Bisistarthaka Sabda ba Bagdhara in Bengali Grammar | বিশিষ্টার্থক শব্দ বা বাগধারা

Bisistarthaka Sabda ba Bagdhara in Bengali Grammar | বিশিষ্টার্থক শব্দ বা বাগধারা Notes to each chapter is provided in the list so that you can easily browse throughout different chapter Bisistarthaka Sabda ba Bagdhara in Bengali Grammar | বিশিষ্টার্থক শব্দ বা বাগধারা and select needs one.

Bisistarthaka Sabda ba Bagdhara in Bengali Grammar | বিশিষ্টার্থক শব্দ বা বাগধারা

Join Telegram channel

These Grammar are part of SCERT Syllabus. Here we have given Bisistarthaka Sabda ba Bagdhara in Bengali Grammar | বিশিষ্টার্থক শব্দ বা বাগধারা, You can practice these here.

SEBA Class 9 Bengali Medium Solutions

SEBA Class 10 Bengali Medium Solutions

বিশিষ্টার্থক শব্দ বা বাগধারা

আলালের ঘরের দুলাল (বড়লোকের অপদার্থ সন্তান)—আলালের ঘরের দুলালেরা অযথা অর্থব্যয়ে স্ফূর্তি করে বেড়ায়।

উভয় সংকট (দুই রকমের বিপদের মাঝামাঝি পতিত হওয়া)– আমার এখন উভয় সংকট, দিদি-জামাইবাবুর ঝগড়ায় কাকে ধরি কাকে ছাড়ি।

কড়ায়-গণ্ডায় (পুরাপুরি)—গৃহ-কর্তা বাড়ির ভাড়া কড়ায়-গণ্ডায বুঝে নিলেন।

কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা (দুঃখের উপরে অধিক দুঃখ)—স্বামীহারা নারীকে চিকিৎসায় গাফিলতি ব্যাপারে দোষারোপ করে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিও না।

চোখের বালি (বিরক্তি উদ্রেককারী ব্যক্তি)–কেন আমি তোমার চোখের বালি হলাম জানি না, আমাকে তুমি একেবারে সহ্য করতে পার না দেখি।

ডানহাতের ব্যাপার (ভোজন)—বর বিবাহ করতে থাকুক, ততক্ষণে আমরা ডানহাতের ব্যাপারটা সেরে ফেলি চল।

তেলে বেগুনে জ্বলে উঠা (খুব রাগ করা)—বাজারের ব্যাগটিতে দোক্তা দেখতে না পেয়ে ঠাকুরমা বাবার উপর তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন।

তুলসী বনের বাঘ (ছদ্মবেশী)—সাধুবেশধারী লোকটির কাপড়ের নীচে একটা ছোরা পাওয়া গেল, এইরূপ তুলসী বনের বাঘ হতে সাবধান থেকো।

তাসের ঘর (ভঙ্গুর)—আগ্নেয়গিরির আশেপাশে বাড়িগুলি তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ল।

জিলিপির প্যাচ (কূটবুদ্ধি)—দেখতে তো বেশ সহজ সরল মনে হয়, তার পেটে কি এমন জিলিপি প্যাঁচ ছিল?

টাকার কুমীর (বিপুল ধনের অধিকারী)—অসৎ পথে উপার্জন করে আজ টাকার কুমীর হয়েছ, তোমার মুখে জনসেবার নাম শুনলে ঘৃণা হয়।

ঠোটকাটা (স্পষ্টবক্তা)—সুবীরের মতো ঠোঁটকাটা ছেলে খুব কম দেখেছি, যা চিন্তা করল, তাই বলে দিল।

দক্ষযক্ষ (হৈ-হট্টগোল)—সভায় এইরূপ দক্ষযজ্ঞের মধ্যে মূল বক্তব্য উত্থাপন না করাই ভাল।

ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির (অত্যন্ত সৎ ব্যক্তি)—ডাকাতদের আক্রমণের সময় ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির সাজলে নিজের ক্ষতি ছাড়া লাভ হবে না।

ননীর পুতুল (শ্রমবিমুখ)—এমন ননীর পুতুল তরুণদের নিয়ে দেশ গঠন সম্ভব নয়।

অগস্ত্য যাত্রা (শেষ যাত্রা) -এই যাত্রাই তার অগস্ত্য যাত্রা হল।

পুকুর চুরি (সমূলে চুরি)—গতরাত্রিতে বিশ্বম্ভরবাবুর আমবাগানে পুকুর চুরি হয়েছে, ফলগুলি তো নিয়ে গেছে, গাছগুলিকেও নষ্ট করে দিয়াছে।

উত্তম-মধ্যম দেওয়া (ভাল ভাবে মারা) – চোরটি ধরা পড়লে গ্রামবাসীরা তাকে বেশ উত্তম-মধ্যম দিয়ে বিদায় করে দিল।
কলুর বলদ (পর-চালিত ব্যক্তি)–“মা আমায় ঘুরাবি কত, কলুর চোখ-বাঁধা বলদের মত?”

বাংলা শব্দ-সম্ভার

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত শব্দাবলিকে আমরা মোটামুটি পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করতে পারি—(১) তৎসম (২) তদ্ভব (৩) অর্ধ-তৎসম (৪) দেশি ও (৫) বিদেশি।

তৎসম শব্দ – যে সমস্ত শব্দ সংস্কৃত থেকে সরাসরি বাংলা ভাষায় এসে অরিকৃত রূপে চলেছে, তাদের তৎসম শব্দ বলে। যেমন – পিতা, মাতা, শিক্ষালয়, আচার্য, শিক্ষক প্রভৃতি।

তদ্ভব শব্দ – যে-সমস্ত শব্দ ‘সংস্কৃত’ শব্দভাণ্ডার থেকে যাত্রা করে প্রাকৃত ভাষার পথে নির্দিষ্ট নিয়মে ধারাবাহিক : বিবর্তনের মধ্য দিয়ে এসে নূতনরূপে বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে, তাদেরকে তদ্ভব বা প্রাকৃতজ শব্দ বলে।

যেমন –

সংস্কৃত – প্রাকৃত – তদ্ভব।

কৃষ্ণ > কন্হ > কানু, কানাই।

কর্ণ > কনণ > কান।

চন্দ্ৰ > চান্দ > চাঁদ।

বধূ > বহু > বউ।

অদ্য > অজ্জ > আজ।

রাধিকা > রাহিআ > রাই।

সন্ধ্যা > সঞঝা > সাঁঝ।

হস্ত > হথ > হাত।

কয়েকটি সংস্কৃত ক্রিয়াও প্রাকৃতের মধ্য দিয়ে তদ্ভব রূপে বাংলায় এসেছে –

সংস্কৃত – প্রাকৃত – তদ্ভব।

খাদতি > খাতাই > খায়।

প্রবিশতি > পবিসই > পৈশে, পশে।

কথয়তি > কহেই > কহে, কয়।

শূণোতি > সুণই > শুনে, শোন।

আমাদের অতি-পরিচিত কয়েকটি তদ্ভব শব্দ কোন্ সংস্কৃত শব্দ হতে উদ্ভূত হয়, জেনে রাখ।

অধস্তাৎ–হেঁট।

অপর — আর।

অপস্মরতি–পাসরে। 

অবিধবা—এয়ো।

অষ্টাদশ—আঠারো। 

অশীতি—আশি।

আকর্ষণী—আঁকষি।

আদিত্য—আইচ (পদবী)।

উপাধ্যায়—ওঝা। 

এতদ্—এই।

একাদশ–এগারো। 

কঙ্কণ—কাঁকন। 

কর্কট–কাঁকড়া।

কাঙ্ক্ষা—খাঁই।

কীদৃশন—কেন। 

কুটজ—কুড়চি। 

কুটির—কঁড়ে।

কুণ্ঠিত—কঁড়ে (অলস)।

দীপাবলী—দেওয়ালি। 

পতঙ্গ—ফড়িং।

পরীক্ষা—পরখ। 

ময়া—মুই।

মাতা—মা।

ভদ্রক—ভালো।

মণ্ডপ—মেরাপ। 

ষোড়শ—ষোল।

লঘুক—হালকা।

হরিদ্রা—হলুদ।

সূত্রধর–ছুতার।

সংবরণ—সামলানো। 

সর্ব—সব।

সৌভাগ্য—সোহাগ, সোহাগা।

হড্ড—হাড়।

হস্তী—হাতি।

খাঁটি বাংলা বলতে এইসব তদ্ভব শব্দকেই বুঝায়। বাংলা ভাষা ভাণ্ডারের প্রায় অর্ধেক এই শ্রেণির শব্দে পূর্ণ। তদ্ভব শব্দ বাংলা ভাষার প্রাণ, আর তৎসম শব্দ তার অলংকার।

অর্ধ-তৎসম শব্দ – যে সমস্ত সংস্কৃত শব্দ প্রাকৃতের পথ না ধরে সরাসরি বাংলা ভাষায় আসতে চেয়েছে, অথচ তৎসম শব্দের মতো নিজের রূপটি অটুট রাখতেও পারে নি, তাদের সেই বিকৃত রূপকেই অর্ধ-তৎসম শব্দ বলে।

যেমন–

কৃষ্ণ–কেষ্ট। 

বৈষ্ণব—বোষ্টম। 

উৎসন্ন—উচ্ছন্ন। 

শ্রাদ্ধ—ছেরাদ্দ।

শ্রী—ছিরি।

প্রণাম—পেন্নাম। 

কীর্তন—কেত্তন। 

বৃহস্পতি–বেস্পতি, বিস্যুত।

একটা ব্যাপার লক্ষ কর — একই সংস্কৃত শব্দ হতে অর্থ-তৎসম শব্দ এবং তদ্ভব শব্দ দুইই পেয়েছি, এমন উদাহরণও দুর্লভ নয়—

সংস্কৃত – তদ্ভব – অর্ধ-তৎসম।

কৃষ্ণ – কানু, কানাই – কেষ্ট।

চন্দ্ৰ – চাঁদ – চন্দোর।

মিত্র – মিতা – মিত্তির।

চক্ৰ – চাক – চক্কুর।

গৃহিণী – ঘরনী– গিন্নী।

রাত্রি – রাত – রাত্তির।

দেশি শব্দ – বঙ্গদেশের প্রাচীনতম অধিবাসী কোল, ভিল প্রভৃতি অনার্যজাতির ভাষা হতে জ্ঞাতমূল বা অজ্ঞাতমূল যে সমস্ত শব্দ বাংলা ভাষায় এসেছে, সেগুলিকে দেশি শব্দ বলে।

যেমন – অঢেল, কাঁচুমাচু, কুলো, কুকুর, খোকা, খুকি, খাঁজ, গাড়ি, গোড়া, ঘাড়, ঘোড়া, চাউল, চাগাড়, চাঙ্গা, চিড়, চিংড়ি, চেঁচামেচি, চোঁচ, ছানা, ঝাঁকা, ঝিঙে, ঝুলি, ডোবা, ডাঁটো, ডাঁসা, ডিঙি, ঢেঁকি, ঢেউ, ডগমগ, ডবকা, ডাহা, ডাগর, তেঁতুল, ধাঁচা, নাদা, পাঁঠা, পেট, বাদুড় ইত্যাদি।

বিদেশি শব্দ – ভারতবর্ষের বাইরের দেশ হতে অথবা ভারতবর্ষের অন্যান্য প্রদেশ হতে যে-সকল শব্দ স্বরূপে বা কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত রূপে বাংলা ভাষায় এসেছে, সেগুলিকে বিদেশি শব্দ বা আগন্তুক শব্দ বলে।

আগন্তুক শব্দগুলির মধ্যে বহির্ভারতীয় ইংরাজি, আরবি, ফারসি ও পোর্তুগীজ শব্দই সংখ্যায় বেশি। আর, অন্তর্ভারতীয় প্রতিবেশী শব্দাবলীর মধ্যে হিন্দির আধিক্যই উল্লেখনীয়।

আরবী – অকুফ, অছি, অছিলা, আকছার, আদায়, আদালত, আফিম, আলেকুম, আলোয়ান, আমিন, আমির, আয়েশ, ইজারা, ইজ্জত, ইনাম, ইমান, ইমারত, কাজিয়া, কাজী, কাতার, খত, খতম, খেলাপ, গাজী, গাপ, জমানত, জমায়ত, জরিপ, তুলকালাম, তেজারত, তারিখ, দায়রা, দিক, দুনিয়া, নাজিম, দেমাক, দোয়া, দোয়াত, দৌলত, নকশা, বাজে, বাতিল, ফৌজ, বকেয়া, বদর, মানে, মাফ, মারফত, মেরামত, মোকাবিলা, ফিরিস্তি, নকিব, ফানুস, শরাব, শরিফ, শরিয়ত, শামা, সাবুদ, সাবেক হজম, হজরত, হদিস, হাকিম, হারাম, হামলা, হাল, হালুইকর ইত্যাদি।

ফারসি – অজু, অজুহাত, অন্দর, আইন, কামাই, আশকারা, আশরফি, ওস্তাগর, কম, কাগজ, কারিগর, খাকী, খুব, খুশি, গালচে, গুজরান, গুমর, জমি, জরি, চাঁদা, চাপরাস, চাবুক, দস্তানা, দস্তিদার, দহরম, দাগ, দিলাসা, পল, পলক, পশম, পাইকার, নমুনা, বকশিশ, বগল, বজায়, বনিয়াদ, বন্দর, পেশকর, বরদাস্ত, বরফ, রোজা, রাহাজানি, শামিয়ানা, লাগাম, লাশ, শনাক্ত, শোরগোল, সাল, সিপাহী ইত্যাদি।

আরবি-ফারসির মিশ্রণ – ওকালতনামা, কুচকাওয়াজ, কেতাদুরস্ত, কোহিনুর, বেদখল, তাঁবেদার, বেকবুল, বেহায়া, শামাদান, সেরেফ, হকদার, বেহিসাবী ইত্যাদি।

তুর্কী – কলকা, কাঁচি, কানাত, কোর্মা, কুলি, মুচলেকা, বোঁচকা, চিক, তকমা, তোপ ইত্যাদি।

ইংরাজি – অক্সিজেন, আপিস, আপেল, ক্লাব, খাঁটি, ক্যামবিস, কুইনিন, গেঞ্জি, গেট, চিমনি, চান্স, চেক, চেন, টনিক, ড্রেন, থিয়েটার, নোটিস, পিয়স, পিল, পিয়ানো, পীচ, রেস, লিলি, সনেট, সার্কাস, হাইকোর্ট, হুইল, হুক, হোমিওপ্যাথি, সীল ইত্যাদি।

পোর্তুগীজ – আচার, আতা, আনারস, কপি, কাতান, মাইরি, তামাক, তিজেল, বোমা, ফরাসি, ফর্মা, ফিতা, বরগা, বালতি, বেহালা, যিশু, সালসা, মিস্ত্রী, সাগু, কাবার, কামরা, কিরিচ, কেদারা, খানা, কমলালেবু ইত্যাদি।

অন্যান্য বিদেশি শব্দ –

ফরাসি – কার্তজ, কুপন, রেনেসাঁস।

জার্মান – নাৎসী, কিনডারগার্টেন।

স্পেনীয় – ডেঙ্গু।

ওলন্দাজী – ইশকাপন, তুরুপ, রুইতন, হরতন।

গ্রীক – কেন্দ্র, দাম, সুরঙ্গ।

রাশিয়ান – ভডকা, বলশেভিক, স্পুটনিক।

জাপানি – জুজুৎসু, টাইফুন, রিক্শা, হারাকিরি, হাসুনোহানা।

চিনা – চা, লিচু।

সিংহলী – বেরিবেরি।

বৰ্মী – লুঙ্গী।

বিদেশি শব্দাবলির মধ্যে এ-পর্যন্ত বহির্ভারতীয় শব্দের পরিচয় পেলাম। এবার অন্তর্ভারতীয় প্রতিবেশী শব্দ।

হিন্দি – আলাল, ইস্তক, উতরাই, ওয়ালা, কচুরি, কাহিনি, কেয়াবাত, কোরা, খাট্টা, কানা, চালু, চাহিদা, চিকনাই, পানি, পায়দল, ফালতু, বাত, বানি, বীমা, বেলচা।

গুজরাটি – গরবা, তকলি, হরতাল।

মারাঠী – চৌথ, বর্গী।

তামিল – চুরুট। 

তেলুগু – প্যানডেল।

এই যে তৎসম, তদ্ভব, অর্ধ-তৎসম, দেশি বা বিদেশি শব্দরাশি বাংলা ভাষায় চলছে, বাংলার সমন্বয়সাধনী প্রতিভা কয়েকটি স্থলে এই শব্দাবলির শ্রেণিগত বৈষম্যের বালাই লোপ করে দিয়ে সঙ্কর শব্দের সৃষ্টি করেছে।

সঙ্কর শব্দ – এক শ্রেণির শব্দের সঙ্গে অন্য শ্রেণির উপসর্গ প্রত্যয় ইত্যাদির যোগে অথবা বিভিন্ন শ্রেণির শব্দের পারস্পরিক সংযোগে যেসব নূতন শব্দের সৃষ্টি হয়, তাদেরকে সঙ্কর শব্দ বলে।

(ক) তৎসম শব্দ + বাংলা শব্দ – পিতাঠাকুর, মাতাঠাকুরানী, নির্ভল, নিশ্চুপ, কাজকর্ম, ভুলবশত।

(খ) তৎসম শব্দ + বিদেশি শব্দ – হেডপণ্ডিত, বসন্তবাহার, লাটভবন, নৌবহর।

(গ) বিদেশি শব্দ + বাংলা শব্দ – হাটবাজার, মাস্টারমশায়, দুধ-পাউরুটি।

(ঘ) বিদেশি শব্দ + বিদেশি শব্দ – উকিল-ব্যারিস্টার, জজসাহেব, তোয়ালে-চাদর।

(ঙ) তৎসম শব্দ + বাংলা প্রত্যয় – একলা, দীপাবলী, আকাশ-ভরা ইত্যাদি।

(চ) তৎসম শব্দ + বিদেশি প্রত্যয় – শিক্ষানবিস, উপায়দার, প্রমাণসই ইত্যাদি।

(ছ) বাংলা শব্দ + তৎসম প্রত্যয় – আমিত্ব, কাঁকরময়, রানীত্ব ইত্যাদি।

(জ) বিদেশি শব্দ + বিদেশি প্রত্যয় – ফুলদানি, বুকসই, ঘুষখোর, ঠিকাদার ইত্যাদি।

(ঝ) বিদেশি শব্দ + তৎসম প্রত্যয় – এজেন্টগণ, খ্রিস্টিয় ইত্যাদি।

(ঞ) বিদেশি শব্দ + বাংলা প্রত্যয় – শহুরে, শাগরেদি, গোলাপী, খেয়ালী ইত্যাদি।

(ট) বিদেশি শব্দ + বিদেশি প্রত্যয় – ডাক্তারখানা, হররোজ, সরাইখানা, সমঝদার ইত্যাদি।

কোনো কোনো শব্দ তৎসমরূপে এক অর্থ এবং বাংলা বা বিদেশি রূপে সম্পূর্ণ অন্য অর্থ প্রকাশ করে। যেমন –

(ক) বেশ (তৎ)—সজ্জা; বেশ (ফা)—ভালো।

(খ) মঞ্জিল (তৎ)—রজকালয়; মঞ্জিল (আ)—প্রাসাদ।

(গ) তীর (তৎ)—নদীকুল; তীর (ফা)—বাণ।

(ঘ) দীন (তৎ)—দরিদ্র; দীন (আ)—ধর্ম।

শব্দদ্বৈত

গরম জলে হাত দিও না। তোর গাটা কেন গরম-গরম লাগছে রে? গরম বিশেষণটি একবার বসে গরম-সম্বন্ধে নিশ্চয়তার ভাবটি প্রকাশ করছে। কিন্তু গরম-গরম বলায় গরম-সম্বন্ধে কি সন্দেহ জাগছে না? সকাল অর্থে দিনের প্রথম ভাব বোঝায়; কিন্তু সকাল-সকাল বললে আগেভাগে বা নির্ধারিত সময়ের আগেই বোঝায়। একই শব্দেব দ্বিত্ব প্রয়োগের দ্বারা ভাবের বৈচিত্র্য-সম্পাদন বাংলা ভাষার লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য।

শব্দদ্বৈত – ভাবের বৈচিত্র্য-সম্পাদনের জন্য একই শব্দকে বা সমার্থক শব্দকে পরপর দুইবার পূর্ণরূপে বা ঈষৎ পরিবর্তিত আকারে প্রয়োগ করলে তাকে শব্দদ্বৈত বলা হয়।

শব্দদ্বৈত প্রধানত তিন প্রকারের–

১। দ্বিরুক্ত শব্দের শব্দদ্বৈত – শিশুটি কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়ল। টুকরো টুকরো মেঘ।

২। যুগ্মশব্দের শব্দদ্বৈত – গরিবদুখী, দোল-দুর্গোৎসব।
৩। পদবিকারবাচক শব্দদ্বৈত – ভাতটাত, মুড়িটুড়ি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top