশ (ভারতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়ন)

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। পরিকাঠামো কী ?  

উত্তরঃ পরিকাঠামো হল একটি নেটওয়ার্ক যা বাহ্যিক সুযোগ-সুবিধা ও সামাজিক সেবার যোগান দেয়।

প্রশ্ন ২। অসুস্থতা কী ? 

উত্তরঃ কোনও জনগোষ্ঠীর অসুস্থ এবং রোগাক্রান্ত হওয়ার হারকে অসুস্থতা বলে।

প্রশ্ন ৩। RTE Act 2009 কত সালে সারা ভারতবর্ষে বলবৎ করা হয় ?

উত্তরঃ পয়লা এপ্রিল 2010

প্রশ্ন ৪। সংবিধানের কোন্ সংশোধনীতে শিক্ষার অধিকারকে মৌলিক অধিকার (21 A) হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয় ?

উত্তরঃ 86 তম সংশোধনী 2002।

প্রশ্ন ৫। পরস্পরাগত শক্তির উৎস তিনটির নাম লেখো।

উত্তরে কয়লা, পেট্রোলিয়াম, আগুন জ্বালানোর জন্য ব্যবহৃত কাঠ।

প্রশ্ন ৬। অপরম্পরাগত শক্তির উৎস তিনটির নাম লেখো।

উত্তরঃ সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জৈব গ্যাস।

প্রশ্ন ৭। ভারতের দীর্ঘতম রাষ্ট্রীয় সড়ক পথের নাম কী ?

উত্তরঃ 7 নং রাষ্ট্রীয় সড়কপথ (2369 KM)।

প্রশ্ন ৮। ভারতীয় রেলপরিষেবার মোট কয়টি সংমণ্ডল আছে ?

উত্তরঃ 16 টি।

প্রশ্ন ৯। অসমে অবস্থিত রেল সংমণ্ডলটির নাম কী ?

উত্তরঃ উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেল সংমণ্ডল, মালিগাঁও।

প্রশ্ন ১০। বাণিজ্যিক শক্তির একটি উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ বিদ্যুৎ শক্তি।

প্রশ্ন ১১। একটি অবাণিজ্যিক শক্তির উৎস উল্লেখ করো।

উত্তরঃ জ্বালানি কাঠ।

প্রশ্ন ১২। দুইটি সামাজিক পরিকাঠামোর উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ শিক্ষা, স্বাস্থ্য।

প্রশ্ন ১৩। দুইটি অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ।

প্রশ্ন ১৪। ভারতবর্ষে শিক্ষিতের হার কত ?

উত্তরঃ 74% (2011 সালের গণনা মতে)।

প্রশ্ন ১৫। ভারতবর্ষে লিঙ্গ অনুপাত কত ?

উত্তরঃ 943 (2011 সালের গণনা মতে)।

প্রশ্ন ১৬। যোগাযোগ কী ?

উত্তরঃ যোগাযোগ হচ্ছে চিন্তা, অনুভব এবং তথ্যকে মৌখিক বা লিখিতরূপে প্রকাশ করা বা বুঝতে পারা বা ব্যাখ্যা করার সক্ষমতা।

প্রশ্ন ১৭। স্বাস্থ্য কী ?

উত্তরঃ সুস্থ শরীর, সুস্থ মন, সুস্থ সামাজিক জীবন এবং উৎপাদনশীল কর্মক্ষমতা – এই সবগুলি মিলিয়ে যে পূর্ণতার ছবি ফুটে ওঠে মনের মধ্যে, সামগ্রিকভাবে তা-ই স্বাস্থ্য।

প্রশ্ন ১৮। ভারতে নারী শিক্ষিতের হার কত ?

উত্তরঃ 65.46% (2011 সালের জনগণনা মতে)।

প্রশ্ন ১৯। প্রযুক্তি (Technology) মানে কী ?

উত্তরঃ কোনো কাজ পরিচালনা এবং সম্পাদনা করার জন্য বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা, যন্ত্রপাতি এবং কৌশল ইত্যাদি প্রয়োগ করাকে প্রযুক্তি বলে।

প্রশ্ন ২০। ভারতের সবুজ বিপ্লবের জনক কাকে আখ্যা দেওয়া হয় ?

উত্তরঃ তামিলনাড়ুর কৃষিবিজ্ঞানী ডঃ এম. এস. স্বামীনাথনকে ভারতের ‘সবুজ বিপ্লবের’ জনক আখ্যা দেওয়া হয়।

প্রশ্ন ২১। জীবাশ্ম ইন্ধনের উদাহরণ দাও।

উত্তরঃ কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস।

প্রশ্ন ২২। একটি ব্যবসায়িক শক্তির উৎস উল্লেখ করো।

উত্তরঃ কয়লা।

প্রশ্ন ২৩। ভারতের দুগ্ধমানব কাকে বলা হয় ?

উত্তরঃ ভার্গিস কুরিয়েন।

প্রশ্ন ২৪। GDP বা মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন কাকে বলে ?

উত্তরঃ একটি নির্দিষ্ট সময়কালে একটি ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে দেশের নাগরিক এবং বিদেশিরা মোট যে উৎপাদন করে তার আর্থিক মূল্যকে সেই দেশের ওই নির্দিষ্ট সময়কালের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা GDP বলা হয়।

প্রশ্ন ২৫। পর্যটন কাকে বলে ?

উত্তরঃ পর্যটন শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ পরিকল্পিত ভ্রমণ। পর্যটন হচ্ছে নিজের বাসস্থান ও কর্মস্থানের বাইরে অস্থায়ীভাবে ভ্রমণ। সহজ ভাষায় পর্যটন হচ্ছে পরিকল্পিত স্বল্পমেয়াদি ভ্রমণ।

প্রশ্ন ২৬। যাতায়াত (Communication) কাকে বলে ?

উত্তরঃ একস্থান থেকে অন্যস্থানে যাওয়া-আসা করাকে যাতায়াত বলে।

প্রশ্ন ২৭। পরিবহন ব্যবস্থা বলতে কী বোঝ ?

উত্তরঃ যানবাহনের সাহায্যে মানুষ এবং বস্তু সামগ্রী বহন করার ব্যবস্থাই হচ্ছে পরিবহন।

প্রশ্ন ২৮। আসামের প্রথম রেলপথের নাম লেখো।

উত্তরঃ ডিব্রু-শদিয়া রেলপথ (1882-1884)।

প্রশ্ন ২৯। ভারতের প্রথম কত সালে রেল চলাচল করে ?

উত্তরঃ 1853 সালের 16 এপ্রিল মুম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত 34 কিঃ মিঃ পথে 400 জন বিশিষ্ট মানুষকে নিয়ে বিকেল 3 টা 30 মিনিটে ভারতের প্রথম ট্রেনটি তার যাত্রা শুরু করেছিল।

প্রশ্ন ৩০। ভারতের রেলপথের দৈর্ঘ্য কত ?

উত্তরঃ 64015 কিলোমিটার।

প্রশ্ন ৩১। ভারতের জাতীয় সড়কপথের দৈর্ঘ্য কত ?

উত্তরঃ 70548 কিলোমিটার।

প্রশ্ন ৩২। ভারতের মোট বিদ্যুৎ যোগানের কত শতাংশ তাপবিদ্যুৎ থেকে উৎপন্ন হয় ?

উত্তরঃ 70%।

প্রশ্ন ৩৩। মহিলাদের জন্য একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ ইন্দিরা গান্ধী মহিলা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, রায়বেরেলি (উত্তর প্রদেশ)।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর 

প্রশ্ন ১। গাঁথনি/ অন্তর্গঠন/ পরিকাঠামো মানে কী ?

উত্তরঃ গাঁথনি বা পরিকাঠামো মানে কোন কাজ করবার জন্য বুনিয়াদী এবং অত্যন্ত‌ আবশ্যকীয় সুযোগ সুবিধা যেগুলো ছাড়া অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। রাস্তাঘাট, সেতু, যাতায়াত, যোগাযোগ, সেচ, পানীয় জল, চিকিৎসা, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ইত্যাদি পরিকাঠামোর উদাহরণ।

প্রশ্ন ২। সামাজিক পরিকাঠামো কাকে বলে ?

উত্তরঃ সমাজে সুস্থ সবল এবং শান্তিপূর্ণভাবে থাকার জন্য মানুষের যেগুলো ব্যবস্থা এবং সামগ্রীর প্রয়োজন, সেগুলোকে সামাজিক পরিকাঠামো বলে। পানীয় জলের ব্যবস্থা,‌ চিকিৎসালয়, পয়ঃপ্রণালির ব্যবস্থা, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা (থানা, আদালত) ইত্যাদি সামাজিক পরিকাঠামোর উদাহরণ।

প্রশ্ন ৩। অর্থনৈতিক পরিকাঠামো কাকে বলে ?

উত্তরঃ যে সকল বুনিয়াদী সুযোগ সুবিধা অর্থনৈতিক সম্পদের সৃষ্টি, উৎপাদন বৃদ্ধি তথা সামগ্রিক অর্থনৈতিক বিকাশে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করে, সেগুলোকে অর্থনৈতিক পরিকাঠামো বা অর্থনৈতিক আন্তঃগাঁথনি বলে। পথ পরিবহন, রেল পরিবহন, বিমানবন্দর, নদী এবং সমুদ্র বন্দর, যোগাযোগ ব্যবস্থা, তেল এবং গ্যাসের পাইপলাইন, বিদ্যুৎ শক্তি ইত্যাদি হল অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর উদাহরণ।

প্রশ্ন ৪। শিশু মৃত্যুর হার বা IMR কাকে বলে ?

উত্তরঃ কোনো নির্দিষ্ট বছরের মধ্যে জন্মগ্রহণকারী প্রতি হাজার শিশুর মধ্যে শিশু মৃত্যুর সংখ্যাকে শিশু মৃত্যুর হার বলে। 2017 সালের সর্বশেষ তথ্যমতে, ভারতে শিশু মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে 39.11।

প্রশ্ন ৫। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (Special Economic Zone) বা SEZ কী ?

উত্তরঃ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বলতে বোঝায় এমন একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চল যেখানে উদার অর্থনৈতিক নীতির মাধ্যমে শিল্পোন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করা হয় এবং পাশাপাশি রপ্তানি বৃদ্ধির অনুকূলে নতুন পরিমণ্ডল গড়ে তোলা হয়। SEZ Act ভারতবর্ষে প্রবর্তিত হয়েছে 2005 সালে এবং 2006 সালের 10 ফেব্রুয়ারী এই আইন কার্যকরী হয়েছে।

প্রশ্ন ৬। ‘নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস’ কাকে বলে ?

উত্তরঃ যে সকল শক্তির উৎস ভৌতিক, রাসায়নিক এবং যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নতুন করে উৎপন্ন করতে পারি সেইসবকে নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস বলে। সৌরশক্তি, বায়ু শক্তি, জৈব গ্যাস, জোয়ার শক্তি, জলবিদ্যুৎ শক্তি ইত্যাদি নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস।

প্রশ্ন ৭। ‘অনবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস’ মানে কী ?

উত্তরঃ যে সকল শক্তির উৎস ব্যবহার করতে থাকলে নিঃশেষ হয়ে যাবে এবং সেইসব পুনরায় পূরণ করা যাবে না, এইগুলোকে অনবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস বলে। যেমনয়কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস।

প্রশ্ন ৮। ভারতের কোথায় পারমাণবিক শক্তির প্রকল্প আছে ?

উত্তরঃ কালপক্কম (তামিলনাড়ু), তারাপুর (মহারাষ্ট্র), রাণা প্রতাপনগর (রাজস্থান)।

প্রশ্ন ৯। পরস্পরাগত বা চিরাচরিত শক্তি সম্পদ কাকে বলে ?

উত্তরঃ যে শক্তি সম্পদ জনপ্রিয় এবং যার ব্যবহার বহুল প্রচলিত তাকে পরম্পরাগত সম্পদ বলে। যেমন জ্বালানি কাঠ, কয়লা, পেট্রোলিয়াম।

প্রশ্ন ১০। পরম্পরাগত শক্তি সম্পদের দুটি সুবিধা লেখো।

উত্তরঃ  (১) পরম্পরাগত শক্তি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় কারিগরী জ্ঞান বা প্রযুক্তি সহজলভ্য, কারণ এটি বহুদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে।

(২) সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় আমদানি বা রপ্তানি করা যায়।

প্রশ্ন ১১। পরম্পরাগত বা চিরাচরিত শক্তি সম্পদের দুটি অসুবিধা লেখো।

উত্তরঃ (১) ইহা গচ্ছিত সম্পদ তাই মানুষ যত বেশি খরচ করবে, তত তাড়াতাড়ি এগুলো শেষ হয়ে যাবে।

(২) এই সম্পদ ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষিত হয়।

প্রশ্ন ১২। অপ্রচলিত বা অপরস্পরাগত শক্তি সম্পদ কাকে বলে ?

উত্তরঃ যে শক্তি সম্পদকে বর্তমানে কম ব্যবহার করা হয় বলে এখনও জনপ্রিয় নয়, তাকে অচিরাচরিত শক্তি সম্পদ বা অপরম্পরাগত শক্তি সম্পদ বলে। যেমন- সৌরশক্তি, বায়ু শক্তি, জোয়ার ভাটার শক্তি, জৈব গ্যাস ইত্যাদি।

প্রশ্ন ১৩। অপ্রচলিত শক্তির দুটি উৎস লেখো ।

উত্তরঃ  (১) এটি প্রবাহমান সম্পদ তাই যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে নিঃশেষিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

(২) এটি ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষণ বাড়ে না।

প্রশ্ন ১৪। দুই প্রকারের পরিকাঠামো কী কী ?

উত্তরঃ  (১) অর্থনৈতিক পরিকাঠামো।

(২) সামাজিক পরিকাঠামো।

প্রশ্ন ১৫। ভারতের প্রথম কয়লাখনি কোথায় অবস্থিত ?

উত্তরঃ রাণিগঞ্জে।

প্রশ্ন ১৬। পর্যটন দেশের অর্থনৈতিক শ্রী-বৃদ্ধিতে উন্নতি ঘটায় – দুটি কারণ লেখো।

উত্তরঃ (১) পর্যটনের সঙ্গে পরিষেবা শিল্প যেমন – পরিবহন, হোটেল ও আতিথেয়তা, বিনোদন ইত্যাদি যুক্ত থাকায় যে আর্থিক লেনদেন হয় তাতে দেশের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন হয় এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত হয়।

(২) পর্যটনের ফলে বাণিজ্যের প্রসার, প্রযুক্তির বিনিময় ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের মধ্যে সম্ভবপর হয়। এভাবে পর্যটন উন্নয়নের গতিকে দ্রুততর করেছে।

প্রশ্ন ১৭। নামকরা হোটেলে কী কী সুবিধা থাকে ?

উত্তরঃ নামকরা হোটেলে নিম্নলিখিত সুবিধা থাকে –

(১) আরামদায়ক কক্ষ।

(২) রেষ্টুরেন্ট পরিষেবা।

(৩) উচ্চমানের বিনোদন ব্যবস্থা।

(৪) হেল্থ ক্লাব।

(৫) শপিং মার্ট।

প্রশ্ন ১৮। কাঁচামাল (Raw Material) কাকে বলে ?

উত্তরঃ প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত যেগুলো সামগ্রী ব্যবহার করে আমাদের প্রয়োজনীয় বস্তুগুলো উৎপাদন করা হয়, সেগুলোকে কাঁচামাল বলে। যেমন – কুশিয়ার থেকে চিনি উৎপাদিত বাঁশ থেকে কাগজ উৎপাদিত হয়। এক্ষেত্রে কুশিয়ার এবং বাঁশ হল কাঁচামাল।

প্রশ্ন ১৯। দুই প্রকারের পরিকাঠামো কী কী ?

উত্তরঃ  (১) অর্থনৈতিক পরিকাঠামো।

(২) সামাজিক পরিকাঠামো।

প্রশ্ন ২০। তেল উত্তোলন ও অনুসন্ধানের কাজে জড়িত ভারতের দুটি প্রতিষ্ঠানের নাম লেখো।

উত্তরঃ (১) Oil India Limited (OIL)

(২) Oil and Natural Gas Commission (ONGC).

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিক্ষাকে কর্মসংস্থানের উপযোগী করে তোলার জন্য ‘4C’ এর কথা বলা হয়েছে। এই 4C এর মানে কী ?

উত্তরঃ দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিক্ষার দ্বারা ‘4C’ এর দক্ষতা অর্জন করার কথা বলা হয়েছিল। 

এই ‘4C’ হল-

(১) Critical thinking বা সমালোচনামূলক চিন্তন।

(২) Communication বা সংযোগ।

(৩) Collaboration বা সহযোগিতা। এবং

(৪) Creativity বা সৃজনশীলতা।

প্রশ্ন ২। একাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (2007-2012) স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা কী ছিল ?

উত্তরঃ (১) একাদশ পরিকল্পনার শেষে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে কমিয়ে 28 এ নামিয়ে আনা এবং প্রসূতি মৃত্যুর হার প্রতি হাজারে কমিয়ে 1-এ নামিয়ে আনা।

(২) একাদশ পরিকল্পনার শেষে জন্মের হার কমিয়ে 2.1 শতাংশে নামিয়ে আনা।

(৩) 2009 সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা।

(৪) সদ্যোজাত থেকে তিন বছরের শিশুদের মধ্যে যারা অপুষ্টিতে ভুগছে তাদের সংখ্যা কমিয়ে অর্ধেকে নিয়ে যাওয়া।

(৫) প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা ও কন্যা সন্তানদের মধ্যে রক্তাল্পতার ঘটনা একাদশ পরিকল্পনার শেষ বছরের মধ্যে 50 শতাংশ কমানো।

প্রশ্ন ৩। একাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পরিকাঠামো উন্নয়নে লক্ষ্যমাত্রা কী ছিল ?

উত্তরঃ (১) একাদশ পরিকল্পনার শেষে দেশের প্রতিটি গ্রামে ও দারিদ্র্যসীমার নীচে অবস্থানকারী পরিবারগুলির কাছে বিদ্যুৎ সরবরাহের বন্দোবস্ত নিশ্চিতকরণ করা।

(২) 2009 সাল নাগাদ দেশে হাজার বা তার বেশি সংখ্যক মানুষের বাস এমন জনবসতিগুলিতে বছরের সব মৌসমে চলাচলের উপযোগী সড়ক যোগাযোগ গড়ে তোলা।

(৩) প্রতিটি গ্রামকে টেলি-যোগাযোগের ব্যবস্থার আওতায় আনা এবং 2012 সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি গ্রামে Broadband connectivity পৌঁছে দেওয়া।

(৪) 2012 সালের মধ্যে প্রতিটি নাগরিকের গৃহ নির্মাণের জন্য জায়গা দেওয়া এবং 2016-17 এর মধ্যে সমস্ত গরিব মানুষ যাতে নিজস্ব গৃহে বাস করতে পারে তার বন্দোবস্ত করা।

প্রশ্ন ৪। প্রযুক্তি যোগাযোগ ব্যবস্থায় কী পরিবর্তন এনেছে তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। কৃত্রিম উপগ্রহের নির্মাণ তথা অন্তরীক্ষে স্থাপনের ফলে মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, কম্পিউটার, ইন্টারনেট ইত্যাদি ব্যবস্থার মাধ্যমে এখন মানুষ ঘরে বসে দেশ বিদেশের খবর গ্রহণ, প্রেরণ এবং সংরক্ষণ করতে পারছে। ইন্টারনেট সেবার মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে অগণিত তথ্য সহজে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। মনোরঞ্জনের কার্যক্রম ও এই সেবার মাধ্যমে উপভোগ করা যায়। ই-মেইলের সাহায্যে এখন মুহুর্তের মধ্যে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের যে কোনো খবর, তথ্য অথবা ভিডিও প্রেরণ করা যায়। FAX মেশিনের সাহায্যে আজকাল টেলিফোনের তারের দ্বারা যে কোনো তথ্যের প্রতিলিপি অন্যস্থানে প্রেরণ করা যায়।

প্রশ্ন ৫। সোনালি চতুর্ভুজ ও East West Corridor মানে কী?

উত্তরঃ National Highway Authority of India, 1999 সালের 2রা জানুয়ারী সড়ক নির্মাণের এক বিশাল কর্মসূচি গ্রহণ করে। এই কর্মসূচিটি হল – ভারতের চারটি মেট্রোপলিটান শহর – দিল্লী, মুম্বাই, চেন্নাই ও কলকাতাকে ছয় চ্যানেল বিশিষ্ট সড়ক পথ দ্বারা যুক্ত করা। একে সোনালি চতুর্ভূজ বলে। এই চতুর্ভূজের মোট দৈর্ঘ্য 5846 কিলোমিটার। 

East West Corridor হল পূর্ব পশ্চিম সংযুক্ত রাজপথ 1999 সালে এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এই রাজপথটি পূর্বে আসামের শিলচর থেকে পশ্চিমে গুজরাটের পোরবন্দর পর্যন্ত বিস্তৃত। এই পথটির দৈর্ঘ্য প্রায় 3300 কিলোমিটার। এই রাজপথটি যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ শহরকে যুক্ত করেছে সেগুলি হল : শিলচর, গুয়াহাটি, শিলিগুড়ি, মুজাফফরপূর, গোরক্ষপুর, লক্ষ্ণৌ, কানপুর, শিবপুর, উদয়পুর, পালানপুর ও পোরবন্দর।

প্রশ্ন ৬। বিদ্যুৎ উৎপাদনের 5 টি উৎস লেখো।

উত্তরঃ বিদ্যুৎ উৎপাদনের 5 টি উৎস হল – জল, কয়লা, তেল, গ্যাস এবং তেজষ্ক্রিয় পদার্থ যেমন – ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম এবং প্লুটোনিয়াম। জল থেকে উৎপন্ন বিদ্যুৎকে বলা হয় জলবিদ্যুৎ। কয়লা, তেল এবং গ্যাস হল তাপবিদ্যুৎ বা থার্মাল পাওয়ারের উৎস। আর ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম এবং প্লুটোনিয়াম থেকে তৈরি হয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ শক্তি।

প্রশ্ন ৭। ভারতের চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখো।

উত্তরঃ (১) তারাপুর (মহারাষ্ট্র।

(২) কালপক্কম (তামিলনাড়ু)।

(৩) কুদানকালাম (তামিলনাড়ু)।

(৪) কাকরাপারা (গুজরাট)।

প্রশ্ন ৮। ভারতের চারটি জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখো।

উত্তরঃ (১) হীরাকুঁদ (ওড়িশা)।

(২) লোকটাক (মণিপুর)।

(৩) জলঢাকা (পশ্চিমবঙ্গ)।

(৪) ইদুক্কি (কেরালা)।

প্রশ্ন ৯। ভারতের চারটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নাম লেখো।

উত্তরঃ (১) ফারাক্কা (পশ্চিমবঙ্গ)।

(২) দুর্গাপুর (পশ্চিমবঙ্গ)।

(৩) সাঁওতালডিহি (পশ্চিমবঙ্গ)।

(৪) বোকারো (ঝাড়খণ্ড)।

প্রশ্ন ১০। সাম্প্রতিককালের চারটি বহুমুখী নদী উপত্যকার পরিকল্পনার নাম লেখো।

উত্তরঃ (১) তেহরি বাঁধ প্রকল্প (উত্তরাখণ্ড)।

(২) সরদার সরোবর প্রকল্প (মহারাষ্ট্র)।

(৩) তিস্তা প্রকল্প (পশ্চিমবঙ্গ)।

(৪) চম্বল প্রকল্প (মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থান)।

প্রশ্ন ১১। সড়কপথের শ্রেণিবিভাগ করো।

উত্তরঃ 

প্রশ্ন ১৩। ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে রেলপথ উল্লেখযোগ্য ভাবে বিস্তার লাভ করেনি কেন ?

উত্তরঃ অসম, অরুণাচল, মণিপুর, মিজোরাম, মেঘালয়, নাগাল্যাণ্ড ও ত্রিপুরা – এই সাতটি রাজ্যকে একসঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারত বলা হয়। 

কিন্তু এখানে রেলপথ বিস্তার লাভ করেনি তার কারণ হল –

(১) ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের বেশির ভাগ জায়গাই বন্ধুর প্রকৃতির এবং অসংখ্য পার্বত্য নদী বয়ে গেছে।

(২) এই অঞ্চলের বিস্তীর্ণ ভূমিভাগ গভীর অরণ্যের দ্বারা আবৃত। তাই রেলপথ বিস্তার লাভ করেনি।

(৩) অধিকাংশ স্থানই জনবিরল। 2011 সালে লোকগণনা মতে অরুণাচল প্রদেশে প্রতি বর্গকিলোমিটারে 17 জন এবং মিজোরামে প্রতি বর্গকিলোমিটাৱে 52 জন বাস করে।

(৪) এই অঞ্চলটি যেহেতু হিমালয় সংলগ্ন তাই এখানে ভূমিকম্প ও ভূমিধ্বংসের প্রবণতা অনেক বেশি।

(৫) অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অঞ্চলটি পিছিয়ে আছে। কারণ এখানে কৃষিকাজ, খনিজসম্পদ ও শিল্প তেমন বিকাশ লাভ করেনি।ট

প্রশ্ন ১৪। AYUSH কী ?

উত্তরঃ ঔষধের ভারতীয় পদ্ধতিকে AYUSH বলে। ভারতীয় পদ্ধতি ঔষধকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা হয় –  

(১) আয়ুর্বেদ। 

(২) যোগ। 

(৩) সিদ্ধা। 

(8) নেচারোপ্যাথি। 

(৫) হোমিওপ্যাথি। এবং 

(৬) ইউনানী। 

AYUSH অত্যন্ত কার্যকর, নিরাপদ ও সস্তা যা আমাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার অনেকটাই সমাধান করতে পারে।

প্রশ্ন ১৫। বাণিজ্যিক ও অবাণিজ্যিক শক্তির উৎসের নাম লেখো।

উত্তরঃ বাণিজ্যিক শক্তির উৎস – খনিজ তেল, কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস, জলবিদ্যুৎ, নিউক্লিয়াস শক্তি।

অবাণিজ্যিক শক্তির উৎস – জ্বালানি কাঠ, গোবর এবং কৃষিজাত কিছু জ্বালানি যেমন – খড়, তুষ ইত্যাদি।

প্রশ্ন ১৬। অচিরাচরিত শক্তির উৎস তিনটি নাম লেখো।

উত্তরঃ জৈব গ্যাস, সৌরশক্তি, বায়ু শক্তি।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তর

প্রশ্ন ১। একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য অন্তর্গঠনের (পরিকাঠামোর) প্রাসঙ্গিকতা আলোচনা করো।

উত্তরঃ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পরিকাঠামোর গুরুত্ব বা প্রাসঙ্গিকতা – 

আর্থ সামাজিক উন্নয়নের মৌলিক উপাদান হল রাস্তাঘাট, পরিবহন, সেতু, বাসস্থান, যাতায়াত, যোগাযোগ, সেচ, পানীয় জল, চিকিৎসা, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, ব্যাংক, বিমা, বাঁধ, শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র -পর্যটন ইত্যাদি। ভিত মজবুত না হলে একটি ঘর যেমন মজবুত হতে পারে না, তেমন একটি দেশের পরিকাঠামো মজবুত না হলে দেশটির উন্নয়নমূলক কাজকর্মের বিকাশ সাধন হতে পারে না। কৃষি, শিল্প, পরিষেবা প্রভৃতি সব খণ্ডেরই উৎপাদনশীল কাজকর্মসমূহ মূলত নির্ভর করে উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থার ওপর। উন্নয়নের এক উল্লেখযোগ্য বুনিয়াদ হচ্ছে যাতায়াত ব্যবস্থা।

সমার্জের বিকাশ ও উন্নতির মূল ভিত্তি হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষা মানুষের চিন্তাশক্তি জাগ্রত করে এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করে। শিক্ষা ছাড়া কোনও উন্নত জীবনযাপন করা অসম্ভব। আবার, সুস্বাস্থ্য মানুষের কর্মশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ব্যক্তিরাই দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারেন। একটি দেশের বিত্তীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণের যোগান দিয়ে মানুষকে উৎপাদনক্ষম এবং আত্মনির্ভরশীল করার পথে অভূতপূর্ব অবদান জোগায়। আধুনিক অর্থব্যবস্থায় ঋণের ভূমিকা অন্যতম। সুতরাং বলা যায়, দেশের আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য ব্যাংক হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। 

বিদ্যুৎ ছাড়া কোনো প্রকারের উন্নতি আজ অকল্পনীয়। বিদ্যুতের ব্যাপক ব্যবহার আমাদের জীবনকে সচল ও উন্নয়নমুখী করে তুলেছে।

সুতরাং বুঝা যাচ্ছে, অন্তর্গঠন বা পরিকাঠামো উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে। উৎপাদন বৃদ্ধি মানে আয় বৃদ্ধি। বর্ধিত আয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাপকাঠি। পরিকাঠামোর সুফল সর্বস্তরের মানুষ সমানভাবে ভোগ করতে পারলেই একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব হবে।

প্রশ্ন ২। দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (2012-2017) স্বাস্থ্যক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা কী ছিল ?

উত্তরঃ দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক বিকাশের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। জাতীয় গ্রামীণ স্বাস্থ্য মিশনের ছত্রছায়ায় পূর্বতন পরিকল্পনার অসমাপ্ত ও অপূর্ণ কর্মসূচি রূপায়ণের উপর দ্বাদশ যোজনার গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। যে সব বিষয়ে বিশেষভাবে রূপায়ণের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল – শিশুমৃত্যুর হার কমানো, প্রসূতি মৃত্যুর হার কমানো, নারী ও বালিকাদের রক্তাল্পতাজনিত সমস্যার সমাধান ও বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। পাশাপাশি দ্বাদশ যোজনাকালে কতকগুলি বিশেষ রোগব্যাধির কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রয়াস চালানোর কথা বলা হয়েছে। সেগুলি হল এডস, কুষ্ঠ, হৃদরোগ ও মানসিক অসুস্থতা ইত্যাদি। দ্বাদশ যোজনায় ভবিষ্যতে জনগণের শারীরিক ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সাধারণ পুষ্টি বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

দ্বাদশ যোজনায় স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পরিকাঠামোতে উন্নয়নের জন্য যে প্রস্তাবগুলি গৃহীত হয়েছে সেগুলি হল –

প্রথমত, গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্বাস্থ্য উপকেন্দ্র ও সমষ্টিমূলক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের খুবই অভাব। দ্বাদশ যোজনাকালে তাই বিপুল সংখ্যক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে আর্থিক সাহায্য করবে বলে উল্লেখ করেছে।

দ্বিতীয়ত, জেলা হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মী গড়ে তোলা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জ্ঞানচর্চা কেন্দ্র হিসাবে বিকশিত করার প্রস্তাব গৃহীত হয়।

তৃতীয়ত, দেশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে মানব সম্পদের যে ঘাটতি রয়েছে তা পূরণের প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এদেশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় ডাক্তারের দশ শতাংশ এবং সমষ্টিমূলক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের 62 শতাংশ বিশেষজ্ঞের অভাব আছে। এই অভাব পূরণের সংকল্প গৃহীত হয়েছে এই পরিকল্পনায়।

পরিশেষে, দ্বাদশ যোজনায় রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার মাধ্যমে দেশের গরিব লোকেদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। যেখানে কেন্দ্র ও রাজ্য যথাক্রমে 75 : 25 হিসাবে অর্থ সরবরাহ করবে।

প্রশ্ন ৩। ভারতে ধনী দরিদ্র এবং শহর-গ্রামাঞ্চলে বৈষম্যমূলক স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পর্কে যা জানো লেখো।

উত্তরঃ ভারতে ধনী-দরিদ্র এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলে বৈষম্যমূলক চিকিৎসা পরিষেবা পরিলক্ষিত হয়। ভারতের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ মানুষ গ্রামাঞ্চলে বসবাস করে কিন্তু দেখা যায় যে মোট হাসপাতালের মাত্র এক পঞ্চমাংশ গ্রামে অবস্থিত। দেশের মোট সাত লক্ষ শয্যার মধ্যে 11 শতাংশ শয্যার ব্যবস্থা গ্রামাঞ্চলে আছে। অধিকাংশ গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে X-ray, CT Scan, আল্ট্রা সাউণ্ড এমনকি রক্ত পরীক্ষার কোনো যন্ত্রপাতি নাই, যা শহরাঞ্চলের লোকের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় উপলব্ধ আছে। গ্রামাঞ্চলে প্রতি এক লক্ষ লোকের জন্য 0.36 টি হাসপাতাল আছে, যেটা শহরাঞ্চলে হল 3.6 টি। 2003 সালের হিসেব মতে, গ্রামাঞ্চলের 24% লোক যথোচিত স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের লোকেরা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, চৈতন্যনাশক প্রয়োগকারী বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত। কারণ এই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অধিক অর্থ উপার্জনের জন্য বিদেশে পাড়ি দেয় অথবা শহরের বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসার কাজকে বেছে নেয়।

শহর ও গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত 20% গরিব মানুষ তাদের আয়ের 12 শতাংশ স্বাস্থ্য সেবায় ব্যয় করে, পক্ষান্তরে ধনী শ্রেণিরা তাদের আয়ের মাত্র 2 শতাংশ চিকিৎসা‌ সেবায় ব্যয় করে। সরকারি খণ্ডের হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা না থাকায় দরিদ্রতম মানুষ বেসরকারি নার্সিংহোমে চিকিৎসা করাতে বাধ্য হয়। এর ফলে তারা চিরঋণী হয়ে পড়ে অথবা অর্থের অভাবের জন্য মৃত্যুকে বেছে নিতে বাধ্য হয়।

প্রশ্ন ৪। নবীকরণযোগ্য শক্তি / অপ্রচলিত শক্তি/ অচিরাচরিত শক্তি /অপরাম্পরাগত শক্তির চারটি বিবরণ দাও।

উত্তরঃ (১) সৌরশক্তি: সূর্য্য অফুরন্ত শক্তির ভাণ্ডার। সূর্যের এই শক্তিকে সৌরকোষের সাহায্যে বিদ্যুৎশক্তি উৎপাদন করার কাজে ব্যবহার করা হয়। এই বিদ্যুৎ শক্তির সাহায্যে সৌরচুল্লি, সৌরহিটার, বৈদ্যুতিন বাতি জ্বালানো ইত্যাদি চালানো হয়।

(২) বায়ু শক্তি: বাতাস এক প্রকার অক্ষয় সম্পদ। উপকূলীয় অঞ্চল, পর্বতের গিরিপথ ইত্যাদিতে বাতাসের তীব্রতা যেখানে বেশি, সেখানে বায়ুকল বসিয়ে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপন্ন করা হয়। এই শক্তির দ্বারা জল তোলার পাম্প, আটা-ময়দার কল, জেনারেটর ইত্যাদি চালানো যায়। ভারতের কচ্ছ উপকূলে এ ধরনের প্রকল্প আছে।

(৩) জোয়ার শক্তি: সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা থেকে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করা যায়। জোয়ারের সময় সেই জল আরদ্ধ করে ভাটার সময় নেমে যেতে দিয়ে টার্বাইনের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

(৪) জৈব গ্যাস: মৃতজীবজন্তু এবং উদ্ভিদের অবশিষ্ট, কৃষিজাত আবর্জনা, গোবর ইত্যাদিকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় গ্যাস ইন্ধনে রূপান্তরিত করা যায়। গ্যাস যন্ত্রে জমা করে রাখা আবর্জনাগুলো থেকে উৎপন্ন গ্যাসের দ্বারা বিজলি বাতি জ্বালানো এবং রন্ধনের কাজ করা হয়।

(৫) জলবিদ্যুৎ শক্তি: নদী বা বৃষ্টির জল বাঁধের সাহায্যে আবদ্ধ করে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। পৃথিবীর চার ভাগের একভাগ বিদ্যুৎ এভাবেই উৎপন্ন করা হয়। ভারতের ভাকরা নাঙ্গাল, দামোদর উপত্যকা, গান্ধিসাগর ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

প্রশ্ন ৫। মহিলাদের স্বাস্থ্য কীভাবে একটি বড় উদ্বেগের / চিন্তনীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছে আলোচনা করো।

উত্তরঃ 2011 সালের জনগণনা মতে, প্রতি হাজার পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা 943 জন। ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে লিঙ্গ অনুপাত ছিল 861। প্রসূতি মৃত্যুর হার 2015 সালের হিসেবমতে প্রতি লাখে 174 জন।

জীববিজ্ঞানীদের মতে, প্রকৃতি নারীর শরীরে এমন কিছু রক্ষাকবচ দিয়েছেন যাতে পুষ্টি, স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার বিষয়ে সমান সুযোগ পেলে মেয়েদের মৃত্যুহার ছেলেদের তুলনায় কম হয় এবং মেয়েদের পক্ষে ছেলেদের তুলনায় গড় সাত বছর বেশি বাঁচা সম্ভব হয়। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মোট জনসংখ্যার মধ্যে প্রতি হাজার জন পুরুষে 1050 জন নারী, কিন্তু ভারতে প্রতি হাজার পুরুষে নারীর সংখ্যা দাঁড়ায় 943 জন। সুতরাং এটা বোঝা যায় যে, ভারতে নারীর প্রতি বঞ্চনা ও অবহেলা তাদের জৈবিক সুবিধাগুলিকে নষ্ট করে দেয়। ইদানিং বিজ্ঞানের উন্নতিতে কন্যাসন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখা থেকে বঞ্চিত করার কাজে লাগানো হচ্ছে। বর্তমানে গর্ভাবস্থায় ‘ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ণয়’ সম্ভব হওয়ায় অনেক কন্যাভ্রূণ হত্যা করা হচ্ছে। 

এই প্রবণতা ভারতের কোনো কোনো রাজ্যে এতই প্রবল যে সেসব অঞ্চলে 5 বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে প্রতি 100 জন, পুত্রশিশু পিছু কন্যাশিশুর সংখ্যা মাত্র ৪০ এর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লী, গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ ইত্যাদি রাজ্যে ছয় বছরের কম বয়সিদের মধ্যে কন্যাশিশুর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে চলেছে। অমর্ত্য সেন, এভাবে নারীর সংখ্যা কমে যাওয়াকে ‘Missing Women’ বা ‘হারিয়ে যাওয়া নারী’ বলে অভিহিত করেছেন।

15 বছরের কমবয়সী তিন লাখ বিবাহিত মেয়ে কমপক্ষে একজন সন্তানের জন্ম দিয়েছে। 15 থেকে 49 বছরের মহিলার অর্ধেক মহিলা রক্তশূন্যতায় ভুগছে, যা শরীরের লোহা ধাতুর অভাবে হয়। মায়ের মৃত্যুর অন্যতম আরেকটি কারণ হল গর্ভপাত (Abortion)। সুতরাং আমরা বলতে পারি মহিলার স্বাস্থ্য এক উদ্বেগজনক বিষয়।

প্রশ্ন ৬। ভারতের শক্তিখণ্ড কি প্রকার সমস্যার/চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে ? আলোচনা করো।

উত্তরঃ মানব সভ্যতার অগ্রগতির সহায়ক হিসাবে বিদ্যুৎ আজ মানবজীবনের সাথে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। ভারতের জনসংখ্যা 120 কোটি অতিক্রম করেছে। কল-কারখানা গড়ে ওঠে। দিনে দিনেই বাড়ে বিদ্যুতের চাহিদা। কিন্তু দেশের প্রায় সব রাজ্যেই বিদ্যুতের ঘাটতি রয়ে গেছে। বিদ্যুৎ ঘাটতির মূল কারণ হল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির কাজকর্মে ব্যর্থতা এবং বিদ্যুৎ প্রেরণের লাইন সম্পূর্ণ না হওয়া। উপযুক্ত অর্থের অভাবে চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পনা তৈরি করেও পরিকল্পনা মত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো যাচ্ছে না।

বিদ্যুত বিতরণের অদক্ষতা, ভুল দর নীতি, বিদ্যুৎ চুরি ইত্যাদির কারণে State Electricity Board প্রায় 500 মিলিয়ন টাকা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। 

বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে যান্ত্রিক গোলযোগ অথবা এক বা একাধিক ইউনিট অচল থাকা নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। ফলে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে না। তাছাড়া বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কর্মচারিদের বিরোধ ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণ। ইউনিয়নগুলির মধ্যে অন্তর্কলহ লেগে থাকার জন্যও বিদ্যুৎ ব্যাহত হয়। 

ভারতের শক্তির অন্যতম উৎস হল কয়লা। বর্তমানে দেশের বিদ্যুৎ যোগানের এটিই প্রধান উৎস। কয়লা শিল্প দুশো বছরেরও বেশি পুরানো এবং নানা সমস্যায় জর্জরিত। আজ অথবা কাল ভারতকে বিকল্প শক্তির সন্ধান করতে হবে। কারণ কয়লার যোগান একদিন ফুরিয়ে যাবে। এজন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার উপর নির্ভরতা কমানো প্রয়োজন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top