Class 11 Advanced Bengali Chapter 10 রামায়ণ

Class 11 Advanced Bengali Chapter 10 রামায়ণ Question Answer | AHSEC Class 11 Advanced Bengali Question Answer to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapters Class 11 Advanced Bengali Chapter 10 রামায়ণ Notes and select needs one.

Class 11 Advanced Bengali Chapter 10 রামায়ণ

Join Telegram channel

Also, you can read the SCERT book online in these sections Class 11 Advanced Bengali Chapter 10 রামায়ণ Solutions by Expert Teachers as per SCERT (CBSE) Book guidelines. These solutions are part of SCERT All Subject Solutions. Here we have given Class 11 Advanced Bengali Chapter 10 রামায়ণ Solutions for All Subjects, You can practice these here.

রামায়ণ

Chapter: 10

ADVANCED BENGALI

গদ্যাংশ

অনুশীলনীর প্রশ্নোত্তরঃ

১। ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথের মূল বক্তব্যের সারসংক্ষেপ লেখো। 

উত্তরঃ প্রাচীন আর্যসভ্যতার দুইটি ধারার মধ্যে একটি ধারা ইউরোপে আসে। সেই ইউরোপীয় ধারা থেকে সৃষ্টি মহাকবি হোমারের ইলিয়ড ও ওডিসি নামে দুইটি মহাকাব্যের। আর আরেকটি ধারা প্রবাহিত ভারতে। সেই ভারতীয় ধারা থেকে সৃষ্ট রামায়ণ-মহাভারত নামে দুইটি বিশালাকার মহাকাব্যের। রামায়ণ-মহাভারতকে শুধু মহাকাব্য বললে ভুল হবে, তা ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাসও বটে। যুগ-যুগ ধরে ভারতভূমিতে রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত অব্যাহত, হয়তো তাঁদের রচয়িতাদের নাম আজ ততটা সকলের স্মরণে নেই কিন্তু তাঁদের রচিত এই দুইটি মহাকাব্য মানব হৃদয়ে চিরবিরাজিত। যার মাধ্যমে প্রকাশিত হয় ভারতীয় ঐতিহ্য ও আদর্শ। ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের আত্মত্যাগ, পিতার কথার মর্যাদা রাখতে পুত্রের বনবাস গমন, স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি নিষ্ঠা ও প্রজার প্রতি রাজার কর্তব্য এসব কিছুর মধ্য দিয়ে আমরা মহৎ শিক্ষা পাই। 

রামায়ণে রাম-রাবণের যুদ্ধ উপলক্ষ্য মাত্র, মূলত রচয়িতারা ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও আদর্শকে প্রকাশের সংগে সংগে রাম-সীতার দাম্পত্য প্রেমকে মহিমান্বিত করা উদ্দেশ্য ছিল। বাল্মীকি রামায়ণে রামকে দেবতা নয়, মানুষ হিসেবেই দেখিয়েছেন, তা না হলে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামায়ণে দেবতারা আপনগুণকে নষ্ট করে মানুষে পরিণত হননি, বরং মানুষই আপন গুণাবলীর জন্য দেবতা হয়ে ওঠেন। ভারতবর্ষে গার্হস্থ্য আশ্রমের যে উচ্চস্থান ছিল এই কাব্য তারই পরিচায়ক। গৃহাশ্রম শুধু যে নিজের সুখের জন্য তা নয়, গৃহাশ্রম সকলকে নিয়ে তার প্রমাণ পাওয়া যায় ‘রামায়ণে’। বাহুবল নয়, জিগীষা নয়, রাষ্ট্রগৌরব নয়, গৃহধর্মের কথাকেই রামায়ণে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

 ২। এপিক কাকে বলে ? রামায়ণ কী যথার্থ এপিকধর্মী কাব্য ?

উত্তরঃ সাধারণ মানুষের ধারণা বীররস প্রধান কাব্যকে এপিক বলা হয়। কারণ যে দেশে, যে কালে বীররসের গৌরব প্রাধান্য পেয়েছে সেই দেশেই, সেইকালে এপিক বীররস প্রধান হয়ে পড়েছে। রামায়ণে সীতার অপহরণকে কেন্দ্র করে রাম-রাবণের যুদ্ধ সংঘটিত হয়। সেখানে দেখা যায় রামের অসাধারণ যুদ্ধকৌশল ও বাহুবল। তা সত্ত্বেও রামায়ণ বীররস প্রধান কাব্য নয়। রামায়ণে বাহুবলের গৌরব ঘোষিত হয়নি, মূলত মূখ্য বর্ণনার বিষয় ছিল ভারতীয় ঐতিহ্য ও আদর্শ। সৌভ্রাত্র, সত্যপরতা, পাতিব্রতা, প্রভুভক্তিকে দেখানোই রচয়িতার উদ্দেশ্য ছিল। সুতরাং এই অর্থে রামায়ণ এপিক নয়।

৩। রামায়ণ মহাকাব্যটি রবীন্দ্রনাথের চোখে কী দৃষ্টিতে দেখা গিয়েছে ?

উত্তরঃ প্রাচীন আর্যসভ্যতার দুইটি ধারার মধ্যে একটি ধারা ইউরোপে আসে। সেই ইউরোপীয় ধারা থেকে সৃষ্টি মহাকবি হোমারের ইলিয়ড ও ওডিসি নামে দুইটি মহাকাব্যের। আর আরেকটি ধারা প্রবাহিত ভারতে। সেই ভারতীয় ধারা থেকে সৃষ্ট রামায়ণ-মহাভারত নামে দুইটি বিশালাকার মহাকাব্যের। রামায়ণ-মহাভারতকে শুধু মহাকাব্য বললে ভুল হবে, তা ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাসও বটে। যুগ-যুগ ধরে ভারতভূমিতে রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত অব্যাহত, হয়তো তাঁদের রচয়িতাদের নাম আজ ততটা সকলের স্মরণে নেই কিন্তু তাঁদের রচিত এই দুইটি মহাকাব্য মানব হৃদয়ে চিরবিরাজিত। যার মাধ্যমে প্রকাশিত হয় ভারতীয় ঐতিহ্য ও আদর্শ। ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের আত্মত্যাগ, পিতার কথার মর্যাদা রাখতে পুত্রের বনবাস গমন, স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি নিষ্ঠা ও প্রজার প্রতি রাজার কর্তব্য এসব কিছুর মধ্য দিয়ে আমরা মহৎ শিক্ষা পাই। 

রামায়ণে রাম-রাবণের যুদ্ধ উপলক্ষ্য মাত্র, মূলত রচয়িতারা ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও আদর্শকে প্রকাশের সংগে সংগে রাম-সীতার দাম্পত্য প্রেমকে মহিমান্বিত করা উদ্দেশ্য ছিল। বাল্মীকি রামায়ণে রামকে দেবতা নয়, মানুষ হিসেবেই দেখিয়েছেন, তা না হলে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামায়ণে দেবতারা আপনগুণকে নষ্ট করে মানুষে পরিণত হননি, বরং মানুষই আপন গুণাবলীর জন্য দেবতা হয়ে ওঠেন। ভারতবর্ষে গার্হস্থ্য আশ্রমের যে উচ্চস্থান ছিল এই কাব্য তারই পরিচায়ক। গৃহাশ্রম শুধু যে নিজের সুখের জন্য তা নয়, গৃহাশ্রম সকলকে নিয়ে তার প্রমাণ পাওয়া যায় ‘রামায়ণে’। বাহুবল নয়, জিগীষা নয়, রাষ্ট্রগৌরব নয়, গৃহধর্মের কথাকেই রামায়ণে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

৪। রামায়ণের মূল সুর কী ?

অথবা, 

রামায়ণ মহাকাব্য সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের মন্তব্যগুলি আলোচনা করো।

উত্তরঃ প্রাচীন আর্যসভ্যতার দুটি ধারার একটি ধারা প্রবাহিত ভারতে। সেই ভারতীয় ধারা থেকে সৃষ্ট রামায়ণ এবং মহাভারত নামে দুটি, মহাকাব্য। এই দুটি কাব্যকে শুধু মহাকাব্য বললে ভুল হবে, তা লেখকের মতে ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাসও বটে। যুগ যুগ ধরে ভারত ভূমিতে রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত অব্যাহত। যার মাধ্যমে প্রকাশিত হয় ভারতীয় ঐতিহ্য এবং ঐক্য আর আদর্শ।

লেখকের মতে, রামায়ণের প্রধান বিশেষত্ব এই যে, তাহা ঘরের কথাকেই অত্যন্ত বৃহৎ করিয়া দেখাইয়াছে।’ ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের আত্মত্যাগ, পিতার সত্যপালনে পুত্রের বনবাস গমণ, স্বামী-

স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি নিষ্ঠা ও প্রেম, ধর্মের বন্ধন রামায়ণ তাকে এত‌ মহৎ করে তুলে ধরেছে যে তা অতি সহজেই মহাকাব্যের উপযোগী হয়ে উঠেছে। প্রজার প্রতি রাজার কর্তব্য পালন এসব কিছুর মধ্য দিয়ে আমরা মহৎ মূল্যবোধের শিক্ষা পাই।‌ রামায়ণে রাম-রাবণের যে যুদ্ধ তা উপলক্ষ মাত্র। মূলত রচয়িতাদের ভারতবর্ষের ঐতিহ্য‌ ও আদর্শকে প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে রাম-সীতার দাম্পত্য প্রেমকে মহিমান্বিত করা উদ্দেশ্য ছিল। বাল্মীকি, রামায়ণে রামকে দেবতা হিসেবে নয় মানুষ হিসেবেই দেখিয়েছেন তা নাহলে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামায়ণে দেবতারা আপন গুণকে নষ্ট করে, মানুষে পরিণত হন নি, বরং মানুষই নিজের গুণাবলির জন্য দেবতা হয়ে ওঠেন। ভারতবর্ষে গার্হস্ত্য আশ্রমের যে উচ্চ স্থান ছিল এই কাব্য তারই পরিচয় প্রদান করে।গৃহাশ্রম শুধু যে নিজের সুখের জন্য তা নয়, গৃহাশ্রম সকলকে নিয়ে, তার প্রমাণ পাওয়া যায় ‘রামায়ণ’ নামক এই মহাকাব্যে। বাহুবল নয়, রাষ্ট্রগৌরব নয়, গৃহধর্মের কথাকেই রামায়ণে প্রধান রূপে স্থান দেওয়া হয়েছে।

 সম্প্রসঙ্গ ব্যাখ্যা

১। ‘‘এইজন্যই শতাব্দীর পর শতাব্দী যাইতেছে কিন্তু রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত ভারতবর্ষে আর লেশমাত্র শুষ্ক হইতেছেনা।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রামায়ণ মহাভারত দীর্ঘকাল ধরে ভারতীয় ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শনকে নিজের মধ্যে বহন করে চলেছে এখানে তারই কথা বলা হয়েছে।

 ‘রামায়ণ’ – ‘মহাভারতে’ ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শ প্রতিফলিত। তাই শতাব্দীর পর শতাব্দী রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত ভারতে অপ্রতিহত। প্রতিদিন গ্ৰামে – গ্রামে, ঘরে-ঘরে তা পাঠ হয়। এমনকি মুদির দোকান থেকে রাজার প্রাসাদ পর্যন্ত সকলস্থানেই তা সমান সমাদরে গৃহীত। ‘রামায়ণ’ ‘মহাভারতে’-র কবিদের নাম মানুষের স্মরণে ততটা না থাকলেও তাঁদের সৃষ্ট এই দুটি মহাকাব্য শতাব্দীর পর শতাব্দী নর-নারীর দ্বারে – দ্বারে শক্তিও শান্তি বহন করতেছে। যা বিগতকালের পলিমৃত্তিকা আনয়ন করে ভারতবর্ষের চিত্তভূমিকে উর্বরা করে রাখে।

২। “ ভারতবর্ষে যাহা সাধনা, যাহা আরাধনা, যাহা সংকল্প। তাহারই ইতিহাস এই দুইবিপুল কাব্যকর্মের মধ্যে চিরকালের সিংহাসনে বিরাজমান।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দনাথ ঠাকুরের ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রামায়ণ মহাভারত শুধু মহাকাব্য নয়, ইহা যে ভারতবর্ষের সাধনা, আরাধনা, সংকল্পের ইতিহাস, ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাস তা-ই এখানে ব্যক্ত হয়েছে।

রামায়ণ-মহাভারতকে শুধুমাত্র ভারতবর্ষের দুটি মহাকাব্য বলে আখ্যায়িত করলে তার সম্পর্কে সব কথা বলা হয়না, এই দুটি মহাকাব্য আমাদের দেশের ইতিহাসও বটে।

তাতে ভারতবর্ষের প্রাচীন ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শ নিহিত। তা-ই শতাব্দীর পর শতাব্দী রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত ভারতবর্ষে প্রবাহিত। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে, ঘরে-ঘরে মানুষ পাঠ করে থাকেন। এমনকি মুদির দোকান হতে রাজার প্রাসাদ পর্যন্ত এই দুটি মহাকাব্য সমান সমাদরে গৃহীত। ভারতবর্ষের এই ইতিহাসের পরিবর্তন নেই, ইহা ভারতবর্ষে চিরকালের ইতিহাস। ভারতবর্ষের সাধনা, আরাধনা ও সংকল্পের ইতিহাস এই দুটি মহাকাব্যের মধ্যে অন্তর্নিহিত।

৩। “এমন অবস্থায় রামায়ণ মহাভারতের কেবলমাত্র মহাকাব্য বললে চলবেনা, তা ইতিহাস বটে।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রামায়ণ মহাভারত শুধু মহাকাব্য নয়, ইহা ভারতবর্ষের সাধনা, আরাধনা, সংকল্পের ইতিহাস, ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাস এখানে তা-ই ব্যক্ত হয়েছে।

রামায়ণ-মহাভারতকে শুধুমাত্র ভারতবর্ষের দুটি মহাকাব্য বলে আখ্যায়িত করলে তার সম্পর্কে সব কথা বলা হয়না, এই দুটি মহাকাব্য আমাদের দেশের ইতিহাসও বটে।

তাতে ভারতবর্ষের প্রাচীন ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শ নিহিত। তা-ই শতাব্দীর পর শতাব্দী রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত ভারতবর্ষে প্রবাহিত। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে, ঘরে-ঘরে মানুষ পাঠ করে থাকেন। এমনকি মুদির দোকান হতে রাজার প্রাসাদ পর্যন্ত এই দুটি মহাকাব্য সমান সমাদরে গৃহীত। ভারতবর্ষের এই ইতিহাসের পরিবর্তন নেই, ইহা ভারতবর্ষে চিরকালের ইতিহাস। ভারতবর্ষের সাধনা, আরাধনা ও সংকল্পের ইতিহাস এই দুটি মহাকাব্যের মধ্যে অন্তর্নিহিত।

৪। রামায়ণে দেবতা নিজেকে খর্ব করিয়া মানুষ করেন নাই মানুষই নিজস্বগুণে দেবতা হইয়া উঠিয়াছেন।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রামায়ণে দেবতা নিজেকে খর্ব করে মানুষে নামিয়ে আনেননি বরং মানুষই আপনগুণে দেবতায় পরিণত হয়েছে এখানে তা-ই বলা হয়েছে।

মহর্ষি বাল্মীকির ‘রামায়ণ’এর প্রধান বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হল দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। তাঁকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য চরিত্রের সৃষ্টি। বাল্মীকির কাছে রামচন্দ্র কোনো অবতার ছিলেননা। তিনি রক্তমাংসে গড়া মানুষ ছিলেন। বাল্মীকি রামায়ণে’ যদি মানুষ হিসেবে রামচন্দ্রকে না দেখাতেন তবে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামচন্দ্র মানুষ বলেই মহিমান্বিত। বাল্মীকি ‘রামায়ণে’ রামচন্দ্রকে সর্বগুণের অধিকারী নরচন্দ্রমারূপে নির্মাণ করেছেন। তিনি কোনো দেবতা ছিলেননা বা দেবতা নিজেকে খর্ব করে মানুষের স্থানে নামিয়ে এনেছেন তাও নয়, তিনি আপনগুণেই দেবতা সমতুল্য হয়ে উঠেন।

৫। “রামায়ণের প্রধান বিশেষত্ব এই যে, তাহা ঘরের কথাকে অত্যন্ত বৃহৎ কঢ়ি দেখাইয়াছে।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। রামায়ণ যে গৃহাশ্রমের কাব্য এখানে তা-ই ব্যক্ত হয়েছে।

 ‘রামায়ণে’ গার্হস্থ্য ধর্মের প্রাধান্য রয়েছে। রামায়ণে’ দেখা যায় পুত্র পিতার কথার মর্যাদা রক্ষার্থে বনবাসে যান, তাঁর অনুগামিনী হন স্ত্রী। যে গৃহের সকল সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে স্বামীর সংগে বনবাসে গিয়েছিলেন, এছাড়াও ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের গভীর ভালোবাসা দেখা যায়, যে আত্মসুখ ত্যাগ করে অগ্রজের সহযাত্রী হয়। এসব কিছুর মধ্য দিয়ে গার্হস্থ্য জীবনকে বড় করে দেখানো হয়। ভারতবর্ষে যে গৃহাশ্রমের উচ্চস্থান ছিল তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় ‘রামায়ণে’। এটি ‘রামায়ণে’-র প্রধান বিশেষত্ব রূপে পরিগণিত।

৬। “মানুষ বলিয়াই রামচরিত্র মহিমান্বিত।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। মানুষ বলেই যে রামচন্দ্রের চরিত্র মহিমান্বিত এখানে তা-ই ব্যক্ত হয়েছে। মহর্ষি বাল্মীকির ‘রামায়ণ’এর প্রধান বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হল দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। তাঁকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য চরিত্রের সৃষ্টি। বাল্মীকির কাছে রামচন্দ্র কোনো অবতার ছিলেননা। তিনি রক্তমাংসে গড়া মানুষ ছিলেন। বাল্মীকি রামায়ণে’ যদি মানুষ হিসেবে রামচন্দ্রকে না দেখাতেন তবে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামচন্দ্র মানুষ বলেই মহিমান্বিত। বাল্মীকি ‘রামায়ণে’ রামচন্দ্রকে সর্বগুণের অধিকারী নরচন্দ্রমারূপে নির্মাণ করেছেন। তিনি কোনো দেবতা ছিলেননা বা দেবতা নিজেকে খর্ব করে মানুষের স্থানে নামিয়ে এনেছেন তাও নয়, তিনি আপনগুণেই দেবতা সমতুল্য হয়ে উঠেন।

৭। “ইউরোপের ধারা দুই মহাকাব্যে এবং ভারতের ধারা দুই মহাকাব্যের আপনার কথাও সংগীতকে রক্ষা করিয়াছে।”

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘রামায়ণ ‘প্রবন্ধ থেকে গৃহীত। এখানে প্রাচীন আর্য সভ্যতার দুই ধারার দুই মহাকাব্যের কথা এখানে বলা হয়েছে।

প্রাচীন আর্য সভ্যতার দুটি ধারা একটি ইউরোপে আরেকটি ভারতে প্রবাহিত হয়েছে। ইউরোপের ধারায় সৃষ্ট ‘ইলিয়ড’ এবং ‘ওডিসি’ নামে দুইটি মহাকাব্য। আর ভারতীয় ধারায় ‘রামায়ণ’ ও ‘মহাভারত’ নামে দুটি মহাকাব্যের জন্ম। ‘রামায়ণ’ও ‘মহাভারতে ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শ প্রতিফলিত কিন্তু ইলিয়ড এবং ওডিসিতে গ্রীস তার সমগ্র প্রকৃতিকে তুলে ধরতে পেরেছেন কিনা বলা দুঃসাধ্য তবে ভারতীয় মহাকাব্যে ভারতবর্ষের সবকিছুই উঠে আসতে দেখা যায়।

৮। “রামায়ণের প্রধান বিশেষত্ব এই যে, তাহা ঘরের কথাকেই অত্যন্ত বৃহৎ করিয়া দেখাইয়াছে।”

উত্তরঃ আলোচ্য ব্যাখ্যানীয় অংশটুকু লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘রামায়ণ’ নামক রচনা থেকে নেওয়া হয়েছে।

এখানে লেখকের দ্বারা ‘রামায়ণ’ নামক মহাকাব্যের অন্তরের কথা প্রকাশিত হয়েছে।

গৃহাশ্রম ভারতবর্ষীয় আর্য সমাজের ভিত্তি। রামায়ণে সেই গৃহাশ্রম ধর্মকেই দেখানো হয়েছে। এখানে দেখা যায় পিতার প্রতি পুত্রের কর্তব্য-শ্রদ্ধা, রামচন্দ্রের পিতা দশরথের কথার মর্যাদা রক্ষার্থে বনবাসে গমন, স্ত্রী সীতাদেবী সকল প্রকার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে স্বামীর সঙ্গে বনবাসে গমন, এছাড়াও ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের গভীর ভালোবাসা দেখা যায়, যে আত্মসুখ ত্যাগ করে অগ্রজের সহযাত্রী হয়। এসব কিছু আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় শুধুমাত্র গৃহ নিজের সুখের জন্য নয়, সকলকে নিয়েই গৃহ হয়। এসব কিছুর মধ্য দিয়ে গার্হস্থ্য জীবনকে বড় করে দেখানো হয়েছে। ভারতবর্ষে যে গৃহাশ্রমের উচ্চ স্থান ছিল তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় ‘রামায়ণে’। এটি রামায়ণের প্রধান বিশেষত্ব রূপে পরিগণিত।

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। রবীন্দ্রনাথ কাব্যকে কয়ভাগে ভাগ করেছেন ও কি কি ?

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ কাব্যকে দু’ভাগে ভাগ করেছেন। যথা –

(১) একলা কবির কথা থাকা কাব্য।

(২) বৃহৎ সম্প্রদায়ের কথা যুক্ত কাব্য।

২। “ইউরোপের ধারা দুই মহাকাব্যে এবং ভারতের ধারা দুই মহাকাব্যে আপন কথা ও সংগীতকে রক্ষা করিয়াছে।” – ইউরোপের দুটি মহাকাব্যের নাম কী ? 

উত্তরঃ ইলিয়ড ও ওডিসি (লেখক হোমার)

৩। “রামায়ণের প্রধান বিশেষত্ব এই যে তাহা ঘরের কথাকে অত্যন্ত বৃহৎ কবিয়া দেখাইয়াছে।’’ – লেখকের অনুসরণে উক্তিটির তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও। 

উত্তরঃ ‘রামায়ণে’ গার্হস্থ্য ধর্মের প্রাধান্য রয়েছে। রামায়ণে’ দেখা যায় পুত্র পিতার কথার মর্যাদা রক্ষার্থে বনবাসে যান, তাঁর অনুগামিনী হন স্ত্রী। যে গৃহের সকল সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে স্বামীর সংগে বনবাসে গিয়েছিলেন, এছাড়াও ভাইয়ের প্রতি ভাইয়ের গভীর ভালোবাসা দেখা যায়, যে আত্মসুখ ত্যাগ করে অগ্রজের সহযাত্রী হয়। এসব কিছুর মধ্য দিয়ে গার্হস্থ্য জীবনকে বড় করে দেখানো হয়। ভারতবর্ষে যে গৃহাশ্রমের উচ্চস্থান ছিল তাঁর প্রমাণ পাওয়া যায় ‘রামায়ণে’। এটি ‘রামায়ণে’-র প্রধান বিশেষত্ব রূপে পরিগণিত।

৪। “এই জন্যই শতাব্দীর পর শতাব্দী যাইতেছে, কিন্তু রামায়ণ মহাভারতের স্রোত ভারতবর্ষে আর, লেশমাত্র শুষ্ক হইতেছে না।” উদ্ধৃতিটির অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ ‘রামায়ণ’ – ‘মহাভারতে’ ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শ প্রতিফলিত । তাই শতাব্দীর পর শতাব্দী রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত ভারতে অপ্রতিহত। প্রতিদিন গ্ৰামে – গ্রামে, ঘরে-ঘরে তা পাঠ হয়। এমনকি মুদির দোকান থেকে রাজার প্রাসাদ পর্যন্ত সকলস্থানেই তা সমান সমাদরে গৃহীত। ‘রামায়ণ’ ‘মহাভারতে’-র কবিদের নাম মানুষের স্মরণে ততটা না থাকলেও তাঁদের সৃষ্ট এই দুটি মহাকাব্য শতাব্দীর পর শতাব্দী নর-নারীর দ্বারে – দ্বারে শক্তিও শান্তি বহন করতেছে। যা বিগতকালের পলিমৃত্তিকা আনয়ন করে ভারতবর্ষের চিত্তভূমিকে উর্বরা করে রাখে।

৫। “গৃহাশ্রম ভারতবর্ষীয় আর্যসমাজের ভিত্তি। রামায়ণ এই আশ্রমের কাব্য।” – তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

অথবা,

 “আমাদের দেশে গার্হস্থ্য আশ্রমের যে অত্যন্ত উচ্চস্থান ছিল এই কাব্যে তাহা সপ্রমাণ করিতেছে।” অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বর্ণনা করো।

উত্তরঃ গৃহাশ্রম ভারতবর্ষীয় আর্যসমাজের ভিত্তি। রামায়ণে সেই গৃহাশ্রম ধর্মকেই দেখানো  হয়েছে।

পিতার কথার মর্যাদা রক্ষার্থে পুত্রের বনবাসে গমন, স্ত্রী সকল প্রকার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ত্যাগ করে স্বামীর সঙ্গে বনবাসে যাত্রা, ভাইয়ের জন্য ভাইয়ের ত্যাগ স্বীকার । এসব কিছু আমাদের শিক্ষা দেয় শুধুমাত্র গৃহ নিজের সুখের জন্য নয়, সকলকে নিয়েই গৃহ হয় । গৃহাশ্রমই মানুষকে যথার্থ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলত। ফলে আমাদের দেশে এই গার্হস্থ্য আশ্রমের স্থান ছিল অত্যন্ত উচ্চে।

৬। “দেবতার অবতার লীলা নিয়ে রামায়ণ মহাকাব্য রচিত হয়নি ।” – অর্থ পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ মহর্ষি বাল্মীকির ‘রামায়ণ’এর প্রধান বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হল দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। তাঁকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য চরিত্রের সৃষ্টি। বাল্মীকির কাছে রামচন্দ্র কোনো অবতার ছিলেননা। তিনি রক্তমাংসে গড়া মানুষ ছিলেন। বাল্মীকি রামায়ণে’ যদি মানুষ হিসেবে রামচন্দ্রকে না দেখাতেন তবে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামচন্দ্র মানুষ বলেই মহিমান্বিত। বাল্মীকি ‘রামায়ণে’ রামচন্দ্রকে সর্বগুণের অধিকারী নরচন্দ্রমারূপে নির্মাণ করেছেন। তিনি কোনো দেবতা ছিলেননা বা দেবতা নিজেকে খর্ব করে মানুষের স্থানে নামিয়ে এনেছেন তাও নয়, তিনি আপনগুণেই দেবতা সমতুল্য হয়ে উঠেন।

৭। ভারতবর্ষের দুটি মহাকাব্যের নাম কী ?

উত্তরঃ রামায়ণ ও মহাভারত।

৮। “তাঁহাদের ঋণ কোন কালে পরিশোধ হইবার নহে” – রবীন্দ্রনাথ এখানে কাদের কাছে কোন্ ঋণের কথা বলেছেন, বুঝিয়ে দাও।

উত্তরঃ স্রষ্টা বা রচয়িতার দুটি ভাগ – একটি জাতি সত্যকে প্রাধান্য দেয়, যারা বাস্তব সত্যের সন্ধানের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে থাকেন। তাঁদের কাছে কাব্য প্রকৃতির দর্পন মাত্র। তাঁরা জগতের অনেক কাজ করে থাকেন।রবীন্দ্রনাথের মতে তাঁদের কাছে মানবজাতি চিরঋণী। অন্যদিকে যাঁরা বলেছেন, “ভূমৈব সুখং ভূমাত্বের বিজিজ্ঞাসিতব্যঃ” অর্থাৎ যাঁরা সমস্ত পরিণামের মধ্যে পূর্ণতাকে পায়। খণ্ডতার মধ্যে লাবণ্য খুঁজে, বিরোধের মধ্যে শান্তি অনুভব করেছেন তাঁদের ঋণও রবীন্দ্রনাথের মতে কোনো কালে কোনো ভাবে পরিশোধ করা সম্ভব নয়।

৯। “রামায়ণে দেবতা নিজেকে খর্ব করিয়া মানুষ করেন নাই, মানুষই নিজগুণে দেবতা হইয়া উঠিয়াছেন। – অর্থ পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ মহর্ষি বাল্মীকির ‘রামায়ণ’এর প্রধান বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হল দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। তাঁকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য চরিত্রের সৃষ্টি। বাল্মীকির কাছে রামচন্দ্র কোনো অবতার ছিলেননা। তিনি রক্তমাংসে গড়া মানুষ ছিলেন। বাল্মীকি রামায়ণে’ যদি মানুষ হিসেবে রামচন্দ্রকে না দেখাতেন তবে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামচন্দ্র মানুষ বলেই মহিমান্বিত। বাল্মীকি ‘রামায়ণে’ রামচন্দ্রকে সর্বগুণের অধিকারী নরচন্দ্রমারূপে নির্মাণ করেছেন। তিনি কোনো দেবতা ছিলেননা বা দেবতা নিজেকে খর্ব করে মানুষের স্থানে নামিয়ে এনেছেন তাও নয়, তিনি আপনগুণেই দেবতা সমতুল্য হয়ে উঠেন।

১০। “ এমন অবস্থায় রামায়ণ-মহাভারতকে কেবলমাত্র মহাকাব্য বলিলে চলিবেনা, তাহা ইতিহাসও বটে। – অর্থ পরিস্ফুট করো।

অথবা, 

রামায়ণ-মহাভারতকে ইতিহাস বলা হয় কেন ?

অথবা, 

‘‘রামায়ণ-মহাভারত ভারতবর্ষের চিরকালের ইতিহাস।”- উদ্ধৃতিটির অর্থ পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ রামায়ণ-মহাভারতকে শুধুমাত্র ভারতবর্ষের দুটি মহাকাব্য বলে আখ্যায়িত করলে তার সম্পর্কে সব কথা বলা হয়না, এই দুটি মহাকাব্য আমাদের দেশের ইতিহাসও বটে।

তাতে ভারতবর্ষের প্রাচীন ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শ নিহিত। তা-ই শতাব্দীর পর শতাব্দী রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত ভারতবর্ষে প্রবাহিত। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে, ঘরে-ঘরে মানুষ পাঠ করে থাকেন। এমনকি মুদির দোকান হতে রাজার প্রাসাদ পর্যন্ত এই দুটি মহাকাব্য সমান সমাদরে গৃহীত। ভারতবর্ষের এই ইতিহাসের পরিবর্তন নেই, ইহা ভারতবর্ষে চিরকালের ইতিহাস। ভারতবর্ষের সাধনা, আরাধনা ও সংকল্পের ইতিহাস এই দুটি মহাকাব্যের মধ্যে অন্তর্নিহিত।

১১। “ভারতবর্ষে যাহা সাধনা, যাহা আরাধনা, যাহা সংকল্প, তাহারই ইতিহাস এই দুই বিপুল কাব্যকর্মের মধ্যে চিরকালের সিংহাসনে বিরাজমান। – অর্থ পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ মহর্ষি বাল্মীকির ‘রামায়ণ’এর প্রধান বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হল দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। তাঁকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য চরিত্রের সৃষ্টি। বাল্মীকির কাছে রামচন্দ্র কোনো অবতার ছিলেননা। তিনি রক্তমাংসে গড়া মানুষ ছিলেন। বাল্মীকি রামায়ণে’ যদি মানুষ হিসেবে রামচন্দ্রকে না দেখাতেন তবে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামচন্দ্র মানুষ বলেই মহিমান্বিত। বাল্মীকি ‘রামায়ণে’ রামচন্দ্রকে সর্বগুণের অধিকারী নরচন্দ্রমারূপে নির্মাণ করেছেন। তিনি কোনো দেবতা ছিলেননা বা দেবতা নিজেকে খর্ব করে মানুষের স্থানে নামিয়ে এনেছেন তাও নয়, তিনি আপনগুণেই দেবতা সমতুল্য হয়ে উঠেন।

১২। “মানুষ বলিয়াই রামচরিত্র মহিমান্বিত” – অন্তর্নিহিত অর্থ পরিস্ফুট করো।

উত্তরঃ মহর্ষি বাল্মীকির ‘রামায়ণ’এর প্রধান বা কেন্দ্রীয় চরিত্র হল দশরথ পুত্র রামচন্দ্র। তাঁকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য চরিত্রের সৃষ্টি। বাল্মীকির কাছে রামচন্দ্র কোনো অবতার ছিলেননা। তিনি রক্তমাংসে গড়া মানুষ ছিলেন। বাল্মীকি রামায়ণে’ যদি মানুষ হিসেবে রামচন্দ্রকে না দেখাতেন তবে রামায়ণের গৌরব হ্রাস হত। রামচন্দ্র মানুষ বলেই মহিমান্বিত। বাল্মীকি ‘রামায়ণে’ রামচন্দ্রকে সর্বগুণের অধিকারী নরচন্দ্রমারূপে নির্মাণ করেছেন। তিনি কোনো দেবতা ছিলেননা বা দেবতা নিজেকে খর্ব করে মানুষের স্থানে নামিয়ে এনেছেন তাও নয়, তিনি আপনগুণেই দেবতা সমতুল্য হয়ে উঠেন।

১৩। “ভারতবর্ষ রামায়ণের মধ্যে অতি প্রাকৃতের অতিশয্য দেখে নাই।” – উদ্ধৃতিটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

উত্তরঃ রামায়ণ সম্পর্কে কোন বিদেশী সমালোচক বলেছিলেন যে, “রামায়ণের চরিত্র বর্ণনা অতিপ্রাকৃত হয়েছে।” তাকে বলা দরকার যে কারো কাছে অতিপ্রাকৃত মনে হলেও অন্যের কাছে তা অতিপ্রাকৃত মনে নাও হতে পারে। কারণ প্রত্যেক দেশেরই নিজস্ব ঐতিহ্য ও আদর্শ রয়েছে। তাঁর উপর ভিত্তি করেই কাব্য বা গ্রন্থ রচিত হয়। রামায়ণের ক্ষেত্রে তা-ই ঘটেছে।

১৪। ভারতবর্ষ রামায়ণ মহাভারত আপনাকে আর কিছুই বাকি রাখে নাই।” – অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ কর অথবা পাশ্চাত্য মহাকাব্য ও ভারতীয় মহাকাব্যের মধ্যে পার্থক্য দেখাও।

উত্তরঃ প্রাচীন আর্য সভ্যতার একধারা ইউরোপে আর আরেকটি ধারা ভারতবর্ষে এসেছিল।

ভারতের ধারা থেকে রামায়ণ-মহাভারত নামে দুটি মহাকাব্যের জন্ম হয়। শতাব্দীর পর শতাব্দী ভারতবর্ষে রামায়ণ-মহাভারতের স্রোত প্রবাহিত হয়ে চলছে। প্রতিদিন গ্রামে-গ্ৰামে, ঘরে-ঘরে তা পাঠ হয়। মুদির দোকান হতে শুরু করে রাজার রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত সবজায়গাতেই তা সমান সমাদরে গৃহীত। ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শ রামায়ণ-মহাভারতে প্রতিফলিত।

এককথায় ভারতীয় মহাকাব্যে ভারতবর্ষের সবকিছুই উঠে এসেছে। কিন্তু ইউেরোপের মহাকাব্যে গ্রীস তার সমস্ত প্রকৃতিকে প্রকাশ করতে পেরেছে কিনা তা বলা অসম্ভব।

প্রশ্ন ১৫। ‘ইহার সরল অনুষ্টুপ ছন্দে ভারতবর্ষের সহস্র বৎসরেরর হৃৎপিণ্ড স্পন্দিত হ‌ইয়া আসিয়াছে ।’ – উক্তিটিতে ‘ইহার’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে ?

উত্তরঃ ‘ইহার’ বলতে ‘রামায়ণ’ এবং ‘মহাভারত’ দুটি মহাকাব্যের কথা বলা হয়েছে।

প্রশ্ন ১৬। ‘কবি বাল্মীকির কাছে রাম অবতার ছিলেন না, তিনি ……….. ছিলেন ।’ (শূন্যস্থান পূর্ণ করো)

উত্তরঃ মানুষই।

প্রশ্ন ১৭। ‘আমরা বিদেশী, আমরা নিশ্চয় বলতে পারিনা গ্রীস ও রোম তাহার সমস্ত প্রকৃতিকে তাহার দুই কাব্যে প্রকাশ করিতে পারিয়াছে কিনা, কিন্তু ইহা নিশ্চয় যে ভারতবর্ষ রামায়ণ- মহাভারতে আপনাকে আর কিছুই বাকি রাখে নাই।’ সপ্রসঙ্গ ব্যাখ্যা লেখো।

উত্তরঃ আলোচ্য অংশটুকু লেখক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখিত ‘রামায়ণ’ নামক প্রবন্ধ থেকে গৃহীত।

এখানে রামায়ণ এবং মহাভারতের মধ্যে ভারতের অস্তিত্বের কথা বলা হয়েছে। প্রাচীন আর্য সভ্যতার দুটি ধারা একটি ইউরোপে আরেকটি ভারতে প্রবাহি হয়েছে। ইউরোপের ধারায় সৃষ্ট ‘ইলিয়ড’ এবং ‘ওডিসি’তে গ্রীক তার সমগ্র প্রকৃতিকে তুলে ধরতে পেরেছে কিনা তা বলা আমাদের পক্ষে দুঃসাধ্য কেননা তাদের কাছে আমরা বিদেশী সুতরাং তাদের দেশের খুঁটিনাটি তত্ত্ব পাওয়া আমাদের পক্ষে সহজলভ্য নয়। কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী ভারতবর্ষে রামায়ণ মহাভারতের স্রোত প্রবাহিত হয়ে চলেছে। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে, ঘরে ঘরে তা পাঠ হয়। মুদির দোকান হতে শুরু করে রাজার রাজপ্রাসাদ পর্যন্ত সব জায়গাতেই তা সমান সমাদরে গৃহীত। ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও জীবনাদর্শ রামায়ণ, মহাভারতে প্রতিফলিত। এককথায় ভারতীয় মহাকাব্যে ভারতবর্ষের সবকিছুই উঠে এসেছে।

সংক্ষিপ্ত টীকা লিখঃ

১। রামায়ণ – ভারতবর্ষের দুটি মহাকাব্যের মধ্যে ‘রামায়ণ’ হল একটি। সংস্কৃতে রামায়ণ লিখেছিলেন মহর্ষি বাল্মীকি। বিভিন্ন ভাষায় ‘রামায়ণ’ পরবর্তীকালে অনুবাদ হয়। রামায়ণের মূল কাহিনি ছিল দশরথ পুত্র রাম পিতার কথার মর্যাদা রক্ষার্থে চৌদ্দ বছরের জন্য বনবাসে সস্ত্রীক গিয়েছিলেন। সেখানে রাবণ কর্তৃক সীতা হরণ এবং তাঁকেই কেন্দ্র করে পরবর্তীতে রামচন্দ্রের সীতাকে ত্যাগ করা।

২। মহাভারত – ভারতবর্ষের দুটি মহাকাব্যর মধ্যে ‘মহাভারত হল একটি’। সংস্কৃতে মহাভারত লিখেছিলেন কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব। মহাভারতে মূল কাহিনী হল কৌরব ও পাণ্ডবের যুদ্ধ। বিভিন্ন ভাষায় ‘মহাভারত’ পরবর্তীকালে অনুবাদ হয়। বাংলা ভাষায় রচিত ‘মহাভারত’ এর শ্রেষ্ঠ অনুবাদক কাশীরাম দাস।

৩। ইলিয়ড – ইউরোপের একটি মহাকাব্যের নাম ইলিয়ড। হোমার এই মহাকাব্যটির রচয়িতা। গ্রীস দেশের জীবনাদর্শ ইলিয়ডে বর্ণিত। ইহা সমস্ত গ্রীসদেশের হৃৎপদ্মসম্ভব ও হৃৎপদ্মবাসী ছিল।

৪। ওডিসি – ইউরোপের মহাকাব্যের মধ্যে একটি মহাকাব্য হল ‘ওডিসি’। গ্রীসের কবি হোমার ওডিসি রচনা করেন। ওডিসিতে গ্রীস দেশের জীবনাদর্শের সন্ধান পাওয়া যায়।

৫। হোমার – গ্রীস দেশের কবি হলেন হোমার। তিনি ‘অন্ধ ছিলেন’। ‘ইলিয়ড’ ও ‘ওডিসি’ নামে দুটি মহাকাব্যের রচনা করেন তিনি।

৬। মিল্টন – ইংরেজি সাহিত্যের একজন প্রখ্যাতনামা কবি ছিলেন মিল্টন। ‘প্যারাডাইস নস্ট’ তাঁর বিখ্যাত কাব্যের মধ্যে একটি। মিল্টনের উল্লেখযোগ্য রচনা হল – কোমাস, প্যারাডাইস রিমেইণ্ড, স্যমসন প্রভৃতি।

৭। প্যারাডাইস লস্ট – প্যারাডাইস লস্ট একটি মহাকাব্যের নাম। ইংরেজি সাহিত্যের বিখ্যাত কবি মিলটন রচনা করেন ‘প্যারাডাইস লস্ট’। এটি মোট ১২টি খণ্ডে বিন্যস্ত। শয়তানের প্রভাবে মানুষের জীবনে পতন নেমে আসা, যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে মানুষের পুনরুত্থান এবং স্বর্গ থেকে বিতাড়ন এই সব কাহিনি বর্ণিত হয়েছে প্যারাডাইস লস্টে।

৮। দীনেশ চন্দ্র সেন – দীনেশচন্দ্র সেন রামায়ণ চরিত্র সমালোচক ছিলেন। তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুহৃদবর ছিলেন। দীনেশচন্দ্রসেন তাঁর রামায়ণ চরিত্র-সমালোচনার ভূমিকা লিখে দিতে অনুরোধ করেন রবীন্দ্রনাথকে। রবীন্দ্রনাথ অসুস্থ ও অনবকাশ সত্তেও তাঁর কথাকে অমান্য করতে পারেননি। দীনেশচন্দ্র সেন কবি কথাকে ভক্তের ভাষায় আবৃত্তি করে নিজভক্তির চরিতার্থতা সাধন করেছেন, দিনেশচন্দ্রসেনকে রবীন্দ্রনাথ প্রকৃত সমালোচক বলেন।

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ

১। ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধের লেখক কে?

উত্তরঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।

২। ‘রামায়ণ’ প্রবন্ধটি কোন্ গ্রন্থের অন্তর্গত?

উত্তরঃ প্রাচীন সাহিত্য।

৩। মোটামুটি কাব্যটি কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ?

উত্তরঃ দুইটি ভাগে ভাগ করা যায়।

৪। আমাদের দেশে কয়টি মহাকাব্য আছে ?

উত্তরঃ দুইটি।

৫। গ্রীসের মহাকাব্যের নাম কী ?

উত্তরঃ ইলিড ও অডিসী।

৬। ‘প্যারাডাইস লস্ট’- এর লেখক কে?

উত্তরঃ মিলটন।

৭। ‘কবি হোমার আপন দেশকালের কন্ঠে ভাষা দান করিয়াছিলেন।’- হোমার কোন দেশের কবি ?

উত্তরঃ গ্রীসের।

৮। এপিক কাকে বলে ?

উত্তরঃ বীররস প্রধান কাব্যকেই এপিক বলে।

৯। “ভক্ত দীনেশচন্দ্র সেই পূজা মন্দিরের প্রাঙ্গণে দাঁড়াইয়া আরতি আরম্ভ করিয়াছেন। দীনেশচন্দ্র কে ?

উত্তরঃ ‘রামায়ণ’ মহাকাব্যের সমালোচক।

১০। ………. ভারতবর্ষীয় আর্য সমাজের ভিত্তি। (শূন্যস্থান পূর্ণ কর)

উত্তরঃ গৃহাশ্রম।

১১। মিলটন কে ?

উত্তরঃ মিলটন হল ইংরেজ কবি।

১২। ‘রামায়ণ’ ও ‘মহাভারত’ মহাকাব্যের কবির নাম লেখো। 

উত্তরঃ ‘রামায়ণ’ মহাকাব্যের কবির নাম মহর্ষি বাল্মীকি এবং ‘মহাভারত’ মহাকাব্যের কবির নাম কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব।

১৩। ‘ইলিয়ড’ মহাকাব্যের কবির নাম কী ?

উত্তরঃ হোমার।

১৪। ‘ওডিসি’ মহাকাব্যের কবির নাম কী ?

উত্তরূ – হোমার।

১৫। বাংলা ভাষায় রচিত ‘মহাভারত’ এর শ্রেষ্ঠ অনুবাদকের নাম লেখো।

উত্তরঃ কাশীরাম দাস।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top