Class 9 Bengali Chapter 4 কবর

Class 9 Bengali Chapter 4 কবর Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Class 9 Bengali Chapter 4 কবর and select needs one.

Class 9 Bengali Chapter 4 কবর

Join Telegram channel

Also, you can read SCERT book online in these sections Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 9 Bengali Chapter 4 কবর for All Subject, You can practice these here…

কবর

               Chapter – 4

ক-বিভাগ পদ্যাংশ

ক্রিয়াকলাপ-

প্রশ্ন ১। শুদ্ধ উত্তরটি লেখাে-

১। দাদির কবর কোন গাছের নীচে ?

(ক) আমগাছ

(খ) জামগাছ

(গ) ডালিম গাছ

(ঘ) কমলা গাছ

উত্তরঃ (গ) দাদির কবর ডালিম গাছের নীচে।

২। দাদুর বিপত্নীক জীবন কত বছরের ?

(ক) ২০ বছর

(খ) ৩০ বছর

(গ) ৪০ বছর

(ঘ) ৫০ বছর

উত্তরঃ (খ) দাদুর বিপত্নীক জীবন ৩০ বছরের।

৩। শাপলার হাটে দাদু কী বিক্রি করতেন ?

(ক) তরমুজ

(খ) নারকেল

(গ) কলা

(ঘ) আম

উত্তরঃ (ক) শাপলার হাটে দাদু তরমুজ বিক্রি করতেন।

৪। দাদু শ্বশুর বাড়িতে কোন সময় যেতেন ?

(ক) সকাল

(খ) বিকেল

(গ) সন্ধ্যা

(ঘ) রাতে

উত্তরঃ (গ) দাদু শ্বশুর বাড়িতে সন্ধ্যার সময় যেতেন।

(খ) শূন্যস্থান পূর্ণ করাে। (কবিতা অবলম্বনে)-

১। এইখানে তাের …………………………. কবর ডামিল গাছের তলে।

উত্তরঃ  এইখানে তাের দাবি কবর ডামিল গাছের তলে।

২। ………………………বিয়ে ভেঙ্গে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত কুল।

উত্তরঃ পুতুলের বিয়ে ভেঙ্গে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত কুল।

৩। সােনালি …………………………সােনামুখ তার আমার নয়নে ভরি।

উত্তরঃ  সােনালি ঊষাব সােনামুখ তার আমার নয়নে ভরি।

৪। দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া ……………………।

উত্তরঃ  দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে।

২। অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।

(ক) ‘কবর’ কবিতার কবি কে ?

উত্তরঃ ‘কবর’ কবিতার কবি জসীমউদ্দিন।

(খ) কোন গাছের নীচে দাদির কবর ?

উত্তরঃ ডালিম গাছের নীচে দাদির কবর।

(গ) দাদু কোন হাটে তরমুজ বিক্রি করতেন ?

উত্তরঃ দাদু শাপলার হাটে তরমুজ বিক্রি করতেন।

(ঘ) দাদিকে দেবার জন্য দাদু কীসের মালা কিনতেন ?

উত্তরঃ দাদিকে দেবার জন্য দাদু পুঁতির মালা কিনতেন।

(ঙ) তামাক এবং মাজনের দাম কত ?

উত্তরঃ তামক এবং মাজানের দাম দেড় পয়সা।

৩। ৩/৪ টি বাক্যে উত্তর দাও-

(ক) ছােটো বয়সের স্ত্রীকে বিয়ে করার পর দাদুর মনােভাব কেমন ছিল ?

উত্তরঃ ছােটো বয়সের স্ত্রীকে বিয়ে করার পর দাদু তাকে আপন ঘরে পরম সমাদরে এনে তুলেছিলেন। ছােটো ছােটো দুটি পায়ে সে যখন বাড়িময় এঘর থেকে ওঘরে ঘুরে বেড়াত, মুহূর্তের জন্য চোখের আড়ালে চলে যেত তখন তাকে হারানাের অমূলক আশংকায় কেঁপে উঠত যুবক স্বামীর অন্তর। এছাড়া সেই সঙ্গে এক বিচিত্র অনুভূতিতেও তার স্বামীর হৃদয় পরিপূর্ণ হয়ে যেত। স্বর্ণকান্তি, রূপবতী সেই কন্যা রূপের ঢেউ তুলে, মেলার আলাে ছড়িয়ে যখন বাড়িময়  অবাধে ঘুরে বেড়াত, তখন তাকে দেখে মনে হত, কে বা কারা যেন সারা বাড়ি জুড়ে মুঠো মুঠো সােনা বিছিয়ে দিয়ে গেছে।

(খ) শ্বশুর বাড়িতে যাবার সময় দাদু স্ত্রীর জন্য যে সব জিনিস নিতেন তা উল্লেখ করাে।

উত্তরঃ পত্নী বাপের বাড়ি গেলে পর দাদু সময় সুযােগমতাে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে মাঝে-মধ্যে তাকে দেখে আসতেন। তখন প্রিয় মিলনের প্রত্যাশায় তার বুক দুরুদুরু করতাে। যাওয়ার আগে শাপলার হাটে ছয় পয়সা পাল্লা তরমুজ বিক্রি করে বধূর জন্য একছড়া পুঁতির মালা, দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন সঙ্গে নিয়ে যেতে তার কখনােই ভুল হতাে না।

(গ) উপহার পেয়ে দাদির খুশি কবি কীভাবে প্রকাশ করেছেন ?

উত্তরঃ সামান্য পুঁতির মালা, তামাক ও মাজন উপহার পেয়ে দাদি প্রচণ্ড খুশি হতেন। কবি দাদির খুশির এই ভাবকে প্রকাশ করতে গিয়ে বলেছেন যে দাদি নথ নেড়ে নেড়ে হেসে উঠতেন। মৃদু অনুযােগের সুরে বলতেন, এতদিন পরে দাদুর আসা হলাে কেন ?

৪। রচনাধর্মী উত্তর লেখাে-

(ক) কবর কবিতার সারমর্ম লেখাে।

উত্তরঃ প্রিয়তমা পত্নীর মৃত্যুর পটভূমিতে সাংসারিক স্নেহ-প্রেমের আশ্চর্য করুণাঘন রূপ ফুটে উঠেছে কবিতাটিতে। জীবন সমুদ্রের বেলাভূমিতে দাঁড়িয়ে অতীত জীবনের সুখের স্মৃতিগুলাে রােমন্থন করছে দাদু, তার একমাত্র নাতির কাছে। ত্রিশ বছরের বিপত্নীক জীবন দাদুর কাছে বড় দুঃসহ হয়ে ওঠে। দাদুর স্ত্রী ছিল অত্যন্ত সুন্দরী। ছােট্ট সুন্দরী বধূর রূপ লাবণ্যে সারা বাড়ি সােনালি রঙে উজ্জ্বল হতাে। দাদু লাঙল নিয়ে মাঠে যাবার সময় আড়চোখে বারবার স্ত্রীকে দেখে নিতেন। দাদির স্বতঃস্ফূর্ত প্রেমঘন সান্নিধ্য দাদুর মনকে অভিষিক্ত করে দিয়েছিল। দাদি বাপের বাড়ি যাবার সময় দাদুকে বারবার অনুরােধ করতেন যেন মাঝেমাঝেই তাকে দেখে আসেন। বৃদ্ধা দাদু শাপলার হাট থেকে তরমুজ বিক্রি করে কিছু পয়সা বাঁচিয়ে স্ত্রীর জন্য তামাক, মাজন ও পুঁতির মালা নিয়ে সন্ধ্যাবেলা শ্বশুর বাড়িতে যেতেন। এই সমস্ত উপহার পেয়ে দাদি ভীষণ খুশি হতাে এবং দাদুর আসার আশায় কত যে অপেক্ষা করতাে সে কথাও হাসি মুখে জানিয়ে দিত। কবিতাটি সরল সুন্দর গ্রামবাংলার ঘরােয়া জীবনচিত্র।

(খ) কবর’ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা আলােচনা কর।

উত্তরঃ ‘কবর’ কবিতাটির সূচনাই হয়েছে কবরের প্রসঙ্গ দিয়ে। বিপত্নীক এক বৃদ্ধ তিরিশ বছর আগে প্রয়াত তার স্ত্রীর কবরের প্রতি নিজের নাতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে কবিতাটির সূচনা করেছেন। আর এই কবরকে কেন্দ্র করেই নাতির কাছে। তিনি উন্মুক্ত করে দিয়েছেন তার হৃদয়ের রুদ্ধদ্বার। সেই দ্বারপথে একদিকে যেমন দাম্পত্য প্রেমের উজ্জ্বল, মধুর চিত্র প্রস্ফুটিত হয়েছে, তেমনি পত্নীবিয়ােগকাতর স্বামীর যন্ত্রণাদগ্ধ হৃদয়ের রক্তাক্ত ছবিও প্রস্ফুটিত হয়েছে।একদিন যে রূপবতী বালিকাকে তিনি বধূরূপে বরণ করে ঘরে এনেছিলেন, তার সঙ্গে দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনযাপনের কত সুখস্মৃতিই না তিনি নিজ মুখে ব্যক্ত করেছেন। পবিত্র ভালােবাসার বন্ধন উভয়ের জীবন একসূত্রে গ্রথিত হয়ে গিয়েছিল। 

কিন্তু সেই ভালােবাসার বন্ধন ছিন্ন করে প্রিয় স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের যন্ত্রণা উপেক্ষা করে তাঁর প্রিয় পত্নী আজ কেমন করে নীরব নিভৃত কবরের তলদেশে চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে আছেন, বৃদ্ধের হাহাকার মথিত কণ্ঠে এই নিরুত্তর প্রশ্নই আজ বড়াে হয়ে উঠেছে। এইভাবেই দেখা যায়, পরলােকগতা জীবন-সঙ্গিনীর কবরকে কেন্দ্র করেই বর্তমানে বৃদ্ধ স্বামীর হৃদয়াবেগ ‘কবর’ কবিতার প্রথম দুই স্তবকে বাণীবদ্ধ হয়েছে। অপরদিকে কবিতাটির তৃতীয় স্তবকেও প্রায় অনুরূপ প্রসঙ্গ পরিস্থিতিতে বৃদ্ধের শূন্য হৃদয়ের তথা শূন্য জীবনের হাহাকার ধবনিত হয়ে উঠেছে। পত্নী বিয়ােগের পরবর্তীকালেও এই মানুষটি অন্তরের স্বাভাবিক প্রেরণায় যেসব প্রিয়জনকে বুক ভরা স্নেহ ভালােবাসা দিয়ে আঁকড়ে ধরেছিলেন, তারা সবাই একে একে তাকে ফাকি দিয়ে কোন নিরুদ্দেশের পথে পাড়ি দিয়েছে। সবচেয়ে মর্মন্তুদ ব্যাপার হলাে এই যে, ছােটো বড় হিসেব করে সেইসব প্রিয়জনের সকলের কাফন ও কবরের ব্যবস্থা তাকেই নিজ হাতে করতে হয়েছে। সেই দুঃখময় অভিজ্ঞতার স্মৃতি তিনি আজো ভুলতে পারেননি। এইরূপে দেখা যায় যে, ‘কবর’ কবিতার বিষয়বস্তু কোনাে না কোনাে প্রিয়জনের কবরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে এবং পাঠক মনে সাড়া জাগিয়েছে। সুতরাং বিষয়বস্তুর সঙ্গে সংগতিসূত্রে কবিতাটির ‘কবর’ নামকরণ সম্পূর্ণ সার্থক।

(গ) বালিকাবধূর রূপ লাবণ্যে বিমােহিত বৃদ্ধ দাদু তার স্ত্রীর রূপের যে বর্ণনা দিয়েছেন, সে বিষয়ে আলােকপাত করাে।

উত্তরঃ যৌবনের সূচনাকালে সােনার প্রতিমার মতাে ছােট্ট মেয়েটিকে বিয়ে করে তিনি ঘরে এনেছিলেন। সেই স্বর্ণকান্তি ছােট্ট মেয়েটি যখন বাড়ির ভিতর এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াত, মনে হত, কারা যেন বাড়িময় রাশি রাশি সােনা ছড়িয়ে দিয়েছে। সেই অপরূপ দৃশ্য দেখে বিস্ময়ে তিনি মুগ্ধ হয়ে যেতেন। ভােরবেলার সােনালি আলােয় নতুন বউয়ের সুন্দর মুখখানি যখন আরাে সুন্দর, আরাে উজ্জ্বল হয়ে উঠত। তখন সেই সুন্দর মুখের ছবি দুই চোখে ভরে নিয়ে, লাঙল কাধে করে, গ্রামের পথ ধরে তিনি চাষের খেতের দিকে এগিয়ে যেতেন। কিন্তু চলার পথে অতৃপ্ত বাসনায় তিনি সেই সুন্দরী বধূর লাবণ্যময় মুখখানি। বারবার ফিরে চেয়ে দেখতেন। তার ভাবি-সাব তাকে এ করলেও তিনি তাতে কিছু মনে করতেন না। এইভাবে প্রতিদিনের ক্ষুদ্র সুখ-দুঃখের। মধ্য দিয়ে দুটি জীবনের ধারা কখন মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে, তার হিসাব। রাখা সম্ভব নয়।

(ঘ) কবর’ কবিতা অবলম্বনে বৃদ্ধ দাদুর গভীর দাম্পত্য প্রেমের সৌন্দর্য যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় লেখাে।

উত্তরঃ এক বৃদ্ধের স্ত্রী’র কবর যা তিনি তার নাতিকে দেখিয়েছে। বিগত তিরিশ বছরের অশ্রুজলে সিক্ত এই কবর। এই সূত্রে বৃদ্ধের মনে পড়েছে সেই বিগতদিনের স্মৃতিকথা যখন সেই বালিকা তার পুতুলের সংসার ভেঙে দিয়ে চলে আসে স্বামীর সংসার করবে বলে। তার উপস্থিতিতে স্বামীর সংসার স্বর্ণময় হত যা ধরা পড়েছে কবিতার পংক্তিতে-

‘এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,

সারা বাড়ি ভরি সােনার মাের ছড়াইয়া গেল কারা।

পূর্বদিগন্তে সূর্যোদয়ের পূর্বে উষাকালে ওই বালিকা’র ‘সােনামুখ’ অবলােকন করতেন নয়ন ভরে। তার সমস্ত কাজের প্রেরণাদাত্রীরূপে ওই বালিকার অস্তিত্ব ছিল। লাঙল নিয়ে তিনি যখন মাঠে যেতেন তখন বারবার ফিরে ফিরে তাকাতেন কারণ তাকে দেখে দেখে আঁখি না ফিরে। এই নিয়ে তার বৌদি প্রভৃতি বাড়িব আত্মীয় স্বজনেরা ঠাট্টা তামাশা করতেন। যা তার জীবনকে আনন্দে দিশেহারা করে দিত- ‘এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে, ছােটো খাটো তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে’।

ওই বালিকাটির দিদা যখন পিতৃগৃহে যেত তখন বারবার স্মরণ করিয়ে দিত“আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু, উজান-তলীর গাঁ।” এবং তার দাদুও পুঁতির একছড়া মালা নিয়ে, দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন গাঁটে করে শ্বশুর বাড়ির পথে সন্ধ্যাকালে উপস্থিত হত। এই সামান্য উপহারে তার ‘দাদি’ কত না আনন্দ পেত। 

সঙ্গে সঙ্গে অভিমান করে অভিযােগও জানাত-এতদিন পরে এলে, পথ পানে চেয়ে আমি যে হেথায় কেঁদে মরি আঁখি জলে।

এত যাদের ভালােবাসা, দাম্পত্যের অঙ্গাঙ্গি বন্ধন কিন্তু জীবনের নিষ্ঠুর নিয়তি মৃত্যু এসে তাদের সুখের সংসার ভেঙ্গে দিল। তাইতাে বৃদ্ধের প্রশ্ন- আমারে ছাড়িয়া এত ব্যথা যার কেমন করিয়া যায়, কবর দেশেতে ঘুমায়ে রয়েছে নিঝঝুম নিরালায়।

আর নাতিকে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে বলেছেন যেন তার জন্য স্বর্গের দ্বার উন্মুক্ত হয়ে যায়।

৬। সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করাে।

(ক) এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,

সারা বাড়ি ভরি এত সােনা মাের ছড়াইয়া দিল কারা।

উত্তরঃ আলােচ্য অংশটি কবি জসীম উদ্দীনের লেখা ‘কবর’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধৃত পঙক্তিটিতে কবি কল্পিত বৃদ্ধের স্মৃতিচারণায় তার বালিকা বধূর অপরিমিত সৌন্দর্য বর্ণনা প্রসঙ্গে সােনা ছড়ানাের তুলনা করা হয়েছে। উপমাটির অত্যাশ্চর্য প্রয়ােগ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ। দাদির মুখখানা সােনার মতাে—তিনি বালিকাসুলভ চাপল্যের কারণে সারা বাড়িময় ছােটাছুটি করলে সােনার আভায চারিদিক যেন আলােকিত হয়ে উঠত। প্রভাতের স্বর্ণবর্ণের সূর্যের রঙের সঙ্গে বক্তার স্ত্রীর গায়ের রং যেন মিলেমিশে প্রভাতের ঔজ্বল্যকে আরও বাড়িয়ে দিত।

(খ) এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে।

ছােট-খাট তার হাসিব্যথা মাকে হারা হয়ে গেনু দিশে।

উত্তরঃ আলােচ্য অংশটি কবি জসীম উদ্দীনের লেখা কবর কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধৃতাংশে দাদুর বিবাহের প্রসঙ্গে উপরের পঙক্তি দুটির। অবতারণা করা হয়েছে। বিবাহের পর দাদু ও দাদির জীবন চলার পথমিলেমিশে। একাকার হয়ে গিয়েছিল। একস্রোতে প্রবাহিত হয়েছিল। প্রবল সহানুভূতির এবং ভালােবাসার অমােঘ প্রভাবে বধূর ক্ষুদ্র সুখ, ক্ষুদ্র দুঃখ, হাসিকান্না, আনন্দ-বেদনাকে নিজের বলে মেনে নিয়ে তারই মাঝে তিনি; আত্মহারা হয়ে গেছেন। নিজের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব ভুলে গেছেন।

(গ) দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,

সন্ধ্যাবেলায় ছটে যাইতাম শ্বশুর বাড়ির বাটে।

উত্তরঃ আলােচ্য অংশটি কবি জসীম উদ্দীনের লেখা ‘কবর’ কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আলােচ্য কবিতায় কল্পিত বৃদ্ধ পিতামহ, একদিন তিনিই ছিলেন প্রেমময় স্বামী। আর তখন তার বয়সও তেমন বেশি ছিল না। সেজন্য ক্ষুদ্র আশা আকাঙক্ষায় ঘেরা জীবনের শরিক বা অংশীদার তরুণী পত্নীর নিতান্ত সামান্য শখ আহলাদ তিনি আগ্রহের সঙ্গে হাসিমুখে পরিপূর্ণ করতে এগিয়ে আসতেন। এ ব্যাপারে তার কোনাে ত্রুটি বা গাফিলতি ছিল না। সেজন্য বাপের বাড়িতে স্বামীর পথ চেয়ে বসে থাকা তরুণী পত্নীর সাধের তামাক-মাজন হাট থেকে কিনে নিয়ে হাট থেকে ফেরার সময় কৃষক স্বামী শ্বশুরবাড়ির পথ ধরে দ্রুত পায়ে এসে সেখানে হাজির হতেন।

৬। ভাষা-ব্যাকরণ-

(ক) প্রত্যয় নির্ণয় করাে। 

সােনালি,  হাসি, উজান, মাজন ।

উত্তরঃ সােনালি – সােনা + আলি। 

হাসি-  হাস্ + ই। 

উজান- উদ্ + যান।

মাজন- মাজ + অন। 

হাসিয়া- হাস্ + ইয়া।

(খ) কবর’ কবিতা থেকে পাঁচটি অসমাপিকা ক্রিয়াপদের উল্লেখ করাে।

উত্তরঃ নীচে ‘কবর’ কবিতা থেকে পাঁচটি অসমাপিকা ক্রিয়াপদের উল্লেখ করা হচ্ছে— ভিজায়ে, ঘুরিয়া, লইয়া, হাসিয়া, জড়ায়ে।

(গ) বাক্য রচনা করাে-

কবর,  নয়ন, পুতুল, তামাশা,  গাঁটে।

উত্তরঃ কবর :-  মুসলমানরা মারা গেলে মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়।

নয়ন :- নয়ন ভরা জল গাে তােমার, আঁচল ভরা ফুল।

পুতুল :- ছােট মেয়েরা পুতুল নিয়ে খেলতে ভালােবাসে।

তামাশা :- গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলাকালীন তামাশা চলে না।

গাঁটে :- গাঁটে যথেষ্ট টাকাকড়ি নিয়ে বাজারে যেতে হয়।

৬। ভাষা-ব্যাকরণ।

(ক) সন্ধি বিচ্ছেদ করাে।

সম্মান- সম্ + মান।

মাণিক্য- মান + ইক্য।

বাঞ্ছিত- বাঞ + ছিত।

সত্যানুরাগ- সত্য + অনুসন্ধান।

ইষ্ট- ইষ + ট।

সংগ্রাম- সম্ + গ্রাম।

(খ) প্রত্যয় নির্ণয় করাে।

সাধনীয়- সাধ + তানীয়।

কর্তব্য- কৃ + তব্য।

সাধক- সাধ + আস + ক।

কম্পমান- কম্প + শান।

তেজস্বী- তেজস + ঈ।

বিভিন্নপদের বিশিষ্ট প্রয়ােগ ও বাগধারা বাগভঙ্গি বা বাগবিধি (Idioms)-  প্রত্যেক ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে। বিভিন্ন পদকে অন্যপদের সংযােগে নানাপ্রকার অর্থে ব্যবহার করাই এর বৈশিষ্ট্য। মনে রাখতে হবে বাগভঙ্গি বা বাগবিধি বা বাগধারা ও প্রবাদ প্রবচন এক নয়।

যে পদ বা বাক্যাংশের দ্বারা একটি বিশিষ্ট অর্থে প্রকাশ পায় তাকেই বিশিষ্ট্যর্থ ব্যাকারণ বলা হয়।

১। বিশেষ্য পদের বিশিষ্ট প্রয়ােগ-

কান :- 

কান পাতা (মনসংযােগ করা) :- কান পেতে শােনাে, একজন কেউ ডাকছে।

কান কাটা (নির্লজ্জ) :- লােকটির দু কান কাটা, গালাগাল গায়ে মাখে না।

কান ভাঙনি (বিরুদ্ধ ভাবাপন্ন করা) :- আর কত কান ভাঙানি দেবেশ্বশুরের?

বুক :-

বুক ফাটা (অত্যন্ত করুণ) :- একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে বিধবা মায়ের বুকফাটা হাহাকার সত্যিই বেদনাদায়ক।

বুক উঁচু (গর্বিত হওয়া) :- দরিদ্র পিতা কৃতী সন্তানের সাফল্যের সংবাদ বুক উঁচু করে সকলকে বলে বেড়াচ্ছেন।

বুক ভরা (পরম তৃপ্তি) :- সন্তানের সাফল্যে বাবা মায়ের বুক ভরে উঠে।

চোখ :-

চোখ ওঠা (চোখের অসুখ) :- চোখ উঠলে বাইরে রােদে বেড়ানাে যায় না।

চোখ বােজা (মৃত্যু হওয়া) :- লােকটির চোখ চিরকালের জন্য বােঝা হয়ে গেল।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top