Class 11 Advanced Bengali Chapter 8 রাজধর্ম

Class 11 Advanced Bengali Chapter 8 রাজধর্ম Question Answer | AHSEC Class 11 Advanced Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Class 11 Advanced Bengali Chapter 8 রাজধর্ম Notes and select needs one.

Class 11 Advanced Bengali Chapter 8 রাজধর্ম

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 11 Advanced Bengali Chapter 8 রাজধর্ম Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 11 Advanced Bengali Chapter 8 রাজধর্ম Solutions for All Subjects, You can practice these here.

রাজধর্ম

Chapter: 8

ADVANCED BENGALI

গদ্যাংশ

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

১। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘রাজধর্ম’ অনুসরণে রামরাজত্বের বর্ণনা দাও। 

অথবা, 

‘রাজধর্ম’ প্রবন্ধে রামচন্দ্র কীভাবে রাজধর্ম পালন করেছিলেন লেখো।

উত্তরঃ দশরথ পুত্র রামচন্দ্র সিংহাসনে আসীন হলেন। সুস্থভাবেই তিনি রাজ্যশাসন ও প্রজাপালন করতে লাগলেন। রামচন্দ্রের সুস্থভাবে রাজ্য পরিচালনা করার গুণেই অল্প সময়ের মধ্যেই কোশলরাজ্য সুখ-সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। যা ভূমণ্ডলের অন্য কোনো রাজার শাসনকালে তেমন দেখা যায়নি। তিনি প্রত্যেকদিনই দুমুখ নামক অন্তঃপুরচারী বিশ্বস্ত ভৃত্যকে প্রজাগণের অভিপ্রায় জানার জন্য নগর পরিভ্রমণ করতে পাঠাতেন। দুর্মুখ নগর পরিভ্রমণ করে যা জানতে পারতেন তা-ই রাজার কাছে এসে জানাতেন। একদিন দুর্মূর্খ রাজ্য পরিভ্রমণ করে আসার পথে প্রজাদের মুখে রাজমহিষী সীতার নিন্দা শুনলেন। তারা বলছে সীতা দীর্ঘ সময়ধরে পরপুরুষ রাবণের গৃহে দীর্ঘকাল বন্দী থাকা সত্ত্বেও রামচন্দ্র তাঁকে গৃহে আশ্রয় দিয়েছেন। এরপর তাদের গৃহের স্ত্রীদের কোন দোষ ঘটলে তাদের শাসন করা সম্ভব হবেনা। রামচন্দ্র সীতা সংক্রান্ত এই অপবাদ শুনে মূর্ছিত হলেন। তিনি কি করবেন তা নিয়ে দুবিধায় ছিলেন। শেষপর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিলেন। যেহেতু তিনি রাজ্যের ভার নিয়েছেন, প্রজাদের সন্তুষ্ট করা তার প্রধান কর্তব্য। তাই রাজমহিষী সীতাকে ত্যাগ করবেন। রামচন্দ্র মন্ত্রণাভবনে সকল ভাইদের ডেকে সবকথা বললেন এবং লক্ষ্মণকে জানান সীতার কয়েকদিন ধরে তপোবন দেখার ইচ্ছে, লক্ষ্মণ যেন সীতাকে তপোবন দেখানোর নামে কাল প্রভাতে বাল্মীকির আশ্রমে সীতাকে রেখে আসেন।

২। ‘রাজধর্ম’ অনুসরণে রামচরিত্র বর্ণনা করো।

উত্তরঃঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ‘রাজধর্ম’ প্রবন্ধের প্রধান চরিত্র দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। তাঁকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য চরিত্রের সৃষ্টি হয়েছে। রামচন্দ্রের চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল প্রজাপালক, সত্যবাদী, সুশাসক।

আমরা দেখি রামচন্দ্র সিংহাসনে আসীন হওয়ার পর থেকে কোশলরাজ্য সুখ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। ভূমণ্ডলের অন্য কোন রাজার শাসনকালে তেমন দেখা যায়নি। তিনি সবসময়ই প্রজাদের খেয়াল রাখতেন। তিনি প্রতিদিন সুষ্ঠুভাবে রাজকার্য পরিচালনা করতেন। রাজা হয়েও জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ও স্বামীর দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করতেন। প্রতিদিন তিনি অনুজদের ও পত্নী সীতার সঙ্গে সময় অতিবাহিত করতেন।

রাজার প্রধান কর্তব্য প্রজাদের খেয়াল রাখা। তাই দেখা যায় তার শাসনে প্রজারা সন্তুষ্ট আছেন কিনা তা জানবার জন্য দুর্মুখ নামে বিশ্বস্ত ভৃত্যকে নিযুক্ত করেন, যে প্রতিদিন নগর পরিক্রমণ করে প্রজাদের সম্পর্কে সকল খবর এনে দিত। রামচন্দ্র রাজা হলে যে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছার আগে তার অনুজদের সংগে পরামর্শ করতেন। এটি তাঁর চরিত্রের আরেকটি দিক।

লোকরঞ্জন ও প্রজারঞ্জন রাজার প্রধান কর্ম, তাই প্রাণের চেয়ে সীতাকে ত্যাগ করতে পিছু পা হননি। তবে স্বামীর দায়িত্ব পালনে কোথাও যেন ত্রুটি ছিল। যাই হ‌উক সবদিক দিয়ে বিবেচনা করে বলা যায় রামচন্দ্র একজন সুশাসক, প্রজাহিতৈষী মনোভাবাপন্ন। তাই তিনি ভারত ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব।

৩। ‘রাজধর্ম’ পাঠটির নামকরণের সার্থকতা আলোচনা করো।

উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘সীতার বনবাস’ নামে গ্রন্থটির সংক্ষিপ্ত অংশ ‘রাজধর্ম’ প্রবন্ধ। ‘রাজধর্ম শব্দের অর্থ রাজার ধর্ম। রাজার ধর্ম হল প্রজাপালন ও প্রজাকল্যাণ। আলোচ্য প্রবন্ধে দেখা যায় কোশলরাজ রামচন্দ্র সিংহাসনে আরোহন করার পর থেকে কোশল রাজ্য সুখ-সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। ভূমণ্ডলে অন্য কোনো রাজার শাসনকালে তেমন দেখা যায়নি। তিনি সবসময়ই প্রজাদের খেয়াল রাখতেন। তাঁর শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে অবগত হবার জন্য দুর্মুখ নামে এক বিশ্বস্ত ভৃত্যকে নিযুক্ত করেন। সে প্রতিদিন নগর পরিক্রমণ করে যা জানতে পারত কোশলরাজ রামচন্দ্রকে এসে জানাত। একদিন দুর্নখ প্রজাদের মুখে সীতা সংক্রান্ত অপবাদ শুনতে পেরে রামচন্দ্রকে সবকিছু জানান। তখন রামচন্দ্রকে সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়, যেহেতু তিনি রাজ্যের ভার নিয়েছেন। প্রজাদের সন্তুষ্ট করা তার প্রধান কর্তব্য। তাই সীতাকে পরিত্যাগ করবেন। তিনি অনুজদের বলেন- “আমি প্রতিজ্ঞা করিয়াছি, জানকীর আর গৃহে রাখিব না। সর্বপ্রযত্নে প্রজারঞ্জন রাজার পরম ধর্ম। যদি তাহাতে কৃতকার্য না হইতে পারি, নিতান্ত অনার্যের ন্যায় বৃথা জীবনধারণের ফল কি বল।” প্রবন্ধটির মধ্যে কোশলরাজ রামচন্দ্রকে রাজধর্ম পালন করতে দেখা যায়। সুতরাং প্রবন্ধটির নামকরণ ‘রাজধর্ম’ রাখা সবদিক দিয়ে সার্থক ও যুক্তিসঙ্গত।

সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা

১। “কেহ কখনও আমার মত উভয় সংকটে পড়েনা”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘রাজধর্ম’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রামচন্দ্র সীতা সম্পর্কিত অপবাদকে উপেক্ষা করবেন না সীতা নিরপরাধ জেনেও তাঁকে‌ ত্যাগ করবেন এই নিয়ে তাঁর উভয় সংকট তা-ই এখানে ব্যক্ত হয়েছে। উক্তিটি কোশলরাজ রামচন্দ্রের। রামচন্দ্র দুর্মুখের মাধ্যমে প্রজামুখের সীতা সংক্রান্ত নিন্দার কথা জানতে পেরে মূর্ছিত হয়ে পড়েন। রামচন্দ্র অশ্রুপূর্ণ নয়নে আকুল বচনে বিলাপ ও পরিতাপ করে বলতে লাগলেন, “হায়, কি সর্বনাশের কথা শুনিলাম। ইহা অপেক্ষা আমার বক্ষঃস্থলে বজ্রাঘাত হওয়া ভাল ছিল।” তিনি প্রাণের চেয়ে প্রিয় সীতাকে নিরপরাধী জেনেও বিসর্জন দিয়ে কুলের কলঙ্ক বিমোচন করবেন না প্রজাদের অপবাদকে উপেক্ষা করবেন। এই ছিল তাঁর উভয় সংকটের কারণ। তিনি স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছতে কিছুতেই পারছেননা, এমন পরিস্থিতির শিকার এর আগে তিনি কোনো দিনই হননি।

২। “মহারাজ! যাহা শুনিয়াছিলাম, অবিকল নিবেদন করিলাম, আমার অপরাধ মার্জনা করিবেন।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘রাজধর্ম’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। এখানে দুর্মুখের মাধ্যমে প্রজাদের মুখের রাজমহিষী সীতার নিন্দার বর্ণনা রয়েছে।

দুর্মুখ নামে রামচন্দ্রের বিশ্বস্ত ভৃত্য রামচন্দ্রকে এই উক্তিটি করেছেন।

দুর্মুখকে রামচন্দ্র নিযুক্ত করেন তাঁর শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে অবগত হবার জন্যে। সে প্রতিদিনকার মতো একদিন নগর পরিক্রমণ করে বুঝতে পারে রামরাজ্যে প্রজারা পরমসুখেই আছে তবে কোনো-কোনো প্রজামুখে সীতার নিন্দা শুনতে পায়। দুর্মুখ 

প্রজাদের মুখে রামচন্দ্রের সুখ্যাতি সম্পর্কে রামচন্দ্রকে অবগত করে, সে সংগ সংক্রান্ত নিন্দার কথাও বলে যে রামচন্দ্রের চিত্ত বড় নির্বিকার। তাই সীতা দীর্ঘকাল রাবণরাজ্যে বন্দী থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গৃহে আনলেন। যদি কখনও প্রজাদের স্ত্রীলোকদের চারিত্রিক দোষ ঘটে তবে তাদের শাসন করা সম্ভব হবেনা। কারণ শাসন করতে গেলেই তারা রাজমহিষী সীতার দৃষ্টান্ত দেবে। তখন তারা নিরুত্তর, প্রজারা বলে রাজা যে ধর্ম অনুসারে চলবে প্রজারাও তাকে অবলম্বন করে চলবে।

৩। “রাজা হইয়া যদি প্রজারঞ্জন করিতেই না পারিলাম, তাহা হইলে জীবনধারণের ফল কি ?”

উত্তরূ আলোচ্য অংশটুকু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘রাজধর্ম’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত।‌ এখানে রামচন্দ্র প্রজাদের প্রতি তার কর্তব্যের কথা বলেছেন।

উক্তিটি কোশলরাজ রামচন্দ্রের। রামচন্দ্র সীতার অপবাদ বিষয়ক আলোচনা করার জন্য সকল অনুজদের মন্ত্র ণাভবনে আসার ডাক পাঠালেন। সেখানে অনুজদের বললেন সীতাকে দশানন রাবণ বলপূর্বক হরণ করে তার রাজ্যে বন্দী করেন। দীর্ঘকাল সীতা রাবণরাজ্যে বন্দী থাকার পরও তিনি সীতাকে উদ্ধার করে গৃহে আনাতে প্রজারা অসন্তুষ্ট। সেজন্য তিনি সীতাকে গৃহে রাখবেন না। সর্বপ্রথম রাজার ধর্ম প্রজাদের সন্তুষ্ট রাখা। যদি তাতে তিনি কৃতকার্য না হন তবে অনার্যের মতো বৃথা জীবনযাপন করবেন না। তিনি সীতাকে পরিত্যাগ করবেন, না হয় প্রাণ ত্যা করবেন ।

৪। “রাজা ধর্মাধর্মের কর্তা। তিনি যে ধর্ম অনুসারে চলিবেন, আমরা প্রজা, আমাদিগকেও সেইধর্ম অবলম্বন করিয়া চলিতে হইবেক।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘রাজধর্ম’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। দুর্মুখ সীতার নিন্দা বিষয়ে প্রজাদের কী প্রতিক্রিয়া তা এখানে ব্যক্ত করেছেন।

দুর্মুখ নামে রামচন্দ্রের বিশ্বস্ত ভৃত্য রামচন্দ্রকে এই উক্তিটি করেছেন।

দুর্মুখকে রামচন্দ্র নিযুক্ত করেন তাঁর শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে অবগত হবার জন্যে। সে প্রতিদিনকার মতো একদিন নগর পরিক্রমণ করে বুঝতে পারে রামরাজ্যে প্রজারা পরমসুখেই আছে তবে কোনো-কোনো প্রজামুখে সীতার নিন্দা শুনতে পায় । দুর্মুখ 

প্রজাদের মুখে রামচন্দ্রের সুখ্যাতি সম্পর্কে রামচন্দ্রকে অবগত করে, সে সংগ সংক্রান্ত নিন্দার কথাও বলে যে রামচন্দ্রের চিত্ত বড় নির্বিকার। তাই সীতা দীর্ঘকাল রাবণরাজ্যে বন্দী থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গৃহে আনলেন। যদি কখনও প্রজাদের স্ত্রীলোকদের চারিত্রিক দোষ ঘটে তবে তাদের শাসন করা সম্ভব হবেনা। কারণ শাসন করতে গেলেই তারা রাজমহিষী সীতার দৃষ্টান্ত দেবে। তখন তারা নিরুত্তর, প্রজারা বলে রাজা যে ধর্ম অনুসারে চলবে প্রজারাও তাকে অবলম্বন করে চলবে।

৫। “গভীর জলধি, কখনও অল্প কারণে আকুলিত হয় না। সামান্য বায়ুবেগের প্রভাবে হিমাচল কদাচ বিচলিত হইতে পারেনা।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘রাজধর্ম’ শীর্ষক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রামচন্দ্রের করুণ অবস্থা দেখে লক্ষ্মণ এই মন্তব্য করেন। উক্তি রামচন্দ্রের অনুজ লক্ষ্মণের। রামচন্দ্র সীতার অপবাদ বিষয়ক আলোচনা করার জন্য অনুজদের মন্ত্রণাভবনে আসার ডাক পাঠালেন। মন্ত্রণাভবনে প্রবেশ করে অনুজরা দেখলেন রামচন্দ্রের চোখ দিয়ে অনবরত জল, পড়ছে। তিনি দীর্ঘ নিঃশ্বাস পরিত্যাগ করছেন। রামচন্দ্রের এই অবস্থা দেখে অনুজরা স্তব্ধ ও হতবুদ্ধির হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। লক্ষ্মণের মতে রামচন্দ্রের এমন ব্যক্তিত্ব যা সামান্য কোনো কারণে বিচলিত হতে পারেনা। রামচন্দ্রের এরূপ অবস্থা দেখে লক্ষ্মণ ধৈর্য্য ধরতে না পেরে রামচন্দ্রকে জিজ্ঞেস করেন, কি কোনো অনিষ্ঠ হয়েছে। তখন লক্ষ্মণ আরও বললেন, রামচন্দ্র গভীর সমুদ্রের মতো অল্পকারণে আকুলিত হতে পারেননা। হিমালয়রূপী রামচন্দ্র সামান্য বায়ুর প্রবাহে বিচলিত হওয়ার নয়। নিশ্চয় কোনো কারণে তিনি এরূপ ভাবাপন্ন হয়েছেন, যাতে তিনি তাড়াতাড়ি তার এরূপ অবস্থার পিছনে কারণ কী অনুজদেরকে ব্যক্ত করেন।

৬। “যখন রাজ্যের ভার গ্রহণ করিয়াছি; সর্বপ্রযত্নে প্রজারঞ্জন রাজার পরম ধর্ম।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ‘রাজধর্ম’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। প্রজারঞ্জন ও প্রজাপালন রাজা হিসেবে রামচন্দ্রের যে প্রধান কর্তব্য এখানে তা-ই হয়েছে। উক্তিটি কোশলরাজ রামচন্দ্রের।

রামচন্দ্র সীতার অপবাদ বিষয়ক আলোচনা করার জন্য সকল অনুজদের মন্ত্র ণাভবনে আসার ডাক পাঠালেন। সেখানে অনুজদের বললেন সীতাকে দশানন রাবণ বলপূর্বক হরণ করে তার রাজ্যে বন্দী করেন। দীর্ঘকাল সীতা রাবণরাজ্যে বন্দী থাকার পরও তিনি সীতাকে উদ্ধার করে গৃহে আনাতে প্রজারা অসন্তুষ্ট। সেজন্য তিনি সীতাকে গৃহে রাখবেন না। সর্বপ্রথম রাজার ধর্ম প্রজাদের সন্তুষ্ট রাখা। যদি তাতে তিনি কৃতকার্য না হন তবে অনার্যের মতো বৃথা জীবনযাপন করবেন না। তিনি সীতাকে পরিত্যাগ করবেন, না হয় প্রাণ ত্যা করবেন।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। দুর্মূর্খ কে ? তাকে কি কাজে নিয়োজিত করা হয়েছিল ? সে প্রত্যহ রামচন্দ্রকে কি সংবাদ এনে দিত?

উত্তরঃ দুর্নখ হল অন্তঃপুরচারী রামচন্দ্রের অতি বিশ্বস্ত ভৃত্য। রামচন্দ্রের শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে জানার জন্য দুর্নখকে নিয়োজিত করা হয়েছিল। সে প্রতিদিন নগর পরিক্রমণ করে এসে রামচন্দ্র ও রামচন্দ্রের শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে যা জানতে পারতেন তা-ই এসে রামচন্দ্রকে সংবাদ দিতেন।

২। “কল্য প্রভাতেই, মদীর আদেশের অনুযায়ী কার্য্য করিবে, কোনও মনে  অন্যথা করিবেনা।” – কে, কাকে আদেশ দিয়েছিলেন ? কি আদেশ দিয়েছিলেন ?

উত্তরঃ কোশলরাজ রামচন্দ্র লক্ষ্মণকে আদেশ দিয়েছিলেন। রাজমহিষী সীতাকে তপোবন মহর্ষি বাল্মীকির আশ্রনে রেখে আসার আদেশ দিয়েছিলেন।

৩। “তুমি অবশ্যই দোবকীর্তন শুনিয়াছ, অপলাপ করিতেছ কেন ? কি শুনিয়াছ বল, বিলম্ব করিওনা;” – উক্তিটি কার ? কে কার দোষ কীর্তন করেছে ? সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ উক্তিটি কোশলরাজ রামচন্দ্রের। দুর্মুর্খ নামে রামচন্দ্রের বিশ্বস্ত ভূত্য প্রজামুখে রাজমহিষী সীতার দোষকীর্তন শুনেছেন। দুর্মুখ নামে এক বিশ্বস্ত ভৃত্যকে রামচন্দ্র নিযুক্ত করেন তাঁর শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে অবগত হবার জন্যে। সে প্রতিদিন নগর পরিক্রমণ করে যা জানতে পারত তা-ই রাজাকে এসে খবর দিত। প্রতিদিনের মতো একদিন দুর্মুখ নগর পরিক্রমণ করে বুঝতে পারে রামরাজ্যে প্রজারা পরম সুখেই আছে তবে কোনো-কোনো প্রজামুখে দীর্ঘকাল সীতা রাবণরাজ্যে বন্দী থাকা নিয়ে সীতার নিন্দা শুনতে পায়। প্রথমতঃ দুর্মুখ এই খবর রামচন্দ্রকে দিতে ইতস্তত করে পরে রামচন্দ্রের পীড়াপীড়িতে দুর্মূখ এই সংবাদ জানাতে বাধ্য হয়।

৪। “কি হে দুর্খ! আজ কি জানিতে পারিয়াছ বল।” – উক্তিটি কার ? দুর্মুখ কে ? প্রসঙ্গটি বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ দুর্মুখ হল অন্তঃপুরচারী রামচন্দ্রের অতি বিশ্বস্ত ভৃত্য। রামচন্দ্রের শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে জানার জন্য দুর্নখকে নিয়োজিত করা হয়েছিল । সে প্রতিদিন নগর পরিক্রমণ করে এসে রামচন্দ্র ও রামচন্দ্রের শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে যা জানতে পারতেন তা-ই এসে রামচন্দ্রকে সংবাদ দিতেন।

৫। “মহারাজ! যাহা শুনিলাম, অবিকল নিবেদন করিলাম, আমার অপরাধ মার্জনা করিবেন।” – কে কোন্ প্রসঙ্গে, কার সম্বন্ধে উক্তিটি করেছেন ?

উত্তরঃ দুর্মুখ নামে রামচন্দ্রের বিশ্বস্ত ভৃত্য রামচন্দ্রকে এই উক্তিটি করেছেন।

দুর্মুখকে রামচন্দ্র নিযুক্ত করেন তাঁর শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে অবগত হবার জন্যে। সে প্রতিদিনকার মতো একদিন নগর পরিক্রমণ করে বুঝতে পারে রামরাজ্যে প্রজারা পরমসুখেই আছে তবে কোনো-কোনো প্রজামুখে সীতার নিন্দা শুনতে পায় । দুর্মুখ 

প্রজাদের মুখে রামচন্দ্রের সুখ্যাতি সম্পর্কে রামচন্দ্রকে অবগত করে, সে সংগ সংক্রান্ত নিন্দার কথাও বলে যে রামচন্দ্রের চিত্ত বড় নির্বিকার। তাই সীতা দীর্ঘকাল রাবণরাজ্যে বন্দী থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গৃহে আনলেন। যদি কখনও প্রজাদের স্ত্রীলোকদের চারিত্রিক দোষ ঘটে তবে তাদের শাসন করা সম্ভব হবেনা। কারণ শাসন করতে গেলেই তারা রাজমহিষী সীতার দৃষ্টান্ত দেবে। তখন তারা নিরুত্তর, প্রজারা বলে রাজা যে ধর্ম অনুসারে চলবে প্রজারাও তাকে অবলম্বন করে চলবে।

৬। “কেহ কখনও আমার মত উভয় সঙ্কটে পড়েনা।”

-উক্তিটি কার ? কোন্ উভয় সঙ্কটের কথা এখানে বলা হয়েছে সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তরঃ উক্তিটি কোশলরাজ রামচন্দ্রের। রামচন্দ্র দুর্মুখের মাধ্যমে প্রজামুখের সীতা সংক্রান্ত নিন্দার কথা জানতে পেরে মূর্ছিত হয়ে পড়েন। রামচন্দ্র অশ্রুপূর্ণ নয়নে আকুল বচনে বিলাপ ও পরিতাপ করে বলতে লাগলেন, “হায়, কি সর্বনাশের কথা শুনিলাম। ইহা অপেক্ষা আমার বক্ষঃস্থলে বজ্রাঘাত হওয়া ভাল ছিল।”

তিনি প্রাণের চেয়ে প্রিয় সীতাকে নিরপরাধী জেনেও বিসর্জন দিয়ে কুলের কলঙ্ক বিমোচন করবেন না প্রজাদের অপবাদকে উপেক্ষা করবেন। এই ছিল তাঁর উভয় সংকটের কারণ। তিনি স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছতে কিছুতেই পারছেননা, এমন পরিস্থিতির শিকার এর আগে তিনি কোনো দিনই হননি।

৭। “সর্বপ্রযত্নে প্রজারঞ্জন রাজার পরমধর্ম’ – তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

অথবা, 

উক্তিটি কার ? সংক্ষেপে আলোচনা করো।

উত্তরঃ উক্তিটি কোশলরাজ রামচন্দ্রের।

রামচন্দ্র সীতার অপবাদ বিষয়ক আলোচনা করার জন্য সকল অনুজদের মন্ত্র ণাভবনে আসার ডাক পাঠালেন। সেখানে অনুজদের বললেন সীতাকে দশানন রাবণ বলপূর্বক হরণ করে তার রাজ্যে বন্দী করেন। দীর্ঘকাল সীতা রাবণরাজ্যে বন্দী থাকার পরও তিনি সীতাকে উদ্ধার করে গৃহে আনাতে প্রজারা অসন্তুষ্ট। সেজন্য তিনি সীতাকে গৃহে রাখবেন না। সর্বপ্রথম রাজার ধর্ম প্রজাদের সন্তুষ্ট রাখা। যদি তাতে তিনি কৃতকার্য না হন তবে অনার্যের মতো বৃথা জীবনযাপন করবেন না। তিনি সীতাকে পরিত্যাগ করবেন, না হয় প্রাণ ত্যা করবেন।

৮। “রাজা ধর্মাধর্মের কর্তা; তিনি যে ধর্ম অনুসারে চলবেন, আমরা প্রজা, আমাদিগকেও, সেই ধর্ম অবলম্বন করিয়া চলিতে হইবেক।”- উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ দুর্মুখ নামে রামচন্দ্রের বিশ্বস্ত ভৃত্য রামচন্দ্রকে এই উক্তিটি করেছেন।

দুর্মুখকে রামচন্দ্র নিযুক্ত করেন তাঁর শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে অবগত হবার জন্যে। সে প্রতিদিনকার মতো একদিন নগর পরিক্রমণ করে বুঝতে পারে রামরাজ্যে প্রজারা পরমসুখেই আছে তবে কোনো-কোনো প্রজামুখে সীতার নিন্দা শুনতে পায়। দুর্মুখ 

প্রজাদের মুখে রামচন্দ্রের সুখ্যাতি সম্পর্কে রামচন্দ্রকে অবগত করে, সে সংগ সংক্রান্ত নিন্দার কথাও বলে যে রামচন্দ্রের চিত্ত বড় নির্বিকার। তাই সীতা দীর্ঘকাল রাবণরাজ্যে বন্দী থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গৃহে আনলেন। যদি কখনও প্রজাদের স্ত্রীলোকদের চারিত্রিক দোষ ঘটে তবে তাদের শাসন করা সম্ভব হবেনা। কারণ শাসন করতে গেলেই তারা রাজমহিষী সীতার দৃষ্টান্ত দেবে। তখন তারা নিরুত্তর, প্রজারা বলে রাজা যে ধর্ম অনুসারে চলবে প্রজারাও তাকে অবলম্বন করে চলবে।

৯। “অতঃপর আমাদের গৃহে স্ত্রীলোকদের চরিত্রে দোষ ঘটিলে তাহাদের শাসন করা সম্ভব হইবেনা।” – উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ দুর্মুখ নামে রামচন্দ্রের বিশ্বস্ত ভৃত্য রামচন্দ্রকে এই উক্তিটি করেছেন।

দুর্মুখকে রামচন্দ্র নিযুক্ত করেন তাঁর শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে অবগত হবার জন্যে। সে প্রতিদিনকার মতো একদিন নগর পরিক্রমণ করে বুঝতে পারে রামরাজ্যে প্রজারা পরমসুখেই আছে তবে কোনো-কোনো প্রজামুখে সীতার নিন্দা শুনতে পায়। দুর্মুখ 

প্রজাদের মুখে রামচন্দ্রের সুখ্যাতি সম্পর্কে রামচন্দ্রকে অবগত করে, সে সংগ সংক্রান্ত নিন্দার কথাও বলে যে রামচন্দ্রের চিত্ত বড় নির্বিকার। তাই সীতা দীর্ঘকাল রাবণরাজ্যে বন্দী থাকা সত্ত্বেও তাঁকে গৃহে আনলেন। যদি কখনও প্রজাদের স্ত্রীলোকদের চারিত্রিক দোষ ঘটে তবে তাদের শাসন করা সম্ভব হবেনা। কারণ শাসন করতে গেলেই তারা রাজমহিষী সীতার দৃষ্টান্ত দেবে। তখন তারা নিরুত্তর, প্রজারা বলে রাজা যে ধর্ম অনুসারে চলবে প্রজারাও তাকে অবলম্বন করে চলবে।

১০। “গভীর জলধি কখনও অল্প কারণে আকুলিত হয়না। সামান্য বায়ুবেগের প্রভাবে, হিমালয় কদাচ বিচলিত হইতে পারেনা।” – ইহা কার উক্তি ? প্রসঙ্গটি বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ উক্তি রামচন্দ্রের অনুজ লক্ষ্মণের।

রামচন্দ্র সীতার অপবাদ বিষয়ক আলোচনা করার জন্য অনুজদের মন্ত্রণাভবনে আসার ডাক পাঠালেন। মন্ত্রণাভবনে প্রবেশ করে অনুজরা দেখলেন রামচন্দ্রের চোখ দিয়ে অনবরত জল, পড়ছে। তিনি দীর্ঘ নিঃশ্বাস পরিত্যাগ করছেন। রামচন্দ্রের এই অবস্থা দেখে অনুজরা স্তব্ধ ও হতবুদ্ধির হয়ে সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন। লক্ষ্মণের মতে রামচন্দ্রের এমন ব্যক্তিত্ব যা সামান্য কোনো কারণে বিচলিত হতে পারেনা। রামচন্দ্রের এরূপ অবস্থা দেখে লক্ষ্মণ ধৈর্য্য ধরতে না পেরে রামচন্দ্রকে জিজ্ঞেস করেন, কি কোনো অনিষ্ঠ হয়েছে। তখন লক্ষ্মণ আরও বললেন, রামচন্দ্র গভীর সমুদ্রের মতো অল্পকারণে আকুলিত হতে পারেননা। হিমালয়রূপী রামচন্দ্র সামান্য বায়ুর প্রবাহে বিচলিত হওয়ার নয়। নিশ্চয় কোনো কারণে তিনি এরূপ ভাবাপন্ন হয়েছেন, যাতে তিনি তাড়াতাড়ি তার এরূপ অবস্থার পিছনে কারণ কী অনুজদেরকে ব্যক্ত করেন।

১১। “জানকীরেই বিসর্জন দিতে হইল” – জানকী কে ? কোথায় তাকে বিসর্জন দেওয়া  হয়েছিল ?

উত্তরঃ জানকী হলেন রামচন্দ্রের স্ত্রী ও জনকের কন্যা। তাঁকে তপোবনে বাল্মীকির আশ্রমে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল।

১২। রাজধর্ম পাঠ অনুসারে রাজারাম ও ভৃত্য দুর্মুখের মধ্যে যে কথোপকথন হয় তা নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।

উত্তরঃ ছাত্র-ছাত্রীরা নিজে করো।

প্রশ্ন ১৩। দুর্মুখের কাছে সীতা-অপবাদ বৃত্তান্ত শুনে রামের মনে যে বিচিত্র ভাব দেখা দিয়েছিল, তা সংক্ষেপে লেখো।

উত্তরঃ রাজা রামচন্দ্র অন্তঃপুরচারী বিশ্বস্ত দুর্মুখ নামক যে ভৃত্যকে প্রজাদের অভিপ্রায় অবগত হওয়ার জন্য নিয়োজিত করেছিলেন তার মুখ থেকে সীতার অপবাদ শ্রবণ করে মুর্ছিত হয়ে পড়েন। রামচন্দ্র অশ্রুপূর্ণ নয়নে আকুল বচনে বিলাপ ও পরিতাপ করে বলতে লাগলেন, “হায়, কি সর্বনাশের কথা শুনলাম! ইহা অপেক্ষা আমার বক্ষস্থলে বজ্রাঘাত হওয়া ভাল ছিল।” এখন তিনি কি করবেন বা না করবেন তা কিছুই স্থির করতে পারছেন না।

প্রিয় সীতাদেবীকে নিরপরাধী জেনেও বিসর্জন দিয়ে কুলের কলঙ্ক বিমোচন করবেন না প্রজাদের অপবাদকে উপেক্ষা করবেন। এই উভয় সংকটের মধ্যে তিনি পড়েছেন। তিনি স্থির সিদ্ধান্তে কিছুতেই পৌঁছতে পারছেন না, এমন অবস্থায় তিনি কোনদিন পড়েন নি।

প্রশ্ন ১৪। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম ও মৃত্যুসাল উল্লেখ করো।

উত্তরূ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্ম  ২৬-৯-১৮২০ খ্রিঃ এবং মৃত্যু ২৯-৭-১৮৯১ খ্রিঃ।

টীকা লিখন

১। রাজধর্ম: রাজধর্ম শব্দের অর্থ রাজার ধর্ম। প্রজাপালন ও প্রজারঞ্জন একজন রাজার প্রধান কর্তব্য। তা-ই রাজধর্ম। দশরথ পুত্র রামচন্দ্র তার রাজধর্ম সুষ্ঠভাবে পালন করেছিলেন।

২। দুর্মুখ: কোশলরাজ রামচন্দ্রের অন্তঃপুরচারী অতি বিশ্বস্ত ভৃত্য হলেন দুর্মুখ। রামচন্দ্রের শাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য তাঁকে নিযুক্ত করেছিলেন। সে প্রতিদিন নগর পরিক্রমণ করে যা কিছু জানতে পারত তা সবকিছুই রামচন্দ্রকে এসে জানাত।

৩। রামচন্দ্র: দশরথ পুত্র রামচন্দ্র পিতার মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করেন। তার বাজত্বকালে কোশলরাজ্য সুখ-সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। যা ভূমণ্ডলের অন্য কোনো বাজার শাসনকালে তেমন দেখা যায়নি। রামচন্দ্রের চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য তিনি সত্যবাদী, ন্যায়পরায়ণ, সুশাসক, প্রজাপালক ছিলেন।

৪। জনক তনয়া অথবা জানকী: জনক রাজার কন্যা জানকী। যার অপর নাম সীতা। দশরথপুত্র রামচন্দ্রের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পঞ্চবটীতে দুর্বৃত্ত দশানন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য তাঁকে হরণ করে লংকায় দীর্ঘকাল বন্দী করে রাখেন। রামচন্দ্র পরবর্তী সময় রাবণের সংগে যুদ্ধ করে সীতাকে উদ্ধার করেন।

৫। দশানন: লঙ্কার রাজা ছিলেন রাবণ। তাঁকে দশাননও বলা হয়। কারণ তাঁর দশটি মাথা ছিল। বোন সুপর্নখার নাক লক্ষ্মণ কেটে ফেললে তার প্রতিশোধ নেবার জন্য পঞ্চবটী থেকে সীতাকে হরণ করে লঙ্কায় নিয়ে যান। পরে রামচন্দ্র রাবণকে পরাজিত করে সীতাকে উদ্ধার করেন। দশানন রাবণ বীর পরাক্রমী ছিলেন।

৬। মহর্ষি বাল্মীকি: মহর্ষি বাল্মীকি সংস্কৃত ‘রামায়ণ’ এর রচয়িতা। তাঁর পূর্ব নাম ছিল রত্নাকর দস্যু। পরে তিনি বাল্মীকিতে নামান্তর হন। রামচন্দ্র সীতাকে পরিত্যাগ করলে তপোবনে বাল্মীকির আশ্রমে লক্ষ্মণ সীতাকে রেখে আসেন।

৭। পঞ্চবটী: পঞ্চবটী হল একটি বনের নাম। রামচন্দ্র চৌদ্দ বছরের জন্য বনবাসে গিয়েছিলেন। পঞ্চবটী বনে অবস্থানকালে দুর্বৃত্ত দশানন অর্থাৎ রাবণ সীতাকে হরণ করে লঙ্কায় নিয়ে গিয়ে বন্দী করে রাখেন। পঞ্চবটী শব্দের অর্থ হল পাঁচটি বটের সমাহার।

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। ‘রাজধর্ম’ প্রবন্ধের লেখক কে ?

উত্তরঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।

২। ‘রাজধর্ম’ প্রবন্ধটি কোন গ্রন্থ থেকে গৃহীত?

উত্তরঃ ‘সীতার বনবাস’ গ্রন্থের।

৩। ‘সর্বপ্রযত্নে প্রজারঞ্জন রাজার পরমধর্ম’- উক্তিটি কার ?

উত্তরঃ উক্তিটি রামচন্দ্রের।

৪। দুর্মুখ কে ছিলেন ?

উত্তরঃ দুর্মুখ ছিলেন রামচন্দ্রের অন্তঃপুরচারী বিশ্বস্ত ভৃত্য।

৫। রামচন্দ্র কাকে আদেশ করেছিলেন সীতাকে তপোবনে ছেড়ে আসার জন্য ?

উত্তরঃ লক্ষ্মণকে।

৬। রাজধর্ম কী ?

উত্তরঃ রাজধর্ম হল রাজার ধর্ম। অর্থাৎ প্রজারঞ্জন রাজার প্রধান ধর্ম।

৭। “মহারাজ! কি পৌরগণ, কি জানপদগণ, সকলেই বলে, আমরা রামরাজ্যে পরম সুখে আছি”। – উক্তিটি কার ?

উত্তরঃ দুর্মুখের।

৮। রাজা …….. কর্তা। (শূন্যস্থান পূরণ করো)

উত্তরঃ ধর্মাধর্মের।

৯। “মহারাজ! কি পৌরগণ, কি জনপদগণ, সকলেই বলে। আমরা রামরাজ্যে পরম সুখে আছি”। – রামের রাজ্যটির নাম কি ছিল ?

উত্তরঃ কোশলরাজ্য।

১০। রামচন্দ্র সীতাকে কোথায় রেখে আসার জন্য লক্ষ্মণকে বললেন ?

উত্তরঃ বাল্মীকির আশ্রমে।

১১। রামের অন্তঃপুরচারী অতি বিশ্বস্ত ভৃত্যের নাম লেখো।

উত্তরঃ দুর্মুখ।

১২। রামচন্দ্র কাকে নতুন রাজ্যশাসন বিষয়ে প্রজাদের অভিপ্রায় জানার জন্য নিয়োজিত করেছিলেন ?

উত্তরঃ দুর্মুখকে।

১৩। ‘কিন্তু কেহ কেহ রাজমহিষীর উল্লেখ করিয়া কুৎসা করিয়া থাকে।’- বক্তা কাকে একথা বলেছেন ? ‘রাজমহিষী’ কে ?

উত্তরঃ বক্তা মহারাজ রামচন্দ্রকে একথা বলেছেন। ‘রাজমহিষী’ হলেন সীতাদেবী ।

১৪। বাল্মীকির আশ্রমে সীতাকে রেখে আসার জন্য রাম কাকে অনুরোধ করেছিলেন ?

উত্তরঃ লক্ষ্মণকে।

১৫। “তাঁহার শাসনগুণে, স্বল্প সময়েই সমস্ত কোশলরাজ্য সর্বত্র সর্বপ্রকার সুখ সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল।” – এখানে ‘তাঁহার’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে ? 

উত্তর। রামচন্দ্রকে বোঝানো হয়েছে।

১৬। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ?

উত্তরঃ মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে।

১৭। “কিন্তু, কেহ কেহ, রাজমহিষীর উল্লেখ করিয়া, কুৎসা করিয়া থাকে।” – এখানে বক্তা ও রাজমহিষীর নামোল্লেখ করো।

উত্তরঃ এখানে বক্তার নাম দুর্মুখ।

রাজমহিষী হলেন সীতাদেবী।

১৮। টীকা লেখো : সরযূ।

উত্তরঃ কৈলাস পর্বতস্থ মানস সরোবর থেকে নিঃসৃতা নদী সরং থেকে উৎপন্ন বলে এর নাম সরযু। এই নদীর তীরে অযোধ্যা নগরী। কাল পূর্ণ হলে রামচন্দ্র ভ্রাতৃগণসহ এই নদীতে অবতরণ করে দেহত্যাগ করেন। সেই সময়ে রামচন্দ্রের অনুগামী অনেক ব্যক্তি রামচন্দ্রকে অনুসরণ করেন।

১৯। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কোথায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ?

উত্তরঃ পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে ঈশ্বরচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top