Class 12 Advance Bengali Chapter 2 বিপ্রবেশে অর্জুন

Class 12 Advance Bengali Chapter 2 বিপ্রবেশে অর্জুন Question Answer | AHSEC Class 12 Advanced Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Assam Board Class 12 Advance Bengali Chapter 2 বিপ্রবেশে অর্জুন Notes and select needs one.

Class 12 Advance Bengali Chapter 2 বিপ্রবেশে অর্জুন

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 12 Advance Bengali Chapter 2 বিপ্রবেশে অর্জুন Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 12 Advance Bengali Chapter 2 বিপ্রবেশে অর্জুন Solutions for All Subjects, You can practice these here.

বিপ্রবেশে অর্জুন

Chapter: 2

ADVANCE BENGALI

পদ্যাংশ

অতি সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটির কবি কে?

উত্তরঃ কবি কাশীরাম দাস।

প্রশ্ন ২। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কাব্যাংশটি কোন গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত?

উত্তরঃ মহাভারতের আদিপর্ব-এর অন্তর্ভুক্ত।

প্রশ্ন ৩। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটিতে কার কথা বর্ণিত হয়েছে?

উত্তরঃ তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনের কথা বর্ণিত হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। ‘বাতুল হইল কিবা’ – ‘বাতুল’ শব্দটির অর্থ কী?

উত্তরঃ বাতুল শব্দের অর্থ হল উন্মত্ত বা পাগল।

প্রশ্ন ৫। “দেখ দ্বিজ মনসিজ জিনিয়া মূরতি।

পদ্মপত্র যুগ্মনেত্র পরশয়ে শ্রুতি৷”

– ‘মনসিজ’ শব্দের অর্থ লেখো।

উত্তরঃ ‘মনসিজ’ শব্দের অর্থ হল কামদেব বা কন্দর্প।

প্রশ্ন ৬। “কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান” – এই দ্বিজ কে?

উত্তরঃ এই দ্বিজ ছিলেন অর্জুন।

প্রশ্ন ৭। “কেউ বলে ব্রাহ্মণেরে না বল এমন।

সামান্য মনুষ্য বুঝি না হবে এজন৷”

– ‘সামান্য মনুষ্য’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘সামান্য মনুষ্য’ বলতে অর্জুনের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ৮। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’- কবিতায় অর্জুনের মূর্তিটি কেমন?

উত্তরঃ অর্জুনের মূর্তিটি হল কামদেব বিজয়ীর মূর্তি।

প্রশ্ন ৯। ‘‘সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধর রাতুল।

______ পায় লাজ নাসিকা অতুল॥” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)

উত্তরঃ খগরাজ।

প্রশ্ন ১০। “দেখ দ্বিজ ______ জিনিয়া মুরতি।

পদ্মপত্র যুগ্মনেত্র পরশয়ে শ্রুতি৷” (শূন্যস্থান পূর্ণ করো।)

উত্তরঃ মনসিজ।

প্রশ্ন ১১। জলদ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ মেঘ।

প্রশ্ন ১২। ‘হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস

অসম্ভব কার্যে দেখি দ্বিজের প্রয়াস।

– এখানে ‘দ্বিজ’ শব্দে কাকে নির্দেশ করা হয়েছে?

উত্তরঃ এখানে ‘দ্বিজ’ শব্দে ব্রাহ্মণের বেশে অর্জুনকে নির্দেশ করা হয়েছে।

প্রশ্ন ১৩। “নির্লজ্জ ব্রাহ্মণে মোরা অল্পে না ছাড়িব।”

– নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ কাকে বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ব্রাহ্মণবেশী অর্জুনকে।

প্রশ্ন ১৪। “কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান।” – এখানে কন্যা কে?

উত্তরঃ এখানে কন্যা হল দ্রুপদরাজের কন্যা দ্রৌপদী।

প্রশ্ন ১৫। “হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস।” – ক্ষত্রিয় উপহাস করে কেন?

উত্তরঃ বিপ্রবেশী অর্জুনকে দেখে।

প্রশ্ন ১৬। ‘‘হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস।

অসম্ভব কার্যে দেখি দ্বিজের প্রয়াস॥”

– এখানে কোন্ কার্যকে অসম্ভব বলা হয়েছে?

উত্তরঃ দ্রৌপদীর স্বয়ম্বরসভায় ঘূর্ণায়মান মাছের চোখে তীর নিক্ষেপ করা, জলে প্রতিবিম্ব দেখে। এই কাজকে অসম্ভব কার্য বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ১৭। “কাশী ভনে হেন জনে কি কৰ্ম অশক্য।”

– ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ অসাধ্য।

প্রশ্ন ১৮। “অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা।”

– অনুপম শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘অনুপম’ শব্দের অর্থ অতুলনীয় বা অপরূপ সুন্দর।

প্রশ্ন ১৯। ‘পাংশুজ্বালে আচ্ছাদিত’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ পাংশুজ্বালে আচ্ছাদিত কথাটির অর্থ হল ছাই জলে ঢাকা।

প্রশ্ন ২০। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটিতে কোন রাজসভার কথা উল্লেখিত হয়েছে?

উত্তরঃ পাঞ্চাল রাজসভার কথা উল্লেখিত হয়েছে।

প্রশ্ন ২১। কাশীরাম দাসের মতে কার অসাধ্য কোনো কর্ম নেই?

উত্তরঃ অর্জুনের।

প্রশ্ন ২২। কবি কাশীরাম দাস কী জন্য বিখ্যাত?

উত্তরঃ মহাভারতের অনুবাদক হিসেবে।

প্রশ্ন ২৩। কি সানন্দ গতি মন্দ মত্ত _______। (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তরঃ করিবর।

প্রশ্ন ২৪। খগরাজ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে?

অথবা, 

‘খগরাজ পায়লাজ নাসিকা অতুল’ – এখানে ‘খগরাজ’ শব্দে কাকে নির্দেশ করা হয়েছে?

উত্তরঃ গরুড় পাখিকে।

প্রশ্ন ২৫। “কাশী ভনে হেন জনে কি কর্ম অশক্য।” – ‘কাশী’ কে?

উত্তরঃ ‘কাশী’ হলেন কাশীরাম দাস।

প্রশ্ন ২৬। “কি সানন্দ গতি মন্দ মত্ত করিবর।”

– অংশটি কোন কবিতার অংশ?

উত্তরঃ “বিপ্রবেশে অর্জুন” কবিতার অংশ।

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। “কাশী ভনে হেন জনে কি কৰ্ম অশক্য৷৷”

‘কাশী’ কে ? ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ ‘কাশী’ হলেন কাশীরাম দাস। ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ অসাধ্য।

প্রশ্ন ২। “সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধর রাতুল।

খগরাজ পায় লাজ নাসিকা অতুল॥”

– এখানে কার কথা বলা হয়েছে ? ‘রাতুল’ শব্দের অর্থ কী?

উত্তরঃ এখানে অর্জুনের কথা বলা হয়েছে। ‘রাতুল’ শব্দের অর্থ রাঙা।

প্রশ্ন ৩। “অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা।

মুখরুচি কত শুচি করিয়াছে শোভা ৷৷”

– কোন কবিতা থেকে উদ্ধৃতিটি গ্রহণ করা হয়েছে? ‘অনুপম’ শব্দের অর্থ কী? কার সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ নামক কবিতা থেকে উদ্ধৃতিটি গ্রহণ করা হয়েছে।

‘অনুপম’ শব্দের অর্থ তুলনাহীন, নিরুপম।

অর্জুনের সম্পর্কে একথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ৪। ‘হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস।

অসম্ভব কার্যে দেখি দ্বিজের প্রয়াস ৷৷’

– ‘দ্বিজ’ শব্দের অর্থ লেখো। দ্বিজ বলতে এখানে কার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ দ্বিজ শব্দের অর্থ ব্রাহ্মণ। দ্বিজ বলতে এখানে অর্জুনের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ৫। “নির্লজ্জ ব্রাহ্মণে মোরা অল্পে না ছাড়িব”। – “নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ’ বলতে কার কথা বলা হয়েছে? তাকে কারা সহজে ছাড়বেন না বলেছেন?

উত্তরঃ ‘নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ’ বলতে অর্জুনের কথা বলা হয়েছে। দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভায় আসা ক্ষত্রিয়রা একথা বলেছিলেন।

প্রশ্ন ৬। “তাহে লক্ষ্য বিন্ধিবারে চলিল ভিক্ষুক৷”- কে, কোন্ লক্ষ্য ভেদের উদ্দেশ্যে সেখানে উপস্থিত হয়েছিল?

উত্তরঃ দ্রৌপদীকে পত্নীরূপে পাওয়ার উদ্দেশ্যে ব্রাহ্মণবেশে অর্জুন সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন।

প্রশ্ন ৭। “কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান।”- এখানে কন্যা কে? দ্বিজ আসলে কে ছিলেন?

উত্তরঃ এখানে কন্যা হলেন পাঞ্চালরাজ কন্যা দ্রৌপদী। দ্বিজ আসলে, ছিলেন তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন।

প্রশ্ন ৮। “সুরাসুর জয়ী সেই বিপুল ধনুক।

তাহে লক্ষ্য বিন্ধিবারে চলিল ভিক্ষুক ৷”

– কোন্ কবিতার অংশ? এখানে ভিক্ষুক কে?

উত্তরঃ উক্তিটি ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতার অংশ। এখানে ভিক্ষুক হলেন বিপ্রবেশে অর্জুন।

প্রশ্ন ৯। “অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা।”

– ‘অনুপম’ ও ‘নীলোৎপল আভা’ শব্দ দুটির অর্থ লেখো।

উত্তরঃ অনুপম শব্দের অর্থ হল অতুলনীয়, অপরূপ সুন্দর এবং নীলোৎপল আভা শব্দের অর্থ হল নীল পদ্মের আলোকছটা।

প্রশ্ন ১০। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের ঘাড় এবং হাতকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের ঘাড়কে সিংহের ঘাড়ের সঙ্গে এবং হাতকে সাপের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।

প্রশ্ন ১১। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের নাকের কীরকম বর্ণনা দেওয়া হয়েছে?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জন’ কবিতায় বর্ণিত হয়েছে অর্জুনের নাক অতুলনীয়, পাখি শ্রেষ্ঠ গরুড়ও সেই নাক দেখে লজ্জা পায়।

প্রশ্ন ১২। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের মহাবীর্য সম্পর্কে কী বলা হয়েছে?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় অর্জুনের মহাবীর্য সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, তাঁর মহাবীর্য মেঘে ঢাকা সূর্যের মতো আচ্ছাদিত আছে।

প্রশ্ন ১৩। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় কবি কাশীরাম দাস অর্জুন সম্পর্কে কী সিদ্ধান্ত পেশ করেছেন?

উত্তরঃ ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতায় কবি কাশীরাম দাস অর্জুন সম্পর্কে সিদ্ধান্ত পেশ করেছেন যে, অর্জুনের কাছে অসম্ভব বা অসাধ্য বলে কিছু নেই।

প্রশ্ন ১৪। দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত অর্জুনের সৌন্দর্য বর্ণনা করো।

উত্তরঃ অর্জুনের চোখ দুটি কর্ণ পর্যন্ত প্রসারিত, তাঁর দুটি ভুরু ললাট প্রসারিত, অনুপম তনু নীলোৎপল আভার সমান। তাঁর ওষ্ঠের সৌন্দর্য বাঁধুনি ফুলের মতো রাঙা।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। “হাসিয়া ক্ষত্রিয় যত করে উপহাস,

অসম্ভব কার্যে দেখি দ্বিজের প্রয়াস।”

ক্ষত্রিয়েরা কাকে উপহাস করছিলেন? অসম্ভব কার্যের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত ক্ষত্রিয়েরা বিপ্রবেশে অর্জুনকে দেখে উপহাস করেছিল।

অসম্ভব কার্যটি হলো – পাঞ্চালরাজ দ্রুপদ কন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভার শর্ত – সুরাসুর জয়ী ধনুর দ্বারা উপরে টাঙানো ঘূর্ণায়মান মাছের চোখ বিদ্ধ করতে হবে, নিচে পাত্রে রাখা জলের মধ্যে তার ছায়া দেখে। যে ক্ষত্রিয় রাজকুমার এ কার্যে সফল হবেন অর্থাৎ লক্ষ্যভেদ করতে পারবেন তিনিই পরমা সুন্দরী দ্রৌপদীর পাণি গ্রহণ করবেন।

প্রশ্ন ২। “কন্যা দেখি দ্বিজ কিবা হইল অজ্ঞান।

বাতুল হইল কিবা করি অনুমান৷”

কোন্ কবিতা থেকে উদ্ধৃতিটি গ্রহণ করা হয়েছে? ‘বাতুল’ কাকে বলা হয়েছে, সপ্রসঙ্গ আলোচনা করো।

উত্তরঃ উদ্ধৃতিটি কাশীরাম দাস লিখিত ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতা থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনকে ‘বাতুল’ বলা হয়েছে।

পাঞ্চাল রাজকন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় প্রতিশ্রুত লক্ষ্যবিদ্ধ করার ব্যাপারটি ছিল অসম্ভব। বিভিন্ন রাজ্যের রাজকুমারগণ এই কার্যে ব্যর্থ হন। ব্রাহ্মণবেশী অর্জুন ছদ্মবেশে লক্ষ্যবিদ্ধ করবার জন্য এসে উপস্থিত হলে তাঁর এরকম চেষ্টা দেখে উপস্থিত রাজকুমারগণ এরূপ মন্তব্য করেছেন। যেখানে অস্ত্র বিশারদ ক্ষত্রিয় রাজকুমারগণ ব্যর্থ হয়েছেন সেখানে একজন ব্রাহ্মণ কি করে লক্ষ্যবিদ্ধ করতে পারবেন। নিশ্চয় এই ব্রাহ্মণ রাজকন্যার রূপে পাগল হয়েছেন বলে তাদের অনুমান।

প্রশ্ন ৩। “অনুপম তনু শ্যাম নীলোৎপল আভা।

মুখরুচি কত শুচি করেছে শোভা৷”

– সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ আলোচ্য কবিতাংশটি মধ্যযুগের বিশিষ্ট কবি কাশীরাম দাস রচিত ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ নামক কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে অর্জুনের সৌন্দর্য্যের বর্ণনা করা হয়েছে।

এখানে অর্জুনের সৌন্দর্যের বর্ণনা করা হয়েছে। পাঞ্চাল রাজকন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ম্বর সভায় অর্জুন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে উপস্থিত হলে ক্ষত্রিয় রাজকুমারগণ তাকে একজন সাধারণ ব্রাহ্মণ ভেবে উপহাস করতে থাকেন। অর্জুন সেই উপহাসকে পাত্তা না দিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে অগ্রসর হলে উপস্থিত রাজপুত্রদের মধ্যে কেউ কেউ বিবেচনা করেন এই ব্রাহ্মণ সাধারণ মানুষ নন। তারা অর্জুনের চেহারায় কামদেব বিজয়ী মূর্তি লক্ষ্য করেন। তাঁর শ্যাম তনুতে নীল পদ্মের আলোক ছটা। তাঁর মুখের রূপ অতুলনীয় সৌন্দর্য শোভা বিস্তার করছে।

প্রশ্ন ৪। “দেখ দ্বিজ মনসিজ জিনিয়া মূরতি।

পদ্মপত্র যুগ্মনেত্র পরশয়ে শ্রুতি৷”

– অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ পাঞ্চাল রাজকন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় পাণ্ডবপুত্র অর্জুন বিপ্রবেশে উপস্থিত হন। সভায় উপস্থিত কিছু রাজপুত্র অর্জুনকে এক সাধারণ ব্রাহ্মণ মনে করে বিদ্রূপ করতে থাকেন। অর্জুন সেই বিদ্রূপকে পাত্তা না দিয়ে ঘোষিত লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যান। অর্জুন মূলত ধনুর্বিদ্যায় শ্রেষ্ঠ বীর। তাই এমন কঠিন কাজে তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত হননি। তাঁর দৃঢ়তা দেখে উপস্থিত রাজপুত্রদের মধ্যে কেউ কেউ বললেন এই ব্রাহ্মণ সাধারণ ব্রাহ্মণ নন। তারা অর্জুনের চেহারায় কামদেব বিজয়ী মূর্তি লক্ষ্য করেন। সেই সঙ্গে তারা এও লক্ষ্য করেন যে অর্জুনের চোখ দুটি পদ্মপাতার ন্যায় প্রস্ফুটিত যা কান পর্যন্ত স্পর্শ করে আছে।

প্রশ্ন ৫। ‘‘সিংহগ্রীব বন্ধুজীব অধর রাতুল।

খগরাজ পায় লাজ নাসিকা অতুল॥”

– উদ্ধৃতাংশ তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ পাঞ্চালরাজার কন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় পাণ্ডব রাজপুত্র অর্জুন ছদ্মবেশে উপস্থিত হন। তাকে দেখে সাধারণ এক ব্রাহ্মণ মনে করে সভায় উপস্থিত ক্ষত্রিয় রাজপুত্রগণ উপহাস করতে থাকেন। অর্জুন তাদের উপহাসকে মোটেই পাত্তা না দিয়ে দৃঢ়তার সঙ্গে উপস্থিত হলে রাজপুত্রদের মধ্যে কেউ কেউ বললেন এই ব্রাহ্মণ সাধারণ লোক নন। তারা অর্জুনের চেহারায় কামদেব বিজয়ী বীর পুরুষের মুর্তি লক্ষ্য করেন। সেই সঙ্গে তারা আরও লক্ষ্য করেন তার ঘাড় সিংহের ঘাড়ের মতো উন্নত। তাঁর ঠোঁট দুটি বাঁধূলি ফুলের মতো রাঙা। তাঁর নাক এমনই উঁচু যে পাখিশ্রেষ্ঠ গরুড়ের চেয়েও উঁচু। সেই নাক গরুড় পাখির নাককেও হার মানায়।

প্রশ্ন ৬। “দেখ চারু যুগ্ম ভুরু ললাট প্রসার।

কি সানন্দ গতি মন্দি মত্ত করিবর৷”

– পংক্তি দ্বয় কোন কবিতার অংশ। পংক্তি দুটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ পংক্তিদ্বয় ‘বিপ্রবেশে অৰ্জুন’ নামক কবিতার অংশ।

পাঞ্চাল রাজকন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় বিভিন্ন ক্ষত্রিয় রাজকুমারদের পাশাপাশি ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে অর্জুনও সেখানে উপস্থিত হন। তাঁকে দেখে উপস্থিত রাজকুমাররা উপহাস করেন। আবার তাদের মধ্যে একদল রাজকুমার অর্জুনের চেহারা দেখে ভাবেন যে ইনি কোন সাধারণ মানুষ নন। তাঁরা অর্জুনের চেহারার মধ্যে দেখতে পান কামদেব জয়ী মূর্তি। তাঁর দেহবর্ণ, চোখ, নাক, মুখভঙ্গি সবই অপরূপ শোভা বর্ধন করছে। তার সঙ্গে অর্জুনের দুটি ভুরু কপাল পর্যন্ত প্রসারিত। সেই সঙ্গে তার চলার গতি ছিল মদমত্ত হাতির মতো। হাতি যেমন ধীর পদক্ষেপে গর্ব ভরে হাঁটে অর্জুনও ঠিক সেভাবে সানন্দ গতিতে হাঁটছেন।

প্রশ্ন ৭। ‘‘ভূজযুগ নিন্দে নাগে আজানুলম্বিত।

করিকর যুগ্মবর জানু সুবলিত৷”

– তাৎপর্য নির্ণয় করো।

উত্তরঃ পাঞ্চাল রাজকন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় ব্রাহ্মণের বেশে অর্জুন উপস্থিত হলে তার ব্রাহ্মণের পোশাক-আশাক দেখে কিছু উপস্থিত রাজকুমার উপহাস করতে থাকেন, আবার রাজপুত্রগণের মধ্যে কেউ কেউ অর্জুনের আসল স্বরূপ বুঝতে পারেন। অর্জুন যে কামদেব জয়ী বীর তা তারা বুঝতে পারেন। শক্তিমত্তায় অর্জুন হাতির মতোই ধীরগতি সম্পন্ন। তাঁর বাহু দুটি জানু পর্যন্ত লম্বা। সেই বাহু নাগ অর্থাৎ সাপকেও হার মানায়। তাঁর জানু শক্তিমান এবং সুগঠিত, ঠিক যেন হাতির শুঁড়ের মতো শক্তিশালী। অর্জুনের বাহু এবং জানুর শক্তির পরিমাপ দিতে কবি এই দুটি প্রাণীর উদাহরণ দিয়েছেন।

প্রশ্ন ৮। ‘‘মহাবীর্য যেন সূর্য জলদে আবৃত।

অগ্নি-অংশু যেন পাংশু জালে আচ্ছাদিত।”

– পংক্তিদ্বয় কোন কবিতার অংশ? প্রসঙ্গটি বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ পংক্তিদ্বয় ‘বিপ্রবেশে অৰ্জুন’ নামক কবিতার অংশ।

তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুনের বীরত্ব ও শক্তিমত্তার পরিমাপ বোঝাতে কবি আলোচ্য দুটি উপমা ব্যবহার করেছেন। পাঞ্চাল রাজ্যে অজ্ঞাতবাসকালে অর্জুন ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে পাঞ্চাল রাজকন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় লক্ষ্যভেদ করতে উপস্থিত হয়েছেন। এতে উপস্থিত ক্ষত্রিয় রাজকুমাররা তাকে উপহাস করতে থাকেন। তাদের মধ্যে কোন কোন রাজকুমারের আবার অর্জুনের প্রকৃত স্বরূপ বুঝতে অসুবিধে হয়নি। তাঁর মধ্যে সে অসীম তেজ লুকিয়ে আছে তা তারা উপলব্ধি করতে পারেন। মেঘে ঢাকা সূর্য যেমন তার আসল তাপ এবং আলো নিয়ে বিদ্যমান থাকে ঠিক তেমনি অর্জুনও ব্রাহ্মণবেশে অসীম বীরত্বকে আড়াল করে রেখেছেন। ছাই জালে যেমন আগুনের কিরণ লুকিয়ে থাকে ঠিক তেমনিই অর্জুনের বর্তমান বেশ ব্রাহ্মণত্বের মধ্যে অসীম তেজ লুকিয়ে আছে।

প্রশ্ন ৯। ‘‘কাশী ভনে হেন জনে কি কর্ম অশক্য।”

– কাশী কে ? অশক্য শব্দের অর্থ কী? হেন জনে কে? এবং তার লক্ষ্য কী?

উত্তরঃ ‘কাশী’ হলেন বাংলা ভাষায় রচিত মহাভারতের অনুবাদক কবি কাশীরাম দাস। ‘অশক্য’ শব্দের অর্থ হল ব্রাহ্মণের অসাধ্য। হেন জনে হলেন তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন। তাঁর লক্ষ্য হল ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে লক্ষে তীর বিদ্ধ করে দ্রুপদ রাজকন্যা দ্রৌপদীর পাণি গ্রহণ করা।

প্রশ্ন ১০। “সুরাসুর জয়ী সেই বিপুল ধনুক।”

– পংক্তিটি কোন কবিতার ? বিপুল ধনুকটির পরিচয় দাও।

উত্তরঃ পংক্তিটি ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ নামক কবিতার।

দ্রোণাচার্য এবং কৃপাচার্যের শ্রেষ্ঠ শিষ্য হিসেবে তৃতীয় পাণ্ডব অর্জুন খ্যাতি লাভ করেছিলেন। সেই অর্জুন বরুণ নামক দেবতার নিকট থেকে গাণ্ডীব নামক দেবাস্ত্র স্বরূপ ধনুক উপহার পেয়েছিলেন। এই ধনুকে শর সংযোগ করে তিনি খাণ্ডব বন রক্ষক দেবতাদের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হয়েছিলেন। এরপর নিবাত কবচ ও হিরণ্যপুরবাসী দৈত্যদেরকেও তিনি যুদ্ধে পরাস্ত করেছিলেন। সেই গাণ্ডীব নামক বিশাল সুরাসুর জয়ী ধনুকটি নিয়েই পাঞ্চাল রাজকন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় অতি কঠিন লক্ষ্যবিদ্ধ করেছিলেন।

প্রশ্ন ১১। দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত অর্জুনের সৌন্দর্য বর্ণনা করো।

উত্তরঃ অর্জুনের মূর্তি কামদেবজয়ী, চোখের বর্ণনায় বলা যায় তাঁর চোখ পদ্মপাতার ন্যায় প্রস্ফুটিত হয়ে কর্ণ পর্যন্ত প্রসারিত। তাঁর অতুলনীয় শরীর শ্যামল ঠিক যেন নীল শোভা বিকিরণ করছে। তাঁর ঘাড় সিংহের ঘাড়ের মতো শক্তিশালী। তাঁর ঠোঁট দুটি বাঁধুলি ফুলের মতো রাঙা। তাঁর নাক এমনই উচু যে পাখি শ্রেষ্ঠ গরুড় তা দেখে লজ্জা পাবে। মনোরম ভুরু কপাল জুড়ে বিস্তৃত। তাঁর স্বাচ্ছন্দ্য হাঁটা-চলা যেন মদ মত্ত হাতির হাঁটা-চলার মতো। তাঁর বাহু দুটি জানু পর্যন্ত লম্বা। তার জানু দুটিকে তুলনা করা হয়েছে হাতির শুঁড়ের সঙ্গে। ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে অর্জুন হলেন শ্রেষ্ঠ বীর তথা ক্ষত্রিয় রাজকুমার।

দীর্ঘ উত্তরধর্মী প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটির নামকরণের সার্থকতা বিচার করো।

উত্তরঃ নামকরণ সাহিত্যে একটি উল্লেখযোগ্য প্রসঙ্গ। আলোচ্য কবিতাটি কাশীরাম দাস অনূদিত ‘মহাভারত’ কাব্য থেকে সংকলিত হয়েছে। কবি রচিত কাব্যে এরূপ নামকরণ নেই। ‘বিপ্রবেশে’ কথাটির অর্থ ব্রাহ্মণের বেশে। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটির শিরোনাম, এটি কবিতার বিষয়বস্তুর সঙ্গে যতটুকু সংগতি সম্পন্ন তাই-ই বিচার্য বিষয়।

কবিতাটিতে দেখা যায় ব্রাহ্মণের বেশে অর্জুন দ্রুপদরাজের কন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ংবর সভায় উপস্থিত হলে তাকে দেখে সমবেত ক্ষত্রিয়রা উপহাস ও বিদ্রূপ করছেন। কারণ ঘূর্ণায়মান মাছের চোখে জলে এর প্রতিবিম্ব দেখে তীর নিক্ষেপ করা একজন ব্রাহ্মণের পক্ষে অসম্ভব। তা ক্ষত্রিয়ের কাজ। তারা ভাবেন দ্রৌপদীর রূপ সৌন্দর্যে অর্জুন পাগল হয়ে গিয়েছেন। তারা এই কাজের জন্য তাকে উপযুক্ত শাস্তি দেবেন। সমবেত ক্ষত্রিয়দের মধ্যে কেউ কেউ বললেন ব্রাহ্মণকে এমন বলা ঠিক নয়। তাঁরা মনে করেন তিনি সামান্য মানুষ নন। তিনি অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী। তাঁর সৌন্দর্য কামদেবকেও হার মানায়। পদ্মপত্রের মতো তার দুটি চোখ। হাত দুখানি আজানুলম্বিত। তাঁর মহাবীর্য মেঘে ঢাকা সূর্যের মতো। তাঁর সিংহের মতো গ্রীবাদেশ। তাঁকে দেখে মনে হয় তিনি মাছের চোখে তীর নিক্ষেপ করতে পারবেন। কাশীরাম দাস বলেন কোনো কাজই অসাধ্য নয়। কবিতাটির নামকরণ বিষয়ভিত্তিক। সুতরাং বলা যায় বিষয়বস্তু তথা কথাবস্তুর দিক থেকে বিচার করলে কবিতাটির নামকরণ যথাযথ এবং সার্থক হয়েছে।

প্রশ্ন ২। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটির মূলভাব সংক্ষেপে লেখো।

অথবা, 

‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতার সারমর্ম সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ পরমা সুন্দরী পাঞ্চালরাজ কন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ম্বরসভা বসেছে। তাঁর পাণিগ্রহণ করার জন্য সেখানে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ক্ষত্রিয় রাজকুমারদের আগমন হয়েছে। ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে অর্জুনও আসেন দ্রৌপদীকে পত্নীরূপে লাভের আশায়। স্বয়ংবর সভায় ঘোষিত হয়েছিল, যে রাজকুমার জলের ছায়া লক্ষ্য করে উপরে টাঙানো মাছের চোখ বিদ্ধ করতে পারবেন তিনিই রাজকন্যার পাণিগ্রহণ করবেন। ক্ষত্রিয় রাজকুমাররা একের পর এক এই লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হলেন। এমন সময় ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশধারী অর্জুন সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। 

ব্রাহ্মণের এই আস্পর্ধা দেখে রাজকুমারগণ উপহাস করতে আরম্ভ করলেন। রাজপুত্রদের মধ্যে কেউ কেউ ভাবলেন এই ব্রাহ্মণ রাজকন্যার রূপে পাগল হয়ে এরকম প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। অর্জুনের বীরসুলভ আচরণ দেখে কোনো কোনো রাজকুমার বুঝতে পারলেন অর্জুন সাধারণ ব্রাহ্মণ নন। তারা উপলব্ধি করলেন তাঁর চেহারায় কামদেবজয়ী মূর্তি। তাঁর চোখ দুটি পদ্মপাতার মতো কর্ণ পর্যন্ত প্রসারিত। তাঁর অনুপম শ্যামল গাত্র নীল পদ্মের মতো শোভা দিচ্ছে। সিংহের ঘাড়ের মতো তাঁর ঘাড়। তাঁর ঠোঁট দুটি বাঁধুলি ফুলের মতো রাঙ্গা। নাক গরুড় পাখির নাকের চেয়েও উন্নত। হাত দুখানি জানু পর্যন্ত লম্বা। জানু দুখানি তাঁর হাতির শুঁড়ের মতো শক্তিশালী। তাঁর মহাবীর্য মেঘে টাকা সূর্যের মতো। তাঁর হাঁটা চলা মদমত্ত হাতির মতো ধীর লয়ের। তাঁকে দেখে মনে হয় তিনিই মাছের চোখে শর নিক্ষেপ করতে পারবেন। কবি কাশীরাম দাস পাঠক-পাঠিকাদের উদ্দেশ্যে জানাচ্ছেন যে, অর্জুনের পক্ষে কোনো কাজই অসম্ভব নয়।

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

প্রশ্ন ১। “বিপ্রবেশে অর্জুন বতাটির বিষয়বস্তু সংক্ষেপে লেখো। 

উত্তরঃ পরমা সুন্দরী পাঞ্চালরাজ কন্যা দ্রৌপদীর স্বয়ম্বরসভা বসেছে। তাঁর পাণিগ্রহণ করার জন্য সেখানে ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ক্ষত্রিয় রাজকুমারদের আগমন হয়েছে। ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে অর্জুনও আসেন দ্রৌপদীকে পত্নীরূপে লাভের আশায়। স্বয়ংবর সভায় ঘোষিত হয়েছিল, যে রাজকুমার জলের ছায়া লক্ষ্য করে উপরে টাঙানো মাছের চোখ বিদ্ধ করতে পারবেন তিনিই রাজকন্যার পাণিগ্রহণ করবেন। ক্ষত্রিয় রাজকুমাররা একের পর এক এই লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হলেন। এমন সময় ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশধারী অর্জুন সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। ব্রাহ্মণের এই আস্পর্ধা দেখে রাজকুমারগণ উপহাস করতে আরম্ভ করলেন। 

রাজপুত্রদের মধ্যে কেউ কেউ ভাবলেন এই ব্রাহ্মণ রাজকন্যার রূপে পাগল হয়ে এরকম প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছেন। অর্জুনের বীরসুলভ আচরণ দেখে কোনো কোনো রাজকুমার বুঝতে পারলেন অর্জুন সাধারণ ব্রাহ্মণ নন। তারা উপলব্ধি করলেন তাঁর চেহারায় কামদেবজয়ী মূর্তি। তাঁর চোখ দুটি পদ্মপাতার মতো কর্ণ পর্যন্ত প্রসারিত। তাঁর অনুপম শ্যামল গাত্র নীল পদ্মের মতো শোভা দিচ্ছে। সিংহের ঘাড়ের মতো তাঁর ঘাড়। তাঁর ঠোঁট দুটি বাঁধুলি ফুলের মতো রাঙ্গা। নাক গরুড় পাখির নাকের চেয়েও উন্নত। হাত দুখানি জানু পর্যন্ত লম্বা। জানু দুখানি তাঁর হাতির শুঁড়ের মতো শক্তিশালী। তাঁর মহাবীর্য মেঘে টাকা সূর্যের মতো। তাঁর হাঁটা চলা মদমত্ত হাতির মতো ধীর লয়ের। তাঁকে দেখে মনে হয় তিনিই মাছের চোখে শর নিক্ষেপ করতে পারবেন। কবি কাশীরাম দাস পাঠক-পাঠিকাদের উদ্দেশ্যে জানাচ্ছেন যে, অর্জুনের পক্ষে কোনো কাজই অসম্ভব নয়।

প্রশ্ন ২। ‘বিপ্রবেশে অর্জুন’ কবিতাটিতে রাজসভায় বিপ্রবেশে অর্জুনকে দেখে ক্ষত্রিয়দের মধ্যে কীরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল তা সংক্ষেপে বিবৃত করো।

অথবা, 

বিপ্রবেশে অর্জুনকে দেখে সভার মধ্যে ক্ষত্রিয়রা যেভাবে উপহাস করছিলেন, তার বিবরণ দাও।

উত্তরঃ পাঞ্চালরাজ দ্রুপদ-কন্যা দ্রৌপদির স্বয়ংবর সভায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্ষত্রিয় রাজপুত্ররা এসে যখন পরাস্ত হয়ে বসে আছেন ঠিক সেই সময়ে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে অর্জুনকে সভায় প্রবেশ করতে দেখে রাজপুত্ররা উপহাস ও বিদ্রূপ করতে লাগলেন – এরূপ অসম্ভব কাজে এ ব্রাহ্মণ কেন চেষ্টা করতে এলো ? স্বয়ংবর সভায় কেবলমাত্র ক্ষত্রিয়দের উপস্থিত হওয়ার কথা, তবে এ সভায় ব্রাহ্মণ এলেন কেন? তার কি কোন লজ্জা নেই ! রাজকন্যার রূপ দেখে বোধ হয় সে পাগল হয়ে গেছে! তারা সহজে এ ব্রাহ্মণকে ছাড়বে না। লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হলে তার উচিত শাস্তি দিবে।

আবার এই ক্ষত্রিয়দের মধ্যে কেউ কেউ অবশ্য বলেছেন এ ব্রাহ্মণকে এরূপ অপমান করা উচিত নয়। তাকে দেখলে সামান্য মানুষ বলে মনে হয় না। তার সৌন্দর্য কামদেবকেও হার মানায়। তাঁর অনুপম তনু নীলপদ্মের সৌন্দর্যের সমান। সিংহের মতো উদ্ধৃত ঘাড় নিয়ে অর্জুন মদমত্ত হাতির গতিতে হেঁটে চলেছেন। বাঁধুলি ফুলের মতো তাঁর দুটি ঠোঁট, গরুড়ের নাকের চেয়েও তার নাক উঁচু। তার বাহু দুটি আজানুলম্বিত। অর্জুনের তেজ মেঘে ঢাকা সূর্যের মতো। মনে হয় যেন তিনি লক্ষ্যভেদ করতে পারবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top